HSC গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৫

HSC গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download
এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Home Science 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চ মাধ্যমিক

গার্হস্থ্য বিজ্ঞান
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৫ম অধ্যায়

HSC Home Science 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১. হাবিব আকিজ কোম্পানির কিছু শেয়ার সার্টিফিকেট ক্রয় করে অর্থ বিনিয়োগ করে। আফতাব গ্রুপে চাকরিরত তার বন্ধু সজল প্রতি মাসে কিছু টাকা ব্যাংকে রাখেন। সজলের অফিসের সকল কর্মচারীর মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ কেটে রাখা হয়। অফিসের কর্মচারীরা প্রয়োজনে এ জমা অর্থ থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারে।
ক. ঋণ কাকে বলে?
খ. পলিসি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দেয় - বুঝিয়ে লেখ।
গ. হাবিবের বিনিয়োগটি কি ঝুঁকিপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সজল ও আফতাব গ্রুপের সকল কর্মচারীর সঞ্চয়ের ধরন কি একই? উত্তরের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. অর্থের বিলম্বিত পরিশোধকে ঋণ বলে।

খ. বিমা কোম্পানি ও ব্যক্তির মধ্যে যে চুক্তি হয় তা হলো পলিসি। এ ধরনের পলিসি মানুষকে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে। পারিবারিক নিরাপত্তার জন্য করা হয় আজীবন বিমা। নির্দিষ্ট মেয়াদের পরও অল্প অঙ্কের প্রিমিয়াম আজীবন বহন করতে হয়। বিমাকারীর মৃত্যুর পর মনোনীত ব্যক্তি এ অর্থ লাভ করে। আবার সাধারণ মেয়াদি বিমা বিমাকারী নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করে থাকে। নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বিমাকারী তার দেওয়া অর্থ বোনাসসহ পাবে অথবা বিমাকারীর মৃত্যু ঘটলে বিমাকারীর মনোনীত ব্যক্তি বিমাকৃত অর্থ পাবে। ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্যই মানুষ পলিসি করে থাকে। তাই বলা যায়, পলিসি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদান করে।

গ. হ্যাঁ, হাবিবের বিনিয়োগটি ঝুঁকিপূর্ণ।
যেকোনো অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী তার আসল টাকা হতে কিছু লাভ করার জন্য বেশি আগ্রহী থাকে। বিনিয়োগের নানা প্রকারভেদ রয়েছে। এর মধ্যে শেয়ারে অর্থ বিনিয়োগে ঝুঁকি রয়েছে। উদ্দীপকের হাবিব আকিজ কোম্পানির কিছু শেয়ার সার্টিফিকেট ক্রয় করে অর্থ বিনিয়োগ করে। তার এ শেয়ারে অর্থ বিনিয়োগ করার বেশ ঝুঁকি রয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন মূল্যমানের শেয়ার সার্টিফিকেট বাজারে ছাড়ে। এ সার্টিফিকেট ক্রয় করে অর্থ বিনিয়োগ করা যায়। এতে বিনিয়োগকারী মালিক বা অংশীদার হিসেবে বিবেচিত হয়। এ কোনো মেয়াদপূর্তি না থাকলেও ঝুঁকি আছে। শেয়ারের দাম যদি বৃদ্ধি পায়, তবে শেয়ার সার্টিফিকেটে বিনিয়োগকারী ব্যক্তি লাভবান হন। তবে দাম হ্রাস পেলে বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ কারণে শেয়ারে অর্থ বিনিয়োগ করতে হয় অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই। তাই বলা যায়, হাবিবের শেয়ারে বিনিয়োগটি ঝুঁকিপূর্ণ।

ঘ. না, সজল ও আফতাব গ্রুপের সকল কর্মচারীর সঞ্চয়ের ধরন একই নয়।
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য মানুষের জীবনে নানা রকম নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা প্রয়োজন হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা হলো আর্থিক নিরাপত্তা। সঞ্চয়কে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়; যথা- বাধ্যতামূলক সঞ্চয় ও স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়। উদ্দীপকে সজল প্রতি মাসে যে অর্থ ব্যাংকে সঞ্চয় করেছেন সেটা তার স্বেচ্ছামূলক সঞ্জয়। আর সজলের অফিসের সকল কর্মচারীর মূল বেতনের নির্দিষ্ট অংশ কেটে রাখা হলো বাধ্যতামূলক সঞ্জয়। ঐচ্ছিক বা স্বেচ্ছামূলক সঞ্জয়ের অনেক মাধ্যম রয়েছে। ব্যক্তি এ উপায় বা মাধ্যম নিজের পছন্দমতো নির্বাচন করে থাকে। অপরদিকে, বাধ্যতামূলক সঞ্চয় সরকারি নিয়মের আওতাধীন বা নিয়োগকারীর নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে থাকে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় প্রতিষ্ঠানে আজকাল এ বাধ্যতামূলক সঞ্চয়ের প্রচলন রয়েছে। ভবিষ্য তহবিলের জন্য নিয়োগকর্তার কাছে কোনো চাকরিজীবী বা প্রতিষ্ঠানের কর্মী তার মূল বেতনের একটি নির্ধারিত অংশ শতকরা হার হিসাবে জমা রাখে। এ অর্থ সরকারিভাবে বা প্রতিষ্ঠানে লগ্নিকৃত ধরা হয় বলে তা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদসহ ক্রমশ বাড়তে থাকে। জরুরি প্রয়োজনে এ ফান্ড থেকে ঋণ গ্রহণ করা যায়। একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার প্রতি মাসে মূল বেতনের ৮% টাকা ভবিষ্য তহবিলে চাঁদা প্রদান বাধ্যতামূলক ধরনগত দিক বিবেচনায়।

২. দৃশ্যকল্প-১ : আরিফ সাহেব বিভিন্ন দামে বিভিন্ন কোম্পানির সার্টিফিকেট ক্রয় করে বিনিয়োগ করেন। হঠাৎ বাজারে এগুলোর দাম কমে যাওয়ায় তাকে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
দৃশ্যকল্প-২ : সফিক সাহেব একজন সরকারি চাকরিজীবী। প্রতি মাসে তার মূল বেতনের একটি নির্ধারিত অংশ কেটে রাখা হয়, যা থেকে প্রয়োজনে ঋণ নেওয়া যায়।
ক. সঞ্চয় কাকে বলে?
খ. ঋণ গ্রহণ সবার জন্য সুফল বয়ে আনে না- বুঝিয়ে লেখ।
গ. দৃশ্যকল্প-১-এ আরিফ সাহেব কোন ধরনের বিনিয়োগ করেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. দৃশ্যকল্প-২-এ উদ্দীপকটি কি বাধ্যতামূলক সঞ্চয় সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা প্রদান করতে সক্ষম? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দেখাও।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভবিষ্যতে অর্থ ভোগের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য বর্তমান ভোগ আয়ের যে অংশ ব্যবহার করা হয় না তাকে সঞ্চয় বলে।

