HSC যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৮

HSC যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Logic 2nd Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চ মাধ্যমিক

যুক্তিবিদ্যা
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৮ম অধ্যায়

HSC Logic 2nd Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১. দৃশ্যকল্প-১: হেলেনা বাসায় ফিরে তার আমেরিকা প্রবাসী বোনকে দেখে খুবই অবাক হলো।
দৃশ্যকল্প-২: একটি বাক্সে ১০০টির মধ্যে ৩০টি লাল ও ৭০টি নীল বল আছে। বাক্স হতে একটি বল উঠানো হলে বলটি নীল হওয়ার সম্ভাবনা ৩০/১০০।
ক. সম্ভাবনা কী?
খ. সম্ভাব্যতা আরোহের ওপর নির্ভরশীল কেন?
গ. দৃশ্যকল্প-১ তোমার পাঠ্য কোন বিষয়কে নির্দেশ করে?
ঘ. দৃশ্যকল্প-১ ও দৃশ্যকল্প-২ তোমার পাঠ্য যে দুটি বিষয়কে নির্দেশ করে তাদের পার্থক্য দেখাও।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সম্ভাবনা হচ্ছে কোনো ঘটনার নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা।

খ. সম্ভাব্যতা আরোহের ওপর নির্ভরশীল।
আরোহ অনুমানের সব সিদ্ধান্তই সম্ভাব্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় করা যায় না। তাই সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য থাকে। এ কারণে যুক্তিবিদ জেভন্স আরোহ অনুমানকে সম্ভাবনার উপর নির্ভরশীল বলেছেন।

গ. দৃশ্যকল্প-১ এ আকস্মিকতা বিষয়কে নির্দেশ করে।
‘আকস্মিক’ শব্দের ইংরেজি 'Chance' কথাটি প্রাচীন ফরাসি শব্দ 'Cheance' (চিয়াশেঁ) থেকে উদ্ভূত। যার অর্থ- ‘আকস্মিক বিষয়, সৌভাগ্য, ভাগ্য, পরিস্থিতি, ঘুটি বা পাশার দান' ইত্যাদি। বস্তুত যে ঘটনার কারণ অজ্ঞাত থাকে বা কারণ অজানা থাকে এবং যা আমাদের হঠাৎ বিস্মিত করে তোলে তাই হলো আকস্মিকতা। অর্থাৎ আমরা যখন কোনো ঘটনার কারণ জানতে পারি না বা কারণ উদ্ধার করতে পারি না, তখন উক্ত ঘটনাকে আকস্মিক বলে চালিয়ে দেই। যেমন-‘‘কোনো পূর্বাভাস ও সংকেত ছাড়াই ‘ক’ এলাকায় হঠাৎ করে একটি টর্নেডো বয়ে গেল’’ - এটি একটি আকস্মিক ঘটনা।
দৃশ্যকল্প-১ এ বর্ণিত ঘটনায় হেলেনা তার আমেরিকা প্রবাসী বোনকে বাসায় দেখে খুবই অবাক হয়। কারণ এরূপ ঘটনার জন্য আগে থেকে হেলেনা প্রস্তুত ছিল না। এ কারণে এটি তার কাছে একটি আকস্মিক ঘটনা।

ঘ. দৃশ্যকল্প-১ এ আকস্মিকতা এবং দৃশ্যকল্প-২ সম্ভাবনার দৃষ্টান্ত পরিলক্ষিত হয়। নিচে সম্ভাবনা ও আকস্মিকতার মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হলো-
যে ঘটনার নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না আবার ঘটনাটি অনিশ্চিত সেটাও বলা যায় না তাকে সম্ভাব্য ঘটনা বলে। অর্থাৎ সম্ভাবনা হলো ঘটনার নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা। অন্যদিকে, কার্যকারণ সম্পর্কবিহীন অপ্রত্যাশিত বা হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে আকস্মিকতা বলে। সম্ভাবনা একটি মাত্রাগত ব্যাপার। অর্থাৎ সম্ভাবনা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি হয়, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে কম হয়। তবে কোনোভাবেই সেটি নিশ্চয়তায় পৌঁছায় না। যেমন- দৃশ্যকল্প-২ এ বল নীল হওয়ার সম্ভাবনা ৩০/১০০। এ বিষয়টি কম সম্ভাবনার মাত্রাকে নির্দেশ করে।
অন্যদিকে, আকস্মিকতা কোনো মাত্রাগত ব্যাপার নয়। অর্থাৎ কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে আকস্মিকতার মাত্রা নির্ণয় করা যায় না।
সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ঘটনার কার্যকারণ নিয়ম সম্পর্কে আমাদের আংশিক জ্ঞান থাকে। অর্থাৎ কার্যকারণ নিয়মের অপূর্ণ জ্ঞানই সম্ভাবনার ভিত্তিমূল হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে, আকস্মিকতার ক্ষেত্রে ঘটনার কার্যকারণ নিয়ম সম্পূর্ণই আমাদের অজানা থাকে। এ কারণে আমরা ঘটনার যৌক্তিক কারণ নির্ণয় করতে পারি না। পাশাপাশি সম্ভাবনামূলক ঘটনা চারটি নিয়মের সাহায্যে পরিমাপ করা যায়। অর্থাৎ বিভিন্ন ঘটনার সম্ভাবনা পরিমাপযোগ্য। কিন্তু আকস্মিকতা পরিমাপের কোনো নিয়ম নেই। তাই আকস্মিক ঘটনা পরিমাপ করা যায় না।
পরিশেষে বলা যায়, সম্ভাবনা ও আকস্মিকতার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বৈসাদৃশ্য রয়েছে। বস্তুত সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ঘটনার আংশিক জ্ঞান থাকলেও আকস্মিকতার ক্ষেত্রে ঘটনার সকল বিষয় আমাদের অজানা থাকে।

২. দৃশ্যকল্প-১: বাবুল তার পড়ার টেবিলে পরীক্ষার জন্য মনোযোগ সহকারে পড়ছে। রাত প্রায় দশটা। হঠাৎ তার টেবিল-চেয়ার কেঁপে উঠছে। বাবা দৌড়ে এসে বললেন, ‘‘কেউ ঘরের মধ্যে থেকো না। সবাই বাইরে চলে এসো, ভূমিকম্প হচ্ছে।’’ সবাই তাড়াহুড়া করে বাইরে এল।
দৃশ্যকল্প-২: বৈশাখের দুপুর। প্রচন্ড গরম। আকাশে মেঘের ঘনঘটা। সমুদ্রে নিম্নচাপ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বিপদ সংকেত দিচ্ছে। বেতার ও টিভিতে বারবার এ সংকেত প্রচারিত হচ্ছে। শেষরাতে ঝড় হতে পারে।
ক. সম্ভাব্যতা পরিমাপের নিয়ম কয়টি?
খ. সম্ভাব্যতার ভিত্তি আত্মগত না বস্তুগত? ব্যাখ্যা করো।
গ. দৃশ্যকল্প-২ এ পাঠ্যবইয়ের যে বিষয়টির সাথে সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়ত তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. দৃশ্যকল্প-১ ও ২ এর তুলনামূলক পার্থক্য দেখাও।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সম্ভাব্যতা পরিমাপের নিয়ম চারটি।

