HSC ভূগোল ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৪

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 2nd paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৪

HSC Geography
2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. নিচের ছকটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

তিনটি দেশের কৃষি উৎপাদন পদ্ধতি

বাংলাদেশ

নিজস্ব চাহিদা মেটানোর জন্য ফসল উৎপাদন করে।

কানাডা

বিস্তীর্ণ ভূমিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করে।

মালয়েশিয়া

একই জমিতে দীর্ঘ সময় ব্যবহার করে একটি ফসল উৎপাদন করে।

ক. কৃষি কী?
খ. পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি কোন অঞ্চলকে বলা হয়?
গ. উদ্দীপকে ‘গ’ এ উল্লিখিত কৃষি পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ ও ‘খ’ কৃষি পদ্ধতির মধ্যে তুলনা কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূমি কর্ষণ বা চাষ করার মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করাকে কৃষি বলে।

খ. উত্তর আমেরিকার কানাডার দক্ষিণাংশ হতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণে ওকলাহোমা ও মিসৌরি রাজ্য পর্যন্ত সমগ্র প্রেইরী অলকে পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি বলা হয়।
রুটি প্রস্তুতের উপযোগী উন্নতমানের এত অধিক গম পৃথিবীর অন্য কোনো অঞ্চলে উৎপাদিত হয় না। প্রয়োজনের অতিরিক্ত গম উৎপন্ন হয় বলে এ অঞ্চলের অধিকাংশ গমই রুটি প্রস্তুতের জন্য দেশবিদেশের বাজারে রপ্তানি হয়ে থাকে। এ কারণে উত্তর আমেরিকার এ অঞ্চলকে পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে ‘গ’ এ উল্লিখিত কৃষি পদ্ধতি হলো বাগিচা কৃষি।
বাণিজ্যিক প্রয়োজনে বড় বড় বাগিচা তৈরি করে যে কৃষিকার্য করা হয় তাকে বাগিচা কৃষি বলে। বাগিচা কৃষির উল্লেখযোগ্য উদাহরণ বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার চা চাষ, মালয়েশিয়ার রবার চাষ, ঘানার কোকো চাষ ইত্যাদি। অধিকাংশ বাগিচাই বর্তমানে স্বদেশী মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে।
উদ্দীপকে ‘গ’ এ মালয়েশিয়ায় একই জমিতে দীর্ঘ সময় ব্যবহার করে। রাবার চাষ করা হয় যা বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় বাগিচা কৃষির অন্তর্ভুক্ত। এ রাবার বিদেশে রপ্তানিও করা হয়।

ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ ও ‘খ’ কৃষি পদ্ধতি হলো যথাক্রমে স্বয়ংসম্পূর্ণ কৃষি এবং ব্যাপক কৃষি নিচে এ দুই। কৃষি পদ্ধতির তুলনামূলক আলোচনা করা হলো-
স্বয়ংসম্পূর্ণ কৃষিপ্রথা কৃষিকার্যের প্রথম অবস্থায় চালু হয়। এ পর্যায়ে কৃষিভিত্তিক গ্রামগুলো তাদের প্রয়োজনীয় কৃষিজ দ্রব্যাদি ঐ অল হতেই উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা পূরণ করত। এ কৃষিব্যবস্থাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ কৃষি বলা হয়। এ জাতীয় কৃষিকার্য শুধু অভ্যন্তরীণ ভোগের বা জীবিকা নির্বাহের উদ্দেশ্যে করা হয় বলে একে স্বয়ংভোগী কৃষিও বলা হয়। বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের কিছু কিছু উপজাতি এ পদ্ধতিতে কৃষি কাজ করে।
ব্যাপক কৃষি বলতে বোঝায় আধুনিক কৃষিযন্ত্রের সাহায্যে বিস্তৃত। এলাকা জুড়ে যে ব্যাপক কৃষিকার্য হয় তাকে ব্যাপক কৃষি বলে। যে মন্ত এলাকায় জনবসতি বিরল অথচ বিস্তীর্ণ অঞ্চল কৃষিযোগ্য, সেখানে শ্রমিকের অভাব থাকার কারণে ব্যাপক চাষের ব্যবস্থা করা হয়। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও রাশিয়ায় এ ব্যবস্থায় জমি চাষাবাদ করা হয়।
অতএব বলা যায় এ দুই প্রকার কৃষি পদ্ধতিতে বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য বিদ্যমান।

২. যশোর অঞ্চল থেকে রবিন উত্তর-পূর্ব দিকের পাহাড়িয়া অঞ্চলে বেড়াতে গিয়ে বিশেষ ধরনের ফসল দেখতে পেল যা অর্থকরী ফসল হিসাবে পরিচিত।
ক. BRRI-এর পূর্ণরূপ কী?
খ. বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতপূর্ণ ফসল উৎপাদনের অনুকূল নিয়ামক ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রবিনের দেখা ফসলটির বাণিজ্যিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. BRRI-এর পূর্ণরূপ হলো- Bangladesh Rice Research Institute.

