HSC Logic 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.
উচ্চ মাধ্যমিক
যুক্তিবিদ্যা
প্রথম পত্র
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৬ষ্ঠ অধ্যায়
HSC Logic 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download
১. পরমাণু শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে ক ও খ অন্যতম। বিশ্ব
মানবতা ও শান্তির প্রতি তাদের নজর কম। অথচ পরমাণু অস্ত্রের যে কোনো ব্যবহার যে মানবিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তার দিকে দৃষ্টি ফেরাতে ইন্ট্যারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবলিশ নিউক্লিয়ার উইপেনস (ICAN) কাজ করছে। পরমাণু শক্তিধর দেশগুলোর পরমাণু অস্ত্র ধ্বংসের জন্য প্রচারণা ও মধ্যস্থতার কারণে ICAN ২০১৭ সালে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।
ক. অমাধ্যম অনুমান কী?
খ. চতুষ্পদী অনুপপত্তি বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়ের সাথে তোমার পাঠ্যসূচির কোন বিষয়ের মিল রয়েছে? বিশ্লেষণ করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শান্তি স্থাপনে (আইকান) ICAN-এর ভূমিকা পাঠ্যপুস্তকের আলোকে ব্যাখ্যা করো।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে অবরোহ অনুমানে একটি মাত্র আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয় তাকে অবরোহ অনুমান বলে।
খ. সহানুমানে চারটি পদের ব্যবহারজনিত সমস্যাকে চতুষ্পদী অনুপপত্তি (Fallacy of Four Terms) বলে।
একটি সহানুমানে তিনটি পদ থাকে এবং প্রতিটি পদ দুই বার করে ব্যবহৃত হয়। সহানুমানে কোনোভাবেই তিনটির অধিক পদ ব্যবহার করা যায় না। যদি কোনো কারণে সহানুমানে তিনটির অধিক পদ ব্যবহার করা হয় তাহলে সিদ্ধান্ত ত্রুটিপূর্ণ হয়। সহানুমানের সিদ্ধান্তের এই ত্রুটিকে চতুষ্পদী অনুপপত্তি বলে।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়ের সাথে পাঠ্যবইয়ের সহানুমানের মিল রয়েছে।
সহানুমান এক বিশেষ প্রকার মাধ্যম অবরোহ অনুমান। এই প্রকার অনুমানে দুটি আশ্রয়বাক্য থাকে। আর ঐ দুটি আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি অনিবার্যভাবে অনুমিত হয়। তাই বলা যায়, যে মাধ্যম অবরোহ অনুমানে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি অনিবার্যভাবে অনুমিত হয় তাকে সহানুমান বলে। যেমন-
সকল মানুষ হয় সুন্দর
মিরাজ হয় একজন মানুষ
অতএব, মিরাজ হয় সুন্দর
দৃষ্টান্তটিতে দেখা যাচ্ছে যে, এখানে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি অনিবার্যভাবে অনুমিত হয়েছে। তাই দৃষ্টান্তটি সহানুমানের একটি দৃষ্টান্ত। সহানুমান অবরোহ অনুমান বিধায় এর আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত বেশি ব্যাপক হয় না এবং এর লক্ষ্য থাকে আকারগত সত্যতা প্রতিষ্ঠা করা।
উদ্দীপকে উল্লেখিত ক ও খ দেশের সাথে (আইকান) ICAN-এর অনিবার্য সম্পর্ক রয়েছে। যা সহানুমানের অনুরূপ।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শান্তি স্থাপনে (আইকান) ওঈঅঘ-এর ভূমিকা পাঠ্যবইয়ের সহানুমানে মধ্যপদের ভূমিকাকে নির্দেশ করে।
একটি সহানুমানে তিনটি পদ থাকে। যথা- প্রধান পদ, অপ্রধান পদ এবং মধ্যপদ। সহানুমানে মধ্যপদ উভয় আশ্রয়বাক্যে থাকে কিন্তু সিদ্ধান্তে থাকে না। অথচ সিদ্ধান্ত স্থাপনের ক্ষেত্রে মধ্যপদ অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। সহানুমানে মধ্যপদ প্রধান আশ্রয়বাক্যে প্রধান পদের সাথে ব্যবহৃত হয়। আবার, অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে মধ্যপদ অপ্রধান পদের সাথে ব্যবহৃত হয়। সহানুমানে প্রধান ও অপ্রধান পদের সাথে ব্যবহৃত হয়ে মধ্যপদ প্রধান ও অপ্রধান আশ্রয়বাক্যের মধ্যে একটি অনিবার্য সম্পর্ক তৈরি করে। আর ঐ অনিবার্য সম্পর্কের ভিত্তিতে সহানুমানের সিদ্ধান্ত অনুমিত হয়। সহানুমানে মধ্যপদ মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করে।
উদ্দীপকে উল্লিখিত (আইকান) ICAN-এর ভূমিকাও মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা হিসেবে দেখা দিয়েছে। কেননা ICAN 'ক' ও 'খ' দুটি পরমাণু শক্তিকর দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করে শান্তি স্থাপনে ভূমিকা পালন করেছে। সুতরাং, ICAN-এর ভূমিকার মাধ্যমে সহানুমানে মধ্যপদের ভূমিকাই প্রকাশ পেয়েছে।
২. রিয়াজ ও ফেরদৌস ঢাকা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টেস্ট ম্যাচের ৫ম দিনের খেলা দেখছে। রিয়াজ ফেরদৌসকে বলল ‘‘যদি রোদ হয় তবে বাংলাদেশ জিতবে, রোদ হয়নি, অতএব বাংলাদেশ জিতবে না।" ফেরদৌস বলল, আমার নিকট প্রতীয়মান হচ্ছে, হয় বাংলাদেশ না হয় অস্ট্রেলিয়া বিজয় লাভ করবে। বাংলাদেশ বিজয় লাভ করবে, অতএব অস্ট্রেলিয়া বিজয় লাভ করবে না।
ক. প্রতিবর্তন
খ. অ যুক্তিবাক্যের সরল আবর্তন কি সম্ভব?
