HSC গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৪

HSC গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download
এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Home Science 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চ মাধ্যমিক

গার্হস্থ্য বিজ্ঞান
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৪র্থ অধ্যায়

HSC Home Science 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১. সজল চাকরিজীবী। প্রতি মাসে তার মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ অফিস কর্তৃক কেটে ভবিষ্যতের জন্য জমা রাখা হয়। রাকিব বেসরকারি কোম্পানিতে উচ্চ বেতনে কর্মরত। সে প্রতি মাসে স্বেচ্ছায় ব্যাংকে টাকা জমা রাখে।
ক. বিনিয়োগ-এর সংজ্ঞা দাও।
খ. ‘‘সঞ্চিত অর্থ সংকটকালের সহায়ক’’- বুঝিয়ে লেখ।
গ. সজলের সঞ্জয় কোন ধরনের? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘‘রাকিবের সঞ্চয় কয়েক ধরনের হতে পারে’’- বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে সঞ্চিত অর্থ বা মূলধন উৎপাদন কাজে ব্যবহার করাকে বিনিয়োগ বলে।

খ. সঞ্চিত অর্থ সংকটকালে সহায়ক হয়ে কাজ করে। ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য কিছু অর্থ তুলে রাখাকে সঞ্জয় বলে। যেকোনো সংকটে, বিপর্যয়ে বা দুর্দিনে সঞ্চয় ত্রাতারজর ভূমিক পালন করে। যেমন পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির হঠাৎ মৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, ব্যবসায় লোকসান, চাকরি থেকে ছাঁটাই, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যুদ্ধ, অগ্নিকান্ড ইত্যাদি সংকটময় মুহূর্তে সঞ্চিত অর্থ দ্বারা মোকাবিলা করা যায়।

গ. উদ্দীপকের সজলের সঞ্চয় বাধ্যতামূলক। সঞ্চয় প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত। এগুলো হলো- বাধ্যতামূলক সঞয় এবং স্বেচ্ছামূলক সঞয়।
বাধ্যতামূলক সঞ্চয় সরকারি নিয়মের আওতাধীন বা নিয়োগকারীর নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে থাকে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় প্রতিষ্ঠানে আজকাল এ বাধ্যতামূলক সঞ্চয়ের প্রচলন রয়েছে। উদ্দীপকের সজলকে বাধ্যতামূলক সঞ্চয়ে প্রবৃত্ত হতে দেখা যায়। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। প্রতি মাসে তার মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ তিনি ভবিষ্যৎ তহবিলে জমা দেন। এটি প্রতি মাসেই তার বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয়। তার ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তার জন্যই এটি জমা রাখা হয়। এটি তাকে বাধ্যতামূলকভাবেই জমা রাখতে হচ্ছে। তিনি যেখানে অর্থ সঞ্চয় করছেন এটি হলো ভবিষ্য তহবিল। এটি বাধ্যতামূলক সঞ্চয়ের অধীন। নিয়োগকর্তার কাছে কোনো চাকরিজীবী বা প্রতিষ্ঠানের কর্মী তার মূল বেতনের একটি নির্ধারিত অংশ শতকরা হার হিসেবে জমা রাখে। এ অর্থ সরকারিভাবে বা প্রতিষ্ঠানে লগ্নিকৃত ধরা হয় বলে তা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদসহ ক্রমশ বাড়তে থাকে। জরুরি প্রয়োজনে এ ফান্ড থেকে ঋণ গ্রহণ করা যায়। বাধ্যতামূলকভাবেই এ তহবিলে অর্থ সঞ্চয় করা হয়ে থাকে। উদ্দীপকের সজলও এভাবে ভবিষ্যৎ তহবিলে অর্থ জমা করছেন। আর এটি বাধ্যতামূলকভাবে তাকে জমা রাখতে হচ্ছে বলে এটি হলো বাধ্যতামূলক সঞ্চয়।

ঘ. উদ্দীপকের রাকিব একজন বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত। তিনি স্বেচ্ছায় ব্যাংকে টাকা জমা রাখেন। তাই তিনি সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন।
কোনো ব্যক্তি নিজের ইচ্ছায় ব্যাংক, ডাকঘর, জীবন বিমা, সাধারণ জীবন বিমা ইত্যাদির মাধ্যমে যা জমা করে তাই স্বেচ্ছামূলক সঞ্জয়। স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়ের অনেক মাধ্যম রয়েছে। ব্যক্তি বা পরিবার এই উপায় বা মাধ্যম নিজের পছন্দমতো বা ইচ্ছামতো নির্বাচন করে। এ ধরনের সঞ্চয়ের মাধ্যমগুলো নিম্নরূপ-
• ব্যাংকের মাধ্যমে : ব্যাংকে অর্থ গচ্ছিত রাখলে অর্থ নিরাপদে থাকে, আবার মুনাফাও পাওয়া যায়। ব্যাংকে অর্থ জমা রাখার তিনটি পদ্ধতি রয়েছে। যেমন- চলতি হিসাব, সঞ্চয়ী হিসাব ও স্থির জমার হিসাব।
• ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক : ডাকঘর জনসাধারণের অর্থ তিনটি পদ্ধতিতে জমা রাখে।
• বিমা স্কিম : অর্থ সঞ্চয় রাখার অন্যতম একটি পদ্ধতি হলো বিমা। বিমা কোম্পানি মানুষের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তার অঙ্গীকারে আবদ্ধ থাকে।
• জাতীয় সঞ্চয়পত্র : বিভিন্ন মেয়াদি জাতীয় সঞ্চয়পত্র অর্থ সঞ্চয়ের একটি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য মাধ্যম। আদেশক্রমে এই মুনাফার হারের হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে।
• শেয়ার : বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমেও সঞ্চয় করা যায়।
উপরিউক্ত মাধ্যমে স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয় করা যায়। উদ্দীপকে রাকিব এসব মাধ্যমের মধ্যে ব্যাংক বেছে নিয়েছে। অতএব বলা যায়, রাকিব স্বেচ্ছামূলক সঞ্চয়ের মাধ্যমে অর্থ সঞ্চয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২.দৃশ্যকল্প-১ : সাবিনা এসএসসি ও এইচএসসি তে জিপিএ ৫ পাওয়া সত্ত্বেও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ায় লেখাপড়াায় অমনোযোগী হয়ে পড়ে।
দৃশ্যকল্প-২ : মিসেস রূপালী সকালে ওঠে নাস্তা বানিয়ে মেয়েকে স্কুলে দিয়ে বাজার করে বাসায় ফেরেন। দুপুরের রান্না করে, বসে ঘর মোছেন। সাবান ঘষে কাপড়া ধুয়ে গোসল করে মেয়েকে স্কুল থেকে এনে খাবার খেয়ে বিকেলের নাস্তার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সন্ধ্যায় পরিশ্রান্ত হয়ে পড়াায় মেয়েকে পড়াাশোনায় সাহায্য করতে পারেন না।
ক. শক্তি কাকে বলে?
খ. সঠিক দেহভঙ্গি সময় ও শক্তি বাঁচায়- ব্যাখ্যা কর।
গ. সাবিনা কোন ধরনের ক্লান্তিতে ভুগছে- বর্ণনা কর।
ঘ. সঠিক পদক্ষেপই পারে সাবিনা ও মিসেস রূপালীর ক্লান্তি দূর করতে বিশ্লেষণ কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শক্তি এক প্রকার মানবীয় সম্পদ।

