HSC যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৪

HSC যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Logic 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চ মাধ্যমিক

যুক্তিবিদ্যা
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৪র্থ অধ্যায়

HSC Logic 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১. কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন মিতভাষী, হাস্যোজ্জ্বল, বিচক্ষণ এবং মেধাবী।
ক. বিধেয়ক কাকে বলে?
খ. বিধেয় ও বিধেয়ক এক নয় কেন?
গ. উদ্দীপকের প্রথম বাক্যটিতে কী ধরনের বিধেয়কের ইঙ্গিত রয়েছে?
ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় বাক্যটিতে যে গুণগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে তা বিশ্লেষণ করো।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জাতি বা শ্রেণিবাচক বিধেয় পদ বিশিষ্ট কোনো সদর্থক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে যে সকল সম্পর্ক থাকতে পারে, সেই সম্পর্কসমূহকে বিধেয়ক বলে।

খ. বিধেয় (Predicate) হচ্ছে একটি পদ এবং বিধেয়ক (Predicables) একটি সম্পর্কের নাম বিধায় এরা সমার্থক নয়।
যে পদ দ্বারা উদ্দেশ্য সম্বন্ধে কোনো কিছু স্বীকার বা অস্বীকার করা হয় তাকেই বলে বিধেয়। যেমনত মানুষ হয় দ্বিপদী। এ যুক্তিবাক্যে 'দ্বিপদী' কথাটি 'মানুষ' পদ সম্বন্ধে স্বীকার করা হয়েছে। কাজেই 'দ্বিপদী' পদটি বিধেয় পদ। কিন্তু এই যুক্তিবাক্যে মানুষ ও দ্বিপদী পদের মধ্যে যে বিশেষ সম্পর্ক বিদ্যমান তাকে বলা হয় বিধেয়ক। সুতরাং বিধেয় ও বিধেয়ক এক নয়। বিধেয় হচ্ছে একটি পদ। অপরদিকে, বিধেয়ক হলো একটি সম্পর্কের নাম।

গ. উদ্দীপকের প্রথম বাক্যটিতে ব্যক্তিগত অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষ ইঙ্গিত রয়েছে।
অবান্তর লক্ষণের প্রকারভেদগুলোর মধ্যে একটি হলো ব্যক্তিগত অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ। যে অবান্তর লক্ষণ কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে সব সময় উপস্থিত থাকে তাকে ব্যক্তিগত অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ বলে। যেমন: কোনো ব্যক্তির জন্মস্থান, জন্মতারিখ ইত্যাদি। কোনো ব্যক্তির জন্মস্থান, জন্মতারিখ ইত্যাদি তার সাথে সব সময় অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত থাকে বলেই একে অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ বলা হয়।
উদ্দীপকের প্রথম বাক্যটিতে বলা হয়েছে, কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। অর্থাৎ, এখানে কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মতারিখকে প্রকাশ করা হয়েছে যা একটি ব্যক্তিগত অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ। কেননা, জন্মতারিখ কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে সব সময় উপস্থিত থাকে। সুতরাং প্রথম বাক্যটিতে ব্যক্তিগত অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণের প্রকাশ ঘটেছে।

ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় বাক্যটিতে যে গুণগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে, তাতে উপলক্ষণ ও অবান্তর লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে।
উপলক্ষণ বলতে বিধেয়কের এমন একটি শ্রেণিবিভাগকে বোঝায় যা বিভেদক লক্ষণ থেকে অনুমিত বা নিঃসৃত হয়। অর্থাৎ, উপলক্ষণ হলো কোনো পদের এমন গুণ যা কোনো পদের অংশ নয়, কিন্তু পদটির জাত্যর্থ থেকে নিঃসৃত হয়। যেমন: 'চিন্তাশীলতা' গুণটি 'মানুষ' পদের উপলক্ষণ। কেননা ঐ গুণটি 'মানুষ' পদের জাত্যর্থ 'বুদ্ধিবৃত্তি' থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়। উদ্দীপকের দ্বিতীয় বাক্যটিতে 'বিচক্ষণ' এবং 'মেধাবী' নামে যে গুণের উল্লেখ আছে তার দ্বারা উপলক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে। গুণ দুটি ‘মানুষ' পদের জাত্যর্থ 'বুদ্ধিবৃত্তি' থেকে নিঃসৃত হয় বলে এগুলো 'মানুষ' পদের উপলক্ষণ।
অবান্তর লক্ষণ হলো কোনো পদের এমন গুণ যা কোনো পদের জাত্যর্থের অংশ নয়; আবার পদটির জাত্যর্থ থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃতও হয় না। অর্থাৎ, অবান্তর লক্ষণ বলতে জাত্যর্থের বাইরের কোনো গুণকে বোঝায়। যেমন: ‘শান্তিপ্রিয়’ গুণটি 'মানুষ' পদের জাত্যর্থের বাইরের একটি গুণ। তাই ‘শান্তিপ্রিয়' গুণটি 'মানুষ' পদের অবান্তর লক্ষণ। উদ্দীপকের দ্বিতীয় বাক্যে 'মিতভাষী' ও 'হাস্যোজ্জ্বল' বলে যে দুটি গুণের উল্লেখ করা হয়েছে তা অবান্তর লক্ষণ। কেননা ঐ গুণ দুটি 'মানুষ' পদের জাত্যর্থের অংশও নয়, আবার জাত্যর্থ থেকে নিঃসৃতও নয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, উদ্দীপকের দ্বিতীয় বাক্যটিতে যে গুণগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে তা বিধেয়ক হিসেবে উপলক্ষণ ও অবান্তর লক্ষণ।

২. ধারণা-১
সকল কোকিল হয় কালো।
ধারণা-২
সকল গরু হয় গৃহপালিত চতুষ্পদ প্রাণী।
ক. বিধেয়ক কী?
খ. 'কোন যুক্তিবাক্যে বিধেয়ক থাকে না'?- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ধারণা-১ এর সাথে কোন ধরনের বিধেয়কের মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে ধারণা-১ ও ধারণা-২ এর আন্তঃসম্পর্ক আলোচনা করো।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শ্রেণিবাচক বা জাতিবাচক বিধেয় পদ বিশিষ্ট কোনো সদর্থক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের মধ্যে যে সকল সম্পর্ক থাকতে পারে, সেই সম্পর্কসমূহকে বিধেয়ক বলে।