গ. উদ্দীপকে ফেরদৌসের বক্তব্যে কোন ধরনের সহানুমানের ইঙ্গিত রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে রিয়াজের বক্তব্যে যে অনুপপত্তির সৃষ্টি হয়েছে তা বিশ্লেষণ করো।
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে আশ্রয়বাক্যের অর্থ অপরিবর্তিত রেখেনগুণের পরিবর্তন করে এবং বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদকে বিধেয় হিসেবে গ্রহণ করে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয় তাকে প্রতিবর্তন বলে।
খ. সাধারণত অ যুক্তিবাক্যের সরল আবর্তন করা যায় না।
কেননা অ যুক্তিবাক্যের সরল আবর্তন করতে গেলে এর অব্যাপ্য বিধেয় পদ উদ্দেশ্য পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং ব্যাপ্য হয়ে যায়। যা আবর্তনের নিয়ম বিরোধী। তাই এ যুক্তিবাক্যের সরল আবর্তন সাধারণভাবে আবর্তনের নিয়ম অনুযায়ী সম্ভব নয়। কিন্তু বিশেষ এক প্রকার অ যুক্তিবাক্য আছে যার সরল আবর্তন সম্ভব। যেমন-
অ- বাংলাদেশের রাজধানী হয় ঢাকান্ড (আবর্তনীয়)
অতএব, ঢাকা হয় বাংলাদেশের রাজধানী- (আবর্তিত)
উপরের উদাহরণের অ যুক্তিবাক্যটির উদ্দেশ্য ও বিধেয় একই ব্যক্ত্যর্থকে নির্দেশ করে। এই জাতীয় অ বাক্যের সরল আবর্তন সম্ভব।
গ. উদ্দীপকের ফেরদৌসের বক্তব্যে বৈকল্পিক নিরপেক্ষ সহানুমানের ইঙ্গিত রয়েছে।
মিশ্র সহানুমানের একটা প্রকারভেদ হলো বৈকল্পিক নিরপেক্ষ সহানুমান। যে মিশ্র সহানুমানের প্রধান আশ্রয়বাক্যটি একটি বৈকল্পিক যুক্তিবাক্য, অপ্রধান আশ্রয়বাক্যটি এবং সিদ্ধান্তটি একটি নিরপেক্ষ যুক্তিবাক্য তাকে বৈকল্পিক নিরপেক্ষ সহানুমান বলে। অর্থাৎ বৈকল্পিক নিরপেক্ষ সহানুমানে একটি বৈকল্পিক ও একটি নিরপেক্ষ আশ্রয়বাক্য থেকে একটি নিরপেক্ষবসিদ্ধান্ত অনুমিত হয়। যেমন-
সে হয় ধার্মিক না হয় অধার্মিক
সে হয় ধার্মিক
অতএব, সে নয় অধার্মিক।
উপরের যুক্তিটি বৈকল্পিক নিরপেক্ষ সহানুমানের একটি যুক্তি। উদ্দীপকের ফেরদৌস যে বক্তব্য প্রদান করেছে সেটি হলো-
হয় বাংলাদেশ না হয় অস্ট্রেলিয়া বিজয় লাভ করবে
বাংলাদেশ বিজয় লাভ করবে
অতএব, অস্ট্রেলিয়া বিজয় লাভ করবে না।
এই যুক্তিটিতে দেখা যাচ্ছে যে, এখানে একটি বৈকল্পিক ও একটি নিরপেক্ষ যুক্তিবাক্য থেকে একটি নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত অনুমিত হয়েছে। তাই এটি বৈকল্পিক নিরপেক্ষ সহানুমানের একটি দৃষ্টান্ত।
ঘ. উদ্দীপকের রিয়াজের বক্তব্যে প্রাকল্পিক নিরপেক্ষ সহানুমানের পূর্বপ অস্বীকৃতিমূলক অনুপপত্তি ঘটেছে।
প্রাকল্পিক নিরপেক্ষ সহানুমানের দ্বিতীয় নিয়ম অনুযায়ী অনুগকে অস্বীকার করে পূর্বগকে অস্বীকার করা যায় কিন্তু বিপরীতক্রমে নয়। অর্থাৎ, পূর্বগকে অস্বীকার করে অনুগকে অস্বীকার করা যায় না। যদি এই নিয়ম লঙ্ঘন করে কোনো প্রাকল্পিক নিরপেক্ষ সহানুমানে সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় তাহলে সিদ্ধান্ত ত্রুটিপূর্ণ হয়। সিদ্ধান্তের এই জুটিকে পূর্বগ অস্বীকৃতিমূলক অনুপপত্তি বলে।
উদ্দীপকের ফেরদৌসের বক্তব্যটি হলো-
যদি রোদ হয় তবে বাংলাদেশ জিতবে
রোদ হয়নি।
অতএব, বাংলাদেশ জিতবে না
যুক্তিটির ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, এখানে পূর্বৰ&গকে অস্বীকার করে অনুগকে অস্বীকার করা হয়েছে। অর্থাৎ, এখানে প্রাকল্পিক নিরপেক্ষ সহানুমানের দ্বিতীয় নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই কারণে যুক্তিটিতে পূর্বগ অস্বীকৃতি মূলক অনুপপত্তি ঘটেছে।
পরিশষে বলা যায় যে, প্রাকল্পিক নিরপেক্ষ সহানুমানের ক্ষেত্রে কোনো যুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই এর নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। অন্যথায় যুক্তি বৈধ হবে না।
৩. যুক্তি-১:
কিছু মানুষ নয় সৎ।
অতএব, কিছু মানুষ হয় অসৎ।
যুক্তি-২:
সকল বাংলাদেশি হয় দেশপ্রেমিক।
রোজিনা হয় বাংলাদেশি।
অতএব, রোজিনা হয় দেশপ্রেমিক।
ক. আবর্তন কাকে বলে?
খ. 'T' যুক্তিবাক্যের প্রতি-আবর্তন সম্ভব নয় কেন?
