এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 1st Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 1st Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 1st paper Srijonshil Proshno Uttor.
উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
প্রথম পত্র
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৫
HSC Geography
1st Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download
১. নিচের ছকটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
বায়ুপ্রবাহ | ধরন |
১ | চাপবলয় অনুসরণ করে চলে |
২ | স্থানীয় বৈশিষ্ট্য দ্বারা প্রভাবিত |
ক. বায়ুপ্রবাহ কাকে বলে?
খ. ফেরেলের সূত্র বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রবাহ-২ এর বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রবাহ-১ কীভাবে সংঘটিত হয় বিশ্লেষণ কর।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বায়ুর অনুভূমিক গতিকে বায়ুপ্রবাহ বলে।
খ. সমুদ্রস্রোত এবং বায়ুপ্রবাহ উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়। এ বেঁকে যাওয়াই ফেরেলের সূত্র নামে পরিচিত।
ফেরেলের সূত্র দ্বারা প্রমাণ করে যে, আহ্নিক গতিতে পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে। এ সূত্র অনুসারে অয়ন বায়ু উত্তর গোলার্ধে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে থাকে। নিরক্ষরেখা অতিক্রম করলে ফেরেলের সূত্র অনুসারে দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ুর গতি বেঁকে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়। অর্থাৎ দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রবাহ-২ এ স্থানীয় বায়ুর কথা বলা হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় ও বিবিধ ভৌগোলিক কারণে এক ধরনের বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়, একে স্থানীয় বায়ু বলে। উত্তর আমেরিকার রকি পর্বতের পূর্বপার্শ্বের উষ্ণ ও শুষ্ক প্রবাহিত চিনুক বায়ু; পার্বত্য অঞ্চলের শীতল বায়ু পাহাড়ের উপত্যকার মধ্য দিয়ে সমভূমির দিকে প্রবাহিত ফন বায়ু; ফ্রান্সের রোন নদীর উপত্যকা দিয়ে শীতকালে দক্ষিণে সমভূমি ও দ্বীপ এলাকার দিকে প্রবাহিত মিস্টাল বায়ু; ভূমধ্যসাগরের ওপর দিয়ে যে নিম্নচাপ পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয় তার পুরাভাগের সিরক্কো বায়ু এবং মিসরের দক্ষিণ দিক হতে মিশরে প্রবাহিত খামসিন বায়ু প্রভৃতি স্থানীয় বায়ু।
প্রত্যেকটি বায় স্থানীয় ও বিবিধ ভৌগোলিক কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়। তেমনি উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রবাহ-২ স্থানীয় বায়ুর বৈশিষ্ট্য দ্বারা প্রভাবিত। সুতরাং উল্লিখিত প্রবাহ-২ স্থানীয় বায়ু।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রবাহ-১ দ্বারা নিয়ত বায়ুকে নির্দেশ করে।
যেসব বায়ু পৃথিবীর চাপ বলয়গুলো নিয়ন্ত্রিত হয়ে বছরের সবসময় একই দিকে নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হয় তাদের নিয়ত বায়ু বলে। ভূপৃষ্ঠের চাপবলয়গুলোর অবস্থান লক্ষ্য করলে বায়ুপ্রবাহের দিক সহজেই জানা যায়। বায়ুপ্রবাহ উচ্চচাপ অঞ্চল হতে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময়, উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়।
নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় হতে উষ্ণ ও হালকা বায়ু উপরে ওঠে গেলে কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় হতে অয়ন নিয়ত বায়ু শীতল ও ভারী বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে, কর্কটীয় ও মকরীয় বলয় হতে আরও দুটি বায়ুপ্রবাহ সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত নিম্নচাপ বলয়ের দিকে পশ্চিমা নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয়। আবার, মেরু অঞ্চলের উচ্চচাপ বলয় হতে অতি শীতল ও ভারী বায়ু উত্তর গোলার্ধে নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। এ বায়ু উত্তর গোলার্ধে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়।
২.মিতু শীতের ছুটিতে পঞ্চগড় হতে কক্সবাজার বেড়াতে গেল। সে পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা চিন্তা করে অনেক শীতের কাপড় নিয়ে কক্সবাজার পৌছে দেখল সেখানে শীতের তীব্রতা পঞ্চগড় হতে অনেক কম।
ক. জলবায়ু কী?
