HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ২

HSC অর্থনীতি ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Economics 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চমাধ্যমিক

অর্থনীতি
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
২য় অধ্যায়

HSC Economics 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১.
চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?

ক. চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?
খ. পরিবর্তক দ্রব্যের দাম ও চাহিদার সম্পর্ক কীরুপ?
গ. উদ্দীপকের ‘ক’ চিত্রের যোগানের স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকের ‘খ’ এবং ‘গ’ চিত্রের প্রদর্শিত চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো দ্রব্যের দামের শতাংশিক পরিবর্তনের ফলে তার চাহিদার যে শতাংশিক পরিবর্তন হয়-এ দু’য়ের অনুপাতকে চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা বলে।

খ. পরিবর্তক দ্রব্যের দাম ও চাহিদার মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান।
সাধারণত যদি দুটি দ্রব্যের মধ্যে একটির পরিবর্তে অন্যটি ভোগ করা যায় এবং প্রায় সমান উপযোগ লাভ করা যায়। তবে দ্রব্য দুটিকে পরস্পর পরিবর্তক বা বিকল্প দ্রব্য বলা হয়। এ ধরনের দ্রব্যের ক্ষেত্রে একটির দাম বৃদ্ধি পেলে অপরটির চাহিদা বেড়ে যায়। যেমন, চা ও কফি এর মধ্যে যদি চায়ের দাম বৃদ্ধি পায় তবে কফির চাহিদা তথা ভোগ বৃদ্ধি পাবে। এজন্য পরিবর্তক দ্রব্যের দাম ও চাহিদার মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান।

গ. উদ্দিপকে উল্লেখিত তথ্যের আলোকে নিচে ‘ক’ চিত্রের যোগান স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয় করা হলো।
কোনো দ্রব্যের দামের শতাংশিক বা আপেক্ষিক পরিবর্তনের ফলে ঐ দ্রব্যের যোগানের যে শতাংশিক বা আপেক্ষিক পরিবর্তন হয় এ দুয়ের অনুপাতকে যোগানের স্থতিস্থাপকতা বলে। সুতরাং যোগানের স্থতিস্থাপকতা,
E1=যোগানের শতাংশিক পরিবর্তন/দামের শতাংশিক পরিবর্তন
E1=
উদ্দিপকের ‘ক’ চিত্রে লক্ষ করা যায়, বিবেচ্য দ্রব্যের দাম (P) ৫ থেকে বেড়ে ১০ টাকা হলে যোগানের পরিমাণ (Q5) ৫০ একক থেকে বেড়ে ১০০ একক হয়। এক্ষেত্রে,
দামের শতাংশিক পরিবর্তন =

= %
যোগানের শতাংশিক পরিবর্তন =× 100%
= × 100%

= 100%
সুতরাং, যোগানের স্থিতিস্থাপকতা,
Es = = 1% এখানে, ΔQ = 100-50 =50
অথবা, Es = × = 1 ΔP = 10-5 = 5
⸫ Es = 1 ΔP = 5, ΔQ=50
অর্থাৎ নির্ণেয় যোগানের স্থিতিস্থাপকতা এককের মান সমান।

ঘ. উদ্দিপকের ‘খ’ চিত্রে শূন্য স্থিতিস্থাপকতা এবং ‘গ’ চিত্রে অসীম স্থিতিস্থাপকতা প্রদর্শিত হয়েছে। নিচে এদের মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হলো।
কোনো দ্রবের দামের পরিবর্তনের ফলে যদি ঐ দ্রব্যের চাহিদার কোনো পরিবর্তন না হয়, তাকে শুন্য স্থিতিস্থাপকতা বা সম্পর্ণ অস্থিতিস্থাপক চাহিদা বলে। অন্যদিকে দাম স্থিও থেকে কোনো দ্রব্যের চাহিদার পরিবর্তন ঘটলে তাকে অসীম স্থিতিস্থাপকতা বা বিশুদ্ধ স্থিতিস্থাপক চাহিদা বলে।
উদ্দিপকে লক্ষ করা যায়, ‘খ’ চিত্রে দাম ৫ টাকা থেকে বেড়ে ১০ টাকা হলেও চাহিদার পরিমান OQ0 এ স্থির থাকে। এক্ষেত্রে চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা,
EP = × = o
পক্ষান্তের ‘গ’ চিত্রে দামের কোনো পরিবর্তন ছাড়াই তথা ৫ টাকায় স্থির থেকে চাহিদা ৫ একক থেকে বেড়ে ১০ একক হয়। এক্ষেত্রে চাহিদার দাম,
EP = = =
আবার শূন্য স্থিতিস্থ াপকতার ক্ষেত্রে চাহিদা রেখা লম্ব অক্ষের সমান্তরাল হয়। কিন্তু অসীম স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে চাহিদা রেখা ভূমি অক্ষের সমান্তরাল হয়ে থাকে। এ জন্য সম্পর্ণ অ স্থিতিস্থাপক চাহিদা রেখার ঢাল এককের সমান এবং বিশুদ্ধ স্থিতিস্থাপক চাহিদার রেখার ঢাল শূন্য হয়।

২. নিচের চাহিদা সূচি লক্ষ কর এবং সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের উল্টর দাও;

 দাম (P) টাকা

 চাহিদার পরিমান (Q) একক

 ৫

 ৪০

 ১০

 ৩০

 ১৫

 ২০

ক. অপেক্ষক কী?
খ. ‘‘আয়ের পরিবর্তনে চাহিদার পরিবর্তন হয়’’-ব্যাখ্যা করো?
গ. উপরিউক্ত সূচি থেকে চাহিদা রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. উদ্দিপকে দাম স্থির থাকা অবস্থায় যদি ভোক্তার আয় বৃদ্ধি পায় তবে কি চাহিদা রেখার কোনো পরিবর্তন হবে? মতামত দাও।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. দুই বা দুই এর বেশি চলকের মধ্যে নির্ভরশীলতার বিষয় যখন গানিতিক উপায়ে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে অপেক্ষক বলে।

