এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 1st Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 1st Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 1st paper Srijonshil Proshno Uttor.
উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
প্রথম পত্র
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৯
HSC Geography
1st Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download
১. নিচের চিত্রটি দেখ এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক. দূষণ কী?
খ. কার্বন চক্র ব্যাখ্যা কর।
গ. ‘খ’ অঞ্চলে বিশেষ ধরনের বনভূমি সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘ক’ ও ‘খ’ অঞ্চলের বনভূমির উদ্ভিজ্জের বৈসাদৃশ্য বিশ্লেষণ কর।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাস্তুতন্ত্রের এক বা একাধিক উপাদানের কোনো ধরনের নেতিবাচক পরিবর্তনকে দূষণ বলে।
খ. প্রকৃতির কার্বন যে প্রক্রিয়ায় CO₂, গ্যাসরূপে পরিবেশ থেকে জীবদেহে এবং জীবদেহ থেকে পরিবেশে আবর্তিত হয়ে প্রকৃতিতে কার্বনের সমতা বজায় রাখে তাই কার্বনচক্র। যেমন- উদ্ভিজ্জাত পদার্থ (কাঠ, কয়লা, পেট্রোল ইত্যাদি) দহন ক্রিয়ায় কার্বন যৌগ ভেসে CO₂, গ্যাস নির্গত হয়ে বায়ুমন্ডলে মিশে যায়।
C6H12O6 + 6O₂, + C6H2O6CO₂+ 12H2O, শক্তি।
গ. ‘খ’ অঞ্চলে বিশেষ ধরনের যে বনভূমি সৃষ্টি হয়েছে, তা হলো সুন্দরবন বা স্রোতজ বনভূমি।
সুন্দরবন সৃষ্টির প্রধান কারণ লবণাক্ততা। বালি ও কাদার বিভিন্ন স্তরে গঠিত নদী বাহিত উর্বর পলল মৃত্তিকা, সমুদ্রের জোয়ার ভাটা ও লোনাপানি, পরিমিত উত্তাপ, প্রচুর বৃষ্টিপাত, বিরল জনবসতি প্রভৃতির প্রভাবে এ বনভূমি গড়ে উঠেছে। সুন্দরবনের উত্তরাংশ মৃদু লবণাক্ত অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এবং এই অল মিঠাপানি ও লবণাক্ত পানির মিলিত স্থান পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রতিবছর নদীবাহিত পলি এসে জমা হয় বলে এখানে লবণাক্ততা কম। এ এলাকার প্রধান উদ্ভিদ সুন্দরী।
সমুদ্র তীর ও নদীর মোহনা নিয়ে মধ্যম লবণাক্ত অঞ্চল গঠিত। এখানকার পানির লবণাক্ততা পরিমিত তবে বর্ষাকালে লবণাক্ততা কিছুটা কমে যায়। এ এলাকার প্রধান উদ্ভিদ সুন্দরী ও গেওয়া।
সুন্দরবনের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা নিয়ে অধিক লবণাক্ত অঞ্চল গঠিত। সারাবছর চরম লবণাক্ত অবস্থা বিরাজমান থাকায় এটি অন্য দুটি অঞলের ন্যায় উদ্ভিদ সমৃদ্ধ নয়। এ এলাকায় যেসব উদ্ভিদ জন্মায় তাদের মধ্যে গেওয়া, বাইন, গরান ইত্যাদি অন্যতম। এভাবে লবণাক্ততার তারতম্যের কারণে সুন্দরবনের বনভূমি সৃষ্টি হয়েছে।
ঘ. ‘উদ্দীপকে ‘ক’ ও ‘খ’ চিহ্নিত অঞ্চলের বনভূমিদ্বয় হলো যথাক্রমে কান্তীয় চিরহরিৎ ও পতনশীল পত্রমুক্ত বৃক্ষের বনভূমি এবং স্রোতজ বনভূমি। নিচে এ দুই ধরনের বনভূমিতে উদ্ভিদের বৈসাদৃশ্য তুলে ধরা হলো।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিকের পাহাড়িয়া এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলব্যাপী ক্রান্তীয় চিরহরিৎ ও পতনশীল পত্রযুক্ত বৃক্ষের বনভূমি অবস্থিত। চিরহরিৎ বৃক্ষের মধ্যে চাপালিশ, তেলসুর, ময়না প্রভৃতি প্রধান। পতনশীল পত্রযুক্ত (বা পর্ণমোচী) বৃক্ষের মধ্যে গর্জন, জারুল, শিমুল, গামার, কড়ই, সেগুন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এ বনভূমির বৃক্ষসমূহ অর্থনৈতিকভাবেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কাগজ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল এ বন থেকে পাওয়া যায়, গর্জন ও জারুল রেলওয়ের স্লিপার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া এ বন থেকে সংগ্রহীত বেত দিয়ে চেয়ার টেবিল, শীতল পাটি, চাটাই মাদুর প্রর্ভতি তৈরি হয়।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে সমুদ্র উপকূলের লবণাক্ত ও জোয়ার ভাটাপূর্ণ জৈবনিকভাবে শুষ্ক নিবাসের উদ্ভিজ্জকে গরান বা স্রোতজ বনভূমি বলা হয়। এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং বিশ্বের অন্যতম প্রধান স্রোতজ বৃক্ষের বনভূমি। এ অঞ্চল উদ্ভিদকুলে সমৃদ্ধ এবং সুন্দরি, গরান ও ভেন্না প্রধান বৃক্ষ। তাছাড়া গেওয়া, ধুন্দল, পসুর, কেওড়া, ওড়া, আমুর ও গোলপাতা প্রভৃতি বৃক্ষও প্রচুর জন্মে। সমুদ্র তীরের অতি নিকটে এ বনে গেওয়া, সুন্দরি এবং গরান বৃক্ষসহ বিভিন্ন গাছ জন্মে। পেন্সিল তৈরিতে ধুন্দন ব্যবহূত হয়। গোলপাতা ঘরের চালের ছাউনির কাজে ব্যবহৃত হয়, সুন্দরী বৃক্ষ বৈদ্যুতিক খুটি গৃহ নির্মাণ, নৌকা নির্মাণ প্রভৃতি কাজে ব্যবহৃত হয়। গেওয়া কাঠ নিউজপিন্ট কাগজ ও দিয়াশলাই তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের ‘ক’ ও ‘খ’ চিহ্নিত বনভূমির মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য রয়েছে।
২. পরিবেশ নানাধরনের সজীব ও অজীব উপাদানের দ্বারা গঠিত। উদ্ভিদ পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ সজীব উপাদান। যা বায়ুমন্ডল হতে সরাসরি এক ধরনের গ্যাস গ্রহণের মাধ্যমে খাদ্য তৈরি করে।
ক. নিয়ত বায়ুপ্রবাহ কী?
