এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 2nd paper Srijonshil Proshno Uttor.
উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
দ্বিতীয় পত্র
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৯
HSC Geography
2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download
১. বাংলাদেশে এক সময় গৃহস্থালির রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে প্রচুর গাছপালা ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই গাছপালার পরিবর্তে একটি খনিজ ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন বনজসম্পদ রক্ষা পেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাচ্ছে অন্যদিকে তেমনি কালো ধোয়ার হাত থেকে বায়ুদূষণ রোধ হচ্ছে।
ক. বায়ুদূষণের একটি উৎসের নাম লেখ।
খ. দরিদ্রতা অর্থনৈতিক দূষণের ফল- ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত খনিজের বাংলাদেশে ভৌগোলিক অবস্থান ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যের তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বায়ুদূষণের একটি অন্যতম উৎস হলো শিল্পকারখানার ধোঁয়া।
খ. দরিদ্রতা অর্থনৈতিক দূষণের ফল।
অর্থনৈতিক দূষণের প্রত্যক্ষ ফল হলো দরিদ্রতা। যেকোনো দেশের সার্বিক উন্নয়নের চাবিকাঠি হলো অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। বিভিন্ন কারণে যখন অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাধাগ্রস্ত হয় অর্থাৎ দূষণের সম্মুখীন হয় তখন উন্নয়ন থমকে দাঁড়ায় আর উন্নয়ন থমকে দাড়ালে একটি দেশে দরিদ্রতা নেমে আসে। কারণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে সামগ্রিক উন্নয়ন সাধিত হয় এবং দারিদ্রতা দূরীকরণ হয়। তাই বলা যায়, দরিদ্রতা অর্থনৈতিক দূষণের ফল।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত খনিজটি হলো প্রাকৃতিক গ্যাস যার ভৌগোলিক অবস্থান নিচে দেখানো হলো।
বাংলাদেশের আবিষ্কৃত প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রসমূহ দেশের উত্তর-পূর্বাংশ, পূর্ব বাংলা এবং দক্ষিণ-পূর্বাংশের বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত।
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রসমূহের মধ্যে সিলেট, ছাতক, রশিদপুর, তিতাস, কৈলাসটিলা, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ, সেমুতাং, বেগমগঞ্জ, কুতুবদিয়া, বিয়ানীবাজার, ফেনী, কামতা, ফেঞ্চুগঞ্জ, জালালাবাদ, বেলাবো, মেঘনা, শাহবাজপুর, সাগু, বিবিয়ানা, সুন্দলপুর, শ্রীকাইল ও বাগুরা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
এদের মধ্যে সিলেটের হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রটি বাংলাদেশের প্রথম আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্র, যা ১৯৫৫ সালে আবিষ্কৃত হয়।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটির সারমর্ম হলো প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন বনজসম্পদ রক্ষা পায় অন্যদিকে তেমনি কালো ধোঁয়ার হাত থেকে বায়ুদূষণ রোধ হয়।
বাংলাদেশে ব্যাপক হারে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়। শিল্প ক্ষেত্রে এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার লক্ষ করা যায়। ফলে জ্বালানির কাজে ব্যবহৃত কাঠের বিকল্প হিসেবে গ্যাস অধিক গ্রহণযোগ্য। এর ফলে কাঠের ব্যবহার হ্রাস পায় যার ফলে বনজসম্পদ রক্ষা পায়। জ্বালানি হিসেবে কাঠ, কয়লার ব্যবহার অধিক হারে বায়ুদূষণ, করে। কিন্তু প্রাকৃতিক গ্যাসের কোনো কালো ধোয়া নেই। ফলে প্রাকৃতিক গ্যাসের অধিক ব্যবহারের ফলে যেহেতু কাঠের ব্যবহার কম হয় তাই একদিকে যেমন বনজসম্পদ রক্ষা পায় অন্যদিকে কালো ধোয়া না থাকার বায়ুদূষণ রোধ হয়।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি সঠিক।
২. শিহাব টঙ্গীতে তার চাচার বাসায় বেড়াতে এসে দেখল মামাতো দুই ভাই পেটের পীড়ায় ভুগছে। সে জানতে পারল যে, ঐ এলাকায় লোকজন প্রায়শই আমাশয়, টাইফয়েড প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত হয়।
ক. বায়ুদূষণ কী?