খ. আয়ের সাথে চাহিদার ধনাক্তক সম্পর্ক বিদ্যমান।
দাম স্থির থাকা অবস্থায় ভোক্তার আয় বাড়লে তার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার দরুন সে বেশি ক্রয় করবে। সেক্ষেত্রে দাম স্থির থাকা সত্বেও ভোক্তার কাছে দ্রব্যেও চাহিদা বাড়বে। একইভাবে ভোক্তার আয় কমলে চাহিদা কমে। তাই বলা যায়, আয়ের পরিবর্তনে চাহিদার পরিবর্তন হয়।

গ. উদ্দিপকের ছকে প্রদত্ত মান অনুসারে নিচে চাহিদা রেখা অঙ্কন করা হলো-
চিত্রে OX অক্ষে চাহিদার পরিমান ও OY অক্ষে দ্রব্যের দাম দেখানো হয়েছে। a বিন্দুতে ৫ টাকা দামে দ্রব্যেও চাহিদার পরিমান ৪০ একক। দাম বৃদ্ধি পেয়ে ১০ ও ১৫ টাকা হলে চাহিদার পরিমান কমে ৩০ ও ২০ একক হয়। যা b ও c বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে। এখন a, b ও c বিন্দুগুলো যোগ করে DD রেখা পাওয়া যায়। এই DD রেখাই হলো সূচির তথ্যের আলোকে অঙ্কিত চাহিদা রেখা।

ঘ. উদ্দিপকের দাম সমূহ স্থির থাকা অবস্থায় যদি ভোক্তার আয় বৃদ্ধি পায় তবে চাহিদা রেখা ডানদিকে স্থান পরিবর্তন করবে।
কোনো দ্রব্যের দামের পরিবর্তন না ঘটা সত্বেও ক্রেতার আয়, রুচি, অভ্যাস, ক্রেতার সংখ্যা সম্পর্কিত অন্যান্য দ্রব্যেও দাম ইত্যাদি পরিবর্তনের ফলে চাহিদা বাড়তে বা কমতে পারে। এক্ষেত্রে চাহিদা কমাকে চাহিদার হ্রাস এবং চাহিদা বাড়াকে চাহিদার বৃদ্ধি বলা হয়।
প্রদত্ত চিত্রে ভূমি অক্ষে চাহিদার পরিমান এবং লম্ব অক্ষে দাম পরিমাপ করা হয়েছে। চিত্রে DD0 হলো কোনো দ্রব্যের প্রাথমিক চাহিদা রেখা। OP0ও OQ0 হলো যথাক্রমে প্রাথমিক দাম ও চাহিদার পরিমাণ, যা DD0 রেখার a বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে।
এখন দাম OP0 তে স্থির থাকা অবস্থায় ভোক্তার আয় বাড়লে ভোক্তার চাহিদা বেড়ে OQ হয়। যা ডানদিকে স্থানান্তরিত চাহিদা রেখা DD1 এর b বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে। কাজেই বলা যায় দাম স্থির থাকা অবস্থায় ভোক্তার আয় বৃদ্ধি পেলে চাহিদা রেখা ডানদিকে স্থানান্তরিত হয় এবং চাহিদার পরিমাণ Q0Q1 বৃদ্ধি পায়।

৩. 

 দ্রব্যের দাম (P)

চাহিদার পরিমাণ (Qd)

 যোগানের পরিমাণ (Qs)

 ১০

 ৩০০

 ১০০

 ২০

 ২০০

 ২০০

 ৩০

 ১০০

 ৩০০

ক. চাহিদার সংকোচন কী?
খ. যোগান রেখা কসির্বদা ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী হয়?
গ. উদ্দিপকের তথ্যের আলোকে ভারসাম্য দাম ও পরিমাণ চিত্রের আলোকে দেখাও।
ঘ. ১০ টাকা ও ৩০ টাকা দামে বাজার পরিস্থিতির ওপর মন্তব্য করো।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির ফলে যখন চাহিদার পরিমাণ হ্রাস পায় তখন তাকে চাহিদার সংকোচন বলা হয়।

খ. যোগান রেখা সাধারনত বামদিক থেকে ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী হয়।
কারণ যোগান বিধি অনুযায়ী, দাম ও যোগানের মধ্যে সমমূখী সম্পর্ক বিদ্যমান। আবার যোগান বিধির ব্যতিক্রম ঘটলে, যোগান রেখা তখন ঊর্ধ্বগামী না হয়ে বরং ভূমি বা লম্ব অক্ষের সমান্তরাল হয়ে থাকে। আবার শ্রমের যোগান রেখা বাম দিকে পশ্চাৎগামী হয়ে থাকে। সুতরাং যোগান রেখা সর্বদা ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী হয় না।

গ. উদ্দিপকের তথ্যের আলোকে নিচে রেখা চিত্রের সাহায্যে ভারসাম্য দাম ও পরিমাণ নির্ণয় করা হলো:

উদ্দিপকের তথ্য হতে অঙ্কিত চিত্রে লক্ষ করা যায়, চাহিদা রেখা DD এবং যোগান রেখা SS পরস্পর E বিন্দুতে ছেদ করেছে। তাই ভারসাম্য বিন্দু হলো E। এই বিন্দুতে দাম ২০ টাকা এবং পরিমাণ ২০০ একক। অর্থাৎ ২০ টাকা দামে যোগান ও চাহিদার পরিমান একই( ২০০ একক)। কাজেই প্রদত্ত চিত্রে ভারসাম্য দাম ২০ টাকা এবং পরিমাণ ২০০ একক।

