HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৯

HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Economics 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চমাধ্যমিক

অর্থনীতি
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৯ম অধ্যায়

HSC Economics 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১. C = 50 + 0.75Y; I = 100
যেখানে, C = ভোগ ব্যয়; I = বিনিয়োগ ব্যয়
ক. সামগ্রিক আয় কাকে বলে?
খ. দু’খাত বিশিষ্ট অর্থনীতিতে সামগ্রিক ব্যয়ের দুটি উপাদান লিখ?
গ. উদ্দীপকের আলোকে ভারসাম্য জাতীয় আয় Y নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত বিনিয়োগ দ্বিগুণ হওয়ার প্রেক্ষিতে বিনিয়োগ ও জাতীয় আয়ের সম্পর্ক নির্দেশ করো।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি নির্দিষ্ট সময় সাধারণত একটি আর্থিক বছরে দেশের জনগণের উপার্জিত আয়ের সমষ্টিকে সামগ্রিক আয় বলে।

খ. দু’খাত বিশিষ্ট অর্থনীতিতে সামগ্রিক ব্যয়ের দুটি উপাদান হলো ভোগ ব্যয় ও বিনিয়োগ ব্যয়।
কোনো নির্দিষ্ট আর্থিক বছরে উৎপাদিত চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবা ক্রয়ের জন্য জনগণ যে অর্থ ব্যয় করে তাকে দেশের মোট ভোগ ব্যয় বলে। আর, বিনিয়োগ ব্যয় হলো বিদ্যমান মূলধনসামগ্রী বা উৎপাদিত সম্পদের সাথে অনুরূপ নতুনসামগ্রী যোগ করার জন্য ব্যয়িত অর্থ।

গ. উদ্দীপকের প্রদত্ত তথ্যের আলোকে নিচে ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয় করা হলো:
দু’খাত বিশিষ্ট অর্থনীতিতে যে স্তরে দেশের মোট ভোগ ব্যয় (C) ও বিনিয়োগ ব্যয় (I) এর সমষ্টি জাতীয় আয় (Y)-এর সমান হয়, সেই স্তরে ভারসাম্য জাতীয় আয় (Y0) নির্ধারিত হয়।
উদ্দীপকে ভোগ সমীকরণ, C = 50 + 0.75Y
বিনিয়োগ সমীকরণ, I = 100
এখন, ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয়ের সূত্রানুসারে,
Y = C + I
বা,Y = 50 + 0.75Y + 100
বা,Y = - 0.75Y = 150
বা,Y = 0.25Y = 150
বা,Y =
বা,Y = 600
⸫ Y0 = 600
অর্থাৎ, উদ্দীপকের আলোকে ভারসাম্য জাতীয় আয় (Y0) হলো ৬০০ একক।

ঘ. উদ্দীপকের উল্লেখিত বিনিয়োগ দ্বিগুণ তথা ২০০ একক করা হলে জাতীয় আয় গুণ বাড়বে তথা ১০০০ একক হবে। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও জাতীয় আয় সমমুখী সম্পর্ক নির্দেশ করবে।
কোনো দেশে বিনিয়োগ বাড়লে জাতীয় আয় বৃদ্ধি পাবে। আবার, বিনিয়োগ কমলে জাতীয় আয় হ্রাস পাবে অর্থাৎ বিনিয়োগ ও জাতীয় আয়ের মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান।
উদ্দীপকের তথ্য অনুসারে বিনিয়োগ দ্বিগুণ করা হলে মোট বিনিয়োগ ব্যয় দাঁড়ায় (১০০ × ২) বা ২০০ একক। এখন, ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয়ের সূত্রানুসারে,
Y = C + I
বা,Y = 50 + 0.75Y + 200
বা,Y = -0.75Y = 50 + 200
বা,Y = 0.25Y = 250
বা,Y =
বা,Y = 1000
⸫ Y0 = 1000
অর্থাৎ, বিনিয়োগ ব্যয় ১০০ একক থেকে বাড়িয়ে ২০০ একক করা হলে জাতীয় আয় ৬০০ একক থেকে বেড়ে ১০০ একক হয়।


উদ্দীপকের প্রদত্ত তথ্যের আলোকে উপরে অঙ্কিত চিত্রে লক্ষ করা যায়, বিনিয়োগ (I1) ১০০ একক থেকে বেড়ে বিনিয়োগ (I2) ২০০ একক হলে সামগ্রিক আয় রেখা উপরের দিকে স্থানান্তরিত হয়। এর ফলে জাতীয় আয় (Y1) ৬০০ থেকে বেড়ে (Y2) ১০০০ হয়।
উপযুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, বিনিয়োগ ব্যয় ও জাতীয় আয়ের মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান।

২. ধরা যাক, একটি দেশের মোট ভোগ ব্যয় ৫০০ কোটি টাকা। মোট বিনিয়োগ ব্যয় ২০০ কোটি টাকা। মোট সরকারি ব্যয় ও সেবাকর্ম ক্রয়ের জন্য ৫০ কোটি টাকা। প্রবাসে কর্মরত দেশীয় নাগরিকদের আয় ২০ কোটি টাকা এবং দেশের অবস্থানরত বিদেশিদের আয় ১০ কোটি টাকা।
ক. মোট জাতীয় আয় কাকে বলে?
খ. সঞ্চয় হলো বিনিয়োগের ভিত্তি- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের আলোকে মোট দেশজ উৎপাদন (GDP) ও মোট জাতীয় উৎপাদন (GNP) বের করো।
ঘ. উদ্দীপকে দেশে অবস্থানরত বিদেশিদেও আয় যদি দ্বিগুণ হয় তাহলে মোট দেশজ উৎপাদন ও মোট জাতীয় আয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হবে কি? মতামত দাও।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনো দেশের নাগরিকগণ কর্তৃক যে পরিমাণ চূড়ান্ত দ্রব্য ও সেবা উৎপন্ন হয় তার বাজারমূল্যের সমষ্টিকে মোট জাতীয় আয় বলে।

