HSC ভূগোল ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ২

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 2nd paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-২

HSC Geography
2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. সুমি ও তার ভাই উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে গ্রাম থেকে ঢাকায় গমন করায় তার পরিবারের খরচ বৃদ্ধি পায়। তাই প্রয়োজনের তাগিদে তার বাবা অধিক উপার্জনের লক্ষ্যে মধ্যপ্রাচ্যে গমন করেন।
ক. স্থূল জন্মহার কী?
খ. জনসংখ্যার ঘনত্ব কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে প্রথমে উল্লিখিত অভিগমনের ধরন ব্যাখ্যা।
ঘ. ইঙ্গিতকৃত দু'ধরনের অভিগমনের বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো বছরের জন্মিত সন্তানের মোট সংখ্যাকে উক্ত বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে যে জন্মহার পাওয়া যায়, তাকে স্থূল জন্মহার বলে।

খ. জনসংখ্যার ঘনত্ব বলতে একটি দেশের প্রতি বর্গকিলোমিটারে যতজন লোক বাস করে তাকে ঐ দেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব বলে।
কোনো দেশের মোট জনসংখ্যাকে সে দেশের মোট আয়তন দ্বারা ভাগ করলেই প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাসকারী লোকসংখ্যার ঘনত্ব পাওয়া যায়। অর্থাৎ জনসংখ্যার ঘনত্ব = মোট জনসংখ্যা/মোট আয়তন। জনসংখ্যার ঘনত্ব বলতে বিভিন্ন মানুষের সংবদ্ধতা তথা জনবসতির নিবিড়তা বোঝানো হয়ে থাকে।

গ. উদ্দীপকে প্রথমে উল্লিখিত ঘটনাটি হলো গ্রাম থেকে শহরে অভিগমন যা অভ্যন্তরীণ অভিগমনের অন্তর্ভুক্ত।
পথিবীর উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের গ্রাম থেকে শহরে গমন ব্যাপকভাবে লক্ষ করা যায়। গ্রামীণ পরিবেশে কাজের সুযোগ-সুবিধা কম থাকায় মানুষ শ্রম দেওয়ার জন্য শহরে কাজের উদ্দেশ্যে গমন করে। আবার গ্রামীণ শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা আর শিক্ষিত বেকাররা চাকরির আশায় শহরে স্থানান্তরিত হয়। উন্নত শিক্ষা, চিকিৎসা বাসস্থান প্রভতি কারণে শহর জীবনযাত্রায় আকৃষ্ট হওয়াসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে মানুষ গ্রাম থেকে শহরে গমন করে। এছাড়া ব্যবসায়-বাণিজ্যের জন্য প্রায়শই গ্রাম থেকে মানুষ শহরে অভিগমন করে।
উদ্দীপকে সুমি ও তার ভাই উচ্চ শিক্ষার জন্য গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে গমন করেছে যা অভ্যন্তরীণ অভিগমনের অন্তর্ভুক্ত গ্রাম থেকে শহরে অভিগমনের পর্যায়ে পড়ে।

ঘ. উদ্দীপকে প্রথম বাক্যে সুমি ও তার ভই উচ্চ শিক্ষার জন্য গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে গমন করে যা অভ্যন্তরীণ অভিগমন এবং দ্বিতীয় বাক্যে তাদের বাবার মধ্যপ্রাচ্যে গমন করে যা আন্তর্জাতিক অভিগমনের অন্তর্গত। বৈশিষ্ট্যগতভাবে এ দুই প্রকারের অভিগমনের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে যা নিচে আলোচিত হলো-
যখন মানুষ নিজ দেশের মধ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অভিগমন করে, তখন তাকে অভ্যন্তরীণ অভিগমন বলে। চাকরি, শিক্ষা, এ চিকিৎসা, ব্যবসায়-বাণিজ্য, বিবাহ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রভৃতি প্রয়োজনে মানুষ একই দেশের ভেতর এক স্থান থেকে অন্যস্থানে অভিগমন করে। অভ্যন্তরীণ অভিগমনের মধ্যে শহর থেকে শহরে, গ্রাম থেকে শহরে, গ্রাম থেকে গ্রামে অভিগমন উল্লেখযোগ্য।
অপরদিকে, মানুষ যখন একদেশ হতে অন্যদেশে গমন করে তখন তাকে আন্তর্জাতিক অভিগমন বলে। প্রধানত উচ্চশিক্ষা, চিকিৎসা, উন্নত জীবনের প্রত্যাশা যুদ্ধ বিগ্রহসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কারণে আন্তর্জাতিক অভিগমন ঘটে।
উদ্দীপকে সুমি ও তার ভাই উচ্চ শিক্ষার জন্য গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে আসে যা অভ্যন্তরীণ অভিগমনের পর্যায়ে পড়ে এবং তাদের বাবা অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে দেশের গন্ডি পেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে গমন করে যা আন্তর্জাতিক অভিগমনের পর্যায়ে পড়ে। বৈশিষ্ট্যগতভাবে এ দুই ধরনের অভিগমনও ভিন্ন।

২. শিক্ষক ক্লাসে জনমিতিক ট্রানজিশনাল মডেল পড়াতে গিয়ে এই তত্ত্বে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন।
ক. জনমিতিক ট্রানজিশনাল মডেল প্রদান করেন কে?
খ. জনমিতিক উপাদানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বাংলাদেশ এই মডেলের কোন পর্যায়ে অবস্থান করে।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত দেশদ্বয়ের মডেলটির পর্যায়গত অবস্থানের তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জনমিতিক ট্রানজিশনাল মডেল প্রদান করে T.S. Thompson.

