এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 1st Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 1st Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 1st paper Srijonshil Proshno Uttor.
উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
প্রথম পত্র
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৮
HSC Geography
1st Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download
১.‘ক’ স্রোতটি বেগুয়েলা স্রোত থেকে উৎপত্তি হয়েছে এবং এটি পড়ারখার দক্ষিণ পাশ দিয়ে পূর্ব থেকে সোজা পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে উত্তর আমেরিকার উত্তর-পূর্ব উপকূলে দুটি বিপরীতধর্মী স্রোত মিলিত হয়।
ক. সমুদ্রস্রোত কাকে বলে?
খ. পৃথিবীর আবর্তন কীভাবে সমুদ্রস্রোতকে প্রভাবিত করে?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘ক’ স্রোতের বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত মিলিত স্রোত দুটির প্রভাব বিশ্লেষণ কর।
১ নং সৃজনীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সমুদ্রের পানিরাশির একস্থান হতে অন্যস্থানে নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হওয়াই সমুদ্রস্রোত।
খ. পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সমুদ্রস্রোতের উৎপত্তি। আহ্নিক গতির জন্য পৃথিবী নিজ অক্ষের উপর সর্বদা পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরছে। পৃথিবীর এ আবর্তনের জন্য সমুদ্রের উপরিভাগের তরল পানি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি করে।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘ক’ স্রোত দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতকে নির্দেশ করে। বেগুয়েলা স্রোত যখন নিরক্ষরেখার দক্ষিণ দিক দিয়ে সোজা পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয় তখন তাকে দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত বলে।
দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ুর প্রভাবে এ স্রোতের গতিবেগ বৃদ্ধি পায়। মহাসাগরের সবচেয়ে উষ্ণতম অঞ্চলের উপর দিকে প্রবাহিত হয় বলে এটি একটি উষ্ণ স্রোত। এ স্রোতটি আটলান্টিক মহাসাগর অতিক্রম করে দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব উপকূলে এসে সেন্টরকে অন্তরীপে বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং দুটি শাখায় বিভক্ত হয়। প্রথম ও প্রধান শাখাটি দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর উপকূল দিয়ে ক্যারিবিয়ান সাগরে প্রবেশ করে এবং পরে মেক্সিকো উপসাগরে পৌছে উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতে পরিণত হয়। দ্বিতীয় শাখাটি দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব উপকূল দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ঘ. উদ্দীপকে শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের কথা বলা হয়েছে। যার দুটি স্রোত বিপরীত ধর্মী। এর ফলে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
উত্তর মহাসাগর হতে আগত সুমেরু শীতল স্রোত দুটি গ্রীনল্যান্ডের পূর্ব ও পশ্চিম পাশ দিয়ে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে ল্যাব্রাডর উপদ্বীপের কট মিলিত হয়। এ মিলিত স্রোত শীতল ল্যাব্রাডর স্রোত নামে পরিচিত। এ শীতল ল্যাব্রাডর স্রোত আরও দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে ফাউন্ডল্যান্ডের নিকট দুটি শাখায় বিভক্ত হয়। এর একটি শাখা সাগরীয় স্রোতের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে এবং অপর উপসাগরীয় স্রোতের পশ্চিম পাশ দিয়ে উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপকূল বেয়ে দক্ষিণ দিকে চলে যায়। উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের নীল উত্তর-পূর্ব দিকে এবং তার পাশ দিয়ে শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের পানি দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়। এ দুটি বিপরীত স্রোত পরম্পর বিপরীত দিকে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভব তাদের স্রোতের সীমারেখা সুস্পষ্টভাবে দৃষ্টিগোচর হয়। এ দুটি স্রোতের মধ্যবর্তী সীমারেখাকে হিমপ্রাচীর বলে।
উত্তর মহাসাগর হতে ল্যাব্রাডর স্রোতের সাথে অনেক হিমশৈল ভেসে আসে। উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের সংস্পর্শে ঐ সব হিমশৈল গলে যায়। এর ফলে হিমশৈলের সাথে বাহিত কাদা, বালি প্রভৃতি সমুদ্রতলে. সঞ্চিত হয়ে বৃহৎ মগ্নচড়ার সৃষ্টি করে। নিউফাউল্যান্ডের নিকটবর্তী গ্র্যান্ড ব্রাঙ্ক এরূপে সৃষ্টি হয়েছে।
উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের ওপর দিকে প্রবাহিত বায়ু উষ্ণ ও আর্দ্র হয়। অন্যদিকে ল্যাব্রাডর স্রোতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু শুষ্ক ও শীতল হয়। এ বিপরীতধর্মী দুই বায়ুর সংমিশ্রণে এ অঞ্চলে প্রায়ই কুয়াশা ও ঝড়-তুফান লেগে থাকে।
২. রাজশাহীর ছেলে রাকিব তার বন্ধুর বাড়ি উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী বেড়াতে গেল। সে প্রথম দিনেই খেয়াল করল যে, পার্শ্ববর্তী নদীর পানির স্তর সকালের চেয়ে দুপুরে অনেক বেড়ে গেছে। এমন ঘটনায় তাকে আশ্চর্য হতে দেখে বন্ধু জানাল যে, সেখানে প্রতিদিন পানি দু’বার বেড়ে যায় আবার দু’বার কমেও যায়।
ক. সমুদ্রস্রোতের প্রধান কারণ কী?
