HSC ভূগোল ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ১ pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 1st Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 1st Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 1st paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-১

HSC Geography
1st Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. প্রাকৃতিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা, যেখানে ভূ-আলড়োন ও তার ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ নিয়ে আলোচনা করে। অনুরূপভাবে অন্য একটি শাখায় সমুদ্র তলদেশের বৈচিত্র্যপূর্ণ ভূমিরূপ ও সমুদ্রস্রোত নিয়ে আলোচনা করে।
ক. ভূমিরূপবিদ্যা কী?
খ. প্রাকৃতিক ভূগোলের প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে প্রথমে উল্লিখিত প্রাকৃতিক ভূগোলের শাখাটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
ঘ.উল্লিখিত প্রাকৃতিক ভূগোল শাখাদ্বয়ের পার্থক্য বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে বিষয় পাঠে পৃথবীর অভ্যন্তরীণ অবস্থা, ভূত্বক ও তার উপাদানসমূহ সম্পর্কে জানা যায়, তাকে ভূমিরূপবিদ্যা বলে।

খ. প্রাকৃতিক ভূগোলের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিষয়বস্তুর বর্ণনা।
সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রাকৃতিক ভূগোলের প্রকৃতি পুনঃপুন পরিবর্তিত হচ্ছে। পৃথিবীর পরিবেশ যেসব জড় উপাদান ও সজীব উপাদান দ্বারা গঠিত তার অবস্থান, বৈশিষ্ট্য প্রভৃতি প্রাকৃতিক ভূগোলের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। অর্থাৎ প্রাকৃতিক পরিবেশের বিশেষ করে বৈচিত্র্যময় ভূমিরূপ ও এর পরিবর্তন প্রক্রিয়া, বায়ুমন্ডল, জলবায়ু ও জীবমন্ডলের গতি-প্রকৃতি পর্যালোচনা করাই হলো প্রাকৃতিক ভূগোল।

গ. উদ্দীপকে প্রথমে উল্লিখিত প্রাকৃতিক ভূগোলের শাখাটি হলো ভূমিরূপবিদ্যা। নিচে ভূমিরূপবিদ্যা শাখাটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হলো।
ভূমিরূপবিদ্যায় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন শ্রেণির ভূত্বক কীভাবে নানারকম পদ্ধতিতে গঠিত হয়েছে তা আলোচনা করা হয়। পর্বত, মালভূমি, সমভূমি, জলাশয় কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে, পৃথিবীর ভূমিকম্প, ভূ-আলোড়ন ও আগ্নেয়গিরি সৃষ্টির কারণ, পরিমাপ, অবস্থান ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও মহাদেশীয় সাঞ্চলন, প্লেট টেকটোনিক, মুক্তিকার সৃষ্টি, শিলার গঠন, বিন্যাস ও পর্বতের গঠন, অবস্থান এবং প্রকারভেদ সম্বন্ধে গুরুত্বারোপ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে সময় ও অঞ্চলের স্কেল বা পরিসরের ভিন্নতা ভূমিরূপের বিশ্লেষণের লক্ষ্য, সামর্থ্য ও সমস্যা বর্ণনা করে।
পরিশেষে বলা যায় ভূমিরূপবিদ্যা ভূত্বক ভূঅভ্যন্তরীণ শক্তি ও সম্পদের সঠিক ব্যবহারে মানুষকে নির্দেশনা দেয়।

