এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 1st Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 1st Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 1st paper Srijonshil Proshno Uttor.
উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
প্রথম পত্র
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৪
HSC Geography
1st Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download
১. নজীব দীর্ঘ দশ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে ঢাকায় আসে। এখানকার গাড়ির কালো ধোঁয়া, কলকারখানার নির্গত গ্যাসের ফলে সৃষ্ট দূষণ তার জন্য একটি অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।
ক. CFC এর পূর্ণরূপ কী?
খ. জীবের জন্য বায়ুমন্ডলের কোন স্তর অধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা কর।
গ. মানবদেহের ওপর উদ্দীপকে উল্লিখিত দূষণের প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত দূষণ প্রতিরোধে করণীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. CFC এর পূর্ণরূপ হলো- Chloro Fluoro Carbon.
খ. জীবের বেঁচে থাকার জন্য বায়ুমন্ডলের ট্রপোমন্ডল স্তরটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এটি বায়ুমন্ডলের সর্বনিম্ন স্তর। এ স্তরে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বনডাইঅক্সাইড, ধূলিকণা প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে যা প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য খুবই প্রয়োজন। এছাড়া এ স্তরে মেঘ, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, কুয়াশা, ঝড়, বজ্রবিদ্যুৎ প্রভৃতি সবকিছুই ঘটে। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের শতকরা ৮০ ভাগ বায়ু এ স্তর ধারণ করায় এ স্তরের নিচে উদ্ভিদ ও প্রাণীর অস্তিত্ব দেখা যায়। তাই ট্রপোমন্ডল স্তরটি জীবের। বেঁচে থাকার জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দূষণটি হলো বায়ুদূষণ। নিচে মানবস্বাস্থ্যের ওপর বায়ুদূষণের প্রভাব বিশ্লেষণ করা হলো-
বায়ুদূষণের অন্যতম দূষক হচ্ছে সালফার ডাইঅক্সাইড (SO₂), নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (NO₂) যা ব্রঙ্কাইটিস সৃষ্টি করে। ব্রঙ্কাইটিসের প্রধান উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী কাশি, অত্যধিক মিউকাস ক্ষরণ ও সঞ্চয় এবং বিঘ্নিত শ্বসন। বায়ুদূষণ এবং ধূমপান ফুসফুস ক্যানসারের প্রধান কারণ। শহরের বায়ুদূষণ তীব্র হওয়ায় গ্রামের তুলনায় শহরে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। উৎপাদন স্থলে বা অট্টালিকা নির্মাণের সময় অ্যাজবেস্টাসের প্রভাবে ফুসফুসীয় কলা অমসৃণ হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবে ফুসফুসে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। ফুসফুসের এরূপ অস্বাভাবিক অবস্থাকে অ্যাজবেস্টোসিস বা ফুসফুসীয় ফাইব্রোসিস বলে। বায়ুতে বিভিন্ন ধরনের তেজস্ক্রিয় উপাদানের উপস্থিতির কারণে অতিশয় মন্দ প্রভাব যথা- অ্যানিমিয়া, লিউকেমিয়া এবং ক্যান্সার সৃষ্টি হতে পারে। তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের প্রভাবে এর মিউটেশন, বন্ধ্যাত্ব, ভ্রূণের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশ এবং জন্মত্রুটি ঘটতে পারে।
উদ্দীপকে নজীব দীর্ঘ দশ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে ঢাকায় আসে। এখানকার গাড়ির কালো ধোঁয়া, কলকারখানায় নির্গত গ্যাস ব্যাপকভাবে বায়ু দূষণ সৃষ্টি করে। যা মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ঘ. উদ্দীপকে সৃষ্ট দূষণটি হলো বায়ুদূষণ যা মানব স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টি করে। নিচে, বায়ুদূষণ প্রতিরোধে করণীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
সমাজের সকল স্তরের মানুষকে বায়ুদূষণের কারণ ও প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। বায়ুদূষণের বর্তমান অবস্থা পরিমাপের জন্য ব্যাপক জরিপ ও পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। জনসাধারণকে বায়ুদূষণের ফলে মানুষের স্বাস্থ্য ও সম্পদের কী ক্ষতি হতে পারে সে সম্বন্ধে পরিচিতি প্রদান করতে হবে।
পরিবেশে জনসংখ্যা ভার কমাতে হবে। পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বায়ুদূষণ প্রতিরোধে দেশে বিদ্যমান আইন যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। ইটের ভাটায় কাঠের পরিবর্তে কয়লা ব্যবহার করতে হবে। যানবাহনে ডিজেলের পরিবর্তে সিএনজির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ করে বনায়ন করতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, জাতিসংঘের পরিবেশ সংশিস্নষ্ট বিশেষ করে বায়ুদূষণ প্রতিরোধে গৃহীত বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের দেশকে যথায ভূমিকা পালন করতে হবে।
২. ইদানীং সময়ে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রচন্ড গাড়ির চাপে মানুষ অসহায় হয়ে পড়ছে। এছাড়া টঙ্গীর শিল্পাঞ্চল ও আশুলিয়াতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ইটভাটা। এদের শিল্পবর্জ্য ও নির্গত গ্যাসীয় পদার্থ ক্রমাগত বায়ুতে মিশছে। মানুষ প্রায়শই কাপড়ে নাক, মুখ চেপে শ্বাসকষ্ট ও দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
ক. দূষণ কী?