খ. জনমিতি হলো জনসংখ্যার একটি বৈশিষ্ট্যগত জ্ঞান। জনসংখ্যার পরিবর্তন হয় জন্ম, মৃত্যু ও অভিগমনের মাধ্যমে। এ উপাদানগুলোকেই জনমিতিক উপাদান বলে।
জন্মহার, মৃত্যুহার, আকার, বয়স কাঠামো, নারী পুরুষ অনুপাত, মাথাপিছু আয় প্রভৃতি জনমিতিক উপাদান। এসব উপাদানগুলো জনসংখ্যা পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একটি দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক চিত্র ফুটে উঠে এ উপাদানগুলোর বিশ্লেষণের মাধ্যমে। মোটকথা একটি দেশের জনসংখ্যার সার্বিক পরিস্থিতি জানার জন্য জনসংখ্যার জনমিতিক উপাদানগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

গ. উদ্দীপকে জনসংখ্যার ট্রানজিশনাল মডেল দেখানো হয়েছে। বাংলাদেশ এ মডেলের দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে।
চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস, অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রভৃতি জনসংখ্যার ট্রানজিশনাল মডেলের দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশ, ভারত, মিশর, ব্রাজিল ও পাকিস্তানসহ পৃথিবীর বহুদেশ এ পর্যায়ের রয়েছে। উচ্চ জন্মহার ও নিম্ন মৃত্যুহারের কারণে এখানে জনসংখ্যার বৃদ্ধি অনেক দ্রুত হয়। তাই এ স্তরকে জনসংখ্যার বৃদ্ধির স্তর বলে। এ স্তরটি একটি দেশে কত বছর স্থায়ী হয় তা নির্ভর করে ঐ দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সরকারি নীতি নির্ধারণীয়‘ওপর। যেমন বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে আগের চেয়ে উন্নত হওয়ায় এ দেশ ধীরে ধীরে তৃতীয় পর্যায়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত দেশদ্বয় হলো বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ড যা ট্রানজিশনাল মডেলের দ্বিতীয় এবং চতুর্থ স্তরে রয়েছে। জনসংখ্যর ট্রানজিশনাল মডেলের দ্বিতীয় ও চতুর্থ স্তরের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত কিছু পার্থক্য রয়েছে। নিচে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো-
চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস, অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রভৃতি জনসংখ্যার ট্রানজিশনাল মডেলের দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশ, ভারত, মিশর, ব্রাজিল ও পাকিস্তানসহ পৃথিবীর বহুদেশ এ পর্যায়ের রয়েছে। উচ্চ জন্মহার ও নিম্ন মৃত্যুহারের কারণে এখানে জনসংখ্যার বৃদ্ধি অনেক দ্রুত হয়। তাই এ স্তরকে জনসংখ্যার বৃদ্ধির স্তর বলে। এ স্তরটি একটি দেশে কত বছর স্থায়ী হয় তা নির্ভর করে ঐ দেশের অর্থনৈতিক সামাজিক, রাজনৈতিক ও সরকারি নীতি নির্ধারণীয় ওপর। যেমন বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে আগের চেয়ে উন্নত হওয়ায় এ দেশ ধীরে ধীরে তৃতীয় পর্যায়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, চতুর্থ পর্যায়ে জনসংখ্যার পরিবর্তন স্থিতিশীল অবস্থা থেকে কমতে থাকে। জন্মহার ধীরে ধীরে এমনভাবে কমতে থাকে যে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার শূন্যতে পৌছায় এবং সেই সাথে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার ও জীবনমান উন্নত হওয়ায় মৃত্যুহারও কমতে থাকে, কিন্তু শূন্যতে পৌঁছানো সম্ভব নয় বিধায় মোট জনসংখ্যা কমতে শুরু করে। এর ফলে নির্ভরশীল জনসংখ্যার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। নিউজিল্যান্ড ও সুইডেনের মতো উন্নত দেশগুলোতে এই অবস্থা পরিলক্ষিত হয়।
অতএব বলা যায়, বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড ট্রানজিশনাল মডেলের যে ভিন্ন দুটি পর্যায় রয়েছে তাদের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত অনেক অমিল রয়েছে।

৩. রাফান ও তিপাম গোপালগঞ্জের ছেলে এবং স্থানীয় একটি কলেজে পড়াশুনা করত। এইচএসসি পরীক্ষায় দু’জনেই জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। তিপাম বৃত্তির সুযোগ পেয়ে তার কাঙিক্ষত বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য চীন চলে যায় এবং রাফান একই বিষয়ে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ঢাকায় অবস্থান করে।
ক. CDR এর পূর্ণরূপ লেখ।
খ. বান্দরবানের জনবসতি অতি বিরল ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে রাফানের ক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া অভিগমনের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে রাফান ও তিপামের অভিগমনের ভিন্নতা বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. CDR এর পূর্ণরূপ হলো Crude Death Rate.

