HSC কৃষিশিক্ষা ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৬

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Agricultural Education 1st Paper Srijonshil question and answer. HSC Agricultural Education 1st Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Krishi Shikkha 1st paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
কৃষিশিক্ষা
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৬

HSC Agriculture 1st Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. আমাদের দেশে বিশেষত বরিশাল বিভাগে প্রচুর পরিমাণ পেয়ারার চাষ হয়। বর্তমানে থাই পেয়ারার চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশি জাতের পেয়ারার চাহিদা কমে যাচ্ছে। এ পেয়ারাও লোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য 'প্রাণ কোম্পানি' এগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে খাদ্যোপযোগী করার ব্যবস্থা করে। এতে করে অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগসহ ফলচাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
ক. ফল সংরক্ষণ কী?
খ. সবজিতে কিউরিং করা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ফলটির প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতি বর্ণনা কর।
ঘ. 'প্রাণ কোম্পানি'র কর্মকান্ড বাস্তবসম্মত কিনা তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উৎপাদিত ফল বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন ব্যবহার উপযোগী রাখাই হলো ফল সংরক্ষণ।

খ. কাটা বা আঘাতপ্রাপ্ত কন্দজাতীয় সবজির কাটাস্থান শুকিয়ে রোগমুক্ত করার জন্য কিউরিং করা হয়। এ কাজটিও ফসল কাটার সাথে সাথে করতে হয়। গোলআলু, মিষ্টি আলু, পিঁয়াজ, আদা, হলুদ প্রভৃতির মূল, বালব ও কন্দজাতীয় সবজিতে এ কাজটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

গ. উদ্দীপকে 'প্রাণ কোম্পানি' পেয়ারার জেলি তৈরি করে ফলটি প্রক্রিয়াজাতকরণ করে। নিচে পেয়ারার জেলি তৈরির পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো-
ফলের রস ও চিনি একত্রে সিদ্ধ করলে তা জমে স্বচ্ছ এবং কঠিন ও তরল অবস্থার মাঝামাঝি পর্যায়ের যে বস্তুতে পরিণত হয় তাই হলো জেলি। জেলি, পাউরুটি, কেক ও বিস্কুট দিয়ে খেতে বেশ মজাদার। আমাদের দেশে কমলালেবু, বাতাবি লেবু, জাম, পেয়ারা, আনারস, আম প্রভৃতি ফলের তৈরি জেলি বেশি পাওয়া যায়।

প্রস্তুত প্রণালি:
১. প্রথমে পেয়ারা টুকরো টুকরো করে কেটে সমপরিমাণ পানি যোগে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দু'ঘণ্টা সিদ্ধ করতে হয়।
২. পেয়ারার টুকরো গরম হলে নাড়াচাড়া না করে তাপ দিয়ে পানি শুকিয়ে অর্ধেক পরিমাণে কমিয়ে আনা হয়।
৩. তারপর নেটের সাহায্যে জাল দেওয়া পেয়ারা পাত্রে ঢেলে দিলে পেকটিনসহ ফলের নির্যাস আলাদা হয়ে যায়।
৪. নির্যাসে পরিমাণমতো পেকটিন না থাকলে বাইরে থেকে পেকটিন যোগ করতে হয়।
৫. অতঃপর এতে সমপরিমাণ বা তার চেয়ে একটু কম পরিমাণ চিনি মেশাতে হবে।
৬. সব উপকরণ জ্বাল দিয়ে যখন চিনি শতকরা ৬০ ভাগ ঘনত্বে কমে আসে তখন জেলি জমে যায়।
৭. এভাবে জেলি গরম অবস্থায় বোতলে ঢেলে ওয়াশ পেপার দিয়ে তার উপর ঢাকনা আঁটা হয়।
৮. সবশেষে বোতলভর্তি জেলি শুষ্ক, আলোকবিহীন ও ঠান্ডা স্থানে সংরক্ষণ করা হয়। উপরোক্ত পদ্ধতিতে প্রাণ কোম্পানি পেয়ারা দ্বারা জেলি তৈরি করে পেয়ারা প্রক্রিয়াজাতকরণ করে।

ঘ. উদ্দীপকে 'প্রাণ কোম্পানি' পেয়ারার জেলি তৈরি করে পেয়ারা। প্রক্রিয়াজাতকরণ করে। 'প্রাণ কোম্পানির কর্মকান্ডটি বাস্তবসম্মত।' নিচে তার সপক্ষে যুক্তি দেওয়া হলো-
আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ফল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ফল ভিটামিন ও খনিজ পদার্থে ভরপুর। রান্না করা ছাড়াই খাওয়া যায় বলে ফলের ভিটামিন ও খনিজ পুরোটাই মানুষের শরীরে গ্রহণযোগ্য হয়। এছাড়াও ফলের অর্থনৈতিক গুরুত্বও ব্যাপক। কিন্তু আমাদের দেশে উৎপাদিত ফলসমূহের অনেকাংশ উপযুক্ত পরিবহন ও সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাবে প্রতিনিয়ত পচে নষ্ট হয়। এছাড়াও উৎপাদন মৌসুমে প্রচুর ফলের উৎপাদন হওয়ায় যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় কৃষককে কম মূল্যে ফল বিক্রি করতে হয়। এতে ফল চাষিরা ফল চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। প্রাণ কোম্পানি এসব ফল প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সংরক্ষণ করে। এতে ফলের পচন ও অপচয় অনেকাংশে রোধ করা যেত। এর মাধ্যমে এসব এলাকায় প্রচুর লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা এছাড়াও হয়। প্রক্রিয়াজাতকৃত দ্রব্যাদি যেমন- জ্যাম, জেলি, আচার, মোরববা, স্কোয়াশ ইত্যাদি বিদেশে রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হয়।
উক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে 'প্রাণ কোম্পানির' কর্মকান্ড অত্যন্ত বাস্তবসম্মত।

২. সুমাইয়া এবং সিয়াম দুই ভাই-বোন। তারা একদিন মুন্সিগঞ্জে মামার সাথে বেড়াতে যাওয়ার পথে তারা কৃষকদের ক্ষেত থেকে আলু উঠানোর পদ্ধতি দেখে মুগ্ধ হলো। মামা কৃষকদের বাড়ি হতে ২০শম পরিমাণ আলু নিয়ে আসলেন। সিয়াম বলল মামা এত আলু কী করবেন? মামা বললেন তোমরা ছোটবেলা ঢাকা হতে ট্রেনে আসার পথে আলুর তৈরি যে মুখরোচক হালকা খাবার খেয়েছিলে সেগুলোই তৈরি করা হবে।
ক. আচার কী?
খ. ব্লাঞ্ছিং বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত মুখরোচক হালকা খাবারটি কী? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ফসলের বহুমুখী ব্যবহারে সুমাইয়া ও সিয়ামের মামার উদ্যোগটি মূল্যায়ন কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যখন কোনো খাদ্যকে (ফল, সবজি) সাধারণ লবণ, তেল অথবা ভিনেগারের সাহায্যে সংরক্ষণ করা হয় তখন সেই প্রস্তুতকৃত খাদ্যকে আচার বলে।

