HSC মনোবিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ১ pdf download - Exam Cares

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

HSC মনোবিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ১ pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Psychology 1st Paper Srijonshil question and answer. HSC Psychology 1st Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Monobiggan 1st paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
মনোবিজ্ঞান
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-১

HSC Psychology
1st Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. ছবি একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং শিক্ষা পরিবেশের উপর জোর দেন। অন্যদিকে মিতার কোম্পানিতে কর্মসন্তুষ্টি এবং কাজের সঠিক মূল্যায়ন হওয়ায় উৎপাদন বেড়েছে। তাদের বন্ধু বিজয় ও মানসিক সমস্যাগ্রস্তদের সমস্যা সমাধানের জন্য নিয়মিত কাজ করেন।
ক মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও।
খ. মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান কিভাবে মানুষের সমাজে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে?
গ. ছবির কাজটি মনোবিজ্ঞানের কোন শাখায় আলোচনা করা হয় - ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মিতা এবং বিজয়ের কাজের মধ্যে কোনটি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ?বিশ্লেষণ করো।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মনোবিজ্ঞান হলো এমন একটি বিজ্ঞান যা মানুষ ও প্রাণীর আচরণ এবং মানসিক প্রক্রিয়া সম্বন্ধে অনুধ্যান করে।

খ. প্রত্যাহিক জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিজীবনে কিভাবে স্মৃতিকে বাড়ানো যায়, অপরের সাথে সৌহার্দ্য বজায় রাখা যায়, জীবনে প্রতিষ্ঠা জন্য লাভ করা যায় ইত্যাদি সমস্যাগুলো সমাধানের মনোবিজ্ঞানে জ্ঞান সহায়তা করে। সমাজে যৌথভাবে বসবাস করতে হলে কিভাবে সবার সাথে মিলতে হবে। কী আচরণ করতে হবে, কিভাবে সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করা যায়, কিভাবে দলগতঐক্য ও সংহতি বৃদ্ধি করা যায় প্রভৃতি ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানে জ্ঞান প্রয়োজন। মনোবিজ্ঞান পাঠ করে আমরা প্রাণীর আচরণের জৈবিক ভিত্তি সম্পর্কে জানতে পারি। বিশেষ করে নিজের সম্পর্কে জানতে হলে মনোবিজ্ঞানের ব্যবহারিক জ্ঞান এর বিকল্প নেই। এভাবে মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান মানুষকে সমাজে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে।

গ. উদ্দীপকে ছবির কাজটি মনোবিজ্ঞানের শিক্ষা মনোবিজ্ঞান শাখার আলোচনা করা হয়। নিচের শিক্ষা মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে ব্যাখ্যা করা হলো-
শিক্ষা মনোবিজ্ঞান মনোবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। মানুষের শিক্ষা সংক্রান্ত আচরণের বিজ্ঞানই হলো শিক্ষা মনোবিজ্ঞান। মনোবিজ্ঞানের এই শাখায় মানুষের শিক্ষা সম্পর্কিত আচরণের বিভিন্ন সমস্যার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করা হয় এবং এগুলো সমাধান মনোবিজ্ঞানের মূল নীতিসমূহ কিভাবে প্রয়োগ করা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত মানুষের সব ধরনের আচরণই শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের অনুধানের অন্তর্ভুক্ত। শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষণ হলো শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের মূল বিষয়। তাই শিক্ষণের গতি-প্রকৃতি, কলা-কৌশল, শর্তগুলি, উপকরণ, শিক্ষণে পুরস্কার ও শাস্তি প্রভাব, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর বৈশিষ্ট্যগুলি শিক্ষার পদ্ধতি, শিক্ষার পরিবেশ প্রভৃতি শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের আলোচ্য সূচির অন্তর্গত।

ঘ. উদ্দীপকের মিতা এবং বিজয়ের কাজ যথাক্রমে শিক্ষা মনোবিজ্ঞান ও চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট। এ দুটি কাজের মধ্যে বিজয়ের কাজকে আমি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। নিচে কারণসহ বিশ্লেষণ করা হলো-
মনোবিজ্ঞান এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। ব্যক্তির অস্বাভাবিক আচরণ ও মানসিক বিকৃতির কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়েই চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান গঠিত। অস্বাভাবিক আচরণ বলতে আমরা এমন সব প্রতিক্রিয়া বোঝাতে চাই যা মানুষের হতাশাব্যঞ্জক, আশঙ্কাগ্রস্ত, নৈরাজ্যপূর্ণ, অসুখী প্রক্রিয়াকে নির্দেশ করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে শারীরিক এবং মানসিক রোগের উদ্ভব ও কারণ নির্ণয় এবং তার ব্যাখ্যার পাশাপাশি মূল্যায়ন ও চিকিৎসা ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
মনোবিজ্ঞান হলো সেই বিজ্ঞান যা আচরণ ও অন্তরালে নিহিত শারীরবৃত্তীয় ও জ্ঞানগত প্রক্রিয়াসমূহ অনুধ্যান করে এবং এটি হলো সেই পেশা বাস্তব সমস্যায় এ বিজ্ঞানের সঞ্চিত জ্ঞানকে প্রয়োগ করে। মনোবিজ্ঞানীর জ্ঞান ও নীতি সম্পর্কে আলোচনার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা বিজ্ঞান ও মানসিক রোগ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করতে পারে। ব্যক্তির মানসিক রোগ ও মূল্যায়ন ও প্রতিকারের মনোবিজ্ঞানীর জ্ঞান চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী ও ব্যবহার করতে পারেন।

২. নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ কর-
মনোবিজ্ঞান বিষয়বস্তু
A - মানসিক প্রক্রিয়া - মানুষ ও প্রাণী - B
ক. Psyche শব্দের অর্থ কী?
খ. শিক্ষা মনোবিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গ. উদ্দীপকে প্রদত 'A' চিহ্নিত অংশটি বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকে প্রদত্ত 'B' চিহ্নিত অংশটির আলোকে মনোবিজ্ঞানের স্থান মূল্যায়ন কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. Psyche শব্দের অর্থ আত্মা।

খ. শিক্ষা মনোবিজ্ঞান মনোবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। মানুষের শিক্ষা সংক্রান্ত আচরণের বিজ্ঞানই হলো শিক্ষা মনোবিজ্ঞান।
মনোবিজ্ঞানের এ শাখায় মানুষের শিক্ষা সম্পর্কিত আচরণের বিভিন্ন সমস্যার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করা হয় এবং এগুলোর সমাধানে মনোবিজ্ঞানের মূল নীতিসমূহ কিভাবে প্রয়োগ করা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত মানুষের সব ধরনের আচরণেই শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের অনুধ্যানের অন্তর্ভুক্ত। এ কারণেই শিক্ষা মনোবিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ।

