HSC গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৮

HSC গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download
এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Home Science 2nd Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চ মাধ্যমিক

গার্হস্থ্য বিজ্ঞান
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৮ম অধ্যায়

HSC Home Science 2nd Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১. আকিজ সাহেব একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং স্বল্পবেতন পান। কিন্তু তার অন্য দুভাই বেশ প্রতিষ্ঠিত ও অবস্থাসম্পন্ন। ভাইদের সাথে নিজেকে তুলনা করে তিনি সবসময় হীনম্মন্যতায় ভোগেন। তাই ভাইরা কোনো পারিবারিক বা সামাজিক অনুষ্ঠানে তাকে নিমন্ত্রণ করলে তিনি যান না। আকিজ সাহেবের এরূপ আচরণ তার ভাইদের কাছে প্রত্যাশিত না হওয়ায় তারা আকিজ সাহেবের ওপর বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
ক. মানসিক স্বাস্থ্য কেমন ধারণা?
খ. পরিবেশের সাথে সংগতি রেখে চলা গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গ.উদ্দীপকের আকিজ সাহেব মানসিক স্বাস্থ্যের কোন লক্ষণটিকে কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আকিজ সাহেব যদি তার মনের জটিল প্রক্রিয়াগুলোকে সহজ পথে চালিত করতেন তবে তৃপ্তিদায়ক পরিবেশ পেতে সক্ষম হতেন- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানসিক স্বাস্থ্য একটি গতিশীল ধারণা।

খ. মানসিক স্বাস্থ্য একটি গতিশীল ধারণা। যখন মানুষের মনে ইতিবাচক আবেগীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়, মানুষ মানসিক তৃপ্তি লাভ করে এবং নিজেকে সুখী মনে করে তখনই মানসিক স্বাস্থ্য অর্জিত হয়। আর মানসিক স্বাস্থ্য অর্জনের জন্য পরিবেশের সাথে সংগতি রেখে চলতে হয়। এর পাশাপাশি মানুষকে নিজের আচরণও নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। পরিবেশের সাথে সংগতি রেখে চললে মানুষ সমাজ প্রত্যাশিত আচরণ করে মানসিক স্বাস্থ্য অর্জন করতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্য অর্জনের জন্য পরিবেশের সাথে সংগতি রেখে চলা গুরুত্বপূর্ণ।

গ. উদ্দীপকের আকিজ সাহেব মানসিক স্বাস্থ্যের অবাঞ্ছিত ও অসামাজিক আচরণ থেকে বিরত থাকার লক্ষণটিকে কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছে।
WHO-এর মতানুসারে, মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষিত হয়েছে তখনই বলা যায়, যখন সে মনের দিক, শারীরিক এবং সামাজিক দিক থেকে সুস্থ, নীরোগ ও সুখী এবং জীবনের সর্বস্থ রেই তার কুশলতা বর্তমান থাকে। মানসিক স্বাস্থ্যের নানা লক্ষণ রয়েছে। এগুলো কোনো ব্যক্তির মাঝে বিদ্যমান থাকলে তাকে মানসিকভাবে সুস্থ বলা যায়। উদ্দীপকের আকিজ সাহেব একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে স্বল্প বেতনে চাকরি করেন। কিন্তু তার দুভাই বেশ প্রতিষ্ঠিত ও অবস্থাসম্পন্ন। ভাইদের সাথে নিজেকে তুলনা করে তিনি সবসময় হীনম্মন্যতায় ভোগেন। তাই ভাইরা কোনো পারিবারিক বা সামাজিক অনুষ্ঠানে তাকে নিমন্ত্রণ করলে তিনি যান না। তার এরূপ আচরণ ভাইদের কাছে প্রত্যাশিত না হওয়ায় আকিজ সাহেবের ওপর সবাই ক্ষুব্ধ। আকিজ সাহেবের এ ধরনের আচরণ তার মানসিক অসুস্থতার পরিচায়ক। মানসিক স্বাস্থ্যের একটি লক্ষণ হলো অবাঞ্ছিত ও অসামাজিক আচরণ থেকে বিরত থাকা। তাই বলা যায়, যারা এ ধরনের আচরণ করা থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তারাই মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।

ঘ. উদ্দীপকের আকিজ সাহেব যদি তার মনের জটিল প্রক্রিয়াগুলোকে সহজ ও স্বাভাবিক পথে চালিত করতেন তবে তিনি হীনম্মন্যতায় ভুগতেন না এবং ভালো থাকতে পারতেন।
মানুষ যত বাস্থ ব জীবনের সমস্যা সংকট মেনে নিয়ে জীবনের সাথে সংগতি বিধান করতে পারে ততই তার মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষিত হয়। আর এ উদ্দেশ্যে জীবনের জটিল ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াগুলোকে মানুষের সহজ পথে পরিচালিত করা জরুরি। উদ্দীপকের আকিজ সাহেব তার অবস্থাসম্পন্ন ভাইদের সাথে নিজেকে তুলনা করে সবসময় হীনম্মন্যতায় ভোগেন। তিনি তার মানসিক অস্থিরতার জন্য নিজেই দায়ী। মানসিক স্বাস্থ্যের বেশকিছু লক্ষণ রয়েছে। এসব লক্ষণের মধ্যে মনের জটিল প্রক্রিয়াগুলোকে সহজ ও ইন্সিত পথে পরিচালিত করা এবং সমাজজীবনে স্বাভাবিক, তৃপ্তিদায়ক, আনন্দময় কার্যকর পরিবেশ রক্ষা করতে পারা অন্যতম। মানুষ যদি তার মনের জটিল ক্রিয়াগুলোকে সহজভাবে নিতে পারে তবেই তার পক্ষে ভালো থাকা সম্ভব। অতএব বলা যায়, মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটানো আবশ্যক। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের আকিজ সাহেব যদি তার মনের জটিল প্রক্রিয়াগুলোকে সহজ পথে চালিত করতেন তবে তৃপ্তিদায়ক পরিবেশ পেতেন। প্রশ্নের মন্তব্যটি তাই যথার্থ।

২. ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছে দোলা। তার মা তাকে অনেক কষ্ট করে তাকে বড় করেছেন। দোলা এখন কলেজে ভর্তি হয়েছে। মায়ের কষ্ট সে বুঝতে পারে। বাস্থ বতার সাথে সংগ্রাম করে বাঁচার শিক্ষা দোলার মা দোলাকে দিয়েছেন। তাই দোলা সবদিক বুঝে চলে এবং শত কষ্টেও হতাশ হয়ে পড়ে না। সবসময় ইতিবাচক চিন্তা করতেই পছন্দ করে সে। দোলা বিশ্বাস করে যে, সে একদিন তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে।
ক. প্রাপ্তবয়স্ক ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর কত শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত?
খ. মানসিক স্বাস্থ্যসম্পন্ন ব্যক্তি কীভাবে অটুট বিশ্বাস বজায় রাখেন?
গ. উদ্দীপকের দোলা যথাযথ অভিযোজন ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে কীভাবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দোলার মাঝে চারপাশের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলার সক্ষমতা উপস্থিত আছে কি? তোমার মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রাপ্তবয়স্ক ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর ১৬.১% মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত।

খ. মানসিক স্বাস্থ্যসম্পন্ন ব্যক্তি আত্মবিশ্বাসী হওয়ার মধ্য দিয়ে অটুট বিশ্বাস বজায় রাখেন। মানসিক দিক দিয়ে স্বাস্থ্যসম্পন্ন ব্যক্তি কখনো। তার আত্মবিশ্বাস হারায় না। প্রতিকূল ও সমস্যাসংকুল পরিবেশেও তিনি পরিপূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারেন। নিজের ওপর কোনো অবস্থাতেই তিনি বিশ্বাস হারান না। একজন মানসিক স্বাস্থ্যসম্পন্ন ব্যক্তির বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে অটুট বিশ্বাস বজায় রাখা অন্যতম। তাই বলা যায়, একজন মানসিক স্বাস্থ্যসম্পন্ন ব্যক্তি আত্মবিশ্বাসী হওয়ার মধ্য দিয়েই তার অটুট বিশ্বাস বজায় থাকে।

গ. উদ্দীপকের দোলা মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখার মধ্য দিয়ে তার যথাযথ অভিযোজন ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। মানসিকভাবে সুস্থ থাকা খুব সহজ কাজ নয়। তবে মনের বিভিন্ন জটিল ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণে আনার মাধ্যমে সমাজের সাথে সংগতিপূর্ণ আচরণ করা যায় এবং মানসিক সুস্থতা বিধান করা যায়। উদ্দীপকের দোলার মানসিক বিকাশ সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক হয়েছে। তার মধ্যে প্রবল আত্মবিশ্বাসেরও উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। দোলার বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় দেখা যায় যে, তার অভিযোজন ক্ষমতা অত্যন্ত দৃঢ়। মানসিক দিক দিয়ে সুস্থ ব্যক্তির চারপাশের পরিবেশ সবসময় অনুকূল নাও থাকতে পারে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই একজন মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তি তার মানসিক ভারসাম্য হারায় না। প্রচন্ড প্রতিকূল পরিবেশেও সে তার মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে। বাস্থ বতার সাথে সংগ্রাম করে জীবন অতিবাহিত করতে তার কোনো সমস্যা হয় না। যেকোনো পরিস্থিতিতেই সে সুখী থাকতে জানে। তাই সর্বাবস্থায় সুখী ব্যক্তিই মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।

ঘ. হ্যাঁ, উদ্দীপকের দোলার মাঝে চারপাশের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলার সকল ক্ষমতা উপস্থিত আছে।
মানসিক স্বাস্থ্য বলতে মনের দিক থেকে সুস্থ অবস্থা ও পরিবেশের সাথে সুস্থ সংগতি বিধান করাকে বোঝায়। মানুষ যদি বাস্থ ব জীবনের সমস্যা সংকট মেনে নিয়ে জীবন অতিবাহিত করার শিক্ষা লাভ করতে পারে তবে তার পক্ষে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব। আর চারপাশের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলার জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তিই উপযুক্ত। উদ্দীপকের দোলা আত্মবিশ্বাসী এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী। বাস্থ বতার সাথে সংগ্রাম করে জীবিকা নির্বাহ করতে জানে সে। অর্থাৎ তার চারপাশের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলার ক্ষমতা আছে। আমরা জানি যে, শরীর ভালো না থাকলে মনও ভালো থাকে না। তাই মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি নিজেকে চারপাশের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলার উপযোগীও করতে হবে। আর এজন্য চিন্তা করার ক্ষমতা, যুক্তি প্রয়োগ ও বিচার করার ক্ষমতা আবশ্যক। অতএব দেখা যায় যে, মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তিগণ বেশকিছু ক্ষমতা অর্জনের মধ্য দিয়ে নিজেকে চারপাশের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলেন। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের দোলার মাঝেও এ সকল ক্ষমতা উপস্থিত আছে বিধায় সে চারপাশের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে পারে।

৩. তিন্নি ও তীর্থ নববিবাহিত দম্পতি। তাদের মধ্যে বোঝাপড়া এখনও ততটা ভালোভাবে তৈরি হয়নি। সবসময়ই কারণে-অকারণে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এমনকি যেকোনো অনুষ্ঠানে গিয়েও তারা বাইরের লোকের সামনে ঝগড়া শুরু করে দেয়। এখন তাই তাদের আফসোস যে, তারা কেউই একে অপরকে পেয়ে সুখী নয়।
ক. মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে কত শতাংশ শিশু?
খ. মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তি অবাস্তব চাহিদা সৃষ্টি থেকে বিরত থাকেন কেন?
গ. উদ্দীপকের দম্পতি প্রয়োজনীয় সামাজিক বিকাশের বিচ্যুতি ঘটিয়েছেন কীভাবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দম্পতি যদি নিজেকে সুখী ভাবতে পারে তবে মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারবে- বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে ১৮.৪ শতাংশ শিশু।

খ. মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তি অসুখী হতে চান না বলে অবাস্তব চাহিদা সৃষ্টি থেকে বিরত থাকেন। মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তি তার চাহিদার মাত্রা সম্পর্কে সবসময় সচেতন থাকেন। সকল চাহিদা তার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার মধ্যে থাকে। এমন কোনো অবাস্তব চিন্তা তিনি করতে চান না যা তার সাধ্যের বাইরে। কেননা তিনি জানেন অবাস্তব চাহিদা মানুষকে অসুখী করে। আর অসুখী মানুষ কখনো মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারে না। তাই মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তি অবাস্তব চাহিদা থেকে বিরত থাকেন।