খ. নঞর্থক যুক্তিবাক্যে বিধেয়ক থাকে না।
বিধেয়ক হচ্ছে যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যকার এক প্রকার সম্পর্ক। এই সম্পর্ক কেবল সদর্থক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে তৈরি হয়। তাই সদর্থক যুক্তিবাক্যে বিধেয়ক থাকে। নঞর্থক যুক্তিবাক্যের বিধেয় পদটি উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে কোনো কিছু অস্বীকার করে। এজন্য নঞর্থক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক তৈরি হয় না। যেহেতু নঞর্থক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয় না, তাই নঞর্থক যুক্তিবাক্যে বিধেয়ক থাকে না।

গ. উদ্দীপকের ধারণা-১-এর সাথে বিধেয়কের প্রকারভেদ অবান্তর লক্ষণের মিল রয়েছে।
বিধেয়কের প্রকারভেদগুলোর মধ্যে সর্বশেষ প্রকারভেদ হলো অবান্তর লক্ষণ। অবান্তর লক্ষণ বলতে সেই গুণ বা গুণাবলীকে বোঝায় যা কোনো পদের জাত্যর্থের অংশ নয়; আবার পদটির জাতথ্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না। অর্থাৎ, অবান্তর লক্ষণ কোনো পদের জাত্যর্থের সাথে অপরিহার্যভাবে যুক্ত নয়।
উদ্দীপকে ধারণা-১ এ বলা হয়েছে 'সকল কোকিল হয় কালো'। এখানে 'কালো' রং 'কোকিল' পদটির জাত্যর্থ 'জীববৃত্তির' অপরিহার্য অংশ নয়। আবার, পদটির জাত্যর্থ 'জীববৃত্তি' থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃতও হয় না। তাই ধারণা-১ বিধেয়কের প্রকারভেদ অবান্তর লক্ষণকেই নির্দেশ করে।

ঘ. উদ্দীপকের আলোকে ধারণা-১ ও ধারণা-২ উভয়ই বিধেয়কের প্রকারভেদ অবান্তর লক্ষণকে নির্দেশ করে। তবে সূক্ষ্মভাবে বিচার করলে ধারণা-১ 'শ্রেণিগত অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ' এবং ধারণা-২ 'শ্রেণিগত বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ' কে নির্দেশ করে।
অবান্তর লক্ষণের চারটি প্রকারভেদ রয়েছে এর মধ্যে প্রথমটি হলো শ্রেণিগত অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ। কোনো প্রকার অবান্তর লক্ষণই জাত্যর্থের অংশ নয় বা জাত্যর্থের সাথে অপরিহার্যভাবে যুক্ত নয়। কিন্তু কিছু অবান্তর লক্ষণ আছে যা কোনো শ্রেণির ক্ষেত্রে সব সময় যুক্ত থাকে। যে অবান্তর লক্ষণ কোনো জাতি বা শ্রেণির ক্ষেত্রে সব সময় অপরিহার্যভাবে উপস্থিত থাকে বা বর্তমান থাকে তাকে শ্রেণিগত অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ বলে ধারণা-১-এর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, 'কালো' পদটি 'কোকিল' শ্রেণির ক্ষেত্রে সব সময় উপস্থিত থাকে। তাই এটি শ্রেণিগত অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ।
আর যে অবান্তর লক্ষণ কোনো শ্রেণির ক্ষেত্রে সব সময় বর্তমান থাকে না সেটি শ্রেণিগত বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ। ধারনা-২ এর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, গরু চতুষ্পদ হলেও সকল গরু গৃহপালিত নয়। অর্থাৎ, এটি গরু শ্রেণির সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
সুতরাং ধারণা-১ ও ধারণা-২ উভয়ই অবান্তর লক্ষণের প্রকারভেদ। উভয় প্রকার অবান্তর লক্ষণের মধ্যে বিভিন্ন দিক থেকে মিল থাকলেও এরা ভিন্ন প্রকৃতির।

৩. যুক্তিবিদ্যা ক্লাসে রাজিব স্যার বলেন, ‘‘মানুষ হলো বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব’’। মানুষের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তি গুণটি আছে বলেই মানুষ অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা। তিনি আরও বলেন, এই গুণটির বলেই মানুষ বিচার করতে পারে। তাছাড়া মানুষের মধ্যে তার আচার- ব্যবহার, পোশাক-পরিচ্ছদ, হাস্যপ্রিয়তা, জন্মস্থান, জন্মতারিখ এরূপ অনেক বিষয় রয়েছে।
ক. বিধেয় কী?
খ. বিধেয়ক একটি সম্পর্কের নাম- বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত 'মানুষ' পদের বিশেষ গুণটি কোন বিধেয়ককে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে রাজিব স্যারের শেষের বক্তব্যটির আলোকে বিধেয়কের প্রকার বিশ্লেষণ করো।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে পদ উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোনো কিছু স্বীকার বা অস্বীকার করে তাকে বিধেয় (Predicate) বলে।

খ. বিধেয়ক (Predicables) কোনো পদ নয় কারণ বিধেয়ক হলো একটি সম্পর্কের নাম।
যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের মধ্যকার সম্পর্কের নাম বিধেয়ক। এ কারণেই বিধেয়ক কোনো পদ নয়। যেমন: 'সকল দার্শনিক হন সৃজনশীল'। এখানে 'দার্শনিক' উদ্দেশ্য পদের সাথে 'সৃজনশীল' বিধেয় পদের যে সম্পর্ক তাই হলো বিধেয়ক।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত 'মানুষ' পদের বিশেষ গুণটি হলো বুদ্ধিবৃত্তি। এই 'বুদ্ধিবৃত্তি' গুণটি বিভেদক লক্ষণ নামক বিধেয়ককে নির্দেশ করে।
যে গুণের কারণে একই জাতির অন্তর্ভুক্ত একটি উপজাতিকে তার সমজাতীয় অন্যান্য উপজাতি থেকে পৃথক করা হয় তাকে বিভেদক লক্ষণ বলে। বিভেদক লক্ষণ হলো জাত্যর্থের অপরিহার্য অংশ বিশেষ। যেমন- মানুষের মধ্যে রয়েছে 'বুদ্ধিবৃত্তি' ও 'জীববৃত্তি' নামক গুণ। অন্যদিকে, বিভিন্ন প্রাণীর রয়েছে 'জীববৃত্তি' গুণ। এই 'বুদ্ধিবৃত্তি' গুণের কারণে মানুষ তার সমজাতীয় অন্যান্য উপজাতি থেকে পৃথক। এজন্য 'বুদ্ধিবৃত্তি' গুণকে মানুষ পদের বিভেদক লক্ষণ বলে।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব'। এখানে বুদ্ধিবৃত্তি গুণটি মানুষ পদের বিভেদক লক্ষণ। এ গুণের কারণেই মানুষ তার অন্যান্য উপজাতি থেকে আলাদা।