ঘ. উদ্দীপকে প্রাকৃতিক ভূগোলের শাখায় হলো ভূমিরূপবিদ্যা ও সমুদ্র বিদ্যা।
ভূমিরূপবিদ্যায় পৃথিবীর সৃষ্টি, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ অবস্থা, ভূআলোড়ন, পাহাড়, পর্বত, বিভিন্ন প্রকার ভূমিরূপ, নদ-নদীর উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ, বায়ুর কার্য, হিমবাহের কার্য প্রভূতি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করে। এ শাখা থেকে আরও জানা যায়, পৃথিবীর উৎপত্তি সংক্রান্ত নানাপ্রকার মতবাদ, সৃষ্টির প্রথম অবস্থায় পৃথিবীর আকার ও আয়তন কেমন ছিল তার বিবরণ, ভূমিকম্প ও ভূআলোড়নের ফলে পৃথিবীর বিভিন্নস্থানে যে নানাপ্রকার ভূমিরূপের সৃষ্টি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জ্ঞান লাভ করা যায়। অন্যদিকে সমুদ্রবিদ্যা শাখায় যাবতীয় সমুদ্র বিষয়ক উপাদান বর্ণনা করা হয়।এ শাখা সমুদ্রের উৎপত্তি, আকার, আয়াতন, পৃথিবী সাগর, মহাসাগর,উপসাগর, সাগরতলের ভূপ্রকৃতি, সমুদ্রস্রোতের কারণ, সমুদ্রস্রোত, সমুদ্র তরঙ্গ ও এর র্কায, সমুদ্রে বসবাসকারী প্রাণি ও উদ্ভিদের বিন্যাস, জোয়ারভাটার প্রভাব, স্থলভাগের উপর সমুদ্রের প্রভাব প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।

২. বিপ্লব স্যার ভূগোল ক্লাসে পড়াতে গিয়ে বললেন, মানুষের জীবনের সাথে ভূগোলের সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পৃথিবীকে জানতে হলে ভূগোল পাঠ প্রয়োজন। প্রতিনিয়ত ভূগোল সম্পর্কে মানুষের ধারণার পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে ভূগোলশাস্ত্রের পরিধি ও গুরুত্ব ব্যাপক।
ক. ভূগোল কাকে বলে?
খ. প্রাকৃতিক ভূগোলের কোন শাখা পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ অবস্থা নিয়ে আলোচনা করে ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের উল্লিখিত বিষয় পাঠের গুরুত্ব বর্ণনা কর।
ঘ. পৃথিবীকে জানতে হলে ভূগোল পাঠের প্রয়োজন উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের সঙ্গে সম্পর্কিত ভৌত ও সামাজিক পরিবেশে মানুষের কর্মকান্ড ও জীবনধারার সামগ্রিক ব্যবস্থাপনাকে ভূগোল বলে।

খ. প্রাকৃতিক ভূগোলের ভূমিরূপবিদ্যা শাখায় পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ অবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
ভূগোলের পরিধি ও বিস্তৃতি ব্যাপক। যে কারণে বিভিন্ন বিষয় আলোচনার জন্য আলাদা শাখা রয়েছে। তন্মধ্যে প্রাকৃতিক ভূগোল একটি; যেখানে প্রকৃতি থেকে সরাসরি যেসব বিষয় পাওয়া যায় তা আলোকপাত করা হয়। এ প্রাকৃতিক ভূগোলের বিস্তৃতিও অনেক। ফলে এ ভূগোলের কয়েকটি উপশাখা রয়েছে। তন্মধ্যে ভূমিরূপবিদ্যা অন্যতম। এখানে পৃথিবীর সৃষ্টি, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ অবস্থা, ভূআলোড়ন, পাহাড়, পর্বত, নদনদীর উৎপত্তি প্রভৃতি বিষয় নিয়ে। আলোচনা করা হয়।