গ. উদ্দীপকে প্রদত্ত 'A' চিহ্নিত অংশটি হলো আচরণ। যা মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিচে বর্ণনা করা হলো-
উদ্দীপকের প্রতি প্রতিক্রিয়া করা জীবের অন্যতম মৌলিক বৈশিষ্ট্য। প্রতিক্রিয়ায় সামগ্রিয় রূপই হলো অচরণ। কোনো বস্তু বা বিষয়ের সঙ্গে ইন্দ্রিয়ের সংযোগ ঘটলে সণায়ুতন্ত্র উদ্দীপিত হয়, ফলে দেহে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়- এই প্রতিক্রিয়াই হলো আচরণ। এক কথায়, প্রাণী যা কিছু করে তাই হলো আচরণ। আচরণ বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করা যায় এবং গবেষণাগারে তা পরিমাপ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, কোনো ব্যক্তি পত্রিকায় চল্লিশ লক্ষ টাকার লটারীর ফলাফলে দেখতে পেল যে, সে-ই প্রথম পুরষ্কারটি পেয়েছে। সে চল্লিশ লক্ষ টাকার প্রথম পুরষ্কারটি পেয়েছে। সে খুব আনন্দিত হয়েছে এবং তার আচরণে সেটা প্রকাশ পেয়েছে। লক্ষ টাকা প্রাপ্তির সংবাদে তার শরীরাভ্যন্তরে শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটেছে
(যেমন রক্তচাপ বেড়ে গেছে ও স্বয়ংক্রিয়ার সণায়ুতন্ত্র অধিক সক্রিয় হয়েছে); আবার বাহির থেকে তার মুখের অবয়ব, কথাবার্তা, চাল-চলনেও আনন্দের প্রকাশ পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রতিক্রিয়ার এই সামগ্রিক রূপকেই আচরণ বলা হয়। কেন ও কি প্রক্রিয়ার আচরণ ঘটে তা বিজ্ঞানসম্মতভাবে বিশ্লেষণ করাই মনোবিজ্ঞানের বিষয়।

ঘ. উদ্দীপকে প্রদত্ত 'B' চিহ্নিত অংশটি হলো বিজ্ঞান। নিচে বিজ্ঞানের আলোকে মনোবিজ্ঞানের স্থান মূল্যায়ন করা হলো-
বিজ্ঞান হলো সেই বিশেষ জ্ঞান যা সুনিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে লাভ করা যায়। বিজ্ঞানসম্মত গবেষণার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি রয়েছে। মনোবিজ্ঞান বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির সাহায্যে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে। আচরণের অনুধ্যান যেন বিজ্ঞানসম্মত হয় তা নিশ্চিত রাখতে মনোবিজ্ঞান বিজ্ঞানের এর নীতিমালা মেনে আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়া অনুধ্যান করে। আচরণের আলোচনা পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মনোবিজ্ঞানে বিজ্ঞানের শর্তসমূহ পালন করা হয় এ জন্য মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞা মনোবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলা হয়।

৩. দৃশ্যকল্প-১: শিক্ষকের কঠোরতার কারণে সীমার আচরণে এক ধরনের অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। সে এখন বই-খাতা দেখলে ভয় পায়।বিষয়টি নিয়ে তার বাবা মা ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়েন। বাবা-মা তাকে নিয়ে একজন মনোবিজ্ঞানীর শরণাপন্ন হন। এতে সীমা ক্রমেই সুস্থ হয়ে উঠে।
দৃশ্যকল্প-২: বাবা ছেলেকে বলেন, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে। পূর্বের এই ভুল ধারণাটি বিজ্ঞানী গ্যালিলিও সর্বপ্রথম প্রমাণ উপস্থাপন করে বলেন, পৃথিবীই সূর্যের চারদিকে ঘোরে। ধারণাটি পরবর্তীতে সকলেই গ্রহণ করে স্বাভাবিক জীবনযাপনের পথকে সাবলিল করেছে।
ক. বিজ্ঞান কী?
খ. প্রাণীর আচরণ মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর অন্তর্গত কেন?
গ. সীমার বিষয়টি মনোবিজ্ঞানের কোন শাখার আলোচিত হয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বাবার বক্তব্য বিজ্ঞানের কোন কোন শাখার বৈশিষ্ট্যে সাথে সম্পৃক্ত?বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সুবিন্যস্ত ও সুপরিকল্পিত অবস্থায় কোন বস্তু বা ঘটনাকে নিরপেক্ষভাবে বিশ্লেষণ করে আমরা যে জ্ঞান লাভ করি তাই বিজ্ঞান।

খ. প্রাণীর আচরণ মনোবিজ্ঞানের বিষয় বস্তুর অন্তর্গত কারণ- মানুষের আচরণের মধ্যেই মনোবিজ্ঞানের অনুধ্যান এবং গবেষণা সীমাবদ্ধ নয়। প্রাণীদের আচরণ ও মনোবিজ্ঞানের গবেষণার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু। মনোবিজ্ঞানে অনেক তথ্যই প্রাণীদের ওপর গবেষণা করে পাওয়া গেছে। তাই প্রাণীদের আচরণ ও মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুতে স্থান পেয়েছে।

গ. উদ্দীপকে দৃশ্যকল্প-১ এ সীমার বিষয়টি মনোবিজ্ঞানের অস্বভাবী মনোবিজ্ঞান শাখায় আলোচনা করা হয়। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
অস্বাভাবী- এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Abnormal। Ab (অর্থ হলো away) এবং Normal (অর্থ হল স্বাভাবিক) এই দুটি শব্দ থেকে Abnormal শব্দের সৃষ্টি হয়েছে। আভিধানিক অর্থে Abnormal শব্দটির অর্থ হলো বহির্ভূত বা অস্বাভাবী। তাই স্বভাব বহির্ভূত বা অস্বাভাবী আচরণই অস্বভাবী মনোবিজ্ঞানের মূল বিষয়। 
অস্বাভাবী মনোবিজ্ঞান মানুষের অস্বাভাবী আচরণ পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বর্ণনা করা হয় এবং কোন বিশেষ নীতির উপর ভিত্তি করে এ সকল আচারণকে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। কি কারনে অস্বাভাবী আচরনের উদ্ভব ঘটে এবং অস্বভাবী আচারণের শারীরবৃত্তীয়, মনস্তান্তিক ও সামাজিক কারণের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ অস্বভাবী মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এবং উপযুক্ত অভীক্ষার সাহায্যে ও অস্বাভাবিক আচরণ আচারণ শনাক্ত করে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ও স্বাভাবী মনোবিজ্ঞানের আওতাভুক্ত কার্য। অস্বাভাবী মনোবিজ্ঞানের মূল কাজ হলো অস্বাভাবী আচরনের স্বরূপ বিশ্লেষণ করা, বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে তথ্য সংগ্রহ করে তার কারণ নির্ণয় করা এবং সর্বশেষে অস্বাভাবী আচরণের প্রতিকার ও প্রতিরোধ করা।

ঘ. উদ্দীপকে দৃশ্যকল্প-২ এ বিজ্ঞানী গ্যালিলিও এর ধারণা ‘পৃথিবীই সূর্যের চারিদিকে ঘোরে’। এই ধারণাটি সকলেই গ্রহণ করে স্বাভাবিক জীবনযাপনের পথকে সাবলিল করেছে- বাবার এই বক্তব্যটি বিজ্ঞানের যেসব বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পৃক্ত নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো-
১. বিষয়বস্তু: কোনো বিষয়কে বিজ্ঞান হিসাবে বিবেচনা করতে হলে তার একটি বাস্তবম্মত ও ভিত্তিগত বিষয়বস্তু থাকা বা--, যা মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে বর্তমান। যেমন মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়া।
২. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি: কোনো বিষয়কে বিজ্ঞান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে তার বিষয়বস্তুর ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ ও পরিমাপের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অর্থাৎ বৈজ্ঞানিক নিয়ম নীতি মেনে চলতে হয়, যা মনোবিজ্ঞানের গবেষণার বর্তমান। যেখানে মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু গবেষণায় পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি, পরীক্ষণ পদ্ধতি, পরিসংখান পদ্ধতি ইত্যাদি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ছাড়াও কিছু বিশেষ বৈজ্ঞানিক শর্ত ও বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। যেমন - কার্যকরী সংজ্ঞা প্রদান, বস্তুনিষ্ঠতা ইত্যাদি।
৩. বৈজ্ঞানিক ও জনকল্যাণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি: বিজ্ঞানের একটি বিশেষ দিক হল বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি অর্থাৎ অনুসিন্ধৎসা, প্রগতিশীলতা ইত্যাদি মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ক্ষেত্রে বর্তমান, বিজ্ঞান হিসেবে তার অবস্থানকে প্রতিষ্ঠিত করে।
৪. প্রগতিশীলতা: বিজ্ঞানের আর একটি মাপকাঠি হলো এর প্রয়োগ বা ব্যবহার। মনোবিজ্ঞানের গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য বা সূত্র জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকারীভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। মনোবিজ্ঞানের আজ বহুমুখী ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। শিল্প-কারখানার, শিক্ষা, চিকিৎসা, সমাজজীবন, ব্যক্তিগত জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন প্রভৃতি প্রায় সর্বক্ষেত্রেই মনোবিজ্ঞানের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
অর্থাৎ উপরোক্ত আলোচনা হতে বলা যায় যে, বাবার বক্তব্যটি বিজ্ঞানের সব বৈশিষ্ট্যকেই অনুসরণ করে।

