HSC ভূগোল ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ১

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 2nd paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-১

HSC Geography
2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. নাবিহার মামা উচ্চ শিক্ষার জন্য উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিমের একটি দেশে গিয়েছেন। যার জাতীয় পতাকায় ৫০টি তারকা খচিত রয়েছে। গত গ্রীষ্মের ছুটিতে তিনি দেশটির পূর্বে অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্রে বেড়াতে যান। যেখানে শাসনব্যবস্থা শাসনতান্ত্রিক রাজতন্ত্র।
ক. বাংলাদেশের মোট আয়তন কত?
খ. বাংলাদেশ ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশ- ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত প্রথম দেশটির ভৌগোলিক পরিচিতি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশ দুটির শাসনব্যবস্থার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের মোট আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কি.মি.।

খ. যেসব অঞ্চল দিয়ে ক্রান্তীয় রেখা অতিক্রম করেছে তাকে ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশ বলে।
বাংলাদেশের উপর দিয়ে ২৩.৫° কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে। তাই বাংলাদেশকে ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশ বলে।

গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটি হলো যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ও সর্ববৃহৎ অংশ উত্তরে কানাডার সীমানা হতে দক্ষিণে মেক্সিকো এবং পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরের তীর হতে পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরের তীর পর্যন্ত বিস্তৃত। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ অংশটি ২৫° উত্তর হতে ৪৫° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত।
আবার আলাস্কার অংশটি বেরিং সাগর (৮৭.৫° পশ্চিম দ্রাঘিমা) হতে ১৪০° পশ্চিম দ্রাঘিমা পর্যন্ত এবং ৭৮° উত্তর অক্ষাংশ হতে ৬২° দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত। অন্যদিকে হাওয়াই পূর্ব-পশ্চিমে ১৫০° পশ্চিম দ্রাঘিমা এবং উত্তর-দক্ষিণে ১৯° হতে ২৫° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত। দেশটির মোট আয়তন ৯৮,২৬,৬৭৫ বর্গ কিলোমিটার।

ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশ দুটি হলো যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
উভয় দেশের শাসনব্যবস্থার মধ্যে কিছু পার্থক্য বিরাজ করে। নিচে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের শাসন-ব্যবস্থার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হলো:
যুক্তরাষ্ট্রে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থা বিদ্যমান। রাষ্ট্রীয় নাম ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা। আইনসভা দ্বিকক্ষিক। নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং এর সদস্যসংখ্যা ৪৩৫। উচ্চকক্ষ হচেছ সিনেট এবং এর সদস্যসংখ্যা ১০০। ভোট প্রদানের যোগ্যতা অর্জনের বয়স ১৮ বছর। ১৭৮৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান প্রণয়ন করা হয় এবং ১৭৮৯ সালের ৪ মার্চ থেকে এটি কার্যকর করা হয়। সুপ্রিমকোর্ট দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়। এর কেন্দ্রীয় আইনসভার নাম কংগ্রেস।
অন্যদিকে, যুক্তরাজ্য প্রকৃত বিচারে সংসদীয় গণতন্ত্রব্যবস্থা বিদ্যমান। এর আইনসভার নাম পার্লামেন্ট আইনসভা দুই স্তরবিশিষ্ট। নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্স যার সদস্যসংখ্যা ৬৫০, সকলেই নির্বাচিত। উচ্চকক্ষ হাউজ অব লর্ডস। যুক্তরাজ্যে সংবিধান সময়ের ব্যবধানে কিছু কিছু লিখিত হলেও অধিকাংশই প্রচলিত নীতি ও প্রথানির্ভর।

২. মহাদেশ কতকগুলো দেশ নিয়ে গঠিত। আমরা এমন একটি স্বাধীন দেশের অধিবাসী যা পার্শ্ববর্তী অন্য একটি দেশ অপেক্ষা অনেক ছোট। দেশটি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
ক. পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম মহাদেশের নাম লেখ।
খ. নামীয় অঞ্চলের সীমানা সুনির্দিষ্ট নয়- ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশদ্বয় যে মহাদেশে অবস্থিত তার ভৌগোলিক পরিচিতি তুলে ধর।
ঘ. ইঙ্গিতকৃত দেশদ্বয়ের জলবায়ুগত তারতম্য বিশ্লেষণ কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম মহাদেশের নাম হলো অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ।

খ. যে সমস্ত রাজনৈতিক অঞ্চলের কেবল নামীয় পরিচিতি রয়েছে সেগুলোকে নামীয় অঞ্চল বলে।
মহাদেশ ও মহাদেশের অংশবিশেষ নামীয় অঞ্চলের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। যেমন- এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলইউরেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি এলাকাও নামীয় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। নামীয় অঞ্চলের সীমানা সুনির্দিষ্ট নয় এবং এসব অঞ্চলের একক নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রও থাকে না; যেমন- এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকার কোনো রাজধানী নেই। তাই বলা যায়, নামীয় অঞ্চলের সীমানা সুনির্দিষ্ট নয়।

গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশদ্বয় হলো বাংলাদেশ ও ভারত, যা এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত।
এশিয়া মহাদেশ ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশের পূর্ব দিকে অবস্থিত পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশ। এশিয়া ১০° দক্ষিণ অক্ষরেখা থেকে ৮০ উত্তর অক্ষরেখা এবং ২৫° পূর্ব থেকে ১৭০° পশ্চিম দ্রাঘিমারেখা ১৮০° দ্রাঘিমা অতিক্রম করে আরো ১০° দ্রাঘিমা পর্যন্ত বিস্তৃত।
পৃথিবীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এ মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত। এর আয়তন ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৭৯ হাজার বর্গকিলোমিটার যা ইউরোপের প্রায় সাড়ে চারগুণ, আফ্রিকার দেড়গুণ, অস্ট্রেলিয়ার ছয়গুণ। উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা যুক্তভাবেও এশিয়ার চেয়ে আয়তনে ছোট। এর উত্তরে উত্তর মহাসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগর, পশ্চিমে ইউরাল পর্বত, ইউরাল নদা, কৃষ্ণসাগর, ভূমধ্যসাগর এবং লোহিত সাগর অবস্থিত। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও জনবহুল মহাদেশ। এটি ভূপৃষ্ঠের ৮.৬% ও স্থলভাগের ২৯.৪% অংশ জুড়ে অবস্থিত।

ঘ. ইঙ্গিতকৃত দেশদ্বয় হলো বাংলাদেশ ও ভারত অবস্থানগত কারণে উভয় দেশের মধ্যে জলবায়ুগত তারতম্য বিরাজ করে। নিচে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জলবায়ুগত তারতম্য ব্যাখ্যা করা হলো-
বাংলাদেশের জলবায়ু মোটামুটি উষ্ণ, আর্দ্র ও সমভাবাপন্ন। মৌসুমি জলবায়ুর প্রভাব এ দেশের জলবায়ুর ওপর এত অধিক প্রভাব ফেলে যে সামগ্রিকভাবে এ জলবায়ু ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু নামে পরিচিত। মৌসুমি জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য হলো বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঋতুর আবির্ভাব। একটি হতে আর একটি ঋতুর তাপমাত্রা, বায়ুপ্রবাহ এবং বৃষ্টিপাত সম্পূর্ণরূপে পৃথক তাই জলবায়ুর এ তিনটি উপাদানের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ঋতুকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা-শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা। শুষ্ক আরামদায়ক শীতকাল এবং উষ্ণ ও আর্দ্র গ্রীষ্মকাল বাংলাদেশের জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য।
অন্যদিকে ভারতের জলবায়ু বৈচিত্র্যপূর্ণ। ভারতে একদিকে পৃথিবীর সবাধিক বৃষ্টিপাত অঞ্চল (মৌসিনরাম, চেরাপুঞ্জি), অপরদিকে মরুভূমির (যেমন- রাজস্থানে) উষ্ণতা রয়েছে। একদিকে উপকূলভাগে মৃদুভাবাপন্ন জলবায়ু, অপরদিকে অভ্যন্তরভাগে পাঞ্জাব, সাজস্থান অঞ্চলের মহাদেশীয় জলবায়ু বিরাজ করে। আবার হিমালয় শতের অবস্থানও ভারতের জলবায়ুকে প্রভাবিত করছে। আয়তনে হওয়ায় ভারতের স্থানভেদে ঋত বৈচিত্র্যতা পরিলক্ষিত হয়।

৩. মানব ভূগোল, ভূগোল শাস্ত্রের একটি অন্যতম শাখা। এখানে মানবজাতির চেহারা, আকৃতি, বেশভূষা, দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপ ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এ শাস্ত্র পাঠে মানব ভূগোলের বিষয়বস্তু ও শাখা সম্পর্কেও জানা যায়। এ কারণে মানব ভূগোল পাঠ করা খুবই জরুরি।
ক. মানব ভূগোল কী?
খ. মানব ভূগোলের ক্ষেত্র বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের আলোকে ভূগোল শাখাটির বিষয়বস্তু আলোচনা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত ভূগোল শাখাটির প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের কর্মকান্ড ও গুণাবলির সাথে ভৌগোলিক পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্কের প্রকৃতি ও বিন্যাস নিয়ে যে শাস্ত্র আলোচনা করে তাকে মানব ভূগোল বলে।

