HSC Economics 2nd Paper Srijonshil question and answer pdf download.
উচ্চমাধ্যমিক
অর্থনীতি
দ্বিতীয় পত্র
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৭ম অধ্যায়
HSC Economics 2nd Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download
১. ইদানীং বাজারে জিনিসপত্রের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। যার ফলশ্রুতিতে অর্থনীতিতে নানা ধরনের প্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই যা নেতিবাচক। বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার আর্থিক ও রাজ নীতিসহ বিভিন্ন ধরনের নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণ করছে।
ক. ব্যাংক হার কী?
খ. মজুতদার ও চোরাচালান ক্ষতিকর কেন?
গ. উদ্দীপকে অর্থনীতির যে বিষয়টিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে তা বর্ণনা করো।
ঘ. বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের কোনো একক পদ্ধতি যথেষ্ট কি? উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রদেয় ঋণের জন্য ন্যূনতম সুদের হারই হলো ব্যাংক হার।
খ. একটি গতিশীল অর্থনীতির জন্য মজুতদার ও চোরাচালান ক্ষতিকর।
কারণ- মজুতদার একটি দেশের উৎপাদিত পণ্যের সম্পূর্ণ অংশ যোগান না দিয়ে জমিয়ে বা মজুত করে রাখে। এতে দেশে দ্রব্যসামগ্রীর যোগানের ঘাটতি। দেখা দেয়। এর ফলে মুদ্রাস্ফীতির সৃষ্টি হয় যা সাধারণ জনগণের ভোগান্তি বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে, চোরাচালানের ফলে দেশ থেকে মূল্যবান সম্পদ পাচার হয়ে যায়। অথচ এই মূল্যবান সম্পদ বৈধভাবে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করা যেত।
গ. উদ্দীপকে অর্থনীতির যে বিষয়টিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে, তা হলো মুদ্রাস্ফীতি।
মুদ্রাস্ফীতি বলতে এমন এক অবস্থাকে বোঝায় যখন স্বল্পকাল ব্যবধানে দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বাড়তে থাকে এবং এর ফলে অর্থের ক্রয়ক্ষমতা স পায় এবং সামস্তর বাড়ে। মুদ্রাস্ফীতি ঘটলে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ আগে যে পরিমাণ দ্রব্যসামগ্রী কিনতে পারত বর্তমানে তা পারে না। কারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়। ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার ফলে সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে পারে না। ফলে তাদের জীবননির্বাহ করা কষ্টকর হয়। মুদ্রাস্ফীতির ফলে সাধারণ মানুষ সবসময়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে মানুষের কার্যকর চাহিদা কমে যাওয়ায় বিনিয়োগও বাড়তে পারে না। উচ্চমাত্রার মূল্যস্ফীতির ফলে দরিদ্র শ্রেণির মানুষের প্রকৃত আরও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে যায়। উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, সম্প্রতি দেশটির বাজারে দ্রব্যসামগ্রীর দাম ক্রমাগত বাড়ছে তথা মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। যার ফলে অর্থনীতিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে মুদ্রাস্ফীতির প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয়টি তথা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মূলত তিনটি প্রধান পদ্ধতি রয়েছে। যথা- আর্থিক নীতি, রাজস্ব নীতি এবং প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। এগুলোর মধ্যে কোনো একক পদ্ধতি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট কি না তা উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করা হলো-
দেশের আর্থিক কর্তৃপক্ষ মুদ্রাস্ফীতিবিরোধী নীতি গ্রহণ করে দেশে অর্থ ও ঋণের পরিমাণ হ্রাস করতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রার প্রচলন হ্রাস, ব্যাংক হার বৃদ্ধি, খোলা বাজারে ঋণপত্র বিক্রি, নগদ জমার অনুপাত বৃদ্ধি ইত্যাদি ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মাধ্যমে ঋণের পরিমাণ কমাতে পারে। এভাবে আর্থিক নীতির কার্যকর প্রয়োগ ঘটলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অন্যদিকে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজস্ব নীতির অধীনে সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এসব ব্যবস্থার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সরকারি ব্যয় হ্রাস, কর হার বৃদ্ধি বা নতুন কর আরোপ, সরকারি ঋণ গ্রহণ, ভর্তুকি প্রত্যাহার, হস্তান্তর ব্যয় হ্রাস, বাধ্যতামূলক সময় ইত্যাদি।
আবার, আর্থিক ও রাজস্ব নীতি ছাড়াও আরও কিছু প্রত্যক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এগুলো হলো- উৎপাদন বৃদ্ধি, আমদানি বৃদ্ধি, মজুরি নিয়ন্ত্রণ, দাম নিয়ন্ত্রণ, রেশনিং ও খোলা বাজারে বিক্রয়, ফটকা কারবার নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি। তবে এই সকল নীতিগুলোর কার্যকারিতা নির্ভর করে মুদ্রাস্ফীতির প্রকৃতির ওপর।
উপরের বিশ্লেষণের প্রেক্ষিতে বলা যায়, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কোনো একক পদ্ধতি কিছু ক্ষেত্রে কার্যকর হলেও তা যথেষ্ট নয়। তাই আর্থিক, রাজস্ব ও প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিত্রয়ের মধ্যে সমন্বয় দ্বারা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।
২. করিম সাহেব একজন সরকারি কর্মকর্তা। ২০১৫ সালে সরকার বেতন প্রায় দ্বিগুণ করায় তিনি খুব খুশি। বাজারে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎপাদন শ্রমিকগণ আন্দোলন করে তাদের মজুরি বাড়িয়ে নেন। বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে যায়। ফলে করিম সাহেবের মন খারাপ হয়ে যায়। অন্যদিকে, সরকার পণ্যের ন্যূনতম নাম নির্ধারণ, উৎপাদকদের ভর্তুকি প্রদান, ন্যায্যমূল্যে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করেছে। এখন করিম সাহেবের মতো লোকেরা ও বিক্রেতাগণ সবাই বিদ্যমান অবস্থাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়েছেন।
ক. সূচক সংখ্যা কী?
