HSC গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৬

HSC গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download
এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Home Science 2nd Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চ মাধ্যমিক

গার্হস্থ্য বিজ্ঞান
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৬ষ্ঠ অধ্যায়

HSC Home Science 2nd Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১. রাকিবের বয়সের শিশুরা অনেক আগে থেকেই স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। ভর্তির জন্য রাকিবকে তার বাবা, এ বছর স্কুলে নিয়ে গেলেন। প্রধান শিক্ষক রাকিবের কাছে নাম জিজ্ঞেস করলেন। রাকিব কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না। বরং ক্রমাগত নিজের হাতের আঙুল সঞ্চালন করে যাচ্ছিল। টিফিন পিরিয়ডে অন্য শিশুরা তার হাত ধর মাঠে খেলতে নিয়ে যেতে চাইলে সে নিজেকে গুটিয়ে রাখল। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি লক্ষ করে বললেন যে, রাকিবের উন্নয়নে পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব অনস্বীকার্য।
ক. বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের কয়ভাগে ভাগ করা যায় ?
খ. সব শিশু স্বাভাবিক নাও হতে পারে- বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত রাকিবের আচরণের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রাকিবের বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের ৪ ভাগে ভাগ করা যায়।

খ. সব শিশু স্বাভাবিক নাও হতে পারে। একটি সুস্থ শিশু সকলের কাম্য। তবে পৃথিবীতে এমন কিছু শিশু আসে, যাদের কিছু কিছু আচরণ অস্বাভাবিক। এরা কোনো কোনো দিক থেকে স্বাভাবিক শিশুর তুলনায় অন্যরকম। এসব শিশুর আচরণ স্বাভাবিক মানের নয়। যেমন- প্রতিবন্ধী শিশু প্রতিভাবান শিশু, অটিস্টিক শিশু। এদের কেউ কেউ জন্মগতভাবেই অস্বাভাবিক। আবার কেউ কেউ দুর্ঘটনার শিকার। কিছু কিছু শিশু স্বাভাবিক নাও হতে পারে। তাই বলে তাদেরকে ঘৃণা করা বা ছোট করে দেখা যাবে না। এদের পূর্ণ বিকাশের জন্য বিশেষ সেবা, শিক্ষা ও বিশেষ কর্মসূচির দরকার।

গ. উদ্দীপকের রাকিব একজন অটিস্টিক শিশু।
অটিজম এক ধরনের মানসিক পীড়া বা অক্ষমতা। অটিজম আক্রান্ত শিশুরা মানসিকভাবে অপরিপক্ব হয়। ফলে বয়সে উপযোগী আচরণে ব্যর্থ হয়। এরূপ সমস্যা যাদের মাঝে বিদ্যমান থাকে তাদেরকে অটিস্টিক বলা হয়। অটিস্টিক শিশুদের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন- দৃষ্টি সংযোগ করে না। পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ করে, সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে না। এসব শিশুরা অন্য শিশুদের মতো খেলে না। ডাকলে সাড়া দেয় না। শব্দের প্রতি কোনো প্রতিক্রিয়া করে না। এছাড়াও এরা অস্বাভাবিক দেহভঙ্গি করে। হাত দোলায় ইত্যাদি। উদ্দীপকে রাকিবকে নাম জিজ্ঞেস করা হলে সে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। বরং ক্রমাগত নিজের হাত সঞ্চালন করে যাচ্ছিল। সে অন্য ছেলেদের থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখছিল। যেটি অটিস্টিক শিশুর বৈশিষ্ট্য।
সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, রাকিবের এসব আচরণের কারণ হলো সে অটিস্টিক।

ঘ. রাকিবের বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য যৌক্তিক।
প্রধান শিক্ষকের মতে ‘‘রকিবের উন্নয়নে পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব অনস্বীকার্য।’’ পৃথিবীর সব মানুষ সমান যোগ্যতাসম্পন্ন নয়। পরিবেশ বংশগত ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে শিশুদের আচরণের মধ্যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এ সমস্ত ভিন্ন যোগ্যতাসম্পন্ন শিশুর প্রতিভার বিকাশ ও সুষ্ঠু আচরণ বিকাশের দায়িত্ব পরিবার ও সমাজের সকলের।
প্রতিবন্ধী শিশুকে মেনে নিতে হবে, স্বাভাবিক শিশুর মতো তাদেরকেও ভালোবাসা ও যত্ন দেওয়া। এসব শিশুর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত করা। তাদেরকে গৃহভিত্তিক সেবা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সকল সুযোগ-সুবিধা যাতে তারা সমানভাবে পায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। পরিবার ও সমাজে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা পেলে প্রতিবন্ধী শিশুরাও নিজেদের প্রতিভা বিকাশ করতে পারবে এবং উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে পারবে।

২. রাকিবের বয়স ছয় বছর। তার উচ্চারণ স্পষ্ট নয়। টেলিভিশনের অনুষ্ঠান দেখার সময় সে অনেক জোরে ভলিউম দেয়। বারবার সে একই প্রশ্ন করে। একটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলে তারা অন্য উত্তর দেয়।
ক. সাধারণ মানুষের গড় বুদ্ধাঙ্ক কত?
খ. সকল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু প্রতিবন্ধী নয়- ও বুঝিয়ে লেখ।
গ. রাকিবের এ ধরনের সমস্যার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রাকিবের মতো শিশুদের জন্য প্রয়োজন বিশেষ ধরনের শিক্ষণ পদ্ধতি- বক্তব্যটি মূল্যায়ন কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সাধারণ মানুষের গড় বুদ্ধাঙ্ক ৭০-১০০।

