HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৮

HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Economics 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চমাধ্যমিক

অর্থনীতি
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৮ম অধ্যায়

HSC Economics 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১. জনাব মুনিরুজ্জামান এর ছোট একখন্ড জমির পাশ দিয়ে হাইওয়ে তৈরি হওয়ায় তার জমির দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। এ সুযোগে তিনি উচ্চ দামে জমিটি বিক্রয় করে দূরবর্তী এলাকায় কম দামের জমি ক্রয় করে বসবাসের ব্যবস্থা করেন এবং বিভিন্ন ধরনের নয় একর জমি চাষাবাদের জন্য ভাড়া নেন। প্রথমে তিন একর জমির মোট আয় ১২,০০০ টাকা, দ্বিতীয় তিন একর জমির মোট আয় ৮০০০ টাকা এবং তৃতীয় তিন একর জমির মোট আয় ৬০০০ টাকা। প্রত্যেক প্রকার জমিতে ফসল চাষের মোট ব্যয় ৬০০০ টাকা।
ক. নিম খাজনা কী?
খ. খাজনা ও দামের সম্পর্ক লিখ?
গ. উদ্দীপকের জনাব মুনিরুজ্জামান জমির বিক্রয়ের আয়কে কোন ধরনের আয় বলা যায় তা যুক্তিসহ লেখ।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্ব বিশ্লেষণ করো।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের সৃষ্ট উৎপাদনের উপকরণ হতে স্বল্পকালে যে অতিরিক্ত আয় পাওয়া যায় তাকে নিম খাজনা বলে।

খ. রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্ব অনুসারে খাজনা দামের অন্তর্ভুক্ত নয়। অর্থাৎ খাজনা দেওয়ার ফলে ফসলের দাম বাড়ে না বরং দাম বৃদ্ধির ফলেই খাজনার উদ্ভব হয়।
ডেভিড রিকার্ডো মনে করেন প্রান্তিক জমিতে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে শুধু উৎপাদন খরচ উঠে মাত্র তথা এর উদ্বৃত্ত কোনো আয় হয় না। তাই প্রান্তিক জমির খাজনা দিতে হয় না। আবার দাম বৃদ্ধির ফলে খাজনার উদ্ভব হয় এবং দাম বেশি হলেও খাজনা বেশি হয়। তাই দাম ও খাজনার মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান।

গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত জনাব মুনিরুজ্জামানের জমি বিক্রয়ের আয়কে অনুপার্জিত আয় বলে।
সাধারণত অর্থনৈতিক উন্নয়ন তথা কোনো এলাকার শিল্প, কারখানা,রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র ইত্যাদি উন্নতি হলে সে এলাকায় জমির চাহিদা বেড়ে যায় এবং জমির মূল্য আগের চেয়ে বেশি হয়। এর ফলে জমির মালিকগণ অতিরিক্ত আয় ভোগ করেন। কিন্তু এই বর্ধিত আয়ের জন্য তাকে অর্থ ব্যয় করতে হয় না। এ ভাবে জমির মালিক বিনা খরচে বা পরিশ্রমে যে অতিরিক্ত আয় ভোগ করে তাকে অনুপার্জিত আয় বলে।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায় জনাব মুনিরুজ্জামানের ছোট একখন্ড জমির পাশ দিয়ে হাইওয়ে তৈরি হওয়ায় তার জমির দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এই সুযোগে তিনি জমি উচ্চ দামে বিক্রি করে অন্য এলাকায় কম দামে জমি ক্রয় করে বসবাস শুরু করেন। এতে তার যে অতিরিক্ত আয় হয়েছে তার জন্য তাকে কোনো ব্যয় করতে হয়নি। শুধু ওই এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি হওয়ার কারণে তার এই অতিরিক্ত আয় হযেছে। তাই বলা যায় উদ্দীপকের মুনিরুজ্জামানের জমি বিক্রয়ের আয় হলো অনুপার্জিত আয়।

ঘ. নিচে উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্বের বিশ্লেষণ করা হলো।
ডেভিড রিকার্ডো মনে করেন খাজনা হচ্ছে জমির মালিক ও অবিনশ্বর ক্ষমতার প্রতিদান। এ ক্ষমতা বলতে তিনি জমির উর্বরা শক্তিকেই নির্দেশ করেন। তার মতে সব জমির উর্বরা শক্তি সমান নয়, এ ক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট ও নিকৃষ্ট জমি রয়েছে। এর উৎপন্ন ফসলের পার্থক্যের ওপর খাজনা নির্ভর করে। রিকার্ডোর মতে যে জমির উৎপাদন খরচ ও আয় পরস্পর সমান সেরূপ জমিকে খাজনাবিহীন জমি বা প্রান্তিক জমি বলা হয়। সুতরাং বিভিন্ন প্রকার জমির উর্বরা শক্তির পার্থক্যের জন্য খাজনার সৃষ্টি হয়। এজন্য তিনি খাজনাকে উৎপাদকের উদ্বৃত্ত বা পার্থক্যজনিত প্রাপ্তি বলে অভিহিত করেছেন।
উদ্দীপকে দেখা যায় জানাব মুনিরুজ্জামান চাষাবাদকৃত প্রথম তিন একর জমির মোট আয় ১২,০০০ টাকা দ্বিতীয় তিন একর জমির আয় ৮০০০ টাকা এবং তৃতীয় তিন একর জমির মোট আয় ৬০০০ টাকা। প্রত্যেক তিন একর জমিতে চাষের ব্যয় ৬০০০ টাকা। সুতরাং,
১ম তিন একর জমির খাজনা = (১২০০০ - ৬০০০)
= ৬০০০ টাকা
২য় তিন একর জমির খাজনা = (৮০০০ - ৬০০০)
= ২০০০ টাকা
৩য় তিন একর জমির খাজনা = (৬০০০ - ৬০০০)
= ০ টাকা
এক্ষেত্রে ১ম ও ২য় তিন একর জমিতে যে পরিমাণ উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হয় তাই হলো ওই সব জমির খাজনা। ৩য় তিন একর জমিতে কোনো উদ্বৃত্ত না থাকায় এ জমির কোনো খাজনা নেই, এটি প্রান্তিক বা খাজনাবিহীন জমি।

২. একটি কৃষি খামারে জমি ব্যবহারের জন্য প্রাপ্য আয় ৩০০০ টাকা, মূলধন বিনিয়োগ বাবদ সুদ ২০০০ টাকা, প্রাপ্য মুজরি ১৪০০ টাকা, মালিক কর্তৃক সরকারকে প্রদত্ত কর ১৬০০ টাকা এবং ঝুঁকি গ্রহণের জন্য মুনাফা ৪০০০ টাকা।
ক. অর্থনীতিতে খাজনা কী?
খ. অনুপার্জিত আয় কীভাবে উদ্ভব হয়?
গ. উদ্দীপক অনুসারে মোট খাজনা নির্ণয় করো।
ঘ. কৃষি খামারটির নিট খাজনা নির্ণয় করে মোট খাজনার সাথে পার্থক্য করো।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. অর্থনীতিতে ভূমি বা সীমাবদ্ধ যোগানবিশিষ্ঠ প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের জন্য তার মালিককে যে অর্থ দেওয়া হয় তাকে খাজনা বলে।