গ. যুক্তি-১ কোন অনুমানকে নির্দেশ করে? বিশ্লেষণ করো।
ঘ. উদ্দীপকের অনুমানের আলোকে যুক্তি-১ ও যুক্তি-২ এর মধ্যকার পার্থক্য বিশ্লেষণ করো।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে অমাধ্যম অনুমানে (Immediate Inference) বিধিসঙ্গতভাবে কোনো আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্যের স্থলে বিধেয়কে আর বিধেয়ের স্থলে উদ্দেশ্যকে বসিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় তাকে আবর্তন (Conversion) বলে।
খ. বাক্যের প্রতি আবর্তন হয় ঙ বাক্যে। কিন্তু O বাক্যের আবর্তন সম্ভব নয়। তাই বাক্যের প্রতি আবর্তনও সম্ভব নয়।
'T' বাক্য একটি বিশেষ সদর্থক যুক্তিবাক্য। আবর্তিত করার ক্ষেত্রে ও বাক্যকে নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে প্রতিবর্তন করলে পাওয়া যাবে একটি বিশেষ নঞর্থক যুক্তিবাক্য, অর্থাৎ O বাক্য। কিন্তু আবর্তনের চতুর্থ নিয়ম অনুযায়ী ব্যাপ্যতা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ঙ বাক্যকে আবর্তন করা যায় না। এ পরিপ্রেক্ষিতেই ও-বাক্যের প্রতি আবর্তন করা সম্ভব হয় না।
গ. যুক্তি-১ প্রতিবর্তনকে (Obversion) নির্দেশ করে।
যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে আশ্রয়বাক্যের অর্থ অপরিবর্তিত রেখে গুণের পরিবর্তন করে এবং বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদকে সিদ্ধান্তের বিধেয় হিসেবে গ্রহণ করা হয় তাকে প্রতিবর্তন বলে। যেমন- অ- সকল মানুষ হয় মরণশীল। অতএব, ঊ-কোনো মানুষ নয় অমর।
এখানে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের অর্থগত কোনো পার্থক্য নেই। উভয়ই একই অর্থ প্রকাশ করে। আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণও অপরিবর্তিত আছে। কেননা উভয়ই সার্বিক যুক্তিবাক্য। কিন্তু গুণের দিক থেকে আশ্রয়বাক্য সদর্থক এবং ধান্ত নঞর্থক। অন্যদিকে, আশ্রয়বাক্যের বিধেয় পদ 'মরণশীল' এর বিরুদ্ধ পদ 'অমর' পদটিকে সিদ্ধান্তের বিধেয় করা হয়েছে। তাই এটি প্রতিবর্তনের দৃষ্টান্ত।
উদ্দীপকের যুক্তি-১ এ বলা হয়েছে-১ কিছু মানুষ নয় সৎ। অতএব, কিছু মানুষ হয় অসৎ। এটি প্রতিবর্তনের একটি বৈধ দৃষ্টান্ত।
ঘ. উদ্দীপকে যুক্তি-১ অমাধ্যম অনুমান এবং যুক্তি-২ মাধ্যম অনুমানকে নির্দেশ করে।
অমাধ্যম অনুমানে একটিমাত্র আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয়। যেমন- উদ্দীপকের যুক্তি-১ এ বলা হয়েছে, কিছু মানুষ নয় সৎ।
অতএব, কিছু মানুষ হয় অসৎ।
কিন্তু মাধ্যম অনুমানে একাধিক আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয়। যেমনত উদ্দীপকের যুক্তি-২ এ বলা হয়েছে, সকল বাংলাদেশি হয় দেশপ্রেমিক, রোজিনা হয়নবাংলাদেশি। অতএব, রোজিনা হয় দেশপ্রেমিক।
অমাধ্যম অনুমানের সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্যেরই অনেকটা পরিবর্তিত বা আংশিক রূপ। কিন্তু মাধ্যম অনুমানে একাধিক আশ্রয়বাক্যের তুলনার ভিত্তিতে একটি নতুন সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠিত হয়। অমাধ্যম অনুমান আশ্রয়বাক্যেরই অনেকটা পুনরাবৃত্তি বিধায় অনুমান হিসেবে এর মূল্য নগণ্য। পক্ষান্তরে, মাধ্যম অনুমান নতুন বা অজানা তথ্য প্রদান করে তাই অনুমান হিসেবে এর মূল্য বা গুরুত্ব অপরিসীম।
সুতরাং, অমাধ্যম অনুমান এবং মাধ্যম অনুমান একে অপরের থেকে আলাদা।
৪. দৃশ্যকল্প-১:
সকল মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব।
অতএব, কিছু বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব হয় মানুষ।
দৃশ্যকল্প-২:
সকল কবি হয় শিক্ষিত।
অতএব, কোন কবি নয় অ-শিক্ষিত
ক. অমাধ্যম অনুমান কাকে বলে?
খ. সহানুমান অবৈধ হয় কেন?
গ. উদ্দীপকে দৃশ্যকল্প-১ এ অবরোহ অনুমানের কোন বিষয়টির প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. পাঠ্যপুস্তকের আলোকে দৃশ্যকল্প-১ ও ২ এর মধ্যকার পার্থক্য বিশ্লেষণ করো।
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে অবরোহ অনুমানে একটিমাত্র আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি সরাসরি অনুমিত হয়, তাই অমাধ্যম অনুমান (Immediate Inference)।
খ. সহানুমানের নিয়ম লঙ্ঘন করা হলে তা অবৈধ হয়।
সহানুমান সঠিকভাবে গঠন করার ক্ষেত্রে বেশকিছু নিয়ম রয়েছে। এই নিয়মগুলো পূরণ করা না হলে সহানুমান অবৈধ হয় এবং অনুপত্তির উদ্ভব ঘটে। যেমনত সহানুমানের প্রথম নিয়ম অনুযায়ী সহানুমানে তিনটি পদ থাকতে হবে। কিন্তু এই নিয়ম লঙ্ঘন করে যদি চারটি পদ অন্তর্ভুক্ত করা হয় সেক্ষেত্রে সহানুমানে চতুষ্পদী অনুপত্তির সৃষ্টি হবে।
গ. উদ্দীপকের দৃশ্যকল্প-১ এ অবরোহ অনুমানের আবর্তনের বিষয়টির প্রতিফলন ঘটেছে।
যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে গুণের পরিবর্তন না করে আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদকে ন্যায়সংগতভাবে স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয় তাকে আবর্তন বলে। যেমন- অ- সকল শিক্ষক হন শিক্ষিত মানুষ, অতএব, ও-কিছু শিক্ষিত মানুষ হন শিক্ষক।
এ আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য পদ 'শিক্ষক' সিদ্ধান্তে বিধেয় পদ হিসেবে এবং আশ্রয়বাক্যের বিধেয় পদ ‘‘শিক্ষিত মানুষ' সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। অন্যদিকে, আশ্রয়বাক্যর গুণ সিদ্ধান্তে অপরিবর্তিত আছে।
উদ্দীপকে, দৃশ্যকল্প-১ এ বলা হয়েছেত সকল মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব। অতএব, কিছু বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীৰ হয় মানুষ। এখানে আবর্তনের সকল নিয়ম মেনে চলায় এটি আবর্তনের একটি বৈধ দৃষ্টান্ত।
ঘ. দৃশ্যকল্প-১ আবর্তন এবং দৃশ্যকল্প-২ প্রতিবর্তনকে নির্দেশ করে এদের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান।
যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে গুণের পরিবর্তন না করে আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদকে ন্যায়সঙ্গতভাবে স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয় তাকে আবর্তন বলে। যেমন- দৃশ্যকল্প-১ এ বলা হয়েছে,
সকল মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব।
অতএব, কিছু বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব হয় মানুষ।
অন্যদিকে, যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে আশ্রয়বাক্যের অর্থ অপরিবর্তিত রেখে গুণের পরিবর্তন করে এবং বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদকে বিধেয় হিসেবে গ্রহণ করে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয় তাকে প্রতিবর্তন বলে। যেমন- দৃশ্যকল্প-২ এ বলা হয়েছে,
সকল কবি হয় শিক্ষিত।
অতএব, কোনো কবি নয় অ-শিক্ষিত।
আবার আবর্তনের আশ্রয়বাক্যকে আবর্তনীয় এবং সিদ্ধান্তকে আবর্তিত বলে। অপরপক্ষে, প্রতিবর্তনের আশ্রয়বাক্যকে প্রতিবর্তনীয় এবং সিদ্ধান্তকে প্রতিবর্তিত বলে।
সুতরাং, আবর্তন এবং প্রতিবর্তন উভয়ই অমাধ্যম অনুমান হলেও প্রকৃতিগতভাবে এরা পরস্পর সম্পূর্ণ ভিন্ন।
৫. নিচের যুক্তিসমূহ থেকে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
উদ্দীপক-১
কোনো ঘ নয় গ
কোনো গ নয় ঘ
উদ্দীপক-২
কিছু ঘ নয় গ
কিছু গ নয় ঘ
ক. আবর্তন কী?
