HSC মনোবিজ্ঞান ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ১ - Exam Cares

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

HSC মনোবিজ্ঞান ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ১

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি

HSC Psychology 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC Psychology 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Monobiggan 2nd paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
মনোবিজ্ঞান
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-১

HSC Psychology
2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. রবি, নবী ও ছবি, একই গ্রামে বসবাস করে। রবি সামান্য লিখতে পড়তে পারা একজন অদক্ষ শ্রমিক। সে নিজের সমস্যা অন্যের সাহায্য ছাড়া সমাধান করতে পারে না। নবী বাড়ির চারিদিকে একাকী বেড়াতে পারে। তার বাকশক্তি ও শারীরিক দক্ষতায় জড়তা আছে। ছবি অতিশয় সহজ সরলভাবে নিজের মনোভাব প্রকাশ করতে পারে। তবে নিজে কোনো কাজ করতে পারে না। 
ক. বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতার সংজ্ঞা দাও।
খ. সৃজনশীলতা মানুষের জীবন মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে কেন?
গ. রবির মধ্যে কোন ধরনের অস্বাভাবিকতা রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. নবী ও ছবির মধ্যে কোন কোন ধরনের প্রতিবন্ধিতা রয়েছে? বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা বা মানসিক প্রতিবন্ধী হলো বয়সের সাথে মানসিক বিকাশগত দৈন্যতা বা সাধারণ বুদ্ধিভিত্তিক ক্ষমতার স্বল্পতা।

খ. সৃজনশীলতা হচ্ছে এমন মানসিক ক্ষমতা যার দ্বারা কোন সমস্যার নতুন ও মৌলিক সমাধান করা যায়। সৃজনশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ ব্যক্তির সৃজনশীল কর্মের ফলে আমরা পাই নতুন নতুন তথ্য, জ্ঞান, আবিষ্কার, ফলে আমাদের জীবনযাত্রার মান বিকশিত হয়ে উঠে। সমস্যা সমাধানে মানসিক দক্ষতাকে সৃজনশীলতা হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়। তাই সৃনশীলতা মানুষের জীবন মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

গ. উদ্দীপকের আলোকে দেখা যায় যে, রবি সামান্য লিখতে পড়তে পারা একজন অদক্ষ শ্রমিক। সে একজন মৃদু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তার মধ্যে যে সব অস্বাভাবিকতা রয়েছে তা নিম্নরূপ -
১. যেসব শিশু বা ব্যক্তির বুদ্ধ্যঙ্ক ৫২-৬৪ এ সীমার মধ্যে তারা মৃদু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী।
২. এদের মানসিক বয়স ৮ থেকে ১২ বছরের হয়।
৩. তাদের ভালো মন্দ বিচার ক্ষমতা কম।
৪. সাধারণত শারীরিক বৈকল্য দেখা যায় না।
৫. বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বনির্ভর করা সম্ভব।
৬. স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে।
৭. আনন্দদায়ক শিক্ষার মাধ্যমে তাদের উন্নতি সম্ভব।

ঘ. উদ্দীপকে নবী ও ছবির মধ্যে মধ্যম ও গুরুতর পতিবন্ধিতা রয়েছে। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো-
নবী একজন মাধ্যম বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কারণ তার মধ্যে বাকশক্তি ও শারিরীক দক্ষতার জড়তা দেখা যায়। শিশু সুলভ ভাষার ব্যবহার ও ত্রুটিপূর্ণ উচ্চারণ করে। শিক্ষণ প্রক্রিয়া অত্যন্ত শ্লথ ও কষ্টসাধ্য। চেহারাতে কিছু বোকা বোকা ভাব থাকে। বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শারীরিক দক্ষতার কিছুটা উন্নতি করা যায়। 
অপরপক্ষে ছবি একজন গুরুতর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কারণ সে সহজ সরলভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারলেও অন্যের সহায়তা ব্যতিত নিজের কোনো যত্ন নিতে পারে না। এমন কি দৈনন্দিন সাধারণ ক্রিয়াকলাপেও অন্যের সাহায্য নিতে হয়। স্নায়বিক বা মস্তিষ্কের ক্ষয়-ক্ষতির জন্য এরা নিষ্ক্রিয় থাকে এবং উত্তেজনায় সাড়া দেয়না বা পারিপার্শ্বিক উদ্দীপকসমূহের প্রতি সহজে প্রতিক্রিয়া করে না। কারো তত্ত্বাবধানে থেকে এরা খুব সহজে কাজ করতে সক্ষম হয়।

২. মেধা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক তার প্রিয় ছাত্র ফাইয়াদকে নির্বাচন করেন। শিক্ষক ফাইয়াদকে নির্বাচনের ক্ষেত্রে মোট ১১টি উপ-অভীক্ষা করেন। সে সাধারণ জ্ঞান, গণিত, জটিল, শব্দাবলি অনুধাবন প্রভৃতি ক্ষেত্রে বেশ ভালো। সে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে, যা কলেজের জন্য সুনাম বয়ে আনে। ফাইয়াদ পুরস্কার গ্রহণের পর দেখতে পায় রবিন নামের একটি ছেলে চেয়ারে হেলান দিয়ে মাকে ধরে বসে আছে। বয়স ১৭ বা ১৮। সে দৌড়াতে পারে না, চেহারায় বোকাভাব। ফাইয়াদ রবিনের মায়ের সাথে কথা বলে এবং তাকে সাহায্য করার চিন্তা করে।
ক. বুদ্ধি কী?
খ. ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে বুদ্ধির পার্থক্য হয় কেন?
গ. ফাইয়াদের ওপর যে অভীক্ষা প্রয়োগ করা হয় তার ভাষাগত দিকগুলো ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রবিনের বর্তমান অবস্থা এবং ফাইয়াদ কীভাবে তাকে সহযোগিতা করতে পারে- বিশ্লেষণ কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বুদ্ধি হলো একটি সাধারণ মানসিক ক্ষমতা ও কতকগুলো বিশেষ ক্ষমতার সমষ্টি যেগুলো ব্যক্তিকে তার পরিবেশের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সহায়তা করে।

খ. বুদ্ধি সম্পর্কে বিভিন্ন লোকের মতপার্থক্য রয়েছে। মূলত দুই ধরনের প্রভাবের কারণে ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে বুদ্ধির পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। যথা- বংশগত প্রভাব ও পরিবেশের প্রভাব।
ব্যক্তির বুদ্ধির বিকাশে বংশগতি ও পরিবেশ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। একটিকে বাদ দিয়ে অপরটি কল্পনা করা যায় না। ব্যক্তি বংশগতি সূত্রে পায় কিছু সম্ভাবনা এবং সেই সম্ভাবনাসমূহ বিকশিত করে যথোপযুক্ত পরিবেশ। ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে এবং বংশগতি ও বেড়ে ওঠার পরিবেশের পার্থক্যের কারণে বুদ্ধির পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