খ. সম্ভাব্যতার ভিত্তি আত্মগত ও বস্তুগত ভিত্তি উভয়ই।
সম্ভাবনার আত্মগত ভিত্তি বলতে বিশ্বাস এবং বস্তুগত ভিত্তি বলতে বাস্তব অভিজ্ঞতাকে বোঝানো হয়। যুক্তিবিদ জেভন্স এর মতে, আমাদের বিশ্বাসের মাত্রার ওপর নির্ভর করে কোনো ঘটনার সম্ভাব্যতা। আবার যুক্তিবিদ কার্ভেথ রিড বলেন, সম্ভাব্যতার ভিত্তি আত্মগত নয় বরং বস্তুগত। কারণ কোনো ঘটনা ঘটার সম্ভাব্যতা নির্ভর করে সে ঘটনা সম্পর্কে আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার ওপর। সার্বিক প্রেক্ষিতে বলা যায়, সম্ভাবনার ভিত্তি আত্মগত ও বস্তুগত উভয়ই।

গ. দৃশ্যকল্প-২ এ পাঠ্যবইয়ের সম্ভাবনার বিষয়টির সাথে সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
সম্ভাবনা হলো একটি দ্ব্যর্থবোধক শব্দ। যা কোনো ঘটনার মধ্যবর্তী অবস্থাকে বোঝায়। অর্থাৎ কোনো ঘটনা ঘটতে পারে, আবার নাও ঘটতে পারেত এরূপ অবস্থা বোঝাতে আমরা সম্ভাবনা শব্দটি ব্যবহার করে থাকি যেমন- একটি মুদ্রা নিক্ষেপে হেড অথবা টেল ওঠার ঘটনা সম্ভাবনার সাথে সম্পর্কিত।
দৃশ্যকল্প-২ এ বর্ণিত ‘শেষ রাতে ঝড় হতে পারে’ - এ ধরনের বাক্য কোনো ঘটনার মধ্যবর্তী অবস্থা নির্দেশ করে। এ কারণে দৃশ্যকল্প-২ এর নির্দেশিত বিষয়টি হলো সম্ভাবনা।

ঘ. দৃশ্যকল্প-১ এ আকস্মিকতা এবং দৃশ্যকল্প-২ সম্ভাবনার দৃষ্টান্ত পরিলক্ষিত হয়। নিচে আকস্মিকতা ও সম্ভাবনার মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হলো-
কার্যকারণ সম্পর্কবিহীন অপ্রত্যাশিত বা হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে আকস্মিকতা বলে। যেমন- দৃশ্যকল্প-১ এ বর্ণিত ভূমিকম্পের ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত। এ কারণে বাবুল ও তার পরিবারের কাছে এটি একটি আকস্মিক ঘটনা। অন্যদিকে, সম্ভাবনা হলো কোনো ঘটনার নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা। এ কারণে এটি একটি মাত্রাগত বিষয়। যেমন-দৃশ্যকল্প-২ এ বর্ণিত মেঘের ঘনঘটা, সমুদ্রের নিম্নচাপত এসব প্রেক্ষাপটে বলা হয়েছে শেষরাতে ঝড় হতে পারে। উদ্দীপকের এ বক্তব্যটি অধিক মাত্রাকে নির্দেশ করে। কিন্তু আকস্মিক ঘটনায় কোনো মাত্রা নির্ণয় করা যায় না। কারণ আকস্মিকতার ক্ষেত্রে ঘটনার কার্যকারণ নিয়ম সম্পূর্ণই আমাদের অজানা থাকে।
সম্ভাবনামূলক ঘটনা চারটি নিয়মের সাহায্যে পরিমাপ করা যায়। অর্থাৎ বিভিন্ন ঘটনার সম্ভাবনা পরিমাপযোগ্য। কিন্তু আকস্মিকতা পরিমাপের কোনো নিয়ম নেই। তাই আকস্মিক ঘটনা পরিমাপ করা যায় না।
পরিশেষে বলা যায়, সম্ভাবনা ও আকস্মিকতার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বৈসাদৃশ্য রয়েছে। বস্তুত সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ঘটনার আংশিক জ্ঞান থাকলেও আকস্মিকতার ক্ষেত্রে ঘটনার সকল বিষয় আমাদের অজানা থাকে।

৩. আয়শা বরিশালে থাকে। একদিন সকালে দরজা খুলে লন্ডনে বসবাস করা তার ছোট বোনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সে খুবই অবাক হয়। একটু পরই জোরে বাতাস বইতে শুরু করে। আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়। আয়শা ভাবলো প্রচন্ড ঝড় শুরু হতে পারে।
ক. সম্ভাব্যতা পরিমাপের প্রথম সূত্রটি লেখো।
খ. সম্ভাবনার ভিত্তি আত্মগত না বস্তুগত? ব্যাখ্যা করো।
গ. আয়শার বোনের আগমন পাঠ্যবইয়ের কোন বিষয়কে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. আয়শার বোনকে দেখা এবং বাতাস বইতে শুরু করা ঘটনা দুটির আন্তঃসম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সম্ভাব্যতা পরিমাপের প্রথম সূত্রটি হলো- অনুকূল বিকল্পের সংখ্যাকে লব ও মোট বিকল্পের সংখ্যাকে হর হিসেবে গ্রহণ করে যে ভগ্নাংশটি পাওয়া যায় তা সকল ঘটনার সম্ভাব্যতার মাত্রা নির্দেশ করে।

খ. সম্ভাবনার ধারণা যে বিষয়ের ওপর নির্ভর করে প্রকাশ করা হয় তা-ই সম্ভাবনার ভিত্তি।
সম্ভাবনার আত্মগত ভিত্তি হলো বিশ্বাস এবং বস্তুগত ভিত্তি হলো বাস্তব অভিজ্ঞতা। যুক্তিবিদ জেভন্স এর মতে, আমাদের বিশ্বাসের মাত্রার ওপর নির্ভর করে কোনো ঘটনার সম্ভাব্যতা। আবার যুক্তিবিদ কার্ডেথ রিড বলেন, সম্ভাব্যতার ভিত্তি আত্মগত নয় বরং বস্তুগত। কারণ কোনো ঘটনা ঘটার সম্ভাব্যতা নির্ভর করে সে ঘটনা সম্পর্কে আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার ওপর। এসব যুক্তিতে সার্বিক বিচার করে বলা যায়, সম্ভাবনার ভিত্তি আত্মগত ও বস্তুগত উভয়ই।