খ. মানবসৃষ্ট দূষণ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দূষণের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উল্লিখিত দূষণ প্রতিরোধের উপায়সমূহ বিশ্লেষণ কর।
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রাকৃতিকভাবে বা মানুষের সৃষ্ট কর্মকান্ডের ফলে সৃষ্ট ক্ষতিকর ও বিষাক্ত পদার্থের দ্বারা বায়ুমন্ডলের দূষণকে বায়ুদূষণ বলে।
খ. মানুষের কর্মকান্ডের ফলে পরিবেশের স্বাভাবিক অবস্থা থেকে অস্বাভাবিক অবস্থার রূপান্তর ঘটে যে দূষণ সৃষ্টি হয়, তাই মানবসৃষ্ট দূষণ।
কলকারখানা নির্মাণ, অপরিকল্পিত বাসস্থান, বন উজাড়, ইটভাটা তৈরি, অবৈজ্ঞানিক কৃষিব্যবস্থা, মাইকিং, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাত্রাতিরিক্ত শব্দে গান-বাজনা প্রভৃতি মানবসৃষ্ট দূষণের কারণ।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দূষণটি হলো পানি দূষণ। উদ্দীপকে শিহাবের চাচার বাসা টঙ্গীর তুরাগ নদীর পাড়ে।
উদ্দীপকের শিহাব টঙ্গীতে চাচার বাসায় বেড়াতে এসে তুরাগ নদীর পানির রং দেখে বিস্মিত হয়। ঢাকায় পাশের টঙ্গী এলাকায় বেশিরভাগ বর্জ্য পদার্থগুলো নিঃসরণের জায়গা পর্যাপ্ত না থাকার কারণে মানুষ অসচেতনতার কারণে তুরাগ নদীতে ফেলে দেয়। দীর্ঘদিন নদীতে এরকম বর্জ্য পদার্থ ফেলার কারণে নদীর পানি দূষিত হয়। এরকম প্রতিনিয়ত গৃহস্থালি ও শিল্পকারখানার বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থ এবং জাহাজ থেকে নিঃসরিত তেল ফেলার কারণে পানির স্বাভাবিক রং পরিবর্তিত হয়ে অস্বাভাবিক রঙে চলে আসে।
এছাড়া তুরাগ নদীর আশেপাশে বিভিন্ন শিল্পকারখানা থাকায় এসব শিল্প অঞ্চল থেকে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ সরাসরি নদীতে চলে আসে। এ কারণেও নদীর পানির রং পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু এ পানির রং পরিবর্তন হয়েছে দীর্ঘদিনের বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণের কারণে।
ঘ. উদ্দীপকে তুরাগ নদীর পানি দূষণের কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকার গৃহস্থালি ও শিল্পকারখানার বর্জ্য এ নদীর পানিকে দূষিত করছে। তুরাগ নদীর এ সমস্যা সমাধানে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তুরাগ নদীকে বাঁচাতে নদীর তীরবর্তী ফসলি জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং গৃহস্থালি ও শিল্পকারখানার নির্গত বর্জ্য যাতে নদীর পানিতে না মিশে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। এ শিল্পকারখানার রং, গ্রিজ, রাসায়নিক দ্রব্য; উষ্ণ পানি ইত্যাদি যাতে নদীর পানিতে না মিশে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গৃহস্থালি ও শিল্পকারখানার বর্জ্য নদীর পানিতে না ফেলে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। বিভিন্ন উৎস থেকে দূষিত পানি শোধনকেন্দ্র বা ‘ট্রিটমেন্ট প্লান্ট' এ পাইপযোগে সরবরাহ করে এ কেন্দ্রগুলোতে ময়লা পানিকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবর্জনা ও দূষণমুক্ত করার পর নদীতে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া উক্ত সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় সরকারি বেসরকারি পরিকল্পনা প্রণয়ন, পদক্ষেপ গ্রহণ এবং গবেষণা ও বাস্তবায়ন কার্যক্রম চালাতে হবে। তবেই আমাদের তুরাগ নদীসহ বিভিন্ন নদীর দূষণ রোধ সম্ভব হবে।
৩. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক. মানবসৃষ্ট দূষণ কাকে বলে?
খ. শিল্পবর্জ্য বুড়িগঙ্গার পানিদূষণের অন্যতম কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘ক’ অঞ্চলের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাব্য প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ‘খ’ অঞ্চলে সংঘটিত দুর্যোগসমূহ সংঘটনের কারণ ও ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে রক্ষার উপায় বিশ্লেষণ কর।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের কর্মকান্ডের ফলে পরিবেশের স্বাভাবিক অবস্থা থেকে অস্বাভাবিক অবস্থার রূপান্তর ঘটে যে দূষণ সৃষ্টি হয় তাই মানবসৃষ্ট দূষণ।
খ. শিল্পবর্জ্য বুড়িগঙ্গার পানিদূষণের অন্যতম কারণ।
ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন শিল্প-কারখানা যেমন- রং ও প্লাস্টিক শিল্প, বস্ত্র শিল্প, লৌহজাতীয় ধাতু, ওষুধ প্রভৃতি শিল্প হতে নির্গত বর্জ্যসমূহ পয়ঃনিষ্কাশন লাইনের মাধ্যমে বুড়িগঙ্গার পানিতে মিশেছে। ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানে গঠিত এসব শিল্পবর্জই বুড়িগঙ্গার পানিকে দূষিত করছে।
গ. উদ্দীপকে ‘ক’ চিহ্নিত অঞ্চলে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীর প্রত্যক্ষ প্রভাব থাকায় এখানে বন্যা ও নদীভাঙন নামক প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। নদী বিধৌত অঞ্চল বলে এখানে বর্ষাকালে বন্যার পানি এসে নদীর স্রোত বাড়িয়ে দেয় ফলে এসব অঞ্চলে নদীভাঙন পরিলক্ষিত হয়। বন্যা ও নদীভাঙনের প্রভাবে এসব এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে এসব এলাকায় ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস তেমন একটা দেখা যায় না। নিচে ‘ক’ চিহ্নিত অঞ্চল অর্থাৎ পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদী বিধৌত অঞ্চলে বন্যা ও নদীভাঙনের সম্ভাব্য প্রভাব নিচে আলোচনা করা হলো-
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বন্যা অন্যতম। এর ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, এমনকি মানুষের প্রাণহানিও ঘটতে পারে। এছাড়া স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। পশুপাখির জীবন বিনষ্ট ও বিপন্ন হয়। ১৯৭৪, ১৯৭৮, ১৯৮৪, ১৯৮৮, ১৯৯৮, ২০০০, ২০০৪ সালে অঞ্চলটিতে বন্যার প্রভাব ছিল ভয়াবহ।