খ. অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের আলোকে মুদ্রাস্ফীতির কারণগুলো চিহ্নিত করো।
ঘ. বাজারে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে উদ্দীপকের গৃহীত সরকারি পদক্ষেপসমূহ কি যথেষ্ট? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো নির্দিষ্ট বছরের গড়পড়তা মূল্যকে অন্য কোনো ভিত্তি বছরের গড়পড়তা মূল্যের সাথে তুলনায় শতাংশরূপে প্রকাশ করার জন্য যে সংখ্যাবাচক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, তাকে সূচক সংখ্যা বলে।
খ. অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট শৌখিন এবং আমোদপ্রিয়। তাই এখানে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন- বিয়ে, জন্মদিন, ধর্মীয় ও সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। এ অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় অতিরিক্ত চাহিদার সৃষ্টি করে, ফলে মুদ্রাস্ফীতির সৃষ্টি করে। অন্যদিকে সরকার অনেক সময় অনুৎপাদনশীল খাত অর্থাৎ পার্ক, স্টোডিয়াম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে যা উৎপাদন বৃদ্ধি করে না ফলে মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে।
গ. উদ্দীপকে মুদ্রাস্ফীতির কারণ হিসেবে চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি এবং ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। নিচে উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা প্রদান করা হলো-
চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি: সামগ্রিক যোগানের তুলনায় সামগ্রিক চাহিদা বেশি হলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। যেমন- অর্থের যোগান বৃদ্ধি, সরকারের বিভিন্ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধি, ঘাটতি ব্যয়, অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয়, উদার ঋণ নীতি, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, রপ্তানি বৃদ্ধি এবং জনগণের ব্যয়যোগ্য আয় বৃদ্ধি। উদ্দীপকে যোগান স্থির থেকে চাহিদা বেশি। থাকায় কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে যায় ফলে মুদ্রাস্ফীতির সৃষ্টি হয়।
ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি: ব্যয় বৃদ্ধির কারণে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। যেমন: অসন্তোষের ফলে হরতাল, ধর্মঘটের কারণে উৎপাদন হ্রাস, বেতন ও মজুরি বৃদ্ধি, সরকারের পরোক্ষ কর বৃদ্ধির ফলে দামস্তর বৃদ্ধি, বাজারে একচেটিয়া মালিকানার প্রভাব সক্রিয় থাকলে পণ্যদ্রব্যের দাম বাড়বে। ফলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিবে। উদ্দীপকে শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে মজুরি বেড়ে যায় এবং উৎপাদক প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হয়। ফলে ব্যয় বৃদ্ধির জন্য মুদ্রাস্ফীতির সৃষ্টি হয়।
ঘ. উদ্দীপকে সরকার বাজারে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে পণ্যের ন্যূনতম নাম নির্ধারণ, উৎপাদকের জন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা, ন্যায্যমূল্য খোলাবাজারে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করেছে যা পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট নয়। নিচে উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেওয়া হলো-
পণ্যদ্রব্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে সরকার খাদ্য ঘাটতি হ্রাস, ঘাটতি ব্যয় কমানো, প্রব্যের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ, কঠিন আইন করে শ্রমিকের মজুরি নিয়ন্ত্রণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদন বৃদ্ধি, ফটকা কারবার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
১. সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করে, অপ্রয়োজনীয় বা কম উৎপাদনশীল ক্ষেত্র হতে সম্পদ অধিক উৎপাদনশীল বা প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে স্থানান্তরের দ্বারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতির তীব্রতা হ্রাস করা যায়।
২. সরকার আইন করে শ্রমিকের মজুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
৩. সরকার ফটকা বাজার ও ফটকা কারবারিকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সামস্তর হ্রাস করতে পারে। এছাড়া মজুতদারি ও চোরাকারবারি রোধ করতে পারলেও মুদ্রাস্ফীতি রোধ করা সম্ভব হবে।
৪. ভোগ্যদ্রব্য ক্রয়ে ব্যবহৃত ঋণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংক কিসিস্তের সংখ্যা কম, কিসিস্তের সংখ্যা বেশি নির্ধারণ করতে বলবে। এর ফলে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাবে।
৫. দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাথে রাজধানী ও বন্দরের মধ্যে শক্তিশালী পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে পণ্যদ্রব্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হবে না, দামস্তর নিয়ন্ত্রণে থাকবে। উদ্দীপকে সরকার তার গৃহীত পদক্ষেপগুলো ছাড়াও উপরিউল্লিখিত ব্যবস্থাদি গ্রহণ করে পণ্যদ্রব্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে পারে।
৩. মিসেস অ্যাঞ্জিলিনা 'A' দেশের নাগরিক। তার LED TV এবং এয়ার কন্ডিশনার (AC) প্রয়োজন। বাজারে গিয়ে দেখেন, LED TV সেটের দাম ২০১৫ সালে ছিল ১০৫০ ডলার, যা ২০১৬ সালে দাঁড়ায় ১২০০ ডলারে এবং AC এর দাম একই সময়ে ১১০০ ডলার থেকে ১২৫০ ডলার হয়। তিনি আরও দেখেন, বাজারে অন্যান্য পণ্যের দামও ক্রমাগত বেড়ে চলছে। অ্যাঞ্জিলিনার দেশের নিম্ন আয়ের লোকজন, শ্রমিক শ্রেণি ও সরকার এ বিষয়ে উৎকণ্ঠায় আছে।
ক. সূচক সংখ্যা কী?