খ. সঠিক দেহভঙ্গি সময় ও শক্তি বাঁচায়। কাজের সময় সুষ্ঠু দেহভঙ্গি ব্যবহার করলে শক্তি কম ব্যয় হয়। আরামদায়ক ভঙ্গিতে কাজ করলে পেশির ওপর চাপ কম পড়ে। ফলে অধিক সময় ধরে কাজ করা যায়। কাজের সময় কিছু ব্যাপার খেয়াল রাখলে সময় ও শক্তি দুই-ই বাঁচে। কাজের সময় মেরুদ- সোজা রাখা, সামনে ঝুঁকে বা উপুড় হয়ে কাজ না করা। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করার পর বসে করার মতো কাজ করা এবং কাজের সময় দুই হাত ব্যবহার করার মাধ্যমে সময় ও শক্তি বাঁচানো যায়।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সাবিনা নৈরাশ্যজনিত মানসিক ক্লান্তিতে ভুগছে।
নৈরাশ্য ও হতাশা থেকে যে মানসিক ক্লান্তির সৃষ্টি হয় তাই নৈরাশ্যজনিত ক্লান্তি। নৈরাশ্যজনিত ক্লান্তি ব্যক্তির নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের জন্য হয়ে থাকে। কাজে অকৃতকার্য, অভিজ্ঞতার অভাব, কাজে প্রশংসা অর্জন করতে না পারলে, দুশ্চিন্তা করলে নৈরাশ্যজনিত ক্লান্তি আসতে পারে। ফলে কাজে বিশৃঙ্খলা ও গোলমাল দেখা দেয়, যা মানসিক ক্লান্তি সৃষ্টি করে। মেধাবী ছাত্রী সাবিনা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়া সত্ত্বেও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়নি। যার কারণে সে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ভর্তির পর সে লেখাপড়াায় অমনোযোগী হয়ে পড়ে। লেখাপড়াায় অনিয়মিত হওয়ার কারণ হলো তার মধ্যে নৈরাজ্যজনিত মানসিক ক্লান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পেরে তার মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। এ হতাশাই তার মধ্যে নৈরাশ্যজনিত মানসিক ক্লান্তি সৃষ্টি করেছে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সাবিনা ও মিসেস রূপালী যথাক্রমে নৈরাশ্যজনিত মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তিতে ভুগছে।
সঠিক পদক্ষেপই পারে সাবিনা ও মিসেস রূপালীর ক্লান্তি দূর করতে। এক্ষেত্রে ক্লান্তির হ্রাসের কিছু উপায় আছে। যেগুলো অবলম্বন করে সাবিনা ও মিসেস রূপালী ক্লান্তি দূর করতে পারে। নৈরাশ্যজনিত ক্লান্তির ক্ষেত্রে অকৃতকার্য ব্যক্তিকে উপদেশ দিয়ে, কাজের সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে, সরাসরি কাজের সমালোচনা না করে নৈরাশ্যজনিত ক্লান্তি হ্রাস করা যায়। তবে নৈরাশ্যজনিত ক্লান্তি হ্রাস করতে হলে সবার সচেতনতা প্রয়োজন। অন্যদিকে, শারীরিক ক্লান্তির হ্রাসের সময় পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শক্তির ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। করণীয় বিভিন্ন কাজ এমনভাবে সাজাতে হবে যেন অনেক শক্তি অপচয় না হয়ে ক্লান্তির উৎপত্তি না হয় এবং ভারী কাজের পর হালকা কাজ থাকে। কারণ অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলেই শারীরিক ক্লান্তির উৎপত্তি হয়। শ্রম লাঘবের বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে ক্লান্তি কমানো সম্ভব। এক্ষেত্রে কাজ সহজকরণের পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। তাছাড়া কাজের মাঝে বিশ্রামের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে Work Curve সম্পর্কে জানতে হবে। দিনের প্রারম্ভে কর্মশক্তি যা থাকে মধ্যাহ্নে তা বৃদ্ধি পায়, দুপুরের পর কমতে থাকে। তাই Work Curve সম্পর্কে অবগত থাকলে সেভাবে কর্ম পরিকল্পনা করে ক্লান্তি সহজেই হ্রাস করা সম্ভব। কাজ করার সময় শরীরের অবস্থান মাংসপেশি কার্যকরভাবে চালিত করলে ক্লান্তি কম হয়।
তাই সঠিক সময়ে সঠিক কাজ পেতে হলে এবং কাজে সফলতা অর্জন করতে হলে সব ধরনের ক্লান্তি দূর করা আবশ্যক।

৩. রিপন ও জাহেদ দুই বন্ধু। বছর তিন হলো তারা মাস্টার্স পাস করেছে। বাবার একমাত্র সন্তান রিপন বারবার চাকরির চেষ্টা করলেও এখনো তা অনিশ্চিত। অন্যদিকে জাহেদ মাস্টার্স পাস করার পর পর সেনাবাহিনীতে চাকরিতে যোগদান করেছে। সারাদিন তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। জাহেদের কর্মস্থল বাসা থেকে অনেক দূরে হওয়ায় ফিরতে রাত হয়। বাড়ি ফিরে তারা দুজনেই খুব ক্লান্তি অনুভব করে।
ক. প্রসেস চার্ট কী?
খ. দ্রব্যের পরিবর্তন দ্বারা শক্তি ও সময়ের সদ্ব্যবহার করা যায়- ব্যাখ্যা কর।
গ. রিপন কোন ধরনের ক্লান্তিতে ভুগছে? এ ক্লান্তি দূর করতে তার বাবা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ভিন্ন দুটি কারণে জাহেদ ক্লান্ত হচ্ছে- উক্তিটির সমর্থনে যুক্তি দেখাও এবং তা নিরসনের উপায় বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রসেস চার্ট হলো কোনো একটি কাজ সম্পূর্ণভাবে করার জন্য কাজের বিভিন্ন পর্যায়ের বর্ণনা করা।

খ. প্রস্তুতকৃত দ্রব্যের পরিবর্তন সাধন করে সময় ও শক্তির সদ্ব্যবহার করা যায়। যান্ত্রিক সভ্যতার অগ্রগতির ফলে গৃহস্থালি কাজকর্ম সহজ ও সংক্ষেপ করতে বর্তমানে অনেক নতুন জিনিস এবং উপায় উদ্ভাবিত হয়েছে। বাজারে সহজে প্রাপ্য এমন সব জিনিস ব্যবহার করে গৃহিণী সময় ও শক্তির সদ্ব্যবহার করতে পারেন। যেমন- রুমালের পরিবর্তে টিস্যু পেপারের ব্যবহার, মাটির পাত্রের পরিবর্তে প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবহার ইত্যাদি। এভাবেই দ্রব্যের পরিবর্তন দ্বারা শক্তি ও সময়ের সদ্ব্যবহার করা যায়।

গ. উদ্দীপকের রিপন নৈরাশ্যজনিত মানসিক ক্লান্তিতে ভুগছে। শারীরিক ও মানসিক যেকোনো পরিশ্রমের পরই ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। ক্লান্তি যেকোনো কাজের জন্যই ক্ষতিকর। ক্লান্তির কারণে ব্যক্তির কাজ করার স্পৃহা কমে যায়। ক্লান্তিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১. শারীরিক ক্লান্তি ও ২. মানসিক ক্লান্তি। উদ্দীপকের রিপন মাস্টার্স পাস করার পর চাকরির চেষ্টা করছে; কিন্তু সফলকাম হতে পারছে না। এ পরিস্থিতিতে তার মাঝে নৈরাশ্যজনিত মানসিক ক্লান্তি বিরাজ করছে বলা যায়। তাকে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সাহায্য করতে তার বাবা গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ ও দিকনির্দেশনা দিয়ে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারেন। মানসিক ক্লান্তির কেন্দ্রস্থল হলো মানুষের স্নায়ুতন্ত্র। মন যখন অবসাদে আচ্ছন্ন থাকে তখন মানুষের মধ্যে মানসিক ক্লান্তি সৃষ্টি হয়। কাজে অকৃতকার্য হলে, অভিজ্ঞতার অভাব হলে, কাজে প্রশংসা অর্জন করতে না পারলে কিংবা দুশ্চিন্তা করলে নৈরাশ্যজনিত ক্লান্তি দেখা দেয়। এ ধরনের ক্লান্তির ক্ষেত্রে অকৃতকার্য ব্যক্তিকে উপদেশ দিয়ে, কাজের সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে বা সরাসরি তার কাজের সমালোচনা থেকে বিরত থাকলে উক্ত ব্যক্তির নৈরাশ্যজনিত ক্লান্তি প্রশমিত করা যায়। এক্ষেত্রে সকলের সচেতন থাকা প্রয়োজন।