উদ্দীপকের ‘ক’ অলটিতে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি প্রধান নদীর সম্মিলিত প্রভাবে নদীভাঙন একটি নিয়মিত ঘটনা। প্রতিবছর এ অঞ্চলে নদীভাঙনের ফলে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন লোক প্রত্যক্ষভারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ মানুষ গৃহহীন, হয়ে পড়ে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এছাড়াও প্রতিবছর প্রচুর জমি নদীভাঙনে নিঃশেষ হয়ে যায়।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের ‘ক’ অঞ্চলটিতে বন্যা ও নদীভাঙনের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ করা যায়।
ঘ.উদ্দীপকের ‘খ’ অঞ্চলটি হলো বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চল, যা ভৌগোলিকভাবে দুর্যোগপ্রবণ।
উদ্দীপকের অঞ্চলটিতে প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানে। মূলত ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ুগত কারণেই এ অঞ্চল তাধিক দুর্যোগপ্রবণ।
বাংলাদেশ ক্রান্তীয় অঞ্চলের একটি দেশ। তাই এখানে প্রায় প্রতিবছর ক্রান্তীয় গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় এবং এর প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক বন্যা ও জলোচ্ছাস দেখা যায়। এছাড়া বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে। সর্বোপরি বাংলাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত বঙ্গোপসাগর ফানেল (Cone) আকৃতিবিশ্চিন্ট হওয়ার কারণে অঞ্চলটি অধিক দুর্যোগপ্রবণ।
উদ্দীপকের অঞ্চলটিতে সংঘটিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস প্রভৃতি থেকে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে রক্ষার জন্য দুর্যোগ পরবর্তীতে সাড়াদান ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। দুর্যোগ পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া, জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ, ব্যাপক তল্লাশি ও উদ্ধার তৎপরতা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম প্রভৃতি সাড়াদান পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। আবার দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে চিহ্নিত করে তাদের চিকিৎসাসেবা, বাসস্থান ও খাবারের ব্যবস্থা করা, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব।
৪. জাহিদ জেএসসি পরীক্ষা শেষে মাগুরা থেকে টঙ্গী শিল্প এলাকায় তার খালার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিল। পাশের নদীতে গোসল করতে চাইলে তার খালা জানাল ঐ নদীর পানি গোসল করা তো দূরের কথা গৃহস্থালিসহ তেমন কোনো কাজেই ব্যবহার করা যায় না। পরে সে নদীর কাছে গিয়ে দেখল পানি কালচে ও দুর্গন্ধযুক্ত।
ক. দূষণ কী?
খ. বায়ুদূষণের কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দূষণ পরিবেশের ওপর কী বিরূপ ফেলছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দূষণরোধে কী কী বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত? বিশ্লেষণ কর।
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বিভিন্ন কারণে পরিবেশের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের যেকোনো নেতিবাচক পরিবর্তনই হলো দূষণ।
খ. পৃথিবীকে সর্বদা আবৃত করে রাখা বিরাজমান কতিপয় গ্যাসীয় উপাদানকে বায়ু বলে। বায়ুমন্ডলের মধ্যে যখন দূষিত ধোঁয়া, গ্যাস, বাম্প ইত্যাদি অনিষ্টকর উপাদানের সমাবেশ ঘটে এবং যার দরুন মানুষ, জীবজন্তু ও উদ্ভিদজগতের ক্ষতি হয়, তখন তাকে বায়ুদূষণ বলে।
মানবসৃষ্ট কতিপয় কর্মকান্ডে বায়ু দূষিত হয়। যেমন মোটর যানবাহন, শিল্পকারখানা, পাওয়ার প্লান্ট, ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন (CFC), আবর্জনাসমূহ; মোটর যানবাহন থেকে হাইড্রোকার্বন, নাইট্রোজেন অক্সাইড উৎপন্ন; শিল্পকারখানা থেকে উৎপন্ন বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস যা বায়ুর সাথে মিশে বায়ুকে দূষিত করে। এছাড়া রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার প্রভৃতি ব্যবহারের কারণে কার্বন মনোঅক্সাইড উৎপন্ন হয় যা বায়ুকে মারাত্মকভাবে দূষিত করে।
গ. উদ্দীপকে জাহিদের বেড়াতে আসা টঙ্গীর তুরাগ নদীর পানি দূষণের কথা বলা হয়েছে। উক্ত পানিদূষণ পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাববিস্তার করছে।
তুরাগ নদীর পানিতে ঐ অঞ্চলের শিল্প কারখানা থেকে পরিত্যক্ত বিষাক্ত পদার্থ মিশে নদীর পানিকে বিষাক্ত করেছে যা মানবজীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। অনেকেই ঐ নোংরা পানি দিয়ে থালাবাসন পরিস্কার করছে যা পরবর্তীতে তাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে। আবার অনেকে উক্ত নদীতে গোসল করছে। এতে তাদের ত্বকের ওপর সমস্যার সৃষ্টি হবে। তাছাড়া উক্ত দূষিত পানিতে কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব টিকে থাকবে না যা বাস্তুসংস্থানের ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে। আবার উক্ত দূষিত পানি মাটির সংস্পর্শে থাকায় মাটিও দূষিত হচ্ছে।
সর্বোপরি উক্ত দূষণের কারণে প্রাণী ও উদ্ভিদকুলের ওপর হুমকির মুখে পড়ছে।
ঘ. উদ্দীপকে পানিদূষণের কথা বলা হয়েছে। উক্ত দূষণরোধে যেসব বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে তা নিচে আলোকপাত করা হলো-