খ. যেসব শিশুর আচরণ স্বাভাবিক, শিশুদের মতো নয়, অর্থাৎ যারা ব্যতিক্রমধর্মী এবং যাদের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য বিশেষ কর্মসূচির প্রয়োজন তারা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু। প্রতিবন্ধী, প্রতিভাবান ও অটিস্টিক শিশুরা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। প্রতিবন্ধী শিশুরা দৈহিক, মানসিক ও ইন্দ্রিয়গত দিক থেকে অসুবিধাগ্রস্থ। প্রতিভাবান শিশুরা একাধিক বিষয়ে পারদর্শিতা প্রদর্শন করে। আর অটিজম এক ধরনের স্নায়বিক সমস্যা। তাই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বলতে শুধু প্রতিবন্ধী শিশুদের বোঝায় না।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত রাকিবের এ ধরনের সমস্যার কারণ হলো শ্রবণপ্রতিবন্ধিতা।
যারা কানে শোনে না, তাদেরকে শ্রবণ প্রতিবন্ধী বা বধির বলে। কান ও শ্রবণ সংবেদন পরিবাহী অঙ্গের কোনো প্রকার গঠনগত অসম্পূর্ণতা বা ক্ষতির জন্য শ্রবণপ্রতিবন্ধিতা দেখা দেয়। প্রতিবন্ধিতার মাত্রাভেদে কথা শোনা ও বলার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। মৃদু, মধ্যম মাত্রার গুরুতর শ্রবণপ্রতিবন্ধীরা অবশিষ্ট শ্রবণক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বা শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র ব্যবহার করে কথা শুনতে পায়। গুরুতর মাত্রার শ্রবণপ্রতিবন্ধীরা চিৎকার বা তীব্র শব্দ শুনতে পায়। চরম মাত্রার শ্রবণপ্রতিবন্ধীরা কোনো শব্দ শুনতে পায় না। কথা শুনতে পায় না বলে এরা ভাষা শেখে না। ফলে কথা বলতে পারে না। এরা ইশারা ভাষা ব্যবহার করে ভাববিনিময় করে।
সুতরাং বলা যায়, শোনার অসুবিধার কারণেই রাকিব জোরে ভলিউম দিয়ে টেলিভিশন দেখে। ভালোভাবে শুনতে পায় না বলে সে একই প্রশ্ন বারবার করে; একটি প্রশ্ন করলে তার অন্য উত্তর দেয়।

ঘ. রাকিবের মতো শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের জন্য প্রয়োজন বিশেষ ধরনের শিক্ষণ পদ্ধতি- বক্তব্যটি যথার্থ বলে আমি মনে করি শ্রবণপ্রতিবন্ধীরা স্বাভাবিক শিশুর মতো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না।
এসব শিশুর জন্য শ্রবণ প্রতিবন্ধিতার মাত্রা অনুসারে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রবণ সহায়ক বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহার করে এ সমস্যা হ্রাস করা যেতে পারে। রাকিবের মতো শিশুদের মৌখিক ভাব বিনিময়ের জন্য ঠোঁটের নড়াচড়া দেখে ভাষা অনুধাবনের মাধ্যমে কথা বুঝতে শেখানো হয়। প্রতিক্ষেত্রেই তাদের সহজ থেকে কঠিন, ছোট থেকে বড় বাক্য তৈরি করে সামনে অগ্রসর হতে হয়। শিশু ভাষা আয়ত্ত করতে পারলে অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা অনেক সহজ হয়। এছাড়া ম্যানুয়েল ভাব বিনিময় পদ্ধতিতে হাতের ইশারার মাধ্যমে তাদের শব্দ বা বাক্যাংশ কিংবা আঙুলের সাহায্যে বর্ণ প্রদর্শন করা হয়। এ পদ্ধতি ইশারা ভাষা নামে পরিচিত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পৃথক পৃথক ইশারা ভাষা প্রচলিত রয়েছে। আবার অনেক বিশেষজ্ঞ মাইক্রো কম্পিউটার ব্যবহার করে শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানের সম্ভাবনার কথা বলেছেন। একদল গবেষক এসব শিশুদের পড়া, লেখা এবং ইশারা ভাষা শিক্ষাদানের জন্য একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরি করেছেন। এ প্রোগ্রাম দিয়ে একটি শব্দ বা বাক্য টাইপ করা যায়। পরে সেই শব্দ বা বাক্য অনুযায়ী ছবি ও ইশারা চিহ্ন পর্দায় দেখা যায়। উপরিউক্ত শিক্ষণ পদ্ধতিগুলো প্রয়োগের মাধ্যমে রাকিবের মতো শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদান করা যাবে

৩. ইফফাতের মা হঠাৎ লক্ষ করলেন ইফফাত এলোমেলোভাবে হাঁটে। সে প্রায়ই বলে দেখতে পারছে না। তাই তিনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হলেন। ডাক্তার জানালেন সে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত। তাই ইফফাতের জন্য বিশেষ শিক্ষা পদ্ধতির প্রয়োজন।
ক. প্রতিভাবান শিশু কাকে বলে?
খ. বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতার প্রকারভেদ লেখ।
গ. ইফফাত কি প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ইফফাতের জন্য যে ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি প্রয়োজন তা বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যেসব শিশুর বুদ্ধাঙ্ক ১২০ এর উপরে থাকে তাদেরকে প্রতিভাবান শিশু বলে। এরা খুব মেধাবী ও প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন হয়।

খ. বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা ৪ প্রকার। যথা- ১. মৃদু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ২. মধ্যম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ৩. গুরুতর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও ৪. চরম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, মৃদু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীর বুদ্ধাঙ্ক ৫৫-৬৯, মধ্যম বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর বুদ্ধাঙ্ক ৪০-৫৪, গুরুতর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীর বুদ্ধাঙ্ক ২০-৩৫ এবং চরম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীর বুদ্ধাঙ্ক ২৪ হয়।

গ. ইফফাত দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতার লক্ষণগুলো হলো-
১. চোখের পাতা লাল হওয়া।
২. চোখের পাতার কিনারে শুষ্ক আস্তরণ।
৩. চোখ প্রায়ই ফুলে যাওয়া।
৪. তরল পদার্থ নির্গত হওয়া।
৫.বক্র দৃষ্টি বা চোখের দ্রুত নাড়াচাড়া বা ঝুলে পড়া।
৬. ঘন ঘন চোখ রগড়ানো।
৭. একটি চোখ বন্ধ বা ঢেকে রাখা, খুব কাছ থেকে টিভি দেখা।
৮. পড়ার সময় চোখ সংকোচন, চোখের কাছে নিয়ে বই পড়া।
৯. চোখ ব্যথা, মাথা ব্যথা, ঝাপসা দেখা, বমি বমি ভাব।
১০. দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা, শব্দ উল্টো দেখা, বর্ণ চিনতে ভুল করা।
১১. লেখার সময় অসম্ভব ফাঁক দেওয়া, সারি সোজা রাখতে না পারা।
১২. চূড়ান্তভাবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা পরীক্ষার জন্য চক্ষু চিকিৎসকের কাছে যাওয়া।
এসব লক্ষণের কোনোটি যদি কারও মাঝে দেখা যায় তাহলে তাকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ইফফাত এদেরই অন্তর্ভুক্ত শ্রেণির এক শিশু।

