HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৬

HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Economics 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চমাধ্যমিক

অর্থনীতি
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৬ষ্ঠ অধ্যায়

HSC Economics 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১. মি. ‘খ’ এর নিকট ৮০ লক্ষ টাকা আছে। তিনি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে ঢাকায় একটি প্লট কিনেন। ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি দোকান ক্রয় করেন। দোকানে বিক্রয়ের জন্য ৫ লক্ষ টাকার দ্রব্যসামগ্রী কিনেন। ১০ লক্ষ টাকার গ্রামে একটি লিচু বাগান কিনেন এবং বাগানের চারাগাছ বাবদ আরও ১ লক্ষ টাকা ব্যয় করেন। বাকি টাকা মুজরি ও অন্যান্য ব্যয়ের জন্য রেখে দেন।
ক. মূলধন কী?
খ. মূলধনের সাথে সঞ্চয়ের সম্পর্ক কী?
গ. উদ্দীপকের আলোকে মি. ‘খ’ এর স্থায়ী ও চলতি মূলধনের একটি সারণি তৈরি করো।
ঘ. উদ্দীপকের মি. ‘খ’ এর ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য মূলধন বৃদ্ধির কোনো সুযোগ আছে কি? ব্যাখ্যা করো।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মূলধন হলো মানুষের উৎপাদিত সম্পদের সেই অংশ যা পুনরায় অধিকতর উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়।

খ. মূলধনের সাথে সঞ্চয়ের সরাসরি সম্পর্ক বিদ্যমান। অর্থাৎ সঞ্চয় বাড়লে মূলধন বাড়ে এবং মূলধন বাড়লে সঞ্চয় বাড়ে।
সাধারণত মূলধন গঠন সঞ্চয়ের ওপর নির্ভর করে। যখন মানুষের সঞ্চয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তখন এই সঞ্চিত অর্থ নানাভাবে বিনিয়োগে রূপান্তর হয়। এর ফলশ্রুতিতে মূলধন বৃদ্ধি পায়। একই ভাবে সঞ্চয়ের পরিমাণ হ্রাস পেলে মূলধন গঠনও হ্রাস পায়। অর্থাৎ সঞ্চয়ের সাথে মূলধনের সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান।

গ. যেসব মূলধন উৎপাদন কাজে বরাবর ব্যবহার করা যায় তাদেরকে চলতি মূলধন বলে।
নিচে উদ্দীপকে উল্লেখিত তথ্যের আলোকে মি. ‘খ’ এর চলতি ও স্থায়ী মূলধনের একটি সারণি তৈরি করা হলো:

    স্থায়ী মূলধন

   চলতি মূলধন

 প্লট - ৫০ লক্ষ

 দ্রব্যসামগ্রী - ৫ লক্ষ

 দোকান - ১০ লক্ষ

 চারাগাছ - ১ লক্ষ

 লিচু বাগান - ১০ লক্ষ

মুজরি ও অন্যান্য - ৪লক্ষ

 মোট - ৭০ লক্ষ

 মোট - ১০ লক্ষ

এখানে, মুজরি ও অন্যান্য ব্যয় :
= {৮০ - (৫০ + ১০ + ১০ + ৫ + ১) লক্ষ
= (৮০ - ৭৬) লক্ষ
= ৪ লক্ষ টাকা।

ঘ. উদ্দীপকের মি. ‘খ’ এর ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য তিনি ব্যাংক ঋণ ও মুনাফার কিছু অংশ সঞ্চয় করে মূলধন বৃদ্ধি করতে পারে।
সাধারণত মূলধন গঠন বা বৃদ্ধি নির্ভর করে আর্থিক সঞ্চয়, বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা এবং সুদের হারের ওপরে। কোনো দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ থাকলে সঞ্চিত অর্থ বিয়য়োগে রূপান্তর হয়। এতে মূলধন গঠন বৃদ্ধি পায়। আবার বিভিন্ন মেয়াদে আমানতের ওপর উচ্চহারে সুদ প্রদান করলে জনগণের সঞ্চয়ের আগ্রহ বাড়ে। এর ফলে উদ্যোক্তাগণ মূলধনী দ্রব্যাদি ক্রয়ে বিনিয়োগ করার জন্য উক্ত আমানত ঋণ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায় মি. ‘খ’ তার ব্যবসার জন্য চলতি মূলধনে ১০ লক্ষ টাকা এবং স্থায়ী মূলধনে ৭০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন। যার মধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে ঢাকায় একটি প্লট ক্রয় করেছেন। এখন তিনি ইচ্ছে করলে ব্যাংক ঋণ নিয়ে এই প্লটটিতে বহুতল ভবন তৈরি করতে পারেন। তথা তিনি তার ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য মূলধন বৃদ্ধি করতে পারেন। আবার মি. ‘খ’ তার দোকানে দ্রব্যসামগ্রী বিক্রয় করে যে মুনাফা পাবেন তার পুরোটা খরচ না করে তা পনরায় বিনিয়োগ করতে পারেন। অর্থাৎ মুনাফার কিছু অংশ সঞ্চয় করে মূলধন বৃদ্ধি করতে পারেন।
উপযুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় মি. ‘খ’ এর ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য মূলধন বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

২. ‘অ’ দেশে অনেক গুলো তেলের বৃহৎ খনি আবিষ্কৃত হওয়ায় বিদেশি তেল উত্তোলনকারী কিছু কোম্পানি ঐ দেশের সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তেল উত্তোলন করে। এ কার্যক্রমে সরকারি তেল উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠানও যুক্ত হয়। এসব কাজে দেশি-বিদেশি প্রচুর লোক নিয়োজিত হওয়ায় মানুষের আয় বৃদ্ধি পায়। দেশে ব্যাংক বিমাসহ নানা রকম আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিকশিত হয়। কিন্তু তেল ছাড়া অন্যান্য উৎপাদন ক্ষেত্রে সেভাবে বিকশিত না হওয়ায় ব্যাংকে অলস টাকা জমার পরিমাণ বাড়তে থাকে। অথচ জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় দেশীয় কৃষি, শিল্প, ব্যবসায়-বাণিজ্যে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করা হলে এমনটি হতো না।
ক. সঞ্চয় কী?
খ. চলতি মূলধনকে আবর্তিত মূলধনও বলা হয় কেন?
গ. ‘অ’ দেশে মূলধন গঠনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ও নেতিবাচক ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করো।
ঘ. ‘অ’ দেশের সঞ্চয়কে মূলধনে রূপান্তরের উপায় নিয়ে তোমার মতামত উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষ তার আয়ের যে অংশ বর্তমান ভোগের জন্য ব্যয় না করে ভবিষ্যতে ভোগের জন্য রেখে দেয় তাই সঞ্চয়।