খ. সঞ্চয় হলো বিনিয়োগের ভিত্তি। আয়ের যে অংশ বর্তমানে ভোগ না করে ভবিষ্যতের জন্য রাখা হয় তাকে সঞ্চয় বলে। আর এ সঞ্চিত অর্থকে মূলধন বলে। এই সঞ্চিত অর্থকে মূলধন গঠনের উদ্দেশ্যে উৎপাদন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করাকে বিনিয়োগ বলে। মূলত সঞ্চয় থেকেই বিনিযোগের সৃষ্টি। তাই বলা হয় সঞ্চয়ই বিনিয়োগের মূল ভিত্তি।

গ. নিচে উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (GDP) এবং মোট জাতীয় উৎপাদন (GNP) নির্ণয় করা হলো।
সাধারণত ভোগ, বিনিয়োগ ও সরকারি ব্যয় যোগ করে GDP পাওয়া যায়। আর GDP -এর সাথে নিট উপাদান আয় যোগ করে GNP পাওয়া যায়। এখানে নিট উপাদান আয় বলতে একটি দেশের নাগরিকগণ বৈদেশিক বিনিয়োগ ও শ্রম থেকে যে আয় করে এবং বিদেশি নাগরিকগণ বিবেচ্য দেশে বিনিয়োগ ও শ্রম থেকে যে আয় করে, এ দুয়ের বিয়োগফলকে বোঝায়।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, দেশটির মোট ভোগ ব্যয় (C) ৫০০ কোটি টাকা, মোট বিনিয়োগ ব্যয় (I) ২০০ কোটি টাকা এবং মোট সরকারি ব্যয় ও সেবাকর্ম ক্রয়ের জন্য ব্যয় (G) ৫০ কোটি টাকা। কাজেই GDP = ( ৫০০ + ২০০ + ৫০) = ৭৫০ কোটি টাকা।
আবার, প্রবাসে কর্মরত দেশীয় নাগরিকদের আয় ২০ কোটি টাকা এবং দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের আয় ১০ কোটি টাকা। কাজেই নিট উপাদান আয় ( ২০ - ১০) = ১০ কোটি টাকা। সুতরাং, GNP = (৭৫০ + ১০) = ৭৬০ কোটি টাকা।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত দেশটিতে অবস্থানরত বিদেশিদের আয় দ্বিগুণ তথা ২০ কোটি টাকা হলে মোট দেশজ উৎপাদন (GDP) ও মোট জাতীয় আয় (GNP) এর মধ্যে কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হবে না।
সাধারণত মোট উপাদান আয় ধনাক্তক হলে GDP এর চেয়ে GNP বেশি হয় এবং ঋনাক্তক হলে GDP এর চেয়ে GNP কম হয়। কিন্তু নিট উপাদান আয় শূন্য হলে তথা বিদেশে কর্মরত দেশীয় নাগরিকদের আয় ও দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের আয় সমান হলে GDP ও GNP উভয় একই হয়। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে GDP = GNP হয়।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের আয় ১০ কোটি টাকা এবং বিদেশে কর্মরত দেশীয় নাগরিকদের আয় ২০ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে নিট উপাদান আয় ১০ কোটি টাকা। তাই GDP এর চেয়ে GNP ১০ কোটি টাকা বেশি হয়। কিন্তু এখন যদি দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের আয় দ্বিগুণ করা হলে নিট উপাদান আয় হবে:
= {২০ - (১০ × ২)}
= ২০ - ২০
= ০
তাই এ অবস্থায় GDP ও GNP উভয়ই ৭৫০ কোটি টাকা হবে। অর্থাৎ GDP = GNP হবে।

৩. একটি তিন খাতবিশিষ্ট অর্থনীতির তথ্য নিমণরূপ:
C = 100 + 0.75Y, I = 100, G = 150
ক. NNP এর পূর্ণরূপ কী?
খ. সঞ্চয়ের সাথে বিনিয়োগ কীভাবে সম্পর্কিত?
গ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয় করো।
ঘ. সরকারি ব্যয় ৫০ টাকা হ্রাস করা হলে ভারসাম্য আয়ের ওপর কী প্রভাব পড়বে? উদ্দীপকের আলোকে আলোচনা করো।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. NNP এর পূর্ণরূপ- Net National Product.

খ. সঞ্চয়ের সাথে বিনিয়োগের ধনাক্তক সম্পর্ক বিদ্যমান।
আয়ের যে অংশ বর্তমানে ভোগ না করে ভবিষ্যতের জন্য রাখা হয় তাই হলো সঞ্চয়; আর সঞ্চিত অর্থকে মূলধন গঠনের উদ্দেশ্যে উৎপাদন ক্ষেত্রে নিয়োগ করা হলো বিনিয়োগ। সঞ্চয় থেকে বিনিয়োগের সৃষ্টি এ জন্য সঞ্চয় ও বিনিয়োগ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে অবদ্ধ। সময়ের ব্যবধানে একসময় সঞ্চয়ই বিনিয়োগে রূপান্তরিত হয়। তাই বর্তমানে সঞ্চয়কে ভবিষ্যতের বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করা হয়।