খ. বান্দরবানর এলাকাটি পর্বতময় বলে জনসংখ্যায় বসতি কম।
যে অঞ্চলের জনবসতির ঘনত্ব ৫০০ জনের কম সে অঞ্চলের বসতি অতি বিরল জনবসতির অন্তর্গত। বান্দরবান জেলাটি পর্বতময় হওয়ায় সেখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কি.মি. ৮৭ জন যা অতি বিরল বসতির এর আওতাভুক্ত। তাই বলা যায় বান্দরবানের জনবসতি অতি বিরল।

গ. উদ্দীপকে রাফানের ক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া অভিগমনটি হলো অভ্যন্তরীণ অভিগমন। যা আকর্ষণজনিত কারণে ঘটেছে।
যে সমস্ত কারণ নতুন কোনো স্থানে বসতি স্থাপনের জন্য মানুষকে উৎসাহিত বা প্ররোচিত করে সেগুলোকে গন্তব্যস্থলের টান বা ও আকর্ষণমূলক কারণ বলে। উচ্চশিক্ষা লাভ, অধিক উপার্জন, অধিক ভোগ ও মুনাফা লাভের ইচ্ছা, ধর্মীয়, জাতিগত ও সাংস্কৃতিকগত আকর্ষণ অনুভব, গন্তব্য স্থানে তুলনামূলক অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা, সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ, আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রভৃতি। এসব কারণে একজন মানুষ মূলত এক স্থান হতে অন্য স্থানে গমন করে।
উদ্দীপকে রাফান গোপালগঞ্জের ছেলে সে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ঢাকায় আসে। যেহেতু সে উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় আসে তাই তার এ ঢাকায় অভিগমনটি আকর্ষণজনিত কারণে হয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে রাফান গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় গমন করে যা অভ্যন্তরীণ অভিগমন এবং তিপাম গোপালগঞ্জ থেকে চীনে গমন করে যা আন্তর্জাতিক অভিগমনের অন্তর্ভুক্ত।
যখন মানুষ নিজ দেশের মধ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অভিগমন করে, তখন তাকে অভ্যন্তরীণ অভিগমন বলে। চাকরি, শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসায়-বাণিজ্য, বিবাহ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রভৃতি প্রয়োজনে মানুষ, একই দেশের ভেতর এক স্থান থেকে অন্যস্থানে অভিগমন ও করে। অভ্যন্তরীণ অভিগমনের মধ্যে শহর থেকে শহরে অন্যতম।
অপরদিকে, মানুষ যখন একদেশ হতে অন্যদেশে অভিগমন করে তখন তাকে আন্তর্জাতিক অভিগমন বলে। প্রধানত উচ্চশিক্ষা, চিকিৎসা, উন্নত জীবনের প্রত্যাশা, রাজনৈতিক ও সামাজিক কারণে আন্তর্জাতিক অভিগমন ঘটে।
উদ্দীপকে রাফান এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে কাঙিক্ষত বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় চলে আসে এখানে সে গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসেছে অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ অভিগমন ঘটেছে। অন্যদিকে তিপাম বৃত্তির সুযোগ পেয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য চীনে চলে যায়। চীন যেহেতু বাংলাদেশের সীমানার বাইরে অন্য একটি দেশ, তাই আমরা বলতে পারি তিপামের অভিগমনটি আন্তর্জাতিক অভিগমনের অন্তর্ভুক্ত।

৪. বাংলাদেশ বিশ্বের একটি অন্যতম জনবহুল দেশ। জনবিবর্তন তত্ত্বের আলোকে দেশটিতে প্রাথমিক অবস্থায় জন্মহার ও মৃত্যুহার উভয়ই বেশি ছিল। কিন্তু বর্তমানে জন্মহারের চেয়ে মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।
ক. স্থূল মৃত্যুহার নির্ণয়ের সূত্রটি লেখ।
খ. মানুষ কেন অভিগমন করে?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত তত্ত্বের পর্যায়টি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দেশের মৃত্যুহার হ্রাসের কারণ পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. স্থূল মৃত্যুহার = ১০০০

খ. মানুষ বিভিন্ন কারণে অভিগমন করে থাকে।
মানুষ বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা ত কিংবা চিকিৎসাসংক্রান্ত কারণে এক স্থান হতে অন্যস্থানে অভিগমন করে যা আকর্ষণমূলক অভিগমনের অন্তর্ভুক্ত। এসব আকর্ষণজনিত কারণ ছাড়াও কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষ অভাব, যুদ্ধ, দাঙ্গা প্রভৃতি বিকর্ষণজনিত কারণেও অভিগমন করে থাকে।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পর্যায়টি জনমিতিক ট্রানজিশন মডেলের দ্বিতীয় পর্যায়ের মাঝামাঝিতে রয়েছে।
১৯২৯ সালে ওয়ারেন থম্পসন তার জনমিতিক ট্রানজিশনাল মডেলে যে চারটি বিশেষ পর্যায়ের কথা উল্লেখ করেছেন, তার আলোকে বাংলাদেশের জনমিতিক উপাত্ত বিশেষ করে জন্মহার ও মৃত্যুহার বিশ্লেষণ করলে বলা যায়, বাংলাদেশ উক্ত ট্রানজিশনাল মডেলের দ্বিতীয় পর্যায়ের মাঝামাঝিতে রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে জন্মহার প্রায় নিয়ন্ত্রণের পথে ও অনেক ক্ষেত্রে প্রায় নিয়ন্ত্রিত হয়েছে এবং মৃত্যুর হার বর্তমানে অনেকটাই নিম্নমুখী। বাংলাদেশের জনসংখ্যার বৃদ্ধির হারও অনেকটা নিম্নমুখী। ২০১১-এর আদমশুমারি অনুসারে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৭%।
সুতরাং বলা যায়, বাংলাদেশ ট্রানজিশনাল মডেলের ২য় পর্যায়ের মাঝামাঝিতে রয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দেশটি হলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মৃত্যুহার হ্রাসের কারণ পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ করা হলো-
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। এদেশে পূর্বে, জন্মহার এবং মৃত্যুহার উভয় বেশি ছিল। কিন্তু বর্তমানে বেশ কয়েকটি কারণে মৃত্যু হার হ্রাস পেয়েছে। এর মধ্যে মানুষের জীবন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি একটি অন্যতম কারণ। বাংলাদেশের মানুষের শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যাপকভাবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নও হয়েছে যা মৃত্যুহার হ্রাসের কারণ।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সথে মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মানুষ চিকিৎসা বিষয়ে সচেতন হয়েছে, অর্থাৎ, চিকিৎসা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হওয়ায় মানুষ এখন যেকোনো রোগের চিকিৎসা বিষয়ে সঠিক তথ্য পেয়ে থাকে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে রোগ থেকে মুক্তি পায়।
এছায়া আধুনিক প্রসূতিবিদ্যার ব্যাপক উন্নয়নের ফলে প্রসবকালীন মা ও শিশু মৃত্যু ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। সার্বিকভাবে শিক্ষা, চিকিৎসা, তথ্য ব্যবস্থাপনা, গণসচেতনতা, দরিদ্রতা দূরীকরণ, প্রযুক্তির ব্যবহার প্রভৃতি পর্যায়ক্রমিক উন্নয়নসাধনের ফলে বাংলাদেশে মৃত্যুহার হ্রাস পেয়েছে।