খ. ঋণ গ্রহণ সবার জন্য সুফল বয়ে আনে না- ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে পরিবারের দুরবস্থা সহজে মোকাবিলা করা যায়। ব্যক্তির দক্ষতা, বুদ্ধি, জ্ঞান, ক্ষমতা ইত্যাদির সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য অর্থের প্রয়োজন। ঋণ গ্রহণ করে ব্যক্তি তার দক্ষতা ও জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি ও ব্যবসায়ের প্রসার ঘটাতে পারে। অপরদিকে, ব্যক্তি যদি ঋণ গ্রহণ করে তার যথাযথ ব্যবহার না করে অর্থাৎ ব্যবসার প্রসার না ঘটায় তাহলে সে ঋণ গ্রহণের সুফল ভোগ করতে পারবে না। বরং এটি তার দুরবস্থা আরও বাড়িয়ে দিবে।

গ. উদ্দীপকের আরিফ সাহেব শেয়ারে বিনিয়োগ করেন।
শেয়ার হলো মূলধনের একক। সাধারণত বড় ব্যবসায় পরিচালনা করতে প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয়। তখন যৌথ উদ্যোগে ব্যবসায় পরিচালনার জন্য জনগণের মধ্যে অর্থ বিনিয়োগের আহবান জানিয়ে শেয়ার ছাড়া হয়। এ শেয়ার ক্রয় করে অর্থ সঞ্চয় করা যায়। এতে বিনিয়োগকারী মালিক বা অংশীদার হিসেবে বিবেচিত হয়। এর কোনো মেয়াদপূর্তি নেই। তবে ঝুঁকি আছে। শেয়ারের দাম যদি বৃদ্ধি পায়। তবে শেয়ার বিনিয়োগকারী লাভবান হয়। আর দাম হ্রাস পেলে বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উদ্দীপকের আরিফ সাহেব বিভিন্ন দামে বিভিন্ন কোম্পানির সার্টিফিকেট ক্রয় করে বিনিয়োগ করেছেন। বাজারে এগুলোর দাম কমে যাওয়াতে আরিফ সাহেব ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আর আমরা জানি, বিনিয়োগের এ ধরনের ক্ষেত্রকে শেয়ার বলা হয়।

ঘ. দৃশ্যকল্প-২-এ উদ্দীপকটি বাধ্যতামূলক সঞ্চয় সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা প্রদান করতে সক্ষম হয় না।
বাধ্যতামূলক সঞ্জয় সরকারি নিয়মের আওতাধীন বা নিয়োগকারীর নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে থাকে। প্রভিডেন্ট ফান্ড, কর্মচারী কল্যাণ তহবিল, যৌথ বিমা তহবিল, ইনস্যুরেন্স, পেনশন ভাতা, গ্রাচ্যুইটি প্রভৃতি বাধ্যতামূলক সঞ্জয়। উদ্দীপকে বাধ্যতামূলক সঞ্চয়ের একটি পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। সেটি হলো প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ভবিষ্যৎ তহবিল। এ তহবিলে সরকারি কর্মচারী বা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারিগণ টাকা জমা করে থাকেন। তাদের মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ বেতন থেকে কেটে এ তহবিলে জমা দেন। জরুরি প্রয়োজনে কর্মচারিগণ এ টাকা থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারেন। এছাড়াও রয়েছে গ্রাচ্যুইটি, কর্মচারী কল্যাণ তহবিল ইত্যাদি। যেগুলো সম্পর্কে উদ্দীপকে কোনো ধারণাই দেওয়া হয়নি।

৩. মিনা আড়ং ডেইরিতে চাকরি করেন। তিনি প্রতি মাসে বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ ব্যাংকে জমা রাখেন। আড়ং ডেইরির মহাপরিচালক কর্মী নিয়োগ ও কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি কর্মচারীদের মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ কেটে রাখেন যেন কর্মীরা জরুরি প্রয়োজনে এখান থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারে।
ক. সঞ্চয়ের সংজ্ঞা দাও।
খ. বিনিয়োগ উদ্দেশ্যপূর্ণ- বুঝিয়ে লেখ।
গ. মিনা ব্যক্তিগতভাবে কোন ধরনের সঞ্চয় করেন?- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মিনার সঞ্চয় ও আড়ং ডেইরির পরিচালকের সঞ্চয় পরস্পর বৈসাদৃশ্যপূর্ণ- বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভবিষ্যতে অর্থ ভোগের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য বর্তমান ভোগব্যয় সীমিত করাকেই সঞ্চয় বলে।

খ. অর্থনীতিতে বিনিয়োগ বলতে বোঝায় মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে অর্থ বা মূলধন ব্যবহার করা এবং কর্মসংস্থান বা উৎপাদন বাড়ানো। অর্থাৎ বিনিয়োগ হচ্ছে একটি প্রবাহ ধারণা বা একটি প্রক্রিয়া, যার দ্বারা সঞ্জয়কে উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা যায়। বিনিয়োগে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও প্রত্যেক অর্থ বিনিয়োগকারীর মূল উদ্দেশ্যেই থাকে মুনাফা অর্জন। তাই বলাই বাহুল্য যে বিনিয়োগ উদ্দেশ্যপূর্ণ।

গ. উদ্দীপকের মিনা প্রতিমাসে বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ ব্যাংকে জমা রাখেন যা স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়ের অন্তর্ভুক্ত।
সঞ্জয়কে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- বাধ্যতামূলক সঞ্চয়ক এবং স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়। স্বেচ্ছামূলক সঞ্জয়ের আবার বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে যেমন- ব্যাংকের মাধ্যমে, ডাকঘর, বিমা, জাতীয়
সঞ্চয়পত্র, শেয়অর ক্রয় ইত্যাদি। অর্থাৎ মিনা ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয় করে থাকেন। মিনার ব্যাংকে অর্থ জমা রাখার তিনটি পদ্ধতি রয়েছে। যথা- ১. চলতি হিসাব, ২. সঞ্চয়ী হিসাব এবং ৩. স্থির জমার হিসাব।
১. চলতি হিসাব : হিসাব থেকে যেকোনো সময় টাকা তোলা যায়। এ হিসেবে সুদের হার খুব কম।
২. সঞ্চয়ী হিসাব : চলতি হিসাবের তুলনায় মুনাফার হার বেশি। তবে বিশেষ অনুমতি ছাড়া সপ্তাতে দুবারের বেশি টাকা তোলা যায় না।
৩. স্থির জমার হিসাব : এ হিসাবে নির্দিষ্ট অর্থ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যাংকে আমানত রাখা যায় এবং এর জন্য নির্ধারিত হারে মুনাফা পাওয়া যায়।
উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমি মনে করি, উদ্দীপকের মিনা তিনটি পদ্ধতির মাঝে যেকোনো একটি বা এর অধিক পদ্ধতিই গ্রহণ করেছেন।