গ. একটি তিন খাতবিশিষ্ট বদ্ধ অর্থনীতিতে যে স্তর সমাজের মোট ভোগ ব্যয় (C), মোট বিনিয়োগ ব্যয় (I) ও সরকারি ব্যয় (G) এর সমষ্টি জাতীয় আয় (Y)-এর সমান হয় সে স্তরের আয়কেই ভারসাম্য জাতীয় আয় বলে। উদ্দীপকে যে ভোগ, বিনিয়োগ ও সরকারি ব্যয় দেওয়া আছে তার ভিত্তিতে নিচে ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ধারণ করা হলো:
ভোগ সমীকরণ C = 100 + 0.75Y
বিনিয়োগ সমীকরণ I = I0 = 100
ও সরকারি ব্যয় G = G0 = 150
এখন, ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ধারণের সূত্রানুযায়ী-
Y = C + I + G হলে,
= 100 + 0.75Y + 100 + 150
= 350 + 0.75Y
বা, Y - 0.75Y = 350
বা, 0.25Y = 350
বা, Y =
বা, Y = 1400
⸫ উদ্দীপক অনুসারে ভারসাম্য জাতীয় আয় ১৪০০ টাকা।

ঘ. উদ্দীপকের প্রদত্ত তথ্যের আলোকে ইতোমধ্যে ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪০০ টাকা (গ-হতে প্রাপ্ত)।
এখন উদ্দীপক অনুসারে সরকারি ব্যয় ৫০ টাকা হ্রাস করলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন ভারসাম্য জাতীয় আয় নিমণরূপভাবে নির্ধারণ করা যায়,
Y = C + I + G
= 100 + 0.75Y + 100 + 100 [৫০ হ্রাস করে]
= 300 + 0.75Y
বা, Y - 0.75Y = 300
বা, 0.25Y = 300
বা, Y =
বা, Y1 = 1200
সুতরাং, সরকারি ব্যয় ৫০ টাকা হ্রাস করলে ভারসাম্য জাতীয় আয়ও হ্রাস পাবে।

৪. একটি দেশে ৩টি দ্রব্য উৎপাদিত হয়। দ্রব্য ৩টি হচ্ছে তুলা, সুতা ও ধান। এই ৩টি দ্রব্য উৎপাদনের পরিমাণ ও মূল্য প্রতিমণ যথাক্রমে ৩ মণ-৬০০০ টাকা, ২ মণ-১৫০০০ টাকা ও ২০ মণ- ১০০০ টাকা। উক্ত দেশের জনগণের বিনিয়োগ ১০,০০০ এবং সরকারি ব্যয় ১০,০০০ টাকা।
ক. জাতীয় আয় কাকে বলে?
খ. কোন অবস্থায় GDP = GNP ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত দেশের মোট জাতীয় আয় নির্ণয় করো।
ঘ. যদি ভোগের পরিমাণ ৭০০০০ টাকা হয় তবে জাতীয় আয়ের ওপর প্রভাব পড়বে কী? বিশ্লেষণ করো।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনো দেশের নাগরিকগণ কর্তৃক যে পরিমাণ চূড়ান্ত দ্রব্য ও সেবা উৎপন্ন হয় তার বাজারমূল্যের সমষ্টিকে মোট জাতীয় আয় বলে।

খ. একটি দেশের আমদানি-রপ্তানি শূন্য অবস্থায় মোট দেশজ উৎপাদন ও মোট জাতীয় উৎপাদন সমান হয়।
কোনো দেশের ভেীগলিক সীমারেখার অভ্যন্তরে যে পরিমাণ দ্রব্য ও সেবা উৎপাদিত হয় তার আর্থিক মূল্যই হলো GDP । আবার দেশের ভেতরে ও বিদেশে অবস্থানরত দেশীয় নাগরিক কর্তৃক উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবার আর্থিক মূল্যের সমষ্টি হলো GNP। অর্থাৎ, অর্থনীতিতে GDP = GNP পরিলক্ষিত হয়।

গ. উদ্দীপকে যে তথ্যাদি আছে তার আলোকে বলা যায় জাতীয় আয় পরিমাপের জন্য উৎপাদন পদ্ধতি ব্যবহার করা আবশ্যক।
উৎপাদন পদ্ধতি অনুসারে কোনো একটি আর্থিক বছরে দেশে যে পরিমাণ দ্রব্য ও সেবাকর্ম উৎপন্ন হয় তার প্রতিটির পরিমাণকে নিজ নিজ গড় বাজার দাম দ্বারা গুণ করলে প্রাপ্ত অর্থমূল্যের সমষ্টিই হলো জাতীয় আয়। এ পদ্ধতিতে নিমণরূপে দেশটির জাতীয় আয় নির্ণয় করা হলো:
জাতীয় আয় = {(X1P1+ X2P2 + ….+ XnPn)}
এখানে X1, X2....., Xn হলো উৎপন্ন দ্রব্য ও সেবাকর্মের পরিমাণ এবং P1, P2....., Pn হলো যথাক্রমে ঐসব দ্রব্যের গড় বাজার দাম। নিচে প্রদত্ত তথ্যাদির ভিত্তিতে উল্লেখিত দেশের জাতীয় আয় নির্ণয় করা হলো:
এক্ষেত্রে চিত্রে X1 = তুলার পরিমাণ ও P1 গড় বাজার দাম
X2= সুতার পরিমাণ ও P2 গড় বাজার দাম
ও Xn = ধানের পরিমাণ এবং Pn গড় বাজার দাম ধরা হলে, জাতীয় আয় হবে,
={(৩ × ৬০০০) + (২ × ১৫০০০) + (২০ × ১০০০)} টাকা
= (১৮,০০০ + ৩০,০০০ + ২০,০০০) টাকা
= ৬৮,০০০ টাকা।
অর্থাৎ মোট জাতীয় আয় ৬৮,০০০ টাকা।