গ. ফাইয়াদের ওপর যে অভীক্ষাটি প্রয়োগ করা হয়েছিল, সেটি ছিল ওয়েক্সলারের সর্বশেষ সংশোধিত বুদ্ধি অভীক্ষা। এতে ১১টি উপ-অভীক্ষা আছে। এ ১১টি উপ-অভীক্ষাকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ৬টি ভাষাগত উপ-অভীক্ষা ও ৫টি কর্ম-সম্পাদনী উপ-অভীক্ষা। নিচে ভাষাগত উপ-অভীক্ষাগুলো ব্যাখ্যা করা হলে-
১. সাধারণ তথ্য: এ উপ-অভীক্ষাতে ২৫টি প্রশ্ন আছে। একজন প্রাপ্তবয়স লোকের যেসব বিষয় জানা দরকার, তার ওপর ভিত্তি করেই এ প্রশ্নলো তৈরি করা হয়েছে।
২. সাধারণ বোধশক্তি: এখানে ১০টি প্রশ্ন রয়েছে। ব্যক্তির বিচার বুদ্ধি ও সাধারণ জ্ঞান যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে এ প্রশ্নগুলো তৈরি করা হয়েছে।
৩. গাণিতিক যুক্তি: এ উপ-অভীক্ষাতে গণিত সম্পকীয় ২০টি প্রশ্ন করতে হয়। 
৪. সাদৃশ্য: এখানে মোট ১২টি প্রশ্ন আছে। প্রতিটি প্রশ্নে দুটি বিষয়ের উল্লেখ আছে। পরীক্ষার্থীর কাজ হলো বিষয় দুটির মধ্যে সাদৃশ্য নির্ণয় করা।
৫. শব্দার্থ: এখানে ৪২টি শব্দ আছে। শব্দগুলো সহজ থেকে কঠিন এভাবে সাজানো আছে। পরীক্ষার্থী মৌখিকভাবে শব্দগুলোর উত্তর দিয়ে থাকে।
৬. সংখ্যা পরিসর: এ উপ-অভীক্ষায় ৩ থেকে ৯ পর্যন্ত যেকোনো সংখ্যা পরীক্ষার্থীকে মৌখিকভাবে বলা হয় এবং তাকে এগুলো সঠিকভাবে বা উল্টোভাবে বলতে বলা হয়। এর দ্বারা পরীক্ষার্থীর স্মৃতির পরিসর পরিমাপ করা হয়।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত রবিনের বয়স ১৭ বা ১৮। কিন্তু সে দৌড়াতে পারে না এবং তার চেহারায় বোকাভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ বৈশিষ্ট্যেগুলোর আলোকে তাকে একজন মধ্যম বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হিসেবে শনাক্ত করা যায়। এদের বুদ্ধ্যঙ্ক ৩৬-৫০ এর মধ্যে হয়ে থাকে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের প্রায় ১০% ব্যক্তি এ ধরনের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। ফাইয়াদ তাকে যেভাবে সাহায্য করতে পারে। যেমন:
 
১. বাসভবনভিত্তিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে,
২. করণ শিক্ষণভিত্তিক আচরণমূলক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে এবং
৩. বুদ্ধিভিত্তিক হস্তক্ষেপমূলক কর্মসূচির ব্যবস্থা করে।
ফাইয়াদ, রবিনের মাকে বাসভবনভিত্তিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষক চিকিৎসক সমাজকর্মী এবং অন্যান্য সাহায্যকারী ব্যক্তি শিশুদের চাহিদাগুলো পূরণ করতে সক্ষম হবে।
করণ শিক্ষণভিত্তিক আচরণমূলক শিক্ষণের দ্বারা বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদেরকে কিছু মৌলিক দক্ষতার ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। যেমন:
ভাষামূলক দক্ষতা অর্জন, স্থূল অঙ্গ সঞ্চালন, সূক্ষ্ম অঙ্গ সঞ্চালন নিজের যত্ন নিতে শিখ প্রভৃতি। ফাইয়াদ, রবিনের মাকে এসব প্রশিক্ষণের বিষয়ে তথ্যমূলক ধারণা দিতে পারে।
বুদ্ধিভিত্তিক হস্তক্ষেপমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুকে নিজের নির্দেশমতো নিজেকে নির্দিষ্ট কাজ করতে শেখানো হয়। ফাইয়াদ, রবিনের জন্য এ ধরনের কর্মসূচি গ্রহণের প্রচেষ্টা নিতে পারে। যাতে রবিন কিছু কাজ নিজে নিজে করতে সক্ষম হয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, ফাইয়াদ, রবিনের মাকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদেরকে নিয়ে পরিচালিত প্রশিক্ষণ সম্পর্কের তথ্য দিয়ে ও রবিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারে। এছাড়াও ফাইয়াদ, রবিনের জন্য কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা করতে পারে।

৩. স্বামীর মৃত্যুর পর শায়লা তার দুই যমজ কন্যা নুপূর ও ঝুমুরকে লালন করতে বেশ বেগ পাচ্ছিল। প্রতিবেশীদের পরামর্শে শায়লা ঝুমুরকে নিঃসন্তান এক ধনী ব্যবসায়ী রবিন সাহেবের কাছে পালক দেন এবং সেখানে ঝুমুর উন্নত পরিবেশে অনেক আদর যত্নে বড় হতে থাকে। অন্যদিকে নুপূর গরীব মায়ের কাছে অতি অযত্নে অনুন্নত পরিবেশে এবং নিম্নমানের স্কুলে পড়ালেখা চালায়। নুপূর এবং ঝুমুরের যখন ১৮ বৎসর তখন দেখা যায় যে সম্পূর্ণ ২টি ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে উঠা সত্ত্বেও তাদের একই ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য এবং বুদ্ধ্যাংকের পরিমাণ প্রায় এক।
ক. বুদ্ধির সংজ্ঞা দাও।
খ. ব্যক্তি ভিত্তিক ও দলভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষা কাকে বলে?
গ. নুপূর ও ঝুমুর বুদ্ধি বিকাশের ক্ষেত্রে কোন উপাদানের প্রভাব লক্ষ করা যায়? ব্যাখ্যা দাও।
ঘ. নুপূর ও ঝুমুরের বুদ্ধির সঠিক বিকাশে উক্ত উপাদানের প্রভাব কি যথেষ্ট বলে তুমি মনে কর?বই এর আলোকে ব্যাখ্যা দাও।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বুদ্ধি হলো একটি সাধারণ মানসিক ক্ষমতা ও কতকগুলো বিশেষ ক্ষমতার সমষ্টি যেগুলো ব্যক্তিকে তার পরিবেশের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সহায়তা করে।

খ. ব্যক্তিভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষা:
যে সকল বুদ্ধি অভীক্ষার সাথে এক সাথে কেবল মাত্র একজন ব্যক্তির বুদ্ধি পরিমাপ করা যায়, সে সকল অভীক্ষাই ব্যক্তিভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষা।
দলভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষা:
যে সকল বুদ্ধি অভীক্ষার সাহায্যে এক সাথে অল্প সময়ে বহুসংখ্যক লোকের বুদ্ধি পরিমাপ করা যায়, তাকে দলভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষ বলে।

