HSC ভূগোল ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৩

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 2nd paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৩

HSC Geography
2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ক. মেগাসিটি কী?
খ. গ্রামীণ জীবনযাত্রায় হাটের ভূমিকা অসামান্য ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ‘ক’ চিহ্নিত স্থান প্রশাসনিক কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ ও ‘খ’ চিহ্নিত স্থানের জনসংখ্যার ঘনত্বের তারতম্য বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ৫০ লাখেরও বেশি জনসংখ্যাবিশিষ্ট নগরকে মেগাসিটি বলে।

খ. গ্রামের কোনো নির্দিষ্ট স্থানে, নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময়ে নিজেদের উদ্বৃত্ত পণ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতাদের স্বীকৃত জনজমায়েতকে গ্রামীণ হাট বলে।
গ্রামীণ জীবনযাত্রায় হাটের ভূমিকা অসামান্য। বৃহত্তর অর্থে গ্রামীণ পরিসরে হাট হচ্ছে আর্থসামাজিক স্নায়ুকেন্দ্র। এ হাটের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী ভোগ্যসামগ্রী সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। স্থানীয় মানুষের উদ্বৃত্ত পণ্য বিক্রয় এবং চাহিদাসম্পন্ন পণ্য ক্রয় ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্রামীণ হাটের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।

গ. উদ্দীপকে ‘ক’ চিহ্নিত স্থানটি হলো ঢাকা, যা বাংলাদেশের প্রশাসনিক কেন্দ্রবিন্দু।
ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। সব ধরনের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকান্ড ঢাকাকে কেন্দ্র করে সম্পন্ন হয়। ঢাকায় বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান, স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল প্রভৃতি গড়ে উঠেছে। সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সদরদপ্তরও ঢাকায় অবস্থিত। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টও ঢাকায় অবস্থিত। এক কথায় বাংলাদেশের যাবতীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক ও ও বিচার বিভাগীয় কর্মকান্ড ঢাকাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। তাই ঢাকাকে বাংলাদেশের প্রশাসনিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু বলে।

ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ চিহ্নিত অঞ্চলটি হলো ঢাকা অঞ্চল এবং ‘খ’ চিহ্নিত অঞ্চলটি হলো রাজশাহী অঞ্চল। এ উভয় অঞ্চলের মধ্যে জনসংখ্যা ঘনত্বের তারতম্য পরিলক্ষিত হয়।
ঢাকা হলো সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত অঞ্চল। বাংলাদেশের মূল প্রশাসনিক কেন্দ্রবিন্দু হলো ঢাকায়। এর আয়তন ৩১,১২০ বর্গ কি.মি. এবং জনসংখ্যা ৪,৯৩,২১,৬৮৮ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব ১,৫১২ জন। মোট নগর সংখ্যা ৪০টি। ঢাকায় প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা ব্যাপক আকারে থাকায় এ অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। উচচ শিক্ষার ব্যবস্থা, কর্মসংস্থান, যাতায়াত সুবিধা সরকারি বেসরকারি অফিসের অবস্থান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সদর দপ্তরের অবস্থান, বড় বড় হাসপাতাল, স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি ব্যাপক আকারে থাকায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। তাই ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি।
অন্যদিকে রাজশাহী হলো বাংলাদেশের তৃতীয় জনসংখ্যা অধ্যুষিত অঞ্চল। এ অঞ্চলের আয়তন ১৮,১৯০ বর্গ কি.মি.। মোট জনসংখ্যা ১,৯২,২৫,৯০৯ জন এবং ঘনত্ব ১,০১৮ জন। এ অঞ্চলে ৮টি নগর রয়েছে। রাজশাহী অঞ্চল প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক বিবেচনায় বসবাসের অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করলেও ঢাকার মতো এত ব্যাপক সুযোগ সুবিধা নেই। তাই প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক কিছু নিয়ামকের তারতম্যের র জন্য ঢাকা ও রাজশাহীতে জনসংখ্যার ঘনত্বের তারতম্য হয়।

২. হাবিব উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য নওগাঁয় নিজ গ্রাম ছেড়ে রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়। সে তার গ্রাম ও রাঙামাটি অঞ্চলের ঘরবাড়ি, কৃষিকাজ, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ইত্যাদির মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য খুঁজে পায়, যা দুই অঞ্চলের অধিবাসীদের জীবনযাত্রার ব্যাপক প্রভাববিস্তার করে।
ক. নগরায়ণ কাকে বলে?
খ. বসতি গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে জলবায়ুর ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ধরনগুলোর সাধারণ বৈশিষ্ট্য হাবিবের গ্রামের আলোকে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে হাবিবের নিজ এলাকা এবং তার পড়তে আসা অঞ্চলটির বসতি বিন্যাসের পার্থক্য বিশ্লেষণ কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি নগরে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী সেই নগরের নাগরিকে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে নগরায়ণ বলে।

খ. বসতি গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে জলবায়ুর ভূমিকা অপরিসীম।
শুষ্ক জলবায়ু অঞ্চলে এক ধরনের বসতি আবার শীতল জলবায়ু অঞ্চলে অন্য ধরনের বসতি গড়ে উঠতে দেখা যায়। উত্তর কানাডা ও গ্রীনল্যান্ডে শীতকালে এস্কিমোরা ইগলু নামক গম্বুজাকৃতির বরফের ঘরে বাস করে আবার, যখন গ্রীষ্মকাল আসে তখন তারা সীলমাছের চামড়া দিয়ে তাঁবু দ্বারা ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাস করে। এভাবে জলবায়ু বসতি স্থাপনে ভূমিকা রাখে।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত হাবিবের গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলায়, সেখানে কিছুটা পুঞ্জীভূত বসতি গড়ে উঠেছে। যেসব অঞ্চলে কৃষিকাজের খুব একটা গুরুত্ব নেই সেখানে কিছুটা পুঞ্জীভূত বসতি গড়ে ওঠে।
নওগাঁ জেলায় পুঞ্জীভূত বসতির আওতার মধ্যে পড়ে। কারণ সেখানে বাড়িঘরগুলো কিছুটা পুঞ্জীভূত। এ অঞ্চলে রাস্তাঘাট কম থাকায় পরিবহন ব্যবস্থা তেমন উন্নত নয়। অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বলতে এ অঞ্চলে সামান্য কৃষিকাজ হয়। ব্যবসায়-বাণিজ্যেও তেমন অগ্রসর নয়। কিছু কিছু গ্রামে মৎস্য চাষ হয়। এছাড়া গ্রামের গৃহকর্মীরা হস্তশিল্পজাত পণ্য তৈরি করে পরিবারের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে কিছুটা অবদান রাখে। তবে সার্বিক দিক বিবেচনায় এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক। অবস্থা তেমন উন্নত নয়।