ঘ. অন্যান্য অবস্থা স্থির থেকে ভোগ ব্যয় বৃদ্ধি পেলে জাতীয় আয় বাড়ে।
বন্ধ অর্থনীতিতে মূলত জাতীয় আয় নির্ভর করে ভোগ, বিনিয়োগ ও সরকারি ব্যয়ের উপর। তাই অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থেকে ভো, বিনিয়োগ ও সরকারি ব্যয়ের যেকোনো একটির পরিবর্তন হলেই জাতীয় আয় পরিবর্তিত হয়।
চিত্রে ভূমি অক্ষে জাতীয় আয় Y ও লম্ব অক্ষে AD ও AS পরিমাপ করা হয়েছে। এখানে লক্ষ করা যায় প্রথম দিকে সরকারি ও বিনিয়োগ ব্যয় যথাক্রমে ১০,০০০ ও ১০,০০০ টাকা।
কাজেই জাতীয় আয় ,
Y1 = (১০,০০০ + ১০,০০০) টাকা
= ২০,০০০ টাকা
এখন, ভোগ ব্যয় যদি ৭০,০০০ টাকা হয় তাহলে,
জাতীয় আয় হবে Y2 = (১০,০০০ + ১০,০০০ + ৭০,০০০) টাকা, বা ৯০,০০০ টাকা।
পরিশেষে বলা যায়, ভোগ ব্যয় বৃদ্ধি পেলে জাতীয় আয় বৃদ্ধি পায়।

৫. মোশারফ সাহেবের মাসিক বেতন ১৮,০০০ টাকা। এ টাকা থেকে তিনি বর্তমান ভোগের জন্য ১৩,০০০ টাকা খরচ করেন। বাকি টাকা তিনি জমা রাখেন। এ জমানো টাকা তিনি পরবর্তিতে তার প্রতিষ্ঠিত পোল্ট্রি ফার্মে বিনিয়োগ করেন। এ ফার্ম থেকে অর্জিত আয় দিয়ে তিনি ফার্মটি আরও সম্প্রসারিত করেন এবং এতে তার মোট আয় পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পায়।
ক. ভোগ কী?
খ. সরকারি ব্যয় বলতে কি বোঝ?
গ. মোশারফ সাহেবের টাকা জমা করা এবং জমাকৃত টাকা কাজে নিয়োগ করার বিষয়টি অর্থনীতির আলোকে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উক্ত বিষয় দুটি যে ধারণাগুলো নির্দেশ করে তাদের মধ্যে পার্থক্য লেখ।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো অভাব পূরণের জন্য ব্যবহারের মাধ্যমে কোনো দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করাকে অর্থনীতিতে ভোগ বলে।

খ. কোনো দেশের সরকার তার যাবতীয় কর্মকান্ড সম্পাদনের জন্য যে ব্যয় করে তা হলো সরকারি ব্যয়।
সরকার তার দেশের ভেতরে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, দেশকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সামাজিক কল্যাণসাধন সর্বোপরি দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করেন। মূলত এসব ব্যয়ের যোগফলকেই সরকারি ব্যয় বলে।

গ. মোশারফ সাহেবের জমানো টাকা হলো সঞ্চয় এবং জমাকৃত টাকা কাজে নিয়োগ করা হলো বিনিয়োগ।
অর্থনীতিতে সঞ্চয় বলতে ভোগ ব্যয়ের উদ্বৃত্ত অংশকে বোঝায়। ব্যক্তির ভোগ ব্যয় যদি বেশি হয় তাহলে তার সঞ্চয়ের পরিমাণ কম হয়; আর ভোগ ব্যয় কম হলে সঞ্চয় বৃদ্ধি পায়। সুতরাং বলা যায় ব্যয়যোগ্য আয় থেকে মোট ভোগ বাদ দিলে যা থাকে তাই সঞ্চয়।
আবার, বিনিয়োগ বলতে বোঝায়, উৎপাদন ক্ষেত্রে উৎপাদনসামগ্রী যা আছে তার সাথে নতুন যন্ত্রপাতি ও নির্মাণক্ষেত্রের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ক্রয়, কাচাঁমালের বাড়তি মজুদ ও অন্যান্য উৎপাদন প্রাসঙ্গিক জিনিসপত্র যোগ করা। বিনিয়োগের মূল লক্ষ হলো উৎপাদন ও আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করা।
উদ্দীপকের মোশারফ সাহেব ফার্ম সম্প্রসারনের লক্ষ্যে তথা উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে তার সঞ্চিত অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। যার ফলে তার ফার্মের উৎপাদন আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তার মোট আয়ও পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। আর সব কিছুর মূলে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে সঞ্চয়।