ঘ. উদ্দীপকের আড়ং ডেইরির মহাপরিচালক কর্মী নিয়োগ ও কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য তিনি কর্মচারীদের মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ কেটে রাখেন যেন কর্মীরা জরুরি প্রয়োজনে এখান থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারে। অর্থাৎ আড়ং ডেইরির পরিচালকের সঞ্চয়কে ভবিষ্যৎ তহবিল বলা হয়। যা বাধ্যতামূলক সঞ্চয়ের অন্তর্ভুক্ত। উদ্দীপকে মিনার সঞ্চয় ও আড়ং ডেইরির পরিচালকের সঞ্চয় পরস্পর বৈসাদৃশ্যপূর্ণ।
প্রথমত, ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয়ে মিনা তার ইচ্ছামতো একটি নির্দিষ্ট অংশ টাকা ব্যাংকে জমা রাখতে পারে। আর আড়ং ডেইরির পরিচালক ভবিষ্যৎ তহবিলের অংশ হিসেবে মিনার বেতন থেকে একটি নির্ধারিত অংশ শতকরা হারে জমা রাখে।
দ্বিতীয়ত, ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয়ের কারণে মিনা তার জমাকৃত টাকা থেকে যেকোনো সময় টাকা তুলতে পারে। আর ফার্মের পরিচালকের সঞ্জয় থেকে মিনা তার ফান্ড থেকে জরুরি প্রয়োজনে ঋণ নিতে পারবে।
তৃতীয়ত, ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয়ের কারণে মিনার মুনাফার পরিমাণ বেশি। আর ফার্মের মহাপরিচালকের সঞ্চয়ের মাধ্যমে মিনা ঋণ নিলেও তাকে কয়েকটি কিসিত্মতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। সে হিসেবে এখানে মুনাফা ভোগের কোনো সুযোগ নেই। চতুর্থত, মিনা যে সঞ্চয় করে তা তার পছন্দমতো বা ইচ্ছামতো নির্বাচন করে। এখানে মিনার ইচ্ছার গুরুত্ব বেশি। আর ফার্মের পরিচালক যে সঞ্চয় করছেন তা তার নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে থাকে। সেখানে মিনার ইচ্ছার কোনো গুরুত্ব নেই।

৪. সঞ্চিতা মধ্যবিত্ত পরিবারে স্বামী ও সন্তানসহ বসবাস করে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে পরিচিত ব্যক্তিদের পোশাক সেলাই করে ভালোই আয় করে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে সে প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে জমা করে।
ক. পেনশন কী?
খ. কোন বিনিয়োগ কম ঝুঁকিপূর্ণ, কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে সঞ্চিতার সঞ্চয় কোন প্রকার সঞ্চয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. জাতীয় উন্নয়নে সঞ্চিতার সঞ্চয় কীভাবে ভূমিকা রাখবে উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সরকারি কর্মচারী বা কোনো কোনো স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মচারী চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বেতনের যে নির্দিষ্ট অংশ প্রতিমাসে ভাতা হিসেবে পেয়ে থাকে সেটিই পেনশন।

খ. মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে অর্থ বা মূলধন ব্যবহার করে কর্মসংস্থান তৈরি ও উৎপাদন কাজ করাকে বিনিয়োগ বলে। বিনিয়োগ সাধারণত দুই প্রকার। যথা- ১. সরকারি খাতে বিনিয়োগ ও ২ বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ। সরকারি খাতে বিনিয়োগ কম ঝুঁকিপূর্ণ। এধরনের বিনিয়োগে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। লোকসানের ঝুঁকি খুবই কম থাকে। যদিও এ ধরনের বিনিয়োগে লাভের পরিমাণ কম, তবুও এখানে বিনিয়োগের ঝুঁকি কম।

গ. উদ্দীপকের সঞ্চিতার সঞ্চয় ব্যক্তিগত সঞ্চয় বা স্বেচ্ছামূলক সঞ্জয় হিসেবে গণ্য হবে।
কারণ সে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে পরিচিত ব্যক্তিদের পোশাক সেলাই করে ভালোই আয় করে, ভবিষ্যতের কথা ভেবে সে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে জমা করে। স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়ের বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে। যেমন- ব্যাংক, ডাকঘর, বিমা, জাতীয় সঞ্চয়পত্র ইত্যাদি। সঞ্চিতা ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয় করে। ব্যাংকে সঞ্চয়ের তিনটি পদ্ধতি চালু হয়েছে। তা হলো-
১. চলতি হিসাব : এ হিসাব থেকে যেকোনো সময় টাকা তোলা যায়। এ হিসেবে সুদের হার খুব কম।
২. সঞ্চয়ী হিসাব : চলতি হিসাবের তুলনায় মুনাফার হার বেশি। তবে বিশেষ অনুমতি ছাড়া সপ্তাহে দুই বারের বেশি টাকা তোলা যায় না।
৩. স্থির জমার হিসাব : এ হিসাবে নির্দিষ্ট অর্থ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যাংকে আমানত রাখা যায় এবং এর জন্য নির্ধারিত হারে মুনাফা পাওয়া যায়।
উপরিউক্ত আলোচনায় বলা যায়, উদ্দীপকের সঞ্চিতা তিনটি পদ্ধতির মাঝে যেকোনো একটি পদ্ধতি তথা স্থির সঞ্চয় পদ্ধতিই গ্রহণ করেছে।

ঘ. জাতীয় উন্নয়নে সঞ্চিতার সঞ্চয় বিশেষ ভূমিকা রাখবে। উদ্দীপক হতে আমরা জানতে পারি, সঞ্চিতা প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে জমা করে। এ ধরনের সঞ্চয় সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি হয়। যাকে Fixed Deposit বা স্থির সঞ্জয় বলে।
Fixed Deposit-এর তহবিল দ্বারা মূলধন গঠন করে বিভিন্নভাবে ব্যাংক বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করে। ফলে বিভিন্ন শিল্প কারখানা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। এতে ব্যাপক কর্মসংস্থান হয়। বেকারত্ব দূর হয়, দারিদ্র্য ঘুচে যায়, অর্থনীতিতে গতিশীলতা তৈরি হয়। কলকারখানায় উৎপাদিত পণ্য দেশীয় চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা যায়। এতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। ফলে জাতীয় জীবনে ব্যাপক উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়। এভাবে স্থায়ী আমানত জাতীয় উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।