খ. মুদ্রাস্ফীতি সব সময় খারাপ নয়'। বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের আলোকে ভোক্তার দামসূচক ব্যবহার করে মুদ্রাস্ফীতির হার নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ক্ষেত্রসমূহে মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব বিশ্লেষণ করো।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কতকগুলো দ্রব্যের গড় দামের সাথে অপর একটি সময়ে ওই দ্রব্যগুলোর গড় দামের তুলনায় শতকরা পরিবর্তনের হার প্রকাশ করাকে সূচক সংখ্যা বলে।
খ. মৃদু মুদ্রাস্ফীতি একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কাম্য। মৃদু মুদ্রাস্ফীতির সময় বেশি মুনাফা লাভের আশায় উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে বেশি আগ্রহী হয়। এর ফলে উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোগ ও সদায় বৃদ্ধি পায়। যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা উন্নয়নকে নির্দেশ করে। তাই বলা যায়, মুদ্রাস্ফীতি সব সময় খারাপ নয়।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত তথ্যের আলোকে ভোক্তার দামসূচক (CPI) ব্যবহার করে মুদ্রাস্ফীতির হার নির্ণয় করা হলো-
ভোক্তার ব্যয় সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে নামসূচক নির্ণয়ের পদ্ধতিকে ভোক্তার দামসূচক (CPI) বলে। মুদ্রাস্ফীতির হার নির্ণয়ের জন্য নিচে উদ্দীপকের তথ্য ব্যবহার করে একটি সূচি তৈরি করা হলো:
সময় | ২০১৫ | ২০১৬ | p0q0 | p0q0 | |
দ্রব্য | দাম | পরিমাণ | দাম | ||
LED TV | ১০৫০ | ১ | ১২০০ | ১০৫০ | ১২০০ |
AC | ১১০০ | ১ | ১২৫০ | ১১০০ | ১২৫০ |
|
|
|
| (p0q0)1 = ২১৫০ | (p0q0)2 = ২৪৫০ |
⸫ CPI = × ১০০
= × ১০০
= ১১৩. ৯৫
সুতরাং, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে মুদ্রাস্ফীতি হার (১১৩. ৯৫ - ১০০) = ১৩. ৯৫%।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অ্যাঞ্জিলিনার দেশে নিম্ন আয়ের মানুষ, শ্রমিক শ্রেণি ও সরকারের ওপর মুদ্রাস্ফীতির নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। নিচে এসব শ্রেণির ওপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব বিশ্লেষণ করা হলো-
নিম্ন আয়ের লোকজনের ওপর প্রভাব: মুদ্রাস্ফীতির ফলে নিম্ন আয়ের লোকেরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ নাম বৃদ্ধির ফলে তারা একই পরিমাণ মজুরি দ্বারা পূর্বের তুলনায় কম পরিমাণ দ্রব্য ও সেবা ক্রয় করতে পারে। ফলে তাদের জীবনযাত্রার মান আরও নিম্ন হয়ে যায়।
শ্রমিক শ্রেণির ওপর প্রভাব: মুদ্রাস্ফীতির সময় দ্রব্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধি পেলেও শ্রমিক শ্রেণির মজুরি আনুপাতিক হারে বাড়ে না। তাই মুদ্রাস্ফীতির ফলে শ্রমিক শ্রেণি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সরকারের ওপর প্রভাব: মুদ্রাস্ফীতির ফলে দ্রব্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধির পরুন রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া, মুদ্রাস্ফীতির সময় জনজীবনে অসন্তোষের কারণে দেশে সুশাসন ব্যাহত হয়। উপর্যুক্ত কারণে অ্যাঞ্জিলিনার দেশে নিম্ন আয়ের লোকজন, শ্রমিক শ্রেণি ও সরকার উৎকণ্ঠায় আছে।
৪. জাতীয় বেতন স্কেল বাস্তবায়নের কারণে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ভাতা বাবদ সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। একই সাথে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে জিনিসপত্রের দাম ও জীবনযাত্রার ব্যয়ভার। ফলশ্রুতিতে ভূমিহীন কৃষক, বেকার, গরিব জনসাধারণ ও সীমিত আয়ের লোকদের জীবনযাত্রা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
ক. সূচক সংখ্যা কী?
খ. অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পরিস্থিতি অর্থনীতির কোন বিষয়কে নির্দেশ করে- ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে আয় ও সম্পদ বন্টনের ওপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব কীরূপ হবে আলোচনা করো।
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সূচক সংখ্যা হলো একটি সংখ্যাবাচক গড় পদ্ধতি, যা অর্থের মূল্য পরিবর্তন পরিমাপ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
খ. অর্থের সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায় ফলে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে।
বাজারে অর্থের যোগান বৃদ্ধি পেলে অর্থের মূল্য কমে যায়। এটি বাংলাদেশে মুদ্রাীতির প্রধান কারণ বলে বিবেচিত হয়। কারণ, বাজারে অর্থের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেলে একই পণ্য পূর্বের তুলনায় অধিক পরিমাণ অর্থ দিয়ে ক্রয় করতে হয়। অর্থাৎ অর্থের যোগান বিপুল পরিমাণে বাড়লে দ্রব্যসামগ্রী ও সেবার তুলনায় নামস্তর বেড়ে যায়। ফলে মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি হয়। এভাবে বাজারে অর্থের সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে।
গ. অর্থের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় মুদ্রাস্ফীতি ঘটে।
উদ্দীপকে উল্লিখিত পরিস্থিতি অর্থনীতির চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতিকে নির্দেশ করে। অর্থনীতিতে চাহিদা বৃদ্ধির জন্য দামস্তর বৃদ্ধির প্রবণতাকে চাহিদা বৃদ্ধি জনিত মুদ্রাস্ফীতি বলে। একটি অর্থনীতিতে সামগ্রিক চাহিদা বৃদ্ধি অর্থাৎ ভোগ বৃদ্ধি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, রপ্তানি বৃদ্ধি, মুদ্রার সরবরাহ বৃদ্ধি, সুদের হার হ্রাসের ফলে চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটে থাকে। এক্ষেত্রে চাহিদা বৃদ্ধির জন্য (AD) রেখা ডান দিকে স্থান পরিবর্তন করে। চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কারণ এর ফলে দামস্তর বৃদ্ধির সাথে সাথে উৎপাদনও বৃদ্ধি পায়। যা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে।
উদ্দীপকে জাতীয় বেতন স্কেল বাস্তবায়নের ফলে বেতন ভাতা বৃদ্ধি পায়। ফলে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি পায়, আর সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। ফলে দামস্তরের বৃদ্ধি ঘটে এবং মুদ্রাস্ফীতির সৃষ্টি হয়। এই ধরনের মুদ্রাস্ফীতি চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতিকে নির্দেশ করে। কারণ সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির ফলে মুদ্রাস্ফীতি ঘটলে তা চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতির অন্তর্ভুক্ত।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে আয় ও সম্পদের বণ্টনের ওপর মুদ্রাস্ফীতির ঋণাস্তেক প্রভাব পরিলক্ষিত হবে। মুদ্রাস্ফীতির ফলে সমাজে আয়বৈষম্য সৃষ্টি হয়। ধনীরা আরো ধনী ও গরিবেরা আরো গরিব হতে থাকে। এতে এক শ্রেণির লোক লাভবান আর অন্য শ্রেণি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়। এছাড়া সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষকেও হিমশিম খেতে হয়। অন্যদিকে, সরকারি চাকরিজীবী, ধনী ব্যবসায়ী শ্রেণি, শিল্পপতি সমাজে এরা লাভবান হতে থাকে। এর ফলে ঋণদাতা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও ঋণগ্রহীতা লাভবান হয়। স্থির আয়ের জনগণ যেমন- বেসরকারি চাকরিজীবী, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী এরা ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। একটি উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে একই সমাজের দুইমুখী অবস্থান কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এতে সামগ্রিকভাবে সকলে লাভবান হয় না। ফলে অর্থনীতিতে পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, সরকারি বেতন বৃদ্ধি পায় বলে সরকার বাম নির্বাহের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থান করে। কিন্তু এতে শুধু একশ্রেণি লাভবান হচ্ছে। অপরদিকে, ভূমিহীন কৃষক, বেকার, গরিব জনসাধারণ, স্থির বা সীমিত আয়ের লোকদের জীবননির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
সুতরাং, আমরা বলতে পারি যে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এ ধরনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য কাম্য নয়। দেশের বেশির ভাগ সম্পদ কুক্ষিগত হয় মুষ্টিমেয় ব্যক্তিবর্গের যাতে। বাকি সিংহভাগ জনসাধারণ মানবেতর জীবননির্বাহ করে। দেশের এই বিপুল পরিমাণ জনগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব না। এটি উন্নয়নের পরিপন্থী।
৫. সরকার বিগত বছরগুলোতে দেশের অর্থনৈতিক ও নিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয়বৃদ্ধি করছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, ফ্লাইওভারসহ বড় বড় অবকাঠামো নির্মিত হচ্ছে। ফলে দ্রব্যসামগ্রীর নাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, এর ফলশ্রুতিতে নির্দিষ্ট আয়ের লোকজন চাপে পড়ছে।
ক. মুদ্রাস্ফীতি কী?
