এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Home Science 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.
উচ্চ মাধ্যমিক
গার্হস্থ্য বিজ্ঞান
প্রথম পত্র
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৬ষ্ঠ অধ্যায়
HSC Home Science 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download
১. মালিহা তার মায়ের কাছে গৃহের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতে চাইলে তার মা তাকে বিষয়টি বুঝিয়ে বললেন। তিনি মালিহাকে বলেন, এ বাসাটি ভাড়া নেওয়ার সময় তিনি বিভিন্ন বিষয় লক্ষ করেছিলেন। ফলে এখন সবাই তার সুবিধা ভোগ করতে পারছে।
ক. গৃহ আমাদের কিসের নিরাপত্তা দেয়?
খ. শহর ও গ্রামাঞ্চলের গৃহের মধ্যকার পার্থক্য লেখ।
গ. মালিহাদের পরিবার কীভাবে সুবিধা ভোগ করে চলেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মালিহাকে তার মা যে বিষয়টি বুঝিয়ে বললেন সে সম্পর্কে মতামত দাও।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. গৃহ আমাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দেয়।
খ. শহর ও গ্রামাঞ্চলের গৃহের মধ্যে বেশকিছু পার্থক্য দেখা যায়। সাধারণত শহরাঞ্চলের বাড়ি ইট, সিমেন্ট, রড দিয়ে তৈরি হয়। পক্ষান্তরে, গ্রামাঞ্চলের বাড়ি টিন, বাঁশ, ছন দিয়ে তৈরি হয়। বর্তমানে গ্রামে পাকা বাড়ি দেখা গেলেও কাঁচাবাড়ির সংখ্যাই বেশি। আর শহরে কাঁচাবাড়ি খুব একটা দেখা যায় না বললেই চলে।
গ. উদ্দীপকের মালিহার মা বাড়ি নির্বাচনের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পর্যবেক্ষণ করে বাড়ি নির্বাচন করেছেন বলে তাদের পরিবার বসবাসের বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করতে পারছে।
বাসগৃহ মানুষের আশ্রয়স্থল এবং মাথা গোঁজার ঠাঁই। এ বাসগৃহ আমাদের নানা প্রয়োজন পূরণ করে। যেমন- সামাজিক, মানসিক, শারীরিক ইত্যাদি। এসব চাহিদা যাতে পূরণ হয় সেজন্য বাড়ি নির্বাচন করতে হয় বিচক্ষণতার সাথে। উদ্দীপকের মালিহার মা একজন বিচক্ষণ মহিলা। তিনি বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় পরিবারের প্রয়োজনীয়তা, আয়, পরিবারের সদস্যসংখ্যা তাদের কর্মতৎপরতা, বয়স, প্রতিবেশী, যোগাযোগ ব্যবস্থার সহজলভ্যতা ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখেছিলেন। পাশাপাশি বাড়িটি শক্ত ভূমির ওপর অবস্থিত কিনা এবং জমির আয়তন, আকার ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রেখেছিলেন। বাড়িটির চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বাড়ির সার্ভিসিং সুবিধা ঠিক আছে কিনা তা বিবেচনা করেন। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যাতায়াত সুবিধা, হাসপাতাল, ব্যাংক, মসজিদ, পার্ক ও অন্যান্য সামাজিক সুযোগ-সুবিধা ঠিকমতো পাওয়া যাবে কিনা এসব বিষয়ের প্রতিও তিনি দৃষ্টি রাখেন। যার ফলে তার পরিবারের সকল সদস্যরা বাড়িটিতে বসবাস করে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারছে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত মালিহা তার মায়ের কাছে গৃহের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতে চাইলে তার মা তাকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলেন।
বাসগৃহ বা আবাসস্থল মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি চাহিদা। সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে মানুষের যেখানে বিশ্রাম ও নিরাপত্তা পায় তাই গৃহ হিসেবে পরিচিত। গৃহ আমাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দেয়। গৃহ রোদ, বৃষ্টি, ঝড় ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে রক্ষা করে। গৃহ আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করে। আমাদের সকলের স্বাস্থ্য রক্ষা করে ও সুস্থ জীবনযাপনে সহায়তা করে। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজকর্ম, যেমন- খাদ্য তৈরি, পড়াাশুনা, আরাম, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, গল্পগুজব, মেহমানদারি ইত্যাদি সকল কাজ আমরা গৃহেই সম্পাদন করি ও সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পর গৃহেই আমরা আরাম অনুভব করি। গৃহ সামাজিকতা ও পারিবারিক বন্ধন রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গৃহ পরিবেশ হতেই আমাদের মূল্যবোধ, লক্ষ্য ও মান নির্ধারিত হয়। গৃহ মানুষকে সভ্য সমাজ গড়ে তুলতে সহায়তা করে এবং মানুষকে পরস্পরের বন্ধনে আবদ্ধ করে শক্তিশালী সমাজ ও দেশ গঠনে সহায়তা করে। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যদের সাথে মমতার বন্ধনে আবদ্ধ রাখতে সহায়তা করে গৃহ। ফলে পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্য বৃদ্ধি পায় এবং আত্মতৃপ্তি লাভ হয়। গৃহ সম্পর্কে এসব প্রয়োজনীয়তার কথাই উদ্দীপকের মালিহার মা মালিহাকে বুঝিয়ে বললেন।
২. জনাব আজমল হোসেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার দোকানের কাছাকাছি ফ্ল্যাট কিনেছেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানে বাস করছেন। তিনি আবাসিক এলাকা দেখে ফ্ল্যাট কিনেছেন ঠিকই, কিন্তু তার ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাতায়াতে অনেক সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। ফলে তারা শারীরিক ক্লান্তিজনিত নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
ক. পরিবারকে কেন্দ্র করে কী গড়ে ওঠে?
খ. মানুষ পরিবার গঠন করে কেন?