খ. আবর্তনে কি সব সময় উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের স্থান পরিবর্তন হয়? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপক-২ সঠিক কি না? তোমার মতের পক্ষে যুক্তি দাও।
ঘ. উদ্দীপক-১ ও উদ্দীপক-২ এর মধ্যকার সম্পর্ক তোমার পাঠ্য বইয়ের যে দিকটির নির্দেশ দেয়, তা ব্যাখ্যা করো।
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে অমাধ্যম অনুমানে বিধিসঙ্গতভাবে কোনো আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্যের স্থলে বিধেয়কে আর বিধেয়ের স্থলে উদ্দেশ্যকে গ্রহণ করে সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয় তাকে আবর্তন বলে।
খ. হ্যাঁ, আবর্তনে সব সময় উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের স্থান পরিবর্তন হয়।
আবর্তনের নিয়ম হলো আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য পদ সিদ্ধান্তে এসে বিধেয় পদ হবে। আবার আশ্রয়বাক্যের বিধেয় পদ সিদ্ধান্তে এসে উদ্দেশ্য হবে। কিন্তু তাদের গুণের কোনো পরিবর্তন হবে না। সুতরাং চূড়ান্ত বিচারে দেখা যায় আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় সিদ্ধান্তে এসে সব সময় স্থান পরিবর্তন করে।
গ. উদ্দীপক-২ সঠিক নয়।
আবর্তনের নিয়ম অনুযায়ী যুক্তিবাক্যকে আবর্তন করা সম্ভব নয়। O- যুক্তিবাক্য একটি নঞর্থক যুক্তিবাক্য হওয়াতে এর সিদ্ধান্তও নঞর্থক হবে। অর্থাৎ ঙ অথবা ঊ যুক্তিবাক্য হবে। কিন্তু আমরা জানি 0- যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য পদ অব্যাপ্য এবং বিধেয় পদ ব্যাপ্য এবং ঊ- যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদই ব্যাপ্য। এখন আবর্তনের নিয়ম অনুযায়ী যদি কোনো বাক্যের আবর্তন করলে তা আবর্তনের চতুর্থ নিয়মের বিরোধী হয়। অর্থাৎ আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য পদ অব্যাপ্য সিদ্ধান্তে এসে হলেও ব্যাপ্য হয়ে যায়। যা সহানুমানের নিয়ম বিরোধী।
উদ্দীপক-২ O-যুক্তিবাক্যের আবর্তনের একটি দৃষ্টান্ত। এখানে যুক্তিবাক্যকে আবর্তন করে সিদ্ধান্তে যুক্তিবাক্য গঠন করা হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি, O যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য পদ অব্যাপ্য এবং বিধেয় পদ ব্যাপ্য। কিন্তু উদ্দীপকের অব্যাপ্য উদ্দেশ্য পদ 'ঘ' সিদ্ধান্তে এসে ব্যাপ্য হয়ে গেছে। যা আবর্তনের নিয়মের পরিপন্থি। সুতরাং উদ্দীপক-২ একটি ভুলযুক্তি।
ঘ. উদ্দীপক-১ ও উদ্দীপক-২ এর মধ্যকার সম্পর্ক আমার পাঠ্য বইয়ের আবর্তনের নির্দেশ দেয়। যেখানে উদ্দীপক-১ হলো বৈধ আবর্তন প্রক্রিয়া এবং উদ্দীপক-২ হলো অবৈধ আবর্তন প্রক্রিয়া।
আবর্তন একটি অমাধ্যম অনুমান। যেখানে একটি আশ্রয়বাক্যের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত গঠন করা হয়। আবর্তনে আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ সিদ্ধান্তে এসে পরস্পর স্থান পরিবর্তন করে। যার ফলে সকল বাক্যে আবর্তন সম্ভব নয়। অর্থাৎ A, E, I যুক্তিবাক্যের আবর্তন হলেও যুক্তিবাক্যের আবর্তন সম্ভব নয়।
উদ্দীপক ১ ও ২ উভয় যুক্তিবাক্যেই আবর্তনের চেষ্টা করার কারণে উভয়ই একটি অমাধ্যম অনুমান। যার কারণে উভয় উদ্দীপকেই একটা আশ্রয়বাক্যের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত গঠন করা হয়েছে। উদ্দীপক-১ এর আবর্তন প্রক্রিয়াকে আমরা বৈধ বলতে পারি। কারণ এটি E যুক্তিবাক্য এবং আবর্তনের নিয়মানুযায়ী E যুক্তিবাক্য থেকে E যুক্তিবাক্যে আবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু উদ্দীপক-২ এর আশ্রয়বাক্য O যুক্তিবাক্য আমরা জানি যুক্তিবাক্যের আবর্তন সম্ভব নয়। কারণ আবর্তনের চতুর্থ নিয়ম অনুযায়ী আশ্রয়বাক্যের কোনো অব্যাপ্য পদকে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য করা যাবে না। কিন্তু উদ্দীপক-২ এ O যুক্তিবাক্যের আবর্তন করার ফলে আশ্রয়বাক্যের অব্যাপ্য পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়ে গেছে। যার ফলে এটাকে অবৈধ আবর্তনের দৃষ্টান্ত বলা যায়।
E যুক্তিবাক্যের আবর্তন সম্ভব হলেও যুক্তিবাক্যের আবর্তন কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। যুক্তিবাক্যের আবর্তন করলে আশ্রয়বাক্যের অব্যাপ্য পদ সিদ্ধান্তে এসে ব্যাপ্য হয়ে যায়। উদ্দীপক- ১ এর দৃষ্টান্তে আবর্তনের নিয়ম পালন করা হলেও উদ্দীপক-২ এর আবর্তনের নিয়ম সঠিকভাবে পালন করা হয়নি। তাই উদ্দীপক-১ এর দৃষ্টান্ত বৈধ হলেও উদ্দীপক-২ এর দৃষ্টান্ত অবৈধ।
৬. দৃশ্যকল্প-১:
সকল জবা হয় ফুল
অতএব, ?