৪. বিওশালী চৌধুরী সাহেব শহরে থাকেন তাঁরা গ্রামের লোকের শিক্ষার লক্ষ্যে ১০ বছর পূর্বে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং যথাযথ শিক্ষা পরিবেশের অভাবে সেটি আজ বন্ধ হওয়ার পথে। চৌধুরী সাহেবের বন্ধু গাজী সাহেব অসহায় বৃদ্ধা মানুষের কল্যাণের জন্য ঢাকার অদূরে একটি মানসম্পন্ন বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন করেন। টিভিতে একটি অনুষ্ঠানে দেখা গেল এক বৃদ্ধ হাত নাড়িয়ে গাজী সাহেবের প্রশংসা করে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন।
ক. মনোবিজ্ঞানের আধুনিক সংজ্ঞা দাও।
খ. শিশু মনোবিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গ. চৌধুরী সাহেবের কাজটি মনোবিজ্ঞানের কোন শাখায় আলোচনা করা হয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. গাজী সাহেবের মানব কল্যাণধর্ম কাজ কিভাবে মনোবিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত বিশ্লেষণ করো।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মনোবিজ্ঞানের আধুনিক সংজ্ঞা মতে, মনোবিজ্ঞান হলো প্রাণীর প্রধানত মানুষের আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ার বিজ্ঞানসম্মত পর্যালোচনা।

খ. শিশু মনোবিজ্ঞান মনোবিজ্ঞানের এক স্বতন্ত্র শাখা। শিশু মনোবিজ্ঞান শিশুর বিকাশ ও বৃদ্ধি সম্পর্কে আলোচনা করে। গর্ভাবস্থা, শৈশবকাল, বাল্যকাল, বয়সন্ধিকাল, শিশু মনোবিজ্ঞানের আওতাভুক্ত। বয়স বাড়ার সাথে শিশুর যে শারীরিক বৃদ্ধি ঘটে এবং শারীরিক বৃদ্ধির ফলে তার আচরণে যে পরিবর্তন ঘটে তা শিশু মনোবিজ্ঞানের মূল আলোচ্য বিষয়। শিশুর সামাজিক পরিবেশ বিশেষ করে তার পরিবার, খেলার সাথী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রভৃতি শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশে প্রভাব বিস্তার করে। তাই শিশুর শারীরিক, মানসিক ও আবেগিক, সামাজিক, নৈতিক বিকাশ প্রভৃতি সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞানঅর্জনের জন্য শিশু মনোবিজ্ঞান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

গ. উদ্দীপকে বিত্তশালী চৌধুরী সাহেবের কাজটি মনোবিজ্ঞানের শিক্ষা মনোবিজ্ঞান শাখায় আলোচনা করা হয়। নিম্নে ব্যাখ্যা করা হলো:
শিক্ষা মনোবিজ্ঞান মনোবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। মানুষের শিক্ষা সংক্রান্ত আচরণের বিজ্ঞানই হলো শিক্ষা মনোবিজ্ঞান।
মনোবিজ্ঞানের এ শাখায় মানুষের শিক্ষা সম্পর্কিত আচারনের বিভিন্ন সমস্যার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করা হয় এবং এগুলো সমাধানে মনোবিজ্ঞানের মূল নীতিসমূহ কিভাবে প্রয়োগ করা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত মানুষের সব ধরনের আচারণ শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের অনুধ্যানের অন্তর্ভুক্ত।
শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় শিক্ষা ব্যবস্থা। তাই শিক্ষার্থীকে লক্ষ্য করে গড়ে ওঠে শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষণ হলো শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের মূল বিষয়। তাই শিক্ষণের 
গতি-প্রকৃতির, কলা-কৌশল, শর্তাবলী, উপকরণ, পুরস্কার ও শাস্তির প্রভাব, শিক্ষণ ও শিক্ষার্থীর বৈশিষ্ট্যবলি, শিক্ষার পদ্ধতি, শিক্ষারপরিবেশ, প্রকৃতি শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের আলোচ্যসূচি অন্তর্গত।

ঘ. গাজী সাহেবের মানব কল্যাণধর্মী বা সমাজকল্যাণের অন্তর্ভুক্ত। গাজী সাহেবের মানব কল্যাণধর্মী কাজ যেভাবে মনোবিজ্ঞানের বিজ্ঞান এর সাথে সম্পর্কিত নিমেণ তা বিশ্লেষণ করা হলো-
১. মনোবিজ্ঞান ব্যক্তির আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়াভিত্তিক জ্ঞান, নীতি ও বিষয় সম্পর্কে একটি তান্ত্রিক আলোচনা করে। অপরদিকে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তার সীমিত সম্পদের মধ্যে দিয়ে তাদের নির্দিষ্ট এলাকা বা জনগোষ্ঠীর মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষমতা কিভাবে অর্জন করবে, সেই বিষয়ের ক্ষেত্রে সমাজকর্ম সমাজকল্যাণ, তান্ত্রিক জ্ঞান বা বিষয়াদির আলোকে একটি জনকল্যাণমুখী মনো-সামাজিক কর্ম পরিকল্পনা প্রস্তুত করে।
২. সমাজকর্ম বা সমাজকল্যাণ বিজ্ঞান তার কর্ম পরিকল্পনায় কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে আত্মাপ্রতিষ্ঠানমূলক ও আত্মবিশ্বাসমূলক শিক্ষা প্রধানের মনোবিজ্ঞানের তাত্ত্বিক জ্ঞানকে প্রধানত কাজে লাগানোর চেষ্টা চালায়।
৩. মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুভিত্তিক প্রেষণা, শিক্ষণ, প্রত্যক্ষণ, মনোভাব ইত্যাদি আচরণের সাধারণ সূত্র বা নীতিসমূহের আলোকে সমাজকর্ম সমাজকল্যাণ বিজ্ঞান তার ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগত জীবনে এক ধরনের সুষ্ঠু সামাজিক সম্পর্ক ও মিথস্ক্রিয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত ও প্রণয়ন করে।
৪. মনোবিজ্ঞানের সাধারণীকরণ ধারণাকে সফলতার সাথে কাজে লাগানোর উপর, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগত জীবনের সম্পর্ক ও মিথস্ক্রিয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত ও প্রণয়নে সমাজকর্ম বা সমাজকল্যাণ বিজ্ঞানের সফলতা অনেকাংশেই নির্ভর করে। সুতারাং মনোবিজ্ঞানের সাথে সমাজকর্ম ও সমাজকল্যাণ বিজ্ঞানের যে ওতপ্রোত সম্পর্ক আছে তা অতি সহজেই বুঝা যায়।
৫. মনোবিজ্ঞান ও সমাজকর্ম সমাজকল্যাণ বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিবিড় ও তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ সমাজে বসবাসকারী ব্যক্তি ও গুষ্ঠীর আচরণ সম্পর্কিত অনুধ্যানের জন্য সমাজকর্ম সমাজকল্যাণ বিজ্ঞানকে মনোবিজ্ঞানেই শরণাপন্ন হতে হয়।শুধু তাই নয় সমাজকর্ম সমাজকল্যাণ বিজ্ঞানের অনুধ্যানের আলোকে অনেক ক্ষেত্রেই মনোবিজ্ঞান তার তান্ত্রিক জ্ঞান ও নীতিসমূহের পরিমার্জন করে থাকে। অর্থাৎ এটা সহজেই অনুমেয় যে, একটি অনেকাংশেই অন্যটির পরিপূরক।