খ. গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি বায়ুদূষণের সাথে সম্পর্কযুক্ত ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দূষণের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দূষণ মানবস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ বিশ্লেষণ কর।
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. রাসায়নিক, ভৌতিক ও জৈবিক কারণে পরিবেশের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের যেকোনো নেতিবাচক পরিবর্তনই হলো দূষণ।
খ গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি বায়ুদূষণের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
গাড়ির কালো ধোঁয়া বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ। যে কারণে গ্রাম এলের তুলনায় শহরের বায়ুদূষণ বেশি হয়। গাড়ির সংখ্যা যত বৃদ্ধি
ও ততই কালো ধোঁয়া আকাশে বেশি ছড়াবে এবং বায়ুদূষণ বৃদ্ধি তাই বলা যায়, গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি বায়ুদূষণের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
গ. উদ্দীপকে বায়ুদূষণের কথা বলা হয়েছে।
বায়ু হলো কতিপয় গ্যাসীয় উপাদান যা সর্বদা পৃথিবীকে আবৃত করে বিজমান। বায়ুমন্ডলের মধ্যে যখন দূষিত ধোঁয়া, গ্যাস, বাম্প ইত্যাদি। উপাদানের সমাবেশ ঘটে এবং যার দরূন মানুষ, জীবজন্তু ও জগতের ক্ষতি হয়, তখন তাকে বায়ুদূষণ বলে।
মানবসৃষ্ট কর্মকান্ডে বায়ু বেশি পরিমাণে দূষিত হয়। যেমন মোটর যানবাহন, শিল্পকারখানা, পাওয়ার প্লান্ট, ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (CFC), আবর্জনাসমূহ; মোটর যানবাহন থেকে হাইড্রোকার্বন, নাইট্রোজেন অক্সাইড উৎপন্ন; শিল্পকারখানা থেকে উৎপন্ন বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস যা বায়ুর সাথে মিশে বায়ুকে দূষিত করে। এছাড়া রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার প্রভৃতি ব্যবহারের কারণে কার্বন মনোঅক্সাইড উৎপন্ন হয়। যা বায়ুকে মারাত্মকভাবে দূষিত করে। আবার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে উথিত লাভা ভূপৃষ্ঠের আশেপাশের বায়ুকে দূষিত করে।
ঘ. উদ্দীপকে যে দূষণের কথা বলা হয়েছে তা হলো বায়ুদূষণ।
বিভিন্ন কারণে সৃষ্ট বায়ুদূষণের ফলে মানবস্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
কলকারখানা ও অটোমোবাইল কারখানা হতে নির্গত কার্বন মনোক্সাইড রক্তের হিমোগেস্নাবিনের সাথে মিশে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে ফেলে এবং স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়। কলকারখানা হতে নির্গত নাইট্রোজেনের অক্সাইড চোখ ও নাকের প্রদাহ সৃষ্টি করে। এছাড়া স্বাসপ্রশ্বাসের কষ্টসহ ফুসফুসের ক্যান্সার ও ব্রোঙ্কিয়াল অ্যাজমা সৃষ্টি করে। যানবাহনের ধোঁয়া থেকে যে পারঅক্সিএসিটাইল নাইট্রেট নির্গত হয় তা সালোকসংশ্লেষণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাসোলিন, কেরোসিন প্রভৃতির অসম্পূর্ণ দহনের ফলে নির্গত হাইড্রোকার্বন যকৃতের ক্যান্সার সৃষ্টি করে। ইটের ভাটার চিমনি দিয়ে নির্গত কালো ধোঁয়া ও ছাইর সাথে কার্বন-ডাইঅক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড নামক ক্ষতিকারক পদার্থ থাকে। এতে বায়ু দূষিত হয়ে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের উদ্ভিদ ও প্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি করে। গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়ায় ওজোনস্তর ক্ষয় পেয়ে অতিবেগুনি রশ্মি ভূপৃষ্ঠে পতিত হচ্ছে। ফলে চামড়ার ক্যান্সারসহ মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করছে।
তাই বলা যায়, বায়ুদূষণ মানব স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
৩. সামি ও সেমন্তি নগরীর ব্যস্ততম সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াত করে। সাম্প্রতিককালে রাস্তার দু'পাশে কিছু শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। ফলে প্রায়শ অসুস্থ হয়ে তারা চিকিৎসকের কাছে যায়। চিকিৎসক তাদের এই অসুস্থতার জন্য প্রেসক্রিপশনের পাশাপাশি কিছু পরামর্শও দেন।
ক. বায়ুর আর্দ্রতা কাকে বলে?