৫. শফিকের চার ভাই এবং দুই বোন। যেটুকু জমি, তাদের বাবা সেখানে কৃষিকাজ করে ভালোভাবেই সংসার চালাত। বর্তমানে সকলেই বড় হয়ে পরিবার নিয়ে আলাদা বসবাস করছে। প্রত্যেকেরই তিন-চারজন করে সন্তান রয়েছে। চাষের জমি, বসতবাড়ি, পুকুর সবকিছু ভাগ হয়েছে। এখন তাদের সংসারে সীমাহীন অভাব এবং নানা সমস্যায় জর্জরিত।
ক. জনসংখ্যার ঘনত্ব কী?
খ. খাগড়াছড়িতে জনসংখ্যার ঘনত্ব কম হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতপূর্ণ সমস্যার কারণসমূহ বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর ইঙ্গিতকৃত সমস্যার প্রভাব ব্যাখ্যা কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো দেশের মোট জনসংখ্যা এবং মোট ভূমির পরিমাণ বা আয়তনের যে অনুপাত তাই জনবসতি বা জনসংখ্যার ঘনত্ব।

খ. বন্ধুর ভূপ্রকৃতির জন্য খাগড়াছড়িতে জনসংখ্যা ঘনত্ব কম।
পার্বত্য অঞ্চল কৃষির অনুপযোগী ও যোগাযোগ কষ্টসাধ্য হওয়ায় সে অঞ্চলে জনবসতি কম। এছাড়া বন্ধুর ভূপ্রকৃতির জন্য এসব অঞ্চলে শিল্পায়ন ও সব ধরনের আধুনিক সুযোগ সুবিধাও কম হয়। খাগড়াছড়ি অল পর্বতময় হওয়ার কারণে সেখানে উপরোল্লিখিত সুযোগ-সুবিধা কম থাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব কম।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যাটি হলো জনসংখ্যা সমস্যা। জনসংখ্য একটি দেশের সম্পদ হলেও মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি যেকোনো দেশের জন্য নেতিবাচক ফল বয়ে আনে। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। এ দেশের জনসংখ্যা দ্রুত হারে বাড়ছে। নিচে বাংলাদেশের জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধির কারণ হলো শিক্ষার অভাব, কুসংস্কার, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, জন্ম নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে অজ্ঞতা।
শিক্ষার অভাবে মানুষের মাঝে কুসংস্কার বিরাজ করে। বৃদ্ধ বয়সে অবলম্বন মনে করে অধিক সন্তান জন্ম দেয়। আবার পুত্র সন্তানের প্রত্যাশায়ও অধিক সন্তানের জন্ম দেয়। তাছাড়া জন্ম নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকায় আমাদের দেশে বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহের দ্বারা জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া আর্থিক সমস্যা, হতাশা, বেকারত্বের অভাবে বাংলাদেশে জনসংখ্যা দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত সমস্যা হলো জনসংখ্যা বৃদ্ধি। উন্নয়নশীল বাংলাদেশের জন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি একটি বড় সমস্যা। বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ হলেও এদেশ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি এ প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
জনসংখ্যার ক্রমাগত বৃদ্ধি যেকোনো দেশের ভূমির ওপর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ভূমিতে অধিক চাষাবাদ হচ্ছে, ফলে ভূমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে। অধিক ফলনের জন্য মাত্রাতিরিক্ত সার, কীটনাশক ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে মাটি দূষিত হয়ে পড়ছে। বনাঞ্চল এবং পাহাড় কেটে আবাদি ভূমি তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে ভূমি উন্মুক্ত হয়ে মাটির ক্ষয় বৃদ্ধি করছে।
মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পানি অপরিহার্য। জনসংখ্যার অতিরিক্ত বৃদ্ধি পানির ওপরও যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং অপরিকল্পিত ব্যবহারের ফলে বাংলাদেশের পানির ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। কৃষিক্ষেত্রে, শিল্পকারখানা, বসতবাড়ি ইত্যাদিতে ব্যাপক হারে পানি ব্যবহারের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। দেনন্দিন খাবার হিসেবে এবং অন্যান্য কাজে পানি ব্যবহারের ফলে মাটির পানির স্তর নেমে গিয়ে মাটির তলদেশে লোনা পানি প্রবেশ করছে। যা পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। পানি যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহারের ফলে এতে তেল ও বর্জ্য যুক্ত হচ্ছে। শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করে এতে রং, গ্রিজ, রাসায়নিক দ্রব্য ইত্যাদি ক্ষতিকর পদার্থের মিশ্রণ ঘটানো হচ্ছে।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ভূমি ও পানির অধিক ব্যবহার হয় এবং উভয়ই মারাত্মক দূষণের শিকার হয়।