ঘ. ইফফাত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশু। তাই তার জন্য বিশেষ ধরনের শিক্ষাদান পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতার মাত্রার ভিত্তিতে শিক্ষাদান পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন হয়। শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে এদেরকে যে পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায় তাহলো-
• দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের লেখাপড়া শিক্ষার জন্য ব্রেইল পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এ পদ্ধতিতে স্পর্শ দ্বারা ৬টি উঁচু ডট দিয়ে সকল বর্ণ ও সংখ্যা তৈরি করে লেখা ও পড়ার শিক্ষা দেওয়া যায়।
• এবাকাস নামক যন্ত্র দ্বারা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুরা গণনা শিখতে পারে।
• অপটাকন ও রিডিং মেশিন দ্বারা সাধারণ ছাপার লেখা শব্দ উচ্চারণ করে, শিশু কানে শুনে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
• দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য গাঢ় রং ও বড় ছাপার অক্ষর ও ম্যাগনিফাইং গ্লাস দ্বারা শিক্ষাদান।
মৃদু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের চশমা ও লেন্স ব্যবহার করে দৃষ্টির উন্নয়ন করে শিক্ষা প্রদান করা যায়। অথবা অধিক আলোতে ও বস্ন্যাকবোর্ডের কাছাকাছি বসার ব্যবস্থা, স্পর্শ অনুভূতি ও শব্দ দ্বারা কোনো বিষয় সম্পর্কে ধারণা গঠন করা যেতে পারে। সাধারণ বিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম অনুসরণ করেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুরা লেখাপড়া করতে পারে। তবে চিত্র, বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয় বুঝতে সমস্যা হয়।

৪. পায়েল একটি এনজিওতে চাকরি করেন। তারা অটিস্টিক শিশুদের নিয়ে কাজ করে। কিছুদিন আগে প্রতিষ্ঠানটি একটি সেমিনারের আয়োজন করে যার প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল অটিস্টিক শিশু শনাক্তকরণ। এর মাধ্যমে তারা এ ধরনের শিশু চিহ্নিত করে তাদের অবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা করছেন।
ক. অটিজমের ক্ষেত্রে মেয়ে ও ছেলে শিশুর অনুপাত কত?
খ. প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য লেখ।
গ. সেমিনারের প্রতিপাদ্য বিষয়টি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি কেমন? বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. অটিজমের ক্ষেত্রে মেয়ে ও ছেলে শিশুর অনুপাত ১:৪।

খ. শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তাই প্রতিটি প্রতিবন্ধী শিশুকে তার ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশের সুযোগ করে দেওয়া আবশ্যক। প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাদানের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রতিবন্ধীদের সমাজের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসা, সুপ্ত ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ ও আত্মবিশ্বাস অর্জন এবং স্বনির্ভর জীবনযাপনের মাধ্যমে পরিবার ও সমাজে অবদান রাখা।

গ. সেমিনারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলোু অটিস্টিক শিশু শনাক্তকরণ।
যে শিশু অটিজমে আক্রান্ত তাকে অটিস্টিক শিশু বলে। ১৯৪৩ সালে Dr. Leo Kannen গবেষণা করে এ বিষয়টি চিহ্নিত করেন। অটিজম শিশুর ৩ বছর বয়সের মধ্যে প্রকাশ পায়। অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে একই ধরনের বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা না গেলেও কিছু বৈশিষ্ট্য তাদের মধ্যে কমবেশি লক্ষ করা যায়। তারা কারও সাথে দৃষ্টি সংযোগ করে না এবং তাদের ভাষার বিকাশ অস্বাভাবিক। অটিস্টিক শিশুরা অন্যদের সাথে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়। তাদের মধ্যে পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ করার প্রবণতাও লক্ষ করা যায়। এরা অন্যের উপস্থিতি খেয়াল করে না। এদের মধ্যে কেউ হঠাৎ অন্যকে আক্রমণ করে বা খুবই গুটিয়ে থাকে। অনেকে একটি কাজ বা খেলা বার বার খেলে। বস্তুর প্রতি অত্যধিক মনোযোগী থাকে। অনেকে আবার খেলনা দিয়ে কীভাবে খেলে তা বোঝে না, মুখে দেয় বা গন্ধ নেয়। কেউ আবার নিজেই নিজেকে আঘাত করে, দেয়ালে মাথা ঠোকে, সহজে ব্যথা অনুভব করে না। এ লক্ষণগুলো যেসব শিশুর মধ্যে দেখা যায় তাদের অটিস্টিক শিশু হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।

ঘ. অটিস্টিক শিশুরা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু। তাই এদের বিশেষ পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করতে হয়।
অটিস্টিক শিশুর মনোজগৎ সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। সঠিক শিক্ষা পেলে অনেক সময় তারা তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারে। অটিজম শনাক্ত হওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওই শিশুকে কতকগুলো বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে-
১. স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগাযোগ স্থাপনের প্রশিক্ষণ।
২. সামাজিকতার শিক্ষা প্রদান।
৩. জ্ঞানীয় বিকাশ ও খেলাধুলায় দক্ষতা বৃদ্ধি।
৪. আচরণগত সমস্যা নিয়ন্ত্রণ।
৫. বৃত্তিমূলক দক্ষতা বৃদ্ধি।
৬. অবাঞ্ছিত আচরণ রোধ করা।
৭. আত্মপরিচর্যামূলক দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ।
৮. ভাষা ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ। এসব পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করে অটিস্টিক শিশুর আচরণের উন্নয়ন করা সম্ভব।