ঘ. উদ্দীপকে হাবিবের নিজ এলাকা নওগাঁ জেলা যেখানে কিছুটা পুঞ্জীভূত বসতি এবং তার পড়তে আসা অঞ্চলটি হলো রাঙামাটি জেলা যেখানে রৈখিক বসতি গড়ে উঠেছে। নিচে কিছুটা পুঞ্জীভূত বসতি এবং রৈখিক বসতির মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হলো-
ছোট ধরনের বা কম পুঞ্জীভূত বসতিকে কিছুটা পুঞ্জীভূত ধরনের বসতি বলে। যেসব অঞ্চলে কৃষিকাজের তেমন গুরুত্ব নেই সেখানে কিছুটা পুঞ্জীভূত বসতি গড়ে ওঠে। বাংলাদেশের বরেন্দ্র ভূমির পূর্বাংশ, মৃতপ্রায় বদ্বীপ অঞ্চল, রাজশাহীর পশ্চিমাঞ্চল, সিলেটের পূর্বাঞ্চলে এই ধরনের বসতি দেখা যায়। এসব অঞ্চলে রাস্তাঘাট কম থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নত নয়।
অন্যদিকে বিভিন্ন বসতি অন্যরকম। বাংলাদেশের পার্বত্য দুর্গম এলাকায় যেসব উপজাতীয় বসতি গড়ে উঠেছে সেগুলো বিচ্ছিন্ন। মুরং, কুকি, ত্রিপুরা, প্রভৃতি উপজাতীয় বসতিগুলো ঝরনার কাছাকাছি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নভাবে গড়ে উঠেছে। রংপুর, দিনাজপুর সীমান্তবর্তী এলাকার কোচ উপজাতিদের বসতিগুলো বিচ্ছিন্ন প্রকৃতির। সিলেট ও চট্টগ্রামের চা বাগান এলাকা, বান্দরবান, রাঙামাটি প্রভৃতি এলাকায় অনেকাংশে বিভিন্ন বসতি গড়ে ওঠে।
এ ধরনের বসতি সাধারণত পাহাড়ি এলাকায় দেখা যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হয়। এ ধরনের বসতিটিতে একটি বাড়ি থেকে অন্য বাড়ির দূরত্ব কম থাকে। বাংলাদেশেও পার্বত্য এলাকায় বিচ্ছিন্ন বসতি গড়ে উঠেছে।

৩. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ক. গ্রামীণ হাট কাকে বলে?
খ. ভূপ্রকৃতি বসতি গঠনে কীভাবে প্রভাবিত করে? ব্যাখ্যা কর।
গ. ‘ক’ অঞ্চলে বসতি গড়ে ওঠার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘ক’ ও ‘খ’ বসতির বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক ব্যাখ্যা কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. গ্রামের কোনো নির্দিষ্ট স্থানে, নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময়ে নিজেদের উদ্বৃত্ত পণ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতাদের স্বীকৃত জনজমায়েতকে গ্রামীণ হাট বলে।

খ. জনবসতি গড়ে ওঠার পেছনে ভূপ্রকৃতি ব্যাপক প্রভাববিস্তার করে থাকে।
সমতলভূমিতে কৃষিকাজ করা যত সহজ অসমতল ভূমিতে ততটা নয়। এছাড়াও সমতল ভূমিতে যাতায়াতের সুবিধাও বসতি গড়ে ওঠার শতম কারণ। অন্যদিকে বন্ধুর ভূপ্রকৃতিতে খুব কমই বসতি গড়ে ওঠে। বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল বন্ধুর প্রকৃতির হওয়ায় এখানে জনবসতি কম।

গ. ‘ক’ অঞ্চলে সারিবদ্ধ বসতি গড়ে উঠেছে।
যে বসতিগুলো পাশাপাশি অবস্থিত হয়ে একটি অবিচ্ছিন্ন সারি সৃষ্টি করে তাকে সারিবদ্ধ বসতি বলে। এ ধরনের বসতি ৫ থেকে ৬ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। প্রধানত প্রাকৃতিক এবং কিছুক্ষেত্রে সামাজিক কারণে এ ধরনের বসতি গড়ে ওঠে।
নদীর প্রাকৃতিক বাঁধ বা কিনারা, রাস্তার ধারে এবং রেলপথের উভয় পাশে এ ধরনের বসতি গড়ে ওঠে। বন্যামুক্ত ভূমি এ ধরনের বসতি গড়ে তোলার জন্য সুবিধাজনক। এ কারণেই দেশের মৃতপ্রায় বদ্বীপ অঞ্চলে এ ধরনে বসতি দেখা যায়। বড় রাস্তার ধারে ও গ্রামাঞ্চলে রৈখিক বসতি দেখা যায়। যেসব নদী সক্রিয় নয় সেগুলোর তীরেও সারিবদ্ধ বসতি গড়ে ওঠে। যেমন, রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চল।