গ. উদ্দীপকে ভূগোল পাঠের কথা বলা হয়েছে। নিচে এর গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো:
পৃথিবীর পৃষ্ঠ, অভ্যন্তরভাগ ও পৃথিবীর বাইরের বায়ুমন্ডলের উপাদান। প্রভৃতি নিয়ে ভূগোলের আলোচনা। এ বিষয় পাঠে জানা যায় পৃথিবীর কোন স্থানের প্রকৃতি ও পরিবেশ কেমন, কোথায় আছে পাহাড়, পর্বত, নদী, সাগর, মালভূমি, সমভূমি ও মরুভূমি এবং এসব গঠনের কারণ ও বৈশিষ্ট্য। এ বিষয় পাঠে পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে কীভাবে জীবজগতের উদ্ভব হয়েছে সে বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত ধারণা অর্জন করা যায়। এছাড়া কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে মানুষের সামাজিক পরিবেশের কী পরিবর্তন হয়েছে তা জানা যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো কেন সৃষ্টি হয়, এদের নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো কী ক্ষতি করে তাও জানা যায়। এ অর্থে ভূগোল পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। বিজ্ঞান যত আধুনিক হচ্ছে ভূগোলের গুরুত্বও তত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঘ. উদ্দীপকে আলোচিত বিষয়টি হলো ভূগোল। পৃথিবীকে জানতে হলে ভূগোল পাঠের প্রয়োজন।
মানবজীবনে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভূগোলের বিচরণ লক্ষ করা যায়। যেমন- ভূমিরূপবিদ্যা, জলবায়ুবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, জীবভূগোল প্রভৃতি।
ভূমিরূপবিদ্যায় যে বিষয়গুলো রয়েছে তা হলো- পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ অবস্থা, নদনদীর উৎপত্তি, ভূমিকম্প, পাহাড়-পর্বত,মৃত্তিকার গঠন প্রকৃতি, হিমবাহের কার্য প্রভৃতি। এর মাধ্যমে পৃথিবীর কোন অঞ্চলে বসতি গড়ে উঠবে তা নির্ণয়ে করা যায়। এ বিষয় পাঠের মাধ্যমে পৃথিবীর কোন অঞ্চলের ভূমি কীরূপ এবং তার ভিত্তিতে কোন অঞ্চলে কোন ধরনের কৃষি ব্যবস্থা গড়ে উঠবে তা জানা যায় এবং এর ওপর ঐ ভিত্তি করে ঐ অঞলে কোন ধরনের বসতি গড়ে উঠবে তাও জানা যায়। জলবায়ুবিদ্যা ভূগোলের আরেকটি শাখা। এর মাধ্যমে পৃথিবীর কোনো অঞ্চলের বায়ুর তাপ, আর্দ্রতা, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি কেমন হবে তা জানা যায়। সমুদ্রবিদ্যা ভূগোলের আরেকটি শাখা। এর মাধ্যমে সমুদ্রের উৎপত্তি, সমুদ্রস্রোত, জোয়ারভাটা, স্থলভাগের ওপর সমুদ্রের প্রভাব প্রভৃতি বিষয় জানা যায়। আর এসব বিষযয়ের ওপর ভিত্তি করে সমুদ্রের তীরবর্তী মানুষের জীবনপ্রণালি, জোয়ারভাটার ফলে উপকূলবর্তী অঞ্চলের মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য কেমন হয় তাও জানা যায়। এছাড়া জীবভূগোলও ভূগোলের আরেকটি শাখা। এ শাখার অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহ হচ্ছে- উদ্ভিদের উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ, পরিবেশের ওপর উদ্ভিদের প্রভাব, অঞ্চলভেদে উদ্ভিদের বিস্তরণ, উদ্ভিদের বিন্যাস, পশুপাখি ও মানুষের ওপর উদ্ভিদের প্রভাব ও মৃত্তিকা প্রভৃতি।
তাই বলা যায়, পৃথিবীর যেকোনো বিষয় জানার জন্য ভূগোল পাঠ প্রয়োজন।

৩. তারেক স্যার ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বললেন, ভূমিরূপবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, জলবায়ুবিদ্যা সম্পর্কে সকলের জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। আলোচনা থেকে ছাত্র-ছাত্রী উপলদ্ধি করল এ বিষয়গুলো জানতে হলে প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠ অতি প্রয়োজন।
ক. প্রাকৃতিক ভূগোল কাকে বলে?
খ. বৃষ্টিপাতের কারণ প্রাকৃতিক ভূগোলের কোন শাখার আলোচ্য বিষয়- ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয় ছাড়াও প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠে আরও যা জানা যায় তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয়গুলোর সাথে প্রাকৃতিক ভূগোলের সম্পর্ক বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূগোলশাস্ত্রের যে শাখায় পৃথিবীর জন্ম, পৃথিবীর বৈচিত্র্যময় ভূমিরূপ এবং এর পরিবর্তন প্রক্রিয়া, বায়ুমন্ডল, বারিমন্ডল, জীবমন্ডল প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করে, তাকে প্রাকৃতিক ভূগোল বলে।