গ. নুপূর ও ঝুমুর বুদ্ধি বিকাশের ক্ষেত্রে বংশগত উপাদানের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। নিচে ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
বংশগত প্রভাব:
পিতা-মাতা বা পূর্ব পুরুষদের নিকট থেকে জন্মগতভাবে বুদ্ধির উপর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। নিউম্যান, ফ্রিম্যান ও হলজিঙ্গার (১৯৩৭) ১৯ জোড়া অভিন্ন যমজ পর্যবেক্ষণ করেন। ফলাফলে দেখা যায় যে, রিচার্ড ও রেমন্ড জন্মের পর থেকে ১০ বছর পৃথক পরিবেশে লালিত-পালিত হলেও তারা বুদ্ধির দিক থেকে প্রায় একই ধরনের ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছে। Munn (১৯৬৯) অভিন্ন যমজদের জন্মের পর পৃথক করেন এবং ২২ বছর পর দেখেন যে, তাদের বুদ্ধ্যঙ্কের পার্থক্য খুব কম ছিল।

ঘ. নুপূর ও ঝুমুর বুদ্ধি বিকাশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বংশগত উপাদানের প্রভাবই যথেষ্ট নয়। এর সাথে পরিবেশগত উপাদানের প্রভাবও রয়েছে বলে আমি মনে করি। নিচে পাঠ্যবইয়ের আলোকে ব্যাখ্যা করা হলো:
বর্তমানে বংশগতিকে মানবীয় বুদ্ধির একমাত্র প্রধান উপায় বলে মনে করা হয়। অন্যান্য গবেষণায় দেখা গেছে যে, পরিবেশের প্রভাবও বিশেষভাবে দায়ী।
অনুকূল পরিবেশ হিসেবে যদি শিশুকে বেড়ে উঠার জন্য বাড়িতে সঠিক পরিবেশ, ভালো স্কুল এবং শিক্ষণ সুবিধা দেওয়া যায় তাহলে তার ফলাফলে দেখা যায় শিশুরা বুদ্ধির বিকাশকে উৎসাহিত করে। Schiff ও তাঁর সহকর্মীরা (১৯৭৮) গবেষণায় যে শিশুদের দত্তক উচ্চবিত্তের পিতামাতা গ্রহণ করেন, তাদের সাথে ঐ শিশুদের অন্যান্য ভাই বোনের বুদ্ধির তুলনা করেন। ফলাফলে দেখা যায় যে, দত্তক শিশুদের বুদ্ধ্যঙ্কের গড় ১১১ এবং তাদের জন্মদানকারী পিতামাতার নিকট পালিত ভাই বোনদের বুদ্ধ্যঙ্কের গড় ৯৫। সুবিধা প্রাপ্ত পরিবেশের ফলেই তাদের বুদ্ধ্যঙ্ক ১৬ পয়েন্টের উন্নতি হয়েছে।
এছাড়াও পারিবারিক পরিবেশের আরো অনেক উপাদান শিশুর বুদ্ধির বিকাশের সাথে জড়িত। যেমন পিতামাতার শিক্ষা, পরিবারের অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা, পুষ্টি, বাড়ির অবস্থান ও সামাজিক পারিপার্শ্বিকতা ইত্যাদি। এসব উপাদান শিশুর বুদ্ধির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
আধুনিক মনোবিজ্ঞানীদের মতে বুদ্ধির বিকাশে বংশগতি ও পরিবেশ মানবজীবনের ওপর এক অসামান্য প্রভাব বিস্তার করে। বুদ্ধির বিকাশে বংশগতি ও পরিবেশ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত- একটি বাদ দিয়ে অপরটিকে কল্পনা করা যায় না। সত্যিকার বিকাশের জন্য দরকার বংশগতি সূত্রে প্রাপ্ত সম্ভাবনা, আর সেই সম্ভাবনাকে বিকশিত করার জন্য প্রয়োজন যথোপযুক্ত পরিবেশ। তাই বুদ্ধির বংশগতি ও পরিবেশ উভয় উপাদানের প্রভাবই বিদ্যমান।

৪. মনোচিকিৎসক ডাঃ কামাল হোসেন বেশ কিছুদিন ধরে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছেন। তিনি প্রতিবন্ধীদের আচরণে কাক্ষিত পরিবর্তনের আশায় নিজ উদ্যোগে রাজশাহী শহরের অদূরে নমোভদ্রা এলাকায় আশার আলো' নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেছেন। তিনি লক্ষ করেন তার প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ প্রতিবন্ধী প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও ৪-৭ বছরের শিশুর মতো আচরণ করে। শব্দ উচ্চারণেও যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে- মাঝে মাঝেই কথা আটকে যায়। তবে কামাল সাহেব মনে করেন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এদেরকে আত্মর্নিভরশীল ব্যক্তিতে পরিণত করা যায়।
ক. ব্যক্তির মানসিক পরিপক্কতাকে কী বলা হয়?
খ. বুদ্ধ্যঙ্ক কিভাবে নির্ণয় করা যায়? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে কামাল সাহেবের প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ প্রতিবন্ধী কোন ধরনের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে অন্তর্ভুক্ত প্রতিবন্ধীদের এ অবস্থার জন্য দায়ী সম্ভাব্য কারণসমূহ বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ব্যক্তির মানসিক পরিপক্বতাকে মানসিক বয়স বলে।

খ. বুদ্ধ্যঙ্ক হলো ব্যক্তির মানসিক বয়সের সাথে প্রকৃত বয়সের অনুপাত। জন্মের পর থেকে গণনাকৃত বয়সই হলো ব্যক্তির প্রকৃত বয়স এবং ব্যক্তি যে বয়সের উপযোগী প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে তাহলো ব্যক্তি মানসিক বয়স। বুদ্ধ্যঙ্ক যেভাবে নির্ণয় করা যায় তা নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
বুদ্ধ্যঙ্ক (L.Q)= ১০০
সূত্রের ব্যাখ্যা:
L.Q= Intelligence Quoteint (বুদ্ধ্যঙ্ক)
 M.A= Mental Age (মানসিক বয়স)
 C.A= Chronological Age (প্রকৃত বয়স)