গ. আয়শার বোনের আগমন আকস্মিকতার বিষয়কে নির্দেশ করে।
যে ঘটনার কারণ অজ্ঞাত থাকে বা কারণ অজানা থাকে এবং যা আমাদের হঠাৎ বিস্মিত করে তোলে তা-ই হলো আকস্মিকতা। অর্থাৎ আমরা যখন কোনো ঘটনার কারণ জানতে পারি না বা কারণ উদ্ধার করতে পারি না, তখন উক্ত ঘটনাকে আকস্মিক বলে চালিয়ে দেই। যেমন-‘‘কোনো পূর্বাভাস ও সংকেত ছাড়াই ‘ক’ এলাকায় হঠাৎ করে একটি টর্নেডো বয়ে গেল’’- এটি একটি আকস্মিক ঘটনা।
উদ্দীপকের বর্ণিত ঘটনায় মোংলার বাসিন্দা আয়শা একদিন সকালে দরজা খুলে লন্ডনে বসবাসরত তার ছোট বোনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে খুবই অবাক হয়। এখানে দুই বোনের দেখা হওয়ার মধ্যে কোনো কার্যকারণ সম্পর্ক নাই। বরং তাদের দেখা হওয়ার ঘটনাকে আকস্মিক হিসেবে বিবেচনা করা যায়।

ঘ. আয়শার বোনকে দেখা এবং বাতাস বইতে শুরু করা ঘটনা দুটি যথাক্রমে আকস্মিকতা ও সম্ভাব্যতার সাথে সংশ্লিষ্ট। নিচে ঘটনা দুটির আন্তঃসম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হলো-
যে ঘটনার নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না, আবার ঘটনাটি অনিশ্চিত তাও বলা যায় না তাকে সম্ভাব্য ঘটনা বলে। সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ঘটনার কার্যকারণ নিয়ম সম্পর্কে আমাদের আংশিক জ্ঞান থাকে। এ কারণে সম্ভাবনাকে ঘটনার নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা বলা হয়। যেমন- ঝড় শুরু হতে পারে’- বিষয়টি নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা নির্দেশ করে। তাই এ ঘটনাটি সম্ভাব্যতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। অন্যদিকে, কার্যকারণ সম্পর্কবিহীন অপ্রত্যাশিত বা হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে আকস্মিকতা বলে। আকস্মিকতার ক্ষেত্রে ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পূর্ণই আমাদের অজানা থাকে। তাই এরূপ ঘটনার যৌক্তিক কারণ নির্ণয় করা যায় না। যেমন- আয়শার ছোট বোনকে দেখার ঘটনাটি সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ঘটনা। তাই এ ঘটনাটি আকস্মিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সম্ভাবনা ও আকস্মিকতার মধ্যে বাহ্যিক অমিল থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে মিল রয়েছে। কারণ উভয় ক্ষেত্রেই ঘটনার কার্যকারণ সম্পর্ক আমাদের অজানা থাকে। পাশাপাশি উভয় মতবাদ বহু কারণবাদজনিত সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে। এ কারণে বাস্তব জীবনে সম্ভাবনা ও আকস্মিকতা উভয় বিষয়েরই প্রভাব লক্ষ করা যায়।
পরিশেষে বলা যায়, সম্ভাবনা ও আকস্মিকতা দুটি ভিন্ন বিষয়। সম্ভাবনার ক্ষেত্রে কোনো ঘটনা সম্পর্কে আংশিক জ্ঞান থাকলেও আকস্মিকতার ক্ষেত্রে তা একেবারেই থাকে না। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ঘটনার সম্ভাবনা পরিমাপযোগ্য হলেও আকস্মিকতা পরিমাপের কোনো নিয়ম নেই। এসব কারণে উদ্দীপকের ঘটনা দুটির মধ্যে সাদৃশ্যের চেয়ে বৈসাদৃশ্যই বেশি লক্ষ করা যায়।

৪. দৃশ্যকল্প-১: একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় যুক্তিবিদ্যা বিষয়ে ৩০০ জনের মধ্যে ২৭০ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে।
দৃশ্যকল্প-২: কৃষক জমি চাষ করতে গিয়ে মাটির নিচে হঠাৎ একটি স্বর্ণমূর্তি পেল।
ক. সম্ভাব্যতা কী?
খ. আকস্মিকতাকে কীভাবে অপনয়ন করা যায়?
গ. দৃশ্যকল্প-১ এ সম্ভাব্যতার যে নিয়মটির প্রতিফলন ঘটেছে, তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. দৃশ্যকল্প-১ ও দৃশ্যকল্প-২ এর তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সম্ভাবনা হচ্ছে কোনো ঘটনার নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা।

খ. ঘটনার কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের মাধ্যমে আকস্মিকতাকে অপনয়ন করা যায়।
আমরা জানি, অপনয়ন শব্দের অর্থ বাদ দেওয়া। তাই কোনো ঘটনার আকস্মিকতাকে বাদ দিতে হলে সেই ঘটনার কার্যকারণ সম্পর্ক খুঁজে বের করতে হবে। যেমন- টর্নেডো কিংবা সাইক্লোনের ঘটনা আমাদের কাছে আকস্মিক বিষয়। কিন্তু ফণী নামক সাইক্লোনের কার্যকারণ সম্পর্ক পূর্ব থেকেই জানার কারণে আমাদের কাছে তা আকস্মিক মনে হয়নি। এভাবেই কোনো আকস্মিক ঘটনার কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের মাধ্যমে অপনয়ন করা যায়।

গ. দৃশ্যকল্প-১ এ সম্ভাবনা পরিমাপের প্রথম নিয়মটির প্রতিফলন ঘটেছে।
সম্ভাবনার প্রথম নিয়মানুসারে, 'অনুকূল বিকল্পের সংখ্যাকে লব এবং মোট বিকল্পের সংখ্যাকে হর হিসেবে গ্রহণ করে যে ভগ্নাংশ পাওয়া যায় তা সকল ঘটনার সম্ভাব্যতার মাত্রা নির্দেশ করে। এখানে অনুকূল বিকল্প বলতে কোনো ঘটনা সংঘটিত হওয়াকে বোঝায়। অন্যদিকে, প্রতিকূল বিকল্প বলতে কোনো ঘটনা সংঘটিত না হওয়াকে বোঝায়। আর মোট বিকল্প বলতে অনুকূল ও প্রতিকূল বিকল্পের যোগফলকে বোঝায়।
দৃশ্যকল্প-১ এ বর্ণিত, যুক্তিবিদ্যা বিষয়ে ৩০০ জনের মধ্যে ২৭০ জন পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়। এখানে অনুকূল বিকল্পের সংখ্যা ২৭০ এবং মোট বিকল্পের সংখ্যা ৩০০।
সুতরাং সম্ভাবনার মাত্রা = ২৭০/৩০০ = ৯/১০০।