ঘ. আলোচ্য উদ্দীপকে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের যে উপস্থিতি রয়েছে তার মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান।
সঞ্চয় ও বিনিয়োগ একটি অপরটির সাথে সম্পর্কযুক্ত হলেও উভয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ আয়ের উদ্বৃত্ত অংশ যা বর্তমানে ভোগ করা হয় না তাকে সঞ্চয় বলে। অন্যদিকে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যে পরিমাণ মূলধন দ্রব্য ও সরঞ্জাম হাতে থাকে এবং তার সাথে যে পরিমাণ নতুন দ্রব্য যুক্ত করা হয় তাকে বিনিয়োগ বলে। কোনো ব্যক্তির আয় হতে ব্যয় বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তাই সঞ্চয়। আবার, নতুন উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ও উৎপাদনসামগ্রী ক্রয় করার জন্য যে ব্যয় করা হয় তাই বিনিয়োগ।
অর্থনীতিতে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ দুটি মেীলিক ধারণা। সঞ্চয় ও বিনিয়োগ একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তবে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান থাকলেও সুদের বেলায় তাদের মধ্যে কতিপয় মেীলিক পার্থক্য দেখা যায়। তবে সার্বিকভাবে সঞ্চয় না হলে অর্থনীতিতে বিনিয়োগ হবে না।

৬. ২০১৪ সালে বাংলাদেশের ভোগ ব্যয় (C) আনুমানিক ৬০ হাজার ৫০ কোটি টাকা, বিনিয়োগ ব্যয় (I) ৪০ হাজার কোটি টাকা এবং সরকারি ব্যয় (G) ২৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
ক. জিডিপি কী?
খ. ভোগ কি আয়ের ওপর নির্ভরশীল?
গ. উদ্দীপক হতে বন্ধ অর্থনীতিতে সামগ্রীক ব্যয় নির্ণয় করো।
ঘ. সরকারি ব্যয় অতিরিক্ত ৫০০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি করলে ভারসাম্য অবস্থার ওপর কোন ধরনের পরিবর্তন সূচিত হবে? চিত্রের সাহায্যে আলোচনা করো।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত একটি আর্থিক বছরে দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্যসামগ্রী ও সেবাকর্মের অর্থমূল্যের সমষ্টিকে জিডিপি বলে।

খ. সাধারণত ভোগ আয়ের ওপর নির্ভরশীল।
ভোক্তার আয় বাড়লে তার ভোগ বাড়ে এবং আয় কমলে ভোগও কমে। তবে কখনো কখনো অন্যান্য বিষয় যেমন- সম্পদ, সুদের হার, সঞ্চয়, প্রদর্শন প্রভাব ইত্যাদি দ্বারা ভোগ প্রভাবিত হয়। তাছাড়া ভোক্তা কোনো সময় অর্থহীন হয়ে পড়লেও অতীত সঞ্চয় বা দান-খয়রাত থেকেও ভোগ করে। সুতরাং বলা যায়, অন্যান্য অবস্থা স্থির থাকলে ভোগ সরাসরি আয়ের ওপর নির্ভর করে।

গ. একটি নির্দিষ্ট সময়ে, সাধারণত একটি আর্থিক বছরে দেশের জনগণের বিভিন্ন প্রকার ব্যয়ের সমষ্টি হলো সামগ্রীক ব্যয়। সামাজিক অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের উৎপাদিত মোট দ্রব্য ও সেবার জন্য ব্যয়ই হলো সামগ্রীক ব্যয়। একটি তিন খাত বিশিষ্ট বন্ধ অর্থনীতিতে সামগ্রীক ব্যয়ের তিনটি পক্ষ থাকে, যথা- পরিবার, উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ও সরকার। সে হিসেবে সমাজের মোট ভোগ ব্যয় (C) ও বিনিয়োগ ব্যয় (I) এর সাথে সরকারি খাতের ভোগ ও বিনিয়োগ ব্যয় (G) যোগ করলে সামগ্রীক ব্যয় (AE) পাওয়া যায়। অর্থাৎ,
AE = C + I + G
= (৬০,০৫০ + ৪০,০০০ + ২৫,৩০০) কোটি টাকা
= ১,২৫,৩৫০ কোটি টাকা।
⸫ উদ্দীপকের বন্ধ অর্থনীতির সামগ্রীক ব্যয় ১,২৫,৩৫০ কোটি টাকা।

ঘ. উদ্দীপকের প্রদত্ত তথ্যানুসারে ২০১৪ সালে বাংলাদেশে ভারসাম্য জাতীয় আয়স্তর নির্ধারিত হয় ১,২৫,৩৫০ কোটি টাকা। যেখানে সামগ্রীক ব্যয়, সামগ্রীক যোগান বা আয়ের সমান হয়। এ অবস্থায় অঙ্কিত চিত্রে E0 বিন্দুতে দেখানো হলো।
চিত্রে ভূমি অক্ষে জাতীয় আয় বা সামগ্রীক যোগান এবং লম্ব অক্ষে ভোগ ব্যয়, বিনিয়োগ ব্যয় ও সরকারি ব্যয় তথা সামগ্রীক ব্যয় পরিমাপ করা হয়েছে। চিত্রে E0 বিন্দুতে সামগ্রীক ব্যয় রেখা C + I + G সামগ্রীক যোগান বা আয় রেখা AS কে E0 বিন্দুতে ছেদ করায় ভারসাম্য আয়স্তর ১,২৫,৩৫০ কোটি টাকা নির্ধারিত হয়।
এখন সরকারি ব্যয় ৫০০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি করলে নতুন সামগ্রীক ব্যয় রেখা C + I + G + ∆G সামগ্রীক আয় রেখা AS কে E1 বিন্দুতে ছেদ করে। এক্ষেত্রে নতুন ভারসাম্য আয়স্তর ১,৩০,৩৫০ কোটি টাকা নির্ধারিত হয়।
সুতরাং বলা যায়, সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করলে পূর্বের ভারসাম্য আয়স্তর পরিবর্তন ঘটবে এবং নতুন ভারসাম্য আয়স্তর বৃদ্ধি পাবে।