ঘ. উদ্দীপকের জাহেদ কায়িক পরিশ্রমের ফলে ভিন্ন দুটি কারণে ক্লান্তি অনুভব করছে।
শারীরিক ও মানসিক যেকোনো পরিশ্রমের পর ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। ক্লান্তি কাজের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। ক্লান্তি দুই ধরনের হতে পারে। যথা- শারীরিক ক্লান্তি ও মানসিক ক্লান্তি। উদ্দীপকের জাহেদ শারীরিক ক্লান্তির অবস্থা তুলে ধরেছে। সেনাবাহিনীর কঠোর কায়িক পরিশ্রম করার ফলে এবং তার কর্মস্থল বাসা থেকে অনেক দূরে হওয়ায় সে উভয় দিক থেকেই শারীরিক ক্লান্তি অনুভব করছে। গার্হস্থ্য অর্থনীতিবিদগণ ও মনস্তাত্ত্বিক বিজ্ঞানীদের গবেষণায় জানা যায়, যেকোনো কঠিন কাজে ল্যাকটিক এসিডের উপস্থিতি বৃদ্ধি পেলে শারীরিক ক্লান্তিও তাড়াতাড়ি আসে। কায়িক পরিশ্রমে দেহকে বেশি পরিমাণে অক্সিজেন গ্রহণ করতে হয়। এ অক্সিজেন গ্রহণ প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ থাকলে ল্যাকটিক এসিডের উৎপত্তি হয় এবং শারীরিক ক্লান্তি বা অবসাদ দেখা দেয়। তবে এ ধরনের ক্লান্তি নিরসনের উপায়ও রয়েছে। শক্তির ব্যবহার সম্পর্কে ব্যক্তিকে সচেতন থাকতে হবে। কাজ এমনভাবে সাজাতে হবে যেন একটি ভারী কাজের পর হালকা কাজ থাকে। ব্যক্তিকে শ্রম লাঘবের বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। কাজের মাঝে বিশ্রামের ব্যবস্থা থাকতে হবে। কাজ করার সময় শরীরের অবস্থান ঠিক থাকলে এবং মাংসপেশি কার্যকরভাবে চালিত করলে ক্লান্তি কম হয়। এসব বিষয়ের প্রতি সচেতন থাকলে ব্যক্তির শারীরিক ক্লান্তি নিরসন হতে পারে।

৪. সহপাঠী রুবেল ও পলাশ প্রায় পাঁচ বছর আগে এমএ পাস করেছে। মায়ের একমাত্র সন্তান রুবেল অনেক চেষ্টা করলেও এখনো তার চাকরি অনিশ্চিত। পলাশ চার বছর ধরে পুলিশ বিভাগে চাকরি করছে। কাজ ও প্রশিক্ষণ একই সাথে চলার কারণে তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। পলাশের কর্মস্থল দূরে হওয়ায় বাসায় ফিরতে তার রাত হয়। বাড়ি ফিরে তারা দুজনেই ক্লান্তি অনুভব করে।
ক. কাজ সহজকরণ কাকে বলে?
খ. সময় তালিকা বাস্তবায়নে সচেতনতা আবশ্যক- বুঝিয়ে লেখ।
গ. রুবেল কোন ধরনের ক্লান্তিতে ভুগছে? এ ক্লান্তি দূরীকরণে মা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ভিন্ন দুটি কারণে পলাশ ক্লান্ত হচ্ছে-উক্তিটির সমর্থনে যুক্তি দেখাও ও তা নিরসনের উপায় বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো কাজ অল্প বা নির্দিষ্ট সময়ে সহজ উপায়ে কম শক্তি ব্যয়ে সম্পাদন করাকেই বলে কাজ সহজকরণ।

খ. সময় তালিকা পরিকল্পনা করার পর তা বাস্তবায়ন করতে সচেতন থাকা আবশ্যক। সময় সম্পর্কে যে ব্যক্তি সচেতন তার পক্ষে সময় তালিকা বাস্তবায়ন করা সহজ। এ তালিকা বাস্তবায়নে আমাদের বেশ কিছু করণীয় আছে। সময় তালিকা অনুযায়ী সব কাজ করা হয়েছে কিনা তা যাচাই করতে হবে। সময় তালিকা বাস্তবায়নের সময় ঘড়ি দেখার অভ্যাস করতে হবে এবং এ তালিকা এমন জায়গায় রাখতে হবে যাতে সহজেই নজরে আসে। এসব বিষয় অনুসরণ করার জন্য নিজের মধ্যে সচেতনতা থাকা অপরিহার্য। এ কারণেই বলা হয়েছে, সময় তালিকা বাস্তবায়নে সচেতনতা আবশ্যক।

গ. উদ্দীপকের রুবেল নৈরাশ্যজনিত মানসিক ক্লান্তিতে ভুগছে। শারীরিক ও মানসিক যেকোনো পরিশ্রমের পরই ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। ক্লান্তি যেকোনো কাজের জন্যই ক্ষতিকর। ক্লান্তির কারণে ব্যক্তির কাজ করার স্পৃহা কমে যায়। ক্লান্তিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১. শারীরিক ক্লান্তি ও ২. মানসিক ক্লান্তি। উদ্দীপকের রুবেল মাস্টার্স পাস করার পর চাকরির চেষ্টা করছে; কিন্তু সফলকাম হতে পারছে না। এ পরিস্থিতিতে তার মাঝে নৈরাশ্যজনিত মানসিক ক্লান্তি বিরাজ করছে বলা যায়। তাকে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সাহায্য করতে তার বাবা গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ ও দিকনির্দেশনা দিয়ে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারেন। মানসিক ক্লান্তির কেন্দ্রস্থল হলো মানুষের স্নায়ুতন্ত্র। মন যখন অবসাদে আচ্ছন্ন থাকে তখন মানুষের মধ্যে মানসিক ক্লান্তি সৃষ্টি হয়। কাজে অকৃতকার্য হলে, অভিজ্ঞতার অভাব হলে, কাজে প্রশংসা অর্জন করতে না পারলে কিংবা দুশ্চিন্তা করলে নৈরাশ্যজনিত ক্লান্তি দেখা দেয়। এ ধরনের ক্লান্তির ক্ষেত্রে অকৃতকার্য ব্যক্তিকে উপদেশ দিয়ে, কাজের সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে বা সরাসরি তার কাজের সমালোচনা থেকে বিরত থাকলে উক্ত ব্যক্তির নৈরাশ্যজনিত ক্লান্তি প্রশমিত করা যায়। এক্ষেত্রে সকলের সচেতন থাকা প্রয়োজন।

