HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৩

HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Economics 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চমাধ্যমিক

অর্থনীতি
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৩য় অধ্যায়

HSC Economics 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download
১. 

 উৎপাদন (Q)

 মোট পরিবর্তনীয় ব্যয় (TVC)

 ১

 ৪

 ২

 ১০

 ৩

 ১৪

 ৪

 ৩০

 ৫

 ৫০

ক. প্রান্তিক ব্যয় কাকে বলে?
খ. পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে AR=MR হয় কেন?
গ. উদ্দীপক থেকে AC বের করো।
ঘ. উদ্দীপকের সাহায্যে AC ও MC সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উৎপাদনক্ষেত্রে অতিরিক্ত এক একক উৎপাদন বৃদ্ধি করলে যে পরিমাণ ব্যয় বৃদ্ধি পায়, তাকে প্রান্তিক ব্যয় বলে।

খ. সাধারণত পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দ্রব্যের দাম স্থির থাকে বলে AR=MR হয়।
পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজাওে অসংখ্য ক্রেতা ও বিক্রেতা একটি সমাজাতীয় পণ্য একটি নির্দিষ্ট দামে অবাধে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে। ফলে কোনো একজন ক্রেতার পক্ষে পণ্যের বাজার চাহিদা রেখার স্থান পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। আবার একজন বিক্রেতা পণ্যের বাজার যোগান রেখা প্রভাবিত করা সম্ভব নয়। দ্রব্যমূল্য বাজার চাহিদা ও বাজার যোগান রেখা দ্বারা নির্ধারিত। কোনো ক্রেতা বা বিক্রেতার পক্ষে এই মূল্য পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এই কারণে পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পূণ্যের গড় আয় AR এবং MR প্রান্তিক আয় সমান হয়।

গ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে নিচে সূচির মাধ্যমে গড় ব্যয় AC নির্ণয় করা হলো:
সাধারনত কোনো দ্রব্যের উৎপাদনের মোট ব্যয়কে মোট উৎপাদনের পরিমাণ দ্বারা ভাগ করলে গড় ব্যয় পাওয়া যায়। যেখানে মোট ব্যয় হলো মোট স্থির ব্যয় ও মোট পরিবর্তনীয় ব্যয়ের সমষ্টি। 

উৎপাদন (Q)

 মোট স্থির ব্যয় (TFC)

মোট পরিবর্তনীয় ব্যয় (TVC)

 মোট ব্যয় (TC = TFC + TVC )

গড় ব্যয় (AC)

 ১

 ১০

 ৪

 ১৪

 ১৪

 ২

 ১০

 ১০

 ২০

 ১০

 ৩

 ১০

 ১৪

 ২৪

 ৮

 ৪

 ১০

 ৩০

 ৪০

 ১০

 ৫

 ১০

 ৫০

 ৬০

 ১২

উপযুক্ত সূচিতে লক্ষ করা যায়, উৎপাদন (Q) এক এককের ক্ষেত্রে TFC = ১০ ও TVC = ৪। কাজেই =(১০+৪)=১৪ একক। এখন কে Q দ্বারা ভাগ করলে (AC= ) =১৪ একক পাওয়া যায়। একইভাবে ২, ৩, ৪ ও ৫ একক উৎপাদনের ক্ষেত্রে গড় যথাক্রমে ১০, ৮, ১০ ও ১২ একক।

ঘ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে গড় ব্যয় (AC) ও প্রান্তিক ব্যয় (MC) নির্ণয় করে এদের মধ্যকার সম্পর্ক নিচে বিশ্লেষণ করা হলো:

উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে প্রাপ্ত সূচি ও অঙ্কিত চিত্রে লক্ষ করা যায়, উৎপাদনের প্রাথমিক পর্যায় গড় ব্যয় (AC) ও প্রান্তিক ব্যয় (MC) উভয় কমতে থাকে। তবে এক্ষেত্রে MC -এর চেয়ে AC বেশি থাকে। এক পর্যায়ে AC রেখাকে MC রেখা ছেদ করে। এক্ষেত্রে AC সর্বনিমণ এবং AC = MC হয়। এরপর উৎপাদন বাড়তে থাকলে AC এবং MC উভয় বাড়তে থাকে। তবে এ অবস্থায় AC অপেক্ষা MC বেশি হয়। অর্থাৎ MC রেখা AC রেখার উপরে অবস্থান করে।

২. 

 শ্রম ও মূলধন

 মোট উৎপাদন

 প্রান্তিক উৎপাদন

১জন ও ১০০ টাকা

 ১২ একক

 ১২ একক

২জন ও ১০০ টাকা

 ২২ একক

 ১০ একক

৩জন ও ১০০টাকা

 ৩০একক

 ৮ একক

৪জন ও ১০০টাকা

 ৩৬ একক

 ৬ একক

ক. উৎপাদন কী?
খ. একচেটিয়া বাজারে AR ও MR সমান হয় না কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে কৃষি খামারে মোট উৎপাদন রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে খামারে কোন বিধিটি কার্যকর হয়েছে? বিধিটি কোন ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর?মতামত দাও।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বিভিন্ন উপকরণের সংমিশ্রণে কোনো দ্রব্যে নতুন উপযোগ সৃষ্টি করে যার বিনিময় মূল্য আছে তাকে উৎপাদন বলে।

খ. মূলত একচেটিয়া কারবারে বিক্রেতা বা উৎপাদক দাম পরিবর্তন করে বাজারে যোগান হ্রাস বা বৃদ্ধি করতে পারে। যার ফলশ্রুতিতে এ বাজারে প্রান্তিক আয়(MR) এবং গড় আয় (AR) বা দাম সমান হয় না। বরং AR> MR হয়।
একচেটিয়া কারবারে মোট আয় বৃদ্ধি করার লক্ষক্ষ দাম কমালে AR ও MR হ্রাস পায়। তবে গড় আয় যে হারে হ্রাস পায় প্রান্তিক আয় তার চেয়ে বেশি হারে হ্রাস পায়। অর্থাৎ একচেটিয়া কারবারে AR ও MR রেখা উভয় নিমণগামী হলেও MR রেখা AR রেখার নিচে অবস্থান করে। এজন্যই এ বাজারে AR ও MR সমান হয় না।