গ. উদ্দীপকের দম্পতি সামাজিক পরিবেশে রাগান্বিত হয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে প্রয়োজনীয় সামাজিক বিকাশের বিচ্যুতি ঘটিয়েছেন।
মানসিক স্বাস্থ্যসম্পন্ন ব্যক্তির মধ্যে নানা ধরনের বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। এসব বৈশিষ্ট্যের মধ্যে অন্যতম হলো প্রয়োজনীয় আবেগীয় ও সামাজিক বিকাশ সাধিত হওয়া। মানসিক দিক দিয়ে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তি সমাজের প্রত্যাশা অনুযায়ী কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। উদ্দীপকের তিন্নি ও তীর্থ সামাজিক পরিবেশে ও নিজেদের আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এর মাধ্যমে তাদের সামাজিক বিকাশের বিচ্যুতি ঘটেছে। মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তির আবেগীয় বিকাশ ও প্রকাশ স্বাভাবিক হয়ে থাকে। বিশেষ কারণ থাকলেও সামাজিক পরিবেশে তারা রাগান্বিত বা উত্তেজিত হয়ে পড়ে না। মানসিক দিক দিয়ে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তি সমাজের প্রত্যাশা অনুযায়ী কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। অতএব বলা যায়, সামাজিক বিকাশের বিচ্যুতি ঘটলেই মানুষ সামাজিক পরিবেশে আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না এবং উত্তেজিত হয়ে পড়ে।

ঘ. উদ্দীপকের দম্পতি যদি আফসোস না করে বরং নিজেদের সুখী ভাবতে পারে তবেই তারা মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে।
যেসব মানুষের মনের দিক থেকে সুস্থ অবস্থা ও পরিবেশের সাথে সুস্থ সংগতি বিধান করার ক্ষমতা আছে তারাই মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়। যারা নিজেকে 'সুখী, সক্ষম ও সফল ভাবতে পারে তারাই মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারে। উদ্দীপকের তিন্নি ও তীর্থ দম্পতি নববিবাহিত। তাদের মধ্যে এখনও বোঝাপড়া ততটা ভালোভাবে তৈরি হয়নি। এখন তারা কেবল আফসোস করে যে, তারা কেউই একে অপরকে পেয়ে খুশি নয়। এ অসমেত্মাষই তাদের মানসিক অসুস্থতার কারণ। কোনো ব্যক্তি যদি সমাজস্বীকৃত উপায়ে তার চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারে এবং সমাজে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে তারাই মানসিকভাবে সুস্থতার অধিকারী হয়। কোনো ব্যক্তি যদি নিজেকে সুখী, সক্ষম ও সফল মনে করে তবে তাকে মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী বলা যায়। তারা সবসময় নিজেকে আশাবাদী মনে করে। অতএব বলা যায় যে, মানুষ নিজেকে সুখী মনে করতে পারলেই মানসিক সুস্থতা অর্জন করতে পারে। সুতরাং বলা যায়, এক্ষেত্রে উদ্দীপকের দম্পতিও যদি নিজেকে সুখী ভাবতে পারে তবে তারাও মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারবে।

৪. আরিফ তার পরিবারের আর্থিক সংকটের দরুন বেশিদূর লেখাপড়া করতে পারেনি। তাই সে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে একটি টেইলারিংয়ের ব্যবসায় শুরু করল। লোন করে ব্যবসায় করায় তার মাথায় সবসময় চিন্তা কাজ করত। তবুও সে সবকিছু সামঞ্জস্য করে চলত এবং অন্যদেরকেও স্বনির্ভর হওয়ার অনুপ্রেরণা দিত।
ক. AIDS-এর বাংলা অর্থ কী?
খ. ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য কীভাবে বিবেচনা করা হয়?
গ. উদ্দীপকের আরিফের ব্যবসায় শুরু করার মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের কোন উপাদানটির প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আরিফকে কি মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী বলা যায়? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. AIDS-এর বাংলা অর্থ হলো 'অর্জিত রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ঘাটতির লক্ষণ সমষ্টি।'

খ. ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য বেশ কয়েকটি উপাদানের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হয়। মানসিক স্বাস্থ্য মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি দিক। মানসিক স্বাস্থ্য বিবেচনার জন্য যেসব উপাদানকে বিবেচনা করা হয় সেগুলো হলো- অটুট দৈহিক স্বাস্থ্য, ক্রিয়াশীল ও বাস্থ ব দৃষ্টিভঙ্গি, বুদ্ধি ও সামঞ্জস্য বিধানের ক্ষমতা, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পূর্ণ অংশগ্রহণ, নিজ পারিবারিক, গোষ্ঠী ও জাতীয় কল্যাণের দিকে সজাগ দৃষ্টি ও আত্মনির্ভরশীলতা। কোনো ব্যক্তির মধ্যে এসব বৈশিষ্ট্য উপস্থিত থাকলে তাকে মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী বলা যায়। তাই ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য বিবেচনায় এসব উপাদানকে ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়।

গ. উদ্দীপকের আরিফের ব্যবসায় শুরু করার মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের আত্মনির্ভরশীল হওয়া উপাদানটির প্রতিফলন ঘটেছে।
মানসিক স্বাস্থ্য হলো সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি হচ্ছে ব্যক্তির মানসিক ক্ষমতা, যার দ্বারা ব্যক্তি সমাজের সাথে সংগতি বিধান করে চলতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্যের অনেকগুলো উপাদান রয়েছে। এসব উপাদানের মধ্যে আত্মনির্ভরশীল হওয়াও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উদ্দীপকের আরিফ শিক্ষিত হয়ে একটি টেইলারিংয়ের ব্যবসায় শুরু করে। তার এ উদ্যোগের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার দিকটিই প্রতিফলিত হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তির মধ্যে যেসব উপাদানের উপস্থিত থাকে তার মধ্যে অন্যতম হলো আত্মনির্ভরশীল হওয়া। যেসব মানুষের মধ্যে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকে তাদেরকে মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী বলা হয়। তাই আত্মনির্ভরশীলতাকে মানসিক স্বাস্থ্যের অন্যতম উপাদান বলা হয়ে থাকে। আত্মনির্ভরশীল ব্যক্তি সর্বদা সুখী, সফল ও স্বাস্থ্যবান হয়ে থাকে। মনের সুস্থতা বজায় থাকলে শারীরিক সুস্থতাও বজায় থাকে। তাই বলা যায়, এ কারণেই মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে আত্মনির্ভরশীলতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ঘ. হ্যাঁ, উদ্দীপকের আরিফকে মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী বলা যায়। মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী একজন ব্যক্তি তার নিজের ক্ষমতা বুঝতে পারে, জীবনের স্বাভাবিক চাপসমূহের সাথে খাপ খাওয়াতে পারে, উৎপাদনশীলতার সাথে কাজ করতে পারে এবং সমাজে অবদান রাখতে পারে। উদ্দীপকের আরিফ আত্মনির্ভরশীল। লোন নিয়ে টেইলারিংয়ের ব্যবসা শুরু করায় তার মাথায় সবসময় চিন্তা কাজ করে। তবুও সে সবকিছু সামঞ্জস্য করে চলে এবং অন্যদেরকে স্বনির্ভর হওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়। তার এ বোধ এবং আচার-আচরণ তাকে মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হিসেবে উপস্থাপন করে। মানসিক স্বাস্থ্য হচ্ছে ব্যক্তির মানসিক ক্ষমতা, যার দ্বারা ব্যক্তি সমাজের সাথে সংগতি বিধান করে চলতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্যের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। এসব উপাদানের ভিত্তিতে একজন ব্যক্তিকে মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। যেসব মানুষ ক্রিয়াশীল ও বাস্থ ব দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী, যাদের বুদ্ধি ও সামঞ্জস্য বিধানের ক্ষমতা রয়েছে, যারা নিজের পাশাপাশি পরিবার, গোষ্ঠী ও জাতীয় কল্যাণের দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখে এবং যারা আত্মনির্ভরশীল তারা মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হিসেবে বিবেচিত হন। উপরিউক্ত উপাদানসমূহ যেসব ব্যক্তির মধ্যে বিদ্যমান থাকে তারা নিঃসন্দেহে মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হন। উদ্দীপকের আরিফের মধ্যে উপযুক্ত গুণাবলিসমূহ উপস্থিত থাকায় তাকে মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী বলা যায়।

