HSC ভূগোল ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৬

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 2nd paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৬

HSC Geography
2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ক. বাংলাদেশের একটি সার কারখানার নাম লেখ।
খ. বিনিয়োগ ছাড়া শিল্পায়ন সম্ভব নয়।-ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ‘ক’ অঞ্চলে লৌহ ও ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ ও ‘খ’ অঞ্চলের শিল্পের প্রকৃতি বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের একটি সার কারখানা হলো যমুনা সার কারখানা।

খ. বিনিয়োগ ছাড়া শিল্পায়ন সম্ভব নয়।
শিল্প স্থাপনের অন্যতম নিয়ামক হলো মূলধন। মূলধন বিনিয়োগ না হলে শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ প্রভৃতি যোগান দেওয়া যাবে না। এছাড়া মূলধন শিল্প স্থাপনের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহের হাতিয়ার। পর্যাপ্ত অর্থায়ন ছাড়া শিল্পকার্য চরমভাবে ব্যাহত হবে।

গ. উদ্দীপকে ‘ক’ চিহ্নিত অঞ্চলটি হলো যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র লৌহ ও ইস্পাত শিল্পের জন্য বিখ্যাত।
আমেরিকার ইরি হ্রদ অঞলে লৌহ ও ইস্পাত শিল্পের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। এ ধরনের শিল্পকারখানা গড়ে ওঠার জন্য প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক প্রভৃতি নিয়ামকের প্রভাব রয়েছে। নিচে এ শিল্প গঠনের নিয়ামকসমূহ ব্যাখ্যা করা হলো-
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র লোহা ও ইস্পাত শিল্পের উন্নতির প্রধান কারণ কি হলো এ শিল্পের কাঁচামাল আকরিক লৌহ খনিজের আধিক্য। দেশটি লোহা ও ইস্পাত শিল্পে বেশ উন্নত। এ ধরনের শিল্প গড়ে ওঠার জন্য উক্ত দেশে প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক নিয়ামকের প্রাধান্য রয়েছে। বর্তমানে লোহাপি- উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ দেশগুলোর মধ্য ও অন্যতম। পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঁচামাল প্রাপ্তি, পানি ও বিদ্যুৎশক্তির সহজপ্রাপ্যতা, নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু, মূলধনের পর্যাপ্ততা, ও দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়।
এছাড়া উন্নত প্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞান, সরকারি উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতা, কয়লার পর্যাপ্ততা, উন্নত পরিবহন ও যোগাত্মক। ব্যবস্থা এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তজাতিক বাজারে ব্যাপক চাহিদার ঐ কারণে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে লোহা ও ইস্পাত শিল্প গড়ে উঠেছে।

ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ হলো যুক্তরাষ্ট্র এবং ‘খ’ হলো জাপান। উভয় দেশই শিল্পে সমৃদ্ধ। নিচে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের শিল্পের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করা হলো-
যুক্তরাষ্ট্র একটি শিল্পসমৃদ্ধ উন্নত অঞ্চল। বিশেষ করে লৌহ ও ইস্পাত শিল্প, কার্পাস ও বয়ন শিল্প এদেশের উল্লেখযোগ্য শিল্প। এর মধ্যে লৌহ ও ইস্পাত শিল্পে যুক্তরাষ্ট্র চতুর্থ এবং কার্পাস ও বয়ন শিল্পে তৃতীয়। কয়লায় পর্যাপ্ত সভায় ও হ্রদ অঞ্চলে পানি ও উত্তম যোগাযোগ ব্যবস্থায় কারণে এদেশে লৌহ ও ইস্পাত শিল্পে বেশ উন্নত। যুক্তরাষ্ট্র কৃত্রিম রাবার উৎপাদনেও শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। সমরাস্ত্র শিল্পেও এদেশ শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া মটরগাড়ি, উড়োজাহাজ, জাহাজ শিল্প, কাগজ শিল্পসহ ছোট বড় অসংখ্য শিল্প রয়েছে।
জাপানও একটি শিল্পোন্নত দেশ। এদেশ লৌহ ও ইস্পাত শিল্পে বেশ সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। শুধু তাই নয় জাপান রাবার শিল্পে এবং বস্ত্র ও বয়ন শিল্পেও বেশ উন্নত। বিশ্ব বাজারে জাপানের কার্পাসজাত দ্রব্যের বেশ চাহিদা রয়েছে। যেকোনো ধরনের ইলেক্ট্রনিকস সামগ্রী, মেশিন, টুলস, কেমিক্যাল, টেক্সটাইল, প্রভৃতি শিল্প জাপানের বিভিন্ন এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জাপানের অর্থনীতি অনেকটা শিল্প নির্ভর। মূলত লৌহ ও ইস্পাত শিল্পে বিখ্যাত হলেও এদেশে অসংখ্য ছোট বড় শিল্প গড়ে উঠেছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বড় বড় জাহাজ নির্মাণ শিল্প, মোটর গাড়ি শিল্প, রেলইঞ্জিন শিল্প, যন্ত্রপাতি, ট্রাক্টর, রাইসাইকেল, বৈদ্যুতিক পাখা, রেডিও, ট্রানজিস্টর, টেলিভিশন সেট, ক্যামেরা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
পরিশেষে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান উভয় দেশই শিল্পসমৃদ্ধ হলেও উৎপাদনের প্রতিটি পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রই বেশি স্বয়ংসম্পূর্ণ। কারণ জাপানের শিল্পের কাচামাল ও জ্বালানি অনেকটা আমদানিনির্ভর।