খ. মৎস্য বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এটি কেবল খাদ্যই নয়; বরং রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন হয়। মৎস্য আমাদের প্রাণিজ আমিষের প্রায় ৬০ শতাংশ পূরণ করে থাকে।
দেশের সর্বত্রই প্রায় নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর, হাওর-বাওড়, সমুদ্র উপকূলের জলরাশিতে মৎস্য পাওয়া যায় ও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মৎস্য চাষ করা হয়ে থাকে। ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে মোট অভ্যন্তরীণ জলাশয়ের মাছ উৎপাদনের পরিমাণ ৩৮.৭৭ লক্ষ মে. টন। বাংলাদেশ মাছ রপ্তানিতে বিশ্বে সপ্তম। তবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে চিংড়ির অবস্থান চতুর্থ।

গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত ফসলটি হলো চা যা উৎপাদনে কিছু অনুকূল নিয়ামক প্রয়োজন। নিচে চা উৎপাদনের জন্য অনুকূল নিয়ামক ব্যাখ্যা করা হলো
চা চাষের জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু প্রয়োজন। চা গাছের বৃদ্ধিকালীন সময়ে তাপমাত্রা ২০° সে অপেক্ষা বেশি হওয়া আবশ্যক। চা গাছ স্বল্প তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। যেসব এলাকায় বছরে ১২৫ থেকে ৬২৫ সেমি বৃষ্টিপাত হয় এবং শুষ্ক ঋতু ক্ষণস্থায়ী সেখানে চা গাছের পাতা ও কুঁড়ি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের ৬০০ থেকে ১,২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত পার্বত্য ঢালু অঞ্চলে চা বাগান গড়ে তোলা হয়। পাবত্য ঢালু অঞ্চল অপেক্ষাকৃত শীতল। সেখানে প্রবল বৃষ্টিপাত হলেও চা গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকে না। চা বাগান তৈরির জন্য বাভন্ন ধরনের পরিবেশ বিদ্যমান থাকা প্রয়োজন। নাইট্রোজেনযুক্ত কিছুটা অন্নধর্মী মৃত্তিকা চা গাছ জন্মানোর জন্য বিশেষ উপযোগী।
এছাড়া সুলভ শ্রমিকের যোগান, উন্নত পরিবহন সার ও কীট নাশকের যোগান, সরকারি ঋণনীতি প্রভৃতি আর্থ-সামাজিক নিয়ামকও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

ঘ. উদ্দীপকে রবিনের দেখা ফসলটি হলো চা, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চায়ের ভূমিকা অপরিসীম।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বাণিজ্যিক ফসল। বাংলাদেশে চায়ের ব্যাপক পা রয়েছে। এছাড়া চায়ের বিশ্ববাণিজ্যেও বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে।
বাংলাদেশ হতে চা প্রধানত যুক্তরাজ্য, রুশ ফেডারেশন, ভারত, পোল্যান্ড, পাকিস্তান, মিশর, যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের চা রপ্তানি করেছে। শুধু তাই নয় এই চা বাগানে চাকরি করে বিপুল পংখ্যক লোক তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে। তাই বলা যায়, স্থানীয় চাহিদা পূরণ, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, বেকারত্ব লাঘব ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চায়ের যথেষ্ট অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।

৩. নিচের চিত্রটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ক. অর্থকরী ফসল বলতে কী বুঝায়?
খ. বাগিচা-কৃষি বলতে কী বুঝায়?
গ. উদ্দীপকে 'A' চিহ্নিত কৃষি সংস্থার কার্যক্রম ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে উদ্দীপকের চিহ্নিত C সংস্থার ভূমিকা বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যেসব ফসল অর্থ-উপার্জনের জন্য চাষ করা হয় তাকে অর্থকরি ফসল বলা হয়।

খ. বাণিজ্যিক প্রয়োজনে বড় বড় বাগিচা তৈরি করে যে কৃষিকার্য করা হয় তাকে বাগিচা কৃষি বলে। বাগিচা কৃষির উল্লেখযোগ্য উদাহরণ বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার চা চাষ, মালয়েশিয়ার রবার চাষ, ঘানার কোকো চাষ ইত্যাদি। অধিকাংশ বাগিচাই বর্তমানে স্বদেশী মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে।

গ. উদ্দীপকে 'A' চিহ্নিত কৃষি সংস্থাটি হলো- BADC.
BADC এর পূর্ণ নাম হলো- Bangladesh Agricultural Development Corporation. এ সংস্থার মূল কাজ হলো বীজের উৎপাদন, উচ্চফলনশীল বীজ উৎপাদন এবং বীজের গুণ বৃদ্ধি করা। এ সংস্থার ২১ টি বীজ উৎপাদন খামার এবং এ সংক্রান্ত ১৫টি চুক্তিবদ্ধ উৎপাদন খামার রয়েছে। তারপর এসব বীজকে যান্ত্রিকভাবে ১২টি বীজ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের ভেতর ও বাইরে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে উৎপাদনক্ষম করে তোলা হয়। এছাড়া সারাদেশে এ সংস্থার ১৬টি হিমাগার রয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে এ সংস্থার ব্যাপক কার্যক্রম লক্ষ করা যায়।