খ. উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বৃত্তের মতো আবর্তিত হয় বলে চলতি মূলধনকে আবর্তিত মূলধনও বলা হয়।
সাধারণত যেসব মূলধন একবার ব্যবহার করে নিঃশেষ হয়ে যায় বা একবার ব্যবহার করলেই অন্যরূপ ধারণ করে তাদেরকে চলতি মূলধন বলে। এ ধরনের মূলধন উৎপাদনের ক্ষেত্রে বৃত্তের মতো আবর্তিত হয়। যেমন- ধান উৎপাদনে বীজ হলো মূলধন। এই মূলধন তথা বীজ দ্বারা ধান উৎপাদিত হলে তার কিছু অংশ আবার বীজ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এজন্যই চলতি মূলধনকে আবর্তিত মূলধনও বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত ‘অ’ দেশে মূলধন গঠনে যে ইতিবাচক ও নেতিবাচক ক্ষেত্রগুলো পরিলক্ষিত হয় তা নিচে চিহ্নিত করা হলো:
মূলধন গঠন বলতে অধিক পরিমাণে মূলধনসামগ্রী উৎপাদন ও মূলধন বৃদ্ধি এর প্রক্রিয়াকে বোঝায়। যেমন- মানুষ তার অর্জিত আয়ের কিছু অংশ ভোগের জন্য ব্যয় না করে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে। আর এই সঞ্চিত অর্থ বিনিয়োগে রূপান্তরিত হলেই মূলধন গঠিত হয়। তাই যে দেশের সঞ্চয় গঠনের হার বেশি, সে দেশের মূলধন গঠনের হারও বেশি।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায় ‘অ’ দেশটিতে অনেক গুলো তেলের খনি আবিষ্কৃত হওয়ায় সরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ দ্বারা মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এই আয় বৃদ্ধির ফলে মানুষের সঞ্চয়ের আগ্রহও বেড়েছে। এর ফলে দেশটিতে ব্যাংক বিমাসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিকশিত হয়েছে। যা মূলধন গঠনে ইতিবাচক দিক। কিন্তু তেল ছাড়া অন্যান্য উৎপাদন ক্ষেত্রে বিকশিত না হওয়ায় ব্যাংকে তারল্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সঞ্চিত অর্থ বিনিয়োগে রূপান্তারিত হচ্ছে না তথা মূলধন গঠন ব্যাহত হচ্ছে।

ঘ. উল্লেখিত ‘অ’ দেশের সঞ্চয়কে মূলধনে রূপান্তরিত করার উপায় সম্পর্কিত আমার মতামত নিচে আলোচনা করা হলো:
মূলত সঞ্চয় হলো মূলধন গঠনের প্রাথমিক পর্যায়। যা ‘অ’ দেশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এখন সঞ্চিত অর্থ সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে উৎপাদনক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবহার করতে পারলেই মূলধন গঠন বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ সঞ্চিত অর্থকে বিনিয়োগে রূপান্তরিত করতে পারলে তা মূলধন গঠনে বৃদ্ধি করবে। ‘অ’ দেশটির মানুষের আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় সঞ্চয়ের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ব্যাংকে নগদ জমার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন সরকার দেশটিতে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করলে সঞ্চিত অর্থ বিনিয়োগে পরিণত হবে। জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশীয় কৃষি, শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হলে মূলধন গঠন বৃদ্ধি পাবে এবং দেশ আরও উন্নত হবে।
আবার ‘অ’ দেশটিতে ব্যাংক ঋণের উপর সুদের হার কমানো হলে উদ্যোক্তারা বেশি ঋণ গ্রহণে আগ্রহী হবে। এতে দেশের বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। সুতরাং বলা যায় উপর্যক্ত উপায়গুলো গ্রহণ করে সঞ্চয়কে মূলধনে পরিণত করা যাবে।

৩. ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ‘ক’ দেশের মোট ১০,০০০ কোটি টাকার মূলধন ছিল। ২০১৬ সালের জুন মাসে দেশের মোট মূলধনের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে ১৪,০০০ কোটিতে দাঁড়ালো। উক্ত সময়ে মূলধনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৫০০ কোটি টাকা। এদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পথে প্রধান বাধা মূলধনের সমস্যা। এক্ষেত্রে সরকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে মূলধন গঠনের পথে বিদ্যমান সমস্যা সমূহ যেমন- স্বল্প আয়, জানমালের নিরাপত্তাহীনতা, অপর্যাপ্ত ব্যাংকিং কাঠামো, অশিক্ষা ইত্যাদি সমাধানের প্রচেষ্টায় অব্যাহত হয়েছে।
ক. মূলধন গঠন কী?
খ. অনুন্নত দেশে মূলধন গঠনের হার কম হয় কেন?
গ. মূলধন গঠন ও নিট মূলধন বৃদ্ধির পরিমাণ নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে সরকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিরাজমান সমস্যাসমূহ সমাধানে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে?

