HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৫

HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Economics 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চমাধ্যমিক

অর্থনীতি
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৫ম অধ্যায়

HSC Economics 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১. রজিম ও বশির একটি বৃহৎ নেীযানের শ্রমিক। রজিম ইঞ্জিন রুমের দক্ষ শ্রমিক। উচ্চ শব্দ ও উচ্চ চাপের মধ্যে তার কাজ করতে হয়। তার মাসিক মুজরি বিশ হাজার টাকা। এছাড়া তার খাবার, পোশাক ও পরিবারের বাসস্থানও নেীযান কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে পেয়ে থাকে। কিন্তু তার কাজের ধরনের কারণে একদিকে যেমন স্বাস্থ্য ঝুকি অনেক বেশি অপরদিকে ছুটি একেবারেই কম। অথচ বশির নেীযানের খাবার ঘরের দৈনিকভিত্তিক একজন অস্থায়ী কর্মচারী হওয়ায় কাজের দিনগুলোতে দৈনিক দু’শ টাকা মুজরি এবং নিজের খাবার পেয়ে থাকে।
ক. শ্রমের চাহিদা কাকে বলে?
খ. দামস্তর থেকে আর্থিক মুজরি বাড়লে প্রকৃত মুজরিও বাড়ে-ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত রজিমের প্রকৃত মুজরির ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করো।
ঘ. রজিম ও বশিরের আর্থিক এবং প্রকৃত মুজরির একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট মুজরিতে উৎপাদনকারী বা নিয়োগকর্তা যে পরিমাণ শ্রম নিয়োগ দিতে চায় তাকে শ্রমের চাহিদা বলে।

খ. দামস্থর স্থির থেকে আর্থিক মুজরি বাড়লে ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির দ্বারা জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পায় বলে প্রকৃত মুজরিও বৃদ্ধি পায়।
সাধারণত প্রকৃত মুজরি হলো আর্থিক মুজরির ক্রয়ক্ষমতা ও কর্মস্থল হতে প্রাপ্ত অন্যান্য সুবিধার সমষ্টি। এখন দাম স্থর ঠিক থেকে আর্থিক মুজরি বাড়ল শ্রমের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে পূর্বের চেয়ে সে বেশি পরিমাণে ভোগ করতে পারে। তথা জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পায়। কাজেই বলা যায় দাম স্থির থেকে আর্থিক মুজরি বাড়লে প্রকৃত মুজরিও বৃদ্ধি পায়।

গ. নিচে উদ্দীপকে উল্লেখিত রমিজের প্রকৃত মুজরির ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা হলো।
শ্রমিক তার আর্থিক মুজরি দিয়ে যে পরিমাণ দ্রব্যসামগ্রী ও সেবা ক্রয় করতে পারে এবং চাকরিস্থল থেকে যেসব আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা লাভ করে, এ দুইয়ের সমষ্টিকে প্রকৃত মজুরি বলে।
উদ্দীপকে উল্লেখিত রমিজ একটি বৃহৎ নেীযানের শ্রমিক। তার মাসিক মুজরি ২০,০০০ টাকা এবং খাবার, পোশাক ও তার পরিবারের বাসস্থান নেীযান কর্তৃপক্ষ থেকে পায়।তাই রজিমের আর্থিক মুজরি ২০,০০০ টাকা কর্মক্ষমতা ও নোীযান কর্তৃপক্ষ হতে প্রাপ্ত অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তথা খাবার, পোশাক ও তার পরিবারের জন্য বাসস্থান সুবিধার সমষ্টি হলো রমিজের প্রকৃত মুজরি। অর্থাৎ দামস্তর P এবং প্রকৃত মুজরি Wr হলে,
Wr = + C
এখানে C = খাবার, পোশকে ও পরিবারের বাসস্থান।

ঘ. রমিজ স্থায়ী ও দক্ষ শ্রমিক হওয়ায় সে বশির অপেক্ষা আর্থিক ও প্রকৃত মুজরি বেশি পায়।
সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একজন শ্রমিক তার শ্রমের বিনিময়ে পারিশ্রমিক হিসেবে যে অর্থ পেয়ে থাকে তাকে আর্থিক মুজরি বলে। আর এই আর্থিক মুজরিকে দাম দ্বারা ভাগ করলে প্রাপ্ত ভাগফল এবং কর্মস্থল হতে প্রাপ্ত অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সমষ্টিকে প্রকৃত মুজরি বলে।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, রমিজের আর্থিক মুজরি ২০,০০০ টাকা এবং প্রকৃত মুজরি ২০,০০০ টাকায় কর্মক্ষমতা এবং খাবার, পোশাক ও পরিবারের বাসস্থান সুযোগের সমষ্টি। অন্যদিকে বশির দৈনিক ২০০ টাকা প্রতি মাসে (২০০×৩০) বা ৬০০০ টাকা আর্থিক মুজরি পায়। আর তার প্রকৃত মুজরি হলো ৬০০০ টাকার ক্রয়ক্ষমতা এবং খাবারের সুযোগের সমষ্টি। অর্থাৎ রমিজের আর্থিক মুজরি ২০,০০০ টাকা যেখানে বরিশের আর্থিক মুজরি ৬০০০ টাকা। আবার বরিশের অপেক্ষা রমিজ নেীযান কর্তৃপক্ষ থেকে বেশি সুবিধা পায়। তাছাড়া যে সকল কাজে অধিক দক্ষতার প্রয়োজন ও ঝুকি বেশি থাকে সে সকল কাজে আর্থিক ও প্রকৃত মুজরি বেশি হয়। তাই উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, বরিশ অপেক্ষা রমিজের বেশি দক্ষ হওয়ায় এবং কর্মক্ষেত্রে বেশি ঝুকি থাকায় রমিজের আর্থিক ও প্রকৃত মুজরি বেশি।

২. সারণি লক্ষ করো এবং সংশ্লিষ্ট সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দাও:

মুজরি

শ্রমের চাহিদা

শ্রমের যোগান

    ১০

      ১৫

    ৫

    ২০

      ১০

    ১০

    ৩০

       ৫

    ১৫

ক. প্রকৃত মুজরি কী?
খ. একই পেশায় মুজরি ভিন্ন হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের সারণি থেকে শ্রম বাজারে ভারসাম্য মুজরি রেখাচিত্রের মাধ্যমে দেখাও।
ঘ. শ্রমের চাহিদার প্রতি ক্ষেত্রে ১০ একক বৃদ্ধি পেলে ভারসাম্যের কী পরিবর্তন হবে? উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা করো।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শ্রমিক তার আর্থিক মুজরি দিয়ে যে পরিমাণ দ্রব্যসামগ্রী ও সেবা ক্রয় করতে পারে এবং চাকরিস্থল থেকে যে আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা লাভ করে, এ দুইয়ের সমষ্টিকে প্রকৃত মজুরি বলে।

খ. একই পেশায় মুজরি ভিন্ন হওয়ার প্রধান কারণ শ্রমের দক্ষতা।
স্বভাবতই যে সকর শ্রমিকের দক্ষতা বেশি তাদের মুজরি বেশি হয়। কারণ দক্ষ শ্রমিক গুণগতমান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদনে বেশি অবদান রাখে। যা মালিক পক্ষের মুনাফা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আবার যে সকল কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান অধিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে সে সকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা প্রকৃত মুজরি বেশি পায়।

গ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে ভারসাম্য মুজরি হলো ২০ একক। যা নিচে রেখাচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হলো:
যে মুজরিতে শ্রমের চহিদা এবং শ্রমের যোগান সমান হয় তাকে ভারসাম্য মুজরি বলে। চিত্রে ভূমি অক্ষে শ্রমের চাহিদা ও যোগান এবং লম্ব অক্ষে মুজরির পরিমাণ দেখানো হয়েছে। শ্রমের যোগান ও চাহিদা রেখা যথাক্রমে DLDL` ও SLSL`।
প্রদত্ত তথ্যের আলোকে অঙ্কিত চিত্রে মুজরি () ১০ একক
হলে শ্রমের চাহিদা অপেক্ষা শ্রমের যোগান কম হওয়ায় ভারসাম্য অর্জিত হয় না। তথা অর্থনীতিতে শ্রমের যোগান পর্যাপ্ত নয়। আবার ৩০ একক মুজরিতে শ্রমের চাহিদা অপেক্ষা যোগান বেশি অর্থনীতিতে বেকারত্ব দেখা দিবে। তথা ভারসাম্য দেখা দিবে। কিন্তু মুজরি ২০ এককে দেখা যায় শ্রমের যোগান ও চাহিদা উভয় ১০ একক। অর্থাৎ চিত্রের E বিন্দুতে DL = SL = ১০ একক হওয়ায় শ্রমবাজরে ভারসাম্য অর্জিত হয়। এ অবস্থায় ভারসাম্য মুজরি হলো ২০ একক।

ঘ. উদ্দীপকের তথ্যের আরোকে শ্রমের চহিদা প্রতিক্ষেত্রে ১০ একক বৃদ্ধি পেলে শ্রমের চাহিদা রেখা ডানদিকে স্থান্তরিত হওয়ার দরুন ভারসাম্য মুজরি ও শ্রমিক নিয়োগ বৃদ্ধি পাবে।
চিত্রে লক্ষ করা যায় শ্রমের চাহিদা প্রতি ক্ষেত্রে ১০ একক বৃদ্ধি পেলে ১০,২০ ও ৩০ একক মুজরিতে শ্রমের চাহিদা হয় (১৫+১০) = ২৫, (১০+১০) = ২০ এবং (৫+১০) = ১৫ একক। এক্ষেত্রে শ্রমের চাহিদা রেখা DLDL` উপরে ডানদিকে স্থানান্তরিত হবে। যা রেখার DL1DL1` সাহায্যে দেখানো হয়েছে। নতুন শ্রমের চাহিদা রেখা (DL1DL1`)এবং শ্রমের যোগান রেখা (SLSL`) E1 বিন্দুতে ছেদ করে।তাই E1 বিন্দুতে পরিবর্তিত ভারসাম্য অর্জিত হয়। এক্ষেত্রে ভারসাম্য ৩০ একক এবং নিয়োগ ১৫ একক। ফলে আগের চেয়ে ভারসাম্য মুজরি ১০ একক এবং নিয়োগ ৫ একক বৃদ্ধি পেয়েছে।

৩. নদীভাঙনের শিকার মর্জিনা ও তার পরিবার কাজের সন্ধানে ঢাকায় আসে। মর্জিনা একটি গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করে। সে ঘন্টায় ৪০ টাকা মুজরিতে দৈনিক ৬ ঘন্টা কাজ করে। মুজরি বৃদ্ধি পেয়ে ৬০ টাকা হওয়ায় শ্রম আরও দুই ঘন্টা বাড়িয়ে দেয়। কিছু দিন পর মুজরি আরও বৃদ্ধি পেয়ে ১০০ টাকা হওয়ায় সে কারখানায় শ্রম ৩ ঘন্টা কমিয়ে দেয়। সপ্তাহ অন্ত পরিবার নিয়ে পার্কে ও স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে যায়।
ক. শ্রমের চাহিদা কাকে বলে?
খ. একই পেশায় মুজরি বিভিন্ন হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে মর্জিনার ক্ষেত্রে শ্রমের যোগান রেখা অঙ্কন করে-ব্যাখ্যা করো।
ঘ. অতিরিক্ত মুজরি বৃদ্ধি একটি দেশের অর্থনীতি উন্নয়নের অন্তরায়- উক্তিটি মূল্যায়ণ করো।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট মুজরিতে উৎপাদনকারী বা নিয়োগকর্তা যে পরিমাণ শ্রম নিযোগ দিতে চায় তাকে শ্রমের চাহিদা বলে।

