এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই
[ঢাকা বোর্ড ১২]
মূলভাবঃ মানুষের হৃদয় সকল উপাসনালয়ের চেয়ে শ্রেষ্ঠ উপাসনালয়। কেননা, পবিত্র হৃদয়েই স্রষ্টার অবস্থান। মানুষের অন্তরগুলো যদি কল্যাণকামিতা আর পবিত্র চিন্তায় ভরে যায় তাহলে কোথাও আর অশান্তি ও অকল্যাণ থাকে না।
ভাবসম্প্রসারণঃ মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। বুদ্ধি-বিবেচনা এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় মানুষের সমকক্ষ আর কোনো প্রাণী নেই। মানুষের রয়েছে বিচার ও বিশ্লেষণের শক্তি। ন্যায়-অন্যায়, পাপ-পুণ্য বিচার করে চলা মানুষের ধর্ম। পাপ-পুণ্য, ভালো-মন্দ, ধর্ম-অধর্মের পার্থক্য নির্ধারণে মানুষকে পরিচালিত করে মানুষের মন। মন দ্বারা পরিচালিত হয়ে মানুষ সৎ কাজ করে এবং স্রষ্টার সন্তুষ্টি লাভ করে। স্রষ্টা অন্তর্যামী। তিনি মানুষের হৃদয়ের খবরাখবর রাখেন। তাই তাকে পেতে হলে হৃদয়কে শুদ্ধ করতে হবে। যারা নির্মল হৃদয়ের অধিকারী, তারাই আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করতে পারেন। মিথ্যা, কপটতা এবং হীনম্মন্যতায় যাদের হৃদয় পরিপূর্ণ, তাদের মসজিদে-মন্দিরে গিয়ে লাভ নেই। তারা যতই সেজদা অথবা পূজা-অর্চনা করুক না কেন, কোনো কাজ হবে না। কেউ কেউ নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য মসজিদে-মন্দিরে গিয়ে আরাধনা করে; কিন্তু তার হৃদয় যদি কলুষমুক্ত না হয় তাহলে রাতভর আরাধনা করেও কোনো লাভ হবে না। তাই মন্দির বা কাবা শরিফ নয়, অন্তরই হচ্ছে আসল। অর্থাৎ অন্তর শুদ্ধ না করে কাবা শরিফে গিয়ে লাভ নেই। পরিশুদ্ধ হৃদয়ের অধিকারী যাঁরা তাদেরকে কাবা শরিফ গিয়ে আরো পূর্ণতা লাভ করতে পারেন। তাঁরা সহজেই সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভ করেন।
মন্তব্যঃ হৃদয়ের চেয়ে উৎকৃষ্ট আর কোনো কাবা, মন্দির নেই। নির্মল হৃদয়ের অধিকারী যারা তারাই সৃষ্টিকর্তাকে কাছে পেয়ে থাকেন। তাদের হৃদয়ই সত্যিকার আলোয় উদ্ভাসিত। তারাই স্রষ্টার প্রকৃত কল্যাণ লাভে সমর্থ।
0 Comments:
Post a Comment