৬. ২০১৭ সালে ৬ লক্ষের বেশি রোহিঙ্গা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান করে বাংলাদেশ বিশ্বসমাজে প্রশংসিত হলেও নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
ক. জন্মহার কাকে বলে?
খ. ঘনত্বের বিচারে রাঙ্গামাটি কোন ধরনের জনবসতি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে আগমন কোন ধরনের অভিগমন - ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে আগমনের প্রভাব বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রতি এক হাজার লোকের মধ্যে বছরে যতজন জীবন্ত শিশুর জন্ম হয় তাকে জন্মহার বলে।

খ. ঘনত্বের বিচারে রাঙামাটি বিরল জনবসতি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।
বাংলাদেশে যেসব অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কি.মি. এ ১,০০০ জনের কম সেসব অঞ্চলকে বিরল জনবসতিযুক্ত অঞ্চল বলে। চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙামাটি জেলার জনসংখ্যা প্রতি বর্গ কি.মি. এ ১,০০০ জনের কম। তাই বলা যায় রাঙামাটি জেলা বিরল জবসতির অন্তর্ভুক্ত।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনগোষ্ঠী অর্থাৎ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় গ্রহণ বলপূর্বক অভিগমনের আওতায় পড়ে।
মানুষ একস্থান হতে অন্যস্থানে গমন করে স্থায়িভাবে বাস করলে তাকে অভিগমন বলে। এ অভিগমন একদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যেও হতে পারে আবার একদেশ থেকে অন্যদেশেও হতে পারে। উদ্দীপকে উল্লিখিত রোহিঙ্গাদের মায়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে আসা এক ধরনের অভিগমনের আওতাভুক্ত। অভিগমন আবার দুই ধরনের। অবাধ অভিগমন ও বলপূর্বক অভিগমন। তবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের প্রবেশ বলপূর্বক অভিগমনের অন্তর্ভুক্ত।
প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক চাপের মুখে কিংবা পরোক্ষভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপ সৃষ্টির ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে যে অভিগমন করে, তাকে বলপূর্বক অভিগমন বলে। গৃহযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের কারণে বা যুদ্ধের কারণে কেউ যদি অভিগমন করে তবে তাকেও বলপূর্বক অভিগমন বলে। যেমন সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশ মায়ানমারের বৌদ্ধ সম্প্রদায় ও সংখ্যালঘ-রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে জাতিগত দাঙ্গার কারণেই রোহিঙ্গা মুসলমানগণ কক্সবাজারের উখিয়ায় আশ্রয় নেয়। এ কারণে এদেরকে বলপূর্বক অভিগমনের আওতাভুক্ত করা হয়।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনগোষ্ঠী অর্থাৎ মায়ানমার থেকে মুসলিম রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের উখিয়ায় অভিগমনের ফলে এসব অঞ্চলে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও জনবৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন সাধিত হবে।
অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্যই মানুষ অভিবাসনে আগ্রহী হয়। রোহিঙ্গাদের আগমনের ফলে এসব অঞ্চলে ভূমি ও সম্পত্তির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়, জীবনযাত্রার মান নিম্ন হয় এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাহত হয়। এ অভিগমনের ফলে রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগই বেশি হয়।
রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারে প্রবেশের ফলে এ অঞ্চলে সামাজিক ও আচার-আচরণের অনেক পরিবর্তন হবে। সামাজিক অনেক রীতিনীতি একদেশ থেকে অন্যদেশে স্থানান্তরিত হয়। এছাড়া বিভিন্ন রোগের বিস্তার ঘটবে। অধিক হারে রোহিঙ্গাদের প্রবেশের ফলে এ অঞ্চলে ঐ দেশের সংস্কৃতি রপ্ত করার কারণে নিজের দেশের সামাজিক বৈশিষ্ট্য ক্ষুন্ন হবে।
রোহিঙ্গা মুসলমানরা এদেশে প্রবেশের ফলে তাদের মৌলিক চাহিদা সহজে মিটাতে পারে না। এমনকি তারা মানবেতর জীবনযাপন করে। খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ব্যবস্থার অনুকূল পরিবেশ থেকে এরা বঞ্চিত হয়। ফলে রোগ-শোক, অভাব-অনটন এদেরকে গ্রাস করে ফেলে। সর্বোপরি বলা যায়, রোহিঙ্গা সমস্যা বর্তমান সময়ের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। কারণ এ সমস্যার জন্য সার্বিক পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।

HSC ভূগোল ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ২ pdf download

৭. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য করো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

ক. CDR এর পূর্ণরূপ কী?
খ. জনসংখ্যার ঘনত্ব কীভাবে নির্ণয় করা হয়? ব্যাখ্যা কর।
গ. 'A' অঞ্চলের জনসংখ্যার ঘনত্বের ক্ষেত্রে প্রভাববিস্তারকারী নিয়ামকসমূহ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. 'C' ও 'B' অঞ্চলের জনসংখ্যার ঘনত্বের তারতম্যের কারণ বিশ্লেষণ কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. CDR এর পূর্ণরূপ হলো- Crude Death Rate.