খ. সবজিকে জীবাণুমুক্ত করার জন্য প্রথমে হালকা ফুটন্ত পানিতে ২-৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখাকে ব্লাঞ্চিং বলে। শাকসবজি দীর্ঘদিন ডিপরেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণের জন্য এটি করা হয়। শাকসবজি থেকে ময়লা ধুলাবালি ইত্যাদি ভালোভাবে পরিষ্কার করে ব্লাঞ্চিং করা হয়।

গ. উদ্দীপকে সুমাইয়া এবং সিয়ামের মামার বর্ণিত মুখরোচক হালকা খাবারটি হলো আলুর চিপস। গোলআলুকে একটি নির্দিষ্ট পুরুত্বে স্লাইস করে কেটে তা তেলে ভেজে যে খাদ্য তৈরি করা হয় তাকে আলুর চিপস বলে। এটি তৈরির পদ্ধতি খুব সহজ। তবে সব ধরনের আলু দিয়ে আলুর চিপস তৈরি করা যায় না। ভালো মানের চিপস তৈরির জন্য নির্দিষ্ট জাতের আলু নির্বাচন করতে হয়। আলু সংরক্ষণের নির্দিষ্ট ব্যবস্থা থাকতে হবে। আলু যাতে গজিয়ে না যায় সেজন্য অঙ্কুরোদগম নিরোধক রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করতে হবে। আলুর চিপস তৈরিতে মধ্যম আকারের গোলআলু, আলু, ভাঙার তেল, লবণ ইত্যাদি দরকার হয়। এটি একটি চমৎকার ও সুস্বাদু মুখরোচক খাবার। তাই ছোট-বড় সকলের কাছে আলুর চিপস অত্যন্ত প্রিয় ও মজাদার খাদ্য। এছাড়াও ভ্রমণ পথে বেশির ভাগ লোককেই এটি খেতে দেখা যায়।

ঘ. ফসলের বহুমুখী ব্যবহারে সুমাইয়া ও সিয়ামের মামার উদ্যোগটি নিচে মূল্যায়ন করা হলো-
আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আলু গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিনিয়ত দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাল মিলে খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে। অথচ প্রচুর খাদ্য ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও উৎপাদন মৌসুমে আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণ সবজি পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে আলু উৎপাদন মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হয় এবং তাৎক্ষণিক চাহিদা মিটিয়ে প্রচুর উদ্বৃত্ত থাকে। এগুলোর অধিকাংশ ক্ষেত্রে কৃষকেরা সঠিক প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিপণন সম্পর্কে অনভিজ্ঞ। উদ্দীপকে সুমাইয়া ও সিয়ামের মামার মতো উপযুক্ত প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে আলু সংরক্ষণ করে একদিকে যেমন সারা বছরের পুষ্টি চাহিদা মেটানো সম্ভব, তেমনিভাবে এগুলো সংরক্ষণের দ্বারা অমৌসুমে বাজারজাত করে অনেক টাকা উপার্জন করা সম্ভব। এতে করে আলু সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সাথে জড়িত অনেক মানুষের কর্মসংস্থান করা সম্ভব হবে। ফসলের বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে আলু ভাতের বিকল্প হিসেবে করা যায়। এছাড়া আলু প্রতিদিনের সবজির চাহিদা পূরণ করে অন্যান্য মুখরোচক খাবার তৈরি করা সম্ভব হয়। আর এ সকল মুখরোচক খাবার তৈরির জন্য অনেক শিল্প গড়ে উঠেতে। এতে বেকার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। এছাড়াও আলুর প্রক্রিয়াজাতকৃত দ্রব্যাদি বিদেশে রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। এতে একদিকে বেকার সমস্যা সমাধান করা যায় অন্যদিকে দেশের খাদ্য ও পুষ্টির অভাব অনেক খানি পূ রণ করা সম্ভব হবে।
উক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, সুমাইয়া ও সিয়ামের মামার মতো, ফসলের বহুমুখী ব্যবহারের উদ্যোগটি বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৩. কালবৈশাখী ঝড়ে জারিফদের বাগানের অধিকাংশ কাঁচা আম ঝরে যায়। জারিফের মা আমগুলো কুড়িয়ে জারিফের বাবাকে বাজার থেকে খাঁটি সরিষার তেল আনতে বললেন এবং আমগুলো সারা বছর খাওয়ার উপযোগী করে রাখলেন।
ক. জেলি কী?
খ. ফল গ্রেডিং করা হয় কেন?
গ. জারিফের মা কেন উদ্যোগটি গ্রহণ করলেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে জারিফের মায়ের কর্মকান্ডটি বাস্তবসম্মত- বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জেলি হচ্ছে কঠিন ও তরল অবস্থার মাঝামাঝি স্বচ্ছ চকচকে পদার্থ, যা ফলের রস ও চিনিসহকারে সিদ্ধ করে তৈরি করা হয়।

খ. ফল দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য গ্রেডিংকরণ আবশ্যক। এর ফলে পচা, রোগাক্রান্ত ফল ও শাকসবজি বাছাই করে তা বাদ দেওয়া হয়। এরপর তাদের পকৃতার উপর ভিত্তি করে ভাগ করার ফলে। অধিক পাকা, কম পাকা ও কাঁচা ফলমূল আলাদা করা হয়, যা পচন রোধে সাহায্য করে।

গ. জারিফের মা ঝরে যাওয়া কাঁচা আম দিয়ে আচার তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করলেন। উদ্যোগটি গ্রহণ করার কারণ নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
জারিফের মা ঝরে পড়া আমগুলোকে পচনের হাত থেকে বাঁচানো এবং দীর্ঘদিন খাওয়ার উপযোগী করে রাখার জন্য এরূপ উদ্যোগ গ্রহণ করলেন। তিনি খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে আমের আচার তৈরি করলেন। কারণ খাঁটি সরিষার তেলের ফল সংরক্ষণ ক্ষমতা আছে। ফলে আমগুলো দীর্ঘদিন খাওয়ার। উপযোগী থাকবে। আর আচার সকলের নিকট সুস্বাদু ও মুখরোচক খাদ্য। অন্যান্য খাদ্যের স্বাদ বাড়াতে এর জুড়ি নেই। এসব কারণে জারিফের মা আচার তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।