ঘ. উদ্দীপকে রাজিব স্যারের শেষের বক্তব্যটি হলো অবান্তর লক্ষণ। নিচে অবান্তর লক্ষণের বিভিন্ন প্রকার উল্লেখ করা হলো।
যে গুণ বা গুণসমষ্টি কোনো পদের জাত্যর্থের অংশ নয়, কিংবা জাত্যর্থ থেকে অনিবার্যভাবে বেরিয়েও আসে না, তা-ই অবান্তর লক্ষণ। যেমন- মানুষের 'সংগীতপ্রিয়তা', 'হাস্যপ্রিয়তা' গুণগুলো হলো অবান্তর লক্ষণ। অবান্তর লক্ষণকে চারভাগে ভাগ করা যায় যথা-
ব্যক্তিগত বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ। যেমন- ব্যক্তির রুচি, পোশাক, পেশা ইত্যাদি। ব্যক্তিগত অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ। যেমন- ব্যক্তির জন্মস্থান, বংশ পরিচয় ইত্যাদি।
শ্রেণিগত বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ। যেমন- মানুষ শ্রেণির কালো চুল। শ্রেণিগত অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ। যেমন- ঘোড়া শ্রেণির চতুষ্পদ গুণ। উদ্দীপকে রাজীব স্যার তার শেষ বক্তব্যে মানুষের আচার ব্যবহার, পোশাক পরিচ্ছেদ, হাস্যপ্রিয়তা, জন্মস্থান, জন্মতারিখ এরূপ বিভিন্ন গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। এগুলো সবই অবান্তর লক্ষণের অন্তর্ভুক্ত।
সুতরাং, রাজীব স্যারের শেষের বক্তব্যের বিধেয়ক হলো অবান্তর লক্ষণ।

৪. তিন বন্ধুর আলোচনায় সুমন বললো, ‘‘আমাদের ফুলের বাগান লাল, হলুদ, বেগুনী ও নীল রংয়ের ফুলে ভরপুর।’’ সুজন বললো, ‘‘মানুষই ফুলের বাগানের পরিচর্যা করে ও অন্যান্য পশুপাখির হাত থেকে রক্ষা করে। কলম কেটে ফুলের জাতগুলো উন্নতও করে। কারণ মানুষের মধ্যে বিশেষ ক্ষমতা আছে।" সফিক বললো, ‘‘এই মানুষই তাদের উদারতা ও মমতা দিয়ে বিভিন্ন পশুপাখি প্রতিপালন করে।’’
ক. বিধেয়ক কী?
খ. কোন ধরনের যুক্তিবাক্যে বিধেয়ক থাকে না? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে সুমনের বক্তব্যে কোন ধরনের বিধেয়ককে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. বিধেয়কের আলোকে সুজন ও সফিকের বক্তব্যের তুলনামূলক আলোচনা করো।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বিধেয়ক হলো সদর্থক যুক্তিবাক্যের বিধেয় পদের সাথে উদ্দেশ্য পদের সম্পর্ক।

খ. নঞর্থক যুক্তিবাক্যে (Negative Proposition) ও বিশিষ্ট পদে (Individual Term) বিধেয়ক (Predicables) থাকে না।
নঞর্থক যুক্তিবাক্যে উদ্দেশ্য (Subject) পদের সাথে বিধেয় (Predicate) পদের সম্পর্ককে অস্বীকার করা হয়। তাই এরূপ যুক্তিবাক্যে বিধেয়ক থাকে না। যেমন: 'সকল ফুল নয় লাল'। এখানে ফুলের সাথে লাল রঙের কোনো সম্পর্ক স্থাপিত হয়নি। আবার, যেসব যুক্তিবাক্যে বিধেয়টি 'বিশিষ্ট পদ' (Individual Term) সেখানে বিধেয়ক থাকে না। যেমন: জীবনানন্দ দাশ, সূর্য, ঢাকা ইত্যাদি।

গ. উদ্দীপকে সুমনের বক্তব্য শ্রেণিগত বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণকে (Seperable Accidens of a Class) নির্দেশ করে।
যে অবান্তর লক্ষণ কোনো শ্রেণির ক্ষেত্রে কখনও উপস্থিত থাকে আবার কখনও উপস্থিত থাকে না, তাকে শ্রেণিগত বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ বলে। যেমন- 'কিছু ঘোড়া হয় লাল'। এখানে ঘোড়া শ্রেণির ক্ষেত্রে লাল গুণটি অবান্তর লক্ষণ এবং তা ঘোড়া শ্রেণির সকল সদস্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। লাল ঘোড়া ছাড়াও অন্য রং এর ঘোড়া থাকতে পারে। এমনিভাবে মহিলাদের শাড়ি পরা, ক্রিকেটারদের চুইংগাম খাওয়া ইত্যাদি শ্রেণিগত বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণের উদাহরণ। উদ্দীপকের সুমন বলে, তাদের বাগানের কিছু ফুল লাল, কিছু ফুল হলুদ, কিছু ফুল বেগুনী এবং কিছু ফুল নীল। অর্থাৎ এখানে একই শ্রেণির অন্তর্গত বিভিন্ন ফুলের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন রং কে নির্দেশ করা হয়েছে। এ কারণে সুমনের বক্তব্যে উল্লিখিত বিধেয়ক হলো শ্রেণিগত বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ।

ঘ. উদ্দীপকে সুজনের বক্তব্যে বিভেদক লক্ষণ এবং সফিকের বক্তব্যে "অবান্তর লক্ষণের ধারণা ফুটে উঠছে।
সাধারণভাবে বিভেদক লক্ষণ বলতে বিভেদক বা পার্থক্য করার গুণকে বোঝায়। যে গুণ বা গুণাবলি কোনো জাতির অন্তর্গত অন্যান্য উপজাতি থেকে একটি বিশেষ উপজাতিকে পৃথক করে সেই গুণ বা গুণাবলিকে বিভেদক লক্ষণ বলে। বিভেদক লক্ষণ কোনো উপজাতির সারসত্তাকে প্রকাশ করে। পাশাপাশি অন্যান্য উপজাতি থেকে আলাদা বলে বিবেচিত হয়। যেমনত মানুষের বিভেদক লক্ষণ হচ্ছে বুদ্ধিবৃত্তি। আবার, যে গুণ বা গুণাবলি কোনো পদের জাত্যর্থ বা জাত্যর্থের অংশ নয়, এমনকি জাত্যর্থ থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত নয়, তাকে অবান্তর লক্ষণ বলে।
অবান্তর লক্ষণ কোনো পদের জাত্যর্থের অতিরিক্ত ভিন্ন ধরনের কিছু গুণকে নির্দেশ করে। যেমন, মানুষ নয় বুদ্ধিসম্পন্ন শ্বেতাঙ্গ জীব।
উদ্দীপকে, সুজনের বক্তব্যে মানুষের যে বিশেষ ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে তা হলো বুদ্ধিবৃত্তি। আর এই বুদ্ধিবৃত্তি মানুষকে অন্যান্য সকল প্রাণী থেকে পৃথক করে বলে এটি হলো মানুষের বিভেদক লক্ষণ। আবার, সফিকের বক্তব্যে মানুষের যে উদারতা ও মমতার কথা বলা হয়েছে তা মানুষের জাত্যর্থ নয় বা জাত্যর্থ থেকে নিঃসৃতও নয়, তাই এটি অবান্তর লক্ষণ।
সুতরাং আমরা সুজন ও সফিকের বক্তব্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণে বলতে পারি, সুজনের বক্তব্য বিভেদক লক্ষণকে নির্দেশ করে বা জাত্যর্থের অংশ এবং সফিকের বক্তব্য অবান্তর লক্ষণকে নির্দেশ করে যা জাত্যর্থের অংশ নয় বা জাত্যর্থ থেকে নিঃসৃতও নয়। অর্থাৎ বিভেদক লক্ষণ ও অবান্তর লক্ষণ পরস্পর ভিন্ন।