খ. জীবের বেঁচে থাকার জন্য বায়ুমন্ডলের কোন স্তর অধিক গুরুত্বপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
গ. সামি ও সেমন্তির অসুস্থতার জন্য দায়ী দূষক ও দূষণ উৎসের ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের সামি ও সেমন্তির সুস্থতার জন্য কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত- তোমার মতামত দাও।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণ করাকে বায়ুর আর্দ্রতা বলে।
খ. জীবের বেঁচে থাকার জন্য ট্রপোমন্ডল অধিক গুরুত্বপূর্ণ। ট্রপোমন্ডল বায়ুমন্ডলের সর্বনিম্ন স্তর। ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন এ স্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিমি ঊর্ধ্ব পর্যন্ত বিস্তৃত। এ স্তরে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন-ডাইঅক্সাইড, ধূলিকণা প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে যা প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য খুবই প্রয়োজন।
এছাড়া এ স্তরে মেঘ, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, কুয়াশা, ঝড়, বজ্রবিদ্যুৎ প্রভৃতি সবকিছুই ঘটে।
গ. উদ্দীপকের সামি ও সেমন্তি যে রাস্তা দিয়ে চলাচল করে ঐ রাস্তার দুপাশে শিল্পকারখানা থাকায় তারা প্রায়শই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের অসুস্থতার মূল কারণ বায়ুদূষণ এবং এ দূষণের জন্য দায়ী দূষক হচ্ছে শিল্পকারখানা। বায়ু বিভিন্ন কারণে দূষিত হতে পারে। তন্মধ্যে শিল্পকারখানা হতে উৎপাদিত বিষাক্ত গ্যাস যেমন- কার্বন মনোক্সাইড, ও নাইট্রিক অক্সাইড, নাইট্রিক এসিড, সালফাইড প্রভৃতি দ্বারা বায়ু দূষিত হয়। ফলে নির্মল বায়ুর সাথে যখন এসব ক্ষতিকর গ্যাস মিশ্রিত হয় তখন বায়ু বিষাক্ত হয়। এ বিষাক্ত বায়ু মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী গ্রহণ করার ফলে বায়ুদূষণজনিত বিভিন্ন রোগে তারা আক্রান্ত হয়। তন্মধ্যে-ইনফ্লুয়েঞ্জা, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে প্রদাহ, চক্ষু রোগ প্রভৃতি হয়ে থাকে বা পরবর্তীতে মারাত্মক আকার ধারণ করে।
সুতরাং বলা যায় যে, উদ্দীপকের সামি ও সেমন্তি যে দূষণ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে তা মূলত বায়ুদূষণজনিত কলকারখানা ও সেখান থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস।
ঘ. উদ্দীপকের সামি ও সেমন্তির সুস্থতার জন্য বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
জীবের অস্তিত্ব টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে বায়ু অন্যতম। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এ বায়ু দূষণের ফলে বিষাক্ত দূষক পদার্থ মানুষের দেহে প্রবেশ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই মানুষকে সুস্থভাবে বেচে থাকতে হলে বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করা জরুরি।
উদ্দীপকে সামি ও সেমন্তি প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার পথে যানবাহন ও শিল্পকারখানার ধোঁয়া থেকে নির্গত দূষক পদার্থ শরীরে প্রবেশের মাধ্যমে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এজন্য বায়ুদূষণ রোধে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত সেগুলো হলো-
যানবাহনে CNG গ্যাসের ব্যবহার বৃদ্ধি করা। শিল্পকারখানার চিমনি উঁচু করা ও বিষাক্ত গ্যাস নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করা; যানবাহনে সীসামুক্ত জ্বালানি ব্যবহার করা অর্থাৎ জনবসতি এলাকায় শিল্পকারখানা স্থাপন বন্ধ করা এবং রাস্তার আশেপাশে ব্যাপক বৃক্ষরোপণ করা।
উপরিউক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণের মাধ্যমে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা অনেকাংশেই সম্ভব হবে। এতে মানুষ বায়ুদূষণজনিত রোগ থেকে মুক্তি পাবে। এভাবে উদ্দীপকের সামি ও সেমন্তি সুস্থ থাকতে পারবে।
৪. নিচের ছকটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক | হাইড্রোজেন |
খ | হিলিয়াম |
গ | অক্সিজেন |
ঘ | নাইট্রোজেন |
ক. বায়ুমন্ডল কী?
খ. জীবের প্রোটিনজাতীয় খাদ্য প্রস্তুতে সাহায্য করে যে গ্যাস তা ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি বায়ুমন্ডলের কোন শ্রেণিবিভাগের ইঙ্গিত করছে বর্ণনা কর।
ঘ. বায়ুমন্ডলের আলোকে উদ্দীপকটি বিশ্লেষণ কর।
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে যে বায়বীয় আবরণ সমগ্র পৃথিবীকে বেষ্টন করে রয়েছে তাকে বায়ুমন্ডল বলে।
খ. জীবের প্রোটিনজাতীয় খাদ্য প্রস্তুতে সাহায্য করে নাইট্রোজেন গ্যাস।
নাইট্রোজেন বায়ুমন্ডলের স্থির গ্যাস। বায়ুমন্ডলে নাইট্রোজেন গ্যাসের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এটি বায়ুমন্ডলের নিষ্ক্রিয় গ্যাস। বায়ুমন্ডলে নাইট্রোজেনের পরিমাণ ৭৮.০৮%। এ গ্যাস বায়ুর আয়তন বৃদ্ধি ও আক্সজেনকে পাতলা করতে সাহায্য করে।
গ. নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন গ্যাস যা বায়ুমন্ডলের প্রথম স্তর উপোস্ফিয়ারকে নির্দেশ করে। উদ্দীপকের অন্যদিকে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম গ্যাস যা বায়ুমন্ডলের এক্সোস্ফিয়ার স্তরকে নির্দেশ করে।
টুপোস্ফিয়ার হলো বায়ুমন্ডলের প্রথম স্তর। এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কি.মি. উর্ধ্ব পর্যন্ত বিস্তৃত। এ স্তরে প্রাণিকুল ও উদ্ভিদকুলের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো বিদ্যমান। তন্মধ্যে নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন গ্যাস এ স্তরে বেশি পরিমাণে থাকে। এ স্তরে বায়ুপ্রবাহের বেগ খুব বেশি। তাপ ও চাপের পার্থক্যের কারণে বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টি হয়। যে কারণে জীবকুলের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বায়ুস্তর।
এক্সোস্ফিয়ার হলো বায়ুমন্ডলের পঞ্চম স্তর। এ স্তরটি ভূপৃষ্ঠের ৬৪০ কি.মি. ঊর্ধ্ব থেকে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। এ স্তরে বায়ু এত বেশি হালকা যে, তার অস্তিত্ব প্রায় বোঝা যায় না। এ স্তর প্রধানত হাইড্রোজেন, হিলিয়াম দ্বারা গঠিত।