ঘ. উদ্দীপকের পলাশ কায়িক পরিশ্রমের ফলে ভিন্ন দুটি কারণে ক্লান্তি অনুভব করছে।
শারীরিক ও মানসিক যেকোনো পরিশ্রমের পর ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। ক্লান্তি কাজের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। ক্লান্তি দুই ধরনের হতে পারে। যথা- শারীরিক ক্লান্তি ও মানসিক ক্লান্তি। উদ্দীপকের ঈলাশ শারীরিক ক্লান্তির অবস্থা তুলে ধরেছে। সেনাবাহিনীর কঠোর কায়িক পরিশ্রম করার ফলে এবং তার কর্মস্থল বাসা থেকে অনেক দূরে হওয়ায় সে উভয় দিক থেকেই শারীরিক ক্লান্তি অনুভব করছে। গার্হস্থ্য অর্থনীতিবিদগণ ও মনস্তাত্ত্বিক বিজ্ঞানীদের গবেষণায় জানা যায়, যেকোনো কঠিন কাজে ল্যাকটিক এসিডের উপস্থিতি বৃদ্ধি পেলে শারীরিক ক্লান্তিও তাড়াতাড়ি আসে। কায়িক পরিশ্রমে দেহকে বেশি পরিমাণে অক্সিজেন গ্রহণ করতে হয়। এ অক্সিজেন গ্রহণ প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ থাকলে ল্যাকটিক এসিডের উৎপত্তি হয় এবং শারীরিক ক্লান্তি বা অবসাদ দেখা দেয়। তবে এ ধরনের ক্লান্তি নিরসনের উপায়ও রয়েছে। শক্তির ব্যবহার সম্পর্কে ব্যক্তিকে সচেতন থাকতে হবে। কাজ এমনভাবে সাজাতে হবে যেন একটি ভারী কাজের পর হালকা কাজ থাকে। ব্যক্তিকে শ্রম লাঘবের বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। কাজের মাঝে বিশ্রামের ব্যবস্থা থাকতে হবে। কাজ করার সময় শরীরের অবস্থান ঠিক থাকলে এবং মাংসপেশি কার্যকরভাবে চালিত করলে ক্লান্তি কম হয়। এসব বিষয়ের প্রতি সচেতন থাকলে ব্যক্তির শারীরিক ক্লান্তি নিরসন হতে পারে।

৫. মালিহা হাবিব একজন সুগৃহিণী। তিনি তার দৈনন্দিন গৃহস্থালি কার্যাবলি একটি নির্দিষ্ট সময় ও গুরুত্ব অনুযায়ী সম্পাদন করে থাকেন। ফলে তিনি সহজে এবং কোনো রকম ক্লান্তি ছাড়াই সব কাজ যথাসময়ে শেষ করতে পারেন। প্রতিদিন এ রুটিনমাফিকই তিনি প্রয়োজনীয় গৃহস্থালির কার্যাবলি সম্পন্ন করে থাকেন।
ক. সময় ও শক্তি ব্যবস্থাপনার প্রথম পদক্ষেপ কোনটি?
খ. সময় ও শক্তি কাজের ক্ষেত্রে পরস্পরের পরিপূরক কেন?
গ. মালিহার ক্ষেত্রে সময় ও শক্তি ব্যবস্থাপনার গুরুত্বের দিকটি কীভাবে উপস্থিত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মালিহা তার দৈনন্দিন কার্যাবলি যে প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করেন এর দ্বারা তিনি নানাভাবে উপকৃত হবেন- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সময় ও শক্তি ব্যবস্থাপনার প্রথম পদক্ষেপ হলো সময় ও শক্তি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা।

খ. সময় ও শক্তির সুসমন্বয় ব্যতীত কার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হয় না বলে কাজের ক্ষেত্রে এরা পরস্পরের পরিপূরক। সময় ও শক্তি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানবীয় সম্পদ। ব্যক্তিবিশেষে শক্তির তারতম্য দেখা যায়। তবে সময় সবার ক্ষেত্রে সমান হয়। যেকোনো কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে চাইলে সময় ও শক্তির পরিকল্পনা প্রণয়ন করা আবশ্যক। উক্ত পরিকল্পনার ফলেই পরিকল্পনাকারী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শক্তির সদ্ব্যবহার করে সুচারুভাবে কাজটি সম্পাদন করতে পারে। কাজের ক্ষেত্রে সময় ও শক্তি দুটি অত্যাবশ্যকীয় সম্পদ বলে এরা পরস্পরের পরিপূরক হিসেবে বিবেচিত হয়।

গ. মালিহা হাবিব যথাসময়ে এবং কোনো রকম ক্লান্তি ছাড়া কাজ করতে পারায় এখানে সময় ও শক্তি ব্যবস্থাপনার গুরুত্বের দিকটি উপস্থিত।
সময় ও শক্তি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানবীয় সম্পদ এবং কাজের ক্ষেত্রে এরা পরস্পরের পরিপূরক। তাই সময় ও শক্তির পরিকল্পনা করে না নিলে এগুলোর অপচয় হয় এবং কোনো কাজই সুষ্ঠুভাবে করা যায় না। এ কারণেই সময় ও শক্তি ব্যবস্থাপনার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে সময় ও শক্তি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। উদ্দীপকের মালিহা হাবিব সময় ও শক্তির পরিকল্পনা করে কাজ করায় সহজেই কাজ সারতে পারেন। তিনি একজন সুগৃহিণী। তার দৈনন্দিন গৃহস্থালি কার্যাবলি তিনি একটি নির্দিষ্ট সময়ে ও গুরুত্ব অনুযায়ী সম্পাদন করে থাকেন। ফলে তিনি সহজে এবং কোনো রকম ক্লান্তি ছাড়া সব কাজ যথাসময়ে শেষ করতে পারেন। প্রতিদিন তিনি এ রুটিনমাফিকই গৃহস্থালির কার্যাবলি সম্পন্ন করে থাকেন। সময় পরিকল্পনা করে নেওয়ায় তিনি নির্দিষ্ট সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। আবার শক্তি পরিকল্পনা করে নেওয়ায় তার কাজ করতে ক্লান্তিও আসে না। কেননা তিনি শক্তির অপচয় রোধ করতে পারেন। এভাবে সময় ও শক্তির পরিকল্পনা করাই সময় ও শক্তি ব্যবস্থাপনার প্রথম পদক্ষেপ। আর মালিহা হাবিবের কর্মকান্ড- এ বিষয়টিই লক্ষণীয়, যা সময় ও শক্তি ব্যবস্থাপনার গুরুত্বের দিকটিকেই প্রকাশ করে।

ঘ. মালিহা তার দৈনন্দিন কার্যাবলি সময় ও শক্তির পরিকল্পনা করার মাধ্যমে পরিচালনা করায় এর দ্বারা তিনি আরও নানাভাবে উপকৃত হবেন।
সময় ও শক্তি কাজের ক্ষেত্রে একে অপরের পরিপূরক। তাই সময় ও শক্তি ব্যবস্থাপনার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে সময় ও শক্তি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। সময় ও শক্তি ব্যবস্থাপনার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। উদ্দীপকের মালিহা হাবিব পরিকল্পনামাফিকভাবে সময় ও শক্তির ব্যবহার করায় তিনিও এ গুরুত্বের দিকটি উপলব্ধি করতে পারবেন এবং উপকৃত হবেন। তিনি নির্দিষ্ট সময়ে এবং গুরুত্ব অনুযায়ী তার গৃহস্থালির কার্যাবলি সম্পাদন করেন। ফলে তাকে কার্য সম্পাদনে কোনো সমস্যায় পড়াতে হয় না। প্রতিদিন রুটিনমাফিক কাজ করায় তিনি ক্লান্তিহীনভাবে তার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে পারেন। এর পাশাপাশি তিনি আরও নানাভাবে উপকৃত হতে পারেন। যেমন- তার পক্ষে কাজ, সময় ও শক্তির সমন্বয় সাধন করা সম্ভব হবে, তার সময় ও শক্তির অপচয় হ্রাস পাবে, কাজ সমেত্মাষজনকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে, কাজের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং তার কাজ ও বিশ্রামের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা যাবে। সুতরাং দেখা যায়, মালিহা হাবিব তার সময় ও শক্তির পরিকল্পনা করে কাজ করায় নানা দিক থেকেই উপকৃত হবেন।
তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় এবং উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, মালিহা হাবিব সম্পর্কে প্রশ্নের মন্তব্যটি অত্যন্ত যথার্থ।