খ. বায়ুর তাপমাত্রা জলবায়ুর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান- ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ভ্রমণকৃত স্থানের তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে স্থানদ্বয়ের তাপের তারতম্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো একটি অঞ্চলের সাধারণত ৩০ - ৪০ বছরের আবহাওয়ার অবস্থাকে জলবায়ু বলে।
খ. বায়ুর উষ্ণ ও শীতল অবস্থাকে বায়ুর তাপমাত্রা বলে।
তাপমাত্রার পরিমাপের উপর কোনো স্থানের জলবায়ু বহুলাংশে নির্ভরশীল। তাপমাত্রা বেশি হলে অলটিতে উষ্ণ জলবায়ু বিরাজ করে। আবার তাপমাত্রা খুব কম বা মধ্যম হলে অঞ্চলটিতে যথাক্রমে মেরুদেশীয় অথবা নাতিশীতোষ্ণ বায়র সৃষ্টি হয়। এজন্য তাপমাত্রা জলবায়ুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত।
গ. উদ্দীপকের ভ্রমণকৃত স্থান হলো কক্সবাজার। সামুদ্রিক জলবায়ুর কারণে কক্সবাজারের তাপমাত্রা বেশি।
সমুদ্রের নিকটবর্তী অঞ্চল সামুদ্রিক জলবায়ু দ্বারা প্রভাবিত হয়। এ জলবায়ুর প্রভাবে উপকূলবর্তী স্থানে শীত ও গ্রীষ্মের প্রখরতা অনেক কম থাকে। এ কারণে একই সমাক্ষরেখায় অবস্থিত স্থানসমূহের মধ্যে যে স্থান সমুদ্র হতে যত দূরে সে স্থান গ্রীষ্মকালে তত অধিক গরম এবং শীতকালে তত অধিক শীতল হয়।
উদ্দীপকের মিতু শীতের ছুটিতে পগড় হতে কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন। কক্সবাজার এলাকা সমুদ্র উপকূলবর্তী হওয়ায় সামুদ্রিক জলবায়ুর প্রভাব পঞ্চগড়ের তুলনায় অধিক। তাই এখানের শীতকালেও তাপমাত্রা বেশি।
ঘ. উদ্দীপকের স্থানদ্বয় হলো পঞ্চগড় ও কক্সবাজার। স্থানদ্বয়ের ও তাপের তারতম্যের মূল কারণ সমুদ্র হতে দূরত্ব।
সমুদ্রের নিকটবর্তী অঞল সামুদ্রিক জলবায়ু দ্বারা প্রভাবিত হয়। এ জলবায়ুর প্রভাবে উপকূলবর্তী স্থানে শীত ও গ্রীষ্মের প্রখরতা অনেক কম থাকে। এ কারণে একই সমাক্ষরেখায় অবস্থিত স্থানসমূহের মধ্যে যে স্থান সমুদ্র হতে যত দূরে সে স্থান গ্রীষ্মকালে তত অধিক গরম এবং শীতকালে তত অধিক শীতল হয়। উদ্দীপকের মিত বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড় এলাকায় বসবাস করে। সেখান থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কক্সবাজার এলাকায় বেড়াতে যান যা সমুদ্র নিকটবর্তী। ভৌগলিকভাবে পঞ্চগড় এবং কক্সবাজার বিপরীত দিকে অবস্থিত।
ফলে স্থানদ্বয়ের মধ্যে সামুদ্রিক দূরত্ব অনেক। সমুদ্র থেকে দূরত্বের কারণে স্থানদ্বয়ের মধ্যে তাপের তারতম্য ঘটে। সমুদ্রের নিকটবতা স্থানসমূহের জলবায়ু সমভাবাপন্ন, কারণ সমুদ্র হতে প্রবাহিত আদ্র বায়ু শীতকালে বায়ুকে উষ্ণ ও গরমকালে বায়ুকে শীতল করে।
সমুদ্রের নিকটবর্তী স্থানসমূহ অর্থাৎ কক্সবাজারে সমুদ্র হতে প্রবাহিত আর্দ্র বায়ু শীতকালে বায়ুতে উষ্ণ করে পলে এখানে গরম বেশি অনুভূত হয়। তদরূপ, পঞ্চগড় অঞ্চলে প্রবাহিত আর্দ্র বায়ু শীতল করে,ফলে শীত বেশি অনুভূত হয়।
৩. নিচের চিত্রটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক. বায়ুপ্রবাহ কাকে বলে?
খ. সমুদ্র বায়ু সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে চিহ্নিত ‘খ’ বায়ু প্রবাহের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে চিহ্নিত ‘ক’ ও ‘খ’ বায়ুপ্রবাহের মধ্যকার ভিন্নতা বিশ্লেষণ কর।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বায়ুর আনুভূমিক অবস্থাকে বায়ুপ্রবাহ বলে।
খ. স্থলভাগ ও জলভাগের তাপ গ্রহণ ও সংরক্ষণ ক্ষমতার তারতম্যের ফলেই সমুদ্র বায়ুর উৎপত্তি হয়।
দিনের বেলায় সৌরতাপে তীরবর্তী স্থলভাগ সমুদ্রের পানি অপেক্ষা শীঘ্র ও অধিক উত্তপ্ত হয়। উত্তপ্ত স্থলভাগের সংস্পর্শে বায়ু উষ্ণ ও হালকা হয়ে উপরে ওঠে এবং তথায় নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এ সময় বায়ুচাপের সমতা রক্ষার্থে সমুদ্র হতে শীতল ও উচ্চচাপ বিশিষ্ট বায়ু স্থলভাগের দিকে প্রভাবিত হয়ে সমুদ্রবায়ুর সৃষ্টি হয়।
গ. উদ্দীপকে চিহ্নিত ‘খ’ বায়ুপ্রবাহ হলো উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু।
বায়ুর চাপ বলয়ের অবস্থান নিরক্ষীয় নিম্নচাপ ও কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়ের অবস্থানের কারণে উত্তর পূর্ব অয়ন বায়ুপ্রবাহ সংঘটিত হয়ে থাকে।
উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু নিরক্ষরেখার নিকটবর্তী হলে অত্যধিক তাপে উষ্ণ ও হালকা হয়ে ঊর্ধ্বে উঠে যায়। তখন ঘণ্টায় প্রায় ১৬ কি.মি. বেগে প্রবাহিত হয়ে নিরক্ষরেখার উভয় দিকে শান্ত বলয়ের সৃষ্টি করে। শীতকালে এ বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ বেশি থাকে।
ঘ. উদ্দীপকের চিহ্নিত ক’ ও ‘খ’ বায়ুপ্রবাহ হলো দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু ও উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু। উভয় বায়ুপ্রবাহের মধ্যকার মূল ভিন্নতা হলো একটি অয়ন বায়ু দ্বারা অপরটি পশ্চিমা বায়ু দ্বারা প্রভাবিত হয়।
