স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে পশু সেই জন | ভাবসম্প্রসারণ

স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে পশু সেই জন | ভাবসম্প্রসারণ

“স্বদেশের উপকারে নাই যার মন,
কে বলে মানুষ তারে পশু সেই জন।”
অথবা,
স্বদেশের প্রতি যার ভক্তি, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা নেই সে পশুতুল্য।
[কুমিল্লা বোর্ড ২২, যশোর বোর্ড ২৩, রাজশাহী বোর্ড ২৩, চট্টগ্রাম বোর্ড ২৩, বরিশাল বোর্ড ২৩]

মূলভাবঃ দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ। দেশের সেবায়, জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করা প্রতিটি নাগরিকের অবশ্য কর্তব্য।

ভাবসম্প্রসারণঃ প্রিয় স্বদেশ ঘিরেই মানুষের অন্তরে রচিত হয় নানা স্বপ্ন। দেশের গৌরবে মানুষ আনন্দে উদ্বেলিত হয়। আবার দেশের পরাজয়ে মানুষের অন্তরে নেমে আসে বেদনার ছায়া। একজন সচেতন মানুষ তার জন্মভূমিকে ভালো না বেসে পারে না। যদি কেউ ভালো না বাসে সে মানুষ নামের অযোগ্য। তাকে পশু বলাই শ্রেয়। কেননা, পশুর কোনো দেশ নেই, মানুষের আছে। একজন মানুষ যতই ধনবান, রূপবান কিংবা জ্ঞানবান হোক, তার অন্তরে যদি স্বদেশপ্রেম না থাকে, জন্মভূমির কল্যাণের জন্য যদি তার মন না থাকে, তাহলে সে নরাধম, সে বর্বর, সে পশু। আমাদের জন্মভূমি আমাদেরকে দিয়েছে পরম আশ্রয়। এর সুশীতল ছায়ায় আমরা লালিত হচ্ছি। অজানাকে জানা, অদেখাকে দেখার স্বপ্ন আমরা পূরণ করছি দেশের মাধ্যমেই। আমাদের মাতৃভূমি সারা পৃথিবীর সাথে আমাদের আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে। এর কল্যাণের জন্য, এর গৌরব বৃদ্ধির জন্য আমাদের অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে। স্বদেশের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব প্রতিটি মানুষের। দেশের গৌরবকে সমুন্নত রাখা একজন নাগরিকের পবিত্রতম কর্তব্য। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধারণ এবং লালন করা একজন নাগরিকের একান্ত কর্তব্য। পতাকার রং বাড়ায় আত্মসম্মান। সুমধুর জাতীয় সংগীত জোগায় সঞ্জীবনী সুধা, স্বদেশের মাটির মতো এমন পবিত্র আর কিছু নেই। এর নদী, জল, শস্য ভরা প্রান্তর, নৈসর্গিক দৃশ্যাবলি মানুষকে টেনে নেয় গভীর থেকে গভীরে।

মন্তব্যঃ স্বদেশপ্রীতি যার নেই সে পশুর সমান। দেশের উপকারে যিনি নিবেদিতপ্রাণ, তিনিই প্রকৃতপক্ষে মানুষ। পক্ষান্তরে, দেশ প্রেমহীন আত্মকেন্দ্রিক যার হৃদয়, সে নিঃসন্দেহে পশুর সমান।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post