খ. একই পেশায় মুজরি ভিন্ন হওয়ার প্রধান কারণ শ্রমের দক্ষতা।
স্বভাবতই যে সকর শ্রমিকের দক্ষতা বেশি তাদের মুজরি বেশি হয়। কারণ দক্ষ শ্রমিক গুণগতমান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদনে বেশি অবদান রাখে। যা মালিক পক্ষের মুনাফা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আবার যে সকল কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান অধিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে সে সকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা প্রকৃত মুজরি বেশি পায়।

গ. উদ্দীপকের আলোকে মর্জিনার শ্রমের যোগান রেখা অঙ্কন করা হলো:
চিত্রে OX অক্ষে শ্রমের যোগান এবং OY অক্ষে মুজরির পরিমাণ নির্দেশ করা হয়েছে। মুজরি যখন ৪০ টাকা, ৬০ টাকা ও ১০০ টাকা তখন শ্রমের যোগান যথাক্রমে ৬ ঘন্টা, ৮ ঘন্টা ও ৫ ঘন্টা যা চিত্রের C,E ও D বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে।
এখন C,E ও D বিন্দুগুলো যোগ করে শ্রমের যোগান রেখা পাওয়া যায়।

ঘ. প্রদত্ত উদ্দীপকে দেখা যায় শ্রমিকের মুজরি স্বাভাবিক হারে বাড়ানো হলে শ্রমের যোগান বৃদ্ধি পায়। কিন্তু মুজরির পরিমাণ অধিক হলে মুজরি শ্রমের যোগান কমিয়ে দেয়।
চিত্রে ভূমি অক্ষে শ্রমের চাহিদা ও যোগান এবং লম্ব অক্ষে মুজরির পরিমাণ দেখানো হয়েছে। শ্রমের চাহিদা ও যোগান রেখা যথাক্রমে DLDL` ও SLSL` রেখা পরস্পর e বিন্দুতে ছেদ হয়ে ভারসাম্য অর্জন করে। এই ভারসাম্য অবস্থা থেকে মুজরির হার W0 থেকে বাড়িয়ে W2 করা হলে শ্রমের চাহিদার চেয়ে ab পরিমাণ যোগান বাড়ে। অর্থাৎ তখন সমাজে ab পরিমাণ বেকার থাকবে।
অতএব দেখা যায় অতিরিক্ত মুজরি বৃদ্ধি শ্রমের অতিরিক্ত যোগান সৃষ্টি করে সমাজে বেকারত্ব হার বাড়িয়ে দেয়। ফলে একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত হয়।

৪. 

মুজরি (টাকা)

শ্রমের যোগান (হাজারে)

         ৩০০

২০০

         ৩৫০

২৩০

         ৪০০

২৬০

         ৪৫০

২৪০

         ৫০০

২১০

ক. শ্রমের দক্ষতা বলতে কী বোঝায়?
খ. দামস্তর কীভাবে প্রকৃত মুজরিকে প্রভাবিত করে?
গ. উদ্দীপকের আলোকে শ্রমের যোগান রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. উদ্দীপক থেকে প্রাপ্ত যোগান রেখার আলোকে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ব্যাখ্যা করো।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শ্রমিকের কাজ করার ক্ষমতা বা উৎপাদন ক্ষমতাকে শ্রমের দক্ষতা বলে।

খ. প্রকৃত মুজরি দামস্তর দ্বারা প্রভাবিত হয়। কারণ দামস্তর বৃদ্ধির ফলে প্রকৃত মুজরি হ্রাস পায় এবং প্রকৃত মুজরি বৃদ্ধি পায়। তাই দামস্তরের সাথে প্রকৃত মুজরি বিপরীত সম্পর্ক বিরাজ করে। তাছাড়া প্রকৃত মুজরি শ্রমের আর্থিক মুজরির পরিমাণ এবং জিনিসপত্রের বাজার দামের উপর নির্ভর করে।

গ. উদ্দীপকে দেখা যায় বিভিন্ন শ্রমের যোগান সম্পর্কিত তথ্যের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। তার আলোকে নিচে শ্রমের যোগান রেখা অঙ্কন করা হলো:
রেখাচিত্রে ভূমি অক্ষে (OX) শ্রমের যোগান এবং লম্ব অক্ষে (OY) মুজরি পরিমাণ করা হয়েছে। সূচিতে দেখা যায় ৩০০ টাকা, ৩৫০ টাকা, ৪০০ টাকা, ৪৫০ টাকা ও ৫০০ টাকা মুজরিতে শ্রমের যোগান যথাক্রমে ২০০, ২৩০, ২৬০, ২৪০ ও ২১০ যা চিত্রে a,b, c,d ও e বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে।এখন বিভিন্ন মুজরিতে শ্রমের যোগান সূত্রে a,b, c,d ও e বিন্দুগুলো যুক্ত করে SL রেখাটি টানি। এটিই হলো উদ্দীপকের আলোকে শ্রমের যোগান রেখা।