খ. স্রোতজ বনভূমি গড়ে ওঠার কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত গ্যাসটি দ্বারা সৃষ্ট চক্র ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় বাক্যের তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উচ্চচাপ বলয় থেকে নিম্নচাপ বলয়লে যে বায়ু নিয়মিতভাবে সারা বছর প্রবাহিত হয় তাকে নিয়ত বায়ুপ্রবাহ বলে।
খ. বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য বনভূমি হলো স্রোতজ বনভূমি বা সুন্দরবন।
নদীবাহিত উর্বর পলল মৃত্তিকা, সমুদ্রের জোয়ারভাটা ও লোনা পানি এ এলাকার বৃক্ষের উপযোগী। পরিমিত তাপমাত্রা, প্রচুর বৃষ্টিপাত, বিরল জনবসতি প্রভৃতির প্রভাবে স্রোতজ বনভূমি গড়ে উঠেছে।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত গ্যাসটি হলো কার্বন-ডাইঅক্সাইড গ্যাস (CO২) যা দ্বারা সৃষ্ট চক্রই হলো কার্বন চক্র।
যে প্রক্রিয়ায় প্রাকৃতিক কার্বন গ্যাসরূপে পরিবেশ থেকে জীবদেহে এবং জীবদেহ থেকে পরিবেশে আবর্তিত হয় তাকে কার্বনচক্র বলে। নিচে কার্বনচক্রের প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করা হলো
ভৌত পরিবেশের কার্বন-ডাইঅক্সাইড উদ্ভিদ এবং শৈবাল কর্তৃক গৃহীত হয় এবং সৌরশক্তির মাধ্যমে জৈব খাদ্য অণুতে রূপান্তরিত হয়। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কার্বন জীব পরিবেশ থেকে ভৌত পরিবেশে এ ফিরে আসে। প্রধান পদ্ধতি হলো উদ্ভিদ এবং প্রাণীর কোষীয় শ্বসন। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কার্বনসমৃদ্ধ জৈব অণু অক্সিজেন দ্বারা জারিত হয় এবং শক্তি, তাপ ও কার্বন-ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হয়। কোষীয় শ্বসনে উৎপন্ন কার্বন-ডাইঅক্সাইড ভৌত পরিবেশে তথা বায়ুমন্ডলে ফিরে যায এবং পুনরায় উদ্ভিদ কর্তৃক গৃহীত হয়। প্রাকৃতিক পদ্ধতি ছাড়াও মানুষের ক্রিয়াকলাপ যেমনত কাঠ কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং পেট্রোলিয়াম দহনের ফলে কার্বন-ডাইঅক্সাইড বায়ুমন্ডলে জমা হয়। এভাবেই প্রকৃতিতে কার্বনচক্র চলমান রয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় বাক্যটি হলো উদ্ভিদ পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ সজীব উপাদান। ইকোসিস্টেমের দুই উপাদানের মধ্যে উদ্ভিদ সজীব উপাদানের অন্তর্ভুক্ত।
পরিবেশের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো উদ্ভিদ। উদ্ভিদ সূর্যালোকের সাহায্যে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদনের ভূমিকা পালন করে। সবুজ উদ্ভিদ পরিবেশ থেকে পানি, কার্বন-ডাইঅক্সাইড, খনিজ লবণ প্রভৃতি অজীব উপাদান গ্রহণ করে সৌরশক্তির মাধ্যমে নিজেদের প্রয়োজনে শকর্রা জাতীয় খাদ্য তৈরি করে উৎপাদকের ভূমিকা পালন করে। এ খাদ্য ভক্ষণ করে বিভিন্ন শ্রেণির প্রাণী তাদের জীবনধারণ করে। এছাড়া উদ্ভিদ কার্বন-ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে পৃথিবীকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে, উদ্ভিদের কারণে পৃথিবীতে কার্বনডাইঅক্সাইড ও অক্সিজেনের ভারসাম্য বজায় থাকে। তাই বলা যায়, সবুজ উদ্ভিদ পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ সজীব উপাদান।
৩. রহিম জলপথে ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জ যাওয়ার পথে দেখতে পেল, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন কারখানা থেকে বিভিন্ন তরল বর্জ্য তার যাত্রাপথে মিশছে। সে সেখানকার স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলে জানতে পারল, উক্ত জলধারায় তেমন কোনো মাছ পাওয়া যায় না।
ক. বাংলাদেশের বৃহত্তম স্রোতজ বনভূমির নাম লেখ।
খ. নাইট্রোজেন চক্রের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দূষণের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ইঙ্গিতকৃত দূষণ প্রতিরোধে তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের স্রোতজ বনভূমির নাম সুন্দরবন।
খ. যে চক্রাকার পথে বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন জীবদেহে এবং সেখান থেকে পুনরায় বায়ুমন্ডলে আবর্তিত হয় এবং পরিবেশে নাইট্রোজেনের সমতা বজায় থাকে তাকে নাইট্রোজেন চক্র বলে।
সবুজ উদ্ভিদ মাটি থেকে নাইট্রাইট, নাইট্রেট এবং কোনো ক্ষেত্রে অ্যামোনিয়াম আকারে অজৈব নাইট্রোজেন গ্রহণ করে। এ নাইট্রোজেন পরবর্তীতে নাইট্রোজেন জাতীয় জৈব যৌগে রূপান্তরিত হয়। উদ্ভিদ থেকে এ নাইট্রোজেন গৃহীত খাদ্যের মাধ্যমে প্রাণিদেহে প্রবেশ করে। আর কৃষিকাজে প্রাকৃতিক নাইট্রোজেন ভীষণভাবে প্রভাব ফেলে। এভাবে নাইট্রোজেন চক্র জীবকূলের অস্তিত্ব রক্ষায় ভূমিকা পালন করে।
গ. উদ্দীপকে পানিদূষণের কথা বলা হয়েছে। পানি নানাভাবে দূষিত হতে পারে। নিচে পানিদূষণের কিছু কারণ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো-
