HSC মনোবিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৪ pdf download - Exam Cares

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

HSC মনোবিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৪ pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Psychology 1st Paper Srijonshil question and answer. HSC Psychology 1st Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Monobiggan 1st paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
মনোবিজ্ঞান
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৪

HSC Psychology
1st Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. দৃশ্যকল্প-১: মাইশা স্কুলে হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। স্কুলের ডাক্তার পরীক্ষা করে দেখলেন যে, দীর্ঘক্ষণ খাবার না খাওয়ার কারণে মাইশা অজ্ঞান হয়েছে।
দৃশ্যকল্প -২: আয়েশা ও মনিরা দুই বোন। আয়েশা জনপ্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হবার প্রত্যয় নিয়ে এলাকার জনগণের সুখে দুঃখে গত দু’বছর যাবৎ পাশে রয়েছে। মনিরা সব সময় প্রতিবেশী এবং আত্মীয় স্বজন নিয়ে দলবদ্ধভাবে বসবাস করেন।
ক. প্রেষণা চক্রের প্রথম ধাপ কোনটি?
খ. মুখভঙ্গি কীভাবে আবেগের প্রকাশ ঘটায়?
গ. দৃশ্যকল্প-১ এ মাইশার মাঝে কোন ধরনের জৈবিক প্রেষণা ক্রিয়াশীল? ব্যাখ্যা কর। 
ঘ. ‘‘আয়েশা ও মনিরার মাঝে সৃষ্ট প্রেষণা ভিন্ন হলেও মূলত তারা একই শ্রেণির’’-বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রেষণা চক্রের প্রথম ধাপ অভাববোধ।

খ. আবেগকালীন সময়ে মমখের বিভিন্ন পেশির পরিবর্তন সাধিত হয়। এসময় চক্ষু, নাসিকা, ওষ্ঠ ও কপালসহ মুখম-লের পরিবর্তন হয়। মুখম-লের অভিব্যক্তি দেখে ব্যক্তির সুখ, আনন্দ, দুঃখ, ভয়ভীতি ইত্যাদি আবেগ সম্বন্ধে অনুমান করতে পারি। একম্যান (১৯৭৩) পাঁচটি দেশের শিক্ষিত জনসমষ্টির ওপর মুখম-লের বিভিন্ন ধরনের ছবি দেখান (যেমন- সুখ, বিরাগ, বিস্ময়, দুঃখ, ক্রোধ এবং ভীতি সম্বন্ধীয়) গবেষণার ফলাফলে দেখা যায় যে, এসব মুখম-লের ছবির প্রতি বিভিন্ন দেশের লোকের প্রতিক্রিয়া প্রায় একই রকম ছিল।

গ. দৃশ্যকল্প-১ এ মাইশার মাঝে জৈবিক প্রেষণা-ক্ষুধা ক্রিয়াশীল নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
মানুষের জৈবিক প্রয়োজনের অন্যতম হলো ক্ষুধা। দীর্ঘ সময় ধরে যদি প্রাণীকে খাদ্য থেকে বঞ্চত রাখা হয় তাহলে তার পাকস্থলীর সংকোচনের জন্য সে ক্ষুধার তাড়না অনুভব করে। পাকস্থলীর সংকোচনের সাথে ক্ষুধার অনুভূতির যে সম্পর্ক আছে তা পরীক্ষণের সাহায্যে প্রমাণিত হয়েছে। অবশ্য পাকস্থলী কেটে বাদ দিয়েও দেখা গেছে, পাকস্থলীবিহীন মানুষও ক্ষুধার তাড়না অনুভব করতে পারে। শরীরে শর্করাজাতীয় উপাদানের ঘাটতি হলে মস্তিষ্কের feeding region নামের একটি বিশেষ স্থানে স্নায়বিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং তা প্রাণীকে ক্ষুধার অনুভূতি দেয়। ক্ষুধার অনুভূতিসূচক লক্ষণ হলো শারীরিক দুর্বলতা, অবসাদ ও অস্থিরতা।

ঘ. উদ্দীপকে আয়েশার মাঝে সৃষ্ট প্রেষণা হলো ক্ষমতার লিপ্সা ও মনিরার মাঝে সৃষ্ট প্রেষণা হলো যূথচারিতা। দু’জনের মাঝে সৃষ্ট এ প্রেষণা সামাজিক প্রেষণার অন্তর্ভুক্ত। নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
যূথচারিতা:
যে সকল প্রাণী সংগপ্রিয় তারা দলবদ্ধ হয়ে বাস করে। এরূপ দলবদ্ধ হয়ে থাকার ইচ্ছাকে যূথচারিতা বলে। যূথচারিতা একটি অর্জিত প্রেষণা এবং সমাজে বাস করার ফলে আমরা এটা অর্জন করি। অনেকে যূথচারিতাকে 'সহজাত প্রেষণা হিসেবে গণ্য করার পক্ষপাতী। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যূথচারিতা কোনো সহজাত প্রবৃত্তি নয়। কারণ এর কোনো জৈবিক ভিত্তি নেই এবং সকল শ্রেণির প্রাণীতে প্রেষণাটি বর্তমান নেই। ছোট্ট শিশুকে তার বাবা-মা আদর করে, সে তাদের সাথে মিশে আনন্দ পায়। ধীরে ধীরে সে খেলার সাথী এবং বন্ধুদের সাথে থাকতে পছন্দ করে। পরবর্তীতে সে তার আশেপাশের লোকদের সঙ্গ কামনা করে। যূথচারিতা জন্মগত হলেও একটি শক্তিশালী সামাজিক প্রেষণা।
ক্ষমতার লিপ্সা:
ক্ষমতা লাভের ইচ্ছা একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রেষণা। ক্ষমতা লাভ করার ইচ্ছা অনেকের মধ্যেই বর্তমান। এই ইচ্ছা যাদের মধ্যে একবার জন্মে, ইচ্ছাটি তাদের মধ্যে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে। কোনো ছাত্র শ্রেণি প্রতিনিধি নির্বাচিত হবার পর, পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদক বা সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চিন্তা করবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর কোনো ব্যক্তি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পরিকল্পনা করবে। ক্ষমতার লিপ্সার জন্যই এমনটি ঘটে। যূথচারিতা, নিরাপত্তা, খ্যাতি, কৃতিপ্রেষণা, স্বীকৃতির চাহিদা, ক্ষমতার লিপ্সা, পদমর্যাদার চাহিদা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য সামাজিক প্রেষণা। তাই বলা যায় যে, আয়েশা ও মনিরার মাঝে সৃষ্ট প্রেষণা ভিন্ন হলেও মূলত তারা একই শ্রেণির।