ঘ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে ইতিমধ্যে শ্রমের যোগান রেখা পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত যোগান রেখার আলোকে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ব্যাখ্যা করা হলো।
চিত্রে অঙ্কিত SL রেখার আকৃতি পর্যাচলনা করে বলা যায়, ৩০০ টাকা মুজরিতে ২০০ শ্রমের যোগান a বিন্দুতে নির্দেশ করে। মুজরি বৃদ্ধি পেয়ে ৩৫০ ও ৪০০ টাকা হলে শ্রমের যোগান হয় ২৩০ ও ২৬০ হাজার যা চিত্রে b ও c দ্বারা নির্দেশ হয়। মুজরি ও শ্রমের যোগানের মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক থাকায় SL রেখাটি একটি স্বাভাবিক যোগান রেখা আকৃতি ধারণ করে। কিন্তু এর পরে মুজরি আরও বৃদ্ধি পেলে ৪০০ ও ৫০০ টাকা হলে শ্রমের যোগান হয় ২৪০ ও ২১০ হাজার যা চিত্রে d ও e বিন্দু দ্বারা দেখানো হয়েছে। এক্ষেত্রে C থেকে E পর্যন্ত SL রেখাটি স্বাভাবিক যোগান রেখার ব্যতিক্রম।
SL রেখার এরূপ আকৃতিতে অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো তথা উন্নত। এরকম অর্থনীতিতে মুজরি অধিক বাড়ায় শ্রমিকরা মুজরি বৃদ্ধির তুলনায় বিশ্রাম ও সুখভোগ অধিক পছন্দ করেন। এ অবস্থায় তারা শ্রমিকের যোগান কমিয়ে বিশ্রাম বাড়ায় এবং পরিবারের সুখ-সমৃদ্ধির জন্য অধিক সময় ব্যয় করেন। তাই শ্রমিকের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।

৫. সবুর টঙ্গীর একটি কারখানায় কাজ করে। সে বিদেশে কাজ করার জন্য আগ্রহী। কিন্তু সে তেমন লেখাপড়া জানে না। পেশাগত দক্ষতাও তেমন নেই। এ ধরনের শ্রমিকরা বিদেশে গেলেও ঠিকমতো মুজরি পায় না। তাই সবুর সিদ্ধান্ত নেয় যে, বিদেশে যাওয়ার আগে সে ঠিকমতো প্রশিক্ষণ নিয়েই যাবে। তাহলে বিদেশের বাজারে তার কদর বাড়বে। সাথে-সাথে পারিশ্রমিকও বেশি পাবে।
ক. শ্রমের দক্ষতা বলতে কী বোঝায়?
খ. আন্তর্জাতিক বাজার বলতে কী বোঝ?
গ. সবুর বিদেশে যাওয়ার কী ধরনের সমস্যার কথা ভাবছে?
ঘ. বিদেশের শ্রম বাজারে স্থান করে নিতে হলে কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন? ব্যাখ্যা করো।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শ্রমিকের কাজ করার ক্ষমতা বা উৎপাদন ক্ষমতাকে শ্রমের দক্ষতা বলে।

খ. এক দেশ থেকে অন্য দেশে শ্রম শক্তির স্থানান্তরকে আন্তর্জাতিক শ্রম বাজার বলে।
বর্তমান বাজার অর্থনীতির যুগে কোনো দেশের শ্রমিকরা নিজ দেশের বাহিরে বিশেষ করে যে সমস্ত দেশের জনশক্তি তথা শ্রমশক্তি কম কিন্তু বিভিন্ন কারণে শ্রম চাহিদা বেশি সেসব দেশে শ্রমশক্তি রপ্তানি করা হয়। ফলে উভয় দেশই লাভবান হয়।

গ. সবুর বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার পেশাগত অদক্ষতার জন্য সৃষ্ট সমস্যার কথা ভাবছে।
সবুরের মতো বাংলাদেশের শ্রমিকদের পেশাগত দক্ষতা খুবই কম। উপযুক্ত খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে এদেশের শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান খুবই নিচু। ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক কর্মোদ্যম কম। এছাড়া বাংলাদেশে অধিকাংশ কল-কারখানায় সামাজিক পরিবেশ ভালো না হওয়ায় শ্রমিকের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় না। বিশেষ করে এসব কারখানায় শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও থাকে না।
উদ্দীপকে সবুরও এরূপ একটি কারখানার শ্রমিক। সম্প্রতি সে বিদেশে যাওয়ার জন্য ইচ্ছে পোষণ করেছে। কিন্তু অশিক্ষিত ও পেশাগত অদক্ষতার কারণে সে বিদেশে যেতে দিদ্ধাবোধ করে। কারণ বিদেশে শ্রমের দক্ষতার ভিত্তিতে মুজরি প্রদান করা হয়। তাই সে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি করে বিদেশে যেতে চায়।

ঘ. বিদেশে শ্রম বাজারে স্থান করে নিতে হলে তার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্ত্ততি নিতে হবে।
প্রথমত সবুরকে তার নির্বাচিত পেশার উপর উপযুক্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এতে বিদেশের শ্রম বাজারে তার চাহিদা ও আর্থিক মুজরি বাড়বে।
দ্বিতীয়ত উপযুক্ত প্রশিক্ষণের সাথে সাথে সবুরকে ভাষাগত দক্ষাতাও অর্জন করতে হবে। অর্থাৎ যে দেশে যেতে ইচ্ছুক সে দেশের ভাষা, আচার-আচারণ, প্রথা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
তৃতীয়ত সবুরকে পুষ্টিকর খাদ্য ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য নিজেকে প্রস্ত্তত করতে হবে। কারণ বিদেশে অসুস্থ শ্রমিকদের উৎপান ক্ষমতা কম হওয়ায় চাহিদাও কম। তাছাড়া অসুস্থ শ্রমিকদের দেশে পাটিয়ে দেওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে।
চতুর্থত বিদেশে শ্রম বাজরে নিজের স্থান শক্ত করতে সবুরকে বুদ্ধিগত ও নৈতিক যোগ্যতাও অর্জন করতে হবে। সততা, বিশ্বস্ততা, কর্তব্যপরায়ণতা, নিয়মনুবর্তিতা প্রভৃতি গুণ শ্রমিকের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
কাজেই বলা যায় বিদেশে শ্রম বাজারে উপযুক্ত স্থান ও ভালো মুজরি নিশ্চিত করতে সবুরকে উপরিউক্ত উপায়ে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।

৬. একটি কারখানার একজন শ্রমিকের দৈনিক মুজরি ও শ্রমের যোগান তথ্য নিচে দেওয়া হলো:

 মুজরি পরিমাণ

 শ্রমের যোগান

 ৪০

 ৫

 ৬০

 ৭

 ৮০

 ৯

 ১০০

 ৭

ক. প্রকৃত মুজরি কাকে বলে?
খ. দামস্তর বৃদ্ধি পেলে প্রকৃত মুজরির ওপর কী প্রভাব পড়বে?
গ. উদ্দীপক হতে শ্রমের যোগান রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. উদ্দীপক হতে প্রাপ্ত শ্রমের যোগান রেখার ওপর মন্তব্য করো।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন প্রকার অভাব পূরণের জন্য শ্রমিক তার আর্থিক মুজরি দ্বারা যে পরিমাণ দ্রব্য ও সেবা ক্রয় করে এবং কর্মস্থল থেকে যেসব সুযোগ-সুবিধা লাভ করে- এ দয়ের সমষ্টিকে শ্রমের প্রকৃত মুজরি বলে।

খ. প্রকৃত মুজরি দামস্তর দ্বারা প্রভাহিত হয়। কারণ দামস্তর বৃদ্ধি পেলে প্রকৃত মুজরি হ্রাস পায় এবং দামস্তর হ্রাস পেলে প্রকৃত মুজরি বৃদ্ধি পায়। তাই দামস্তরের সাথে প্রকৃত মুজরির বিপরীতমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান। তাছাড়া প্রকৃত মুজরি শ্রমিকের আর্থিক মুজরির পরিমাণ এবং জিনিসপত্রের দামের ওপর নির্ভর করে।

গ. উদ্দীপকে একটি কারখানার দৈনিক মুজরি ও শ্রমের যোগান দেওয়া আছে। তার ভিত্তিতে শ্রমের যোগান রেখা অঙ্কন করা হলো:
চিত্রে ভূমি অক্ষে শ্রমের যোগান এবং লম্ব অক্ষে শ্রমের মুজরি দেখানো হয়েছে। সূচিতে দেখা যায় ৪০ টাকা মুজরিতে শ্রমের ৫ একক যা a বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত। শ্রমের মুজরি যখন ৬০ টাকা, ৮০ টাকা ও ১০০ টাকা তখন শ্রমের যোগান যথাক্রমে ৭, ৯ ও ৭ একক। যা চিত্রে b, c ও d বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে। এখন a, b, c ও d বিন্দুগুলো যোগ করে SL রেখা টানি। এটিই হলো উদ্দীপকের আলোকে শ্রমের যোগান রেখা।

ঘ. উদ্দীপক থেকে প্রাপ্ত শ্রমের যোগান রেখার আকৃতির কারণ ব্যাখ্যার জন্য উদ্দীপকের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পরিমাপ গ্রহণ করে শ্রমের যোগান রেখা (SL) অঙ্কন করা হলো।
চিত্রে অঙ্কিত SL রেখার আকৃতি পর্যাচলোনা করে বলা যায়, একজন শ্রমিক প্রতি ঘন্টা ৪০ টাকা মুজরিতে ৫ একক শ্রমের যোগান দেয়। যা চিত্রে a বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে। মুজরি বৃদ্দি পেয়ে ৬০ ও ৮০ টাকা হলে তিনি যথাক্রমে ৭ ও ৯ একক শ্রম ঘন্টা যোগান দেন। যা চিত্রে b ও c বিন্দুতে নির্দেশিত। এসব ক্ষেত্রে মুজরি ও শ্রমের যোগানের মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক থাকায় SL রেখাটি একটি স্বাভাবিক যোগান রেখার আকৃতি ধারণ করে। কিন্তু এরপর মুজরি আরও বৃদ্ধি পেয়ে ১০০ টাকা হলে শ্রমের যোগান কমিয়ে ওই মুজরিতে ৭ ঘন্টা শ্রম যোগান দেন। যা চিত্রে d বিন্দুতে প্রকাশ পেয়েছে। এক্ষেত্রে c থেকে d বিন্দু পর্যন্ত SL রেখা বামদিকে বেকে গেছে, যা স্বাভাবিক যোগান রেখার ব্যতিক্রম।
প্রকৃত পক্ষে মুজরি অধিক বাড়ায় শ্রমিক মুজরি বৃদ্ধির তুলনায় বিশ্রমকে পছন্দ করে। এ অবস্থায় তিনি শ্রমের যোগান কমিয়ে বিশ্রাম বাড়ান, চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করেন এবং পরিবারের সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য অধিক সময় ব্যয় করেন। এতে শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। এসব কারণে SL রেখা অধিক মুজরিতে বামদিকে বেঁকে যায়।

৭. 

দৈনিক মুজরি (টাকা)

শ্রমের যোগান (একক)

 ১০০

 ৫০

 ২০০

 ১৫০

 ৩০০

 ১০০

ক. প্রকৃত মুজরি নির্ণয়ের সূত্র লিখ?
খ. ঝুঁকিপূর্ণ কাজে মুজরি বেশি হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে শ্রমের যোগান রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. শ্রমের যোগান রেখার আকৃতি মন্তব্য করো।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রকৃত মুজরি নির্ণর্য়ের সূত্র: Wr = + C

খ. ঝঁকিপূর্ণ কাজে শ্রমের যোগান কম হওয়ায় শ্রমের মুজরি বেশি। সাধারণত ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শ্রমিকের কর্মকান্ড অনেক কষ্টসাধ্য হয় তাই এই ঝুঁকিপর্ণ কাজে শ্রমিকের সাধারণত অন্য কাজের তুলনায় মুজরি বেশি হয়।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত তথ্যের ভিত্তিতে শ্রমের যোগান রেখা অঙ্কন করা হলো:
একটি নির্দিষ্ট মুজরিতে যতজন শ্রমিক শ্রম দিতে রাজি থাকে তাদের সমষ্টিকে শ্রমের যোগান বলে। তাই নির্দিষ্ট মুজরি সাপেক্ষে প্রাপ্ত শ্রমের যোগান পরিমাণ সংমিশ্রণে অঙ্কিত রেখাই হলো শ্রমের যোগান রেখা।
উদ্দীপকে বর্ণিত সূচির ভিত্তিতে অঙ্কিত চিত্রে লক্ষ করা যায়, ১০০ টাকা মুজরিতে শ্রমের যোগান ৫০ একক, যা চিত্রে a বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে। মুজরি বেড়ে যখন ২০০ টাকা হয় তখন শ্রমের যোগান ১৫০ একক, যা চিত্রে b বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে। আবার মুজরি আরও বেড়ে ৩০০ টাকা হলে শ্রমের যোগান ১০০ একক, যা চিত্রে c বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত। এখন a, b ও c বিন্দুগুলো যোগ করে শ্রমের যোগান SL রেখা পাওয়া যায়।