খ. মানুষ, পরিবেশ ও মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ এ তিনটি নিয়ে মানব ভূগোলের ক্ষেত্র রচিত।
মানুষ ও তার ক্রিয়াকলাপকে কেন্দ্র করেই মানব ভূগোল গড়ে ওঠে। আর মানুষ যে পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে বসবাস করে তা হলো মানব পরিবেশ। এ মানুষই তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য যে সমস্ত কার্য সম্পাদন করে তাদের সমষ্টিকে মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে মানব ভূগোলের বিষয়বস্তু খুব বিস্তৃত। এতে প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক উপাদানের অনেক বিষয়ের সমাবেশ দেখা যায়।
মানব, ভূগোলের বিষয়বস্তু নিয়ে ভূগোলবিদগণ তাদের সুচিন্তিত মতামত প্রকাশ করেন। তাদের মতে, প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক পরিবেশের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে মানব ভূগোলের মূল বিষয়বস্তু।
উদ্দীকে মানব ভূগোল মানবজাতির চেহারা, আকৃতি, বেশভূষা, দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। কোনো অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রধানত গোলকরূপে পৃথিবী, ভূমিরূপ, জলভাগ, মৃত্তিকা ও খনিজ, জলবায়ু এবং স্বাভাবিক উদ্ভিদ প্রভৃতি প্রাকৃতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গড়ে ওঠে। কোনো অঞ্চলের অপ্রাকৃতিক পরিবেশ, সেই অঞ্চলের মানুষের উন্নততর প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে গড়ে ওঠে, আর মানুষের এ উন্নততর প্রয়োজনগুলো জনসংখ্যার ঘনত্ব, সাফল্য ও উন্নতির পরিমাণ, মানুষের উৎসাহ ও কর্মশক্তির পরিমাণ, স্বাতন্ত্রীকরণের পরিমাণ, পেশা, সম্পদ এবং মানুষের আগ্রহ ও উৎসাহের স্থানীয় পার্থক্য প্রভৃতি অনুকূল পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই বলা যায়, উপযুক্ত প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক পরিবেশের বিস্তারিত বর্ণনা ও বিশ্লেষণই মানব ভূগোলের বিষয়বস্তু।

ঘ. উদ্দীপকে মানব ভূগোল সম্পর্কে ইঙ্গিত করা হয়েছে। নিচে মানব ভূগোলের প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ করা হলো। মানুষ হলো মানব ভূগোলের প্রধান উপাদান। মানুষ প্রতিনিয়ত পৃথিবীর সম্পদ ও ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। মানব ভূগোল মানুষ, তার কর্মকান্ড এবং বিভিন্ন কর্মকান্ডের স্থানিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করে থাকে। বর্তমানে মানব ভূগোলের প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক।
মানবজীবনকে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, আরামদায়ক ও সমৃদ্ধিময় করে গড়ে তোলার জন্য মানব ভূগোলের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। মানবসমাজের স্থানিক বৈশিষ্ট্য, বাস্তব সম্বন্ধীয় জ্ঞান, বিভিন্ন সংস্কৃতি, ঐতিহাসিক পরিবেশ, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল, পরিবেশের সাথে মানুষের সম্পর্ক, মানুষের জীবনযাত্রা, অর্থনীতি সম্বন্ধে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, অভিগমনের প্রকৃতি ও ধরন এবং জনসংখ্যার জনমিতিক উপাদান বিশ্লেষণ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে মানব ভূগোলের প্রয়োজন রয়েছে।
তাই বলা যায়, মানবজীবনে মানব ভূগোলের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

৪. পৃথিবীর বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলের মানুষের আকার-আকৃতি, আচার-আচরণ, পোশাক পরিচ্ছদ, চিন্তাধারা, খাদ্য গ্রহণ, বাসগৃহ, জীবনযাপন প্রণালি প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিস্তর পার্থক্য লক্ষ করা যায়। এমনকি অঞ্চলভেদে ভাষা, ধর্ম, শিক্ষা, শাসনতন্ত্র প্রভৃতি ক্ষেত্রেও পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
ক. মহাদেশ কী?
খ. বাংলাদেশের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
গ. ভূগোলের কোন শাখায় অঞ্চলভেদে মানুষের উল্লিখিত বিষয়গুলোর পার্থক্য আলোচনা করা হয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মানবজীবনে উক্ত বিষয়ের প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূপৃষ্ঠের স্থলভাগ সাতটি বড় বড় ভূখন্ডে (নামীয় অঞ্চল) বিভক্ত। এরূপ এক একটি বড় ভূখন্ডই হলো মহাদেশ।

খ. ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশের জলবায়ু উষ্ণ, আর্দ্র ও সমভাবাপন্ন।
মৌসুমি জলবায়ু এ দেশের জলবায়ুর ওপর এত অধিক প্রভাববিস্তার করে যে সামগ্রিকভাবে এটি ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু নামে পরিচিত। মৌসুমি জলবায়ুর প্রভাবে এদেশে ভিন্ন ঋতুর আবির্ভাব ঘটে। শুষ্ক ও আরামদায়ক শীতকাল এবং উষ্ণ ও আর্দ্র গ্রীষ্মকাল বাংলাদেশের জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য।

গ. উদ্দীপকে পৃথিবীর বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলের মানুষের আকার, আকৃতি, আচার-আচরণ, পোশাক-পরিচ্ছদ, চিন্তাধারা, খাদ্য গ্রহণ, বাসগৃহ, জীবনযাপন প্রণালি প্রভৃতি উল্লিখিত হয়েছে। এগুলো মানব ভূগোলের আলোচ্য বিষয়।
মানব ভূগোলের বিষয়বস্তু হচ্ছে মানব সম্প্রদায‡়র গঠন, বিন্যাস, বৃদ্ধি, বসতি, অভিগমন, জীবনযাপন প্রণালি, সংস্কৃতি, সমাজ, ধর্ম, জনসংখ্যা, আইন, রাষ্ট্রকাঠামো প্রভৃতি। এগুলো স্থান ও সময়ের প্রেক্ষাপটে মানব ভূগোলে আলোচিত হয়।
উল্লিখিত বিষয়গুলো ছাড়া অঞ্চলভেদে ভাষা, ধর্ম, শিক্ষা, শাসনতন্ত্র প্রভৃতি ক্ষেত্রে যে পার্থক্য তা মূলত জৈবিক, সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও পরিবেশগত কারণে হয়ে থাকে। তাই পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জৈবিক, সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক পার্থক্যের অনুসন্ধান করাও মানব ভূগোলের আলোচ্য বিষয়।