৫. রুবিনার বয়স ১৮ বছর। তবে তার আচার-আচরণ ৫ বছরের শিশুর মতো। যেকোনো বিষয় সে সহজেই ধরতে পারে না। জন্মের পরই তার আচরণে বেশকিছু অস্বাভাবিকতা দেখা দিয়েছিল। আর বড় হওয়ার পর এ বিষয়গুলো তার মাঝে আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রুবিনার বাবা-মা তাকে নিয়ে সবসময়ই বেশ চিন্তিত থাকেন। এ সমস্যার কোনো সমাধান তাদের জানা নেই।
ক. জন্মগ্রহণের পরমুহূর্তে শিশু কী করে?
খ. প্রতিভাবান শিশু সম্পর্কে ধারণা দাও।
গ. উদ্দীপকের রুবিনাকে কোন ধরনের শিশু বলা যায়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের রুবিনার ক্ষেত্রে ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ ঘটানো সম্ভব কি? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জন্মগ্রহণের পরমুহূর্তে শিশু কাঁদে।

খ. যেসব শিশু প্রতিভাবান এবং যারা একাধিক বিষয়ে পারদর্শিতা প্রদর্শন করে তাদেরকে বলা হয় প্রতিভাবান শিশু। সাধারণ শিশুদের গড় বুদ্ধাঙ্ক হয় ৮০-১০০। তবে প্রতিভাবান শিশুদের বুদ্ধাঙ্ক ১২০- এর উপরে থাকে। এরা পড়াশুনা ও সৃজনশীল কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। প্রতিভাবান শিশুরা মেধাবী ও প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন হয়। এরাও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর কাতারে পড়ে, যাদের ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশের জন্য বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা দরকার।

গ. উদ্দীপকের রুবিনাকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বলা যায়। পৃথিবীতে এমন অনেক শিশু আছে, যারা স্বাভাবিক শিশুদের মতো নয়। তারা স্বাভাবিক আচরণগুলো ঠিকমতো করতে পারে না। কোনো না কোনো দিক থেকে তারা স্বাভাবিক শিশুর তুলনায় আলাদা হয়। এদেরকেই বলা হয় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু। উদ্দীপকের রুবিনা বয়স অনুযায়ী কাঙি্ক্ষত আচরণ করতে না পারায় সে স্বাভাবিক শিশুদের মতো নয়। এ কারণেই তাকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বলা যায়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরাই স্বাভাবিক আচরণগুলো ঠিকমতো করতে পারে না। এরা কোনো না কোনো দিক থেকে স্বাভাবিক শিশুর তুলনায় অন্য রকম হয়। তাদের আচরণ স্বাভাবিক মানের নয়। এদের আচরণ স্বাভাবিক গড় মানের চেয়ে এত উপরে বা এত নিচে যে, এদের ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশের জন্য বিশেষ কর্মসূচির দরকার হয়।
এদেরকেই বলা হয় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু। তাদের আচরণ স্বাভাবিক শিশুদের মতো না হলেও তারা আমাদেরই একজন।

ঘ. হ্যাঁ, উদ্দীপকের রুবিনার ক্ষেত্রে ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ ঘটানো সম্ভব।
একটি সুস্থ শিশু সকলের কাম্য হলেও পৃথিবীতে এমন কিছু শিশুও আছে, যারা স্বাভাবিক আচরণ ঠিকমতো করতে পারে না। এরা কোনো না কোনো দিক থেকে স্বাভাবিক শিশুর তুলনায় অন্যরকম হয়। তবে এদের ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ সাধন করা যায়। তাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতার বিকাশ সাধন করা যায়। উদ্দীপকের 'রুবিনার জন্মের পরই তার আচরণে বেশকিছু অস্বাভাবিকতা দেখা দিয়েছিল, সে বিষয়গুলো বড় হওয়ার পর তার মধ্যে আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রুবিনার এ সমস্যার কোনো সমাধান জানা না থাকায় তার বাবা-মা সবসময় চিন্তিত থাকেন। কিন্তু রুবিনার ক্ষেত্রেও তার ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ ঘটানো সম্ভব। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের আচরণ স্বাভাবিক শিশুদের মতো হয় না। এসব শিশুর আচরণ স্বাভাবিক মানের নয়। এদের আচরণ স্বাভাবিক গড় মানের চেয়ে এত উপরে বা এত নিচে যে, এদের ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশের জন্য বিশেষ সেবা, শিক্ষা ও বিশেষ কর্মসূচির দরকার। এর মাধ্যমে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ সাধন সম্ভব। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের রুবিনারও ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ ঘটানো সম্ভব।

৬. রাবেয়া সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। ইদানীং তার দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হচ্ছে। মা-বাবা তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলেন। চিকিৎসক রাবেয়াকে চশমা পরার পরামর্শ দিলেন। চশমা নেওয়ার পর রাবেয়া এখন দূরের জিনিস দেখতে পারে এবং স্বাভাবিক কাজকর্মও করতে পারে।
ক. বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতানুযায়ী পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার কত শতাংশ প্রতিবন্ধী?
খ. স্থায়িভাবে শারীরিক ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হতে পারে কেন?
গ. উদ্দীপকের রাবেয়াকে কোন ধরনের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বলা যায়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের রাবেয়ার মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাড়াও আরও অনেক ধরনের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আমাদের সমাজে রয়েছে- বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতানুযায়ী পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী।

খ. শারীরিক গঠন বিকৃতি বা অস্বাভাবিকতা বা স্নায়বিক বৈকল্যের কারণে স্থায়িভাবে শারীরিক ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হতে পারে। এটি এক ধরনের বিড়ম্বনা। বিভিন্ন কারণে এরূপ শারীরিক ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হতে পারে। মস্তিষ্ক, স্বায়ুরজ্জু ও অস্থি মাংসের কোনো প্রকার ক্ষতির কারণে মাংসপেশির দুর্বলতা বা অসমতা সৃষ্টি হতে পারে। জন্মগতভাবে শরীরের যেকোনো অঙ্গের ক্ষতি বা হাত-পা অনুপস্থিত বা বিকৃত হতে পারে। আবার দুর্ঘটনার কারণেও শরীরের যেকোনো অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। এ ধরনের মারাত্মক সমস্যার দরুনই স্বায়িভাবে শারীরিক ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হতে পারে।