খ. ল্যাব্রাডর কী ধরনের স্রোত? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে নির্দেশিত পানির স্তর পরিবর্তনের কারণসমূহ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে উক্ত ঘটনার প্রভাব বিশ্লেষণ কর।
২ নং সৃজনীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সমুদ্রস্রোতের প্রধান কারণে বায়ুপ্রবাহ।
খ. ল্যাব্রাডর এক ধরনের শীতল স্রোত।
সুমেরু মহাসাগর হতে মেরু বায়ুর প্রভাবে একটি স্রোত দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে বাফিন উপসাগরে প্রবেশ করেছে। এ শীতল স্রোতটি সেখান থেকে ড্যাভিস প্রণালির মধ্য দিয়ে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর আমেরিকার ল্যাব্রাডর উপদ্বীপের উত্তর পার্শ্বে পৌছায় এবং শীতল পূর্ব গ্রিনল্যান্ড স্রোতের সাথে মিলিত হয়। এ মিলিত স্রোতটি ল্যাব্রাডর স্রোত নামে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়েছে। তাই বলা যায়, ল্যাব্রাডর স্রোত এক ধরণের শীতল স্রোত।
গ. উদ্দীপকে নির্দেশিত পানির স্তর পরিবর্তনের কারণ হলো জোয়ারভাটা। পৃথিবীর ওপর চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ এবং পৃথিবীর আবর্তনের দরুন সৃষ্ট কেন্দ্রাতিগ শক্তি ও কেন্দ্রাবিমুখী শক্তি এ জোয়ারভাটার জন্য দায়ী।
মহাকাশের প্রতিটি গ্রহ-উপগ্রহ পরস্পরকে আকর্ষণ করছে। এই আকর্ষণের ফলে পৃথিবীসহ সকল গ্রহ সূর্যের চারদিকে এবং সকল উপগ্রহ গ্রহগুলোর চারদিকে ঘুরছে। এ আকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীর ই উপরিভাগের তরল পানিরাশি পৃথিবী হতে সরে হতে পারে না। সূর্য চাঁদ অপেক্ষা বড় হলেও পৃথিবী হতে চাঁদের দূরত্ব সূর্য হতে কম থাকায় চাঁদের আকর্ষণ শক্তি সূর্য হতে বেশি। তাই চাদের আকর্ষণে পানি অধিক ফুলে উঠে এবং জোয়ার হয়। আবার পৃথিবী ও চাঁদের ও আবর্তনের জন্য ভূপৃষ্ঠের তরল ও হালকা পানিরাশির ওপর কেন্দ্রাবিমুখী শক্তির প্রভাব অধিক হয়। এর ফলে পানিরাশি ভূভাগ হতে বিচ্ছিন্ন হতে চায়। এভাবে কেন্দ্রাবিমুখী শক্তি জোয়ার সৃষ্টিতে সহায়তা করে।
অপরদিকে, পৃথিবীর মোট পানিরাশির পরিমাণ সর্বত্র সমান না হওয়ায় পৃথিবীর একপাশে মুখ্য জোয়ার অপর পাশে গৌণ জোয়ার হয়। তখন এ দুই জোয়ারের মধ্যবর্তী সমকোণে অবস্থিত অংশে পানিরাশি সরে ও যায় বলে ঐ দুই স্থানে তখন ভাটা হয়।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ঘটনাটি হলো জোয়ারভাটা। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ারভাটার প্রভাব ব্যাখ্যা করা হলো।
জোয়ারভাটার ফলে নৌযান অনায়াসে চলাচল করতে পারে ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা হয়। জোয়ারের সময় নদীর মোহনায় ও তার অ্যন্তরে পানি অধিক থাকে। ফলে বড় বড় সমুদ্রগামী জাহাজের পক্ষে নদীতে প্রবেশ করা সুবিধাজনক হয়। আবার, ভাটার টানে ঐ জাহাজ অনায়াসে সমুদ্রে নেমে আসতে পারে। জোয়ারভাটার মধ্য দিয়ে ভূখন্ড থেকে ময়লা-আবর্জনাসমূহ সাগরে গিয়ে পতিত হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ারভাটার প্রভাবে মৎস্যের প্রাচুর্যহেতু শতশত লোক মৎস্য আহরণ সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত আছে। এ সকল মৎস্য দেশ ও বিদেশের বাজারে বিক্রি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন হয়।
স্বাভাবিক জোয়ারভাটার কোনো কুফল নেই। এটি নিতান্তই প্রাকৃতিক তবে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে জোয়ারের সময় বান ডাকার ফলে অনেক সময় নৌকা, লঞ্চ প্রভৃতি ডুবে যায় এবং উপকূলবর্তী অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে জানমালের ক্ষতি হয়। এছাড়া শীত ঋতুতে জোয়ারের লবণাক্ত পানি নদীর অভ্যন্তরে বহুদূরে অগ্রসর হতে পারে। ফলে নদীর পার্শ্ববর্তী মাঠের ফসল, গবাদিপশু ও বিভিন্ন শিল্পের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
সুতরাং জোয়ারভাটা স্বাভাবিকভাবে উপকূলবর্তী মানুষের কর্মকান্ডকে প্রভাবিত করে। জোয়ারভাটার এ প্রভাব ইতিবাচক। তবে বিশেষ বিশেষ সময়ে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জোয়ারভাটার কুফল লক্ষ করা যায়।
৩. শিক্ষা সফরে সবুজ সেন্ট মার্টিন বেড়াতে এসে বিকালে সৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউ এবং প্রবাল দেখে আনন্দিত হলো। আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ থাকায় সবাই মিলে আবারও সাগর দেখতে গিয়ে দেখল, বিকালে যেসব স্থানে হেঁটে বেড়িয়েছিল রাতে সে স্থানগুলো পা্রয় ৫ ফুট পানির নিচে।
ক. শৈবাল সাগর কোন মহাসাগরে?