খ. বৃষ্টিপাতের কারণ প্রাকৃতিক ভূগোলের জলবায়ুবিদ্যা বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত।
প্রাকৃতিক ভূগোলের যে শাখাগুলো রয়েছে তন্মধ্যে জলবাযুবিদ্যা অন্যতম। জলবায়ুবিদ্যায় যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত তা হলো, বায়ুর তাপ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, বায়ুর আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাতের কারণ, শ্রেণিবিভাগ প্রভৃতি। তাই বলা যায়, বৃষ্টিপাতসংক্রান্ত বিষয়গুলো জলবায়ুবিদ্যা শাখার অন্তর্ভুক্ত।

গ. উদ্দীপকে প্রাকৃতিক ভূগোলের যেসব বিষয়গুলো দেওয়া আছে উক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও জীবভূগোল রয়েছে। জীবভূগোল পাঠের মাধ্যমেও বিভিনণ বিষয় সম্বন্ধে অবগত হওয়া যায়।
জীবভূগোল ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। এ শাখার অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহ হচ্ছে স্থানভেদে উদ্ভিদের উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ, পরিবেশের ওপর উদ্ভিদের প্রভাব, অঞ্চলভিত্তিক উদ্ভিদের বিস্তরণ, উদ্ভিদের বিন্যাস, পশুপাখি ও মানুষের ওপর উদ্ভিদের প্রভাব, মানুষ ও প্রাণিকুলের বৃদ্ধিতে সংশিস্নষ্ট অঞলের জলবায়ু, মৃত্তিকা ও অন্যান্য ভৌগোলিক উপাদানসমূহ। এ শাখা থেকে পৃথিবীর ভূ-আচ্ছাদন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করা যায় এবং কী ধরনের পদক্ষেপ নিলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা যাবে সে সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা যায়।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের প্রাকৃতিক ভূগোলের শাখা ভূমিরূপবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, জলবায়ুবিদ্যার মতো জীবভূগোলও ভূগোলের উল্লেখযোগ্য শাখা যেখানে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যায়।

ঘ. উদ্দীপকে প্রাকৃতিক ভূগোলের তিনটি শাখা (ভূমিরূপবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা ও জলবায়ুবিদ্যা) দেওয়া হয়েছে। উক্ত তিনটি শাখার সাথে প্রাকৃতিক ভূগোলের আন্তঃসম্পর্ক রয়েছে।
ভূমিরূপবিদ্যায় যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত তা হচ্ছে ভূমির গঠন প্রকৃতি, ভূঅভ্যন্তরের গঠন, ভূআলোড়ন, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, শিলা ও খনিজ প্রভৃতি যা প্রাকৃতিকভাবে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হয়। আবার আমরা জানি, পৃথিবীপৃষ্ঠ সমতল নয়, কোথাও উচু কোথাও নিচু। নিচু অংশে পানি জমা হয়ে নদনদী, সাগর, মহাসাগর, সমুদ্রস্রোত, জোয়ারভাটা প্রভৃতি সষ্টি হয়েছে যা সমুদ্রবিদ্যায় আলোচনা করা হয়। এসব বিষয় প্রতিনিয়ত সঞ্চরণশীল যা প্রাকৃতিকভাবেই হয়ে থাকে এবং তা প্রাকৃতিক ভূগোলের আওতাভুক্ত। অন্যদিকে, আবহাওয়া ও জলবায়ুবিদ্যায় বাযুমন্ডলে কোন ধরনের অবস্থা বিরাজ করছে অর্থাৎ কোন অঞ্চলের বায়ু শুষ্ক, কোন অঞলে আর্দ, কোথায় বৃষ্টিপাত হবে, কোন অঞ্চলের জলবায় সমভাবাপন্ন না-কি চরমভাবাপন্ন প্রভৃতি বিষয়ও প্রাকৃতিকভাবেই সংঘটিত হয়। যে কারণে এটিও প্রাকৃতিক ভূগোলের আওতাভুক্ত।
সুতরাং বলা যায়, উপরে বর্ণিত বিষয়ের সাথে প্রাকৃতিক ভূগোলের নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান।