ঘ. ‘ক’ ও ‘খ’ যথাক্রমে রৈখিক বা সারিবদ্ধ এবং গোলাকার বসতি নির্দেশ করে। বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী এ উভয় ধরনের বসতির মধ্যে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নিচে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
সারিবদ্ধ বসতি পাশাপাশি অবস্থিত হয়ে সরলরেখায় গড়ে ওঠে। অন্যদিকে গোলাকার বসতি প্রাকৃতিক সুবিধা বা আকর্ষণীয় কোনো স্থানের চারপাশে বৃত্তাকারে গড়ে ওঠে।
নদীর প্রাকৃতিক বাধ বা কিনারা, রাস্তার ধারে এবং রেলপথের উভয় পাশে সারিবদ্ধ বসতি দেখা যায়। যেমন, কক্সবাজারের উপকূলবর্তী বসতি।
অন্যদিকে, শুষ্ক অঞ্চলে কোনো ঝরনা, বিল বা হ্রদ ইত্যাদির চারপাশে গোলাকার বসতি গড়ে ওঠে। যেমন, রাজশাহীর চলন বিল এলাকার বসতি।
সারিবদ্ধ বসতি সাধারণত নিবিড় হয়ে থাকে। এখানে গড়ে ওঠা পুঞ্জীভূত বসতিগুলোর মধ্যে কিছুটা ফাঁকা থাকে সেখানে খামার অথবা অন্য কোনো অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয়। এ ধরনের বসতিতে সামাজিক যোগাযোগ কঠিন, কেননা প্রান্তস্থিত (marginal). বসতিগুলো একটি থেকে আরেকটি অনেক দূরে অবস্থিত। তবে এ ধরনের বসতিতে যাতায়াতের সুবিধা রয়েছে।
অন্যদিকে গোলাকার বসতি ততটা নিবিড় হয় না। কেননা এর সেবা সুবিধাপ্রাপ্তির একটি কেন্দ্র আছে। এ বসতিতে যাতায়াত ব্যবস্থার বিন্যাসও সুবিধাজনক হয় না। তবে গোলাকার বলে বসতির অধিবাসীদের সামাজিক যোগাযোগ নিবিড় হয়।
উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, সারিবদ্ধ ও গোলাকার বসতির বাহ্যিক রূপে যেমন ভিন্নতা রয়েছে এর অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যেও রয়েছে ব্যাপক পার্থক্য।

৪. আনোয়ার সাহেব বাংলাদেশের একটি অঞ্চলে বেড়াতে গেলেন। সেখানে তিনি কিছু বসতি খুঁজে পেলেন যেগুলোর বেশিরভাগই পুঞ্জীভত এবং অল্প কিছু বসতি বিক্ষিপ্তভাবে রয়েছে। এছাড়া তিনি আরও দেখতে পান যে, ঐসব এলাকার বসতিগুলো কৃষিভূমির আশেপাশে গড়ে উঠেছে।
ক. আনোয়ার সাহেবের ভ্রমণকৃত এলাকা কোন বসতির উদাহরণ?
খ. গ্রামীণ হাটবাজার গড়ে ওঠার কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. বিক্ষিপ্ত বসতি ও পুঞ্জীভূত বসতির তুলনামূলক বর্ণনা কর।
ঘ. কৃষিভূমির সাথে বসতি গড়ে ওঠার আদৌ কি কোনো সম্পর্ক আছে? বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আনোয়ার সাহেবের ভ্রমণকৃত এলাকা গ্রামীণ বসতির উদাহরণ।

খ. বাংলাদেশের গ্রামীণ হাটবাজারগুলো গড়ে ওঠার পেছনে এ কারণগুলো হলো স্থানীয় চাহিদার উদ্বৃত্ত চালান, দূরবর্তী পরিব্রাজক সেবা প্রদান, অনুকূল যোগাযোগ ব্যবস্থা, চাহিদার তারতম্য প্রভৃতি।
যে অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি উর্বর, রাস্তাঘাট কাঁচাপাকা বা আধাপাকা এবং কয়েকটি অঞ্চলের সাথে ভালো যোগাযোগব্যবস্থা থাকে সেসব অঞ্চলে হাটবাজারগুলো গড়ে উঠেছে। বেশিরভাগ হাটবাজার গড়ে উঠে বাজারসংশিস্নষ্ট এলাকাগুলোর মধ্যে উদ্বৃত্ত পণ্যসামগ্রী ও সেবাকর্মের মধ্যে তারতম্য হলে।