ঘ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে অঙ্কিত শ্রমের যোগান রেখা প্রাথমিক অবস্থায় ঊর্ধ্বগামী হলেও নির্দিষ্ট সীমার পর পশ্চাৎগামী হয়।এর কারণ মূলত নির্দিষ্ট মুজরিতে শ্রমিকদের সন্তুষ্ট থাকা।
সাধারণত মুজরির সাথে শ্রমের যোগান সমমুখী।তাই শ্রমের যোগান রেখা ঊর্ধ্বগামী হয় কিন্তু একটি নির্দিষ্ট মুজরিতে যদি শ্রমিকরা সন্তুষ্ট থাকে তাহলে ঐ মুজরির পর আরও মুজরি বৃদ্ধি পেলে শ্রমের যোগান হ্রাস পায়। যার ফলশ্রুতিতে পশ্চাৎগামী শ্রমের যোগান রেখা সৃষ্টি হয়।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, মুজরি ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা হলে শ্রমের যোগান ৫০ একক থেকে ১৫০ একক হয়। অর্থাৎ এ অবস্থায় মুজরি ও শ্রমের যোগান সমমুখী সম্পর্কযুক্ত ও শ্রমের যোগান রেখা ঊর্ধ্বমুখী হয়। এরপর ২০০ টাকা থেকে মুজরি ৩০০ টাকা হলে শ্রমের যোগান ১৫০ একক থেকে হ্রাস পেয়ে ১০০ একক হয়। অর্থাৎ শ্রমের যোগান পশ্চাৎগামী হয়।
কাজেই বলা যায় নির্দিষ্ট সীমার মুজরির পর শ্রমিকরা বিশ্রাম ও বিনোদনের প্রতি আকর্ষিত ও নির্দিষ্ট মুজরিতে সন্তুষ্ট থাকায় ঐ নির্দিষ্ট সীমার পর শ্রমের যোগান রেখা পশ্চাৎগামী হতে দেখা যায়।

৮. একটি ফার্মের শ্রমিকের মুজরি ও যোগান সম্পর্কিত তথ্য নিচে দেওয়া হলো:

 মুজরি (টাকা)

 শ্রমের যোগান

 ২০০

 ৫ জন

 ৪০০

 ৮ জন

 ৬০০

 ১০ জন

 ৮০০

 ৭ জন

ক. মুজরি কী?
খ. শ্রম ও শ্রমিককে অবিচ্ছেদ্য বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে শ্রমের যোগান রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. উদ্দীপকের উপাত্ত কি বাস্তবসন্মত বলে তুমি মনে কর? ব্যাখ্যা করো।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শ্রমিক তার শারীরিক ও মানসিক শ্রমের বিনিময়ে পারিশ্রমিক হিসেবে যে অর্থ উপার্জন করে তাকে মুজরি বলে।

খ. শ্রমিকের দৈহিক ও মানসিক শক্তি থেকে শ্রম সৃষ্টি হয়। এ জন্য শ্রম একটি জীবন্ত উপকরণ সিহেবে গণ্য। শ্রমিক যতক্ষন জীবিত থাকে ততক্ষন তার দৈহিক ও মানসিক শক্তি কার্যকর থাকে এবং তা থেকে শ্রম উৎপন্ন করে। তাই শ্রমিক ও শ্রমের যোগান একসাথে অবস্থান করে। এজন্যই বলা হয় শ্রম ও শ্রমিক অবিচ্ছেদ্য।

গ. উদ্দীপকে একটি ফার্মের শ্রমিকদের দৈনিক মুজরি ও শ্রমের যোগান সম্পর্কিত তথ্যের আলোকে শ্রমিকদের যোগান রেখা অঙ্কন করা হলো:
রেখাচিত্রে ভূমি অক্ষে শ্রমঘন্টায় শ্রমের যোগান এবং লম্ব অক্ষে মুজরি পরিমাণ করা হয়েছে। সূচিতে দেখা যায় প্রতি ঘন্টায় ২০০, ৪০০, ৬০০ ও ৮০০ টাকা মুজরিতে শ্রমের যোগান হয় যথাক্রমে ৫, ৮, ১০ ও ৭ জন, যা চিত্রে a, b, c ও d বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে। এখন a, b, c ও d বিন্দুগুলো যুক্ত করে SL রেখাটি টানি। এটিই উদ্দীপকের আলোকে কারখানার শ্রমিকের যোগান রেখা।

