গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন | ভাবসম্প্রসারণ

গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন | ভাবসম্প্রসারণ

গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন,
নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন
[সিলেট বোর্ড ২২, ২৩]

মূলভাবঃ ধন-সম্পদের সার্থকতা সদ্ভাবে ব্যয়ে আর বিদ্যার সার্থকতা মানসিক বিকাশ ও জগতের কল্যাণ সাধনে। কিন্তু বিদ্যা যদি বইয়ের পাতায় আবদ্ধ থাকে, চর্চা ও অনুশীলনের অভাবে কর্মক্ষেত্রে তার ব্যবহার না হয় তবে বাস্তবজীবনে সে বিদ্যার কোনো মূল্য নেই।

ভাবসম্প্রসারণঃ বই হচ্ছে জ্ঞানের ধারক ও বাহক। বই পাঠ করে মানুষ তার জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে পারে। কিন্তু বিদ্যাকে আয়ত্ত না করে কেবল গ্রন্থগত করে রেখে দিলে বা বইয়ের তাকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখলে তা অর্থহীন হয়ে পড়ে। কারণ গ্রন্থগত বিদ্যা মানুষের প্রয়োজনের সময় কোনো কাজেই আসতে পারে না। অনুরূপ প্রয়োজনের সময় অর্থ-সম্পদ অপরের কাছে রেখে তা নিজের মনে করাটাও বোকামির শামিল। প্রয়োজনের সময় সে অর্থ কোনো কাজে আসে না। গ্রন্থকে সুসজ্জিত বইয়ের তাকে সাজিয়ে রেখে অনেকেই নিজেকে মহাজ্ঞানী ভাবেন। কিন্তু সেটা বোকামিরই পরিচয় বহন করে। আমাদের দেশের অনেক ছাত্রই বইপত্র কিনে টেবিল ভর্তি করে রাখে বা মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাস করে বটে; কিন্তু তাতে তাদের প্রকৃত জ্ঞান আহরণ হয় না। আর তাই পরক্ষণেই সব কিছু ভুলে যায়। ধনসম্পদ বলতে বোঝায় যা মানুষের জীবনকে সুন্দর ও সচ্ছলরূপে পরিচালনার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং জাগতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। অথচ সেই অর্থ যদি নিজের কাছে না রেখে বা গুদামজাত করে প্রয়োজনের মুহূর্তে না পাওয়া যায় তবে সে ধনসম্পদ নিরর্থক। তাতে কষ্টই বাড়ে, সমাধান হয় না। পুথিতে যে জ্ঞান আবদ্ধ থাকে আর পরের হাতে রক্ষিত ধন থাকে দুটিই সমান। দরকারের সময় সে বিদ্যা বিদ্যা নয়; সে ধন ধন নয়।

মন্তব্যঃ বিদ্যা ও সম্পত্তি সাধনার মাধ্যমে অর্জন করতে হবে। গ্রন্থগত বিদ্যাকে অধিকার করতে না পারলে যেমন কোনো লাভ নেই, তেমনি অপরের হাতে অর্থ-সম্পদ আছে জেনে কোনো কাজে হাত দেওয়াও ঠিক নয়।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post