২. দৃশ্যকল্প-১: চাকরির সাক্ষাৎকারের সময় সোহানের প্রচুর ঘাম নিঃসৃত হয়, বুক ধড়ফড় করে এবং কণ্ঠ রোধ হয়ে আসে। 
দৃশ্যকল্প-২: রহমান ও মিজান অফিসের কাজে ঢাকা হতে চট্টগ্রাম যাচ্ছেন। রহমান মনে করেন অফিসের কাজ ঠিকমতো করলে তার পদোন্নতিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাবে, তাই ৭/৮ ঘন্টা ভ্রমণ শেষে চট্টগ্রাম পৌছে রহমান অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকলেও মিজান খাবার খেয়ে হোটেলে বিশ্রাম নিচ্ছেন।
ক. জৈবিক প্রেষণা কাকে বলে?
খ. প্রেষিত আচরণ ভারসাম্য সংস্থাপক কেন?
গ. সোহানের আচরণে শারীরিক পরিবর্তনসমূহ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে রহমান ও মিজানের মধ্যে উদ্ভূত প্রেষণার মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রাণীর জৈবিক অস্তিত্ব থেকে যেসব প্রেষণার উদ্ভব হয় তাকে শারীরবৃত্তীয় বা জৈবিক প্রেষণা বলে।

খ. প্রেষিত আচরণকে ভারসাম্য সংস্থাপক বলা হয়। এর কারণ নিমেণ ব্যাখ্যা করা হলো-
বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার দ্বারা শরীরের অভ্যন্তরে কিছু কিছু উপাদানের ঘাটতি দেখা দেয়। প্রেষিত আচরণের দ্বারা উদ্দেশ্য লাভের মাধ্যমে ঐ ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। শারীরতত্ত্ববিদ ক্যানন (১৯৩২) এর মতে, শরীরের নিজস্ব এমন কতকগুলো প্রক্রিয়া রয়েছে যেগুলো শরীরের একটি স্থিতি বজায় রাখতে চেষ্টা করে। শরীরের অভ্যন্তরীণ উপাদানসমূহের ভারসাম্য বজায় রাখার এ প্রক্রিয়াকেই বলা হয় অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য। যেমন-শরীরে যদি পানির অভাব দেখা দেয় তবে পানি পান করার মাধ্যমে সেই অভাব দূর হয়।

গ. চাকুরীর সাক্ষাৎকারের সময় সোহানের আচরণের শারীরিক পরিবর্তনসমূহ নিচে ব্যখ্যা করা হলো-
হৃৎপিন্ডের ক্রিয়া:
আবেগের সময় হৃৎপিন্ডের স্বাভাবিক ক্রিয়া ব্যাহত হয়। ভয়ে আমাদের বুক ধড়ফড় করে। অর্থাৎ আবেগের সময় হৃৎপিন্ডের ক্রিয়া দ্রুত হতে দ্রুততর হয়। ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাফ-এর ও সাহায্যে হৃৎপিন্ডের এই পরিবর্তন পরিমাপ করা যায়।
ঘর্ম নিঃসরণ:
তীব্র আবেগে ঘর্ম-গ্রন্থির কার্য বেড়ে যায় এবং প্রচুর ঘাম নির্গত হয়। কোনো ভালো ছাত্র ক্লাসে পড়া না পারলে যদি তাকে শ্রেণিকক্ষে দাঁড়িয়ে থাকতে বলা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে তার অন্তর্বাস ঘামে ভিজে গেছে।
লালা ক্ষরণ:
তীব্র আবেগের সময় লালাক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভয়ে আমাদের গলা শুকিয়ে যায়।

ঘ. উদ্দীপকে রহমানের মধ্যে পদমর্যাদার চাহিদা রয়েছে -যা সামাজিক প্রেষণা ও মিজানের মধ্যে খাবার গ্রহণের প্রতি ঝোক রয়েছে যা জৈবিক প্রেষণার অন্তর্ভুক্ত। নিচে সামাজিক ও জৈবিক প্রেষণার তুলনামূলক আলোচনা করা হলো-
১. জৈবিক প্রেষণার শারীরিক ভিত্তি আছে এবং জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য। পক্ষান্তরে সামাজিক প্রেষণার শারীরিক ভিত্তি নেই এবং জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য নয়।
২. জৈবিক প্রেষণা জন্মগত। পক্ষান্তরে সামাজিক প্রেষণা শিক্ষণ দ্বারা অর্জিত।
৩. বিপাকক্রিয়ার ফলে জৈবিক প্রেষণার সৃষ্টি হয়। পক্ষান্তরে সামাজিক প্রেষণার বিপাক ক্রিয়ার সাথে কোন সম্পর্ক নেই।
৪. জৈবিক প্রেষণা সব প্রাণীতে বিদ্যমান। পক্ষান্তরে সামাজিক প্রেষণা সব প্রাণীতে বিদ্যমান নেই, এমনকি একই শ্রেণির সকল প্রাণীতেও বিদ্যমান থাকে না।
৫. জৈবিক প্রেষণা পরিতৃপ্ত সাধনে বিলম্ব হলে তা শরীরের ক্ষতি সাধন করে। পক্ষান্তরে সামাজিক প্রেষণা পরিতৃপ্ত বিলম্বিত হলে শরীরের ক্ষতি সাধন করে না।

৩. দুখু মিয়া একজন গরিব কৃষক। তার বড় ছেলে সুজন দশম শ্রেণি এবং ও ছোট ছেলে সুমন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সুমন পড়ালেখার কারণে একটি Dictionary এর প্রয়োজন অনুভব করল। বাবার অসামর্থ্যের কথা ভেবে সে টিফিনের টাকা জমিয়ে দুই মাস পর একটি Dictionary কিনল। অপরদিকে সুজন তার বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বাবার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন চাইল। বাবার না সুচক উত্তরে সে উত্তেজিত হলো। তার জ্ঞানবুদ্ধি লোপ পেলে সে পড়াশুনা না করার ও বাড়ি ত্যাগের হুমকি দিল। পরবর্তীতে তার আচরণে জন্য বাবার কাছে ক্ষমা চাইল।
ক. প্রেষণা কী?
খ. যূথচারিতা কেন সামাজিক প্রেষণা?
গ. সুমনের Dictionary কেনার প্রক্রিয়াটি পাঠ্যপুস্তকের কোন প্রেষণার সাথে সম্পৃক্ত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সুজনের আচরণে আবেগের কোন ধরনের পরিবর্তনের প্রকাশ হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রেষণা হলো এমন আকাঙক্ষা প্রয়োজন এবং আগ্রহসমূহ, যা প্রাণীকে কর্মে উদ্দীপ্ত বা সক্রিয় করে তোলে এবং একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পরিচালিত করে।