গ. আজমল সাহেব আবাসস্থল বিবেচনায় কোন বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আজমল সাহেব যদি আবাসস্থল নির্বাচনের সকল বিষয়কে প্রাধান্য দিতেন তবে তার ছেলেমেয়েরা সমস্যায় পড়াত না- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পরিবারকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে গৃহ বা আবাসন।
খ. মানুষ সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করার উদ্দেশ্যে পরিবার গঠন করে। মানুষ সঙ্গপ্রিয় ও সমাজবদ্ধ জীব। মানুষ একা বসবাস করতে পারে না। বেঁচে থাকার জন্য মানুষের অপরের সান্নিধ্য প্রয়োজন পড়ে। আর এ প্রয়োজনীয়তা থেকেই মানুষ পরিবার গঠন করে। পরিবারের সাথে একত্রে বসবাস করার মাধ্যমে মানুষ তার সঙ্গ খুঁজে নেয়। এ পরিবারকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে গৃহ বা আবাসন।
গ. আজমল সাহেব আবাসস্থল বিবেচনায় আবাসিক এলাকার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে আবাসস্থল অন্যতম। মানুষ যেখানে বাস করে বা আবাসন গড়ে তোলে সেটাই হয় তার আবাসস্থল বা গৃহ। আর এ আবাসস্থলের জন্য এলাকা নির্বাচন করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়কে বিবেচনায় রাখতে হয়। উদ্দীপকের আজমল সাহেব আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট ক্রয় করলেও তার ছেলেমেয়েদের যাতায়াতে বেশ অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে তারা শারীরিক ক্লান্তিসহ আরও নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আবাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো এলাকাটি আবাসিক হওয়া। কেননা বাণিজ্যিক বা শিল্প এলাকা বসবাসের জন্য আরামদায়ক নয়। উদ্দীপকের আজমল সাহেবও আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। অর্থাৎ তিনি এলাকাটি আবাসিক কিনা এ বিষয়টিকে আগে বিবেচনায় রেখেছেন।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের আজমল সাহেব তার আবাসস্থল নির্ধারণের ক্ষেত্রে আবাসিক এলাকার বিষয়টিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।
ঘ. আজমল সাহেব তার আবাসস্থল নির্বাচনের ক্ষেত্রে সকল বিষয়কে প্রাধান্য না দেওয়ার কারণেই তার ছেলেমেয়েদের সমস্যায় পড়াতে হচ্ছে।
আবাসস্থল মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমরা জমি ক্রয় করে বাসগৃহ নির্মাণ করি বা ফ্ল্যাট ক্রয় করি। আবার ভাড়া বাসাতেও আবাস গড়ে তুলি। আবাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এলাকা নির্বাচনের সময় বেশকিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হয়। অন্যথায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। উদ্দীপকের আজমল হোসেন আবাসিক এলাকা দেখে ফ্ল্যাট কিনেছেন। কিন্তু অন্যান্য বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেননি বলে তার ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাতায়াত করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে এবং তারা শারীরিক ক্লান্তিজনিত নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আজমল সাহেব যদি ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজের কাছাকাছি বিবেচনা করে বাসস্থান নির্ধারণ করতেন তবে তারা এত সমস্যায় পড়াত না। আবাসস্থল নির্বাচনের সময় যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হয় তার মধ্যে এটিও একটি। কিন্তু আজমল সাহেব আবাসস্থল নির্বাচনের সকল বিষয়কে প্রাধান্য দেননি। বলেই তার ছেলেমেয়েরা শারীরিক ক্লান্তিজনিত নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন। যদি তিনি সকল বিষয়কে প্রাধান্য দিতেন তবে এ পরিস্থিতি হতো না। তাই বলা যায়, প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।
৩. বিলকিস বেগমের স্বামী ব্যবসায়ী। ব্যবসার কাজে তাকে বিভিন্ন সময় দেশের বাইরে যেতে হয়। বিলকিস বেগম তার সব অলঙ্কার ব্যাংকের লকারেই রাখেন। আর বাসার সিন্ধুকেও তিনি নগদ টাকা ২০,০০০-এর বেশি রাখেন না। তার ব্যক্তিগত সম্পদকে তিনি এভাবেই সুরক্ষিত রাখেন।
ক. বর্তমানে শহরাঞ্চলের মানুষ কী ক্রয়ে বেশি উৎসাহী?
খ. গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলের বাড়িগুলো কেমন হয়?
গ. উদ্দীপকটি গৃহের কোন প্রয়োজনীয়তার দিকটিকে ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটি গৃহের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সার্বিক ধারণা প্রদান করতে পারেনি- বিশ্লেষণ কর।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বর্তমানে শহরাঞ্চলের মানুষ ফ্ল্যাট ক্রয়ে বেশি উৎসাহী।
খ. গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলের বাড়িগুলোর ধরন আলাদা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে শহরাঞলের বাড়ি ইট, সিমেন্ট, রড দিয়ে তৈরি বহুতল বিশিষ্ট হয়। গ্রামাঞ্চলের বাড়িগুলো তৈরি হয় টিন, ছন, বাঁশ ইত্যাদি, দ্বারা। তবে বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে অনেক ইট, সিমেন্টের তৈরি বাড়িও দেখা যায়। গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলের বাড়িগুলো গঠনগত দিক থেকে আলাদা হয়ে থাকে। তবে বাসস্থান শহরে হোক কিংবা গ্রামে, আমাদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য সব ধরনের বাসস্থানই সমান উপযোগী।
গ. উদ্দীপকটি গৃহের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দানের প্রয়োজনীয়তার দিকটিকে ইঙ্গিত করে।
বাসগৃহ শহরাল কিংবা গ্রামাঞ্চল যেকোনো স্থানেই হতে পারে। তবে এটি আমাদের প্রয়োজনগুলোকে একইভাবে মিটিয়ে থাকে। আমাদের জীবন ও সম্পদ নিরাপদ থাকে বাসগৃহের অভ্যন্তরেই। প্রত্যেক মানুষের জীবনেই বাসগৃহের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। উদ্দীপকে লক্ষ করা যায় বিলকিস বেগমের ঘটনা। তার স্বামীকে ব্যবসার কাজে বিভিন্ন সময়ে দেশের বাইরে যেতে হয় বিলকিস বেগম তার সব অলঙ্কার ব্যাংকের লকারেই রাখেন। বাসার সিন্ধুকে তিনি ২০,০০০-এর বেশি নগদ টাকা রাখেন না। তার ব্যক্তিগত সম্পদ এভাবেই গৃহে সুরক্ষিত থাকে। গৃহের বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তার মধ্যে অন্যতম হলো জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা প্রদান করা। গৃহের অভ্যন্তরেই আমরা আমাদের সম্পদগুলোকে নিরাপদ রাখতে পারি। উদ্দীপকের বিলকিস বেগমের ঘটনায়ও এ বিষয়টি লক্ষ করা যায়। তিনি তার বাড়ির সিন্ধুকেই তার অর্থ সংরক্ষিত রাখেন। অর্থাৎ তার সম্পদের নিরাপত্তা প্রদান করছে তার গৃহ। গৃহ যে আমাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দেয় সে বিষয়টিই প্রমাণিত হয় উদ্দীপকের রিলকিস বেগমের ঘটনা থেকে।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি গৃহের নিরাপত্তাজনিত প্রয়োজনীয়তার দিকটিকেই ইঙ্গিত করে।