৫. নাফিস ও ইমন এ বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবে। ভবিষ্যতে তারা মনোবিজ্ঞানী হতে চায়। কলেজের একজন সিনিয়র ও পূর্ব পরিচিত শিক্ষক এদেরকে অন্যান্য বিষয়ের সাথে মনোবিজ্ঞান বিষয় ও নিতে বলেছেন। তিনি তাদের বলেছেন মনোবিজ্ঞান বিষয় পাঠ করলে তোমরা প্রাণী ও মানুষের আচরণ ও তার বিভিন্ন দিক এবং নানা সমস্যা ও তার সমাধান সম্পর্কে জানতে পারবে।
ক. মনোবিজ্ঞানের আধুনিক সংজ্ঞা দাও।
খ. ইংরেজি শব্দটি কোন কোন শব্দ থেকে সৃষ্টি হয়েছে?
গ. নাসিফ ও ইমন ভবিষ্যতে মনোবিজ্ঞানী হতে চায় কেন?উত্তরের সপেক্ষে আলোচনা কর।
ঘ. উদ্দীপকে নাসিফও শিক্ষাকের নির্দেশনা অনুযায়ী যা জানতে পারবে তোমরা বইয়ের আলোকে তা ব্যাখ্যা কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মনোবিজ্ঞানের আধুনিক সংজ্ঞা মতে, মনোবিজ্ঞান হলো প্রাণীর প্রধানত মানুষের আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়া বিজ্ঞানসম্মত পর্যালোচনা।

খ. মনোবিজ্ঞানের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে psychology দুটি গিক শব্দ psyche এবং Logos থেকে Psychology শব্দটির উৎপত্তি। Psyche শব্দের অর্থ মন বা আত্ম এবং Logos শব্দের অর্থ বিজ্ঞান বা প্রজ্ঞা। শব্দগত অর্থে মনোবিজ্ঞান হচ্ছে মনে বিজ্ঞান।

গ. উদ্দীপককে নাসিফ ও ইমন ভবিষ্যতে মনোবিজ্ঞানী হতে চায়। উত্তরের সপক্ষে নিচে আলোচনা করা হলো-
১. মনোবিজ্ঞান হলো আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ার বিজ্ঞানসম্মত অনুধ্যান। অর্থাৎ মনোবিজ্ঞান পাঠ করলে বা মনোবিজ্ঞানী হলে নাসিফ ও ইমন তাদের নিজেদের আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ার পাশাপাশি অন্য মানুষদেরও আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারবে।
২. একজন মনোবিজ্ঞানী মানুষের আচরণ পর্যালোচনা করে তার সম্পর্কে বলতে পারেন।
৩. মনোবিজ্ঞানী হলে মানুষের আচারণ জানার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানা যায়।যেমন বুদ্ধি,ব্যক্তিত্ব, স্মৃতি, প্রষনা, আবেগ ইত্যাদি।
৪. এছাড়াও মনোবিজ্ঞান পাঠ করলে কর্মক্ষেত্রে মানুষের আচরণ কেমন হওয়া উচিত, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ, শিক্ষাক্ষেত্রের পরিবেশ ইত্যাদি সম্পর্কে জানা যায়।
৫. একটি গবেষণায় দেখা যায় প্রায় ১২ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ এবং প্রায় ১৮ শতাংশ শিশু বিভিন্ন মানসিক রোগে আক্রান্ত। একজন চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী মানসিক সমস্যা বা রোগে যথাযথ চিকিৎসা করতে পারেন।
অর্থাৎ একজন মনোবিজ্ঞানী মানুষের আচরণ ও তার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জেনে নানা সমস্যার সমাধান দিতে পারে। একই সাথে প্রাণীর আচরণ সম্পর্কেও জানতে পারে। নাসিফ ও ইমন এ গুণগুলো অর্জনের জন্যই মনোবিজ্ঞানী হতে চায়।

ঘ. উদ্দীপকে নাসিফ ও ইমন শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী যা জানতে পারবে তা বইয়ের আলোকে নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
১. আচরণ: মানুষ যা কিছু করে সেসবই হলো তার আচরণ। মনোবিজ্ঞান পাঠ করলে মানুষের আচরণের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানা যায়। যেমন- শিক্ষণ, আবেগ, বুদ্ধি, ব্যক্তিত্ব, প্রেষণা, স্মৃতি-বিস্মৃতি প্রত্যক্ষণ ইত্যাদি।
২. পরীক্ষণ সম্পর্কিত জ্ঞান: মনোবিজ্ঞানের এ শাখায় পরীক্ষণ পদ্ধতির সাহায্যে মানুষ ও প্রাণীর আচরণ নির্ণয়ের জ্ঞান অর্জন করা যায়।
৩. বিকাশ সম্পর্কিত জ্ঞান: বিকাশ অর্থাৎ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপ সম্পর্কে জানতে পারি।
৪. শিশুদের সমস্যা: শিশু মনোবিজ্ঞান পাঠের মাধ্যমে আমরা শিশুদের বিভিন্ন সমস্যা যেমন - এডিএসডি, অটিজম ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারি।
৫. শিক্ষাক্ষেত্রের পরিবেশ: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ কেমন হওয়া উচিত তা আমরা মনোবিজ্ঞান পাঠিয়ে মাধ্যমে জানতে পারি।
৬. মানসিক স্বাস্থ্য: চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগ যেমন -বিষণ্ণতা, ওসিডি, স্কিজোফ্রেনিয়া সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকি।

৬. সাগর এ বছর একাদশ শ্রেণির ছাত্র। কলেজের মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক তাকে মনোবিজ্ঞান বিষয় নিতে বলেছেন। মনোবিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করলে মনোবিজ্ঞানী হওয়া যায়। তাহলে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা যাবে।
ক. মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও।
খ. মনোবিজ্ঞান শব্দের উৎপত্তি আলোচনা কর। 
গ. মনোবিজ্ঞানিগণ কীভাবে সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতে পারেন উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা কর। 
ঘ. মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক সাগরের পঠিত বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে কীভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে?