ঘ. উদ্দিপকে উল্লেখিত ১০টাকা দামে বাজারে পণ্য ঘাটতি ও ৩০ টাকা দামে পণ্য উদ্বৃত্ত দেখা দেবে।
চিত্রে লক্ষ করা যায়, ১০ টাকা দামে চাহিদা ৩০০ একক কিন্তু যোগান ১০০ একক। অর্থাৎ Qd = ৩০০ > Qs =১০০ ফলে বাজারে অতিরিক্ত চাহিদা বা ঘাটতি দেখা দেয়। অর্থাৎ ১০ টাকা দামে ভারসাম্য অর্জিত হয় না এবং ab (২০০ একক) পরিমাণ পণ্য ঘাটতি থেকে যায়।
আবার ৩০ টাকা দামে চাহিদা ও যোগান যথাক্রমে ১০০ একক এবং ৩০০ একক। এখানে চাহিদার চেয়ে যোগান বেশি হওয়ায় বাজারে cd (২০০একক) পরিমাণ উদ্বৃত্ত দেখা দেবে। তাই ১০ টাকা ও ৩০ টাকা উভয় মূল্যস্তরই বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।

৪. 

দ্রব্যের একক

মোট উপযোগ (TU)

প্রাসিস্তেক উপযোগ (UM)

 ১

 ১৫

 ১৫

 ২

 ২৫

 ১০

 ৩

 ৩০

 ৫

 ৪

 ৩০

 ০

 ৫

 ২৫

 -৫

ক. ঢাল কাকে বলে?
খ. উপকরণ দামের সাথে যোগানের পরিমাণ কিভাবে সম্পর্কিত?
গ. উপরিউক্ত সূচির ভিত্তিতে প্রান্তিক উপযোগ রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. উপরিউক্ত মোট উপযোগ ও প্রান্তিক উপযোগের মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কি?সূচির আলোকে ব্যাখ্যা করো।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো অপেক্ষকের দুটি সম্পর্কিত চলকের মধ্যে স্বাধীন চলকের পরিবর্তনের ফলে অধীন চলকের পরিবর্তনের অনুপাতকে ঢাল বলে।

খ. উপকরণ দামের সাথে যোগানের পরিমানের সম্পর্ক বিপরীত।
কোনো দ্রব্য উৎপাদন করতে গেলে উপকরণের প্রয়োজন পড়ে। এজন্য উৎপাদনকারীকে তা সংগ্রহ ও তার জন্য ব্যয় করতে হয়। উপকরণের দাম বাড়লে তাই তার উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যায়। ফলে দ্রব্যের দাম স্থির থাকলেও উৎপাদন তথা যোগানের পরিমাণ কমে যায়। আবার বিপরীত অবস্থায় যোগানের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
এ প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উপকরণ দামের সাথে যোগানের পরিমাণ সরাসরি বিপরীতভাবে সম্পর্কিত।

গ. উদ্দিপকে প্রদত্ত তথ্য ব্যবহার করে নিচে একটি উপযোগ রেখা অঙ্কন করা হলো:
রেখা চিত্রে ভূমি অক্ষে ভোগকৃত দ্রব্যেও পরিমাণ ও লম্ব অক্ষে প্রাসিস্তেক উপযোগ রেখা অঙ্কন করা হয়েছে। ভোগকৃত দ্রব্যের ১ম একক থেকে ১৫ টাকা (চিত্রে a বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত), ২য় একক থেকে ১০ টাকা (চিত্রে b বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত) এভাবে ভোক্তা ভোগকৃত দ্রব্যের ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম একক থেকে য়থাক্রমে ৫ টাকা (চিত্রে c বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত), ০ টাকা (চিত্রে d বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত)এবং ৫ টাকা (চিত্রে e বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত) এর সমান উপযোগ লাভ করে।
এখন ভোগকৃত দ্রব্যের একক ও প্রান্তিক উপযোগ নির্দেশক a, b, c d ও e বিন্দুগুলো যুক্ত করে MU রেখা টানি। এটিই উদ্দিপকের তথ্য ব্যবহার করে অঙ্কিত প্রান্তিক উপযোগ রেখা।

ঘ. উদ্দিপকের আলোকে মোট উপযোগ ও প্রান্তিক রেখার মধ্যে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করা হলো-
প্রদত্ত উপযোগ সূচি পর্যালোচনা করে বলা যায়, ভোক্তার ভোগের পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে মোট উপযোগ ক্রমহ্রাসমান হারে বৃদ্ধি পেলেও এক সময় তা সর্বোচ্চ (৩০ টাকা) হয় এবং পরে হ্রাস পায়। আর প্রান্তিক উপযোগ প্রথম থেকেই হ্রাস পায়, এক সময় শূন্য হয়ে যায় এবং পরে তা ঋনাক্তক (-৫) হয়ে পড়ে। এ দুই ধরনের উপযোগ পরিবর্তনের প্রবণতা লক্ষ করলে দেখা যায়, মোট উপযোগের সর্বোচ্চ (৩০ টাকা) অবস্থায়, প্রান্তিক উপযোগ (০) হয়। মোট উপযোগ হ্রাস পেলে (৩০ টাকা থেকে ২৫ টাকা)প্রান্তিক উপযোগ ঋনাক্তক (-৫)হয়ে পড়ে।
সুতরাং মোট উপযোগ ও প্রান্তিক উপযোগের মধ্যে সম্পর্ক দ্বারায় নিমণরুপ:
১. মোট উপযোগ হলো ভোগকৃত কোনো দ্রব্যের সকল এককের উপযোগের সমষ্টি;আর প্রান্তিক উপযোগ হলো মোট উপযোগের অতিরিক্ত এক একক থেকে প্রাপ্ত উপযোগ। তাই প্রান্তিক উপযোগ হলো মোট উপযোগের একটি অংশ।
২. ভোগের পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে মোট উপযোগ কি হারে বৃদ্ধি পায় তা প্রান্তিক উপযোগ প্রকাশ করে।
৩. কোনো দ্রব্যের ভোগ বৃদ্ধি পেলে মোট উপযোগ ক্রমহ্রাসমান হারে বৃদ্ধি পায়, কিন্তু প্রান্তিক উপযোগ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়।
৪. মোট উপযোগ সার্বাধিক হলে প্রান্তিক উপযোগ শূন্য হয়।
৫. মোট উপযোগ হ্রাস পেলে প্রান্তিক উপযোগ ঋনাক্তক হয়।
এভাবে উদ্দিপকের আলোকে মোট উপযোগ ও প্রান্তিক উপযোগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নির্ধারণ করা যায়।