ঘ. উদ্দীপকে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন দেওয়া আছে যা বায়ুমন্ডলের গ্যাসীয় উপাদান। উক্ত উপাদানগুলো বায়ুমন্ডলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বায়ুমন্ডলে বিভিন্ন উপাদান রয়েছে তন্মধ্যে নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন পুরো বায়ুমন্ডলের ৯৯ ভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে। এসব গ্যাসীয় উপাদান জীবকুলের জন্য খুবই প্রয়োজন। জীবের প্রোটিনজাতীয় খাদ্য প্রস্তুতে সাহায্য করে নাইট্রোজেন গ্যাস। শুধু তাই নয় এ গ্যাস বায়ুর আয়তন বৃদ্ধি ও অক্সিজেনকে পাতলা করতে সাহায্য করে।
আবার, বায়ুমন্ডলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো অক্সিজেন। এটি একটি স্থির গ্যাস। এ অক্সিজেন প্রাণীর শ্বাস গ্রহণ ও প্রাণিদেহে শক্তি ও উত্তাপ বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। সে কারণে জীবজগতের জন্য অক্সিজেন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হিসেবে বিবেচিত।
বায়ুমন্ডলের উপরের দিকে এক্সোস্ফিয়ার নামে একটি স্তর রয়েছে যেখানে হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম নামক দুটি গ্যাসীয় উপাদান অবস্থিত। এটি বায়ুমন্ডলের একটি স্তর গঠনে সহায়তা করে থাকে। এ গ্যাস দুটি উদিভদ ও প্রাণীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উদ্দীপকে যে চারটি গ্যাসীয় উপাদান রয়েছে তা বায়ুমন্ডল গঠনে সহায়তা করে থাকে। এছাড়া উক্ত গ্যাসগুলো জীবজগতের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান।
৫. মানিক গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে এসে উপলব্ধি করল গ্রামের তুলনায় শহরের বাতাস বেশ গরম। বাইরে বের হলে গাড়ির কালো ধোঁয়াতে চোখ, মুখ যেন বন্ধ হয়ে আসে। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। দুই দিন থাকার পর সে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ল।
ক. বায়ু কী?
খ. সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি শোষণকারী স্তরটি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে মানিকের ভ্রমণকৃত স্থানের বাতাস গরম হওয়ার কারণ কী? বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে মানিকের অসুস্থতার কারণ নিজের ভাষায় বিশ্লেষণ কর।
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে সকল গ্যাসীয় উপাদান দ্বারা পৃথিবী পরিবেষ্টিত তার সাধারণ নাম বায়ু।
খ. সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শোষণকারী স্তরটি হচ্ছে ওজোনোস্ফিয়ার।
ওজোন স্তরটির প্রভাবে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকে। কারণ, এ স্তর না থাকলে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির দহনে প্রাণীর দেহ পুড়ে যেত এবং সমস্ত প্রাণিকুল অন্ধ হয়ে যেত। এ স্তর সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি শোষণ করায় এখানে তাপ ৭৬° সে. পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। তাই ওজোনস্তরের কোনো ক্ষতি হলে বা এটি ফুটো হলে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি ভূপৃষ্ঠে চলে আসবে এবং তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাবে। এতে প্রাণিজগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে।
গ. উদ্দীপকে মানিক ঢাকা শহরে ভ্রমণ করতে আসে। এখানকার বাতাস গরম হওয়ার কারণ হলো বায়ুর সাথে বিভিন্ন ধরনের গ্যাসীয় পদার্থের অতিরিক্ত সংমিশ্রণ।
বায়ুতে বিভিন্ন ধরনের গ্যাসীয় উপাদান রয়েছে। যেমন- নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, হিলিয়াম, ওজোন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, ধূলিকণা। এসব উপাদান বায়ুতে পরিমাণমতো বিদ্যমান। এসব উপাদানের সাথে অতিরিক্ত পরিমাণে কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂), কার্বন মনোক্সাইড (CO), নাইট্রাস অক্সাইড প্রভৃতি মিশ্রিত হলে বায়ু দূষিত হয় এবং উত্তপ্ত হয়।
উদ্দীপকের মানিক ঢাকা শহরের বাতাস গরম অনুভব করার কারণ হচ্ছে এখানে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানা রয়েছে, প্রচুর পরিমাণে যানবাহন চলাচল করে শিল্পকারখানা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে দূষিত গ্যাস কার্বন মনোক্সাইড উৎপাদিত হয় যা বায়ুর সাথে মিশে বায়ুকে উত্তপ্ত করে। আবার, যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ুর সাথে মিশে বায়ুকে দূষিত এবং উত্তপ্ত করে।
তাই বলা যায়, ঢাকা শহরে দূষক সৃষ্টিকারী উৎসগুলো বেশি থাকার কারণে বায়ু স্বাভাবিক না থেকে অস্বাভাবিক অবস্থায় রূপান্তরিত হয়। এবং সাধারণ বায়ুর চেয়ে এ অঞ্চলের বায়ু বেশি গরম।
ঘ. উদ্দীপকের মানিকের অসুস্থতার কারণ হলো বায়ুদূষণ।
মানিক গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে ভ্রমণ করে। এ শহরে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানা, যানবাহন প্রভৃতি অতিরিক্ত পরিমাণে থাকায় বিভিন্ন ধরনের গ্যাস নির্গত হয় যা বায়ুর সাথে মিশে বায়ুকে দূষিত করে।
যানবাহন থেকে যে গাড়ির কালো ধোঁয়া বের হয় সেখানে ক্ষতিকর গ্যাস থাকায় মানবস্বাস্থ্যের জন্য তা হুমকিস্বরূপ। এছাড়া এ শহরের বায়ুতে সিসার পরিমাণ বেশি থাকায় চোখ জ্বালাপোড়া করে এবং শ্বস নিতে কষ্ট হয়। প্রতিনিয়ত যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া ও কলকারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস শহরের বায়ুর সাথে মিশ্রিত হচ্ছে। যার কারণে উক্ত বায়ু গ্রহণ করার কারণে মানুষের এ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, ফুসফুসের ক্ষতি, হৃদরোগের ঝুঁকি, শাসকষ্ট প্রভৃতি রোগের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হয়।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে মানিকের অসুস্থতার জন্য বায়ু দূষণই দায়ী।
৬. ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বৈমানিকগণ হেলিকপ্টার দিয়ে বিভিন্ন কসরত প্রদর্শন করছিলেন। এমন সময় প্যারাট্রুপার আসলাম হেলিকপ্টার থেকে লাফ দিয়ে মাটিতে অবতরণ করলেন। স্টেডিয়ামে বসে এ দৃশ্য উপভোগ করছিল সোমা। এতে সে দারুণ আনন্দ পেল।
ক. ওজোন কী ধরনের গ্যাস?
