HSC গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৭

HSC গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download
এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Home Science 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চ মাধ্যমিক

গার্হস্থ্য বিজ্ঞান
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৭ম অধ্যায়

HSC Home Science 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download


১. কবির ও আলম দুই ভাই। আলম গ্রামে দোতলা বাড়িতে বাস করে। সারাদিন রৌদ্রোজ্জ্বল আকাশ থাকলে তার বাড়িতে আলো জ্বলে।কবির ঠিক করল, ভাইয়ের মতো একটি বাড়ি তৈরি করবে। তাই সে টিন, টাইলস, কাঠ, বাঁশ কিনে আনল।
ক. নির্মাণসামগ্রী কাকে বলে?
খ. শোবার ঘরের জন্য শীতল বর্ণ উপযোগী কেন?
গ. আলম সাহেবের বাড়িতে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়, তার গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
ঘ. কবিরের কেনা সামগ্রী দিয়ে কি আলমের মতো বাড়ি তৈরি করা সম্ভব? তোমার উত্তর পক্ষে যুক্তি দেখাও।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যেসব উপকরণ দিয়ে বাড়ির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়, তাকে নির্মাণসামগ্রী বলে।

খ. বর্ণ বা রঙের প্রভাব সর্বজনীন। বর্ণ আমাদের মানসিক, স্নায়বিক ও আবেগময় জীবনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। সঠিক রং নির্বাচন ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায় এবং ঘরকে আরামদায়ক করে। শোবার ঘরের জন্য শীতল বর্ণ সবচেয়ে উপযোগী। নীল এবং নীলের মিশ্রণে উৎপন্ন রংগুলো শীতল বা স্নিগ্ধ বর্ণ নামে পরিচিত। এই বর্ণ মনে শান্তভাব আনে। ঘরকে করে তোলে শীতল, স্নিগ্ধ ও আরামদায়ক। যে কারণে শোবার ঘরে শীতল বর্ণ উপযোগী।

গ. উদ্দীপকের আলম সাহেবের বাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়েছে, মানবজীবনে যার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় তাকে সৌরবিদ্যুৎ বলে। পৃথিবীর সকল শক্তির উৎস সূর্য। এর বিকীর্ণ রশ্মি বিপুল তাপশক্তি বহন করে। সূর্যের এ অফুরন্ত শক্তিকে দিনে ও রাতে সব সময় ব্যবহারের জন্য নানা রকম প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হচ্ছে; যা আমাদের জীবন চলার পথকে সহজ আর গতিময় করে তুলেছে। লেন্সের সাহায্যে সূর্যরশ্মিকে ফোকাস করে আগুন জ্বালানো যায়। সূর্যকিরণকে ধাতব পদার্থের সাহায্যে প্রতিফলিত করে তৈরি হয় সৌরচুল্লি। এ চুল্লিতে রান্না করা হয়। শীতের দেশে বাড়িঘর গরম রাখার জন্য সৌরশক্তি ব্যবহৃত হয়। এমনকি শীতপ্রধান দেশে Green House-এ সৌরশক্তিকে আবদ্ধ করে ফসল উৎপন্ন করা হচ্ছে। শস্যকণা, মাছ, সবজি শুকিয়ে সংরক্ষণ করার কাজে সৌরশক্তি ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে সিলিকনের পাতলা পাত দ্বারা সৌরকোষ তৈরি করা হচ্ছে। সৌরকোষে সূর্যের আলো পড়ালে সরাসরি বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। এ সৌরকোষ দ্বারা ক্যালকুলেটর, রেডিও, ঘড়ি চালানো হচ্ছে। সৌরবিদ্যুৎ আমাদের দেশের গ্রামগুলোকে আলোকিত করেছে। আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষ সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছে। সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারে জ্বালানি তেলের ব্যবহার হ্রাস পায়। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় কম হয়। সেই অর্থ গ্রামের উন্নয়নে ব্যবহার করা যায়। পরিবেশ দূষিত হয় না। এতে জ্বালানি কাঠের ব্যবহার হ্রাস পাওয়ায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হয়।

ঘ. উদ্দীপকের কবিরের কেনা সামগ্রী দিয়ে আলমের মতো বাড়ি তৈরি করা সম্ভব নয় বলে আমি মনে করি।
উদ্দীপকে দেখা যায়, আলমের দোতলা বাড়ি দেখে কবির ঠিক করল সেও এমন একটি বাড়ি তৈরি করবে। তাই সে টিন, টাইলস, কাঠ, বাঁশ কিনে আনল। কবিরের কেনা নির্মাণসামগ্রী দিয়ে সাধারণত টিনের ঘর তৈরি করা হয়, দোতলা বাড়ি নয়। টিন দ্বারা ঘরের চাল, দেয়াল বা বাড়ির চারপাশের দেয়াল দেওয়া হয়। বাঁশ ঘরের খুঁটি, চালা ও বেড়া নির্মাণে ব্যবহৃত হয়। দরজা, জানালাতে কাঠ এবং ঘরের মেঝে, দেয়াল, সিঁড়িতে টাইলস ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে আমরা জানি, আধুনিক যেকোনো পাকা বাড়ি নির্মাণের মূল উপাদান হলো ইট, সিমেন্ট, বালি, লোহা, পাথর প্রভৃতি। যা ছাড়া দোতলা বাড়ি তৈরি অসম্ভব। সিমেন্ট, বালু, খোয়া ও পানি সহযোগে তৈরি হয় কংক্রিট। একের পর এক ইটের গাঁথুনিতে কংক্রিট দিয়ে বানানো হয় বাড়ি। বালু কংক্রিট তৈরিতে ব্যবহৃত একটি উল্লেখযোগ্য নির্মাণসামগ্রী। মোটা, মিহি ও ভিটি এ তিন প্রকার বালির মধ্যে মোটা বালিতে কংক্রিট ভালো হয়। মিহি বালি দ্বারা প্লাস্টারের কাজ চলে। তবে ভিটি বালি শুধু জমি ভরাট করার কাজে ব্যবহৃত হয়। লোহা বাড়ির ভিত্তি বা ফাউন্ডেশন, ছাদ, দরজা, জানালা, বারান্দার রেলিং-এ ব্যবহৃত হয়। লোহা ও কংক্রিটের ঢালাইয়ে বাড়ির ভিত, ছাদ, পিলার মজবুত হয়। বাড়ি নির্মাণের কাজে লোহা মোটামুটিভাবে সোজা ও অবিকৃত হতে হবে। পাথরও বাড়ি নির্মাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। উপরিউক্ত আলোচনায় স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, কবিরের কেনা নির্মাণসামগ্রী দিয়ে দোতলা বাড়ি বানানো সম্ভব নয়।

২. মিসেস সারা তার বাড়িতে বসার ঘরে লাল, কমলা ও হলুদ বর্ণ, শোবার ঘরে সবুজ, শ্বশুর ও শাশুড়ির ঘরে সাদা ও আকাশি, বাচ্চাদের ঘরে গোলাপি ও গোসলখানায় নীল রং ব্যবহার করেছেন। অপরদিকে, আনিকা তার বাড়িতেও এরূপ রং করা বাড়ির জানালাগুলো উত্তর দিকে বেশি। আসবাবপত্রগুলোর কারণে মাঝে মাঝেই ঘরগুলো অন্ধকার মনে হয়।
ক. গৃহ নির্মাণসামগ্রীগুলো কী কী?
খ. বাড়ির সকলের মানসিক সুস্থতায় অবসর ও বিনোদনের গুরুত্ব লেখ।
গ. মিসেস সারার বাড়িতে রং নির্বাচনের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সারা ও আনিকার কাজের মূল্যায়ন কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. গৃহ নির্মাণসামগ্রীর মধ্যে ইট, সিমেন্ট, লোহা, বালু, মাটি, টিন, বাঁশ, কাঠ ইত্যাদি প্রধান।