৬. নন্দিতা রুটিন অনুযায়ী লেখাপড়াা করে। তার মা তাকে পড়াান। হঠাৎ তার বাবা নন্দিতার জন্য একজন গৃহশিক্ষকের ব্যবস্থা করলেন। নন্দিতা তৈরিকৃত রুটিনে শিক্ষকের জন্য সময় বের করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে গেল। এতে তার প্রস্তুতকৃত পুরো রুটিন নষ্ট হয়ে গেল।
ক. সময় তালিকা কী?
খ. সময় সঞ্চয়ে মূল্যায়ন গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গ. নন্দিতার রুটিনে নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হয়নি কোন বৈশিষ্ট্যের অভাবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সময় তালিকা বাস্তবায়নে নন্দিতার করণীয় উপস্থাপন কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কাজ ও সময়কে ভিত্তি করে যে পরিকল্পনা করা হয় তাই হলো সময় তালিকা।

খ. সময় তালিকা অনুযায়ী কাজ করার পর তা মূল্যায়ন করে দেখা হয় বলে সময় সঞয়ে মূল্যায়ন গুরুত্বপূর্ণ। সময় তালিকা অনুযায়ী কাজগুলো ঠিকমতো হয়েছে কিনা তা বিচার করে দেখাই হচ্ছে মূল্যায়ন। যদি সময় তালিকা অনুযায়ী সব কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় তবে ফলাফল ইতিবাচক হয়। আর যদি না হয় তবে তার কারণ অনুসন্ধান করে ভবিষ্যতের জন্য সচেতন হতে হবে। সময় সঞ্চয় করার জন্য সময় তালিকা মূল্যায়ন করা আবশ্যক। এতে করে সময়ের সদ্ব্যবহার সম্পর্কে জানা যায় এবং সময় সঞ্জয়ের ব্যাপারে সচেতন হওয়া যায়। তাই সময় সঞ্জয়ের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন গুরুত্বপূর্ণ।

গ. নন্দিতার রুটিনে নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হয়নি নমনীয় বৈশিষ্ট্যের অভাবে।
সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবীয় সম্পদ হলেও এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো সীমাবদ্ধতা। এ কারণেই কাজের বেলায় সময়ের সদ্ব্যবহার খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সময় সঠিকভাবে ব্যবহার করার ওপরই কাজের সফলতা নির্ভর করে। তাই সময় সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে সময় তালিকা প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ। সময় তালিকা বাস্তবায়নের সময় যদি হঠাৎ করে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তখন সময় তালিকার নমনীয় বৈশিষ্ট্যের জন্য নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হয়। এ কারণেই সময় তালিকা নমনীয় হতে হয়। উদ্দীপকের নন্দিতাও সময় তালিকা তৈরি করে রুটিন অনুযায়ী লেখাপড়াা করে। তার মা তাকে পড়াায়। হঠাৎ তার বাবা নন্দিতার জন্য একজন গৃহশিক্ষকের ব্যবস্থা করলেন। নন্দিতা তৈরিকৃত রুটিনে শিক্ষকের জন্য সময় বের করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে গেল। এর কারণ তার সময় তালিকা নমনীয় ছিল না। এজন্যই সে তার সময় তালিকায় নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়াল এবং তার প্রস্তুতকৃত পুরো রুটিন নষ্ট হয়ে গেল। সময় তালিকা নমনীয় না হলে তা বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়। উদ্দীপকের নন্দিতার ক্ষেত্রেও এ বিষয়টি লক্ষণীয়। তাই বলা যায়, নন্দিতার রুটিনে নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হয়নি নমনীয় বৈশিষ্ট্যের অভাবেই।

ঘ. সময় তালিকা বাস্তবায়নে নন্দিতাকে বেশকিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
সময় পরিকল্পনা প্রণয়ন করার পর সেটি অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে। সময় সম্পর্কে যে সচেতন, তার জন্য সময় তালিকা বাস্তবায়ন করা সহজ। কিন্তু সময় তালিকা বাস্তবায়ন করতে চাইলে কিছু বিষয় খেয়াল রেখে অগ্রসর হওয়া আবশ্যক। উদ্দীপকের নন্দিতাকেও সময় তালিকা বাস্তবায়নে এসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে তার করণীয় হলো সময় তালিকা অনুযায়ী সব কাজ করা হয়েছে কিনা তা যাচাই করে দেখা, সময় তালিকা বাস্তবায়নের সময় ঘড়ি দেখার অভ্যাস করা এবং সময় তালিকা এমন জায়গায় রাখা যেন সহজেই তা নজরে আসে। এছাড়াও সময় তালিকা বাস্তবায়ন করতে তাকে সময় সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং তা নমনীয় হতে হবে। উদ্দীপকের নন্দিতার সময় তালিকা নমনীয় না হওয়ার কারণেই নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাকে পুরো রুটিন নষ্ট করে ফেলতে হয়েছে। সময় তালিকা বাস্তবায়নে প্রত্যেকেরই এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা উচিত। এ করণীয়গুলো যথাযথভাবে পালন করা গেলে সময় তালিকা বাস্তবায়ন করা সহজ হয়। উদ্দীপকের নন্দিতাকেও তার সময় তালিকা বাস্তবায়নের জন্য উপযুক্ত করণীয়গুলোর প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। তবেই সে তার রুটিন অনুযায়ী প্রত্যেকটি কাজ যথাযথভাবে করতে পারবে এবং কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হলেও সমস্যায় পড়াতে হবে না।

৭. আবুল একজন দিনমজুর। প্রতিদিন তাকে তার পরিবারের জন্য নানা ধরনের কাজ করতে হয়। একদিন তিনি বাসায় মালামাল উঠানোর একটি কাজ করার জন্য ডাক পেলেন। তার জন্য এটি একটি নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। একের পর এক ভারী মালামাল ওঠানামা করতে গিয়ে তিনি অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ালেন এবং কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করলেন।
ক. শক্তি কী ধরনের সম্পদ?
খ. শক্তি সঞয়ে সুষ্ঠু দেহভক্তি গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গ. আবুলের জন্য কাজটি সহজ না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. কাজের ধারাবাহিকতা থাকলে আবুলের শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার হতো মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শক্তি হচ্ছে মানবীয় সম্পদ।

খ. সুষ্ঠু দেহভঙ্গি ব্যবহার করলে শক্তি সঞ্চয় করে যথাযথভাবে কাজ সম্পন্ন করা যায় বলে শক্তি সঞ্চয়ের সুষ্ঠু দেহভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো কাজ করার জন্য শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহারের প্রতি সকলের যত্নবান হতে হয়। কাজের সময় যদি সুষ্ঠু দেহভঙ্গি ব্যবহার করা যায় তবে শক্তি কম ব্যয় হয়। আরামদায়ক ভঙ্গিতে কাজ করলে পেশির ওপর চাপ কম পড়ে। এর ফলে শক্তি সঞ্চয় করে অধিক সময় ধরে কাজ করা যায়। এসব কারণেই শক্তি সঞ্জয়ের উদ্দেশ্যে সুষ্ঠু দেহভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ।