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি দেশ যে পরিমাণ মূলধনসামগ্রী বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয় তাই হলো মূলধন গঠন।

খ. অনুন্নত দেশে জনগণের মাথাপিছু আয় স্বল্প হওয়ার কারণে মূলধন গঠন কম হয়।
সাধারণত অনুন্নত দেশে জনগণের আয় কম। এর ফলে সঞ্চয় কম হয়। সঞ্চয় কম বলে বিনিয়োগ কম যার কারণে মূলধন গঠনও কম। তাই বলা যায় অনুন্নত দেশে জনগণের আয় কম হওয়ায় মূলধন গঠনের হারও কম।

গ. একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি দেশ যে পরিমাণ মূলধনসামগ্রী বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয় তাই হলো মূলধন গঠন। আর এই গঠিত মূলধন থেকে মূলধনের ক্ষয়ক্ষতি জনিত ব্যয় বাদ দিলে যা পাওয়া যায় তাই হলো নিট মূলধন বৃদ্ধির পরিমাণ তথা নিট মূলধন গঠন।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, ‘ক’ দেশে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে মোট মূলধনের পরিমাণ ১০,০০০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের জুন মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪,০০০ কোটি টাকা। কাজেই এই এক বছরে মূলধন গঠনের পরিমাণ (১৪০০০ - ১০০০০) বা ৪০০০ কোটি টাকা। আবার উক্ত সময়ে মূলধনের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ ১৫০০ কোটি টাকা। সুতরাং নিট মূলধন বৃদ্ধির পরিমাণ (৪০০০ - ১৫০০) বা ২৫০০ কোটি টাকা।

ঘ. বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষক্ষ বিরাজমান সমস্যাসমূহ সমাধানে সরকার নিম্নোক্ত ব্যবস্থাসমূহ গ্রহণ করতে পারে।
মূলধন গঠনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো স্বল্প আয়। এই সমস্যা সমাধানে সরকার ‘ক’ দেশের সর্বত্র বিক্ষক্ষপ্ত ও অব্যবহৃত থাকা সঞ্চয়সমূহ ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করে বিনিয়োগযোগ্য তহবিল গঠন করতে পারে।আবার জানমালের নিরাপত্তা না থাকলে সাধারণ মানুষ বিনিয়োগে উৎসাহী হয় না। তাই সরকারকে যথাযথ আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ‘ক’ দেশটিতে অপর্যাপ্ত ব্যাংকিংক সেবা পেীছে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে সেখানে সঞ্চয় সংগ্রহীত হবে এবং মূলধন গঠন বৃদ্ধি পাবে।
উদ্দীপকে ‘ক’ দেশটিতে জনগণের শিক্ষার হার কম থাকায় সঞ্চয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারে না। তাই সরকার অশিক্ষিত জনগণের শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ব্যধতামূলক শিক্ষাব্যবস্থা ও গণশিক্ষা চালু করতে পারে। এতে জনগণ শিক্ষিত হলে সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ হবে ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে মূলধন গঠন বৃদ্ধি পাবে।

৪. কামাল সাহেব স্বল্প পুঁজি নিয়ে ঢাকা শহরে একটি পোল্ট্রি শিল্প স্থাপন করে। উ’পাদন খরচ বেশি হওয়ায় লাভ করতে পারছিলেন না। এমতাবস্থায় তিনি কাঁচামাল ও শ্রমের সহজলভ্যতার কারণে শহর ছেড়ে গ্রামে পোল্ট্রি শিল্প স্থানান্তরিত করেন। এতে গ্রামের কিছু বেকার লোকেরও কর্মসংস্থান হয় এবং তিনিও লাভবান হন।
ক. মূলধন কী দ্বারা গঠিত হয়?
খ. সঞ্চয় কীভাবে মূলধন গঠনে প্রভাবিত হয়?
গ. কামাল সাহেবের গ্রামে লাভবান হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. শহরেও কামাল সাহেবের পোল্ট্রি শিল্প লাভবান হওয়ার উপায় আছে কী? মতামত দাও।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সঞ্চিত অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে মূলধন গঠিত হয়।

খ. সঞ্চয় বাড়লে মূলধন বাড়ে, আর সঞ্চয় কমলে মূলধন কমে এভাবে সঞ্চয় মূলধনকে প্রভাবিত করে।
মূলধন গঠন মূলত সঞ্চয়ের উপর নির্ভর করে। যখন মানুষ সঞ্চয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তখন মূলধন গঠনের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। আবার যখন মানুষের সঞ্চয়ের পরিমাণ হ্রাস পায় তখন মূলধন গঠনের পরিমাণও হ্রাস পায়। সুতরাং সঞ্চয়ের সাথে মূলধনের সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান। এভাবে সঞ্চয় মূলধন গঠনকে প্রভাবিত করে।

গ. কামাল সাহেবের গ্রামে লাভবান হওয়ার কারণ হলো সস্তা শ্রম ও উপকরণের সহজলভ্যতা।
দেশের সীমানার মধ্যে মূলধন একস্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করাকে মূলধনের ভেীগলিক গতিশীলতা বলে। মূলধনের গতিশীলতার পেছনে শ্রম ও উৎপাদনের উপকরণ সহজলভ্যতা বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে থাকে। কোনো অঞ্চলে সস্তায় শ্রম পাওয়া যায় বলে বিনিয়োগকারীরা উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য সেখানে মূলধন স্থানান্তরিত করে। আবার কোনো এলাকায় শিল্পের কাঁচামাল সহজলভ্য হলে বিনিয়োগকারীরা সেখানে মূলধন স্থানান্তরে উৎসাহিত হয়।
উদ্দীপকের কামাল সাহেবের পোল্ট্রি শিল্প শহরে হওয়ার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। তাই তিনি তার পোল্ট্রি শিল্প গ্রামে স্থানান্তর করেন। গ্রামে তিনি সহজে ও কম মুজরিতে অনেক শ্রমিক পান। আবার পোল্ট্রি ফার্মের জন্য অনেক পানি ও আলো বাতাসের প্রয়োজন হয়, যা তিনি গ্রামে প্রাকৃতিক ভাবে পেয়ে থাকেন। এর ফলে কামাল সাহেবের পোল্ট্রি শিল্পে উৎপাদন খরচ হ্রাস পায়। মূলত এসব কারণেই কামাল সাহেব গ্রামে শিল্প স্থানান্তর করে লাভবান হন।