খ. বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন গ্যাসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
গ. প্যারাট্রুপার আসলাম বায়ুমন্ডলের যে স্তরে বিচরণ করছিলেন তার বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বায়ুমন্ডলীয় স্তর জীবকূলের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ কর।
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ওজোন বায়ুমন্ডলের একটি অস্থায়ী গ্যাস, যা অক্সিজেন অনুর সংমিশ্রণের সৃষ্টি হয়।
খ. বায়ুমন্ডলে যেসব গ্যাসীয় উপাদান আছে তাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস হলো অক্সিজেন।
অক্সিজেন গ্যাস না থাকলে জীবকূলের অস্তিত্ব টিকে থাকতো না। বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন গ্যাসের পরিমাণ ২০.৭১ ভাগ। এ গ্যাস প্রাণীদের শ্বসনকাজে, শক্তি ও উত্তাপ বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হয়। ভূত্বকের শিলা গঠনকারী খনিজের সাথে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সহজেই মিশ্রিত হয়ে বিচূর্ণীভবনে অংশগ্রহণ করে। প্রাণীকূলের বেচে থাকার জন্য অক্সিজেন অপরিহার্য। তাই বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন গ্যাস ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ।
গ. প্যারাট্রুপার আসলাম বায়ুমন্ডলের ট্রপোমন্ডলে বিচরণ করছিল। ট্রপোমন্ডল বায়ুমন্ডলের সর্বনিম্ন স্তর। এ মন্ডলের বৈশিষ্ট্য নিচে আলোচনা করা হলো-
বায়ুমন্ডলের সর্বনিম্ন স্তর হলো ট্রপোমন্ডল। এটি পৃথিবী পৃষ্ঠের সাথে লেগে আছে। পৃথিবীর সর্বোচ্চ পাহাড়-পর্বতগুলো এ স্তরের উচ্চতার তুলনায় নগণ্য।
ট্রপোমন্ডল জীবজগতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর। ঋতুভেদে ও ভিন্ন ভিন্ন অক্ষাংশে এর গভীরতার পার্থক্য হয়। এর গড় গভীরতা প্রায় ১২ km। প্রতি ১,০০০ মিটারে ৬.৪°C তাপমাত্রা কমতে থাকে। এ স্তরের উপরের অংশকে ট্রপোপজ বলে এবং এটি ৫ km পুরু। উচ্চতার দিকে বায়ুতে জলীয়বাষ্প থাকে।
আবহাওয়ায় প্রায় সকল প্রকার উপাদান ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত, মেঘ, তুষারপাত, মিশ্রিত বায়ুপ্রবাহ, বায়ুচাপ প্রভৃতি ট্রপোমন্ডলে বিদ্যমান। এ স্তরে বায়ু উপরে নিচে উঠানামা করে। এর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। আবহাওয়া ও জলবায়ুজনিত যাবতীয় প্রক্রিয়ার বেশিরভাগ এই স্তরে ঘটায়। একে আবহমন্ডল স্তর বলে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত স্তরটি হলো ট্রপোমন্ডল।
উপপাস্ফিয়ার পৃথিবীর বুকে প্রাণের বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ট্রপোস্ফিয়ার মানুষের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় স্তর। এ স্তরের নিম্নভাগে সব ধরনের প্রাণী ও উদিভদ অবস্থান করে। মেঘ, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি এ স্তরেই ঘটে থাকে। জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা, ধোঁয়া প্রভৃতি এ স্তরেই ভেসে বেড়ায়। বায়মন্ডলের ঘনত্ব এ স্তরে সবচেয়ে বেশি। এখানে বিভিন্ন সময় ও অবস্থায় (যেমন- ঝড়ের সময় তাপের তারতম্য ঘটে এবং তাপ ও চাপের পার্থক্যের কারণে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। তাই বলা যায়, এ স্তরটি উদ্ভিদ ও প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর।
ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমায় অবস্থিত পুরু স্তরকে (১.৫ কি, মি, পুরু) ট্রপোপজ বলা হয়। এ স্তরের বায়ু স্থির থাকে। এখানে বায়ুর তাপমাত্রা প্রায় ৫৫° সে, থাকে। ঝড়-বৃষ্টির প্রাদুর্ভাব নেই বলে সুতগামী জেট বিমানগুলো এ স্তর দিয়ে বিনা বাধায় চলাচল করে।
সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয় যে, ট্রপোস্ফিয়ারের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।
ক. বায়ুমন্ডলে কোন গ্যাসের পরিমাণ বেশি?