নিরক্ষীয় শান্ত বলয়ের উত্তর দিকে ১০° অক্ষাংশে থেকে ৩৫° অক্ষাংশের মধ্যে উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু প্রবাহিত হয়। অয়ন বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে বেঁকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে একে উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু বলে। এ বায়ু ঘন্টায় প্রায় ১৬ কি.মি. বেগে প্রবাহিত হয়। নিরক্ষরেখার নিকটবর্তী হলে এ বায়ু অত্যধিক তাপে উষ্ণ ও হালকা হয়ে ঊর্ধ্বে উঠে যায়। এর প্রভাবে নিরক্ষরেখার উভয়দিকে শান্ত বলয়ের সৃষ্টি হয়। শীতকালে এ বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ বেশি থাকে।
অপরদিকে, দুই ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় অঞ্চলের দিকে ৩৫° থেকে ৬০° অক্ষাংশের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হয়। উত্তর গোলার্ধে এ বায়ু দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয় বলে এর দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু বলে। উষ্ণ থেকে শীতল অক্ষাংশীয় এলাকার দিকে প্রবাহিত হওয়ার ফলে সারাবছর কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়। এ বায়ু চলাচলের পথে রীতিমতো বায়ুমন্ডলীয় গোলযোগ সৃষ্টি হয়। ঘূর্ণিঝড়, প্রতা ঘূর্ণিবাত, বজ্রঝড়, শক্তিশালী ঘূর্ণন প্রভৃতি সৃষ্টিতে এ বায়ু ভূমিকা রাখে। পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত এলাকা শীতকালের চেয়ে গ্রীষ্মকালে শান্ত থাকে। এ বায়ুর বিশেষত্ব হচ্ছে শীতকালে বাতাস যেকোনো দিক থেকে প্রবাহিত হতে পারে এবং কদাচিৎ ঘূর্ণিঝড় হয়।
৪. নিচের ছকটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
শ্রেণি | বৈশিষ্ট্য |
বৃষ্টিপাত-ক | সাধারণত নিরক্ষীয় অঞ্চলে হয়ে থাকে |
বৃষ্টিপাত-খ | পাহাড়ের প্রতিবাত ঢালে হয় |
ক. বৃষ্টিপাত কাকে বলে?
খ. বায়ুর আর্দ্রতা কী বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘বৃষ্টিপাত-খ’ এর বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘বৃষ্টিপাত-ক’ এর প্রভাব বিশ্লেষণ কর।
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. স্বাভাবিকভাবে ভাসমান মেঘ ঘনীভূত হয়ে পানির ফোঁটা আকারে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে বৃষ্টিপাত বলে।
খ. বায়ুতে জলীয়বাষ্পের উপস্থিতিকে বায়ুর আর্দ্রতা বলে।
বায়ু নির্দিষ্ট পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে। কিন্তু বায়র উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তার জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কোনো নির্দিষ্ট উষ্ণতায় বায়ু যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে। সে পরিমাণ জলীয়বাষ্প বায়ুতে থাকলে বায়ু আর অধিক জলীয়বাষ্প গ্রহণ করতে পারে না। আবায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ থাকে প্রায় শতকরা ২ ভাগ থেকে ৫ ভাগ।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘বৃষ্টিপাত-খ’ দ্বারা শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতকে নির্দেশ করে।
জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু স্থলভাগের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় যদি গমনপথে কোনো উঁচু পর্বতশ্রেণিতে বাধা পায় তাহলে ঐ বায়ু উপরের দিকে ওঠে যায়। তখন জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু ক্রমশ প্রসারিত হয় এবং পর্বতের উঁচু অংশে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে পর্বতের প্রতিবাত ঢালে বৃষ্টিপাত হয়। এরূপ বৃষ্টিপাতকে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি বলে। সাধারণত গ্রীষ্মের শেষ এবং বর্ষায় শুরুতে এ বৃষ্টিপাত হয়, পর্বত ও মালভূমি অঞ্চলে আর্দ্র দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলে এ ধরনের বৃষ্টিপাত হয়।
উদ্দীপকে খ শ্রেণির বৃষ্টিপাতের বৈশিষ্ট্য হলো পাহাড়ের প্রতিবাত ঢালে বৃষ্টিপাত হয়। শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতও পাহাড়ের প্রতিবাত ঢালে হয়। সুতরাং ‘বৃষ্টিপাত-খ’ হলো শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘বৃষ্টিপাত-ক’ পরিচলন বৃষ্টিপাতকে নির্দেশ করে। নিরক্ষীয় অঞ্চলে এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।
দিনের বেলায় সূযের কিরণে পানি বাষ্পে পরিণত হয়ে সোজা উপরে উঠে যায় এবং শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে ঐ জলীয়বাষ্প প্রথমে মেঘ ও উপরে বৃষ্টিতে পরিণত হয়ে সোজাসুজি নিচে নেমে আসে। এরূপ বৃষ্টিপাতকে পরিচলন বৃষ্টি বলে। নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারা বছর এবং নাতিশীতোষ্ণ অঞলে গ্রীষ্মকালের শুরুতে পরিচলন বৃষ্টিপাত হতে দেখা যায়। তবে দিনের সবচেয়ে উষ্ণতম সময়ই এ ধরনের বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।