খ. বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রস্রোতকে কীভাবে প্রভাবিত করে ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পানির অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত পরিবর্তনের ঘটনাটি উপকূলীয় অঞ্চলের ওপর কীরূপ প্রভাব ফেলে তা বিশ্লেষণ কর।
৩ নং সৃজনীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শৈবাল সাগর আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত।
খ. সমুদ্রস্রোত উৎপত্তির জন্য প্রধান কারণ হলো বায়ুপ্রবাহ।
প্রবল নিয়ত বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রপৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় সমুদ্রের উপরের স্তরের পানিরাশিকে একই দিকে চালিত করে। অয়ন বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে এবং পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়। এভাবেই বিভিন্ন প্রকার বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রস্রোতকে প্রবাহিত করে।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দৃশ্যে পানির অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণ হলো জোয়ার।
সাধারণত সমুদ্রের পানি ফুলে উঠাকে জোয়ার ও নেমে যাওয়াকে ভাটা বলে। পৃথিবীর উপর চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ এবং পৃথিবীর আবর্তনের দরুন সৃষ্ট কেন্দ্রাতিগ শক্তি ও কেন্দ্রাবিমুখী শক্তি জোয়ারভাটার জন্য দায়ী।
মহাকাশের প্রতিটি গ্রহ-উপগ্রহ পরস্পরকে আকর্ষণ করছে। এই আকর্ষণের ফলে পৃথিবীসহ সকল গ্রহ সূর্যের চারদিকে এবং সকল উপগ্রহ গ্রহগুলোর চারদিকে ঘুরছে। এ আকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীর উপরিভাগের তরল পানিরাশি পৃথিবী হতে চ্যুত হতে পারে না। সূর্য চাঁদ অপেক্ষা বড় হলেও পৃথিবী হতে চাঁদের দূরত্ব সূর্য হতে কম থাকায় চাঁদের আকর্ষণ শক্তি সূর্য হতে বেশি। তাই চাঁদের আকর্ষণে পানি অধিক ফুলে উঠে এবং জোয়ার হয়। আবার পৃথিবী ও চাঁদের আবর্তনের জন্য ভূপৃষ্ঠের তরল ও হালকা পানিরাশির ওপর কেন্দ্রবিমুখী শক্তির প্রভাব অধিক হয়। এর ফলে পানিরাশি হতে বিচ্ছিন্ন হতে চায়। এভাবে কেন্দ্রাবিমুখী শক্তি জোয়ার সৃষ্টিতে সহায়তা করে।
অপরদিকে, পৃথিবীর মোট পানিরাশির পরিমাণ সর্বত্র সমান না হওয়ায় পৃথিবীর একপাশে মুখ্য জোয়ার অপর পাশে গৌণ জোয়ার হয়।
ঘ. উদ্দীপকে আলোচিত বিষয়টি হলো জোয়ারভাটা। জোয়ারভাটা - উপকূলবর্তী এলাকার অধিবাসীদের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
জোয়ারভাটার ফলে নৌযান চলাচলের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা হয়। জোয়ারের সময় নদীর মোহনায় ও তার অভ্যন্তরে পানি অধিক থাকে। ফলে বড় বড় সমুদ্রগামী জাহাজের পক্ষে নদীতে প্রবেশ করা সুবিধাজনক হয়। আবার, ভাটার টানে ঐ জাহাজ অনায়াসে সমুদ্রে নেমে আসতে পারে। জোয়ারভাটার মধ্য দিয়ে ভূখন্ড থেকে ময়লা-আবর্জনাসমূহ সাগরে গিয়ে পতিত হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ারভাটার প্রভাবে মৎস্যের প্রাচুর্যহেতু শতশত লোক মৎস্য আহরণসংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত আছে। স্বাভাবিক জোয়ারভাটার কোনো কফল নেই। তবে অমাবস্যা ও পূর্ণিম তিথিতে জোয়ারের সময় বান ডাকার ফলে অনেক সময় নৌকা, লস্ট প্রভৃতি ডুবে যায় এবং উপকূলবর্তী অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে জানমালের ক্ষতি হয়। এছাড়া শীত ঋতুতে জোয়ারের লবণাক্ত পানি, অভ্যন্তরে বহুদূরে অগ্রসর হয়ে পার্শ্ববর্তী মাঠের ফসল, গবাদিপশু ও বিভিন্ন শিল্পের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
আলোচনা থেকে আমরা দেখি, জোয়ারভাটা স্বাভাবিকতা মানুষের কর্মকান্ডকে প্রভাবিত করে। জোয়ারভাটার এ প্রভাব ইতিবাচক তবে বিশেষ বিশেষ সময়ে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জোয়ার কুফল তা মানুষের কর্মকান্ডেও সাময়িক প্রভাব ফেলে।
৪. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক. জোয়ার কাকে বলে?
খ. বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ার-ভাটার প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ‘ক’ চিত্রে কোন ধরনের জোয়ার হয়-ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ক’ ও ‘খ’ চিত্রের জোয়ারের তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।
৪ নং সৃজনীল প্রশ্নের উত্তর
ক. চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণশক্তি এবং পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগশক্তির প্রভাবে সমুদ্রের পানির ফুলে উঠাকে জোয়ার বলে।
খ. বাংলাদেশে উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ার ভাটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। জোয়ারভাটার মাধ্যমে ভূখন্ড হতে আবর্জনাসমূহ নদীর মধ্য দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে পতিত হয়। নদীর মোহনা পরিষ্কার থাকে। দৈনিক দুবার জোয়ারভাটা হওয়ার ফলে ভাটার টানে নদীর মোহনায় পলি ও আবর্জনা জমতে পারে না। জোয়ারভাটার ফলে সৃষ্ট স্রোতের সাহায্যে নদীখাত গভীর হয়। বহু নদীতে ভাটার স্রোতের বিপরীত বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
গ. উদ্দীপকে ‘ক’ চিত্রে ভরা জোয়ার সংঘটিত হয়। চন্দ্র ও পৃথিবীর একই সরলরেখায় থাকলে যে জোয়ার হয় তাকে ভরা জোয়ার বলে।
অমাবস্যার দিন পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে থাকে চাঁদ। ঐদিন চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণী শক্তি পৃথিবীর একই জায়গায় ক্রিয়া করে। ফলে অমাবস্যার দিন জোয়ারের জল অনেক বেশি ফুলে ওঠে। আবার, পূর্ণিমার দিন চাদ ও সূর্যের মাঝখানে থাকে পৃথিবী। এদিন চাঁদ পৃথিবীর যে স্থানকে আকর্ষণ করে, সূর্যের আকর্ষণ পড়ে ঠিক তার বিপরীত দিকে অর্থাৎ প্রতিপাদ স্থানে। ফলে এদিনও জোয়ারের জল অনেক বেশি মাত্রায় ফুলে ওঠে।
সুতরাং উদ্দীপকের ‘ক’ চিত্রে পূর্ণিমা ও অমাবস্যার কারণে সংগঠিত জোয়ারকে ভরা জোয়ার বা ভরা কটাল বলে।
ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ চিত্রে চনদ্র, সূর্য এবং পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করায় তেজ কটাল বা ভরা জোয়ারের এবং ‘খ’ চিত্রে চন্দ্র ও সূর্য সমসূত্রে না থেকে উভয়ই পৃথিবীর সাথে সমকোণে অবস্থান করায় মরা কটালের সৃষ্টি হয়েছে।
পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথিতে পৃথিবী, চন্দ্র ও সূর্য প্রায় একই সরলরেখায় অবস্থান করে। ফলে সূর্যের আকর্ষণ চন্দ্রের আকর্ষণকে সাহায্য করে। এর ফলে এ দুই সময়ে জোয়ারের পানি খুব বেশি ফুলে ওঠে। এ ফুলে ওঠাকে তেজকটাল বা ভরা কটাল বলে।
অন্যদিকে সপ্তমী ও অষ্টমী তিথিতে (শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষে) চাঁদ ও সূর্য সমকোণে (৯০°) থেকে পৃথিবীকে আকর্ষণ করে অর্থাৎ পরস্পর পরস্পরের আকর্ষণের বিরোধিতা করে। এজন্য এই দু-দিন চাঁদের আকর্ষণে মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার দুটিই কম হয়। একে বলে মরা জোয়ার বা মরা কটাল।
তাই বলা যায়, চিত্রের ‘ক’ চিহ্নিত অংশের জোয়ার অর্থাৎ ভরা জোয়ার এবং চিত্রের ‘খ’ চিহ্নিত অংশের জোয়ার অর্থাৎ মরা জোয়ারের মতো নয়।
৫. একাদশ শ্রেণির ভূগোল ক্লাসে ভূগোল বিষয়ের শিক্ষক সাহাদাৎ স্যার আটলান্টিক মহাসাগরীয় স্রোতের মানচিত্র দেখিয়ে বললেন মহাসাগরের স্রোতগুলো দুটি অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশের স্রোতগুলো ফকল্যান্ড, ব্রাজিল ও আফ্রিকার পশ্চিম পার্শ্ব দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এবং দ্বিতীয় অংশের পর্তুগিজ উপকূল, নরওয়ের উপকূল, গ্রিনল্যান্ডের উভয় পার্শ্ব দিয়ে কিছু স্রোত প্রবাহিত হয়েছে।
ক. জোয়ার কী?
খ. চন্দ্রের আকর্ষণে যে জোয়ার সংঘটিত হয় তা ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের আলোকে প্রথম অংশের স্রোতগুলো আটলান্টিক মহাসাগরের কোন অংশের স্রোত বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে আটলান্টিক মহাসাগরের দ্বিতীয় অংশের স্রোতগুলোর গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
৫ নং সৃজনীল প্রশ্নের উত্তর
ক. চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণশক্তি এবং পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগশক্তির প্রভাবে সমুদ্রের পানির ফুলে উঠাকে জোয়ার বলে।
খ. চন্দ্রের আকর্ষণে মুখ্য জোয়ার সংঘটিত হয়।
চন্দ্রের আবর্তনের সময় পৃথিবীর যে অংশ চন্দ্রের সবচেয়ে সম্মুখে উপস্থিত হয় সেখানে চন্দ্রের আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি হয়। স্থলভাগ অপেক্ষা জলভাগের ওপর এ আকর্ষণ শক্তির কার্যকারিতা অনেক বেশি। ফলে চারদিক হতে পানিরাশি ঐ আকর্ষণ স্থলের দিকে ধাবিত হয়। ফলে চন্দ্রের নিকটবর্তী অংশের পানিরাশি স্ফীত হয়ে ওঠে যা মুখ্য জোয়ার নামে পরিচিত।
গ. উদ্দীপকে প্রথম অংশের স্রোতগুলো দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের অন্তর্গত। স্রোতগুলো হচ্ছে ব্রাজিল স্রোত ও ফকল্যান্ড স্রোত।
দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের দ্বিতীয় শাখা ব্রাজিল স্রোত নামে ব্রাজিলের পূর্ব উপকূল দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়। দক্ষিণে অগ্রসর হতে হতে এটি ক্রমশ শীতল হতে থাকে। শেষের দিকে এটি সম্পূর্ণরূপে একটি শীতল স্রোতে রূপান্তরিত হয়। ফকল্যান্ড দ্বীপের নিকট পৌছে পৃথিবীর আবর্তন গতি ও পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে এটি পূর্ব ঐ দিকে বেঁকে কুমেরু স্রোতের সাথে মিলিত হয়।
কুমেরু শীতল স্রোতের একটি ক্ষুদ্র মাথা দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব উপকূলে ফকল্যান্ড দ্বীপের নিকট দিয়ে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়। একে ফকল্যান্ড স্রোত বলা হয়। এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে অধিক শক্তিশালী ও বিপরীতমুখী ব্রাজিল স্রোতের প্রভাব তার মধ্যে বিলীন হয়ে যায়।
ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশের স্রোতগুলো উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরীয় স্রোতের অন্তর্ভুক্ত উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের শাখা।
উদ্দীপকে আটলান্টিক মহাসাগরের দ্বিতীয় অংশের স্রোতগুলো হলো পর্তুগিজ উপকূল দিয়ে প্রবাহিত ক্যানারি স্রোত, নরওয়ে উপকূল দিয়ে প্রবাহিত উত্তর আটলান্টিক স্রোত এবং গ্রীনল্যান্ডের উভয় পাশ নিয়ে প্রবাহিত পশ্চিম গ্রীনল্যান্ড স্রোত এবং পূর্ব গ্রীনল্যান্ড স্রোত।
উক্ত স্রোতগুলোর প্রভাবে উত্তর আমেরিকার পূর্বাংশ এবং পশ্চিম ইউরোপের দেশসমূহ অপেক্ষাকৃত উষ্ণ থাকে। এ অঞ্চলের উষ্ণ স্রোতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ুর প্রভাবে উত্তর আমেরিকার পূর্বাংশে এবং পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে বৃষ্টিপাত হয়। এতে কৃষিকাযের্র সুবিধা হয়ে থাকে। এছাড়া শীত ও গ্রীষ্মের পার্থক্য কম থাকায় এরুপ সমভাবাপন্ন আরামদায়ক জলবায়ুতে শ্রমিকগণ কৃষিক্ষেত্রে এবং শিল্পকারখানায় অধিক সময় কাজ করতে পারে। উক্ত স্রোতগুলোর প্রভাবে উভয় অঞ্চলের বন্দরগুলো বারো মাস বরফমুক্ত থাকে। এ স্রোতের পানিতে হিমশৈল না থাকায় উভয় অঞ্চলের মধ্যে বারো মাস জাহাজ চলাচল করে। পৃথিবীর মধ্যে এত বেশি পণ্যবাহী জাহাজ অন্য কোনো সমুদ্রপথে চলাচল করে না। এছাড়া ক্যানারি স্রোতের উপর দিয়ে বায়ু শুষ্ক ও শীতল থাকে বলে আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিম উপকূলে বৃষ্টিপাত হয় না। তাই এ স্রোতটি সাহারা মরুভূমি সৃষ্টিতে প্রভাববিস্তার করেছে।
সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, উক্ত স্রোতগুলোর যথাযথ গুরুত্ব রয়েছে।
৬. একাদশ শ্রেণির ভূগোল ক্লাসে মি. তারেক স্যার বললেন আজ সূর্য, চন্দ্র ও পৃথিবী প্রায় একই সরলরেখায় অবস্থান করছে। ফলে আজ নদীতে এক ধরনের জোয়ার হবে।
ক. সমুদ্রস্রোত কাকে বলে?