খ. বাড়ির সকলের মানসিক সুস্থতার জন্য অবসর ও বিনোদনের গুরুত্ব অত্যধিক। শিশুদের সুস্থভাবে বেড়ে উঠার জন্য তাদের জন্য অবশ্যই সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। বিনোদনের কারণে দেহ ও মনে প্রফুল্লতা আসে। অবসর ক্লান্তি দূর করে উদ্দীপনা তৈরি করে, নতুন কর্মোদ্যোম তৈরি হয়। সর্বোপরি মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। অবসর একঘেয়েমি দূর করে ভিন্নতা আনে। এ কারণে মানসিক সুস্থতার জন্য অবসর ও বিনোদন অত্যন্ত কার্যকরী উপায়।

গ. মিসেস সারা তার বাড়িতে বসার ঘরে লাল, কমলা ও হলুদ বর্ণ; শোবার ঘরে সবুজ; শ্বশুর ও শাশুড়ির ঘরে সাদা ও আকাশি; বাচ্চাদের ঘরে গোলাপি ও গোসলখানায় নীল রং ব্যবহার করেছেন। মিসেস সারা তার বাড়িতে এরূপ রং নির্বাচনের কারণ হলো বাড়িটি সৌন্দর্যম--ত ও নান্দনিক করা। আমাদের জীবনে রঙের ভূমিকা অত্যধিক। সৌন্দর্য সৃষ্টিতে রঙের অবদান সর্বজনীন। বাসগৃহে রঙের ব্যবহার এক চমৎকার পরিবেশ তৈরি করে। এর সাহায্যে গৃহের আসবাবপত্রের প্রাধান্য ফুটিয়ে তোলা যায়। এছাড়া রঙের সাথে মানুষের অনুভূতি ও ভাবাবেগের একটি নিবিড় সংযোগ রয়েছে। বিভিন্ন প্রকার রং নানা রকম মানসিক ক্রিয়া সৃষ্টি করে। যেমন- লাল রং মনে শক্তি সঞ্চার করে ও কর্মে উদ্দীপনা যোগায়, সাদা রং পূর্ণতা, পরিত্রতা ও শান্তির প্রতীক, সবুজ রং মনকে সরস, সতেজ ও নবীন রাখে, নীল রং মনের ওপর একটি স্নিগ্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এভাবে বিভিন্ন রঙের ব্যবহার বাড়িতে মনোরম ও মোহনীয় করে। এজন্য মিসেস সারা তার বাড়িতে বিভিন্ন রং ব্যবহার করেছেন।

ঘ. সারা ও আনিকা তাদের নিজ নিজ বাড়িতে একই রং করেন। আবার আনিকার বাড়ির জানালাগুলো উত্তর দিকে বেশি হওয়ায় এবং আসবাবপত্র সঠিকভাবে বিন্যাস করতে না পারার কারণে মাঝে মাঝেই ঘরগুলো অন্ধকার মনে হয়।
সারা ও আনিকা বসার ঘরে লাল, কমলা ও হলুদ রং ব্যবহার করেছেন। এগুলোকে উষ্ণবর্ণ বলে। এ বর্ণ গরমের অনুভূতি জাগায়। এটি উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। গৃহে এসব রঙের ব্যবহার খুবই কম। এজন্য বসার ঘরে এ ধরনের রং দেওয়া যথার্থ হয়নি। তাদের শোবার ঘরের রং হলো সবুজ। সবুজ রং শীতল বর্ণের অন্তর্ভুক্ত। এটি আরামদায়ক এবং মনে শীতলভাব জাগ্রত করে। মনকে সতেজ ও নবীন রাখে। এজন্য এ রং নির্বাচন সঠিক হয়েছে। শ্বশুর ও শাশুড়ির ঘরে সাদা ও আকাশি রং দেওয়াও যুক্তিযুক্ত হয়েছে। কারণ এসব রং পবিত্রতার আবেশ তৈরি করে। উদারতার ভাব ব্যক্ত করে। মনকে নির্মল ও শুভ্র রাখে। বাচ্চাদের ঘরে গোলাপি রং দেওয়াও সঠিক হয়েছে। কেননা গোলাপি রং পবিত্রতা, ভালোবাসা, মায়া-মমতা ও স্নেহের প্রতীক। এর প্রতি সবারই দুর্নিবার আকর্ষণ থাকে। এছাড়া গোসলখানায় নীল রং দেওয়াও সঠিক হয়েছে। নীল রং শীতলতার আবেশ ছড়ায় এবং প্রশান্তি এনে দেয়।
আনিকার বাড়ির জানালাগুলো উত্তর দিকে বেশি হওয়া সঠিক হয়নি। সাধারণত জানালাগুলো দক্ষিণমুখী হওয়া আবশ্যক। তাহলে প্রয়োজনীয় আলোর সরবরাহ পাওয়া যায় এবং নির্মল বায়ু সেবন করা যায়। এছাড়া তার আসবাবপত্রগুলো সঠিকভাবে স্থাপন না করায় আরও বেশি অন্ধকার তৈরি করেছে। এজন্য তার আসবাবপত্রগুলো শিল্পনীতি অনুযায়ী পুনর্বিন্যাস করা দরকার। তাহলে অন্ধকারঅনেকটাই কমে যাবে।
সুতরাং বলা যায়, সারা ও আনিকা রং নির্বাচনে মোটামুটি বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিলেও আনিকা আসবাবপত্র বিন্যাসে ব্যর্থ হয়েছেন। এজন্য প্রায়ই তার ঘর অন্ধকার দেখা যায়।

৩. জামাল সাহেব তার ক্রয়কৃত জমিতে একটি শপিং মল নির্মাণ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি স্থপতির কাছে গেলেন এবং নকশা প্রস্তুত করে দিতে বললেন। তার জমিটি বেশ নিচু। তাই মাটি পরীক্ষার জন্য তিনি লোক নিয়োগ করলেন।
ক. নির্মাণসামগ্রী কাকে বলে?
খ. নির্মাণকাজে পানি ব্যবহার করা আবশ্যক কেন?
গ. জামাল সাহেবের মাটি পরীক্ষা করার সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. জামাল সাহেবের নির্মাণ ব্যয় অনেক বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যেসব উপকরণ দিয়ে বাড়ির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয় তাকে নির্মাণসামগ্রী বলে।

খ. পানি দ্বারা বিভিন্ন ধরনের নির্মাণের দ্রব্য প্রস্তুত করা হয় বলে নির্মাণকাজে পানি ব্যবহার করা আবশ্যক। জীবন রক্ষার জন্য যেমন পানি আবশ্যক, তেমনি নির্মাণকাজেও পানির ব্যবহার অপরিহার্য। সিমেন্ট, বালি, কংক্রিট নির্মাণের এসব দ্রব্য পানি দ্বারাই প্রস্তুত করা হয়। ইটের গাঁথুনির কাজেও পানি ব্যবহৃত হয়। পানি দ্বারা কিউরিংও করা হয়। যার সাহায্যে পানি জমিয়ে রাখা যায়। এতে নির্মাণকাজ শক্ত হয়। তবে নির্মাণকাজে পানযোগ্য পানি ব্যবহার করা উচিত এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন পানি পরিষ্কার, এসিড ও লবণমুক্ত হয়।