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মনোবিজ্ঞান হলো এমন একটি বিজ্ঞান যা মানুষ ও প্রাণীর আচরণ এবং মানসিক প্রক্রিয়া সম্বন্ধে অনুধ্যান করে।

খ. মনোবিজ্ঞানের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে Psychology। গ্রিক শব্দ Psyche এবং Logos থেকে Psychology শব্দটির সৃষ্টি হয়েছে। Psyche শব্দের অর্থ আত্মা এবং Logos শব্দের অর্থ জ্ঞান বা বিজ্ঞান। তাই আক্ষরিক অর্থে মনোবিজ্ঞানকে আত্মা সম্বন্ধীয় বিজ্ঞান বলা যায়। মনে কিন্তু আত্মা অতীন্দ্রিয় বস্তু। আত্মাকে দেখা যায় না, ধরা যায় না বা অনুভব করাও যায় না। তাই পরবর্তীতে আত্মাকে বাদ দিয়ে মনকে করা হয় মনোবিজ্ঞানের মূল বিষয়। তখন মনোবিজ্ঞানকে মন সম্বন্ধীয়। বিজ্ঞান হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

গ. মনোবিজ্ঞানিগণ সমাজকল্যাণ সাধনের মাধ্যমে সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতে পারে। নিচে মনোবিজ্ঞানিগণ সামাজিক কর্মকান্ডে যেভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন তা উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা করা হলো-
বর্তমানকালে সমাজকর্ম বা সমাজকল্যাণ নামে আর একটি বিষয় হিসেবে স্বীকৃতি বা পেশাগত মর্যাদা লাভ করেছে। বর্তমান বিশ্বে সাহায্যকারী পেশা হিসেবে সমাজকর্ম স্বীকৃত। পেশাদার সমাজকর্মিগণ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে সমাজকর্মের জ্ঞান, নীতি, কৌশল মানবকল্যাণে প্রয়োগ করে থাকেন। সমাজসেবায় নিয়োজিত সকল প্রতিষ্ঠানে সমাজকল্যাণ প্রশাসনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সমাজকল্যাণ প্রশাসন সূচিন্তিত উপায়ে যাবতীয় কর্মসূচির পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি করে। সমাজকর্মের সহায়ক পদ্ধতি হিসেবে সমাজকল্যাণ প্রশাসনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা হলো-সামাজিক নীতির বাস্তবায়ন, প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা বৃদ্ধি, গতিশীল ও বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ, সমাজসেবা কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণ, সম্পদের সদ্ব্যবহার, যৌথ কার্যক্রম গ্রহণ ইত্যাদি।
মনোবিজ্ঞানের সাথে সমাজকর্ম ও সমাজকল্যাণ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পেশাদার সমাজকর্মী ব্যক্তি বা জনসমষ্টিকে আত্মপ্রতিষ্ঠা শিক্ষাদানের সময় ব্যক্তি বা জনসমষ্টিকে যখন শিক্ষা দেন তখন মনোবিজ্ঞানের আচরণ সম্পর্কিত জ্ঞানগুলো প্রয়োগ করেন। সমাজকর্মিগণ ব্যক্তি সমষ্টি বা সমষ্টি উন্নয়নে তাদের আত্মবিশ্বাস সৃষ্টিতে মনোবিজ্ঞানের প্রেষণা, শিক্ষণ, মনোভাব ইত্যাদির সাধারণ সূত্রগুলো ব্যবহার করে থাকেন।

ঘ. মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক সাগরের পঠিত বিষয় নির্বাচণের ক্ষেত্রে নির্দেশনার মনোবিজ্ঞানের প্রভাব বিস্তার করেছে। নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
জীবনধারণের জন্য যে সকল বিষয়গুলো প্রয়োজন তা নির্ধারণের জন্য নির্দেশনার প্রয়োজন। শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে নির্দেশনা গভীরভাবে সম্পর্কিত। কোনো একজন শিক্ষার্থী লেখাপড়ার ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ে অগ্রসর হলে সাফল্য লাভ করতে পারবে তা নির্ধারণের জন্য নির্দেশনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সকল ব্যক্তিরই তার নিজস্ব জীবনের চাহিদা পূরণের অধিকার রয়েছে। এই অধিকার তখনই কার্যকর হবে যখন অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ না করা হয়। এ ব্যাপারে নিজস্ব ক্ষমতা ও দক্ষতাসমূহকে উন্নত করতে হবে। জীবনযাপন সম্পর্কে ব্যক্তির ধারণা অর্জন করতে হয়। আর সে জন্যই নির্দেশনা অতীব জরুরি। মৃদু আচরণজনিত সমস্যা আক্রান্ত ব্যক্তি যখন কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয় তখন তাকে নির্দেশনা মনোবিজ্ঞানীর দ্বারস্থ হতে হয়। একটি নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য একটি সময়ে যে উপাদানের প্রয়োজন নির্দেশনা মনোবিজ্ঞান তার পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করে ব্যক্তির আত্মান্নয়নে সাহায্য করে। ছাত্র জীবনের পাঠক্রম নির্বাচন সমস্যা ও অকৃতকার্য, চাকুরিগত সমস্যা, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যা, দাম্পত্য জীবনের দ্বন্দ্বও কলহ, বার্ধক্যজনিত সমস্যা, অবসর গ্রহণজনিত সমস্যা- প্রভৃতি ক্ষেত্রে নির্দেশনা মনোবিজ্ঞানী এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

HSC মনোবিজ্ঞান ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ১ pdf download

৭. ‘ক’ কলেজের বিজ্ঞানের ছাত্র নাফিসের আবিষ্কৃত কাঁচা শাক-সবজি ও ফলমূলে ফরমালিন শনাক্ত করার যন্ত্রটি ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয় সদ্য সমাপ্ত বিজ্ঞান মেলায়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় এটি। বাংলাদেশের তরুণ বিজ্ঞানী ফয়সাল যন্ত্রটি যাচাই করে দেখেন। অবশেষে সায়েন্স ল্যাবরেটরি নাফিসের আবিষ্কৃত যন্ত্রটির স্বীকৃতি প্রদান করে। বর্তমানে এই যন্ত্রটির কল্যাণে আমরা ভয়াবহ রোগ ব্যাধির হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছি।
ক. ফ্রয়েডের কাজ কী মতবাদ নামে পরিচিত?
খ. মনোবিজ্ঞানকে ‘জৈব-সামাজিক বিজ্ঞান' বলা হয় কেন ব্যাখ্যা কর।
গ. ফয়সাল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির কোন নীতিকে অনুসরণ করে তা ব্যাখ্যা কর। 
ঘ. সায়েন্স ল্যাবরেটরি যেসব নীতির আলোকে উক্ত যন্ত্রটির স্বীকৃতি প্রদান করে তা উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ফ্রয়েড- এর কাজ মনঃসমীক্ষণ মতবাদ নামে পরিচিত।

খ. প্রাণীর জৈবিক কার্যাবলি দ্বারাই আচরণ নিয়ন্ত্রিত হয়। জৈবিক কার্যাবলি বলতে শারীরিক গড়ন, মস্তিষ্কের কার্যাবলি, অভ্যন্তরীণ জৈবিক রাসায়নিক প্রক্রিয়া, অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির ক্রিয়াকলাপকেই বোঝায়, যা জীববিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। 
আবার, প্রাণীর আচরণগুলো কোনো না কোনো সামাজিক পরিবেশে সংঘটিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম, কৃষ্টি, সামাজি রীতিনীতি গুরুত্বপূর্ণ, যা সামাজিক বিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। মনোবিজ্ঞান মানুষের জৈবিক কার্যাবলিকে যেমন গুরুত্ব দেয়, তেমনি সামাজিক অবস্থাকেও গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই মনোবিজ্ঞানকে জৈব - সামাজিক বিজ্ঞান বলা হয়।