খ. যূথচারিতা সামাজিক প্রেষণা। কারণ যে সকল প্রাণী সঙ্গপ্রিয় তারা দলবদ্ধ হয়ে বাস করে। এরূপ দলবদ্ধ হয়ে থাকার ইচ্ছাকে যূথচারিতা বলে। যূথচারিতা একটি অর্জিত প্রেষণা এবং সমাজে বাস করার ফলে আমরা এটা অর্জন করি। অনেকে যূথচারিতাকে সহজাত প্রেষণা হিসেবে গণ্য করর পক্ষপাতী। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে যূথচারিতা কোনো সহজাত প্রবৃত্তি নয়। ছোট্ট শিশুকে তার বাবা-মা আদর করে সে তাদের সাথে মিশে আনন্দ পায়। ধীরে ধীরে সে খেলার সাথী এবং বন্ধুদের সাথে থাকতে পছন্দ করে। পরবর্তীতে সে তার আশে পাশের লোকদের সঙ্গ কামনা করে। তাই যূথচারিতা জন্মগত হলেও একটি শক্তিশালী সামাজিক প্রেষণা।

গ. উদ্দীপকে সুমনের Dictionary কেনার প্রক্রিয়াটি পাঠ্যবস্তুকের কৃতি প্রেষণার সাথে সম্পৃক্ত। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
সফলতা প্রতিষ্ঠা লাভের প্রাথমিক সোপান। প্রতিটি মানুষই চায় প্রতিষ্ঠা লাভ করতে। সফলতা অর্জন বা প্রতিষ্ঠা লাভের ইচ্ছাই হলো কৃতি প্রেষণা। এ কৃতি প্রেষণা এমন একটি অভ্যন্তরীণ শক্তি যা প্রাণীকে কর্মসম্পাদনে উচ্চমানের তাগিদ দেয়। যে ব্যক্তির মধ্যে কৃতি প্রেষণা অধিক বর্তমান সে খুব পরিশ্রমী হবে এবং সাফল্যের দ্বার তার জন্য উন্মুক্ত। যে সমাজের জনগণের মধ্যে এ প্রেষণার আধিক্য রয়েছে, সে সমাজ ততো উন্নত।
উদ্দীপকে সুমন লেখাপড়ার মাধ্যমে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। আর এ কারণেই অধিকতর ভালো লেখাপড়ার জন্য Dictionary এর প্রয়োজন অনুভব করল এবং দু-মাসের টিফিনের টাকা জমিয়ে একটি Dictionary কিনে নিল। অর্থাৎ সুমনের Dictionary কেনার প্রক্রিয়াটি পাঠ্য পুস্তকের কৃতি প্রেষণার সাথেই সম্পৃক্ত।

ঘ. উদ্দীপকে সুজনের আচরণে আবেগের মানসিক পরিবর্তনের প্রকাশ হয়েছে। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
আবেগের সময় দৈহিক পরিবর্তনের সাথে সাথে মানসিক পরিবর্তনও ঘটে থাকে। কথায় বলে আবেগের ফলে মানুষ অন্ধ হয়ে যায়। আবেগের আতিশয্য বিচার, বিবেচনা ও জ্ঞান-বুদ্ধির গতিপথ রুদ্ধ করে দেয়। মানুষ যখনই অতিমাত্রায় আবেগ তাড়িত হয়, তখনই তার বিচার বুদ্ধি লোপ পায়। এ সময় ব্যক্তি তার নিজের সম্পর্কে অথবা সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কঠিন মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়। উদ্দীপকে সুজন বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বাবার কাছে মোবাইল চেয়ে না পেয়ে উত্তেজিত হয়। এসময় তার জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পেলে সে পড়াশুনা না করার ও বাড়ি ত্যাগের হুমকি দেয়। পরবর্তীতে সে যখন ধৈর্য ও সংযমসহকারে বিচার বুদ্ধির নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তার ভুল বুঝতে পারে তখন সে তার বাবার কাছে ক্ষমা চায়।
অর্থাৎ উপরোক্ত আলোচনা হতে বলা যায় যে, সুজনের আচরণে আবেগের মানসিক পরিবর্তনের প্রকাশ হয়েছে।

৪. তমাল সাহেব একজন অফিস কর্মকর্তা। একদিন ছোট একটি ঘটনায় তার অধীনস্থ কর্মকর্তাকে গালাগাল করে। এতে কর্মচারীরা অসন্তুষ্ট হয়। পরবর্তীতে তিনি তার ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হন।
ক. আবেগের সংজ্ঞা দাও।
খ. আবেগ ও অনুভূতির মধ্যে একটি পার্থক্য ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের বর্ণিত ঘটনায় তমাল সাহেবের আবেগ প্রকাশের ধরনগুলো ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের ঘটনা এড়াতে তোমার পরামর্শ প্রদান কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো উদ্দীপকের প্রতি প্রতিক্রিয়া করতে গিয়ে প্রাণীর মধ্যে যে আলোড়িত বা উত্তেজিত অবস্থার সৃষ্টি হয়, যার গতিবেগ স্বাভাবিক আচরণের গতিবেগ অপেক্ষা কম বেশি তীব্র হয়, তাই আবেগ।

খ. আবেগ হলো এক ধরনের শারীরিক পরিবর্তন এবং আত্মনিষ্ঠ অভিজ্ঞতার সামগ্রিক রূপ। পক্ষান্তরে, অনুভূতি শুধু আবেগের আত্মনিষ্ঠ দিক বা অভিজ্ঞতাকে নির্দেশ করে।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনায় তমাল সাহেবের আবেগ প্রকাশের ক্ষেত্রে যে ধরনগুলোর প্রকাশ ঘটেছে, তা হলো- ক্রোধ, বিরক্তি এবং লজ্জা। তমাল সাহেব ক্রোধের মাধ্যমে প্রথমে তার বিরক্তির প্রকাশ ঘটান। এক্ষেত্রে তার শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যায়, রক্তের চাপ বৃদ্ধি পায়। পরিশেষে তিনি মৌখিক ও শারীরিক আচরণের মাধ্যমে তার বিরক্তির প্রকাশ ঘটান। পরবর্তীতে তিনি তার এ ক্রোধের জন্য লজ্জিত হন। এক্ষেত্রেও তার অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে এক ধরনের হরমোন নিঃসরণ হয়ে লজ্জিত হওয়ার ঘটনা ঘটে। আর সম্পূর্ণ ঘটনটিতে তমাল সাহেব ও বিরক্তি বোধ করে তার বিরক্তি আবেগের প্রকাশ ঘটান।