দৃশ্যকল্প-২:
কোনো অসৎ লোক নয় বিশ্বাসী
অতএব, কোনো বিশ্বাসী লোক নয় অসৎ।
ক. আবর্তনের একটি নিয়ম লেখো।
খ. আবর্তনে ‘শুধুমাত্র একটি আশ্রয়বাক্য থাকে কি না বুঝিয়ে লেখো।
গ. দৃশ্যকল্প-১ (?) স্থানে আবর্তিত রূপটি কী হবে?
ঘ. দৃশ্যকল্প-২ এর কোন পদটি ব্যাপ্য হয়েছে এবং কেন ব্যাখ্যা করো।
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আবর্তনের একটি নিয়ম হলো আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য পদ সিদ্ধান্তের বিধেয় হবে।
খ. আবর্তন অমাধ্যম অনুমান বিধায় এতেত 'শুধুমাত্র একটি আশ্রয়বাক্য থাকে।
যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে গুণের পরিবর্তন না করে আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় 'পদকে ন্যায়সংগতভাবে স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয়, তাকে আবর্তন বলে। যেমন-
A- সকল মানুষ হয় মরণশীল
I- কিছু মরণশীল জীব হয় মানুষ।
উপর্যুক্ত যুক্তিটিতে ব্যবহৃত আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয়পদকে ন্যায় সংগতভাবে স্থানান্তর করে, গুণ অপরিবর্তিত রেখে সিদ্ধান্ত অনুমান করা হয়েছে। আর যুক্তিটিতে একটি আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয়েছে। যা অমাধ্যম অনুমান হিসেবে আবর্তনকে নির্দেশ করে।
গ. দৃশ্যকল্প-১ (?) স্থানে আবর্তিত রূপটি হবেত কিছু ফুল হয় জবা।
যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে গুণের পরিবর্তন না করে আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদকে বিধি সংগতভাবে স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয় তাকে আবর্তন বলে। আবর্তনের আশ্রয়বাক্যকে আবর্তনীয় এবং সিদ্ধান্তকে আবর্তিত বলা হয়। আবর্তনের নিয়ম অনুসারে অ বাক্য আবর্তন করলে ও বাক্য পাওয়া যায়
উদ্দীপকে দেওয়া আছে, সকল জবা হয় ফুল। এই যুক্তিবাক্যটি হলো অ- যুক্তিবাক্য। আবর্তিত রূপটি দাঁড়াবে-
A- সকল জবা হয় ফুল (আবর্তনীয়)
I- কিছু ফুল হয় জবা (আবর্তিত)
আবর্তনের নিয়মানুযায়ী আবর্তনীয়ের উদ্দেশ্য পদ আবর্তিতের বিধেয় এবং বিধেয় পদ উদ্দেশ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আর গুণ অপিরিবর্তিত রয়েছে।
ঘ. দৃশ্যকল্প- ২ এর উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদই ব্যাপ্য।
যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদকে বিধিসংগতভাবে স্থানান্তর করে, গুণ অপরিবর্তিত রেখে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয় তাকে আবর্তন বলে। ব্যাপ্যতার নিয়ম অনুযায়ী সার্বিক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য পদ ব্যাপ্য কিন্তু বিধেয় পদ অব্যাপ্য। আবার নঞর্থক যুক্তিবাক্যের বিধেয় পদ ব্যাপ্য কিন্তু উদ্দেশ্য পদ অব্যাপ্য। আর ঊ যুক্তিবাক্য সার্বিক নঞর্থক যুক্তিবাক্য হওয়ায় এর উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদই ব্যাপ্য।
দৃশ্যকল্প-২ আবর্তন হলো অনুমানের দৃষ্টান্ত। এতে ব্যবহৃত বাক্য দুটি হলো সার্বিক নঞর্থক বা E-যুক্তিবাক্য। ব্যাপ্যতার নিয়ম অনুযায়ী সার্বিক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্যপদ ব্যাপ্য নঞর্থক যুক্তিবাক্যের বিধেয়পদ ব্যাপ্য। E-যুক্তিবাক্য একই সাথে সার্বিক ও নঞর্থক যুক্তিবাক্য হওয়ায় উপর্যুক্ত অনুমানে ব্যবহৃত উদ্দেশ্য পদ (অসৎ লোক) এবং বিধেয় পদ (বিশ্বাসী) ব্যাপ্য হয়েছে।
পরিশেষে বলা যায়, আবর্তনের নিয়ম অনুযায়ী আশ্রয়বাক্যের অব্যাপ্য পদকে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য করা যাবে না। দৃশ্যকল্প-২ এর ব্যবহৃত যুক্তিবাক্যটি ঊ যুক্তিবাক্য হওয়া তা যথার্থভাবে পালিত হয়েছে।
৭. কোনো ফুল নয় পাতা
কিছু পাতা হয় শাক
অতএব, কিছু শাক নয় ফুল।
ক. অবরোহ অনুমান বলতে কী বোঝায়?
খ. অব্যাপ্য মধ্যপদের অনুপপত্তি কীভাবে ঘটে?
