[বরিশাল বোর্ড ২৩]
মূলভাবঃ প্রতিটি মানুষই নিষ্পাপ হয়ে পৃথিবীতে আসে। জন্মের সময় কোনো মানব শিশুর গায়ে পাপ-পঙ্কিলতার চিহ্ন থাকে না। অর্থাৎ, মানুষ জন্মসূত্রে পাপী হয় না; বরং পরিবেশ তাকে ক্রমে ক্রমে পাপীতে রূপান্তরিত করে।
ভাবসম্প্রসারণঃ বিংশ শতাব্দীর এ সভ্যতার যুগে ক্রমেই বাড়ছে খুন, রাহাজানি, ছিনতাই, ধর্ষণের মতো অনৈতিক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। কেউ লোভে পড়ে, কেউ জীবিকার তাগিদে আর কেউ বা সঙ্গদোষে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। সমাজের কুচক্রীমহল বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে অন্যায় কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত করছে প্রতিনিয়ত। এভাবেই ধীরে ধীরে একজন মানুষ হয়ে উঠছে দাগী আসামি কিংবা অপরাধী। কিন্তু তার জন্মের সময় সে আর দশজনের মতোই নিষ্পাপ ছিল। পৃথিবীর বুকে বেড়ে উঠতে গিয়ে নানা প্রতিকূল পরিবেশের সংস্পর্শেই মানুষ পাপাচারে প্রবৃত্ত হয়। স্বেচ্ছায় কেউ পাপী হয় না। বৈরী পরিবেশে, অসৎ সঙ্গ, জীবিকার তাগিদ কিংবা অন্য কোনো কারণেই মানুষ পাপপথ বেছে নিতে বাধ্য হয়। মানুষের ইন্দ্রিয় সংযত না থাকলেই মানুষ পাপ-পুণ্যের ব্যবধান করতে ব্যর্থ হয়ে পড়ে। মানুষ হিসেবে প্রত্যেককেই অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকতে হবে। পাপ কর্মকে ঘৃণা করা প্রতিটি মানুষের পরম কর্তব্য ও পবিত্র দায়িত্ব। কিন্তু যে পাপী তাকে সমাজের এককোণে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া মহৎপ্রাণ মানুষের কাজ নয়। তারাও মানুষ এবং আমাদের বৃহত্তর সমাজেরই অংশ। তাই তাদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করা অবিবেচকের কাজ। তাদেরকে ভালোবাসা দিয়ে তাদের স্বভাবের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। তবেই সমাজে হবে চির কল্যাণ ও মঙ্গলের জয়যাত্রা।
মন্তব্যঃ সমাজে নানা ধরনের মানুষ বাস করে। সবাইকে নিয়েই গঠিত হয় সমাজ। এদের মধ্যে যারা পাপকর্মে প্রবৃত্ত হয় তাদের কর্মকে দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। তবে মমতা ও ভালোবাসা দিয়ে চেষ্টা করতে হবে পাপীকে সংশোধন করার। পাপকে ঘৃণা করলেও পাপীকে ঘৃণা করা উচিত নয়।
0 Comments:
Post a Comment