খ. মুদ্রাস্ফীতির সাথে অর্থের মূল্যের কি ধরনের সম্পর্ক রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত মুদ্রাস্ফীতিটি কী ধরনের মুদ্রাস্ফীতি- ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে নির্দিষ্ট আয়ের লোকদের চাপ নিরসনের জন্য তুমি কোন ধরনের সমাধান সুপারিশ করবে? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মুদ্রাস্ফীতি বলতে এমন এক অবস্থাকে বোঝায়, যখন স্বল্পকাল ব্যবধানে উৎপাদন স্থির থেকে দ্রব্য মূল্য ক্রমাগত বাড়তে থাকে এবং এর ফলে অর্থের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়।
খ. মুদ্রাস্ফীতির সাথে অর্থের মূল্যের বিপরীত সম্পর্ক রয়েছে। দেশে যখন মুদ্রাস্ফীতির মাত্রা বাড়ে তখন দামস্তর বাড়ে। দামস্তরের সাথে মুদ্রার মূল্যের সম্পর্ক বিপরীত। কাজেই দেশে যখন মুদ্রাস্ফীতির মাত্রা বাড়ে তখন দামস্তর বাড়ে অর্থাৎ অর্থের মূল্য কমে যায়। আবার মুদ্রাস্ফীতির মাত্রা কমলে অর্থাৎ দামস্তর কমলে অর্থের মূল্য বাড়বে।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত মুদ্রাস্ফীতিটি ব্যয় বৃদ্ধিজনতি মুদ্রাস্ফীতি হিসেবে পরিচিত।
উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির ফলে সামগ্রিক যোগান (AS) হ্রাসের মাধ্যমে যে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়, তাকে ব্যয় বৃদ্ধিঞ্জনতি মুদ্রাস্ফীতি (Cost Push Inflation) বলে। এ মুদ্রাস্ফীতি নিচে চিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হলো :
চিত্রে AD, ASo ও AS1 হলো যথাক্রমে সামগ্রিক চাহিদা রেখা, প্রাথমিক সামগ্রিক যোগান রেখা এবং পরিবর্তিত সামগ্রিক যোগান রেখা। প্রাথমিক অবস্থায় E০ বিন্দুতে AD রেখা ASo রেখাকে ছেদ করায় YO আয়স্তরে Y0 দামস্তর নির্ধারিত হয়। এখন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে AS1 রেখা AD রেখাকে E1 বিন্দুতে ছেদ করায় নতুন আয়ন্তর Y1 দামস্তর P1 নির্ধারিত হয়।
এক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধির দরুন যোগান হ্রাসের কারণে দামস্তর P0 থেকে P1 তে বৃদ্ধি পায়। ফলে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে। ব্যয় বৃদ্ধির দরুণ সামগ্রিক যোগান হ্রাসের কারণে এ মুদ্রাস্ফীতি ঘটে বলে একে ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি বলে।
ঘ. উদ্দীপকে যে ধরনের মুদ্রাস্ফীতির বিষয় তুলে ধরা হয়েছে তা ব্যয় বুদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি হিসেবে পরিচিত। সরকার বিগত বছরগুলোতে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো নির্মাণ ও দারিদ্র্য নিরসনের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছে। এদিকে কলকারখানায় শ্রমিকদের মজুরিও অনেক বেড়েছে। ফলশ্রুতিতে দেখা দিয়েছে ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি। এর দরুন সমাজের নির্দিষ্ট আয়ের লোকজন চাপের মধ্যে পড়েছে। তাদের চাপ নিরসনের জন্য নিম্নোক্ত সুপারিশগুলো করা যায়-
১. ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম কারণ হলো অতিরিক্ত সরকারি ব্যয়। কাজেই এ ধরনের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারি ব্যয় হ্রাস করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সরকারের অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় কমাতে পারে।
২. ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম কারণ হলো উল্লেখযোগ্য হারে মজুরি বৃদ্ধি। সাধারণত শ্রমিক সংঘের প্রবল চাপের দরুন এমনটি ঘটে। তাই সরকারের উচিত, শ্রমিক সংঘগুলোকে তাদের মজুরি বৃদ্ধির অযৌক্তিক দাবিগুলো সম্পর্কে সচেতন করা এবং প্রয়োজনে মজুরির সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করে দেয়া।
৩. হঠাৎ করে উৎপাদন হ্রাস পেলেও ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটতে পারে। তাই এরূপ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য অর্থনীতির সকল খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি প্রয়োজন।
৪. জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির ফলেও ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিতে পারে। তাই সরকার জনসাধারণের কাছ থেকে বিভিন্ন মেয়াদি ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস করে বিদ্যমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে।
৫. পরোক্ষ কর বিদ্যমান মুদ্রাস্ফীতিতে ইন্ধন যোগায়। তাই তা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরোক্ষ করহার হ্রাস করা প্রয়োজন। উপরিউল্লিখিত বিভিন্ন উপায়ে ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে। নির্দিষ্ট আয়ের লোকদের ওপর চাপ কমানো যায়।
ক. সূচক সংখ্যা কী?
