[ঢাকা বোর্ড ২১, দিনাজপুর বোর্ড ২৩]
মূলভাবঃ স্পষ্টভাষী লোকদের স্বভাবের কারণে তাদের পরিচয় কারও কাছে গোপন থাকে না। অন্যদিকে নির্বাক ব্যক্তির মনে কী চলছে তা জানার উপায় নেই। এ কারণে স্পষ্টভাষী ব্যক্তি শত্রু হলেও নির্বাক বন্ধুর তুলনায় নিরাপদ বলে বিবেচিত।
ভাবসম্প্রসারণঃ যে ব্যক্তি সত্য প্রকাশের সাহস রাখে না, সে মিত্র হলেও তাকে প্রকৃত বন্ধু হিসেবে ভাবা বা গ্রহণ করা যায় না। পক্ষান্তরে, যে ব্যক্তি সত্য কথা বলতে দ্বিধাবোধ করে না, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ও প্রতিবাদী, সে শত্রু হলেও নির্বাক বন্ধু অপেক্ষা উত্তম। একজন সৎবন্ধু প্রত্যেকের জীবনেই কাম্য। প্রকৃত বন্ধু সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বেদনায়, বিপদে-আপদে সুহৃদের ভূমিকা রাখে। কিন্তু অনেক সময় বন্ধুত্বের কারণে এবং বন্ধুত্ব নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় অনেকে বন্ধুর ত্রুটি-বিচ্যুতি নির্দেশ করে না। নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। ফলে মানুষ নিজেকে সংশোধন করার সুযোগ পায় না। মানুষের জীবনে স্পষ্টবাদিতা একটি মহৎ গুণ। স্পষ্টভাষী লোক শত্রু হলেও নির্বাক বন্ধু অপেক্ষা সহস্র গুণ শ্রেয়। কারণ, যেখানে বন্ধু বন্ধুর দোষের কথা বন্ধু হওয়ায় গোপন করে, সেখানে স্পষ্টভাষী শত্রু দোষ তুলে ধরে। তখন সে দোষ সংশোধনের বা সাবধানতা অবলম্বনের সুযোগ পায়। শত্রুর এই আচরণ প্রকৃত প্রস্তাবে মানুষের উপকারই করে। স্পষ্টভাষী শত্রুর সমালোচনা থেকে মানুষ উপকৃত হয় বলে শত্রুকে অমর্যাদা করা যথার্থ নয়। সে শত্রু হলেও পরোক্ষভাবে উপকার করে বন্ধুর মতোই দায়িত্ব পালন করে থাকে।
মন্তব্যঃ স্পষ্টবাদী ব্যক্তি সবসময়ই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ও প্রতিবাদী। তাই এমন ব্যক্তি শত্রু হলেও নির্বাক বন্ধু অপেক্ষা অনেক ভালো। সে শত্রু হলেও স্পষ্টবাদিতার গুণে মহৎ বন্ধু।
0 Comments:
Post a Comment