ঘ. উদ্দীপকের উপাত্তগুলো বাস্তবসন্মত বলে আমি মনে করি। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো:
‘গ’ চিত্রে অঙ্কিত (SL) রেখার আকৃতি পর্যাচলোনা করে বলা যায়, ২০০ টাকা মুজরিতে ৫ জন শ্রমিক শ্রম যোগান দেন যা চিত্রে a বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করে। মুজরি বৃদ্ধি পেয়ে ৪০০ ও ৬০০ টাকা হলে ৮ ও ১০ জন শ্রমিক শ্রম দানে উৎসাহিত হয়, যা চিত্রে b ও c বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করে। এসব ক্ষেত্রে মুজরি ও শ্রমের যোগানের মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান থাকায় SL রেখাটি একটি স্বাভাবিক যোগান রেখার আকৃতি ধারণ করে। কিন্তু এরপরে মুজরি আরও বৃদ্ধি পেলে ৮০০ টাকা মুজরিতে শ্রমের যোগান ৭ জন শ্রমিক দেন। যা চিত্রে d বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত। এক্ষেত্রে c থেকে d বিন্দু পর্যন্ত SL রেখা পশ্চাৎগামী অর্থাৎ বামদিকে বেঁকে যায় যা স্বাভাবিক যোগান রেখার ব্যতিক্রম।
প্রকৃত পক্ষে মুজরি অধিক বাড়ায় শ্রমিক মুজরি বৃদ্ধির তুলনায় বিশ্রামকে পছন্দ করে। এ অবস্থায় তিনি শ্রমের যোগান কমিয়ে বিশ্রাম বাড়ান, চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করেন এবং পরিবারের সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য অধিক সময় ব্যয় করেন। এতে শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। এসব কারণে SL রেখা অধিক মুজরিতে বামদিকে বেঁকে যায়।

৯. রবিন একজন সেলাই মেশিন শ্রমিক। সে নিখুঁতভাবে সেলাই কাজ করতে পারে। তার মাসিক বেতন ৫০০০ টাকা। ঐ বেতনে তার সংসার চলে না। সে বেশি বেতনের চাকরি খুজতে থাকে। ভাগ্যক্রমে সে ৭০০ টাকা বেতনে একই ধরনের চাকরি পায়। রবিন ভাবে বাংলাদেশে লোকসংখ্যা বেশি কিন্তু চাকরির সুবিধা কম, তাই বেতন কম।
ক. অর্থনীতিতে শ্রম বলতে কী বোঝ?
খ. শ্রমকে জীবন্ত উপকরণ বলা হয় কেন?
গ. রবিনের বেতনের সম্ভাব্য পার্থক্যের কারণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. রবিনের ভাবনার আলোকে শ্রমবাজারে মুজরি নির্ধারণ প্রক্রিয়া আলোচনা করো।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উৎপাদন কাজে ব্যবহত মানুষের সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমকে অর্থনীতিতে শ্রম বলে।

খ. সাধারণত শ্রম বলতে মানুষের শারীরিক পরিশ্রমকে বোঝায়।মানুষের সব কর্মই শ্রম নয়। শুধুমাত্র অর্থ উপার্জন এর জন্য মানুষ যে পরিশ্রম করে তাকে শ্রম বলে। যতক্ষন শ্রমিকের জীবনিশক্তি বিদ্যমান ততক্ষন শ্রমের অসিস্তেত্ব থাকে। তাই শ্রমই হলো উৎপাদনের জীবন্ত উপকরণ।

গ. সেলাই মেশিন শ্রমিক রবিন পূর্বে যেখানে কাজ করতো সেখানে ৫০০ টাকা বেতন পেত। কিন্তু বর্তমানে যেখানে কাজ করে সেখানে ৭০০০ টাকা বেতন পায়। তার বেতনের পার্থক্যের সম্ভাব্য কারণ নিচে ব্যাখ্যা করা হলো:
অদক্ষ শ্রমিক কর্তৃক উৎপাদিত দ্রব্য বা সেবার মান হয় নিমণ, উৎপাদনের পরিমাণও হয় কম। এজন্য অদক্ষ শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা কম। এ প্রেক্ষিতে নিযোগকর্তা তাকে কম বেতন দিতে চায়। তাই রবিন পূর্বে যেখানে কাজ করতো সেখানে বেতন কম পেত। আবার দক্ষ শ্রমিকের দ্বারা উৎপাদিত দ্রব্য বা সেবা উন্নতমানের ও সে উৎপাদনও বেশি পরিমাণে করে থাকে। তার উৎপাদিত দ্রব্য বা সেবা বিক্রি করে নিয়োগকর্তা বেশি আয় করে। এসবের প্রেক্ষিতে বলা যায়, দক্ষ শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা বেশি। অধিক উৎপাদনশীলতার জন্য তাকে বেতন বেশি দেওয়া হয়। রবিনকে বর্তমানে তার নিয়োগকর্তা বেশি বেতন দেয় কারণ এখন সে দক্ষ শ্রমিক হিসেবে বিবেচিত।
সুতরাং বলা যায় শ্রমের দক্ষতার তারতম্যই হলো রবিনের বেতনের সম্ভাব্য পার্থক্যের কারণ।

ঘ. রবিনে ভাবনার আলোকে শ্রম বাজারে মুজরি নির্ধারণ প্রক্রিয়া নিচে আলোচনা করা হলো:
বাংলাদেশে লোক সংখ্যা কম কিন্তু চাকরি সুবিধা কম। রবিনের এ ভাবনাটি অর্থনীতির ভাষায় বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, এখানে শ্রমের যোগান বেশি কিন্তু যোগানের তুলনায় শ্রমের চাহিদা কম ফলে মুজরিও কম। শ্রম বাজারে শ্রমের চাহিদা ও যোগানের সমতা দ্বারা ভারসাম্য মুজরি নির্ধারণ হয়। রবিনের এমন ধারণার আলোকে এদেশে শ্রমবাজারে শ্রমের চাহিদা ও যোগানের ঘাত-প্রতিঘাত দ্বারা মুজরি নির্ধারণ করা হয়। শ্রম বাজারে ঐ মুজরিই নির্ধারিত হয় যেখানে শ্রমের চাহিদা ও যোগান পরস্পর সমান হয়।
রেখাচিত্রে ভূমি অক্ষে শ্রমের চাহিদা ও শ্রমের যোগান এবং লম্ব অক্ষে মুজরির পরিমাণ করা হয়েছে।DL ও SLরেখা হলো যথাক্রমে শ্রমের চাহিদা ও যোগান রেখা। শ্রমের নিমণ উৎপাদনশীলতার জন্য DL রেখা বামদিক থেকে ডানদিকে নিমণগামী। বেশি মুজরিতে শ্রমের যোগান বেশি হয় বলে SL রেখা বামদিক থেকে ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী, তবে অধিক মুজরিতে শ্রমের যোগান কমে যায় বলে তখন তা পশ্চৎমুগামী হয়। এ কারণে SL রেখা প্রথমে বামদিক থেকে ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী হয়ে পরে আবার বামদিকে বেঁকে গেছে।
চিত্রে দেখা যায় E0 বিন্দুতে DL ও SL রেখাদ্বয় পরস্পরকে ছেদ করায় সেখানে শ্রমের চাহিদা ও যোগান সমান হয়েছে। ফলে ঐ বিন্দুতে OW0মুজরি নির্ধারণ হয়েছে। এটিই হলো রবিনের ভাবনার আলোকে শ্রমবাজারে নির্ধারিত মুজরি।