গ. উদ্দীপকে প্রদত্ত তথ্যের আলোকে নিচে কৃষি খামারে মোট উৎপাদন রেখা অঙ্কন করা হলো।

চিত্রে ভূমি অক্ষে(OX) শ্রম এবং লম্ব অক্ষে (OY) মোট উৎপাদন দেখানো হয়েছে। প্রদত্ত সূচিতে লক্ষ করা যায়, মি.‘খ’ তার কৃষি খামারে অন্যান্য উপকরণ ও কলাকেীশল স্থির রেখে ১ একক শ্রম নিয়োগ করে ১২ একক উৎপাদন করে থাকেন। যা চিত্রে a বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে। এখন শ্রম নিয়োগ বৃদ্ধি করে ২ একক হলে মোট উৎপাদন দাঁড়ায় ২২ একক। যা চিত্রে b বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে।
একই ভাবে ৩ ও ৪ একক শ্রম নিয়োগ করে যথাক্রমে মোট উৎপাদন ৩০ ও ৩৬ একক পাওয়া যায়। যা চিত্রে যথাক্রমে c ও d বিন্দু দ্বারা দেখানো হয়েছে। এখন প্রাপ্ত a, b, c, এবং d বিন্দুগুলো যোগ করে মোট উৎপাদন রেখা TP পাওয়া যায়।

ঘ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে খামারটিতে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধিটি কার্যকর হয়েছে। এটি কৃষি ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর।

উপরের চিত্রটি প্রদত্ত তথ্যের আলোকে অঙ্কন করা হয়েছে। যেখানে OX অক্ষে শ্রম এবং OY অক্ষে প্রান্তিক উৎপাদন নির্দেশিত হয়েছে। প্রদত্ত সূচি ও উপরের চিত্রে লক্ষ করা যায় মূলধন ১০০ একক স্থির রেখে শ্রম নিয়োগ ১ একক থেকে ২ একক করা হলে মোট উৎপাদন ১২ একক থেকে বেড়ে ২২ একক হয়। এক্ষেত্রে প্রান্তিক উৎপাদন ১২ একক থেকে কমে ১০ একক হয়। এখন শ্রম নিয়োগ আরও বৃদ্ধি করা হলে তথা ২ একক থেকে ৩ একক এবং ৩ একক থেকে ৪ একক করা হলে মোট উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও প্রান্তিক উৎপাদন যথাক্রমে ১০ একক থেকে ৮ একক এবং ৮ একক থেকে ৬ এককে হ্রাস পায়। অর্থাৎ প্রান্তিক উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে। যা ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধিকে নির্দেশ করে।
সাধারণত ভূমির যোগান ও উৎপাদন কেীশল স্থির থাকা সাপেক্ষে কৃষি ক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধি বেশি কার্যকর। তাছাড়া কৃষি প্রজনন সমন্ধীয় কাজ হওয়া একটি প্রকৃতি, আবহাওয়া, তাপমাত্রা ইত্যাদি দ্বারা ভূমির উৎপাদন ক্ষমতা প্রবাহিত হয়। তথা একই জমি বারবার ব্যবহারের ফলে প্রান্তিক উৎপাদন হ্রাস পায়। যার ফলে মোট উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়ে এবং মোট উৎপাদন সর্বোচ্চ হওয়ার পর তা হ্রাস পেতে শুরু করে। কাজেই বলা যায় উপযুক্ত কারণগুলোর জন্য অন্যান্য খাতের তুলনায় কৃষি খাতে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধিটি অধিক কার্যকর।

৩. জিনাত একজন কৃষক। তিনি ২ বিঘা জমি চাষ করেন। ২০১০ সালে তিনি ১০০০ টাকার শ্রম ও মূলধন নিয়োগ করে ৩০ মণ ধান উৎপাদন করেছিলেন। ২০১১, ২০১২ ও ২০১৩ সালে যথাক্রমে ২০০০, ৩০০০ ও ৪০০০ টাকার শ্রম ও মূলধন ব্যবহার করে জিনাতের ধানের উৎপাদন হচ্ছে ৫০, ৬৫ ও ৭৫ মণ।
ক. উৎপাদন কী?
খ. স্বল্পকালীন উৎপাদন অপেক্ষকের সকল উপাদান কি স্থির?
গ. উদ্দীপকের ভিত্তিতে মোট উৎপাদন রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. উদ্দীপকের প্রান্তিক উৎপাদন কি ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধির সাথে সংগতিপূর্ণ-আলোচনা করো।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বিভিন্ন উপকরণের সংমিশ্রণে কোনো দ্রব্যে নতুন উপযোগ সৃষ্টি করে যার বিনিময় মূল্য আছে তাকে উৎপাদন বলে।

খ. স্বল্পকালীন উৎপাদন অপেক্ষকের সকল উপাদান স্থির থাকে না;ন্যূনতম একটি উপাদানের পরিবর্তন হয়।
যে উৎপাদন অপেক্ষকে কিছু উপাদান স্থির থেকে এক বা একাধিক উপাদান পরিবর্তন করা যায় তাকে স্বল্পকালীন উৎপাদন অপেক্ষক বলে। যেমন- Q= f(L, K)=4L+3 একটি স্বল্পকালীন উৎপাদন অপেক্ষক। এখানে মূলধন স্থির থেকে শ্রমের পরিবর্তন দেখানো হয়েছে। তাই বলা যায়, স্বল্পকালীন উৎপাদন অপেক্ষকে সকল উপাদান স্থির থাকে না।

গ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে পাশে জিতানের ধানের মোট উৎপাদন রেখা অঙ্কন করা হলো:

প্রদত্ত চিত্রে ভূমি অক্ষে (OX) শ্রম ও মূলধন ব্যয় এবং লম্ব অক্ষে (OY) মোট উৎপাদনের পরিমাণ পরিমাপ করা হয়েছে। উদ্দীপকে দেখা যায়, জমিতে শ্রম ও মূলধন বাবদ ১০০০ টাকা, ২০০০ টাকা, ৩০০০ টাকা ও ৪০০০ টাকা ব্যয় করলে মোট ধান উৎপাদন হয় যথাক্রমে ৩০, ৫০, ৬৫ ও ৭৫ মণ। চিত্রে এ অবস্থাসমূহ যথাক্রমে a, b, c, এবং d বিন্দুগুলো দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে। এখন শ্রম ও মূলধন ব্যয় এবং ধানের মোট উৎপাদনের পরিমাণসূচক a, b, c, এবং d বিন্দুগুলো যুক্ত করে রেখাটি TP টানি। এটিই হলো প্রদত্ত তথ্যনুসারে মোট উৎপাদন রেখা।

ঘ. উদ্দীপকের প্রান্তকি উৎপাদনের ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধির সাথে সংগতিপূর্ণ।
দৃশ্যকল্পে কৃষক জিতানের ২ বিঘা জমিতে প্রত্যেক বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ শ্রম ও মূলধন ব্যয়ের দরুন ধানের মোট উৎপাদনের তথ্যাদি দেওয়া আছে। তাতে উৎপাদনের অন্যান্য উপকরণ স্থির ধরে ধানের মোট উৎপাদনের উপর বর্ধিত শ্রম ও মূলধন ব্যয়ের প্রভাব দেখানো হয়েছে।
প্রদত্ত তথ্যের প্রেক্ষিতে বলা যায়, শ্রম ও মূলধন ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সাথে ধানের মোট উৎপাদন বাড়লেও তা উপকরণ নিয়োগের তুলনায় কম হারে বেড়েছে। যেমন-ধানের প্রান্তিক উৎপাদন নির্ণয় করলে দেখা যায় ১০০০ টাকা, ২০০০ টাকা, ৩০০০ টাকা ও ৪০০০ টাকা শ্রম ও মূলধন বাবদ বিনিয়োগের দরুন ধানের প্রান্তিক উৎপাদন পাওয়া যায় যথাক্রমে ৩০, ২০, ১৫ ও ১০ মণ। ধানের প্রান্তিক উৎপাদনের পরিমাণ পর্যালোচনা করে বলা যায়, ১০০০ টাকার শ্রম ও মূলধন বিনিয়োগের ফলে ধানের প্রান্তিক উৎপাদন প্রথমে ৩০ মণ হলেও পরবর্তীতে ২০০০ টাকা, ৩০০০ টাকা ও ৪০০০ টাকার কম শ্রম ও মূলধন বাবদ বিনিয়োগের ফলে ধানের প্রান্তিক উৎপাদন কমে হয় যথাক্রমে ২০, ১৫ ও ১০ মণ। এক্ষেত্রে লক্ষ করা যায় ধানের মোট উৎপাদন বাড়লেও প্রান্তিক উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমে এসেছে।
সুতরাং শ্রম ও মূলধনের বিনিয়োগের ফলে মোট উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও প্রান্তিক উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বলা যায়, উক্ত উৎপাদনক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধিটি কার্যকর।

৪. শরীফ সাহেব একটি চিনিকলে কাজ করেন। সব সময় চিনিকলে কাঁচামাল পাওয়া যায় না। তাই বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় কারখানাটিতে চিনি উৎপাদন বন্ধ থাকে। আবার কিছু খরচ আছে যা চিনির উৎপাদন বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যায়।
ক. উৎপাদনের উপকরণগুলো কী কী?
খ. উৎপাদনে স্বল্পকালের ধারণা ব্যাখ্যা করো।
গ. কারখানা বন্ধ থাকলে কি ধরনের ব্যয় বহন করতে হয়?ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘উৎপাদন বন্ধ ব্যয় বন্ধ’-কথাটি উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উৎপাদনের উপকরণগুলো হলো-ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন।

খ. স্বল্পকাল বলতে এমন মেয়াদকে বোঝায় যে সময়ে র্ফাম তার স্থির উপকরণগুলোর পরিবর্তন ছাড়াই কেবল পরিবর্তনীয় উপকরণগুলোর পরিবর্তন দ্বারা উৎপাদনের পরিমাণ পরিবর্তন করতে পারে।
স্বল্পকালে যন্ত্রপাতি, স্থায়ী কর্মচারী, কারখানার আয়তন ইত্যাদির মতো স্থির উপকরণগুলোর কোনো পরিবর্তন ঘটানো যায় না। তাই এগুলোর জন্য যে ব্যয় হয় তা স্থির থাকে। তবে এ সময়ে মজুরি, কাচাঁমাল, পরিবহন, বিদ্যুৎ ইত্যাদিও মতো উপকরণগুলোর পরিমাণের পরিবর্তন ঘটানো যায়। এগুলোর জন্য যে ব্যয় হয় তা হয় পরিবর্তনীয় ব্যয়। উৎপাদন ক্ষেত্রে যত সময় পর্যন্ত এ দু’ধরনের ব্যয়ের অসিস্তেস্থ থাকে তত সময় পর্যন্ত মেয়াদকে স্বল্পকাল বলা হয়।

গ. কারখানা বন্ধ থাকলেও স্থির ব্যয় বহন করতে হয়। স্বল্পকালে কোনো কারখানার উৎপাদন ব্যয় দু’রকম হয়;যথা-স্থির ব্যয় এবং পরবির্তনীয় ব্যয়। স্থির ব্যয় হলো ঐ ব্যয় যার পরিমাণ উৎপাদনের পরিমাণের উপর নির্ভর করে না। অর্থাৎ কারখানা খোলা বা বন্ধ যেকোনো অবস্থতায় এ ব্যয় বহন করতে হয়। উৎপাদনের পরিমাণ বাড়লে বা কমলেও এ ব্যয় একই থাকে। অন্যদিকে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়লে যে ব্যয় বাড়ে আবার উৎপাদনের পরিমাণ কমলে যে ব্যয় কমে তাকে পরিবর্তনীয় ব্যয় বলে। উৎপাদনের পরিমাণ পরিবর্তনের সাথে সাথে এ ব্যয়েরও পরিবর্তন ঘটে।
স্বল্পকালের কোনো কারখানার উৎপাদন বন্ধ থাকলে তাকে পরিবর্তনীয় ব্যয় নির্বাহ করতে হয় না, তবে তার স্থির ব্যয় অবশ্যই বহন করতে হয়। যেমন-যে কারখানার ভবন বা জমিতে উৎপাদন কাজ চলে সেটি যদি ভাড়া নেওয়া হয় জমির বা ভবনের জন্য যে খাজনা দিতে হবে সেটি স্থির ব্যয়। উৎপাদনের পরিমাণ কমলে বা বাড়লে বা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও খাজনা দিতে হবে। তেমনি কারখানা পরিচালনা করত গিয়ে যে নেওয়া হয় তার সুদ বাবদ যে ব্যয় হয় তা স্থির ব্যয়ের অন্তগর্ত। উৎপাদনের পরিমাণের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই;নিদিষ্ট সময় অন্তর তা পরিশোধ করতেই হবে।
সুতরাং বলা যায়, যদি কারখানা বন্ধও থাকে তারপরও স্থির ব্যয় বহন করতে হয়।