৫. বৈচিত্র্যপূর্ণ এই পৃথিবীতে বাস করে নানা রকমের জীবজন্তু। এই জীবকূলে রয়েছে মানুষের ও অবস্থান। অন্যান্য প্রাণীর মতো মানুষেরও রয়েছে তৃষ্ণা, নিদ্রা প্রভৃতি চাহিদা। তবুও মানুষ অন্যান্য প্রাণী থেকে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে আলাদা। আর তাই মানুষকে বলা হয় ‘‘সৃষ্টির সেরা জীব।
ক. বিধেয় কী?
খ. জাতি ও উপজাতি বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে ক্ষুধা, তৃষ্ণা, নিদ্রা প্রভৃতি কোন ধরনের বিধেয়ককে প্রকাশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘‘মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব"- উক্তিটি বিধেয়কের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বিধেয় হলো যুক্তিবাক্যের যে পদ দ্বারা উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোনো কিছু স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়।

খ. জাতি বলতে অধিক ব্যাপক শ্রেণিকে আর উপজাতি বলতে জাতির অন্তর্গত কম ব্যাপক শ্রেণিকে বোঝায়।
যদি দুটি শ্রেণিবাচক পদের সম্পর্ক এমন হয় যে ব্যক্ত্যর্থের দিক থেকে একটি ব্যাপক এবং অন্যটি কম ব্যাপক। এই অধিক ব্যাপক শ্রেণিটিই হলো জাতি। আর কম ব্যাপক শ্রেণিটি হলো উপজাতি। যেমন- জীবের সংখ্যা বেশি কিন্তু মানুষের সংখ্যা কম। অর্থাৎ ব্যাপকতার দিক দিয়ে জীব পদটি বড় আর মানুষ পদটি ছোট। জীব পদটি মানুষ পদকে অন্তর্ভুক্ত করে। অতএব বলা যায়, জীব হলো জাতি আর মানুষ হলো উপজাতি।

গ. উদ্দীপকের তৃষ্ণা, নিদ্রা প্রভৃতি জাতিগত উপলক্ষণকে প্রকাশ করে।
যে উপলক্ষণ কোনো পদের আসন্নতম জাতির জাত্যর্থ থেকে নিঃসৃত হয় তাকে জাতিগত উপলক্ষণ বলে। যেমন- ক্ষুধা, পিপাসা, নিদ্রা, মানুষ পদটির জাতিগত উপলক্ষণ। কেননা, মানুষের আসন্নতম জাতি 'জীব’ থেকে তথা 'জীববৃত্তি' নামক জাত্যর্থ থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়। আমরা জানি, জীববৃত্তি বা জীবন থাকলেই ক্ষুধা, পিপাসা, নিদ্রা ইত্যাদি থাকবেই।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, বৈচিত্র্যপূর্ণ এই পৃথিবীতে বাস করে নানা রকমের জীবজন্তু। এই জীবকূলে রয়েছে মানুষেরও অবস্থান। অন্যান্য প্রাণীর মতো মানুষেরও রয়েছে তৃষ্ণা, নিদ্রা প্রভৃতি যেগুলো জাতিগত উপলক্ষণকে নির্দেশ করে।

ঘ. ‘মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব' উক্তিটি বিধেয়কের আলোকে নিচে ব্যাখ্যা করা হলো।
'মানুষ' পদটি জীব জাতির অন্তর্গত। এই জীব জাতির মধ্যে আরো অনেক প্রাণী রয়েছে। যেমন- গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি, হাতি, বাঘ, সিংহ প্রভৃতি। বিশেষ একটি গুণের কারণে 'মানুষ' উপজাতিটি জীব জাতির অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য উপজাতি থেকে আলাদা। আর এ বিশেষ গুণটি হলো বুদ্ধিবৃত্তি। যা বিভেদক লক্ষণ নামে পরিচিত। এ সম্পর্কে বলা যায়, যে গুণ বা গুণাবলি একই জাতির অন্তর্ভুক্ত একটি উপজাতিকে অন্যান্য উপজাতি থেকে পৃথক করে তাকে বিভেদক লক্ষণ বলে। যেমন- বুদ্ধিবৃত্তি গুণটির কারণে মানুষ গরু, ছাগল, বাঘ প্রভৃতি থেকে পৃথক আর এ গুণটির জন্যই মানুষ সৃষ্টির সেরা।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, মানুষ বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্যের রণে অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা যা বিভেদক লক্ষণকে নির্দেশ করে।
পরিশেষে বলা যায়, সেরা হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য ব্যতিক্রমধর্মী কিছু গুণ থাকা আবশ্যক। মানুষ 'বুদ্ধি' নামক এই বিশেষ গুণটিকে ধারণ করায় জীবজগতে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে।

৬. যুক্তিবিদ্যা ক্লাসে শিক্ষক বললেন, যুক্তিবিদ্যায় বিধেয়কের গুরুত্ব অনেক। উদ্দেশ্যের সাথে বিধেয়ের যে বিশেষ সম্পর্ক বিদ্যমান তাই হচ্ছে বিধেয়ক। অর্থাৎ উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে যে একটি নিগূঢ় ও গভীর সম্পর্ক রয়েছে সে সম্পর্ক কত ভিন্নভাবে হতে পারে তার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিনি তুলে ধরেন।
ক. জাতি কাকে বলে?
খ. বিধেয় কী?
গ. উদ্দীপকের আলোকে বিধেয় ও বিধেয়কের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে বিধেয়কের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. দুটি শ্রেণিবাচক পদের বৃহত্তর পদকেই জাতি বলে।