শিল্পের বিভিন্ন বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থ নদীতে ফেলার ফলে পানি দুষিত হয়। গৃহস্থলির বিভিন্ন বর্জ্য পদার্থ অসচেতনতার দরুন বশে পুকুর বা নদীতে ফেলে দেওয়া হয় এবং এতে পানি দূষিত হয়। কৃষিক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করা হয়। বৃষ্টির পানিতে এগুলো ধুয়ে নদীতে এসে পড়ে। ফলে পানি দূষিত হয়। সমুদ্রে তেলবহনকারী ট্যাংকার থেকে অপরিশোধিত তেল দুর্ঘটনার ফলে পানিতে মিশে যায় এবং পানি দূষিত হয়। ভূমিক্ষয় ও পাহাড় ধসের ফলে পানিবাহিত মাটি, বালুকণা ইত্যাদি পানিকে দূষিত করে। বিভিন্ন প্রকার অণুজীব যেমন- ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া দ্বারা পানি দূষিত হয়। খনিসমূহ হতে নির্গত এসিডসমূহ পানিতে এসিডের হার বৃদ্ধি করে থাকে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে পানিতে অক্সিজেনের ভাগ কমে যায়। এভাবেই প্রতিনিয়ত নানা প্রকৃয়ায় পানি দূষিত হয়।
ঘ. পানিদূষণ মূলত মানবীয় কর্মকান্ডেরই বহিঃপ্রকাশ। তাই মানুষই পারে এসব দূষণ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। নিচে পানিদূষণ প্রতিরোধে যে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে তা উল্লেখ করা হলো-
শিল্প ও পৌর এলাকায় বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা করা। বিশুদ্ধ পানি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পানিতে জৈব বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে। বিশুদ্ধ পানীয় সরবরাহে আইন করা। গ্রামে নলকূপের পানি পরীক্ষা করা। কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পরিষ্কারক দ্রব্য পুকুর ও নদীতে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পানি বিষুদ্ধ রাখা। কলকারখানাগুলোর বর্জ্য নদীতে ফেলা নিয়ন্ত্রণ করা। যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগের অভ্যাস পরিহার করতে হবে। নদী তীরবর্তী এলাকায় কারখানা স্থাপন বন্ধ করতে হবে।
নদীতে গোসল করা ও কাপড় ধোয়া বন্ধ করতে হবে। জলাশয়, খাল বিল যাতে কচুরিপানা ও ভাসমান শৈবালে ভরে না যায় তার দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
উপরিউক্ত ব্যবস্থাগুলো অবলম্বন করে সম্পূর্ণভাবে না হলেও মোটামুটিভাবে পরিবেশ দূষণ রোধ করা যায়।
৪. তিহামের বাড়ি প্লাইস্টোসিনকালের সোপান এর অন্তর্গত। তার এলাকায় গড়ে ওঠা বনভূমির মৃত্তিকার রং লালচে ও কংকরময় এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পলি দ্বারা গঠিত। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গড়ে ওঠা বনভূমির উদ্ভিদ ও প্রাণীর সাথে তিহামের এলাকার বনভূমির যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।
ক. বাস্তুসংস্থান কী?
খ. উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্থানিক ভিন্নতার ক্ষেত্রে প্রভাববিস্তারকারী কারণসমূহ ব্যাখ্যা কর।
গ. তিহামের এলাকায় গড়ে ওঠা বনালের জীববৈচিত্র্যের ব্যাখ্যা দাও।
ঘ. উদ্দীপকের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের বায়োমের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি অঞ্চলে পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে সুবিন্যস্ত সম্পর্ক বিদ্যমান থাকলে এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকলে ঐ অবস্থাকে বাস্তুসংস্থান বলে।
খ. পৃথিবীর কোনো স্থানে উদ্ভিদ ও প্রাণী খুবই সমৃদ্ধ আবার কোনো কোনো স্থানে উদ্ভিদ ও প্রাণী খুবই কম।
উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্থানিক ভিন্নতার কারণ হিসেবে সর্বপ্রথম ভৌগোলিক অবস্থান উল্লেখযোগ্য। পর্বত, উপদ্বীপ, উঁচুভূমি ইত্যাদি অবস্থানে উদ্ভিদ ও প্রাণীর ভিন্নতা দেখা যায়। এক্ষেত্রে ভৌগোলিক সীমা ও আয়তনও উক্ত স্থানের উদ্ভিদ ও প্রাণীর ভিন্নতার প্রভাবক। সর্বোপরি বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন জলবায়ুর প্রভাব উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্থানিক ভিন্নতার মূল কারণ।
গ. উদ্দীপক অনুসারে তিহামের এলাকা প্লাইস্টোসিন কালের সোপান এর অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের প্লাইস্টোসিন কালের সোপান এলাকায় ক্রান্তীয় পাতাঝরা বৃক্ষের বনভূমি গড়ে উঠেছে। ক্রান্তীয় পাতাঝরা বৃক্ষের বনভূমির জীববৈচিত্র্য বেশ সমৃদ্ধ।
বাংলাদেশে এ শ্রেণির বনভূমি ময়মনসিংহ, টাংগাইল ও গাজীপুর জেলায় এবং সামান্য কিছু উত্তরাঞ্চলের রংপুর, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলায় দেখা যায়। প্রচুর বৃষ্টিপাত, পর্যাপ্ত পরিমাণে তাপমাত্রা, লৌহজাত পদার্থ মিশ্রিত হলুদ-লাল রঙের বালি, কর্দম, আঁটসাট মৃত্তিকা ইত্যাদি কারণে জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ এ বনভূমি গড়ে ওঠে।
শীতকালে শুষ্কাবস্থা বিরাজমান থাকায় এ বনভূমির বৃক্ষাদির পাতা ঝরে যায় তাই একে ক্রান্তীয় পাতাঝরা বৃক্ষের বনভূমি বলা হয়। এখানে শাল, গজারি, কাঠাল, নিম, কড়ই, ছাতিম, কুঠি, কুম্ভী, বহেরা, হরতকী, হিজল ইত্যাদি বৃক্ষ পাওয়া যায়। তাছাড়া এখানে বিভিন্ন ধরনের প্রাণী দেখা যায়। এর মধ্যে বানর বিভিন্ন ধরনের পাখি, সাপ উল্লেখযোগ্য।
ঘ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গড়ে ওঠা স্রোতজ বনভূমি অর্থাৎ সুন্দরবন সম্পর্কে বলা হয়েছে। ভারসাম্য রক্ষায় দক্ষিণপশ্চিম অঞ্চলের বায়োম অর্থাৎ সুন্দরবন বায়োমের গুরুত্ব অত্যধিক।