শহর ও বন্দরের আবর্জনা ও নর্দমার জঞ্জালসমূহ নদী ও খালবিলে গড়িয়ে পড়ার আগে শশাধন করতে হবে। জীবজন্তুর মৃতদেহ পানিতে পচে পানি যাতে দূষিত হতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। শিল্প ও কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ পানিতে পড়ার আগেই তা দূষণমুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কীটনাশক, ছত্রাকনাশক, আগাছানাশক ও রাসায়নিক সারের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। তেলবাহী জাহাজ ও ট্যাংকার হতে তেল যাতে নদীতে না পড়ে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। প্লাস্টিক, পলিথিন, রবার ও অ্যাসবেস্টস যেখানে সেখানে না ফেলে গর্তে পুঁতে মাটি চাপা দিয়ে রাখতে হবে। শিল্পকারখানার বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের নির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। আইনগত কঠোর ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে।
সুতরাং বলা যায়, উল্লিখিত বিষয়গুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করলে পানিদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি।
৫. ঈশী তাদের ঘরের খাটের ওপর শুয়ে বই পড়ছিল। হঠাৎ সে লক্ষ করল খাটটি এদিক-ওদিক প্রচন্ড বেগে কাঁপছে। সে দেওয়ালে চোখ রাখতেই দেখে দেওয়াল ঘড়ি ও অন্যান্য জিনিসপত্রও নড়ছে। তাড়াতাড়ি সে তার মাকে ডাকল, মা এসে ঘরের অন্য কক্ষের আসবাবপত্রগুলোও দুলছিল বলে জানায়।
ক. পুনরুদ্ধার শব্দের অর্থ কী?
খ. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সাড়াদান কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. ঈশীর লক্ষ করা বিষয়টির সাথে যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মিল রয়েছে তার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নির্ণয় কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে? মতামতের সপক্ষে যুক্তি দাও।
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পুনরুদ্ধার শব্দের অর্থ হচ্ছে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।
খ. সাড়াদান বলতে নিরাপদ স্থানে অপসারণ, তল্লাশি ও উদ্ধার, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রভৃতি কার্যক্রমকে বোঝায়।
সাড়াদান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার একটি অংশমাত্র। দুর্যোগের পর পরই উপযুক্ত সাড়াদানের প্রয়োজন হয়। এ চক্রটি মূলত দুর্যোগ আরম্ভ হওয়ার পর পরই শুরু হয়। এটি দুর্যোগ ব্যবস্থার ৩য় ধাপ।
গ. ঈশীর লক্ষ করা বিষয়টির সাথে যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মিল রয়েছে তা হলো ভূমিকম্প।
বাংলাদেশ তেমন ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল নয়। তবে বাংলাদেশের পূর্বাংশের টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ, উত্তর ও পূর্ব দিকের কিছু পাহাড়ি অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ।
বাংলাদেশের উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত স্বল্প ভাঁজবিশিষ্ট ভঙ্গিল প্রকৃতির পাহাড়গুলো বেলেপাথর, শেলপাথর ও কর্দম দ্বারা গঠিত। গঠনগত কারণে এ চত্বর ভূমিকম্প প্রবণ। ভূতাত্ত্বিক গঠনগত দিক দিয়ে বাংলাদেশের উত্তর ও পূর্ব দিকও যথেষ্ট ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। উত্তরে হিমালয় চত্বর এবং মালভূমি, পূর্বে মায়ানমার আরাকান ইয়োমার অস্তিত্ব এবং উত্তর-পূর্বে নাসা-দিসাং-জাফলং অঞ্চলের সংশিস্নষ্টতা দেশটিকে অনেক বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ করে তুলেছে।
ঘ. যেহেতু ভূমিকম্প প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় সেহেতু ভূমিকম্পের মতো আকস্মিক বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অবশ্যই কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
ভূমিকম্প একটি আকস্মিক দুর্যোগ তাই এর থেকে উদ্ধার পাওয়া খুবই জটিল বিষয়। নিম্নবর্ণিত পদক্ষেপসমূহ অবলম্বন করলে মোটামুটিভাবে পাওয়া যাবে।
ভূমিকম্প সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচার করা। সারাদেশে ভবন নির্মাণে জাতীয় বিল্ডিং কোড এবং কোডের কাঠামোগত অনুসরণ বাধ্যতামূলক করা। ঢাকা শহরে রাজউকের ভবন নির্মাণ পস্ন্যান অনুমোদনের নীতিমালা যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। সারাদেশে রাস্তা প্রশস্ত করা। ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে উদ্ধার কাজে ব্যবহারের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো কর্তৃক তালিকা অনুযায়ী যন্ত্রপাতি প্রত্যেক জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সংরক্ষণ করা। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাসমূহে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা। দুর্যোগকবলিত এলাকায় উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য নৌবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীতে ডগ স্কোয়াড রাখা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন ও মহড়া অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা।
উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো ভূমিকম্প পরবর্তী পর্যায়ে জীবন ও সম্পদ সংরক্ষণে খুবই কার্যকর। তাই আমি মনে করি প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ আমাদের ভূমিকম্পের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে পারে।
৬. ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ সাহেবের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌভ্রমণে যায়। সেখানে তারা নদীর পানির স্বাভাবিক রং না দেখে রীতিমতো বিস্মিত হয়।
ক. পরিবেশ কাকে বলে?