খ. যে পদ দ্বারা উদ্দেশ্য সম্বন্ধে কোনোকিছু স্বীকার বা অস্বীকার করা হয় তাই বিধেয়।
বিধেয় দ্বারা উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোনো কিছু স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়। যেমন- মানুষ হয় দ্বিপদী। এ যুক্তিবাক্যে 'দ্বিপদী' কথাটি 'মানুষ' পদ সম্বন্ধে স্বীকার করা হয়েছে। কাজেই দ্বিপদী পদটি বিধেয় পদ।

গ. উদ্দীপকে শিক্ষক বিধেয় ও বিধেয়কের মধ্যে ভিন্ন সম্পর্ক বা পার্থক্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
বিধেয় একটা পদ কিন্তু বিধেয়ক পদ নয়। বিধেয়ক হচ্ছে দুই ধরনের যুক্তিবাক্যেই বিধেয় থাকে। কিন্তু বিধেয়ক হলো সম্পর্কের নাম। তাই নঞর্থক যুক্তিবাক্যে বিধেয়ক থাকে না। কারণ নঞর্থক যুক্তিবাক্যে উদ্দেশ্য পদের সাথে বিধেয় পদের কোনো সম্পর্ক থাকে না। একটা যুক্তিবাক্যের বিধেয় পদ বিশিষ্ট পদ হতে পারে। কিন্তু কোনো যুক্তিবাক্যের বিধেয় পদ শ্রেণিবাচক না হয়ে বিশিষ্ট পদ হলে সে যুক্তিবাক্যে বিধেয়ক থাকে না।
পরিশেষে বলা যায় যে, বিধেয় ও বিধেয়ক এর মধ্যে কিছু সাদৃশ্য থাকলেও উভয়ের মধ্যে বৈসাদৃশ্যও অনেক রয়েছে যার মাধ্যমে বিধেয় ও বিধেয়ককে আমরা আলাদা করে চিনতে পারি।

ঘ. জাতি বা শ্রেণিবাচক বিধেয় পদ বিশিষ্ট কোনো সদর্থক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে যে সম্পর্ক থাকে সেই সম্পর্ককে বিধেয়ক বলে।
একটি যুক্তিবাক্যে বিধেয়কের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের সম্পর্কই হলো বিধেয়ক। বিধেয়ক অবরোহ যুক্তিবিদ্যার মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। এটি গতানুগতিক বা প্রচলিত যুক্তিবিদ্যায় এরিস্টটলের চিন্তা থেকে শুরু করে পরফিরির চিন্তায় এসে পরিশীলিত ও বিকশিত হয়। যুক্তিবিদ পরিফিরির চিন্তায় বিধেয়ক বিষয়টি পরিণতি লাভ করে। এছাড়া আধুনিক যুক্তিবিদ হিসেবে যোসেফ, ল্যাটা, ম্যাকবেথ, ভোলানাথ রায় প্রমুখের চিন্তায় বিধেয়ক সম্পর্কিতআলোচনা স্থান পেয়েছে। একটি যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদথাকে। এ উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সম্পর্ককে তুলে ধরাই বিধেয়কের প্রধান উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। শ্রেণিবাচক পদ হিসেবে জাতি ও উপজাতির একটি মৌলিক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ পাওয়া যায় বিধেয়কের অংশে। তাছাড়া উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যকার সম্পর্ক হিসেবে 'বিভেদক লক্ষণ', 'উপলক্ষণ' ও 'অবান্তর লক্ষণ' নামক শব্দের সাথে মানুষ পূর্বে পরিচিত ছিল না। বিধেয়ক আলোচনার বিষয় হওয়াতে সেগুলো সম্পর্কে মানুষের মধ্যে বিশেষ করে যারা যুক্তিবিদ্যা অধ্যয়ন করে তাদের মধ্যে একটি স্পষ্ট, পরিষ্কার ও প্রাঞ্জল ধারণার সৃষ্টি হয় উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে যে একটি নিগূঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং সে সম্পর্ক কত ভিন্নভাবে কত গভীরভাবে হতে পারে তা বিধেয়ক সম্পর্কিত ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায়।
এজন্য যুক্তিবিদ্যার আলোচনায় বিধেয়কের গুরুত্ব অপরিসীম।

৭. X ও Y সার্কাস দেখতে গেল। সার্কাসে বিভিন্ন পশু যেমন- হাতি, ঘোড়া, বাঘ ও সিংহের খেলা দেখার পর X বলল, ‘‘এই পশুগুলো শক্তিশালী হলেও এরা মানুষের বশীভূত। কারণ এদের বশীভূত করার ক্ষমতা মানুষের আছে।" Y বলল, ‘‘আমি তোমার সাথে একমত। অথশ দেখ মানুষ ও এই পশুগুলো একই রকম। একই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।"
ক. বিধেয় কী?
খ. বিধেয়ক কোন পদ নয় কেন?
গ. x এর বক্তব্যে মানুষের কোন গুণটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. Y এর বক্তব্যে মানুষ ও সার্কাসের অন্যান্য প্রাণির মধ্যে যে আন্তঃসম্পর্ক বিদ্যমান তা বিশ্লেষণ কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে পদ উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোনো কিছু স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়। তাকে বিধেয় বলে।

খ. বিধেয়ক (Predicables) কোনো পদ নয়, কারণ বিধেয়ক হলো একটি সম্পর্কের নাম।
যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের মধ্যকার সম্পর্কের নাম বিধেয়ক। এ কারণেই বিধেয়ক কোনো পদ নয়। যেমন: 'সকল দার্শনিক হন সৃজনশীল'। এখানে 'দার্শনিক' উদ্দেশ্য পদের সাথে 'সৃজনশীল' বিধেয় পদের যে সম্পর্ক তাই হলো বিধেয়ক।