খ. জমির চাহদা বৃদ্ধি এবং উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য অনুপার্জিত আয়ের উদ্ভব হয়।
কোনো এলাকায় শহর প্রসারিত হলে বা নতুন শহর-বন্দর গড়ে উঠলে কিংবা শিল্পকারখানা স্থাপিত হলে সে এলাকার জমির দাম বেড়ে যায়। আবার স্থানীয় কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনাধীন যদি কোনো এলাকার রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র, যোগাযোগ ব্যবস্থা, গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালত ইত্যাদি গড়ে উঠে তবে সে এলাকার জমির গুরুত্ব অনেক গুণ বেড়ে যায়। এভাবে অনুপার্জিত আয়ের উদ্ভব হয়।

গ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে মোট খাজনা নির্ণয় করা হলো:
ভূমি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের মালিকানা থেকে মোট যে আয় হয় তাকে মোট খাজনা বলে। কাজেই মোট খাজনা = (নিট খাজনা + সুদ + মুজরি + কর + মুনাফা)।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায় একটি কৃষি খামারে জমি ব্যবহারের জন্য আয় ৩০০০ টাকা, মূলধন বিনিয়োগ বাবদ সুদ ২০০০ টাকা, মুজরি ১৪০০ টাকা, প্রদত্ত কর ১৬০০ টাকা এবং মুনাফা ৪০০০ টাকা। কাজেই মোট খাজনা = ( ৩০০০ + ২০০০ + ১৪০০ + ১৬০০ + ৪০০০) = ১২,০০০ টাকা। অর্থাৎ মোট খাজনার পরিমাণ ১২,০০০ টাকা।

ঘ. নিচে কৃষি খামারটি নিট খাজনা নির্ণয় করে মোট খাজনা ও নিট খাজনার মধ্যে পার্থক্য করা হলো:
মোট খাজনা থেকে আনুষঙ্গিক খরচ বাদ দিলে যা থাকে তাই হলো নিট খাজনা। অর্থাৎ শুধু জমি ব্যবহারের জন্য জমির মালিককে যে অর্থ দিতে হয় তাকে অর্থনৈতিক খাজনা বলে।
উদ্দীপকের আলোকে নিট খাজনা,
= মোট - আনুষঙ্গিক খরচ
= ১২,০০০ - (২০০০ + ১৪০০ + ১৬০০ + ৪০০০)
= ১২,০০০ - ৯০০০ টাকা
= ৩০০০ টাকা
নিট খাজনা ও মোট খাজনার মধ্যকার পার্থক্য নিমণরূপ:
1.নিট খাজনা মোট খাজনায় অন্তর্ভূক্ত থাকে। তাই মোট খাজনা বৃহৎ ও নিট খাজনা ক্ষুদ্র ধারণা।
2.শুধু জমি ব্যবহারের জন্য প্রাপ্ত অর্থ হলো নিট খাজনা। অন্যদিকে নিট খাজনা ও আনুষঙ্গিক খরচের সমষ্টি হলো মোট খাজনা।
3.নিট খাজনা = মোট খাজনা - (মুজরি + সুদ + মুনাফা)। কিন্তু মোট খাজনা = নিট খাজনা + মুজরি + সুদ + মুনাফা।
তাই আকারগত পার্থক্যের কারণে নিট এবং মোট খাজনার পার্থক্য বিদ্যমান।

৩. সহিদুল ও আইয়ুব আলী জাল ও নেীকা দিয়ে সানিয়াজান নদীতে মাছ ধরে। হঠাৎ নদীতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ায় জাল ও নেীকার চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। সহিদুল ও আইয়ুব আলী চেয়েছিলো নতুন জাল ও নেীকা কিনবে। তা এ স্বল্প সময়ে সম্ভব হয়নি। তাই তাদের কাছে যেসব জাল ও নেীকা ছিল সেগুলো দিয়ে মাছ ধরে অনেক আয় করা সম্ভব।
ক. নিট খাজনা কাকে বলে?
খ. অনুপার্জিত আয় কীভাবে সৃষ্টি হয়?
গ. জাল ও নেীকার ক্ষেত্রে কোন ধরনের খাজনার উদ্ভব হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. দীর্ঘমেয়াদে জাল ও নেীকা থেকে অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব হবে কি? বিশ্লেষণ করো।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে শুধু জমি ব্যবহারের জন্য এর মালিককে যে অর্থ দেওয়া হয় তাকে নিট খাজনা বলে।

খ. দেশের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামোর উন্নয়ন তথা উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে অনুপার্জিত আয় সৃষ্টি হয়।
কোনো এলাকায় বা শহরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে অতিরিক্ত শিল্প, কারখানা, রাস্তাঘাট, বৈদ্যুতিক ব্যবস্তা প্রভৃতির উন্নতি ঘটলে সেখানকার জমির দাম হঠাৎ করে বৃদ্ধি পায়।ফলে মালিকগণ পূর্বের চেয়ে অতিরিক্ত আয় ভোগ করে। তবে এ বর্ধিত পরিমাণ আয়ের জন্য তাকে কোনো অর্থ ব্যয় করতে হয় না। সাধারণত এরূপ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্যই অনুপার্জিত আয় সৃষ্টি হয়।