ঘ. উদ্দীপকটি গৃহের প্রয়োজনীয়তার একটি দিককে উপস্থাপন করতে পারলেও সকল দিককে তুলে ধরতে পারেনি।
বাসগৃহ যেমনই হোক না কেন তা আমাদের আপন আবাসস্থল। এটি আমাদের নানাবিধ প্রয়োজন পূরণ করে থাকে। প্রতিটি মানুষেরই নিজস্ব কিছু প্রয়োজন থাকে যা বাসগৃহের মাধ্যমে পূরণ করা হয়ে থাকে। উদ্দীপকের বিলকিস বেগমের ক্ষেত্রে গৃহের নিরাপত্তাজনিত প্রয়োজনীয়তার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি তার বাড়ির সিন্ধুকে যে নগদ টাকা জমা রাখেন তা তার সম্পদের নিরাপত্তা প্রদানে গৃহের প্রয়োজনীয়তার দিকটিকে উপস্থাপন করে। কিন্তু গৃহের আরও অনেক প্রয়োজনীয় দিক রয়েছে। যেমন- গৃহ আমাদের রোদবৃষ্টি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে, আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাও গৃহের মাধ্যমে রক্ষিত হয়, সারাদিন কর্মব্যস্ততার পর গৃহ আরাম করার কেন্দ্রস্থল হিসেবে গৃহীত হয় আমাদের কাছে, গৃহ পরিবারের সকলের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং সুস্থ জীবনযাপনে সহায়তা করে, দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজকর্ম আমরা গৃহে সম্পাদন করি, সামাজিকতা ও পারিবারিক বন্ধন রক্ষার ক্ষেত্রেও গৃহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে থাকে, মানুষের মূল্যবোধ, লক্ষ্য ও মান নির্ধারিত হয় গৃহ পরিবেশ থেকে এবং সর্বোপরি গৃহই মানুষকে সভ্য সমাজ গড়ে তুলতে সহায়তা করে। উপরিউক্ত প্রয়োজনীয়তার দিকগুলো উদ্দীপকের প্রেক্ষিতে অনুপস্থিত।
তাই বলা যায়, গৃহের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে পারেনি উদ্দীপকটি।
৪. প্রতীকদের পরিবারের সদস্যসংখ্যা ৪ জন। এর মধ্যে মাত্র ২ জন আয় করেন। সম্প্রতি তারা একটি জায়গায় বাসা ভাড়া নেওয়ার চিন্তা করছেন। এ উদ্দেশ্যে তারা বাসা দেখতে গেলেন। এক্ষেত্রে তারা তাদের সামর্থ্য এবং কর্মতৎপরতার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েই বাসা খুঁজতে লাগলেন।
ক. গৃহ পরিবেশ থেকেই মানুষের কী গড়ে ওঠে?
খ. পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্য বৃদ্ধিতে গৃহ কীভাবে সাহায্য করে?
গ. উদ্দীপকের প্রতীকদের পরিবার বাড়ি নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে সেগুলো ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের প্রতীকদের বাড়ি নির্বাচনের ক্ষেত্রে পরিবারের প্রয়োজনীয়তার দিকটিও বিবেচনা করতে হবে- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. গৃহ পরিবেশ থেকেই মানুষের মূল্যবোধ গড়ে ওঠে।
খ. গৃহ সামাজিকতা ও পারিবারিক বন্ধন রক্ষার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার মাধ্যমে পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। প্রতিটি মানুষের জন্যই বাসগৃহের যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। গৃহ আমাদের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যদের সাথে সমতার বন্ধনে আবদ্ধ রাখতে সহায়তা করে। এভাবেই গৃহ পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
গ. উদ্দীপকের প্রতীকদের পরিবার বাড়ি নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে সেগুলো হলো পরিবারের আয় এবং পরিবারের সদস্যদের ধরন।
বাড়ি নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশকিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা আবশ্যক। এসব বিষয় বিবেচনা না করলে পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যদের নানা ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। বাড়ি নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হয় তার মধ্যে পরিবারের সদস্যদের আয় এবং তাদের কর্মতৎপরতা অন্যতম। উদ্দীপকের প্রতীকদের পরিবার তাদের আয় এবং পরিবারের সদস্যদের কর্মতৎপরতার বিষয়ের ওপরই গুরুত্ব প্রদান করেছে। উদ্দীপকে দেখা যায়, প্রতীকদের পরিবারের সদস্যসংখ্যা হলো ৪ জন। এদের মধ্যে মাত্র ২ জন আয় করেন। সম্প্রতি তারা একটি জায়গায়, বাসা ভাড়া নেওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা দেখতে যায়। বাসা ভাড়া নেওয়ার পূর্বে তারা তাদের সামর্থ্য তথা আয় এবং পরিবারের সদস্যদের কর্মতৎপরতার দিকে খেয়াল রেখেছিল। বাড়ি নির্বাচনের জন্য ব্যক্তির আয়ের দিকটি অবশ্যই বিবেচনায় রাখা কর্তব্য। এর পাশাপাশি পরিবারের সদস্যসংখ্যা, তাদের কর্মতৎপরতা, বয়স ইত্যাদি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা আবশ্যক। উদ্দীপকের প্রতীকদের পরিবার বাড়ি নির্বাচন করতে গিয়ে এ দুটি বিষয়ের দিকেই গুরুত্ব দিয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকের প্রতীকদের বাড়ি নির্বাচনের ক্ষেত্রে পরিবারের প্রয়োজনীয়তার দিকটিকে সর্বাগ্রে বিবেচনায় রাখতে হবে।
বাড়ি, জমি বা ফ্ল্যাট নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হয় তার মধ্যে পরিবারের প্রয়োজনীয়তা অন্যতম। এক্ষেত্রে বসবাসের স্থান পরিবারের জন্য উপযুক্ত কিনা এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হয়। উদ্দীপকের প্রতীকদের পরিবার তাদের জন্য বাসা খুঁজতে একটি এলাকায় যায়। সেখানে গিয়ে তারা তাদের সামর্থ্য এবং পরিবারের সদস্যদের কর্মতৎপরতাকে গুরুত্ব দিয়ে বাসা খুঁজতে লাগল। কিন্তু বাড়ি নির্বাচনের জন্য পরিবারের প্রয়োজনীয়তার দিকটিকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পরিবারের জন্য বসবাসের স্থান নির্বাচনের সময় পরিবারের সদস্যদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক বিকাশে সহায়ক এমন মস্নান নির্বাচন করতে হবে। পরিবারের সদস্যরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করতে পারে সে ব্যবস্থা বাড়িতে থাকতে হবে। এসব বিষয়গুলোই পরিবারের প্রয়োজনীতার অন্তর্ভুক্ত। বাড়ি নির্বাচনের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখা কর্তব্য। কিন্তু উদ্দীপকের প্রতীকদের পরিবারকে বাড়ি নির্বাচনের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো বিবেচনা করতে দেখা যায় না। তারা কেবল পরিবারের সদস্যদের আয় এবং তাদের কর্মতৎপরতার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রেখেছে। কিন্তু বাড়ি নির্বাচনে এগুলোর পাশাপাশি পরিবারের প্রয়োজনীয়তার দিকটিও বিবেচনায় আনতে হবে। তাই বলা যায়, প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।
৫. রাবিব সাহেবের অফিস মতিঝিল। তিনি বাস করেন মিরপুর। তার প্রতিদিনের যাতায়াতে অনেক অর্থ এবং সময় ব্যয় হয়। কিন্তু তিনি যে বাসায় ভাড়া থাকেন সেখানকার প্রতিবেশীদের সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক তার। নানা বিপদে-আপদে তারা এগিয়ে এসে সাহায্য করে। পরিচিত পরিবেশ ছেড়ে যেতে চান না বলেই রাববী সাহেব এখান থেকে বাসা বদল করেন না।
ক. গৃহ মানুষকে কী সমাজ গড়ে তুলতে সহায়তা করে?