গ. x এর বক্তব্যে মানুষের বিভেদক লক্ষণের 'বুদ্ধিবৃত্তি' নামক গুণটি ফুটে উঠেছে।
যে গুণের কারণে একই জাতির অন্তর্ভুক্ত একটি উপজাতিকে তার সমজাতীয় অন্যান্য উপজাতি থেকে পৃথক করা হয়, তাকে বিভেদক লক্ষণ বলে। যেমন 'বুদ্ধিবৃত্তি' গুণটা মানুষ উপজাতিকে প্রাণীর অন্যান্য উপজাতি (যেমন- গরু, ছাগল, কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি) থেকে পৃথক করে দেখায়।
উদ্দীপকে বর্ণিত 'x'-এর মতে, জগতে অন্যান্য প্রাণী মানুষের বশীভূত অর্থাৎ তার এই বক্তব্যে 'বুদ্ধিবৃত্তি' গুণের প্রকাশ ঘটেছে। প্রকৃতপক্ষে বুদ্ধিবৃত্তি গুণটা শুধু মানুষ উপজাতির মধ্যেই আছে অন্যান্য সমজাতীয় উপজাতির মধ্যে নেই। সুতরাং বলা যায়, বুদ্ধিবৃত্তি ও জীববৃত্তি উভয়ই মানুষের মধ্যে থাকার কারণে অন্যান্য পশুগুলো মানুষের বশীভূত হয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত বিষয় দুটি হলো জাতি ও উপজাতি। এদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বিদ্যমান।
জাতি ও উপজাতির মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। উভয়ই শ্রেণিবাচক পদ। উভয়েরই বিশেষ বিশেষ সদস্য রয়েছে। তবে জাতি ও উপজাতি একে অন্যের সাথে অস্তিত্বের দিক থেকে নির্ভরশীল। এদের কোনোটিই এককভাবে অস্তিত্বশীল থাকতে পারে না। জাতি হতে হলে তার সাথে উপজাতি থাকতে হয় এবং উপজাতি হতে হলে তার সাথে জাতি থাকতে হয়। তবে মজার ব্যাপার হলো দুটি শ্রেণিবাচক পদের একই যুক্তিবাক্যে অবস্থানের ফলেই এদের জাতি-উপজাতি সম্পর্ক নির্ধারিত হতে পারে এককভাবে এদেরকে জাতি-উপজাতি আখ্যা দেওয়া কঠিন। কেননা কোনো পদ এককভাবে জাতি হতে পারে না আবার উপজাতিও হতে পারে না। যেমন: 'জীব' পদটির তুলনায় মানুষ একটি উপজাতি। অন্যদিকে, সৎমানুষ, দার্শনিক, কবি ইত্যাদি পদের তুলনায় 'মানুষ' একটি জাতি। তাই যুক্তিবিদ্যায় জাতি ও উপজাতিকে কোনো যুক্তিবাক্যে ব্যবহৃত দুটি শ্রেণিবাচক পদের তুলনামূলক সম্পর্কের মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়।
সুতরাং, ওপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, জাতি ও উপজাতির আন্তঃসম্পর্ক হলো এরা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। একটি ছাড়া অপরটি অস্তিত্বশীল হয় না।

৮. মানুষ সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব। বুদ্ধিবৃত্তির কারণেই মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব বলে আখ্যায়িত করা হয়। সর্বশীর্ষে মানুষের স্থান দেওয়া হয়েছে। এ গুণটির জন্য মানুষ অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা, পৃথক ও স্বতন্ত্র। ক্ষুধা, তৃষ্ণা যেমন মানুষের সহজাত, তেমনি বুদ্ধিবৃত্তি গুণও অপরিহার্য ও অনিবার্য। হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ তার বাস্তব জীবনের চিরসাথি এবং মৃত্যুও তার জন্য অনিবার্য। কোনো মানুষই হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ ও মৃত্যুকে এড়াতে পারে না।
ক. বিধেয়ক কয়টি?
খ. বিভেদক লক্ষণ বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দিপকে বর্ণিত মানুষের 'ক্ষুধা' ও 'তৃষ্ণা' কীভাবে উপলক্ষণ হিসেবে কাজ করে?
ঘ. বর্ণিত উদ্দিপকের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রকার বিধেয়কের উদাহরণসহ ব্যাখ্যা দাও।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বিধেয়ক পাঁচ প্রকার।

খ. যে গুণের কারণে একই জাতির অন্তর্ভুক্ত একটি উপজাতিকে তার সমজাতীয় অন্যান্য উপজাতি থেকে পৃথক করা হয়, তাকে বিভেদক লক্ষণ বলে।
বিভেদক লক্ষণ হলো জাত্যর্থের অপরিহার্য অংশ বিশেষ। যেমন- মানুষের মধ্যে রয়েছে 'বুদ্ধিবৃত্তি' ও 'জীববৃত্তি' নামক গুণ। অন্যদিকে বিভিন্ন প্রাণীর রয়েছে 'জীববৃত্তি' গুণ। এই 'বুদ্ধিবৃত্তি' গুণের কারণে মানুষ তার সমজাতীয় অন্যান্য উপজাতি থেকে পৃথক হয়। এজন্য 'বুদ্ধিবৃত্তি' গুণকে মানুষ পদের বিভেদক লক্ষণ বলে।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত মানুষের ক্ষুধা ও তৃষ্ণা উপলক্ষণ হিসেবে কাজ করে।
উপলক্ষণ বলতে সাধারণ অর্থে আমরা বুঝি লক্ষণের থেকে নিঃসৃত বা অনুমিত একটা কিছু। উপলক্ষণ জাত্যর্থ থেকে নিঃসৃত কোনো গুণ বিশেষ। যে গুণ কোনো একটি পদের জাত্যর্থ বা জাত্যর্থের অংশ নয়; কিন্তু জাত্যর্থ বা এর কোনো অংশ থেকে অনির্দিষ্টভাবে নিঃসৃত হয়, তাকে উপলক্ষণ বলে। কারণ থেকে যেভাবে কার্য নিঃসৃত হয় অথবা আশ্রয়বাক্য থেকে যেভাবে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয়, সেখানে জাত্যর্থ থেকে উপলক্ষণ অনুমিত হয়। যেমন: মানুষ হলো এমন জীব যাদের যুক্তিবিদ্যা বোঝার ক্ষমতা আছে। এই যুক্তিবাক্যে 'যুক্তিবিদ্যা বোঝার ক্ষমতা' মানুষ পদটির একটি উপলক্ষণ।
উদ্দীপকে মানুষের ক্ষুধা, তৃষ্ণা ইত্যাদি গুণ মানুষের জাত্যর্থের অংশ নয়। কিন্তু এগুলো মানুষ পদের জাত্যর্থ জীববৃত্তি থেকে অনিবার্য ভাবে অনুমিত হয়। কেননা জীববৃত্তি থাকলেই তার ক্ষুধা, তৃষ্ণা থাকবে। তাই ক্ষুধা, তৃষ্ণা গুণগুলো মানুষের উপলক্ষণ।