গ. মাটির ভার বহন ক্ষমতার ওপর বাড়ির ফাউন্ডেশন নির্ভর করে বিধায় উদ্দীপকের জামাল সাহেব মাটি পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। গৃহের পরিকল্পনা করার পরই পরিকল্পিত নকশা অনুযায়ী নির্মাণসামগ্রীর হিসাব নিতে হয়। গৃহ নির্মাণ উপকরণের মধ্যে অন্যতম হলো মাটি। মাটির ভার বহন ক্ষমতার ওপরই বাড়ির ফাউন্ডেশন নির্ভর করে বলে বহুতল ভবন নির্মাণের পূর্বে মাটি পরীক্ষা করা উচিত। উদ্দীপকের জামাল সাহেব তার ক্রয়কৃত জমিতে শপিংমল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ উদ্দেশ্যে স্থপতিকে দিয়ে নকশাও প্রস্তুত করে নিয়েছেন। কিন্তু তার জমিটি বেশ নিচু। তাই মাটি পরীক্ষা করার জন্য তিনি লোক নিয়োগ করলেন। মাটি পরীক্ষা করার মাধ্যমেই জানা যায়, মাটির স্তর ও প্রকৃতির স্বরূপ এবং কোন স্তরে কত ওজন দেওয়া যাবে এসব বিষয় এরপরই নির্মাণকাজে হাত দেওয়া উত্তম। তাছাড়া যদি জমি নিচু এবং ভরাট করা হয় তবে অনেক গভীরে পাইলিং করে মাটি পরীক্ষা করা হয়। এতে বাড়ি তথা বহুতল ভবন নির্মাণে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হয়। উদ্দীপকের জামাল সাহেব এসব দিক বিবেচনা করেই শপিংমল নির্মাণের পূর্বে মাটি পরীক্ষা করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার এরূপ সুচিন্তিত ও সুদূরপ্রসারী ভাবনা প্রশংসার দাবিদার।

ঘ. জামাল সাহেবের জমিটি বেশ নিচু বলে তার নির্মাণ ব্যয় অনেক বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গৃহ নির্মাণসামগ্রীর মধ্যে অন্যতম হলো মাটি। মাটির ভার বহন ক্ষমতার ওপরই বাড়ির ফাউন্ডেশন নির্ভর করে। এ কারণেই বহুতল ভবন নির্মাণের পূর্বে মাটি পরীক্ষা করা আবশ্যক। তবে যদি জমি নিচু এবং ভরাট হয় সেক্ষেত্রে ভবন নির্মাণ ব্যয় অনেক বেড়ে যেতে পারে। উদ্দীপকের জামাল সাহেব তার ক্রয়কৃত জমিতে একটি শপিং মল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু তার জমিটি বেশ নিচু। তাই তার মাটি পরীক্ষার করে নিতে হয়। এক্ষেত্রে মাটির গভীরে নল ঢুকিয়ে মাটির স্তর ও প্রকৃতি পরীক্ষা করে কোন স্তরে কত ওজন দেওয়া যাবে, তার বর্ণনা দেওয়া হয়। যদি জমি নিচু এবং ভরাট হয় তবে জমির অনেক গভীরে পাইলিং করতে হয়। এতে ভবন নির্মাণ ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। উদ্দীপকের জামাল সাহেবের জমিটি বেশ নিচু। তাই শপিংমল নির্মাণের পূর্বে তার নিচু জমিতেও অনেক গভীরে পাইলিং করতে হবে। তাহলেই মাটির গুণাগুণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে। নিচু জমির গভীরে পাইলিং করতে হয় বলে নির্মাণ ব্যয় অনেকাংশে বেড়ে যায়। উদ্দীপকের জামাল সাহেবের ক্ষেত্রেও এরূপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিচু জমিতে শপিংমল নির্মাণ করতে যাওয়ায় তারও নির্মাণ ব্যয় অনেকাংশে বেড়ে যাবে। তাই সার্বিক দিক বিবেচনা শেষে বলা যায়, প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।

৪. আবেদীন সাহেব তার ছোট ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে বাড়ি তুলছেন। তিনি তার ভাইকে সিমেন্ট এবং রড কিনে আনার টাকা দিলেন। বাড়িতে যেন লোহা ও কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া ভালোভাবে সম্পন্ন হয় সে বিষয়েও নজর রাখতে বললেন। আবেদীন সাহেবের ছোট ভাই দেখলেন শ্রমিকরা পানি মেশানোর অনেকক্ষণ পর সিমেন্ট ব্যবহার করছেন। এটি দেখে তিনি তাদের সাথে রাগ করলেন এবং পরবর্তীতে সতর্ক থাকতে বললেন।
ক. কত ছিদ্রবিশিষ্ট সিরামিক ইট পাওয়া যায়?
খ. বাড়ি নির্মাণে কী ধরনের বালু ব্যবহার করা হয়?
গ. আবেদীন সাহেবের ছোট ভাইয়ের শ্রমিকদের সাথে রাগ করার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আবেদীন সাহেবের ঢালাইয়ের সিদ্ধান্ত কতখানি যৌক্তিক বলে মনে কর? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ৩, ১০ ও ১৩ ছিদ্রবিশিষ্ট সিরামিক ইট পাওয়া যায়।

খ. বাড়ি নির্মাণে বিভিন্ন ধরনের বালু ব্যবহৃত হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভিটি বালু, সরু বালু, মধ্যম মোটা বালু, মোটা বালু ইত্যাদি। ভরাট করার কাজে ব্যবহৃত হয় ভিটি বালি। দেয়ালের প্লাস্টারের কাজে ব্যবহৃত হয় সরু বালু। ইটের গাঁথুনির কাজে ব্যবহৃত হয় মধ্যম মোটা বালি এবং কংক্রিটের ঢালাই কাজে ব্যবহৃত হয় মোটা বালি। ভালো বালির বৈশিষ্ট্য হলো এটি ধুলা, ময়লা ও কাদামাটি বর্জিত হয়। বালি তীক্ষ্ণ দানাযুক্ত হয়। লোহা বালি ধুয়ে ব্যবহার করা আবশ্যক।

গ. আবেদীন সাহেবের ছোট ভাইয়ের শ্রমিকদের সাথে রাগ করার কারণ হলো সিমেন্ট যথাযথভাবে ব্যবহার না করা।
গৃহনির্মাণের জন্য সিমেন্ট অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। বাড়ি নির্মাণে সাধারণত পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট ব্যবহৃত হয়। এছাড়া সাদা সিমেন্ট, রঙিন সিমেন্ট, সিলিকা সিমেন্ট বিশেষ বিশেষ কাজে ব্যবহার করা হয়। তবে পানি মেশানো সিমেন্ট ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। এটি ৩০ মিনিটের মধ্যে ব্যবহার করা আবশ্যক। উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, আবেদীন সাহেব তার ছোট ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে বাড়ি তৈরি করছেন। তার ছোট ভাই এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে গিয়ে দেখলেন যে, শ্রমিকরা পানি মেশানোর অনেকক্ষণ পর সিমেন্ট ব্যবহার করছেন। এটি দেখেই তিনি তাদের সাথে রাগ করলেন এবং পরবর্তীতে সতর্ক থাকতে বললেন। বাড়ি নির্মাণে সিমেন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নিয়ম মানতে হয়। পানি মেশানো সিমেন্ট ৩০ মিনিটের মধ্যে ব্যবহার করা আবশ্যক। কেননা ৩০ মিনিট পর সিমেন্টের শক্তি নষ্ট হতে থাকে। সিমেন্টের সেটিং টাইম ১০ ঘণ্টা। তবে সিমেন্ট পুরাপুরি শক্ত হতে সিক্ত অবস্থায় ২৮ দিন বা ৪ সপ্তাহ সময় লাগে। উদ্দীপকের শ্রমিকরা পানি মেশানো সিমেন্ট অনেকক্ষণ পর ব্যবহার করেছেন। এর ফলে সিমেন্টের শক্তি নষ্ট হওয়ার পর তা ব্যবহৃত হয়েছে বলে আবেদীন সাহেবের ছোট ভাই তাদের সাথে রাগ করেছেন।