ঘ. উদ্দীপকে জারিফের মায়ের কর্মকান্ডটি হলো ঝরে যাওয়া আম সংরক্ষণ। কালবৈশাখীতে ঝরে যাওয়া কাঁচা আম পচনের হাত থেকে রক্ষা করা এবং দীর্ঘদিন খাওয়ার উপযোগী করার জন্য জারিফের মা আমগুলোকে খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে আচার তৈরি করে সংরক্ষণ করলেন। বাংলাদেশ একটি প্রাকৃতিক। দূর্যোগপ্রবণ দেশ। এ দেশে ঝড়ের কারণে প্রতিবছর প্রচুর ফল। ঝরে পড়ে এবং সংরক্ষণের অভাবে পচে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে আর্থিকভাবে প্রচুর ক্ষতি হয়। যা দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। কিন্তু যদি সঠিকভাবে ঝরে পড়া ফলগুলো সংরক্ষণ করা হয় তাহলে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা হলেও কমে আসে। তাছাড়া বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেই ফল থেকে তৈরি আচার, জ্যাম, জেলির চাহিদা রয়েছে। অনেকের কাছে এগুলো প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত।
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, জারিফের মায়ের কর্মকান্ডটি যথার্থ এবং বাস্তবসম্মত।

৪. আকরাম একজন সবজি উৎপাদনকারী কৃষক। তার উৎপাদিত সবজি দূরবর্তী বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন। পথে তার বেশ কিছু সবজি নষ্ট হয়ে যায় এবং দুর্গন্ধ বের হয়। ফলে তিনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। আকরাম সমস্যা সমাধানে কৃষি কর্মকর্তার শরণাপন্ন হন। কৃষি কর্মকর্তা তাকে এ ব্যাপারে পরামর্শ দেন। পরামর্শ কাজে লাগিয়ে তিনি পরবর্তীতে লাভবান হন।
ক. ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ কী?
খ. ফল ও শাকসবজি সংরক্ষণে গ্রেডিং করা জরুরি কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. আকরামের সবজি নষ্ট হওয়ার কারণগুলো ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আকরামের সমস্যা দূরীকরণে কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ মূল্যায়ন কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ফল পচনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য জ্যাম, জেলি, আচার ইত্যাদি তৈরি করে সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ বলে।

খ. ফল ও শাকসবজি দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য গ্রেডিং করা আবশ্যক। এর ফলে পচা, রোগাক্রান্ত ফল ও শাকসবজি বাছাই করে তা বাদ দেওয়া হয়। এরপর তাদের পকৃতার উপর ভিত্তি করে ভাগ করার ফলে অধিক পাকা, কম পাকা ও কাঁচা ফলমূল আলাদা করা হয়, যা পচন রোধে সাহায্য করে। অর্থাৎ সংরক্ষণের পূর্বশর্ত হলো গ্রেডিং।

গ. আকরামের সবজি নষ্ট হওয়ার কারণগুলো নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
i. রোগজীবাণুর সংক্রমণ: সংগৃহীত শাকসবজি পচনের অন্যতম প্রধান হলো রোগজীবাণুর সংক্রমণ। শাকসবজি সংগ্রহের সময় সৃষ্ট ক্ষতস্থানের মধ্য দিয়ে জীবাণু শাকসবজিতে প্রবেশ করে দ্রুত বিস্তার লাভ করে এবং পচন ধরায়।
ii. জলীয় অংশ হ্রাস পাওয়া: 'শাকসবজি জমি থেকে সংগ্রহ করার পর এরা আর পানি শোষণ করতে পারে না; কিন্তু প্রস্বেদনের মাধ্যমে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যেতে থাকে। ফলে শাকসবজি নষ্ট হয়ে যায়।
iii. শ্বসন: শাকসবজি জমি থেকে সংগ্রহ বা গাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরও এদের দেহে শ্বসন প্রক্রিয়া চলতে থাকে। ফলে শাকসবজি নষ্ট হয়ে যায়।
iv. আঘাতজনিত ক্ষত: শাকসবজি জমি থেকে সংগ্রহ, প্যাকিং ও পরিবহনের সময় আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে বা অন্য কোনো ক্ষত হতে পারে। এসব ক্ষতস্থান থেকে পানি বেরিয়ে এসে বা জীবাণু প্রবেশ করে শাকসবজিকে দ্রুত পচনে সহায়তা করে।
v. ইথিলিন যৌগের ভূমিকা: ইথিলিন উদ্ভিদদেহে উৎপাদিত একটি হরমোন, যা উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও পরিপক্বতা নিয়ন্ত্রণ করে। শাকসবজি মাঠ থেকে সংগ্রহ করার পর উক্ত হরমোন একটু বেশি পরিমাণে নিঃসরণ হতে থাকে, যা শাকসবজির দ্রুত পচনে সহায়তা করে।

ঘ. আকরামের সমস্যাটি হলো সবজির পচন। এ সমস্যা দূরীকরণে কৃষি কর্মকর্তা তাকে সবজি সংরক্ষণের পরামর্শ দেন। নিচে কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ মূল্যায়ন করা হলো-
মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ আসে সবজি থেকে। ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের সবচেয়ে সহজলভ্য ও সস্তা উৎস হচ্ছে শাকসবজি। আমাদের দেশে উৎপাদিত শাকসবজির সিংহভাগ সংরক্ষণের অভাবে পচে নষ্ট হয়। কিছু সবজি সারা বছর উৎপাদন করা সম্ভব নয়। তাদেরকে অমৌসুমে খাওয়ার জন্য সংরক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন শাকসবজি বেশি উৎপাদন হয়। আবার কোথাও এ সকল শাকসবজি উৎপন্ন হয় না। সব এলাকায় সব ধরনের শাকসবজি পৌঁছানোর জন্য সংরক্ষণ করা জরুরি। এছাড়া বিদেশে রফতানি করার জন্য এবং ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির জন্য শাকসবজি সংরক্ষণ একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরিশেষে বলা যায় যে, কৃষি কর্মকর্তার প্রদত্ত সবজি সংরক্ষণের পরামর্শটি যথার্থ, বাস্তবসম্মত এবং প্রশংসনীয়।