ঘ. কামাল সাহেবের শহরেও পোল্ট্রি শিল্পে লাভবান হওয়ার উপায় আছে, তবে তা বেশ কষ্টকর।
কামাল সাহেবের গ্রামে পোল্ট্রি শিল্প স্থানান্তরের মূল কারণ ছিল উৎপাদন খরচ বেশি হওয়া। গ্রামে তিনি কম খরচে শ্রম ও উৎপাদনের উপকরণ গুলো পেয়েছেন বলে লাভবান হয়েছে। তবে শহরেও শ্রম ও উপকরণগুলোর যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি লাভবান হতে পারতেন।
শহরে লাভবান হওয়ার জন্য কামাল সাহেব কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতেন। এজন্য প্রথমেই তার পোল্ট্রি শিল্পটি খোলামেলা জায়গায় স্থাপন করা উচিত ছিল। যাতে কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করে প্রাকৃতিক পরিবেশকে কাজে লাগানো যায়। এছাড়া তিনি গ্রাম থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিক তার পোল্ট্রি শিল্পে স্থানান্তর করতে পারতেন। এতে তার উৎপাদন খরচ কম হবে। এভাবে তিনি শহরেও লাভবান হতে পারেন।
যদি কামাল সাহেব উল্লেখিত পন্থায় শহরেও লাভবান হতে পারেন, তবে শহরে খোলামেলা জায়গায় পোল্ট্রি শিল্প স্থাপন করা এবং শ্রমের অবাধ ব্যবহার ও সস্থায় শ্রমের সংস্থান করা বেশ কষ্টসাধ্য একটি ব্যাপার।

৫. আবুল কালাম একজন ব্যবসায়ী। হরিদেবপুর বাজারে তার একটি কাপরের দোকান রয়েছে, যাতে তার বিনিয়োগ পরিমাণ ৪ লক্ষ টাকা। এক বছর ব্যবসা পরিচালনার পর হিসেব করে দেখেন তার মূলধন ৫ লক্ষ টাকা হয়েছে। পরবর্তী ছয় মাসে তিনি ৭০ হাজার টাকা মুনাফা লাভ করেন। সম্প্রতি তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দোকানটি শহরে স্থানান্তর করবেন। তাছাড়া তার ২ লক্ষ টাকা স্থায়ী আমানত করা রয়েছে।
ক. ভারসাম্য মূলধন বলতে কী বোঝ?
খ. সঞ্চয় বাড়লেই মূলধন গঠন হয় না কেন?
গ. উদ্দীপকে মূলধনের কোন ধরনের গতিশীলতা লক্ষ করা যায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ব্যাংক ঋণ না পেলেও আবুল কালামের পক্ষে দোকানটি শহরে স্থানান্তর করা সম্ভব কি - বিশ্লেষণ করো।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে মূলধন বিভিন্ন উৎপাদনক্ষেত্রে ব্যবহার হয় কিংবা বিভিন্নভাবে কাজে লাগে তাকে ভারসাম্য মূলধন বলে।

খ. সঞ্চয় বাড়লেই তা মূলধন গঠন হয় না। কারণ সঞ্চয়কৃত অর্থের যতটুকু বিনিয়োগ হয়, ততটুকু দ্বারা কেবল মূলধন গঠিত হয়।
মূলধন গঠন সরাসরি সঞ্চয়ের সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে। কোনো সমাজে সঞ্চয়ের পরিমাণ যত বেশি হবে মূলধন গঠনের পরিমাণও তত বিশি হবে। কিন্তু সঞ্চয় বৃদ্ধি পেলেই বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে, তা সর্বদা বলা যায় না। কারণ বিনিয়োগ সঞ্চয় ছাড়াও বিনিয়োগ পরিবেশ, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সামাজিক নিরাপত্তা প্রভৃতির ওপর নির্ভর করে। কাজেই রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সামাজিক অবস্থা প্রতিকূল হলে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায় না। ফলে মূলধন গঠন ব্যহত হয়। অর্থাৎ সঞ্চয় বাড়লেই তা মূলধন গঠন বৃদ্ধি করে না।

গ. উদ্দীপকে মূলধনের স্থানগত গতিশীলতা লক্ষ করা যায়।
দেশের অভ্যন্তরে একস্থান থেকে অন্যস্থানে অতিরিক্ত মুনাফার প্রত্যাশায় মূলধন স্থানান্তর করলে তাকে মূলধনের স্থান গত গতিশীলতা বলে। মূলধনের এরূপ গতিশীলতাকে ভেীগোলিক গতিশীলতাও বলা হয়। তাছাড়া মূলধনের স্থানগত গতিশীলতা ঋণের সুবিধা ও সুদের হারের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে।
উদ্দীপকের আবুল কালাম একজন কাপড় ব্যবসায়ী। তার হরিদেবপুরে একটি দোকান আছে। তিনি সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে শহরে তার দোকানটি স্থানান্তরিত করবেন এবং তিনি মনে করেন এতে তার মুনাফা পূর্বের তুলনায় আরও বৃদ্ধি পাবে। সুতরাং গ্রাম থেকে শহরে দোকানটি স্থানান্তর করায় মূলধনের স্থানগত গতিশীলতা সৃষ্টি করবে।

ঘ. ব্যাংক ঋণ না পেলেও আবুল কালাম তার যে সম্পদ আছে তা দিয়েই দোকানটি গ্রাম থেকে শহরে স্থানান্তর করতে পারবেন।
আবুল কালাম তার সঞ্চিত ৪ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে হরিদেবপুর বাজারে একটি কাপরের দোকান দেন। এক বছর পরেই তার মূলধন ৫ লক্ষ টাকাতে দাঁড়ায়। পরবর্তী ছয় মাসে তিনি আরও ৭০ হাজার টাকা মুনাফা লাভ করেন। এতে তার মূলধনের পরিমাণ বেড়ে ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, এছাড়া তার ২ লক্ষ টাকার একটি স্থায়ী আমানত রয়েছে। তিনি সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে দোকানটি গ্রাম থেকে শহরে স্থানান্তর করবেন। এখন যদি তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ না পান তাও দোকানটি গ্রাম থেকে শহরে স্থানান্তর করতে পারবেন।কারণ তার হাতে মূলধন রয়েছে ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা এবং ২ লক্ষ টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে। প্রয়োজনে তিনি তা ভাঙ্গিয়ে অর্থ সংগ্রহ করতে পারবেন। এছাড়াও গ্রামে জমি লিজ দিয়েও তিনি কিছু টাকা পেতে পারেন। তাছাড়া গ্রামে ব্যবসা করতে গিয়ে তিনি যে ব্যবসায়িক ধারণা লাব করেছেন তা কাজে লাগাতে পারেন এবং প্রয়োজনে তিনি তার আশপাশের ব্যবসায়ীদের থেকেও ধার নিতে পারেন।
উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, ব্যাংক ঋণ না পেলেও আবুল কালাম দোকানটি শহরে স্থানান্তর করতে পারবেন।