গ. উদ্দীপকটিতে সানিয়াজান নদীতে হঠাৎ করে প্রচুর মাছ ধরা পড়ায় জাল ও নেীকার চাহিদা বৃদ্ধিতে সেখানে নিম খাজনার উদ্ভব হয়েছে।
স্বল্পকালে মানবসৃষ্ট মূলধনী দ্রব্যসামগ্রী থেকে এর মালিকগণ অতিরিক্ত যে আয় করতে পারেন তাকে নিম খাজনা বলে। মানবসৃষ্ট এসব মূলধনী দ্রব্যসামগ্রীর যোগান দীর্ঘকালে স্থিতিস্থাপক হলেও স্বল্পকালে অস্থিতিস্থাপক। অস্থিতিস্থাপক এরূপ মূলধনী দ্রব্যসামগ্রী থেকে যা অর্জিত হয় তাই হলো নিম খাজনা।
সানিয়াজান নদীতে হঠাৎ করে প্রচুর মাছ ধরা পড়ায় জাল ও নেীকার চাহিদা বেড়ে যায়। এজন্য সহিদুল ও আইয়ুব আলীর জাল ও নেীকা থেকে প্রচুর আয় হয়। জাল ও নেীকা এক ধরনের মূলধনী দ্রব্য। এগুলো তৈরি করতে সময় লাগে বলে স্বল্পকালে এর যোগান অস্থিতিস্থাপক। তাই স্বল্পকালে চাইলেই এর যোগান বৃদ্ধি করা যায় না। কিন্তু দীর্ঘকলে এর যোগান চাহিদামাফিক বাড়ানো অনেক সহজ। নেীকা ও জালের চাহিদা স্বল্পকালে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এর যোগান বাড়ানো সম্ভব নয়। এজন্য এ থেকে অতিরিক্ত আয় হয়। এরূপ অতিরিক্ত আয়ই হলো নিম খাজনা। সুতরাং উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় নেীকা ও জালের আকস্মিক চাহিদা বৃদ্ধির দরুন নিম খাজনার উদ্ভব হয়েছে।

ঘ. সহিদুল ও আইয়ুব আলী সানিয়াজান নদীতে মাছ ধরে। এ কাজে তারা নেীকা ও জাল ব্যবহার করে। হঠাৎ নদীতে প্রচুর মাছ ধড়া পড়ায় জাল ও নেীকার চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। সহিদুল ও আইয়ুব আলী চেয়েছিল নতুন জাল ও নেীকা কিনতে। তা স্বল্প সময়ে সম্ভব হয়নি। এখন তাদের জাল নেীকা থেকে স্বল্প সময়ে অতিরিক্ত আয় হয়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এ থেকে অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব হবে না। কেননা দীর্ঘকালে জাল ও নেীকার যোগান স্থিতিস্থাপক।
স্বল্পকালে মানবসৃষ্ট মূলধনী দ্রব্যসামগ্রী থেকে অতিরিক্ত আয় উপার্জন হয় অস্থিতিস্থাপক যোগানের কারণে। স্বল্পকালে মূলধনী দ্রব্যসামগ্রীর চাহিদা বাড়লেও যোগান বাড়ানো সম্ভব হয় না। কিন্তু দীর্ঘকালে চাহিদার সাথে সাথে যোগানের সামঞ্জস্য বিধান করার জন্য যোগান বাড়ানো যায়। তাই স্বল্পকালে এরূপ মূলধনী দ্রব্যসামগ্রী থেকে অতিরিক্ত আয় করা গেলেও দীর্ঘকালে তা সম্ভব হয় না।
গহিদুল ও আইয়ুব আলীর জাল ও নেীকার ক্ষেত্রেও কথা সমভাবে প্রযোজ্য। তাদের এ মূলধনী দ্রব্যসামগ্রীর স্বল্পকালীন চাহিদা বাড়ার ফলে অতিরিক্ত আয় সৃষ্টি হয়। কিন্তু দীর্ঘকালে এরূপ দ্রব্যসামগ্রীর চাহিদা বাড়লে যোগানও বাড়াতে হয়। তাই দীর্ঘমেয়াদে এসব দ্রব্যসামগ্রী থেকে অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব নয়।
সুতরাং বলা যায়, দীর্ঘমেয়াদে সহিদুল ও আইয়ুব আলীর জাল ও নেীকা থেকে অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব হবে না।

৪. 
মোট খাজনা কাকে বলে?
ক. মোট খাজনা কাকে বলে?
খ. অবস্থানগত পার্থক্যের কারণে কেন খাজনা দেওয়া হয়?
গ. খাজনার পরিমাণ নির্ণয় করো।
ঘ. রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্বের সাথে উদ্দীপকের তল্টটি কী মেল রয়েছে? বিশ্লেষণ করো।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জমি ব্যবহারকারী কর্তৃক জমির মালিককে চুক্তি অনুসারে প্রদত্ত মোট অর্থকে মোট খাজনা বলে।

খ. যেসব কারণে খাজনার উদ্ভব হয় তার মধ্যে জমির অবস্থানগত পার্থক্য অন্যতম। লোকবসতি আছে এমন জায়গায় বা শহরের কাছে জমিগুলোতে দূরের জমিগুলোর তুলনায় সহজেই যাতায়াত করা যায়।এ জন্য এসব জমিতে পরিচালিত কৃষিকাজ তত্ত্বাবধানের খরচ অপেক্ষাকৃত কম। তাছাড়া এসব জমিতে কৃষি উপকরণসমূহ নেওয়া ও সেখান থেকে উৎপাদিত ফসল আনারও খরচ কম। এ জন্য এসব জমি দূরের জমিগুলের তুলনায় উদ্বৃত্ত আয় করে যা খাজনা হিসেবে দেওয়া হয়। এ জন্য বলা হয় অবস্থানগত পার্থক্যের কারণে খাজনা দেওয়া হয়।

গ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে খাজনার পরিমাণ নির্ণয় করা হলো।
সীমাবদ্ধ যোগান বিশিষ্ট উৎপাদনের উপাদানসমূহ তাদের স্বাভাবিক আয় অপেক্ষা যে অতিরিক্ত আয় উপার্জন করে তাকেই অর্থনীতির পরিভাষায় খাজনা বলে। উদ্দীপকের ভূমি অক্ষে (ox) জমির চাহিদা ও যোগানের পরিমাণ এবং লম্ব অক্ষে (oy) খাজনা পরিমাপ করা হয়েছে। জমির যোগান সম্পূর্ণ অস্থিতিস্থাপক হওয়ায় যোগান রেখা লম্ব অক্ষে্যর সমান্তরাল হয়েছে। এ ক্ষেত্রে খাজনার পরিমাণ জমির চাহিদার ওপর নির্ভর করে। জমির প্রাথমিক চাহিদা যখন AD0 তখন a বিন্দুতে খাজনার পরিমাণ হবে (১০০ × ৫০) = ৫০০০ টাকা। আবার যখন জমির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে AD1 হয় তখন b বিন্দুতে ভারসাম্য স্থানান্তর হয়। এক্ষেত্রে খাজনার পরিমাণ হবে (১০০ × ১০০) = ১০,০০০ টাকা। এভাবে চাহিদা বৃদ্ধির ফলে জমির খাজনাও বৃদ্ধি পাবে।