৫. রিম দোকানে গিয়ে ১টি কলম কিনল। কলমটি থেকে ৪ ইউটিল উপযোগ পেল। রিম ২টি কলম থেকে উপযোগ পায় ৭ ইউটিল। পরবর্তীতে ৩টি কলম থেকে উপযোগ পায় ৯ ইউটিল। বিক্রেতা আরও কলম কিনতে বলায় সে ৪টি কলম কিনে উপযোগ পেল ১০ ইউটিল।
ক. উপযোগ কী?
খ. মোট উপযোগ সর্বোচ্চ হলে প্রান্তিক উপযোগ শূন্য হয়-ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দিপকের তথ্যের ভিত্তিতে মোট উপযোগ রেখা চিত্রের সাহায্যে দেখাও।
ঘ. উদ্দিপকের তথ্যের আলোকে বিশ্লেষণ করো যে, প্রান্তিক উপযোগ ক্রমহ্রাসমান।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উপযোগ বলতে কোনো দ্রব্য বা সেবার বিশেষ গুণকে বোঝায়, যা দ্বারা মানুষের বিশেষ অভাব মেটানো সম্ভব হয়।

খ. মোট উপযোগ যখন সর্বোচ্চ হয় প্রান্তিক উপযোগ তখন শূন্য হয়।
ভোক্তা কোনো একটি বিশেষ দ্রব্য অধিক পরিমাণে ভোগ করতে থাকলে তার নিকট উক্ত দ্রব্যের প্রান্তিক উপযোগ ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে। এক পর্যায়ে সে আর ঐ দ্রব্যটি ভোগ করতে চায় না। এমতাবস্থায় ভোক্তার নিকট ঐ দ্রব্যের প্রান্তিক উপযোগ শূন্য হয়। উদাহারণস্বরুপ বলা যায়, একজন ভোক্তার লিচু খাওয়ার ইচ্ছে হলো। এখন সে প্রথম লিচুটি যে আগ্রহ নিয়ে ভোগ করে পরেরটি ভোগের ক্ষেত্রে তার সে আগ্রহ কমে যায়। অর্থাৎ প্রথম লিচুর তুলনায় দ্বিতীয় লিচু থেকে সে কম উপযোগ পায়। তৃতীয় লিচুর ক্ষেত্রে উপযোগ আরও হ্রাস পায়। এভাবে এক পর্যায়ে তার লিচু খাওয়ার আর কোনো আগ্রহ থাকবে না। ফলে সে আর লিচু গ্রহণ করবে না। এ অবস্থায় ভোক্তার নিকট লিচুর মোট উপযোগ সর্বোচ্চ হলেও প্রান্তিক উপযোগ শূন্য।

গ. মোট উপযোগ রেখাচিত্রের সাহায্যে দেখানোর জন্য প্রথমে প্রদত্ত উপাত্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পরিমাপ গ্রহণ করে একটি মোট উপযোগ রেখা (TU) অঙ্কন করা হলো।
চিত্রে ভূমি অক্ষে কলম ক্রয়ের পরিমান ও লম্ব অক্ষে মোট উপযোগ (TU) পরিমাপ করা হয়েছে। উদ্দিপকে রিম দোকানে গিয়ে প্রথমে টি কলম কিনল, যা থেকে সে ৪ ইফটিলের সমান উপযোগ পেল। এ অবস্থায় চিত্রে a বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত হয়। এরপর রিম একইভাবে ২টি, ৩টি ও ৪টি কলম কিনল যেগুলো থেকে সে যথাক্রমে ৭ ইউটিল, ৯ ইউটিল ও ১০ ইউটিল উপযোগ লাভ করলো। এঅবস্থাগুলো যথাক্রমে b, c ও d বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত হয়। এখন a, b, c ও d বিন্দুগুলো যোগ করলে মোট উপযোগ রেখা (TU) পাওয়া যায়।
এভাবে উদ্দিপকের তথ্যের ভিত্তিতে মোট উপযোগ রেখা চিত্রের সাহায্যে দেখানো যায়।