ঘ. উদ্দীপকের আলোকে বিধেয়কের পাঁচটি প্রকারভেদ উল্লেখ করা যায়।
গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল সর্বপ্রথম যুক্তিবিদ্যায় বিধেয়কের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি বিধেয়ককে চার ভাগে ভাগ করেন। গ্রিক দার্শনিক পরফিরি বিধেয়ককে জাতি, উপজাতি বিভেদক লক্ষণ, উপলক্ষণ এবং অবান্তর লক্ষণ নামক পাঁচটি প্রকরণ করেন।
উদ্দীপকে উল্লিখিত জীবজগতের সাথে মানুষের সম্পর্ক যেমন 'জাতি' হিসেবে বিবেচ্য তেমনিভাবে 'মানুষ' পদটি জীবের উপজাতি হিসেবে বিবেচিত। এছাড়াও উদ্দীপকে উল্লিখিত 'বুদ্ধিবৃত্তি', 'চিন্তাশীল প্রাণী', হাস্যপ্রিয়' এই তিনটি পদ দ্বারা যথাক্রমে বিভেদক লক্ষণ, উপলক্ষণ ও অবান্তর লক্ষণকে নির্দেশ করে। অবান্তর লক্ষণ হচ্ছে এমন একটি গুণ যা জাত্যর্থের অংশ না আবার জাত্যর্থ থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃতও হয় না। অর্থাৎ অবান্তর লক্ষণ কোনো পদের আবশ্যকীয় গুণ নয়। যেমন- উদ্দীপকে বর্ণিত হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, মৃত্যু গুণগুলো হলো অবান্তর লক্ষণ। মানুষের ‘বুদ্ধিবৃত্তি' হলো বিভেদক লক্ষণ এবং ক্ষুধা, তৃষ্ণা হলো উপলক্ষণ।
পরিশেষে বলা যায়, যে গুণ বা গুণাবলি কোনো জাতির অন্তর্গত অন্যান্য উপজাতি থেকে একটি বিশেষ উপজাতিকে আলাদা করে সেই গুণ বা গুণাবলিকে বিভেদক লক্ষণ বলে। অন্যদিকে উপলক্ষণ হলো জাত্যর্থ থেকে নিঃসৃত কোনো গুণ বিশেষ এবং যে গুণ বা গুণাবলি কোনো পদের জাত্যর্থ বা জাত্যর্থের অংশ নয়, আবার জাত্যর্থ থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত ও নয়, তাকে অবান্তর লক্ষণ বলে।

৯. মি. রবিন আকারে ছোটখাটো। কিন্তু সদা হাস্যপ্রিয় এবং যুক্তিবিদ্যার একজন জনপ্রিয় শিক্ষক। ক্লাসে বিধেয়ক পড়াতে গিয়ে তিনি বললেন, 'জড় এবং জীবন নিয়ে গঠিত এই বিশ্বজগৎ খুবই সুন্দর। জীবজগতে মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব, কারণ মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি রয়েছে। জগতের অন্যান্য সব প্রাণী জন্মগ্রহণ করে, খায়, ঘুমায়, বংশবিস্তার ও জীবনধারণ করে। একসময় তারা মারা যায়। কিন্তু মানুষ তার নিজস্ব চিন্তা ও বিচারশক্তি দিয়ে প্রাণিজগতে তার শ্রেষ্ঠত্বকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে।'
ক. এরিস্টটলের মতে বিধেয়ক কত প্রকার?
খ. বিভেদক লক্ষণ বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে কোন প্রকার সম্বন্ধের ইঙ্গিত পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে বিধেয়কের প্রকারভেদ উল্লেখপূর্বক অবান্তর লক্ষণ বিশ্লেষণ করো।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. এরিস্টটলের মতে বিধেয়ক চার প্রকার।

খ. যে গুণের কারণে একই জাতির অন্তর্ভুক্ত একটি উপজাতিকে তার সমজাতীয় অন্যান্য উপজাতি থেকে পৃথক করা হয়, তাকে বিভেদক লক্ষণ বলে।
বিভেদক লক্ষণ হলো জাত্যর্থের অপরিহার্য অংশ বিশেষ। যেমন- মানুষের মধ্যে রয়েছে 'বুদ্ধিবৃত্তি' ও 'জীববৃত্তি' নামক গুণ। অন্যদিকে বিভিন্ন প্রাণীর রয়েছে 'জীববৃত্তি' গুণ। এই 'বুদ্ধিবৃত্তি' গুণের কারণে মানুষ তার সমজাতীয় অন্যান্য উপজাতি থেকে পৃথক হয়। এজন্য 'বুদ্ধিবৃত্তি' গুণকে মানুষ পদের বিভেদক লক্ষণ বলে।

গ. উদ্দীপকে মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে লক্ষণ বা বিভেদক লক্ষণ এর ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
বিভেদক লক্ষণ হলো জাত্যর্থের অপরিহার্য অংশ বিশেষ যা দ্বারা একটি উপজাতি অন্যান্য উপজাতি থেকে পৃথক হয়। যেমন- মানুষ 'বুদ্ধিবৃত্তি' গুণের কারণে অন্যান্য উপজাতি তথা গরু, ঘোড়া, বিড়াল ইত্যাদি প্রাণী থেকে পৃথক।
উদ্দীপকে বর্ণিত শিক্ষক মহোদয় জনাব রবিন ক্লাসে বলেন, মানুষ জগতের অন্যান্য সব প্রাণীর মতো জন্মগ্রহণ করে, খায়, ঘুমায়, বংশবিস্তার ও জীবনধারণ করে। কিন্তু মানুষ তার বুদ্ধিবৃত্তি শক্তি দিয়ে প্রাণিজগতে শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছে। অর্থাৎ তিনি বুদ্ধিবৃত্তি গুণের মাধ্যমে মানুষকে অন্যান্য প্রাণী থেকে পৃথক করেছেন। যা বিভেদক লক্ষণের অন্তর্ভুক্ত। এ কারণে বলা যায়, উদ্দীপকে মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে বিভেদক লক্ষণের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