২. চিনি শিল্প বাংলাদেশের অন্যতম কারখানা শিল্প। প্রচুর ইক্ষু উৎপাদন সত্ত্বেও ১৯৩৩ সালের পূর্বে এদেশে কোনো চিনিকল গড়ে ওঠেনি। বর্তমানে ১৫টি চিনিকল থাকলেও অধিকাংশই উত্তরবঙ্গে গড়ে উঠেছে।
ক. সার শিল্পের প্রধান কাঁচামাল কী?
খ. শিল্প ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্পটির বিকাশে কী কী সমস্যা রয়েছে- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্পটি উত্তরবঙ্গে বিকাশের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক নিয়ামকের ভূমিকা বিশ্লেষণ কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সার শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হলো প্রাকৃতিক গ্যাস।

খ. শিল্প ব্যবস্থাপনা বলতে শিল্পের কর্ম পরিবেশ, বাজারে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে পণ্য বা সেবার উন্নয়ন, মূল্য নির্ধারণ, বণ্টন ও প্রসারের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নসংক্রান্ত প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ শিল্পের সার্বিক উন্নতি করার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মপ্রক্রিয়াই শিল্প ব্যবস্থাপনা।

গ. উদ্দীপকে চিনি শিল্প সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের চিনি শিল্পের ভবিষ্যৎ উজ্জল হলেও এদেশ চিনি উৎপাদনে এখনও স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। এদেশে চাহিদার তুলনায় চিনিকল কম থাকায় বিদেশ থেকে চিনি আমদানি করতে হয়। মূলত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাব, অনুর্বর মৃত্তিকা, আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানের অভাব, মূলধন সমস্যা, পোকার আক্রমণ প্রভৃতি কারণে আখের উৎপাদন কম হয়ে থাকে। আবার, মৌসুমে দূরবর্তী এলাকা থেকে কারখানায় আখ নিয়ে আসার প্রয়োজনীয় পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় চিনি উৎপাদনে প্রভাব পড়ে। কারণ আখ কেটে রেখে দিলে অথবা সময় মতো না কাটলে রস কমে যায়।
চিনিকলগুলোতে আখের জন্য কৃষকরা উপযুক্ত মূল্য পায় না বলে গুড় তৈরিতে আগ্রহী হয়ে থাকে। এছাড়া চিনি তৈরি করতে যেখানে শতাংশ রস কাজে লাগে সেখানে গুড় তৈরি করতে লাগে মাত্র ৬৫ শতাংশ।
সর্বোপরি জাতীয়করণকৃত মিলে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা, সীমাহীন দুর্নীতি, ত্রুটিপূর্ণ উৎপাদন ব্যবস্থা ইত্যাদি কারণে চিনি শিল্পের উন্নতি হচ্ছে না।

ঘ.উদ্দীপকে উল্লিখিত চিনি শিল্পটি উত্তরবঙ্গে বিকাশের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক নিয়ামক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্বাধীনতার পূর্বে বাংলাদেশ চিনি শিল্পের সংখ্যা কম থাকলেও বর্তমানে বাংলাদেশে চিনিকল প্রায় ১৮টি। বাংলাদেশের বেশিরভাগ চিনির কল রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে গড়ে উঠেছে। কারণ দেশের মোট উৎপাদিত আখের অধিকাংশই এই দুই বিভাগে জন্মে থাকে। মূলত প্রাকৃতিক তথা ভৌগোলিক ও জলবায়ুগত কারণেই এ অঞ্চলে চিনিকলগুলো গড়ে উঠেছে।
দেশের ১৮টি চিনিকলের মধ্যে ১০টি চিনিকল উত্তরবঙ্গ তথা রংপুর ও রাজশাহী এ দুই বিভাগেই গড়ে উঠেছে। এ অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু ও মৃত্তিকায় আখের ফলন ভালো হয় বলে দ্রুত এ শিল্পের প্রসার ঘটেছে। এছাড়া এ অঞ্চলের উৎপাদিত আখের রসের পরিমাণও অধিক। পাকিস্তানের কারিগরি ও ঋণ সহায়তায় ১,৫০০ মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন চিনির একটি কল পাবনার দাসুরিয়ার নির্মিত হয়েছে। এখানে ১৯৯৬ সাল হতে উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ দুই বিভাগের চিনিকলগুলো ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, শ্যামপুর, সেতাবগঞ্জ মহিমাগঞ্জ, জয়পুরহাট, হরিয়ানা ও নাটোরে অবস্থিত।
সুতরাং বলা যায় যে, অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ থাকায় বাংলাদেশে চিনিশিল্পগুলো উত্তরবঙ্গে কেন্দ্রীভূত হয়েছে।