ঘ. উদ্দীপকে রেখা চিত্রের মাধ্যমে প্রকাশিত তত্ত্বটি হলো খাজনার আধুনিক তত্ত্ব। রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্ব আর এ খাজনা তত্ত্বটির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।
রিকার্ডোর মতে খাজনা হলো উৎপাদকের উদ্বৃত্ত আয়। এটি উৎকৃষ্ট ও নিকৃষ্ট ভূমির উৎপাদন মূল্যের পার্থক্যের সমান। অন্যদিকে খাজনার আধুনিক তত্ত্ব মতে খাজনা হলো অস্থিতিস্থাপক যোগান বিশিষ্ট যেকোনো উপাদান ব্যবহারের দাম। আবার রিকার্ডোর মতে কেবল ভূমির ক্ষেত্রেই খাজনার উদ্ভব। কিন্তু খাজনার আধুনিক তত্ত্বনুযায়ী অস্থিতিস্থাপক যোগান বিশিষ্ট যে উপাদানের ক্ষেত্রে খাজনার সৃষ্টি হয়।
রিকার্ডো মনে করেন ভূমির উর্বরতা তারতম্যের জন্য খাজনার পার্থক্য দেখা দেয়। নিকৃষ্ট ভূমি তথা অনুর্বর ভূমির তুলনায় উর্বর থেকে উর্বরতর ভূমিগুলো থেকে অধিকতর ফসল দেয়। এজন্য উর্বরতাভেদে খাজনার পার্থক্য দেখা যায়। অর্থাৎ ভূমির চাহিদার পার্থক্যের জন্য খাজনার পার্থক্য দেখা দেয়। জমির চাহিদা বাড়লে খাজনা বাড়ে এবং জমির চাহিদা কমলে খাজনা কমে। আবার রিকার্ডোর মতে ভূমির অবস্থানগত পার্থক্যের জন্যও খাজনার সৃষ্টি হয়। শহরের কাছে ভূমি, দূরবর্তী ভূমিগুলোর তুলনায় কম খরচ সম্পন্ন হওয়ায় অধিক ফসল দেয়। এজন্য সেখানে খাজনা দিতে হয়। কিন্তু খাজনার আধুনিক তত্ত্বনুযায়ী উপাদানের যোগান কেবল অস্থিতিস্থাপক হলেই খাজনার সূত্রপাত ঘটে।
সুতরাং বলা যায়, রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্ব এবং খাজনার আধুনিক তত্ত্ব এক নয় বরং এদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।

৫. 
ক. অনুপার্জিত আয় কী?
খ. খাজনা কেন দেওয়া হয়?
গ. উদ্দীপকের চিত্রে খাজনা নির্ধারণের যে তত্ত্বটি প্রকাশ পেয়েছে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের কোন শ্রেণির জমির খাজনা কত তা নির্ধারণ করো এবং ব্যাখ্যা দাও।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূমির মালিকের নিজস্ব শ্রম ও বিনিয়োগ ছাড়া ভূমির মূল্য বৃদ্ধি পেলে এর মালিক যে অতিরিক্ত অর্থ লাভ করে তাকে অনুপার্জিত আয় বলে।

খ. জমির সীমাবদ্ধ যোগান ও উর্বরতার পার্থথ্যের জন্য খাজনা দেওয়া হয়।
খাজনা উৎপত্তির প্রধান কারণ জমির যোগানের সীমাবদ্ধতা। দেশের জনসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে জমির চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু জমির যোগান মোটামোটি ভাবে সীমাবদ্ধ। তাই জমির কারখানা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জমির উর্বরতার পার্থক্যের কারণে খাজনার উদ্ভব ঘটে। জমির ক্ষেত্রে লক্ষ করা যায় কোনো জমি বেশি উর্বর আবার কোনো জমি কম উর্বর। অপেক্ষাকৃত বেশি উর্বর জমির খাজনা বেশি।

গ. উদ্দীপকে প্রদত্ত রেখাচিত্রটি খাজনা নির্ধারণে রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্ব প্রকাশ করা হয়েছে।
রিকার্ডোর মতে যে জমিতে উৎপাদিত ফসলের দাম এবং উৎপাদন ব্যয় সমান হয় তাকে প্রান্তিক বা খাজনাবিহীন জমি বলে। প্রান্তিক জমির তুলনায় উৎকৃষ্ট জমিতে যে অতিরিক্ত বা উদ্বৃত্ত ফসল উৎপন্ন হয় তার মূল্যই হলো খাজনা। তাই খাজনা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে উৎপাদকের উদ্বৃত্ত বা পার্থক্যজনিত লাভ।
চিত্রে OA, AB ও BC কে যথাক্রমে ১ম,২য় ও ৩য় শ্রেণির জমি হিসেবে ধরা হলো। তিন শ্রেণির জমিরই উৎপাদন ব্যয় সমান যা চিত্র অনুযায়ী ধরা যাক ৪০০ টাকা। এক্ষেত্রে,
১ম জমির খাজনা = (৬০০ - ৪০০) বা ২০০ টাকা
২য় জমির খাজনা = (৫০০ - ৪০০) বা ১০০ টাকা
৩য় জমির খাজনা = (৪০০ - ৪০০) বা ০ টাকা
এক্ষেত্রে ১ম ও ২য় জমিতে যে পরিমাণ উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হয় তাই হলো ওই সব জমির খাজনা। ৩য় শ্রেণির জমিতে কোনো উদ্বৃত্ত না থাকায় এ জমির কোনো খাজনা নেই, এটি প্রান্তিক বা খাজনাবিহীন জমি।

ঘ. উদ্দীপকে প্রদত্ত চিত্রের মাধ্যমে রিকার্ডোর খাজনার তত্ত্বটি প্রকাশ পায়।
রিকার্ডোর মতে খাজনা হলো উৎপাদকের উদ্বৃত্ত যা জমি থেকে প্রাপ্ত উৎপাদনের বিক্রয়লব্ধ অর্থ থেকে উৎপাদন ব্যয় বাদ দিলে পাওয়া যায়। চিত্রে ১ম শ্রেণির খাজনার পরিমাণ ২০০ টাকা, ২য় শ্রেণির খাজনার পরিমাণ ১০০ টাকা এবং ৩য় শ্রেণির খাজনার পরিমাণ ০ টাকা। প্রাপ্ত খাজনা চিত্রে নিম্নোক্তভাবে নির্ধারিত হয়েছে:
উদ্দীপকে প্রদত্ত চিত্রে রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্বটি প্রকাশের জন্য ধরে নেওয়া হচ্ছে যে সকল চাষযোগ্য জমি সমআয়তন বিশিষ্ট হলেও উর্বরতার দিক থেকে ভিন্ন। এ হিসেবে অধিক উর্বর জমি OA কে ১ম শ্রেণির জমি, AB কে ২য় শ্রেণির জমি এবং BC কে ৩য় শ্রেণির জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সকল জমিতে চাষের খরচ ধরা হয়েছে ৪০০ টাকা। এসবের প্রেক্ষিতে ১ম শ্রেণির জমির খাজনা নির্ধারণ হয়েছে (৬০০ - ৪০০) = ২০০ টাকা, ২য় শ্রেণির খাজনা নির্ধারণ করা হয়েছে (৫০০ - ৪০০) = ১০০ টাকা এবং ৩য় শ্রেণির জমির খাজনা নির্ধারণ করা হয়েছে (৪০০ - ৪০০) = ০ টাকা।
চিত্রে খাজনার এ বিষয়টি ছায়াবৃত্ত অঞ্চল দ্বারা দেখানো হয়েছে। C আয়তনের সমান ক্ষেত্র A ও B ক্ষেত্র বাদ দিলে যে ছায়াবৃত্ত অংশ পাওয়া যায় তাই A ও B শ্রেণির জমির খাজনা।