খ. মাটি দূষিত হয় কীভাবে? ব্যাখ্যা কর।
গ. শিক্ষার্থীদের দেখা নদীটির পানির রং স্বাভাবিক নয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের উল্লিখিত নদীর পানির রং স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন? তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পৃথিবীপৃষ্ঠের বিভিন্ন উপাদান, পৃথিবীকে বেষ্টনকারী বায়ুমন্ডলীয় উপাদান এবং পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কীয় ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াই হচ্ছে পরিবেশ।
খ. প্রাকৃতিক অথবা মানবসৃষ্ট কারণে মাটির স্বাভাবিক কার্যকারিতা যখন নষ্ট হয় তখন তাকে মাটিদূষণ বলে।
মাটিদূষণ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন- পশুপাখির খামারের মলমূত্র, কীটনাশক ও রাসায়নিক সার, মৃতজীবের ধ্বংসাবশেষ, তাপবিদ্যুৎ ও পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রের প্রভাব, ভূগর্ভস্থ পানির ঘাটতি প্রভৃতি উপাদানগুলো দ্বারা মাটি দূষিত হয়। এসব উপাদানগুলো মাটির সাথে মিশে মাটির স্বাভাবিক কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয় বলে মাটিদূষণ ঘটে।
গ. বুড়িগঙ্গা নদীটির এরকম অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে মানবসৃষ্ট কিছু কর্মকান্ডের কারণে।
উদ্দীপকের শিক্ষার্থীরা ঢাকার দক্ষিণে বুড়িগঙ্গা নদীর পানির রং দেখে বিস্মিত হয়। ঢাকা মহানগরীর বেশিরভাগ বর্জ্য পদার্থগুলো নিঃসরণের জায়গা পর্যাপ্ত না থাকার কারণে মানুষ অসচেতনতার কারণে বুড়িগঙ্গ নদীতে ফেলে দেয়। দীর্ঘদিন নদীতে এরকম বর্জ্য পদার্থ ফেলার কারণে নদীর পানি দূষিত হয়। এরকম প্রতিনিয়ত বর্জ্য পদার্থ, রাসায়নিক পদার্থ এবং জাহাজ থেকে নিঃসরিত তেল ফেলার কারণে পানির স্বাভাবিক রং পরিবর্তিত হয়ে অস্বাভাবিক রঙে চলে আসে।
এছাড়া বুড়িগঙ্গা নদীর আশেপাশে বিভিন্ন শিল্পকারখানা, জাহাজ নির্মাণ কারখানা থাকায় এসব শিল্পাঞ্চল থেকে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ সরাসরি নদীতে চলে আসে। এ কারণেও নদীর পানির রং পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু এ পানির রং পরিবর্তন হয়েছে দীর্ঘদিনের বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণের কারণে।
ঘ. উদ্দীপকের বুড়িগঙ্গা নদীর পানির রং অস্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। উক্ত অস্বাভাবিকতা দূরীকরণে নিমেণাক্ত পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে-
বুড়িগঙ্গা নদীর নাব্যতা বাড়াতে হবে অর্থাৎ ড্রেজিং এর মাধ্যমে নদীর গভীরতা বাড়িয়ে এর স্রোত প্রবাহের গতি বৃদ্ধি করতে হবে। ঢাকা মহানগরীর ময়লা, আবর্জনা, বর্জ্য পদার্থ, শিল্প থেকে নির্গত রাসায়নিক পদার্থ সরাসরি নদীতে ফেলা বন্ধ করতে হবে।
বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী যেসব বসতবাড়ি রয়েছে তারা যাতে বর্জ্য পদার্থ নদীতে ফেলতে না পারে এর জন্য প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া বুড়িগঙ্গার তীরে যে জাহাজ নির্মাণ কারখানা রয়েছে সেটি সরিয়ে অন্যত্র নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
সুতরাং বুড়িগঙ্গা নদীর পানিকে দূষণমুক্ত করতে উক্ত পদ্ধতিগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা জরুরি। এছাড়া শহরের প্রতিটি নাগরিককে সচেতনতামূলক বিভিন্ন বিষয় জানাতে হবে এবং আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দূষণ রোধ করার সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। সরকার ও জনগণ একত্রে কাজ করলে উক্ত নদীর দূষণ হতে রক্ষা পাওয়া সম্ভব এবং নদীর রং স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আনা সম্ভব।
৭. লিলিদের বাসার পাশে একটি কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কারখানাটিতে বিকট শব্দ হয়। ফলে এলাকাবাসীর সমস্যা হচেছ। এলাকাবাসী এ সমস্যার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ পেশ করে।
ক. মানুষের স্বাভাবিক শ্রবণশক্তি কত?
খ. কৃষি ক্রিয়াকলাপ কীভাবে পানি দূষণ করে?