ঘ. মানবজীবনে উদ্দীপকের আলোচ্য বিষয় তথা মানব ভূগোলের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
মানব ভূগোলে মানবীয় কর্মকান্ডের স্থানিক (spatial) বিশ্লেষণ করা হয়। এখানে মানুষের বিভিন্ন কর্মকান্ডকে স্থানীয় থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে প্রকৃতি যেমন সাড়া পৃথিবী জুড়ে ও বিস্তৃত, মানুষও তেমন সাড়া পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে আছে। মানুষের এ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকায় যেসব কারণ লুকায়ে রয়েছে মানব ভূগোল তাই অনুসন্ধান করে। মানুষ তার চারপাশের প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট পরিবেশের সাথে পরস্পর নির্ভরশীলতার ভিত্তিতে আন্তঃসম্পর্ক গড়ে তোলে। মানব ভূগোল পাঠের মাধ্যমে আমরা পরিবেশের সঙ্গে মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক সম্বন্ধে ধারণা পেতে পারি।
এছাড়া এ ভূগোলে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও বসতিসংক্রান্ত বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়ে থাকে বলে আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের মানুষের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি প্রভৃতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারি।
পরিশেষে বলা যায়, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের পরিবেশ ও মানুষের জীবনযাপন প্রণালি মানব ভূগোল পাঠের মাধ্যমে সহজেই জানা যায়। তাই বলা যায়, মানবজীবনকে স্বাছন্দ্য, আরামদায়ক করে গড়ে তোলার জন্য মানব ভূগোল পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম।

৫. শিক্ষার্থীরা ভূপৃষ্ঠে পরিবেশের সাথে মানুষ ও মানুষের কর্মকান্ডের আন্তঃসম্পর্ক’ শীর্ষক এক সেমিনারে অংশগ্রহণ করে, যেখানে বক্তারা বলেন, কোনো স্থানের প্রাকৃতিক উপাদান ব্যতীত মানবসৃষ্ট যাবতীয় উপাদানই মানব পরিবশের অন্তর্ভুক্ত।
ক. কোন দুইটি মহাদেশকে একসাথে ইউরেশিয়া বলা হয়?
খ. এশিয়ার ভৌগোলিক অবস্থান কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. সেমিনারের আলোচ্য বিষয়টি কতটা যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সেমিনার শেষে শিক্ষার্থীরা কীসের গুরুত্ব অনুধাবন করল তা বিশ্লেষণ কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশকে একসাথে ইউরেশিয়া বলা হয়।

খ. এশিয়া মহাদেশ ইউরোপের পূর্ব এবং আফ্রিকার উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত।
এশিয়া ১০° দক্ষিণ অক্ষরেখা থেকে ৮০° উত্তর অক্ষরেখা এবং ২৫০ পূর্ব থেকে ১৭০° পশ্চিম দ্রাঘিমারেখা ১৮০° দ্রাঘিমা অতিক্রম করে আরো ১০° দ্রাঘিমা পর্যন্ত বিস্তৃত।

গ. উদ্দীপকে সেমিনারের আলোচ্য বিষয় ছিল, ভূপৃষ্ঠে পরিবেশের সাথে মানুষ ও মানুষের কর্মকান্ডের আন্তঃসম্পর্ক। বিষয়টির যথার্থ যৌক্তিকতা রয়েছে।
আমরা জানি যে, মানবসৃষ্ট যাবতীয় উপাদানই মানব পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। আর মানব পরিবেশ মানব ভূগোলের অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু আমরা সবাই একটি নির্দিষ্ট পরিবেশে বাস করি সেহেতু মানুষ ও পরিবেশ একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। মানব গোষ্ঠীর অবস্থানিক বিন্যাস, বন্টন, প্রকৃতি, উৎপাদন ও উপজীবিকা, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ, জনসংখ্যা, নগর, অর্থনীতি, আইন, যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, সামাজিক কর্মকান্ড, বিনোদন ব্যবস্থা ইত্যাদি সবকিছুই ভূপৃষ্ঠের পরিবেশকে ঘিরে আবর্তিত হয়। তাই সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে মানুষ ও পরিবেশের আন্তঃসম্পর্ক সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। এ আলোকে সেমিনারের আলোচনার বিষয় তথা ভূপৃষ্ঠে পরিবেশের সাথে মানুষ ও মানুষের কর্মকান্ডের আন্তঃসম্পর্ক বিষয়টি অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ।