খ. খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতির জন্য খারাপ কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে দাম P1 থেকে P2-তে পরিবর্তনের কারণগুলো ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তুমি কি মনে কর, আর্থিক নীতি দামস্তর P1 থেকে P2 এ নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো নির্দিষ্ট বছরের গড়পড়তা দামকে অন্য কোনো ভিত্তি বছরে গড়পড়তা দামের তুলনায় শতাংশরূপে প্রকাশ করার জন্য যে সংখ্যাবাচক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, তাকে সূচক সংখ্যা বলে।
খ. খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকারক। খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটার অন্যতম কারণ হলো- শ্রমিক সংঘসমূহের দাবির প্রেক্ষিতে মজুরি এতটা বৃদ্ধি, যা তাদের উৎপাদনশীলতার সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। তাছাড়া, একচেটিয়া কারবারিরা অতিরিক্ত মুনাফার লোভে তাদের দ্রব্যের যোগান লক্ষণীয়ভাবে কমিয়ে দিলে এ মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। ব্যাপকভাবে পরোক্ষ কর আরোপের দরুন দামস্তর বাড়লে জনসাধারণ বেশি ব্যয় করতে বাধ্য হয়; তখন স্থির আয়ের লোকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব কারণে খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতির জন্য খারাপ বলে গণ্য হয়।
গ. উদ্দীপকের চিত্রে চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি দেখানো হয়েছে। দাম P1 থেকে P2-তে পরিবর্তিত হওয়ায় এ মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। চিত্রে দাম P1 থেকে P2- তে পরিবর্তনের কিছু কারণ রয়েছে; নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো:
১. সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম কারণ- বর্তমানে দেশের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সরকার প্রচুর অর্থ বায় করে। কিন্তু সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির অনুপাতে স্বল্পকালে উৎপাদন বাড়ে না। ফলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়।
২. মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম প্রধান কারণ হলো জনসংখ্যা বৃদ্ধি। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পণ্যসামগ্রীর চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় উৎপাদন না বাড়লে মূল্যস্তর বৃদ্ধির মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়।
৩. বর্তমানে সকল সরকারকেই অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় করতে হয়। যেমন- শিশু পার্ক, অডিটোরিয়াম, চিত্তবিনোদ কেন্দ্র, স্টেডিয়াম, খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয় প্রভৃতি খাতে সরকার প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। এজন্যও মুদ্রাস্ফীতি হয়।
৪. রপ্তানি বৃদ্ধির কারণেও মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। কেননা রপ্তানি বৃদ্ধির ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারে যোগান কমে যায় এবং মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে চিত্রে নাম P1 থেকে P2- তে পরিবর্তনের জন্য উপরিউল্লিখিত কারণগুলো দায়ী।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্রে যে মুদ্রাস্ফীতি দেখানো হয়েছে তা চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি বলে পরিচিত। এ মুদ্রাস্ফীতি কেবল আর্থিক নীতির দ্বারাই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসকল পদ্ধতি অবলম্বন করে সেগুলোর সমষ্টিই হলো আর্থিক নীতি। এ নীতির অধীনে ব্যাংক হার বৃদ্ধি, নগদ নামার অনুপাত বৃদ্ধি, খোলাবাজারে সরকারি ঋণপত্র বিক্রয় ইত্যাদির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশে অর্থের যোগান ও বাণিজ্যিক ব্যাংক সৃষ্ট ঋণের পরিমাণ হ্রাস করে। কিন্তু কখনো কখনো মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য এসব ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর হয় না। এ পদ্ধতির কার্যকারিতা অনেকটাই নির্ভর করে ঋণগ্রহীতাদের ওপর। মুদ্রাস্ফীতির সময় তারা অধিক ঋণ নিতে গেলে তবেই এ ব্যবস্থা কার্যকর হয় ও দামস্তর কম ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
আর্থিক নীতি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট না হলে সরকার রাজস্ব নীতিরও আশ্রয় নেয়। রাজস্ব নীতির মধ্যে সরকারি ব্যয় হ্রাস, করের পরিমাণ বৃদ্ধি, সরকারি ঋণ গ্রহণ ইত্যাদি। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আর্থিক ও রাজস্ব নীতির আশ্রয় গ্রহণ সত্ত্বেও কখনো কখনো সরকারকে এসবের সাথে কিছু প্রত্যক্ষ ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে হয়। এগুলো হলো নাম নিয়ন্ত্রণ ও রেশনিং, মজুরি নিয়ন্ত্রণ, আমদানি বৃদ্ধি, ফটকা কারবার নিয়ন্ত্রণ।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের চিত্রে নাম P1 থেকে P2- তে পরিবর্তন হলে অর্থাৎ চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিলে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য কেবল আর্থিক নীতির প্রয়োগই যথেষ্ট নয়।
ক. ব্যাংক হার কী?
খ. মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ না অভিশাপ?
গ. উল্লিখিত চিত্রটি অর্থনীতির কোন ধারণার সাথে সংগতিপূর্ণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. চিত্রে AD1 স্থানান্তরিত হয়ে AD2 হওয়া ধনীতিতে কীরূপ প্রভাব পড়ছে বলে তুমি মনে করো।
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ব্যাংক হার বলতে এমন একটি বাট্টার হারকে বোঝায়, যে হারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংককে অর্থ ধার দেয়।
খ. মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ না অভিশাপ তা সরাসরি বলা যায় না। কারণ, মৃদু ও সহনীয় মাত্রার মুদ্রাস্ফীতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, যা অর্থনীতিতে আশীর্বাদ হিসেবে কাজ করে।
আবার অতিরিক্ত হারে মুদ্রাস্ফীতি সামাজিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে, বৈষম্য বৃদ্ধি পায় এবং উৎপাদন ও ব্যবসায় ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলে। মুদ্রাস্ফীতির জন্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। তখন মুদ্রাস্ফীতিকে অভিশাপ বলা যায়।