খ. সমমন্ডল বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ক’ চিহ্নিত স্তরটি বায়ুমন্ডলের কোন স্তর? আলোচনা কর।
ঘ. জীবজগতের মধ্যে ‘গ’ চিহ্নিত স্তরের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বায়ুমন্ডলে নাইট্রোজেন গ্যাসের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। বায়ুমন্ডলে নাইট্রোজেন গ্যাসের পরিমাণ ৭৮.০৮%।
খ. ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে প্রায় ৯০ কি.মি. পর্যন্ত বায়ুমন্ডলের রাসায়নিক গঠন বিশেষ করে বিভিন্ন গ্যাসের অনুপাত প্রয় একই ধরনের থাকে। এজন্য বায়ুমন্ডলের স্তরটিকে সমমন্ডল বলে।
বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন গ্যাসের মধ্যে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বেশি।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘ক’ চিহ্নিত স্তরটি বায়ুমন্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার বা ট্রপোমন্ডল। নিচে ট্রপোমন্ডল বা ‘ক’ চিহ্নিত স্তর আলোচনা করা হলো:
ট্রপোমন্ডল ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তর। এ বায়ুস্তরের গভীরতা সর্বত্র সমান নয়। ঋতুভেদে এবং ভিনণ ভিন্ন অক্ষাংশে গভীরতার পার্থক্য হয়ে থাকে। নিরক্ষীয় অঞ্চলে গভীরতা সর্বোচ্চ ১৬ কিমি. এবং মেরু অঞ্চলে। সর্বোচ্চ গভীরতা ৮ কিমি.। দুটি অঞ্চলের গড় গভীরতা ১৩ কিমি.।
ট্রপোমন্ডলের শেষ সীমাকে ট্রপোজ বলে। এর গভীরতা কম। কোনো ঝড়বৃষ্টি না থাকায় এ অঞ্চলে বিমান চলাচল করে। ট্রপোস্ফিয়ারের প্রতি কিলোমিটার উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বায়ুর তাপমাত্রা গড় হ্রাস পায় ৬.৪° সে.। জীবনধারণের জন্য এ স্তরটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়। মেঘ, বৃষ্টি, কুয়াশা, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক উপসর্গগুলো এ স্তরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। উত্তাপ ও চাপের বিভিন্নতার জন্য এ স্তরের উপরে, নিচে ও পাশে বায়ুপ্রবাহ দেখতে পাওয়া যায়।
ঘ. চিত্রে উল্লিখিত ‘গ’ চিহ্নিত স্তরটি হলো: ওজোনস্তর বা ওজোননাস্ফিয়ার। নিচে ‘গ’ চিহ্নিত স্তর বা ওজোনস্তরের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করা হলো।
ওজোনস্তর সূর্যরশ্মির অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে থাকে। এ স্তরটি না থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির দহনে পৃথিবীর মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী বসবাসের জন্য উপযোগী হতো না। যদি এ অতিবেগুনি রশ্মি অতিমাত্রায় ভূপৃষ্ঠে অনুপ্রবেশ করে তাহলে সকল জীবসত্তার অস্তিত্ব ধ্বংস করে দেবে এবং জীব অস্তিত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। শুধু তাই নয়, ক্যান্সার জাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব প্রকট আকারে দেখা যাবে। ফলে মানবকুলের অধিক প্রাণহানি ঘটবে।
তাই প্রাণিকুলকে টিকিয়ে রাখতে এ স্তরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ স্তরে ধূলিবালি, জলীয়বাষ্প প্রভৃতি পদার্থ অতিসামান্য পরিমাণে থাকে।
উল্লিখিত সবদিক বিবেচনা করে বলা যায়, স্ট্রাটোমন্ডল অর্থাৎ ওজোনমন্ডল খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে।
৮. লাবিব পত্রিকা পড়ে জানতে পারল যে, আমরা যদি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করি তবে তা বায়ুকে কম দূষিত করে। বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন উপাদানের কাতি মান বজায় রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার।
ক. বায়ুতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ কত?