৫. রিফাত সাহেব একজন সরকারি চাকরিজীবী। তিনি দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করেন। তিনি ভালো বেতন পান। প্রতি মাসে তাকে বেতন থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখতে হয়। হঠাৎ তিনি হৃদরোগে মারা যান। এমতাবস্থায় তার স্ত্রী স্কুলপড়াুয়া দুই ছেলেকে নিয়ে কঠিন সমস্যায় পড়েন। মৃত্যুর পর রিফাত সাহেব চাকরি থেকে যে টাকা পান তা দিয়ে ছেলেদের স্কুলের কাছে একটি বাড়ি ভাড়া করেন এবং সার্বিক সুযোগ-সুবিধা আছে তাই এখানেই একটি বুটিক শপের দোকান দিলেন।
ক. সঞ্চয় কাকে বলে?
খ. পলিসি কীভাবে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দেয়?
গ. রিফাত সাহেব কী কী ধরনের সঞ্চয় করতেন- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রিফাত সাহেবের স্ত্রীর বিনিয়োগ সঠিক ছিল- বক্তব্যটি মূল্যায়ন কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভবিষ্যতে অর্থ ভোগের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য বর্তমান ভোগব্যয় সীমিত করাকেই সঞ্চয় বলে।

খ. অর্থ সঞ্চয় করার অন্যতম উপায় হলো বিমা বা পলিসি। সাধারণত আজীবন বিমা এবং সাধারণ মেয়াদি বিমা এ দুই উপায়ে বিমার পলিসি গ্রহণ করা যায়। আজীবন বিমা পারিবারিক নিরাপত্তার জন্য করা হয়। বিমাকারীর মৃত্যুর পর তার মনোনীত ব্যক্তি এ অর্থ লাভ করে। আর সাধারণ মেয়াদি বিমা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করা হয়। ১০,১৫,৩০ বছর মেয়াদি এ বিমা নানা রকমের হয়। আর এভাবেই বিমা বা পলিসি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকে।

গ. একজন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে উদ্দীপকের রিফাত সাহেব বাধ্যতামূলক কিছু সঞ্চয় করতেন। বাধ্যতামূলক সঞ্চয়ের কয়েকটি ভাগ রয়েছে। তবে যেসব ক্ষেত্রে রিফাত সাহেবের বাধ্যতামূলক অর্থ জমা রাখতে হতো তার মধ্যে হলো- ১. ভবিষ্যৎ তহবিল, ২. কল্যাণ তহবিল এবং ৩. যৌথ বিমা তহবিল।
১. ভবিষ্যৎ তহবিল : এ তহবিলে রিফাত সাহেবের তার মূল বেতনের একটি নির্ধারিত অংশ জমা রাখতে হয়েছিল। এ অর্থ সরকারিভাবে বা প্রতিষ্ঠানে লগ্নিকৃত, ধরা হয় বলে তা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদসহ ক্রমশ বাড়তে থাকে। একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার প্রতি মাসে মূল বেতনের ৮% টাকা ভবিষ্য তহবিলে চাঁদা প্রদান বাধ্যতামূলক।
২. কল্যাণ তহবিল : একজন সরকারি কর্মকর্তাকে বেতনের ১% এবং সর্বোচ্চ ৫০ টাকা প্রতি মাসে কল্যাণ তহবিলে চাঁদা দিতে হয়। যদি কোনো কর্মচারী শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে চাকরিরত অবস্থায় বা অবসর গ্রহণের ১০ বছরের মধ্যে মৃত্যুবরণ করে বা আর্থিক দুরবস্থায় পড়ে তখন কল্যাণ তহবিলের সাহায্য পাওয়া যায়। উদ্দীপকের রিফাত সাহেবের মৃত্যু পরবর্তী তাঁর স্ত্রীও এ অর্থ পেয়েছিল।
৩. যৌথ বিমা তহবিল : একজন সরকারি কর্মকর্তাকে বেতনের ০.৭০% হারে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা যৌথ বিমা তহবিলে চাঁদা প্রদান করতে হয়। কোনো কর্মচারী চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবার যৌথ বিমা তহবিল থেকে এককালীন সাহায্য পায়। যে সাহায্য উদ্দীপকের রিফাত সাহেবের পরিবারও পেয়েছেন।

ঘ. হ্যাঁ, আমি মনে করি- রিফাত সাহেবের স্ত্রীর বিনিয়োগ সঠিক।
কারণ বিনিয়োগ হচ্ছে একটি প্রবাহ ধারণা বা একটি প্রক্রিয়া। যার দ্বারা সঞ্চয়কে উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা যায়। অর্থ বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগে ঝুঁকি থাকে। তবে সরকারি বিধি মোতাবেক বিনিয়োগ করলে লাভ কম। তবে নিশ্চয়তা আছে। আবার বেসরকারি, পর্যায়ে বিনিয়োগে লাভ বেশি, ঝুঁকিও বেশি। বিনিয়োগের বিভিন্ন ক্ষেত্র রয়েছে। উদ্দীপকের রিফাত সাহেবের স্ত্রী তার সঞ্চিত অর্থ দিয়ে একটি বুটিক শপের দোকান দিলেন যা ব্যক্তি মালিকানাধীন বিনিয়োগের অন্তর্ভুক্ত।
উদ্দীপকে উল্লিখিত রিফাত সাহেবের স্ত্রী তার সঞ্চিত অর্থ দ্বারা মূলধন সৃষ্টি করে। সেই মূলধন বিনিয়োগ করে মুনাফা অর্জন করতে সচেষ্ট হচ্ছেন। যেমন- তিনি একটি বুটিক শপ দিয়েছেন। এখানে তিনি পোশাক উৎপাদন করে তা বিক্রয় করে অর্থ উপার্জন করছেন। ব্যক্তিমালিকানাধীন এ বিনিয়োগ এককভাবে হতে পারে আবার যৌথভাবেও হতে পারে। বর্তমানে তিনি এককভাবে বিনিয়োগ করলেও ভবিষ্যতে তিনি যৌথভাবে আরও বেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে তার ব্যবসায় বড় করতে পারেন। আবার তিনি যৌথভাবে না করেও তার সঞ্চিত অর্থের বিনিময়ে ঋণ নিয়েও আরও বেশি করে তার ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারেন। এতে মুনাফা বা লভ্যাংশ থেকে ঋণ পরিশোধও তিনি করতে পারবেন। এ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন। তবে বিনিয়োগে কিছু বিবেচ্য বিষয় রয়েছে। যেমন- বিনিয়োগ সঠিক জায়গায় হচ্ছে কিনা, সরকারি অনুমোদন, বিনিয়োগে ঝুঁকি আছে কিনা ইত্যাদি আরও কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় রেখে বিনিয়োগ করলে তা ভবিষ্যতে অবশ্যই ফলপ্রসূ হবে বলে আমি করি এবং সে হিসেবে রিফাত সাহেবের স্ত্রীর বিনিয়োগও সঠিক ছিল বলে আমি মনে করি।