৬. উৎপাদনকারীরা উৎপাদন করার জন্য ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠনের চাহিদা করে। এগুলোর যোগান সীমাবদ্ধ বলে উৎপাদনকারীরা এগুলোর নূন্যতম যোগান দাম অপেক্ষা বেশি দামে ক্রয় করে উৎপাদন কাজে ব্যবহার করে। এগুলোর নূন্যতম যোগান দাম অপেক্ষা অতিরিক্ত দামকে আমরা এক বিশেষ নামে জানি।
ক. নিট খাজনা কাকে বলে?
খ. অনুপার্জিত আয় কীভাবে উদ্ভব হয়?
গ. উদ্দীপকে যা আমরা বিশেষ নামে জানি বলা হয়েছে তা কী? এর বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে যা আমরা বিশেষ নামে জানি তা কী কী কারণে উদ্ভব হতে পারে? বিশ্লেষণ করো।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে শুধু জমি ব্যবহারের জন্য এর মালিককে যে অর্থ দেওয়া হয় তাকে নিট খাজনা বলে।

খ. জমির চাহিদা বৃদ্ধি এবং উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য অনুপার্জিত আয়ের উদ্ভব হয়।
কোনো এলাকায় শহর প্রসারিত হলে বা নতুন শহর-বন্দর গড়ে উঠলে কিংবা শিল্পকারখানা স্থাপিত হলে সে এলাকার জমির দাম বেড়ে যায়। আবার স্থানীয় বা কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনাধীন যদি কোনো এলাকার রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র, যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদি গড়ে উঠে তবে সে এলাকার জমির গুরুত্ব অনেক গুণ বেড়ে যায়। এভাবেই অনুপার্জিত আয়ের উদ্ভব হয়।

গ. উদ্দীপকে নিম খাজনার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
নিম খাজনা অর্থনীতিতে একটি নতুন ধারণা। নিম খাজনাকে প্রায় খাজনা বা আধা খাজনাও বলা হয়। ভূমি উৎপাদনের অন্যান্য উপকরণের দ্বারা যে উদ্বৃত্ত আয় হয়, তা ভূমির মালিকানা হতে অর্জিত আয়ের সাথে সাদৃশ্য বলে এটিকে প্রায় খাজনা বা নিম খাজনা বলে। নিম খাজনা = মোট খাজনা - মোট পরিবর্তনীয় ব্যয়। স্বল্পকালে মানুষের তৈরি যন্ত্রপাতি, কল-কারখানা, যানবাহন, দালানকোঠা ইত্যাদির চাহিদা বাড়লে যোগান সাথে সাথে বাড়ানো যায় না। কারণ এদের যোগান বাড়ানো সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। যেমন- শহরে অবস্থিত বাড়ি-ঘরগুলো যে অতিরিক্ত আয় করে তাই নিম খাজনা।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের উৎপাদনকারীরা উৎপাদন করার জন্য ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠনের চাহিদার যোগান সীমাবদ্ধ বলে উৎপাদনকারীরা এগুলো নূন্যতম যোগান দাম অপেক্ষা বেশি দামে ক্রয় করে উৎপাদনে ব্যবহারের বিষয়টি নিম খাজনায় প্রতিফলিত হয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে নিম খাজনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। নিচে নিম খাজনা উদ্ভবের কারণ বিশ্লেষণ করা হলো-
এানুষ নির্মিতি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দ্বারা স্বল্পকালে মোট উৎপাদন হতে মোট পরিবর্তনশীল ব্যয়ের অধিক যে আয পাওয়া যায় তাকে অর্থনীতিতে নিম খাজনা বলে। অধ্যাপক আলফ্রেড মার্শাল সর্বপ্রথম অর্থনীতিতে নিম খাজনা বা ‘উপ খাজনা’ ধারণাটি প্রবর্তন করেন। মার্শালের মতে, স্বল্পমেয়াদে সীমাবদ্ধ যোগান বিশিষ্ট মানুষসৃষ্ট কলকারখানা, যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপকরণ থেকে অর্জিত আয়ের কারণে নিম খাজনা হয়। বাড়ি-ঘর, যন্ত্রপাতি প্রভৃতি পুঁজি দ্রব্যের যোগান অস্থিতিস্থাপক তাই স্বল্পকালে এদের চাহিদা বৃদ্ধি পেলে দ্রব্যসমূহ হতে অধিক আয সম্ভব হয়।
ভূমির উর্বরতা শক্তির পার্থক্য রয়েছে। উর্বরতার দিক হতে বিবেচনা করলে দেখা যায় কোনো জমি উর্বর এবং কোনো জমি অনুর্বর। অনুর্বর জমির তুলনায় উর্বর জমি হতে খাজনা বেশি পাওয়া যায়। আবার অনুর্বর জমি হতে কোনো খাজনা পাওয়া যায় না। ভূমি প্রকৃতির দান। এর যোগান সম্পর্ণ সীমাবদ্ধ।এমতাবস্থায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ভূমির চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। ফলে খাজনার উদ্ভব হয়। ভূমির যোগান যদি চাহিদার তুলনায় সীমাবদ্ধ না হতো, তাহলে নিম খাজনা দেওয়ার প্রয়োজন হতো না।


৭. 
অনুপার্জিত আয় কী?
ক. অনুপার্জিত আয় কী?
খ. জমিতে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধির কার্যকারিতা দরুন খাজনার উদ্ভব- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের চিত্রটি খাজনার কোন ধারণার সাথে সম্পর্কযুক্ত ব্যাখ্যা করো।
ঘ. রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্বটি এবং উদ্দীপকের তত্ত্বটি কী একই? বিশ্লেষণ করো।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূমির মালিকের নিজস্ব শ্রম ও বিনিয়োগ ছাড়া ভূমির মূল্য বৃদ্ধি পেলে এর মালিক যে অতিরিক্ত অর্থ লাভ করে তাকে অনুপার্জিত আয় বলে।