নিরক্ষীয় অঞ্চলে ০° থেকে ১০° অক্ষাংশের মধ্যে সূর্য প্রায় সারা বছর লম্বভাবে কিরণ দেয় এবং বায়ু উত্তপ্ত হয়ে সর্বদা উর্ধ্বে উন্থিত হয়। এ অঞ্চলে পানিরাশির পরিমাণও বেশি। ফলে অতিরিক্ত তাপে পানিরাশির পানি বাষ্পে পরিণত হয়ে অনবরত উর্ধ্বে উঠে পরিচলন প্রক্রিয়ায় বষ্টিপাত ঘটায়। নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায় সারা দিনে সূর্যের তাপে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু উর্ধ্বে উত্থিত হয় এবং বিকেল তিন চার ঘটিকার সময় ঘন কালো স্তম্বমেঘে আকাশ ছেয়ে যায়। ফলে বজ ও বিদ্যুৎসহ প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। নিরক্ষীয় অঞ্চলে বার্ষিক পরিচলন বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গড়ে ২০০ সেন্টিমিটার।
এ কারণে আফ্রিকার কঙ্গো নদীর অববাহিকা, দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান নদীর অববাহিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া অঞ্চলে প্রায় প্রত্যহ পরিচলন প্রক্রিয়ায় বৃষ্টিপাত হয়। বর্ষাকালে বাংলাদেশের সর্বত্র পানি থাকে এবং এ সময় সূর্যের তাপও খুব বেশি হয় ফলে এ সময় প্রায়ই মূষলধানে স্বল্পস্থায়ী পরিচলন বৃষ্টিপাত সংঘটিত হয়।
৫. হাসান সাহেব একটি দেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ডিসেম্বর মাসে যোগদান করতে এসে দেখলেন ঠান্ডা মোটেই নেই এবং প্রায় প্রতিদিন বিকেলে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়। তিনি আরও জানতে পারলেন জলবায়ু অনুকূলে থাকায় এখানে রাবার ও পাম গাছ ভালো জন্মে।
ক. বৃষ্টিপাতের সংজ্ঞা দাও।
খ. আবহাওয়ার উপাদান ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে আলোচিত দেশটির জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটির উদ্ভিজ্জের ওপর জলবায়ুর প্রভাব বিশ্লেষণ কর।
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মেঘ ঘনীভবন প্রক্রিয়ায় পানি বিন্দুতে পরিণত হয়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসাকে বৃষ্টিপাত বলে।
খ. কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানের বায়ুর তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, মেঘাচ্ছন্নতা, বৃষ্টিপাত ও বায়ু প্রবাহের দৈনন্দিন সামগ্রিক অবস্থাকে সেই দিনের আবহাওয়া বলে। আবহাওয়ার উপাদান বলতে বায়ুর তাপ, বায়ুর চাপ, বায়ু প্রবাহ, বায়ুর আর্দ্রতা, বারিপাত ইত্যাদিকে বোঝায়। কোনো স্থানের আবহাওয়ার উপাদানগুলো সব সময় পরিবর্তনশীল।
গ. উদ্দীপকে আলোচিত দেশটি হলো মালয়েশিয়া যেখানে নিরক্ষীয় জলবায়ু বিদ্যমান।
নিরক্ষরেখার উভয় পার্শ্বে ৫° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে যে জলবায়ু পরিলক্ষিত হয় তাকে নিরক্ষীয় জলবায়ু বলে।
নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে সাধারণত সারাবছর সূর্য লম্বভাবে কিরণ দেয়। তাই সংগত কারণে মালয়েশিয়াসহ এ ধরনের জলবায়ু অঞ্চল অধিক ও উত্তপ্ত হয়। উষ্ণতা সাধারণত ২২° সেন্টিগ্রেড হতে ৩৪° সেন্টিগ্রেডের মধ্যে থাকে। মালয়েশিয়ায় গড় তাপমাত্রা ২৭° সেন্টিগ্রেড। নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে উষ্ণতার তিনটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যথা- প্রায় সারাবছর সমানভাবে উত্তপ্ত, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতার খুবই কম পার্থক্য হয় এবং উষ্ণতার চরমভাবের অভাব। নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চল হিসেবে মালয়েশিয়াতে প্রায় সারাবছর সূর্য লম্বভাবে কিরণ দেয়।
সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সারা অধিক তাপ ও বৃষ্টিপাত নিরক্ষীয় জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য এ বৈশিষ্ট্যই মালয়েশিয়াতে জলবায়ুগত অবস্থা নির্দেশ করে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দেশটি হলো মালয়েশিয়া যেখানে নিরক্ষীয় জলবায় বিদ্যমান। এখানকার উদ্ভিদের ওপর জলবায়ুর প্রভাব ব্যাখ্যা করা হলো-
উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটি নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত। নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞলে সারা বছর প্রচুর বৃষ্টিপাত ও অধিক তাপের জন্য চিরহরিৎ পত্রযুক্ত বৃক্ষের গভীর বনের সৃষ্টি হয়েছে। এ বন এত গভীর যে, সূর্যরশ্মি পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারে না। ফলে গাছগুলো খুব উঁচু হয়। এসব বুক্ষে নিচের দিকে কোনো শাখা-প্রশাখা গজায় না কিন্তু উপরের দিকে ছাতার আকারে ঘন পত্ররাজি বিরাজ করে। সারা বছর এ বনাঞ্চলের বৃক্ষগুলোতে নতুন পাতা গজায়। এ অঞ্চলের বৃক্ষগুলোর মধ্যে সেগুন, মেহগনি, রাবার, পাম, চন্দন প্রভৃতি প্রধান।
অধিক তাপমাত্রা ও প্রচুর বৃষ্টিপাত এ অঞ্চলে বড় বড় গাছ জন্মানোর অনকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। সারা বছরই উষ্ণ ও আর্দ্র জলবাযয়ু বিরাজ করে বলে এ অঞ্চলের গাছের পাতা একসাথে ঝরে পড়ে না। এ কারণে নিরক্ষীয় অঞ্চলের বৃক্ষগুলো চিরহরিৎ শ্রেণির।
সুতরাং বলা যায়, মালয়েশিয়াতে বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ জন্মানোর জন্য সে দেশের জলবায়র ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।
৬. নিচের চিত্রটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক. নিয়ত বায় কাকে বলে?