৬. রতন বাবুর দুই মেয়ে। মেয়েদের জন্মের সাথে সাথেই তিনি তাদের জন্য ১৫ বছর মেয়াদি দুটি বিমা করেন। ভবিষ্যতে মেয়েদের বিয়ের জন্য এ অর্থ কাজে লাগাতে পারে ভেবেই তিনি এরূপ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ক. বোনাস হিসাব কত বছর মেয়াদি হয়?
খ. ডাকঘরে কীভাবে টাকা জমা রাখা যায়?
গ. রতন বাবু কোন ধরনের বিমা করেছেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রতন বাবুর স্বেচ্ছামূলক সঞ্জয় তাকে ভবিষ্যতে আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করবে- বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বোনাস হিসাব ৬ বছর মেয়াদি হয়।

খ. ডাকঘরে তিনটি পদ্ধতির মাধ্যমে টাকা জমা রাখা যায়। ডাকঘর স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়ের একটি ধরন। এখানে সাধারণ হিসাব, মেয়াদি হিসাব এবং বোনাস হিসাবের মাধ্যমে টাকা জমা রাখা যায়। সাধারণ হিসাবে মাত্র দুই টাকা দিয়ে হিসাব খোলা যায় এবং পরবর্তীতে যেকোনো পরিমাণ অর্থ জমা দেওয়া যায়। মেয়াদি হিসাবে ১ বছর, ২ বছর ও ৩ বছর মেয়াদে টাকা খাটানো যায় এবং ছয় মাস অন্তর অন্তর নির্ধারিত হারে লাভ তোলা যায়। বোনাস হিসাব হয় ৬ বছর মেয়াদি এবং এর মুনাফার হার সবচেয়ে বেশি। এভাবেই ডাকঘরে টাকা জমা রাখা যায়।

গ. রতন বাবু সাধারণ মেয়াদি বিমা করেছেন। মানুষের জীবনে যেসব নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তার প্রয়োজন হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো আর্থিক নিরাপত্তা। আর এ আর্থিক নিরাপত্তা সঞ্চয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করা যায়। সঞ্চয়কে আবার দু ভাগে ভাগ করা যায়- (ক) বাধ্যতামূলক সঞ্চয় ও (খ) স্বেচ্ছামূলক সঞ্জয়। এ স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়েরই একটি ধরন হলো বিমা বিমার পলিসি গ্রহণ করারও কয়েকটি উপায় রয়েছে। উদ্দীপকের রতন বাবু তার দুই মেয়ের জন্মের সাথে সাথেই ১৫ বছর মেয়াদি বিমা করেন। তার ধারণা ভবিষ্যতে মেয়েদের বিয়ের জন্য তিনি এ অর্থ কাজে লাগাতে পারবেন। রতন বাবু তার মেয়েদের জন্য যে বিমা করেছেন সেটি হলো সাধারণ মেয়াদি বিমা। সাধারণ মেয়াদি বিমা পলিসির আওতায় বিমাকারী নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিমা করে থাকে। এ বিমার মেয়াদ হতে পারে ১০, ১৫, ৩০ বছর ইত্যাদি। সাধারণ মেয়াদি বিমা নানা রকমের হয়; যেমন- বিবাহ বিমা, শিক্ষা বিমা, বৃত্তি বিমা, দুর্ঘটনা বিমা, ক্ষতিপূরণ বিমা ইত্যাদি। উদ্দীপকের রতন বাবু তার মেয়েদের জন্য ১৫ বছর মেয়াদি যে রিমা করেছেন তা বৈশিষ্ট্যের বিচারে সাধারণ মেয়াদি বিমারই অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হয়। তাই বলা যায়, রতন বাবু সাধারণ মেয়াদি বিমাই করেছেন।

ঘ. রতন বাবু যেভাবে স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয় করছেন তা তাকে ভবিষ্যতে আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করবে।
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য মানুষের জীবনে নানা ধরনের নিরাপত্তার প্রয়োজন হয় যার মধ্যে অন্যতম হলো আর্থিক নিরাপত্তা। আর আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় সঞ্চয়ের মাধ্যমে। সঞ্চয়েরও আবার প্রকারভেদ রয়েছে- ১. বাধ্যতামূলক সঞ্চয় ও ২. স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়। ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সঞ্জয়ের কোনো বিকল্প নেই। উদ্দীপকের রতন বাবু তার দু মেয়ের জন্মের সাথে সাথেই ১৫ বছর মেয়াদি দুটি বিমা করেন। ভবিষ্যতে মেয়েদের বিয়ের জন্য এ অর্থ কাজে লাগতে পারে ভেবেই তিনি এরূপ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রতন বাবুর বিমা করা স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়ের একটি ধরন। স্বেচ্ছামূলক সঞ্জয়ে পরিবার তার পছন্দমতো সঞ্চয়ের মাধ্যম নির্বাচন করতে পারে। এ ধরনের সঞ্চয় ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তা বিধান করতে সাহায্য করে। সঞ্চিত অর্থকে ভবিষ্যতে যেকোনো কাজে লাগিয়ে মানুষ উপকৃত হতে পারে। উদ্দীপকের রতন বাবু সুদূরপ্রসারী চিন্তাধারার অধিকারী। তাই তিনি তার সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্বেচ্ছায় বিমায় অর্থ সঞ্চয় করছেন। তার এ সঞ্চিত অর্থ তাকে ভবিষ্যতে আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করবে এবং তিনি প্রয়োজনের সময় এ অর্থ কাজে লাগাতে পারবেন। তাই বলা যায়, প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।

৭. রাজন সাহেব ডাক জীবন বিমায় অর্থ সঞ্চয় করেন। তিনি বিভিন্ন সুবিধার দিক বিবেচনা করেই ডাক জীবন বিমায় সঞ্চয়ী হিসাব খুলেছেন। তার আজীবন বিমায় তিনি প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে জমা দেন।
ক. পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ কত বছর?
খ. আজীবন বিমা কীভাবে আর্থিক নিরাপত্তা দেয়?
গ. রাজন সাহেব তার বিমার মাধ্যমে কোন ধরনের সুবিধা পাবেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রাজন সাহেবের বিমা জাতীয় সঞ্চয়পত্রের একটি অংশ মাত্র - মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ পাঁচ বছর।

খ. আজীবন বিমা জরুরি মুহূর্তে আর্থিক সাহায্য প্রদান করার মাধ্যমে আর্থিক নিরাপত্তা দেয়। অর্থ সঞ্চয় করার অন্যতম উপায় হলো বিমা। আজীবন বিমা বিমার একটি অন্যতম পলিসি। সাধারণত পারিবারিক নিরাপত্তার জন্য এ বিমা করা হয়। এ ধরনের বিমায় নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অল্প অঙ্কের প্রিমিয়াম আজীবন বহন করতে হয়। বিমাকারীর মৃত্যুর পর তার মনোনীত ব্যক্তি এ অর্থ লাভ করে। এভাবেই আজীবন বিমা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে আর্থিক নিরাপত্তা দেয়।