খ. ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধির কার্যকারিতার দরুন খাজনার উদ্ভব হয়।
একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জমিতে অধিক পরিমাণ শ্রম ও মূলধন নিয়োগ বাড়াতে থাকলে প্রাথমিক অবস্থায় মোট উৎপাদন ক্রমবর্ধমান হারে বাড়লেও পরবর্তীতে ক্রমহ্রাসমান হারে কমে। অপরদিকে জমির পরিমাণ বাড়ানো যায় না বলে অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য চহিদা বাড়ে। যে কারণে জমির খাজনার উদ্ভব হয়।

গ. উদ্দীপকের চিত্রটি খাজনার আধুনিক তত্ত্বের সাথে সাদৃস্য রয়েছে।
খাজনার আধুনিক তত্ত্ব অনুযায়ী অন্যান্য উৎপাদনের দাম যেভাবে তার চাহিদা ও যোগানের সমতার বিন্দুতে নির্ধারিত হয় সেভাবে খাজনাও যোগানের সমতার দ্বারা নির্দারিত হয়।
আধুনিক তত্ত্ব অনুযায়ী জমির চাহদা ও যোগানের সমতার বিন্দুতে খাজনা নির্ধারিত হয় বলে উদ্দীপকের চিত্রে D1 ও SS রেখা দুটি পরস্পর E বিন্দুতে ছেদ করে। এ অবস্থায় খাজনার পরিমাণ OP1। এখন যদি ভূমির চাহিদা বৃদ্ধি পায় তবে ভূমির নতুন চাহিদা রেখা D2 ভূমির যোগান রেখা SS-কে পূর্বের বিন্দুর উপর ছেদ করবে। ফলে খাজনার পরিমাণ নির্ধারিত হবে OP2।
সুতরাং ভূমির যোগানের সীমাবদ্ধতার কারণে তার চাহিদা বাড়লে খাজনা বাড়বে। এভাবে উদ্দীপকটি খাজনার আধুনিক তত্ত্বকে নির্দেশ করে।

ঘ. উদ্দীপকে রেখাচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশিত তত্ত্বটি হলো খাজনার আধুনিক তত্ত্ব। রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্ব আর এ খাজনা তত্ত্বটির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।
রিকার্ডোর মতে খাজনা হলো উৎপাদকের উদ্বৃত্ত আয়। এটি উৎকৃষ্ট ও নিকৃষ্ট ভূমির উৎপাদন মূল্যের সমান। অন্যদিকে, খাজনার আধুনিক তত্ত্বে খাজনা হলো অস্থিতিস্থাপক যোগান বিশিষ্ট যে কোনো উপাদান ব্যবহারের দাম। আবার রিকার্ডোর মতে কেবল ভূমির ক্ষেত্রেই খাজনার উদ্ভব হয়। কিন্ত আধুনিক তত্ত্বানুযায়ী, অস্থিতিস্থাপক যোগান বিশিষ্ট যেকোনো উপাদানের ক্ষেত্রে খাজনার সৃষ্টি হতে পারে।
রিকার্ডো মনে করেন, ভূমির উর্বরতার তাতম্যের জন্য খাজনার পার্থক্য দেখা দেয়। নিকৃষ্ট ভূমি বা অনুর্বর ভূমির তুলনায় উর্বর ভূমিতে অধিকতর ফসল হওয়ায় খাজনার পার্থক্য দেখা যায়। খাজনার আধুনিক তত্ত্বানুযায়ী, ভূমির চাহিদার পার্থক্যের জন্য খাজনায় পার্থক্য দেখা যায়। জমির চাহিদা বাড়লে খাজনা বাড়ে, চাহিদা কমলে খাজনা কমে। আবার রিকার্ডোর মতে খাজনার অবস্থানগত পার্থক্যের জন্যও খাজনার সৃষ্টি হয়। কিন্তু আধুনিক খাজনাতত্ত্বে, উৎপাদনের যোগান কেবল অস্থিতিস্থাপক হলেই খাজনার সূত্রপাত ঘটে।
সুতরাং বলা যায়, রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্ব এবং আধুনিক তত্ত্ব এক নয় বরং এদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান।

৮. ************************************

জমির শ্রেণি

প্রদত্ত আয়

প্রদত্ত ব্যয়

উদ্বৃত্ত

   ১ম

   ৬০০

  ৪০০

 ২০০

   ২য়

   ৪৮০

  ৪০০

 ৮০

   ৩য়

   ৪০০

  ৪০০

 ০

ক. নিট খাজনা কাকে বলে?
খ. খাজনাই জমির মালিককে আগ্রহী করে- ব্যাখ্যা করো।
গ. প্রদত্ত সূচিতে খাজনার পরিমাণ কত এবং কীভাবে তা নির্ধারণ হয়েচে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের প্রদত্ত সূচিটি খাজনা নির্ধারণের কোন তত্ত্বটিকে তুলে ধরেছে? বিশ্লেষণ করো।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে শুধু জমি ব্যবহারের জন্য এর মালিককে যে অর্থ দেওয়া হয় তাকে নিট খাজনা বলে।

খ. জমি ব্যবহারের জন্য জমির মালিককে যে খাজনা দেওয়া হয়,এই খাজনাই জমির মালিককে আগ্রহী করে।
খাজনার প্রধান কারণ হলো জমির যোগানের সীমাবদ্ধতা। দেশের জনসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ফলে জমির চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু জমির যোগান সীমাবদ্ধ। তাই জমির খাজনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জমির উর্বরতা শক্তির পার্থক্যের কারণেও খাজনার উদ্ভব ঘটে। অপেক্ষাকৃত বেশি উর্বর জমির খাজনাও বেশি হয়। আর জমিতে এই খাজনার কারণেই মালিক লাভবান হয়। অতএব বলা যায় খাজনাই জমির মালিককে আগ্রহী করে।

গ. উদ্দীপকের প্রদত্ত সূচিটির খাজনার পরিমাণ নির্ণয় করা হলো:
১ম শ্রেণির জমির খাজনা = (৬০০ - ৪০০) = ২০০ টাকা।
২য় শ্রেণির জমির খাজনা = (৪৮০ - ৪০০) = ৮০ টাকা।
৩য় শ্রেণির জমির খাজনা = (৪০০ - ৪০০) = ০ টাকা।
খাজনা হচ্ছে জমির মেীলিক ও অবিনশ্বর ক্ষমতার প্রতিদান। এক্ষেত্রে ক্ষমতা বলতে জমির উর্বরা শক্তিকেই নির্দেশ করে। জমির উর্বরা শক্তি সমান নয়। উৎপন্ন ফসলের পার্তক্যের উপর খাজনা নির্ভর করে। জমি থেকে ফসল বাবদ যে আয় হয় তা থেকে উৎপাদন ব্যয় বাদ দিলে খাজনা পাওয়া যায়।
উদ্দীপকের সূচিতে প্রতিটি শ্রেণির জমির উৎপাদন ব্যয় ৪০০ টাকা। ১ম শ্রেণির জমি থেকে মোট আয় হয় ৬০০ টাকা এবং ব্যয় হয় ৪০০ টাকা। অর্থাৎ ১ম শ্রেণির জমির খাজনা ২০০ টাকা। অনুরূপ ভাবে ২য় ও ৩য় শ্রেণির জমির আয় যথাক্রমে ৪৮০ ও ৪০০ টাকা এবং ব্যয় ৪০০ টাকা। অর্থাৎ ২য় শ্রেণির জমির খাজনা ৮০ টাকা এবং ৩য় শ্রেণির জমির খাজনা ০ টাকা। এক্ষেত্রে ৩য় শ্রেণির জমিটি প্রান্তিক জমি।