গ. উদ্দীপকে কামাল সাহেবের প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ প্রতিবন্ধী ‘মধ্যম বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা' ধরনের। নিচে এ ধরনের বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
এ ধরনের বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের মানসিক বয়স ৪ থেকে ৭ বছরের মধ্যে হয়। এদের বুদ্ধ্যঙ্ক সাধারণত ৩৬ থেকে ৫০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। এরা-
১. বাক্শক্তি ও শারীরিক দক্ষতার জড়তা দেখা যায়,
২. শিশুসুলভ ভাষা ব্যবহার ও ত্রুটিপূর্ণ উচ্চারণ করে,
৩. কিছু পড়তে ও লিখতে পারে,
৪. শিক্ষণ প্রক্রিয়া অত্যন্ত শ্লথ ও কষ্টসাধ্য,
৫. চেহারাতে কিছু বোকাবোকা ভাব থাকে,
৬. বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শারীরিক দক্ষতার কিছুটা উন্নতি করা যায়। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এদেরকে দৈনন্দিন জীবনযাপনে স্বনির্ভরশীল করে তোলা যায় এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিছুটা উপার্জনশীল নাগরিকে পরিণত করা যায়।

ঘ. উদ্দীপকে অন্তর্ভুক্ত প্রতিবন্ধীরা মধ্যম বুদ্ধি প্রতিবন্ধী’ ধরনের। এ ধরনের প্রতিবন্ধিতার জন্য দায়ী সম্ভাব্য কারণসমূহ নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
১. অনেক ক্ষেত্রে বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা বংশানুক্রমে ঘটতে দেখা যায়। কোনো কোনো পরিবারে পূর্ববর্তী বংশে কারও বংশগত প্রতিবন্ধিতা থাকলে পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে তা দেখা দিতে পারে। 
২. শৈশবকালে শিশু বিভিন্ন রকম মস্তিষ্ক প্রদাহরোগে আক্রান্ত হতে পারে। এভাবে রোগাক্রান্ত শিশুরা বেঁচে থাকলে তার ভিতরে বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা লাভ করতে পারে।
৩. গর্ভজাত মায়ের খাদ্যে বা নবজাতক শিশুর খাদ্যে প্রোটিনের অভাব থাকলে শিশুর বুদ্ধি নিম্নমানের হয়।
৪. অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির গঠন ও ক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ হলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা দেখা দিতে পারে।
৫. শিশুর ভ্রূণ অবস্থায় ক্রোমোজোমের ত্রুটি দেখা দিলে পরোক্ষ প্রতিক্রিয়া হিসেবে বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা দেখা দিতে পারে। 
৬. অপুষ্ট সন্তান প্রসব হলে, নবজাতক শিশুর ওজন যথেষ্ট কম হলে, নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও শিশু প্রসব না হলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা দেখা দিতে পারে।
৭. যেকোনো রক্তের গ্রুপের ক্ষেত্রে মায়ের RH, বাবার RH' এবং সন্তানের RH' হলে সেই সন্তান বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হতে পারে।

৫. সবুজ ও সোহেল দুই ভাই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে কোনো এক মাসে সবুজ জন্মগ্রহণ করে। অপরদিকে সোহেলের জন্ম আশির দশকে। এদের দুজনের মধ্যে সোহেল যে কোনো বিষয় অত্যন্ত দক্ষতার সহিত বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে সম্পন্ন করতে পারে, কিন্তু তার ভাই কোনো কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারে না।
ক. স্যার ফ্রানসিস গ্যালটন কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
খ. বুদ্ধি বলতে কী বুঝ?
গ. সোহেল যেকোনো কাজ সাবলীলভাবে করতে পারার বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর।
ঘ. সোহেলের ভাই কেন সঠিকভাবে কোনো কাজ করতে পারে না?তোমার মতামতের সপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. স্যার ফ্রানসিস গ্যালটন ১৮২২ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

খ. বুদ্ধি হলো ব্যক্তির অর্জিত জ্ঞান এবং সাধারণ ও বিশেষ সামর্থ্যের দ্বারা দৈনন্দিন জীবনে উদ্দেশ্যমূলক কাজ, যুক্তিপূর্ণ চিন্তা ও পরিবেশের সাথে সুষ্ঠ অভিযোজনমূলক আচরণ করতে পারার মতো মৌলিক মানসিক ক্ষমতা।

গ. সোহেলের জন্ম আশির দশকে এবং সে যেকোনো কাজ সাবলীলভাবে অত্যন্ত দক্ষতার সহিত বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে সম্পন করতে পারে।বুদ্ধিমত্তার প্রকৃতি বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, জন্মগত রূপ ও পরিবেশগত রূপ-এ দুটি বুদ্ধি বিকাশের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।
নিচে সোহেল যে কোনো কাজ সাবলীলভাবে করতে পারার ক্ষেত্রে তার মধ্যে বুদ্ধির যে বৈশিষ্ট্যসমূহ লক্ষ করা যায় তা উল্লেখ করা হলো-
১. যুক্তিপূর্ণ চিন্তা করার ক্ষমতা হলো বুদ্ধির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। বুদ্ধি ব্যক্তিকে শিখন ও অভিজ্ঞতার আলোকে যুক্তিপূর্ণ চিন্তা এবং বিচার বিশ্লেষণ করার শক্তি যোগায় যার মাধ্যমে সোহেল তার প্রাত্যহিক জীবনের নতুন নতুন সমস্যার সমাধান খুঁজে পায়।
২. বুদ্ধির একটি বৈশিষ্ট্য হলো বিমূর্ত চিন্তা করার ক্ষমতা যা সোহেলের উন্নত জীবনযাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৩. সোহেলের মধ্যে পূর্ব অভিজ্ঞতা ও শিখনকে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য পুনরুৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে।
৪. সোহেলের মধ্যে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে পূর্ব অভিজ্ঞতা ও শিখনকে কাজে লাগানোর প্রায়োগিক ক্ষমতা রয়েছে।
৫. আপেক্ষিক সম্পর্ক সাধন ও সাধারণীকরণ ক্ষমতা সোহেলের মধ্যে রয়েছে যা বুদ্ধির একটি বৈশিষ্ট্য।
৬. অভিযোজন বা সামঞ্জস্য বিধান ক্ষমতা সোহেলের মধ্যে রয়েছে যা বুদ্ধির একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
৭. উদ্দেশ্যমূলক কাজ করার ক্ষমতা হলো বুদ্ধির একটি বৈশিষ্ট্য। কেননা বুদ্ধি ব্যক্তিকে মুখ্য ও সামাজিক প্রেষণার প্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাজ করার ক্ষমতা যোগায়। 
উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহই সোহেলকে যেকোনো কাজ সাবলীলভাবে দক্ষতার সহিত বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে সম্পন্ন করতে সহায়তা করে।