৩. রানা প্লাজার ধ্বংসসত্মূপ থেকে দুর্ঘটনার ১৭ দিন পর রেশমাকে জীবিত উদ্ধার একটি যুগান্তকারী ঘটনা। তবে দ্রুত বিকাশমান যে শিল্পটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে এবং নারী কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখছে, সেখানে এত বেশি হতাহতের ঘটনা বিদেশি ক্রেতাদের কাছে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
ক. শিল্পায়ন কী?
খ. শিল্পায়নের সাথে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্প বিকাশে কী কী অনুকূল নিয়ামক কাজ করেছে- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত শিল্প বিকাশে নারী কর্মীর ভূমিকা বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কৃষি থেকে শিল্পের দিকে ধাবিত হওয়ার প্রক্রিয়াই শিল্পায়ন।

খ. একটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ঐ দেশের শিল্পায়নকে ত্বরান্বিত করে। অস্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা কোনা দেশের উন্নয়ন বয়ে আনতে পারে না।
শিল্পকারখানাগুলোর উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা, দেশীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐ স্থিতিশীলতা একান্ত প্রয়োজন।

গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত শিল্পটি হলো তৈরি পোশাক শিল্প। বর্তমানে পোশাক শিল্প বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি শিল্প। অনুকূল জলবায়ু, কাঁচামাল ও প্রয়োজনীয় শ্রমিক প্রাপ্তি এ শিল্প গড়ে ওঠার অন্যতম কারণ। বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে এ শিল্পের ভূমিকা সর্বাধিক।
নিচে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্প দ্রুত বিকশিত হওয়ার অনুকূল নিয়ামকগুলো ব্যাখ্যা করা হলো-
নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু কারখানায় শ্রমিকদের অধিক সময় কাজ করার উপযোগী। এজন্য বাংলাদেশে দ্রুত তৈরি পোশাক শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। পোশাক শিল্পের একমাত্র কাঁচামাল বস্ত্র দেশি ও বিদেশি মিলগুলো থেকে সংগ্রহের সুবিধা থাকায় এ দেশে প্রচুর তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের পর্যাপ্ত শক্তিসম্পদের আধিক্য থাকায় পোশাক শিল্প গড়ে ওঠতে সহায়ক হয়েছে। শিল্প স্থাপনের জন্য মূলধন অন্যতম পূর্বশর্ত। বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি পাশাক শিল্পের অথের যোগান দেয়। এ কারণে বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের ব্যাপক বিস্তার হয়েছে। বাংলাদেশ জনবহুল দেশ হওয়ায় এখানে সুলতে শ্রমপোওয়া যায় এবং স্বল্প মজুরিতে কাজ করানো যায়।
উল্লিখিত কারখানাগুলো ছাড়াও আরও বেশকিছু অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কারণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের দ্রুত বিকাশে সাহায্য করেছে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত যে শিল্পের কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প। এ শিল্পে নারীর ভূমিকা অগ্রগণ্য।
বর্তমানে দেশে প্রায় ৫,১৫০টির মতো পোশাক শিল্পকারখানা রয়েছে। পোশাক শিল্পে প্রায় ৩৬ লক্ষ শ্রমিক কর্মরত আছে। এদের শতকরা ৮৫ জনই হলো মহিলা।
বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ। এ দেশের বেশিরভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। এ দেশের নারীরা পোশাক শিল্পে যে পরিমাণ ভূমিকা রাখছে তা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর এ শিল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে কম মূল্যের নারীশ্রমিক পাওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেক কমে যায়। যার ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সহজেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সক্ষম।
নারীশ্রমিক দ্বারা উৎপাদিত পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্ববাজারে রপ্তানি করছে। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৩৯.৫৩% আসে তৈরি পোশাক শিল্প থেকে। যা দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখছে। সুতরাং বলা যায়, পোশাক শিল্পে নারীর ভূমিকা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

৪. তানিয়া ঢাকার গাজীপুরে বাস করে। তার বাড়ির আশেপাশে একটি বিশেষ শিল্প ব্যাপকভাবে গড়ে উঠেছে। যা দেশের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ক. শিল্প কী?
খ. লৌহ ও ইস্পাত শিল্পের চারটি ব্যবহার লেখ।
গ. তানিয়ার এলাকায় শিল্পটি ব্যাপকভাবে গড়ে ওঠার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে আলোচিত শিল্পটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে? বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে কর্মপ্রচেষ্টা দ্বারা মানুষ বিভিন্ন প্রকার দ্রব্যের উপযোগ বৃদ্ধি করে ব্যবহার উপযোগী করে তোলে তা-ই শিল্প।

খ. বর্তমানে যন্ত্রসভ্যতার এ যুগে লৌহ ও ইস্পাতের ব্যবহার অতীব গুরুত্বপূর্ণ। লৌহ ও ইস্পাত শিল্পের চারটি ব্যবহার নিম্নরূপ-
১. যেকোনো ধরনের যন্ত্রপাতি নির্মাণে লৌহ ও ইস্পাতের প্রয়োজন হয়।
২. ঘরবাড়ির জানালা, দরজা, ছাদ ইত্যাদি নির্মাণে লৌহ ও ইস্পাত ব্যবহৃত হয়।
৩. জাহাজ, রেলগাড়ি, মোটরগাড়ি এবং লঞ্চ ইত্যাদি পরিবহন সামগ্রী নির্মাণে লৌহ ও ইস্পাত ব্যবহৃত হয়।
৪. গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন- থালাবাটি, দা, কুড়াল ইত্যাদি নির্মাণে লৌহ ও ইস্পাত ব্যবহৃত হয়।