ঘ. সেমিনারে শিক্ষার্থীরা মানব ভূগোলের গুরুত্ব অনুধাবন করল।
মানব ভূগোলের জ্ঞান মানুষকে তার পরিবেশ ও মানুষের সাথে পরিবেশের মিথস্ক্রিয়া সম্বন্ধে সঠিক ধারণা দেয়। অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে মানুষকে সচেতন করে তোলে। পৃথিবীর কৃষিকাজ, সম্পদের বন্টন, পরিমাণ, উৎপাদন, বাণিজ্য পরিবেশের নিয়ন্ত্রণেই সংরক্ষণ হয়ে থাকে। এছাড়াও শিল্প, শিল্পায়ন, শিল্পকারখানা, ব্যবসাবাণিজ্য, চাষাবাদ প্রভৃতি কাজকর্ম কোথায় কোন পরিবেশে লাভজনকভাবে গড়ে তোলা যায়, তার জন্য আঞ্চলিক সুযোগ-সুবিধা কেমন, সে ব্যাপারে মানব ভূগোল ধারণা দেয়। পরিবেশের সাথে মানুষের সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিবহন ও যাতায়াত ব্যবস্থা, জনবসতি, হাট-বাজার, নগর, নগরায়ন, জনসংখ্যার জনমিতিক উপাদান, বৈশিষ্ট্য, বণ্টন, অভিগমন, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ইত্যাদি সার্বিক ক্ষেত্রে মানব ভূগোলের গুরুত্ব অপরিসীম।
সেমিনারে বক্তারা পরিবেশ ও মানুষের কর্মকান্ডের কথাও তুলে ধরেন। অর্থাৎ সেমিনারের বিষয়বস্তু ও আলোচনা মানব ভূগোলকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। এ আলোচনা উপরে বর্ণিত বিষয়বস্তুকেই সমর্থন করে।
আর তাই সেমিনারের আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীরা মানব ভূগোলের গুরুত্ব অনুধাবন করল।

৬. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য করো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

ক. বাংলাদেশের সাথে ভারতের সীমারেখার দৈর্ঘ্য কত?
খ. বাংলাদেশকে নদীমাতৃক দেশ বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. মানচিত্রে 'A' চিহ্নিত দেশটির ভৌগোলিক সীমারেখা ও অবস্থান ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মানচিত্রে 'B' চিহ্নিত দেশটির প্রশাসনিক অঞ্চলের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের সাথে ভারতের সীমারেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩,৭১৫ কি.মি.।

খ. সুজলা, সুফলা, শস্য শ্যামলা আমাদের দেশ বাংলাদেশ, এদেশের বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে নদী এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। এদেশে অসংখ্য নদী জালের মতো ছড়িয়ে আছে। অধিক সংখ্যক নদী থাকার কারণে বাংলাদেশকে নদীমাতৃক দেশ বলা হয়।

গ. মানচিত্রে 'A' চিহ্নিত দেশটি হলো যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ও সর্ববৃহৎ অংশ উত্তরে কানাডার সীমানা হতে দক্ষিণে মেক্সিকো এবং পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরের তীর হতে পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরের তীর পর্যন্ত বিস্তৃত। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ অংশটি ২৫° উত্তর হতে ৪৫° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত। আবার আলাস্কার অংশটি বেরিং সাগর (৮৭.৫° পশ্চিম দ্রাঘিমা) হতে ১৪০° পশ্চিম দ্রাঘিমা পর্যন্ত এবং ৭৮° উত্তর অক্ষাংশ হতে ৬২° দক্ষিণঅক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত। অন্যদিকে হাওয়াই পূর্ব-পশ্চিমে ১৫০° পশ্চিম দ্রাঘিমা এবং উত্তর-দক্ষিণে ১৯° হতে ২৫° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত। দেশটির মোট আয়তন ৯৩ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার।

ঘ. মানচিত্রে B চিহ্নিত দেশটির নাম বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের প্রশাসনিক অঞ্চলের গুরুত্ব অপরিসীম। আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশ ছোট হলেও প্রাকৃতিক সম্পদ ও আবহাওয়াগত কারণে এখানে প্রচুর সম্ভাবনা বিদ্যমান। স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে আলাদা ভূখন্ড লাভ করার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামো ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে ৮টি প্রশাসনিক বিভাগ আছে। যথা- ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট। এ ৮টি বিভাগে ৬৪টি জেলা রয়েছে। ঢাকা বিভাগে ১৩টি, ময়মনসিংহে ৪টি, চট্টগ্রামে ১১টি, খুলনায় ১০টি, রাজশাহীতে ৮টি, রংপুরে ৮টি, বরিশালে ৬টি এবং সিলেটে ৪টি জেলা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের ৪৯০ টি উপজেলা বা থানা, ৪,৪৮৪টি ইউনিয়ন পরিষদ এবং মোট ৮৭,৩৯১টি গ্রাম রয়েছে। বর্তমানে ৬৪টি জেলা নিয়ে মোট ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনবিশিষ্ট বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছে। প্রশাসনিক অঞ্চলভেদে জীবন ও জীবিকা ভিন্ন হওয়ায় পেশার ধরন ভিন্নতর হয়েছে। বিচিত্র ও বহুমুখী অর্থনৈতিক কর্মকান্ড অলগুলোর গুরুত্ব বাড়িয়েছে। আবার সামাজিক কর্মকান্ডের সুযোগ, আইন ও বিচারিক সেবাও প্রশাসনিক অঞ্চলে বিন্যস্ত করা হয়েছে। জনগণ এ কারণে সরাসরি রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণ করতে পারছে।
সুতরাং বলা যায় যে, মানচিত্রে 'B' চিহ্নিত দেশটির প্রশাসনিক অঞ্চলের গুরুত্ব অপরিসীম।