ঘ. উদ্দীপকে 'C' চিহ্নিত কৃষি সংস্থাটি হলো- BRRI. BRRI এর পূর্ণ রূপ Bangladesh Rice Research Institute. বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে এ সংস্থায় ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। নতুন নতুন বীজের উদ্ভাবন, পুরনো কম উৎপাদনশীল বীজের পরিবর্তে উচ্চফলনশীল ধানবীজের উদ্ভাবন এবং ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করা এ সংস্থার কাজ। আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থা এ সংস্থার সাথে বিভিন্ন ইস্যুতে জড়িত আছে। এ সংস্থা ইতিমধ্যে বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আইলা, সিডরের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে ফসলের সে উৎপাদন ব্যাহত রয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে নতুন বন্যা প্রতিরোধ (Flood tolerent) ও লবণসহিষ্ণু বীজ উৎপাদন করে থাকে।
এ সংস্থা কর্তৃক উদ্ভাবিত প্রথম ধানের জাত হলো- বি আর-(চন্দনা) এবং দুটি হাইব্রিড জাত হলো ব্রি হাইব্রিড ধান-১, ব্রি হাইব্রিড ধান-২। এ সংস্থা উন্নত জাতের উফসি ধানের চাষ এবং আধুনিক পদ্ধতিতে ব্যবহারের প্রবর্তনের কাজ করেন। আয় এভাবে BRRI প্রতিনিয়ত কৃষি উন্নয়নে ভূমিকা রয়েছে।

৪. বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য শস্যটির উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে চীন। শীতকালীন ও বসন্তকালীন ফসল হিসেবে পরিচিত কৃষিপণ্যটি যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করে থাকে।
ক. পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম পাট উৎপাদনকারী দেশের নাম লেখ।
খ. বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে কেন সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদন হয়?
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতপূর্ণ শস্য চাষের ভৌগোলিক নিয়ামক ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে দেশদ্বয়ে উৎপাদিত শস্যটির বৈদেশিক বাণিজ্যের স্বরূপ বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তর পাট উৎপাদনকারী দেশ হলো বাংলাদেশ।

খ. সিলেট অঞ্চলের ভূমি ঢালু ও চা চাষের উপযোগী সর নিয়ামক উপস্থিত থাকায় এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি চা উৎপন্ন হয়।
চা চাষের জন্য অপেক্ষাকৃত ঢালু জমি প্রয়োজন। সমুদ্রপৃষ্ঠের ৬০০ থেকে ১২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত পার্বত্য ঢালু অঞ্চলে চা বাগান গড়ে তোলা হয়। পার্বত্য ঢালু অঞ্চল অপেক্ষাকৃত শীতল। সেখানে প্রবল বৃষ্টিপাত হলেও চা গাছের গোড়ার পানি জমে থাকে না। তাই বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে চা উৎপাদন বেশি হয়।

গ. উদ্দীপক ইঙ্গিতকৃত শস্যটি হলো গম।
গম চাষের জন্য জলবায়ুর প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ফসল। স্থানীয় জলবায়ু বিশেষত উত্তাপ ও বৃষ্টিপাতের ওপরই গমের মান ও হেক্টরপ্রতি উৎপাদন নির্ভর করে থাকে। গম চাষের জন্য গড়ে ৩০ - ১০০ সে.মি. বৃষ্টিপাত এবং ১৮° - ২২° সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োজন। এজন্য শুষ্ক নাতিশীতোষ্ণ বা শীতপ্রধান দেশের আবহাওয়া গম চাষের জন্য উপযোগী।
দোআঁশ মাটি অর্থাৎ যে মাটিতে বালি ও কাদা বা পলির পরিমাণ সর্বত্র সমান থাকে সে মাটি গম চাষের পক্ষে উপযুক্ত। ব্যাপকভাবে গম চাষের জন্য সমতলভূমির প্রয়োজন। সমতলভূমিতে পানিসেচ করা সহজ।

ঘ. উদ্দীপকে দেশদ্বয় হলো, বাংলাদেশ, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে উৎপাদিত শস্যটি হলো গম।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে গম সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যশস্য। বর্তমান বিশ্বে উৎপাদিত গমের প্রায় ১৫ শতাংশ বিশ্ব বাজারে প্রবেশ করে। সমগ্র পৃথিবীর মধ্যে চীন সবচেয়ে বেশি গম উৎপাদন করে, কিন্তু এদেশ গম রপ্তানি করে না।

দেশসমূহ

আমদানি

দেশসমূহ

রপ্তানি

মিসর

২.৭

রাশিয়া

৭.৯

ইন্দোনেশিয়া

২.৬

যুক্তরাষ্ট্র

৬.৩২

তুরস্ক

২.৩৩

কানাডা

৬.৩

চীন

২.২৬

ফ্রান্স

৪.৫

উপরে বিভিন্ন দেশের মধ্যে গম আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ একটি ছকের মাধ্যমে তুলে ধরা হলো
আমদানিকৃত দেশসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মিসর, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, চীন প্রভৃতি প্রধান এবং রপ্তানিকৃত দেশের মধ্যে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স প্রভৃতি।