৫. মুন্সীগঞ্জ জেলার আলু চাষি সুব্রত বাবু তার ক্ষেতের আলুগাছের অবস্থা দেখে খুব ভালো ও বাম্পার ফলন পাবে বলে আশাবাদী। আলুর মৌসুমে সকল ক্ষেতের আলু তুলে গাদা দিয়ে রাখেন। কয়েক দিন পরে তিনি দেখেন প্রায় অধিকাংশ আলু পচে গিয়েছে। বাকি আলুতে সাদা আস্তরণ পড়েছে। এতে তিনি অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হন।
ক. ননপেরিশেবল খাদ্য পণ্য কী?
খ. ফল ও শাকসবজি সংরক্ষণ করা উচিত কেন?
গ. চাষি সুব্রত বাবুর উৎপাদিত ফসলটি পচার কারণগুলো উল্লেখ কর।
ঘ. কীভাবে উক্ত ফসলটি সংগ্রহ করলে সুব্রত এ ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেত মতামত দাও।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যেসব খাদ্যপণ্য সাধারণত কিছুটা বিরূপ পরিবেশ থাকলেও সহজে নষ্ট হয় না সেসব খাদ্যকে ননপেরিশেবল খাদ্য বলে।

খ. ফল ও শাকসবজি সংরক্ষণ করা উচিত। কারণ এগুলো সংরক্ষণ করলে সারা বছর খাওয়া যায়। বিভিন্ন এলাকার চাহিদা পূরণ হয় এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। ফল ও শাকসবজি সংরক্ষণ করে আমাদের দেশে খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা যায়।

গ. আলু চাষি সুব্রত বাবুর আলু পচার কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-
রোগজীবাণুর সংক্রমণ: সংগৃহীত শাকসবজি পচনের অন্যতম প্রধান কারণ হলো রোগজীবাণুর সংক্রমণ। মাঠ থেকে শাকসবজি সংগ্রহের সময় জীবাণু শাকসবজির সঙ্গে অথবা শাকসবজি সংগ্রহকারী যন্ত্রপাতির সঙ্গে চলে আসতে পারে। শাকসবজি সংগ্রহের সময় সৃষ্ট ক্ষতস্থানের মধ্য দিয়ে জীবাণু শাকসবজিতে প্রবেশ করে দ্রুত বিস্তার লাভ করে এবং পচন ধরায়। রোগসৃষ্টিকারী জীবাণুর মধ্যে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক অন্যতম।
শ্বসন: শাকসবজি জমি থেকে সংগ্রহ বা গাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরও এদের দেহে শ্বসন প্রক্রিয়ায় চলতে থাকে। যার ফলে শাকসবজির দেহে সঞ্চিত খাদ্য বিভাজিত হয়ে কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2), পানি ও শক্তি নির্গত হয়। ফলে শাকসবজি নষ্ট হয়ে যায়। সংরক্ষণ স্থানের তাপমাত্রা কম হলে শ্বসন কম হয়, ফলে শাকসবজি ভালো থাকে। আর সংরক্ষণ স্থানের তাপমাত্রা বেশি হলে শ্বসন বেশি হয় এবং শাকসবজি তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়।
প্রতিকূল পরিবেশ: প্রতিকূল পরিবেশে (আলো-বাতাস কম, আর্দ্রতা কম, তাপমাত্রা বেশি) শাকসবজি সংরক্ষণ করলে বা প্রতিকূল পরিবেশ বিরাজ করলে শাকসবজি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত আলু চাষি সুব্রত বাবুর আলু পচে গেছে। সুব্রত যেভাবে আলু সংরক্ষণ করলে পচনের হাত থেকে রক্ষা পেত তা নিচে দেওয়া হলো-
i. পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ছায়াযুক্ত স্থানে আলু সংরক্ষণ করতে হয়।
ii. সরাসরি সূর্যের আলো যেন আলুতে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখা আবশ্যক।
iii. সংরক্ষণ ঘরের দেয়াল এমনভাবে তৈরি করতে হবে। যেন বাইরের তাপ ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে। সেজন্য বাণিজ্যিকভাবে তৈরি ঘরের বাঁশের বেড়ায় কাদামাটির প্রলেপ দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। টিনের তৈরি বেড়াবিশিষ্ট ঘরে আলু রাখা উচিত নয়।
iv. ঘরের দরজা-জানালা দিয়ে যেন প্রবাহিত বায়ু সরাসরি ঘরে প্রবেশ করতে পারে।
v. আলু ঘরের মেঝেতে সত্মূপ করে না রেখে র¨vকে সাজিয়ে রেখে তার ওপর হালকা পলিথিন শিট বিছিয়ে দিতে হয়।

৬. মিসেস রহিমা একজন পুষ্টিবিদ। তিনি জানেন ফল ও শাকসবজি অর্থনৈতিক, পুষ্টিগত ও নান্দনিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফসল। কিন্তু দীর্ঘকালীন সংরক্ষণ যোগ্যতার অভাবে এই ফসলগুলোর ব্যবহার ও বাজারজাতকরণে অনেক অসুবিধায় পড়তে হয়। ফলে বিভিন্ন সময় আমাদেরকে চড়ামূল্য গুনতে হয়।
ক. পিকল কী?
খ. কিউরিং বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকের প্রথম উক্তিটির মর্মকথা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ফসল সংরক্ষণে দ্বিতীয় উক্তির মূল্যায়ন কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. তেল, জৈব অম্ল, অতিরিক্ত লবণ বা চিনি যোগ করে বানানো ফল ও সবজির আচারকে পিকল বলে।

খ. কাটা বা আঘাতপ্রাপ্ত কন্দজাতীয় সবজির কাটা স্থান শুকিয়ে রোগমুক্ত করাকে বলা হয় কিউরিং। শাকসবজি সংরক্ষণ করার জন্য কিউরিং করা হয়।

গ. উদ্দীপকের প্রথম উক্তি দ্বারা ফল ও শাকসবজির গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো ভিটামিন ও খনিজ লবণের সবচেয়ে সহজ ও সস্তা উৎস হলো ফল ও শাকসবজি। ফল ও শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ পদার্থসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্য উপাদান রয়েছে। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ফল মানুষের উল্লেখযোগ্য সুখাদ্য হিসেবে ব্যাপক সমাদৃত। রানণা করে খাওয়া হয় না বলে ফলের সব পুষ্টি উপাদান বিশেষ করে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ মানুষ অবিকৃত অবস্থায় দেহে গ্রহণ করে। পুষ্টি সংগ্রহে, জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে, ওষুধ তৈরি ও চিকিৎসাশাস্ত্রে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদি ও সামাজিক কর্মকান্ড- একক জমিতে অন্যান্য ফসলের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধিতে, পতিত জমি ব্যবহারে, ফলজাত নতুন শিল্প ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে, সর্বোপরি জাতীয় অর্থনীতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ফল ও ফলগাছের অবদান অনস্বীকার্য। শরীরকে সুস্থ, সবল, কর্মঠ, নিরোগ রাখার জন্য একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ২০০-২৫০ গ্রাম সবজি খাওয়া দরকার। উল্লেখ্য, শরীরের চাহিদার ৯০-৯৫% ভিটামিন 'সি', ৬০-৮০% ভিটামিন 'এ' এবং ২০-৩০% ভিটামিন 'বি' একমাত্র সবজি ও ফল থেকে আসে।