HSC ভূগোল ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ১ pdf download

৭. ‘ক’ কলেজের আশপাশে এক সময় কিছুই ছিল না। বিগত ১০ বছরের মধ্যে আশপাশে অনেক আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এতে করে কলেজের একাডেমিক পরিবেশ প্রায়ই বিঘ্নিত হয়, যা সকলকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
ক. মানব ভূগোল বলতে কী বোঝ?
খ. মানব ভূগোলের ধারণা ব্যাখ্যা কর।
গ.উদ্দীপকের বর্ণনা মানব ভূগোলের বিষয়বস্তুর সাথে কীরূপে সম্পর্কিত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে মানব ভূগোলের সব শাখা নির্দেশ করে না মতামত দাও।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের কর্মকান্ড ও গুণাবলির সাথে ভৌগোলিক পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্কের প্রকৃতি ও বিন্যাস নিয়ে যে শাস্ত্র আলোচনা করে তাকে মানব ভূগোল বলে।

খ. মানব ভূগোলের ধারণা ব্যাখ্যা করতে ভূগোলবিদগণ দেখিয়েছেন মানুষের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক দুটি পরস্পরবিরোধী মতবাদের ওপর নির্ভরশীল। যথা- ১. নিমিত্তবাদ ২. সম্ভাবনাবাদ।
নিমিত্তবাদ পরিস্থিতি সম্পর্কীয় মতবাদ, যেখানে প্রকৃতি নির্ধারণ করে মানুষ প্রকৃতির কোন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাবে। আর সম্ভবনাবাদ সেই পরিস্থিতি সম্পর্কীয় মতবাদ, যেখানে মানুষ নির্ধারণ করে প্রকৃতির কোন সম্ভাবনাকে সে কাজে লাগাবে।

গ. উদ্দীপকের বর্ণনা মানব ভূগোলের বিষয়বস্তুর সাথে সম্পর্কিত।
কেননা মানব ভূগোলের বিষয়বস্তু হলো মানুষ, পরিবেশ এবং সংস্কৃতি ও সভ্যতা; যা উদ্দীপকের বর্ণনায় তুলে ধরা হয়েছে।
মানব ভূগোলে মানুষ হলো প্রধান ভৌগোলিক নিয়ামক। মানুষ তার প্রয়োজনে স্থানভেদে বিভিন্ন ধরনের কর্মকান্ড পরিচালনা করে জীবনযাত্রা নির্বাহ করে। তাই মানব ভূগোলের অন্যতম আলোচনার বিষয়বস্তু হলো মানুষ।
পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জীবনযাপনের মধ্যে যে পার্থক্য লক্ষ করা যায়, তা প্রধানত নির্ভর করে পরিবেশের পার্থক্যের ওপর। মানুষ সুষ্ঠুভাবে জীবনধারণের জন্য তার চারপাশের উপযোগী প্রাকৃতিক, সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে কাজে লাগায়। যা মানব ভূগোলের অন্যতম বিষয়বস্তু।

ঘ. মানব ভূগোল বলতে সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ভূগোলের পারস্পরিক সম্পর্ককে বোঝায়। পরিবেশের প্রভাব মূলত মানুষের সংস্কৃতি দ্বারা নির্দেশিত হয়। মানুষ তার সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশকে বিশ্লেষণ করে, নিজ প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করে। ফলে সভ্যতার বিকাশ লাভ হয়। সুতরাং বলা যায়, মানব ভূগোলের বিষয়বস্তু উদ্দীপকের বর্ণনায় সাবলীলভাবে ফুটে উঠেছে।
মানব ভূগোলে যেসব শাখা আলোচনা করা হয় তার মধ্যে। রয়েছে- সাংস্কৃতিক ভূগোল, জনসংখ্যা ভূগোল, বসতি ভূগোল, রাজনৈতিক ভূগোল, অর্থনৈতিক ভূগোল, ঐতিহাসিক ভূগোল, আঞ্চলিক ভূগোল, সামাজিক ভূগোল, নগর ভূগোল, পরিবহন ভূগোল, চিকিৎসা ভূগোল, প্রশাসনিক ভূগোল ইত্যাদি।
মানব ভূগোলের এসব শাখাগুলোর মধ্যে উদ্দীপকে যে শাখাগুলো নির্দেশ করে তা হলো সাংস্কৃতিক ভূগোল, বসতি ভূগোল, অর্থনৈাতক ভূগোল, নগর ভূগোল, সামাজিক ভূগোল এবং উদ্দীপকে কলেজের আশেপাশে যে পরিবর্তন হয়েছে তাতে মানব ভূগোলের পাংকু ভূগোল, বসতি ভূগোল, অর্থনৈতিক ভূগোল, সামাজিক ভূগোলই কেবল আলোচনা করা হয়।
মানব ভূগোলের অন্যান্য শাখা নিয়ে এখানে আলোচনা করা হয়নি। অর্থাৎ আলোচ্য অংশে জনসংখ্যা ভূগোল, রাজনৈতিক ভূগোল, ঐতিহাসিক ভূগোল, আঞ্চলিক ভূগোল, পরিবহন ভূগোল, চিকিৎসা ভূগোল, প্রশাসনিক ভূগোল ও জেন্ডার ভূগোলের মতো আরও অনেক শাখা নিয়ে আলোচনা করা হয়নি।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের বর্ণনা মানব ভূগোলের কয়েকটি শাখাকে নির্দেশ করে, সব শাখাকে নির্দেশ করে না।