গ. তানিয়ার এলাকায় অর্থাৎ ঢাকার গাজীপুরে গড়ে ওঠা শিল্পটি হলো তৈরি পোশাক শিল্প।
রাজধানী শহরের নিকটবর্তী অবস্থান গাজীপুরে পোশাক শিল্প গড়ে সহ অন্যতম কারণ। যেকোনো শিল্প গড়ে ওঠার পূর্বশর্ত হলো অর্থ - মূলধন। বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সংক, বিমা, তৈরি পোশাক শিল্পসহ যেকোনো শিল্পের জন্য অর্থ যযাগান দেয়। এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রায় সবই ঢাকাকেন্দ্রিক। এ কারণে গাজীপুরে তৈরি পোশাক শিল্পের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। এ অঞ্চল জনবহুল হওয়ায় সুলভ মূল্যে শ্রমিক পাওয়া যায়। এছাড়া ভপ্রকতিগতভাবেই গাজীপুর উঁচু সমভূমি। তাই বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম এবং যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো। রাজধানী ঢাকার সাথে সহজ যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎসহ সব ধরনের সুবিধা রয়েছে।
সুতরাং বলা যেতে পারে, উল্লিখিত প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক নিয়ামকের কারণে তানিয়ার এলাকায় অর্থাৎ ঢাকার গাজীপুরে তৈরি পোশাক শিল্প, গড়ে উঠেছে।

ঘ. বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্পটি অর্থাৎ পোশাক শিল্পের ব্যাপক ভূমিকা বিদ্যমান। বর্তমানে বাংলাদেশে যতগুলো শিল্প আছে তন্মধ্যে অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় পোশাক শিল্পই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ শিল্পখাত থেকেই বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এ অনুপাতে কর্মসংস্থানের স্বল্পতা বিদ্যমান। তবে পোশাক শিল্পে দেশের জনগোষ্ঠীর এক বৃহৎ অংশ নিয়োজিত রয়েছে। যে সমস্ত লোকজন এ শিল্পে নিয়োজিত রয়েছে তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নতি সাধিত হচ্ছে। আর এ উন্নতি ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে; অর্থনীতিতে সুফল বয়ে আনছে।
বাংলাদেশে শ্রম সস্তা বলে উৎপাদিত পোশাকে খরচ কম হয় এবং অন্যান্য দেশের তুলনায় কম মূল্যে বিদেশে রপ্তানি করতে পারে। ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে এর পর্যাপ্ত চাহিদা রয়েছে। এখাতে এখন শিক্ষিত জনগোষ্ঠীও কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে। তাছাড়া বৈদেশিক বাণিজ্যে ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সার্বিক পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পোশাক শিল্পকে একটি অগ্রসরমাণ খাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ শিল্প থেকে আয়কৃত অর্থে বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সুফল ভোগ করছে যা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধিশালী করতে সহায়তা করেছে।

৫. রকিব সাহেব একজন শিল্পপতি। সম্প্রতি তিনি একটি শিল্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ধরনের শিল্প সকল শিল্পের মূল। কৃষি, শিল্প, পরিসেবা প্রভৃতি অর্থনৈতিক কাজকর্মের যেকোনো ধারায় উন্নতির জন্য এ শিল্পের অগ্রসর হওয়া একান্ত প্রয়োজন। এ শিল্প পৃথিবীর ভারী শিল্পগুলোর অন্যতম।
ক. বিলিয়ন ডলার শিল্প বলা হয় কোনটিকে?
খ. ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কার্পাস বয়নশিল্পকেন্দ্রগুলো কোথায় অবস্থিত? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্পে কোন দেশ সবচেয়ে বেশি উন্নতি লাভ করেছে তার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্পের উৎপাদন ও বণ্টন বিশ্লেষণ কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বিলিয়ন ডলার শিল্প বলা হয় তৈরি পোশাক শিল্পকে।

খ. ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কার্পাস বয়নশিল্পকেন্দ্রগুলো পশ্চিমাঞ্চল দক্ষিণাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল এবং পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত।
বস্ত্র বয়নশিল্প ভারতের বৃহত্তম শিল্প। ভারতের প্রায় প্রতি রাজ্যেই বস্তু বয়নশিল্প আছে। ভারতের বস্ত্র বয়নশিল্পের অবস্থান অনুসারে একে চারটি বিশেষ অঞ্চলে বিভক্ত করা যায়। যথা: (ক) পূর্বাঞ্চল, (খ) পশ্চিমাঞ্চল, (গ) উত্তরাঞ্চল ও (ঘ) দক্ষিণাঞ্চল।