৫. দীপার বয়স ৫ বছর। ছোট্ট শিশুটির দুষ্টুমি সবাইকে আনন্দ দেয়। তবে খেলার ছলে অনেক সময় সে ভুল করে ফেলে। তবে তার মা তাকে সবসময় বুঝিয়ে বলেন। আবার দীপা যদি ভালো ফল করে বা ভালো কাজ করে তবে তাকে নানারকম পুরস্কার দেওয়া হয়। তাই দীপাও বাবা-মায়ের সব কথা মেনে চলে।
ক. বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের কার ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পায়?
খ. শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে বিদ্যালয় ও শিক্ষকের ভূমিকা কী?
গ. উদ্দীপকের দীপার ঘটনায় শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে কোন বিষয়টির প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের ঘটনায় শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপাদানের উপস্থিতি নেই- বিশ্লেষণ কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের বন্ধুবান্ধব ও দলের ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পায়।

খ. শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে বিদ্যালয় ও শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষকের আচরণ ও পাঠ্যক্রম শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কঠিন পাঠ্যক্রম, শ্রেণিকক্ষে কঠোর শাস্থি প্রদান, বিদ্যালয়ের বিশৃঙ্খলা পরিবেশ শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষুণ্ণ করে। একজন শিক্ষক সহজেই লাজুক, নিঃসঙ্গ বা আত্মধারণাহীন শিশুকে সহযোগিতা করে আত্মবিশ্বাস অর্জনে সহায়তা করতে পারেন। পরবর্তীকালে আত্মবিশ্বাসী হয়ে সে অন্যদের সাথে সুস্থ স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। তাই শিশুর বাসগৃহ ও বিদ্যালয়ের পরিবেশ যেন মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে সহায়ক হয় সেদিকে লক্ষ রাখা আবশ্যক।

গ. উদ্দীপকের দীপার ঘটনায় শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনের শাসন পরিচালনা বিষয়টির প্রতিফলন ঘটেছে।
শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে পিতামাতার শাসন পরিচালনা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। পিতামাতা শিশুর মধ্যে অর্থপূর্ণ আচরণ, শৃঙ্খলাবোধ, মূল্যবোধের বিকাশ ইত্যাদির জন্য নানা ধরনের পরিচালনা পদ্ধতি প্রয়োগ করেন। এগুলো শিশুদের ওপর নানা ধরনের প্রভাব ফেলে। উদ্দীপকের দীপার বাবা-মায়ের এরূপ শাসন পদ্ধতি দীপার ব্যক্তিত্ববোধ গঠনে সহায়তা করবে। শিশু পরিচালনায় শিশুকে এমনভাবে শিক্ষা প্রদান করতে হবে যেন সে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ অর্জন করতে শেখে। ভালো কাজের স্বীকৃতি বা পুরস্কার ও মন্দ কাজের শাস্থি সম্পর্কে শিশুকে সচেতন করতে হবে। শিশুর পক্ষে ভুল করা স্বাভাবিক। শিশু ভুল করলে তাকে শান্তভাবে বুঝিয়ে বলতে হবে। অতিরিক্ত শাসন ও অবাঞ্ছিত সমালোচনা শিশুর মনের স্বাভাবিক বিকাশকে ব্যাহত করে এবং মানসিক স্বাস্থ্য নষ্ট করে দেয়। তাই শিশুকে শাসন করতে হবে ভালোবাসার সাথে।

ঘ. উদ্দীপকের ঘটনায় শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনের একটি উপাদানকে তুলে ধরা হলেও অন্যান্য সকল প্রয়োজনীয় উপাদানকে উপস্থাপন করা হয়নি।
মানসিক স্বাস্থ্য হচ্ছে ব্যক্তির মানসিক ক্ষমতা, যার দ্বারা ব্যক্তি সমাজের সাথে সংগতি বিধান করে চলতে পারে। শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে নানা ধরনের উপাদান গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে। শিশুর ব্যক্তিত্বের সুষ্ঠু বিকাশই তার মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা করার উপায়। উদ্দীপকের শিশু দীপা ভুল করলে তাকে বুঝিয়ে বলা, সে ভালো ফল বা ভালো কাজ করলে তাকে পুরস্কার দেওয়া ইত্যাদি কাজ শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে শাসন পরিচালনার প্রভাবকেই উপস্থাপন করে। কিন্তু এর বাইরেও শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে আরও অনেক উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে স্বাস্থ্যকর গৃহ পরিবেশ, পিতামাতার স্বাস্থ্যকর দাম্পত্য জীবন, শিশুর প্রতি পিতামাতার আসক্তি, শিশুর সহজাত, মানসিক ও সামাজিক চাহিদাগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থা, বয়ঃসন্ধিকালে পদার্পণ পর্যায়ে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি, বিদ্যালয় ও শিক্ষক এবং সামাজিক প্রতিরোধমূলক অবস্থা ইত্যাদি বিষয় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অতএব দেখা যায় যে, শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে শাসন পরিচালনা ছাড়াও অন্যান্য আরও অনেক বিষয়ের গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু উদ্দীপকে এসব বিষয়ের কোনো আলোচনা নেই। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের ঘটনায় শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপাদানের উপস্থিতি নেই।