৬. ‘ক’ দেশের অধিবাসী রমিজ মিয়া ২০০০ সালে ২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ঢাকা - চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিরাপদ সেবা নামে শীতাতপ নিয়ন্ত্রয় বাস সার্ভিস চালু করেন। সম্প্রতি সরকার তৈরি পোশাকের কাঁচামালের ওপর শুল্ক হ্রাস, স্বল্পসুদে ঋণ দানের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে রমিজ মিয়া তার নিরাপদ সেবা বন্ধ করে উক্ত মূলধন দিয়ে গাজীপুরের টঙ্গীতে তৈরি পোশাক শিল্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন।
ক. চলতি মূলধন কী?
খ. মূলধনকে উৎপাদনের উপাদান বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকে কোন কোন ধরনের মূলধনের গতিশীলতাকে নির্দেশ করে? যুক্তিসহ লেখ।
ঘ. উদ্দীপকে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ‘ক’ দেশের মূলধন গঠনের ওপর কীভাবে ভূমিকা পালন করবে? - বিশ্লেষণ করো।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে মূলধন উৎপাদন কাজে কেবল একবারই ব্যবহার করা যায় এবং একবার ব্যবহারের ফলে তার রূপগত পরিবর্তন ঘটে তাকে চলতি মূলধন বলে।

ক. মূলধন উৎপাদন হলো মানুষ কর্তৃক উৎপাদিত একমাত্র উৎপাদনের উপকরণ যা উৎপাদন বা আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর মানুষের শ্রম ও উদ্ভাবনী শক্তি প্রয়োগ করে দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন করা হয়, তা যদি পুনরায় উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় এবং নতুন কিছু সৃষ্টিতে সহায়তা করে তবে তাকে মূলধন বলে। তাই এটি উৎপাদনের কোনো মেীলিক উপাদান বা প্রকৃতির দান নয়। মূলধন মানব কর্তৃক সৃষ্ট। এজন্য মূলধনকে উৎপাদনের উৎপাদিত উপাদান বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে মূলধনের ভেীগোলিক গতিশীলতা এবং কারবারগত গতিশীলতাকে নির্দেশ করে।
একটি দেশের একটি অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে মূলধন স্থানান্তরিত হলে তাকে মূলধনের অভ্যন্তরীণ গতিশীলতা বলে। যেমন - গাজীপুর থেকে ঢাকায় কিংবা ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে মূলধন স্থানান্তরকে অভ্যন্তরিণ গতিশীলতা বলে। আবার অধিক মুনাফা লাভের আশায় এক শিল্প বা কারবার থেকে অন্য শিল্প বা কারবারে মূলধন স্থানান্তর করা হলে তাকে কারবারগত গতিশীলতা বলে। যেমন - পাট শিল্প থেকে মূলধন তৈরি পোশাক শিল্পে স্থানান্তর হলে তাকে কারবারগত গতিশীলতা বলে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, রমিজ মিয়া ২০০০ সালে ২ কোটি টাকায় ঢাকা - চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিরাপদ সেবা নামে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সার্ভিস চালু করেন। সম্প্রতি তিনি অধিক মুনাফার আশায় নিরাপদ সেবা বন্ধ করে উক্ত মূলধন দিয়ে গাজীপুরের টঙ্গীতে তৈরি পোশাক শিল্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। এক্ষেত্রে ঢাকা থেকে গাজীপুর মূলধন স্থানান্তরে ভেীগোলিক গতিশীলতা হয়। আর বাস সার্ভিস থেকে তৈরি পোশাক শিল্পে মূলধন স্থানান্তর হলো কারবারগত গতিশীলতা ।

ঘ. উদ্দীপকে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ‘ক’ দেশের মূলধন গঠনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সাধারণত একটি দেশের মূলধন গঠন বিভিন্ন বিষয় - যেমন শিক্ষার হার, সুদের হার, বিনিয়োগের সুবিধা, জান-মালের নিরাপত্তা, কর ব্যবস্থা ইত্যাদি দ্বারা প্রভাবিত হয়। একটি দেশের সঞ্চিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ- সুবিধা থাকলে মানুষ বেশি পরিমাণে সঞ্চয় করতে পারে। আর সরকার দেশে বিনিয়োগের খাত তৈরি করলে মূলধন গঠন বৃদ্ধি পায়।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায় ‘ক’ দেশে সরকার তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামালের ওপর শুল্ক হ্রাস, স্বল্পসুদে ঋণ দান ইত্যাদি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এতে রমিজ মিয়া তৈরি পোশাক শিল্পে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ ‘ক’ দেশে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে মূলধন গঠনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার ‘ক’ দেশে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হওয়ায় জনগন বেশি বেশি সঞ্চয়ে আগ্রহী হবে। যার ফলে দেশে নতুন নতুন কলকারখানা স্থাপিত হবে, তথা মূলধন গঠন বাড়বে।
পরিশেষে বলা যায় ‘ক’ দেশে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ মূলধন গঠনের ওপর ধনাক্তক প্রভাব ফেলবে।