৪. ক্লাসে শোভন তার শিক্ষকের নিকট মহাসাগর সৃষ্টির ইতিহাস জানতে চাইলে শিক্ষক বললেন- পৃথিবী সৃষ্টির ইতিহাস থেকে শুরু করে পৃথিবীর আবহাওয়া, জলবায়, পাহাড়, পর্বত, সাগর, মহাসাগর, মালভূমি, সমভূমি, নদনদী, মৃত্তিকা, উদ্ভিদ ইত্যাদি সম্পর্কে ভূগোলের নির্দিষ্ট শাখায় আলোচনা করা হয়েছে। যা পাঠে তুমি এ সম্পর্কে জানতে পারবে।
ক. প্রাকৃতিক ভূগোলের বিষয়বস্তুকে কয়টি শ্রেণিবিভাগের মাধ্যমে আলোচনা করা হয়?
খ. অশ্মমন্ডল বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে শোভনের শিক্ষক ভূগোলের কোন শাখার। কথা বলেছেন তা আলোচনা কর।
ঘ. উদ্দীপকে শিক্ষক যে শাখার কথা ইঙ্গিত দিয়েছেন তোমার দৃষ্টিতে সে শাখা অধ্যয়নের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রাকৃতিক ভূগোলের বিষয়বস্তুকে চারটি শ্রেণিবিভাগের মাধ্যমে আলোচনা করা হয়।

খ. পৃথিবীর উপরিভাগকে অশ্মমন্ডল বা শিলামন্ডল বলে।
এটি ভূঅভ্যন্তরের উপরের অংশ। এর গভীরতা ৬০ কিমি, ঘনত্ব ২.৯, আপেক্ষি গুরুত্ব ২-৩ এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০০০ সেলসিয়াস। প্রকৃতপক্ষে এটি ভূমন্ডলের খাড়া অংশ যা অ্যাসথেনোস্ফিয়ারের ওপর ভাসমান অবস্থায় থাকে। সমগ্র অশ্মমন্ডলে সিলিকন (Si) ও ম্যাগনেসিয়াম (mg) এর প্রাধান্য থাকায় বিজ্ঞানীরা এই মন্ডলকে সিমা। (Sima) নামে অভিহিত করেছেন।

গ. উদ্দীপকে শোভনের শিক্ষক প্রাকৃতিক ভূগোলের কথা বলেছেন। ভূগোলের যে অংশ পাঠ করলে পৃথিবীর জন্ম, ভূপ্রকৃতি অর্থাৎ পাহাড়, পর্বত, বায়ুমন্ডল, বারিমন্ডল প্রভৃতি বিষয় বিস্তারিতভাবে জানা যায় তাকে প্রাকৃতিক ভূগোল বলে। পৃথিবীর পরিবেশ তিনটি অজীব। উপাদান বায়ুমন্ডল, বারিমন্ডল, অশ্মমন্ডল এবং একটি সজীব উপাদান জীবমন্ডল নিয়ে মোট চারটি উপাদান দ্বারা গঠিত। এ শাখা বিশ্বপ্রকৃতি হিসেবে মহাবিশ্বে এবং সৌরজগতের উৎপত্তি ও বিকাশ, এদের অবস্থান ও গাণিতিক পরিমাপ প্রভৃতি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করে। এ শাখায় পৃথিবীর পরিবেশের জন্য শক্তির উৎস, সৌরশক্তির বিন্যাস, বাস্ততন্ত্রের বিভিন্ন চক্র প্রভৃতি প্রাকৃতিক বিষয়াবলির বর্ণনা করে। এটি প্রাকৃতিক ভিত্তি হিসেবে পানির পরিবেশ, বায়ুমন্ডলীয় পরিবেশ, উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্পর্কে আলোকপাত করে। এটি পৃথিবীর অভ্যন্তর ও শিলামন্ডল, বিভিন্ন ভূগাঠনিক প্রক্রিয়া, ভূআলোড়ন, অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিরূপ গঠন শক্তি এবং এর ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ, মহাদেশ সালন প্রভৃতি সম্পর্কে আলোচনা করে।