খ. বাড়ি নির্মাণের জন্য কীরূপ ভূমি নির্বাচন করতে হবে? বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের রাববী সাহেব বাড়ি নির্বাচনে কোন বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখেননি? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রাববী সাহেবের প্রেক্ষিতে প্রতিবেশীর গুরুত্বের দিকটিই প্রতিফলিত হয়েছে- উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. গৃহ মানুষকে সভ্য সমাজ গড়ে তুলতে সহায়তা করে।
খ. বাড়ি নির্মাণের জন্য শক্ত মাটির উঁচু ভূমি নির্বাচন করতে হবে। নিচু জমিতে বর্ষার পানি জমে বলে মাটি স্যাঁতসেঁতে থাকে। নিচু জমি, খাল বা পুকুর ভরাট করে মাটি শক্ত হলে পরে বাড়ি নির্মাণ করতে হয়। জমি ভরাট করে মাটি শক্ত হওয়ার আগেই বাড়ি নির্মাণ করলে বাড়িতে ফাটল দেখা যায় এবং বাড়ি ধসে পড়ে। কিন্তু উঁচু ভূমিতে এ ধরনের সমস্যা হয় না বলে বাড়ি নির্মাণের জন্য এরূপ ভূমিই নির্বাচন করতে হবে। এ ধরনের জমির মূল্যও বেশি হয়ে থাকে।
গ. উদ্দীপকের রাবিব সাহেব বাড়ি নির্বাচনে যোগাযোগ বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখেননি।
প্রতিটি মানুষের জন্য বাসগৃহ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বাসগৃহ আমাদের নানা প্রয়োজন পূরণ করে থাকে। এ কারণেই বাড়ি নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের বেশকিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হয়। এসব বিষয়ের মধ্যে যোগাযোগ অন্যতম। উদ্দীপকের ঘটনায় দেখা যায় রাবিব সাহেবের অফিস মতিঝিল এবং তিনি বাস করেন মিরপুরে। দূরত্ব বেশি হওয়ায় তার প্রতিদিনের যাতায়াতে অনেক অর্থ এবং সময় ব্যয় হয়। কিন্তু পরিচিত পরিবেশ ছেড়ে দূরে যাবেন না বলেই তিনি বাসা বদল করেন না। এক্ষেত্রে বাড়ি নির্বাচনে যোগাযোগের বিষয়টিকেই তিনি আমলে নেননি। যানবাহনের সহজলভ্যতা যোগাযোগ বা যাতায়াত ব্যবস্থাকে আরামদায়ক করে। এর ফলে অর্থ কম ব্যয় হয় এবং সময়ও অপচয় হয় না। কিন্তু উদ্দীপকের রাবিব সাহেব তার যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে সমস্যায় পড়েছেন। তার অর্থ এবং সময়ও ব্যয় হচ্ছে। বাসা থেকে অফিস দূরবর্তী হওয়ার কারণেই তাকে এমন সমস্যায় পড়াতে হয়েছে। তিনি যদি বাড়ি নির্বাচনের পূর্বেই যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকে দৃষ্টি দিতেন তবে এমনটি হতো না।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের রাবিব সাহেব বাড়ি নির্বাচনে যোগাযোগ বিষয়টিকেই বিবেচনায় রাখেননি।
ঘ. রাবিব সাহেবের ঘটনায় সুপ্রতিবেশীর ভূমিকার দিকটিই প্রতিফলিত হয়।
জমি, বাড়ি বা ফ্ল্যাট নির্বাচনে যেসব বিষয়ের বিবেচনায় রাখা আবশ্যক তার মধ্যে প্রতিবেশী অন্যতম। প্রতিবেশী ভালো হলে নির্বাচিত বাড়িতে বসবাস করা সুবিধাজনক হয়। কেননা আশপাশে বসবাসরত প্রতিবেশীরা ভালো হলেই বসবাস আরামদায়ক হয়। উদ্দীপকের রাবিব সাহেবের মতিঝিলে অফিস হলেও তিনি মিরপুরে বসবাস করেন। কেবল সুপ্রতিবেশী পেয়েছেন বলেই তিনি এ এলাকা ছেড়ে যেতে চান না। তার প্রতিবেশীরা একে অপরের বিপদে-আপদে এগিয়ে এসে সাহায্য করে। রাবিব সাহেব সুপ্রতিবেশী এবং পরিচিত পরিবেশ ছেড়ে কোথাও যেতে চান না। বাড়ি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিবেশীও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় হিসেবে গৃহীত হয়। সামাজিক বন্ধন, নিরাপত্তা, মানসিক পরিতৃপ্তি, সাহায্য-সহযোগিতা ইত্যাদি বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে প্রতিবেশীর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। প্রতিবেশী যদি সৎ ও ভালো হয় তবে বাসগৃহে বাস করা যেকোনো ব্যক্তির জন্যই নিরাপদ ও আরামদায়ক হয়। উদ্দীপকের রাবিব সাহেব প্রতিবেশীর গুরুত্ব যথাযথভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। এ কারণেই সুপ্রতিবেশীদের সাহায্য-সহযোগিতা ছেড়ে রাবিব সাহেব দূরে কোথাও যেতে চাননি। সময় ও অর্থ অপচয় হলেও রাবিব সাহেব এ ব্যাপারটিকে আমলে নেননি।
তাই বলা যায়, রাবিব সাহেবের প্রেক্ষিতে প্রতিবেশীর গুরুত্বের দিকটিই প্রতিফলিত হয়েছে।
৬. আনোয়ার সাহেব তার গ্রামে বাড়ি তৈরি করবেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি ঋণ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন। ঋণ গ্রহণের জন্য তিনি বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছেন। বাড়ি নির্মাণে যেন আর্থিক সংকট না আসে এ উদ্দেশ্যেই তিনি চেষ্টা চালাচ্ছেন।
ক. বাড়ি নির্মাণের জন্য কোন জমি ভালো?