গ. উদ্দীপকে নির্দেশিত 'পাতা' পদের প্রকৃতি সহানুমানের দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সহানুমানের আলোকে উদ্দীপকে নির্দেশিত ফুল' ও 'শাক' পদের তুলনামূলক আলোচনা কর।
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে অনুমান প্রক্রিয়ায় এক বা একাধিক আশ্রয়বাক্য থেকে তার চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম ব্যাপক বা সমান ব্যাপক সিদ্ধান্ত অনুমতি হয় তাকে অবরোহ অনুমান বলে।
খ. সহানুমানে মধ্যপদ অন্তত একবার ব্যাপ্য না হলে অব্যাপ্য মধ্যপদের অনুপপত্তি ঘটে। সহানুমানের নিয়ম অনুসারে, মধ্যপদকে অন্তত একবার ব্যাপ্ত হতে হবে। ঐ নিয়ম লঙ্ঘন করলে অব্যাপ্য মধ্যপদজনিত অনুপপত্তি ঘটে যেমন-
সকল বিড়াল হয় প্রাণী
সকল বাঘ হয় প্রাণী
অতএব, সকল বাঘ হয় বিড়াল।
যুক্তিবিদ্যাতে 'প্রাণী মধ্যপদটি উভয় আশ্রয়বাক্যেই অব্যাপ্য যা অব্যাপ্য মধ্যপদজনিত অনুপপত্তি নির্দেশ করে।
গ. উদ্দীপকে নির্দেশিত 'পাতা' পদটি সহানুমানের নিয়মানুসারে মধ্যপদকে নির্দেশ করে।
সহানুমানে দুটি আশ্রয়বাক্য পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হয় মধ্যপদের মধ্যস্থতার ফলে। প্রাথমিক অবস্থায় প্রধান আশ্রয়বাক্য ও অপ্রধান আশ্রয়বাক্যের মধ্যে কোনো সম্বন্ধ থাকে না। অর্থাৎ একে অপরের সাথে পুরোপুরি সম্পর্কহীন অবস্থায় থাকে। পরবর্তীতে প্রধান আশ্রয়বাক্যে প্রধান পদের সাথে মধ্যপদের সম্বন্ধ স্থাপিত হয়। আবার অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে অপ্রধান পদের সাথে মধ্যপদের সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর ফলে প্রধান অপ্রধান আশ্রয়বাক্য দুটোর মধ্যে একটা অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
উদ্দীপকে 'পাতা' পদটি 'শাক' ও ফুলের সম্পর্ক নির্ণয়ে মধ্যপদের ভূমিকা পালন করে এবং সিদ্ধান্তে পদটি অনুপস্থিত। তাই 'পাতা' পদটি মধ্যপদ হিসেবে বিবেচিত।
ঘ. উদ্দীপকে ফুল সহানুমানের প্রধান পদকে এবং শাক অপ্রধান পদকে নির্দেশ করে।
যেকোনা সহানুমানে তিনটি যুক্তিবাক্য থাকে। এদের মধ্যে দুটি আশ্রয়বাক্য এবং তৃতীয়টি হলো সিদ্ধান্ত, যা আশ্রয়বাক্যে দুটি থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়। সহানুমানের সিদ্ধান্তের বিধেয় পদকে প্রধান পদ বলে। এই পদটি প্রধান আশ্রয়বাক্যের মধ্যপদের সাথে সংযুক্ত। মধ্যপদের মধ্যস্থতায়বএই পদটি শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তে এসে অপ্রধান পদের সাথে সম্পর্ক তৈরিবকরে। আবার সহানুমানের সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্যকে বলা হয় অপ্রধান পদ। এই পদটি অপ্রধান আশ্রয়বাক্যের মধ্যপদের সাথে যুক্ত হয়। মধ্যপদের এই পদটি সিদ্ধান্তে এসে প্রধান পদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে। যেমন-
সকল মানুষ হয় মরণশীল
সকল কবি হয় মানুষ
অতএব, সকল কবি হয় মরণশীল।
এখানে মরণশীল প্রধান পদ এবং সকল কবি অপ্রধান পদ। এই দুই পদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্তের বিধেয় হলো প্রধান পদ এবং উদ্দেশ্য হলো অপ্রধান পদ।
উদ্দীপকে ফুল এবং শাক সাহেব যথাক্রমে প্রধান পদ এবং অপ্রধান পদের ভূমিকা পালন করেন। সুতরাং, প্রধান পদ ও অপ্রধান পদ হিসেবে ফুল এবং শাকের মধ্যে তুলনাযোগ্য সম্পর্ক বিদ্যমান।
৮. উদ্দীপক-১ :
সব তারকা হয় সৌরজগতের অংশ
অতএব, কিছু সৌরজগতের অংশ হয় তারকা।
উদ্দীপক-২ :
কিছু গাছ হয় ফলদায়ক
কিছু গাছ নয় অ-ফলদায়ক
অতএব, কিছু অ-ফলদায়ক নয় গাছ।
ক. আবর্তন কাকে বলে?
খ. E বাক্যের প্রতিবর্তন কেন অ বাক্যে করা হয়?
গ. উদ্দীপকে-১-এ যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানের নির্দেশনা রয়েছে নিয়মসহ তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপক-২-এ নির্দেশিত অমাধ্যম অনুমানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া কি যথার্থ হয়েছে বলে মনে কর?
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে অমাধ্যম অনুমানে বিধিসম্মতভাবে কোনো উদ্দেশ্যকে গ্রহণ করে সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয় তাকে আবর্তন বলে।
খ. 'E' বাক্য সার্বিক নঞর্থক যুক্তি বাক্যের প্রতিবর্তন হবে 'অ' বাক্যে বা সার্বিক সদর্থক যুক্তিবাক্যে।
পরিমাণ ঠিক রাখার জন্য উভয় বাক্যই হবে সার্বিক বাক্য। আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণের ভিন্নতার জন্য সিদ্ধান্ত হবে সদর্থক বাক্য। ফলে 'ঊ' বাক্যের প্রতিবর্তন হবে 'অ' বাক্যে। আর এই 'অ' বাক্যের বিধেয় হবে 'E' বাক্যের বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদ।
গ. উদাহরণ-১-এ আবর্তন নামক অমাধ্যম অবরোহ অনুমানের ইঙ্গিত রয়েছে।
যে অমাধ্যম অনুমানের আশ্রয়বাক্যের গুণ অপরিবর্তিত রেখে উদ্দেশ্য ও বিধেয়কে ন্যায়সঙ্গতভাবে স্থান পরিবর্তন করে যথাক্রমে সিদ্ধান্তের বিধেয় উদ্দেশ্যে পরিণত করে সিদ্ধান্ত টানা হয় তাকে আবর্তন বলে।
আবর্তনের নিয়ম চারটি। যথা-
১. আবর্তনীয়ের (আশ্রয়বাক্যের) উদ্দেশ্য পদ আবর্তিতে (সিদ্ধান্তে) এসে বিধেয় হয়।
২. আবর্তনীয়ের বিধেয় পদ আবর্তিতে এসে উদ্দেশ্য হয়।
৩. আবর্তনীয় এবং আবর্তিতের গুণ একই হবে; অর্থাৎ অবর্তনীয় সদর্থক বা নঞর্থক হলে আবর্তিতও সদর্থক বা নঞর্থক হবে।
৪. আবর্তনীয়ের কোনো অব্যাপ্য পদ সিদ্ধান্তে এসে ব্যাপ্য হতে পারবে না।
উদ্দীপকের উদাহরণ- ১-এ বলা হয়েছে-
আবর্তনীয় সব তারকা হয় সৌরজগতের অংশ
অতএব, আবর্তিত কিছু সৌরজগতের অংশ হয় তারকা
উপর্যুক্ত দৃষ্টান্তে প্রথম নিয়ম অনুযায়ী আবর্তনের উদ্দেশ্য পদ 'তারকা' আবর্তিতে এসে বিধেয় হয়েছে। দ্বিতীয় নিয়ম অনুসারে অবর্তনীয়ের বিধেয় পদ ‘সৌরজগত' আবর্তনে উদ্দেশ্য হয়েছে। তৃতীয় নিয়ম অনুযায়ী উভয় বাক্য সদর্থক হয়েছে। আবার চতুর্থ নিয়ম অনুযায়ী কোনো অবাপ্য পদই ব্যাপ্য হয়নি। সুতরাং উক্ত দৃষ্টান্তটি আবর্তন অমাধ্যম অবরোহ অনুমানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