ঘ. আবেদীন সাহেবের ঢালাইয়ের সিদ্ধান্ত পুরাপুরি যৌক্তিক বলে মনে করি। বাড়ি তৈরির কাজে লোহাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। লোহা ও কংক্রিটের ঢালাই বাড়ির ভিত, ছাদ ও পিলার মজবুত করতে সহায়তা করে থাকে। এ দিকের প্রতি খেয়াল রেখেই ঢালাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়। উদ্দীপকের আবেদীন সাহেব তার ছোট ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে বাড়ি নির্মাণ করছেন। তিনি তার ভাইকে সিমেন্ট এবং রড কিনে আনার টাকা দিলেন। এছাড়াও বাড়িতে যেন লোহা ও কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া ভালোভাবে সম্পন্ন হয় সে বিষয়েও নজর রাখতে বললেন। লোহা ও কংক্রিটের ঢালাই দিলে বাড়ির ভিত, ছাদ, পিলার' ইত্যাদি মজবুত হয়। পাত, রড, সিট, কব্জা, স্ক্রু, পেরেক, নাটবলটু ইত্যাদি নানা আকারের লোহার জিনিস গৃহনির্মাণে ব্যবহৃত হয়। লোহা বাড়ির পিলার তৈরিতে, ছাদ, জানালা ও বারান্দার গ্রিল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। জানালা ও বারান্দায় লোহার গ্রিল দিলে বাড়ির নিরাপত্তা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়। এ কারণেই বাড়িতে ঢালাই দেওয়ার কাজ করতে হয়। উদ্দীপকের আবেদীন সাহেবও এ বিষয়টি মাথায় রেখেছেন। বাড়ির ভিত, ছাদ ও পিলার মজবুত করতে লোহা ও কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া আবশ্যক। আবেদীন সাহেবও এ বিষয়টি চিন্তা করেই তার ভাইকে ঢালাই দিতে বলেছেন। এতে তার বাড়ির ভিত্তি মজবুত হবে।
উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, আবেদীন সাহেবের ঢালাইয়ের সিদ্ধান্ত একদম যৌক্তিক। এ কারণে আমিও তারসিদ্ধান্তকে যৌক্তিক বলে মনে করি।

৫. কামাল আহমেদ তার গ্রামের বাড়িতে একটি শয়নকক্ষের সামনে কাঠের দরজা দিবেন। তার বাড়িতে হরীতকীর গাছ ছিল। তিনি এ গাছটি কেটে ফেললেন এবং কাঠের তক্তা তৈরি করলেন দরজা বানানোর উদ্দেশ্যে। এছাড়া বাড়ির জন্য টিন ও বাঁশেরও ব্যবহার করে থাকেন তিনি।
ক. জানালা ও পার্টিশনের গ্লাস কোন ফ্রেমে আটকানো থাকে?
খ. বাড়ি নির্মাণে কাচ ব্যবহৃত হয় কেন?
গ. কামাল আহমেদকে কাঠ ব্যবহারের পূর্বে কী করতে হবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. গ্রামাঞ্চলে টিন ও বাঁশের ব্যবহার সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদানে উদ্দীপকটি কি সফল? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জানালা ও পার্টিশনের গ্লাস থাই অ্যালুমিনিয়ামের ফ্রেমে আটকানো থাকে।

খ. বাড়ি নির্মাণে কাচ ব্যবহৃত হয় সৌন্দর্য বর্ধন এবং গোপনীয়তা রক্ষার উদ্দেশ্যে। শহরের বাড়ি তথা আধুনিক বাড়িতে কাচের ব্যবহার অধিক। দরজা, জানালায়ও কাচ ব্যবহৃত হয়। কাচ ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়। গোপনীয়তা ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করার ক্ষেত্রে ট্রান্সলুসেন্ট বা ওপেক কাচ ব্যবহার করা হয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ও মানের কাচ বাজারে পাওয়া যায়। এসব কারণেই বাড়ি নির্মাণে কাচ ব্যবহৃত হয়।

গ. কামাল আহমেদকে কাঠ ব্যবহারের পূর্বে কাঠের সিজনিং করতে হবে। গহনির্মাণের জন্য যেসব সামগ্রীর প্রয়োজন পড়ে সেগুলোর মধ্যে কাঠও রয়েছে। কিন্তু কাঠ ব্যবহার করার পূর্বে সিজনিং করে নিতে হয়। অন্যথায় কাঠ ব্যবহারের উপযোগী হয় না। সিজনিংয়ের যথেষ্ট উপকারিতা আছে। উদ্দীপকের গৌতম বাবু তার গ্রামের বাড়িতে একটি শয়নকক্ষের সামনে কাঠের দরজা দিবেন। তার বাড়িতে হরীতকী গাছ ছিল। তিনি এ গাছটি কেটে ফেললেন এবং কাঠের তক্তা তৈরি করলেন। কিন্তু তিনি যদি কাঠ ব্যবহারের পূর্বে সিজনিং না করেন তবে ব্যবহার করে উপকার পাবেন না। গাছ কেটে কাঠের তক্তা তৈরি করা হয় এবং এ ক্তা ছায়ায় রেখে সিজনিং করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে গরম বাষ্পের সাহায্যে অতি অল্প সময়ে কাঠ সিজনিং করা হয়। সিজন করা কাঠ ঘুণ বা পোকায় ধরে না। বাঁকা হয় না বা ফুলে যায় না। কাঠের ভিতরের পানি বের হয়ে যায় বলে ওজনে হালকা হয়। সর্বোপরি কাঠের ওপর কাজ ও পলিস করতে সুবিধা হয়। ভালো কাঠ নিরেট ওজনসম্পন্ন হয়। এসব কারণেই কাঠের তক্তা তৈরি করার পর তা সিজনিং করতে হয় যেন কাঠের তৈরি জিনিসটি টেকসই হয়। উদ্দীপকের কামাল আহমেদকেও কাঠ ব্যবহারের পূর্বে এরূপ সিজনিং করতে হবে।

ঘ. না, গ্রামাঞ্চলে টিন ও বাঁশের ব্যবহার সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদানে উদ্দীপকটি সফল নয়।
গ্রামাঞ্চলে গৃহনির্মাণে টিন ও বাঁশের ব্যবহার লক্ষ করা যায়। গ্রামাঞ্চলে টিনের ব্যবহার অধিক হয়। বিভিন্ন কাজে বাঁশ ও টিনের ব্যবহার করে থাকে গ্রামাঞ্চলের লোকজন। উদ্দীপকে দেখা যায়, কামাল আহমেদ তার বাড়িতে শয়নকক্ষের সামনে কাঠের দরজা দিবেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি তার বাড়ির হরীতকী গাছটি কেটে ফেলেছেন। আবার বাড়িতে তিনি টিন ও বাঁশেরও ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে বাঁশ ও টিনের ব্যবহার সম্পর্কে সম্যক ধারণা এখান থেকে পাওয়া যায় না। গ্রামাঞ্চলে গৃহনির্মাণে অধিকাংশ মানুষই টিন ব্যবহার করে থাকে। টিন দ্বারা ঘরের চাল, দেয়াল বা বাড়ির চারপাশের বাউন্ডারি দেওয়া হয়। এসব কারণে গ্রামাঞ্চলে টিনের ব্যবহার অধিক হয়। আবার গ্রামাঞ্চলে গৃহনির্মাণে বাঁশও ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। বাঁশ ঘরের খুঁটি, চালা ও বেড়া নির্মাণে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাঁশে আলকাতরা মাখিয়ে এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করা যায় এবং এতে ঘুণও ধরে না। অর্থাৎ দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে টিন ও বাঁশের যথেষ্ট ব্যবহার রয়েছে। কিন্তু উদ্দীপকের গৌতম বাবুর কর্মকান্ড- টিন ও বাঁশের ব্যবহারের দিকটি সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায় না। এখানে কেবল দেখা যায়, তিনি বাড়ি নির্মাণে টিন ও বাঁশের ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এর বাইরে আর কোনো ধারণা এখান থেকে পাওয়া যায় না।
তাই বলা যায়, গ্রামাঞ্চলে টিন ও বাঁশের ব্যবহার সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদানে উদ্দীপকটি সফল নয়।