গ. উদ্দীপকে লোহা ও ইস্পাত শিল্পের কথা বলা হয়েছে। এ শিল্পে চীন সবচেয়ে বেশি উন্নতি লাভ করেছে।
নতুন খনি আবিষ্কার, স্থানীয় আকরিক লোহা, কয়লা ও চুনাপাথরের আধিক্য এবং নতুন লোহা খনির নিকটেই নতুন শিল্পকেন্দ্র স্থাপন, পুরাতন শিল্পের সংস্কার, পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার ফলে চীন লোহা ও ইস্পাত শিল্পে দ্রুত উন্নতি লাভ করতে সক্ষম হয়েছে।
নিচে চীনের লৌহ ও ইস্পাত শিল্প বেশি উনণতি লাভ করার কারণ ব্যাখ্যা করা হলো-
কয়লা ও লৌহ আকরিকের প্রাচুর্য। অর্থাৎ কাঁচামাল ও শক্তিসম্পদের সান্নিধ্য। স্থানীয়ভাবে ব্যাপক চাহিদা। পরিবহন ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে উন্নতি। জলপথে পরিবহন সুবিধা। আধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও শিল্পনীতি। মূলধনের প্রাচুর্যতা।
উল্লিখিত কারণগুলোর প্রভাবে চীন দ্রুত লৌহ ও ইস্পাত শিল্পে উন্নতি লাভ করেছে।

ঘ. উদ্দীপকের শিল্পটি হলো লোহা ও ইস্পাত শিল্প।
কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি লৌহ ও ইস্পাত শিল্পের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। পৃথিবীতে , চীন, জাপান, ভারত, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইউক্রেন, ব্রাজিল, ফ্রান্স, ইতালি প্রভৃতি দেশসমূহ লোহা ও ইস্পাত শিল্পে উন্নত।
বর্তমানে লৌহ ও ইস্পাত উৎপাদনে চীন প্রথম। ২০১৭ সালে এদেশের ৮৩১.৭ মিলিয়ন মে. টন ইস্পাত এবং ৫৪৮.২৫ লক্ষ টন লৌহ পিন্ড উৎপাদন করে। ২য় অবস্থানে আছে জাপান এবং তৃতীয় অবস্থানে আছে ভারত। তারা উৎপাদন করে যথাক্রমে ইস্পাত ও লৌহ ১৭৪.৭ মিলিয়ন মে. টন ও ৬৭.৭৯ লক্ষ টন এবং ১০১.৪ মিলিয়ন মে. টন ও ৩৯.৯৮ লক্ষ টন।
বর্তমান যুগে লোহা ও ইস্পাত বিশ্ব বাণিজ্যে এক বিশেষ স্থান অধিকার করেছে। উন্নত দেশগুলোতে লৌহ ও ইস্পাত অধিক উৎপাদন হলেও এসব দেশের চাহিদা খুব বেশি। বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, জার্মানি ও ফ্রান্স প্রধান রপ্তানিকারক দেশ। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান ও কানাডা স্বল্প পরিমাণে ইস্পাত রপ্তানি করে থাকে। আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, সুইডেন, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমার, ইরাক, শ্রীলঙ্কা, মিশর প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

৬. ঘটনা-১: সাভারে রানা প্লাজা ধসে যায়। আবার তাজরীন ফ্যাশনে আগুন লাগে। দুটি ঘটনায় কয়েক হাজার গার্মেন্টস শ্রমিক নিহত ও আহত হয়।
ঘটনা-২: টঙ্গী এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিকরা নিম্নতম মজুরি পাঁচ হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করে। এতে অনেক গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যায়।
ক. বাংলাদেশে প্রথম কত সালে পোশাক শিল্প স্থাপিত হয়?
খ. শিল্পের জন্য বাজার প্রয়োজন কেন?
গ. উদ্দীপকের ঘটনাগুলো শিল্পায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কোন দিককে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. শিল্পায়নের জন্য আর কোন কোন ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা দরকার? বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশে প্রথম পোশাক শিল্প স্থাপিত হয় ১৯৭৬ সালে।

খ. শিল্পের জন্য বাজার প্রয়োজন। কারণ শিল্পজাত দ্রব্যের চাহিদার ওপর শিল্পের উন্নয়ন নির্ভর করে।
শিল্পজাত দ্রব্যের জন্য বাজার আবশ্যক। এজন্য বাজারের কাছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গয়ে ওঠে। শীতপ্রধান দেশে পশমি বস্ত্রের চাহিদা বেশি বলে সেখানে পশম বয়নশিল্প বেশি এবং গ্রীষ্মপ্রধান দেশে কার্পাস বয়নশিল্পের চাহিদা বেশি বলে সেখানে কার্পাস বয়নশিল্প বেশি গড়ে উঠেছে।