ঘ. ‘উৎপাদন বন্ধ ব্যয় বন্ধ’ কথাটি উদ্দীপকের আলোকে নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
শরিফ সাহেব যে চিনিকলে কাজ করেন তার কাঁচামাল বিষেশ করে আখ কেবল একটি নির্দিষ্ট মেীসুমে পাওয়া যায়, সব সময় পাওয়া যায় না। তাই বছরের যে সময়ে আখ পাওয়া যায় না, সে সময়ে কারখানাটিতে চিনি উৎপাদন বন্ধ থাকে। কারখানার উৎপাদনের এমন অবস্থাতেও কারখানা টিকিয়ে রাখার জন্য কিছু কিছু খরচ করতে হয়। যেমন-চিনিকলে আধুনিক ও ব্যয়বহুল যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে; তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়মিত কিছু খরচ করতেই হয়। কারখানাটিতে দু’ধরনের কর্মচারি কাজ করে;স্থায়ী ও অস্থায়ী। কারখানা বন্ধ থাকলে অস্থায়ী কর্মচারিদের বেতন-ভাতা না দিলেও স্থায়ী কর্মচারিদের দিতে হয়। তাছাড়া চিনিকলে বীমা করা আছে; নিয়মিত তার কিসিস্তে প্রদান আবশ্যিক। আবার কারখানাটিতে যখন উৎপাদন চলে তখন তার যন্ত্রপাতির ক্ষয় হয়, কিছু যন্ত্রপাতি অকেজোও হয়ে পড়ে। সেগুলো নিয়মিতই পুণ:স্থাপন করা প্রয়োজন। এজন্য কর্তৃপক্ষকে অবচয় ব্যয় বাবদ কিছু অর্থ খরচ করতে হয়। এছাড়া কারখানাটি স্থাপন করতে গিয়ে ব্যাংক থেকে মোটা অংকের ঋন নিতে হয়েছে;নিয়মিত তার সুদ পরিশোধ করতেই হয়। এভাবে দেখা যায়, কারখানাটি কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকলেও তার জন্য একটি মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করতে হয়।
সুতরাং উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, ‘উৎপাদন বন্ধ ব্যয় বন্ধ’কথাটি সঠিক নয়। কারণ, কারখানার উৎপাদন বন্ধ থাকলেও ব্যয় বন্ধ থাকে না।

৫. একটি ফুটবল তৈরির কারখানায় উৎপাদন ও ব্যয়ের তথ্য নিমণরূপ:

 উৎপাদন

 মোট স্থির খরচ

 মোট ব্যয়

 ১

 ১৩০

 ২৫০

 ২

 ১৩০

 ৩৫০

 ৩

 ১৩০

 ৪২০

 ৪

 ১৩০

 ৫৬০

 ৫

 ১৩০

 ৭৫০

ক. মাত্রাগত উৎপাদন কাকে বলে?
খ. পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে গড় আয় ও প্রান্তিক আয় রেখা একই হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে ফুটবল তৈরির কারখানার গড় ব্যয় ও গড় পরিবর্তনীয় ব্যয়ের সূচি তৈরি করো।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ফুটবল তৈরির কারখানার গড় ব্যয় ও প্রান্তিক ব্যয় রেখা অংকন করে তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক আলোচনা করো।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. দীর্ঘকালে উৎপাদনের সকল উপাদান একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে পরিবর্তন করলে মোট উৎপাদনের পরিমাণের যে পরিবর্তন দেখা যায় তাকে মাত্রাগত উৎপাদন বলে।

খ. পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে উৎপাদিত পণ্যের দাম নির্দিষ্ট থাকায় গড় আয় ও প্রান্তিক আয় রেখা একই।
পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতা সমজাতীয় পণ্য নির্দিষ্ট দামে কেনাবেচা করে। এ বাজারে উৎপাদিত পণ্যের মোট চাহেদা ও যোগানের সমতা দ্বারা দাম নির্ধারিত হয়। ক্রেতা ও বিক্রেতা কেউই নির্ধারিত দামের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। দাম (P)= গড় আয় (AR) হওয়ার এ বাজারে গড় আয় সব সময় একই থাকে, ফলে প্রান্তিক আয় ও (MR) একই। এজন্যই পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে গড় আয় ও প্রান্তিক আয় রেখা একই হয়।

গ. উদ্দীপকের আলোকে নিচে ফুটবল তৈরির কারখানার গড় ব্যয় (AC) ও গড় পরিবর্তনীয় ব্যয়ের (AVC)সূচি তৈরি করা হলো:
কোনো দ্রব্যের উৎপাদনের মোট ব্যয়কে মোট উৎপাদনের পরিমাণ দিয়ে ভাগ করলে গড় ব্যয়(AC) পাওয়া যায়। অন্যদিকে উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে যে ব্যয় ব্যয় বৃদ্ধি পায় তাকে পরিবর্তনীয় ব্যয়(VC) বলে। আর মোট পরিবর্তনীয় ব্যয়কে মোট উৎপাদন দিয়ে ভাগ করলে গড় পরিবর্তনীয় ব্যয়(AVC) পাওয়া যায়। উদ্দীপকে প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরিকৃত ফুটবল তৈরির কারখানার গড় ব্যয় ও গড় পরিবর্তনীয় ব্যয়ের সূচিটি হবে-