গ. বাংলাদেশের গ্রামীণ বসতি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। তন্মধ্যে বিক্ষিপ্ত বসতি ও পুঞ্জীভূত বসতি দুটি গ্রামীণ বসতির আওতাভুক্ত।
নিচে বিক্ষিপ্ত বসতি ও পুঞ্জীভূত বসতি সম্বন্ধে আলোকপাত করা হলো-
দুই বা তিনটি ঘরের ছোট বসতি এবং মাঝে মাঝে ফসলি খেতের পর আবার ছোট বসতি বিক্ষিপ্তভাবে গড়ে ওঠে বলে এ ধরনের বসতিকে বিক্ষিপ্ত বসতি বলে। ক্ষুদ্র আকৃতির বসতিগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। এরূপ বসতি এলাকায় লোক সমাগম কম হয়। প্রায় ক্ষেত্রেই বসতিগুলো কৃষিজমি দ্বারা পৃথক থাকে। এ বসতির লোকদের। সামাজিক মূল্যবোধ খুবই কম।
অন্যদিকে অনেকগুলো ঘরবাড়ি যখন পরস্পর খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয়ে একটি সম্মিলিত রূপ লাভ করে, তখন ঐ বসতিকে পুঞ্জীভূত বসতি বলে। বাসগৃহগুলো অত্যন্ত ঘন ও একটি অন্যটির নিকটে সন্নিবেশিত থাকে। এ বসতিগুলো বৃহৎ আকৃতির। এক্ষেত্রে কৃষিভূমিগুলো বসতি এলাকা থেকে অনেক দূরে থাকে। বসতিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ উন্নত থাকে। প্রতিটি বসতি আধাপাকা বা কাচাপাকা রাস্তা দ্বারা সংযুক্ত থাকে।
সুতরাং বলা যায়, বিক্ষিপ্ত বসতি ও পুঞ্জীভূত বসতি দুটিতে দু’ধরনের বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। সাধারণত ভৌগোলিকগত কারণেই বসতিতে এরকম পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বসতিগুলো কৃষিভূমির আশেপাশে গড়ে ওঠার কথা বলা হয়েছে।
শহর থেকে দূরে যেখানে নিভৃত, কোলাহলমুক্ত, দূষণমুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে অনিবিড় ঘরবাড়িতে বসবাস করা স্বল্পসংখ্যক মানুষ, যাদের অধিকাংশই কৃষিকাজের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে তারা সাধারণত কৃষিভূমির সাথে সম্পর্ক রেখে তাদের বসতি স্থাপন করে।
বাংলাদেশের একটি বিরাট আয়তনের উর্বর ভূমিতে কৃষিজ চাষাবাদ করা হয়। এ কৃষিভূমিতে বিভিনণ ধরনের শস্য উৎপাদনে বহু মানুষ নিয়োজিত থেকে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। আর এ পেশায় নিয়োজিত মানুষ তাদের কর্মের সুবিধার জন্য কৃষিকাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখার জন্য তাদের আবাসভূমি কৃষিভূমির আশেপাশেই গড়ে তোলে। এভাবে শুরু হয় গ্রামীণ বসতি নির্মাণ। যেহেতু বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকে এবং তাদের আবাসভূমি কৃষিকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে। এর ফলে ভূমিকেন্দ্রিক একটি বৃহৎ গ্রামীণ বসতির সৃষ্টি হয়।
সুতরাং বলা যায় যে, কৃষিভূমির সাথে বসতি গড়ে ওঠার একটা আন্তঃসম্পর্ক বিদ্যমান।

৫. নাবিলের বাড়ি ভোলার বদ্বীপ সমভূমিতে। বসতিগুলো যার যার ফসলি জমির পাশে গড়ে উঠেছে। হাবিবের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে। একটি বড় পুকুরকে কেন্দ্র করে তাদের বাড়িসহ আরও অনেকগুলো বাড়ি গড়ে উঠেছে। এভাবে বাংলাদেশের গ্রামে বিক্ষিপ্ত ও পুঞ্জীভূতভাবে অনেক বসতি গড়ে উঠেছে। শহর থেকে গ্রামের বসতির বৈশিষ্ট্য ভিন্নতর।
ক. বসতি কী?
খ. নগরায়ণ বলতে কী বোঝ?
গ. নাবিল ও হাবিবদের অঞ্চলের বসতির ধরন ব্যাখ্যা কর।
ঘ.উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত বসতির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তোমার মতামত দাও।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানে মানুষ একত্রিত হয়ে স্থায়িভাবে বসবাসের জন্য যে অবয়ব তৈরি করে তাই বসতি।

খ. একটি নগরে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী সেই নগরের নাগরিকে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে নগরায়ণ বলে।
নগরায়ণ বলতে নগরের উদ্ভব, বিকাশ ও বৃদ্ধিকে বোঝানো হয়ে থাকে। অর্থাৎ, গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক কর্মকান্ড ব্যতীত কৃষিবিহীন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের পুঞ্জীভবনের বিকাশসাধনই নগরায়ণ।

গ. উদ্দীপকে নাবিল ও হাবিলদের যথাক্রমে বিক্ষিপ্ত ও পুঞ্জীভূত বসতি দেখা যায়।
যে বসতিতে একটি পরিবার অন্যটি থেকে অনেক দূরে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করে তাকে বিক্ষিপ্ত বসতি বলে। এ বসতিতে ২/৩টি ঘরের অবস্থান থাকে যা ১/২টি পরিবারের ৫/৭ জনের আবাসস্থল। ফসলি জমির মাঝখানে এ ধরনের বসতি গড়ে ওঠে। পরিবারের আকার বাড়ার সাথে সাথে বাংলাদেশে বিক্ষিপ্ত বসতির সংখ্যা বাড়ছে। এ দেশের প্লাবন সমভূমির অধিকাংশ এলাকা যেমন- রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, নোয়াখালী, বরিশাল প্রভৃতি অঞ্চলে এ ধরনের বসতি দেখা যায়।
অপরদিকে, কোনো বিশেষ সুবিধাকে (যেমন- পানীয় জল) কেন্দ্র করে যখন কোনো স্থানে অনেকগুলো পরিবার একত্রিত হয়ে বসবাস করে তাকে পুঞ্জীভূত বসতি বলে। এ বসতিগুলো পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠে। সাধারণত একটি স্থানে ২০০-৪০০ পরিবার একসাথে বসবাস করে। এখানে কৃষিকাজের প্রাধান্য লক্ষ করা যায়। সাধারণত সিলেটের পাহাড়িয়া অঞ্চল, টাঙ্গাইলের মধুপুরে, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রভৃতি অঞ্চলে এ ধরনের বসতি গড়ে উঠেছে।