ঘ. যেকোনো কাজ সঠিকভাবে করতে পারার পেছনে বুদ্ধির ত প্রয়োজন। আর বুদ্ধির প্রকৃতি বিশ্লেষণে দেখা যায় জন্মগত রূপ ও বেশগত রূপ বুদ্ধি বিকাশের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
সোহেলের ভাই সবুজের জন্ম বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যেকোনো একটি মাসে। সে কারণে তার বুদ্ধি বিকাশে জন্মগত ও পরিবেশগত প্রভাবে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে।
মানুষের মানসিক ক্ষমতা বা বুদ্ধি তার জন্মগত বৈশিষ্ট্য, অর্থাৎ জিনগত সংগঠন দ্বারা নির্ধারিত হয়। জন্মগত প্রকৃতিকে মানুষের মানসিক ক্ষমতা বা বুদ্ধির পরোক্ষ রূপ বলে বিবেচনা করা হয়। অপরদিকে মানুষের মানসিক ক্ষমতা বা বুদ্ধি তার পরিবেশগত প্রভাব দ্বারাও নির্ধারিত হয়। পরিবেশগত প্রকৃতিকে মানুষের মানসিক ক্ষমতা বা বুদ্ধির প্রত্যক্ষ রূপ বলে বিবেচনা করা হয়। মানুষের এ ধরনের মানসিক ক্ষমতা বা বুদ্ধি তার পরিবেশগত পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত অর্থাৎ পরিবেশগত পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের বুদ্ধির পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।
উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দেশের বিরাজমান অস্থির পরিস্থিতিতে সবুজের জন্ম হওয়ার কারণে তার মানসিক ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। যার কারণেই সোহেলের ভাই সবুজ সঠিকভাবে কোনো কাজ করতে পারে না।

৬. মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক শিহাব সাহেব ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বললেন। একটি রাষ্ট্র বা দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে বুদ্ধি (I) খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গবেষণায় দেখা যায় কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক লোক সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে থাকে এবং খুবই কম পরিমাণ অতি উন্নত বুদ্ধিসম্পন্ন ও মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে থাকে। 
ক. জীববিজ্ঞানীগণ প্রাণীর প্রকৃতি আলোচনায় কতটি রূপের কথা বর্ণনা করেন?
খ. বুদ্ধির যেকোনো দুটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণের কথা উল্লেখ কর।
গ. রাষ্ট্র পরিচালনায় 'I' কিভাবে প্রত্যেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে পৃথক হয়ে থাকে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে শেষোক্ত বিষয় দুটি সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্নদের তুলনায় ব্যতিক্রম বলে কি তুমি মনে কর?-বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জীববিজ্ঞানিগণ প্রাণীর প্রকৃতি আলোচনায় ২টি রূপের কথা বর্ণনা করেন।

খ. বুদ্ধির যেকোনো দুটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো-
১. অতীত অভিজ্ঞতাকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারা।
২. মূল বিষয়কে সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারা।

গ. উদ্দীপকে 'I' হলো বুদ্ধি। যা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্র পরিচালনায় 'I' প্রত্যেকটি ব্যক্তির ক্ষেত্রে পৃথক হয়ে থাকে। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
এক ব্যক্তির উপলদ্ধি বা বোধ অপর ব্যক্তি থেকে আলাদা। এক ব্যক্তি যেভাবে কোনো বিষয়ের বিভিন্ন অংশগুলোকে সুসংগঠিত ও সুসংহত করতে পারে, অন্য ব্যক্তি তা পারে না। এক ব্যক্তির পর্যালোচনা ক্ষমতা তাপর ব্যক্তি থেকে পৃথক হয়। এক ব্যক্তির উপযোজনের ধরন অপর ব্যক্তির মতো নয়। এক ব্যক্তির সাথে অপর ব্যক্তির সমস্যা সমাধানমূলক সামর্থ্য ও যুক্তিপূর্ণ চিন্তা করার ক্ষমতার মধ্যে অনেক পার্থক্য লক্ষ করা যায়। এখানে এক ব্যক্তি থেকে অপর ব্যক্তিকে আলাদাভাবে দেখার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলো যা বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত। 
অর্থাৎ উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় 'I' তথা বুদ্ধি প্রত্যেকটি ব্যক্তির ক্ষেত্রে পৃথক হয়ে থাকে।

ঘ. উদ্দীপকের শেষোক্ত বিষয় দুটি হলো ‘অতি উন্নত বুদ্ধিসম্পন্ন লোক’ ও ‘মানসিক প্রতিবন্ধী। যা সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্নদের তুলনায় ব্যতিক্রম হয়ে থাকে বলে আমি মনে করি। বিষয় দুটি নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
ওয়েস্লার এডাল্ট ইনটেলিজেন্স সেল (WAIS) এর বুদ্ধ্যঙ্ক বিসত্মৃতির ছকের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রধান অঞ্চলের জনসংখ্যার নমুনা অনুযায়ী, ১৯৫৮ সালে বুদ্ধির ক্ষেত্রে আন্তঃব্যক্তিক পার্থক্যের শতকরা হার তুলে ধরেন। যেখানে ওয়েস্লার উল্লেখ করেন যে, অতি উন্নত বুদ্ধিসম্পন্ন লোকের সংখ্যা ২.২ ভাগ। অপরদিকে মানসিক প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা ২.২ ভাগ। তিনি তাঁর বুদ্ধ্যঙ্ক বিসত্মৃতির ছকে আরও উল্লেখ করেন যে, সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্নদের সংখ্যা জনসংখ্যা বা নমুনা সমগ্রকের শতকরা ৫০ ভাগ। অতি উন্নত বুদ্ধিসম্পন্নদের সাথে সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্নদের পার্থক্য হলো- অতি উন্নত বুদ্ধিসম্পন্নদের বুদ্ধ্যঙ্ক ১৩০ বা তার উর্ধ্বে অপরদিকে সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্নদের বুদ্ধ্যঙ্ক ৯০-১০৯। অতি উন্নত বুদ্ধিসম্পন্নরা সকল বিষয়ে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করে। সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্নদের তুলনায় অতি উন্নত বুদ্ধিসম্পন্নরা সব সময়ই সকল বিষয়ে অনেক বেশি অগ্রসর থাকে। অন্যদিকে, মানসিক প্রতিবন্ধীদের বুদ্ধ্যঙ্ক ৭০ বা তার নিচে অবস্থান করে। এরা সাধারণ বুদ্ধি সম্পন্নদের তুলনায় সব সময়ই সকল বিষয়ে অনেক বেশি অনগ্রসর থাকে। জীবনের অতি সাধারণ কাজগুলোকে অতি সাধারণভাবে এরা সম্পন্ন করতে পারলেও বুদ্ধিবৃত্তিক কোনো কাজেই এরা তেমন কোনো সাফল্য দেখাতে পারে না। 
অর্থাৎ উপরোক্ত আলোচনা হতে দেখা যায় যে, উদ্দীপকের শেষোক্ত বিষয় দুটি সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্নদের তুলনায় ব্যতিক্রম।

HSC মনোবিজ্ঞান ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ১ pdf download