৬. তৃণার সামনে পরীক্ষা। তাই সে মনোযোগ দিয়ে তার পড়াা পড়াছিল। এমনি সময় বিদ্যুৎ চলে গেল। তৃণার মা তার জন্য মোমবাতি ধরিয়ে আনলেন। মোমবাতির আলো দিয়েই তৃণা অন্ধকারে পড়াশুনা করতে লাগল।
ক. সার্কিট কী?
খ. কক্ষে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হয় কেন?
গ. উদ্দীপকে আলোর কোন উৎসকে উপস্থাপন করা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তৃণা দিনের বেলায় অন্য উৎস থেকেও আলো পেতে পারে- মন্তব্যটির যৌক্তিকতা নিরূপণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উৎস হতে তড়িৎ প্রবাহ চলাচলের পথই হলো সার্কিট।

খ. সকল কাজ যেন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় সেজন্য কক্ষে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হয়। যেকোনো কাজ করার জন্যই পর্যাপ্ত আলো দরকার। অপর্যাপ্ত আলোতে কাজ করলে স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়, চোখে ক্লান্তি আসে এবং বিরক্তবোধ হয়। ফলে কাজ ভালো হয় না। এসব সমস্যা এড়ানোর জন্য এবং সকল কাজ পর্যাপ্ত আলোর ব্যবহার নিশ্চিত করতেই কক্ষে আলোর ব্যবস্থা করতে হয়। আর এজন্য আলোর প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম উৎসের দিকে খেয়াল রাখা আবশ্যক।

গ. উদ্দীপকে আলোর কৃত্রিম উৎসকে উপস্থাপন করা হয়েছে। আলো জীবনীশক্তির উৎস। কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত আলোর প্রয়োজন হয়। আর পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আলোর উৎসের দিকে খেয়াল রাখা কর্তব্য। আলোর দুটি উৎস রয়েছে। যথা- প্রাকৃতিক উৎস ও কৃত্রিম উৎস। দিনে প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থা করা গেলেও রাতের বেলা কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করতেই হয়। উদ্দীপকের তৃণার সামনে পরীক্ষা। তাই সে মনোযোগ দিয়ে তার পড়াা পড়াছিল। এমনি সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেল। তৃণার যেন পড়াাশুনা করতে অসুবিধা না হয়। সেজন্য তার মা মোমবাতি ধরিয়ে আনলেন। মোমবাতির আলো দিয়েই তৃণা অন্ধকারে পড়াাশুনা করতে লাগল। মোমবাতির আলো কৃত্রিম উপায়েই সৃষ্ট হয়। মোমবাতি, হারিকেন, বৈদ্যুতিক বাতি ইত্যাদির সাহায্যে কৃত্রিমভাবে বাড়িঘর আলোকিত করা যায়। শহরাঞ্চলে সর্বত্র এবং গ্রামেও এখন বৈদ্যুতিক লাইন পৌঁছে গেছে। উদ্দীপকের তৃণা পড়াাশুনার মাঝখানে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কবলে পড়ালে তার মা মোমবাতির আলোর ব্যবস্থা করলেন।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকেও বোঝা যায়, মোমবাতি আলোর কৃত্রিম উৎস এবং এখানে আলোর কৃত্রিম উৎসকেই উপস্থাপন করা হয়েছে।

ঘ. তৃণা দিনের বেলায় প্রাকৃতিক উৎস থেকেও আলো পেতে পারে সূর্য থেকে। আলো আমাদের জীবনীশক্তির উৎস। যেকোনো কাজ করতে গেলেই আমাদের আলোর প্রয়োজন পড়ে। তাই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে আলোর দুটি উৎসের দিকেই খেয়াল রাখা আবশ্যক। আলোর দুটি উৎস রয়েছে। যথা- ১. প্রাকৃতিক উৎস ও ২. কৃত্রিম উৎস। প্রাকৃতিক উৎস হলো সূর্যকিরণ, যা কেবল দিনের বেলাতেই আলোর সরবরাহ করতে পারে। উদ্দীপকে তৃণাও এ সুবিধা ভোগ করতে পারবে। তৃণার সামনে পরীক্ষা হওয়ায় সে লেখাপড়াা করছিল। কিন্তু হঠাৎ বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়ায় তৃণার লেখাপড়াায় বিঘ্ন ঘটল। এ সমস্যা সমাধান করতে তৃণার মা মোমবাতি জ্বালিয়ে আনলেন। রাতের বেলা আলো সরবরাহ করতে হয় কৃত্রিম উপায়েই। তাই তৃণার মা মোমবাতি দিয়েই কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু উদ্দীপকের তৃণা দিনের বেলা প্রাকৃতিক উৎস থেকেও আলো পেতে পারে। প্রাকৃতিক উপায়ে সূর্যকিরণ থেকে আলো পাওয়া যায়। ঘরের জানালা ও দরজা দিয়ে প্রাকৃতিক আলো ঘরে প্রবেশ করে। সূর্যের আলোর ব্যবস্থা থাকলে অন্য কোনো উৎসের আলোর দরকার পড়ে না। উদ্দীপকের তৃণা দিনের বেলায় এ প্রাকৃতিক উৎস থেকে আলো পাওয়ার মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে। তখন আর তার কৃত্রিম আলোর দরকার পড়ে না। আর এ প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থা কেবল দিনের বেলাতেই করা সম্ভব হয়। তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় এবং উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, প্রশ্নের মন্তব্যটি যৌক্তিক।

৭. আমজাদ সাহেব তার বাড়ির সকল কক্ষে এনার্জি বাল্বই ব্যবহার করেন। এ বাল্বের সাদা আলোতেই কাজ করা আরামদায়ক মনে হয় তার কাছে। তবে তার একেকটি কক্ষে একেক্ ওয়াটের বাল্ব লাগানো হয়েছে। কাজ অনুযায়ী এসব আলো ব্যবহার করা যায়।
ক. আলোর প্রকৃতি কিসের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে?
খ. সুষম আলোর ব্যবস্থা করতে হয় কেন?
গ. আমজাদ সাহেবের একেক ওয়াটের বাল্ব লাগানোর কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আমজাদ সাহেবের এনার্জি বাল্ব লাগানোর সিদ্ধান্ত কতখানি যৌক্তিক বলে মনে কর? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আলোর প্রকৃতি বাল্বের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে।

খ. সর্বত্র যেন সমানভাবে আলো পড়ে সেজন্য সুষম আলোর ব্যবস্থা করতে হয়। কৃত্রিম আলো পাওয়ার জন্যই আমরা বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহার করে থাকি। বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহারের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হয় যেন সুষম আলোর ব্যবস্থা করা যায়। এ উদ্দেশ্যে প্রয়োজনে বড় ঘর হলে একের অধিক বাল্বও ব্যবহার করা যেতে পারে। মূলত কাজের সুবিধার জন্যই সুষম আলোর ব্যবস্থা করতে হয়।