ঘ. উদ্দীপকের ঘটনায় প্রধানত আবেগ নিয়ন্ত্রণ কৌশলের অভাবের এ কারণেই তমাল সাহেব প্রথমে ক্রোধের প্রকাশ ঘটান এবং পরবর্তীতে লজ্জিত হন। এ ধরনের আবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিচের কৌশলগুলো অবলম্বন করা যেতে পারে-
১. পরিবারে বাবা-মা, ভাইবোনদের সাথে পারস্পরিক ক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তির মধ্যে আবেগ নিয়ন্ত্রণের ভিত্তি রচিত হয়। মায়ের স্নেহ, পিতার ভালোবাসা এবং ভাই-বোনদের আদর এবং নির্দেশনা ভালো আচরণ করতে আগ্রহী করে এবং উগ্র আচরণ থেকে বিরত রাখে। পরিবার থেকে ব্যক্তি ভদ্রতা, নম্রতা, নৈতিকতা, শ্রদ্ধাবোধ শিখে থাকে। এসব গুণাবলি তাকে আবেগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। 
২. আপনজনের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অনেক সময় কিছু সমস্যা থাকে সেগুলো কাছের আত্মীয় যেমন- মামা-মামী, চাচা-চাচী বা বন্ধুদের সাথে পরামর্শ করে সমাধানের পথ পাওয়া যায়। এভাবে অনেক অদমনীয় আবেগ বা অবরুদ্ধ আবেগ থেকে মুক্ত হওয়া যায়।
৩. প্রেষণা হচ্ছে ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ চাপ বা তাগিদ। ব্যক্তি যদি নিজ থেকে তাগিদ অনুভব করে আমি অন্যের ক্ষতি করবো না, নিজের ক্ষতি করবো না তবে সে তার নেতিবাচক আবেগসমূহ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। 
৪. আবেগ পরিবেশ থেকে ব্যক্তি নিজকে সরিয়ে নিলে সহজেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
৫. আত্মসংযমী হলে সহজেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সংযমী ব্যক্তিরা চিন্তা করে কখন রাগ করা যাবে, কখন করা যাবে না। সুতরাং আত্মসংযমী ব্যক্তিগণ সহজেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
৬. অবসর সময়ে বন্ধুদের সাথে আনন্দময় আড্ডায় অংশ নিলে এবং ব্যক্তি, পরিবার ও দেশ সম্পর্কে ইতিবাচক আলোচনায় অংশ নিলে আবেগ কমানো যায়। 
৭. বিভিন্ন মূল্যবোধের মাধ্যমেও আবেগের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। অবাঞ্ছিত আবেগ নিয়ন্ত্রণে ধর্মীয় মূল্যবোধ ব্যক্তিকে সহায়তা করে। ব্যক্তিকে ন্যায় ও সত্যের পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করে।
৮. নিজেকে ব্যর্থ মনে করা, অকর্মণ্য ভাবা, অযোগ্য ভাবাত এসব থেকে ব্যক্তিকে দূরে থাকতে হবে। তবে আবেগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।
৯. শিক্ষা হচ্ছে অনুশীলনের দ্বারা আচরণের অপেক্ষাকৃত স্থায়ী পরিবর্তন। তাই প্রচেষ্টার দ্বারা ব্যক্তির অপ্রয়োজনীয় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এক্ষেত্রে, পুরস্কার, উৎসাহ শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে।

৫. সকালে ঘুম থেকে উঠেই মিতার ক্ষুধা অনুভব হলো। বাসায় নাস্তা তৈরি করে সে খেল। এরপরই স্কুলের অসম্পূর্ণ পড়া সে সম্পূর্ণ করল। মেঘলা দিন থাকায় স্কুলে যেতে ইচ্ছে করছিল না, কিন্তু স্কুলে না গেলে পড়ার ক্ষতি হবে। তাই স্কুলেও যেতে হলো। মিতাকে এভাবে সারাদিনই কোনো না কোনো কাজ করতে হড এবং প্রত্যেকটা কাজই তার জন্য প্রয়োজনীয়।
ক. প্রেষণা কী?
খ. আমরা আবেগময় আচরণে প্রবৃত্ত হই কেন?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত মিতার কাজগুলোর মধ্যে কোনটি জৈবিক প্রেষণা? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মিতার সারাদিনের আচরণগুলো কি ধরনের আচরণ এবং কেন?আলোচনা কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে আকাঙক্ষা, প্রয়োজন এবং আগ্রহ একটি প্রাণীকে কর্মে উদ্বুদ্ধ বা সক্রিয় করে তোলে এবং একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর দিকে পরিচালিত করে তাই প্রেষণা বলে।

খ. আবেগ মানুষের সহজাত ধর্ম। আবেগহীন মানুষ যন্ত্রের মতো। মানুষের আচরণে উত্তেজনা, অস্থিরতা, চঞ্চলতা, তীব্রতার যে তারতম্য ঘটে তার মূলে রয়েছে আবেগ। কোনো বিশেষ বস্তু বা ধারণা একে জাগরিত করে। আবেগে দেহের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন ঘটে। তখন দেহে কতকগুলো বিশেষ ধরনের দৈহিক প্রকাশ ঘটে যার জন্য আমরা নানা রকম আবেগময় আচরণে প্রবৃত্ত হই।

গ. উদ্দীপকে উলে্রখিত মিতার কাজগুলোর মধ্যে ‘ক্ষুধা নিবারণ করা’। জৈবিক প্রেষণা ‘ক্ষুধা’ অনুভবের জন্যই হয়েছে। ক্ষুধা একটি গুরুত্বপূর্ণ জৈবিক প্রেষণা। কারণ-
১. পাকস্থলীতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্যবস্তুর অভাব হলে প্রাণী ক্ষুধা অনুভব করে
২. মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের কয়েকটি বিশেষ এলাকা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বলে অনেকে মনে করেন ক্ষুধার সাথে দুটি এলাকা প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত হয়েছে এর একটি হলো ল্যাটারেল হাইপোথ্যালামাস। এটি বাইরের এলাকা এবং অন্যটি ভেনট্রোমেডিয়াল হাইপোথ্যালামাস।
৩. যকৃত ক্ষুধা সংকেত প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. দেহের মধ্যে পুষ্টির অভাব ও রক্তের শর্করা পরিমাণ কম হলে ক্ষুধা অনুভূত হয়।
অর্থাৎ ক্ষুধার অনুভবটি সম্পূর্ণভাবে জৈবিকভাবে অনুভূত হওয়ার এ কারণেই এটি একটি জৈবিক প্রেষণা।