বনভূমি কোনো একটি দেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতেও বনভূমি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে বিশাল এলাকা জুড়ে সমুদ্রের উপকূলীয় অঞ্চলের স্রোতজ বনভূমি বিভিনণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ (যেমন ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছস, ভূমিক্ষয়, তীরভাঙন প্রভৃতি) এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অসামান্য গুরুত্ব বহন করছে।
সমুদ্র থেকে সংঘটিত বিভিন্ন ধরনের ঘূর্ণিঝড় (যেমন- সিডর, আইলা) প্রায়ই বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যায়। আবার কখনও উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে। কিন্তু বিশাল বনভূমি থাকায় ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি হ্রাস পেয়ে কখনও দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে না। আবার কখনও প্রবেশ করলেও দুর্বল হয়ে প্রবেশ করে ফলে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি জলোচ্ছ্বাস উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে। এই স্রোতজ বনভূমি থাকায় জলোচ্ছ্বাস বাধা পেয়ে ফিরে যায়। ফলে আক্রান্ত অঞ্চল প্লাবন বা বন্যার হাত থেকে রক্ষা পায়। এছাড়াও তীরভাঙন ও ভূমিক্ষয় রোধে স্রোতজ বনভূমি সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। ফলশ্রুতিতে পরিবেশের ভারসাম্যও বজায় থাকছে।
৫.ঢাকা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের বনভূমি এলাকায় শিক্ষা সফরে গেল। সেখানে তারা যে বনভূমিটি দেখল তার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করল। যা দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের বনভূমি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
ক. জীববৈচিত্র্য (Biodiversity) শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন কে?
খ. জীববৈচিত্র্যের স্থানিক বিভিন্নতার কারণ কী ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে যে বনভূমির ইঙ্গিত করা হয়েছে তা বর্ণনা কর।
ঘ. ঢাকা কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের দেখা বনভূমি গড়ে ওঠার কারণ বিশ্লেষণ কর।
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম জীববৈচিতেত্র্য শব্দটি ব্যবহার করেন ডব্লিউ রোজেন (ড. Rasen)।
খ. জীববৈচিত্র্যের স্থানিক বিভিন্নতার কারণ হলো পরিবেশগত ও বংশগত।
পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ লক্ষ করা যায়। একই প্রজাতির উদ্ভিদ কিংবা প্রাণী ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে বসবাস করার কারণে তাদের মধ্যে নানা ধরনের বৈচিত্র্য দেখা যায়। আবার, জীনের মাধ্যমে জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যাবলি বংশানুক্রমে ধারাবাহিকভাবে স্থানান্তর হয়। জীনের গঠন এবং বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটলে একই প্রজাতির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিন্নতা লক্ষ করা যায়।
গ. উদ্দীপকে যে বনভূমির ইঙ্গিত করা হয়েছে তা হচ্ছে স্রোতজ বনভূমি বা সুন্দরবন।
বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাংশে সমুদ্র উপকূলের লবণাক্ত ও জোয়ারভাটাপূর্ণ, শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক নিবাসের উদ্ভিজ্জকে স্রোতজ বনভূমি বলে। এ বনভূমি সুন্দরবন নামেও পরিচিত।
সুন্দরবন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এ বনভূমির মোট আয়তন ৬,৭৮৬ বর্গ কি.মি.। উত্তরে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট জেলা; দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর; পূর্বে হরিণঘাটা নদী, পিরোজপুর ও বরিশাল জেলা এবং পশ্চিমে রাইমঙ্গল, হাড়িয়াভাঙ্গা নদী ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আংশিক প্রান্তসীমা পর্যন্ত এ বনভূমি বিস্তৃত। এটি খুলনা বিভাগের ৬০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। সমদের জোয়ার-ভাটা ও লোনা পানি এবং প্রচুর বৃষ্টিপাতের জন্য এ অঞ্চল বক্ষ সমৃদ্ধ। এ বনে সুন্দরী, গেওয়া, ধুন্দল, পশুর, কেওড়া, গোলপাতা, গড়ান প্রভৃতি বৃক্ষের সমারোহ দেখা যায়।
ঘ. উদ্দীপকের ঢাকা কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের দেখা বনভূমি হচ্ছে স্রোতজ বনভূমি বা সুন্দরবন। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাংশে সমুদ্র উপকূলের লবণাক্ত ও জোয়ারভাটাপূর্ণ, শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক নিবাসের উদ্ভিজ্জকে স্রোতজ বনভূমি বলে। এ বনভূমি সুনদরবন নামেও পরিচিত। নদীবাহিত উর্বর পলল মৃত্তিকা, সমুদ্রের জোয়ার-ভাটা ও লোনা পানি, এ এলাকায় বৃক্ষের উপযোগী পরিমিত তাপমাত্রা, প্রচুর বৃষ্টিপাত, বিরল জনবসতি, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রভৃতির প্রভাবে এ বনভূমি গড়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সমুদ্রের নিকটবর্তী যেসব জেলাগুলো রয়েছে উক্ত অঞ্চলের মৃত্তিকাগুলো হলো নদীবাহিত উর্বর পলল মৃত্তিকা যা উদ্ভিদ জন্মাতে সক্ষম। আবার সুমদ্রের পানি থেকে জোয়ার-ভাটা হওয়ার কারণে জোয়ারের লবণাক্ত পানি সহিষ্ণু বৃক্ষ এ অঞ্চলে জন্মে থাকে। তাছাড়া এ অঞ্চলের তাপমাত্রা অনুযায়ী যেসব বৃক্ষ রয়েছে সেগুলো জন্মে থাকে। এছাড়া এ অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে বেশি পরিমাণে বৃক্ষ জন্মায় এবং জনবিরল হওয়ার কারণে উক্ত বৃক্ষগুলো কেটে না ফেলার দরুন উক্ত অঞ্চলে বনভূমি গড়ে উঠেছে।