৭. মনে করো একটি অর্থনীতির ভোগ ও বিনিয়োগ সমীকরণ নিমণরূপ:
C = 100 + 0.5Y, I = 200
ক. NNI কী?
খ. GNI এবং GDP-এর মধ্যে মেীলিক পার্থক্য ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের সমীকরণ ব্যবহার করে সঞ্চয় ও বিনিযোগের সমতার মাধ্যমে ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয় করো।
ঘ. সরকারি ব্যয় ২০০ টাকা যুক্ত হলে ভারসাম্য জাতীয় আয়ের ওপর কীরূপ প্রভাব পড়বে? বিশ্লেষণ করো।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি দেশে উৎপাদিত চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবাসমূহের বাজার মূল্যের সমষ্টি থেকে মূলধনসামগ্রীর ব্যবহারজনিত ব্যয় বা ক্ষয়ক্ষতি বাদ দিলে যা থাকে তাকে NNI বা নিট জাতীয় আয় বলে।

খ. GNI ও GDP এর মধ্যে মেীলিক পার্থক্য হচ্ছে GNI হিসাবের সময় দেশে বসবাসকারী ছাড়াও বিদেশে অবস্থানরত দেশি নাগরিকদের উৎপাদন বা আয় ধরা হয়। কিন্তু দেশের ভিতরে বিদেশিদের বিনিয়োগ দ্বারা সৃষ্ট উৎপাদন বা আয় বাদ দেওয়া হয়। পক্ষান্তরে, GDP হিসাবের সময় দেশের ভিতরে দেশি ও বিদেশিদের দ্বারা উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবা অর্থমূল্য ধরা হয়; কিন্তু বিদেশে বসবাসকারী দেশি নাগরিকদের সৃষ্ট উৎপাদন বা আয় বাদ দেওয়া হয়।

গ. সঞ্চয় (S) ও বিনিয়োগ (I)-এর সমতা অর্থাৎ S = I সূত্র দ্বারা ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয় করা যায়।
ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয়ের জন্য উদ্দীপকে প্রদত্ত ভোগ সমীকরণ থেকে নিমণরূপভাবে সঞ্চয় সমীকরণ নির্ণয় করা হলো:
S = Y – C
এখানে, S = সঞ্চয়, Y = আয় এবং C = ভোগ
⸫ S = Y – (100 + 0.5Y)
= Y – 100 – 0.5Y
= - 100 + (1 – 0.5) Y
এখন ভারসাম্য জাতীয় আয়ের সূত্রানুসারে,
S = I
বা, – 100 + (1 – 0.5) Y= 200
বা, – 100 + 0.5Y = 200
বা, 0.5Y = 300
বা, Y =
= 600
অর্থাৎ উক্ত অর্থনীতির ভারসাম্য জাতীয় আয় হলো ৬০০।

ঘ. একটি দ্বিখাত বিশিষ্ট অর্থনীতিতে ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয়ের সূত্র হলো: Y = C + I
উক্ত সূত্র অনুযায়ী ভারসাম্য জাতীয় আয় হলো ৬০০। এখন একটি তিন খাত বিশিষ্ট অর্থনীতিতে ভারসাম্য জাতীয় আয়ের সূত্র, Y = C + I + G
সে হিসেবে উদ্দীপক অনুযায়ী,
Y = C + I + G
বা, = 100 + 0.5Y + 200 + 200
বা, Y – 0.5Y = 500
বা, 0.5Y = 500
⸫ Y1 = 1000
যেখানে, Y1 = 1000 সরকারি ব্যয় যুক্ত হওয়ার পর ভারসাম্য জাতীয় আয়।
এখানে, ∆ Y = Y1 – Y
= 1000 – 600
= 400
সুতরাং বলা যায়, সরকারি ব্যয় ২০০ টাকা যুক্ত হওয়ার পর ভারসাম্য জাতীয় আয় ৪০০ টাকা বৃদ্ধি পাবে।

৮. ২০১৪ সালে ‘ক’ দেশে জনগণের ভোগ ব্যয় ৫০০ কোটি টাকা, বিনিয়োগ ব্যয় ৩০০ কোটি টাকা। দেশটির সরকার জনগণের কল্যাণে উক্ত বছর ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় করেন। এছাড়া আমদানি দ্রব্যের মূল্য বাবদ দেশটি ৬০০ কোটি টাকা পরিশোধ করে এবং রপ্তানি বাবদ ৩৫০ কোটি টাকা আয় করে। ‘খ’ দেশের বাসিন্দা মি. আমিন উচ্চ বেতনে ‘ক’ দেশের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি প্রতি বছর তার পরিবারের জন্য নিজ দেশে টাকা প্রেরণ করেন।
ক. এনএনআই কী?
খ. সঞ্চয়ের সাথে বিনিয়োগ কীভাবে সম্পর্কিত?
গ. উদ্দীপকের আলোকে ‘ক’ দেশের ২০১৪ সালের জিএনআই নির্ণয় করো।
ঘ. মি. আমিনের অর্জিত আয় ‘ক’ দেশ ও ‘খ’ দেশের জিডিপি কে কীভাবে প্রভাবিত করে? বিশ্লেষণ করো।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক. কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি দেশের উৎপাদিত চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবাসমূহের বাজারমূল্যের সমষ্টি থেকে ব্যবহারজনিত বা ক্ষয়ক্ষতি বাদ দিলে যা থাকে তাই এনএনআই।