ঘ. উদ্দীপকের আলোকে বিধেয়কের পাঁচটি প্রকারভেদ উল্লেখ করা যায়।
গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল সর্বপ্রথম যুক্তিবিদ্যায় বিধেয়কের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি বিধেয়ককে চার ভাগে ভাগ করেন। গ্রিক দার্শনিক পরফিরি বিধেয়ককে জাতি, উপজাতি, বিভেদক লক্ষণ, উপলক্ষণ এবং অবান্তর লক্ষণ নামক পাঁচটি প্রকরণ করেন।
উদ্দীপকে উল্লিখিত জীবজগতের সাথে মানুষের সম্পর্ক যেমন 'জাতি' হিসেবে বিবেচ্য তেমনিভাবে 'মানুষ' পদটি জীবের উপজাতি হিসেবে বিবেচিত। এছাড়াও উদ্দীপকে উল্লিখিত 'বুদ্ধিবৃত্তি', 'চিন্তাশীল প্রাণী', হাস্যপ্রিয়' এই তিনটি পদ দ্বারা যথাক্রমে বিভেদক লক্ষণ, উপলক্ষণ ও অবান্তর লক্ষণকে নির্দেশ করে। অবান্তর লক্ষণ হচ্ছে এমন একটি গুণ যা জাত্যর্থের অংশ না আবার জাত্যর্থ থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃতও হয় না। অর্থাৎ অবান্তর লক্ষণ কোনো পদের আবশ্যকীয় গুণ নয়। যেমন- উদ্দীপকে বর্ণিত শিক্ষক মহোদয় জনাব রবিন হন হাস্যপ্রিয়। এখানে 'হাস্যপ্রিয়' গুণটি হলো অবান্তর লক্ষণ। কারণ 'মানুষ' পদের জাত্যর্থ হলো 'জীববৃত্তি' ও 'বুদ্ধিবৃত্তি'। 'হাস্যপ্রিয়' গুণটি 'বুদ্ধিবৃত্তি' ও 'জীববৃত্তির' কোনটিরই অংশ নয়। এজন্য হাস্যপ্রিয় হলো অবান্তর লক্ষণ।
বিধেয়ক হলো যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের সম্পর্ক। এই সম্পর্ক প্রকাশের একটি প্রকরণ হলো অবান্তর লক্ষণ। যা বিধেয়কের অন্যান্য প্রকরণ থেকে ভিন্ন। কারণ অবান্তর লক্ষণ কোনো আবশ্যকীয় গুণ নয়। এ কারণে উদ্দীপকে বর্ণিত শিক্ষক মহোদয়ের 'হাস্যপ্রিয়' বৈশিষ্ট্যকে অবান্তর লক্ষণ বলা যায়।

১০. যাদের প্রাণ আছে তারা সবাই প্রাণী। মানুষ গরু, পাখি ইত্যাদি। এদের সবার ক্ষুধাতৃষ্ণা উৎপাদন ক্ষমতা আছে। মানুষ অন্যান্য প্রাণী থেকে পৃথক। কারণ মানুষের চিন্তা করার ক্ষমতা আছে। জীবন থাকার কারণে আরার গরু জীব শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
ক. বিধেয়ক কী?
খ. নঞর্থক বাক্যে বিধেয়কের প্রশ্ন অবান্তর কেন? বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকে মানুষ, গরু, পাখি শ্রেণির গুণাবলি কোন ধরনের বিধেয়ক নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপক অনুযায়ী মানুষ, গরু শ্রেণি ও জীবের মধ্যে যে ধরনের বিধেয়কের উল্লেখ পাওয়া যায় তার তুলনামূলক আলোচনা করো।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সদর্থক যুক্তিবাক্যের বিধেয় পদ উদ্দেশ্য পদের সাথে যে সম্পর্ক বহন করে তাকেই বলা হয় বিধেয়ক।

খ. নঞর্থক যুক্তিবাক্যে বিধেয়ক থাকে না।
বিধেয়ক হচ্ছে যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যকার এক প্রকার সম্পর্ক। এই সম্পর্ক কেবল সদর্থক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে তৈরি হয়। তাই সদর্থক যুক্তিবাক্যে বিধেয়ক থাকে। নঞর্থক যুক্তিবাক্যের বিধেয় পদটি উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে কোনো কিছু অস্বীকার করে। এজন্য নঞর্থক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক তৈরি হয় না। যেহেতু নঞর্থক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয় না, তাই নঞর্থক যুক্তিবাক্যে বিধেয়ক থাকে না।

গ. উদ্দীপকে মানুষ, গরু ও পাখি শ্রেণির মধ্যে উপলক্ষণ নামক বিধেয়কের নির্দেশনা পাওয়া যায়।
যে গুণ কোনো একটি পদের জাত্যর্থের অংশ না কিন্তু গুণটি অনিবার্যভাবে সেই জাত্যর্থ থেকে নিঃসৃত হয় তাকে উপলক্ষণ বলে। অর্থাৎ একটি পদের ‘উপলক্ষণ' বলতে সেই পদের জাত্যর্থের বাইরে কোনো সাধারণ ও অনিবার্য গুণকেই বুঝিয়ে থাকে। যেমন- 'বিবেকসম্পন্ন' গুণটি 'মানুষ' পদের জাত্যর্থের অংশ নয়, কিন্তু এ গুণটি 'বুদ্ধিবৃত্তি' জাত্যর্থ থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়েছে বলে এটা উপলক্ষণ।
উদ্দীপকে মানুষ, গরু ও পাখির ক্ষুধা-তৃষ্ণা উৎপাদনের ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে। ক্ষুধা তৃষ্ণা গুণ এদের জাত্যর্থের অংশ নয় কিন্তু জাত্যর্থ থেকে অনিবার্যভাবে অনুমিত হয়। তাই ক্ষুধা তৃষ্ণাকে উপলক্ষণ নামক বিধেয়কে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

ঘ. উদ্দীপকে মানুষের ক্ষেত্রে বিভেদক লক্ষণ এবং গরু ও জীবের মধ্যে জাতি-উপজাতি নামক বিধেয়কের উল্লেখ পাওয়া যায়।
যে গুণ বা গুণাবলি কোনো জাতির অন্তর্গত অন্যান্য উপজাতি থেকে একটি বিশেষ উপজাতিকে আলাদা করে সেই গুণ বা গুণাবলিকে বিভেদক লক্ষণ বলে। অর্থাৎ বিভেদক লক্ষণ হচ্ছে কোনো উপজাতির এমন গুণ বা গুণাবলি যা তার সারসত্তাকে প্রকাশ করে এবং অন্য উপজাতি থেকে তাকে পৃথক করে। অন্যদিকে কোনো সদর্থক যুক্তিবাক্যে দুটি শ্রেণিবাচক পদের মধ্যে বেশি ব্যক্ত্যর্থপূর্ণ শ্রেণিকে জাতি এবং তার অন্তর্গত কম ব্যক্ত্যর্থপূর্ণ শ্রেণিকে উপজাতি বলে।
উদ্দীপকে মানুষের চিন্তা করার ক্ষমতা উল্লেখ করা হয়েছে যা মানুষের বিভেদক লক্ষণ। অন্যদিকে জীব জাতির অন্তর্ভুক্ত হিসেবে গরু উপজাতি নামক বিধেয়কের বহিঃপ্রকাশ। অর্থাৎ বিভেদক লক্ষণ হচ্ছে উপজাতির সারসত্তা বা জাত্যার্থের অংশ। অন্যদিকে জাতি তার ব্যক্ত্যর্থ দ্বারা উপজাতির ব্যক্তার্থকে অন্তর্ভুক্ত করে।
সুতরাং বিভেদক লক্ষণ এবং উপজাতির মধ্যে গুণগত এবং পরিমাণগত উভয় পার্থক্য রয়েছে।
Share:

0 Comments:

Post a Comment