গ. আবুলের জন্য কাজটি সহজ না হওয়ার কারণ হলো তার অভিজ্ঞতার অভাব।
যেকোনো কাজ করার জন্য শক্তি প্রয়োজন বলে শক্তিকে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহারের ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হয়। কেননা শক্তি সঞ্চয় করা না গেলে কাজ সুষ্ঠুভাবে করা যায় না। আর এক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হয় তার মধ্যে অভিজ্ঞতা অন্যতম। অভিজ্ঞতা থাকলে যেকোনো কাজ করা সহজ হয়। উদ্দীপকের আবুলের কাজের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় নতুন কাজ করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তিনি একজন দিনমজুর এবং তাকে তার পরিবারের জন্য প্রতিদিন নানা ধরনের কাজ করতে হয়। একদিন তিনি বাসায় মালামাল উঠানোর একটি কাজ করার জন্য ডাক পেলেন। তার জন্য এটি একটি অভিজ্ঞতা ছিল। একের পর এক ভারী মালামাল ওঠানামা করতে নতুন গিয়ে তিনি অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ালেন এবং কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করলেন। যেকোনো কাজের যদি পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে তবে কাজ করা সহজ হয়। এতে সময় ও শক্তি কম ব্যয় হয়। তার কাজে অভিজ্ঞতার অভাব থাকলে সময় ও শক্তি বেশি ব্যয় হয়। এতে করে অল্পতেই ক্লান্তি এসে যায় এবং কাজ সুষ্ঠুভাবে করা যায় না। উদ্দীপকের আবুলের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
তাই বলা যায়, আবুলের জন্য মালামাল উঠানোর কাজটি সহজ না হওয়ার কারণ হলো তার অভিজ্ঞতার অভাব।

ঘ. কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে উদ্দীপকের আবুলের শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার করা সম্ভব হতো।
শক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানবীয় সম্পদ এবং যেকোনো কাজ করতেই শক্তির প্রয়োজন হয়। শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহারের প্রতি যত্নবান হলে কাজে সহজে ক্লান্তি বা অবসাদ আসে না। এতে করে অল্প শক্তি ব্যয়ে অধিক সময় ধরে কাজ করা যায়। আর শক্তি সঞ্চয়ের একটি অন্যতম উপায় হলো কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। ভারী কাজ এবং হালকা কাজের মধ্যে সমন্বয় রাখলে কাজ করা সহজ হয়ে যায়। উদ্দীপকের আবুলের ক্ষেত্রেও এ বিষয়টি রক্ষা করা গেলে সুবিধা পাওয়া যেত। উদ্দীপকের আবুল একজন দিনমজুর এবং পরিবারের জন্য তাকে প্রতিদিন নানা ধরনের কাজ করতে হয়। একদিন তিনি বাসায় মালামাল উঠানোর কাজের জন্য ডাক পেলেন, যা তার জন্য সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। একের পর এক ভারী মালামাল ওঠানামা করতে গিয়ে আবুলকে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়াতে দেখা যায়। এখানে কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে দেখা যায় না। কাজকে যদি এমন ধারাবাহিকভাবে সাজানো যেত যেন একটি ভারী কাজের পর একটি হালকা কাজ রাখা হয়েছে তবে শক্তির ব্যবহার সুষ্ঠু হয়। হালকা কাজে শক্তি কম ব্যয় হয় এবং ভারী কাজে শক্তি অধিক ব্যয় হয়। তাই হালকা ও ভারী কাজের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে চললে শক্তির ব্যবহার সুষ্ঠু হয়। উদ্দীপকের আবুলের ক্ষেত্রেও তাই কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার হতো বলে প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।

৮. শিপ্রার বিয়ে উপলক্ষ্যে বাসায় সবাই মিলে কাজ করছে। একেক জন একেক কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে তারা কাজের ফাঁকে ফাঁকে গল্পগুজব করছে, নাশতা খাচ্ছে, গান শুনছে এবং আরও নানাভাবে বিনোদনের খোরাক খুঁজে নিচ্ছে। তাই তাদের কাজ করতে মোটেও একঘেয়েমি লাগছে না এবং তারা বেশ আনন্দের সাথে ঝটপট কাজ করছে।
ক. আরামদায়ক ভঙ্গিতে কাজ করলে কিসের ওপর চাপ কম পড়ে?
খ. শক্তি সঞ্চয়ে কাজ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে কেন?
গ. উদ্দীপকের ঘটনায় শক্তি সঞ্চয়ের কোন বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে আলোচিত কাজটি তৃপ্তিদায়ক ছিল বলেই সহজে সম্পাদিত হয়েছে- বিশ্লেষণ কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আরামদায়ক ভঙ্গিতে কাজ করলে পেশির ওপর চাপ কম পড়ে।

খ. কোন কাজে কীরূপ শক্তি ব্যয় হবে এ বিষয়ে ধারণা রাখতে শক্তি সঞ্জয়ে কাজ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কাজ করতে গেলে শক্তির প্রয়োজন হয়। আর শক্তি সঞ্চয় করতে চাইলে কাজ সম্পর্কে ধারণা রাখা আবশ্যক। কাজটি কী ধরনের, কীভাবে কাজ করতে হবে, কাজের জন্য কত সময় ব্যয় হতে পারে ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিয়ে তবেই শক্তি সঞ্চয় করা সম্ভব হয় এবং কিছু কাজের জন্য শক্তি বেশি ব্যয় করতে হয় এবং কিছু কাজের শক্তি কম ব্যয় হয়। তাই শক্তি সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে কাজ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।

গ. উদ্দীপকে শক্তি সঞ্চয়ের একঘেয়েমি রোধের বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে।
যেকোনো কাজ করার জন্য শক্তির প্রয়োজন। কাজ করার সময় শক্তিকে এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে যেন অল্প শক্তি ব্যয়ে অধিক সময় ধরে কাজ করা যায়। এ কারণে শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহারের দিকে সকলের যত্নবান হওয়া আবশ্যক। আর শক্তি সঞ্জয়ের জন্য বেশকিছু পদ্ধতিও রয়েছে। বিভিন্ন বিষয় বিবেচনাপূর্বক শক্তিতে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করা যায়। এসব বিষয়ের মধ্যে কাজের একঘেয়েমি রোধ করা অন্যতম। কাজে যদি নতুন নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়, যেমন- গান শোনা, হালকা নাশতার ব্যবস্থা রাখলে কাজে একঘেয়েমি আসে না এবং শক্তি সঞ্চয় করা যায়। উদ্দীপকে দেখা যায়, শিপ্রার বিয়ে উপলক্ষ্যে বাসার সবাই নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে কাজের ফাঁকে ফাঁকে তারা গল্পগুজব করছে, নাশতা খাচ্ছে, গান শুনছে এবং নানাভাবে বিনোদনের খোরাক খুঁজে নিচ্ছে। তাই তাদের কাজে একঘেয়েমি আসছে না। শক্তি সঞ্চয় কাজের একঘেয়েমি রোধের ব্যাপারে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর কাজে যেন একঘেয়েমি না আসে সেজন্য যা যা করণীয় তা উদ্দীপকেও উপস্থিত দেখা যায়। উদ্দীপকের ঘটনায় তাই শক্তি সঞ্চয়ের একঘেয়েমি রোধের বিষয়টিই প্রতিফলিত হয়েছে বলা যায়।