গ. উদ্দীপকের ঘটনাগুলো শিল্পায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ব্যবস্থাপনাকে নির্দেশ করে।
ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজন পরিকল্পনা, নিয়ন্ত্রণ, প্রেষণা, নির্দেশনা ইত্যাদি। পরিকল্পনার মাধ্যমে কোনো একটি শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। এর মাধ্যমে শিল্পের অবস্থান, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ইত্যাদি বিষয় সম্বন্ধে অবগত হওয়া যায়।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ। নির্দেশনার
মাধ্যমে শিল্পের কাঙি্ক্ষত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। প্রেষণার মাধ্যমে কমাদের মাঝে কর্মউদ্দীপনা বৃদ্ধি পায়। ফলে কর্মীদের শিল্পের কাজের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য প্রেষণা প্রয়োজন। শিল্পের সার্বিক কর্মকান্ডকেু করে তোলে এর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে বিভিন্ন জারে প্রবেশ করে। শিল্পে প্রধান উৎপাদনকারীর ভূমিকায় থাকে যমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি প্রদান ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব। ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকার ফলে ২০১২১৩ সালে সংঘটিত দুর্ঘটনা বিশ্ববাসীসহ বিদেশি ক্রেতাদের ভাবিয়ে তোলে।
সুতরাং বলা যায় যে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শ্রমিকের নিরাপত্তা ও মজুরি প্রদান না হলে বাংলাদেশের শিল্পায়নের অগ্রগতি মন্থর হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘ. শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ছাড়াও বিনিয়োগ ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা দরকার।
বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার জন্য শিল্পায়নের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। দেশকে শিল্পসমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে বিনিয়োগ ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা একান্ত প্রয়োজন। শিল্পায়নের জন্য যে বিষগুলো জরুরি তার মধ্যে বিনিয়োগ, ব্যবস্থাপনা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অন্যতম।
বিনিয়োগ ছাড়া শিল্পায়ন সম্ভব নয়। বিনিয়োগ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক দুই রকমেরই হতে পারে। বিনিয়োগকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজন হয় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার। কারণ সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকলে বিনিয়োগকারী তার উৎপাদিত পণ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে। আবার অনেক বিনিয়োগকারী পণ্যের যথাযথ মূল্য না পাওয়ায় পরবর্তী সময় আর বিনিয়োগ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। যার ফলে শিল্পের অগ্রগতি হ্রাস পায়। অন্যদিকে, শিল্পের উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি অন্যতম অন্তরায় হলো রাজনৈতিক অস্থিরতা। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে শিল্পপ্রতিষ্ঠান তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে বাজার হারায়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে অনেক বিনিয়োগকারী তার উৎপাদিত পণ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত থাকে, অনেক বিনিয়োগকারী তার বিনিয়োগের অর্থ ফেরত নিয়ে যেতে চায়, যা শিল্পায়নের জন্য হুমকিস্বরূপ।
সুতরাং বলা যায় যে, বাংলাদেশের জন্য সুষ্ঠু বিনিয়োগ ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অনস্বীকার্য।

HSC ভূগোল ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৬ pdf download

৭. একটি শিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশের নারী কর্মীদের ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। যা বিদেশে রপ্তানি করে এদেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
ক. কার্পাস বয়ন শিল্পের প্রধান কাঁচামাল কী?
খ. বাংলাদেশ সার শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. ইঙ্গিতকৃত শিল্প দ্রুত বিকাশ লাভের কারণসমূহ নিরূপণ কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্পের উন্নয়নে নারী কর্মীদের অবদান বিশ্লেষণ কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কার্পাস বয়ন শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হলো কার্পাস।

খ. বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশে কৃষিকাজের জন্য প্রচুর পার প্রয়োজন। কিন্তু সার শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি, দক্ষ শ্রমিকের অভাব, মূলধনের স্বল্পতা, অব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রভৃতি কারণে চাহিদামাফিক সার উৎপাদন করতে পারে না। যেটুকু সার উৎপাদন হয় তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই বাংলাদেশ সার শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।

গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত শিল্পটি হলো পোশাক শিল্প।
বাংলাদেশের অন্যান্য শিল্প পিছিয়ে পড়লেও তৈরি পোশাক শিল্পে সস্তা শ্রমিক ও আন্তর্জাতিক বাজার চাহিদাসহ অন্যান্য কারণে স্বল্পতম সময়ে বেশ উন্নতি লাভ করেছে।
পোশাক শিল্পের প্রধান কাঁচামাল বস্ত্র। বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে বস্ত্র কল রয়েছে। সেখান থেকে বস্ত্র সরবরাহ করে থাকে। তাছাড়া প্রয়োজনে বস্ত্র আমদানিও করা যায়। এ শিল্পের জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু বিশেষ উপযোগী। শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত আবহাওয়া আছে বলে শ্রমিকরা অধিক সময় কাজ করতে পারে। জনবহুল এদেশে প্রচুর সস্তা শ্রমিক রয়েছে, বিশেষকরে মহিলা শ্রমিক। তাছাড়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মান ভালো হওয়ায় অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক সুনাম ও চাহিদা রয়েছে।
সুতরাং উপরোল্লিখিত কারণে বাংলাদেশে অন্যান্য শিল্পের তুলনায় তৈরি পোশাক শিল্প স্বল্প সময়ে যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত যে শিল্পের কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প। এ শিল্পে নারীর ভূমিকা অগ্রগণ্য।
বর্তমানে দেশে প্রায় ৫,১৫০টির মতো পোশাক শিল্পকারখানা রয়েছে। পোশাক শিল্পে প্রায় ৩৬ লক্ষ শ্রমিক কর্মরত আছে। এদের শতকরা ৮৫ জনই হলো মহিলা। বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ। এ দেশের বেশিরভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। এ দেশের নারীরা পোশাক শিল্পে যে পরিমাণ ভূমিকা রাখছে তা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর এ শিল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে কম মূল্যের নারীশ্রমিক পাওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেক কমে যায়। যার ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সহজেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সক্ষম। নারীশ্রমিক দ্বারা উৎপাদিত পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্ববাজারে রপ্তানি করছে। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৩৯.৫৩% আসে তৈরি পোশাক শিল্প থেকে। যা দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখছে।
সুতরাং বলা যায়, পোশাক শিল্পে নারীর ভূমিকা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