৬. বিলুকিস বেগম একজন স্বাস্থ্যকর্মী। তিনি গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে নারীদের পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা দিয়ে থাকেন। তিনি তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়াস চালান। তাদেরকে বলেন গর্ভাবস্থা ছাড়া অন্যান্য সময়েও তারা যেন প্রজনন স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হন।
ক. ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?
খ. প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি কেন?
গ. উদ্দীপকের বিলকিস বেগমের প্রয়াস প্রজনন স্বাস্থ্যের আওতাভুক্ত কোন বিষয়টিকে ইঙ্গিত করছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি প্রজনন স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তাকেই তুলে ধরেছে- বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট মিশরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত হয়।

খ. নিরাপদ ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি বিশেষ অংশ হচ্ছে প্রজনন স্বাস্থ্য। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেরই প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন হয়। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী একজন মহিলার শুধু গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী সময়ে প্রজনন স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে এ ধারণায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। শৈশব, কৈশোর, যৌবন ও বৃদ্ধ বয়সে অর্থাৎ জীবন বিকাশের প্রতিটি স্থ রেই প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়টি জড়িত। তাই সুস্থ জীবনযাপন করার জন্য প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি।

গ. উদ্দীপকের বিলকিস বেগমের প্রয়াস প্রজনন স্বাস্থ্যের আওতাভুক্ত সন্তান উৎপাদনের স্বাধীনতার বিষয়টিকে ইঙ্গিত করছে। মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি বিশেষ অংশ হচ্ছে প্রজনন স্বাস্থ্য। নিরাপদ ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য প্রত্যেকেরই প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে মৌলিক ধারণা থাকা জরুরি। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেরই প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন হয়। প্রজনন স্বাস্থ্যের আওতাভুক্ত বেশকিছু বিষয়ের মধ্যে অন্যতম হলো সন্তান উৎপাদনে স্বাধীনতার অধিকার। ICPD-এর ঘোষণা অনুসারে প্রজনন স্বাস্থ্যের আওতাভুক্ত অনেকগুলো বিষয় রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতায় ব্যক্তির স্বাধীনতা। প্রজনন স্বাস্থ্যের মধ্যে যৌন স্বাস্থ্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বর্তমানে সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতায় ব্যক্তির স্বাধীনতা রয়েছে। এ স্বাধীনতা আবার কয়েকটি অধিকারের সাথে সম্পর্কিত। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে নারী- পুরুষের জানার অধিকার এমনি একটি অধিকার। পছন্দ অনুযায়ী নিরাপদ, কার্যকর এবং সাধ্যানুসারে গ্রহণযোগ্য পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের অধিকার সকল নারী-পুরুষেরই রয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটিতে গর্ভাবস্থা ছাড়া অন্যান্য সময়েও প্রজনন স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হতে বলা হয়েছে, যা প্রজনন স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তাকেই উপস্থাপন করে।
মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি বিশেষ অংশ হলো প্রজনন স্বাস্থ্য। নিরাপদ ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য প্রত্যেকেরই প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে মৌলিক ধারণা থাকা জরুরি। পূর্বে কেবল গর্ভকালীন বা প্রসব পরবর্তী সময়ে প্রজনন স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হতো। তবে বর্তমানে এ ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে প্রজনন স্বাস্থ্যের গুরুত্বের কারণে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেরই প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন রয়েছে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী একজন মহিলার শুধু গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী সময়ে প্রজনন স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে এ ধারণায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। এর কারণ হলো একটি শিশুর মায়ের গর্ভ থেকে শুরু করে শৈশব, কৈশোর, যৌবন ও বৃদ্ধ বয়স ইত্যাদি সকল স্থ রেই প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়টি জড়িত। তাই বলা যায়, গর্ভবস্থা ছাড়া অন্যান্য সময়েও প্রজনন স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হতে হবে। উদ্দীপকের শেষ বাক্যটিতে এ কথাই বলা হয়েছে, যা প্রজনন স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তাকেই তুলে ধরে।

৭. রামিসা টিভিতে একটি গ্রাম সম্পর্কিত রিপোর্ট দেখল। এ গ্রামটিতে সব মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। প্রায় সবারই ১৮ বছরের আগে বিয়ে এবং সন্তান হয়ে যায়। এ কারণে অল্প বয়সেই অনেক মেয়ে মৃত্যুবরণ করছে। তবুও গ্রামবাসী এ ব্যাপারে সচেতন হচ্ছে না।
ক. মানুষের প্রজনন স্বাস্থ্যজনিত রোগ কত ধরনের হয়?
খ. প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে কেন?
গ. উদ্দীপকে রামিসা যে গ্রামটি সম্পর্কে জানল সেখানে প্রজনন স্বাস্থ্য রক্ষার কোন উপায়টির অপপ্রয়োগ ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটি কি প্রজনন স্বাস্থ্য রক্ষার উপায় সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদানে সক্ষম? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের প্রজনন স্বাস্থ্যজনিত রোগ তিন ধরনের হয়।

খ.মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি বিশেষ অংশ হচ্ছে প্রজনন স্বাস্থ্য। বর্তমানকালে প্রজনন স্বাস্থ্যের ধারণা শুধু মাতৃস্বাস্থ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ, কিশোর-কিশোরী ও শিশু সকলেরই প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষা করা প্রয়োজন। আর এ কারণেই প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষা করার উপায় সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে। প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষার উপায় জেনে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালন করলে প্রজনন স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়।

গ. উদ্দীপকের রামিসা যে গ্রামটি সম্পর্কে জানল সেখানে প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষার বাল্যবিবাহ রোধ করার উপায়টির অপপ্রয়োগ ঘটেছে। মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি বিশেষ অংশ হচ্ছে প্রজনন স্বাস্থ্য। বর্তমানকালে এ প্রজনন স্বাস্থ্যের ধারণা কেবল মাতৃস্বাস্থ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী ও শিশু সকলেরই প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষা করা প্রয়োজন। প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষা করার অনেকগুলো উপায়ও রয়েছে, যার মধ্যে বাল্যবিবাহ রোধ করা অন্যতম। উদ্দীপকের রামিসা টেলিভিশনে যে গ্রাম সম্পর্কিত রিপোর্ট দেখল সেখানে বাল্যবিবাহের প্রকোপ লক্ষণীয়, যা প্রজনন স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির সম্মুখীন করে। নিরাপদ ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য প্রত্যেকেরই প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে মৌলিক ধারণা থাকা জরুরি। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেরই প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন হয়। এ কারণেই প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষার উপায় সম্পর্কে জানতে হয়। বাল্যবিবাহ রোধ করা প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষার অন্যতম উপায়। এটি রোধ করতে পারলে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভকালও প্রতিহত করা যায় এবং নারীদের অকাল মৃত্যু রোধ করা যায়। তাই প্রজনন স্বাস্থ্য রক্ষার্থে বাল্যবিবাহ রোধ করা অতীত গুরুত্বপূর্ণ।