গ. উদ্দীপকের চিত্রে চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি দেখানো হয়েছে। দাম P1 থেকে P2-তে পরিবর্তিত হওয়ায় এ মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। চিত্রে দাম P1 থেকে P2- তে পরিবর্তনের কিছু কারণ রয়েছে; নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো:
১. সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম কারণ- বর্তমানে দেশের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সরকার প্রচুর অর্থ বায় করে। কিন্তু সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির অনুপাতে স্বল্পকালে উৎপাদন বাড়ে না। ফলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়।
২. মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম প্রধান কারণ হলো জনসংখ্যা বৃদ্ধি। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পণ্যসামগ্রীর চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় উৎপাদন না বাড়লে মূল্যস্তর বৃদ্ধির মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়।
৩. বর্তমানে সকল সরকারকেই অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় করতে হয়। যেমন- শিশু পার্ক, অডিটোরিয়াম, চিত্তবিনোদ কেন্দ্র, স্টেডিয়াম, খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয় প্রভৃতি খাতে সরকার প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। এজন্যও মুদ্রাস্ফীতি হয়।
৪. রপ্তানি বৃদ্ধির কারণেও মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। কেননা রপ্তানি বৃদ্ধির ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারে যোগান কমে যায় এবং মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে চিত্রে নাম P1 থেকে P2- তে পরিবর্তনের জন্য উপরিউল্লিখিত কারণগুলো দায়ী।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্রে চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি প্রকাশ পেয়েছে। সামগ্রিক যোগান স্থির থেকে সামগ্রিক চাহিদা বৃদ্ধির ফলে বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। তখন শ্রমের দক্ষতা, যোগান, উৎপাদন কৌশল, উৎপাদন ব্যয় প্রভৃতি স্থির অবস্থায় দ্রব্যসামগ্রীর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। ফলে দামস্তর বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম উৎস হলো সামগ্রিক চাহিদা বা AD1 বৃদ্ধি। সমাজে সাধারণত ভোগ ও বিনিয়োগ ব্যয় বাড়লে AD2 বাড়ে।
১. সামগ্রিক যোগান অঝ প্রদত্ত অবস্থায় অউ বৃদ্ধি পেলে দামস্তর বাড়ে ফলে মুদ্রাস্ফীতির চাপ সৃষ্টি হয়। অধিক হারে মুদ্রাস্ফীতির ফলে অর্থের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। তাই জনগণ অধিক খরচে উৎসাহী হয়ে পড়ে। ফলে তাদের ভোগ বায় বেড়ে যায় এবং সঞ্চয় কমে যায়। এ ছাড়াও অধিক হারে মুদ্রাস্ফীতির ফলে সঞ্চয়ের প্রকৃত মূল্য কমে যায় এবং জনগণ সঞ্চয়ে অনুৎসাহী হয়ে পড়ে। সুতরাং মুদ্রাস্ফীতি শুধু সঞ্চয়ের স্পৃহাই কমায় না, সময়ের ক্ষমতাও (ability to save) কমায়।
২. মুদ্রাস্ফীতি স্বর্ণ, জুয়েলারি, রিয়েল এস্টেট, বাড়ি তৈরি প্রভৃতি অনুৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগে উৎসাহী করে। এ ধরনের অনুৎপাদনশীল সম্পদ অর্থনীতির উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ায় না।
৩. মুদ্রাস্ফীতির সবচেয়ে বড় অনাকাঙ্ক্ষিত ফলাফল হলো এটি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গরিব মানুষের জীবনযাত্রার মানকে আরও নিচে নামিয়ে দেয়। এ কারণে প্রায়শই বলা হয় মুদ্রাস্ফীতি হলো এক নম্বর শত্রু। মুদ্রাস্ফীতির কারণে গরিব জনগণ তাদের মৌলিক চাহিদা (basic need) পূরণ করতে পারে না বলে নিম্নতম জীবননির্বাহী স্তরও বজায় রাখতে পারে না।
৮. হাবিব একজন গ্রাম্য কৃষক তুষার সে গ্রামের গ্রাম্য মহাজন। হাবিব তার কৃষিকাজ পরিচালনার জন্য অ-প্রাতিষ্ঠানিক উৎস হতে ঋণ নিয়ে থাকেন। ২০১৪ সালে হাবিব প্রতিমণ আলু ৬০০ টাকা দরে ও প্রতিমণ ধান ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করেছিলেন। ২০১৫ সালে বাজারে আলু ও ধানের দাম একটু বেশি ছিল। তিনি আলু প্রতিমণ ৯০০ টাকা দরে ও ধান প্রতিমণ ৬০০ টাড্ডায় বিক্রি করেন। বেশি দামে আলু ও ধান বিক্রি করছে পেরে হাবিব খুব খুশি। কিন্তু তুষারের মন বেশ খারাপ।
ক. সূচক সংখ্যা কাকে বলে?
খ. মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অর্থের যোগানের পরিবর্তন আবশ্যক'- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের আলোকে ২০১৪ সালের ভিত্তিতে ২০১৫ সালে মুদ্রাস্ফীতির হার নির্ণয় করো।
ঘ. মুদ্রাস্ফীতির ফলে হাবিব ও তুষারের মনোভাব ভিন্ন রকম হওয়ার কারণ কী? ব্যাখ্যা করো।
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো নির্দিষ্ট বছরের গড়পড়তা মূল্যকে অন্য কোনো ভিত্তি বছরের গড়পড়তা মূল্যের তুলনায় শতাংশরূপে প্রকাশ করার জন্য যে সংখ্যাবাচক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, তাকে সূচক সংখ্যা বলে।
খ. মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের একটি অন্যতম উপায় হচ্ছে অর্থের যোগান কমানো।
মুদ্রাস্ফীতি প্রতিকারের জন্য আর্থিক কর্তৃপক্ষ তথা কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার অর্থের যোগান পরিবর্তন করে যে নীতি গ্রহণ করে তা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আর্থিক নীতি নামে পরিচিত। সুতরাং, মুদ্রাস্ফীতি কমাতে হলে অর্থের পরিমাণ কমানো প্রয়োজন। অর্থের পরিমাণ কমাতে হলে ব্যাংক ঋণ, সরকারি ব্যয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিদেশ থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ, টাকা ছাপানো ইত্যাদি কমাতে হবে। কারণ ব্যাংক ঋণ অর্থের পরিমাণ বাড়ায়।
গ. উদ্দীপকের আলোকে, ভোক্তার মূল্যসূচক সংখ্যা ব্যবহার করে ২০১৪ সালের ভিত্তিতে ২০১৫ সালের মুদ্রাস্ফীতির হার নির্ণয় করা যায় –
| ২০১৪ সাল | ২০১৫ সাল | ||
দ্রব্য | দাম | হার | দাম | হার |
আলু | ৬০০ টাকা প্রতিমণ | × ১০০ = ১০০ | ৯০০ টাকা প্রতিমণ | × ১০০ = ১৫০ |
ধান | ৪০০ টাকা প্রতিমণ | × ১০০ = ১০০ | ৬০০ টাকা প্রতিমণ | × ১০০ = ১৫০ |
উপরের সারণিতে দেখা যায়, ২০১৪ সালের মূল্যসূচক সংখ্যা ১০০। ২০১৫ সালের এ সংখ্যা হলো ১৫০। এ থেকে বোঝায়, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৫ সালের দামস্তর (১৫০-২০০) = ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ অর্থের ব্র্যক্ষমতা ৫০% হারে হ্রাস পেয়েছে।