ঘ. দৃশ্যকল্প-১ এ সম্ভাবনা এবং দৃশ্যকল্প-২ এ আকস্মিকতার দৃষ্টান্ত পরিলক্ষিত হয়। নিচে উভয় ধারণার মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হলো-
যে ঘটনার নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না আবার ঘটনাটি অনিশ্চিত সেটাও বলা যায় না তাকে সম্ভাব্য ঘটনা বলে। অর্থাৎ সম্ভাবনা হলো ঘটনার নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা। অন্যদিকে, কার্যকারণ সম্পর্কবিহীন অপ্রত্যাশিত বা হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে আকস্মিকতা বলে। সম্ভাবনা একটি মাত্রাগত ব্যাপার। অর্থাৎ সম্ভাবনা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি হয়, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে কম হয়। তবে কোনোভাবেই সেটি নিশ্চয়তায় পৌঁছায় না। যেমন- ঘূর্ণিঝড় হতে পারেত আবহাওয়াবিদগণের এই বক্তব্য সম্ভাবনার অধিক মাত্রাকে নির্দেশ করে। অন্যদিকে, আকস্মিকতা কোনো মাত্রাগত ব্যাপার নয়। অর্থাৎ কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে আকস্মিকতার মাত্রা নির্ণয় করা যায় না। সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ঘটনার কার্যকারণ নিয়ম সম্পর্কে আমাদের আংশিক জ্ঞান থাকে। অর্থাৎ কার্যকারণ নিয়মের অপূর্ণ জ্ঞানই সম্ভাবনার ভিত্তিমূল হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে, আকস্মিকতার ক্ষেত্রে ঘটনার কার্যকারণ নিয়ম সম্পূর্ণই আমাদের অজানা থাকে। এ কারণে আমরা ঘটনার যৌক্তিক কারণ নির্ণয় করতে পারি না। পাশাপাশি সম্ভাবনামূলক ঘটনা চারটি নিয়মের সাহায্যে পরিমাপ করা যায়। অর্থাৎ বিভিন্ন ঘটনার সম্ভাবনা পরিমাপযোগ্য। কিন্তু আকস্মিকতা পরিমাপের কোনো নিয়ম নেই। তাই আকস্মিক ঘটনা পরিমাপ করা যায় না।
তাই বলা যায়, সম্ভাবনা ও আকস্মিকতার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বৈসাদৃশ্য রয়েছে। বস্তুত সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ঘটনার আংশিক জ্ঞান থাকলেও আকস্মিকতার ক্ষেত্রে ঘটনার সকল বিষয় আমাদের অজানা থাকে।

৫. দৃশ্যকল্প-১: সেলিম ও সৌমিত্র আজ বিকেলে বিপিএল-এর খেলা দেখতে যাবে। দুপুরে সেলিম ফোন করে সৌমিত্রকে জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর ৬নং বিপদ সংকেত জারি করেছে। সম্ভবত ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। অপরপ্রান্ত থেকে সৌমিত্র বললোত 'হয়তো খেলা স্থগিত হতে পারে'।
দৃশ্যকল্প-২: একদিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে কক্সবাজারের জনগণ হতবাক! তারা প্রত্যক্ষ করল রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, মাঠ-উঠানসহ বরফে আচ্ছন্ন।
ক. সম্ভাবনার ভিত্তি কত প্রকার ও কী কী?
খ. আকস্মিকতা বলতে কী বোঝ?
গ. দৃশ্যকল্প-১ এ তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন বিষয়কে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. দৃশ্যকল্প-১ ও দৃশ্যকল্প-২ এর মধ্যে পার্থক্য পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সম্ভাবনার ভিত্তি দুই প্রকার। যথা- আত্মগত ও বস্তুগত।

খ. আকস্মিকতা বলতে হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া বা অপ্রত্যাশিত কোনো ঘটনাকে বোঝায়।
পূর্বসূত্র ব্যতিরেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে কোনো ঘটনা ঘটে যাওয়াকে আকস্মিকতা বলে। আকস্মিক ঘটনার প্রকৃত কারণ আমাদের অজ্ঞাত থাকে। যেমন- কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই হঠাৎ করেই ‘ক’ এলাকায় টর্নেডো বয়ে গেলত এ বক্তব্যে টর্নেডো হওয়ার পরিস্থিতি পূর্ব থেকেই অজ্ঞাত। এ কারণে এটি আমাদের কাছে আকস্মিক ঘটনা। তাই বলা যায়, কারণ সম্পর্কে অজ্ঞতাই আকস্মিকতা।

গ. দৃশ্যকল্প-১ এ পাঠ্যবইয়ের সম্ভাবনার বিষয়কে নির্দেশ করে।
সম্ভাবনা হলো একটি দ্ব্যর্থবোধক শব্দ। যার শাব্দিক অর্থ হলো- কোনো ঘটনা ঘটতে পারে; আবার নাও ঘটতে পারে। অর্থাৎ কোনো ঘটনার মধ্যবর্তী অবস্থা হলো সম্ভাবনা। যেমন- একটি মুদ্রা নিক্ষেপে হেড বা টেল ওঠার ঘটনা সম্ভাবনার সাথে সম্পর্কিত।
দৃশ্যকল্প-১ এ বর্ণিত ‘সম্ভবত ঘূর্ণিঝড় হতে পারে' কিংবা 'হয়তো খেলা স্থগিত হতে পারে' - এ ধরনের বাক্য কোনো ঘটনার মধ্যবর্তী অবস্থা নির্দেশ করে। এ কারণে দৃশ্যকল্প-১ এর নির্দেশিত বিষয়টি হলো সম্ভাবনা।

ঘ. দৃশ্যকল্প-১ এ সম্ভাবনা এবং দৃশ্যকল্প-২ এ আকস্মিকতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। নিম্নে পাঠ্যবইয়ের আলোকে দৃশ্যপট-১ ও দৃশ্যপট-২ এর মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হলো-
দৃশ্যকল্প-১ হলো একটি সম্ভাব্য ঘটনা, যা ঘটা বা না ঘটা সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত নই। অর্থাৎ সম্ভাবনা হলো কোনো ঘটনার নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা। কিন্তু দৃশ্যকল্প-২ হলো একটি আকস্মিক ঘটনা, যা সম্পর্কে আমরা পূর্ব থেকেই অবগত থাকি না। হঠাৎ করে বা অপ্রত্যাশিতভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটে বলেই আমরা এটিকে আকস্মিকতা বলি। পাশাপাশি গাণিতিক তত্ত্ব ও পৌনঃপুনিকতা তত্ত্ব দিয়ে দৃশ্যকল্প-১ এর ধারণা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করা গেলেও দৃশ্যকল্প-২ এর ক্ষেত্রে গণিতশাস্ত্রের কোনো বিষয় প্রয়োগ করা যায় না।
দৃশ্যকল্প-১ এ অর্থাৎ সম্ভাবনার ক্ষেত্রে জ্ঞানের অপূর্ণতা কাজ করে। যার ফলে সম্ভাবনাময় কোনো ঘটনার নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। এ কারণে দৃশ্যকল্প-১ এ বর্ণিত ‘ঘূর্ণিঝড় হতে পারে বা খেলা স্থগিত হতে পারে - এ বিষয়গুলো সম্ভাবনার দৃষ্টান্ত। অন্যদিকে, কার্যকারণ নিয়ম সম্পর্কে অজ্ঞতা হলো দৃশ্যকল্প-২ এ বর্ণিত আকস্মিকতার ভিত্তি। এ কারণে ‘কক্সবাজার বরফে আচ্ছন্ন' বিষয়টি একটি আকস্মিক ঘটনা। আমরা জানি, দৃশ্যকল্প-১ এর ঘটনা নির্ণয় করার জন্য চারটি নিয়ম রয়েছে। অর্থাৎ বিভিন্ন ঘটনার সম্ভাবনা পরিমাপযোগ্য। কিন্তু দৃশ্যকল্প-২ এর ঘটনা মূল্যায়ন করার কোনো মানদ- বা মূলসূত্র নেই। অর্থাৎ আকস্মিকতা হলো কোনো বিষয়ের অজ্ঞতার তত্ত্ব।
পরিশেষে বলা যায় যে, সম্ভাবনা ও আকস্মিকতার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বৈসাদৃশ্য রয়েছে। বস্তুত সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ঘটনার আংশিক জ্ঞান থাকলেও আকস্মিকতার ক্ষেত্রে ঘটনার সকল বিষয় আমাদের অজানা থাকে।