৭. শরীফ সাহেব একটি কলম তৈরির কারখানার মালিক। ৪,৫০,০০০ টাকা প্রাথমিক মূলধন নিয়ে উৎপাদন শুরু করে। কাঁচামাল ক্রয় বাবদ ৭০,০০০ টাকা এবং যন্ত্রপাতি মেরামত বাবদ ৫০,০০০ টাকা ব্যয় করেন। সম্প্রতি সরকার সুদের হার হ্রাস, কাঁচামালের ওপর ভর্তুকি, কর অবকাশ এবং বিনিয়োগের স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করায় শরীফ সাহেব তার মূলধনের পরিমাণ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করলেন।
ক. নিমজ্জিত মূলধন কী?
খ. উন্নত অবকাঠামো কীভাবে মূলধনের গতিশীলতা বৃদ্ধি করে?
গ. শরীফ সাহেবের নিট মূলধনের পরিমাণ নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত সরকারের পদক্ষেপসমূহ শরীফ সাহেবের মূলধনের পরিমাণ বৃদ্ধিতে কীভাবে ভূমিকা রাখে? ব্যাখ্যা করো।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে মূলধন কেবল এক জাতীয় উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয় এবং অন্য ক্ষেত্রে বা অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে না তাকে নিমজ্জিত মূলধন বলে।

খ. উন্নত অবকাঠামো দ্বারা বিনিয়োগ চাহিদা বৃদ্ধির ফলে মূলধনের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়।
যে দেশে অবকাঠামো যত বেশি উন্নত সে দেশের বিনিয়োগ চাহিদা তত বেশি। আর বিনিয়োগ চাহিদা বৃদ্ধি মূলধনের গতিশীলতা বৃদ্ধি করে। তাই বাংলাদেশের অবকাঠামো তথা যোগাযোগ, যাতায়াত, বিদ্যুৎ, গ্যাস প্রভৃতির সুবিধা বিবেচনা করলে অর্থাৎ বাংলাদেশের শিল্পনীতি অনুকূল হলে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে দেশে মূলধনের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।

গ. উদ্দীপকের আলোকে শরীফ সাহেবের নিট মূলধনের পরিমাপ করা যায়। শরীফ সাহেব একটি কলম তৈরির কারখানার মালিক। ৪,০০,০০০ টাকা প্রাথমিক মূলধনে ব্যবসাটি আরম্ভ করতে গিয়ে কাঁচামাল ক্রয় বাবদ ৭০,০০০ টাকা এবং যন্ত্রপাতি মেরামত বাবদ আরোও ৫০,০০০ টাকা ব্যয় করেন। এসবের প্রেক্ষিতে শরীফ সাহেবের নিট মূলধনের পরিমাণ নির্ণয় করা হলো -
মোট মূলধন বিনিয়োগের পরিমাণ,
= ( ৪,৫০,০০০ + ৫০,০০০) টাকা
= ৫,০০,০০০ টাকা
⸫ নিট মূলধনের পরিমাণ = (৫,০০,০০০ - ৭০,০০০)
= ৪,৩০,০০০ টাকা
অতএব শরীফ সাহেবের নিট মূলধনের পরিমাণ ৪,৩০,০০০ টাকা।

ঘ. শরীফ সাহেব বহু বছর ধরেই তার কলমের কারখানাটি পরিচালনা করে আসছেন। সামান্য মূলধন দিয়ে কারখানাটি স্থাপন করলেও পরবর্তিতে মূলধনের অভাবে তিনি তার উন্নয়ন সম্প্রসারণ করতে পারেননি। তবে সম্প্রতি সময়ে সরকার উদ্যোক্তাদের মূলধন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় শরীফ সাহেব তার মূলধনের পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ মূলধন বৃদ্ধিতে সহায়ক।
প্রথমত মূলধন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ সুদের হার হ্রাস।বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য সরকার সুদের হার হ্রাস করলে কম সুদে মূলধন গ্রহণ করে কারখানাটির উন্নয়ন করতে পারে। দ্বিতীয়ত সরকার কারখানার উৎপাদন ব্যয় হ্রাসের জন্য বিভিন্ন কাঁচামালের ওপর ভর্তুকি প্রদান করেছে। এর ফলে কারখানাটির উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পাবে যা অধিক উৎপাদনে সহায়ক হবে। আবার সরকার এখন দেশে অনুন্নত অঞ্চলগুলোতে কারখানা স্থাপনের জন্য কর অবকাশের সুবিধা প্রদান করেছে। সরকার প্রদত্ত এ সুবিধাটি গ্রহণ করে সঞ্চিত অর্থ দিয়ে কারখানা উন্নয়ন করা যাবে। এছাড়াও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি মূলধন বৃদ্ধির অন্যতম উপায়। সরকারের চেষ্টায় দেশে এখন বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। এ সুযোগ গ্রহণ করে কারখানার উন্নয়ন ঘটানো যায়।
সুতরাং বলা যায় সরকার প্রদত্ত উপরিউল্লেখিত সুবিধাগুলো গ্রহণ ও যথাযথ কাজে লাগিয়ে শরীফ সাহেব তার মূলধনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে।

৮. সামাদ সাহেব একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার অর্জিত আয় থেকে প্রয়োজনীয় খরচ মিটিয়ে উদ্বৃত্ত অংশ সঞ্চয় করেন। বর্তমানে তার সঞ্চয়ের পরিমাণ ১০ লক্ষ টাকা। এই সঞ্চিত অর্থ তিনি ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ক. সঞ্চয়ের গাণিতিক সূত্রটি লেখ?
খ. সুদের হার মূলধন গঠনে কীভাবে প্রভাবিত করে?
গ. সামাদ সাহেবের সঞ্চয়ে কোন প্রভাবটি কাজ করছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সামাদ সাহেবের সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক উন্নয়নে কতটুকু প্রভাব পরবে? মতামত দাও।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সঞ্চয়ের গাণিতিক সূত্র হলো S = Y – C । যেখানে Y = আয় এবং C = ভোগ।

খ. সুদের হার যদি বেশি হয় তবে জনগণ বর্তমান ভোগ থেকে বিরত থেকে সঞ্চয়ে আগ্রহী হয়, যা মূলধন গঠনে সাহায্য করে।
সঞ্চয় হলো মূলধন গঠনের অন্যতম প্রধান কারণ। কোনো দেশে বেশি সঞ্চয় হলে সেখানে মূলধন গঠনের পথ প্রশস্ত হয়। আবার সঞ্চয় নির্ভর করে সুদের হারের ওপর। সুদের হার বেশি হলে মানুষের মধ্যে সঞ্চয় প্রবণতা বাড়ে। অর্থাৎ অধিক সুদের হার মানুষকে অধিক সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করে যা মূলধন গঠনে সহায়ক। সুদের হার এভাবে সঞ্চয় বৃদ্ধির মাধ্যমে মূলধন গঠনকে প্রভাবিত করে।