ঘ. উদ্দীপকে নাবিল ও হাবিলদের বসতি হলো গ্রামীণ বসতি। কিছু কিছু বিষয়ের দিক দিয়ে গ্রামীণ বসতি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী।
প্রথম পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের (যেমন, কৃষি) ওপর ভিত্তি করে যে বসতি গড়ে ওঠে তাকে গ্রামীণ বসতি বলে। নিচে বাংলাদেশের গ্রামীণ বসতির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
গ্রামীণ বসতি অনেক বেশি জায়গা জুড়ে অবস্থিত। এখানকার মানুষের প্রধান উপজীবিকা হলো কৃষি। এ বসতির সুনির্দিষ্ট আকার ও আয়তন নেই। শহরের তুলনায় যৌথ পরিবারের সংখ্যা বেশি। বসতির অধিবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক হৃদ্যতাও বেশি। এ ধরনের বসতির যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত। অধিকাংশ মানুষ স্বল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত। এখানে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও বিনোদনের অভাব আছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা কেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই, বাল্য বিবাহের হার বেশি। এখানে নানাবিধ কুসংস্কার প্রচলিত আছে। গ্রামীণ ঘরবাড়ির নির্মাণ উপকরণ প্রধানত মাটি, টিন, খড়, ইট, ছন, গোলপাতা, বাশ প্রভৃতি। নিরাপদ পানি পর্যাপ্ত সরবরাহের ব্যবস্থা থাকে না। তবে গ্রামীণ বসতিগুলো নানাবিধ প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ।
অতএব বলা যায়, নাবিল ও হাবিলদের এলাকায় যেহেতু অধিকাংশ মানুষ প্রথম পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত তাই উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের গ্রামীণ বসতিতে দেখা যায়।

৬. আমির হোসেন গ্রামে বাস করে। বাড়িতে বসে তার নিজের তাতে লগি, গামছা ও শাড়ি বুনে। সপ্তাহের প্রতি বুধবার সে তার বোনা কাপড় নিয়ে মঠবাড়িয়া হাটে যায়। হাটটি গ্রামের মধ্যস্থানে, যাতায়াত সুবিধাও ভালো। সারাদিন কাপড় বিক্রি করে সন্ধ্যায় উদ্বৃত্ত মাল নিয়ে বাড়ি ফেরে।
ক. গ্রামীণ হাটবাজার কাকে বলে?
খ. পণ্য বিনিময়ের প্রাথমিক মাধ্যম হাট- ব্যাখ্যা কর।
গ. মঠবাড়িয়ার হাটটি গড়ে ওঠার পেছনে ভৌগোলিক উপাদানের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে পণ্য বিনিময় কেন্দ্রের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. গ্রামের কোনো নির্দিষ্ট স্থানে, নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময়ে নিজেদের উদ্বৃত্ত পণ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতাদের স্বীকৃত জনজমায়েতকে গ্রামীণ হাটবাজার বলে।

খ. হাট হচ্ছে এমন একটি নির্দিষ্ট স্থান যেখানে কিছুসংখ্যক ক্রেতা ও বিক্রেতা একটি নির্দিষ্ট দিনে এবং নির্দিষ্ট সময়ে মিলিত হয়।
পণ্য বিনিময়ের প্রাথমিক মাধ্যম হলো হাট। একজন মানুষের বেঁচে থাকার সব উপকরণ তার নিজের পক্ষে উৎপাদন করা সম্ভব নয়। ফলে তাকে অন্যের সাহায্য নিতে হয়। এভাবে মানুষ নিজের উদ্বৃত্ত্ব পণ্য অন্যের সাথে বিনিময় করে। আর এই বিনিময় প্রথার ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে গ্রামীণ হাট। এই হাটই পণ্য বিনিময়ের প্রাথমিক মাধ্যম।

গ. মঠবাড়িয়ার হাটটি গড়ে ওঠার পেছনে ভৌগোলিক উপাদানের মধ্যে ভূপ্রকৃতি ও নদনদীর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
কোনো স্থানের ভূপ্রকৃতি সেখানকার অধিবাসীদের অর্থনৈতিক জীবনের ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাববিস্তার করে। মঠবাড়িয়ার হাটটি নামকু সমতল ভূমিতে গড়ে উঠেছে। কারণ সমভূমিতে কৃষিকাজ, গল্প ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত এবং জনবসতির ঘনত্ব অধিক। এছাড়া উক্ত হাটটি গড়ে ওঠার পেছনে নদনদীর প্রভাব অত্যধিক। নদীপথে সুলভে যাতায়াত ও মালপত্র একস্থান থেকে অন্যস্থানে পাঠানো যায়। ব্যবসায়ীরা নদীপথে দূরবর্তী স্থানের হাটবাজারে বিভিন্ন পণ্য বেচাকেনা করতে পারে।
উপরিউক্ত ভৌগোলিক কারণগুলোই মঠবাড়িয়ার হাটটি গড়ে ওঠার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাববিস্তার করেছে।

ঘ. উদ্দীপকের পণ্য বিনিময় কেন্দ্রটি হলো গ্রামীণ হাটবাজার।
বাংলাদেশের গ্রামীণ হাটবাজার স্থানীয় অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিচে গ্রামীণ হাটবাজারের বৈশিষ্ট্য নিচে আলোচনা করা হলো-
পণ্যসামগ্রী নেওয়া এবং ক্রেতা বিক্রেতাদের যাতায়াতের সুবিধাকে মাথায় রেখে অপেক্ষাকৃত সমতল বন্যামুক্ত জমিতে সাধারণত সপ্তাহের নির্দিষ্ট এক বা দুই দিন গ্রামীণ হাটবাজার বসে।
হাটের বিক্রেতারা দূরদূরান্ত থেকে এলেও ক্রেতারা নিকটবর্তী অঞ্চল থেকে আসে। পরম্পর নিকটবর্তী হাটসমূহে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা এড়ানোর জন্য এক ধরনের সমঝোতার মাধ্যমে হাট বসার দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়। হাটে সাধারণত বিক্রেতার জন্য অস্থায়ী ছাউনি থাকে। তবে বর্তমান সময়ে অনেক বড় হাটে স্থায়ী দোকান ও গুদামঘর দেখতে পাওয়া যায়।
গ্রামীণ হাট গ্রামীণ জীবনের মিলনমেলা হিসেবেও কাজ করে থাকে। গ্রামীণ পটভূমিতে স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হাটের যোগসূত্র থাকায় স্থানীয় প্রশাসনিক অবকাঠামোর আশপাশে হাট গড়ে ওঠে।
সুতরাং বলা যায়, যেকোনো স্থানে গ্রামীণ হাটবাজার বসে না। সুনির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে গ্রামীণ হাটবাজার প্রতিষ্ঠা হয়।