৮. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ক. লোহা ও ইস্পাত শিল্প কী?
খ.ওসাকাকে জাপানের ম্যানচেস্টার বলা হয় কেন?
গ. কাঁচামাল না থাকা সত্ত্বেও 'P' চিহ্নিত দেশটি কার্পাস বয়নশিল্পে উৎকর্ষতা লাভের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্রের 'Q' চিহ্নিত বন্দরগুলো ঐ অঞ্চলের শিল্পকে সমৃদ্ধশালী করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে বলে তুমি মনে কর? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শিল্প আকরিক লোহাকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে তাকে লোহা ও ইস্পাত শিল্প বলে।

খ. ব্রিটেনের ল্যাঙ্কাশায়ার এলাকায় ম্যানচেস্টার হলো প্রধান কার্পাস কেন্দ্র। এখানে সর্বপ্রকার সুযোগ-সুবিধা থাকায় উন্নতমানের বস্ত্র তৈরি হয়। যে কারণে এ অঞ্চলের উৎপাদিত বস্ত্রের প্রায় ৮০ ভাগ রপ্তানি হয়।
অপরদিকে, ওসাকা হলো জাপানের শ্রেষ্ঠ কার্পাস বয়নশিল্প কেন্দ্র। ব্রিটেনের ম্যানচেস্টারে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধার অধিকাংশই জাপানের ওসাকাতেও বিদ্যমান। ওসাকা অঞ্চলে উৎপাদিত বস্ত্রের সিংহভাগই রপ্তানি করা হয়। এজন্য ওসাকাকে জাপানের ম্যানচেস্টার বলা হয়।

গ. মানচিত্রের 'P' চিহ্নিত দেশটি হচ্ছে জাপান।
জাপানের প্রধান কার্পাস বয়নশিল্প কেন্দ্রগুলো হচ্ছে ওসাকা, কোবে, টোকিও, ইয়োকোহামা ও নাগোয়া প্রভৃতি। এ শিল্পের উন্নতির মূলে রয়েছে কয়লা ও পানিবিদ্যুৎ, আর্দ্র জলবায়ু, বিপুল সুদক্ষ শ্রমিক, উন্নত কারিগরি জ্ঞান, স্বয়ংক্রিয় বয়নযন্ত্র ব্যবহারের সুতার অবচয় হ্রাস প্রভৃতি।
'P' দেশে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, কয়লা ও পানিবিদ্যুৎ শক্তি, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিশাল বাজার, অত্যন্ত কর্মঠ ও দক্ষ শ্রমিক, উন্নত যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা এবং উন্নত বন্দর থাকায় মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা ও কোরিয়া থেকে কাঁচামাল আমদানি করে কার্পাস শিল্পের উৎকর্ষতা লাভ করেছে।

ঘ. চীনের দক্ষিণ-পূর্বাংশে অবস্থিত 'Q' চিহ্নিত বন্দরগুলো হলো- সাংহাই, গানকিং, তাইপে প্রভৃতি। বন্দরগুলোর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হয়ে থাকে যা ঐ অঞ্চলের শিল্পকে সমৃদ্ধশালী করতে ভূমিকা রাখে।
কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সমুদ্রবন্দর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্যসামগ্রী এবং প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সমুদ্রপথে পরিবাহিত হয়ে বন্দরে এসে পৌঁছে। এরপর সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থলপথে পরিবাহিত হয়।
'Q' চিহ্নিত চীনের যেসব বন্দরের কথা বলা হয়েছে তা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীনের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী রপ্তানি এবং শিল্পের কাঁচামাল নৌপথে সর্বপ্রথম এ বন্দরে নিয়ে আশা হয়। এরপর এগুলো বিভিনণ অঞ্চলে অবস্থিত শিল্পে সরবরাহ করা হয়।
এশিয়ার উল্লেখযোগ্য যেসব বন্দর রয়েছে তন্মধ্যে 'Q' চিহ্নিত বন্দরগুলোও অন্তর্ভুক্ত। এ বন্দরগুলোর কারণেই কাচামাল আনা-নেওয়াসহ শিল্পে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীগুলোও রপ্তানির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে থাকে। যা ঐ অঞ্চলটিকে শিল্পে সমৃদ্ধশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে থাকে।

৯. প্রেমার বাড়ি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। সেখানে এমন একটি শিল্প গড়ে উঠেছে যার কাঁচামাল বাইরের দেশ থেকে আমদানি করা হয়। অপরদিকে ডলির বাড়ি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সেখানে একটি শিল্প গড়ে উঠেছে যা দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ক. শিল্প কী?
খ. পাট শিল্প গড়ে ওঠার একটি কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. প্রেমার অঞ্চলে গড়ে ওঠা শিল্পটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ডলির অঞ্চলের শিল্পটির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কতটুকু সে সম্পর্কে মতামত দাও।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে কর্ম প্রচেষ্টা ও প্রক্রিয়ার দ্বারা মানুষ প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত দ্রব্যগুলোর পরিবর্তন ঘটিয়ে মানুষের ব্যবহার উপযোগী করে তোলে তাকেই শিল্প বলা হয়।