খ. নিম্নচাপ সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ‘ক’ বায়ুপ্রবাহের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের ‘ক’ ও ‘খ’ বায়ুপ্রবাহদ্বয়ের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ কর।
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উচ্চচাপ বলয় থেকে নিম্নচাপ বলয়ে যে বায় নিয়মিতভাবে সারাবছর প্রবাহিত হয় তাকে নিয়ত বায়ু বলা হয়।
খ. কোনো স্থানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। সাগরে বৃষ্টিপাতের ফলে তা সুপ্ততাপ ছেড়ে দেয়। যা বাস্পীভবন বাড়িয়ে দেয়। আবার এই সুপ্ততাপের প্রভাবে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে বায়ুমন্ডল অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এবং নিম্নচাপের সৃষ্টি করে।
গ. উদ্দীপকের ‘ক’ বায়ুপ্রবাহটি হলো উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু যা এক প্রকার নিয়ত বায়ুপ্রবাহ।
কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয় হতে যে বায়ু নিরক্ষীয় প্রদেশের দিকে প্রবাহিত হয় তাকে উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু বলে। নিয়ত বাযয়ুপ্রবাহের কারণ হলো বায়ুর চাপ বলয়ের অবস্থান। নিরক্ষীয় নিম্নচাপ ও কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়ের অবস্থানের কারণে উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ুপ্রবাহ সংঘটিত হয়ে থাকে।
নিরক্ষায় নিম্নচাপ বলয় থেকে উষ্ণ ও হালকা বায়ু উপরে উঠে গেলে ককটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে শীতল ও ভারী বায়ু নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। ফেরেলের সূত্র অনুসারে এ বায়ু উত্তর গোলার্ধে উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে থাকে। প্রাচীনকালে পরিচালিত বাণিজ্যিক জাহাজগুলো এ বায়ুপ্রবাহের দিক অনুসরণ করে যাতায়াত করত বলে একে অয়ন বায়ু বা বাণিজ্য বায়ু বলে। উত্তর গোলার্ধে এটি উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু নামে পরিচিত।
ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ ও ‘খ’ বায়ুপ্রবাহদ্বয় যথাক্রমে উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু এবং উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু। নিচে এ দুটি বায়ু প্রবাহের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করা হলো:
উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু ঘণ্টায় প্রায় ১৬ কি. মি. বেগে প্রবাহিত হয়। এ বায়ু নিরক্ষরেখার নিকটবর্তী হলে অত্যাধিক তাপে উষ্ণ ও হালকা হয়ে ঊর্ধ্বে উঠে যায়। এ বায়ুর প্রভাবে নিরক্ষরেখার উভয়দিকে শান্ত বলয়ের সৃষ্টি হয়। শীতকালে এ বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ বেশি থাকে।
ইউরোপীয় নাবিকগণ উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ুকে প্রবল বায়ু বলে থাকে। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে এ বায় ৪০° থেকে ৪৭° দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে বেশ জোরে গর্জন করতে করতে প্রবাহিত হয় বলে একে গর্জনশীল চল্লিশা বলে। উত্তর-পশ্চিম বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলোর পশ্চিম উপকূলে বৃষ্টিপাত হয়। শীতকালে পানি অপেক্ষা স্থলভাগ বেশি ঠান্ডা থাকে বলে এ বায়ুতে শীতকালে অধিক বৃষ্টি হয়। সুতরাং বলা যায়, অয়ন বায়ু যেমন নিয়ত প্রবাহমান, পশ্চিমা বায়ু তেমন নয়। নানারূপ স্থানীয় কারণে এ বায়ু প্রবাহের সাময়িক পরিবর্তন ঘটে থাকে।
স্তর | মেঘের উচ্চতা |
ক | ৬০০০ - ১০০০০ মিটার |
খ | ২০০০ - ৬০০০ মিটার |
গ | ২০০০ মিটার উচ্চতার মধ্যে |
ক. আবহাওয়া কী?