৮. বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে বাংলাদেশ এশিয়ার কয়েকটি বন্ধু প্রতীম দেশের সাথে বাণিজ্য সম্পর্কে আলোচনা করে আসছে।
ক. মানব ভূগোল কাকে বলে?
খ. মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ বলতে কী বুঝ?
গ. উদ্দীপকে আলোচিত দেশটির পশ্চিমে প্রতিবেশী রাষ্ট্রটির একটি ভৌগোলিক পরিচিতি প্রদান কর।
ঘ. উদ্দীপকে আলোচিত দেশটির প্রশাসনিক বিভাগ প্রদর্শনসহ দেশটির প্রশাসনিক অঞ্চলের বিবরণ দাও।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষ ও তার পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো নিয়ে যে শাস্ত্রে আলোচনা করা হয়, তা হলো মানব ভূগোল।

খ. মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বলতে পণ্যসামগ্রী ও সেবাকার্যের উৎপাদন, বিনিময় এবং ব্যবহারের সাথে সম্পর্কযুক্ত যেকোনো কাজকেই বোঝায়।
অর্থনৈতিক কার্যাবলিকে প্রথম পর্যায়, দ্বিতীয় পর্যায় ও তৃতীয় পর্যায় - এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড আসে সরাসরি প্রাকৃতিকভাবে। এরপর এই কর্মকান্ডকে ভিত্তি করে তথা ব্যবহার করে অন্যান্য কর্মকান্ড পরিচালিত হয়।

গ. উদ্দীপকে আলোচিত দেশটির নাম বাংলাদেশ। এর পশ্চিমে ভারত অবস্থিত। নিচে ভারতের ভৌগোলিক পরিচিতি প্রদান করা হলো:
দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ হলো ভারত। এটি একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এ দেশ ৮°৪' উত্তর অক্ষরেখা থেকে ৩৭°৬' উত্তর অক্ষরেখা পর্যন্ত এবং ৬৮.০°৭' পূর্ব দ্রাঘিমারেখা থেকে ৯৭°২৫' পূর্ব দ্রাঘিমারেখার মধ্যে অবস্থিত। এর পশ্চিমে আরব সাগর, উত্তর-পশ্চিম কোনায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর, উত্তর-পূর্ব ভাগে নেপাল ও ভুটান রাষ্ট্র অবস্থিত। ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে বাংলাদেশ অবস্থিত।

ঘ. উদ্দীপকে আলোচিত দেশটির নাম বাংলাদেশ। নিচে এর প্রশাসনিক অঞ্চলের বিবরণ মানচিত্রের মাধ্যমে প্রদর্শিত হলো-
বাংলাদেশে বর্তমানে ৮টি প্রশাসনিক বিভাগ আছে। যথা- ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ। এ ৮টি বিভাগে ৬৪টি জেলা/অঞ্চল রয়েছে। ঢাকা বিভাগে ১৩টি, চট্টগ্রামে ১১টি, খুলনাতে ১০টি, রাজশাহীতে ৮টি, বরিশালে ৬টি, সিলেটে ৪টি, রংপুর বিভাগে ৮টি এবং ময়মনসিংহে ৪টি জেলা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে ৪৯২টি উপজেলা ৬২৪টি থানা, ৪,৫৩৬টি ইউনিয়ন পরিষদ, মোট গ্রাম ৮৭,১৯১টি, সিটি কর্পোরেশন ১১টি, পৌরসভা ৩২৮টি।

৯. ‘ক’ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ। সুজলা সুফলা এ দেশ দীর্ঘ ৯ মাস পাক সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বর্তমানে এদেশ বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন ঘটিয়ে বিশ্বের দরবারে যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছে। এদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ জনগণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সাথে জড়িত। জনবহুল এদেশের প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১০১৫ জন লোকের বাস।
ক. সম্ভবনাবাদ কী
খ. সম্পদ ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটির একটি মানচিত্র অঙ্কন করে বিভাগসমূহ চিহ্নিত কর।
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটির ভৌগোলিক অবস্থান বিশ্লেষণ কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রকৃতি কর্তৃক বিভিন্ন সম্ভাবনা উপস্থাপন এবং মানুষ কর্তৃক কোনো সম্ভাবনা মনোনয়ন করাকে সম্ভবনাবাদ বলে।