ঘ. সারাদিনের মিতার আচরণগুলোকে প্রেষিত আচরণ বলা হয়। যেহেতু আচরণের সাথে প্রেষণার সম্পর্ক নিবিড়, সেহেতু মিতার আচরণগুলোকে প্রেষিত আচরণ বলা যায়। প্রেষিত আচরণের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যা মিতাকে সারাদিনের কাজে অনুপ্রেরণার সৃষ্টি করে। বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
১. প্রেষিত আচরণ দেহের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের ফলে সৃষ্টি হয়।
২. প্রেষিত আচরণ নির্বাচনমূলক। ব্যক্তি একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে কেন্দ্র করে প্রয়োজনীয় আচরণটি সম্পাদন করে। যেমন- ক্ষুধার্ত প্রাণী খাদ্যবস্তু পাওয়ার জন্য খাদ্যের দিকে ধাবিত হয়। আবার তৃষ্ণার্ত প্রাণী পানির দিক ধাবিত হয়।
৩. প্রেষিত আচরণ অপেক্ষাকৃত দীর্ঘস্থায়ী। প্রাণীর সামনে যে লক্ষ্যবস্তু থাকে তাতে উপনীত হওয়ার জন্য প্রাণী সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করে এবং লক্ষ্যবস্তুতে উপনীত না হওয়া পর্যন্ত চেষ্টা অব্যাহত থাকে। প্রাণী সহজে এ চেষ্টা হতে বিরত হয় না। প্রেষণা যত বেশি তীব্র হবে লক্ষ্যবস্তুর দিকে যাওয়ার চেষ্টা ততই বৃদ্ধি পাবে। অবশ্য এরূপ প্রচেষ্টার একটি নির্দিষ্ট সীমা আছে।
৪. প্রেষিত আচরণ ভারসাম্য বজায় রাখে। কোনো প্রাণীকে যদি দীর্ঘক্ষণ যাবৎ খাদ্যবস্তু হতে বঞ্চিত করা হয়, তখন তার অভ্যন্তরীণ টিস্যুর পরিবর্তন হেতু একটি অস্থির অবস্থার সৃষ্টি হয়। এ অস্থির অবস্থা দূর করার জন্য প্রাণী কর্মতৎপর হয়। এবং এটি দূরীভূত হলে কর্মতৎপরতা কমে যায়।
প্রেষিত আচরণের বৈশিষ্ট্যগুলো একমুখী নয় বিভিন্নমুখী। প্রেষিত আচরণগুলো তখনই দেখা যায় যখন প্রাণীর মধ্যে অভাববোধ দেখা দেয়। এ প্রেষণার মাধ্যমেই প্রাণী তার লক্ষ্য অর্জন করে থাকে।
মিতার সকালে ক্ষুধার অনুভূতি অভ্যন্তরীণভাবে সৃষ্টি হয়েছে এবং ক্ষুধা নিবারণের জন্য নাস্তা তৈরি করা প্রেষণার নির্বাচনমূলক বৈশিষ্ট্য। ক্ষুধা নিবারণ না হওয়া পর্যন্ত মিতার ক্ষুধার প্রেষণা স্থায়ী থাকে। ক্ষুধা নিবারণ হওয়ার পর সে স্কুলে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। অর্থাৎ একটি প্রেষণার পর অন্য একটি প্রেষণার সৃষ্টি মিতাকে জীবনের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে।

৬. দৃশ্যকল্প: সাবিহা, রূমি ও সনি রহিম সাহেবের তিন মেয়ে। সাবিহা স্কুলে গেলেই সারাক্ষণ বন্ধুবান্ধবী নিয়ে ব্যস্ত থাকে, বাসায়ও সে মা-বাবাকে বিভিন্ন অজুহাতে সঙ্গ দেয়। কিন্তু রূমি সবসময় একটাই চিন্তা করে, কিভাবে সে A+ পেয়ে বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করবে। তাই সে নিয়মিত পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। অন্যদিকে সনি শুধু খাই খাই করে, পয়াশুনা করতে বললেই বলে আগে তো খেতে দাও, তা নাহলে পড়াশুনায় মনোযোগ দিব কিভাবে?
ক. প্রেষিত আচরণ কী?
খ. অভাববোধকে প্রেষণা চক্রের প্রথম ধাপ বলা হয় কেন?
গ. সাবিহার মধ্যে কোন ধরনের সামাজিক প্রেষণা বিদ্যমান ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘‘রূমি ও সনির প্রেষণার ধরন একই’’- উক্তিটির সত্যতা বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রেষণা নির্দেশক বা প্রেষণা প্রকাশক আচরণকে প্রেষিত আচরণ বলে।

খ. প্রতিটি প্রাণীর জীবনেই এবং সকল প্রেষণার ক্ষেত্রেই প্রথমে শরীরাভ্যন্তরে অভাববোধ দেখা দেয়। ফলে অভাববোধ থেকে উৎপন্ন অস্বস্তিকর অবস্থা প্রাণীকে অভাব মেটাবার জন্য তাড়িত বা প্রবৃত্ত করে। অতঃপর প্রাণী উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বিভিন্ন ধরনের আচরণ করে এবং পরিশেষে তার উদ্দেশ্য সফল হলে সে বিশ্রাম গ্রহণ করে। পরে আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি মানুষ-ও প্রাণীর জীবনে উপরোক্ত ঘটনাসমূহ চক্রাকারে আবর্তিত হতে থাকে। এ চক্রই প্রেষণা চক্র নামে পরিচিত। আর এ চক্রের সূত্রপাত অভাববোধ থেকে শুরু হয় তাই অভাববোধকে প্রেষণা চক্রের প্রথম ধাপ বলা হয়।

গ. সাবিহার মধ্যে যূথচারিতা ধরনের সামাজিক প্রেষণা বিদ্যমান। নিচে যূথচারিতা সামাজিক প্রেষণা ব্যাখ্যা করা হলো:
যে সকল প্রাণী সংগপ্রিয় তারা দলবদ্ধ হয়ে বাস করে। এরূপ দলবদ্ধ হয়ে থাকার ইচ্ছাকে যূথচারিতা বলে। যূথচারিতা একটি অর্জিত প্রেষণা এবং সমাজে বাস করার ফলে আমরা এটা অর্জন করি। অনেকে যূথচারিতাকে সহজাত প্রেষণা হিসেবে গণ্য করার পক্ষপাতী। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যূথচারিতা কোনো সহজাত প্রবৃত্তি নয়। কারণ এর কোনো জৈবিক ভিত্তি নেই এবং সকল শ্রেণির প্রাণীতে প্রেষণাটি বর্তমান নেই। ছোট শিশুকে তার বাবা-মা আদর করে, সে তার সাথে মিশে আনন্দ পায়। ধীরে ধীরে সে খেলার সাথী এবং বন্ধুদের সাথে থাকতে পছন্দ করে। পরবর্তীতে সে তার আশেপাশের লোকদের সঙ্গ কামনা করে। উদ্দীপকে সাবিহাও সারাক্ষণ বন্ধুবান্ধবী নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং বিভিন্ন অজুহাতে সে বাবা-মাকেও সঙ্গ দিয়ে থাকে। যা যূথচারিতা সামাজিক প্রেষণারই প্রকাশ। অর্থাৎ যূথচারিতা জন্মগত না হলেও একটি শক্তিশালী সামাজিক প্রেষণা।