খ. আর্দ্র বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কে নেমে গেলে কোন অবস্থার সৃষ্টি হয় ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ‘ক’ ও ‘খ’ স্তরের মেঘের বৈসাদৃশ্য বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ‘গ’ স্তরের মেঘ বিমান চলাচলের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ বিশ্লেষণ কর।
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আবহাওয়া হলো কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানের নির্দিষ্ট সময়ের বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা, বায়ুর চাপ, বায়ুপ্রবাহ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি সামগ্রিক গড় অবস্থা।
খ. আর্দ্র বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কে নেমে গেলে শিশির পড়ে।
বায়ুতে যে পরিমাণ জলীয়ুবাষ্প থাকে, তাতে বায়ু সম্পৃক্ত হয় না। যদি - কোনো স্থানের বায়ুকে ধীরে ধীরে শীতল করা যায় তাতে উষ্ণতা একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌছালে বায়ুতে যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প থাকে, তাতেই ঐ স্থানের বায়ু পরিপূক্ত হয়। এতে শিশিরের সৃষ্টি হয় এবং এ অবস্থাকে শিশিরাঙ্ক বলে। আর্দ্র বায়ুতে ২-৫ শতাংশ জলীয়বাষ্প থাকে। এটি তাপ বিকিরণ করে ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে শিশির আকারে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। তাই বলা যায়, আর্দ্র বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কে নেমে গেলে শিশির পড়ে।
গ. উদ্দীপকে ‘ক’ স্তরের মেঘ হচ্ছে উচ্চ আকাশের মেঘ এবং ‘খ’ স্তরের মেঘ হচ্ছে মধ্যম আকাশের মেঘ। দুটি মেঘ উচ্চতা ও আকৃতিতে ভিন্ন প্রকৃতির হয়।
‘ক’ স্তর/উচ্চ আকাশের মেঘ ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬০০০ মিটারের উপর হতে ১০,০০০ মিটার উচ্চতার মধ্যে ভেসে বেড়ায়। এসব মেঘ ঊর্ধ্ব - আকাশে দেখা যায়। এসব মেঘ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তুষার কণা দ্বারা গঠিত। দেখতে পালক বা আশের মতো। এ মেঘ দেখতে সাদা ও স্বচ্ছ। এসব মেঘে কদাচিৎ বৃষ্টিপাত হয়। উক্ত মেঘের ভেতর দিয়ে আকাশের সূর্য ও চাঁদ দেখা যায়।
‘খ’ স্তর/মধ্যম আকাশের মেঘ ২০০০ মিটারের উপর থেকে ৬,০০০ মিটারের মধ্যে ভেসে বেড়ায়। এসব মেঘ মধ্য আকাশে দেখা যায়। এসব মেঘ পানিকণা দ্বারা গঠিত। উক্ত মেঘ দেখতে সাদাটে ধূসর রঙের কিংবা নীলচে ধূসর বর্ণের হয়। এ মেঘ হতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। নীল আকাশের গায়ে ঢেউয়ের মতো মেঘের গুচ্ছগুলো ছড়য়িয়ে থাকে।
সুতরাং বলা যায় যে, উপরোল্লিখিত ‘ক’ স্তর ও ‘খ’ স্তরের মেঘগুলোর মধ্যে উচ্চতা, বর্ণ ও মেঘ থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
ঘ. উদ্দীপকে ‘গ’ স্তরের মেঘ তথা নিম্ন আকাশের মেঘ অত্যন্ত ঘন এবং উক্ত মেঘ থেকে শিলাপাত হয় বিধায় এ স্তর বিমান চলাচলের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
নিম্ন আকাশের মেঘ ভূপৃষ্ঠের উপর থেকে ২,০০০ মিটার উচ্চতার মধ্যে ভেসে বেড়ায়। এসব স্তরে যেসব মেঘ থাকে তা তুলনামূলক ভারী হয়ে থাকে। আর এ কারণে এটি নিচের দিকে থাকে। এ মেঘ থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এ মেঘ স্তরে স্তরে বিন্যস্ত থাকে। কোনো কোনো সময় এ মেঘ থেকে শিলাপাত হয়। যার কারণে এ স্তর দিয়ে বিমান চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া এ স্তরে প্রায়ই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয় এবং শিলাবৃষ্টি হয় ও আকাশ মেঘলা থাকায় বিমানের ও গতিবিধি ও চলাচলের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে। তাই ‘গ’ স্তরের মেঘ বিমান চলাচলের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
৮. আবহাওয়া ও জলবায়ুর গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের জন্যই পৃথিবীতে জীবজগতের সৃষ্টি হয়েছে। যেসব উপাদানের গড় অবস্থা বিবেচনা করে আবহাওয়া ও জলবায়ু নির্ধারণ করা হয় তাদের মধ্যে তাপমাত্রা, বষ্টিপাত ও বায়ুপ্রবাহ অন্যতম। আবার কিছু জলবায়ু নিয়ন্ত্রণকারী নিয়ামক রয়েছে যাদের প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে জলবায়ুর পার্থক্য সৃষ্টি হয়। এদের মধ্যে অক্ষাংশের প্রভাব সবচেয়ে বেশি।
ক. বায়ুচাপ কাকে বলে?
খ. আবহাওয়া ও জলবায়ুর পার্থক্য লেখ।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জলবায়ুর উপাদানগুলো ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে কোন নিয়ামকটি জলবায়ুকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে বিশ্লেষণ কর।
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে বায়ুমন্ডল ভূপৃষ্ঠের প্রতি বর্গকিলোমিটার স্থানের উপর যে বলপ্রয়োগ করে তাকে বায়ুচাপ বলে।
খ. আবহাওয়া হলো কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানের নির্দিষ্ট সময়ের। বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা, বায়ুর চাপ, বায়ুর প্রবাহ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি অবস্থা।