খ. জনসংখ্যার ঘনত্ব বলতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে কতজন লোক বাস করে তাকে বোঝায়। কোনো দেশের জনবসতির ঘনত্ব জানতে হলে ঐ দেশের মোট জনসংখ্যা ও দেশের আয়তন জানতে হবে। জনসংখ্যার ঘনত্ব নির্ণয়ের সূত্রটি নিম্নরূপ:
জনসংখ্যার ঘনত্ব =

গ. চিত্রে 'A' চিহ্নিত অলটি হলো ঢাকা।
ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব অধিক হওয়ার প্রভাববিস্তারকারী নিয়ামকগুলোর মধ্যে ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু, মৃত্তিকা, পানি, খনিজ শিক্ষাব্যবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা, উন্নত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
মানুষ সাধারণত যেসব অঞ্চলে কৃষি, সমভাবাপন্ন জলবায়ু, উর্বর মৃত্তিকা এবং শিল্পকারখানা গড়ে তোলার পরিবেশ, সুপেয় পানি, পরিবহন সুবিধা, আধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা, পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা ও উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে সেসব অঞ্চলে বসবাস করতে চায়। অর্থাৎ যেসব অঞ্চলে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রভৃতি তুলনামূলকভাবে বেশি সে অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। বাংলাদেশের 'A' চিহ্নিত স্থানে অর্থাৎ ঢাকায় এসব নিয়ামক বা কারণগুলো বিদ্যমান থাকায় এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে অনেক বেশি।
সুতরাং বলা যায়, বিভিন্ন প্রাকৃতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নিয়ামকের আনুকূল্যে ঢাকা অঞ্চলের জনসংখ্যায় ঘনত্ব অধিক হয়েছে।

ঘ. চিত্রের 'C' অঞ্চলটি হলো চট্টগ্রাম জেলা এবং 'B' অঞ্চলটি হলো রাঙামাটি জেলা।
জনসংখ্যার ঘনত্ব বলতে বিভিন্ন মানুষের সংবদ্ধতা তথা জনবসতির নিবিড়তা বোঝানো হয়ে থাকে, ঘনত্বের দ্বারা ভূমির ওপর জনসংখ্যার চাপের তীব্রর্তী প্রকাশ পেয়ে থাকে। জনসংখ্যা বন্টনের নিয়ামকগুলো হলো- ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু, খনিজ সম্পদ, শিল্পোন্নতি, পরিবহন ব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক প্রভাব।
চট্টগ্রাম জেলায় উর্বর মৃত্তিকা এবং অনুকূল জলবায়ু কৃষিকাজের উপযোগী। প্রায় সমতল ভূমি হওয়ায় পর্যাপ্ত শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। এ জেলায় সমুদ্রবন্দর থাকায় এখানকার আশেপাশে ব্যাপক কর্মসংস্থান গড়ে উঠেছে। তাছাড়া সড়কপথ, রেলপথ ও নৌপথ দ্বারা উত্তম পরিবহন ব্যবস্থা; শিক্ষা, সংস্কৃতি, জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চা ও বিকাশের সুযোগ থাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি।
অন্যদিকে, রাঙামাটি অলটি পাহাড়-পর্বত বেষ্টিত ভূমিরূপ অঞ্চল। এখানকার মৃত্তিকায় অমেস্নর পরিমাণ বেশি বলে মৃত্তিকার উর্বরাশক্তি খুবই কম। ভূমির ঢালের দরুন বৃষ্টির পানি বা সেচের পানি জমে থাকতে পারে না। ফলে কৃষিকাজেও তেমন উন্নত নয়। পাহাড়-পর্বত বেন্টিত ভূমিরূপ বলে শিল্পকারখানাও গড়ে ওঠে নি। তাছাড়া ভালো রাস্তাঘাট বা রেলসংযোগ এবং শিক্ষা-সংস্কৃতি উপযুক্ত পরিমাণে না থাকায় জীবিকাসংস্থান কষ্টকর। রাঙামাটি অঞ্চলে জীবিকার সংস্থান কষ্টসাধ্য হওয়ায় জনবসতির ঘনত্ব খুবই কম।
উপযুক্ত আলোচনার আলোকে বলা যায়, চট্টগ্রাম জেলা এবং রাঙামাটি জেলা ২টি স্থানের জনসংখ্যার ঘনত্বের ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

৮. নিজের চিত্রটি লক্ষ্য করো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

ক. বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব কত?
খ. জনসংখ্যা পিরামিড বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।
গ. চিত্রে 'R' চিহ্নিত অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব অধিক হওয়ার প্রাকৃতিক কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. 'P' ও 'Q' চিহ্নিত অল দুটির মধ্যে তুলনামূলক জনসংখ্যার ঘনত্বের তারতম্য বিশ্লেষণ কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১১০৯ জন।