ঘ. উদ্দিপকে দোকান থেকে রিমের পর্যায়ক্রমে কলম ক্রয় এবং তা থেকে প্রাপ্ত মোট উপযোগের ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধিও তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। দৃশ্যকল্প অনুসারে রিম ১ম কলমটি থেকে ৪ ইউটিল সমান প্রান্তিক উপযোগ পায়। এরপর সে যখন ২য় কলমটি ক্রয় করে তখন তা থেকে প্রান্তিক উপযোগ পায় (৭-৪)=৩ ইফটিলের সমান। আবার ৩য় কলমটি ক্রয় করে তখন তা থেকে প্রান্তিক উপযোগ লাভ করে (৯-৭)=২ ইউটিলের সমান। রিম কলমের ক্রয়ের পরিমাণ আরো বাড়ালে সে ৪র্থ কলমটি থেকে (১০-৯)=১ ইউটিলের সামন প্রান্তিক উপযোগ লাভ করে।
অর্থাৎ রিম প্রথম কলমটি থেকে ৪ ইউটিল, ২য় কলমটি থেকে ৩ ইউটিল, ৩য় কলমটি থেকে ২ ইউটিল এবং ৪র্থ কলমটি থেকে ১ ইউটিলের সমান প্রান্তিক উপযোগ লাভ করে। যেখানে তার মোট উপযোগ হয় (৪+৩+২+১)=১০ ইউটিল। এক্ষেত্রে দেখা যায়, কলমের ক্রয় বৃদ্ধির সাথে সাথে মোট উপযোগ বৃদ্ধি পেলেও প্রান্তিক উপযোগ (UM) ক্রমেই হ্রাস পায়।
সুতরাং উদ্দিপকের তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা বলতে পারি, প্রান্তিক উপযোগ ক্রমহ্রাসমান।

৬. চাহিদা অপেক্ষক Qd=10-P
যোগান অপেক্ষক Qs= -2+2P
যেখানে Qd= চাহিদার পরিমাণ, Qs= যোগানের পরিমাণ এবং P= দাম।
ক. যোগান কী?
খ. বক্র রেখার ঢাল কি স্থির?ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দিপকের তথ্যের ভিত্তিতে ভারসাম্য দাম ও পরিমাণ নির্ণয় করো।
ঘ. দাম ৬ টাকা হলে, তখন বাজারে কী প্রভাব পড়বে?উদ্দিপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো বিক্রেতা বা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট দামে উৎপাদিত দ্রব্যের যে পরিমাণ বিক্রি করতে প্রস্তুত বা ইচ্ছুক থাকে তাকে অর্থনীতিতে যোগান বলে।

খ. বক্ররেখার ঢাল স্থির নয় বরং এর প্রতিটি বিন্দুতে ঢাল ভিন্ন হয়।
কোনো রেখার ঢাল হলো ওই রেখার স্বাধীন চলক ও অধীন চলকের পরিবর্তনের অনুপাত। তবে বক্র রেখার উলম্ব ও আনুভূমিক দৈর্ঘ্য ভিন্ন হয়। যার ফলে এর ঢাল স্থির থাকে না।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত চাহিদা অপেক্ষক ও যোগান অপেক্ষকের আলোকে নিমণরূপ ভাবে ভারসাম্য দাম ও পরিমাণ নির্ণয় করা হলো-
বাজার ভারসাম্য অবস্থায় চাহিদার পরিমাণ (Qd) ও যোগানের পরিমাণ (Qs) পরস্পর সমান হয়;অর্থাৎ ভারসাম্য অবস্থায়,
Qd = Qs অর্থনীতি,
বা 10 - P = -2+2P
বা -P -2P = -2 - 10
বা -3P = -12
বা 3P =12
⸫ P = 4 টাকা, একটি ভারসাম্য দাম।
এখন P এর দাম প্রদত্ত চাহিদা ও যোগান অপেক্ষকে বসিয়ে পাই-
Qd=10-PQs= -2+2P
= 10-4 = -2+(2×4)
= 6 একক = 6 একক

Qd = Qs= 6 একক।
অর্থাৎ ভারসাম্য পরিমাণ Q =6 একক।

ঘ. উদ্দীপকের ভিত্তিতে চাহিদা অপেক্ষক Qd=10-P এবং যোগান অপেক্ষক Qs= -2+2P প্রদত্ত অবস্থায় ভারসাম্য 4 টাকা ও ভারসাম্য পরিমাণ 6 একক নির্ধারিত হয়। এঅবস্থায় বিভিন্ন কারণে বাজার ভারসাম্য অবস্থার পরিবর্তন ঘটতে পারে, তখন দামেরও পরিবর্তন ঘটবে। এখন যদি ধরা হয় P = 6 টাকা তবে Qd ও Qs এর মান দাঁড়ায় নিমণরূপ:
Qd=10-PQs= -2+2P
= 10-6 = -2+2(6)
= 4 একক = 10 একক
এক্ষেত্রে Qd≠ Qs হওয়ায় বাজারে ভারসাম্য অর্জিত হবে না;বরং তাতে ভারসাম্য পরিস্থিতি বিনষ্ট হবে এবং বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে। কারণ দাম 6 টাকা হলে চাহিদা থেকে যোগান অনেক বেশি হয় তাই অনেক বিক্রেতারই দ্রব্য অবিক্রিত থেকে যাবে। এ অবস্থায় কিছুটা কম দাম হলেও তারা দ্রব্যটি বিক্রি করতে চাইবে। বিক্রেতাদেও মাঝে প্রতিযোগিতার দরুন দাম কমবে এবং বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দিবে। এ অবস্থায় দাম ও পরিমাণ উভয় অনির্ধারিত থেকে যাবে।
সুতরাং বলা যায়, দাম 6 টাকা হলে বাজারে চাহিদা ও যোগানের অসমতা পরিলক্ষিত হবে। ফলে ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে। এক্ষেত্রে বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

৭. সেতু ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম কমলা লেবু কিনে যথাক্রমে ২০, ১৫, ১০ এবং ৫ টাকায়।
ক. শূন্য স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?
খ. মোট উপযোগ ও প্রান্তিক উপযোগের মধ্যে প্রধান একটি পার্থক্য বর্ণনা করো।
গ. সেতুর ১ম থেকে ৫ম একক পর্যন্ত কমলা লেবুর মোট ও প্রান্তিক উপযোগ নির্ণয় করো।
ঘ. সেতুর প্রদত্ত তথ্যেও মাধ্যমে অর্থনীতির কোন বিধিটি বিশ্লেষণ করা যায়? ব্যাখ্যা করো।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো দ্রব্যের দামের শতকরা পরিবর্তনের ফলে যদি উক্ত দ্রব্যের চাহিদা বা যোগানের কোনো রকম পরিবর্তন না হয়, তবে তাকে শূন্য স্থিতিস্থাপকতা বলে।