ঘ. দীর্ঘকালীন সংরক্ষণ যোগ্যতার অভাবে ফসলের ব্যবহার ও বাজারজাতকরণের অসুবিধার কারণে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। এতে করে অর্থনৈতিকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই।
মৌসুমের সময় দেশে প্রচুর কৃষিপণ্য উৎপাদন হয় ও দাম কম থাকে। এসময় কৃষিপণ্য বিক্রি করে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পান না। কিন্তু উৎপাদিত কৃষিপণ্যের বেশির ভাগই পচনযোগ্য খাদ্যপণ্য। একারণেই সরবরাহের সামান্য সমস্যা হলেই উৎপাদিত পণ্যসমূহ খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। তাই এ সমস্যা সমাধানের জন্য পূর্ববর্তী কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। বিশেষ করে বাজারে নেওয়ার পূর্বে ফল ও সবজি প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিবহনের আগে ফল ও শাকসবজি নির্দিষ্ট নিয়মে প্রক্রিয়াজাত না করলে পচন এবং অপচয় ৪০% বেড়ে যায়। তাই ফল ও শাকসবজি পচে নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কৃষকদের উৎপাদিত ফল ও সবজির সঠিকভাবে প্যাকিং করতে হবে। কেননা, পরিবহনের সামান্য সমস্যা হলে পচনযোগ্য খাদ্যপণ্য খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। ফল বা শাকসবজি যদি সঠিকভাবে প্যাকিং করে বাজারজাত করা যায় তাহলে সরবরাহের অসুবিধা হলেও সহজে নষ্ট হয় না। এসব দিকে লক্ষ রাখলে সহজেই উদ্দীপকের সমস্যা সমাধান করা যাবে।
মূলকথা হলো কৃষিপণ্যের সঠিক ব্যবহার ও বাজারজাতকরণের উপর কৃষকের লাভ-লোকসান নির্ভর করে। যদি আমাদের দেশে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের সঠিক সংরক্ষণ ও বাজারজাত ব্যবস্থা ভালো হতো তাহলে কৃষকদের লোকসান হতো না এবং কৃষকরা অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারতেন।

HSC কৃষিশিক্ষা ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৬ pdf download

৭. নাজমুল সাহেব একদিন তাদের স্থানীয় বাজারে গিয়ে দেখলেন একজন ফল বিক্রেতা অনেক আম ফেলে দিচ্ছেন। নাজমুল সাহেব ফল বিক্রেতাকে আমগুলো ফেলে দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে ফল বিক্রেতা বললেন যে, আমগুলো পচে গেছে। নাজমুল সাহেব তখন ফল বিক্রেতাকে আম সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বুঝিয়ে বললেন।
ক. ফল সংরক্ষণ কী?
খ. ফল পচনের লক্ষণগুলো কী কী?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত আম পচনের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. 'ফল বিক্রেতার সমস্যার সমাধানে নাজমুল সাহেবের পরামর্শ মূল্যায়ন কর'।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ফলের পুষ্টিমান বজায় রেখে খাওয়ার উপযোগী করে দীর্ঘদিন রাখাকে ফল সংরক্ষণ বলে।

খ. নিচে ফল পচনের লক্ষণগুলো তুলে ধরা হলো-
i. ফলের গায়ে কালো বড় দাগ হয় এবং স্বাভাবিক রঙ পরিবর্তন হয়।
ii. ফল থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং পচা রস নির্গত হয়।
iii. ফলের গায়ে সাদা ও ছাইয়ের মতো ছত্রাকের আবরণ পড়ে।
iv. ফলের স্বাভাবিক স্বাদ নষ্ট হয় এবং ওজন বেড়ে যায়।

গ. উদ্দীপকে আমগুলো পচে গেছে। নিচে আম পচনের কারণগুলো ব্যাখ্যা করা হলো-
১. ফল থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। অর্থাৎ ফলের স্বাভাবিক গন্ধ থাকে না;
২. ফল থেকে দুর্গন্ধযুক্ত ও অবাঞ্ছিত খারাপ রস বের হয়;
৩. ফলের গায়ে সাদা ও ছাইয়ের মতো আবরণ পড়ে, যা জীবাণুর কারণে হয়ে থাকে;
৪. ফলের গায়ে অবাঞ্ছিত বা অনাকাঙি্ক্ষত আঘাতের চিহ্ন দেখা দেয়;
৫. ফলের গায়ে কোনো গর্ত বা ছিদ্র পরিলক্ষিত হয়;
৬. ফল স্বাভাবিক নিয়মে না পেকে অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত পেকে যায়;
৭. খোসা ফলের সঙ্গে হালকাভাবে লেগে থাকে এবং ফলের রং পরিবর্তন হয়;
৮. ফলের স্বাদ পরিবর্তন বা তিক্ত হয় এবং ওজন বেড়ে যায়।