খ. সঞ্চয়ের সাথে বিনিয়োগ সরাসরি ও নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত।
আয়ের যে অংশ বর্তমানে ভোগ না করে ভবিষ্যতের জন্য রাখা হয় তাই হলো সঞ্চয়; আর সঞ্চিত অর্থকে মূলধন গঠনের উদ্দেশ্যে উৎপাদন ক্ষেত্রে নিয়োগ করা হলো বিনিয়োগ। সঞ্চয় থেকে বিনিয়োগের সৃষ্টি এ জন্য সঞ্চয় ও বিনিয়োগ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে অবদ্ধ। সময়ের ব্যবধানে একসময় সঞ্চয়ই বিনিয়োগে রূপান্তরিত হয়। তাই বর্তমানে সঞ্চয়কে ভবিষ্যতের বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করা হয়।

গ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে ‘ক’ দেশের ২০১৪ সালের জিএনআই নির্ণয় করা হলো-
জিএনআই পরিমাপে ব্যয় পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। এ পদ্ধতি অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময়ে, সাধারণত এক বছরে দেশে প্রাপ্ত দ্রব্য ও সেবা ক্রয়ের জন্য জনগণের মোট ভোগ ব্যয় (C), মোট বিনিয়োগ (I) এবং সরকারের ব্যয় (G) এর সমষ্টি নিতে হয়। তবে একটি খোলা অর্থনীতিতে জিএনআই পরিমাপের সময় রপ্তানি (X) ও আমদানি (M) ব্যয়ের ব্যবধান তথা (X – M) যুক্ত করা প্রয়োজন। সে হিসেবে একটি খোলা অর্থনীতিতে ব্যয় পদ্ধতি অনুযায়ী ২০১৪ সালে ‘ক’ দেশের জিএনআই,
= C + I + G + (X – M)
= {৫০০ + ৩০০ + ৪০০ + (৩৫০ - ৬০০)
= ৯৫০ কোটি টাকা।
⸫ ২০১৪ সালে ‘ক’ দেশটির জিএনআই ৯৫০ কোটি টাকা।

ঘ. মি. আমিনের অর্জিত আয় ‘ক’ দেশের জিডিপির পরিমাণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে এবং ‘খ’ দেশের জিডিপি পরিমাণ কমবে।
কোনো নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত একটি আর্থিক বছরে দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্যসামগ্রী ও সেবার অর্থমূল্যের সমষ্টিকে জিডিপি বলা হয়। জিডিপি হিসাবের সময় দেশের অভ্যন্তরে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ দ্বারা উৎপাদিত মোট দ্রব্য ও সেবাকর্মকে ধরা হয়; কিন্তু বিদেশে অবস্থানরত দেশি নাগরিকের দ্বারা সৃষ্ট উৎপাদন ও আয় ধরা হয় না। অর্থাৎ দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহারের ফলে মোট যে দ্রব্য ও সেবাকর্মের সৃষ্টি হয় তার আর্থিক মূল্যই হলো জিডিপি। এ ধারণার আলোকে, জিডিপি = নির্দিষ্ট সময়ে দেশে উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবার মোট বাজার মূল্য + সে দেশে বিদেশিদের দ্বারা সৃষ্ট উৎপাদন ও আয় - বিদেশে অবস্থানরত দেশি নাগরিকের অর্জিত উৎপাদন বা আয়।
জিডিপি পরিমাপের উপরোক্ত ধারণার প্রেক্ষিতে বরা যায়, ‘ক’ দেশে ‘খ’ দেশের কর্মরত নাগরিক মি. আমিনের অর্জিত আয় ‘ক’ দেশের জিডিপি গণনার সময় অন্তর্ভূক্ত হবে।

৯. ভোগ সমীকরণ C = 200 + 0.9Y, বিনিয়োগ সমীকরণ I = 200 এবং G = 300
ক. ভোগ কাকে বলে?
খ. স্বয়ম্ভূত ভোগের অর্থনৈতিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের ভোগ সমীকরণ থেকে ভোগ রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. উদ্দীপকের তথ্যগুলোর দ্বারা ভারসাম্য জাতীয় আয় বিশ্লেষণ করো।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো অভাব পূরণের জন্য ব্যবহারের মাধ্যমে কোনো দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করাকে ভোগ বলে।

খ. ভোগ অপেক্ষক C = a + b, এখানে a হলো স্বয়ম্ভূত ভোগ যা আয় শূন্য হলেও বজায় থাকে।
‘ a ’ এর অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা: ভোগ অপেক্ষক C = a + bY । এখন ধরি Y = 0 অতএব C = a । স্বল্পকালে আয় শূন্য হলেও ভোগ ব্যয় শূন্য হয় না। অর্থাৎ Y = 0 হলে C ˃ 0 হবে। কারণ মানুষ এ সময় অতীত সঞ্চয় দ্বারা ভোগ অব্যাহত রাখবে। সুতরাং a = 0 হতে পারে না। অবশ্যই ধনাক্তক হবে।

গ. উদ্দীপকের প্রদত্ত ভোগ সমীকরণের আলোকে নিচে ভোগ রেখা অঙ্কন করা হলো।
রেখা চিত্রে Y এর বিভিন্ন মানের জন্য C এর মান নির্দেশ করে একটি ভোগ সূচি তৈরি করে তার ভিত্তিতে ভোগ রেখা অঙ্কন-