ঘ. কাজে একঘেয়েমি না আসলে তা তৃপ্তিদায়ক হয় এবং সহজে সম্পাদিত হয়, যা উদ্দীপকের প্রেক্ষিতেও লক্ষণীয়।
কাজ করার সময় শক্তিকে এমনভাবে ব্যবহার করা উচিত যেন অল্প শক্তি ব্যয়ে অধিক সময় ধরে কাজ করা যায়। এতে কাজে ক্লান্তি বা অবসাদ আসে না এবং কাজটি আরামদায়ক হয়। আর কাজটি যদি সকলের সন্তুষ্টি বিধান করতে পারে তবে তা সহজেই সম্পাদন করা যায়। উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, শিপ্রার বিয়ে উপলক্ষ্যে বাসায় সবাই মিলে কাজ করছে। একেক জন একেক কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে তারা কাজের ফাঁকে ফাঁকে গল্পগুজব করছে, নাশতা খাচ্ছে, গান শুনছে এবং আরও নানাভাবে বিনোদনের খোরাক খুঁজে নিচ্ছে। তাই তাদের কাজে একঘেয়েমি আসছে না এবং কাজটি তাদের জন্য আরামদায়কও হচ্ছে। যে কাজ তৃপ্তিদায়ক তা সহজেই করা যায়। সে কাজে শক্তি ও সময়ও কম ব্যয় হয়। উদ্দীপকের কর্মপরিবেশ দেখে বোঝা যায়, সেখানে কাজকে তৃপ্তিদায়ক করার উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ কারণেই বিয়ে বাড়ির ব্যাপক কাজও সবাই মিলে ঝটপট সম্পাদন করে ফেলেছে। কাজটি যদি তাদের কাছে তৃপ্তিদায়ক না হতো তবে তাতে শক্তি ও সময়ও বেশি হতো। কিন্তু উদ্দীপকে তেমনটা দেখা যায় না।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকে শিপ্রার বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যাবলি তৃপ্তিদায়ক ছিল বলে কাজগুলো দ্রুত ও সহজে সম্পাদিত হয়েছে।

৯. উদ্দীপক-১ : আফিয়া মফস্সল এলাকায় থাকে। স্বামীর চাকরিসূত্রে তাকে এখানে থাকতে হচ্ছে। ঘরের বাজার কিংবা যেকোনো প্রয়োজনীয় কাজ করতে তাকে বাসা থেকে সদরে যেতে হয়। বাসা থেকে সদর অনেক দূরে হওয়ায় আসা-যাওয়ায় তার অনেক সমস্যা হয়।
উদ্দীপক-২ : আমেনা সারা বছরই ঘরের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তবে তার কাজ সবচেয়ে বেশি বাড়ে ধান কাটার মৌসুমে। তার স্বামী ক্ষেতে কাজ করে আর সে বাড়িতে ধান মাড়াই করা, শুকানো এসব কাজ নিয়ে আমেনাকে উক্ত মৌসুমে যারপরনাই খাটুনি করতে হয়।
ক. কিসের যথোপযুক্ত ব্যবহার না করলে ক্লান্তির উদ্রেক হয়?
খ. পরিবারের আকার ও গঠন সময় ও শক্তির ব্যবহারে কীভাবে প্রভাব বিস্তার করে?
গ. উদ্দীপকে-১-এর আফিয়ার ক্ষেত্রে সময় ও শক্তি ব্যবহারের কোন প্রভাবকটি নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে-২-এর আমেনার সময় ও শক্তি ক্ষয়ে ধাতু পরিবর্তন প্রভাবকটিই মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সময় ও শক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহার না করলে ক্লান্তির উদ্রেক হয়।

খ. পরিবারের আকার ও গঠন অনুযায়ী কাজের পরিধি পরিবর্তিত হয় এবং সময় ও শক্তির ব্যবহারে পরিবর্তন আসে বলে এটি সময় ও শক্তির ব্যবহারে প্রভাব বিস্তার করে। বড় পরিবারে কাজের সমবণ্টন না হলে সময় ও শক্তির অপচয় হয়। পরিবারে যদি কর্মক্ষম ও প্রাপ্তবয়স্ক লোকের সংখ্যা বেশি হয় তবে সময় ও শক্তির সমবণ্টন সম্ভব হয়। এভাবেই পরিবারের আকার ও গঠন অনুযায়ী সময় ও শক্তির ব্যবহার নির্ধারিত হয়ে থাকে এবং এটি সময় ও শক্তির প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

গ. উদ্দীপকে-১-এর আফিয়ার ক্ষেত্রে সময় ও শক্তি ব্যবহারের বাসস্থানের অবস্থান প্রভাবকটি নেতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।
কাজের ক্ষেত্রে সময় ও শক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি মানবীয় সম্পদ হিসেবে ভূমিকা রাখে। সময় ও শক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহারের অভাবে ক্লান্তি আসে এবং কাজে বিঘ্ন ঘটে। তাই কাজের ক্ষেত্রে যেন সময় ও শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার করা যায় সেজন্য বেশকিছু বিষয়কে বিবেচনায় রাখা হয়। এসব বিষয়ের মধ্যে বাসস্থানের অবস্থান একটি। উদ্দীপকের আফিয়ার ক্ষেত্রে এ প্রভাবকটির নেতিবাচক ভূমিকা লক্ষ করা যায়। উদ্দীপকে-১-এর আফিয়া মফস্সল এলাকায় থাকে। স্বামীর চাকরিসূত্রে তাকে এখানে থাকতে হচ্ছে। ঘরের বাজার কিংবা যেকোনো প্রয়োজনীয় কাজ করতে তাকে বাসা থেকে সদরে যেতে হয়। বাসা থেকে সদর অনেক দূরে হওয়ায় তার আসা-যাওয়ায় অনেক সমস্যা হয়। আর এতে করে তার সময় ও শক্তিও অধিক ব্যয় হয়। বাসস্থানের অবস্থান সময় ও শক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। বাড়ির কাছাকাছি হাটবাজার, স্কুল- কলেজ, হাসপাতাল, ব্যাংক এবং অন্যান্য নাগরিক সুবিধা থাকলে সময় ও শক্তির ব্যয় কম হয়। নাগরিক সুবিধাদি যেখানে কম, সেখানে সুবিধাদি পেতে অধিক সময় ও শক্তি ব্যয় করতে হয়। উদ্দীপকের-১- এর আফিয়ার ক্ষেত্রে বাসস্থানের অবস্থান প্রতিকূল হওয়ার কারণেই সময় ও শক্তি বেশি ব্যয় হচ্ছে। এ কারণে তার ক্ষেত্রে উক্ত প্রভাবকটিরই নেতিবাচক ভূমিকা লক্ষণীয়।

ঘ. উদ্দীপকে-২-এর ঋতু পরিবর্তনের কারণে আমেনার সময় ও শক্তি বেশি ব্যয় হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে বলে। এক্ষেত্রে ঋতু পরিবর্তন প্রভাবকটিই মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।
ঋতু পরিবর্তন বিষয়টিও সময় ও শক্তির প্রভাবক হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি শহরাঞ্চলে তেমন প্রভাব বিস্তার না করলেও গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। কাজের ক্ষেত্রে সময় ও শক্তির ব্যবহারে ভূমিকা রাখে বলে একেও একটি প্রভাবক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উদ্দীপকে-২-এর ঋতু পরিবর্তন প্রভাবকের সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষণীয়। এখানে দেখা যায়, আমেনা সারা বছরই সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকলেও তার কাজ সবচেয়ে বেশি বাড়ে ধান কাটার মৌসুমে। এ সময় তার স্বামী ক্ষেতে কাজ করে এবং সে বাড়িতে কাজ করে। ধান মাড়াই, শুকানো ইত্যাদি কাজ নিয়ে তাকে এ মৌসুমে প্রচন্ড খাটতে হয়। এখানে একটি বিশেষ মৌসুমে আমেনার কাজ বেড়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। শক্তির ব্যবহার মৌসুম অনুযায়ী পরিবর্তন হতে দেখা যায়। গ্রামে ফসল কাটার মৌসুমে অনেক সময় ও শক্তি ব্যয় হয়। অন্যথায় সঠিক সময়মতো ফসল সংগ্রহ সম্ভব হয় না। উদ্দীপকের-২-এর আমেনাকেও ধান কাটার মৌসুমে অধিক খাটুনি করতে হয়। এতে তার সময় ও শক্তিও বেশি ক্ষয় হয়। ঋতু পরিবর্তন তথা বিশেষ মৌসুমের আগমনই আমেনার কর্মপরিধি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। সারা বছর সে সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকলেও বিশেষত এ সময়ে তার ব্যস্ততা অধিক হয়। অর্থাৎ আমেনার সময় ও শক্তি ক্ষয়ে ঋতু পরিবর্তন প্রভাবকটিই মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
তাই সার্বিক দিক বিবেচনা শেষে প্রশ্নের মন্তব্যটিকে যথার্থ বলা যায়।