৫. দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য যা প্রধানত মৌসুমি অঞ্চলের ফসল। ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী ফসলটি যে দেশটিতে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় সেই দেশটিই আবার সবচেয়ে বেশি আমদানি করে থাকে।
ক. চায়ের আদিভূমি কোন দেশে?
খ. হুনান প্রদেশকে পৃথিবীর চালের আঁধার বলা হয় ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ফসলটি উৎপাদনের প্রাকৃতিক নিয়ামক ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দেশটির ইঙ্গিতকৃত ফসলটি উৎপাদন ও আমদানিতে শীর্ষ হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. চায়ের আদিভূমি হলো চীন।

খ. চীনের প্রায় সর্বত্রই ধানের চাষ হয়। তবে অধিকাংশ ধান দক্ষিণ ও ও মধ্য চীনে ইয়াংসিকিয়াং ও সিকিয়াং নদীর অববাহিকা; দক্ষিণপূর্বের উপকূলভাগ ও সেচুয়ান অববাহিকায় হয়ে থাকে। এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলে ধাপ কেটেও ধানের চাষ হয়। চীনের হুনান প্রদেশ ধান উৎপাদনে প্রসিদ্ধ। হেক্টরপ্রতি এত অধিক ধান পৃথিবীর অন্য কোনো স্থানে উৎপন্ন হয় না বলে একে চালের আধার বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে ফসলটি হলো ধান। নিচে ধান চাষের প্রাকৃতিক নিয়ামক ব্যাখ্যা করা হলো।
ধান চাষের জন্য ১৬° - ৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ১০০ - ২০০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা প্রয়োজন।
নদী অববাহিকায় পলিমাটি ধান চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। কারণ নদনদী ও খালবিলের উপকূলীয় এলাকায় ধান চাষের জন্য পর্যাপ্ত উর্বর জমি ও পানি পাওয়া যায়। এছাড়া ধান চাষের জন্য সমতলভূমি ও পলিযুক্ত উর্বর এঁটেল দোআঁশ মাটি অধিক উপযোগী। ধান অতি আর্দ্র বা অতি শুষ্ক যেকোনো আবহাওয়ায় চাষ করা যায়, তবে ধান সংগ্রহের সময় অধিক বৃষ্টি ফসলের জন্য ক্ষতিকর। বিশ্বের প্রায় ৯৫% ধান। সমতল ও নিম্নভূমিতে উৎপাদন হয়।

ঘ. উদ্দীপকের দেশটি হলো চীন। যেখানে উৎপাদিত ফসল হলো ধান। নিচে চীনের ধান উৎপাদন ও আমদানিতে শীর্ষ হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা হলো।
ধান মূলত ক্রান্তীয় মৌসুমি অঞ্চলের ফসল। ধান চাষের জন্য যে প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক নিয়ামক প্রয়োজন হয় চীনে তা যথেষ্ট পরিমাণ বিদ্যমান। চীনের ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু ধান উৎপাদনে সহায়ক। শুধু তাই নয় ধান চাষের জন্য যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত ও উত্তাপের প্রয়োজন তাও এদেশে বিদ্যমান।
চীনের আয়তনও, অনেক বড়। এছাড়া চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হওয়ায় এবং জনবল বেশি থাকায় এদেশে ধান চাষের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন ও শ্রমিকের যোগান সহজলভ্য। তাই এদেশ ধান উৎপাদনে শীর্ষে।
আবার প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন হলেও জনসংখ্যা অত্যধিক বেশি হওয়ায় চীনের মোট উৎপাদিত ধান সেদেশে জনগণের চাহিদা মেটাতে সক্ষম নয়। অর্থাৎ, চীনে প্রচুর ধান উৎপাদন হলেও তা চাহিদার তুলনায় কম। তাই চীন বাইরের দেশ হতে ধান শুধু আমদানি করে তা-ই নয় এদেশ ধান আমদানিতে শীর্ষে। ২০১৬ সালে চীনের ধান আমদানির পরিমাণ ৫৫ লক্ষ মে. টন।

৬. ইয়াংসিকিয়াং ও সিকিয়াং নদী বিধৌত দেশটি ধান উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। প্রাকৃতিক বিভিন্ন নিয়ামকের অনুকূল অবস্থা বিদ্যমান থাকার কারণে আমরা প্রচুর ধান উৎপন্ন করলেও অত্যধিক জনসংখ্যার কারণে চাহিদা পূরণে আমাদের ধান আমদানি করতে হয়।
ক. এশিয়ার অধিবাসীদের প্রধান খাদ্যশস্য কোনটি?
খ. প্রেইরী অলকে পৃথিবীর ‘রুটির ঝুড়ি' কেন বলা হয়? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটির ধান উৎপাদনের প্রাকৃতিক নিয়ামক ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দেশদ্বয়ের ধান উৎপাদনের তারতম্যের কারণ বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. এশিয়ার অধিবাসীদের প্রধান খাদ্যশস্য হলো ধান।