খ. বাড়ি নির্মাণে জমির আয়তন কীরূপ হওয়া উচিত? বুঝিয়ে লেখ।
গ. আনোয়ার সাহেব বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে কোন বিষয়টিকে বিবেচনা করেছেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আনোয়ার সাহেবকে বাড়ি তৈরির জন্য আরও অনেক বিষয়ই বিবেচনায় রাখতে হবে- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাড়ি নির্মাণের জন্য আয়তাকার বা বর্গাকৃতি জমি ভালো।
খ. বাড়ি নির্মাণে জমির আয়তন যথাযথ হওয়া প্রয়োজন। বড় বাড়ি নির্মাণের জন্য বেশি জমির প্রয়োজন হয়। ফ্ল্যাট নির্মাণে অল্প জমি হলেও চলে। কিন্তু জমির আয়তন নির্ধারণে অবশ্যই পৌর কর্তৃপক্ষের নিয়ম মেনে চলা জরুরি। প্রশস্ত সড়ক সংলগ্ন জমিতে পৌর কর্তৃপক্ষের নিয়ম মেনে ৪ কাঠা জমিতে প্রতি তলায় ১৯০০ বর্গফুট, ৩ কাঠা জমিতে ১৪০০ বর্গফুট, ২ কাঠা জমিতে ৯৬০ বর্গফুট এবং ১ কাঠা জমিতে ৪৮০ বর্গফুট মেঝেবিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করা যায়। বাড়ি নির্মাণে জমির আয়তন এরূপই হওয়া উচিত।
গ. আনোয়ার সাহেব বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে আর্থিক দিকটিকে বিবেচনা করেছেন।
জমি, বাড়ি বা ফ্ল্যাট নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশকিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়। এসব বিষয়ের মধ্যে আর্থিক দিক একটি। জমি বা বাড়ি বিবেচনার জন্য আর্থিক দিকটি অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। উদ্দীপকের আনোয়ার সাহেব গ্রামে বাড়ি তৈরি করবেন বলে ঠিক করেছেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঋণ নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। বাড়ি নির্মাণে যেন কোনো ধরনের আর্থিক সংকট দেখা না যায় সেজন্যই তিনি এরূপ চেষ্টা করছেন। আর্থিক দিকটিকেই তিনি সর্বাগ্রে বিবেচনা করছেন। বাড়ি নির্মাণের জন্য আর্থিক দিকটি বিবেচনা করা অবশ্য কর্তব্য। আর্থিক দিক বিবেচনাপূর্বকই জমি নির্বাচন করতে হবে। জমি ক্রয়, বাড়ি নির্মাণ ইত্যাদির জন্য ব্যয় হিসাব করতে হয় আগেই। এর পাশাপাশি প্রয়োজনে ঋণ সুবিধা গ্রহণ করা যায় কিনা এটাও বিবেচনা করতে হবে। জমির কর, খাজনা ইত্যাদি বিষয়গুলোও বাড়ি নির্মাণের আর্থিক দিক বিবেচনার অন্তর্ভুক্ত। উদ্দীপকের আনোয়ার সাহেবকে বাড়ি নির্মাণের জন্য ঋণ গ্রহণের চিন্তা করতে দেখা যায়। এটি বাড়ি নির্মাণের আবশ্যিক বিষয় আর্থিক দিককেই ইঙ্গিত করে।
তাই বলা যায়, আনোয়ার সাহেব বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টিকেই বিবেচনা করেছেন।
ঘ. আনোয়ার সাহেবকে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে আর্থিক দিকের পাশাপাশি আরও অনেক বিষয়ই বিবেচনায় রাখতে হবে।
বাসগৃহ প্রতিটি মানুষের জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। তবে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশকিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখা কর্তব্য। এসব বিষয়ের দিকে খেয়াল না করলে পরবর্তীতে বাসগৃহ নির্বাচন করলেও নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। উদ্দীপকের আনোয়ার সাহেব তার গ্রামে বাড়ি নির্মাণ করতে চান। এ উদ্দেশ্যে তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঋণের উদ্দেশ্যে আবেদন করতে লাগলেন। বাড়ি নির্মাণে যেন আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হতে না হয় সেজন্যই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু এর বাইরেও তাকে আরও অনেক বিষয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করতে হবে। বাসগৃহ নির্মাণের পূর্বে আর্থিক দিকটির পাশাপাশি পরিবারের প্রয়োজনীয়তা, আয়, সদস্য, পাশাপাশি বসবাসরত প্রতিবেশী, যোগাযোগ ব্যবস্থার ধরন, পরিবারের ব্যক্তিদের সখ ও কর্মতৎপরতা, বাড়ি নির্মাণের ভূমি, ভূমির অবস্থান, জমির আয়তন, অন্যান্য সুবিধা ইত্যাদি বিষয়গুলোও বিবেচনা করতে হবে। কেননা বাসগৃহ নির্মাণের পূর্বে এসব বিষয় বিবেচনা করা কর্তব্য। কিন্তু উদ্দীপকের আনোয়ার সাহেব তার বাড়ি নির্মাণের পূর্বে কেবল আর্থিক দিকটিই বিবেচনা করেছেন। অন্যান্য বিষয়গুলো এখানে বিবেচনাধীন হয়নি। তিনি আর্থিক দিকটি সঠিক রাখতে ঋণ গ্রহণের চিন্তাও করেছেন। কিন্তু অন্যান্য বিষয়গুলোও তাকে বিবেচনা করতে হবে।
তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় প্রশ্নের মন্তব্যটিকে যথার্থ বলা যায়।
৭. রহিমা বেগম ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। তাদের বাসায় দুটি বেডরুম রয়েছে। একটি রুমে তার ছেলে থাকে এবং সেটি তার পড়াারও কক্ষ। তার রুমের মধ্যে একটি দরজা রয়েছে যেটি দিয়ে অপর কক্ষে প্রবেশ করতে হয়। এভাবে চলাচল করতে হয় বলে রহিমা বেগমের ছেলের লেখাপড়াায় বেশ বিঘ্ন ঘটে।
ক. গৃহস্থালি কাজকর্মে আরাম ও স্বাচ্ছন্দ্য কিসের ওপর নির্ভর করে?