ঘ. মুদ্রাস্ফীতির ফলে কৃষক হাবিব লাভবান হবে। পক্ষান্তরে, গ্রাম্য মহাজন তুষার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নিচে তাদের মনোভাব ভিন্নরকম হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা হলো-
দামস্তর বৃদ্ধির ফলে কৃষিজীবী সম্প্রদায় লাভবান হয়। বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতির ফলে কৃষি উপকরণের মূল্য যতটুকু বৃদ্ধি পায় তার তুলনায় কৃষিপণ্যের মূল্য অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষিপণ্যের মূল্য তার চেয়ে অধিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে কৃষিপণ্যের উৎপাদনে মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পড়ে। এক্ষেত্রে সচ্ছল কৃষকরা লাভবান হলেও দরিদ্র কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে মুদ্রাস্ফীতির ফলে কৃষি উৎপাদনের ওপর অনুকূল পূর্বাভাব সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে, মুদ্রাস্ফীতির ফলে পাওনাদার বা ঋণদাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ, তারা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ফিরে পেলেও তা দ্বারা পূর্বাপেক্ষা কম পরিমাণ দ্রব্যসামগ্রী ক্রয় করতে পারবে। পক্ষান্তরে, মুদ্রাস্ফীতির ফলে দেনাদাররা লাভবান হয়। কারণ, মুদ্রাস্ফীতির সময় ঋণগ্রহীতারা অপেক্ষাকৃত কম দ্রব্যসামগ্রী বিক্রয় করে নির্দিষ্ট পরিমাণ দেনার অর্থ পরিশোধ করতে পারে।
উদ্দীপকের হাবিব ও তুষারের মধ্যে এই একই প্রভাবগুলো পরিলক্ষিত হয়েছে। হাবিব মুদ্রাস্ফীতির সময় তার উৎপাদিত পণ্যের নাম পূর্বের চেয়ে বেশি পেয়েছেন এবং কম দ্রব্যসামগ্রী বিক্রয় করেই তুষারের ঋণ পরিশোষ করেছেন। এতে করে তুষার তার নির্দিষ্ট পরিমাণ পাওনা ফেরত পেলেও তা দ্বারা পূর্বাপেক্ষা কম পরিমাণ দ্রব্যসামগ্রী ক্রয় করতে পারবে। এভাবে মুদ্রাস্ফীতির ফলে হাবিব ও তুষারের মনোভাব ভিন্ন রকম হয়েছে।
৯. উন্নয়নশীল দেশগুলো দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ঘাটতি ব্যয় ও অতিরিক্ত অর্থের যোগানসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করে। ফলে দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে। এমতাবস্থায় বাজারে পর্যাপ্ত দ্রব্যসামগ্রীর যোগান থাকা সত্ত্বেও নিম্নবিত্ত মানুষের সংসার চালাতে কষ্ট হয়। এজন্য মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হয়।
ক. মুদ্রাস্ফীতি কী?
খ. সীমিত আয়ের মানুষের ওপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব কিরূপ?
গ. উদ্দীপকের আলোকে মুদ্রাস্ফীতির কারণগুলো বাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপগুলো বর্ণনা করো।
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যখন কোনো দেশে প্রচলিত অর্থের পরিমাণ উৎপাদিত দ্রব্যসামগ্রীর তুলনায় অধিক হওয়ার ফলে দামস্তর ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে, তখন সে অবস্থাকে মুদ্রাস্ফীতি বলা হয়।
খ. মুদ্রাস্ফীতির ফলে সীমিত আয়ের লোকেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ দামস্তর বাড়লে একই পরিমাণ মজুরি দ্বারা তারা পূর্বের চেয়ে কম দ্রব্যসামগ্রী ক্রয় করতে বাধ্য হয়।
সীমিত আয়ের লোকের ওপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা যায়। কারণ তাদের আয়ের সীমা নির্দিষ্ট থাকে। এই নির্দিষ্ট আয়ের ওপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পড়লে তাদের প্রকৃত আয় কমে যায়। ফলে তাদের জীবনযাত্রার মান এবং ভোগবার কমে যায়। এ ছাড়াও মুদ্রাস্ফীতি চলমান অবস্থায় দেশের ভূমিহীন, প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ তাদের ক্রয়ক্ষমতা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গ. উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, উন্নয়নশীল দেশগুলো ঘাটতি ব্যয় ও অতিরিক্ত অর্থের যোগানসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করার ফলে দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। নিচে এর কারণগুলো ব্যাখ্যা করা হলো:-
১. উন্নয়নশীল দেশে মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম প্রধান কারণ হলো অর্থের যোগানের বিপুল বৃদ্ধি। অর্থের যোগান বিপুল পরিমাণ বাড়লেও দ্রব্যসামগ্রী ও সেবাদির পরিমাণ তার তুলনায় না বাড়ায় দামস্তর বেড়ে মুদ্রাস্ফীতির সৃষ্টি হয়েছে।
২. বড় আয়তনের বাজেট বাস্তবায়নের জন্য অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ বৃদ্ধি পাওয়ায় তা দামস্তর বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। বিগত বছরগুলোতে রাজস্ব ও উন্নয়ন ব্যয় উভয়ই যথেষ্ট পরিমাণে বেড়েছে। রাজস্ব ব্যয় বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন তেমন না বাড়ায় এবং নির্বাহকৃত উন্নয়ন ব্যয়ের সুফল দ্রুত প্রাপ্ত না হওয়ায় দামস্তর বেড়ে চলেছে।
৩. উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দরিদ্রদের জন্য আর্থিক নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং কয়েকটি ক্ষেত্রে উচ্চহারে ভর্তুকি বজায় রাখার স্বার্থে সরকারের সামগ্রিক ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বাজেট ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়টি দেশের মূল্যস্ফীতির একটি কারণ।
৪. উন্নয়নশীল দেশে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও বড় আয়তনের বাজেট বাস্তবায়নের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। কিন্তু এসব বায়ের বিপরীতে সমপরিমাণ দ্রব্য ও সেবাপ্রবাহ সঙ্গে সঙ্গে সৃষ্টি হয় না বলে দামস্তর বৃদ্ধি পায়। এসব দেশে উন্নয়নমুখী ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষিতে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়।
ঘ. উন্নয়নশীল দেশের সরকার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য চর্তুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। যেমন- অর্থের যোগান হ্রাস, প্রত্যক্ষ করের হার বৃদ্ধি, ব্যাংক হার বৃদ্ধি এবং উৎপাদন বৃদ্ধি।
অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণ: উন্নয়নশীল দেশে মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম প্রধান কারণ হলো অর্থের যোগান বৃদ্ধি। কেননা উন্নয়নশীল দেশের সরকারকে ব্যবসায়- বাণিজ্যের প্রয়োজনে অর্থের যোগান বাড়াতে হয়। কিন্তু একই সাথে মুদ্রাস্ফীতির চাপ থেকে ভোরা সাধারণকে রক্ষা করতে হলে অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