 উৎপাদন

গড় ব্যয় (AC)

পরিবর্তনীয় ব্যয় (AVC)

 ১

 ২৫০

 ১২০

 ২

 ১৭৫

 ১১০

 ৩

 ১৪০

 ৯৬.৬৬

 ৪

 ১৪০

 ১০৭.৫

 ৫

 ১৫০

 ১২৪

ঘ. সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজনে উদ্দীপকের প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে গড় ব্যয়(AC) ও প্রান্তিক ব্যয়(MC) এর একটি সূচি তৈরি করা হলো। পরে তার ভিত্তিতে AC ও MC রেখা অঙ্কন করে তাদের মধ্যকার সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হলো।

তৈরিকৃত সূচির ভিত্তিতে অঙ্কিত লেখচিত্রে AC ও MC রেখাদ্বয় হলো যথাক্রমে গড় ব্যয় ও প্রান্তিক ব্যয় রেখা। রেখা দুটির আকৃতি পর্যালোচনা করে বলা যায়, উৎপাদনের প্রারম্ভিক পর্যায়ে AC রেখা যখন নিমণগামী হয়, তখন MC রেখাও নিমণগামী হয় এবং তা AC রেখার নিচে অবস্থান করে। এ পর্যায়ে MC< AC হয়।
উৎপাদনের দ্বিতীয় পর্যায়ে AC রেখা সর্বনিমণ অবস্থায় MC রেখা AC রেখাকে ছেদ করে;এখনে AC = MC হয়। এরপর সর্বশেষ স্তরে AC রেখা উর্ধ্বগামী হলে MC রেখাও উর্ধ্বগামী হয় এবং AC রেখার উপর অবস্থান করে। এ পর্যায়ে MC< AC হয়।

৬. নিম্নে একটি ফার্মের মোট ব্যয়ের তথ্য দেওয়া আছে:

 উৎপাদনের পরিমাণ (একক)

 মোট ব্যয় (টাকা)

 ১

 ১০

 ২

 ১৮

 ৩

 ২৪

 ৪

 ৩২

 ৫

 ৪৫

ক. মোট আয় কী?
খ. মোট উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়লে প্রান্তিক উৎপাদনের ওপর কী প্রভাব পড়বে?ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপক হতে গড় ব্যয় (AC) নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে গড় ব্যয় ও প্রান্তিক ব্যয়ের মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা করো।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি নির্দিষ্ট দামে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রব্য বিক্রি করে কোনো ফার্ম বা উৎপাদন প্রতিষ্ঠান যে পরিমাণ অর্থ লাভ করে তাকে মোট আয় বলে।

খ. মোট উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়লে প্রান্তিক উৎপাদন কমে যায়।
যে বিন্দুতে মোট উৎপাদন ক্রর্ধ্বমান হার থেকে ক্রমহ্রাসমান হারে বৃদ্ধির দিকে মোড় নেয় তাকে ইনফ্লেকশন বিন্দু বলে। মোট উৎপাদন রেখার ইনফ্লেকশন বিন্দুর পর থেকে মোট উৎপাদন সর্বোচ্চ হওয়া পর্যন্ত মোট উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান হারে বৃদ্ধি পেলে প্রান্তিক উৎপাদন হ্রাস পায়।

গ. উদ্দীপকের তথ্যের ভিত্তিতে একটি ব্যয় সূচি তৈরি করে তার ভিত্তিতে একটি গড় ব্যয় (AC) রেখা অঙ্কন করা হলো।
কোনো দ্রব্যের প্রতি একক উৎপাদন করতে যে ব্যয় হয় তাকে গড় ব্যয় বলা হয়। মোট উৎপাদন ব্যয়কে উৎপাদনের পরিমাণ দ্বারা ভাগ করলে গড় ব্যয় পাওয়া যায়।
গড় ব্যয় (AC) = মোট ব্যয় (TC) / উৎপাদনের পরিমাণ (Q)

 একক (Q)

 টাকা (TC)

 টাকা (AC)

 ১

 ১০

 ১০

 ২

 ১৮

 ৯

 ৩

 ২৪

 ৮

 ৪

 ৩২

 ৮

 ৫

 ৪৫

 ৯

চিত্রে ভূমি অক্ষে উৎপাদনের পরিমাণ(Q) ও লম্ব অক্ষে গড় ব্যয়(AC) পরিমাপ করা হয়েছে। ফার্ম ১ একক উৎপাদন করলে গড় ব্যয় হয় ১০ টাকা। চিত্রে যা a বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত হয়। আবার ফার্ম ২, ৩, ৪ ও ৫ একক উৎপাদন করলে গড় ব্যয় হয় যথাক্রমে ৯, ৮, ৮ ও ৯ টাকা যা যথাক্রমে b, c, d ও e বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত হয়। এখন উৎপাদনের পরিমাণ ও গড় ব্যয় নির্দেশক বিন্দুগুলো a, b, c, d ও e যুক্ত করে রেখা AC টানি। এটিই উদ্দীপকের প্রদত্ত সারণি থেকে নির্ণেয় গড় ব্যয় রেখা।