খ. উত্তর আমেরিকার কানাডার দক্ষিণাংশ হতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণে ওকলাহোমা ও মিসৌরি রাজ্য পর্যন্ত সমগ্র প্রেইরি অঞ্চলকে পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি বলা হয়।
রুটি প্রস্তুতের উপযোগী উন্নতমানের এত অধিক গম পৃথিবীর অন্য কোনো অঞ্চলে উৎপাদিত হয় না। প্রয়োজনের অতিরিক্ত গম উৎপন্ন হয় বলে এ অঞ্চলের অধিকাংশ গমই আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি হয়ে থাকে। এ কারণে উত্তর আমেরিকার এ অঞ্চলকে পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দেশটি হলো চীন। চীন ধান উৎপাদনে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। কিছু প্রাকৃতিক নিয়ামকের জন্য চীনে প্রচুর ধান উৎপাদন হয়।
ধান চাষের জন্য ১৬°-৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ১০০ - ২০০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপ্রবণ এলাকায় ধানের ফলন ভালো হয়। নদী অববাহিকায় পলিমাটি ধান চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। কারণ নদনদী ও খালবিলের উপকূলীয় এলাকায় ধান চাষের জন্য পর্যাপ্ত উর্বর জমি ও পানি পাওয়া যায়। এছাড়া ধান চাষের জন্য সমতলভূমি ও পলিযুক্ত উর্বর এঁটেল দোআঁশ মাটি অধিক উপযোগী। ধান অতি আর্দ্র বা অতি শুষ্ক যেকোনো আবহাওয়ায় চাষ করা যায় তবে ধান সংগ্রহের সময় অধিক বৃষ্টি ফসলের জন্য ক্ষতিকর। বিশ্বের প্রায় ৯৫% ধান সমতল ও নিম্নভূমিতে উৎপাদন হয়।
উপরিউক্ত নিয়ামকগুলো চীনের ধান উৎপাদনকারী অঞ্চলে যথেষ্ট পরিমাণে বিদ্যমান রয়েছে। তাই চীনে প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন হয়।

ঘ. উদ্দীপকে দেশদ্বয় হলো চীন ও বাংলাদেশ। বাংলাদেশে প্রচুর ধান উৎপাদন হলেও এর অধিক জনসংখ্যার জন্য ধান আমদানি করতে হয়। ধান উৎপাদনে চীন বিশ্বে প্রথম। ২০১৬ সালে এ দেশে ৩ কোটি ৩ লক্ষ ৫০ হাজার হেক্টর জমি চাষ করে ১৪ কোটি ৪৫ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন করা হয়। এটা পৃথিবীর মোট উৎপাদিত ধানের প্রায় ২৮.১৪%। চীনের ইয়াংসিকিয়াং নদীর অববাহিকা, হোয়াংহো নদীর উপত্যকা ইউনান, কোচেচুয়ান ও কুইডো প্রদেশের নদী অববাহিকা, ক্যান্টন ও এর আশেপাশের এলাকা এবং উপকূলীয় এলাকা ও হাইনান দ্বীপে উল্লেখযোগ্য হারে ধান উৎপাদিত হয়।
চীনের হুনান প্রদেশ ধান উৎপাদনে প্রসিদ্ধ। হেক্টরপ্রতি এত অধিক ধান পৃথিবীর অন্য কোনো স্থানে উৎপন্ন হয় না বলে একে ‘ধানের আধার’ (Rice Bowl) বলা হয়।
অন্যদিকে বাংলাদেশের আবাদি জমির প্রায় ৭০% জমিতে ধানের চাষ হয়ে থাকে। এ দেশের মাটি ও জলবায়ু ধান চাষের বিশেষ উপযোগী হওয়ায় এর প্রায় সর্বত্রই ধানের চাষ হয়। ২০১৪-১৫ সালে ২ কোটি ৮২ লক্ষ একর জমিতে ধানের চাষ করে প্রায় ৩ কোটি ৪৭ লক্ষ ১০ হাজার টন ধান উৎপন্ন হয়। গড়ে একরপ্রতি ফলন ছিল প্রায় ১.২৩ টন।
অতএব বলা যায়, আয়তন, জলবায়ু ও মৃত্তিকাজনিত পার্থক্যের কারণে চীন ও বাংলাদেশের ধান উৎপাদনে তারতম্য পরিলক্ষিত হয়।

HSC ভূগোল ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৪ pdf download

৭. নিচের চিত্রটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ক. কৃষি কী?
খ. চা চাষের জন্য ঢালু ভূমি প্রয়োজন কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. 'ক' অঞ্চলে গম উৎপাদনের ভৌগোলিক নিয়ামক ব্যাখ্যা কর।
ঘ. গমের বিশ্ববাণিজ্যে ‘ক’ ও ‘খ’ অঞ্চলের তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূমিকর্ষণ বা চাষ করার মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করাকেই কৃষি বলে।

