দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপস্বরূপ | ভাবসম্প্রসারণ

দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপস্বরূপ | ভাবসম্প্রসারণ

দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপস্বরূপ
[ঢাকা বোর্ড ২২, কুমিল্লা বোর্ড ২২, রাজশাহী বোর্ড ২৩]

মূলভাবঃ সমাজে বসবাস করতে হলে মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট ও সুশৃঙ্খল কতকগুলো নিয়মনীতি মেনে চলে ও চলতে হয়। কিন্তু মানুষ যখন স্বেচ্ছাচারিতার প্রকাশ ঘটিয়ে অন্যায়ভাবে প্রচলিত নিয়মনীতি ও আইনকানুন লঙ্ঘন করে দুর্নীতির আশ্রয় নেয় জাতীয় জীবনে তখন নেমে আসে ঘোর অন্ধকার।

ভাবসম্প্রসারণঃ দুর্নীতি জাতীয় ও অর্থনৈতিক জীবনে এক দুষ্ট রাহু। দুরারোগ্য ব্যাধির মতোই তা সমাজের সকল শ্রেণি ও পেশার লোককে গ্রাস করে। দুর্নীতির প্রভাবে ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনে অধঃপতন নেমে আসে। দুর্নীতির ফলে একদিকে যেমন রাষ্ট্রীয় সকল নিয়মনীতিতে দেখা দেয় চরম বিশৃঙ্খলা তেমনি সমাজজীবনেও অবক্ষয়ের চিত্র প্রকট হয়ে ওঠে। দুর্নীতির ফলে প্রশাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। সমাজে দেখা দেয় খুন-রাহাজানি, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মারামারিসহ নানা অপকর্ম। একজন দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি কখনোই সুস্থ স্বাভাবিক চিন্তা করতে পারে না। সে দেশ ও দশের মঙ্গলের কথা না ভেবে স্বার্থচিন্তায় মগ্ন হয়। তখন তার কাছে মানবিক মূল্যবোধ গৌণ হয়ে ওঠে। বিবেক, সততা তার কাছে হয় লাঞ্ছিত, অপমানিত। সে বেছে নেয় অন্যায় ও অসত্যের পথ। এভাবে দেশ ও সমাজ ক্রমেই ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যায়। তাই দুর্নীতিকে জাতীয় জীবনে অভিশাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

মন্তব্যঃ দুর্নীতির কারণে একটি জাতির মহত্তম অর্জনও বিফলে যেতে পারে। দুর্নীতির গ্রাসে কেবল অতীত ও বর্তমান নয়, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাও অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যায়। এই সামাজিক অভিশাপকে সমূলে উৎপাটনের জন্য সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post