৬. দৃশ্যকল্প-১: বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাত ও ঘূর্ণিঝড়ের মাত্রা ক্রমান্বয়ে বেড়েই যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে প্রতি চারবার মেঘ করলে একবার বৃষ্টি হয় এবং প্রতি দশবার মেঘ করলে একবার ঘূর্ণিঝড় হয়।
দৃশ্যকল্প-২: নিপা ও স্বর্না বিজ্ঞানের ছাত্রী। নিপা প্রতি সাত দিনে পাঁচ দিন অংক করে। অপরদিকে, স্বর্না প্রতি পাঁচ দিনে তিন দিন অংক করে।
ক. সম্ভাবনার ইংরেজি প্রতিশব্দ কী?
খ. কার্যকারণ সম্পর্কে অজ্ঞানতাই আকস্মিকতার উৎপত্তি - বুঝিয়ে লেখো।
গ. দৃশ্যকল্প-১ এ কতবার মেঘ করলে বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড় একত্রে হওয়ার সম্ভাবনা আছে? সম্ভাব্যতা পরিমাপের নিয়মানুসারে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. দৃশ্যকল্প-২ এ নিপা ও স্বর্নার যৌথভাবে অংক করার সম্ভাবনার মাত্রা পাঠ্যবিষয়ের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সম্ভাবনার ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো- Probability.

খ. আকস্মিকতা হলো কার্যকারণ সম্পর্কে অজ্ঞতার ফল।
কার্যকারণ নিয়ম অনুসারে, জগতের প্রতিটি ঘটনার কারণ আছে। কিন্তু অনেক ঘটনার কারণ অজানা থাকলে তা আমাদের কাছে আকস্মিক বিষয়। যেমন- মেঘের সাথে বৃষ্টি কার্যকারণ সূত্রে সম্পর্কযুক্ত। তাই মেঘ হলে বৃষ্টি হবে এ বিষয়টি আমাদের কাছে জ্ঞাত। কিন্তু হঠাৎ টর্নেডো কিংবা সাইক্লোনের মতো ঘটনার কারণ অজানা থাকার কারণে আমাদের কাছে তা আকস্মিক বিষয়। এ কারণে বলা হয়ত কার্যকারণ সম্পর্কে অজ্ঞতাই আকস্মিকতার উৎপত্তি।

গ. দৃশ্যকল্প-১ এর ঘটনা দুটি স্বতন্ত্র ঘটনা। সম্ভাবনা পরিমাপের নিয়ম অনুযায়ী দুটি স্বতন্ত্র ঘটনা এক সাথে ঘটার সম্ভাবনার মাত্রা ঘটনা দুটির পৃথকভাবে ঘটার সম্ভাবনা মাত্রার গুণফলের সমান হবে।
দৃশ্যকল্প-১ এ বর্ণিত দুটি পৃথক ঘটনা সম্ভাবনার মাত্রা হলো-
৪ বার মেঘ করলে ১ বার বৃষ্টি হয়।
∴ বৃষ্টির সম্ভাবনার মাত্রা = অনুকূল বিকল্প/মোট বিকল্প = ১/৪
আবার, ১০ বার মেঘে ১ বার ঘূর্ণিঝড় হয়।
∴ ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনার মাত্রা = অনুকূল বিকল্প/মোট বিকল্প = ১/১০
সম্ভাবনার সূত্র অনুযায়ী,
বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড় একত্রে হওয়ার সম্ভাবনা = বৃষ্টির পৃথক সম্ভাবনা × ঘূর্ণিঝড়ের পৃথক সম্ভাবনা = ১/৮×১/১০ = ১/৪০
অর্থাৎ দৃষ্টান্তের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, ৪০ বার মেঘ করলে ১ বার বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড় একত্রে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘ. দৃশ্যকল্প-২ এর ঘটনা দুটি স্বতন্ত্র। এরূপ ঘটনার সম্ভাবনার মাত্রা নির্ণয় করতে হলে প্রথমে ঘটনা দুটির পৃথক সম্ভাবনার মাত্রা নির্ণয় করতে হবে।
অর্থাৎ অনুকূল বিকল্পকে লব ও মোট বিকল্পকে হর হিসেবে গ্রহণ করে সম্ভাবনার মাত্রা নির্ণয় করতে হবে। তারপর তাদের পৃথক সম্ভাবনার মাত্রাকে গুণ করার মাধ্যমে যৌথ সম্ভাবনার মাত্রা নির্ণয় করা যাবে।
সম্ভাবনার মাত্রা নির্ণয়ের দ্বিতীয় সূত্রানুযায়ী, পৃথকভাবে নিপা ও স্বর্নার অংক করার সম্ভাবনা নির্ণয় করতে হবে। এরপর উভয় সম্ভাবনাকে গুণ করলে ঘটনা দুটির যৌথ সম্ভাবনা পাওয়া যাবে।
নিপার অংক করার সম্ভাবনা = অনুকূল বিকল্প/মোট বিকল্প = ৫/৭

স্বর্ণার অংক করার সম্ভাবনা = অনুকূল বিকল্প/মোট বিকল্প = ৩/৫
নিপা ও স্বর্নার অংক করার যৌথ সম্ভাবনা = নিপার অংক করার সম্ভাবনা × স্বর্ণার অংক করার সম্ভাবনা = ৫/৭× ৩/৫= ৩/৭
অর্থাৎ প্রতি ৭ দিনে নিপা ও স্বর্না ৩ দিন যৌথভাবে অংক করতে পারে।

৭. দৃশ্যপট-১: শেফা নাচের প্রতিযোগিতায় ছয়বার অংশগ্রহণ করলে চারবার জয়ী হয়। তনিমা নাচের প্রতিযোগিতায় পাঁচবার অংশগ্রহণ করলে তিনবার জয়ী হয়।
দৃশ্যপট-২: রিনা বলল, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ যত বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তত বাড়ে। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ যত কমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তত কমে। সুতরাং পুষ্টিকর খাদ্য হলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণ।
ক. সম্ভাবনা শব্দটি কীরূপ?
খ. প্রান্তস্থিত বস্তুকে শ্রেণিকরণ করা যায় না কেন?
গ. সম্ভাবনা পরিমাপের নিয়ম অনুসরণ করে দৃশ্যপট-১ এর সম্ভাবনা নির্ণয় করো।
ঘ. দৃশ্যপট-২ এ নির্দেশিত পরীক্ষণমূলক পদ্ধতির প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সম্ভাবনা শব্দটি দ্ব্যর্থবোধক।