গ. আমজাদ সাহেবের একেক ওয়াটের বাল্ব লাগানোর কারণ হলো কাজ অনুযায়ী আলো ব্যবহার করা।
আলো আমাদের জীবনীশক্তির উৎস এবং যেকোনো কাজ করতেই আলোর প্রয়োজন পড়ে। কৃত্রিম আলো পাওয়ার জন্য আমরাবৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহার করে থাকি। কাজের ধরন অনুযায়ী সঠিক ও উত্তম আলোর প্রয়োজন পড়ে। আর এটি নির্ভর করে বাল্বের প্রকৃতির ওপর। কাজ অনুযায়ী যেন কম/বেশি আলোর ব্যবহার করা যায় এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা যায়। সেজন্য কম ও বেশি ওয়াট দুই ধরনের বাল্বই ব্যবহার করা যায়। উদ্দীপকের আমজাদ সাহেবের একেকটি কক্ষে একেক ওয়াটের বাল্ব লাগানো হয়েছে। তিনি কাজ অনুযায়ী এসব বাল্বের আলোর প্রয়োগ ঘটিয়ে থাকেন। সঠিক ও উত্তম আলো কী। পরিমাণ আলোর বাল্ব ব্যবহৃত হবে তার ওপর নির্ভর করে। বাজারে বিভিন্ন ওয়াটের বাল্ব পাওয়া যায়। সূক্ষ্ম কাজের জন্য বেশি ওয়াটের বাল্ব প্রয়োজন হয়। একটি কক্ষে কম ও বেশি ওয়াট দুই ধরনের বাল্ব থাকাই উত্তম। ফলে কাজ অনুযায়ী কম/বেশি আলোর ব্যবহার করা যায় এবং বিদ্যুৎত্ত সাশ্রয় করা যায়। উদ্দীপকের আমজাদ সাহেবও তার কক্ষে একেক ওয়াটের বাল্ব লাগিয়েছেন। কাজের ধরন অনুযায়ী তিনি। একেক সময় একেক ওয়াটের বাল্বের আলো ব্যবহার করে থাকেন। তাই বলা যায়, আমজাদ সাহেবের একেক ওয়াটের বাল্ব লাগানোর কারণ হলো কাজ অনুযায়ী আলো ব্যবহার করা এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা।

ঘ. আমজাদ সাহেবের এনার্জি বাল্ব লাগানোর সিদ্ধান্তকে পুরাপুরি যৌক্তিক বলে মনে করি।
আলো আমাদের জীবনীশক্তির উৎস। যেকোনো কাজ করতেই পর্যাপ্ত আলোর দরকার পড়ে। আলোর আবার দুটি উৎসও রয়েছে। যথা- প্রাকৃতিক উৎস ও কৃত্রিম উৎস। কৃত্রিম উৎস থেকে আলো পাওয়ার জন্য আমরা বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহার করে থাকি। কাজের ধরন অনুযায়ী সঠিক ও উত্তম আলো ব্যবহার করা প্রয়োজন। আর যেসব বাল্বের অভ্যন্তরভাগ তুষারাচ্ছন্ন প্রকৃতির হয়, সেসব বাল্বের আলো আমাদের জন্য আরামদায়ক। উদ্দীপকের আমজাদ সাহেব তার বাড়ির প্রতিটি কক্ষেই এনার্জি বাল্ব লাগিয়েছেন। এনার্জি বাল্বের আলো তুষারাচ্ছন্ন প্রকৃতির হওয়ায় এ আলো আমাদের জন্য আরামদায়ক হয়। কাজের ধরন অনুযায়ী সঠিক ও উত্তম আলো ব্যবহার করা প্রয়োজন। আলোর প্রকৃতি বাল্বের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। পরিষ্কার কাচের বাল্বের আলো চোখের জন্য অস্বসিত্মকর ও পীড়াদায়ক। কিন্তু যেসব বাল্বের অভ্যন্তরভাগ তুষারাচ্ছন্ন প্রকৃতির হয়, সেসব বাল্বের আলো আরামদায়ক হয়। এ আলোতে কাজ করেও আরাম পাওয়া যায়। উদ্দীপকের আমজাদ সাহেব তার বাড়ির কক্ষে যে এনার্জি বাল্ব লাগিয়েছেন তার অভ্যন্তরভাগ সাদা বা তুষারাচ্ছন্ন প্রকৃতির। এ ধরনের বাল্বের আলো আমাদের চোখের জন্য আরামদায়ক হয় এবং যেকোনো কাজ সহজে সমাধা করতেও অত্যন্ত সহায়ক। সঠিক ও উত্তম আলোর জন্য এ ধরনের বাল্ব ব্যবহার করারই পরামর্শ দেওয়া হয়। তাই সার্বিক দিক বিবেচনা শেষে আমজাদ সাহেবের এনার্জি বাল্ব লাগানোর সিদ্ধান্তকে আমি পুরাপুরি যৌক্তিক বলে মনে করি

৮. আব্দুল কাদের সাহেব তার বাড়িতে ফ্লোরোসেন্ট বাল্ব ব্যবহার করেন। এর দাম তার সাধ্যের মধ্যে এবং তিনি এ বাল্ব ব্যবহার করে উপকারও পান। ঘরকে আলোকিত রাখতে তার চেষ্টার কোনো কমতি নেই। তাই তিনি নির্বিঘ্নে কাজ সম্পাদন করতে সর্বত্র আলোর ব্যবস্থা রাখতে চেষ্টা করেন।
ক. আমরা কোন আলোর ব্যবস্থায় অভ্যস্ত?
খ. বাল্বের অবস্থান কীরূপ হওয়া উচিত?
গ. উদ্দীপকে বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহারে কোন বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ঘরকে আলোকিত রাখতে সর্বত্র আলোর ব্যবস্থা করার পাশাপাশি কাদের সাহেবকে আরও অনেক বিষয় খেয়াল রাখতে হবে- মন্তব্যটির যথার্থতা নির্ণয় কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আমরা ওপর হতে পতিত আলোর ব্যবস্থায় অভ্যস্ত।

খ. বাল্বের অবস্থান এরূপ হওয়া উচিত যেন নির্বিঘ্নে আলো আসতে পারে। ঘরে উষ্ণ আলো পেতে হলে বাল্বের অবস্থানের কথাও বিবেচনা করতে হবে। বাল্ব এমন জায়গায় স্থাপন করতে হবে যেন আলো উত্তমরূপে প্রতিফলিত হয়। উঁচু আসবাবপত্র বা অন্য কোনোকিছুর দ্বারা যেন আলো বাধাপ্রাপ্ত না হয় সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। তাই বাল্বের অবস্থান এরূপ হওয়া উচিত যেন নিরবচ্ছিন্নভাবে আলো আসতে পারে।

গ. উদ্দীপকে বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহারে ঘর আলোকিত করার সরঞ্জামের ব্যবহারবিধির বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহার করে আমরা কৃত্রিমভাবে আলো পেয়ে থাকি। তবে বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশকিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হয়। এর মধ্যে ফ্লোরোসেন্ট বাল্ব ব্যবহারের বিষয়টি অন্যতম। উদ্দীপকে দেখা যায়, আব্দুল কাদের সাহেব তার বাড়িতে ফ্লোরোসেন্ট বাল্ব ব্যবহার করেন। এ বাল্বের দাম তার সাধ্যের মধ্যে এবং তিনি এটি ব্যবহার করে উপকারও পান। ঘরে যেন পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকে সেজন্য তিনি সবসময়ই চেষ্টা করেন। ঘর আলোকিত করার সরঞ্জামের মধ্যে ফ্লোরোসেন্ট বাল্ব একটি। এ বাল্বের আলো আরামদায়ক ও প্রীতিকর হয়। এতে অধিক আলোও পাওয়া যায়। এ বাল্বের আলো বেশ শীতল হয় এবং বিভিন্ন কক্ষের জন্যও উপযুক্ত। উদ্দীপকের কাদের সাহেব তার বাড়িতে এ বাল্বই ব্যবহার করেছেন। ঘর আলোকিত করার সরঞ্জাম যেমন হওয়া উচিত, কাদের সাহেবের ব্যবহৃত সামগ্রী ঠিক তেমনি। তিনি বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহার করার নিয়ম অনুসরণপূর্বক ঘর আলো আলোকিত করার সরঞ্জাম ব্যবহার করেছেন। আর এটি বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহারের আলোকিত করার সরঞ্জামের ব্যবহারের দিকটিকেই নির্দেশ করে। উদ্দীপকে উক্ত বিষয়টিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