খ. গৃহের অভ্যন্তরে চলাচলের পথ কীরূপ হওয়া উচিত? ও বুঝিয়ে লেখ।
গ. রহিমা বেগমের প্রেক্ষাপটে কক্ষের স্বাতমত্ম্র্য নষ্ট হয়েছে কীভাবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের ঘটনায় চলাচলের সুব্যবস্থার অভাব পরিলক্ষিত হয়- বিশ্লেষণ কর।
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. গৃহস্থালি কাজকর্মে আরাম ও স্বাচ্ছন্দ্য গৃহের কর্মকেন্দ্রগুলোর কম দূরত্ব এবং চলাচলের সুব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে।
খ. গৃহের অভ্যন্তরে চলাচলের পথ আরামদায়ক ও সুবিধাজনক হওয়া উচিত। গৃহস্থালি কাজকর্মের আরাম ও স্বাচ্ছন্দ্য গৃহের অভ্যন্তরের চলাচলের পথের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে থাকে। সেক্ষেত্রে গৃহের কর্মকেন্দ্রগুলোর দূরত্ব কম হলে এবং চলাচলের সুব্যবস্থা থাকলে গৃহস্থালি কাজকর্মগুলো নির্বিঘ্নে করা যায়। এর পাশাপাশি কক্ষের স্বাতমত্ম্র্য এবং কক্ষের সুবিধাজনক স্থানে দরজা নির্মাণ ইত্যাদি বিষয়ও প্রভাব রাখে। গৃহের অভ্যন্তরে চলাচলের পথ এরূপই হওয়া উচিত।
গ. রহিমা বেগমের প্রেক্ষাপটে এক কক্ষ দিয়ে আরেক কক্ষে প্রবেশ করার দিকটি তুলে ধরার মাধ্যমে রুক্ষের স্বাতন্ত্র্য নষ্ট হয়েছে।
গৃহের অভ্যন্তরে চলাচলের পথ বিষয়টি বিবেচনায় কক্ষের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হয়। শয়নকক্ষ বা পড়াার কক্ষ দিয়ে অন্য কক্ষে যাতায়াত করা বাঞ্ছনীয় নয়। উদ্দীপকের ঘটনায় গৃহের অভ্যন্তরে চলাচলের অসুবিধার দিকটি প্রতিফলিত হয়। এখানে দেখা যায়, রহিমা বেগমের ছেলের কক্ষ দিয়েই অপর শয়নকক্ষে প্রবেশ করতে হয়। এভাবে চলাচল করতে হয় বলে রহিমা বেগমের ছেলের লেখাপড়াায় বেশ বিঘ্ন ঘটে। গৃহের প্রতিটি কক্ষ পৃথক হলে এবং প্রত্যেকটিতেই সরাসরি প্রবেশের ব্যবস্থা থাকলে প্রতিটি কক্ষের স্বাতন্ত্র্য বজায় থাকে। শয়নকক্ষ বা পড়াার কক্ষ দিয়ে যদি অন্য কক্ষে যাতায়াত করতে হয় তবে এতে কক্ষের স্বতন্ত্রতা নষ্ট হয়। উদ্দীপকের ঘটনায় এ বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে যেখানে রহিমা বেগমের ছেলের কক্ষের স্বাতন্ত্র্য নষ্ট হয়েছে। তার কক্ষের মধ্য দিয়ে অপর কক্ষে প্রবেশ করতে হয় বলে তার পড়াাশুনার বেশ বিঘ্ন ঘটে। এভাবেই এক কক্ষ দিয়ে অন্য কক্ষে যাতয়াত করতে হওয়ায় রহিমা বেগমের প্রেক্ষাপটে কক্ষের স্বাতন্ত্র্য নষ্ট হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকের ঘটনায় কক্ষের স্বাতন্ত্র্য নষ্ট হওয়ায় চলাচলের সুব্যবস্থার অভাব পরিলক্ষিত হয়।
গৃহের অভ্যন্তরে চলাচলের পথ অবশ্যই আরামদায়ক হতে হয়। এর ওপরই গৃহস্থালি কাজকর্মের স্বাচ্ছন্দ্য নির্ভর করে। যদি যাতায়াতের সমস্যা থাকে তবে সেটি গৃহস্থালি কাজকর্ম সম্পাদনের জন্য আরামদায়ক হয় না। উদ্দীপকে চলাচলের সুব্যবস্থার অভাব লক্ষণীয়। এখানে দেখা যায়, রহিমা বেগম যে বাসায় ভাড়া থাকেন সেখানে দুটি বেডরুম। একটি বেডরুমে তার ছেলে থাকে এবং সেটি তার পড়াারও কক্ষ। তার কক্ষের মধ্য দিয়েই অপর কক্ষে প্রবেশ করতে হয়। এভাবে যাতায়াত করতে হয় বলে রহিমা বেগমের ছেলের লেখাপড়াায় বেশ বিঘ্ন ঘটে। এর মধ্য দিয়ে রহিমা বেগমের ছেলের কক্ষের স্বাতমত্ম্র্য যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি তার লেখাপড়াাতেও বিঘ্ন ঘটছে। যদি কক্ষে যাতায়াতের জন্য সুবিধাজনক স্থানে দরজা নির্মাণ করা হতো তবে এ ধরনের সমস্যা এড়ানো যেত। কিন্তু উদ্দীপকের প্রেক্ষাপটে চলাচলের ক্ষেত্রে সুব্যবস্থা না থাকার কারণেই রহিমা বেগমের ছেলের লেখাপড়াা বিঘ্নিত হচ্ছে। তার কক্ষের স্বাতন্ত্র্যও নষ্ট হচ্ছে। গৃহের অভ্যন্তরে চলাচলের পথ যেরূপ হওয়া উচিত উদ্দীপকে তা অনুপস্থিত।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের ঘটনায় চলাচলের সুব্যবস্থার অভাব বিদ্যমান।
৮. মূল সড়কের পাশেই আফজাল সাহেবের বাসা। আফজাল সাহেবের শয়নকক্ষের পাশে বাইরে বেশ খোলামেলা জায়গা রয়েছে। তার এ কক্ষে বেশ আলো-বাতাস প্রবেশ করে। পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো ঘরে প্রবেশ করে বলে তার কক্ষের পরিবেশও আরামদায়ক হয়।
ক. প্রাকৃতিক আলো আমরা কী থেকে পাই?
খ. কক্ষে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশ প্রয়োজনীয় কেন?