ঘ. উদ্দীপকে শিক্ষক প্রাকৃতিক ভূগোল সম্পর্কে ইঙ্গিত দিয়েছেন যা অধ্যয়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
করপে পৃথিবী সৃষ্টি হলো, কী প্রকারে বাম্পীয় ও তরল অবস্থার মধ্য দিয়ে পৃথিবী বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে। অর্থাৎ কীরূপে পৃথিবীর জলভাগ, স্থলভাগ ও বায়ুমন্ডলের উৎপত্তি হলো, এসব আমরা প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের মাধ্যমে জানতে পারি। এছাড়া ভূপৃষ্ঠের আজ যেখানে পাহাড় -পর্বত, কয়েক হাজার বছরের বিবর্তনের ফলে সেসব স্থান হয় সমুদ্র, না হয় সমভূমিতে পরিণত হচেছ এবং এরূপ পরিবর্তনে সাগর হয় সমভূমি বা পাহাড় পর্বতে অথবা সমভুমি হয় পাহাড় না হয় সাগরে রূপান্তরিত হচ্ছে। কোনো কোনো স্থান ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাতের ফলে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। মানুষের কর্মকান্ড, বিশেষ করে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড, সংস্কৃতি বিকাশ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার পরিবেশগত পটভূমি বিশ্লেষণ অতীব প্রয়োজন। তাই প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়ন অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে।

৫. ইনান ভূগোল বিষয়ক একটি জার্নাল পড়ছিল। সে দেখতে পায় যে ভূগোলের একটি বিশেষ শাখা প্রাকৃতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করে। যার মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর জন্ম, ভূ-গঠন, পাহাড়-পর্বত, নদনদী, সমুদ্র, বায়ুমন্ডল প্রভৃতি। সে বুঝতে পারে ভূগোলের এই শাখাটি শুধু ছাত্র/ছাত্রীদের জন্যই নয় সর্বসাধারণের জন্যও জ্ঞানের একটি অন্যতম বিষয়।
ক. প্রাকৃতিক ভূগোল কী?
খ. জীবমন্ডল বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত ভূগোল শাখাটির পরিসর সম্পর্কে তোমার মতামত দাও।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে ভূগোলের বিশেষ শাখাটির গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূগোলশাস্ত্রের যে শাখায় পৃথিবীর জন্ম, পৃথিবীর বৈচিত্র্যময় ভূমিরূপ এবং এর পরিবর্তন প্রক্রিয়া, বায়ুমন্ডল, বারিমন্ডল, জীবমন্ডল প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করে, তাকে প্রাকৃতিক ভূগোল বলে।

খ. শিলামন্ডল, বায়ুমন্ডল ও বারিমন্ডলের যে অংশে জীব বসবাস করে সেই অংশকে সামগ্রিকভাবে জীবমন্ডল বলা হয়।
জীবমন্ডল মূলত উদ্ভিদ ও প্রাণী নিয়ে আলোচনা করে। জীবমন্ডলের অন্তর্গত সব ধরনের প্রাণী ও উদ্ভিদ এবং এদের কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণকারী সমস্ত জটিল জৈবনিক প্রক্রিয়াগুলো জীবমন্ডলের আওতাভুক্ত।

গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত ভূগোলের শাখাটি হলো প্রাকৃতিক ভূগোল। ভূমিরূপবিদ্যা, জলবায়ুবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা ও জীবমন্ডলের সমন্বয়ে গড়ে ওঠেছে প্রাকৃতিক ভূগোলের পরিসর।
উদ্দীপকে আলোচিত বিষয়সমূহ যেমনত প্রাকৃতিক ভূগোল আবহাওয়া ও জলবায়ু, মৃত্তিকা, উদ্ভিদ, প্রাণী, পানি ও এর বিভিন্ন রূপ ও ভূমিরূপের স্থানিক প্যাটার্ন বা ধরনসমূহ অধ্যয়ন করে থাকে। এর সম্পর্কযুক্ত বিষয়গুলো হলো- বায়ুমন্ডল, মহাদেশ, মরুভূমি, দ্বীপ, ভূমিরূপ, মহাসাগর, নদী, জলবায়ু, হ্রদ, উদ্ভিদ ও প্রাণী ইত্যাদি।
উদ্দীপকে আলোচিত বিষয় সমূহ যেমনত পৃথিবীর জন্ম, ভূগঠন, পাহাড় পর্বত, নদনদী, সমুদ্র প্রভৃতি প্রাকৃতিক ভূগোলের পরিসরের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ প্রকৃতির সব কিছুই প্রত্যক্ষভাবে প্রাকৃতিক ভূগোলের অন্তর্ভুক্ত।

ঘ. উদ্দীপকে ভূগোলের বিশেষ শাখাটি হলো প্রাকৃতিক ভূগোল। স্থান ও সময়ের প্রেক্ষিতে মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে যে আন্তঃসম্পর্ক নির্দেশ করে তাকে প্রাকৃতিক ভূগোল বলে।
প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের মাধ্যমে আমরা পৃথিবী সম্পর্কে জানতে পারি। পৃথিবীর উপরিভাগ ও অভ্যন্তরভাগ সম্পর্কে অর্থাৎ পৃথিবীর জন্ম, জলভাগ, স্থলভাগ, বায়ুমন্ডলের উৎপত্তি, পাহাড়া, পর্বত, সমুদ্র, নদনদী ইত্যাদি সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। এছাড়া পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ অবস্থা, শিলা, খনিজ, ভূআলোড়ন সৃষ্ট ভূমিরূপ ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়। বারিতত্ত্ব প্রাকৃতিক ভূগোলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা। এই বিষয় পাঠের মাধ্যমে সাগর, মহাসাগর, এদের আযতন, গভীরতা, পানির বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানা যায়। বর্তমান জনসংখ্যার প্রয়োজন মেটাতে বাধ্য হয়েই মানুষের হাত বাড়াতে হচ্ছে সমুদ্র সম্পদের দিকে। তাই সমুদ্রতত্ত্বে সমুদ্র সম্পদ আহরণ ও অনুসন্ধান বিষয়ে জ্ঞান লাভের জন্য প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠ গুরুত্বপূর্ণ।
সুতরাং পৃথিবীর জলভাগ, স্থলভাগ ও বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের গুরুত্ব অপরিসীম।

৬. কয়েকদিন থেকে চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। আজ চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ও ভারতের দিবা-রাত্রির প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানাচ্ছে, চট্টগ্রামে আজ সকালে আবহাওয়া ঠিক না থাকলেও বিকালের দিকে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ক. প্রাকৃতিক ভূগোল কী কী নামে পরিচিত?
খ. প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের গুরুত্ব লিখ।
গ. উদ্দীপকে আলোচিত বিষয় প্রাকৃতিক ভূগোলের কোন শাখায় আলোচনা করা হয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত শাখাটি পাঠের মাধ্যমে আমরা কোন কোন বিষয় সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি? বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রাকৃতিক ভূগোল Geosystem এবং Physiography নামে পরিচিত।