ঘ. উদ্দীপকের আলোকে গড় ব্যয় ও প্রান্তিক ব্যয়ের মধ্যে সম্পর্ক নিচে আলোচনা করা হলো-
মোট ব্যয়কে (TC)) উৎপাদনের পরিমাণ দিয়ে ভাগ করলে গড় ব্যয় (AC) পাওয়া যায়। অন্যদিকে অতিরিক্ত এক একক দ্রব্য উৎপাদনের জন্য মোট ব্যয় (TC) যতটুকু বাড়ে তাই হলো প্রান্তিক ব্যয়(MC)।
চিত্র অনুসারে ১ একক উৎপাদনে গড় ব্যয় ও প্রান্তিক ব্যয় ১০ টাকা। কিন্তু ২ একক উৎপাদনে গড় ব্যয় ৯ টাকা এবং প্রান্তিক ব্যয় ৮ টাকা। আবার উৎপাদন বেড়ে ৩ এককের সময় প্রান্তিক ব্যয় ৬ টাকা হলে গড় ব্যয় ৮ টাকা হয়। উৎপাদন ৪ একক অবস্থায় গড় ব্যয় ও প্রান্তিক ব্যয় সমতা লাভ করলেও পরে প্রান্তিক ব্যয় বাড়া সত্ত্বেও গড় ব্যয় ততটা বাড়েনি। অতএব বলা যায়, উৎপাদনের প্রাথমিক পর্যায়ে অর্থাৎ L বিন্দুর পূর্বে AC ও MC উভয় হ্রাস পায়। ফলে AC ও MC রেখা নিমণগামী হয় এবং MC রেখা AC রেখা অপেক্ষা কম থাকে। তাই এ পর্যায়ে AC> AC হয়। আবার চিত্রের L বিন্দুতে MC রেখা AC রেখাকে নিচের দিক থেকে ছেদ করে। তাই L বিন্দুতে হয় AC = MC। L বিন্দুর পরে AC ও MC উভয় উর্ধ্বগামী হয়। তবে MC বৃদ্ধির হার বৃদ্ধির হারের চেয়ে অধিক হয় বলে L বিন্দুর পর হয় AC < MC ।

৭. জামিলের একটি তাঁতশিল্প আছে। সেখানে ২০১৪ সালের মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত উৎপাদন ও ব্যয়ের একটি তালিকা দেওয়া হলো-

 সময়

 মোট ব্যয়

 মোট উৎপাদন

 মার্চ/২০১৪

 ১০,০০০

 ১০০

 এপ্রিল/২০১৪

 ২০,০০০

 ২০০

 মে/২০১৪

 ৩০,০০০

 ৩০০

 জুন/২০১৪

 ৪০,০০০

 ৪০০

ক. উৎপাদন বিধি কী?
খ. শিল্পক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপাদান বিধিটি কি কার্যকর?
গ. প্রদত্ত সূচি অনুযায়ী প্রান্তিক উৎপাদন রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. প্রাপ্ত প্রান্তিক উৎপাদন রেখা উৎপাদনের কোন বিধিকে সমর্থন করে?আলোচনা করো।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে বিধির সাহায্যে উপকরণ নিয়োগ তথা উৎপাদন খরচ এবং উৎপাদনের আনুপাতিক পরিবর্তন জানা যায় তাকে উৎপাদন বিধি বলে।

খ. শিল্পক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধিটি বিলম্বে কার্যকর হয়।
উৎপাদনের প্রথমদিকে শ্রম ও মূলধন বৃদ্ধির ফলে শিল্প অভ্যন্তরীনণ ও বাহ্যিক ব্যয় সংকোচন সুবিধা লাভ করে। ফলে শিল্পের একক প্রতি উৎপাদন খরচ কমে, এ অবস্থায় শিল্পের ক্রমবর্ধমান মাত্রাগত উৎপাদন বিধি কার্যকর থাকে। কিন্তু কোনো কারখানার আয়তন সীমাহীনভাবে বৃদ্ধি করা যায় না। একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর শ্রম ও মূলধন অধিক নিয়োগ করলে উৎপাদন ক্রমবর্ধমান হারে না বেড়ে ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়তে থাকে।

গ. প্রদত্ত সূচি অনুযায়ী প্রান্তিক উৎপাদন রেখা অঙ্কন করতে হলে প্রথমে প্রান্তিক উৎপাদন সূচি তৈরি করতে হবে। নিচে প্রান্তিক উৎপাদন সূচি দেখানো হলো-

 সময়

মোট ব্যয়

মোট উৎপাদন

প্রান্তিক উৎপাদন

 মার্চ

১০,০০০

 ১০০

 ১০০

 এপ্রিল

২০,০০০

 ২০০

 ১০০

 মে

৩০,০০০

 ৩০০

 ১০০

 জুন

৪০,০০০

 ৪০০

 ১০০

এখন গঠনকৃত প্রান্তিক উৎপাদন সূচির ভিত্তিতে চিত্রে MP রেখা অঙ্কন করা হলো:
চিত্রে ভূমি অক্ষে (OX)মোট ব্যয় ও লম্ব অক্ষে (OY) প্রান্তিক উৎপাদন MP পরিমাপ করা হয়েছে। সূচিতে দেখা যায় ১০, ০০০ টাকা প্রান্তিক উৎপাদন হলো ১০০ একক যা চিত্রে a বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত। এবার ব্যয় ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করে ২০, ০০০, ৩০, ০০০ ও ৪০, ০০০ টাকা করা হলে প্রান্তিক উৎপাদন যথাক্রমে প্রতিবারই ১০০ একক হয়, চিত্রে যা b, c, d বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে। এখন মোট ব্যয় ও প্রান্তিক উৎপাদন সূচক বিন্দুগুলো যুক্ত করে MP রেখাটি টানি। এটিই হলো প্রদত্ত সূচি অনুযায়ী প্রান্তিক উৎপাদন রেখা।

ঘ. প্রাপ্ত প্রান্তিক উৎপাদন রেখা উৎপাদনের সমানুপাতিক প্রান্তিক উৎপাদনকে সমর্থন করে। কোনো উৎপাদন ক্ষেত্রে যে হারে শ্রম ও মূলধন নিয়োগ করা হয় উৎপাদন যদি ঐ একই হারে পায় তাহলে উৎপাদন বৃদ্ধির এ প্রবণতাকে সমানুপাতিক প্রান্তিক উৎপাদন বিধি বলে। এবিধি অনুযায়ী শ্রম ও মূলধন বৃদ্ধির হার ও মোট উৎপাদন বৃদ্ধির হার সমান হয়।
অঙ্কিত চিত্রটিতে MP রেখাটি প্রান্তিক উৎপাদনের উপর মোট ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাব দেখায়। চিত্রে দেখা যায়, তাঁতশিল্পটি তার বিদ্যমান উপকরণ ব্যয়ের সাথে প্রতিবারই ১০, ০০০ টাকা করে যুক্ত করলে প্রান্তিক উৎপাদন প্রতিবারই ১০০ একক করে বাড়ে। অর্থাৎ ব্যয় ও উৎপাদনের পরিমাণ অপরিবর্তনীয় থাকে। যেমন- a, b, c ও d বিন্দু যথাক্রমে ১০, ০০০, ২০, ০০০, ৩০, ০০০ ও ৪০, ০০০ টাকার উপকরণ ব্যয় এবং ১০০ একক প্রান্তিক উৎপাদন নির্দেশ করে। MP রেখাটি তাই সমানুপাতিক প্রান্তিক উৎপাদন বিধিকে সমর্থন করে।

৮. 