সুতরাং বলা যায় যে, প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত, পরিমিত তাপমাত্রা, সমুদ্রের জোয়ার-ভাটা ও লবণাক্ত পানির প্রভাব প্রভৃতি নিয়ামকের প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে স্রোতজ বনভূমি বা সুন্দরবন গড়ে উঠেছে।
৬. সুমন শীত মৌসুমে যশোর থেকে ঢাকা যাওয়ার সময় সাভার এলাকায় পৌছানোর পর দেখল প্রচুর ইটভাটা। তা থেকে কালো ধোয়া কুন্ডলী পাকিয়ে আকাশের দিকে যাচ্ছে। সেখানকার পরিবেশ যেন একটু অন্য রকম। অত্যন্ত গভীরভাবে উপলব্ধি করল কিছুটা এলাকায় যেন স্বাসপ্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।
ক. দূষণ কী?
খ. বায়োম বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. সুমনের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে সাভার এলাকার দূষণের কারণ তোমার নিজের যুক্তিতে বিশ্লেষণ কর।
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো কারণে পরিবেশ তার স্বাভাবিকতা হারায় বা পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের কাঙিক্ষত মাত্রা বিনষ্ট হয় এবং জীবজগতের জন্য বা অস্বস্তিকর ও অসহনীয় হয়ে ওঠে। এ অবস্থাকে দূষণ বলে।
খ. বায়োম হলো পরিবেশ প্রণালির মধ্যে বৃহত্তম একক। উদ্ভিদ, প্রাণিজগৎ, মাটি ও জলবায়ুর সাথে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে যে বাস্তুতান্ত্রিক বা ইকোসিস্টেম একক গড়ে ওঠে তাকে বায়োম বলে।
যেকোনো অঞ্চলের জলবায়ুর প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে সে অঞ্চলে বসবাসকারী জীবকুল ও উদ্ভিদকুলের প্রজাতি বিন্যাসের ধরন। একটি নির্দিষ্ট বায়োম অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত সব ধরনের জীবকুল ও উদ্ভিদকুলের অভিযোজন নির্ভর করে সে অঞ্চলের জলবায়ু বিশেষ করে বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রার ওপর।
গ. উদ্দীপকের সুমনের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল বায়ু দূষণজনিত কারণে।
উদ্দীপকে সুমন যশোর থেকে ঢাকা যাওয়ার সময় সাভার এলাকায় প্রচুর ইটভাটা দেখতে পেল এবং লক্ষ করল ঐ স্থানে তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। এটি মূলত বায়ুদূষণের কারণে হয়েছে। ইটের ভাটায় যে জ্বালানি ব্যবহার করা হয় তা থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ হয়। এগুলো অতিরিক্ত নিঃসরণের কারণে বায়ু দূষিত হয়। এ অতিরিক্ত দূষিত বায়ু গ্রহণ করার কারণে শবাস-প্রশ্বাসজনিত নানা রকম সমস্যা হয়।
বায়ুদূষণ মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ দূষণ সৃষ্টিতে CO₂, গ্যাস প্রধান দূষক হিসেবে কাজ করে।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের সুমনের বায়ু দূষণজনিত কারণে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।
ঘ. উদ্দীপকে সাভার এলাকায় যে দূষণ হয় তা মূলত বায়ুদূষণ। এটি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। নিচে এ সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো-
সাভার এলাকায় প্রচুর ইটভাটা গড়ে উঠেছে। উক্ত ইটভাটায় জালানি ও হিসেবে ব্যবহার করা হয় কয়লা। এগুলো পুড়িয়ে যে গ্যাস পাওয়া যায় তা হচ্ছে কার্বন ডাইঅক্সাইড। এ গ্যাস বায়ুর সাথে মিশে বায়ুকে দূষিত করে। এ দূষিত বায়ু শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত ঘটায়।
অন্যদিকে এ অঞ্চলে অনেক পোশাক শিল্প গড়ে উঠেছে। উক্ত শিল্প থেকে প্রচুর পরিমাণ দূষিত গ্যাস বের হয় যা বায়ুর সাথে মিশে বায়ুকে দূষিত করছে। উক্ত দূষিত বায়ু গ্রহণ করার ফলে অনেক ধরনের শাস প্রশ্বাসজনিত সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া এ অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলে। এ যানবাহন থেকে বিভিন্ন ধরনের দূষিত গ্যাস বের হচ্ছে যা বায়ুকে দূষিত করে।
সুতরাং বলা যায় যে, সাভার এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণ, ইটভাটা, অপরিকল্পিত শিল্পকারখানা গড়ে ওঠায় এ অঞ্চলের বায়ু মারাত্মকভাবে দূষিত করছে।
৭. জামিয়া কলেজের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ভূগোল বিষয়ের ছাত্রছাত্রীরা দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে শিক্ষা সফরে গেল। সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও চিরসবুজ বনভূমি দেখে তারা অভিভূত হলো। ভূগোল বিষয়ের শিক্ষক বললেন এটি বাংলাদেশের একটি বিশেষ ধরনের বনভূমি। এই বনদ্যভূমির কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আমাদের সোতজ এলাকার বনভূমি থেকে আলাদা।
ক. বায়োম কী?