ঘ. উদ্দীপকে প্রদত্ত সূচিটি খাজনা নির্ধারণে রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্বটিকে তুলে ধরেছে।
খাজনা তত্ত্বে রিকার্ডো বলেন, খাজনা হলো জমির উৎপাদনের সেই অংশ যা জমির আদি ও অবিনশ্বর শক্তি ব্যবহারের জন্য জমির মালিককে দেওয়া হয়। তার মতে চাহিদা তুলনায় জমির যোগানের স্বল্পতাই খাজনা উদ্ভবের কারণ। তাছাড়া জমির উর্বরতা শক্তির পার্থক্য এবং জমিতে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধি দ্রুত কার্যকরি হওয়ায় খাজনা দিতে হয়। জমির উর্বরা শক্তির পার্থক্যের জন্য জমিতে উৎপন্ন ফসলের পরিমাণের পার্থক্য ঘটে। সে জন্য খাজনার পরিমাণেও কম বা বেশি হয়। আর যে জমির উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ এবং খরচ সমান হয় তাকে প্রান্তিক খাজনা বলে। এরূপ জমির আয় ও ব্যয় সমান হয় বলে খাজনা দিতে হয় না।
উদ্দীপকের প্রদত্ত সূচিতে তিন শ্রেণির জমির খাজনার তথ্য দেওয়া হয়েছে। সকল জমির উৎপাদন ব্যয় ৪০০ টাকা। ১ম, ২য় ও ৩য় শ্রেণির জমি থেকে আয় ৬০০, ৪৮০ ও ৪০০ টাকা। অর্থাৎ তিন শ্রেণির জমির খাজনা হলো,
১ম শ্রেণির জমির খাজনা=(৬০০-৪০০) = ২০০ টাকা।
২য় শ্রেণির জমির খাজনা= (৪৮০- ৪০০) = ৮০ টাকা।
৩য় শ্রেণির জমির খাজনা = (৪০০ - ৪০০) = ০ টাকা।
উপরের আলোচনায় দেখা যায়, ২য় শ্রেণির জমির অপেক্ষা ১ম শ্রেণির জমির আয় বেশি। অর্থাৎ ১ম শ্রেণির জমির খাজনাও বেশি। আবার ৩য় শ্রেণির জমিতে দেখা যায় আয় এবং ব্যয় সমান। তাই এই জমির খাজনা নেই। অর্থাৎ ৩য় শ্রেণির জমিটি প্রান্তিক জমি।
সুতরাং উদ্দীপকের সূচিটি রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্বকে অনুসরণ করে।

৯. মি. ‘ক’ এর অনেক সম্পদ। তিনি বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায় জড়িত। তিনি ভকনসমূহ ভাড়া দিয়ে মাসে ২০,০০০ টাকা, যন্ত্রপাতি ভাড়া বাবদ ১৫,০০০ টাকা পান। তার গ্রামের জমি চাষাবাদের বিনিময়ে চাষিরা ১০০০ টাকা দেন। সরকার তার এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান ও পার্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন তার ভবন ও যন্ত্রপাতি হতে যথাক্রমে ২৫,০০০ ও ২০,০০০ টাকা আয় হয়।
ক. মোট খাজনার সূত্রটি লেখ?
খ. ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধির কারণে কেন খাজনার উদ্ভব হয়?
গ. উদ্দীপকের মি. ‘ক’ এর মোট খাজনা ও নিম খাজনা নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে শিল্প কারখানা ও পার্ক স্থাপন করায় ঐ এলাকায় অনুপার্জিত আয়ের ওপর কী প্রভাব পড়বে? ব্যাখ্যা করো।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মোট খাজনা = (জমির বিশুদ্ধ খাজনা + শ্রমের মুজরি + মূলধন নিয়োগ বাবদ সুদ + সরকারের প্রদত্ত কর + মালিকের ঝুঁকি বহন মুনাফা)।

খ. ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধির কার্যকারিতার দরুন খাজনার উদ্ভব হয়।
একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জমিতে অধিক পরিমাণে শ্রম ও মূলধনের নিয়োগ বাড়াতে থাকলে প্রাথমিক অবস্থায় মোট উৎপাদন ক্রমবর্ধমান হারে বাড়লেও পরবর্তীতে ক্রমহ্রাসমান হারে কমে। অপরদিকে, জমির পরিমাণ বাড়ানো যায় না বলে অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য জমির চাহিদা বাড়ে। যে কারণে জমির খাজনার উদ্ভব হয়।

গ. উদ্দীপকের ভিত্তিতে মি. ‘ক’ মোট খাজনা ও নিম খাজনা নির্ণয় করা হলো:
মোট খাজনার পরিমাণ নির্ণয়:
কোনো জমি, বাড়ি, গাড়ি প্রভৃতি নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবহার করার জন্য ব্যবহারকারী তার মালিককে চুক্তি অনুসারে যে অর্থ প্রদান করে তাই মোট খাজনা। এ হিসেবে মি. ‘ক’ এর মাসিক মোট খাজনার পরিমাণ,
ভবন ভাড়া বাবদ আয় = ২০,০০০ টাকা
যন্ত্রপাতি ভাড়া বাবদ আয় = ১৫,০০০ টাকা
চাষাবাদ বাবদ আয় = ১০০০ টাকা
মোট খাজনা = ৩৬,০০০ টাকা
নিম খাজনার পরিমাণ নির্ণয়:
মানুষের সৃষ্ট ঘরবাড়ি, কলকারখানা, যন্ত্রপাতি ইত্যাদিও যোগান স্বল্পকালে সীমাবদ্ধ থাকে বলে এসব হতে স্বাভাবিক আয় অপেক্ষা যে অতিরিক্ত আয় পাওয়া যায় তাকে নিম খাজনা বলে। এ হিসেবে মি. ‘ক’ এর নিম খাজনার পরিমাণ,
শিল্প পার্ক স্থাপনার ফলে অতিরিক্ত আয় = ২৫,০০০
যন্ত্রপাতি থেকে অতিরিক্ত আয় = ২০,০০০
নিম খাজনা = ৪৫,০০০ টাকা
⸫ মোট খাজনা ৩৬,০০০ টাকা এবং নিম খাজনা ৪৫,০০০ টাকা।