ঘ. ঘরকে আলোকিত রাখতে উদ্দীপকের কাদের সাহেবকে সর্বত্র আলোর ব্যবস্থা করার পাশাপাশি আরও বেশকিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
কৃত্রিম উপায়ে আলো সরবরাহ করার একটি অন্যতম মাধ্যম হলো বৈদ্যুতিক বাল্ব। তবে বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশকিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা আবশ্যক। ঘর আলোকিত করার জন্যবিভিন্ন সরঞ্জামের প্রয়োজন পড়ে এবং সেগুলো কীরূপ হওয়া উচিত সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হয়। উদ্দীপকের কাদের সাহেব তার বাড়ির সর্বত্র আলোর ব্যবস্থা করতে চেষ্টায় কোনো ত্রুটি রাখেন না। সব কাজ যেন নির্বিঘ্নে সম্পাদন করা যায় সে ব্যাপারেও তিনি বেশ সচেতন। সর্বত্র আলোর ব্যবস্থা রাখতে তিনি ফ্লোরোসেন্ট বাল্ব ব্যবহার করছেন। কিন্তু এর বাইরেও তাকে আরও বেশকিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে যেন ঘরকে আলোকিত রাখা যায়। তাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন ঘর আলোকিত করার সরঞ্জাম সহজে লাগানো ও খোলা যায়, সহজে পরিষ্কার করা যায় এবং দাম যেন সাধ্যের মধ্যে থাকে। এছাড়াও বিবেচনায় রাখতে হবে আরও যেসব বিষয় সেগুলো হলো- ঘর আলোকিত করার সরঞ্জামের মাপ ও আকৃতি যেন কক্ষের বা স্থাপনের সাথে মানানসই হয়, আলোর সংবন্ধনীগুলো যেন স্থানের সাথে মানানসই হয়, সংবন্ধনী ও বাল্ব যেন পরিষ্কার থাকে এবং আলো যেন কম প্রতিফলিত না হয় ইত্যাদি। এসব বিষয় বিবেচনায় রাখলেই কাদের সাহেবের ঘরকে আলোকিত করার প্রচেষ্টা পুরাপুরি সফল হবে। তাই সার্বিক দিক বিবেচনা শেষে বলা যায়, প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।

৯.ফ্লোরোসেন্ট বাল্বের সাদা আলোয় পরিষ্কারভাবে সব দেখতে পায় পিংকি। তার লাল জামা, বাবার কালো পাঞ্জাবি, মায়ের নীল শাড়ি এবং ভাইয়ের সবুজ টুপিটা অনায়াসেই খুঁজে পায় সে। কিন্তু রাতে যখন কালো রঙের ডিমলাইট জ্বালানো হয় তখন সে কোনো রংই ধরতে পারে না
ক. চাঁদের আলো কেমন?
খ. আমরা কীভাবে রঙের পার্থক্য বুঝতে পারি?
গ. পিংকির রাতের বেলা রঙের পার্থক্য ধরতে না পারার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. পিংকির সব জিনিস খুঁজে পাওয়ার পিছনে সাদা আলোর ভূমিকা অনবদ্য- মন্তব্যটির যৌক্তিকতা নিরূপণ কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. চাঁদের আলো নীলাভ।

খ. আলোর প্রতিফলন যথাযথ হলে আমরা রঙের পার্থক্য বুঝতে পারি। আলো এক ধরনের শক্তি। আলো ও রং পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। অমিরা আমাদের চারপাশের সকল বস্তু আলোর মাধ্যমেই দেখতে পাই। আলো ব্যতীত রং উদ্ভাসিত হতে পারে না। রঙের ওপর যখন আলো উত্তমরূপে প্রতিফলিত হয় তখন রংটি আলোকিত হয়। এরপর এ রং সহজেই আমাদের দৃষ্টিগোচর হয় এবং আমরা রঙের পার্থক্য বুঝতে পারি। কোনটা কোন রং সেটিও ধরতে পারি। তাই বলা যায়, আলোর প্রতিফলন যথাযথ হলেই আমরা রঙের পার্থক্য বুঝতে পারি।

গ. পিংকির রাতের বেলা রঙের পার্থক্য ধরতে না পারার কারণ হলো তার বাসায় ব্যবহৃত কালো রঙের ডিমলাইট।
আলো ব্যতীত কোনো রং উদ্ভাসিত হতে পারে না। কোনো দ্রব্যের যে রং আমরা দেখি তা নির্ভর করে দ্রব্যটি কী পরিমাণ আলো শোষণ করে এবং কী পরিমাণ আলো প্রতিফলন করে তার ওপর। সাদা আলোয় রঙের প্রতিফলন ঘটলেও কালো রং দ্রব্যে আলো পড়ালে তা সব রং শোষণ করে নেয়। উদ্দীপকের পিংকি ফ্লোরোসেন্ট বাল্বের সাদা আলোয় সব রঙিন জিনিস ঠিকমতোই খুঁজে পায়। কিন্তু রাতের বেলা যখন কালো রঙের ডিমলাইট জ্বালানো হয় তখন সে কোনো রঙের পার্থক্যই ধরতে পারে না। এর কারণ হলো সাদা আলোতে সকল জিনিসের রং সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় এবং কালো দ্রব্যে আলো পড়ালে সকল রং-ই শোষিত হয়। আলোর ওপর রঙের এবং রঙের ওপর আলোর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। কোনো অস্বচ্ছ দ্রব্যের ওপর আলো পড়ালে এর মধ্যকার কিছু রং ঐ দ্রব্যটি শোষণ করে নেয় এবং কিছু রং প্রতিফলিত করে। যে রংটি প্রতিফলিত করে, ঐ রংটিই আমরা দেখতে পাই। সাদা দ্রব্যে আলো পড়ালে সম্পূর্ণটাই প্রতিফলিত হয়। কিন্তু কালো দ্রব্যে আলো পড়ালে সকল রং-ই শোষিত হয়। সাদা আলোতে সকল জিনিসের রং উত্তমরূপে প্রতিফলিত হওয়ায় পিংকি সব জিনিস খুঁজে পায়। কিন্তু কালো রং গাঢ় এবং গাঢ় রং আলো শোষণ করে বিধায় পিংকি রাতের বেলা কোনো রঙের পার্থক্য করতে পারে না।
তাই বলা যায়, পিংকির রাতের বেলা কোনো রঙের পার্থক্য করতে না পারার কারণ হলো কালো রঙের অন্য সকল রংকে শোষণ করে নেওয়া।