গ. রাজন সাহেব তার বিমার মাধ্যমে আর্থিক দিক দিয়ে নানা ধরনের সুবিধা পাবেন।
ভবিষ্যৎ জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সঞ্চয় করা গুরুত্বপূর্ণ। সঞ্জয় বাধ্যতামূলকভাবে করা যায়, আবার স্বেচ্ছামূলকভাবেও করা যায়। স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়ে পরিবার তার ইচ্ছামতো মাধ্যম ব্যবহার করে অর্থ সঞ্চয় করতে পারে। উদ্দীপকের রাজন সাহেব যে মাধ্যম ব্যবহার করে অর্থ সঞ্চয় করছেন তা স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়ের বিমা ধরনের অন্তর্গত। রাজন সাহেব ডাক জীবন বিমায় স্বেচ্ছায়ই অর্থ সঞ্জিত রাখেন। এ বিমার মাধ্যমে তিনি নানা ধরনের সুবিধা পাবেন। এসব সুবিধার মধ্যে রয়েছে- ১. আয়কর রিবেট পাওয়া, ২. প্রিমিয়ামের হার কম হলেও বোনাসের পরিমাণ বেশি হওয়া, ৩. ঝুঁকির শতভাগ নিরাপত্তা প্রাপ্তি, ৪. আকস্মিক মৃত্যু ও চির অক্ষমতার 'মঙ্গল বিধানজনিত নিশ্চয়তা, ৫. ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়া পলিসি ইত্যাদি। ডাক জীবন বিমায় এ ধরনের সুবিধাগুলো পাওয়া যায়। উদ্দীপকের রাজন সাহেবও ডাক জীবন বিমায় অর্থ সঞ্চয় করে রাখায় তিনি উক্ত বিমায় প্রদত্ত আর্থিক সুবিধাসমূহ পাবেন। এসব সুবিধার দিকগুলো বিবেচনা করেই রাজন সাহেব স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসেবে উক্ত বিমাকে বেছে নিয়েছেন।

ঘ. রাজন সাহেব যে বিমা করেছেন তা জাতীয় সঞ্চয়পত্রের একটি অংশকেই কেবল উপস্থাপন করে।
স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয় সঞ্জয়ের একটি বিশেষ প্রকার। এর মাধ্যমে পরিবার তার ইচ্ছামতো মাধ্যম বাছাই করে সঞ্চয় করে থাকে। এরূপ একটি মাধ্যম হলো জাতীয় সঞ্চয়পত্র। জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিভিন্ন মেয়াদি সঞ্চয়পত্র রয়েছে যার মধ্যে একটি হলো ডাক জীবন বিমা। উদ্দীপকের রাজন সাহেব ডাক জীবন বিমায় অর্থ সঞ্চয় করেন। বিভিন্ন সুবিধার দিক বিবেচনা করেই তিনি ডাক জীবন বিমার আজীবন বিমার পলিসিতে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে জমা দেন। তার এ সঞ্চয়ের মাধ্যমটি জাতীয় সঞ্চয়পত্রের আওতাভুক্ত। বিভিন্ন মেয়াদি জাতীয় সঞ্চয়পত্র অর্থ সঞ্চয়ের একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম। তবে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের আওতাধীন আরও বিভিন্ন মেয়াদি সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এগুলো হলো- পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক, ডাক জীবন বিমা, বাংলাদেশ প্রাইজবন্ড ইত্যাদি। উদ্দীপকের রাজন সাহেবকে ডাক জীবন বিমায় অর্থ সঞ্চয় করতে দেখা যায়। তার এ মাধ্যমটি জাতীয় সঞ্চয়পত্রের বিভিন্ন মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের একটি অংশ মাত্র। মূলত জাতীয় সঞ্চয়পত্রের আওতা আরও বিস্তৃত। তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় রাজন সাহেবের বিমাকে এর একটি অংশ বলা যায় এবং এ প্রেক্ষিতে প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।

৮. আয়েশা গ্রামে বাস করে। তার কাছে বেশকিছু সঞ্জিত অর্থ ছিল। এ অর্থ ব্যয় করে তিনি একটি গরু এবং বেশ কয়েকটি মুরগি কিনলেন। এবার বাজারে গরুর দুধ এবং মুরগির ডিম বিক্রি করে তিনি তার সঞ্চিত অর্থের দ্বিগুণ মুনাফা হিসেবে ফেরত পেলেন। এভাবে ধীরে ধীরে তিনি তার ব্যবসায় প্রসার করতে লাগলেন।
ক. অর্থ বিনিয়োগকারীর মূল উদ্দেশ্য কী থাকে?
খ. বিনিয়োগ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের আয়েশা বিনিয়োগের কোন ক্ষেত্রকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আয়েশাকে বিনিয়োগের সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন- বিশ্লেষণ কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. অর্থ বিনিয়োগকারীর মূল উদ্দেশ্য থাকে মুনাফা অর্জন।

খ. বিনিয়োগ বলতে বোঝায় মুনাফা বা লাভের উদ্দেশ্যে সঞ্চিত অর্থ বা মূলধনকে উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা। অর্থনীতিতে বিনিয়োগ বলতে বোঝায় মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে অর্থ বা মূলধন ব্যবহার করা এবং কর্মসংস্থান ও উৎপাদন বাড়ানো। এটি এমন একটি প্রবাহ ধারণা বা প্রক্রিয়া যার দ্বারা সঞ্চয়কে উৎপাদনকার্যে ব্যবহার করা যায়। বিনিয়োগকারীর মূল উদ্দেশ্যই মুনাফা অর্জন হওয়ায় এক্ষেত্রে তাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। বিনিয়োগের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করে সেই মুনাফা পুনরায় মূলধন হিসেবে কাজে লাগানো যায়। এভাবেই বিনিয়োগের মাধ্যমে পরিবার উপকৃত হয়।