ঘ. না, উদ্দীপকটি প্রজনন স্বাস্থ্য রক্ষার উপায় সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদানে সক্ষম নয়।
মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি বিশেষ অংশ হচ্ছে প্রজনন স্বাস্থ্য। নিরাপদ ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য প্রত্যেকেরই প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে মৌলিক ধারণা থাকা জরুরি। বর্তমানকালে এ ধারণা কেবল মাতৃস্বাস্থ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তাই প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষার নানাবিধ উপায় সম্পর্কে সকলের ধারণা থাকা আবশ্যক। উদ্দীপকের রামিসার রিপোর্টে দেখা গ্রামটিতে বাল্যবিবাহের প্রকোপ লক্ষণীয়। বাল্যবিবাহ রোধ প্রজনন স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হওয়া সত্ত্বেও এ গ্রামটিতে এর অপপ্রয়োগ ঘটেছে। তবে প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য এর বাইরেও অনেক উপায় রয়েছে, যা এখানে উল্লেখ নেই। এসব উপায়ের মধ্যে রয়েছে- পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, যৌন ও প্রজনন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কিত সকল কুসংস্কার নির্মূল করা, গর্ভকালীন সময়ে মায়ের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া, ধর্মীয় রীতিনীতি ও সামাজিক অনুশাসন মেনে চলা, প্রজনন স্বাস্থ্যজনিত রোগ সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা ইত্যাদি। অতএব দেখা যায় যে, প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষার্থে বহুবিধ উপায় অবলম্বন করতে হয়। কিন্তু উদ্দীপকে এসব উপায় সম্পর্কে কোনো আলোচনা করা হয়নি। এখানে কেবল একটি উপায়ের অপপ্রয়োগকে দেখানো হয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি প্রজনন স্বাস্থ্য রক্ষার উপায় সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদানে সক্ষম নয়।

৮. নাঈমা মা হতে যাচ্ছে শুনে তার পরিবার অত্যন্ত খুশি। মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়ি, স্বামী সবাই তার পর্যাপ্ত খেয়াল রাখছে। তাকে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া, তার খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা ইত্যাদি সকল বিষয়ে সবাই সচেতন দৃষ্টি রাখছে। তাই নাঈমাও তেমন সমস্যা অনুভব করছে না।
ক. মেয়েদের কত বছরের আগে গর্ভধারণ করা উচিত নয়?
খ. বয়ঃসন্ধিকালে প্রজনন স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায় কীভাবে?
গ. উদ্দীপকের প্রজনন স্বাস্থ্যের কোন উপাদানটির ইতিবাচক উপস্থিতি লক্ষণীয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের নাঈমার গর্ভকালীন সময়ের যত্ন নেওয়ার মধ্য দিয়ে পক্ষান্তরে শিশুরই যত্ন নেওয়া হচ্ছে- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মেয়েদের ২০ বছরের আগে গর্ভধারণ করা উচিত নয়।

খ. বয়ঃসন্ধিকালে সতর্কতা অবলম্বনপূর্বক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে প্রজনন স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়। বয়ঃসন্ধিকালে ১১ থেকে ১৩ বছর বয়সে মেয়েদের ঋতুস্রাব ও ছেলেদের স্বপ্নদোষ ঘটে থাকে। এ সময় থেকেই এসব সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধিসমূহ মেনে চলতে হবে। কারণ এ সময় থেকেই ছেলে ও মেয়েরা প্রজননক্ষম হয়ে ওঠে। তাই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার মাধ্যমে বয়ঃসন্ধিকালে প্রজনন স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়।

গ. উদ্দীপকে প্রজনন স্বাস্থ্যের নিরাপদ মাতৃত্ব উপাদানটির ইতিবাচক উপস্থিতি লক্ষণীয়।
মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি বিশেষ অংশ হচ্ছে প্রজনন স্বাস্থ্য। নিরাপদ ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য প্রত্যেকেরই প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত মৌলিক ধারণা থাকা জরুরি। প্রজনন স্বাস্থ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো নিরাপদ মাতৃত্ব। নিরাপদ মাতৃত্ব বলতে বোঝায় গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসবোত্তর সময়ে মায়ের সুস্থতা বজায় রাখা। উদ্দীপকের নাঈমার ও নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গর্ভাবস্থায় ও প্রসূতি অবস্থার ক্ষেত্রে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার ভালো জ্ঞান থাকা এবং এ সেবা প্রদান ও গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। নিরাপদ মাতৃত্ব বলতে বোঝায় গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসবোত্তর সময়ে মায়ের সুস্থতা বজায় রাখা। এ উদ্দেশ্যে গর্ভকালীন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সেবা ও উপদেশ গ্রহণ করতে হবে। এভাবেই নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করা যায়, যা প্রজনন স্বাস্থ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

ঘ. উদ্দীপকের নাঈমার গর্ভকালীন সময়ের যত্ন নেওয়ার মধ্য দিয়ে মূলত তার গর্ভের সন্তানেরই যত্ন নেওয়া হচ্ছে।
প্রজনন স্বাস্থ্যের অন্যতম উপাদান হলো শিশুর জন্মপূর্ব যত্ন। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতকরণে গর্ভবতী মায়ের নানা ধরনের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। তার যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে মূলত মায়ের গর্ভে থাকা সন্তানেরই যত্ন নেওয়া হয়। উদ্দীপকের নাঈমা মা হতে যাচ্ছে শুনে তার পরিবার অত্যন্ত খুশি। মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়ি, স্বামী সবাই তার দিকে পর্যাপ্ত খেয়াল রাখছে। এভাবে নাঈমার প্রতি খেয়াল রাখার মধ্য দিয়ে মূলত তার গর্ভের সন্তানেরই যত্ন নেওয়া হচ্ছে। শিশুর জন্মপূর্ব যত্ন বলতে গর্ভবতী মায়ের যত্ন নেওয়াকে বোঝায়। গর্ভবতী মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিমানসম্পন্ন সুষম খাদ্য দেওয়া, হালকা কাজকরতে দেওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিতে দেওয়া, তার মনকে প্রফুল্ল রাখা, তাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে বলা ইত্যাদি মায়ের পাশাপাশি শিশুর যত্ন নেওয়ার জন্যও বলা হয়। অতএব দেখা যায় যে, মায়ের গর্ভকালীন সময়ে মা ও তার শিশু আলাদা নয়। তাই মায়ের যত্ন নিলে শিশুরও যত্ন নেওয়া হয়। সার্বিক দিক বিবেচনা শেষে প্রশ্নের মন্তব্যটিকে যথার্থ বলা যায়।