ব্যাংক হার বৃদ্ধি: কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকরেট বৃদ্ধি করলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও সুদের হার বাড়িয়ে দেয়। ফলে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিনিয়োগ ও ভোগের জন্য ঋণ প্রদানের ক্ষমতা হ্রাস পায়। এর মাধ্যমে অর্থের যোগান কমানো যায় এবং মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পায়।
প্রত্যক্ষ করের যার বৃদ্ধি; দ্রব্যসামগ্রীর দাম কমাতে হলে পরোক্ষ করের হার বৃদ্ধি না করে রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধির জন্য প্রত্যক্ষ করের আওতা বৃদ্ধি করা যায়। তাই উন্নয়নশীল দেশের সরকার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন নতুন কর আরোপ ও বিদ্যমান করগুলোর হার বৃদ্ধি করে জনগণের ব্যয়যোগ্য আয় কমাতে পারে। তখন সামগ্রিক চাহিদা হ্রাস পাবে এবং দামস্তর কমবে।
উৎপাদন বৃদ্ধি: 'উন্নয়নশীল' দেশে মুদ্রাস্ফীতি প্রতিকারের অন্যতম উপায় হলো কৃষি, শিল্প ও অন্যান্য সব খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি করা। উৎপাদন বাড়লে দ্রব্যসামগ্রীর যোগান বাড়বে এবং তা দ্রব্য ও সেবার বর্ধিত চাহিদা পূরণের মাধ্যমে দামস্তরের ঊর্ধ্বগতি রোধ করবে। কলাকৌশলের উন্নয়ন, অধিক প্রয়োজনীয় খাতে সম্পদের বরাদ্দকরণ ইত্যাদির মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে।
সুতরাং, 'উন্নয়নশীল' দেশের সরকার কর্তৃক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উপরিউক্ত ব্যবস্থা কতটুকু কার্যকরী হবে তা নির্ভর করে মুদ্রাস্ফীতির প্রকৃতির ওপর।
১০. A একটি উন্নয়নশীল দেশ। উক্ত দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে সরকার বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উৎস হতে ঋণ গ্রহণ করেছে। অন্যদিকে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। এর ফলে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে সমাজে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব পড়ে।
ক. ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি কী?
খ. আকস্মিকভাবে কোন দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেয়ে অন্ন সময় পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেলে তাকে কি মুদ্রাস্ফীতি বলা যাবে?
গ. A দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি কোন বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত? এর কারণগুলো উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত পরিস্থিতির জন্য জনজীবনে কী প্রভাব ফেলবে? বিশ্লেষণ কর।
১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির ফলে সামগ্রিক যোগান হ্রাসের মাধ্যমে যে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়, তাকে ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি বলা হয়।
খ. আকস্মিকভাবে কোনো দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেয়ে অল্প সময় পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসলে তাকে মুদ্রাস্ফীতি বলা যাবে না। কারণ এতে অর্থের মূল্যের ক্রমাগত হ্রাস পায় না।
সাধারণত মুদ্রাস্ফীতি বলতে উৎপাদন বৃদ্ধি না পেয়ে অর্থের যোগান বৃদ্ধিকে বোঝায়। অর্থাৎ দ্রব্যসামগ্রীর যোগান না বেড়ে অর্থের যোগান বাড়লে অর্থের ক্রয়ক্ষমতা তথা অর্থের মূল্য হ্রাস পায় এবং দ্রব্যের সাধারণ দামস্তর বৃদ্ধি পায়। তাই হঠাৎ করে দাম বেড়ে তা আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেলে অর্থের মূল্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। বলে, একে মুদ্রাস্ফীতি বলা যাবে না।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত A দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি হলো মুদ্রাস্ফীতি। নিচে এর কারণগুলো উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা করা হলো।
উন্নয়নশীল দেশে মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম প্রধান কারণ হলো অর্থের যোগান বৃদ্ধি। অর্থের যোগান বিপুল পরিমাণ বাড়লেও দ্রব্যসামগ্রী ও সেবার পরিমাণ তার তুলনায় না বাড়লে দামস্তর বেড়ে মুদ্রাস্ফীতি তৈরি করে। তাছাড়া, ঘাটতি বাজেটের অর্থসংস্থানের জন্য সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে দাম বৃদ্ধি পায় তথা মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, উন্নয়নশীল 'A' দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উৎস থেকে প্রচুর পরিমাণে ঋণ সংগ্রহ করে। আবার, অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দ্রব্যসামগ্রীর দাম বাড়িয়ে দেয়। যার ফলশ্রুতিতে A দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। তাই বলা যায়, সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি ও কৃত্রিম সংকটের কারণে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পরিস্থিতি তথা মুদ্রাস্ফীতি জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিচে বিষয়টি বিশ্লেষণ করা হলো।
সাধারণত একটি দেশে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিলে সাধারণ ভোক্তা, স্থির আয়ের মানুষ, শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও উৎপাদক ও ঋণগ্রহীতা উপকৃত হয়। তাই মৃদু মুদ্রাস্ফীতি একটি অর্থনীতির জন্য কাম্য হলেও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি জনজীবনে দুর্ভোগ তৈরি করে। উদ্দীপকে দেখা যায়, এ দেশে মুদ্রাস্ফীতি বিদ্যমান থাকায় কিছু ব্যবসায়ী লাভবান হলেও সাধারণ জনগণ চরম দুর্ভোগে পড়ে। কারণ দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোক্তাকে উচ্চদামে দ্রব্যসামগ্রী ক্রয় করতে হয়।
আবার, মুদ্রাস্ফীতির সময় স্থির আয়ের লোকেরা বেশি অর্থ ব্যয় করেও পূর্বের চেয়ে কম পরিমাণ দ্রব্য ও সেবা ভোগ করে। এতে তাদের প্রকৃত আর হ্রাস পায়। অন্যদিকে, নাম বৃদ্ধি পেলে উৎপাদক ও ব্যবসায়ী শ্রেণির পূর্বের চেয়ে বেশি মুনাফা লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়। যা জাতীয় আয় বৃদ্ধির সহায়ক। তাই উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, অর্থনীতিতে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে মৃদু মুদ্রাস্ফীতি বজায় রাখতে পারলে জনজীবনে এর সুফল পড়তে পারে অন্যথায় তা শুধু দুর্ভোগই বয়ে আনবে।
0 Comments:
Post a Comment