গ. উদ্দীপকের রাবেয়াকে আংশিক বা মৃদু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বলা যায়। যেসব শিশুর শারীরিক ক্ষমতা, মানসিক যোগ্যতা, সংবেদীয় ক্ষমতা, সামাজিক ও ভাববিনিময় দক্ষতা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য স্বাভাবিক শিশুর তুলনায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কম থাকে, তাদেরকেই প্রতিবন্ধী শিশু বলা যায়। যারা চোখে খুব সামান্য দেখে বা এক চোখে দেখতে পায় না বা দূরের জিনিস দেখতে অসুবিধায় পড়ে তাদেরকে বলা হয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। উদ্দীপকের রাবেয়ার ইদানীং দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হচ্ছে। চশমা নেওয়ার পর রাবেয়া এখন দূরের জিনিস দেখতে পারে এবং স্বাভাবিক কাজকর্মও করতে পারে। অর্থাৎ তার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা এতটা মারাত্মক নয়। এ ধরনের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদেরকে আংশিক বা মৃদু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বলা হয়। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীতার নানা ধরন রয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মাত্রা অনুযায়ী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতার শ্রেণিকরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আংশিক বা মৃদু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীও রয়েছে। এ ধরনের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা চশমা বা লেন্স ব্যবহার করে স্বাভাবিক শিশুর মতো কাজকর্ম বা লেখাপড়া করতে পারে। আংশিক বা মৃদু দৃষ্টিপ্রতিন্ধীদের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতার সমস্যা ততটা মারাত্মক নয়।

ঘ. উদ্দীপকের রাবেয়ার মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাড়াও আরও অনেক ধরনের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আমাদের সমাজে রয়েছে, যা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্যানুযায়ী প্রমাণিত।
যারা চোখে খুব সামান্য দেখে বা এক চোখে দেখতে পায় না বা দূরের জিনিস দেখতে অসুবিধায় পড়ে তাদেরকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বলা হয়। একজন স্বাভাবিক দৃষ্টির মানুষ ২০০ ফুট বা ৬০ মিটার দূরত্ব থেকে যা স্পষ্টভাবে দেখতে পায় তা একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ২০ ফুট বা ৬ মিটার দূরত্ব থেকে দেখতে পায়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা দেখতে পারার মাত্রা অনুযায়ী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতার শ্রেণিকরণ করেছে। এখানে বিভিন্ন ধরনের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। উদ্দীপকের রাবেয়ার দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হওয়ায় চিকিৎসক তাকে চশমা নিতে বললেন। চশমা নেওয়ার পর রাবেয়া স্বাভাবিক কাজকর্ম ঠিকমতো করতে পারছে। রাবেয়ার মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদেরকে বলা হয় আংশিক বা মৃদু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। কিন্তু এর বাইরেও আমাদের সমাজে আরও অনেক ধরনের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রয়েছে। যেমন- মধ্যম মাত্রার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, গুরুতর মাত্রার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, প্রায় অন্ধ মাত্রার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও সম্পূর্ণ অন্ধ মাত্রার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। এ ধরনের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা বেশ মারাত্মক সমস্যা হিসেবে প্রভাব রাখে। পরিশেষে বলা যায় যে, আমাদের সমাজে নানা ধরনের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দেখা যায়। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের রাবেয়ার মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাড়াও আরও অনেক ধরনের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আমাদের সমাজে রয়েছে।

৭. সাবিবরের বয়স ১৮ বছর হলেও তার আচরণ ৫ বছরের শিশুর মতো। সে তার নিজের কাজ নিজে করতে পারে না। তবে সে তার মনের অভিব্যক্তি অন্যকে বোঝাতে পারে। সাবিবরের মা সবসময় তাকে চোখে চোখে রাখে।
ক. চিকিৎসাবিজ্ঞানে শ্রবণক্ষমতা কী দ্বারা পরিমাপ করা হয়?
খ. বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের সাবিবরের মাঝে কোন ধরনের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীর বৈশিষ্ট্য উপস্থিত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের সাবিবর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের একটি ধরনকে উপস্থাপন করলেও সামগ্রিকতাকে প্রকাশ করে না- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. চিকিৎসাবিজ্ঞানে শ্রবণক্ষমতা ডেসিবল দ্বারা পরিমাপ করা যায়।

খ. বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা বলতে বোঝায় গড় বুদ্ধির চেয়ে সুস্পষ্টভাবে কম বুদ্ধি, পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজন আচরণের স্বল্পতা থাকা। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা বিকাশমূলক পর্যায়ে বা বাড়ন্ত বয়সে- প্রকাশ পায়। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক দৌর্বল্য, বুদ্ধি বিকাশে ধীরগতি, শিক্ষা গ্রহণে অক্ষমতা এবং সামাজিক ও আচরণগত সামঞ্জস্য বিধানের অভাব থাকে। মানসিক বা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা ১৮ বছরের আগে প্রকাশ পায়। এটা কোনো রোগ নয়। এটা এক ধরনের অক্ষমতা। খসড়া হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে মানসিক প্রতিবন্ধিতার হার মোট জনসংখ্যার ৩ শতাংশ ধরা হয়।

গ. উদ্দীপকের সাবিবরের মাঝে মধ্যম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীর বৈশিষ্ট্য উপস্থিত। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হচ্ছে যাদের বুদ্ধিবৃত্তিক দৌর্বল্য রয়েছে, বুদ্ধি বিকাশে ধীরগতি লক্ষণীয়, শিক্ষা গ্রহণে অক্ষমতা রয়েছে এবং সামাজিক ও আচরণগত সামঞ্জস্য বিধানের অভাব রয়েছে। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের আবার চার ভাগে ভাগ করা যায়, যার মধ্যে মধ্যম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী অন্যতম। উদ্দীপকের সাবিবরের বয়স ১৮ বছর হলেও তার আচরণ ৫ বছরের শিশুর মতো। সে নিজের কাজ একাকী করতে পারে না। তবে সে তার মনের অভিব্যক্তি অন্যকে বোঝাতে পারে। তার এসব আচরণিক বৈশিষ্ট্য মধ্যম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ। মধ্যম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের মধ্যে শারীরিক জড়তা ও বৈকল্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে বর্তমান থাকে। ১৮ বা তদূর্ধ্ব বয়সে এদের মানসিক বয়স ৫.৫-৮ বছরের শিশুর মতো হয়। তবে এরা ভাবের আদান-প্রদান করতে পারে। এদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজের প্রয়োজনীয় কাজ করা কিছুটা শেখানো যায়। মধ্যম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়। তবে তাদের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের প্রয়োজন হয়। মধ্যম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের বুদ্ধাঙ্ক ওয়েকস্লারের বুদ্ধি অভীক্ষা অনুসারে ৪০-৪৫ হয়। এ ধরনের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা কোনো রোগ নয়, বরং এক ধরনের অক্ষমতা।