৯. নাজমুন বেগমের বয়স ৫২ বছর। সম্প্রতি তিনি লক্ষ করলেন যে, বেশ কয়েকদিন যাবৎ তার মাসিক বন্ধ রয়েছে। এ কারণে তার বেশকিছু সমস্যা হচ্ছে। তার মেজাজও বেশ খিটখিটে থাকে। চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি একে স্বাভাবিক বিষয় বলে জানালেন।
ক. জন্মের পর থেকে কতদিন পর্যন্ত শিশুকে নবজাতক বলা হয়?
খ. মা ও শিশুর পুষ্টি অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো যায় কীভাবে?
গ. উদ্দীপকের নাজমুন বেগম কোন ধরনের সমস্যার শিকার? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে নাজমুন বেগমের ঘটনায় প্রজনন স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয় সকল উপাদান সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়নি- বিশ্লেষণ কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জন্মের পর থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত শিশুকে নবজাতক বলা হয়।

খ. পুষ্টি বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে মা ও শিশুর পুষ্টি অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো যায়। আমাদের দেশের অধিকাংশ মা ও শিশু অপুষ্টিতে ভোগে। এর প্রধান কারণ হলো পুষ্টি সম্পর্কে সচেতনতার অভাব। গর্ভবতী মা ও স্থ ন্যদানকারী মা অপুষ্টিতে ভোগেন বলেই শিশু অপুষ্টির শিকার হয়। সময়ের নির্দিষ্ট ব্যবধানে গর্ভধারণ, পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও পুষ্টি সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে মা ও শিশুর পুষ্টি অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো যায়। এটি প্রজনন স্বাস্থ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

গ. উদ্দীপকের নাজমুন বেগম, মেনোপজজনিত সমস্যার শিকার। ৫০-৫৫ বছর বয়সে বা তার আগেই অনেকের মাসিক স্থায়িভাবে বন্ধ হয়ে যায়। নারীদেহে সংঘটিত এ সমস্যাকে বলা হয় মেনোপজজনিত সমস্যা। উদ্দীপকের নাজমুন বেগম বয়স ৫২ বছর। সম্প্রতি তিনি লক্ষ করলেন যে, বেশ অনেকদিন যাবৎ তার মাসিক বন্ধ রয়েছে। এ কারণে তার বেশকিছু সমস্যাও হচ্ছে। তার মেজাজ বেশ খিটখিটে থাকে। চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি একে স্বাভাবিক বলে জানান। এ ধরনের সমস্যাকে বলা হয় মেনোপজ। নারীরা সাধারণত ১৫-৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত গর্ভধারণ ও প্রজননে সক্ষম। ৫০-৫৫ বছর বয়সে বা তার আগেই অনেকের মাসিক স্থায়িভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থাকে বলা হয় মেনোপজ। এ সময় বিভিন্ন প্রকার শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যথাযথ সেবার মাধ্যমে এসব সমস্যা বহুলাংশে লাঘব করা সম্ভব। নারীদের একটি নির্দিষ্ট বয়সে স্বাভাবিকভাবেই মাসিক বন্ধ হয়ে যায়। এ ধরনের সমস্যাকেই বলা হয় মেনোপজজনিত সমস্যা।
পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকের নাজমুন বেগমের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি মেনোপজজনিত সমস্যায় ভুগছেন বলেই তার বেশকিছু সমস্যাসহ মেজাজ খিটখিট থাকে।

ঘ. উদ্দীপকের নাজমুন বেগমের ঘটনায় প্রজনন স্বাস্থ্যের একটি সমস্যাকে তুলে ধরা হলেও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়নি।
বর্তমানে প্রজনন স্বাস্থ্যের ধারণা শুধু মাতৃস্বাস্থ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ, কিশোর-কিশোরী ও শিশু সকলেরই প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষা করা প্রয়োজন। এর অনেকগুলো উপাদান রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে সকলের ধারণা থাকা প্রয়োজন। উদ্দীপকের নাজমুন বেগমের এ ধরনের সমস্যাকে মেনোপজ বলা হয়। তবে প্রজনন স্বাস্থ্যের অন্যান্য সকল প্রয়োজনীয় উপাদান সম্পর্কে এখানে ধারণা দেওয়া হয়নি। প্রজনন স্বাস্থ্যের অন্যান্য উপাদানের মধ্যে রয়েছে- বয়ঃসন্ধিকালে প্রজনন স্বাস্থ্য, উপযুক্ত বয়সে গর্ভধারণ, নিরাপদ মাতৃত্ব, শিশুর জন্মপূর্ব যত্ন, নবজাতকের পরিচর্যা, মা ও শিশুর পুষ্টি, অনিরাপদ গর্ভপাত প্রতিরোধ, পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজননতন্ত্রের বিভিন্ন রোগের সেবা ও রোগ প্রতিরোধ। তাই আমি মনে করি উদ্দীপকের ঘটনায় প্রজনন স্বাস্থ্যের একটি উপাদানকে তুলে ধরা হলেও উপরিউক্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়নি।

১০. সাইফুল সাহেব দীর্ঘদিন বিদেশে বসবাস করার পর দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরে আসার পর তিনি তার স্ত্রীকে জানালেন যে, তিনি এইডস রোগে আক্রান্ত। এ কথা শোনার পর তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেল এবং পরিবারের অন্যান্যরাও তাকে ঘৃণা করতে লাগল।
ক. দেশে কতটি রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে?
খ. এইডস প্রতিরোধে আবেগ প্রশমন করা জরুরি কেন?
গ. উদ্দীপকের সাইফুল সাহেবের প্রতি তার পরিবার কিরূপ আচরণ করতে পারত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে সাইফুল সাহেবকে স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে দেওয়ার জন্য কি কেবল পরিবারের সহায়তাই যথেষ্ট? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. দেশে ৯৮টি রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