খ. যা কিছু নির্দিষ্ট প্রযুক্তি, অর্থনীতি এবং সামাজিক অবস্থায় ব্যবহার করা যায় তাকেই সম্পদ বলে। সম্পদ মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
সম্পদ ব্যবস্থাপনা হলো সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতের লক্ষ্যে কর্ম পরিকল্পনা। অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ সসীম, তাই সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার সম্ভব। তাই বলা যায় সম্পদের সঠিক, সুন্দর ও মিতব্যয়ী ব্যবহারের মাধ্যমে সর্বোত্তম। ব্যবহারের প্রক্রিয়াই হলো সম্পদ ব্যবস্থাপনা।

গ. উদ্দীপকের ইঙ্গিতকৃত ‘ক’ দেশটি হলো বাংলাদেশ। সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের বাংলাদেশে রয়েছে ৮টি প্রশাসনিক বিভাগ। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, রংপুর এবং ময়মনসিংহ। নিচে একটি মানচিত্র অঙ্কন করে বাংলাদেশের। ৮টি বিভাগ প্রদর্শিত হলো-

ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটি হলো বাংলাদেশ। ভাটি অঞ্চলের এ দেশ ৮টি বিভাগ ও ৬৪টি জেলা নিয়ে গঠিত। নিচে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান বিশ্লেষণ করা হলো-
এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণাংশে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান। এ দেশ ২০°৩৪' উত্তর অক্ষরেখা থেকে ২৬°৩৮' উত্তর অক্ষরেখার মধ্যে এবং ৮৮°০১' পূর্ব দ্রাঘিমারেখা থেকে ৯২°৪১' পূর্ব দ্রাঘিমারেখার মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশের মাঝামাঝি স্থান দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশের আঞ্চলিক সমুদ্রসীমা (Territorial Water) প্রায় ২২ কিলোমিটার (১২ নটিকেল মাইল) এবং দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল (Economic Zone) সমুদ্রের সীমারেখা থেকে গভীর সমুদ্রের প্রায় ৩২২ কিলোমিটার (২০০ নটিকেল মাইল) পর্যন্ত বিস্তৃত।

১০. বাংলাদেশের একজন শিক্ষার্থী সার্ক শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশে ভ্রমণের সুযোগ পায়। সে দেশটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশ এবং দেশটির আকৃতি কিছুটা ত্রিভুজাকৃতির উপদ্বীপ।
ক. পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম ও সপ্তম মহাদেশ কোনটি?
খ. মানব ভূগোল বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিক্ষার্থীরা সার্ক শিক্ষা সফরে যে দেশে গেল সেই দেশটির ভৌগোলিক অবস্থান ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিক্ষার্থীদের নিজ দেশের জলবায়ু বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম ও সপ্তম মহাদেশ হলো ওশেনিয়া মহাদেশ।

খ. মানব ভূগোল হলো মানুষ ও স্থান সম্পর্কিত জ্ঞান।
মানুষের কর্মকান্ড ও গুণাবলির সাথে ভৌগোলিক পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্কের প্রকৃতি ও বিন্যাস নিয়ে যে শাস্ত্র আলোচনা করে তাকে মানব ভূগোল বলে।

গ. উদ্দীপকের শিক্ষার্থীরা সার্ক শিক্ষা সফরে ভারতে গিয়েছিল। ভারত ৮°৪' উত্তর থেকে ৩৭°৬' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৬৮°৭' পূর্ব ৭ থেকে ৯৭°২৫' পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত।
দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ ভারত। মোট ২৯টি প্রদেশের সমন্বয়ে এটি গঠিত। দেশটির মোট আয়তন প্রায় ৩২,৮৭,২৬৩ বর্গ কি.মি.। ভারতের উত্তরে হিমালয় পর্বত, চীন, নেপাল ও ভুটান; পূর্বে বাংলাদেশ, মায়ানমার ও বঙ্গোপসাগর; দক্ষিণে ভারত মহাসাগর ও শ্রীলঙ্কা এবং পশ্চিমে পাকিস্তান ও আরব সাগর।

ঘ. শিক্ষার্থীদের নিজ দেশ অর্থাৎ বাংলাদেশের জলবায়ু মৌসুমি জলবায়ু।
মৌসুমি জলবায়ু একটি বৈচিত্র্যময় অনিয়মিত ও অনিশ্চিত বৃষ্টিপাতের জলবায়ু। শীত ও গ্রীষ্ম ঋতুতে স্থলভাগ ও জলভাগের ওপরে বায়ুর উষ্ণতা ও চাপের পার্থক্য থেকে মূলত এ জলবায়ুর উৎপত্তি।
গ্রীষ্মকালে সমুদ্র ভাগ হতে আর্দ্র মৌসুমি বায়ু এবং শীতকালে স্থলভাগ হতে শুষ্ক মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়। ফলে মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলে সাধারণত শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় না এবং অধিক শুস্ক থাকে। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এখানে বায়ুপ্রবাহের গতি ও দিকের পরিবর্তন হয়।
সুতরাং বাংলাদেশের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যগত দিক হচ্ছে শুষ্ক ও আরামদায়ক শীতকাল, উষ্ণ গ্রীষ্মকাল এবং উষ্ণ ও আর্দ্র বর্ষাকাল। মূলত এটি মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের ফল। অতএব, উপরিউক্ত আলোচনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post