গ. ফয়সাল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির যথার্থতা প্রমাণ নীতিকে সমর্থন এ করে। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো-
উদ্দীপকে ‘ক’ কলেজের বিজ্ঞানের ছাত্র নাফিসের আবিষ্কৃত কাঁচা শাক-সবজি ও ফলমূলে ফরমালিন শনাক্ত করার যন্ত্রটি ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। এর ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক সংস্থা ফরমালিন শনাক্তকারী যন্ত্রটির যথার্থতা নিরূপণ করেন। যথার্থতা প্রমাণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ কোনো বৈজ্ঞানিক তার গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করার পর বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানিগণ তথা আন্তর্জাতিক সংস্থার বিজ্ঞানিগণ তার হুবহু পুনরুৎপাদন করে তার সত্যতা যাচাই করে দেখেন। আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের তরুণ বিজ্ঞানী ফয়সালও যন্ত্রটি যাচাই করে দেখেন। তাই বলা যায় যে, ফয়সাল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির যথার্থতা প্রমাণ নীতিকেই সমর্থন করেন।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত যন্ত্রটি হলো কাঁচা শাক-সবজি ও ফলমূলে ফরমালিন শনাক্ত করার যন্ত্র। সায়েন্স ল্যাবরেটরি যেসব নীতির আলোকে উক্ত যন্ত্রটির স্বীকৃতি প্রদান করে তা উদ্দীপকের আলোকে নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
১. কার্যকরী সংজ্ঞা: বৈজ্ঞানিক যখন কোনো বিষয়বস্তু সম্পর্কে গবেষণা করেন তখন তিনি উক্ত বিষয়ের একটি কার্যকরী সংজ্ঞা প্রদান করেন। কার্যকরী সংজ্ঞা ছাড়া গবেষণার বিষয়বস্তু অস্পষ্ট হয়ে পড়ে এবং উক্ত বিষয় সম্পর্কে কোনো দ্ব্যর্থহীন সিদ্ধান্ত পাওয়া যায না।
২. ব্যক্তি-নিরপেক্ষতা: আনুষঙ্গিক নিয়মাবলি অভিন্ন থাকলে স্থান-কাল-পাত্র ও পরীক্ষণকারীভেদে গবেষণালব্ধ ফল অভি রাখার দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রয়াসের নামই ব্যক্তি-নিরপেক্ষতা।
৩. নিয়ন্ত্রণ: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো। পরীক্ষণ পরিবেশের নিয়ন্ত্রণ। পরীক্ষণ পরিবেশের নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে তাকে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি বলা যাবে না। পরীক্ষণের নিয়ন্ত্রণ বলতে বোঝায় অনির্ভরশীল চলের সঙ্গে নির্ভরশীল চলের সম্পর্ক সুস্পষ্টভাবে অনুধাবনের উদ্দেশ্যে সবরকম অবাঞ্ছিত চলকে নিয়ন্ত্রণ করে পরীক্ষণকার্য পরিচালনা করা।
৪. পূনরাবৃত্তি: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির আর একটি বৈশিষ্ট্য হলো, পূর্বে পরীক্ষিত কোরোন বস্তু বা ঘটনাকে ইচ্ছানুসারে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পুনরায় সৃষ্টি করে গবেষণাকার্য পরিচালনা করা। মনোবিজ্ঞানের গবেষণায়ও এ বৈশিষ্ট্যটি পুরোপুরি বিদ্যমান।
৫. সাধারণীকরণ: অল্প সংখ্যক দৃষ্টান্ত থেকে সাধারণ সত্যে উপনীত হওয়াকে সাধারণীকরণ বলে। 
৬. যথার্থতা প্রমাণ: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হলো যথার্থতা প্রমাণ। অর্থাৎ কোনো বৈজ্ঞানিক তার ফল প্রকাশ করার পর বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানিগণ তার হুবহু পুনরূৎপাদন করে ফলাফল যাচাই করে দেখতে পারেন।
অর্থাৎ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উক্ত নীতির আলোকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি যন্ত্রটির স্বীকৃতি প্রদান করে।

৮. সমাজে মানুষ গ্রহণযোগ্যতা চায়। একে অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার করতে চায়। ব্যক্তির আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়া পর্যালোচনায় মনোবিজ্ঞান কালক্রমে উন্নতি লাভ করে আধুনিক যুগের বর্তমান অবস্থায় এসেছে। মানুষের শিক্ষা, স্মৃতি, প্রেষণা, বৃদ্ধি এসবের প্রায়োগিক দিক সম্পর্কে মনোবিজ্ঞানী তাকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে সহায়তা করে থাকেন।
ক. ক্লাইডার এবং সঙ্গীদের প্রদত্ত মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞাটি উল্লেখ কর।
খ. মনোবিজ্ঞানের গবেষণাগার কত সালে এবং কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়?
গ. মনোবিজ্ঞানের ক্রমবিকাশ উদ্দীপকের আলোকে বর্ণনা কর। 
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে মনোবিজ্ঞান কোন ধরনের বিজ্ঞান তা ব্যাখ্যা কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ক্লাইডার ও তার সহযোগিগণ কর্তৃক মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞা:
মনোবিজ্ঞানকে আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞানসম্মত অনুধ্যান হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।

খ. ১৮৭৯ সালে উইলহেম উন্ড (Wilhelm Wundt) কর্তৃক মনোবিজ্ঞানের গবেষণা পরিচালনার লক্ষ্যে জার্মানির লিপজিপ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম গবেষণাগার স্থাপিত হয়। এজন্য উন্ডকে পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞানের জনক বলা হয়।

গ. উদ্দীপকের আলোকে মনোবিজ্ঞানের ক্রমবিকাশ নিমেণ বর্ণনা করা হলো-
মনোবিজ্ঞানের ইংরেজি প্রতিশব্দ Psychology শব্দটি দুটি গিক শব্দ। Psyche (মন বা আত্মা) এবং Logos (বিজ্ঞান) থেকে উদ্ভূত। তাই শাব্দিক অর্থে মনোবিজ্ঞান হলো মনের বিজ্ঞান। আধুনিক মনোবিজ্ঞানীদের মতে, প্রাণীর বিশেষত মানুষের আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ার বিজ্ঞানসম্মত পর্যালোচনাই মনোবিজ্ঞান। মনোবিজ্ঞান বর্তমানে বিজ্ঞান হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মনোবিজ্ঞানের ক্রমবিকাশ প্রধানত তিনটি যুগে সম্পন্ন হয় যথা -
১. প্রাচীন যুগ: খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ থেকে মনোবিজ্ঞানের প্রাচীন যুগের শুরু। এ যুগের বিজ্ঞানী ছিলেন সক্রেটিস, হিপোক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টটল। তাঁরা সবাই আত্মাকেই মনোবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় মনে করতেন।
২. মধ্যযুগ: ফরাসি দার্শনিক ডেকার্ট- এর আবির্ভাব- এর পর ১৫৯৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে মনোবিজ্ঞানের মধ্যযুগ। আধুনিক দর্শনের জনক ডেকার্ট মানুষের দেহ ও মনকে দুটি স্বাধীন সত্তা হিসেবে বর্ণনা করেন। এজন্য তাঁর মতবাদকে দ্বৈতবাদ বলা হয়।
৩. আধুনিক যুগ: এ যুগে মনোবিজ্ঞানকে আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ার বিজ্ঞান বলা হয়। ১৯৭৪ সালে উইলহেম উন্ড প্রথম Principles of Psychology বই লিখেন। ওয়াটসনের যুগান্তকারী প্রবঞ্চ Psychology as the Behaviourist views it ১৯১৩ সালে প্রকাশিত হয়। পরিশেষে বলা যায়, মনোবিজ্ঞান ধীরে ধীরে বিজ্ঞান হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