গ. উদ্দীপকে লিলিদের এলাকার পরিবেশের কোন উপাদান দূষিত হচ্ছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে লিলিদের এলাকার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিগত উপায় সুপারিশ কর।
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের স্বাভাবিক শ্রবণশক্তি ৫৫-৬০ dB।
খ. কৃষি ক্রিয়াকলাপের ফলে পানি দূষিত হয়।
কৃষি জমিতে যে রাসায়নিক সার ও কীট-পতঙ্গ নাশক ব্যবহার করা হয় তা বৃষ্টির পানিতে মিশে নদীতে পড়ে এবং নদীর পানি দূষিত করে। পরে নদীর দূষিত পানি সমুদ্রে পড়ে সমুদ্রের পানিও দূষিত করে। এভাবে কৃষিকাজের ফলে পানি দূষিত হয়।
গ. উদ্দীপকে লিলিদের এলাকার পরিবেশে কারখানার বিকট শব্দে শব্দদূষণ হচ্ছে।
শব্দদূষণ মানবস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। মানুষের উচ্চৈঃস্বরে কথা বলার শব্দ, মাইক, বিমান ওড়ার সময় সৃষ্ট শব্দ, জেনারেটর চলার শব্দ, কারখানার মেশিনের শব্দ, আতশবাজি ইত্যাদি শব্দদূষণের প্রধান কারণ। জনসংখ্যা ক্রমবৃদ্ধি, মানুষের ব্যক্তিগত অদূরদর্শী ক্রিয়াকলাপ, পরিবহন ব্যবস্থার অবাধ বিস্তার, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার ত্রুটি এবং ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে লাউড স্পিকারে বিবর্ধিত শব্দের ব্যাপকতায় শব্দদূষণ বর্তমানে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বর্তমানের যান্ত্রিক সময়ের কলকারখানার সংখ্যা দ্রুতগতিতে বেড়ে চলছে। আর এসব কলকারখানা আবার আবাসিক এলাকায়ও গড়ে উঠছে। যার ফলে কলকারখানা থেকে সৃষ্ট বিকট শব্দ শব্দদূষণের সৃষ্টি করেছে যা জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলছে।
পরিশেষে বলা যায় যে, উদ্দীপকে লিলিদের এলাকায় কলকারখানা থেকে সৃষ্ট শব্দ দ্বারা পরিবেশে শব্দ দূষণের সৃষ্টি হচ্ছে।
ঘ. উদ্দীপকে লিলিদের এলাকায় সৃষ্ট শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিগত উপায়গুলো নিচে সুপারিশ করা হলো-
কারখানা বা শিল্প সংস্থার সুরবর্জিত শব্দ উৎপন্নকারী মেশিন বা যন্ত্রপাতি অপেক্ষাকৃত উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন এবং কম শব্দ উৎপন্নকারী মেশিন বা যন্ত্রপাতি দ্বারা প্রতিস্থাপিত করে উৎসস্থলে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কারখানা বা শিল্প সংস্থায় সুববর্জিত শব্দ উৎপন্নকারী মেশিন বা যন্ত্রপাতি শব্দ অপরিবাহী বস্তুর দ্বারা আচ্ছাদিত করে শব্দদূষণ হ্রাস করা যায়।
শব্দদূষণ স্থলে শব্দ প্রতিরোধক ডিভাইস যথা ইয়ারমাফ ব্যবহার করে শব্দদূষণের প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করা যায়। শব্দ প্রতিরোধক ডিভাইস শব্দ প্রতিরক্ষা কৌশল (Hearing Portection Device) বা (HPD) নামেও পরিচিত। প্রধানত তিন ধরনের HPD পাওয়া যায় যথা- (ক)
ইয়ার প্লাগ (Ear plugs), (খ) ক্যানাল ক্যাপ (Canal Caps) এবং (গ) ইয়ার মাফ (ear muff)। ‘ইয়ার প্লাগ’ কম স্পন্দনযুক্ত এবং ‘ইয়ার মাপ’
অধিক স্পন্দনযুক্ত শব্দের ক্ষেত্রে অধিক উপযোগী। শব্দের তীব্রতা 90dB-এর নিচে বজায় রাখতে (৪ ঘন্টা) HPD সাহায্য করে।
শিল্পকারখানায় বায়ু বা কঠিন মাধ্যমে সূরবর্জিত শব্দের সঞ্চারণ প্রতিরোধ ‘অ্যাকুয়াসটিক জোনিং’-এর দ্বারা শব্দদূষণ প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
উপরিউক্ত আলোচনা পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, প্রযুক্তিগত উপায়ে বিভিন্নভাবে শব্দদূষণ রোধ করা সম্ভব।
৮. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক. দুর্যোগ কী?
খ. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝায়?