ঘ. উদ্দীপক-২-এ নির্দেশিত অমাধ্যম অনুমানটি হলো প্রতি আবর্তন।
যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে আশ্রয়বাক্যের বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদকে সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হিসেবে ব্যবহার করে বিধেয়ের গুণের দিক থেকে ভিন্ন একটি সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় তাকে প্রতি আবর্তন বলে। এই অনুমান প্রক্রিয়াটি একটি যৌথ প্রক্রিয়া। এটা আবর্তন ও প্রতিবর্তনের একটি যৌথ রূপ।
উদ্দীপক-২-এর অনুমানটিকে আশ্রয়বাক্য একটি 'T' যুক্তিবাক্য। প্রতি আবর্তনের নিয়মগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, 'T' বাক্যের প্রতি-নআবর্তন হলো 'O' বাক্য। আর 'O' বাক্যের আবর্তন করা যায় না। কারণ 'O' বাকের আবর্তন করলে বাক্যের অবৈধ আবর্তন নামক অনুপপত্তি ঘটে। তাই 'T' বাক্যের প্রতি আবর্তন করা যৌক্তিক নিয়ম অনুসারে নয়। উদ্দীপক-২ অনুসারে,
ও কিছু গাছ হয় ফলদায়ক।
ও কিছু গাছ নয় অ-ফলদায়ক।
অবৈধ প্রতি-আবর্তিত: O-কিছু অ-ফলদায়ক নয় গাছ।
প্রতি আবর্তনের নিয়ম অনুসারে, অনুমানটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া যথার্থ নয়। নিয়মানুসারে, আশ্রয়বাক্যের অব্যাপ্য পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। অনুমানটিতে 'গাছ' পদটি আশ্রয়বাক্যে অব্যাপ্য হলেও তা অবৈধভাবে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়েছে। সুতরাং, অনুমানটি সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি। কারণ 'ঞ' বাক্যের প্রতি-আবর্তন সম্ভব নয়। ফলে যুক্তিটি যথার্থ নয়।
৯. শিক্ষক যুক্তিবিদ্যার ক্লাসে অনুমান সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। তিনি বললেন, জ্ঞানার্জনে অনুমানের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনুমানে কখনও একটি মাত্র আশ্রয় বাক্য হতে অথবা একাধিক আশ্রয় বাক্য হতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে।
ক. আবর্তন কি?
খ. প্রতিবর্তনের সিদ্ধান্তে বিধেয় পদটি কী রূপ হয়ে থাকে? উদাহরণ দাও।
গ. উদ্দীপকের আলোকে অমাধ্যম ও মাধ্যম অনুমানের মাঝে পার্থক্য দেখাও।
ঘ. 'O' যুক্তিবাক্যের আবর্তন সম্ভব নয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে অমাধ্যম অনুমানে বিধিসঙ্গতভাবে কোন আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্যের স্থলে বিধেয়কে আর বিধেয়ের স্থলে উদ্দেশ্যকে গ্রহণ করে সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয় তাকে আবর্তন বলে।
খ. প্রতিবর্তনের সিদ্ধান্তে বিধেয় পদটি বিরুদ্ধ বিধেয় পদ রূপে থাকে।
যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে একটি প্রদত্ত বাক্যের অর্থের কোন পরিবর্তন না ঘটিয়ে এর বিধেয়ের বিরুদ্ধপদকে সিদ্ধান্তের বিধেয় হিসেবে ব্যবহার করে, গুণ পরিবর্তন করে এবং উদ্দেশ্য পদের পরিমাণ অভিন্ন রেখে সিদ্ধান্ত গঠন করা হয়, তাকে প্রতিবর্তন বলে। যেমন-
কোন মানুষ নয় জত (প্রতিবর্তনীয়)
অতএব, সকল মানুষ হয় অজত (প্রতিবর্তিত)।
গ. যে অনুমানে একটি মাত্র আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয় তাকে অমাধ্যম অনুমান বলে। যে অনুমানে একাধিক আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয় তার নাম মাধ্যম অনুমান।
মাধ্যম ও অমাধ্যম অনুমানে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে প্রধানত আশ্রয়বাক্যের সংখ্যাগত পার্থক্য বিদ্যমান। অমাধ্যম অনুমানে একটিমাত্র আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত অনুমান করা হয়। অন্যদিকে, মাধ্যম অনুমানে দুই বা ততোধিক আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত অনুমান করা হয়। অমাধ্যম অনুমানে যুক্তিবাক্যের সংখ্যা দুই। অন্যদিকে, মাধ্যম অনুমানে যুক্তিবাক্যের সংখ্যা কমপক্ষে তিন। অমাধ্যম অনুমান খাঁটি নয়। এতে জানা থেকে অজানায় গমনের সুযোগ নেই। মাধ্যম অনুমান খাঁটি অনুমান। এতে জানা থেকে অজানায় গমনের সুযোগ আছে।
উদ্দীপকের আলোকে দেখা যায় যে, অমাধ্যম ও মাধ্যম অনুমানের মূল পার্থক্য হলো অমাধ্যম অনুমানের আশ্রয়বাক্য একটি। পক্ষান্তরে মাধ্যম অনুমানের আশ্রয়বাক্য একাধিক।
ঘ. 'O' যুক্তিবাক্যের আবর্তন সম্ভব নয়। কেন সম্ভব নয় নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো-
'O' যুক্তিবাক্যের আবর্তন সম্ভব নয়। 'O' যুক্তিবাক্য নঞর্থক বিধায় আবর্তন ও নঞর্থক যুক্তিবাক্যে করতে হবে। নঞর্থক যুক্তিবাক্য হলো 'ঊ' যুক্তিবাক্য ও 'O' যুক্তিবাক্য। এখন 'O' যুক্তিবাক্যের আবর্তন 'E' যুক্তিবাক্যে করা সম্ভব নয়। কেননা 'ঊ' যুক্তিবাক্য হলো একটি সার্বিক যুক্তিবাক্য। আবর্তন অবরোহ অনুমানের অন্তর্গত। তাই 'O' বাক্যের আবর্তিত 'E' বাক্য হতে পারে না। কারণ অবরোহ অনুমানের সিদ্ধান্ত কোনো অবস্থায় আশ্রয়বাক্য থেকে বেশি ব্যাপক হতে পারে না।
যাই হোক, এখন বাকি থাকে 'O' যুক্তিবাক্য। কিন্তু 'O' যুক্তিবাক্যের আবর্তন 'O' যুক্তিবাক্যে করা হলে আবর্তনের ব্যাপ্যতা সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়। কেননা 'O' বাক্যের বিধেয় পদ ব্যাপ্য কিন্তু উদ্দেশ্য পদ ব্যাপ্য নয়। কিন্তু আবর্তনের নিয়মানুসারে আমরা জানি, যে পদ আশ্রয় বাক্যে ব্যাপ্য নয় তা সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারে না। তাই দেখা যায়, 'O' যুক্তিবাক্যের কোনো আবর্তনই বৈধ হবে না।
উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে, 'O' যুক্তিবাক্যের আবর্তন সম্ভব নয়।
১০. আজাদ সাহেব ব্যাংক লোন নিয়ে বাড়ি তৈরি করতে চান। তখন তার বন্ধু জামাল তাকে একজন ব্যাংক ম্যানেজার এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। পরবর্তীতে আজাদ সাহেব ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে পরামর্শ করে বাড়ির কাগজপত্র তৈরি করে লোন তুলে বাড়ির কাজ সম্পন্ন করলেন।
ক. সহানুমান কী?