গ. সামাদ সাহেবের সঞ্চয়ে মূলধন গঠন প্রভাবিত হয়।
মানুষ তার আয়ের যে অংশ বর্তমান ভোগের জন্য ব্যয় না করে ভবিষ্যতে ভোগের জন্য রেখে দেয় তাই সঞ্চয়। সঞ্চিত অর্থ উৎপাদনকালে বিনিয়োগ করা হলে মূলধনী দ্রব্য উৎপাদিত তথা মূলধন সৃষ্টি হয়। সঞ্চয়ের সামর্থ্যের ওপর মূলধন গঠনের হার নির্ভর করে। তবে এ সঞ্চয়ের সামর্থ্য মানুষের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। আয় বেশি হলে সঞ্চয়ের সামর্থ্য বেশি হয় এবং আয় কম হলে সঞ্চয়ের সামর্থ্য কম হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায় সামাদ সাহেব একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার অর্জিত আয় থেকে প্রয়োজনীয় খরচ মিটিয়ে উদ্বৃত্ত অংশ সঞ্চয় করেন। এ সঞ্চয় দ্বারা তার মূলধন সৃষ্টি হয়। যার পরিমাণ ১০ লক্ষ টাকা। আয়ের পরিমাণ বেশি থাকায় তার সঞ্চয়ও বেশি। যা মূলধন গঠনকে প্রভাবিত করে। অর্থাৎ সঞ্চয়ের দ্বারা তার মূলধন গঠিত হয়।

ঘ. উদ্দীপকে সামাদ সাহেব যে সঞ্চয় করেন তা থেকে মূলধন গঠিত হয় ১০ লক্ষ টাকা। এ টাকা তিনি ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করা প্রয়োজন। এ জন্য মূলধন ব্যবহার অত্যাবশক। কেননা দেশে দ্রুত অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের গুরুত্ব সর্বাধিক।
মূলধন একটি উৎপাদনশীল প্রক্রিয়া। দেশের কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে উন্নত যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল প্রভৃতি মূলধনী দ্রব্য ব্যবহার করলে উভয় ক্ষেত্রেই উৎপাদন ব্যবস্থা ও কেীশল আধুনিক এবং উন্নত হয়। এতে শ্রমিকের দক্ষতা বাড়ে ও উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পায়। ফলে জনসাধারণ কম দাম বেশি পরিমাণ দ্রব্য ও সেবা ভোগ করতে পারে। তার সাথে জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। সামাদ সাহেবের সঞ্চিত অর্থ তথা মূলধন ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য বিনিয়োগ করা হলে উৎপাদনের আধুনিক ব্যবস্থা পরিলক্ষিত হবে। এর ফলে শ্রমিকের দক্ষতার মাধ্যমে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পেয়ে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বাড়বে, আয় বাড়বে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।

৯. ২০১৬ সালের জুলাই মাসে দেশে মোট ২০,০০০ কোটি টাকার মূলধন ছিল। ২০১৭ সালের জন মাসে মূলধন বৃদ্ধি পেয়ে ২৭,০০০ কোটি টাকা হলো। উক্ত সময়ে মূলধন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২০০০ কোটি টাকা। সরকার মূলধন গঠনের উদ্দেশ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
ক. স্থায়ী মূলধন কী?
খ. মূলধনকে নিষ্ক্রিয় উপাদান বলা হয় কেন?
গ. মূলধন ও নিট মূলধন বৃদ্ধির পরিমাণ নির্ণয় করো।
ঘ. মূলধন গঠনে সরকারি পদক্ষেপসমূহ আলোচনা করো।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যেসব মূলধন জাতীয় দ্রব্যসামগ্রী দীর্ঘদিন টিকে থাকে এবং উৎপাদন কাজে বারবার ব্যবহার হয় তাকে স্থায়ী মূলধন বলে।

খ. মূলধন হলো মানুষ্যসৃষ্ট উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি অধিক উৎপাদনে সাহায্যে করে তবে উৎপাদনে এ সাহায্য করার কাজটি মূলধন নিজে করতে পারে না। তাছাড়া সংগঠকের বুদ্ধিমত্তা ও শ্রমিকের শ্রম ছাড়া মূলধনের নিজস্ব কোনো কার্যক্ষমতা নেই। এ জন্য মূলধনকে নিষ্ক্রিয় উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয়।

গ. একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি দেশ যে পরিমাণ মূলধনসামগ্রী বৃদ্ধি করতে সক্ষম তাই হলো মূলধন গঠন। আর এই গঠিত মূলধন থেকে মূলধনের ক্ষয়ক্ষতি জনিত ব্যয় বাদ দিলে যা পাওয়া যায় তাই হলো নিট মূলধন বৃদ্ধির পরিমাণ।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, দেশটিতে ২০১৬ সালে জুলাই মাসে মোট মূলধনের পরিমাণ ছিল ২০,০০০ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের জুন মাসে তা বেড়ে ২৭,০০০ কোটিতে দাঁড়ায়। কাজেই এক বছরের মূলধন গঠনের পরিমাণ (২৭,০০০ - ২০,০০০) কোটি টাকা বা ৭০০০ কোটি টাকা। আরোও লক্ষ করা যায় উক্ত সময়ে মূলধনের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ ২০০০ কোটি টাকা। সুতারং নিট মূলধন বৃদ্ধির পরিমাণ (৭০০০ - ২০০০) কোটি টাকা বা ৫০০০ কোটি টাকা।