খ. আবেগ প্রশমন করলে নানা ধরনের অনিয়ন্ত্রিত আচরণকে বশে আনা যায় যা এইডস প্রতিরোধে সহায়ক এবং এ কারণেই এইডস প্রতিরোধে আবেগ প্রশমন করা জরুরি। কৌতূহল ও আবেগের বশবর্তী হয়েই কিশোর-কিশোরীরা নানা ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে। এ কারণে তাদের আবেগ প্রশমনে দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করা অত্যন্ত জরুরি। বড়দের সাথে বিশেষ করে মা-বাবার সাথে সব বিষয়ে খোলামেলা কথা বললে খুব সহজেই আবেগ প্রশমিত হয় এবং কৌতূহল দূর হয়। তাই মা-বাবার সন্তানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। কিশোর-কিশোরীদের আবেগ প্রশমন করা সম্ভব হলে তারা যেকোনো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ পরিহার করে চলবে যা এইডস প্রতিরোধে সহায়ক হবে।

গ. উদ্দীপকের সাইফুল সাহেবের প্রতি তার পরিবার সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করতে পারত।
এইডস কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। এ কারণেই এইডস আক্রান্ত রোগীর সাহচর্যে থাকলে কিংবা তার সেবা করলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। যদি কোনো এইচআইভি আক্রান্ত রোগী পরিবারের ভালোবাসা ও সেবা পায় তবে তার জীবন কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হতে পারে। উদ্দীপকের সাইফুল সাহেব এইডস রোগে আক্রান্ত। তার এ কথা শুনে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেলেন এবং পরিবারের অন্য সদস্যরাও তাকে ঘৃণা করতে লাগল। কিন্তু সাইফুল সাহেবের প্রতি তার পরিবারের এরূপ আচরণ প্রদর্শন করা অনুচিত। যদি কোনো এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তি পারিবারিকভাবে সেবা, সহযোগিতা ও সহমর্মিতা পায় তবে তার এইডস পর্যায়ে পৌঁছানো দীর্ঘায়িত হতে পারে। এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তি যেন তার মনের জোর না হারায় সেজন্য তার পাশে থাকতে হবে। তার প্রতি সহমর্মিতার প্রকাশ হিসেবে তাকে পূর্বের মতোই একই রকম গুরুত্ব দিতে হবে এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। পরিবারের এমন সহযোগিতামূলক আচরণই একজন এইডস আক্রান্ত রোগীকে স্বাভাবিক জীবনযাপনে সাহায্য করতে পারে।

ঘ. না, উদ্দীপকের সাইফুল সাহেবকে বাঁচতে দেওয়ার জন্য কেবল পরিবারের সহায়তাই যথেষ্ট নয়।
এইডস আক্রান্ত রোগীর সম্পর্কে বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা আমাদের সমাজে স্থায়ী রূপ পেয়েছে। এ কারণে পরিবার ও সমাজ থেকে তাদেরকে আলাদা করে দেওয়া হয়। কিন্তু এতে তাদের স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপনের অধিকার খর্ব হয়, যা কেউ উপলব্ধি করতে পারে না। উদ্দীপকের সাইফুল সাহেব এইডস রোগে আক্রান্ত। এ কথা শোনার পর তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেলেন এবং পরিবারের অন্য সদস্যরাও তাকে ঘৃণা করতে লাগল। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে সাইফুল সাহেবের পরিবারের উচিত ছিল তার পাশে থেকে তাকে স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে দেওয়া। তবে এইডস আক্রান্ত রোগীদের স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা নিশ্চিত করতে পরিবারের পাশাপাশি সমাজকেও ভূমিকা রাখতে হবে। তার সাথে স্বাভাবিকভাবে মেলামেলা করতে হবে, তার চলাফেরার সব রকম বাধা দূর করতে হবে, কর্মস্থলে তাকে স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে এবং তাকে স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে দিতে হবে। অতএব বলা যায় যে, এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা নিশ্চিত করতে পরিবারের পাশাপাশি সমাজকেও ভূমিকা রাখতে হবে। তাই আমি মনে করি, উদ্দীপকের সাইফুল সাহেবকে স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে দেওয়ার জন্য কেবল পরিবারের সহায়তাই যথেষ্ট নয় সামাজিক এবং রাষ্ট্রের সহায়তাও দরকার।
Share:

0 Comments:

Post a Comment

২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি

HSC Exam Routine

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির গাইডসমূহ
(সকল বিভাগ)
বাংলা ১ম পত্র ১ম পত্র গাইড | বাংলা ২য় পত্র গাইড | লালসালু উপন্যাস গাইড | সিরাজুদ্দৌলা নাটক গাইড | ইংরেজি ১ম পত্র গাইড | ইংরেজি ২য় পত্র গাইড | আইসিটি গাইড | হিসাব বিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | হিসাব বিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | জীববিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | জীববিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র গাইড | ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র গাইড | রসায়ন ১ম পত্র গাইড | রসায়ন ২য় পত্র গাইড | পৌরনীতি ১ম পত্র গাইড | পৌরনীতি ২য় পত্র গাইড | অর্থনীতি ১ম পত্র গাইড | অর্থনীতি ২য় পত্র গাইড | ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বীমা ১ম পত্র গাইড | ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বীম ২য় পত্র গাইড | ভুগোল ১ম পত্র গাইড | ভুগোল ২য় পত্র গাইড | উচ্চতর গণিত ১ম পত্র গাইড | উচ্চতর গণিত ২য় পত্র গাইড | ইতিহাস ১ম পত্র গাইড | ইতিহাস ২য় পত্র গাইড | ইসলামের ইতিহাস ১ম পত্র গাইড | ইসলামের ইতিহাস ২য় পত্র গাইড | কৃষি শিক্ষা ১ম পত্র গাইড | কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র গাইড | যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র গাইড | যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র গাইড | মনোবিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | মনোবিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | পদার্থ বিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | পদার্থ বিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বাজারজাতকরণ ১ম পত্র গাইড | উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বাজারজাতকরণ ২য় পত্র গাইড | সমাজকর্ম ১ম পত্র গাইড | সমাজকর্ম ২য় পত্র গাইড | সমাজবিদ্য ১ম পত্র গাইড | সমাজবিদ্যা ২য় পত্র গাইড | পরিসংখ্যান ১ম পত্র গাইড | পরিসংখ্যান ২য় পত্র গাইড | ইংরেজি শব্দার্থ VOCABULARY

Admission Guide