ঘ. ‘‘রূমি ও সনির প্রেষণার ধরন একই’’ উক্তিটির সত্যতা নিমেণ বিশ্লেষণ করা হলো:
উদ্দীপকে রূমি নিয়মিত পড়াশুনা করে A+ পেয়ে বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করতে চায়, অপরদিকে সনি শুধু খাই খাই করে কারণ পড়াশুনায় মনোযোগী হতে হলে খাওয়া প্রয়োজন। দুজনেই লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহী। অর্থাৎ তাদের মধ্যে কৃতি প্রেষণা বিদ্যমান। যা সফলতা লাভের প্রাথমিক সোপান। প্রতিটি মানুষই চায় প্রতিষ্ঠা লাভ করতে। সফলতা অর্জন বা প্রতিষ্ঠা লাভের ইচ্ছাই হলো কৃতি প্রেষণা। এ কৃতি প্রেষণা এমন একটি অভ্যন্তরীণ শক্তি যা প্রাণীকে কর্মসম্পাদনে উচ্চমানের তাগিদ দেয়। যে ব্যক্তির মধ্যে কৃতি প্রেষণা অধিক বর্তমান সে খুব পরিশ্রমী হবে এবং সাফল্যের দ্বার তার জন্য উন্মুক্ত। যে সমাজের জনগণের মধ্যে এ প্রেষণার আধিক্য রয়েছে, সে সমাজ তত উন্নত।
অর্থাৎ উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ‘‘রূমি ও সনির প্রেষণার ধরন একই’’- উক্তিটি সত্য।

HSC মনোবিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৪ pdf download

৭. প্রফেসর ড. শহীদুল্লাহ একটি গবেষণায় ক্ষুধার সাথে রক্তের শর্করার সম্পর্ক দেখতে চেয়েছিলেন। এর জন্য তিনি বিড়ালের রক্তের উপর পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তিনি ক্ষুধার্ত বিড়ালের রক্ত স্বাভাবিক বিড়ালের শরীরে প্রবেশ করিয়ে দেখতে পান স্বাভাবিক বিড়ালটির পাকস্থলীতে ক্ষুধার সময়ের মতো সংকোচন হচ্ছে।
ক. জৈবিক প্রেষণা কী?
খ. ক্ষুধা বলতে কী বোঝ?
গ. ড. শহীদুল্লাহর পরীক্ষণটির গবেষণালব্ধ ব্যাখ্যা দাও।
ঘ. উদ্দীপকের গবেষণা ব্যতীত আরও কোনো গবেষণা আছে কি, যা ক্ষুধার জন্য অন্য কিছুকে দায়ী করে?বিশ্লেষণ কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শারীরিক বা জৈবিক চাহিদা বা প্রয়োজনবোধ থেকে সৃষ্ট এ প্রেষণাকেই জৈবিক প্রেষণা বলে।

খ. ক্ষুধা একটি জৈবিক প্রেষণা। জন্মের পর থেকেই মানুষ ক্ষুধার তাড়না অনুভব করে। আর এ ক্ষুধা একটা শক্তিশালী জৈবিক তাড়না। ক্ষুধার্ত অবস্থায় দীর্ঘ সময় ধরে কোনো খাবার না খেয়ে প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে না। তাই ক্ষুধার্ত হলেই তাকে খাবার গ্রহণ করতে হয়। কোষ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় ক্যালরি ও অন্যান্য পুষ্টি সরবরাহের জন্য ক্ষধা প্রাণীকে তাগিদ দেয়। যার ফলে প্রাণী করণ আচরণের মাধ্যমে খাদ্য গ্রহণ করে থাকে।

গ. প্রফেসর ড. শহীদুল্লা কর্তৃক গবেষণার ফলাফলের সাথে Luckhardt এবং Carlson (১৯১৫) পরীক্ষণটির মিল রয়েছে। Luckhardt এবং Carlson (১৯১৫) পরীক্ষা করে দেখেন যে, ক্ষুধার সাথে রক্তের শর্কররার একটা সম্পর্ক রয়েছে। তারা ক্ষুধার্ত কুকুরের রক্ত একটি স্বাভাবিক কুকুরে প্রবেশ করান। তাতে উক্ত কুকুরের পাকস্থলীতে ক্ষুধার সময়ের মতো সংকোচন দেখা যায়। আবার পেটপুরে খাওয়া প্রাণীর রক্ত প্রবেশ করালে দেখা যায় যে, সংকোচন থেমে গেছে।
অর্থাৎ ড. শহীদুল্লাহর পরীক্ষণটি একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার গবেষণা, আর একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলও বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে করা হয়েছে।

ঘ. ক্ষুধার শারীরবৃত্তীয় ভিত্তি নিয়ে অনেক গবেষক গবেষণা করেছেন। Luckhardt এবং Carlson (১৯১৫) এর গবেষণায় ক্ষুধার সাথে শর্করার সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। এছাড়া আরো কয়েকটি গবেষণা উল্লেখ করা হলো:
Mayer, Miller (১৯৫৬, ১৯৫০) গবেষণায় দেখতে পান, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের একটি বিশেষ অঞ্চল ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। হাইপোথ্যালামাসের কোনো একটি বিশেষ অঞ্চলকে উত্তেজিত করলে প্রাণী খাবার খেতে সচেষ্ট হয়, আবার কোনো অঞ্চল প্রাণীকে খাবার থেকে বিরত রাখে।
Thompson (১৯৮০) বলেন, খাবার খাওয়া নিয়ন্ত্রিত হয় স্নায়বিক এবড় হরমোনগত লুপ-এর দ্বারা যা হাইপোথ্যালামাসের ভিতর দিয়ে চলে গিয়েছে।
Keesey এবং Powley (১৯৭৫) বলেন, হাইপোথ্যালামাসের চটি নির্দিষ্ট এলাকা ক্ষুধার সাথে সম্পর্কযুক্ত। এ দুটি এলাকা হলো Lateral Hypothalamus এবং Ventromedial Hypothalamus।
উপরোক্ত গবেষণাগুলো পর্যালোচনায় বলা যায়, ক্ষুধার শারীরবৃত্তীয় ঐ ভিত্তি আছে এবং এটি একটি জৈবিক প্রেষণা।

৮. শিশু সৌম ক্ষুধায় কাঁদছে। ক্ষুধা মেটানোর পূর্ব পর্যন্ত সে কান্নার মাধ্যমেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ করেছে। কিছুদিন পর তার পছন্দের খেলনা খুঁজে না পাওয়ায় আবার কান্নাকাটি শুরু করল।
ক. প্রেষণা চক্রের সর্বশেষ পর্যায় কোনটি?
খ. আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিভাবে?
গ. উদ্দীপকের শিশুর আবেগীয় প্রকাশ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সৌম এর জায়গায় তুমি থাকলে তোমার আবেগীয় প্রকাশ কী ধরনের হতো ব্যাখ্যা কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রেষণা চক্রের সর্বশেষ পর্যায় উদ্দেশ্য সাধন।

খ. সমাজ সমর্থিত আবেগীয় আচরণ অর্জনের জন্য আবেগের নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। আবেগ নিয়ন্ত্রণ বলতে মূলত এর সংযম বা পরিমিতিবোধকে বুঝায়। যার মাধ্যমে ব্যক্তির আচরণে শিষ্টাচার, সামাজিকতা, শ্রদ্ধাবোধ, সৌজন্যবোধ ইত্যাদি প্রকাশ পায়। আবেগ নিয়ন্ত্রণের কিছু কৌশল হলো:
১. পারিবারিক প্রশিক্ষণ;
২. আপনজনের সাথে মতবিনিময়;
৩. আত্মসংযমের অনুশীলন;
৪. আনন্দময় আড্ডা;
৫. মূল্যবোধের চর্চা ইত্যাদি।