খ. নারী-পুরুষের বয়সভিত্তিক বিন্যাস গ্রাফে প্রকাশ করলে ত্রিভুজ বা পিরামিড সদৃশ যে নকশা তৈরি হয় তাকে জনসংখ্যা পিরামিড বলে।
জনসংখ্যা পিরামিড হচ্ছে কোনো স্থানের জনমিতিক বৈশিষ্ট্য প্রকাশক গ্রাফচিত্র। পিরামিডের ভূমি অক্ষে নারী-পুরুষ সংখ্যা এবং লম্ব। অক্ষে বয়সভিত্তিক বিন্যাস যার বামপাশে পুরুষদের এবং ডানপাশে নারীদের বয়সভিত্তিক আয়তলেখ অঙ্কন করে দেখানো হয়।

গ. চিত্রে 'R' চিহ্নিত অঞ্চল হচ্ছে ঢাকা। ঢাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব অধিক হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক কারণ কাজ করছে।
বাংলাদেশের সর্বত্র জনসংখ্যার ঘনত্ব একই রকম নয়। কোথাও বেশি আবার কোথাও কম। ঢাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব অধিক হওয়ার প্রাকৃতিক কারণগুলো এক্ষেত্রে ভূপ্রকৃতি, মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য ও পানির অবস্থান। ঢাকা অঞ্চলের সমতল ভূপ্রকৃতিতে কৃষি ও শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে, যা মানুষের বসবাসকে আকৃষ্ট করে। নদী - তীরবর্তী ঢাকা অঞ্চলে (নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর) মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য কৃষিকাজের অনুকূল হওয়ায় এখানে নিবিড় বসতি গড়ে উঠেছে। ঢাকা অঞ্চলে পানি সহজলভ্য। নদী ছাড়াও গভীর মৃত্তিকা স্তরে পানির মজুদ রয়েছে।
বাংলাদেশের 'R' চিহ্নিত স্থানে অর্থাৎ ঢাকায় প্রাকৃতিক এসব নিয়ামক। বা কারণগুলো বিদ্যমান থাকায় 'R' চিহ্নিত স্থানের জনসংখ্যার ঘনত্ব অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে অনেক বেশি।

ঘ. চিত্রের 'P' চিহ্নিত অঞ্চলটি হলো সিলেট এবং 'Q' চিহ্নিত অঞ্চলটি হলো রাঙামাটি।
জনসংখ্যার ঘনত্ব বলতে একটি দেশের প্রতি বর্গকিলোমিটারে যতজন লোক বাস করে তাকে ঐ দেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব বলে। বাংলাদেশের সর্বত্র জনসংখ্যার ঘনত্ব একই রকম নয়। কোথাও বেশি আবার কোথায় কম। আর এই ঘনত্বের তারতম্যের বিভিন্ন কারণ বিদ্যমান।
সিলেট ও রাঙামাটি অঞ্চলের মধ্যে ভূপ্রকৃতিগত পার্থক্য বিরাজ করায় এ দুই অঞ্চলের মধ্যে জনসংখ্যার ঘনত্বের তারতম্য রয়েছে। পার্বত্য এলাকা রাঙামাটি অঞ্চলে জীবিকা সংস্থান কষ্টসাধ্য হওয়ায় জনবসতির ঘনত্ব খুবই কম। এ অঞ্চলে কৃষি উপযোগী জমি নেই, ভালো রাস্তাঘাট বা রেলসংযোগ উপযুক্ত পরিমাণে না থাকায় জীবিকা সংস্থান কষ্টকর। অনুন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা, বনভূমি ও ভূপ্রকৃতিগত কারণে এ স্থান জনবিরল। অন্যদিকে, রাঙামাটির তুলনায় সিলেট অঞ্চলের জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। এ অঞ্চলে ভালো রাস্তাঘাট, রেল সংযোগ উপযুক্ত পরিমাণে থাকায় জীবিকা সংস্থান তুলনামূলক সহজ হওয়ায় সিলেট অঞ্চলে জনবসতির ঘনত্ব বেশি।
সুতরাং P ও Q চিহ্নিত অঞ্চলে তথা বাংলাদেশের সিলেট ও রাঙামাটি অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্বের মধ্যে তুলনামূলক তারতম্য পরিলক্ষিত হয়।

৯. ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইট' নামে ঢাকায় এক জঘন্যতম গণহত্যা চালায়, শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ফলে নিজেদের জীবন রক্ষার্থে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় আশ্রয় নেয়।
ক. অভিগমন কাকে বলে?
খ. শরণার্থী বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত অভিগমনটি কোন ধরনের অভিগমন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে এই অভিগমন অত্র অঞ্চলের সার্বিক পরিবেশের ওপর কীরূপ প্রভাব ফেলবে? বিশ্লেষণ কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের স্থায়িভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে একস্থান হতে অন্যস্থানে চলে যাওয়া বা গমন করাকে অভিগমন বলে।

খ. গৃহযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের কারণে বা যুদ্ধের কারণে কেউ যদি অভিগমন করে তাকে বলপূর্বক অভিবাসন বলে। বলপূর্বক অভিবাসনের ফলে যেসব ব্যক্তি কোনো স্থানে আগমন করে ও সাময়িকভাবে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং সুযোগমতো স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় থাকে, তাদেরকে বলে শরণার্থী।

গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত অভিগমনটি বলপূর্বক অভিগমন।
প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক চাপের মুখে কিংবা পরোক্ষভাবে রাজব অথনৈতিক ও সামাজিক চাপের ফলে সৃষ্ট গৃহযুদ্ধ ও সাম্প্রাদয়িক বৈষম্যের কারণে মানুষ বাধ্য হয়ে যে অভিগমন করে, তাকে এর অভিগমন বলে।
উদ্দীপকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইট' নামে ঢাকায় এক জঘন্যতম গণহত্যা চালায়, শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ফলে নিজেদের জীবন রক্ষার্থে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় আশ্রয় নেয়। বাংলাদেশ থেকে ভারতে আশ্রয়গ্রহণ বলপূর্বক অভিগমনের অন্তর্ভুক্ত। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে ভারতে আশ্রয়গ্রহণ বলপূর্বক অভিগমন।