খ. পাট শিল্প গড়ে ওঠার একটি অন্যতম কারণ হলো জলবায়ুগত কারণ।
পাট উষ্ণ অঞ্চলের ফসল। পাট চাষের জন্য ২০° থেকে ৩৫° সেলসিয়াম তাপমাত্রা এবং ১৫০ থেকে ২৫০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত। যে সমস্ত অঞ্চলে এ ধরনের জলবায়ু বিদ্যমান সেখানে পাট শিল্প গড়ে উঠেছে।

গ. প্রেমার অঞ্চল হলো দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল যেখানে গড়ে উঠা শিল্পটি হলো বস্ত্র শিল্প।
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বস্ত্র শিল্প প্রসার লাভ করেছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া বস্ত্র শিল্পের অনুকূল এবং বাংলাদেশের প্রধান দ্বিতীয় শিল্প। তারপরও বাংলাদেশ বস্ত্রশিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।
বাংলাদেশের বস্ত্রকলগুলো বিদেশ থেকে আমদানিকৃত তুলা ও সুতা দিয়ে পরিচালিত হয়। প্রতিবছর জাপান, সিঙ্গাপুর, হংকং, কোরিয়া, ভারত পাকিস্তান প্রভৃতি দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ তুলা, সুতিবস্ত্র ও সুতা আমদানি করে থাকে। বাংলাদেশের কুমিল্লা, ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী প্রভৃতি অঞ্চলে বস্ত্র শিল্প গড়ে উঠেছে।

ঘ. ডলির বসবাসকৃত অঞ্চল দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলে সার শিল্প প্রসার লাভ করেছে।
সার দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৭টি সার কারখানা থেকে সার উৎপাদিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্পের মধ্যে সার অন্যতম।
প্রাকৃতিক শিল্পের সহজলভ্যতার জন্য সার শিল্পের উন্নয়নের প্রচর সম্ভাবনা রয়েছে। হরিপুরের প্রাকৃতিক গ্যাস ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানায় ব্যবহৃত হয়। ঘোড়াশাল সার কারখানায় তিতাস গ্যাস কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্র ২৬টি (২০১৬ পর্যন্ত) এবং বর্তমানে দেশে ১৩৬৩৮.১৪ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজদ আছে। বর্তমানে দেশের ২০টি গ্যাসক্ষেত্রে ১০১টি কূপ থেকে গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। তাই প্রাকৃতিক গ্যাস নির্ভর সার শিল্পের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময়।
সুতরাং বলা যায়, উপরিউক্ত প্রাকৃতিক কারণগুলোর কারণে ডেমরা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণ শিল্প গড়ে উঠেছে।

১০. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ক. কুটিরশিল্প কী?
খ. শিল্পায়নের জন্য একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার প্রয়োজন?
গ. A চিহ্নিত অঞ্চলে গড়ে ওঠা প্রধান শিল্পটির নগরায়ণে ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. B চিহ্নিত অঞ্চলে দেশের সর্বপ্রথম স্থাপিত শিল্প যা কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কথাটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কুটিরশিল্প হলো কম পুঁজিতে ঘরে বসে হাতের সাহায্যে বিভিন্ন দ্রব্য তৈরি বা উৎপাদন।

খ. যেকোনো দেশের দ্রুত শিল্পায়নের ক্ষেত্রে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার প্রয়োজন।
শিল্পকারখানাগুলোর উৎপাদন অব্যাহত রাখা, প্রস্তুতকৃত মালামাল যথাসময়ে ভোক্তার নিকট পৌঁছানো, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি, দেশীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ উৎসাহিত করার জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। আর এ অবস্থা সৃষ্টির জন্য চাই একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার।

গ. A চিহ্নিত অঞ্চলে গড়ে ওঠা শিল্পটি হলো চা শিল্প।
সিলেট অঞ্চলে প্রাকৃতিক সুবিধার (ঢালু জমি, প্রচুর বৃষ্টিপাত) কারণে ব্যাপক চা চাষ হয়। চা উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে এ অঞ্চলে অনেক চা শিল্প কারখানা গড়ে ওঠে। এসব কারখানায় প্রচুর শ্রমিক প্রয়োজন হয়। বস্তুত শিল্পকে কেন্দ্র করে ধীরে ধীরে জনবসতি ঘন হয়ে ওঠে।
বসতির লোকেরা শিল্পকারখানার আশেপাশে বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে তোলে। অনেক ছোট ছোট ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানও গড়ে ওঠে। এছাড়া বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন যেমন- গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, ব্যাংক-বিমা ইত্যাদি সহজলভ্য হয়। ধীরে ধীরে এ চা শিল্পকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ ও জনবসতি বৃদ্ধি পায়। যা পরবর্তীতে নগরে পরিণত হয়। এভাবে চা শিল্প নগরায়ণে ভূমিকা রাখে।

ঘ. B চিহ্নিত স্থানটি ফেঞ্চুগঞ্জ নির্দেশ করে, যেখানে ফেঞ্জুগঞ্জ সার কারখানা গড়ে উঠেছে। এ শিল্পটি কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। জমির উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত খাদ্য। ভূমির একরপ্রতি ফলন বৃদ্ধি করার জন্য সারের প্রয়োজন রয়েছে। তাই বর্তমানে জমিতে জৈব সার (গোবর) ব্যবহারের সাথে সাথে রাসায়নিক সারের (পটাশ, ইউরিয়া) ব্যবহারও অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কৃষিজ উৎপাদনও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post