খ. মিশ্র বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে প্রান্তস্থিত বস্তুকে শ্রেণিকরণ করা যায় না।
প্রান্তস্থিত বস্তু বলতে বোঝায় যাদের মধ্যে মিশ্র বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। অর্থাৎ যেসব বস্তুর মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে তাদের প্রান্তস্থিত বস্তু বলে। যেমন- জেলি হলো এমন এক পদার্থ যার মধ্যে কিছু কঠিন পদার্থ এবং কিছু তরল পদার্থের গুণ বিদ্যমান থাকে। এ কারণে জেলিকে বিশেষ কোন শ্রেণিতে ভাগ করা যায় না।

গ. সম্ভাবনা পরিমাপের দ্বিতীয় নিয়ম অনুসরণ করে দৃশ্যপট-১ এর সম্ভাবনা নির্ণয় করা যায়।
দৃশ্যপট-১ এ বলা হয়েছেত শেফা নাচের প্রতিযোগিতায় ছয়বার অংশগ্রহণ করলে চারবার জয়ী হয়। তনিমা নাচের প্রতিযোগিতায় পাঁচবার অংশগ্রহণ করলে তিনবার জয়ী হয়। সম্ভাবনা পরিমাপের দ্বিতীয় নিয়ম অনুযায়ী দুটি পৃথক ঘটনা সম্ভাবনার মাত্রা হলো-
শেফা জয়ী হওয়ার সম্ভাবনার মাত্রা = ৪/৬
আবার, তনিমা জয়ী হওয়ার সম্ভাবনার মাত্রা = ৩/৫
সম্ভাবনার সূত্র অনুযায়ী,
শেফা ও তনিমা উভয়ের একত্রে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনার মাত্রা = শেফা জয়ী হওয়ার সম্ভাবনার মাত্রা × তনিমা জয়ী হওয়ার সম্ভাবনার মাত্রা = ৪/৬× ৩/৫= ২/৫
অর্থাৎ, প্রতি ৫ বারে ২ বার শেফা ও তনিমা উভয়ের একত্রে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘ. দৃশ্যপট-২ এ নির্দেশিত পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি হলো সহপরিবর্তন পদ্ধতি।
‘সহপরিবর্তন' শব্দটির অর্থ পারস্পরিক সমান পরিবর্তন। অর্থাৎ সহপরির্তন পদ্ধতি অনুযায়ী একটি ঘটনার পরিবর্তনের সাথে সাথে যদি অন্য ঘটনাও সমানভাবে পরিবর্তিত হয় তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাকে কারণ এবং পরবর্তী ঘটনাকে কার্য বলে। যেমন- বায়ুর চাপ বৃদ্ধি বা হ্রাসের সাথে সাথে ব্যারোমিটারের পারদ স্তম্ভের মাত্রাও বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, বায়ুর চাপই পারদের ওঠা-নামার কারণ।
এখানে ‘বায়ুর চাপ' হলো কারণ এবং ‘পারদের ওঠা-নামা’ হলো কার্য। বস্তুত সহপরিবর্তন পদ্ধতি কার্য ও কারণের পরিমাণগত বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভরশীল। কার্য ও কারণের পরিবর্তন কখনও সমমুখী হয়, কখনও বা বিপরীতমুখী হয়ে থাকে। যেমন- চাঁদের আকৃতির সাথে জোয়ার-ভাটার পরিবর্তন "সমমুখী। আবার দ্রব্যের চাহিদার সাথে যোগানের পরিবর্তন বিপরীতমুখী।
দৃশ্যপট-২ এ বলা হয়েছে, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ যত বাড়ে রোগ প্রতিরোধ, ক্ষমতা তত বাড়ে। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ যত কমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তত কমে। সুতরাং পুষ্টিকর খাদ্য হলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণ। অর্থাৎ এখানে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সমমুখী সম্পর্ক প্রকাশ পেয়েছে। এ কারণে এটি সহপরিবর্তন পদ্ধতির দৃষ্টান্ত। সহপরিবর্তন পদ্ধতি একটি সহজ-সরল পদ্ধতি। এই পদ্ধতির সাহায্যে কার্যকারণ সম্পর্কের পরিমাণগত দিকটি নির্ণয় করা যায়। স্থায়ী কারণসমূহের ওপর এই পদ্ধতির প্রয়োগ খুব ফলপ্রসূ।
সুতরাং বলা যায়, সহপরিবর্তন পদ্ধতি কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ে যথেষ্ঠ সহায়ক।

৮. ঘটনা-১: রাহাত ও বৃষ্টি লুডু খেলছিল। জয়ের জন্য পরবর্তী চালে রাহাতের প্রয়োজন ৪। সে ৪ পেল।
ঘটনা-২: মিমি একদিন বাসে করে বাসায় ফিরছিল। হঠাৎ সে লক্ষ করল তার পাশের সিটে স্কুল জীবনের এক বন্ধু বসে আছে।
ক. আকস্মিকতা কী?
খ. সম্ভাবনার প্রকৃতি ব্যাখ্যা করো।
গ. পরবর্তী চালে রাহাতের ৪ ওঠার সম্ভাবনা গাণিতিকভাবে নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকের ঘটনা দুটির সম্পর্ক পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কার্যকারণ সম্পর্কবিহীন অপ্রত্যাশিত বা হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া ঘটনাই হলো আকস্মিকতা।

খ. সম্ভাবনা হলো অনিশ্চয়তা ও নিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা।
যখন একটি ঘটনা ঘটতে পারে আবার না-ও ঘটতে পারে এরূপ অবস্থাকেই সম্ভাবনা বলে। সম্ভাবনা মূলত একটি মাত্রাগত ব্যাপার। এটি অসম্ভবের চেয়ে উন্নত এবং নিশ্চয়তার চেয়ে নিম্নতর অবস্থা নির্দেশ করে। যেমন: আগামীকাল বৃষ্টি হতে পারে। এ দৃষ্টান্তে বৃষ্টি হওয়া বা না হওয়ার মধ্যবর্তী অবস্থা নির্দেশ করে। এ কারণে এটি সম্ভাব্য ঘটনা। গাণিতিকভাবে সম্ভাবনা প্রকাশ করা হয় ভগ্নাংশ বা শতক হারের মাধ্যমে।

গ. পরবর্তী চালে রাহাতের ৪ ওঠার সম্ভাবনা গাণিতিকভাবে
হলো-
লুডুর গুঁটিতে ৪ আছে = ১টি (অনুকূল বিকল্প)
লুডু খেলায় মোট বিকল্প = ৬টি
আমরা জানি, সম্ভাবনার সূত্রানুযায়ী কোনো ঘটনার অনুকূল ঘটনার সম্ভাবনা = অনুকূল বিকল্প/মোট বিকল্প
∴ উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনায় রাহাতের ৪ ওঠার সম্ভাবনা = অনুকূল বিকল্প/মোট বিকল্প = ১/৬
অর্থাৎ পরবর্তী চালে রাহাতের ৪ ওঠার সম্ভাবনা ১/৬।