ঘ. উদ্দীপকের আলোকে মনোবিজ্ঞান কোন ধরনের বিজ্ঞান তা নিমেণ - ব্যাখ্যা করা হলো-
মনোবিজ্ঞানের আধুনিক সংজ্ঞা মতে, ‘‘মনোবিজ্ঞান হলো প্রাণীর আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়াসমূহের বিজ্ঞানসম্মত পর্যালোচনা।’’ 
মনোবিজ্ঞানে জীবিত প্রাণীর বিশেষ করে মানুষের আচরণ ব্যাখ্যা করা হয়। আচরণ নিয়ন্ত্রণে জৈবিক বৈশিষ্ট্যসমূহ যেমন- শারীরিক গঠন, কেন্দ্রীয় সণায়ুতন্ত্র, প্রামত্মীয় সণায়ুতন্ত্র, জৈব রাসায়নিক উপাদান প্রভৃতি বিশেষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। তাই মনোবিজ্ঞানকে জৈবিক বিজ্ঞান বলা হয়। আচরণ কেবল জৈবিক বৈশিষ্ট্যাবলির দ্বারাই প্রভাবিত হয়।সামাজিক পরিবেশ দ্বারাও প্রভাবিত হয়ে থাকে। মানুষ যে সমাজে বসবাস করে তার প্রচলিত রীতিনীতি, মূল্যবোধ, বিশ্বাস ও কৃন্টি দ্বারা। সে প্রভাবিত হয়। তাই মনোবিজ্ঞানকে সামাজিক বিজ্ঞানও বলা যায়। আচরণের বিভিন্ন উপাদান যেমন, শিক্ষণ, স্মৃতি, প্রেষণা, আবেগ, বুদ্ধি, ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি যেমন জৈব রাসায়নিক বিভিন্ন উপাদান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তেমনি সামাজিক পরিবেশ দ্বারাও প্রভাবিত হয়। এছাড়া মানুষের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- বিষণ্ণতা, উৎবিগ্নতা, ঘুমের সমস্যা, আত্মহত্যার প্রবণতা ইত্যাদি বিভিন্ন জৈব-রাসায়নিক উপাদান ছাড়াও সামাজিক পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয় যা মনোবিজ্ঞান আলোচনা করে।
উপরের আলোচনা থেকে দেখা যায় যে, আচরণ নিয়ন্ত্রণে যেমন জৈবিক ঘটনাবলির প্রভাব রয়েছে আবার সমাজ দ্বারাও আচরণ প্রভাবিত হয়। তাই মনোবিজ্ঞানকে জৈব-সামাজিক বিজ্ঞান বলা যায়।

৯. মনোবিজ্ঞানের প্রাচীন ইতিহাস পড়তে গিয়ে মিতা জানতে পারল, প্রাচীন গ্রিক দার্শনিকরা মনোবিজ্ঞানকে মন বা আত্মা সম্পর্কিত বিজ্ঞান হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বিজ্ঞানের ছাত্রী হওয়ায় মিতার মনে প্রশ্ন জাগলো যে, মন বা আত্মার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, তাহলে দার্শনিকদের ব্যাখ্যাকে বাতিল করা যায় কি না।
ক. কোন দার্শনিক মনোবিজ্ঞানকে আত্মার বিজ্ঞান বলেছেন?
খ. ক্লাইডার ও তার সহযোগীরা মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে কী বলেছেন?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত প্রাচীন দার্শনিকদের মতামত তুমি কিভাবে মূল্যায়ন করবে?
ঘ. মিতার প্রশ্নের উত্তর তুমি কিভাবে দিবে? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক প্লেটো তার দৃষ্টিভঙ্গিতে মনোবিজ্ঞানকে বা আত্মার বিজ্ঞান বলেছেন।

খ. ক্রাইডার ও তার সহযোগীদের (১৯৯৩) মতে, মনোবিজ্ঞান হলো আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়া ও বিজ্ঞানসম্মত অনুধ্যান। এ সংজ্ঞায় দুটি বিষয় আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়া মনোবিজ্ঞানের মূল বিষয়বস্তু। 
১. আচরণ: উদ্দীপকের প্রতি প্রতিক্রিয়া করা জীবের অন্যতম মৌলিক বৈশিষ্ট্য। প্রতিক্রিয়ার সামগ্রিক রূপই আচরণ। অর্থাৎ প্রাণী যা কিছু করে তাই হলো আচরণ। 
২. মানসিক প্রক্রিয়া: মানসিক প্রক্রিয়া বলতে আবেগ, চিন্তন, স্বপ্ন, বিশ্বাস, প্রেষণা, স্মৃতি, প্রত্যক্ষণ প্রভৃতি প্রক্রিয়াকে বুঝায়।

গ. মনোবিজ্ঞানের ইতিহাস অনেক পুরনো, যদিও আধুনিক মনোবিজ্ঞানের চর্চা শুরু হয়েছে উনবিংশ শতকের শেষের দিকে।
মনোবিজ্ঞান পূর্বে দর্শনশাস্ত্রের অংশ ছিল মাত্র। তাই প্রাচীন গ্রিক দার্শনিকরা বিভিন্নভাবে মনোবিজ্ঞানকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। এক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনাই মূল উপজীব্য ছিল। এসব সংজ্ঞার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ছিল না। উদাহরণস্বরূপ গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর মতে, মনোবিজ্ঞান হলো আত্মার বিজ্ঞান। গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটলের মতে, মনোবিজ্ঞান হলো মনের বিজ্ঞান। মধ্যযুগীয় দার্শনিকদের মতে, ও মনোবিজ্ঞান চেতনার বিজ্ঞান।
তবে প্রাচীন দার্শনিকদের অবদানকে তুচ্ছ বলা যাবে না। তাদের মনোবিজ্ঞানের ধারণাগুলো বিবর্তন, পরিবর্তন, পরিমার্জন হয়ে আধুনিক মনোবিজ্ঞানের ধারণা আসে। এক্ষেত্রে প্রাচীন দার্শনিকদের সংজ্ঞাগুলোকে অস্বীকার করে সর্বপ্রথম জে. বি. ওয়াটসন মনোবিজ্ঞানকে আচরণের বিজ্ঞান হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন এবং মনোবিজ্ঞান একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞানেরও শাখা হিসেবে উদ্ভব হলো।

ঘ. মিতার প্রশ্নটি ছিল যেহেতু মন বা আত্মার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তাহলে দার্শনিকদের ব্যাখ্যাকে বাতিল বলে গণ্য করা যায় কি-না। মিতার প্রশ্নের সমর্থনে মনোবিজ্ঞানকে একটি বিজ্ঞান হিসেবে প্রমাণ করা সম্ভব।
কারণ মনোবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলা হয় মূলত তার গবেষণার পদ্ধতির জন্য। গবেষণা যদি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসারে করা হয়, তাহলে তাকে বিজ্ঞান বলা যেতে পারে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কতকগুলো নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত।