খ. পরভোজী জীব বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে জামিরা কলেজের ছাত্রছাত্রীরা যে বনভূমি দেখে মুগ্ধ হলো সেটি কোন শ্রেণির বনভূমি? এ বনভূমির বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে যে বনভূমির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে তার উল্লেখযোগ্য বৃক্ষ এবং গড়ে ওঠার কারণ বিশ্লেষণ কর।
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জলবায়ু প্রভাবিত উদ্ভিদ ও প্রাণীর মহাবস্থানের ওপর ভিত্তি করে এক এক ধরনের সম্প্রদায় এক এক স্থানে গড়ে ওঠে। এ ধরনের এক একটি একককে একেকটি বায়োম বলে।
খ. যেসব জীব বেঁচে থাকার জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল তাদেরকে পরভোজী জীব বলে। সকল প্রাণী গোষ্ঠী, ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া নিজেরা নিজেদের খাদ্য তৈরি করতে পারে না। যে কারণে এ সকল জীব বেঁচে থাকার জন্য। স্বভোজী জীবের উৎপাদিত খাদ্যের মাধ্যমে আহরণ করে। কিছু পরভোজী জীব আবার পরোক্ষভাবে স্বভোজী উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল।
গ. উদ্দীপকে জামিরা কলেজের ছাত্রছাত্রীরা যে বনভূমি দেখে মুগ্ধ হলো সেটি ক্রান্তীয় চিরহরিৎ এবং পতনশীল পত্রযুক্ত বৃক্ষের বনভূমি।
এ বনভূমি অঞ্চলে গাছের পাতা বছরে অন্তত একবার ঝরে যায় কিন্তু সকল পাতা এক সঙ্গে ঝরে পড়ে না। এ জন্য এ অঞ্চলের বনভূমি চির সবুজ থাকে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিকের পাহাড়ি এলাকায় বিস্তীর্ণ অঞ্চলব্যাপী এই বনভূমি অবস্থিত। এ ঐ বনভূমির আয়তন ১৫,৩২৬ বর্গ কিলোমিটার। এ বনভূমির অধিকাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। এ দেশের উত্তরাঞ্চলে এ বনভূমির পরিমাণ খুবই কম। এ বনভূমিতে দুই ধরনের বৃক্ষ জন্মে। এদের একটি হলো চিরহরিৎ বৃক্ষ এবং অন্যটি হলো পতনশীল পত্রযুক্ত বৃক্ষ। এ বনভূমি অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এ অঞ্চলে জনবসতি কম এবং রাস্তাঘাট খুবই অনুন্নত।
ঘ. উদ্দীপকে ক্রান্তীয় চিরহরিৎ এবং পতনশীল পত্রযুক্ত বৃক্ষের বনভূমির ঈঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এ বনভূমি অঞ্চলে চিরহরিৎ বৃক্ষের মধ্যে চাপালিশ, তেলসুর, ময়না প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। পতনশীল পত্রযুক্ত বক্ষের মধ্যে গর্জন, গামারী, শিমুল, কড়ই, সেগুন ইত্যাদি বৃক্ষ দেখা যায়। এছাড়াও অন্যান্য বৃক্ষের মধ্যে জলপাই, কদম, ছাতিম, ও চম্পা, আমলকি, পিটারী ও কান প্রভৃতি। বেলে পাথর ও কর্দম শিলা হতে গঠিত বাংলাদেশের পাহাড়িয়া মৃত্তিকায় পরিমিত উত্তাপ (৩৪° সে.), অত্যধিক বৃষ্টিপাত (৩০০ সেন্টিমিটারের বেশি), স্বল্প জনবসতি, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদি বর্তমান থাকায় এ বনশ গড়ে উঠেছে। তবে পাহাড়ের অধিক বৃষ্টিযুক্ত অঞ্চলে ক্রান্তীয় চিরহরিৎ এবং কম বৃষ্টিযুক্ত পতনশীল পত্রযুক্ত বৃক্ষের বনভূমি পরিলক্ষিত হয়।
৮. আকমলের বাড়ি গাজীপুর জেলায়। সে তার বন্ধুর বাড়ি খুলনায় বেড়াতে যায়, সেখানে একটি চিরসবুজ বনভুমি তাকে মুগ্ধ করে। সমুদ্রের লোনা পানি, জোয়ার-ভাটা, শ্বাসমূল প্রভৃতি বনভূমিকে একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। অথচ তার নিজ এলাকার বনভূমি শীতকালে পত্রশূন্য হয়ে পড়ে। এখানে হিংস্র জীবজন্তুও নেই।
ক. জীববৈচিত্র্য কী?
খ. চিরসবুজ বৃক্ষের অরণ্য বলতে কী বোঝায়?