ঘ. উদ্দীপকে ফল বিক্রেতার আমগুলো পচে যাওয়ার কারণে নাজমুল সাহেব ফল বিক্রেতাকে ফল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলেন। নিচে নাজমুল সাহেবের পরামর্শটি মূল্যায়ন করা হলো-
কৃষক কৃষি পণ্য উৎপাদন করে নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে থাকে। এসব কৃষি পণ্য নানাবিধ কারণে সাথে সাথে বিক্রি করা সম্ভব হয়না। কেননা, বাংলাদেশের সব স্থানে একই রকম ফল পাওয়া যায় না। তাই একস্থানে উৎপাদিত ফল অন্যস্থানে পরিবহন করে বাজারজাত করতে হয়। আমাদের দেশের উৎপাদিত ফল সঠিকভাবে সংরক্ষণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ সম্পর্কে অধিকাংশ কৃষকেরা উদাসীন অথবা অনভিজ্ঞ। তাই উৎপাদিত ফল অনেকাংশে সংরক্ষণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণের সমস্যার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। ফল উৎপাদন করার পূর্বে উৎপাদনকারীকে ভোক্তার চাহিদা, রুচি ও ক্রয় ক্ষমতার প্রতি নজর রেখে যতটা সম্ভব সঠিকভাবে ক্রেতার হাতে পৌঁছাতে হবে। আবার অনেক ফল মৌসুম নির্ভর হওয়ার অনেক সময় এগুলোকে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সংরক্ষণ করার প্রয়োজন পড়ে। এসকল সমস্যা সমাধানে নাজমুল সাহেব ফল বিক্রেতাকে ফল সংরক্ষণের পরামর্শ দিলেন। তার এই পরামর্শের ফলে দেশে উৎপাদিত ফল পচনের হাত থেকে রক্ষা পাবে। এর মাধ্যমে দেশে প্রচুর কুটির শিল্প গঠে উঠতে পারে। ফলে দেশে প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে। এতে একদিকে যেমন বেকার সমস্যা সমাধান হতে পারে অন্যদিকে দেশের খাদ্য ও পুষ্টির অভাবও অনেক খানি পূরণ করা সম্ভব হবে। উক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, ফল বিক্রেতাকে নাজমুল সাহেবের দেওয়া পরামর্শটি বর্তমান যৌক্তিক ছিল।

৮. প্রতি বছরই টাঙ্গাইলের মধুপুরে আনারস উৎপাদনের মৌসুমে আনারস পচে যায়। কৃষকরা খুব কম দামে আনারস বিক্রি করেন। আনারস পচনশীল বলে দ্রুত পচে যায়। সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় আনারস চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্র্যাক মধুপুরে বাণিজ্যিকভাবে আনারস প্রক্রিয়াজাত করে মিষ্টিজাতীয় খাদ্য জেলি তৈরির একটি কারখানা করায় আনারস চাষিরা ক্ষতি থেকে রেহাই পায় এবং অনেক বেকার লোকের কর্মসংস্থান হয়।
ক. মোরববা কী?
খ. কিউরিং কেন করা হয় ব্যাখ্যা কর।
গ. ব্র্যাক কীভাবে আনারস দিয়ে মিষ্টি জাতীয় খাদ্য তৈরি করল বিশ্লেষণ কর।
ঘ. ব্র্যাকের কার্যক্রম মূল্যায়ন কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আস্ত কিংবা কাটা অবস্থায় কোনো সবজি বা ফলকে সম্পৃক্ত চিনির রসে ফুটিয়ে তারপর চিনির রসের মধ্যে সংরক্ষিত অবস্থায় রাখলে তাকে মোরববা বলে।

খ. কাটা বা আঘাতপ্রাপ্ত কন্দজাতীয় সবজির কাটাস্থান শুকিয়ে রোগমুক্ত করার জন্য কিউরিং করা হয়। এ কাজটিও ফসল কাটার সাথে সাথে করতে হয়। গোলআলু, মিষ্টি আলু, পিঁয়াজ, আদা, হলুদ প্রভৃতির মূল, বালব ও কন্দজাতীয় সবজিতে এ কাজটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যে তাপমাত্রায় (২০°C) বাতাস (আর্দ্রতা ৮৫%) চলাচল করতে পারে এমন জায়গায় দু-তিন দিন রেখে দিলে, সংগ্রহের কালে সবজির আঘাত পাওয়া জায়গাগুলো সেরে ওঠে। মাঠে এই কাজটা না করতে পারলে ৪০°C তাপমাত্রাসম্পন্ন ঘরে ২ দিন রাখলে কিউরিং সম্পন্ন করা হয়।

গ. ব্র্যাকের আনারস দ্বারা মিষ্টি জাতীয় খাদ্য জেলি তৈরির কৌশল বিশ্লেষণ করা হলো-
আনারসের জেলি তৈরি করার জন্য আনারসকে কেটে টুকরো করতে হয়। এরপর ফলের টুকরোগুলো সামান্য পানি সহযোগে ২০/২৫ মিনিট জ্বাল দিয়ে মিশ্রণটি দু'স্তর মশারির কাপড়ে ছেঁকে ঠান্ডা করে অম্ল ও পেকটিন পরীক্ষা করে নিতে হয়। এরপর ৪৫% রসের সাথে ৫৫% চিনি যোগ করতে হয়। জ্বাল দেওয়ার সময় চিনি কিছুটা ভেঙে যাতে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজে পরিণত হয় সেজন্য এসিড যোগ করতে হয়। তবে যে ফলের পালপ তৈরি করা হবে তাতে যদি অম্লতব আগে হতে থাকে, তাহলে নতুন করে অম্ল যোগ করার প্রয়োজন নেই। জেলি তৈরিতে সাইট্রিক এসিড, ম্যালিক এসিড বা টারটারিক এসিড, ফলভেদে এ তিনটির যেকোনো একটি ব্যবহার করা যায়। ফলের পালপে কতটুকু এসিড আছে তা এক-দশমাংশ নরমাল সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড দ্রবণের সাথে টাইট্রেশন করে নির্ণয় করে নেওয়া যায়। জাল দেওয়ার মাঝে মাঝে রিফ্রাক্টোমিটার দিয়ে সলিডসের পরিমাণ পরখ করে দিতে হয়। সলিডসের পরিমাণ ৬৫% ব্রিক্সে পৌঁছে গেলে ফুটন্ত মিশ্রণ থেকে এক চামচ তুলে উপর থেকে ফেলে দেখতে হবে এটি সিরার মতো গড়িয়ে পড়ছে না শিটের আকারে পড়ছে। শিটের আকার দেখা গেলে চুলা থেকে নামিয়ে জীবাণুমুক্ত জারে ঢেলে উপরে এক স্তর মোম দিয়ে জার সীল করে দিতে হয়। মোমের পরিবর্তে অ্যালকোহলে ভেজানো মোম মাখানো কাগজ দিয়েও জেলির উপরটা ঢেকে দেওয়া যায়। উপরিউক্ত পদ্ধতি অনুযায়ী সহজেই জেলি তৈরি করা যায়।