Y

C = 200 + 0.9Y

       ১০০

       ২৯০

       ২০০

       ৩৮০

       ৩০০

       ৪৭০

       ৪০০

       ৫৬০

প্রদত্ত চিত্রে ভূমি অক্ষে জাতীয় আয় বা সামগ্রিক আয় ও লম্ব অক্ষে ভোগ ব্যয়ের পরিমাপ করা হয়েছে। যখন Y = ১০০, তখন C = ২৯০ যা চিত্রে a বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত। আবার Y = ২০০, ৩০০ ও ৪০০ অবস্থায় C যথাক্রমে ৩৮০, ৪৭০ ও ৫৬০ যা b, c ও d বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে। এখন জাতীয় আয় বা সামগ্রিক আয় ও ভোগ ব্যয় নির্দেশক বিন্দুগুলো যুক্ত করে C রেখাটি টানি। এটিই হলো উদ্দীপকের আলোকে অঙ্কিত ভোগ রেখা।

ঘ. উদ্দীপকের প্রদত্ত তথ্যের আলোকে নিচে ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয় করা হলো-
তিন খাত বিশিষ্ট অর্থনীতিতে যে স্তরে দেশের মোট ভোগ ব্যয় (C) ও বিনিয়োগ ব্যয় (I) এবং সরকারি ব্যয় (G) এর সমষ্টি জাতীয় আয় (Y) এর সমান হয়, সেই স্তরে ভারসাম্য জাতীয় আয় (Y0) নির্ধারিত হয়।
উদ্দীপকে ভোগ সমীকরণ C = 200 + 0.9Y
বিনিয়োগ সমীকরণ I = I0 = 200
এবং সরকারি ব্যয় G = G0 = 300
এখন ভারসাম্য জাতীয় আয়ের সূত্রানুযায়ী,
Y = C + I + G
বা, Y = 200 + 0.9Y + 200 + 300
বা, Y = 700 + 0.9Y
বা, Y – 0.9Y = 700
বা, 0.1Y = 700
বা,Y =
= 7000
⸫ উদ্দীপক অনুসারে ভারসাম্য জাতীয় আয় ৭০০০ টাকা।

১০. ভোগ সমীকরণ: C = 50 + 0.5Y, বিনিয়োগ I0 = 50
ক. সামগ্রিক আয় কাকে বলে?
খ. GNI ও GDP কী একই অর্থ বহন করে? ব্যাখ্যা করো।
গ. S = I0 এর সমতা সাপেক্ষে ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয় করো।
ঘ. স্বয়ম্ভূত বিনিয়োগ ৫০ হতে বৃদ্ধি পেয়ে ১৫০ হলে ভারসাম্য জাতীয় আয়ে কী প্রভাব পড়বে? বিশ্লেষণ করো।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত একটি আর্থিক বছরে দেশের জনগণের উপার্জিত আয়ের সমষ্টিকে সামগ্রিক আয় বলে।

খ. GNI ও GDP কখনোই একই অর্থ প্রকাশ করে না।
GNI ও GDP এর মধ্যে মেীলিক পার্থক্য হচ্ছে GNI হিসাবের সময় দেশে বসবাসকারী ছাড়াও বিদেশে অবস্থানরত দেশি নাগরিকদের উৎপাদন বা আয় ধরা হয়। কিন্তু দেশের ভিতরে বিদেশিদের বিনিয়োগ দ্বারা সৃষ্ট উৎপাদন বা আয় বাদ দেওয়া হয়। পক্ষান্তরে, GDP হিসাবের সময় দেশের ভিতরে দেশি ও বিদেশিদের দ্বারা উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবা অর্থমূল্য ধরা হয়; কিন্তু বিদেশে বসবাসকারী দেশি নাগরিকদের সৃষ্ট উৎপাদন বা আয় বাদ দেওয়া হয়।

গ. সঞ্চয় (S) ও বিনিয়োগ (I) এর সমতা অর্থাৎ S = I সূত্র দ্বারা ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয় করা যায়।
S = Y – C
= Y – (50 + 0.5Y)
= - 50 + (1 – 0.5)Y
= - 50 + 0.5Y
এখানে ভারসাম্য জাতীয় আয় নির্ণয়ের সূত্রনুসারে,
S = I0
বা, - 50 + 0.5Y = 50
বা, 0.5Y = 50 + 50
বা, Y =
= 200
সুতরাং উক্ত অর্থনীতির ভারসাম্য আয় ২০০ টাকা।

ঘ. কোনো অর্থনীতিতে বিনিয়োগ পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে জাতীয় আয় বৃদ্ধি পায়। বিনিয়োগ অধিক উৎপাদনে সহায়তা করে বলে এমনটি হয়। উদ্দীপকে দেখা যায় যে, বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০ টাকা হওয়ায় ভারসাম্য জাতীয় আয় ২০০ টাকা। যা ‘গ’ হতে প্রাপ্ত। এখন স্বয়ম্ভূত বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ১৫০ টাকা হলে নতুন ভারসাম্য জাতীয় আয় বৃদ্ধি পাবে।
ভারসাম্য অবস্থায়, S = I
বা, - 50 + 0.5Y = 150
বা, 0.5Y = 150 + 50
বা, Y =
= 400
বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ার পরে নতুন ভারসাম্য জাতীয় আয় ৪০০ টাকা হয় এবং পূর্বের ভারসাম্য জাতীয় আয় ছিল ২০০ টাকা।
অর্থাৎ, ভারসাম্য জাতীয় আয় বৃদ্ধির মাত্রা,
∆ Y = (৪০০ - ২০০) টাকা
= ২০০ টাকা
সুতরাং বলা যায়, স্বয়ম্ভূত বিনিয়োগ ১৫০ টাকা বাড়ায় ভারসাম্য জাতীয় আয় ২০০ টাকা বৃদ্ধি পায়।
Share:

0 Comments:

Post a Comment