গ. উদ্দীপকের আয়েশা ব্যক্তিমালিকানাধীন বিনিয়োগের ক্ষেত্রকে নির্দেশ করে।
মুনাফা বা লাভের উদ্দেশ্যে সঞ্চিত অর্থ বা মূলধনকে উৎপাদন কাজে ব্যবহার করাই হলো বিনিয়োগ। এটি একটি প্রবাহ ধারণা বা প্রক্রিয়া। এ বিনিয়োগের আবার নানা ক্ষেত্র রয়েছে। বিনিয়োগে ঝুঁকি থাকে। তাই বিনিয়োগকারীকে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। উদ্দীপকের আয়েশা একজন বিনিয়োগকারী। তার সঞ্চিত অর্থকে তিনি ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করেছেন। আয়েশা তার সঞ্চিত অর্থ দিয়ে একটি গরু এবং কয়েকটি মুরগি কিনেছেন। এরপর গরুর দুধ এবং মুরগির ডিম বিক্রি করে তিনি তার সঞ্চিত অর্থের দ্বিগুণ মুনাফা হিসেবে ফেরত পেলেন। এভাবে ধীরে ধীরে তিনি তার ব্যবসায় প্রসার করতে লাগলেন। আয়েশার বিনিয়োগ ব্যক্তিমালিকানাধীন বিনিয়োগের ক্ষেত্রকেই নির্দেশ করে। ব্যক্তিমালিকানাধীন বিনিয়োগে ব্যক্তি তার সঞ্চিত অর্থ দ্বারা মূলধন সৃষ্টি করে এবং সেই মূলধন বিনিয়োগ করে মুনাফা অর্জন করে। এটি এককভাবেও করা যায়, যৌথভাবেও করা যায়। উদ্দীপকের আয়েশা এককভাবে তার ব্যবসায়ে অর্থ বিনিয়োগ করে লাভবান হয়েছেন। এটি তার ব্যক্তিগত ব্যবসায়।
তাই সার্বিক দিক এবং বৈশিষ্ট্য বিচারপূর্বক উদ্দীপকের আয়েশার বিনিয়োগের ক্ষেত্রকে ব্যক্তিমালিকানাধীন বিনিয়োগ হিসেবেই বিবেচনা করা যায়।

ঘ. বিনিয়োগে ঝুঁকি বেশি হওয়ায় একজন বিনিয়োগকারী হিসেবে উদ্দীপকের আয়েশাকে অবশ্যই বিনিয়োগের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
মুনাফা বা লাভের উদ্দেশ্যে সঞ্চিত অর্থ বা মূলধন উৎপাদন কাজে ব্যবহার করাই হলো বিনিয়োগ। এটি একটি প্রবাহ ধারণা বা প্রক্রিয়া। তবে বিনিয়োগে যেমন লাভ আছে তেমনি ক্ষতিও আছে। কেননা বিনিয়োগে ঝুঁকি বেশি থাকে। এ কারণেই বিনিয়োগকারীকে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। উদ্দীপকের আয়েশাও একজন বিনিয়োগকারী। তিনি গ্রামে বাস করেন। তার কিছু সঞ্চিত অর্থ ছিল। সেগুলো তিনি তার ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যবসায়ে কাজে লাগিয়েছেন এবং দ্বিগুণ মুনাফাও অর্জন করেছেন। প্রত্যেক বিনিয়োগকারীরই উদ্দেশ্য থাকে মুনাফা অর্জন করা। কিন্তু বিনিয়োগে যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে। এতে বিনিয়োগকৃত অর্থ হারানোর ভয় থাকে। তাই বিনিয়োগকারীকে অর্থ বিনিয়োগের পূর্বে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় যেন কাঙি্ক্ষত লক্ষ্যার্জন সম্ভব হয়। উদ্দীপকের আয়েশাকেও ব্যবসায়ে সঞ্চিত অর্থ বিনিয়োগ করতে দেখা যায়। একজন বিনিয়োগকারী হিসেবে আয়েশাকেও বিনিয়োগের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। এক্ষেত্রে তারও সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক।
সার্বিক দিক বিবেচনা শেষে বলা যায় যে, বিনিয়োগে ঝুঁকি বেশি থাকায় উদ্দীপকের আয়েশাকে অবশ্যই বিনিয়োগের বেলায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

৯. রুবেল সাহেব ডাকঘর থেকে একটি পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করলেন ১০,০০০ টাকার বিনিময়ে। এ অর্থ তিনি ৫ বছরের জন্য বিনিয়োগ করলেন। পাঁচ বছরের চুক্তি শেষ হবার পর তিনি তার বিনিয়োগকৃত অর্থ মুনাফাসহ উত্তোলন করলেন।
ক. বন্ড ও সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে কী ইস্যু করা হয়?
খ. বিনিয়োগ পরিবারের ব্যয় নির্বাহে কীভাবে সাহায্য করে?
গ. উদ্দীপকে বিনিয়োগের কোন ক্ষেত্রকে নির্দেশ করা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটি কি বিনিয়োগের ক্ষেত্র সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা প্রদানে সক্ষম? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বন্ড ও সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে চুক্তিপত্র ইস্যু করা হয়।

খ. বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্জিত মুনাফা কাজে লাগিয়ে পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করা যায় বলে সাহায্য পাওয়া যায়। বিনিয়োগ এমন একটি প্রক্রিয়া যার সাহায্যে সঞ্চয়কে উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা যায়। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন করা। এ মুনাফাকে আবার বিনিয়োগ করা যায়। এ মুনাফা পরিবারের ব্যয় নির্বাহ, শিক্ষা, চিকিৎসা, বিবাহ ইত্যাদি কাজে ব্যয় করা হয়। এভাবেই বিনিয়োগ পরিবারের ব্যয় নির্বাহে সাহায্য করে।

গ. উদ্দীপকে বিনিয়োগের বন্ড ও সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রকে নির্দেশ করা হয়েছে।
বিনিয়োগ বলতে বোঝায় মুনাফা বা লাভের উদ্দেশ্যে সঞ্চিত অর্থ বা মূলধনকে উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা। এ অর্থ বিনিয়োগের আবার নানা ক্ষেত্র রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি নানা পর্যায়ে অর্থ বিনিয়োগ করে মুনাফা অর্জন করা যায়। উদ্দীপকের আলোকে বিনিয়োগের ক্ষেত্র সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। এখানে দেখা যায়, রুবেল সাহেব ডাকঘর থেকে ১০,০০০ টাকার বিনিময়ে একটি পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করেছেন। এ অর্থ তিনি ৫ বছরের জন্য বিনিয়োগ করেছেন। পাঁচ বছরের চুক্তি শেষ হবার পর তিনি তার বিনিয়োগকৃত অর্থ মুনাফাসহ উত্তোলন করেন। রুবেল সাহেব যেখানে অর্থ বিনিয়োগ করেছেন এটি বন্ড ও সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগের ক্ষেত্রকে নির্দেশ করে। সঞ্চিত অর্থ ব্যাংকে স্থির জমা হিসেবে বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা যায়। চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বিনিয়োগকৃত অর্থ মুনাফাসহ ফেরত পাওয়া যায়। জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে বেশ লাভ হওয়ায় এটি বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ বিনিয়োগকৃত অর্থ পারিবারিক ব্যয় নির্বাহে খরচ করে পরিবারের চাহিদা পূরণ করা যায়। উদ্দীপকের রুবেল সাহেব এ ধরনের সঞ্চয়পত্রে অর্থ বিনিয়োগ করেই লাভবান হয়েছেন।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি বিনিয়োগের বন্ড ও সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রকেই নির্দেশ করে।