ঘ. উদ্দীপকের সাবিবরের মধ্যে মধ্যম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের বৈশিষ্ট্য উপস্থিত থাকায় সে কেবল এ ধরনকে উপস্থাপন করে, তবে সামগ্রিকতাকে প্রকাশ করে না।
বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা বলতে বোঝায় সাধারণত গড় বুদ্ধির চেয়ে সুস্পষ্টভাবে কম বুদ্ধি, পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজন আচরণের স্বল্পতা। আর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হচ্ছে তারাই যাদের বুদ্ধিবৃত্তিক দৌর্বল্য রয়েছে, বুদ্ধি বিকাশে রয়েছে ধীরগতি, শিক্ষা গ্রহণে রয়েছে অক্ষমতা এবং সামাজিক ও আচরণগত সামঞ্জস্য বিধানের অভাব। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের নানা ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। উদ্দীপকের সাবিবরের আচরণ বিশ্লেষণে তাকে মধ্যম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বলা যায়। তবে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের আরও ধরন রয়েছে। এসব ধরনের মধ্যে রয়েছে মৃদু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, গুরুতর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, চরম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও বহু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যায় যে, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতার নানা ধরন রয়েছে। উদ্দীপকের সাবিবরের মধ্যে মধ্যম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীর বৈশিষ্ট্য উপস্থিত থাকলেও অন্যান্য ধরনগুলো এখানে অনুপস্থিত। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সাবিবর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের একটি ধরনকে উপস্থাপন করলেও সামগ্রিকতা প্রকাশ করে না এবং প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।

৮. সেজুতির বয়স ৩ বছর। তার মধ্যে ইদানীং নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কেউ তাকে নাম ধরে ডাকলে সে তাকায় না। কারও সাথে দৃষ্টি বিনিময় করতে পারে না সে। তার হাত সোজা রাখতেও অসুবিধা হয়। আশপাশের পরিবেশে কোনো ধরনের পরিবর্তন হলে সে প্রচন্ড চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। এসব আচরণিক পরিবর্তন দেখে সেজুতির মা বা বেশ চিন্তিত হয়ে পড়লেন।
ক. শিশুর কত বছর বয়সে অটিজমের লক্ষণ প্রকাশ পায়?
খ. অটিস্টিক শিশুর মধ্যে কোন ধরনের বৈশিষ্ট্য উপস্থিত থাকে?,
গ. উদ্দীপকের সেজুতির মাঝে কোন ধরনের অটিজমের সমস্যা লক্ষণীয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের সেজুতির মাঝে আত্মনিয়ন্ত্রণমূলক সকল দক্ষতা নাও থাকতে পারে- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শিশুর ২/৩ বছর বয়সে অটিজমের লক্ষণ প্রকাশ পায়।

খ. অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে একই ধরনের বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা না গেলেও কিছু বৈশিষ্ট্য তাদের মধ্যে কমবেশি লক্ষ করা যায়। তারা কারও সাথে দৃষ্টি সংযোগ করে না এবং তাদের ভাষার বিকাশ অস্বাভাবিক। অটিস্টিক শিশুরা অন্যদের সাথে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়। তাদের মধ্যে পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ করার প্রবণতাও লক্ষ করা যায়। অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে এ ধরনের বৈশিষ্ট্য স্বাভাবিকভাবেই উপস্থিত থাকে। এসব বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করেই তাদেরকে স্বাভাবিক শিশু থেকে আলাদা করা যায়।

গ. উদ্দীপকের সেজুতির মাঝে অটিজমের পরিব্যাপক বিকাশমূলক সমস্যা লক্ষণীয়।
অটিজম মস্তিষ্কজাত একটি স্নায়বিক সমস্যা, যা মস্থি ষ্কের সাধারণ কর্মক্ষমতাকে ব্যাহত করে। অটিজমের আবার নানা ধরনের শ্রেণিবিভাগ লক্ষ করা যায়। এর মধ্যে পরিব্যাপক বিকাশমূলক সমস্যা অন্যতম। উদ্দীপকের সেজুতির উল্লিখিত আচরণিক বৈশিষ্ট্য অটিজমের পরিব্যাপক বিকাশমূলক সমস্যাতেই লক্ষ করা যায়। এ ধরনের সমস্যায় অনেকগুলো অটিস্টিক লক্ষণের সমাহার দেখা যায়। এ সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের দৃষ্টি বিনিময় ও কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে দেখতে সমস্যা হয়। পরিচিত পরিবেশের কোনো পরিবর্তন হলে তারা তীব্র প্রতিক্রিয়া করে। অঙ্গসঞ্চালনেও তাদের বাধা সৃষ্টি হয় এবং তারা এর পুনরাবৃত্তি করে। পরিব্যাপক বিকাশমূলক সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের নানা ধরনের সমস্যা থাকে যা উক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ বিবেচনায় সহজেই বোঝা যায়।