নিচে নীতিগুলো বর্ণনা করা হলো:
১. কার্যকরী সংজ্ঞা: কার্যকরী সংজ্ঞা ছাড়া গবেষণার বিষয়বস্তু অস্পষ্ট হয়ে পড়ে এবং উক্ত বিষয় সম্পর্কে কোনো দ্ব্যর্থহীন। সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানে গবেষণার বিষয় হচ্ছে প্রাণীর আচরণ। প্রাণীর বহুবিধ আচরণের মধ্যে যে আচরণটি গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয়, তা সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়।
২. ব্যক্তি নিরপেক্ষতা: মনোবিজ্ঞানের গবেষণার বিষয়বস্তু হচ্ছে। প্রাণীর আচরণ এবং এই আচরণ ব্যক্তি নিরপেক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। প্রাণীর এ আচরণ কোনো গবেষক যেভাবে অনুসন্ধান করতে পারেন, অন্যরাও তদ্রুপ পারেন। এ ব্যক্তি নিরপেক্ষতার কারণেই মনকে বাদ দিয়ে প্রাণীর আচরণকে মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ঠিক করা হয়েছে।
৩. নিয়ন্ত্রণ: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো। পরীক্ষণ পরিবেশের নিয়ন্ত্রণ। মনোবিজ্ঞানিগণ পরীক্ষণ পদ্ধতির সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের মধ্যে জীবের আচরণ গবেষণা করেন।
৪. পুনরাবৃত্তি: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো পুনরাবৃত্তি অর্থাৎ পূর্বে পরীক্ষিত কোনো বস্তু বা ঘটনাকে ইচ্ছানুসারে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পুনরায় সৃষ্টি করে গবেষণা কার্য পরিচালনা করা। মনোবিজ্ঞানের গবেষণায় ও এ বৈশিষ্ট্য পুরোপুরি বিদ্যমান।
৫. সাধারণীকরণ: মনোবিজ্ঞানের গবেষণায় গবেষক মানুষ বা প্রাণীর একটি প্রতিনিধিত্বমূলক দলের উপর গবেষণা করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সব মানুষ বা প্রাণী সম্পর্কে সাধারণ তত্ত্ব বা সূত্র প্রণয়ন করেন।
৬. যথার্থতা প্রমাণ: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো যথার্থতা প্রমাণ। মনোবিজ্ঞানের গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য যেকোনো দেশের মনোবিজ্ঞানী পুনরায় হুবহু পুনরূৎপাদন করে তার সত্যতা যাচাই করে দেখতে পারেন।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, মিতার মনোবিজ্ঞান সম্পর্কিত ভাবনা সঠিক।

১০. কলেজ বিতর্ক প্রতিযোগিতা চলছিল। প্রথম দলের দলনেতা সৌমেন। সন্দর করে গুছিয়ে কথা বলতে পারে। দ্বিতীয় দলের দলনেতা শফিক বক্তব্যের শুরুতে ঘামতে শুরু করলো এবং দ্রুত শ্বাস নিচ্ছিলো। সৌমেন যক্তি সহকারে, হাত নেড়ে, মাথা ঝাকিয়ে চমৎকার বক্তব্য উপস্থাপন করলো। সে শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হলো।
ক. ঐচ্ছিক আচরণ কী?
খ. শিক্ষকের শ্রেণিতে পাঠদান একটি সামগ্রিক আচরণ- ব্যাখ্যা কর। 
গ. শফিকের ক্ষেত্রে কোন ধরনের আচরণ প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সৌমেনের শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হবার ক্ষেত্রে সংঘটিত আচরণগুলো বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে সব আচরণ ব্যক্তি সচেতনভাবে করে অর্থাৎ যে সকল আচরণ। ব্যক্তির ইচ্ছার উপর নির্ভর করে সেগুলোকে ঐচ্ছিক আচরণ বলে।

খ. শিক্ষকের শ্রেণিতে পাঠদান একটি সামগ্রিক আচরণ। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
মানুষ বা প্রাণীর কোনো কার্যকলাপ বা আচরণের একটি পূর্ণাঙ্গ অর্থপূর্ণ রূপকে সামগ্রিক আচরণ বলে। অর্থাৎ সামগ্রিক আচরণের ক্ষেত্রে মানুষ বা প্রাণীর কোনো আচরণ বা কার্যকলাপকে বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট খন্ডিত অংশে বিভক্ত না করে একটি পূর্ণাঙ্গ অর্থপূর্ণ আচরণ হিসেবে বিবেচনা বা পর্যবেক্ষণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ শ্রেণিতে শিক্ষকের পূর্ণাঙ্গ পাঠদান কার্যকলাপ- কে একটি সামগ্রিক আচরণ হিসেবে ধরা হয়।

গ. উদ্দীপকে শফিকের ক্ষেত্রে অনৈচ্ছিক আচরণ প্রকাশ পেয়েছে। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
মানুষ বা প্রাণীর ক্ষেত্রে এমন কতকগুলো আচরণ আছে যেগুলো ব্যক্তির ঐচ্ছিক নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং যা অনেকটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাহ্যিক বা তার দেহের অভ্যন্তরে সংঘটিত হয়, এমন সব আচরণকে অনৈচ্ছিক আচরণ বলে। যেমন- হৃৎপিন্ডের ক্রিয়া, শ্বাস-প্রশ্বাস, আগুনে হাত লাগা মাত্র হাত সরিয়ে নেওয়া, চোখের পলক, রক্তচাপ প্রভৃতি।
উদ্দীপকে আমরা দেখতে পাই যে, দ্বিতীয় দলের দলনেতা শফিক বক্তব্যের শুরুতেই দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছিল। যা তার ইচ্ছা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় বরং স্বয়ংক্রিয়। তাই উপরোক্ত আলোচনা হতে বলা হয় যে, শফিকের ক্ষেত্রে অনৈচ্ছিক আচরণ প্রকাশ পেয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকের সৌমেন শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে যে সকল আচরণ সংঘটিত হয়েছিল তা হলো সামগ্রিক ও খন্ডিত আচরণ। নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
মানুষ বা প্রাণীর কোনো কার্যকলাপ বা আচরণের একটি পূর্ণাঙ্গ অর্থপূর্ণ রূপকে সামগ্রিক আচরণ বলে। অর্থাৎ সামগ্রিক আচরণের ক্ষেত্রে মানুষ বা প্রাণীর কোনো আচরণ বা কার্যকলাপকে বিচ্ছিন্ন গোট ছোট খন্ডিত অংশে বিভক্ত না করে একটি পূর্ণাঙ্গ অর্থপূর্ণ আচরণ হিসেবে বিবেচনা বা পর্যবেক্ষণ করা হয়। আবার মানুষ বা প্রাণীর কোনো কার্যকলাপ বা আচরণের ছোট ছোট অংশকে খন্ডিত আচরণ বলা হয়। অর্থাৎ খন্ডিত আচরণের ক্ষেত্রে মানুষ বা প্রাণীর কোনো আচরণ বা কার্যকলাপকে বিচ্ছিন্ন বা ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
উদ্দীপকে প্রথম দলের দলনেতা সৌমেন যুক্তি দিয়ে হাত নেড়ে মাথা ঝাঁকিয়ে চমৎকার বক্তব্য উপস্থাপন করে শ্রেষ্ঠ বিতর্কিক নির্বাচিত হওয়ার ঘটনায় তার বক্তব্য দেওয়ার আচরণকে সামগ্রিক আচরণ বলা যায়। এই আচরণটিকে ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করলে আমরা যুক্তি দেওয়া, হাত নাড়ানো, মাথা ঝাঁকানো প্রভৃতি দেখতে পাই। এগুলোকে আমরা খন্ডিত আচরণ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি। অর্থাৎ উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সৌমেনের বক্তব্য দেওয়ার আচরণটি হলো সামগ্রিক আচরণ এবং তার যুক্তি দেওয়া, হাত নাড়ানো এবং মাথা ঝাঁকানো হলো খন্ডিত আচরণ।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here