গ. আকমলের নিজ এলাকার বনভূমির সাথে বাংলাদেশের কোন এলাকার বনভূমির মিল রয়েছে- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আকমলের ভ্রমণকৃত অঞ্চলের বনভূমির গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পৃথিবীর মাটি, পানি ও বায়ুতে বসবাসকারী সকল প্রকার উদ্ভিদ, প্রাণী ও অণুজীবের মধ্যে যে জীনগত, প্রজাতিগত ও বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য দেখা যায়, তাই জীববৈচিত্র্য।
খ. যে বনভূমির বৃক্ষের সকল পাতা এক সাথে ঝরে যায় না সে বনভূমিকে চিরসবুজ বৃক্ষের অরণ্য বলা হয়। অধিক বৃষ্টিযুক্ত অঞ্চলে এ বনভূমি পরিলক্ষিত হয়। যেমন- গর্জন, মেহগনি ইত্যাদি।
গ. আকমলের নিজ এলাকা গাজীপুর জেলা যেখানে ক্রান্তীয় পাতাঝরা বৃক্ষের বনভূমি দেখা যায়। বাংলাদেশের দিনাজপুর ও রংপুর জেলায় অবস্থিত বরেন্দ্র বনভূমির সাথে এ বনভূমির মিল রয়েছে।
বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এ বনভূমির গাছের পাতা একসাথে ঝরে যায় বলে একে পত্রপতনশীল বা পাতাঝরা বনভূমি বলা হয়। কদর্ম, আঁটসাঁট মৃত্তিকা এবং বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ২৭-৩৩° সেলসিয়াসে উঠেছে। শীতকালে এ বনভূমির গাছের পাতা ঝরে যায় এবং গ্রীষ্মকালে নতুন পাতা গজায়। এ বনভূমির উল্লেখযোগ্য বৃক্ষ হচ্ছে শাল বা গজারি। এছাড়া কাঠাল, কড়ই, গর্জন, জারুল, শিমুল, হরতকী, ছাতিম, বহেরা, নিম প্রভৃতি বৃক্ষ জন্মে।
ঘ. আকমলের ভ্রমণকৃত অঞ্চলটিতে স্রোতজ বনভূমি দেখা যায়।
উদ্দীপকে উল্লিখিত বনভূমি হলো স্রোতজ বনভূমি। নিচে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এ বনভূমির ভূমিকা বিশ্লেষণ করা হলো:
গরান বা স্রোতজ বনভূমির ব্যবহারিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ বাংলাদেশে মোট উৎপাদিত কাঠের প্রায় ৬০ শতাংশ এ বনভূমি থেকে সংগ্রহ করা হয়। এ বনভূমির সুন্দরি বৃক্ষের আর্থিক মূল্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এটি জ্বালানি হিসেবে অধিক ব্যবহৃত হয়। ঘরের খুঁটি, বিদ্যুৎ এবং নৌকা নির্মাণে এ বৃক্ষ ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও গেওয়া নিউজপ্রিন্ট ও কাগজ শিল্পে এবং দিয়াশলাই কারখানায় কঁচামাল হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এ বনভূমি হতে মোম, মধু, বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছ ও ফলমূল সংগ্রহ করা হয়। এসব মানুষের নানাকাজে প্রয়োজন হয়। এছাড়া সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবেশও রক্ষা করে।
সুতরাং দেশের পরিবেশ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ বনভূমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৯. শাহীন তার পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে দেখল পুকুরে কোনো মাছ নেই। সে দেখল পুকুরের পাশের কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পুকুরে পড়ছে।
ক. ভারসাম্য অবস্থা কাকে বলে?
খ. কেন আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন?
গ. শাহীনদের পুকুরে মাছ না থাকার কারণ কী ছিল? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কারখানাটি না থাকলে শাহীন পুকুরের কীরূপ অবস্থা দেখতে পেত? বিশ্লেষণ কর।
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পরিবেশের বিশেষ অবস্থা যেখানে বাস্তুসংস্থানগুলো স্বাভাবিক নিয়মে চলে তাকে বলা হয় ভারসাম্য অবস্থা।
খ. যোগাযোগের উন্নয়নের ওপর দেশের উন্নয়ন অনেকাংশে নির্ভরশীল।
কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে যোগাযোগ। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে সবকিছুতেই এর প্রভাব পড়ে। যুগোপযোগী, সুসংগঠিত ও আধুনিক পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন অতীব প্রয়োজন।
গ. শাহীনের পুকুরে মাছ না থাকার কারণ পুকুরের পানি দূষণ।
উদ্দীপকের পুকুরের পাশের কারখানা থেকে বর্জ্য পুকুরে পতিত হওয়ায় পুকুরে অনেক ক্ষুদ্র কীট-পতঙ্গ বা জলজ উদ্ভিদ জন্মায় না। ফলে পানিতে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যায় এবং ২য় ও ৩য় শ্রেণির খাদকের বসবাস বাধাগ্রস্ত করে। উক্ত বর্জ্য পদার্থ সরাসরি ২য় ও ৩য় পর্যায়ের খাদক তথা ছোট ও বড় মাছের ওপর প্রভাব ফেলে। এতে পুকুরের মাছের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে। তাই শাহীন মাছ ধরতে গিয়ে পুকুরে কোনো মাছ পায়নি।
সুতরাং বলা যায়, পুকুরের পানি দূষিত হওয়ার কারণে উদ্দীপকের শাহীনদের পুকুরে মাছ ছিল না।
ঘ.উদ্দীপকে উল্লিখিত কারখানাটি না থাকলে পুকুরে এর বর্জ্য পদার্থ পড়ত না। এতে পুকুরে ভারসাম্য অবস্থা অক্ষুন্ন থাকত এবং সেখানে প্রচুর মাচ পেত।
পুকুরের ভারসাম্য অবস্থায় পুকুরের ছোট মাছ ক্ষুদ্র কীটপতঙ্গ ও জলজ উদ্ভিদ খেয়ে বেঁচে থাকে। বড় মাছগুলো ছোট মাছ খায়। আবার মানুষ বড় মাছ তার খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। মানুষ মারা গেলে ক্ষুদ্র অণুজীব পরিবেশে ফিরে আসে এবং সেখান থেকে পুনরায় ক্ষুদ্র কীটপতঙ্গ ও জলজ উদ্ভিদ নিজের খাদ্য গ্রহণ করে।
৩য় শ্রেণির খাদক ২য় শ্রেণির খাদকের সংখ্যা বাড়তে দেয় না। ২য় শ্রেণির খাদক ১ম শ্রেণির খাদকের সংখ্যা বাড়তে দেয় না। ১ম শ্রেণির খাদক পুকুরে অণুজীবের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রেখে পুকুরের ভারসাম্য অক্ষুন্ন রাখে।
সুতরাং বলা যায়, কারখানাটি না থাকলে শাহীন পুকুরে একটি ভারসাম্যপূর্ণ বাস্তুসংস্থান দেখতে পেত।
১০. নিচের ছকটি দেখ এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
অঞ্চল | মৃত্তিফা | বনজ সম্পদ |
ক | ধূসর ও লালচে | শাল, কড়ই |
খ | পলি ও কর্দম | সুন্দরি, গেওয়া |
ক. কার্বন চক্র কী?