খ. বায়ুদূষণ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে যে দূষণের কথা বলা হয়েছে সেটির কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দূষণ প্রতিরোধে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গৃহীত পদক্ষেপ বিশ্লেষণ কর।
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বায়ুতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ ৭৮.০২%।
খ. বায়ুর স্বাভাবিক অবস্থার নেতিবাচক পরিবর্তনকেই বায়ুদূষণ বলে।
মানুষের বিভিন্ন অপরিকল্পিত কর্মকান্ডের ফলে প্রকৃতিতে বায়ুদূষণ সংঘটিত হয়। এর ফলে জীবকুলের স্বাভাবিক জীবনধারা বাধাগ্রস্ত হয় এবং পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হয়।
গ. উদ্দীপকে বায়ুদূষণ সম্বন্ধে বলা হয়েছে। বায়ুদূষণ বিভিন্ন কারণে হতে পারে।
গাছপালা নিধন, জ্বালানি দহনের ধোঁয়া পরিবেশে নির্গত হওয়া, শিল্পকারখানার বর্জ্য পদার্থের নির্গমন, আবর্জনা, মলমূত্র যত্রতত্র ত্যাগ করা, মোটরগাড়ি থেকে নির্গত গ্যাস, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, কীটনাশক প্রভৃতি কারণে বায়ুদূষণ হতে পারে। আমরা জানি, গাছপালা CO₂, গ্রহণ করে O₂, ত্যাগ করে যা পরিবেশের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করে। আর গাছপালা নিধনের ফলে বৃক্ষ তার CO₂, গ্রহণ ক্ষমতা হারাচ্ছে তাই বায়ুমন্ডলে CO₂ বেড়ে গিয়ে বায়ু দূষিত হচ্ছে। আবার, বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ুমন্ডলে মিলে বায়ুকে দূষিত করে। এদেশে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠায় শিল্পবর্জ্য পদার্থ যত্রতত্র ফেলানোর কারণে বায়ু দূষিত হচ্ছে।
এছাড়া অন্যান্য তেজস্ক্রিয় পদার্থের ব্যবহার, মোটরগাড়ি থেকে নির্গত গ্যাস প্রভৃতি কারণে বায়ুদূষণ হচ্ছে।
ঘ. উদ্দীপকে বায়ুদূষণ সম্বন্ধে বলা হয়েছে। উক্ত দূষণ প্রতিরোধের জন্য পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি অবলম্বন করা প্রয়োজন। উদ্দীপকে উল্লিখিত দূষণ প্রতিরোধে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ নিচে দেওয়া হলো-
সমাজের সকল স্তরের মানুষকে বায়ুদূষণের কারণ ও প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। বায়ুদূষণের বর্তমান অবস্থা পরিমাপের জন্য ব্যাপক জরিপ ও পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। পরিবেশে জনসংখ্যা ভার কমাতে হবে। পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বায়ুদূষণ প্রতিরোধে দেশে বিদ্যমান আইন যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। ইট ভাটায় কাঠের পরিবর্তে কয়লা ব্যবহার করতে হবে। যানবাহনে ডিজেলের পরিবর্তে সিএনজির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ করে প্রচুর বনায়ন সৃষ্টি করতে হবে। নগরায়ণ ও শিল্পায়নের আগে সরকার থেকে অনুমোদন বাধ্যতামূলক করতে হবে যাতে তা পরিকল্পিত হয়। সর্বোপরি জাতিসংঘের পরিবেশ সংশিস্নষ্ট বিশেষ করে বায়ুদূষণ প্রতিরোধে গৃহীত বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের দেশকে যথার্থ ভূমিকা পালন করতে হবে।
উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশে বায়ুদূষণ অনেকটাই রোধ করা সম্ভব হবে।
৯. শিলা তার বাবার কাছ থেকে জানতে পারল পৃথিবীর বায়ুমন্ডল। কতকগুলো স্তরে বিভক্ত। প্রতিটি স্তর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও পৃথিবীতে জীবের বেঁচে থাকার জন্য একটি স্তর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি শোষণ করে নেয়। এছাড়াও আবহাওয়ার পরিবর্তনের জন্য অপর একটি স্তর বিশেষ প্রয়োজনীয়।
ক. বায়ুমন্ডল কাকে বলে?
খ. কী কী কারণে বায়ুদূষণ ঘটে? ব্যাখ্যা কর।
গ. আবহাওয়ার পরিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত স্তরটির বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকে জীবের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য অত্যাবশ্যকীয় স্তরটির গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে যে বায়বীয় আবরণ সমগ্র পৃথিবীকে বেষ্টন করে রয়েছে তাকে বায়ুমন্ডল বলে।
খ. বায়ুমন্ডলের মধ্যে যখন দূষিত ধোঁয়া, গ্যাস, বাম্প ইত্যাদি অনিষ্টকর উপাদানের সমাবেশ ঘটে এবং যার দরুন মানুষ, জীবজন্তু ও উদ্ভিদজগতের ক্ষতি হয়, তখন তাকে বায়ুদূষণ বলে।
আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে উথিত লাভা ভূপৃষ্ঠের আশেপাশের বায়ুকে দূষিত করে। এছাড়া মানবসৃষ্ট কর্মকান্ডে বায়ু বেশি পরিমাণে দূষিত হয়। যেমন মোটর যানবাহন, শিল্পকারখানা, পাওয়ার প্লান্ট, ক্লোরোফ্লুরো কার্বন (CFC), আবর্জনাসমূহ; মোটর যানবাহন থেকে হাইড্রোকার্বন, ইটভাটার ধোঁয়া প্রভৃতি।
গ. আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত স্তরটি হলো ট্রপোমন্ডল।
ট্রপোমন্ডল ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তর। এ বায়ুস্তরের গভীরতা সর্বত্র সমান নয়। ঋতুভেদে এবং ভিনণ ভিন্ন অক্ষাংশে গভীরতার পার্থক্য হয়ে থাকে। নিরক্ষীয় অঞ্চলে গভীরতা সর্বোচ্চ ১৬ কিমি. এবং মেরু অঞ্চলে সর্বোচ্চ গভীরতা ৮ কিমি.। দুটি অঞ্চলের গড় গভীরতা ১৩ কিমি.। ট্রপোমন্ডলের শেষ সীমাকে ট্রপোপজ বলে। এর গভীরতা কম। কোনো ঝড়বৃষ্টি না থাকায় অঞ্চলে বিমান চলাচল করে। ট্রপোস্ফিয়ারের প্রতি কিলোমিটার উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বায়ুর তাপমাত্রা গড়ে হাস পায় ৬.৪° সে.। জীবনধারণের জন্য এ স্তরটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়। মেঘ, বৃষ্টি, কুয়াশা, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক উপসর্গগুলো এ স্তরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। উত্তাপ ও চাপের বিভিন্নতার জন্য এ স্তরের উপরে, নিচে ও পাশে বায়ুপ্রবাহ দেখতে পাওয়া যায়।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত স্তরটি হলো ট্রপোমন্ডল।
ঘ. উদ্দীপকে জীবের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আবশ্যকীয় স্তরটি হলো স্ট্যাটোমন্ডল বা ওজোনমন্ডল। নিচে এর গুরুত্ব বিশ্লেষণ করা হলো:
ওজোনস্তর সূর্যরশ্মির অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে থাকে। এ স্তরটি থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির দহনে পৃথিবীর মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী বসবাসের জন্য উপযোগী হতো না। যদি এ অতিবেগুনি রশ্মি অতিমাত্রায় ভূপৃষ্ঠে অনুপ্রবেশ করে তাহলে সকল জীবসত্তার অস্তিত্ব ধ্বংস করে দেবে এবং জীব অস্তিত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাড়াবে। শুধু তাই নয়, ক্যান্সার জাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব প্রকট আকারে দেখা যাবে। ফলে মানবকুলের অধিক প্রাণহানি ঘটবে। তাই প্রাণিকুলকে টিকিয়ে রাখতে এ স্তরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ স্তরে ধূলিবালি, জলীয়বাষ্প প্রভৃতি পদার্থ অতিসামান্য পরিমাণে থাকে। পরিশেষে বলা যায়, জীবের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ওজোনস্তর গুরুত্বপূর্ণ।
১০. নিচে চিত্রটি পর্যবেক্ষণ কর এবং এর আলোকে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক. ইগজস্ট গ্যাস কী?