ঘ. উদ্দীপকের সেজুতির আচরণের মাঝে অটিজমের পরিব্যাপক বিকাশমূলক সমস্যার আভাস পাওয়া যাওয়ায় তার আত্মনিয়ন্ত্রণমূলক সকল দক্ষতা নাও থাকতে পারে।
অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের বলা হয় অটিস্টিক শিশু। শিশুর বয়স যখন ২/৩ বছর তখনই অটিজমের লক্ষণ প্রকাশ পায়। অটিজমের ধরন নানা রকম হতে পারে। এর মধ্যে একটি ধরন হলো পরিব্যাপক বিকাশমূলক সমস্যা। এ সমস্যা আবার দুই ধরনের হয়- রেট সিনড্রোম ও সিডিডি। সিডিডিতে আক্রান্ত ৯০% শিশুরই আত্মনিয়ন্ত্রণমূলক সকল দক্ষতা থাকে না। উদ্দীপকের সেজুতির এসব আচরণিক বৈশিষ্ট্য অটিজমের পরিব্যাপক বিকাশমূলক সমস্যারই অন্তর্গত। এ ধরনের সমস্যায় সিডিডিও রয়েছে। এক্ষেত্রে শিশুদের ভাষার দক্ষতা, মলমূত্র নিয়ন্ত্রণ দক্ষতা, সঞ্চালনমূলক দক্ষতা ইত্যাদি। লোপ পায়। এর লক্ষণ দুই বছর বয়সের পরে দেখা যায়। অতএব দেখা যায়, পরিব্যাপক বিকাশমূলক সমস্যার একটি ধরন হলো সিডিডি এবং ৯০% শিশুর মাঝেই এ লক্ষণ প্রকাশমান থাকে যাদের আত্মনিয়ন্ত্রণমূলক সকল দক্ষতা থাকে না। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সেজুতির মাঝে যেহেতু পরিব্যাপক বিকাশমূলক সমস্যা রয়েছে তাই তার মাঝেও আত্মনিয়ন্ত্রণমূলক সকল দক্ষতা নাও থাকতে পারে।

৯. লিপার বয়স ৭ বছর। সে স্বাভাবিক শিশুদের মতো নয়। তার বড় বোন স্বাভাবিক হলেও লিপার আচরণ অন্য রকম। তার মনোভাব পিতামাতা বুঝতে পারেন না। পরিবারে সে বেশ অবহেলিত। লিপার বড় বোনও তার সাথে খেলে না। শুধু লিপার মা লিপার সাথে মিশতে অনবরত চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু লিপার মধ্যে মায়ের জন্য কোনো বিশেষ অনুভূতি নেই।
ক. শিশুদের আচরণের মধ্যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় কী কারণে?
খ. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর বিকাশে সমাজের দায়িত্ব কী?
গ. উদ্দীপকের লিপার মা লিপার সাথে মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি করতে পারেন কীভাবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের লিপার সাথে তার বোনের সুসম্পর্ক তৈরি হলে লিপার দক্ষতার বিকাশ ঘটবে- বিশ্লেষণ কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শিশুদের আচরণের মধ্যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় পরিবেশ, বংশগতি ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে।

খ. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর বিকাশে সমাজের দায়িত্ব বহুবিধ। আমরা সবাই সমাজে বসবাস করি। সমাজের অন্যান্য সদস্যদের মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাদের যথাযথ বিকাশে সমাজ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাদেরকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে, স্নেহ, ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে মূলধারায় আনয়নের দায়িত্ব সমাজের। এসব শিশুদের প্রতিভা ও সুষ্ঠু আচরণ বিকাশের দায়িত্ব সমাজকেই নিতে হবে। সমাজের সকলের ভালোবাসা ও স্নেহপূর্ণ দৃষ্টিই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জীবনকে স্বাভাবিক করে তুলতে পারে।

গ. উদ্দীপকের লিপার মা বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে লিপার সাথে মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি করতে পারেন।
পৃথিবীর সব মানুষ সমান যোগ্যতাসম্পন্ন নয়। পরিবেশ, বংশগতি ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে শিশুদের আচরণের মধ্যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের আচরণও স্বাভাবিক শিশুদের চেয়ে ভিন্ন হয়। তাদের সুষ্ঠু বিকাশ সাধনে কেবল পরিবার নয় সমাজও গুরুত্বপূর্ণভূমিকা রাখতে পারে। উদ্দীপকের লিপার আচরণ স্বাভাবিক শিশুদের মতো নয়। অনবরত তার সাথে মিশতে চেষ্টা করলেও মায়ের প্রতি লিপার বিশেষ কোনো অনুভূতি কাজ করে না। লিপার মা বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে লিপার সাথে মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি করতে পারেন। প্রতিবন্ধী শিশু আমাদের সমাজেরই সদস্য। তাকে শিক্ষা প্রদানে পিতামাতার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা জরুরি। এতে শিশুর সাথে পিতামাতার মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি পায়। পিতামাতা শিশুর মনোভাব বুঝতে পারেন এবং তাকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করতে পারে। এতে শিশুর বিকাশ অনেক বেশি কার্যকর ও ত্বরান্বিত হয়। তাই বলা যায়, প্রতিবন্ধী শিশুদের সাথে মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধিতে পিতামাতার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করাই কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

ঘ. উদ্দীপকের লিপার যদি তার বড় বোনের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি হয় তবে সে গ্রহণযোগ্যতা পাবে এবং তার দক্ষতার বিকাশ ঘটবে। আমাদের সমাজে সকল শিশু সমান যোগ্যতাসম্পন্ন নয়। স্বাভাবিক শিশুর পাশাপাশি রয়েছে অনেক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুও। তাদের প্রতিভা ও আচরণের বিকাশে পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা যদি নিজেদের পরিবারে গ্রহণযোগ্যতা পায় তবে তাদের দক্ষতার বিকাশ ঘটতে পারে। উদ্দীপকের লিপার আচরণ স্বাভাবিক শিশুদের মতো নয়। লিপার মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ভাইবোনের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সাথে অন্য ভাইবোনদের যদি সুসম্পর্ক থাকে তবে তাদের সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখার দক্ষতাবিকশিত হয় এবং সে সকলের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারে। অতএব দেখা যায় যে, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভাইবোনের সাথে সুসম্পর্ক তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু লিপার সাথে যদি তার বোনের সুসম্পর্ক তৈরি হয়, তবে তার দক্ষতারও বিকাশ ঘটবে।

১০. আবির টেলিভিশনে একটি বিজ্ঞাপন দেখছে। বিজ্ঞাপনটিতে সে দেখল যে, একজনের জন্মদিনে একটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মেয়ে এসেছে।অন্যান্য শিশুরা তাকে নিয়ে উপহাস করতে থাকলে একজন অভিভাবক তাদেরকে বললেন যেন তাকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা হয়। কেননা তারাও আমাদের সমাজের সদস্য। বিজ্ঞাপনটি দেখে আবিরের মনেও এ ধরনের শিশুদের প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভূতি জন্ম নিল।
ক. শিশুর প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী কী ধরনের সেবা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে?
খ. প্রতিবন্ধী শিশুর বয়স বৃদ্ধি পেলে তার বিকাশের ব্যবস্থা কীরূপে করতে হবে?
গ. উদ্দীপকের আবিরের দেখা বিজ্ঞাপনটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতি অন্যদের দায়িত্ববোধ তৈরিতে কীভাবে সাহায্য করবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আবিরের মতো মনোভাব যদি সকলের মধ্যে তৈরি হয় তবেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা সকল সুযোগ-সুবিধা সমভাবে পাবেু মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শিশুর প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী গৃহভিত্তিক সেবা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