ঘ. পিংকির সব জিনিস খুঁজে পাওয়ার কারণ হলো ফ্লোরোসেন্ট বাল্বের সাদা আলোয় সকল রং উত্তমরূপে প্রতিফলিত হওয়া।
কোনো দ্রব্যের রং যা আমরা দেখি তা মূলত নির্ভর করে দ্রব্যটি কী পরিমাণ আলো শোষণ করে এবং কী পরিমাণ আলো প্রতিফলন করে তার ওপর। আলোর রং নির্ভর করে তার উৎস এবং যা ভেদ করে আলো আমাদের চোখে এসে পড়ে তার ওপর। সাদা আলোতে সকল জিনিসের রং যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয় বলে সব রঙের জিনিসই খুঁজে পাওয়া যায়। উদ্দীপকে দেখা যায়, পিংকি ফ্লোরোসেন্ট বাল্বের সাদা আলোতে পরিষ্কারভাবে সব দেখতে পায়। তার লাল জামা, বাবার কালো পাঞ্জাবি, মায়ের নীল শাড়ি এবং ভাইয়ের সবুজ টুপি সবকিছুই সে অনায়াসে খুঁজে পায় সাদা আলোতে। কিন্তু রাতের বেলা কালো রঙের ডিমলাইটের আলোয় সে কোনো রঙের পার্থক্য নিরূপণ করতে পারে না। এর কারণ হলো হালকা রং আলোর প্রতিফলন ঘটায়। .সাদা আলোতে সকল রংই বোঝা যায়। ফ্লোরোসেন্ট বাল্বের আলো সাদা। সাদা আলোতে সকল জিনিসের রং সঠিকভাবে প্রতিফলিত হলেও কালো আলোতে সকল রং শোষিত হয় বলে রঙের পার্থক্য করা যায় না। উদ্দীপকের পিংকির ক্ষেত্রেও এ বিষয়টির প্রতিফলন লক্ষণীয়। সে ফ্লোরোসেন্ট বাল্বের সাদা আলোতে সকল রঙিন জিনিসের পার্থক্য বের করতে পারে এবং সব জিনিস সহজে খুঁজেও পায়। কিন্তু গাঢ় রং আলো শোষণ করে। তাই কালো আলোতে সে রঙের পার্থক্য ধরতে পারে না। অর্থাৎ পিংকির সব জিনিস খুঁজে পাওয়ার পিছনে বাল্বের সাদা আলোই অনবদ্য ভূমিকা রেখেছে। তাই প্রশ্নের মন্তব্যটি পুরাপুরি যৌক্তিক।

১০. নরসিংদীর একটি চরাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাস করেন রহিমা বেগম ও তার পরিবার। তাদের এলাকায় বিদ্যুতের সরবরাহ ছিল না। কিন্তু সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে বর্তমানে তারা অনেক কাজ করছেন। রহিমা বেগম এর মাধ্যমে চারটি বাল্ব ও একটি সাদা-কালো টিভি চালাতে পারেন।
ক. সৌরবিদ্যুৎ কী?
খ. সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কী ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়? বুঝিয়ে লেখ।
গ. রহিমা বেগম তার বাড়িতে কীভাবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা শুরু করেছেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সৌরশক্তির ব্যবহার সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা প্রদানে উদ্দীপকটি যথেষ্ট নয়- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সূর্য থেকে যে বিদ্যুৎ পাওয়া যায় সেটিই হলো সৌরবিদ্যুৎ।

খ. সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নানা ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। এ শক্তি ব্যবহার করে জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমানো যায়, যা বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় কমাতে সাহায্য করে। পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ করে। এ শক্তি ব্যবহারে বিপদের কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থেও সৌরশক্তি ভূমিকা রাখে। গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারের পাশাপাশি আরও নানা ধরনের কাজে সৌরশক্তি ব্যবহারকরা যায় এবং সুবিধাও পাওয়া যায়।

গ. রহিমা বেগম তার বাড়িতে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অবলম্বনের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা শুরু করেছেন।
সূর্য থেকে যে বিদ্যুৎ পাওয়া যায় সেটিই হলো সৌরবিদ্যুৎ। সৌরবিদ্যুৎ আমাদের দেশের গ্রামগুলোকে আলোকিত করেছে। আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষ সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছে। সৌরবিদ্যুৎ চালু করার পূর্বে বেশকিছু পর্যায় অতিক্রম করতে হয়। উদ্দীপকের রহিমা বেগম ও তার পরিবারকে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের মাধ্যমে উপকৃত হতে দেখা যায়। তারা নরসিংদীর একটি চরাঞলের প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাস করেন। তাদের এলাকায় বিদ্যুতের সরবরাহ ছিল না। কিন্তু বর্তমানে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে তারা অনেক কাজ করছেন। রহিমা বেগম এর মাধ্যমে চারটি বাল্ব ও একটি সাদা-কালো টিভি চালাতে পারেন। আমাদের দেশে ২০০৩ সালে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় সোলার হোম সিস্টেম প্রকল্প চালু করা হয়। এ উদ্দেশ্যে গ্রামাঞ্চলের টিনের চালা ঘরের ছাদে সৌর প্যানেল বসানো হয়। প্রত্যেক ব্যবহারকারীকে প্রাথমিকভাবে ৪৫০০ টাকা দিয়ে প্যানেলটি নিতে হয়। এটি ২০ বৎসর স্থায়ী হবে এবং এটি চালাতে একটি ব্যাটারি লাগে। এরপর ব্যবহারকারীকে সর্বোচ্চ ৩৬ মাসের জন্য প্রতি মাসে ৭৫০ টাকা কিসিত্ম দিতে হয়। একটি প্যানেলের মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী চারটি বাল্ব ও একটি সাদা-কালো টিভি চালাতে পারেন। উদ্দীপকের রহিমা বেগমকেও এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা শুরু করতে হয়েছে।

ঘ. সৌরশক্তি ব্যবহার করে কেবল সৌরবিদ্যুৎ নয় বরং আরও নানা কাজ করা যায় বলে সৌরশক্তির ব্যবহার সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা প্রদানে উদ্দীপকটি যথেষ্ট নয়।
পৃথিবীর সকল শক্তির মূল উৎস হলো সূর্য। সূর্যের বিকীর্ণ রশ্মি বিপুল তাপশক্তি বহন করে আনে। বর্তমানে সূর্যের এ অফুরন্ত শক্তিকে দিনে ও রাতে সবসময় ব্যবহারের জন্য নানা রকম প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হচ্ছে। উদ্দীপকে সৌরশক্তির ব্যবহারের একটি দিককে তুলে ধরা হয়েছে। রহিমা বেগম ও তার পরিবার সৌরশক্তিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। তাদের বসবাসরত প্রত্যন্ত এলাকায় আগে বিদ্যুতের সরবরাহ ছিল না। বর্তমানে তারা সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে অনেক কাজ করছেন এবং চারটি বাল্বের সাথে একটি সাদা-কালো টিভিও চালাচ্ছেন। কিন্তু সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারেই সৌরশক্তির কাজ সীমাবদ্ধ নয়। এর বাইরে আরও নানা কাজে সৌরশক্তিকে ব্যবহার করা যায়। যেমন- লেন্সের সাহায্যে সূর্যরশ্মিকে ফোকাস করে আগুন জ্বালানো যায়। সূর্যকিরণকে ধাতব পদার্থের সাহায্যে প্রতিফলিত করে সৌরচুল্লি তৈরি করা যায়। এ চুল্লি দিয়ে রান্নার কাজ করা যায়। শীতে দেশে বাড়িঘর গরম রাখার জন্যও সৌরশক্তি ব্যবহার করা যায়। শস্যকণা, মাছ, সবজি ইত্যাদি শুকিয়ে সংরক্ষণ করতেও সৌরশক্তিকে কাজে লাগানো যায়। শীতপ্রধান দেশে সৌরশক্তিকে ব্যবহার করে ফসল উৎপন্ন করা হচ্ছে, বর্তমানে সিলিকনের পাতলা পাত দ্বারা সৌরকোষ তৈরি করা হচ্ছে যাতে সূর্যের আলো পড়ালে সরাসরি বিদ্যুৎ পাওয়া যায় এবং একে বিভিন্ন কাজে লাগানো যায়। উদ্দীপকে সৌরশক্তির ব্যবহারের একটি দৃষ্টান্তকে তুলে ধরা হলেও অন্যান্য দিককে তুলে ধরা হয়নি।
তাই সৌরশক্তির ব্যবহার সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা প্রদানে উদ্দীপকটি যথেষ্ট নয় এবং প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।
Share:

0 Comments:

Post a Comment