খ. জোয়ারের পানি নদীর মোহনা দিয়ে ভূভাগে প্রবেশ করলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তা ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে সূর্য, চন্দ্র ও পৃথিবী কখন একই সরলরেখায় অবস্থান করে বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে যে জোয়ার সংঘটিত হবে তার কারণ বিশ্লেষণ কর।
৬ নং সৃজনীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সমুদ্রের পানির একস্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়মিত প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে।
খ. জোয়ারের পানি নদীর মোহনা দিয়ে ভূ-ভাগে প্রবেশ করলে ভূ-ভাগের ভূমিক্ষয় ও লবণাক্ত হয়।
পানি উপরের দিকে ফুলে ফেপে ওঠাকে জোয়ার বলে। এ সময় লবণাক্ত পানি নদীর মোহনা দিয়ে ভূ-ভাগে প্রবেশ করে ভূমিকে লবণাক্ত করে। এছাড়া জোয়ারে নদীর পানির স্রোতের গতি বেশি হওয়ায় ভূমির ক্ষয় বৃদ্ধি পায়।
গ. অমাবস্যা তিথিতে সূর্য, চন্দ্র ও পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করে।
চাঁদ ও সুর্যের জোয়ার উৎপন্ন করার ক্ষমতার অনুপাত ১১:৫। অর্থাৎ সর্য যদি ৫ গুণ জোয়ারের সৃষ্টি করে তবে চাঁদ ১১ গুণ জোয়ারের সৃষ্টি করে।
পৃথিবী ও চাঁদের আকর্ষণের এক পর্যায়ে পৃথিবীর একই দিকে অবস্থান করে। এ সময় অমাবস্যার সৃষ্টি হয়। আবার পূর্ণিমার সময় পৃথিবীর একদিকে সূর্য এবং অন্যদিকে চাদ থাকে এবং এরা একই সরলরেখায় অবস্থান করে। ফলে চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ শক্তি একই সাথে কার্যকরী হয়। পৃথিবী ও চাঁদের মিলিত আকর্ষণ শক্তি প্রবল হয়। পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় ঐ দুই দিন চন্দ্রের আকর্ষণে যে স্থানে জোয়ার হয় সূর্যের আকর্ষণেও সে একই স্থানে জোয়ার হয়। এ দুই দিন চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণের ফলে পৃথিবীর দুই দিকের জলরাশি খুব বেশি মাত্রায় ফুলে উঠে এবং দুই জোয়ারের মধ্যে সমকোণী অংশে ভাটার পানি খুবই নেমে যায়।
ঘ. উদ্দীপকে যে জোয়ার সংঘটিত হয় তা হচ্ছে ভরাকটাল বা তেজ কটাল। নিচে উক্ত জোয়ার সৃষ্টি হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করা হলো-
মহাকাশের প্রতিটি গ্রহ-উপগ্রহ পরস্পরকে আকর্ষণ করছে। এই আকর্ষণের ফলে পৃথিবীসহ সকল গ্রহ সূর্যের চারদিকে এবং সকল উপগ্রহ গ্রহগুলোর চারদিকে ঘুরছে। এ আকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীর উপরিভাগের তরল পানিরাশি পৃথিবী হতে চ্যুত হতে পারে না। সূর্য চাদ অপেক্ষা বড় হলেও পৃথিবী হতে চাঁদের দূরত্ব সূর্য হতে কম থাকায় চাদের আকর্ষণ শক্তি সূর্য হতে বেশি। তাই চাঁদের আকর্ষণে পানি অধিক ফুলে উঠে এবং জোয়ার হয়। আবার পৃথিবী ও চাঁদের আবর্তনের জন্য ভূপৃষ্ঠের তরল ও হালকা পানিরাশির উপর কেন্দ্রবিমুখী শক্তির প্রভাব অধিক হয়। এর ফলে পানিরাশি ভূ-ভাগ হতে বিচ্ছিন্ন হতে চায়। এভাবে কেন্দ্রবিমুখী শক্তি জোয়ার সৃষ্টিতে সহায়তা করে।
৭. নাফিউল হাসান লন্ডন থেকে সমুদ্রপথে নিউইয়র্ক ভ্রমণ করে। সে দেখতে পায় যে, সমুদ্রের পানি স্থির নয়, অনবরত ছুটে চলেছে। এছাড়া তখন শীতকাল হওয়া সত্তেবও প্রচুর বাণিজ্যিক জাহাজ নির্বিঘ্নে চলাচল করছে অথচ এ সময় সমুদ্র বরফাবৃত থাকার কথা।
ক. সমুদ্রস্রোত কী?