গ. উদ্দীপকে বাড়ির নকশা পরিকল্পনার কোন দিকটির উপকারিতা লক্ষণীয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আফজাল সাহেব ও তার পরিবার প্রাকৃতিক আলোর উপকারিতা ভোগ করতে সক্ষম হবেন- বিশ্লেষণ কর।
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রাকৃতিক আলো আমরা সূর্যকিরণ থেকে পাই।
খ. কক্ষে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশ প্রয়োজনীয় কারণ এতে গৃহের পরিবেশ বসবাসোপযোগী থাকে এবং কর্ম সম্পাদনও যথাযথভাবে হয়। বাড়ির নকশা পরিকল্পনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থা রাখা। প্রতিটি কক্ষে যেন প্রাকৃতিক আলো প্রবেশ করতে পারে সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। প্রাকৃতিক আলো আমরা পাই সূর্যকিরণ থেকে। এ আলো যেমন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তেমনি গৃহের স্যাঁতসেঁতে ভাব দূর করতেও সহায়তা করে। এসব কারণেই কক্ষে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
গ. উদ্দীপকে বাড়ির নকশা পরিকল্পনার প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থার উপকারিতার দিকটি লক্ষণীয়।
বাড়ির নকশা পরিকল্পনায় যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হয় এর মধ্যে প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থা রাখা অন্যতম। প্রাকৃতিক আলো আমরা পাই সূর্যকিরণ থেকে। কক্ষে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের ব্যবস্থা রাখতে হয়। এতে গৃহের পরিবেশ আরামদায়ক হয়। উদ্দীপকে লক্ষ করা যায় আফজাল সাহেবের বাসা মূল সড়কের পাশে। তার ও শয়নকক্ষের পাশে বাইরে বেশ খোলামেলা জায়গা রয়েছে। ফলে তার কক্ষে বেশ আলো-বাতাস প্রবেশ করে। পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো প্রবেশ করায় তার কক্ষের পরিবেশও আরামদায়ক হয়। প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থা থাকলে কক্ষের ভিতরে স্যাঁতসেঁতে ভাব থাকে না এবং কক্ষের স্থান শুষ্ক ও জীবাণুমুক্ত থাকে। এছাড়াও প্রাকৃতিক আলো তথা সূর্যের আলো সকল কর্মক্ষমতার উৎস। কক্ষে যদি প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের ব্যবস্থা রাখা যায় তবে শারীরিক ও মানসিকভাবেও প্রশান্তি লাভ করা যায়। উদ্দীপকের আফজাল সাহেবের বাসায় প্রাকৃতিক আলো যথাযথভাবেই প্রবেশ করে। তার শয়নকক্ষের পাশে বাইরে বেশ খোলামেলা জায়গা থাকায় তার কক্ষের পরিবেশ আরামদায়ক হয় এবং স্যাঁতসেঁতে ভাবও থাকে না।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকে বাড়ির নকশা পরিকল্পনার প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের উপকারিতার দিকটিই লক্ষণীয়।
ঘ. আফজাল সাহেবের গৃহে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করায় তিনি ও তার পরিবার প্রাকৃতিক আলোর উপকারিতা ভোগ করতে সক্ষম হবেন।
বাড়ির নকশা পরিকল্পনায় প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থা রাখা আবশ্যক। প্রতিটি কক্ষে যেন পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলো প্রবেশ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ প্রাকৃতিক আলো স্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী তেমনি গৃহের জন্যও দরকারি। উদ্দীপকের আফজাল সাহেবের বাসা মূল সড়কের পাশে। তার শয়নকক্ষের আশপাশে বেশ খোলামেলা জায়গা রয়েছে। সেদিক দিয়ে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করে। এতে করে তার কক্ষের পরিবেশও আরামদায়ক হয়। প্রাকৃতিক আলোর বেশ উপকারিতা রয়েছে। প্রাকৃতিক আলো আমরা সূর্যকিরণ থেকে পাই। এ সূর্যের আলো যেমন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তেমনি গৃহের জন্যও দরকারি। এতে করে গৃহের স্যাঁতসেঁতে ভাব দূর হয় এবং স্থান শুষ্ক ও জীবাণুমুক্ত থাকে। এছাড়া সূর্যের আলো সকল কর্মক্ষমতারও উৎস। গৃহে যদি পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করে তবে গৃহে যারা বসবাস করেন তারাও এসব সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। উদ্দীপকের আফজাল সাহেবের গৃহেও পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করে। ফলে প্রাকৃতিক আলো প্রাপ্তির যেসব সুবিধার কথা বলা হয়েছে সেগুলো তারাও ভোগ করতে পারবেন।
তাই সার্বিক দিক বিবেচনা শেষে বলা যায় যে, প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।
৯. রোকন সাহেব মেসে থাকেন। তার মেসের অবস্থান বেশ সংকীর্ণ স্থানে। এখানে বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা প্রায় নেই বললেই চলে। তিনি প্রায়ই অসুস্থ থাকেন। গ্রামের খোলামেলা পরিবেশকে মনে করে কষ্টও পান মাঝে মাঝে।
ক. বায়ুর উপাদানগুলোর মধ্যে অক্সিজেনের পরিমাণ কত?
খ. বায়ু কীভাবে গঠিত হয়?
গ. উদ্দীপকের ঘটনায় কোন বিষয়টির অভাব পরিলক্ষিত হয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রোকন সাহেব প্রাকৃতিকভাবে না পারলেও কৃত্রিমভাবে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারবেন- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বায়ুর উপাদানগুলোর মধ্যে অক্সিজেনের পরিমাণ ২০.৯৩%।
খ. বায়ু বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয়। জীবনধারণের অন্যতম প্রধান উপাদান হচ্ছে বায়ু। বায়ুর রং বা আকার নেই এবং বিশুদ্ধ বায়ুর কোনো গন্ধও নেই। বায়ু অনেক উপাদান নিয়ে গঠিত হয়। এসব উপাদানগুলোর মধ্যে অক্সিজেন ২০.৯৩%, নাইট্রোজেন ৭৮.১০%, কার্বন ডাইঅক্সাইড ০.০৩% ও অন্যান্য ০.৯৪%। বায়ুর অন্যান্য উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে জলীয় বাষ্প, হিলিয়াম, নিয়ন, ক্রিপটন, আর্গন ইত্যাদি নিষি্ক্রয় গ্যাস। এসব উপাদানের সমন্বয়েই বায়ু গঠিত হয়।
গ. উদ্দীপকের ঘটনায় বায়ু চলাচলের সুব্যবস্থার অভাব পরিলক্ষিত হয়।
বাড়ির নকশা পরিকল্পনায় বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখার বিষয়টিও বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়। বায়ুর প্রবেশে যদি সমস্যা হয় তবে ঐ গৃহে সবসময় রোগব্যাধি লেগেই থাকে। এ কারণেই বায়ু প্রবেশ এবং বায়ু নির্গত হওয়ার ব্যবস্থা রাখা আবশ্যক। উদ্দীপকে দেখা যায়, রোকন সাহেব যে মেসে বসবাস করেন তার অবস্থান বেশ সংকীর্ণ স্থানে। এখানে বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে রোকন সাহেব প্রায়ই অসুস্থ থাকেন। কক্ষে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করে যথেষ্ট অক্সিজেন নিশ্চিত করা যায়। এতে করে অনেক রোগ থেকেই নিস্তার পাওয়া সম্ভব হয়। বদ্ধ স্থানে রোগজীবাণু যত সহজে বেঁচে থাকে, মুক্ত স্থানে তত সহজে বাঁচতে পারে না। বায়ু চলাচল নির্ভর করে কক্ষের অবস্থানের ওপর। কক্ষে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা গেলে কক্ষের দূষিত বায়ু বের হয়ে যায় এবং বিশুদ্ধ বায়ু কক্ষে প্রবেশ করে কক্ষের উষ্ণতা দূরীভূত করে। কিন্তু উদ্দীপকে বায়ু চলাচলের সুব্যবস্থার অভাব থাকার কারণেই রোকন সাহেবকে অসুস্থ থাকতে দেখা যায়।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের ঘটনায় কক্ষে বায়ু চলাচলের সুব্যবস্থার অভাবই পরিলক্ষিত হয়।
ঘ. উদ্দীপকের রোকন সাহেব তার কক্ষে প্রাকৃতিকভাবে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করতে না পারলেও কৃত্রিমভাবে বায়ুর ব্যবস্থা করতে পারেন।
বাড়ির নকশা পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কক্ষে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করতে হয়। গৃহের পরিবেশকে সুস্থ রাখতে ‘বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হয়। অন্যথায় রোগব্যাধি লেগেই থাকে। উদ্দীপকের রোকন সাহেব যে মেসে বসবাস করেন সেটির অবস্থান বেশ সংকীর্ণ জায়গায় হওয়ায় ঠিকমতো বাতাস প্রবেশ করতে পারে না। ফলে তাকে প্রায়ই অসুস্থ থাকতে দেখা যায়। কক্ষে যদি প্রাকৃতিকভাবে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা না যায় তবে কৃত্রিমভাবেও এর ব্যবস্থা করা যায়। কৃত্রিম উপায়ে যেসব মাধ্যমে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা যায় সেগুলো হলো- বৈদ্যুতিক পাখা, এয়ারকন্ডিশনার, হাতপাখা, টান পাখা ইত্যাদি। সিলিং ফ্যান বা টেবিল ফ্যান বাতাসকে আন্দোলিত করে বলে উষ্ণতা হ্রাস পায়। আবার এয়ারকন্ডিশনার কক্ষে শীতল বায়ু সঞ্চালিত করে কক্ষকে ঠান্ডা রাখে। হাতপাখা ও টানা পাখার ব্যবহারও বায়ুর উষ্ণতা হ্রাস করে। এসব কৃত্রিম উপায়ে উদ্দীপকের রোকন সাহেব তার কক্ষে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারেন। প্রাকৃতিকভাবে না হলেও এসব কৃত্রিম উপায়ে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা যায় বলে সার্বিক দিক বিবেচনায় প্রশ্নের মন্তব্যটিকে যথার্থ বলা সমীচীন।
১০. আজমেরী বেগমের ডাইনিং রুমটি বেশ বড়। তিনি পার্টিশন দিয়ে এটির অর্ধাংশকে ডাইনিং রুম এবং বাকি অর্ধাংশকে ড্রইং রুম হিসেবে ব্যবহার করেন। প্রয়োজনানুযায়ী তিনি কক্ষকে তার কাজে ব্যবহার করতে পারেন।
ক. স্লাইড কী?