খ. বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে বনভূমি কীভাবে ভূমিকা রাখে? ব্যাখ্যা কর।
গ. ছকের ‘ক’ চিহ্নিত অঞ্চলটি বাংলাদেশের কোন বনভূমির অন্তর্গত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ছকের ‘ক’ এবং ‘খ’ বনভূমি অঞ্চলের মধ্যে কোনটি সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমির অন্তর্গত? বিশ্লেষণ কর।
১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জড় ও জীবদেহের মধ্যে কার্বন এর চক্রাকারে আবর্তন প্রক্রিয়াকে কার্বনচক্র বলে।
খ. বনভূমি বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে ও মাটির উর্বরতাশক্তি বৃদ্ধি করে কৃষি উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।
বনভূমি দেশের আবহাওয়াকে আর্দ্র রাখে। ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে। যা কৃষি উন্নয়নে সহায়ক। কারণ কৃষিকাজে বিভিন্ন পর্যায়ে বৃষ্টিপাতের বা পানির প্রয়োজন হয়। এছাড়া বনভূমি মাটির ক্ষয়রোধ ও উর্বরতাশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
গ. ছকের ‘ক’ অঞ্চলটি বাংলাদেশের ক্রান্তীয় পাতাঝরা বনভূমিরই অন্তর্গত।
ছকের ‘ক’ অঞ্চলে মৃত্তিকার বর্ণ ধূসর ও লালচে দেখানো হয়েছে এবং বনজ সম্পদ হিসেবে শাল ও কড়ই; সেহেতু এটি বাংলাদেশের ক্রান্তীয় পাতাঝরা বনভূমিরই অন্তর্গত। কারণ এগুলো এ অঞ্চলেই বিদ্যমান রয়েছে।
ছকের ‘ক’ চিহ্নিত অঞ্চলটি বাংলাদেশের ক্রান্তীয় পাতাঝরা গাছের বনভূমির অন্তর্গত। বাংলাদেশের প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহে এ বনভূমি রয়েছে। ক্রান্তীয় অঞ্চলে যেসব গাছের পাতা বছরে একবার সম্পূর্ণ ঝরে যায় সগুলোকে ক্রান্তীয় পাতাঝরা গাছ বলা হয়। এ বনভূমিতে ধূসর ও লালচে রঙের মাটি দেখা যায়। ছকের ‘ক’ অঞ্চলের মৃত্তিকাও ধূসর ও লালচে দেখানো হয়েছে। আবার এ বনভূমি অঞ্চলে শাল, কড়ই, হিজল, বহেরা, হরতকী, কাঁঠাল, নিম প্রভৃতি বনজ সম্পদ দেখা যায়। ছকের ‘ক’ অঞ্চলেও শাল ও কড়ই গাছের কথা বলা হয়েছে। সুতরাং ‘ক’ অঞ্চলটি বাংলাদেশের ক্রান্তীয় পাতাঝরা বনভূমির অন্তর্গত।
ঘ. ‘ক’ এবং ‘খ’ অঞ্চলের মধ্যে ‘খ’ অঞ্চলই সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমির অন্তর্গত।
‘ক’ অঞ্চলটিতে যেহেতু মৃত্তিকা লাল ও ধূসর বর্ণের এবং বনজ সম্পদ শাল ও কড়ই দেখানো হয়েছে তা প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহের অন্তর্গত। আর ‘খ’ অঞ্চলটিতে পলি ও কর্দম এবং সুন্দরি ও গেওয়া বৃক্ষ দেখানো হয়েছে তা সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমির অন্তর্গত।
ছকের ‘ক’ এবং ‘খ’ অঞ্চলের মধ্যে ‘খ’ অঞ্চল হলো সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমির অন্তর্গত স্রোতজ বনভূমি অঞ্চল। টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ এবং প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ ছাড়া সমগ্র বাংলাদেশ সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি। এ সমভূমি বাংলাদেশের অসংখ্য ছোট বড় নদীর দ্বারা বাহিত পলি দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে। আর কি অঞ্চলটি বরেন্দ্রভূমি, ভাওয়াল গড়, লালমাই পাহাড়, মধুপুর অঞ্চল প্লাইস্টোসিনকালের সোপানের অন্তর্গত।
ছকের ‘ক’ এবং ‘খ’ অঞ্চলের মধ্যে ‘খ’ অঞ্চল হলো সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমির অন্তর্গত। ‘খ’ অঞ্চল হলো স্রোতজ বনভূমি অঞ্চল। টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ এবং প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ ছাড়া সমগ্র বাংলাদেশ নদীবিধৌত এক বিস্তীর্ণ সমভূমি। ‘ক’ অঞ্চলটি প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহের অন্তর্গত, এটি এ প্লাবন সমভূমির অন্তর্গত নয়। এ অঞ্চলটি অসংখ্য ছোট বড় নদী দ্বারা সৃষ্ট সমভূমি। বরেন্দ্রভূমি, লালমাই পাহাড়, মধুপুর, ভাওয়াল গড় প্রভৃতি প্লাইস্টোসিনকালের ভূমিরূপ। কিন্তু পাদদেশীয়, বদ্বীপ, স্রোতজ, উপকূলীয় ইত্যাদি ‘খ’ অঞ্চলের অন্তর্গত। এগুলো নদীবাহিত পলি দ্বারা গঠিত। এরূপ ভূমিগুলো খুবই উর্বর এবং কৃষিকাজের উপযোগী।
0 Comments:
Post a Comment