HSC ভূগোল ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৩ pdf download

৭. সিমার বাড়ি কীর্তনখোলা নদীর তীরে। নগরায়ণের ধারায় এটি এখন বিভাগীয় শহর। সিয়াম বাস করে শহরে। এটি প্রশাসনিক শহর, দেশের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং বিভিন্ন নাগরিক সুবিধার জন্য মেগাসিটিতে পরিণত হয়েছে।
ক. বাংলাদেশে বিভাগীয় শহর কয়টি?
খ. পুঞ্জীভূত বসতি বলতে কী বোঝ?
গ. সিমার শহরটি গড়ে ওঠার পেছনে নদীবন্দরের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সিয়ামের শহরটি কী কী সমস্যায় জর্জরিত যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশে বিভাগীয় শহর ৮টি।

খ. বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও সামাজিক কারণে যখন অনেকগুলো ঘরবাড়ি পরস্পর খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয়ে একটি সম্মিলিত রূপ লাভ করে তখন ঐ বসতিকে পুঞ্জীভূত বসতি বলে।
এ ধরনের বসতি রৈখিক বসতির মতোও হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে রৈখিক ধরনের পুঞ্জীভূত বসতি খামার বাড়ি বা ভূমি দ্বারা মধ্যবর্তী স্থান থেকে পৃথক থাকে। যখন একই জনগোষ্ঠীভুক্ত পরিবার এক সাথে বসবা করে তখন পুঞ্জীভূত বসতির সৃষ্টি হয়।

গ. সিয়াম বাড়ি কীর্তনখোলা নদীর তীরে। যেখানে একটি নদীবন্দর রয়েছে। এ বন্দরকে কেন্দ্র করে উক্ত এলাকায় বসতি গড়ে উঠেছে। সিমার শহরটি গড়ে ওঠার পেছনে নদীবন্দরের ভূমিকা অপরিসীম।
নদীবন্দর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শহর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলোর সাথে সংযুক্ত। জলপথ ছাড়া কোনো অবস্থাতেই ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে না। আবার বাণিজ্যের প্রসার না হলে তা শহরে পরিণত হয় না। নদীবন্দরগুলো অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য সংঘটনের বড় নিয়ামক। ফলে একে কেন্দ্র করে বসতি গড়ে ওঠে। এভাবে ধীরে ধীরে শহরটি গড়ে উঠেছে।
সুতরাং আলোচনা হতে বলা যায় যে, সিমার শহরটি গড়ে ওঠার পেছনে নদীবন্দর প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে।

ঘ. সিয়াম যে শহরটিতে বাস করে এটি হলো ঢাকার শহর। এটি একটি প্রশাসনিক শহর, যা দেশের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। আধিক্যের কারণে ঢাকা বর্তমানে মেগাসিটিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সিয়ামের শহরটিতে বিভিন্ন সমস্যা বিরাজমান।
প্রতিদিন এ শহরে মাত্রাতিরিক্ত লোক আগমন করে। এত লোকের বাসস্থানের সুযোগ শহরে নেই। ফলে যত্রতত্র বাসস্থান গড়ে উঠেছে। অনেক লোক বস্তিতে, রাস্তার ধারে বসবাসের ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। ঢাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এত শিক্ষার্থীর চাপ সামলাতে পারছে না। এ শহরে চিকিৎসার ব্যবস্থা জন-গণীর তুলনায় খুবই অপ্রতুল। তাই জনগণের স্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন। ঢাকা শহরের রাস্তাঘাটের বেহাল দশা অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ির কারণে যানবাহন চালানো খুবই কষ্টকর। সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি বৃষ্টি পানিতে শহরের ব্যস্ততম সড়কে নৌকা চলতেও দেখা গেছে। নগর সুবিধার মধ্যে পানি, বর্জ্য অপসারণ, পয়ঃনিষ্কাশন ইত্যাদির ওপর অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। পানিদূষণ ও শব্দদূষণ এ শহরের অন্যতম সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। দিন দিন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও মাদকদ্রব্যের ব্যবহার অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে চলেছে।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সিয়ামের ঢাকা শহরে উপরিউক্ত সমস্যাগুলো বিদ্যমান।

৮. সিয়াম ও রেজা দুজনেই শহরে বাস করে। তবে রেজার শহরটি একটি প্রশাসনিক শহর। অন্যদিকে সিয়াম যে শহরে বাস করে সেটি আগে গ্রাম হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে সেখানে একটি ইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তা এখন শহর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
ক. মানুষের অভিযোজনের প্রথম পদক্ষেপ কী?
খ. মাটি কীভাবে বসতি স্থাপনে সহায়তা করে?
গ. উদ্দীপকের শহরটি গড়ে ওঠার পেছনে ইপিজেড-এর ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রেজার শহরটি সিয়ামের শহর থেকে ভিন্ন প্রকৃতির যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের অভিযোজনের প্রথম পদক্ষেপ হলো বসতি স্থাপন।

খ. মাটির উর্বরশক্তির ওপর নির্ভর করে বসতি স্থাপন করা হয়।
উর্বর মাটিতে পুঞ্জীভূত বসতি গড়ে ওঠে। মানুষ কৃষিজাসর পাশে বসতি গড়ে তোলে যাতে করে সহজে ও কম খরচে ফসল ফলিয়ে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে পারে। যেমন, নদী তীরবর্তী অঞ্চল। কিন্তু মাটি অনুর্বর বা অসমতল হলে বিক্ষিপ্ত জনবসতি গড়ে ওঠে। পাহাড়ি অঞ্চলের মাটি অনুর্বর ও অসমতল বলে সে অঞ্চলে বিক্ষিপ্ত বসতি গড়ে উঠেছে।