৭. দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী শাহরী মনোবিজ্ঞান ক্লাসে শিক্ষকের কাছ থেকে মানুষের বুদ্ধি পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত প্রথম মানসিক অভীক্ষা প্রয়োগের পদ্ধতি শিখেছিল যা ১৯০৫ সালে প্রণীত হয়। একদিন সে তার ছোট বোন রাসনার উপর অভীক্ষা প্রয়োগের, ইচ্ছা করল। সে অভীক্ষাটি প্রয়োগ করে দেখল যে, রাসনার বয়স ৪ বছর হওয়া সত্ত্বেও সে ৫ বছর উপযোগী প্রশ্নের উত্তর নির্ভুলভাবে দিতে পারে। ফলে শাহরী অভীক্ষাটির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে এ সিদ্ধান্তে পৌছল যে, তার বোন রাসনার মানসিক বয়স ৫ বছর।
ক. বুদ্ধি অভীক্ষা শব্দটি সর্বপ্রথম কে ব্যবহার করেন?
খ. মানসিক প্রক্রিয়া বলতে কী বুঝ?
গ. শাহরী তার ছোট বোনের উপর যে অভীক্ষাটি প্রয়োগ করেছিল সেটির বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ।
ঘ. উদ্দীপকে আলোচিত অভীক্ষাটির সুবিধা-অসুবিধা উল্লেখপূর্বক গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বুদ্ধি অভীক্ষা শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন মনোবিজ্ঞানী ক্যাটেল।

খ. মানসিক প্রক্রিয়া হলো ব্যক্তির অর্জিত মানসিক আচরণ বা কার্যকলাপ। বিভিন্ন ধরনের জন্মগত, অভিজ্ঞতাগত ও পারিপার্শ্বিক সচেতনতা থেকে অর্জিত মানসিক ক্ষমতাভিত্তিক বৈশিষ্ট্য, আচরণ বা কার্যকলাপ হলো মানসিক প্রক্রিয়া। মানসিক প্রক্রিয়ার একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো-বুদ্ধি’।

গ. শাহরী তার ছোট বোন রাসনার উপর যে অভীক্ষাটি প্রয়োগ করেছিল তা হলো- বিনে-সিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষা। নিচে অভীক্ষাটির বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ করা হলো-
১. এ অভীক্ষায় মানসিক বয়স ব্যবহার করা হয়।
২. এ অভীক্ষাটি একটি ভাষাভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষা। এখানে অভীক্ষার্থীদের ভাষার মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়।
৩. অভীক্ষাটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, অভীক্ষাটি বিভিন্ন বয়স স্তরের ভিত্তিতে প্রণীত। এ অভীক্ষার প্রশ্নগুলো বয়স অনুপাতে সাজানো। এ স্কেলের পরিধি ৩ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত প্রসারিত।
৪. অভীক্ষাটি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও প্রশ্নভিত্তিক পদসমূহের দ্বারা প্রণীত।
৫. অভীক্ষাটি আদর্শায়িত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। কারণ অভীক্ষাটির পদসমূহকে বিভিন্ন বয়স স্তরের ভিত্তিতে আদর্শায়িত করা হয়েছে।
৬. এ অভীক্ষার প্রশ্নগুলো সহজ থেকে কঠিন বা জটিল ক্রমানুসারে সাজানো থাকে।
বিনে-সিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষা বুদ্ধি পরিমাপের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ অভীক্ষায় প্রথম যে মানসিক বয়স ধরা হয় তা পরবর্তীতে অন্যান্য অভীক্ষায় ব্যবহৃত হয় বলে বিনে-সিমোঁ অভীক্ষা অন্যান্য অভীক্ষার মডেল হিসেবে ধরা হয়।

ঘ. উদ্দীপকে আলোচিত অভীক্ষাটি হলো বিনে-সিমোঁ অভীক্ষা। অভীক্ষাটির সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখপূর্বক নিচে এর গুরুত্ব বিশ্লেষণ করা হলো-
বিনে-সিমোঁ অভীক্ষার সুবিধা:
১. পদসমূহ সহজ থেকে কঠিন-এভাবে সাজানো আছে।
২. পদসমূহ প্রশ্নের আকারে উপস্থাপন করা হয় এবং অভীক্ষার্থী প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকে।
৩. এ অভীক্ষার সাহায্যে বুদ্ধির তিনটি মাত্রা, যথা-স্বাভাবিক বুদ্ধি, উন্নত সাধারণ ও নিম্নসাধারণ নির্ধারণ করা যায়। 
৪. এ অভীক্ষায় মানসিক বয়সের ধারণা ব্যবহার করা হয়।
৫. অভীক্ষাটি বিভিন্ন বয়স স্তরে ভাগ করা হয়েছে এবং প্রতি বয়স স্তরে স্বতন্ত্র প্রশ্ন রয়েছে।

বিনে-সিমোঁ অভীক্ষার অসুবিধা:
১. যেহেতু এটি একটি ভাষাভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষা তাই এটি বোবা ও বধির লোকদের বুদ্ধি পরিমাপের জন্য প্রযোজ্য নয়।
২. এ অভীক্ষার সাহায্যে একসাথে বহুলোকের বুদ্ধি পরিমাপ করা যায় না। বিনে-সিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষার মূল্যায়ন করতে গিয়ে এইচ, ই, গ্যারেটের। মন্তব্য বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, ‘‘সংশোধন, সমালোচনা, আলোচনা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা সত্ত্বেও সাধারণ বুদ্ধি পরিমাপ করার ব্যাপারে বর্তমানে সেরা বুদ্ধি অভীক্ষার আদিরূপ হলো বিনে-সিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষা।
তাই বলা যায় বিনে-সিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।

৮. নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ কর:
ছক A সর্ব প্রথম আবিষ্কৃত বুদ্ধি অভীক্ষা
 ১৯০৮ সালে ২য় সংস্করণ প্রকাশিত হয়
ছক B এ অভীক্ষার সর্বশেষ সংস্করণ প্রকাশিত হয়
 এ পর্যন্ত ৪টি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে
ক. মানসিক প্রতিবন্ধীদের বুদ্ধ্যঙ্ক কত থাকে?
খ. পরীক্ষণ বলতে কী বুঝ?
গ. ছক 'B' এ আলোচিত বুদ্ধি অভীক্ষাটির বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর।
ঘ. উদ্দীপকের ছক 'A' ও ছক 'B' তে আলোচিত বুদ্ধি অভীক্ষা দুটির মধ্যে কোনটি সেরা বুদ্ধি অভীক্ষা বলে তুমি মনে কর-বিশ্লেষণ কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানসিক প্রতিবন্ধীদের বুদ্ধ্যঙ্ক থাকে ৭০ এর কম।

খ. পরীক্ষণ হলো এমন একটি বস্তুনিষ্ঠ পদ্ধতি যেখানে ব্যক্তির মানসিক প্রক্রিয়া ও আচরণের বৈশিষ্ট্যগত নির্ভরশীল অনির্ভরশীল বলের কার্যকারণ সম্পর্ক পরিমাপ ও প্রমাণের জন্য ব্যবহৃত হয়। পরীক্ষণে সমস্যা ও প্রকল্প থাকে।