গ. চিত্রে ‘ক’ চিহ্নিত দূষণের কারণসমূহ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্রে প্রদর্শিত ক’ ও ‘খ’ দূষণ প্রতিরোধের উপায় বিশ্লেষণ কর।
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. দুর্যোগ হলো এমন ঘটনা, যা সমাজের স্বাভাবিক কাজ সম্পর্কে প্রচন্ডভাগে বিঘ্ন ঘটায় এবং জীবন, সম্পদ ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করে।
খ. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা হচ্ছে এরূপ একটি ব্যবহারিক বিজ্ঞান যার আওতায় পড়ে যথাযথ পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে দুর্যোগ প্রতিরোধ, দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং দুর্যোগে সাড়াদান ও পুনরুদ্ধার ইত্যাদি কার্যক্রম।
সার্বিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দুর্যোগপূর্ব, দুর্যোগকালীন এবং দুর্যোগপরবর্তী সময়ের কার্যক্রমকে বোঝায়।
গ. উদ্দীপকে ‘ক’ চিহ্নিত দূষণটি হলো বায়ুদূষণ। নিচে বায়ুদূষণের কারণ বর্ণনা করা হলো-
নন-ফটোসিনথেটিক জীব বায়ুতে CO₂ ত্যাগ করে। মোটরযানের জ্বালানির দহনের ফলে বিভিনণ গ্যাস ও অনেক ধাতব দূষক নির্গত হয়। শিল্পকারখানা চিমনি হতে ধোঁয়া ও অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ, নির্গত CFC গ্যাস ইত্যাদি। পুষ্পক উদ্ভিদ থেকে ক্ষতিকর পরাগরেণু ছড়ায়। ঝড়ো হাওয়া বায়ুতে ধূলিকণা ছড়ায়। বর্জ্য পদার্থ থেকে SO₂ CH₄ ইত্যাদি বায়ুতে আসে। অগ্ন্যুৎপাত থেকে বিভিন্ন ধাতব পদার্থ ও বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস নির্গত হয়। পারমাণবিক বিস্ফোরণ থেকে বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়ে। বৃক্ষ নিধনের ফলে বায়ুতে CO₂ গ্যাস বৃদ্ধি পায়।
তাই বলা যায়, বিভিন্ন প্রাকৃতিক, মানবসৃষ্ট কারণে বায়ুদূষণ সাধিত হয়।
ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ ও ‘খ’ হলো যথাক্রমে বায়ুদূষণ এবং পানিদূষণ। এ দুই ধরনের দূষণই মানুষের জন্য ক্ষতিকর। নিচে বায়ু ও পানিদূষণ প্রতিরোধের উপায় বিশ্লেষণ করা হলো-
সমাজের সকল স্তরের মানুষকে বায়ুদূষণের কারণ ও প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। বায়ুদূষণের বর্তমান অবস্থা পরিমাপের জন্য ব্যাপক জরিপ ও পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। জনসাধারণকে বায়ুদূষণের ফলে মানুষের স্বাস্থ্য ও সম্পদের কী ক্ষতি হতে পারে সে সম্বন্ধে পরিচিতি প্রদান করতে হবে। পরিবেশে জনসংখ্যার ভার কমাতে হবে। পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বায়ুদূষণ প্রতিরোধে দেশে বিদ্যমান আইন যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। ইটের ভাটায় কাঠের পরিবর্তে কয়লা ব্যবহার করতে হবে। নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ করে বনায়ন করতে হবে। নগরায়ণ ও শিল্পায়নের আগে সরকার থেকে অনুমোদন বাধ্যতামূলক করতে হবে।
অন্যদিকে পানি দূষণ প্রতিরোধে নিমেণাক্ত বিষয়াবলি অনুসরণ করতে হয়। নদীর তীরবর্তী ফসলি জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং গৃহস্থালি ও শিল্পকারখানার নির্গত বর্জ্য যাতে নদীর পানিতে না মিশে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। শিল্পকারখানার রং, গ্রিজ, রাসায়নিক দ্রব্য, উষ্ণ পানি ইত্যাদি যাতে নদীর পানিতে না মিশে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গৃহস্থালি ও শিল্পকারখানার বর্জ্য নদীর পানিতে না ফেলে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া উক্ত সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় সরকারি বেসরকারি পরিকল্পনা প্রণয়ন, পদক্ষেপ গ্রহণ এবং গবেষণা ও বাস্তবায়ন কার্যক্রম চালাতে হবে। তবেই আমাদের দেশের পানিদূষণ রোধ সম্ভব হবে।
পরিশেষে বলা যায়, মানুষের নানামুখী অপরিকল্পিত কর্মকান্ডের ফলে বিভিন্ন কারণে প্রকৃতিতে বায়ু ও পানিদূষণ হয় তা যথাযথ ও বৈজ্ঞানিক পন্থায় প্রতিরোধ করা না গেলে প্রাণী ও জীবকুলের জন্য তা হবে হুমকিস্বরুপ।
৯. ঢাকায় মানুষের চাপ বৃদ্ধির ফলে দিন দিন কলকারখানা এবং যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এগুলো থেকে প্রচুর শব্দের সৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকায় একটি বিমানবন্দর অবস্থিত হওয়ায় এখানে বিমান ওঠা-নামার সময় প্রচুর শব্দের সৃষ্টি হয়।
ক. CFC কী?