খ. একটি দ্রব্যের বিভিন্ন একক থেকে প্রাপ্ত উপযোগের সমষ্টিকে মোট উপযোগ বলে। পরপর ভোগের পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে মোট উপযোগ বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে শেষ একক ভোগ থেকে প্রাপ্ত উপযোগকে প্রান্তিক উপযোগ বলে। ভোগ বৃদ্ধি পেলে প্রান্তিক উপযোগ হ্রাস পায়।

গ. মানুষের অভাব অসীম। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো বিশেষ দ্রব্যের অভাব অসীম। এজন্য একটি দ্রব্যের কিছু ভোগ করার পর ঐ দ্রব্যের অভাব বোধের তীব্রতা কমে আসে। সেতু প্রথম কমলা লেবু যে আগ্রহ নিয়ে ভোগ করে পরেরটি ভোগ করতে তার সে আগ্রহ থাকে না।

কমলালেবুর পরিমাণ

 মোট উপযোগ

প্রান্তিক উপযোগ

 ১

 ২৫

 ২৫

 ২

 ৪৫

 ২০

 ৩

 ৬০

 ১৫

 ৪

 ৭০

 ১০

 ৫

 ৭৫

 ৫

তালিকা থেকে দেখা যায়, সেতুর কমলালেবু ভোগের পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রান্তিক উপযোগ ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে এবং ৫ম একক থেকে সেতু ৫ একক প্রান্তিক উপযোগ পাচ্ছে। কারণ তার প্রয়োজন/অভাব সম্পর্ণরূপে পূরণ হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সেতু কমলালেবু ভোগের প্রতি অতৃপ্তি দেখা দিবে।

ঘ. সেতুর প্রদত্ত তথ্যের মাধ্যমে অর্থনীতির ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধিটি বিশ্লেষণ করা যায়।
ভোক্তার অভাব অসীম হলেও তার একটি বিশেষ অভাব সসীম অর্থাৎ তার পরিতৃপ্তি সম্ভব। ভোগের ক্ষেত্রে এ ধারণার ওপর ভিত্তি করেই ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধির উদ্ভব। এ বিধি অনুযায়ী অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থাকা অবস্তায় কোনো নির্দিষ্ট সময়ে ভোক্তা কোনো একটি দ্রব্য ক্রমাগত যতই ভোগ করতে থাকে তার কাছে ঐ দ্রব্যেও প্রান্তিক উপযোগ ততই কমতে থাকে। বিধিটি বর্ণনা প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ এ. মার্শাল বলেন, ‘কোনো দ্রব্যের মজুদ বাড়ার ফলে একজন ব্যক্তি যে অতিরিক্ত সুবিধা লাভ করে তা ঐ দ্রব্যের মজুদেও প্রতি একক বাড়ার সাথে সাথে কমে’।
সুতরাং ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধিটি সেতুর ১ম থেকে ৫ম একক পর্যন্ত কমলালেবু ভোগের ক্ষেত্রে লক্ষ করা যায়। এই বিধিটি কিছু অনুমিতি শর্তের ওপর নির্ভরশীল। যেমন-ভোক্তাকৃত দ্রব্যের উপযোগ সংখ্যা অথবা অর্থের মাধ্যমে পরিমাপযোগ্য, ভোক্তা প্রতিটি এককের ভোগ একটি নির্দিষ্ট সময়ে সম্পর্ণ করে, ভোগের সময় ভোক্তার আয়, রুচি ও পছন্দ অপরিবর্তিত থাকে, দ্রব্যের বিভিন্ন একক সমাজাতীয়, ভোক্তার আচারণ যুক্তিপূর্ণ, ভোগের একক পর্যাপ্ত হবে।

৮. 

 দ্রব্যের একক

 প্রান্তিক উপযোগ MU

 ১

 ১৫

 ২

 ১০

 ৩

 ৫

 ৪

 ০

 ৫

 -৫

ক. উপযোগ কী?
খ. কখন প্রান্তিক উপযোগ রেখা বাম হতে ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী হয়?
গ. উদ্দীপক হতে মোট উপযোগ নির্ণয় করো।
ঘ. দ্রব্যের একক বৃদ্ধি পেলে প্রান্তিক উপযোগ সবসময় কমে না-ব্যাখ্যা করো।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উপযোগ বলতে কোনো দ্রব্য বা সেবার বিশেষ গুণকে বোঝায়, যা দ্বারা মানুষের বিশেষ অভাব মেটানো সম্ভব হয়।

খ. ভোগের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রান্তিক উপযোগ বাড়তে থাকে।
অতিরিক্ত এক একক দ্রব্য ভোগ করলে মোট উপযোগে যে বৃদ্ধি হয় তাকে প্রান্তিক উপযোগ বলে। যদি ভোক্তা একই দ্রব্যের ভোগের পরিমাণ বাড়তে থাকে তবে ঐ দ্রব্যের প্রান্তিক উপযোগ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়। তবে ভোক্তা যখন শূন্য থেকে ভোগ বাড়ায় তখন প্রথম পর্যায়ে মোট উপযোগ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ে, অর্থাৎ প্রান্তিক উপযোগ বৃদ্ধি পায়। সুতরাং বলা যায় ভোগের প্রাথমিক অবস্থায় প্রান্তিক উপযোগ বাড়তে থাকে।