গ. ছক 'B' এ আলোচিত বুদ্ধি অভীক্ষাটি হলো স্ট্যানফোর্ডবিনে বুদ্ধি অভীক্ষা। অভীক্ষাটির বৈশিষ্ট্যসমূহ নিচে উল্লেখ করা হলো-
১. স্ট্যানফোর্ড বিনে বুদ্ধি অভীক্ষাটির ক্ষেত্রে বুদ্ধি পরিমাপে বুদ্ধ্যঙ্ককে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হয়। 
২. অভীক্ষাটি বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নভিত্তিক বা L-Form এবং ভাষাবর্জিত সমস্যাভিত্তিক বা M-Form এর কার্যকরী পদসমূহের। সমন্বয়ে প্রশ্নপত্র আকারে প্রণীত। 
৩. অভীক্ষাটির পদগুলো সহজ থেকে কঠিন বা জটিল ক্রমানুসারে সাজানো। থাকে বা অনুরূপভাবে অভীক্ষার্থীর সম্মুখে উপস্থাপন করা হয়। 
৪. অভীক্ষাটি বিভিন্ন বয়স স্তরের ভিত্তিতে প্রণীত। 
৫. অভীক্ষাটি আদর্শায়িত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। কারণ, অভীক্ষাটিতে প্রশ্নভিত্তিক বা L-Form এবং ভাষাবর্জিত সমস্যাভিত্তিক M-Form এর দুটি সমান্তরাল পদের বুদ্ধি অভীক্ষাটি আমেরিকান স্কুল শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের উপর প্রয়োগের মাধ্যমে পদসমূহকে আদর্শায়িত করা হয়।

ঘ. উদ্দীপকে ছক 'A' তে আলোচিত অভীক্ষাটি বিনে-সিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষা এবং ছক 'B' তে আলোচিত অভীক্ষাটি স্ট্যানফোর্ড-বিনে বুদ্ধি অভীক্ষা। এ দুটি বুদ্ধি অভীক্ষার মধ্যে বিনে-সিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষাটি সেরা বলে আমি মনে করি। নিমেণ অভীক্ষাটি সেরা মনে করার কারণ। বিশ্লেষণ করা হলো-
১. এ অভীক্ষাটিতে মানসিক বয়সের ধারণা ব্যবহার করা হয়েছে।
২. অভীক্ষাটি ভাষাভিত্তিক পদসমূহের সমন্বয়ে গঠিত।
৩. অভীক্ষাটি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও প্রশ্নভিত্তিক পদসমূহের সমন্বয়ে গঠিত।
৪. অভীক্ষাটি বিভিন্ন বয়সস্তরের ভিত্তিতে প্রণীত।
৫. এর পদসমূহকে বিভিন্ন বয়স স্তরের ভিত্তিতে আদর্শায়িত করা হয়েছে।
৬. এ অভীক্ষাটিতে পদগুলো সহজ থেকে কঠিন বা জটিল ক্রমানুসারে সাজানো থাকে বা অনুরূপভাবে অভীক্ষার্থীর সম্মুখে উপস্থাপন করা হয়। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য এ অভীক্ষায় ব্যবহৃত মানসিক বয়স সম্পর্কিত ধারণাটি অন্যান্য বুদ্ধি অভীক্ষার ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
বিনে-সিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষার মূল্যায়ন করতে গিয়ে এইচ.ই. গ্যারেটের মন্তব্য বিশেষভাবে প্রাণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, ‘‘সংশোধন, সমালোচনা, আলোচনা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা সত্ত্বেও সাধারণ বুদ্ধি পরিমাপ করার ব্যাপারে বর্তমানে সেরা বুদ্ধি অভীক্ষার আদিরূপ হলো বিনে-সিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষা।’’
অর্থাৎ উপরোক্ত আলোচনা হতে প্রতীয়মান হয় যে 'A' ও 'B' অভীক্ষা দুটির মধ্যে 'A' অভীক্ষাটিই সেরা।

৯. মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক রানা সাহেব বললেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বুদ্ধ্যঙ্ক নির্ণয়ের সূত্র আবিষ্কার করেন। যার মাধ্যমে দ্বাদশ শ্রেণির মনোবিজ্ঞানের ছাত্র সায়েম ১৩ বছর ৩ মাস বয়সী অয়নের উপর প্রয়োগ করে দেখাল যে, সে ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত সকল প্রশ্নের উত্তর নির্ভুলভাবে দিতে পারে, ১৪ বছরের ৬টি, সাধারণ বয়স্ক স্তরের ৪টি, উন্নত বয়স্ক - ১ স্তরের ২টি, উন্নত বয়স্ক - ২ স্তরের ১টি এবং উন্নত বয়স্ক - ৩ স্তরের ১টি প্রশ্নের উত্তর সঠিক করেছে।
ক. IQ এর পূর্ণরূপ লিখ।
খ. বুদ্ধির স্তর বলতে কি বুঝ?
গ. সায়েমের প্রয়োগকৃত অভীক্ষাটির অসুবিধাসমূহ লিখ। 
ঘ. উপরোক্ত সূত্রের সাহায্যে অয়নের বুদ্ধ্যঙ্ক নির্ণয় করে ফলাফল উপস্থাপন কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. IQ এর পূর্ণরূপ হলো- 'Intelligence Quotient'

খ. বুদ্ধি পরিমাপের সময় কোনো ব্যক্তির বুদ্ধিকে মূল্যায়ন করে যে সংখ্যায় প্রকাশ করা হয় সেই সংখ্যাটিকে বুদ্ধির স্তর বলে। তবে এ পরিমাপকৃত বুদ্ধির মান কোনো নিরঙ্কুশ-মান নয়। সমগ্র জনগোষ্ঠীর তুলনামূলক বিচারে বুদ্ধির স্তরটি বিবেচিত হয়। সার্বিক জনসংখ্যার বিচারে বুদ্ধির স্তরবিন্যাসকে কতকগুলো স্তরে বিভক্ত করা হয়। এসব স্তর বিভাগ বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে।

গ. সায়েমের প্রয়োগকৃত অভীক্ষাটি হলো স্ট্যানফোর্ড-বিনে বুদ্ধি অভীক্ষা। নিমেণ এ অভীক্ষাটির অসুবিধাসমূহ লেখা হলো-
১. এটা একটি ব্যক্তিভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষা, তাই এক সঙ্গে অনেক লোকের বুদ্ধি পরিমাপ করা যায় না।
২. অভীক্ষাটি ভাষাভিত্তিক, তাই নিরক্ষর ও ভিন্ন ভাষাভাষি লোকদের ক্ষেত্রে এটি অচল।
৩. অভীক্ষাটির সাহায্যে সাধারণ বুদ্ধি পরিমাপ করা যায় কিন্তু বুদ্ধির বিশেষ উপাদানগুলো পৃথক করা যায় না।
৪. এতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অভীক্ষকের প্রয়োজন।
স্ট্যানফোর্ড-বিনে বুদ্ধি অভীক্ষাটি বহুল ব্যবহৃত হলেও এর উপরোক্ত অসুবিধাসমূহ বিদ্যমান রয়েছে।