খ. দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতি বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে আলোচিত দূষণের সামাজিক কারণগুলো ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত দূষণরোধের উপায় বিশ্লেষণ কর।
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. CFC-এর পূর্ণরূপ হলো Chloro fluoro carbon যা একটি অন্যতম বায়ুদূষক এবং বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী।
খ. দুর্যোগপূর্ব প্রস্তুতি বলতে দুর্যোগপূর্ব সময়ে ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থাসমূহকে বোঝায়।
আগে থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ও জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিতকরণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ, ড্রিল বা ভূমিকা অভিনয় এবং যানবাহন, বেতার যন্ত্র ইত্যাদি দুর্যোগের পূর্বে প্রস্তুত রাখা দুর্যোগ প্রস্তুতির অন্তর্গত।
গ. উদ্দীপকে শব্দদূষণের কথা বলা হয়েছে। শব্দদূষণ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। নিচে সামাজিক কারণগুলো ব্যাখ্যা করা হলো-
মিটিং মিছিল প্রভৃতিতে মাইকের মাধ্যমে বক্তৃতা বা পূজা-পার্বণে, বিবাহ এবং অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত মাইকের উচ্চতীব্র শব্দে মানুষের ক্ষতি হয়। পূজা-পার্বণে, প্রতিমা বিসর্জনের সময় বা কোনো আনন্দ সংবাদে আতশবাজি পোড়ানোর রীতি এখনো অব্যাহত এবং ক্রমবর্ধমান। কিন্তু আতশবাজি পোড়ানোর ফলে ভয়াবহ বায়ুদূষণের সাথে সাথে অবর্ণনীয় শব্দদূষণ ঘটে, যা মানুষের অসংশোধনযোগ্য ক্ষতি করে। রেডিও, টেলিভিশন, খেলাধুলা, জঞ্জাল অপসারণ এবং ধৌতকরণ ক্রিয়াও শব্দদূষণের সৃষ্টি করে।
এভাবে বিভিন্ন সামাজিক ক্রিয়াকলাপের ফলে প্রতিনিয়ত শব্দদূষণ সংঘটিত হয়।
ঘ. উদ্দীপকে শব্দদূষণের উল্লেখ রয়েছে। শব্দদূষণের ফলে পরিবেশের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। তাই শব্দদূষণ রোধের উপায় সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। বিভিন্ন উপায়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় সকল প্রকার যানবাহনে সাইলেন্সার লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে। যন্ত্রপাতির কাঠামো, গঠন পদ্ধতি পরিবর্তন করে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে শব্দদূষণ রোধ করা যায়। বাসা-বাড়ি ও দোকানপাটে ক্যাসেট, রেডিও ইত্যাদির শব্দ যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। সর্বোপরি শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করে তা কঠোরভাবে প্রয়োগ করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
উপরিউক্ত পদক্ষেগুলো গ্রহণের মাধ্যমে শব্দদূষণ প্রতিরোধ করা যায়।
১০. নিচের চিত্রটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
ক. মিশ্র কৃষি কী?
খ. দ্রুত শিল্পায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজন কেন?
গ. প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ‘ক’ পর্যায়ের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. যেকোনো দুর্যোগের ক্ষেত্রে ‘খ’ এর প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ কর।
১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো একটি কৃষি খামারে এক অংশে কৃষি কাজ ও অন্য অংশে গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি প্রভৃতি প্রতিপালিত হলে তাকে মিশ্র কৃষি বলে।
খ. দ্রুত শিল্পায়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজন রয়েছে।
শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজন একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার। কোনো দেশই রাজনৈতিক হানাহানির মাধ্যমে শিল্পায়নে অগ্রসর হতে পারে না। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে একটি দেশে দাঙ্গা, ফ্যাসাদ, হরতাল, অবরোধ লেগেই থাকে যা শিল্পায়নের প্রধান বাধা। তাই যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম হাতিয়ার শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজন একটি সুষ্ঠু ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ।
গ. উদ্দীপকের ‘ক’ পর্যায়টি হলো দুর্যোগের পূর্বপ্রস্তুতি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতির ভূমিকা অনস্বীকার্য।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বপ্রস্তুতিতে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী চিহ্নিতকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি। এটি চিহ্নিত করতে পারলে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা হ্রাস করা যায়। কেননা চিহ্নিত এলাকায়। আগে থেকেই কিছু পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করলে দুর্যোগের ঝুঁকি কম হয়। এক্ষেত্রে দুর্যোগের পূর্বে দুর্যোগসংক্রান্ত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হলে দুর্যোগের পরবর্তী কার্যক্রম সহজ হয়। তবে পরিকল্পনা এমনভাবে করা হয় যেন দুর্যোগের পরে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠী দ্রুত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে। প্রয়োজনে দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে গ্রহণ করা হয় যেন জনগোষ্ঠীর সম্পদ এ সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায়।
মোটকথা যেকোনো ধরনের দুর্যোগের আগে যদি পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করা যায় তাহলে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো যায়। এজন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণের ভূমিকা অপরিসীম।
ঘ. উদ্দীপকের ‘খ’ পর্যায়টি হলো পুনরুদ্ধার।
প্রাকৃতিক দুর্যোগপরবর্তী সময়ে পুনরুদ্ধার পর্যায় শুরু হয়। এ স্তরে দুর্যোগ কবলিত এলাকাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়। দুর্যোগে যেসব সম্পদ, মানুষ, পরিবেশ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামো ইত্যাদির যে ক্ষতি হয়ে থাকে তা পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে দুর্যোগপূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে আনাকে পুনরুদ্ধার বলে। পুনরুদ্ধার পর্যায়ে দুর্যোগ এলাকার মানুষের জন্য বিভিন্ন সংস্থা, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্যালাইন, ভিটামিন, ওষুধপত্র ইত্যাদি সরবরাহ করা হয় যেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থা থেকে দ্রুত উদ্ধার পায়। সাধারণত পুনরুদ্ধার পর্যায়ে যেসব পুনর্বাসনমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা যায় তা হলো- দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার করা; ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্য, পানীয়, ওষুধ ও সেবা প্রদান; ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক, প্রযুক্তিগত এবং অন্যান্য সাহায্য প্রদান; প্রয়োজনে বিদেশি সাহায্য-সহযোগিতা গ্রহণ; ক্ষতিগ্রস্তদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা এবং পূর্বে ঋণগ্রস্ত থাকলে ঋণ মওকুফ করা।
পরিশেষে বলা যায়, যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের জীবন, সম্পদ ও পরিবেশের বিপুল ক্ষতিসাধন করে। এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে মানুষকে দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে পুনরুদ্ধার পর্যায়ের কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
0 Comments:
Post a Comment