ঘ. বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিরাজমান সমস্যাসমূহ সমাধানে সরকার নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
মূলধন গঠনের সবচেয়ে বড় সমস্যা স্বল্প আয়। এই সমস্যা সমাধানে সরকার দেশটির সর্বত্র বিক্ষক্ষপ্ত ও অব্যবহৃত থাকা সঞ্চয়সমূহ ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করে বিনিয়োগযোগ্য তহবিল গঠন করতে পারে।
আবার জান-মালের নিরাপত্তা না থাকায় সাধারণ মানুষ বিনিয়োগে উৎসাহী হয় না। তাই সরকারকে যথাযথ আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দেশটিতে অপর্যাপ্ত ব্যাংকিং কাঠামোর কারণে মূলধন গঠন ব্যাহত হচ্ছে। তাই সরকাকে গ্রামাঞ্চলে ব্যাংকিং সেবা পেীছে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে সেখানে সঞ্চয় সংগৃত হবে এবং মূলধন গঠন বৃদ্ধি পাবে।
উদ্দীপকের দেশটিতে জণগনের শিক্ষার হার কম থাকায় সঞ্চয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারে না। তাই সরকার অশিক্ষিত জণগনের শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বাধ্যতামূলক শিক্ষাব্যবস্থা ও গণশিক্ষা চালু করতে হবে। এতে জণগন শিক্ষিত হলে সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ হবে ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে মূলধন গঠন বৃদ্ধি পাবে।

১০. রহিম ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করে। উক্ত টাকা হতে সে ২ লক্ষ টাকায় একটি সাবান তৈরির মেশিন ক্রয় করে, ২ লক্ষ টাকা কাঁচামাল ও শ্রমিকের মুজরির জন্য রেখে দেন। আরও ২ লক্ষ টাকা দিয়ে সে একটি ক্রেন ক্রয় করে যা একবার ব্যবহৃত হবে। বাকি টাকা সে অন্য যে কোনো কাজে ব্যবহৃত হতে পারে বলে হাতে রেখে দেন। বর্তমানে তার মূলধন বেড়ে ১১ লক্ষ টাকা হয়েছে।
ক. মূলধনের গতিশীলতা কাকে বলে?
খ. আয়ের ওপর কীভাবে মূলধন নির্ভর করে?
গ. উদ্দীপকে কোন কোন ধরনের মূলধন ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপক হতে মূলধন গঠনের হার নির্ণয় করো।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মূলধনসামগ্রী একস্থান হতে অন্য স্থানে এক শিল্প হতে অন্য শিল্পে এবং এক ধরনের ব্যবহার হতে অন্য ধরনের ব্যবহারে স্থানান্তর করাকেই মূলধনের গতিশীলতা বলে।

খ. আয় বাড়া বা কমার ফলে সঞ্চয়ের পরিমাণ নির্ধারিত হয় যা মূলধন গঠনে ত্বরান্বিত করে।
মূলধন গঠন সঞ্চয়ের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। সঞ্চয়ের পরিমাণ নির্ভর করে আয়ের ওপর। অর্থাৎ আয় বৃদ্ধি পেলে মানুষের সঞ্চয় প্রবণতাও বৃদ্ধি পায়। আর সঞ্চয় বৃদ্ধি পেলে উপযুক্ত বিনিয়োগের মাধ্যমে তা মূলধনে পরিণত হয়। এদিক থেকে আয় হ্রাসের দরুন সঞ্চয় হ্রাসহেতু মূলধনও হ্রাস পায়। এ কারণেই আয়ের ওপর মূলধন গঠন নির্ভর করে।

গ. রহিম সাবান তৈরির কারখানা স্থাপন করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের মূলধন ব্যবহার করেন। নিচে তার মূলধনগুলোর শ্রেণিবিভাগ করা হলো-
নিমজ্জমান মূলধন: যে মূলধন একটি বিশেষ ধরনের উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা হয় তাকে নিমজ্জমান মূলধন বলে। উদ্দীপকের রহিমের কেনা সাবান তৈরির মেশিন হলো এ জাতীয় মূলধন। এটি সাবান উৎপাদনের কাজে লাগে।
চলতি মূলধন: যে মূলধন উৎপাদন কাজে কেবল একবারই ব্যবহার করা যায় এবং একবার ব্যবহারের ফলে তার রূপগত পরিবর্তন ঘটে তাকে চলতি মূলধন বলে। রহিম সাবান তৈরির কারখানার জন্য কাঁচামাল ও শ্রমিকের মুজরি প্রদান করবেন, যা চলতি মূলধনের অন্তর্গত। অন্যদিকে তিনি একটি ক্রেন ক্রয় করেন যা উৎপাদনে একবার ব্যবহৃত হওয়ার পর আর ব্যবহার করা যাবে না। এটিও চলতি মূলধনের অন্তর্গত।
সুতরাং রহিমের বিনিয়োগকৃত মূলধন নিমজ্জমান ও চলতি মূলধনের অন্তর্গত।

ঘ. উদ্দীপক হতে মূলধন গঠনের হার নির্ণয় করা যায়। নিচে গাণিতিক প্রক্রিয়ায় মূলধন গঠনের হার নির্ণয় করা হলো-
মূলধন গঠনের হার বলতে কোনো দেশের নির্দিষ্ট সময়ে মূলধন বৃদ্ধির হারকে বুঝায়। সঞ্চয় হতে মূলধনের উৎপত্তি। তাই মূলধন গঠনের জন্য সঞ্চয়কে অবশ্যই মূলধনী দ্রব্য উৎপাদনে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। সঞ্চয়ের কোনো অংশ শিল্প প্রতিষ্ঠান, যন্ত্রপাতি উৎপাদন এবং পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিনিয়োগ করা হলে মূলধন গঠন হয়। সঞ্চয় ও বিনিয়োগের হার যত বেশি মূলধন গঠনের হারও তত বেশি হবে।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, রহিম ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। এ অর্থ সে ব্যবসায়ের বিভিন্ন খাতে ব্যয় করেন। পরবর্তি বছরে তার মূলধন বেড়ে ১১ লক্ষ টাকা হয়। মূলধনের ক্ষয়ক্ষতি জনিত কোনো ব্যয় উল্লেখ না থাকায় বর্তমান বছরে তার মূলধন বৃদ্ধি পেয়েছে ১ লক্ষ টাকা। অতএব, বর্তমানে তার মূলধন বৃদ্ধির হার =
=
= 9.09%
সুতরাং রহিমের মূলধন গঠনের হার ৯. ০৯%।
Share:

0 Comments:

Post a Comment