ঘ. বুদ্ধ্যঙ্ক নির্ণয়ের সূত্রটি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবিষ্কার করেন। যার সাহায্যে যেকোনো ব্যক্তির বুদ্ধ্যঙ্ক পরিমাপ করা যায়। নিমেণ বুদ্ধ্যঙ্ক নির্ণয়ের সূত্রের সাহায্যে অয়নের বুদ্ধ্যঙ্ক নির্ণয় করে ফলাফল উপস্থাপন করা হলো-
উদ্দীপকে অয়নের মৌলিক মানসিক বয়স ১৩ বছর। এবং তার অর্জিত মানসিক বয়স হলো-
(৬ ২) + (৪ ২) + (২ ৪) + (১ ৫) + (১ ৬) = ১২ + ৮ + ৮ + ৫ + ৬ 
= ৩৯ মাস
 অয়নের মানসিক বয়স = ১৩ বছর + ৩৯ মাস
= (১৩ ১২) মাস + ৩৯ মাস [১ বছর = ১২ মাস]
= ১৫৬ মাস + ৩৯ মাস 
= ১৯৫ মাস
 এবং প্রকৃত বয়স ১৩ বছর ৩ মাস = (১৩ ১২) মাস + ৩ মাস
 = ১৫৯ মাস
বুদ্ধ্যঙ্ক = ১০০
 = ১২২.৬৪ 
অর্থাৎ অয়নের বুদ্ধ্যঙ্ক হলো ১২২.৬৪। অয়নের মানসিক বয়স ও প্রকৃত বয়স সমান হলে তার বুদ্ধ্যঙ্ক ১০০ হতো। কিন্তু অয়নের অর্জিত বুদ্ধ্যঙ্ক ১২২.৬৪ হওয়ায় বলা যায় যে, অয়ন তার বয়সীদের চেয়ে অধিক বুদ্ধিমান।

১০. করিমের ইন্টারভিউ কার্ড এসেছে। সে ইন্টারভিউ দিতে গেল। বোর্ডের সভাপতি তাকে কয়েকটি ছবি দিল এবং আর একটি কার্ড দিল। কার্ডে লাল ও নীল গুটি আছে। একটি লাল ও একটি নীল গুটি আয়তাকার এবং অন্য নীল গুটিগুলো বর্গাকার। গুটিগুলো এলোমেলো করা। গুটিগুলো সাজিয়ে ছবির মতো করতে হবে। করিম বেশ মজা করে কাজটি করতে লাগল।
ক. বুদ্ধ্যঙ্ক কী?
খ. কিভাবে বুদ্ধ্যঙ্ক নির্ণয় করা যায়?
গ. বোর্ডের সভাপতি করিমকে যে কাজটি করতে দিল তোমার বই অনুযায়ী তার নাম কী?সেটি কীভাবে করতে হয়?
ঘ. করিম যে অভীক্ষাটি করল তার সাথে সাধারণ অভীক্ষার পার্থক্য কী?

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ১৯১৬ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টারম্যান স্ট্যানফোর্ড বিনে অভীক্ষায় বুদ্ধ্যঙ্ক শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন। বুদ্ধ্যঙ্ক হলো ব্যক্তির মানসিক বয়সের সাথে তার প্রকৃত বয়সের অনুপাত।

খ. বুদ্ধ্যঙ্ক নির্ণয়:
বুদ্ধ্যঙ্ক (L.Q)= ১০০
সূত্রের ব্যাখ্যা:
L.Q= Intelligence Quoteint (বুদ্ধ্যঙ্ক)
 M.A= Mental Age (মানসিক বয়স)
 C.A= Chronological Age (প্রকৃত বয়স)

গ. বোর্ডের সভাপতি করিমকে যে কাজটি করতে দিল, তা কার্যসম্পাদনমূলক মানক। এটি ওয়েসলার বুদ্ধি অভীক্ষার অংশ। ওয়েসলার তাঁর বুদ্ধি অভীক্ষাটিকে ১১টি উপ-অভীক্ষায় ভাগ করেন। যা আবার দু’ভাগে বিভক্ত। যথা- ভাষাগত এবং কার্যসম্পাদনমূলক। কার্যসম্পাদনমূলক বুদ্ধি উপ-অভীক্ষার একটি। উপ-অভীক্ষা হলো বুক ডিজাইন। অর্থাৎ এ উপ-অভীক্ষাতে কতকগুলো কাঠের বস্নকের সাহায্যে দ্রুততার সাথে একটি নির্দিষ্ট নকশার অনুরূপ নকশা তৈরি করতে বলা হয়।
উদ্দীপকেও বোর্ড সভাপতি করিমকে একটি ছবি ও একটি কার্ড দিয়েছিল। কার্ডের আয়তাকার ও বর্গাকার লাল-নীল গুটিগুলো এলোমেলো থাকায় এগুলোকে সাজিয়ে ছবির মতো করতে দিয়েছিল যা বস্নক ডিজাইন নামে পরিচিত।

ঘ. সাধারণ অভীক্ষা বলতে ভাষাগত অভীক্ষাকেই বোঝানো হয়। ভাষাগত অভীক্ষা ও কর্মসম্পাদনমূলক অভীক্ষার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:
১. মাধ্যম: অভীক্ষার্থী ভাষাভিত্তিক অভীক্ষায় লিখিত বা মৌখিক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকে। অন্যদিকে কার্যসম্পাদনী অভীক্ষায় হাত ও পায়ের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে।
২. সাংস্কৃতিক প্রভাব: ভাষাভিত্তিক অভীক্ষায় সাংস্কৃতিক প্রভাব আছে। কিন্তু কার্যসম্পাদনী অভীক্ষা সাংস্কৃতিক প্রভাবমুক্ত।
৩. ক্ষেত্র: ভাষাভিত্তিক অভীক্ষা কেবলমাত্র যারা লেখাপড়া জানে তাদের উপর পরিচালনা করা হয়। আর কার্যসম্পাদনী অভীক্ষা সকল নিরক্ষর ব্যক্তির উপর পরিচালনা করা হয়।
৪. সাফল্যাঙ্ক নির্ণয়: ভাষাভিত্তিক অভীক্ষায় সাফল্যাঙ্ক বুদ্ধ্যঙ্ক এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। আর কার্যসম্পাদনী অভীক্ষায় বুদ্ধি পরিমাপের জন্য আদর্শমান ব্যবহার করা হয়।
৫. নির্দেশনা: ভাষাভিত্তিক অভীক্ষায় অভীক্ষার্থীকে পূর্বের নির্দেশনা প্রদান প্রয়োজন হয় না। কিন্তু কার্য সম্পাদনী অভীক্ষায় অভীক্ষার্থীকে নির্দেশনা দিতে হয়।
৬. আবেগের প্রভাব: ভাষাভিত্তিক অভীক্ষায় আবেগ প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু কার্যসম্পাদনী অভীক্ষায় আবেগ কোনো প্রভাব ফেলে না।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here