গ. উদ্দীপকে ভোক্তার প্রান্তিক উপযোগ (MU) সূচি দেওয়া আছে। নিচে প্রান্তিক উপযোগগুলো যোগ করে একটি সূচি তৈরি করার মাধ্যমে মোট উপযোগ নির্ণয় করা হলো:
কোনো দ্রব্যের বিভিন্ন একক থেকে প্রাপ্ত উপযোগের মোট উপযোগ বলে।

দ্রব্যের একক

প্রান্তিক উপযোগ

মোট উপযোগ

 ১

 ১৫

 ১৫+০=১৫

 ২

 ১০

 ১৫+১০=২৫

 ৩

 ৫

 ২৫+৫=৩০

 ৪

 ০

 ৩০+০=৩০

 ৫

 -৫

 ৩০+(-৫)=২৫

উপরের সূচি হতে দেখা যায় যে, প্রান্তিক উপযোগ ১৫ মোট উপযোগ (১৫+০)=১৫, পরবর্তীতে প্রান্তিক উপযোগ যথাক্রমে ১০, ৫, ০ ও -৫ হয়। আর মোট উপযোগ ১৫+১০=২৫, ৩০, ৩০ ও ২৫ নির্দেশ করে। এভাবে মোট উপযোগ নির্ণয় করা যায়।

ঘ. প্রাথমিক পর্যায়ের দ্রব্যের একক বৃদ্ধি পেলে প্রান্তিক উপযোগ কমে না। নিচে বিশ্লেষণ করা হলো:
অতিরিক্ত একক দ্রব্য ভোগ করলে মোট উপযোগের যে বৃদ্ধি হয়, তাকে প্রান্তিক উপযোগ বলে। যদি ভোক্তা একই দ্রব্যের ভোগের পরিমাণ বাড়াতে থাকে তবে ওই দ্রব্যেও প্রান্তিক উপযোগ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়। উদ্দীপকে দেখা যায়, ভোক্তা যখন দ্রব্যের একক বৃদ্ধি করেছে তখন প্রান্তিক উপযোগ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়ে ঋনাক্তক মান ধারণ করেছে।
অন্যদিকে ভোক্তা যখন শূন্য থেকে ভোগ বৃদ্ধি করে তখন প্রাথমিক পর্যায়ে মোট উপযোগ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ে, অর্থাৎ প্রান্তিক উপযোগ বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, মোট উপযোগ ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধির ফলে প্রান্তিক উপযোগ না কমে বরং বৃদ্ধি পাবে। যা একমাত্র উৎপাদনের প্রাথমিক পর্যায়ের সাথে যুক্তিযুক্ত হবে। কিন্তু উপযোগ বা দ্রব্যের একক বৃদ্ধির ফলে প্রান্তিক উপযোগ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়।
সুতরাং বলা যায়, ভোগের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রান্তিক উপযোগ থাকে। ফলে দ্রব্যের একক বৃদ্ধি পেলে প্রান্তিক উপযোগ সবসময় কমে না প্রমাণিত হয়।

৯. দেওয়া আছে, Qs= 10+5P
যেখানে P= দাম এবং Qs = যোগানের পরিমাণ
ক. চাহিদার আয় স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?
খ. চাহিদা কি শুধুমাত্র দামের ওপর নির্ভরশীল?
গ. প্রদত্ত সমীকরণ হতে যোগান রেখা অঙ্কন করো।
ঘ. উপরের সমীকরণে ছেদক ৫ হলে যোগান রেখার কোন ধরনের পরিবর্তন হবে বলে তুমি মনে করো?

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. দ্রব্যের দামের পরিবর্তন ছাড়াই ক্রেতার আর্থিক আয়ের শতকরা পরিবর্তনের ফলে চাহিদার যে শতকরা পরিবর্তন ঘটে, এ দুই এর অনুপাতকে চাহিদার আয় স্থিতিস্থাপকতা বলে।

খ. চাহিদা শুধুমাত্র দামের ওপর নির্ভরশীল নয়।
কোনো দ্রব্যের চাহিদা তার দাম ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ের পরিবর্তন দ্বারা প্রভাবিত হয়। যেমন কোনো দ্রব্যের পরিবর্তক বা পরিপূরক দ্রব্যের দামের পরিবর্তন ঘটলে দ্রব্যটির চাহিদা পরিবর্তিত হতে পারে। ক্রেতার রুচি, পছন্দ, আয় ইত্যাদি পরিবর্তিত হলেও দ্রব্যটির চাহিদা বাড়ে বা কমে। আবার ঋতু পরিবর্তন, বাজারে ক্রেতার সংখ্যা পরিবর্তন, আর্কষণীয় বিজ্ঞাপন ইত্যাদি দ্বারা চাহিদা বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকে। তাই চাহিদাকে শুধুমাত্র দামের ওপর নির্ভরশীল বলা যায় না।

গ. প্রদত্ত সমীকরণ Qs= 10+5P ব্যবহার করে একটি যোগান সূচি তৈরি করে তার আলোকে নিচে একটি যোগান রেখা অঙ্কন করা হলো:
তৈরিকৃত সূচিতে দেখা যায়, দ্রব্যের দাম ০ টাকা, ২ টাকা, ৪ টাকা ও ৬ টাকা হলে যোগানের পরিমাণ যথাক্রমে ১০ একক, ২০ একক, ৩০ একক ও ৪০ একক;যা চিত্রে যথাক্রমে a, b, c ও d বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে। এখন দ্রব্যের দাম ও যোগানের পরিমাণ নির্দেশক a, b, c ও d বিন্দুগুলো যুক্ত করে SS রেখাটি টানি।
এটিই হলো প্রদত্ত সমীকরণ হতে অঙ্কিত যোগান রেখা।