খ. শৈবাল সাগর বলতে কী বোঝায়?
গ. নাফিউল হাসান সমুদ্রের পানির কী অবস্থা দেখতে পায়, এর কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে জাহাজ চলাচলের সাবলীল ধারা কিসের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে? - মতামত দাও।
৭ নং সৃজনীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সমুদ্রের পানিরাশির একস্থান অন্যস্থানে নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হওয়াই সমুদ্রস্রোত।
খ. আটলান্টিক মহাসাগরের ক্যানারি স্রোতটি ডিম্বাকারে ঘুরার কারণে এর মধ্যবর্তী পানিরাশি একেবারে স্রোতহীন থাকে। এই স্রোতহীন পানিতে ভাসমান আগাছা ও শৈবাল সঞ্চিত হয় বলে একে ও শৈবাল সাগর বলে।
গ. নাফিউর হাসান সমুদ্রস্রোত দেখতে পায়। বিভিন্ন কারণে সমুদ্র স্রোত সৃষ্টি হয়। নিচে সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণগুলো ব্যাখ্যা করা হলো-
জলভাগের পানিরাশি বায়ু দ্বারা তাড়িত হয়ে একস্থান হতে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয়। এছাড়া সমুদ্রস্রোত নিয়তবায়ু প্রবাহের গতিপথ অনুসরণ করে। পৃথিবীর নিজ অক্ষের উপর পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে আবর্তিত হয়। এ আবর্তনের ফলে সমুদ্রের পানি পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে আবর্তিত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি করে। সমুদ্রের পানির যেখানে লবণাক্ততা বেশি সেখানকার পানির ঘনত্ব বেশি ও ভারী। এ ভারী ও অধিক লবণাক্ত পানি স্বভাবতই নিচের দিকে এবং কম ঘনত্বের হালকা পানি উপরের দিকে প্রবাহিত হয়। ফলে সমুদ্রের পানিতে স্রোতের - উদ্ভব ঘটে। ভূ-ভাগের অবস্থান সমুদ্রস্রোত সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে না। তবে ভূ-ভাগের অবস্থানের ফলে একটি মূল স্রোত হতে একাধিক স্রোতের জন্ম হয়। সমুদ্রের তলদেশে শৈলশিরার অবস্থানের ফলে শৈলশিরার উভয় পাশের তলদেশে পানির লবণাক্ততা, ঘনত্ব ইত্যাদির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য ঘটে, যা পৃষ্ঠস্রোতের গতিপ্রকৃতির ওপর প্রভাব ফেলে। সূর্যের কিরণ সমুদ্রতলদেশে ২১০ মিটারের বেশি প্রবেশ করতে পারে না। এ কারণে গভীর ও অগভীর সমুদ্রের পানির উষ্ণতার পার্থক্য ঘটে। ফলে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়।
সুতরাং বলা যায় যে, উপরিউক্ত কারণগুলোর প্রভাবেই সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
ঘ. উদ্দীপকে নাফিউল হাসান লন্ডন থেকে সমুদ্রপথে নিউইয়র্ক ভ্রমণ করে। শীতকাল হওয়া সত্ত্বেও নাফিউল দেখতে পায় প্রচুর বাণিজ্যিক জাহাজ নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। জাহাজ চলাচলের এ সাবলীল ধারা উষ্ণ স্রোতের দ্বারা প্রভাবিত।
সমুদ্রস্রোতের অনুকূলে নৌকা, জাহাজ প্রভৃতি চলাচলের সুবিধা হয়। তবে শীতল সমুদ্রস্রোত অপেক্ষা উষ্ণ সমুদ্রস্রোতে জাহাজ ও নৌ চলাচলে সুবিধা হয়। উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের প্রভাবে কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই শীতল অঞ্চলের উপর দিয়ে উষ্ণ স্রোত প্রবাহিত হলে শীতকালেও বরফ জমতে পারে না। এজন্য উত্তর আটলান্টিক সমুদ্রস্রোতের অনুকূলে পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক জাহাজ যাতায়াত করে।
সুতরাং বলা যায়, শতীকাল হওয়া সত্ত্বেও উষ্ণ স্রোতের প্রভাবে নাফিউলের ভ্রমণকৃত পথে জাহাজ চলাচলের সাবলীল ধারা লক্ষণীয়।
৮. নিচের চিত্রটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
ক. হ্রদ কী?
খ. হিমপ্রাচীর কীভাবে সৃষ্টি হয়?