অপরদিকে, জলবায়ু বলতে একটি বৃহৎ অঞ্চল জুড়ে আবহাওয়ার উপাদানগুলো যেমন- বায়ুর তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদির অন্তত ৩০-৩৫ বছরের যে গড় অবস্থা দেখা যায় তাকে বোঝায়।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত তাপমাত্রা, বায়ুর চাপ, বায়ুর গতি, বায়ুর আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি জলবায়ুর উপাদান। নিচে উপাদানসমূহের বর্ণনা দেওয়া হলো:
তাপমাত্রার পরিমাপের ওপর কোনো স্থানের জলবায়ু বহুলাংশে নির্ভরশীল। তাপমাত্রা বেশি হলে দেশটিতে উষ্ণতম জলবায়ু উপভোগ করে, আবার তাপমাত্রা খুব কম বা মধ্যম হলে দেশটিতে যথাক্রমে মেরুদেশীয় অথবা নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর সৃষ্টি হয়। বায়ুর চাপ জলবায়ুর একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান। বিভিন্ন স্থানে চাপের মধ্যে পাথক্য থাকে বলে আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যেও পার্থক্য হয়ে থাকে। বায়ুর গতিও আবহাওয়া এবং জলবায়ুর ওপর যথেষ্ট বাবস্তার করে থাকে। সমুদ্র হতে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু কোনো অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত হলে সে অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয় এবং তাপ হাস পায়। কিন্তু স্থলভাগ হতে আগত বায়ুর প্রভাবে তাপ হ্রাস পায় না। এ বায়ু শুষ্ক হলে এর দ্বারা বৃষ্টিপাত হয় না। আর্দ্রতাও আবহাওয়া ও জলবায়ুর একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান। বায়ুতে জলীয়বাষ্পের উপস্থিতিকে আর্দ্রতা বলে। আর্দ্রতার প্রভাবে বৃষ্টিপাত ঘটে। বায়ু আর্দ্র হলে জলবায়ু শীতল হয় এবং বায়ুর শুষ্কতা জলবায়ুকে উষ্ণ করে তোলে। বৃষ্টিপাত আবহাওয়া ও জলবায়ুর একটি প্রধান উপাদান।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে অক্ষাংশ নিয়ামকটি জলবায়ুকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে।
পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে জলবায়ুর ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এই ভিন্নতার পেছনে জলবায়ুর কতকগুলো নিয়ামক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করে। এই নিয়ামকগুলো হলো- অক্ষাংশ ও সূর্যের কৌণিক অবস্থান, জল ও স্থলভাগের অবস্থান, পৃথিবীর ঘূর্ণন, সমুদ্রস্রোত, বায়ুচাপ ও বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্র সমতল থেকে উচ্চতা, পাহাড়-পর্বতের অবস্থান, বনভূমি, মৃত্তিকা প্রভৃতি।
অক্ষাংশ জলবায়ুর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে গণ্য হয়। অক্ষাংশ অনুযায়ী সূর্যরশ্মি কোথাও লম্বভাবে আবার কোথাও হেলে পড়ে। নিরক্ষরেখায় সূর্যরশ্মি সারাবছর প্রায় লম্বভাবে পড়ে সেজন্য নিরক্ষীয় অঞ্চল সর্বাপেক্ষা উষ্ণ হয়। নিরক্ষরেখা হতে যতই উত্তরে বা দক্ষিণে যাওয়া যায় ততই সূর্যরশ্মি অধিকতর তির্যকভাবে পড়ে এবং দিন ছোট ও বড় হতে থাকে। ফলে নিরক্ষরেখা হতে উত্তর ও দক্ষিণে তাপমাত্রা ক্রমে কমতে থাকে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, গড়ে প্রতি ১° অক্ষাংশে ১° সেলসিয়াস উষ্ণতা হ্রাস পায়। এ কারণে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে অধিক শীত এবং এ অঞ্চল দুটি সর্বদা বরফে ঢাকা থাকে।
সুতরাং বলা যায়, অক্ষাংশ জলবায়ুর ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাববিস্তার করে থাকে।
৯. ১৯৪৫ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছে। হিটলারের আদেশে কিছু জার্মান সৈন্য আটলান্টিক মহাসাগরের কর্কটীয় অঞ্চল হতে পালতোলা নৌকার সাহায্যে একটি বিশেষ বায়ুর অনুকূলে দক্ষিণ নিরক্ষীয় অঞ্চলের একটি দেশে আক্রমণ চালায়।
ক. বায়ুপ্রবাহ কাকে বলে?
খ. বায়ুপ্রবাহ কীভাবে সৃষ্টি হয়?
গ. উক্ত বায়ুকে বাণিজ্য বায়ু বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সৈন্যরা কোন বায়ুপ্রবাহকে অনুসরণ করেছিল বিশ্লেষণ কর।
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. তাপ ও চাপের পার্থক্যজনিত কারণে বায়ু সর্বদা একস্থান হতে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয়। বায়ুর এ নিয়মিত প্রবাহকে বায়ুপ্রবাহ বলে।
খ. ভূপৃষ্ঠের তাপ ও চাপের তারতম্যই বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টির কারণ।
সাধারণত নিম্নচাপ অঞ্চলের বায়ু সর্বদাই উষ্ণ ও. লঘু হয়ে উপরে উঠে যায়। আর উচ্চচাপবিশিষ্ট অঞ্চলের বায়ু সর্বদাই উষ্ণ শূন্যস্থান পূরণার্থে সেদিকে ধাবিত হয়। ভূপৃষ্ঠে বায়ুর চাপের শূন্যস্থান পূরণে তখন, আশপাশের উচ্চচাপ অঞ্চল হতে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে। আবার উষ্ণতার তারতম্যের জন্য বায়ুচাপে এ তারতম্য সৃষ্টি হয় এবং এ কারণে বায়ু প্রবাহের সৃষ্টি হয়।
গ. উদ্দীপকে হিটলারের অনুসরণকৃত বায়ু হলো অয়ন বায়ু যাকে বাণিজ্য বায়ু নামে আখ্যয়িত করা হয়ে থাকে।