গ. সৌম-এর আবেগীয় প্রকাশগুলো ক্ষুধা ও খেলনার জন্য হয়েছে এবং উভয়ক্ষেত্রেই সে কান্নার মাধ্যমে আবেগীয় বহিঃপ্রকাশ করেছে। এ ধরনের আবেগীয় প্রকাশ সৌম তার প্রেষণা নিবৃত্তির জন্যই করেছে। অর্থাৎ শিশু প্রেষণা নিবত্তির জন্য আবেগ প্রকাশ করে খুব দ্রুত ও তীব্রভাবে। স্বাভাবিকভাবে তা কান্নার মাধ্যমেই হয়। এছাড়া হাত-পা ছোঁড়া, মাটিতে গড়াগড়ি করা ইত্যাদিও থাকে। উদ্দীপকের শিশু সৌম-এর প্রেষণা নিবারণ করতে কান্নাকে উত্তম আবেগীয় মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছে।
জন্মের পর শিশু শারীরিক অস্বাচ্ছন্দ্যে বা অভাববোধে কাঁদে। এ কান্না শারীরিক তাগিদ (ক্ষুধা) এবং অস্বাচ্ছন্দ্যের (খেলনার অভাববোধ) প্রতি জন্মগত প্রতিক্রিয়া। কিন্তু আমরা যদি বাহ্যিক অবস্থার প্রতি শিশুর প্রতিক্রিয়ার কথা বিবেচনা করি তাহলে তাদের মধ্যে একটি মাত্র আবেগ লক্ষ্য করি, সেটি হলো উত্তেজনা। হাত-পা নাড়ানো, শরীরের সাধারণ চাঞ্চল্য, কান্না ইত্যাদি উত্তেজনার বহিঃপ্রকাশ।
অন্যদিকে শিশুর প্রেষণাগত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে ছোট শিশুর ক্ষুধা জৈবিক প্রেষণাটি নিবৃত্তির জন্য কান্না ব্যতীত অন্য কিছু আচরণ করার সামর্থ্য নেই। তাই তার প্রেষণা নিবৃত্তির জন্য কান্নার মাধ্যমেই আবেগীয় প্রকাশ করেছে।

ঘ. স্বাভাবিকভাবেই শৈশবকালের আবেগের সাথে বয়ঃসন্ধিকাল। পরবর্তী আবেগের প্রকাশভঙ্গি ভিন্ন হবে। প্রাক-শৈশবকালের আবেগের সাথে শৈশবের প্রথম পর্যায়ের আবেগের পার্থক্য আছে, তেমনি বয়ঃসন্ধিকাল পরবর্তী আবেগীয় প্রকাশভঙ্গি একজন ব্যক্তির মধ্যে ভিন্ন হবে। এক্ষেত্রে আমার ক্ষুধা নিবারণের জন্য সৌমের মতো আচরণ করব না। আমি খাবার খুঁজে নিব বা মাকে খাবার দিতে বলব। যদি এভাবেও আমি আমার প্রয়োজন মেটাতে না পারি তবে আমি ক্রোধ বা রাগের মাধ্যমে আমার আবেগের প্রকাশ করব। মৌখিক ও শারীরিক আচরণ দ্বারা এ রাগের প্রকাশ ঘটতে পারে। এছাড়াও আমি বিরক্তি প্রকাশের মাধ্যমেও আমার আবেগীয় প্রকাশ ঘটাতাম।

৯. রোহান সাহেব একজন অফিস কর্মকর্তা। একদিন ছোট একটি ঘটনায় তার অধীনস্থ কর্মকর্তাকে গালাগাল করে। পরবর্তীতে তিনি তার ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হন।
ক. নিদ্রা কোন ধরনের প্রেষণা?
খ. আবেগ ও অনুভূতির মধ্যে একটি পার্থক্য ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনায় রোহান সাহেবের আবেগ প্রকাশের ধরনগুলো ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের ঘটনা এড়াতে তোমার পরামর্শ প্রদান কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. নিদ্রা এক ধরনের জৈবিক প্রেষণা।

খ. আবেগ হলো এক ধরনের শারীরিক পরিবর্তন এবং আত্মনিষ্ঠ অভিজ্ঞতার সামগ্রিক রূপ। পক্ষান্তরে, অনুভূতি শুধু আবেগের আত্মনিষ্ঠ দিক বা অভিজ্ঞতাকে নির্দেশ করে।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনায় রোহান সাহেবের আবেগ প্রকাশের ক্ষেত্রে যে ধরনগুলোর প্রকাশ ঘটেছে, তা হলো- ক্রোধ, বিরক্তি এবং লজ্জা। রোহান সাহেব ক্রোধের মাধ্যমে প্রথমে তার বিরক্তির প্রকাশ ঘটান। এক্ষেত্রে তার শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যায়, রক্তের চাপ বৃদ্ধি ও পায়। পরিশেষে তিনি মৌখিক ও শারীরিক আচরণের মাধ্যমে তার এ ধরার প্রকাশ ঘটান। পরবর্তীতে তিনি তার এ ক্রোধের জন্য লজ্জিত হন। এক্ষেত্রেও তার অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে এক ধরনের হরমোন নিঃসরণ হয়ে লজ্জিত হওয়ার ঘটনা ঘটে। আর সম্পূর্ণ ঘটনটিতে রোহান সাহেব বিরক্তি বোধ করে তার বিরক্তি আবেগের প্রকাশ ঘটান।