গ. চিত্রে ‘ক’ চিহ্নিত স্রোতটির উৎপত্তির কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘ক’ ও ‘খ’ চিহ্নিত স্রোত দুটির কোনটি সারাবছর জাহাজ চলাচলে সুবিধাজনক?-বিশ্লেষণ কর।
৮ নং সৃজনীল প্রশ্নের উত্তর
ক.চারদিকে স্থল দ্বারা বেষ্টিত জলভাগই হচ্ছে হ্রদ।
খ. উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত ও ল্যাব্রাডর স্রোতের প্রভাবে হিমপ্রাচীর সৃষ্টি হয়।
উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের নীল পানি উত্তর-পূর্ব দিকে এবং তার পার্শ্ব দিয়ে শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের সবুজ পানি দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়। এ দুইটি বিপরীত স্রোত পরস্পর বিপরীত দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় তাদের স্রোতের মধ্যবর্তী সীমারেখায় হিমপ্রাচীর সৃষ্টি হয়।
গ. চিত্রে ‘ক’ চিহ্নিত স্রোতটি হচ্ছে ব্রাজিল স্রোত।
দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের যে শাখা দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, উরুগুয়ে ও আর্জেন্টিনা উপকূল দিয়ে প্রবাহিত হয় তা ব্রাজিল স্রোত নামে পরিচিত।
বেগুয়েলা স্রোত নিরক্ষরেখার দক্ষিণ দিক দিয়ে সোজা পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত নামে প্রবাহিত হয়। এ উষ্ণ স্রোতটি দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলের পূর্বদিকে ‘সেন্টারক’ অন্তরীপে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে একটি শাখা নিরক্ষরেখা অতিক্রম করে দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর উপকূল দিয়ে অগ্রসর হয়ে ক্যারিবিয়ান সাগরে প্রবেশ করে। অপর শাখাটি ব্রাজিলের পূর্ব উপকূল দিয়ে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়। এভাবে দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের শাখাটি ব্রাজিলের পূর্ব উপকূল দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে ব্রাজিল স্রোতের উৎপত্তি হয়।
ঘ. চিত্রে ‘ক’ স্রোতটি হচ্ছে ব্রাজিল স্রোত এবং ‘খ’ স্রোতটি বেগুয়েলা স্রোত।
স্রোত দুটির মধ্যে ‘ক’ স্রোতটি তথা ব্রাজির স্রোত সারাবছর জাহাজ চলাচলের জন্য সুবিধাজনক। কারণ ব্রাজিল স্রোত একটি উষ্ণ স্রোত। ব্রাজিল স্রোতের প্রভাবে দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব উপকূল সারাবছর উষ্ণ থাকে এবং বন্দরগুলোতে জাহাজ চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটে না। এ স্রোতের উপর থেকে আগত বায়ুতে জলীয়বাষ্প থাকায় এ অঞ্চলে সারাবছর বৃষ্টিপাত হয়। তবে গ্রীষ্মকালে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি। এ কারণে ব্রাজিল স্রোতের অনুকূলে সারাবছর জাহাজ চলাচলের সুবিধা রয়েছে।
অন্যদিকে বেগুয়েলা স্রোত একটি শীতল স্রোত। শীতল স্রোত জাহাজ চলাচলের প্রতিকূলে। শীতকালে শীতল স্রোতের মাধ্যমে কুমেরু থেকে বিভিন্ন আকৃতির বরফ খ-, হিমশৈল শীতল স্রোত বরাবর হিমপ্রাচীর গড়ে উঠতে দেখা যায়। যার কারণে এ পথে সারাবছর জাহাজ চলাচল সম্ভব নয়।
সুতরাং বলা যায় যে, ‘ক’ তথা ব্রাজিল স্রোত ‘খ’ অর্থাৎ বেগুয়েলা স্রোতের মধ্যে ব্রাজিল স্রোতের সাহায্যে সারাবছর জাহাজ চলাচল অধিক সুবিধাজনক।
৯. সৌমিত্র তার বাড়িতে আসা খালাতো ভাই তাপসকে নিয়ে মেঘনা নদীর পাড়ে বসে গল্প করছে আর নদী দেখছে। মেঘনার পানি ধারে ধীরে ফুলে উঠতে দেখে সৌমিত্র তাপসকে জানাল গত বছর এরূপ পানি ফুলে উঠার সময় বান ডাকায় একটি লঞ্চ ডুবে গিয়েছিল এবং ১৫/২০ জন মানুষও মারা গিয়েছিল।
ক. জোয়ার-ভাটার স্থিতিকাল কত?
খ. ভরা কটাল বলতে কী বোঝ?
গ. সৌমিত্র মেঘনায় যে বিষয়টা লক্ষ করল, উপকূলবর্তী নদী বা খাড়িতে তার কী প্রভাব পড়ে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে মেঘনায় পানি ফলে উঠার ফলে উপকূলায় অঞ্চলে আর কী কী প্রভাব পড়বে তা বিশ্লেষণ কর।
৯ নং সৃজনীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জোয়ারভাটার স্থিতিকাল প্রায় ৬ ঘন্টা।
খ. অমাবস্যায় চাঁদ ও সূর্য পৃথিবীর একই দিকে এক সঙ্গে সমসূত্রে অবস্থান করে। আবার পূর্ণিমার সময় পৃথিবীর একদিকে সূর্য ও অপরদিকে চাঁদ থাকে এবং সমসূত্রে অবস্থান করে। এর ফলে চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণশক্তি একই সঙ্গে কার্যকরী হয়।
সূর্যের আকর্ষণ চাঁদের আকর্ষণের তুলনায় কম হলেও উভয়ের মিলিত আকর্ষণ প্রবল হয়। ফলে এ দু’সময় জোয়ারের পানি খুব বেশি ফুলে ওঠে। একে ভরা কটাল বলে।
গ. সৌমিত্র মেঘনায় যে বিষয়টা লক্ষ করল তা হলো জোয়ার।
উপকূলবর্তী নদী বা খাড়িতে এই জোয়ারের প্রভাব অপরিসীম। জোয়ারের প্রভাব উপকূলবর্তী নদী বা খাড়িতে ঋতুভেদে নদীর পানির প্রবাহের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বিরাট তারতম্য লক্ষ করা যায়।
বাংলাদেশের উপকূলে জোয়ারভাটার পরিমাণ বেশ উল্লেখযোগ্য। ফলে জোয়ারের প্রভাব বাংলাদেশের উপকূলের খাড়ি থেকে বহুদূরে নদীর অভ্যন্তরে প্রায় গোয়ালন্দের নিকট পর্যন্ত পৌঁছে। খাঁড়ি অঞ্চলে শীত ঋতুতে জোয়ারের লবণাক্ত পানি নদীর অভ্যন্তরে বহুদূরে অগ্রসর হতে পারে, ফলে বহুদূর পর্যন্ত নদীর অভ্যন্তরে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে মাঠের ফসল, গবাদিপশু ও শিল্পের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
ঘ. উদ্দীপকে মেঘনায় পানি ফুলে উঠেছে অর্থাৎ জোয়ারকে বোঝানো হয়েছে যা উপকূলীয় অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করে।
উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত পরিবর্তনের ঘটনাটি হলো জোয়ার। সমুদ্র উপকূলবর্তী জলরাশি প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময় ফুলে উঠে। জলরাশির এরূপ নিয়মিত ফুলে ওঠাকে জোয়ার বলে।
নিচে উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ারের প্রভাব সম্পর্কে আলোচনাটি করা হলো-
জোয়ারের মাধ্যমে ভূখন্ড থেকে আবর্জনাসমূহ নদীর মধ্যে দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে পতিত হয়। দৈনিক দুবার জোয়ারভাটার ফলে নদীর মোহনায় পলি ও আবর্জনা জমতে পারে না। জোয়ারের ফলে সৃষ্ট স্রোতের সাহায্যে নদীখাত গভীর হয়। জোয়ারের পানি সেচে সহায়তা করে। যেমন, অনেক সময় খাল খনন করে জোয়ারের পানি আটকিয়ে সেচকার্যে ব্যবহার করা হয়। শীতপ্রধান দেশে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি জোয়ারের সাহায্যে নদীতে প্রবেশ করে। ফলে নদীর পানি সহজে জমে না। জোয়ারের ফলে নৌযান চলাচলের মাধ্যমে ব্যবসাবাণিজ্যের সুবিধা হয়।
তবে মাঝে মাঝে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে নদীতে জোয়ারের সময় অনেক সময় বান ডাকে। ফলে নোকা, লঞ্চ প্রভৃতি ডুবে যায় এবং নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায় জানমালের ক্ষতি হয়।
১০. নিচের ছকটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক. ভাটা কী?