খ. স্বাস্থ্যরক্ষায় আলো-বাতাস কেন প্রয়োজনীয়?
গ. উদ্দীপকটি বাড়ির নকশা পরিকল্পনার কোন বিষয়টির ইঙ্গিত দেয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আজমেরী বেগম চাইলে বড় কক্ষও ব্যবহার করতে পারবেন- বিশ্লেষণ কর।
১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. স্লাইড হলো পার্টিশন।
খ. স্বাস্থ্যরক্ষায় আলো-বাতাস প্রয়োজনীয় কারণ এতে করে বিভিন্ন রোগব্যাধির জীবাণুকে ধ্বংস করা যায়। বাড়ির নকশা পরিকল্পনার সময় প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা রাখার বিষয়টি বিবেচনায় আনা আবশ্যক। প্রাকৃতিক আলো আমরা পাই সূর্যকিরণ থেকে। এতে করে কক্ষের স্থান শুষ্ক ও জীবাণুমুক্ত থাকে। আবার প্রাকৃতিকভাবে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকলেও এরূপ পরিবেশে রোগজীবাণু-সহজে বাঁচতে পারে না। কক্ষের দূষিত বায়ুও বের হয়ে যায়। এসব কারণেই স্বাস্থ্যরক্ষায় আলো-বাতাস প্রয়োজনীয়।
গ. উদ্দীপকটি বাড়ির নকশা পরিকল্পনার প্রয়োজন অনুসারে কক্ষের আকার পরিবর্তন হওয়ার বিষয়টির ইঙ্গিত দেয়।
বাড়ির নকশা পরিকল্পনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হয় তার মধ্যে একটি হলো প্রয়োজনানুযায়ী কক্ষের আকার পরিবর্তন করা। বাড়ির নকশা পরিকল্পনার সময় যদি এ বিষয়টির সুব্যবস্থা রাখা যায় তবে ভালো হয়। উদ্দীপকের আজমেরী বেগমের ডাইনিং রুমটি বেশ বড়। তিনি পার্টিশন ব্যবহার করে এর অর্ধাংশকে ডাইনিং রুম এবং বাকি অর্ধাংশকে ড্রইং রুম হিসেবে ব্যবহার করেন। প্রয়োজনে কক্ষের আকার পরিবর্তনের সুব্যবস্থা থাকা ভালো। বড় কক্ষ স্লাইড, ফোল্ডিং দরজা, পর্দা বা বোর্ডের পার্টিশন ব্যবহার করে পৃথক করে ব্যবহার করা যায়। আবার প্রয়োজন হলে পার্টিশন সরিয়ে কক্ষকে বড় কক্ষ হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। উদ্দীপকের ঘটনায় এ বিষয়টিই লক্ষণীয়। আজমেরী বেগম তার বড় কক্ষকে পার্টিশন দিয়ে ভাগ করে ডাইনিং রুম এবং ড্রইং রুম হিসেবে ব্যবহার করছেন। বাড়ির নকশা পরিকল্পনার এ বিষয়টিরই ইঙ্গিত পাওয়া যায় উদ্দীপকের আজমেরী বেগমের ঘটনায়।
ঘ. আজমেরী বেগম যদি চান তবে পার্টিশন সরিয়ে বড় কক্ষও ব্যবহার করতে পারবেন।
বাড়ির নকশা পরিকল্পনার জন্য যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হয় তার মধ্যে একটি হলো প্রয়োজন অনুসারে কক্ষের আকার পরিবর্তন করা। যদি এ ধরনের ব্যবস্থা রাখা যায় তবে তা পরবর্তীতে বেশ উপকারে লাগে। উদ্দীপকের আজমেরী বেগমের ঘটনায় যে বিষয়টি লক্ষ করা যায় তা হলো প্রয়োজনানুযায়ী কক্ষের আকার পরিবর্তন করা। আজমেরী বেগমের ডাইনিং রুমটি বেশ বড়। তিনি মাঝখানে পার্টিশন ব্যবহার করে এ রুমের অর্ধাংশকে ডাইনিং রুম এবং বাকি অর্ধাংশকে ড্রইং রুম হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন। তবে তিনি তার প্রয়োজন। অনুসারে এটিকে বড় কক্ষ হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। বড় কক্ষ স্লাইড, ফোল্ডিং দরজা, পর্দা বা বোর্ডের পার্টিশন ব্যবহার করে পৃথক করা যায়। এটিই হলো প্রয়োজন অনুসারে কক্ষের আকার পরিবর্তন করার নমুনা। আবার প্রয়োজন অনুযায়ী পার্টিশন সরিয়ে নেওয়া যায়। এতে করে বড় কক্ষও ব্যবহার করা যায়। উদ্দীপকের আজমেরী বেগমও তার সুবিধামতো সরিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে তিনি বড় কক্ষও ব্যবহার করতে পারবেন। পার্টিশন কক্ষটিকে ব্যবহার করতে পারেন।
0 Comments:
Post a Comment