ঘ. কোনো শহর বা এলাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধি, রাস্তাঘাট নির্মাণ, পানি নিষ্কাষণ ও পয়ঃবন্দোবস্ত আধুনিকীকরণ, ব্যবসা কেন্দ্র ও কলকারখানা স্থাপন ইত্যাদির ফলে সেখানকার জমির দাম অনেক বেড়ে যায়। এর ফলে সে স্থানের জমির মালিক বাড়তি পরিশ্রম ও মূলধন বিনিয়োগ ছাড়াই অতিরিক্ত অর্থ অর্জন করে। এ আয়ই হলো অনুপার্জিত আয়।
উদ্দীপকের মি. ‘ক’ এর এলাকার সরকার শিল্প পার্ক স্থাপনের পূর্বেও রাস্তাঘাট নির্মাণ, অফিস-আদালত স্থাপন, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার ইত্যাদির দরুন সেখানে জমির দাম বেড়েছিল। নানামুখী উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের ফলে ঐ এলাকায় ইতোমধ্যে অনুপার্জিত আয় সৃষ্টি হয়েছে। এখন ঐ এলাকায় সরকারের শিল্প পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্তের ফলে জমির দাম পূর্বাপেক্ষা বাড়বে। ফলে ঐ এলাকায় অনুপার্জিত আয় আগের তুলনায় আরও বাড়বে এবং মানুষ অতিরিক্ত আয় করতে সক্ষম হবে।
সুতরাং মি. ‘ক’ এর এলাকায় শিল্প পার্ক স্থাপনের দরুন অনুপার্জিত আয় পূর্বাপেক্ষা বাড়বে।

১০. জনাব সেলিম মিয়া তার কৃষিজমি ‘স্বাধীন বাংলা’ কৃষি খামারে চুক্তিভিত্তিক প্রদান করেন। এক্ষেত্রে চুক্তির শর্তগুলো হচ্ছে তিনি জমি ব্যবহারের জন্য ৩০০০ টাকা, মূলধন সুদ বাবদ ২০০০ টাকা, তার প্রাপ্য মুজরি ১৪০০ টাকা, সরকারকে জমির কর বাবদ প্রদান করার জন্য ১৫০০ টাকা এবং ঝুঁকি গ্রহণের জন্য ২০০০ টাকা পাবেন।
ক. খাজনা কী?
খ. অনুপার্জিত আয় ও নিট খাজনা কেন একই অর্থে ব্যবহার হতে পারে না?
গ. উদ্দীপকের তথ্য অনুযায়ী মোট খাজনার পরিমাণ নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকে কোন পরিস্থিতিতে মোট খাজনা ও নিট খাজনা একই হবে? নিট খাজনা নির্ণয়পূর্বক বিশ্লেষণ করো।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূমি ব্যবহারের জন্য তার মালিককে যে অর্থ দেওয়া হয় তাকে অর্থনীতিতে খাজনা বলে।

খ. নিম খাজনা স্বল্পকালে উপস্থিত থাকলেও দীর্ঘকালে এর কোনো অসিস্তেত্ব থাকে না। কিন্তু অনুপার্জিত স্বল্প ও দীর্ঘকাল বিদ্যমান থাকতে পারে বিধায় অনুপার্জিত আয় ও নিম খাজনা একই অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে না।

গ. উদ্দীপকের তথ্য অনুযায়ী নিচে মোট খাজনার পরিমাণ নির্ণয় করা হলো।
সম্পর্ণ অস্থিতিস্থাপক যোগান বিশিষ্ট ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহারে তাদের মালিককে প্রদেয় মোট অর্থকে মোট খাজনা বলে। অর্থাৎ ভূমি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক মালিকানা থেকে মোট যে আয় হয় তাকেই মোট খাজনা বলে। তাই মোট খাজনা = (নিট খাজনা + মুজরি + সুদ + মুনাফা)।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, জনাব সেলিম মিয়া তার কৃষিজমি ‘স্বাধীন বাংলা’ কৃষি খামারকে চুক্তির ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমতি দেন। এ জন্য তিনি উক্ত খামারের মালিকের নিকট হতে ৩০০০ টাকা পাবেন। আর আনুষঙ্গিক খরচ হিসেবে মূলধনের সুদ বাবদ ২০০০ টাকা, মুজরি ১৪০০ টাকা, কর বাবদ ১৫০০ টাকা এবং ঝুঁকি গ্রহণের জন্য ২০০০ টাকা পাবেন। কাজেই মোট খাজনা = (৩০০০ + ২০০০ + ১৪০০ + ১৫০০ + ২০০০) টাকা = ৯,৯০০ টাকা।
⸫ নির্ণেয় মোট খাজনা ৯,৯০০ টাকা।

ঘ. উদ্দীপক অনুযায়ী আনুষঙ্গিক খরচ শূন্য হলে মোট খাজনা ও নিট খাজনা একই হবে।
সাধারণত মোট খাজনা হতে আনুষঙ্গিক খরচ তথা মূলধনের সুদ, মুজরি, কর, মুনাফা প্রভৃতি বাদ দিলে নিট খাজনা পাওয়া যায়। অর্থাৎ নিট খাজনা = মোট খাজনা - আনুষঙ্গিক ব্যয়।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, সুদ ২০০০ টাকা, মুজরি ১৪০০ টাকা, কর ১৫০০ টাকা এবং মুনাফা ২০০০ টাকা। কাজেই আনুষঙ্গিক ব্যয় = (২০০০ + ১৪০০ + ১৫০০ + ২০০০) টাকা = ৬,৯০০ টাকা।
⸫ নিট খাজনা = (৯,৯০০ - ৬,৯০০) টাকা বা ৩০০০ টাকা। {‘গ’ নং হতে প্রাপ্ত মোট খাজনা ৯,৯০০ টাকা}
অর্থাৎ জনাব সেলিম মিয়ার ক্ষেত্রে নিট খাজনা হলো ৩০০০ টাকা। আবার আনুষঙ্গিক খরচ শূন্য হলে নিট খাজনা ও মোট খাজনা উভয়ই ৩০০০ টাকা হতো তথা সমান হতো। তাছাড়া জমির অবস্থানগত দিক থেকে মোট খাজনা ও নিট খাজনার মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করা যায়। যেমন- বাজারসংলগ্ন জমির সশ্য বাজারজাত করার জন্য কোনো পরিবহন ব্যয় নেই। উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় আনুষঙ্গিক খরচ শূন্য হলে মোট খাজনা ও নিট খাজনা একই হতে পারে।
Share:

0 Comments:

Post a Comment