যে বায়ু সর্বদা কর্কটীয় উত্তর-পূর্ব ও মকরীয় দক্ষিণ-পূর্ব উচ্চ চাপ বলয় হতে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয় তাকে বাণিজ্য বায়ু বা অয়ন বায়ু বলে।
ফেরেলের সূত্রানুসারে এ বায়ু উত্তর গোলাধের ডান দিকে বেঁকে উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু এবং দক্ষিণ গোলাধের বাম দিকে বেঁকে দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু নামে নিরক্ষীয অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু ঘণ্টায় ১৬ কি.মি. এবং দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু ঘণ্টায ২২.৪ কি.মি. বেগে প্রবাহিত হয়। নিরক্ষরেখার উভয় পার্শ্বে ৫০-৩৫০ অক্ষাংশের মধ্যে প্রবাহিত হয় এ বায়ু। প্রাচীনকালে ক্রান্তীয় অঞ্চলের মধ্যবর্তী দেশসমূহে এ বায়ুর সাহায্যে জলপথে পাল তোলা বাণিজ্য জাহাজগুলো যাতায়াত করত বলে একে বাণিজ্য বায়ু বলে।
ঘ. জার্মান সৈন্যরা পাল তোলা নৌকার সাহায্যে বাণিজ্য বায়ু বা অয়ন বায়ু ব্যবহার করে দক্ষিণ নিরক্ষীয় একটি দেশে আঘাত হেনেছিল।
২৫°-৩৫° উত্তর অক্ষাংশ নিয়ে উত্তর গোলার্ধ। যেহেতু এই বায়ু উত্তর গোলার্ধের উচ্চচাপ বলয় হতে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয় সেহেতু ফেরেলের সূত্রানুযায়ী উত্তর গোলার্ধের বায়ুটি উত্তর-পূর্ব দিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়।
এই বায়ুর সাহায্যেই প্রাচীনকালে জলপথে পালতোলা জাহাজ চলাচল করত। এ বায়ুর পথ ধরেই হিটলার তার সৈন্যদের অর্থাৎ উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু বা বাণিজ্য বায়ুর পথ ধরে চলতেই নির্দেশ করেছিলেন যার। ফলশ্রুতিতে তারা অনায়াসেই তাদের লক্ষ্যে পৌছে এবং আক্রমণ চালায়। উপযুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে সৈন্যরা বাণিজ্য বায়ু অনুসরণ করেছিল। ফলে জলপথে পালতোলা নৌকা নিয়েই সৈন্যরা গন্তব্যস্থলে পৌছতে সক্ষম হয়।
১০. জান্নাত গ্রীষ্মের ছুটিতে রাজশাহী থেকে কক্সবাজার গিয়ে দেখল সেখানকার আবহাওয়া রাজশাহী থেকে ভিন্ন।
ক. কোন মাসে উত্তর গোলার্ধে সর্বাধিক উষ্ণতা বিরাজ করে?
খ. উষ্ণমন্ডল বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. উক্ত আবহাওয়ার ভিন্নতার কারণ নির্ণয় কর।
ঘ. জলবায়ুর নিয়ামকগুলো বাংলাদেশের জলবায়ুতে কী প্রভাব ফেলে? সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জুলাই মাসে উত্তর গোলার্ধে সর্বাধিক উষ্ণতা বিরাজ করে।
খ. নিরক্ষরেখার দুদিকে অর্থাৎ উত্তরে ২৩ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৩ দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত স্থানকে উষ্ণমন্ডল বলা হয়।
এ অঞ্চলে বছরের অধিকাংশ সময় সূর্যরশ্মি প্রায় খাড়াভাবে পড়ে এবং কোনো সময়ই দিন ও রাত্রির দৈর্ঘ্যের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য হয় না।
এ অঞ্চলটির উত্তর সীমায় কর্কটক্রান্তি রেখা এবং দক্ষিণ সীমায় মকরক্রান্তি রেখায় অবস্থিত। অঞ্চলটির বার্ষিক গয় উষ্ণতার পরিমাণ হলো ২৪° সে.।
গ. সমুদ্র থেকে দূরবর্তী হওয়ায় রাজশাহী থেকে কক্সবাজারের আবহাওয়া ভিন্ন।
সমুদ্রের কাছাকাছি এলাকায় শীত-গ্রীষ্ম এবং দিনরাত্রির তেমন পার্থক্য হয় না। কারণ জলভাগের অবস্থান কোনো এলাকার জলবায়ুকে মৃদুভাবাপন্ন করে। সামুদ্রিক আবহাওয়ার প্রভাবে উপকূলবর্তী স্থানে তাপের প্রখরতা কমে যায়। আবার শীতের প্রকোপকেও কমিয়ে দেয়। কারণ সমুদ্র হতে প্রবাহিত আর্দ্র বায়ু শীতকালে বায়ুকে উষ্ণ এবং গরমকালে বায়ুকে ঠান্ডা করে।
সুতরাং কক্সবাজার সমুদ্রের নিকটবর্তী অবস্থিত হওয়ায় এখানকার আবহাওয়া রাজশাহী থেকে ভিন্ন।
ঘ. জলবায়ুর নিয়ামকগুলো বাংলাদেশের জলবায়ুতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাববিস্তার করে।
পৃথিবীর সর্বত্র জলবায়ু একরকম নয়। বিভিন্ন স্থানে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণকারী প্রভাবসমূহ সমভাবে বিদ্যমান নয় বলে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে, জলবায়ুর ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। তেমনি বাংলাদেশের জলবায়ুও ভিন্ন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। এ ভিন্নতার পেছনে জলবায়ুর কতকগুলো নিয়ামক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে।
বাংলাদেশের দক্ষিণে সমুদ্রের অবস্থান; বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তরপূর্বে ভারত এবং বাংলাদেশের পাহাড়িয়া অঞ্চলে, বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিম, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বনভূমি; ভূপৃষ্ঠ থেকে উতা এবং জলবায়ুর প্রকৃতি নির্ধারণে বায়ুচাপ ও বায়ুপ্রবাহের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে নদী বড় বড় বালিচর থেকে খুব উষ্ণ বায়ু তীরবর্তী এলাকার উষ্ণতা বৃদ্ধি করে। শীতল অঞ্চল থেকে উষ্ণ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত বায়ুর প্রভাবে উষ্ণতা কমে যায়। এছাড়াও সমুদ্রস্রোত অক্ষাংশ, ভূমির ঢাল, পৃথিবীর ঘূর্ণন প্রভৃতি বাংলাদেশের জলবায়ুকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে।
0 Comments:
Post a Comment