ঘ. না, উদ্দীপকটি বিনিয়োগের ক্ষেত্র সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা প্রদানে সক্ষম নয়।
বিনিয়োগ বলতে বোঝায় মুনাফা বা লাভের উদ্দেশ্যে অর্থ বা মূলধনকে। উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা। এটি একটি প্রবাহ ধারণা বা প্রক্রিয়া, যার দ্বারা সঞ্চয়কে উৎপাদন কার্যে ব্যবহার করা যায়। বিনিয়োগের আবার নানা ক্ষেত্রও রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগ করে নিশ্চিত মুনাফা অর্জন করা যায়। উদ্দীপকে বিনিয়োগের একটি ক্ষেত্র সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হয়েছে। এখানে দেখা যায়, রুবেল সাহেব ডাকঘর থেকে একটি পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করলেন ১০,০০০ টাকার বিনিময়ে। এ অর্থ তিনি ৫ বছরের জন্য বিনিয়োগ করলেন। পাঁচ বছরের চুক্তি শেষ হবার পর তিনি তার বিনিয়োগকৃত অর্থ মুনাফাসহ উত্তোলন করেন। এটি বিনিয়োগের বন্ড ও সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রকে নির্দেশ করে। কিন্তু এটি ছাড়াও বিনিয়োগের আরও অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। যেমন- ব্যক্তিমালিকানাধীন বিনিয়োগ, শেয়ার ইত্যাদি। কিন্তু উদ্দীপকে রুবেল সাহেবের বিনিয়োগের ঘটনায় কেবল বন্ড সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রটিকে নির্দেশ করা হয়েছে। এটি বিনিয়োগের ক্ষেত্রসমূহের একটি ধরন হলেও একমাত্র ধরন হয়। এটি ছাড়াও আরও নানাভাবে বিনিয়োগ করা যায়। কিন্তু উদ্দীপক থেকে আমরা বিনিয়োগের সকল ক্ষেত্র সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারি না। এখানে কেবল বন্ড ও সঞ্চয়পত্রে অর্থ বিনিয়োগের বিষয়টিই ফুটে উঠেছে, অন্যগুলো নয়। তাই সার্বিক দিক বিবেচনা শেষে বলা যায় যে, উদ্দীপকটি বিনিয়োগের ক্ষেত্র সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা প্রদানে সক্ষম নয়।

১০. তুহিন সাহেব একজন ওয়েব ডেভেলপার। তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘদিন। বর্তমানে তিনি নিজেই একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুলবেন বলে একটি এনজিও থেকে ঋণ নিলেন। ধীরে ধীরে তার ব্যবসার প্রসার হতে থাকল এবং তিনি ঋণ পরিশোধে সক্ষম হলেন।
ক. ঋণগ্রহীতাকে কী ধরনের চাপের মধ্যে পড়াতে হয়?
খ. ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে দারিদ্র্য থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায়?
গ. তুহিন সাহেব কীভাবে ঋণ গ্রহণের সুফল ভোগ করতে সক্ষম হলেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে না পারলে তুহিন সাহেবকে নানা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হতো- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ঋণগ্রহীতাকে আর্থিক ও মানসিক চাপের মধ্যে পড়াতে হয়।

খ. ঋণ গ্রহণ করে তার সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ব্যাংক, সরকারি ও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান শর্ত সাপেক্ষে ঋণ প্রদান করে। ঋণ গ্রহণ করার পর নির্ধারিত সময়ে শর্ত অনুযায়ী ঋণ পরিশোধ করতে হয়। ঋণ গ্রহণ করার পর সে অর্থ যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় তবে তা কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয় এবং এর মাধ্যমে অভাব বা দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।

গ. তুহিন সাহেব ঋণকৃত অর্থকে যথাযথভাবে ব্যবহার করার মাধ্যমে ঋণ গ্রহণের সুফল ভোগ করতে সক্ষম হলেন।
ব্যাংক, সরকারি ও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান শর্তসাপেক্ষে ঋণ প্রদান করে। ঋঋণ গ্রহণ করার পর নির্ধারিত সময়ে শর্ত অনুযায়ী ঋণ পরিশোধ করতে হয়। ঋণ গ্রহণের যেমন সুফল রয়েছে, তেমনি কুফলও রয়েছে। উদ্দীপকের তুহিন সাহেবকে ঋণ গ্রহণের সুফল ভোগ করতে দেখা যায়। তিনি একজন ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে নিজস্ব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে চেয়েছেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি একটি এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করলেন। ধীরে ধীরে তার ব্যবসার প্রসার হতে থাকা তিনি তার ঋণ পরিশোধে সক্ষম হলেন। অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঋণের সুফল রয়েছে। ব্যক্তির দক্ষতা, বুদ্ধি, ওজন, ক্ষমতা ইত্যাদির সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য অর্থের প্রয়োজন। ঋণ গ্রহণ করে ব্যক্তি তার দক্ষতা ও জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বাড়াতেও ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারে। উদ্দীপকের তুহিন, সাহেবও তার দক্ষতা ও জ্ঞানকে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে ঋণ গ্রহণ করে ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি লাভবান হয়েছেন এবং এভাবেই তিনি ঋণ গ্রহণের সুফল ভোগ করতে সক্ষম হলেন।

ঘ. ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে না পারলে তুহিন সাহেবকে ঋণগ্রহীতা হিসেবে নানা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হতো।
ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে শর্তসাপেক্ষে। শর্ত অনুসারে সময়মতো ঋণ পরিশোধ না হলে সুদে-আসলে এর পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। ফলে ঋণগ্রহীতাকে আর্থিক ও মানসিক চাপের মুখে পড়াতে হয়। ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার করা যদি সম্ভব না হয় তবে এর কুফল ভোগ করতে হয়। উদ্দীপকের তুহিন সাহেবের ক্ষেত্রে এমন কিছু দেখা যায় না। তিনি একজন ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে নিজস্ব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে চেয়েছেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি ঋণ নিয়েছেন এবং ঋণের সদ্ব্যবহার করে সফলও হয়েছেন। তিনি যদি ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার না করতেন তবে তাকে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও বিপদের সম্মুখীন হতে হতো। এর ফলে তিনি মানসিক বিপর্যয়েরও সম্মুখীন হতেন। এমনকি তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়ে তিনি দেউলিয়াও হতে পারতেন। এতে করে তার আর্থিক ও মানসিক চাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতো। কিন্তু তুহিন সাহেব তার ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পেরেছেন বলেই সফল হতে পেরেছেন। যদি না পারতেন তবে তাকে নানা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হতো।
তাই সার্বিক দিক বিবেচনা শেষে বলা যায় যে, প্রশ্নের মন্তব্যটি অত্যন্ত যথার্থ।
Share:

0 Comments:

Post a Comment