খ. চা গাছের গোড়ায় অধিক সময় পানি জমে থাকলে চা গাছ মরে যায়। তাই চা চাষের জন্য উঁচু ও ঢালু জমির প্রয়োজন।
সমুদ্রপৃষ্ঠের ৬০০ থেকে ১২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত পার্বত্য ঢালু অঞ্চলে চা বাগান গড়ে তোলা হয়। পার্বত্য ঢালু অল অপেক্ষাকৃত শীতল। সেখানে প্রবল বৃষ্টিপাত হলেও চা গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকে না। চা বাগান তৈরির জন্য এ ধরনের পরিবেশ আবশ্যক।

গ. উদ্দীপকে ‘ক’ অঞ্চলটি হলো এশিয়া।
গম চাষের জন্য যে ধরনের ভৌগোলিক নিয়ামক প্রয়োজন তা সবই এশিয়ায় বিদ্যমান। গম চাষের জন্য জলবায়ুর প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ফসল। স্থানীয় জলবায়ু বিশেষত উত্তাপ ও বৃষ্টিপাতের ওপরই গমের মান ও হেক্টরপ্রতি উৎপাদন নির্ভর করে থাকে। গম চাষের জন্য গড়ে ৩০ সে.মি.-১০০ সে.মি. বৃষ্টিপাত এবং ১৮°C - ২২°C তাপমাত্রা প্রয়োজন যা দক্ষিণ এশিয়ার বহু অঞ্চলে বিদ্যমান।
দোআঁশ মাটি অর্থাৎ যে মাটিতে বালি ও কাদা বা পলির পরিমাণ সর্বত্র সমান থাকে সে মাটি গম চাষের পক্ষে উপযুক্ত। এরূপ দোআঁশ মৃত্তিকাবিশিষ্ট ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল গম চাষের আদর্শস্থল। এশিয়া অঞ্চলে মৃত্তিকার উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
অতএব বলা যায় গম চাষের উপযোগী জলবায়ু, মৃত্তিকা, ভূপ্রকৃতিসহ প্রয়োজনীয় ভৌগোলিক নিয়ামক দক্ষিণ এশিয়ায় বিদ্যমান থাকায় এ অঞ্চলে গমের ফলন ভালো হয়।

ঘ. চিত্রে ‘ক’ ও ‘খ’ চিহ্নিত অলদ্বয় হলো উত্তর আমেরিকা ও এশিয়া মহাদেশ যেখানে ব্যাপক হারে গম চাষ হয়।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে গম সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যশস্য। বর্তমান বিশ্বে উৎপাদিত গমের প্রায় ১৫ শতাংশ বিশ্ব বাজারে প্রবেশ করে। তবে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে গমের চাহিদা বেশি। এশিয়ার অন্তর্ভুক্ত দেশ চীন সবচেয়ে বেশি গম উৎপাদন করে কিন্তু এদেশ গম রপ্তানি করে না। এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হতে গম আমদানি করে। আমদানিকৃত দেশের মধ্যে চীন, জাপান, পাকিস্তান, তুরস্ক, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ইরান প্রভৃতি দেশ অন্যতম। অন্যদিকে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রয়োজনীয় গম উদ্বৃত্ত রেখে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে। গম রপ্তানিতে উত্তর আমেরিকা শীর্ষে।
অতএব, বলা যায়, বিশ্বে গম আমদানি ও রপ্তানিতে অর্থাৎ বিশ্ব বাণিজ্যে এশিয়া ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের তাৎপর্য ব্যাপক।

৮. কৃষি একটি প্রাচীন পেশা। এর উন্নতি কতিপয় নিয়ামকের ওপর নির্ভরশীল। এ সকল নিয়ামক পৃথিবীর সর্বত্র একইরূপ নয় বলে এক এক অঞ্চলে এক এক প্রকার ফসল প্রচুর জন্মে। ক-শ্রেণির নিয়ামকগুলো প্রকৃতি প্রদত্ত এবং খ-শ্রেণির নিয়ামকগুলো সরাসরি প্রকৃতি প্রদত্ত নয়। মানুষ ও সমাজ কর্তৃক প্রাপ্ত হয়।
ক. কৃষির সংজ্ঞা দাও।
খ. কৃষি একটি প্রাচীন পেশা-ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ক-শ্রেণির নিয়ামকগুলো ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে খ-শ্রেণির নিয়ামকগুলো কীভাবে কৃষিকার্যে সহায়তা করে মতামত দাও।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূমিকর্ষণ বা চাষ করার মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করাকেই কৃষি বলে।

খ. সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকেই মানুষ কৃষির সাথে সম্পৃক্ত।
ফলমূল খেয়ে ফেলে দেওয়া বীজ থেকে নতুন গাছ হতে দেখে মানুষ কৃষিকাজের ধারণা পায়। তখন থেকেই মানুষ কৃষিভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলে। বর্তমান সভ্যতা প্রযুক্তির যুগ হলেও কৃষিই উৎপাদনের প্রধান অবলম্বন। মূলত প্রাচীনকাল হতে কৃষিকাজ মানুষের প্রধান পেশা।
সুতরাং নিঃসন্দেহে বলা যায় কৃষি একটি প্রাচীন পেশা।