গ. সিয়ামের শহরটি আগে গ্রাম ছিল। কয়েক বছর আগে সেখানে একটি ইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এখন তা শহর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
নগরায়ণের ক্ষেত্রে শিল্পায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেমন, ইপিজেড। একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কোনো স্থানে জনবসতি ধীরে ধীরে ঘন হয়ে ওঠে। তারা শিল্পকারখানার আশপাশে বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে তোলে। শিল্পকারখানাকে কেন্দ্র করে অনেক ছোট ছোট কারখানা ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। ইপিজেড এলাকার আশেপাশে ধীরে ধীরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হয়ে থাকে এবং উন্নত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল গড়ে ওঠে। গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, ব্যাংক, বিমা ইত্যাদি সেবাসমূহ প্রাপ্তি সহজলভ্য হয়।
তাই বলা যায়, সিয়ামের শহরটি গড়ে ওঠার পিছনে ইপিজেডের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।

ঘ. রেজার শহরটি প্রশাসনিক শহর। অপরদিকে সিয়ামের শহরটি ইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে গড়ে ওঠে। অর্থাৎ এটি শিল্পভিত্তিক শহর।
প্রশাসনিক শহর তৈরিতে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড প্রধান ভূমিকা পালন করে। শাসনব্যবস্থার প্রয়োজনে তথায় পৌর বসতি গড়ে ওঠে।
প্রশাসনিক শহরে সাধারণত সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও অফিস থাকে। এখান থেকে সরকারি কাজগুলো পর্যালোচনা করা হয় এবং বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রশাসনিক শহরের জন্য সাধারণত ভৌগোলিকভাবে সুবিধাজনক ও সুরক্ষিত এলাকাকে বেছে নেওয়া হয়। যেমন- ঢাকা, চট্টগ্রাম। অপরদিকে শিল্পভিত্তিক নগর, তৈরিতে শিল্পভিত্তিক ক্রিয়াকলাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাধারণত স্থায়ী নগরে শিল্পের আকর্ষণ অধিক হয়ে থাকে। শিল্পকারখানাকে কেন্দ্র করে জনবসতি ও অন্যান্য অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ গড়ে ওঠে। যেমন- খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর। এখানে বসতির পরিমাণ অধিক হওয়ায় জনসংখ্যাও তুলনামূলক বেশি হয়।
তাই উপরের আলোচনা হতে বলা যায় যে রেজার শহরটি সিয়ামের শহর থেকে ভিন্ন প্রকৃতির।

৯. আরিফ গ্রামে কৃষিকাজ ছেড়ে কুষ্টিয়ার দর্শনায় একটি চিনি শিল্পে যোগ দিল। অন্যদিকে তার ভাই রবি বগুড়ার মহাস্থানগড়ের নিকট একটি কোম্পানিতে চাকরি করে। দুইজনই বর্তমানে নগরায়ণের সুযোগসুবিধা পেয়ে সেখানেই স্থায়িভাবে বসবাস করার জন্য মনস্থির করল।
ক. বাংলাদেশের সর্বশেষ ঘোষিত বিভাগ কোনটি?
খ. নগরায়ণ বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের আরিফ ও তার ভাই রবির বসবাসকৃত অঞ্চল দুটি নগরায়ণের ধারায় কোন পর্যায়ে পড়ে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দুই ভাইয়ের নিজ নিজ কর্মস্থলে স্থায়িভাবে বসবাস করার উপযুক্ত কারণ বিশ্লেষণ কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের সর্বশেষ ঘোষিত বিভাগ হলো ময়মনসিংহ।

খ. একটি নগরে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী সেই নগরের নাগরিকে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে নগরায়ণ বলে।
নগরায়ণ বলতে নগরের উদ্ভব, বিকাশ ও বৃদ্ধিকে বোঝানো হয়ে থাকে। অর্থাৎ গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক কর্মকান্ড ব্যতীত কৃষিবিহীন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের পুঞ্জীভবনের বিকাশসাধনই নগরায়ণ। এক কথায় বলা যায়, কৃষিবিহীন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ক্রমবিকাশই হলো নগরায়ণ।

গ. উদ্দীপকের আরিফ ও তার ভাই রবির বসবাসকৃত অঞ্চল দুটি হলো কুষ্টিয়ার দর্শনা এবং বগুড়ার মহাস্থানগড় যা যথাক্রমে ইংরেজ আমলের নগরায়ণ ও প্রাচীনকালের নগরায়ণের আওতাভুক্ত।
সাধারণভাবে নগরায়ণ বলতে নগরের উদ্ভব, বিকাশ ও বৃদ্ধিকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক কর্মকান্ড ব্যতীত কৃষিবিহীন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের পুঞ্জীভবনের বিকাশসাধনই নগরায়ণ।
উদ্দীপকে আরিফ কুষ্টিয়ার দর্শনায় চাকরি করে যা ইংরেজ আমলের নগরায়ণের আওতাভুক্ত। ইংরেজ আমলে অর্থাৎ ১৯৪৭ সালের পূর্বপর্যন্ত বাংলাদেশের নগরায়ণের ধারার কিছুটা পরিবর্তন হয়। এ সময় নগরের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং নতুন আঙ্গিকে নগরায়ণের ধারা অব্যাহত থাকে। এ সময় প্রশাসনকেন্দ্রিক পৌরকেন্দ্রগুলোতে একটি ধারাবাহিকতা বিরাজ করে।
অন্যদিকে, রবি বগুড়ার মহাস্থানগড়ে চাকরি করে। উক্ত স্থানটি প্রাচীনকালের নগরায়ণের আওতাভুক্ত। খ্রিস্টপূর্ব প্রায় তিনশত বছর পূর্বে গঙ্গা ও ভাগীরথী নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে গঙ্গোত্রী' নামক শহরের অস্তিত্ব পাওয়া যায়; যা বাংলাদেশের প্রাচীনতম নগর। এ সময়কার নগরায়ণ গড়ে উঠেছে বিভিন্ন চাহিদাকে কেন্দ্র করে। তাম্রলিপি, কোটিবর্ষ, বিক্রমপুর, মহাস্থানগড় প্রভৃতি নগর এ সময়ে গড়ে উঠেছিল।