১০. রাবেয়া সুলতানাকে বাসার যাবতীয় কাজ একাই করতে হয়। তার যৌথ পরিবারে শ্বশুর-শাশুড়িসহ মোট সদস্যসংখ্যা ১০ জন প্রত্যেকের জন্য রান্না করতে তাকে বড় বড় বাসন ব্যবহার করতে হয়। এগুলো উঠানো-নামানো এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে গিয়ে তিনি দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ঘরের অন্যান্য কাজে তার এতটা দ্রুত ক্লান্তি না আসলেও এসব কাজে তিনি বেশিক্ষণ শক্তি ধারণ করতে পারেন না।
ক. কাজের পক্ষে ক্ষতিকর কী?
খ. ক্লান্তি অনুভূত হয় কেন?
গ. রাবেয়া সুলতানার ক্ষেত্রে শারীরিক ক্লান্তি সৃষ্টির কোন কারণটি সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. গৃহস্থালি কাজ করতে গিয়ে রাবেয়া সুলতানা আরও নানা কারণে শারীরিক ক্লান্তির শিকার হতে পারেন- বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কাজের পক্ষে ক্ষতিকর হলো ক্লান্তি।

খ. কাজের ক্ষেত্রে নানা ত্রুটির কারণে ক্লান্তি অনুভূত হয়। শারীরিক ও মানসিক যেকোনো পরিশ্রমের পরই ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। ত্রুটিপূর্ণ সময় পরিকল্পনা, সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব এবং শক্তির অপচয় ইত্যাদি নানা কারণে ক্লান্তি অনুভূত হয়। ক্লান্তি কাজের পক্ষে ক্ষতিকর। কাজের ক্ষেত্রে ক্লান্তি দেখা দিলে কাজ করার স্পৃহা কমে যায়। আবার গার্হস্থ্য অর্থনীতিবিদগণও মনস্তাত্ত্বিক বিজ্ঞানীদের গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে জানা যায়, কাজ করার পর দেহে বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যের আবির্ভাব ঘটে। এদের মধ্যে ল্যাকটিক এসিডই প্রধান। ক্লান্তি সৃষ্টির জন্য এটিও মুখ্য ভূমিকা রাখে। এসব কারণেই ক্লান্তি অনুভূত হয়।

গ. রাবেয়া সুলতানার ক্ষেত্রে শারীরিক ক্লান্তি সৃষ্টির যে কারণটি সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে তা হলো ল্যাকটিক এসিডের উপস্থিতি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া।
শারীরিক ও মানসিক যেকোনো পরিশ্রমের ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। কোনো কাজ করার পর শারীরিক ক্লান্তি দেখা দিলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ওপর তার প্রভাব পড়ে। শারীরিক ক্লান্তি সৃষ্টিতে বেশকিছু কারণ মুখ্য ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে ল্যাকটিক এসিডের উপস্থিতি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া অন্যতম, যা কঠিন কাজের ক্ষেত্রে অত্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধি পায়। উদ্দীপকের রাবেয়া সুলতানার শারীরিক ক্লান্তিতে এ কারণটিই সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। উদ্দীপকে দেখা যায়, রাবেয়া সুলতানাকে বাসার যাবতীয় কাজ একাই করতে হয়। তার যৌথ পরিবারে শ্বশুর-শাশুড়িসহ মোট সদস্যসংখ্যা ১০ জন। প্রত্যেকের জন্য রান্না করতে তাকে বড় বড় বাসন ব্যবহার করতে হয়। এগুলো উঠানো-নামানো এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে গিয়ে তিনি দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ঘরের অন্যান্য কাজ তার এতটা দ্রুত ক্লান্তি না আসলেও এসব কাজে তিনি বেশিক্ষণ শক্তি ধারণ করতে পারেন না। কঠিন কাজে ল্যাকটিক এসিডের উপস্থিতি দ্রুত বৃদ্ধি পায় বলে শারীরিক ক্লান্তি তাড়াতাড়ি আসে। উদ্দীপকের রাবেয়া সুলতানার বড় বড় বাসন উঠানে-নামানো এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা অত্যন্ত পরিশ্রমের কাজ। কঠিন কাজে ল্যাকটিক এসিডের উপস্থিতি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় শারীরিক ক্লান্তি তাড়াতাড়ি আসে।
উদ্দীপকের রাবেয়াও এ কারণেই কঠিন কাজে বেশিক্ষণ শক্তি ধারণ করতে পারে না।

ঘ. গৃহস্থালি কাজ করতে গিয়ে রাবেয়া সুলতানা আরও নানা কারণেই শারীরিক ক্লান্তির শিকার হতে পারেন।
শারীরিক ও মানসিক যেকোনো পরিশ্রমের পরই ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। ক্লান্তিকে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা- ১. শারীরিক ক্লান্তি ও ২. মানসিক ক্লান্তি। কোনো কাজ করার পর শারীরিক ক্লান্তি দেখা দিলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপর তার প্রভাব পরের। শারীরিক ক্লান্তির বেশকিছু কারণ রয়েছে। রাবেয়া সুলতানা গৃহস্থালি কাজ করতে গিয়ে নানা কারণে শারীরিক ক্লান্তিতে আচ্ছন্ন হতে পারেন। উদ্দীপকে তাকে ১০ সদস্যবিশিষ্ট পরিবারের জন্য রান্না করতে দেখা যায়। এজন্য তাকে বড় বড় বাসন উঠানো-নামানো এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হয়। এ ধরনের কঠিন কাজ করতে গিয়ে তার শরীরে ল্যাকটিক এসিডের উপস্থিতি দ্রুত বৃদ্ধি পায় বলে শারীরিক ক্লান্তিও তাড়াতাড়ি আসে। এছাড়াও আরও নানা কারণে রাবেয়া সুলতানা শারীরিক ক্লান্তির শিকার হতে পারেন। তিনি কাজ করার সময় মাংসপেশির তৎপরতা বৃদ্ধি পাবে এবং যদি তার দেহের জলীয় পদার্থসমূহ স্বাভাবিক গঠন বজায় রাখতে না পারে তবে শারীরিক ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। জলীয় পদার্থসমূহের গঠন যত অস্বাভাবিক হবে, শারীরিক ক্লান্তির পরিমাণও তত বেশি হবে। কায়িক পরিশ্রমে দেহকে বেশি পরিমাণে অক্সিজেন গ্রহণ করতে হয়। এ অক্সিজেন গ্রহণ প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ থাকলে ল্যাকটিক এসিডের উৎপত্তি হয় এবং শারীরিক ক্লান্তি দেখা যায়। গৃহস্থালি কাজ করতে গিয়ে রাবেয়া সুলতানা এ ধরনের কারণেও শারীরিক ক্লান্তির শিকার হতে পারেন। প্রশ্নের মন্তব্যটিতে এ বিষয়েরই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
Share:

0 Comments:

Post a Comment