গ. উদ্দীপকে ‘ক’ শ্রেণিতে কৃষিকার্যের প্রাকৃতিক নিয়ামকের কথা বলা হয়েছে।
এ প্রাকৃতিক নিয়ামকগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষিকাজে প্রভাব বিস্তার করছে।
কৃষিকাজের প্রধান প্রাকৃতিক নিয়ামক হলো জলবায়ু। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে নানা ধরনের কৃষি পদ্ধতি বিভিন্ন জলবায়ু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
ভূমির অবস্থা এবং সমুদ্রতল থেকে এর উচ্চতার ওপর নির্ভর করে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে নানা ধরনের ফসল জন্মে। মৃত্তিকা কৃষিকাজের প্রধান নিয়ামকের একটি। মৃত্তিকা উর্বর না অনুর্বর তার ওপর কৃষিকাজ অনেকটা নির্ভর করে। পানি সঞ্চয়ের কারণে নদনদীর উভয় তীর কৃষি চাষের জন্য উত্তম। ফলে নদী অববাহিকা অঞ্চলে উত্তম কৃষিকাজ হয়ে থাকে।

ঘ. উদ্দীপকের খ শ্রেণিতে কৃষিকার্যের অপ্রাকৃতিক নিয়ামকের কথা বলা হয়েছে। অপ্রাকৃতিক নিয়ামকের মধ্যে রয়েছে- মূলধন, শ্রমিক পরিবহন ও বাজার ব্যবস্থা।
কৃষিকাজের জন্য পর্যাপ্ত মূলধন প্রয়োজন। পর্যাপ্ত মূলধন ছাড়া কৃষিকাজ সম্ভব নয়। কৃষিকাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাথ সম্পাদনের জন্য দক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন। পর্যাপ্ত শ্রমিক পাওয়া গেলে কৃষিকাজ সহজ হয়। উৎপাদিত পচনশীল ও অন্যান্য পণ্যসামগ্রী বাজারজাতকরণের জন্য উন্নত ও আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। পৃথিবীর যে অঞ্চলে যে পণ্যের চাহিদা বা বাজার থাকে অঞ্চলে সেই ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদিত হয়।
সুতরাং বলা যায় যে, কৃষিক্ষেত্রে অগ্রগতির জন্য প্রাকৃতিক নিয়ামকে পাশাপাশি অপ্রাকৃতিক নিয়ামকেরও যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।

৯. আলী হোসেন গ্রামের একজন প্রতিষ্ঠিত কৃষক। বাংলাদেশ সরকার গ্রামের উন্নয়নের জন্য একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প চালু করেছেন। আলী হোসেন এই প্রকল্পের আওতায় নিজের জমিতে ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি নিজের পুকুরে কার্পজাতীয় মাছের চাষ করেন। এছাড়া সনাতন কৃষি পদ্ধতির পরিবর্তে সে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অধিক লাভবান হচ্ছেন।
ক. বাংলাদেশের মানুষের প্রধান উপজীবিকা কী?
খ. প্যালাজিক মৎস্য বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত মৎস্য চাষের জন্য কীভাবে আদর্শ পুকুর তৈরি করা যায় ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আলী হোসেন কী পদক্ষেপের মাধ্যমে কৃষিতে অধিক লাভবান হচ্ছেন- উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের মানুষের প্রধান উপজীবিকা কৃষি।

খ. সমুদ্রের যেসব মৎস্য দিনের বেলায় সমুদ্রের গভীর অংশে চলে যায় এবং রাতে সমুদ্রের উপরিভাগে ঝাঁকে ঝাঁকে বিচরণ করে এদেরকে প্যালাজিক মৎস্য বলে।
প্যালাজিক মৎস্য একটি সামুদ্রিক মৎস্য। এ শ্রেণির মাছ সমুদ্রের উপরের অংশে বাস করে। হেরিং, ম্যাকারেল, পিলচার্ড, সার্ডিন, ব্রিসলিং, অ্যানকোভিস, মেনহাডেন, কেপলিন ইত্যাদি প্যালাজিক মৎস্য।

গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত মৎস্য চাষের জন্য কয়েকটা ধাপে আদর্শ পুকুর তৈরি করা যায়। উপযুক্ত নতুন পুকুর কেটে বা পুরোনো পুকুর সংস্কার করে আদর্শ পুকুর তৈরি করতে হয়।
উদ্দীপকে আলী হোসেন নিজের পুকুরে কার্পজাতীয় মাছ চাষ করতে চান। এজন্য তাকে একটি আদর্শ পুকুর তৈরি করতে হবে। তাই প্রথমেই তাকে পুকুরের পাড় উঁচু করে দিতে হবে যাতে বর্ষার পানি পুকুরে ঢুকতে না পারে। মাছের প্রিয় খাদ্য হলো পস্নাংটন। পুকুরে প্রচুর পরিমাণে পস্নাংটন থাকতে হবে। তার জন্য পুকুরে চুন দিয়ে জীবাণু। ধ্বংস করে এবং জৈব সার দিয়ে পুকুরকে উর্বর করে তুলতে হবে। এর ফলে মাছের প্রিয় খাদ্য পস্নাংটন উৎপাদন হবে। এভাবে একটি আদর্শ পুকুর তৈরি হয়ে গেলে নির্বাচিত মাছের পোনা ছাড়তে হবে।