খ. বাতাসে CO₂, এর পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে কেন?
গ. চিত্রের সর্বনিম্ন স্তরের বর্ণনা দাও।
ঘ. খ ও ঘ স্তরের তুলনামূলক আলোচনা কর।
১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ইগজস্ট গ্যাস (Exhaust Gases) হলো তেলজাতীয় জ্বালানিসমূহের দহন ক্রিয়ার ফল। যেমন: SO₂, N₂O
খ. CO₂, একটি গ্রিনহাউস গ্যাস।
শ্বসন ক্রিয়াকালে সকল জীব CO₂, গ্যাস বাতাসে ত্যাগ করে এবং সবুজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় CO₂, গ্যাস গ্রহণ করে। বনভূমি ধ্বংস ও গাছপালা নির্বিচারে নিধনের কারণে জীবকুলের ত্যাগ করা সবটুকু CO₂, গ্যাস সবুজ উদ্ভিদ গ্রহণ করতে পারে না। যে কারণে বাতাসে CO₂, গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গ. চিত্রে বায়ুমন্ডলের সর্বনিম্ন স্তরটি হলো ট্রপোস্ফিয়ার। বায়ুমন্ডলের এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্তর।
মেরুর কাছাকাছি ও নিরক্ষীয় অহঞ্চলে ট্রপোস্ফিয়ারের গভীরতা যথাক্রমে ৯ ও ১৭ কি.মি. এবং গড় গভীরতা ১২ কি.মি.।
আবহাওয়ার প্রায় সব ধরনের উপাদান যেমন: ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত, মেঘ, তুষারপাত, শিশির, বায়ুপ্রবাহ, বায়ুচাপ প্রভৃতি এ স্তরে বিদ্যমান। কাজেই জীবমন্ডলের জন্য এ স্তর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ মন্ডলের উষ্ণতা নিরক্ষরেখা থেকে মেরুর দিকে ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে।
ট্রপোমন্ডলের উপরের স্তর হলো ট্রপোসীমা যেখানে বায়ু প্রায় স্থির থাকে। উষ্ণতার কোনো পরিবর্তন হয় না বলে একে সমোষ্ণ অঞ্চলও (Isothermal zone) বলা হয়ে থাকে। এ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির প্রকোপ থাকে না বলে বিমান কোনো রূপ বাধা ছাড়াই চলাচল করে।
ঘ. খ ও ঘ স্তর হচ্ছে যথাক্রমে স্ট্রাটোস্ফিয়ার এবং আয়নোস্ফিয়ার। ট্রপোপজ থেকে ঊর্ধ্বে স্ট্রাটোস্ফিয়ারের বিস্তার প্রায় ৩০ কি.মি.।
ট্রপোপজ থেকে উপরের দিকে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা প্রথমত স্থির থাকে; কিন্তু পরে ক্রমশ বাড়তে থাকে (২০ কি.মি. পর থেকে)। এ ও স্তরে ধূলিকণা ও জলীয়বাষ্পের পরিমাণ খুবই সামান্য এবং স্তরটি প্রায় মেঘশূন্য থাকে। এ স্তরে বাতাস অত্যন্ত হালকা থাকে। এ স্তরে বাতাসের ঊর্ধ্ব বা নিম্নগতি নেই, কিন্তু সমান্তরাল গতি লক্ষ করা যায়। এ স্তরের ঊর্ধ্বসীমাকে বলে স্ট্রাটোপজ (Stratopause) বা স্ট্রাটোবিরতি। এর ওপর থেকে উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে দ্রুতহারে তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
পক্ষান্তরে, আয়োনোস্ফিয়ার বা থার্মোস্ফিয়ার স্তরের ব্যাপ্তি ৬০ থেকে ৮০ কি.মি. পর্যন্ত। মেসোপজ-এর পর থেকেই আয়ন স্তরের সীমানা আরম্ভ হয়। বায়ুর তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় একে বলে থার্মোস্ফিয়ার। এ বৃদ্ধি ১০০০° সে, পর্যন্ত পৌছে। এ স্তরের প্রধান উপাদান হলো আণবিক নাইট্রোজেন ও পারমাণবিক অক্সিজেন। এ দুটি উপাদান সৌরশক্তির অতি শক্তিশালী গামা ও এক্স-রে (X-ray) রান্মকে অনায়াসে শোষণ করে থাকে। এ স্তর থেকে বেতার তরঙ্গ (ক্ষুদ্র ও দাঘ) প্রতিফলিত হয়। যে কারণে বেতার যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে।
0 Comments:
Post a Comment