 উৎপাদন (একক)

 মোট খরচ (TC) টাকা

 ১

 ১০

 ২

 ১৮

 ৩

 ২৪

 ৪

 ৩২

 ৫

 ৪৫

ক. পরিবর্তনীয় ব্যয় কী?
খ. শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদনের প্রথম পর্যায়ে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধি কার্যকর হয় না কেন?
গ. উদ্দীপকের ভিত্তিতে প্রান্তিক খরচ রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. গড় খরচ ও প্রান্তিক খরচের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক উদ্দীপকের আলোকে লেখচিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা করো।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ফার্মের উৎপাদনের পরিমাণ পরিবর্তনের সাথে যেসব ব্যয় পরিবর্তিত হয় তাকে পরিবর্তনীয় ব্যয় বলে।

খ. শিল্পক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধিটি বিলম্বে কার্যকর হয়।
উৎপাদনের প্রথম দিকে শ্রম ও মূলধন বৃদ্ধির ফলে শিল্প অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ব্যয় সংকোচন সুবিধা লাভ করে। ফলে শিল্পের একক প্রতি নিয়োগে উৎপাদন অধিক হারে বৃদ্ধি পায়। এ অবস্থায় শিল্পে ক্রমবর্ধমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধিটি কার্যকর। অর্থাৎ শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদনের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রান্তিক উৎপাদন ক্রমবর্ধমান থাকায় মোট উৎপাদন অধিক হারে বাড়ে। এজন্যই মূলত প্রাথমিক পর্যায়ে শিল্পক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধিটি কার্যকর হয় না।

গ. উদ্দীপক থেকে প্রান্তিক খরচ MC রেখা অঙ্কনের জন্য প্রথম উদ্দীপকে প্রদত্ত সূচির ভিত্তিতে একটি প্রান্তিক খরচ সূচি তৈরি করে এবং পরে উক্ত সূচি অনুসারে নিচে একটি MC প্রান্তিক খরচ রেখা অঙ্কন করা হলো-
রেখাচিত্রে ভূমি অক্ষে (OX) উৎপাদনের পরিমাণ এবং লম্ব অক্ষে (OY) প্রান্তিক খরচ পরিমাপ করা হয়েছে। উৎপাদনের পরিমাণ ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ একক হলে প্রান্তিক খরচ হয় যথঅক্রমে ১০, ৮, ৬, ৮ ও ১৩ টাকা যা যথাক্রমে a, b, c, d ও e বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত। উৎপাদনের পরিমাণ ও প্রান্তিক খরচ সমন্বয়ে প্রাপ্ত বিন্দুগুলো যোগ করে রেখা বা প্রান্তিক খরচ রেখা পাওয়া যায়।
এটিই হলো উদ্দীপকের প্রদত্ত সূচিত ভিত্তিতে অঙ্কিত প্রান্তিক খরচ(MC) রেখা

ঘ. উদ্দীপকের ভিত্তিতে গড় খরচ(AC) ও প্রান্তিক খরচ (MC) নির্ণয় করে এবং তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পরিমাপ গ্রহণ করে একটি লেখচিত্র অঙ্কন করা হলো। উক্ত লেখচিত্রের সাহায্যে AC ও MC এর মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হলো-*

উৎপাদনের পরিমাণ

 গড় খরচ

 প্রান্তিক খরচ

 ১

 ১০

 ১০

 ২

 ৯

 ৮

 ৩

 ৮

 ৬

 ৪

 ৮

 ৯

 ৫

 ৯

 ১৩

উৎপাদনের প্রারম্ভিক পর্যয়ে যখন AC কমতে থাকেMC ও কমে এবং MC< AC হয়। সূচিতে উৎপাদন ৩ একক হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থা দেখা যায়। উৎপাদনের এ পর্যায়ে যখন AC সর্বনিমণ হয় তখন AC = MC হয় এবং উভয় স্থির থাকে। সূচিতে উৎপাদন ৪র্থ একক হলে এমন অবস্থা দেখা দেয়। তারপর উৎপাদন একটি নির্দিষ্ট স্তর অতিক্রম করলে AC যখন বাড়ে তখন MC ও বাড়ে এবং MC> AC হয়। সূচিতে ৫ একক উৎপাদ স্তরে এমন অবস্থা দেখা যায়। অর্থাৎ গড় খরচ ও প্রান্তিক খরচ রেখা একমুখী ধারায় সম্পর্কিত।

৯. 

 উৎপাদন (Q) একক

 গড় ব্যয় (AC) টাকা

 ১

 ১০০

 ২

 ৭৫

 ৩

 ৬০

 ৪

 ৬০

 ৫

 ৭০

ক. উৎপাদন অপেক্ষক কী?
খ. উৎপাদনের প্রথম দিকে মোট ব্যয় কেন ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়ে?
গ. উদ্দীপক হতে মোট ব্যয়(TC) নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপক হতে AC ও MC এর সম্পর্ক চিত্রে দেখাও।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো ফার্মের ব্যবহৃত উপকরণ এবং বস্ত্তুগত উৎপাদনের মধ্যকার সম্পর্ককে উৎপাদন অপেক্ষক বলা হয়।

খ. উৎপাদন শূন্য হলেও উৎপাদককে স্থির ব্যয় বহন করতে হয়।
মোট পরিবর্তনীয় ব্যয় (TVC) রেখা শূন্য (O) থেকে উঠে। TVC রেখা উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে উর্ধ্বগামী হয়। তবে উৎপাদন বিধির সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তা প্রথম দিকে ক্রমহ্রাসমান হারে এবং পরবর্তীতে ক্রমহ্রাসমান হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। মোট স্থির ব্যয় (TFC) ও মোট পরিবর্তনশীল ব্যয় (TVC) রেখা দুটিকে লম্ব দিক থেকে যোগ করে পাওয়া যায় স্বল্পকালীন মোট ব্যয় (STV) রেখা।