ঘ. উদ্দীপকে নির্দেশিত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা অঞ্চলে বাঙালিদের অভিগমন সার্বিক পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্যই মানুষ অভিবাসনে আগ্রহী হয়। বাঙালিদের অভিগমনের ফলে এসব অঞ্চলে ভূমি ও সম্পত্তির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হবে, জীবনযাত্রার মান নিম্ন হবে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাহত হবে।
উদ্দীপকে বাঙালিদের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় প্রবেশের ফলে এ অঞ্চলে সামাজিক ও আচার-আচরণের অনেক পরিবর্তন হবে। সামাজিক অনেক রীতিনীতি দুই দেশের মধ্যে বিনিময় হয়। এছাড়া বিভিন্ন রোগের বিস্তার ঘটবে। অধিকভাবে বাঙালিদের প্রবেশের ফলে ঐ অঞ্চলে এ দেশের সংস্কৃতি রপ্ত করার কারণে নিজের দেশের সামাজিক বৈশিষ্ট্য ক্ষুন্ন হবে। এ অভিগমনের ফলে বাঙালিদের দুর্ভোগই বেশি হবে। বাঙালিরা এ দেশে প্রবেশের ফলে তাদের মৌলিক চাহিদা সহজে মিটাতে পারে না। এমনকি তারা মানবেতর জীবনযাপন করবে। খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ব্যবস্থার অনুকূল পরিবেশ থেকে এরা বঞ্চিত হবে। ফলে রোগ-শোক, অভাব-অনটন এদেরকে গ্রাস করে ফেলবে। এছাড়া বাঙালিদের মধ্যে বিদ্যমান দুর্ভোগজনিত আচরণ দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
সর্বোপরি বলা যায়, বাঙালিদের অভিগমনের ফলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার সার্বিক পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

১০. ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের অনেক পরিবারের মতো শান্ত, ও আমিনার পরিবার হাবিব, রনি ও আরও অনেকের পরিবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে গমন করে। এর মধ্যে আমিনা ও রনির পরিবার ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে চলে আসে।
ক. আন্তর্জাতিক অভিগমন কাকে বলে?
খ. অভিগমনের সামাজিক প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে কোন ধরনের অভিবাসনের কথা বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে অভিগমনকারীদের মধ্যে শরণার্থী কারা? বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষ যখন একদেশ হতে অন্যদেশে বসবাসের জন্য গমন করে তখন তাকে আন্তর্জাতিক অভিগমন বলে।

খ. অভিগমনের ফলে উৎস (origin) ও গন্তব্যস্থলে (destination) সামাজিক প্রভাব পড়ে থাকে। অভিগমনের ফলে গন্তব্যস্থলের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত হয়। মানুষ বিভিন্ন সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হয়। অন্যদিকে পরস্পরের মধ্যে সামাজিক বন্ধন কমে যায়, হতাশা বৃদ্ধি পায়। উৎসস্থলে সামাজিক কার্যক্রমে স্থবিরতা আসতে পারে। যেমন, স্বামী অন্যত্র অভিগমন করার ফলে গ্রামে নারীদের ওপর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক চাপ বৃদ্ধি পায়।

গ. ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের অনেক পরিবারের মতো শান্ত, আমিনা, হাবিব, রনি ও আরও অনেকের পরিবার প্রতিবেশী দেশ ভারতে গমন করে। এ ধরনের অভিগমনকে বলা হয় বলপূর্বক আন্তর্জাতিক অভিগমন।
প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক চাপের মুখে কিংবা পরোক্ষভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপ সৃষ্টির ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে যে অভিগমন করে তাকে বলপূর্বক অভিগমন বলে।
উদ্দীপকে উল্লিখিত পরিবারগুলো রাজনৈতিক চাপের মুখে যুদ্ধের সময় নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ থেকে ভারতে গমন করে। সুতরাং এ ধরনের অভিগমন বলপূর্বক আন্তর্জাতিক অভিগমনের অন্তর্ভুক্ত।

ঘ. উদ্দীপকে আমিনা ও রনির পরিবার শরণার্থী।
১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের শান্ত, আমেনা, হাবিব, রনিসহ আরো অনেক পরিবার প্রতিবেশী দেশ ভারতে গমন করে। ১৯৭২ সালে আমিনা ও রনির পরিবার দেশে ফিরে আসে। বাংলাদেশে ফিরে আসা পরিবারগুলোকে বলা হয় শরণার্থী।
শরণার্থী বলতে যারা অন্যদেশে সাময়িকভাবে আশ্রয় গ্রহণ করে এব, সযোগমতো স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় থাকে তাদেরকে বোঝায়। আর যে সমস্ত ব্যক্তি বলপূর্বক অভিগমনের ফলে স্থানে আগমন করেও স্থায়িভাবে আবাস স্থাপন করে তা উদ্বাস্তু।
যেহেতু যুদ্ধের সময় অনেক পরিবারের মতো আমিনা পরিবার ভারতে যায় এবং স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বা ফিরে আসে সেহেতু তারা শরণার্থী।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post