ঘ. উদ্দীপকের ঘটনা-১ এ রাহাত ও বৃষ্টির লুডু খেলার ছকে ৪ ওঠার বিষয়টি এবং ঘটনা-২ এ মিমির সাথে তার বন্ধুর হঠাৎ দেখা হওয়ার বিষয়টি যথাক্রমে সম্ভাব্যতা ও আকস্মিকতার সাথে সংশ্লিষ্ট। নিচে ঘটনা দুটির সম্পর্ক পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ করা হলো-
যে ঘটনার নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না, আবার ঘটনাটি অনিশ্চিত তাও বলা যায় না তাকে সম্ভাব্য ঘটনা বলে। সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ঘটনার কার্যকারণ নিয়ম সম্পর্কে আমাদের আংশিক জ্ঞান থাকে। এ কারণে সম্ভাবনাকে ঘটনার নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা বলা হয়। যেমন- ঘটনা-১ এ বর্ণিত লুডু খেলায় ছকে ৪ ওঠার বিষয়টি নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা নির্দেশ করে। তাই এ ঘটনাটি সম্ভাব্যতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। অন্যদিকে, কার্যকারণ সম্পর্কবিহীন অপ্রত্যাশিত বা হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে আকস্মিকতা বলে। আকস্মিকতার ক্ষেত্রে ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পূর্ণই আমাদের অজানা থাকে। তাই এরূপ ঘটনার যৌক্তিক কারণ নির্ণয় করা যায় না। যেমন- উদ্দীপকের ঘটনা-২ এ মিমির সাথে হঠাৎ তার স্কুলজীবনের বন্ধুর বাসে দেখা হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ঘটনা। তাই এ ঘটনাটি আকস্মিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সম্ভাবনা ও আকস্মিকতার মধ্যে উল্লেখিত অমিল থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে মিল রয়েছে। কারণ উভয় ক্ষেত্রেই ঘটনার কার্যকারণ সম্পর্ক আমাদের অজানা থাকে। পাশাপাশি উভয় মতবাদ বহুকারণবাদজনিত সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে। এ কারণে বাস্তব জীবনে সম্ভাবনা ও আকস্মিকতা উভয় বিষয়েরই প্রভাব লক্ষ করা যায়।
পরিশেষে বলা যায়, সম্ভাবনা ও আকস্মিকতা দুটি ভিন্ন বিষয়। সম্ভাবনার ক্ষেত্রে কোনো ঘটনা সম্পর্কে আংশিক জ্ঞান থাকলেও আকস্মিকতার ক্ষেত্রে তা একেবারেই থাকে না। পাশাপাশি বিভিন্ন ঘটনার সম্ভাবনা পরিমাপযোগ্য হলেও আকস্মিকতা পরিমাপের কোনো নিয়ম নেই। এসব কারণে উদ্দীপকের ঘটনা দুটির মধ্যে সাদৃশ্যের চেয়ে বৈসাদৃশ্যই বেশি। লক্ষ করা যায়।

৯. উদ্দীপক-১: বাংলাদেশে প্রতি ৩ জনের মধ্যে ২ জন মোবাইল ফোন ও ৫ জনের মধ্যে ১ জন ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
উদ্দীপক-২: রাস্তায় চলতে চলতে গাড়িটির চাকা হঠাৎ ফেটে গেল।
ক. সম্ভাব্যতা কাকে বলে?
খ. সম্ভাব্যতা আত্মগত নয়, বস্তুগতত ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপক-১ এ মোবাইলফোন ও ইন্টারনেট একত্রে ব্যবহারকারীর সম্ভাব্যতা সূত্রের সাহায্যে নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপক-২ এর ঘটনা কী আকস্মিকতা না সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করে? তোমার মতামত ব্যাখ্যা করো।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সম্ভাবনা হচ্ছে কোনো ঘটনার নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা।

খ. সম্ভাব্যতা আত্মগত নয়, বস্তুগতু উক্তিটি যথার্থ।
সম্ভাব্যতার আত্মগত ভিত্তি বলতে বিশ্বাস এবং বস্তুগত ভিত্তি বলতে বাস্তব অভিজ্ঞতাকে বোঝায়। যুক্তিবিদ কার্ডের্থ রিড বলেন, সম্ভাব্যতার ভিত্তি আত্মগত নয় বরং বস্তুগত। কারণ আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে যেকোনো ঘটনা ঘটার সম্ভাব্যতা নির্ণয় করা যায়। পাশাপাশি এই অভিজ্ঞতা পরিমাপযোগ্য কিন্তু বিশ্বাস পরিমাপযোগ্য নয়। এ কারণে বলা যায়, সম্ভাব্যতা আত্মগত নয় বরং বস্তুগত।

গ. উদ্দীপক-১ এ সম্ভাব্যতার দ্বিতীয় নিয়ম অনুসারে মোবাইল ফোন ইন্টারনেট একত্রে ব্যবহারের মাত্রা নির্ণয় করা যায়।
আমরা জানি, দুটি স্বতন্ত্র্য ঘটনা একসাথে ঘটা সম্ভব না হলে তাদের মধ্যে যেকোনো একটি বা অন্যটি ঘটার সম্ভাবনা হবে ঘটনা দুটি ঘটার পৃথক গুণফলের সম্ভাবনার সমান। এই নীতি অনুসারে উদ্দীপকে বর্ণিত সমস্যার সমাধান করা যায়।
উদ্দীপক-১ এ বর্ণিত ৩ জনের মধ্যে ২ জন মোবাইলফোন এবং ৫ জনের মধ্যে ১ জন ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
সুতরাং মোবাইলফোন ব্যবহারের সম্ভাবনা হলো ২/৩ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সম্ভাবনা ১/৫।
অতএব, মোবাইল সেট ও টেলিভিশন একত্রে ব্যবহারের সম্ভাবনা = ২৩ × ১৫ = ২১৫ ।
সুতরাং বলা যায়, প্রতি ১৫ জনে ২ জন মোবাইল ফোন ইন্টারনেট একত্রে ব্যবহার করতে পারে।