১০. মি. ‘গ’ একটি সিমেন্ট কারখানায় কাজ করে। সে ঘন্টায় ৬০ টাকা মুজরিতে দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ করে। মুজরি বৃদ্ধি পেয়ে ঘন্টায় ৭০ টাকা হওয়ায় সে কারখানায় শ্রম ২ ঘন্টা বাড়িয়ে দেয়। উক্ত টাকা দিয়ে সে ভালোভাবেই সংসার পরিচালনা করে। কিছুদিন পরে মুজরি আরও বৃদ্ধি পেয়ে ১০০ টাকা হওয়ায় সে কারখানায় শ্রম ৩ ঘন্টা কমিয়ে দেয়। সপ্তাহ অন্তে সে পরিবার নিয়ে স্বজনদের বাড়িতে, পার্কে বেড়াতে যায়।
ক. শ্রমবাজার কী?
খ. খনিতে নিয়োজিত শ্রমিকের মুজরি বেশি হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে শ্রমের যোগান রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে কাজ ও বিনোদনের সম্পর্ক মি. ‘গ’ এর মনোভাব ব্যাখ্যা করে যোগান রেখার আকৃতি সম্পর্কে মন্তব্য করো।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে বাজারে শ্রমের চাহিদা ও যোগান দ্বারা আর্থিক মুজরি নির্ধারিত হয় তাকে শ্রমবাজার বলে।

খ. খনির কাজে শ্রমের যোগান কম হওয়ায় শ্রমিকের মুজরি বেশি হয়। সাধারণত খনিতে নিয়োজিত শ্রমিকের কর্মকান্ড অনেক কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এ কাজে শ্রমের যোগান সাধারণ অন্য কাজের তুলনায় কম। ফলশ্রতিতে একজন শ্রমিক বেশি মুজরি দাবি করতে পারে। অর্থাৎ খনির কাজ কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চাহিদার তুলনায় শ্রমের যোগান কম। এজন্য খনিতে নিয়োজিত শ্রমিকের মুজরি বেশি হয়।

গ. শ্রমিক একটি নির্দিষ্ট মুজরিতে যে পরিমাণ শ্রম প্রদানে রাজি থাকে তাকে শ্রমের যোগান বলে। উদ্দীপকের আলোকে মি. ‘গ’ এর শ্রমের যোগান রেখা নিচে অঙ্কন করা হলো:
চিত্রে OX অক্ষে শ্রমের যোগান এবং OYঅক্ষে মুজরির পরিমাণ নির্দেশ করে। মি. ‘গ’ এর মুজরি যখন ৬০, ৭০ ও ১০০ টাকা তখন তার শ্রমের যোগান ৮, ১০ ও ৭ ঘন্টা যা চিত্রে C, E ও D বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে। এখন C, E ও D বিন্দুগুলো যোগ করে শ্রমের যোগান রেখা পাওয়া যায়। রেখাটি বামদিক থেকে ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী হয়ে আবার বামদিক ঊর্ধ্বগামী হয়েছে। অর্থাৎ পশ্চাৎ দিকে বেঁকে গেছে।

ঘ. শ্রমিকরা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট মুজরিতে কাজ করতে চায়। তাই মুজরি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি দেওয়া হলে তারা শ্রমের যোগান বাড়ানোর বদলে বিনোদনকে প্রাধান্য দেয় এবং শ্রমের যোগান কমিয়ে দেয়।
উদ্দীপকের মি. ‘গ’ প্রতি ঘন্টা ৬০ টাকা মুজরিতে সন্তুষ্ট। সে সাধারণভাবে জীবনযাপন করে। এরপর তাকে যখন ৭০ টাকা মুজরি দেওয়া হয় তখন সে জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য শ্রমের যোগান বাড়িয়ে দেয়। সে এ মুজরিতে তৃপ্ত। তবে মুজরি আরও বেড়ে ১০০ টাকা করা হলে তখন সে শ্রমের যোগান কমিয়ে দিয়ে অবসর বিনোদনে মনোযোগ দেয়। এ অবস্থায় শ্রমের যোগান রেখা পশ্চাৎ দিকে বেঁকে যায়।
উদ্দীপকের মি ‘গ’ ৬০ টাকা মুজরিতে দৈনিক ৮ ঘন্টা ও ৭০ টাকা মুজরিতে ১০ ঘন্টা কাজ করতে আগ্রহী। এ অবস্থা চিত্রে SL রেখার C থেকে E বিন্দুতে গমনের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এক্ষেত্রে মুজরি ও শ্রমের যোগানের মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান। কিন্তু মুজরি আরও বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি ঘন্টা ১০০ টাকা হলে মি. ‘গ’ বিনোদন ও পরিবারের সাথে অধিক সময় ব্যয় করে শ্রমের যোগান কমিয়ে দেন। এ অবস্থা SL রেখার E বিন্দু থেকে বামদিকে বেঁকে D বিন্দু পর্যন্ত যাওয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
সুতরাং মি. ‘গ’ এর শ্রমের যোগান রেখা পশ্চাৎমুখী।
Share:

0 Comments:

Post a Comment