গ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে মোট ব্যয় (TC) নির্ণয় করা হলো-
কোনো নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রব্য উৎপাদনের জন্য উৎপাদনকারী বিভিন্ন উপকরণ ও সেবা বাবদ মোট যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে, তাকে মোট ব্যয় (TC) বলে। 

উৎপাদন (Q) একক

মোট ব্যয় (TC)

গড় ব্যয় (AC)

 ১

 ১০০

 ১০০

 ২

 ১৫০

 ৭৫

 ৩

 ১৮০

 ৬০

 ৪

 ২৪০

 ৬০

 ৫

 ৩৫০

 ৭০


ঘ. উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে AC ও MC এ মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করতে প্রথমে নির্ণয় করা প্রয়োজন। নিচে নির্ণয় করে AC ও MC এর মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করা হলো-
উদ্দীপকের তথ্যের আলোকে প্রাপ্ত সূচি ও অঙ্কিত চিত্রে লক্ষ করা যায়, উৎপাদনের প্রাথমিক পর্যায়ে গড় ব্যয় (AC) ও প্রান্তিক ব্যয় (MC) উভয় কমতে থাকে। তবে এক্ষেত্রে MC এর থেকে AC বেশি থাকে যা AC> MC । একপর্যায়ে AC রেখাকে MC রেখা ছেদ করে, এক্ষেত্রে সর্বনিমণ এবং AC = MC । এরপর উৎপাদন বাড়তে থাকলে AC ও MC উভয় বাড়তে থাকে। তবে এ বাড়ার হার AC অপেক্ষা MC এর বেশি। অর্থাৎ MC রেখা AC রেখার উপরে অবস্থান করে।

১০. নিচে একজন ভোক্তার একটি উপযোগ সূচি দেওয়া হলো:

 দ্রব্যের একক

 মোট উপযোগ

 প্রথম একক

 ১০ একক

 দ্বিতীয় একক

 ১৮ একক

 তৃতীয় একক

 ২২ একক

 চতুর্থ একক

 ২৪ একক

 পঞ্চম একক

 ২৪ একক

 ষষ্ঠ একক

 ২২ একক

ক. যোগান বিধি কী?
খ. চাহিদা বিধি কি সর্বদা কার্যকর? ব্যাখ্যা করো।
গ. উপরোক্ত উদ্দীপকের আলোকে প্রান্তিক উপযোগ রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. উপরোক্ত উদ্দীপকে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধিটি কার্যকর কিনা -মূল্যায়ন করো।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে বিধির সাহায্যে দাম ও যোগানের মধ্যকার সম্পর্ক প্রকাশ করা হয় তাকে যোগান বিধি বলে।

খ. চাহিদা বিধি (Law of Demand)সর্বদা কার্যকর হয় না।
সাধারণত বিধিতে দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যে যে বিপরীত সম্পর্ক বিদ্যমান তা প্রকাশ পায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চাহিদা বিধির ব্যতিক্রম লক্ষ করা যায়। যেমন-গিফেন দ্রব্য ও বিলাসজাত দ্রব্যের ক্ষেত্রে দাম ও চাহিদার মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক বিরাজ করে। এক্ষেত্রে চাহিদা বিধি কার্যকর হয় না।

গ. কোনো দ্রব্যের ভোগের পরিমাণে অতি ক্ষুদ্র পরিবর্তনের ফলে ঐ দ্রব্যের মোট উপযোগের যে পরিবর্তন হয়, তাকে প্রান্তিক উপযোগ বলে। নিচে উদ্দীপকের আলোকে প্রান্তিক উপযোগ রেখা অঙ্কন করা হলো-
প্রদত্ত চিত্রে ভূমি অক্ষে দ্রব্যের একক ও লম্ব অক্ষে প্রান্তিক উপযোগ পরিমাপ করা হয়েছে। সূচির ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পরিমাপ গ্রহণ করে চিত্রে MU রেখা অঙ্কন করা হয়েছে। এটিই হলো উদ্দীপকের সূচির আলোকে অঙ্কিত প্রান্তিক উপযোগ রেখা।

ঘ. উপরোক্ত উদ্দীপকে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক বিধিটি কার্যকর কিনা তা নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-

দ্রব্যের একক

মোট উপযোগ

প্রান্তিক উপযোগ

 ১ম

 ১০

 ১০

 ২য়

 ১৮

 ৮

 ৩য়

 ২২

 ৪

 ৪র্থ

 ২৪

 ২

 ৫ম

 ২৪

 ০

 ৬ষ্ঠ

 ২২

 -২

ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধি অনুযায়ী অন্যান্য অবস্থা স্থির থেকে কোনো ভোক্তা যখন একই দ্রব্য ক্রমাগতভাবে ভোগ করতে থাকে তখন দ্রব্যটির প্রান্তিক উপযোগ ভোক্তার নিকট ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়।
ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আলফ্রেড মার্শালের মতে, কোনো ব্যক্তি কোনো দ্রব্যের মজুদ বৃদ্ধির ফলে যে বাড়তি উপযোগ লাভ করে তা মজুদ বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমশ হ্রাস পায়। যেমন সূচিতে দেখা যায়, ভোক্তা বিবেচ্য দ্রব্যটির ১ম একক হতে ১০, ২য় একক হতে ৮, ৩য় একক হতে ৪, ৪র্থ একক হতে ২ ও ৫ম একক হতে ০ এবং ৬ষ্ঠ একক হতে -২ একক পরিমাণ প্রান্তিক উপযোগ লাভ করে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, দ্রব্য ভোগের একক বাড়ার সাথে সাথে মোট উপযোগ বাড়ে, তবে তা ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়ে। এতে প্রান্তিক উপযোগ ক্রমশ হ্রাস পায়। প্রান্তিক উপযোগ হ্রাস পেলে ৫ম এককে তা শূন্য হয় এবং ৬ষ্ঠ এককে প্রান্তিক উপযোগ ঋনাক্তক হয়।
সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, উদ্দীপকে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধিটি কার্যকর।
Share:

0 Comments:

Post a Comment