ঘ. উদ্দীপক-২ এর ঘটনা আকস্মিকতাকে নির্দেশ করে।
'আকস্মিক' শব্দের ইংরেজি 'Chance' কথাটি প্রাচীন ফরাসি শব্দ 'Cheance' (চিয়াশেঁ) থেকে উদ্ভূত। যার অর্থ- 'আকস্মিক বিষয়, সৌভাগ্য, ভাগ্য, পরিস্থিতি, ঘুটি বা পাশার দান' ইত্যাদি। বস্তুত যে ঘটনার কারণ অজ্ঞাত থাকে বা কারণ অজানা থাকে এবং যা আমাদের হঠাৎ বিস্মিত করে তোলে তাই হলো আকস্মিকতা। অর্থাৎ আমরা যখন কোনো ঘটনার কারণ জানতে পারি না বা কারণ উদ্ধার করতে পারি না, তখন উক্ত ঘটনাকে আকস্মিক বলে চালিয়ে দেই। যেমন-‘‘কোনো পূর্বাভাস ও সংকেত ছাড়াই ‘ক’ এলাকায় হঠাৎ করে একটি টর্নেডো বয়ে গেল’’ - এটি একটি আকস্মিক ঘটনা।
উদ্দীপক-২ এ বলা হয়েছে, রাস্তায় চলতে চলতে গাড়ির চাকা হঠাৎ ফেটে যায়। অর্থাৎ গাড়ির চাকা ফেটে যাওয়ার কারণ পূর্ব থেকেই অজ্ঞাত। এ কারণে এরূপ হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনা হলো একটি আকস্মিক বিষয়।
পরিশেষে বলা যায়, আকস্মিকতার ক্ষেত্রে ঘটনার কার্যকারণ নিয়ম সম্পূর্ণই আমাদের অজানা থাকে। এ কারণে আমরা এরূপ ঘটনার যৌক্তিক কারণ নির্ণয় করতে পারি না। যার দৃষ্টান্ত উদ্দীপক-২ এ লক্ষণীয়। এ কারণে ঘটনাটি আকস্মিকতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

১০. দৃশ্যপট-১ : পাপন ভাইবায় ৫টি প্রশ্নের মধ্যে ৪ টি সঠিক উত্তর দিতে পারে আর জনি ৪টার মধ্যে ৩ টার সঠিক উত্তর দিতে পারে।
দৃশ্যপট-২ : মাইশার বাবা শীতকালীন ছুটিতে দুবাই থেকে আসবেন কিন্তু কবে আসবেন মাইশা তা এখনও নিশ্চিত জানে না। সে একদিন পিকনিকে গেল। ফিরে এসে দেখে তার টেবিলে খুব সুন্দর ওয়াটার কালার বক্স ও কিটকাট চকোলেটের একটি প্যাকেট। সে দেখে তো হতবাক! আমার প্রিয় জিনিস! কে দিল? নিশ্চয়ই বাবা এসেছেন।
ক. 'স্যাৎ' শব্দটি আংশিক সত্য বোঝাতে কারা ব্যবহার করেন?
খ. আরোহ কী আমাদের নিশ্চিত জ্ঞান দিকে পারে? ব্যাখ্যা করো।
গ. দুই জনের যৌথভাবে সঠিক উত্তর দেয়ার সম্ভবনা কত? নির্ণয় করো।
ঘ. দৃশ্যপট-২ এ প্রথম ও দ্বিতীয় স্তবকের বিষয়ের পারস্পারিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. 'স্যাৎ' শব্দট আংশিক সত্য বোঝাতে জৈন দার্শনিকরা ব্যবহার করেন।

খ. আরোহের সাহায্যে নিশ্চিত জ্ঞান পাওয়া যায়।
আরোহানুমানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকরণ হলো বৈজ্ঞানিক আরোহ এবং পূর্ণাঙ্গ আরোহ। যে দুটি আরোহের দৃষ্টান্ত পরখ করে পরীক্ষণের মাধ্যমে নিশ্চিত সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়। এ দুটি প্রকরণের আলোকে বলা যায়, আরোহ অনুমানের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হয়।

গ. দৃশ্যপট-১ এ সম্ভাবনা পরিমাপের দ্বিতীয় নিয়মের প্রতিফলন ঘটেছে।
সম্ভাবনার দ্বিতীয় নিয়ম অনুসারে দুটি স্বতন্ত্র ঘটনা একত্রে ঘটার সম্ভাবনার মাত্রা ঘটনা দুটির পৃথক সম্ভাবনার মাত্রার গুণফলের সমান হবে'। এ নিয়মটি দৃশ্যপট-১ এ প্রয়োগ করে যৌথভাবে সঠিক উত্তর দেওয়ার সম্ভাবনা নির্ণয় করা হলো-
দৃশ্যপট-১ এ বর্ণিত পাপন ভাইবায় ৫টির মধ্যে ৪টি সঠিক উত্তর দিতে পারে। অর্থাৎ অনুকূল বিকল্প = ৪ এবং মোট বিকল্প = ৫।
তাহলে পাপনের সঠিক উত্তর দেওয়ার সম্ভাবনার মাত্রা = অনুকূল বিকল্প/মোট বিকল্প = ৪/৫
একইভাবে জনির সঠিক উত্তর দেওয়ার সম্ভাবনার মাত্রা = অনুকূল বিকল্প/মোট বিকল্প = ৩/৪
অতএব, দু'জনের যৌথভাবে সঠিক উত্তর দেওয়ার সম্ভাবনা = ৪/৫ × ৩/৪= ৩/৫

ঘ. দৃশ্যকল্প ২ এ প্রথম ও দ্বিতীয় স্তবকে যথাক্রমে সম্ভাব্যতা ও আকস্মিকতার দৃষ্টান্ত পরিলক্ষিত হয়। নিচে উভয় বিষয়ের পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হলো-
যে ঘটনার নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না, আবার ঘটনাটি অনিশ্চিত তাও বলা যায় না তাকে সম্ভাব্য ঘটনা বলে। সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ঘটনার কার্যকারণ নিয়ম সম্পর্কে আমাদের আংশিক জ্ঞান থাকে। এ কারণে সম্ভাবনাকে ঘটনার নিশ্চয়তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যবর্তী অবস্থা বলা হয়। অন্যদিকে, কার্যকারণ সম্পর্কবিহীন অপ্রত্যাশিত বা হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে আকস্মিকতা বলে। আকস্মিকতার ক্ষেত্রে ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পূর্ণই আমাদের অজানা থাকে। তাই এরূপ ঘটনার যৌক্তিক কারণ নির্ণয় করা যায় না।
সম্ভাবনা ও আকস্মিকতার মধ্যে উল্লেখিত অমিল থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে মিল রয়েছে। কারণ উভয় ক্ষেত্রেই ঘটনার কার্যকারণ সম্পর্ক আমাদের অজানা থাকে। পাশাপাশি উভয় মতবাদ বহুকারণবাদজনিত সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে। এ কারণে বাস্তব জীবনে সম্ভাবনা ও আকস্মিকতা উভয় বিষয়েরই প্রভাব লক্ষ করা যায়।
পরিশেষে বলা যায়, সম্ভাবনা ও আকস্মিকতা দুটি ভিন্ন বিষয়। সম্ভাবনার ক্ষেত্রে কোনো ঘটনা সম্পর্কে আংশিক জ্ঞান থাকলেও আকস্মিকতার ক্ষেত্রে তা একেবারেই থাকে না। পাশাপাশি বিভিন্ন ঘটনার সম্ভাবনা পরিমাপযোগ্য হলেও আকস্মিকতা পরিমাপের কোনো নিয়ম নেই। এসব কারণে দৃশ্যকল্প ২ এ প্রথম ও দ্বিতীয় স্তবকে উল্লেখিত ঘটনা দুটির মধ্যে সাদৃশ্যের চেয়ে বৈসাদৃশ্যই বেশি লক্ষ করা যায়।
Share:

0 Comments:

Post a Comment