ঘ. উদ্দীপকে দুই ভাই দুটি নগরে চাকরি করে। উক্ত অঞ্চল দুটিতে নগরায়ণের অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকায় তারা স্থায়িভাবে। বসবাস করতে মনস্থির করে।
সাধারণত নগর হলো কৃষিজ কর্মকান্ড পরিত্যাগ করে অকৃষিজ কর্মকান্ডে আত্মনিয়োগ করা। এতে কায়িক পরিশ্রম কম হয়। আবার গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সুযোগ-সুবিধা পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় যা গ্রামাঞ্চলে সম্ভব নয়। আবার শহর ও নগরে পরিকল্পনা করে ঘরবাড়ি তৈরি করে এবং উন্নত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল প্রভৃতি তৈরি করা হয়। ফলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নত ব্যবস্থা থাকায় মানুষ স্বভাবতই নগরের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এছাড়া শহরে পরিকল্পনা করে বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য ব্যবস্থা করা হয়। আবার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র প্রভৃতি শহরে পরিলক্ষিত হয়।
সার্বিকভাবে বলা যায়, শহর-নগরে নাগরিক সুবিধা পর্যাপ্ত থাকায় উদ্দীপকের দুই ভাই শহরাঞ্চলে স্থায়িভাবে বসবাস করার জন্য মনস্থির করে।

১০. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ক. বসতি কাকে বলে?
খ. পুঞ্জীভূত বসতির প্রধান কারণ শিল্পায়ন ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে বসতি-২ এর বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর।
ঘ. বসতি-১ এ অতিরিক্ত জনসংখ্যা কী ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো একটি স্থানে মানুষ একত্রিত হয়ে স্থায়িভাবে বসবাসের জন্য যে অবস্থার তৈরি করে তাকে বসতি বলে।

খ. যে অধিবাসীদের বসতবায়িগুলো খুব কাছাকাছি এবং ঘন বা নিবিড়ভাবে গড়ে ওঠে তাকে পুঞ্জীভূত বসতি বলে।
কোনো স্থানে শিল্প স্থাপিত হলে সে অঞ্চলে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধার (যেমন-কর্মসংস্থানের পাশাপাশি শিক্ষা, বিনোদন, চিকিৎসা প্রভৃতি) কারণে মানুষ শিল্পালকে কেন্দ্র করে বসতি স্থাপন করতে চায়।
উক্ত কারণে শিল্পাঞ্চলে পুঞ্জীভূত বসতি গড়ে ওঠে।

গ. উদ্দীপকে বসতি-২ হলো গ্রামীণ বসতি।
গ্রামীণ বসতি মূলত কৃষিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে। গ্রামে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল থাকে না। এখানে অধিকাংশ লোকই দরিদ্র শ্রেণির, তাই এসব অঞ্চলে কাঁচা বাড়ি লক্ষ করা যায়। তবে স্থানভেদে কোথাও নিবিড়, কোথাও সারিবদ্ধ, কোথাও বিক্ষিপ্ত, কোথাও অনুকেন্দ্রিক, পুঞ্জীভূত প্রভৃতি ধরনের বসতি গড়ে ওঠে। গ্রামে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, তথ্য প্রযুক্তির কম ব্যবহার, কৃষিভিত্তিক সমাজ, শিল্পকারখানা কম হওয়া প্রভৃতির প্রভাব গ্রামীণ বসতির মধ্যে ফুটে ওঠে। বর্তমানে অনেক গ্রামে শিল্পকারখানা গড়ে উঠলেও গ্রামীণ অর্থনীতির মূল ভিত্তি হলো কৃষি। তাই কৃষিকে কেন্দ্র করেই বেশিরভাগ গ্রামীণ বসতি গড়ে উঠেছে।
উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, গ্রামীণ বসতির এই বৈশিষ্ট্যগুলো গ্রামীণ বসতি গড়ে উঠতে বৈশিষ্ট্যময় রূপদান করেছে।

ঘ. বসতি-১ হলো নগর বসতি।
নগরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে তীব্র বাসস্থান সংকট দেখা দেয়। কেননা এখানে জমির উচ্চমূল্য এবং ভূমি সাধারণত বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়।
নগর জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে নগরবাসী আকাঙিক্ষত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। যেমন- বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, নিরাপত্তা, পরিবহন, চিকিৎসা, শিক্ষা প্রভৃতি। শিল্পক্ষেত্রে জ্বালানির ব্যবহার, পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা, যানবাহনের বিষাক্ত ধোঁয়া, শব্দ, শিল্পবর্জ্য প্রভৃতি কারণে নগর পরিবেশ প্রতিনিয়ত দূষিত হবে।
গ্রামের মানুষের ভূমিহীনতা, দারিদ্র্য, কর্মসংস্থানের অভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রভৃতি কারণে নগরে এসে নগর জনসংখ্যার ওপর চাপ বৃদ্ধি করছে। এসব মানুষ কাঙিক্ষত সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় বস্তিতে বসবাস শুরু করবে। এটা নগরের পরিবেশ নষ্ট করবে এবং নানা প্রকার সমস্যার সৃষ্টি করবে। নগরে নানা ধরনে সুযোগ-সুবিধা থাকার কারণে গ্রাম থেকে মানুষ নগরবাসী হচ্ছে। কিন্তু নগরে এসে কর্মসংস্থান করতে পারছে না। ফলে নগরে বেকারত্ব, দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাই বলা যায়, অতিরিক্ত জনসংখ্যা একটি নগরে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি করে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post