ঘ. ব্র্যাকের কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হলো-
জীবনধারণের জন্য খাদ্যের ভূমিকা অপরিসীম। খাদ্য ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি না। এই খাদ্য প্রতিনিয়তই নষ্ট হচ্ছে। তাই খাদ্য সংরক্ষণের প্রক্রিয়াজাতকরণের ভূমিকা অনন্য। আর উদ্দীপকে মধুপুরের আনারস যখন সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল তখন ব্র্যাক মধুপুরে বাণিজ্যিকভাবে আনারসের জেলি তৈরির একটি কারখানা করায় আনারস চাষিরা ক্ষতি থেকে রেহাই পায়। ব্র্যাকের উক্ত কার্যক্রমে বিপুল পরিমাণ আনারস সংরক্ষণ করে। তাতে উৎপাদিত আনারসের শুধু-অপচয় রোধ হবে না, এর সাথে গ্রামীণ জনগণের কর্মসংস্থান হবে। অন্য মৌসুমে আনারস পাওয়া যাবে এবং এসব সংরক্ষিত আনারস বিদেশে রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। যে বিপুলসংখ্যক যুবক ও মহিলা বর্তমানে বেকার বা অর্ধ-বেকার এসব উদ্যেগের ফলে তারা যেমন কাজে নিয়োজিত হতে পারে, তেমনি খাদ্য ও পুষ্টির অভাবও অনেকখানি পূরণ হবে। তাই আনারস প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে জেলি তৈরিতে ব্র্যাকের ভূমিকা মধুপুর এলাকার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

৯. সজিব বিশ্ববিদ্যায়ের ছাত্র। তিনি সৌরবিদ্যুতের মেলায় গিয়ে সোলার ড্রায়ারে রোদে করলা শুকাতে দেখেন। মেলার স্টলের দায়িত্বরত ব্যক্তির নিকট থেকে বিষয়টি বিস্তারিত জেনে নেন। তিনি বাসায় গিয়ে সোলার ড্রায়ার তৈরি করে রোদে আলু শুকান। পরবর্তীতে তিনি গাজর, করলা, ঢেঁড়শ, মুলা শুকিয়ে সংরক্ষণ করে সফল হয়েছেন। এখন তিনি বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন সবজি রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ক. কিউরিং কী?
খ. ফল ও সবজি সুষ্ঠুভাবে বাজারজাতকরণের কী করা প্রয়োজন ব্যাখ্যা কর।
গ. সজিব সোলার ড্রায়ার তৈরি করে কীভাবে সবজি সংরক্ষণ করেছিলেন ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সজিবের সিদ্ধান্ত সঠিক কি না বিশ্লেষণ কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কন্দজাতীয় সবজির কাটা স্থান শুকিয়ে রোগমুক্ত করাকে কিউরিং বলে।

খ. ফল ও শাকসবজি পচনশীল বলে এর বাজারজাতকরণ খুব স্পর্শকাতর। কারণ বাজারজাতকরণ সুষ্ঠু না হলে কৃষককের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই ফল ও শাকসবজির সুষ্ঠু বাজারজাতকরণে বাছাই। পরিষ্কারকরণ, গেডিং, প্যাকেজিং, পরিবহন ইত্যাদি সঠিকভাবে প্রয়োজন।

গ. সজিব সোলার ড্রায়ার তৈরি করে রোদে শুকিয়ে সবজি সংরক্ষণ করেছিলেন। নিচে তার সবজি সংরক্ষণ ব্যাখ্যা করা হলো-
১. প্রথমে তিনি অক্ষত ও নরম শাকসবজি পরিষ্কার পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিলেন।
২. সবজি ভেদে খোসা ছাড়িয়ে টুকরা করে নিলেন।
৩. এবার তিনি সবজিগুলোকে ফুটন্ত পানিতে ২-৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখেন।
৮. এরপর সবজিগুলোকে ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে ঠান্ডা করলেন।
৫. এবার তিনি টুকরাগুলো একটি ট্রে বা পলিথিনের উপর পাতলা করে সমানভাবে বিছিয়ে রোদে দিলেন। বাক্সের ভিতর সবজি টুকরা রেখে ভিতরে সোলার ড্রায়ারের পলিথিন কাগজের ঢাকনা দিয়ে রোদে প্রবেশের ব্যবস্থা করে সবজি শুকালেন।
৬. তিনি নির্দিষ্ট সময় পরপর এগুলোকে নেড়ে দিলেন যাতে সমানভাবে শুকায়।
৭. শুকানো সবজিগুলোকে এবার ছায়াতে ঠান্ডা করলেন।
৮. সর্বশেষে তিনি শুকানো সবজি পলিব্যাগে ভরে বায়ুরোধী টিনে সংরক্ষণ করলেন।

ঘ. উদ্দীপকে সজিব বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন সবজি রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল। কারণ- আমাদের দেহের দৈনন্দিন ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে থাকে ফলমূল ও সবজি। কিন্তু মৌসুমে উৎপাদিত সবজির ২৫%-৩০% অনুন্নত বাজার ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের অভাবে পচে যায়। ফলে দেশে প্রতিবছর সবজির ঘাটতি দেখা যায়। এই ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে সবজি সংরক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। সবজি বিভিন্নভাবে সংরক্ষণ করা যায়। যথা- শুকিয়ে, লবণ প্রয়োগ করে, চিনি ও তেলযোগে, সহজলভ্য জৈব এসিড প্রয়োগে ইত্যাদি। উদ্দীপকে সবজি সংরক্ষণের এসকল পদ্ধতির মধ্যে সজিব সোলার ড্রায়ারে সবজি শুকিয়ে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিলেন। শুকিয়ে সবজি সংরক্ষণে তেমন কারিগরি জ্ঞান বা যন্ত্রের প্রয়োজন হয় না আবার পুঁজিও কম লাগে। সহজেই করা যায়। এভাবে সবজি সংরক্ষণে যেমন অর্থের সাশ্রয় হয়, তেমনি কৃষকরা সাশ্রয়ী হন। ফলে উৎপাদিত সবজির শুধু অপচয়ই রোধই নয়, গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থানও হবে। অন্য মৌসুমে সবজি পাওয়া সম্ভব হবে এবং এসব সংরক্ষিত সবজি বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর আয় করা সম্ভব হবে। ফলে দেশে খাদ্য ও পুষ্টিরও অভাব অনেকাংশে দূর হবে। উক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বর্তমান দেশের সবজির চাহিদা পূরণে কম খরচে সজিবের সবজি সংরক্ষণের পদ্ধতিটি সঠিক ছিল।