ঘ. আলী হোসেন কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে লাভবান হচ্ছেন।
অনেকেই কৃষির আধুনিকীকরণ ব্যবস্থাপনায় আগ্রহী। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে যন্ত্রপাতি দ্বারা জমি চাষ, উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল বীজ বপন, কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার, উন্নত সেচ পদ্ধতির ব্যবহার, বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় ফসলের প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ করা হয়।
উদ্দীপকে আলী হোসেন চাষাবাদে উন্নত মানের যন্ত্রপাতি, উন্নত বীজ ও সার ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন কয়েকগুণ বৃদ্ধি করেছে। কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্য সমস্যার সমাধান করছে। সনাতন কৃষি পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার কম সময়ে অধিক জমি। চাষাবাদ করে কৃষিতে অধিক লাভবান হচ্ছেন।
সুতরাং আলী হোসেনের মতো এদেশের সর্বত্র কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলে খাদ্য সমস্যা বহুলাংশে হ্রাস পাবে। তাই এদেশের কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা আবশ্যক।

১০. নিচের ছকটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

বৈজ্ঞানিক নাম

বৈশিষ্ট্য

 

এক প্রকার দানাদার খাদ্যশস্য।

Tnticum aestivum

 

পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

 

নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ফসল।

ক. বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গ কোন ফসলের আদিভূমি?
খ. হুনান প্রদেশকে পৃথিবীর চালের আধার বলা হয় কেন?
গ. ছকে উল্লিখিত ফসলটি উৎপাদনের প্রাকৃতিক নিয়ামকসমূহ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ছকে উল্লিখিত ফসলটির ব্যবহার বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গ আখের আদিভূমি।

খ. বর্তমানে ধান উৎপাদনে চীন বিশ্বের প্রথম। চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে ধান উৎপন্ন হয়। তবে সবচেয় বেশি ধান উৎপাদন হয় হুনান প্রদেশে। অত্যধিক ধান উৎপাদন হয় বলে চীনের হুনান প্রদেশকে ধানের আধার বলা হয়।

গ. ছকে উল্লিখিত ফসলটি হলো গম। কারণ গমের বৈজ্ঞানিক নাম Triticum aestivum. গম উৎপাদনের প্রাকৃতিক নিয়ামক ব্যাখ্যা করা হলো।
গম চাষের জন্য জলবায়ুর প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ফসল। স্থানীয় জলবায়ু বিশেষত উত্তাপ ও বৃষ্টিপাতের ওপরই গমের মান ও হেক্টরপ্রতি উৎপাদন নির্ভর করে থাকে। গম চাষের জন্য গড়ে ৩০ সে.মি.-১০০ সে.মি. বৃষ্টিপাত এবং ১৮°C - ২২°C তাপমাত্রা প্রয়োজন। দোআঁশ মাটি অর্থাৎ যে মাটিতে বালি ও কাদা বা পলির পরিমাণ সর্বত্র সমান থাকে সে মাটি গম চাষের পক্ষে উপযুক্ত। এরূপ দোআঁশ মৃত্তিকাবিশিষ্ট ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল গম চাষের আদর্শস্থল।
ব্যাপকভাবে গম চাষের জন্য সমতলভূমির প্রয়োজন। সমতলভূমিতে পানিসেচ করা সহজ। আধুনিক কৃষিযন্ত্রের সাহায্যে সমতলভূমির বিস্তৃত এলাকা জুড়ে গমের চাষ করা হয়।
অতএব বলা যায় গম চাষের উপযোগী জলবায়ু, মৃত্তিকা, ভূপ্রকৃতিসহ প্রয়োজনীয় ভৌগোলিক নিয়ামক সংবলিত অঞ্চলে গমের ফলন ভালো হয়।

ঘ. ছকে উল্লিখিত ফসলটি হলো গম।
খাদ্যশস্যের মধ্যে গম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গম শুধু বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের প্রধান খাদ্যই নয়, গম থেকে বহুবিধ খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করা হয় যা অন্য কোনো দানাশস্য দিয়ে হয় না। এছাড়া আমদানি-রপ্তানি তথা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও গমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
নাতিশীতোষ্ণ ও শীতপ্রধান দেশের প্রধান খাদ্য হলো গম। মানুষ গম দয়ে আটা, ময়দা, সুজি প্রভৃতি উৎপাদন করে এবং এগুলো থেকে ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার এবং বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরি করা হয় বিশ্বে বেশির ভাগ দেশই প্রধান খাদ্য হিসেবে গমের ব্যবহার করে থাকে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post