ঘ. উদ্দীপকের ঘটনায় প্রধানত আবেগ নিয়ন্ত্রণ কৌশলের অভাবের কারণেই রোহান সাহেব প্রথমে ক্রোধের প্রকাশ ঘটান এবং পরবর্তীতে লজ্জিত হন। এ ধরনের আবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিচের কৌশলগুলো অবলম্বন করা যেতে পারে-
১. পরিবারে বাবা-মা, ভাইবোনদের সাথে পারস্পরিক ক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তির মধ্যে আবেগ নিয়ন্ত্রণের ভিত্তি রচিত হয়। মায়ের স্নেহ, পিতার ভালোবাসা এবং ভাই-বোনদের আদর এবং নির্দেশনা ভালো আচরণ করতে আগ্রহী করে এবং উগ্র আচরণ থেকে বিরত রাখে। পরিবার থেকে ব্যক্তি ভদ্রতা, নম্রতা, নৈতিকতা, শ্রদ্ধাবোধ শিখে থাকে। এসব গুণাবলি তাকে আবেগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
২. আপনজনের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায। অনেক সময় কিছু সমস্যা থাকে সেগুলো কাছের আত্মীয় যেমন- মামা-মামী, চাচা-চাচী বা বন্ধুদের সাথে পরামর্শ করে সমাধানের পথ পাওয়া যায়। এভাবে অনেক অদমনীয়। আবেগ বা অবরুদ্ধ আবেগ থেকে মুক্ত হওয়া যায়।
৩. প্রেষণা হচ্ছে ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ চাপ বা তাগিদ। ব্যক্তি যদি নিজ থেকে তাগিদ অনুভব করে আমি অন্যের ক্ষতি করবো না, নিজের ক্ষতি করবো না তবে সে তার নেতিবাচক আবেগসমূহ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। 
৪. আবেগ পরিবেশ থেকে ব্যক্তি নিজকে সরিয়ে নিলে সহজেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
৫. আত্মসংযমী হলে সহজেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সংযমী ব্যক্তিরা চিন্তা করে কখন রাগ করা যাবে, কখন করা যাবে না। সুতরাং আত্মসংযমী ব্যক্তিগণ সহজেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
৬. অবসর সময়ে বন্ধুদের সাথে আনন্দময় আড্ডায় অংশ নিলে এবং ব্যক্তি, পরিবার ও দেশ সম্পর্কে ইতিবাচক আলোচনায় অংশ নিলে আবেগ কমানো যায়।
৭. বিভিন্ন মূল্যবোধের মাধ্যমেও আবেগের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। অবাঞ্ছিত আবেগ নিয়ন্ত্রণে ধর্মীয় মূল্যবোধ ব্যক্তিকে সহায়তা করে। ব্যক্তিকে ন্যায় ও সত্যের পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করে। 
৮. নিজেকে ব্যর্থ মনে করা, অকর্মণ্য ভাবা, অযোগ্য ভাবা-এসব থেকে ব্যক্তিকে দূরে থাকতে হবে। তবে আবেগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।

১০. নীতা ফর্সা ধবধবে ফর্সা। তার বাবা তার বিয়ের কথা বলাতে লজ্জায় তার মুখমন্ডল লাল হয়ে গেল। মেয়ের প্রতি ভালোবাসার টানেই তিনি একথা বলতে পেরেছেন। তার কথা প্রেম, প্রীতি ও ভালোবাসা মানুষকে মহান করে তোলেন। নীতার বিয়ের কথা শুনে তার বড় ভাইয়ের চক্ষু রক্তবর্ণ ধারণ করল।
ক. আবেগের সংজ্ঞা দাও।
খ. আবেগ ও অনুভূতির পার্থক্য লিখ।
গ. নীতার বাবার আবেগ কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. নীতা ও নীতার বড় ভাইয়ের আবেগকালীন প্রকাশ তোমার নিজের ভাষায় বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উদ্দীপকের সাহায্যে প্রাণীর মধ্যে যে আলোড়নের সৃষ্টি হয়- যা তার অভিজ্ঞতা, আচরণ ও শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে প্রকাশ পায় তাকে আবেগ বলে।

খ. আবেগ ও অনুভূতির পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো-
#আবেগ
১. আবেগ হচ্ছে কতকগুলো শারীরিক পরিবর্তন এবং আত্মনিষ্ঠ অভিজ্ঞতার সামগ্রিক রূপ।
২. আবেগকালীন সময়ে যে শারীরিক পরিবর্তন ঘটে তার বস্তুনিষ্ঠ পরিমাপ করা সম্ভব।

#অনুভূতি
১. অনুভূতি শুধু আবেগের আত্মনিষ্ঠ দিক বা অভিজ্ঞতাকে নির্দেশ করে।
২. অনুভূতির বস্তুনিষ্ঠ পরিমাপ করা প্রায় অসম্ভব। কারণ অনুভূতি সম্পূর্ণরূপে একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা।

গ. উদ্দীপকে নীতার বাবার আবেগ নীতার প্রতি ভালোবাসার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসা মানুষকে মহান করে তোলে, এর সাহায্যে মানুষ পৃথিবীকে জয় করতে পারে। ভালোবাসা দিয়ে মানুষ পৃথিবীকে স্বর্গে রূপান্তরিত করতে পারে। হযরত মুহাম্মদ (স), গৌতম বুদ্ধ, যীশু, শ্রীচৈতন্য, মাদার তেরেসা প্রমুখ মনীষী প্রেম-ভালোবাসা দিয়ে মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন। ছোট্ট শিমুকে কেউ যদি আদর করে, তার সাথে খেলা করে তাহলে এ ভালোবাসা তাকে অন্যদের ভালোবাসতে শেখায়। শিশুর বাবা-মা বা আপনজনকে জড়িয়ে ধরে বা চুমো দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করে।
উদ্দীপকে নিতার বাবা নিতাকে ভালোবাসেন বলেই নিতার বিয়ের কথা চিন্তা করেছেন এবং তাকে বিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। যার মাধ্যমে নিতার প্রতি নিতার বাবার ভালোবাসার আবেগ প্রকাশ পেয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে নীতার বাবা নিতাকে বিয়ে দেওয়ার কথা বলাতে লজ্জায় তার মুখমন্ডল লাল হয়ে যায়। যা লজ্জা আবেগের বহিঃপ্রকাশ। অপর দিকে নীতার ভাই বোনের বিয়ের কথা শুনে চক্ষু রক্তবর্ণ ধারণ করে। যা ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ নিচে নিতা ও নিতার বড় ভাইয়ের আবেগকালীন প্রকাশ নিজের ভাষায় বিশ্লেষণ করা হলো-
লজ্জার ফলে ব্যক্তি বড়দের সামনে যায় না বড়দের এড়িয়ে চলে এবং নিজেদের গুটিয়ে রাখে। লজ্জা বা লাজুকতা বয়োঃসন্ধিকালের ছেলে-মেয়েদের ভিতর বিশেষভাবে দেখা যায়। বয়োঃসন্ধিকালের যে আবেগীয় পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় তার মূল কারণ হলো অন্তঃক্ষরা। গ্রন্থি নিঃসৃত হরমোনের প্রভাব। অর্থাৎ এ সময় কিশোরদের ক্রমশ পুরুষ সুলভ এবং কিশোরীদের ক্রমশ মেয়ে সুলভ যৌন বৈশিষ্ট্য বিকশিত হয়। যার ফলে এ বয়সে তাদের লাজুকতার পরিমাণ বেশি হয়। আবার, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যক্তি ক্রুদ্ধ হলে তার চক্ষু রক্তবর্ণ ধারণ করে। যেমনটি উদ্দীপকে নীতার ভাই নীতার বিয়ের কথা শুনে ক্রুদ্ধ হয়ে যায়, ফলে তার চক্ষু রক্তবর্ণ ধারণ করে।
উপরোক্ত আলোচনা হতে বলা যায়, ব্যক্তি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্নভাবে তাদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ করে থাকে।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here