ঘ. প্রদত্ত সমীকরণে ছেদক হলো ১০। এখন উদ্দীপক অনুসারে ছেদক যদি ৫ হয় তবে যোগান সমীকরণটির পরিবর্তিত রূপ হবে Qs1= 5+5P। এর ভিত্তিতে যোগান রেখা অঙ্কন করলে তাতে যে ধরনের পরিবর্তন হবে তা দেখার জন্য পূর্বের সমীকরণের ভিত্তিতে যোগান রেখা SS পুর্ণবার অঙ্কন করা হলো। এখন নতুন যোগান সূচি নিমণরূপভাবে তৈরি করে তার ভিত্তিতে চিত্রে নতুন যোগান রেখা S1S1 অঙ্কন করা হলো।
নতুন যোগান সূচির ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পরিমাপ গ্রহণ করলে a, b, c ও d বিন্দুসমূহ পাওয়া যায়। বিন্দুগুলো যোগ করে নতুন যোগান রেখা S1S1অঙ্কন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, যোগান সমীকরণের ছেদক ৫ হওয়ায় নতুন যোগান রেখা S1S1 উপরে অর্থাৎ বামদিকে স্থানান্তরিত হয়েছে। এর অর্থ হলো প্রতিটি দামে পূর্বের তুলনায় পণ্যের যোগান হ্রাস পেয়েছে।

১০. নিচে একজন ভোক্তার একটি উপযোগ সূচি দেওয়া হলো:

 দ্রব্যের একক

 মোট উপযোগ

 প্রথম একক

 ১০ একক

 দ্বিতীয় একক

 ১৮ একক

 তৃতীয় একক

 ২২ একক

 চতুর্থ একক

 ২৪ একক

 পঞ্চম একক

 ২৪ একক

 ষষ্ঠ একক

 ২২ একক

ক. যোগান বিধি কী?
ক. চাহিদা বিধি কি সর্বদা কার্যকর?ব্যাখ্যা করো।
খ. উপরোক্ত উদ্দীপকের আলোকে প্রান্তিক উপযোগ রেখা অঙ্কন করো।
গ. উপরোক্ত উদ্দীপকে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধিটি কার্যকর কিনা -মূল্যায়ন করো।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে বিধির সাহায্যে দাম ও যোগানের মধ্যকার সম্পর্ক প্রকাশ করা হয় তাকে যোগান বিধি বলে।

খ. চাহিদা বিধি (Law of Demand)সর্বদা কার্যকর হয় না।
সাধারণত বিধিতে দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যে যে বিপরীত সম্পর্ক বিদ্যমান তা প্রকাশ পায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চাহিদা বিধির ব্যতিক্রম লক্ষ করা যায়। যেমন-গিফেন দ্রব্য ও বিলাসজাত দ্রব্যের ক্ষেত্রে দাম ও চাহিদার মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক বিরাজ করে। এক্ষেত্রে চাহিদা বিধি কার্যকর হয় না।

গ. কোনো দ্রব্যের ভোগের পরিমাণে অতি ক্ষুদ্র পরিবর্তনের ফলে ঐ দ্রব্যের মোট উপযোগের যে পরিবর্তন হয়, তাকে প্রান্তিক উপযোগ বলে। নিচে উদ্দীপকের আলোকে প্রান্তিক উপযোগ রেখা অঙ্কন করা হলো-
প্রদত্ত চিত্রে ভূমি অক্ষে দ্রব্যের একক ও লম্ব অক্ষে প্রান্তিক উপযোগ পরিমাপ করা হয়েছে। সূচির ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পরিমাপ গ্রহণ করে চিত্রে MU রেখা অঙ্কন করা হয়েছে। এটিই হলো উদ্দীপকের সূচির আলোকে অঙ্কিত প্রান্তিক উপযোগ রেখা।

ঘ. উপরোক্ত উদ্দীপকে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক বিধিটি কার্যকর কিনা তা নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-

দ্রব্যের একক

মোট উপযোগ

প্রান্তিক উপযোগ

 ১ম

 ১০

 ১০

 ২য়

 ১৮

 ৮

 ৩য়

 ২২

 ৪

 ৪র্থ

 ২৪

 ২

 ৫ম

 ২৪

 ০

 ৬ষ্ঠ

 ২২

 -২

ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধি অনুযায়ী অন্যান্য অবস্থা স্থির থেকে কোনো ভোক্তা যখন একই দ্রব্য ক্রমাগতভাবে ভোগ করতে থাকে তখন দ্রব্যটির প্রান্তিক উপযোগ ভোক্তার নিকট ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়।
ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আলফ্রেড মার্শালের মতে, কোনো ব্যক্তি কোনো দ্রব্যের মজুদ বৃদ্ধির ফলে যে বাড়তি উপযোগ লাভ করে তা মজুদ বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমশ হ্রাস পায়। যেমন সূচিতে দেখা যায়, ভোক্তা বিবেচ্য দ্রব্যটির ১ম একক হতে ১০, ২য় একক হতে ৮, ৩য় একক হতে ৪, ৪র্থ একক হতে ২ ও ৫ম একক হতে ০ এবং ৬ষ্ঠ একক হতে -২ একক পরিমাণ প্রান্তিক উপযোগ লাভ করে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, দ্রব্য ভোগের একক বাড়ার সাথে সাথে মোট উপযোগ বাড়ে, তবে তা ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়ে। এতে প্রান্তিক উপযোগ ক্রমশ হ্রাস পায়। প্রান্তিক উপযোগ হ্রাস পেলে ৫ম এককে তা শূন্য হয় এবং ৬ষ্ঠ এককে প্রান্তিক উপযোগ ঋনাক্তক হয়।
সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, উদ্দীপকে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধিটি কার্যকর।
Share:

0 Comments:

Post a Comment