[ঢাকা বোর্ড ০৯]
মূলভাবঃ সমস্ত সৃষ্টির মূল প্রেরণা হচ্ছে চাহিদা বা প্রয়োজন। প্রয়োজন না থাকলে মানুষের ভাবনাও থাকে না; তখন বিনা প্রয়োজনে কোনো কিছু করার আগ্রহও থাকে না। তাই কোনো কিছু উদ্ভাবনের প্রারম্ভে যে বিষয়টি বিবেচ্য তা হচ্ছে প্রয়োজন।
ভাবসম্প্রসারণঃ অণু থেকে অট্টালিকা পর্যন্ত, বিশ্বসভ্যতার প্রতিটি সৃষ্টির মূলে রয়েছে প্রয়োজন। জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত; পৃথিবীর সব কাজে- খাদ্য, বস্ত্র, অন্ন, বাসস্থান, চিকিৎসা- যা কিছু দৃশ্যমান সবই প্রয়োজনের তাগিদে সৃষ্টি। পৃথিবীর সূচনা থেকেই মানুষ তার প্রয়োজন মেটানো বা অভাব পূরণের নিমিত্তেই বিচিত্র জিনিস উদ্ভাবন শুরু করেছে। তবে মানুষের এ উদ্ভাবন নাটকীয়ভাবে হয়নি। সৃষ্টির আদিলগ্নে মানুষ যখন অসহায় তখনই তার বোধ হয় ‘প্রয়োজন’-এর। উদ্ভাবন শুরু হয় নতুন নতুন জিনিসের। আদিম গুহাবাসী মানুষ শিকারের প্রয়োজনে তীর ধনুক আবিষ্কার করে, কাঁচা মাংস পুড়িয়ে খাওয়ার জন্য আগুন জ্বালাতে শেখে। এমনিভাবে প্রয়োজন ও আবিষ্কারের ধারাবাহিক স্তর পেরিয়ে মানুষ পদার্পণ করেছে আধুনিক সভ্যতায়। অন্ধকার থেকে আলোয় যাওয়ার প্রয়োজন উপলব্ধি করে মানুষ বিদ্যুৎ উদ্ভাবন করেছে। সুষ্ঠু যাতায়াত ব্যবস্থার প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করেছে। শিক্ষার প্রয়োজন উপলব্ধি করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠান করেছে। চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল, ওষুধ ও বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের জন্য এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি ইত্যাদি আবিষ্কৃত হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে টেলিফোন, টেলিগ্রাফ, ফ্যাক্স, ইন্টারনেট, ই-মেইল, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন এবং চাষাবাদের জন্য উন্নত ধরনের আধুনিক কৃষিসরঞ্জাম আবিষ্কার করা হয়েছে। সর্বোপরি বিশ্বের সর্বত্র যে বিশাল কর্মকাণ্ডে মানুষ নিয়োজিত রয়েছে তা কেবল প্রয়োজন সাধনেই নিবেদিত।
মন্তব্যঃ প্রয়োজনের শেষ নেই, তাই মানুষের উদ্ভাবনেরও শেষ নেই। প্রয়োজনের তাগিদেই যুগ যুগ ধরে মানুষ এগিয়ে চলছে অসীমের সন্ধানে।
0 Comments:
Post a Comment