খ. গৌণ জোয়ার কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. ছকের 'B' অংশে যে তথ্য দেওয়া আছে সে কারণে তেজকটাল সংঘটিত হয় ব্যাখ্যা কর
ঘ. ছকের C অংশের জোয়ার ছকের 'B' অংশের মতো নয়। বিশ্লেষণ কর।
১০ নং সৃজনীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রাকৃতিকভাবে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে ভাটা বলে।
খ. গৌণ জোয়ার চন্দ্রের আকর্ষণস্থলের ঠিক বিপরীত দিকে অর্থাৎ প্রতিপাদ স্থানে পৃথিবীর মহাকর্ষ শক্তির প্রভাবে যে জোয়ার হয়, তাকে গৌণ জোয়ার বলে। পৃথিবী ও চন্দ্র একটি সাধারণ ভারকেন্দ্রের চারদিকে আবর্তন করে। পৃথিবীর ব্যাসার্ধ চার হাজার মাইল বলে পৃথিবীর কেন্দ্র অপেক্ষা ঐ ভারকেন্দ্র চন্দ্রের তিন হাজার মাইল নিকটে অবস্থিত। এ জন্য চন্দ্রের আকর্ষণস্থলের স্থানে পৃথিবীর মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব অনেক কম। এ কারণে চন্দ্রের আকর্ষণস্থলের বিপরীত দিকে পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে গৌণ জোয়ার হয়।
গ. ছকের 'B' অংশে উল্লেখ আছে চন্দ্র ও পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করে। চন্দ্র ও পৃথিবীর একই সরলরেখায় থাকলে তেজকটাল সংঘটিত হয়। চাঁদ ও সূর্যের জোয়ার উৎপন্ন করার ক্ষমতা ১১ঃ ৫। অর্থাৎ সূর্য যদি ৫ গুণ জোয়ারের সৃষ্টি করে তবে চাদ ১১ গুণ জোয়ার সৃষ্টি করে।
পৃথিবী ও চাঁদের আকর্ষণের একপর্যায়ে সূর্য ও চাঁদ পৃথিবীর একই দিকে অবস্থান করে। এ সময় অমাবস্যার সৃষ্টি হয়। আবার পূর্ণিমার সময় পৃথিবীর একদিকে সূর্য ও অন্যদিকে চাদ থাকে এবং এরা একই সরলরেখায় অবস্থান করে। ফলে চাদ ও সূর্যের আকর্ষণ শক্তি একই সাথে কার্যকরী হয়। সূর্যের আকর্ষণ চাঁদের আকর্ষণের তুলনায় কম হলেও উভয়ের মিলিত আকর্ষণ প্রবল। পূর্ণিমা তিথিতে ভূপৃষ্ঠের যে স্থানে চাদের প্রভাবে মুখ্য জোয়ার হয়, সেই স্থানে সূর্যের প্রভাবে গৌণ জোয়ার হয়। আবার অমাবস্যায় চাঁদ ও সূর্য উভয়ের মিলিত আকর্ষণে শক্তিশালী মুখ্য জোয়ার হয়। এভাবে তেজকটাল সংঘটিত হয়।
ঘ. ছকের 'C' অংশের জোয়ার ছকের 'B' অংশের মতো নয়। কারণ, চন্দ্র ও পৃথিবীর অবস্থানগত পার্থক্যের কারণে B অংশে তেজকটাল এবং C অংশে মরাকটাল সংঘটিত হয়েছে।
C অংশে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার অষ্টমী তিথিতে চাঁদ ও সূর্য পৃথিবীর সাথে একই সরলরেখায় অবস্থান না করে উভয়ে পৃথিবীর সাথে পরস্পর সমকোণে অবস্থান করে এবং পৃথিবীকে আকর্ষণ করে। ফলে এ সময় চাঁদের আকর্ষণে চাঁদের দিকে ও বিপরীত দিকে জোয়ার এবং সূর্যের আকর্ষণে সূর্যের দিকে ও তার বিপরীত দিকে জোয়ার সংঘটিত হওয়ার কথা, কিন্তু দেখা যায় চাঁদের আকর্ষণে, চাদের দিকে ও তার বিপরীত দিকে জোয়ার এবং সূর্যের দিকে ও সূর্যের বিপরীত দিকে ভাটা সংঘটিত হয়। এরূপ ঘটনাকে মরাকটাল বলে।
অপরদিকে 'B' অংশে চন্দ্র ও পৃথিবীর একই সরলরেখা অবস্থান করে তখন তাদের মিলিত শক্তিতে জোয়ারভাটার প্রভাব সবচেয়ে বেশি। ফলে পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথিতে উভয়ের মিলিত শক্তিতে জোয়ার অত্যন্ত প্রবল হয় ফলে তেজকটালের সৃষ্টি হয়।
উপিরউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, 'C' অংশের জোয়ার ছকের 'B' অংশের চেয়ে ভিন্ন প্রকৃতির।
0 Comments:
Post a Comment