খ. প্রতিবন্ধী শিশুর বয়স বৃদ্ধি পেলে তার মনোভাব অনুভব করার মাধ্যমে বিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিবন্ধী শিশুর বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তার আবেগ-অনুভূতি ও মনোভাবের পরিবর্তন ঘটে। এ অবস্থা শিশুটির পিতামাতাকে বুঝতে হবে। অতঃপর শিশুটির নিজের প্রতি বিরূপ অনুভূতি সেটা বিবেচনা করে তার যথাযথ বিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে।

গ. উদ্দীপকের আবিরের দেখা বিজ্ঞাপনটি সমাজের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত করার মাধ্যমে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতি অন্যান্যদের দায়িত্ববোধ তৈরিতে সাহায্য করবে।
পৃথিবীর সব মানুষ সমাজ যোগ্যতাসম্পন্ন হয় না। পরিবেশ, বংশগতি ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে শিশুদের আচরণে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। ভিন্ন যোগ্যতাসম্পন্ন শিশুর প্রতিভার বিকাশ ও সুষ্ঠু আচরণ বিকাশের দায়িত্ব সমাজের সকল সদস্যের। আর এর জন্য বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত করা আবশ্যক। উদ্দীপকের আবিরের মনেও এ ধরনের শিশুদের প্রতি সহানুভূতি ও ভালোবাসা জন্ম নিয়েছে। এর দ্বারা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত করার প্রতিই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সমাজে চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য পাঠ্যপুস্থ কে, টেলিভিশন, পত্রিকা ইত্যাদি প্রচার মাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এসব প্রচার মাধ্যম প্রতিবন্ধী শিশুর প্রতি স্বাভাবিক শিশুদের ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল মনোভাব গঠন করতে পারে। এভাবে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত করার মাধ্যমে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতি অন্যান্যদের দায়িত্ববোধ সৃষ্টির প্রয়াস চালানো সম্ভব।

ঘ. উদ্দীপকে আবিরের মতো যদি সকলের মনে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভূতি জন্ম নেয় তবেই তারা সকল সুযোগ-সুবিধা সমভাবে পাবে।
পৃথিবীর সব মানুষ সমান যোগ্যতাসম্পন্ন নয়। পরিবেশ, বংশগতি ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে শিশুদের আচরণে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এসব ভিন্ন যোগ্যতাসম্পন্ন শিশুর প্রতিভার বিকাশ ও সুষ্ঠু আচরণ বিকাশের দায়িত্ব সমাজের সকল সদস্যের। এ লক্ষ্যে সমাজের সকলকে তাদের গ্রহণ করতে হবে এবং সকল ক্ষেত্রে সমান সুযোগ প্রদান করতে হবে কেননা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা আমাদের সমাজের সদস্য। বিজ্ঞাপনটি দেখে আবিরের মনেও এ ধরনের শিশুদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হলো। সমাজের সকল মানুষের মনে যদি এ ধরনের সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে এবং সমভাবে সকল সুযোগ-সুবিধাও বোধ তৈরি হয় তবেই প্রতিবন্ধীরা তাদের জন্য বরাদ্দ সকল বিশেষ পাবে। অতএব বলা যায় যে, সমাজের মানুষের সচেতনতা ও সহানুভূতিপ্রবণ মনোভাবই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সম সুযোগ-সুবিধা ভোগের সহায়ক। উদ্দীপকের আবিরের মতো মনোভাবই এক্ষেত্রে কাম্য। তাই বলা যায় যে, প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।
Share:

0 Comments:

Post a Comment

২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি

HSC Exam Routine

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির গাইডসমূহ
(সকল বিভাগ)
বাংলা ১ম পত্র ১ম পত্র গাইড | বাংলা ২য় পত্র গাইড | লালসালু উপন্যাস গাইড | সিরাজুদ্দৌলা নাটক গাইড | ইংরেজি ১ম পত্র গাইড | ইংরেজি ২য় পত্র গাইড | আইসিটি গাইড | হিসাব বিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | হিসাব বিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | জীববিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | জীববিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র গাইড | ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র গাইড | রসায়ন ১ম পত্র গাইড | রসায়ন ২য় পত্র গাইড | পৌরনীতি ১ম পত্র গাইড | পৌরনীতি ২য় পত্র গাইড | অর্থনীতি ১ম পত্র গাইড | অর্থনীতি ২য় পত্র গাইড | ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বীমা ১ম পত্র গাইড | ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বীম ২য় পত্র গাইড | ভুগোল ১ম পত্র গাইড | ভুগোল ২য় পত্র গাইড | উচ্চতর গণিত ১ম পত্র গাইড | উচ্চতর গণিত ২য় পত্র গাইড | ইতিহাস ১ম পত্র গাইড | ইতিহাস ২য় পত্র গাইড | ইসলামের ইতিহাস ১ম পত্র গাইড | ইসলামের ইতিহাস ২য় পত্র গাইড | কৃষি শিক্ষা ১ম পত্র গাইড | কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র গাইড | যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র গাইড | যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র গাইড | মনোবিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | মনোবিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | পদার্থ বিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | পদার্থ বিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বাজারজাতকরণ ১ম পত্র গাইড | উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বাজারজাতকরণ ২য় পত্র গাইড | সমাজকর্ম ১ম পত্র গাইড | সমাজকর্ম ২য় পত্র গাইড | সমাজবিদ্য ১ম পত্র গাইড | সমাজবিদ্যা ২য় পত্র গাইড | পরিসংখ্যান ১ম পত্র গাইড | পরিসংখ্যান ২য় পত্র গাইড | ইংরেজি শব্দার্থ VOCABULARY

Admission Guide