খ. সহানুমান কয়টি পদ থাকা আবশ্যক?
গ. উদ্দীপকে জামালের ভূমিকা সহানুমানের কোন পদটিকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে আজাদ সাহেব ও ব্যাংক ম্যানেজার এর অবস্থান সহানুমানের আলোকে আলোচনা করো।
১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে মাধ্যম অবরোহ অনুমানে সিদ্ধান্ত পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত দুটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে অনুমি হয় তাকে সহানুমান (Syllogism) বলে।
খ. সহানুমান একটি মাধ্যম অনুমান হওয়ায় এখানে তিনটি পদের প্রয়োজন হয়।
আমরা জানি, প্রতিটি সহানুমানে দুইটি আশ্রয়বাক্য ও একটি সিদ্ধান্ত অর্থাৎ মোট তিনটি যুক্তিবাক্য থাকে এবং প্রতিটি পদই দুই বার করে বসে। পদ তিনটি হলো- ক. প্রধান পদ খ. অপ্রধান পদ গ. মধ্যপদ। মাধ্যম অনুমান হওয়ার কারণে প্রতিটি পদ দুইবার ব্যবহৃত হয়। যেমন-
সকল মানুষ হয় মরণশীল প্রধান আশ্রয়বাক্য
রহিম হয় একজন মানুষ অপ্রধান আশ্রয়বাক্য
অতএব, রহিম হয় মরণশীল সিদ্ধান্ত
এখানে তিনটি যুক্তিবাক্যে 'মানুষ', 'মরণশীল' ও 'রহিম' প্রতিটি পদই দুইবার ব্যবহার হয়েছে। সুতরাং সহানুমানে তিনটি পদের প্রয়োজন হয়েছে।
গ. উদ্দীপকে জামালের ভূমিকা সহানুমানের মধ্যপদকে নির্দেশ করে।
সহানুমানে দুটি আশ্রয়বাক্য পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হয় মধ্যপদের মধ্যস্থতার ফলে। প্রাথমিক অবস্থায় প্রধান আশ্রয়বাক্য। অপ্রধান আশ্রয়বাক্যের মধ্যে কোনো সম্বন্ধ থাকে না। অর্থাৎ একে অপরের সাথে পুরোপুরি সম্পর্কহীন অবস্থায় থাকে। পরবর্তীতে প্রধান আশ্রয়বাক্যে প্রধান পদের সাথে মধ্যপদের সম্বন্ধ স্থাপিত হয়। আবার অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে অপ্রধান পদের সাথে মধ্যপদের সম্বন্দ্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। এর ফলে প্রধান ও অপ্রধান আশ্রয়বাক্য দুটোর মধ্যে একটা অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
উদ্দীপকে জামাল আজাদ ও ম্যানেজারের মধ্যে মধ্যপদের ভূমিকা পালন করেন। অর্থাৎ তার মধ্যস্থতার ফলেই আজাদ লোন তুলতে পারেন, যা সহানুমানের মধ্যপদের অনুরূপ।
ঘ. উদ্দীপকে আজাদ সাহেব সহানুমানের প্রধান পদকে এবং ব্যাংক ম্যানেজার অপ্রধান পদকে নির্দেশ করে।
যেকোনো সহানুমানে তিনটি যুক্তিবাক্য থাকে। এদের মধ্যে দুটি আশ্রয়বাক্য এবং তৃতীয়টি হলো সিদ্ধান্ত, যা আশ্রয়বাক্যে দুটি থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়। সহানুমানের সিদ্ধান্তের বিধেয় পদকে প্রধান পদ বলে। এই পদটি প্রধান আশ্রয়বাক্যের মধ্যপদের সাথে সংযুক্ত। মধ্যপদের মধ্যস্থতায় এই পদটি শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তে এসে অপ্রধান পদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে। আবার সহানুমানের সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্যকে বলা হয় অপ্রধান পদ। এই পদটি অপ্রধান আশ্রয়বাক্যের মধ্যপদের সাথে যুক্ত হয়। মধ্যপদের এই পদটি সিদ্ধান্তে এসে প্রধান পদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে। যেমনত
সকল মানুষ হয় মরণশীল
সকল কবি হয় মানুষ
অতএব, সকল কবি হয় মরণশীল।
এখানে মরণশীল প্রধান পদ এবং সকল কবি অপ্রধান পদ। এই দুই পদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্তের বিধেয় হলো প্রধান পদ এবং উদ্দেশ্য হলো অপ্রধান পদ।
সুতরাং উদ্দীপকে আজাদ সাহেব এবং ব্যাংক ম্যানেজার যথাক্রমে প্রধান পদ এবং অপ্রধান পদের ভূমিকা পালন করেন।
0 Comments:
Post a Comment