১০. কামাল বগুড়ার নতুন আলু চাষী হলেও ফলন ভালো হয়েছে। শ্রমিকের মূল্য অনেক বেশি বলে সংগ্রহত্তোর ব্যবস্থাপনা না করে মাটির নিচ থেকে আলু সংগ্রহ করে সরাসরি বস্তায় উঠিয়ে বাড়িতে ঠান্ডা স্থানে সংরক্ষণ করেছেন। সংরক্ষণের দুই মাস পর বস্তা থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। কামাল বস্তার মুখ খুলে দেখেন অনেক আলু পচে যাচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা পরামর্শ দিলেন আলু পরিষ্কার করে গ্রেডিং ও কিউরিং করে হিমাগারে সংরক্ষণ করতে। কেউ কেউ আলু বিক্রি করতে বললেন। কেউ বললেন খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ করতে।
ক. সবুজ সার কী?
খ. মালচিং কেন করা হয়?
গ. কামালের আলু সংরক্ষণে কী করণীয় ছিল ব্যাখ্যা কর।
ঘ. কামাল এখন কী করবে যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শিমজাতীয় উদ্ভিদকে নির্দিষ্ট বয়সে সবুজ ও সতেজ অবস্থায় চাষের মাধ্যমে মাটির নিচে ফেলে পচানোর ব্যবস্থা করলে যে জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ বস্তুর সৃষ্টি হয় তাকে সবুজ সার বলে।

খ. জমির মাটি ঢেকে রাখাকে মালচিং বা জাবড়া প্রয়োগ বলে। মাটির ঝুরঝুরে করেও মালচিং করা যায়। লতাপাতা, খড়কুটা, কচুরিপানা দিয়ে মাটি ঢেকে রাখলে বৃষ্টির পানি প্রবাহ ও বায়ুপ্রবাহে মাটি অপসারিত হয় না। মালচিং মাটিতে সরাসরি রোদ প্রতিরোধ করে নাইট্রোজেন সংরক্ষণ করে, এবং এর পচনে মাটিতে জৈব পদার্থের সংযোগ ঘটে। এসকল কারণে মালচিং করা প্রয়োজন।

গ. কামালের আলু সংরক্ষণের করণীয় নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
১. প্রথম আলু মাটি থেকে সংগ্রহ করে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ছায়াযুক্ত স্থানে আলু সংরক্ষণ করতে হতে।
২. তারপর আলুর কাঁটা, ফাটা, পচা, খারাপ আলু বাছাই করতে হতো।
৩. সরাসরি সূর্যের আলো যেন আলুতে না পারে তাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হতো।
৪. তাকে আলু কাটা বা আঘাতপ্রাপ্ত স্থান শুকিয়ে রোগমুক্ত করতে হতো।
৫. এরপর আলু বস্তা ভর্তি না রেখে তাকে মেঝে বা চাটাইয়ে ছড়িয়ে রাখতে হতো।
৬. প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় আলু শুকিয়ে আর্দ্রতা কমানোর ব্যবস্থা করতে হতো।
৭. এছাড়া তাকে দীর্ঘসময় আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগারে রাখতে হতো।

ঘ. কামালের আলু সংরক্ষণের পদ্ধতিটি সঠিক ছিল না। যার কারণে অনেক আলু পচে নষ্ট হয়ে যায়। যেহেতু সবজি জাতীয় ফসলে একবার পচন ধরলে তা রোধ করা সম্ভব হয় না। তাই কৃষি কর্মকর্তা কামালকে আলু পরিষ্কার করে গেডিং ও কিউরিং করে হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পরামর্শ দিলেন। গেডিং হলো কাটা, ফাটা, পচা ও খারাপ আলু পৃথক করা এবং কিউরিং হলো ক্ষতস্থান শুকিয়ে রোগমুক্ত করা। এতে তার আলু বেশিদিন সংরক্ষণ করা সম্ভব হতো। অন্যদিকে কেউ কেউ কামালকে আলু বিক্রি করে দিতে বললেন। এতেও আলুর গুণগত মান খারাপ হওয়ায় আলুর বাজারমূল্য তিনি বেশি পাবেন না। এই দুটি ব্যবস্থার চেয়ে আলু প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ করাই কামালের জন্য বেশি উপযোগী বলে আমি মনে করি। কারণ তার উৎপাদিত আলু প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হলে আলুর পচন ও অপচয় অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব। এজন্য খুব উন্নত প্রযুক্তি ও বেশি পুঁজির দরকার হয় না। তাছাড়া আলু দিয়ে প্রক্রিয়াজাতকৃত আলুর চিপস ও ফ্রেন্সফাই একটি চমৎকার ও সুস্বাদু মুখরোচক খাবার। এগুলো ছোট বড় সকলের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ও মজাদার খাদ্য। আর এভাবে প্রক্রিয়াজাতকৃত খাদ্য দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। তাই আমার মতে আলু গেডিং, কিউরিং, বাজারে বিক্রির চেয়ে আলু প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণই বেশি যুক্তিযুক্ত হবে।

Share:

0 Comments:

Post a Comment

২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি

HSC Exam Routine

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির গাইডসমূহ
(সকল বিভাগ)
বাংলা ১ম পত্র ১ম পত্র গাইড | বাংলা ২য় পত্র গাইড | লালসালু উপন্যাস গাইড | সিরাজুদ্দৌলা নাটক গাইড | ইংরেজি ১ম পত্র গাইড | ইংরেজি ২য় পত্র গাইড | আইসিটি গাইড | হিসাব বিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | হিসাব বিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | জীববিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | জীববিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র গাইড | ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র গাইড | রসায়ন ১ম পত্র গাইড | রসায়ন ২য় পত্র গাইড | পৌরনীতি ১ম পত্র গাইড | পৌরনীতি ২য় পত্র গাইড | অর্থনীতি ১ম পত্র গাইড | অর্থনীতি ২য় পত্র গাইড | ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বীমা ১ম পত্র গাইড | ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বীম ২য় পত্র গাইড | ভুগোল ১ম পত্র গাইড | ভুগোল ২য় পত্র গাইড | উচ্চতর গণিত ১ম পত্র গাইড | উচ্চতর গণিত ২য় পত্র গাইড | ইতিহাস ১ম পত্র গাইড | ইতিহাস ২য় পত্র গাইড | ইসলামের ইতিহাস ১ম পত্র গাইড | ইসলামের ইতিহাস ২য় পত্র গাইড | কৃষি শিক্ষা ১ম পত্র গাইড | কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র গাইড | যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র গাইড | যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র গাইড | মনোবিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | মনোবিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | পদার্থ বিজ্ঞান ১ম পত্র গাইড | পদার্থ বিজ্ঞান ২য় পত্র গাইড | উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বাজারজাতকরণ ১ম পত্র গাইড | উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বাজারজাতকরণ ২য় পত্র গাইড | সমাজকর্ম ১ম পত্র গাইড | সমাজকর্ম ২য় পত্র গাইড | সমাজবিদ্য ১ম পত্র গাইড | সমাজবিদ্যা ২য় পত্র গাইড | পরিসংখ্যান ১ম পত্র গাইড | পরিসংখ্যান ২য় পত্র গাইড | ইংরেজি শব্দার্থ VOCABULARY

Admission Guide