খ. প্রাকৃতিক ভূগোল আবহাওয়া ও জলবায়ু, মৃত্তিকা, উদ্ভিদ, প্রাণী, পানি ও এর বিভিন্ন রূপ এবং ভূমিরূপের স্থানিক ধরন আলোচনা করে থাকে।
প্রাকৃতিক ভূগোল মূলত মানুষ কীভাবে প্রকৃতির ওপর প্রভাববিস্তার করে সে বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান ও বিশ্লেষণ প্রদান করে। এর ক্ষেত্র বা পরিসরগুলো হলোত ভূমিরূপবিদ্যা, জলবায়ুবিদ্যা, সমুদ্র ভূগোল, মৃত্তিকা ভূগোল ও জীবভূগোল প্রভৃতি। প্রাকৃতিক ভূগোল উল্লিখিত বিষয়গুলো নিয়ে সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান করে থাকে। তাই সমগ্র পৃথিবীকে জানার জন্য প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের গুরুত্ব রয়েছে।

গ. উদ্দীপকের আলোচিত বিষয় প্রাকৃতিক ভূগোলের জলবায়বিদ্যা শাখার আলোচনা করা হয়।
প্রাকতিক ভূগোলের যে শাখায় আবহাওয়া, বায়ুর তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত, বৃষ্টিপাতের কারণ, ধরন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তাই জলবায়ুবিদ্যা। জলবায়ুর অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অবস্থা সম্পর্কে ধারণা নিতে জলবায়ুবিদ্যা শাখার অনুধাবন জরুরি। আর আবহাওয়া, বৃষ্টিপাত, তাপ, চাপ, আর্দ্রতা প্রভৃতি সবই জলবায়ুবিদ্যা শাখার অন্তর্ভুক্ত।
উদ্দীপকে চট্টগ্রামের আবহাওয়ার পূর্বাভাসের কথা বলা হয়েছে। কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টি। আজ সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের দিবা-রাত্রি প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ হওয়ার কথা। তবে সেখানে আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলে দিচ্ছে সেখানে ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ধরনের আবহাওয়া, বৃষ্টিপাত সম্পর্কিত তথ্যসমূহ জলবায়ুবিদ্যায় আলোচনার বিষয়। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে চট্টগ্রামের বৃষ্টিপাতের ঘটনাটি জলবায়ুবিদ্যা শাখার আলোচ্য বিষয়।

ঘ. উদ্দীপকে যে বিষয় আলোচনা করা য়হছে তা জলবায়ুবিদ্যা শাখার অন্তর্ভুক্ত। প্রাকৃতিক ভূগোলের যে শাখায় আবহাওয়া, বায়ুর তাপ, চাপ, আদ্রতা, বৃষ্টিপাত, বৃষ্টিপাতের কারণ, ধরন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় তাই জলবায়ুবিদ্যা। এ শাখাটি প্রাকৃতিক ভূগোলের একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান।
উক্ত পাঠের মাধ্যমে আমরা জলবায়ু বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় যেমন বৃষ্টিপাত, বৃষ্টিপাতের কারণ, ধরন, বায়ুর তাপ, চাপ, এত সম্পর্কে ধারণা পাই। এছাড়া বায়ুস্তর বিন্যাস বায়ুর গঠন, ধর্ম, তাপ, চাপ, শ্রেণিবিভাগ, বায়ুপ্রবাহ জলবায়ুর প্রকারভেদ ও জলবায়ু অঞল সম্পর্কেও বিস্তর ধারণা পাওয়া যায়।

HSC ভূগোল ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ১ pdf download

৭. একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের কাছে ভূগোল বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইল। শিক্ষক বললেন, যত দিন যাচ্ছে ভূগোল সম্পর্কে মানুষের ধারণা পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে এর পরিসর অনেক বিস্তৃত এবং গুরুত্ব অনেক বেশি।
ক. Geography কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন কে?
খ. প্রাকৃতিক ভূগোলের প্রকৃতি কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. শিক্ষার্থীদের জানতে চাওয়া বিষয়ের পরিসর ব্যাখ্যা কর।
ঘ.শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের উল্লিখিত বিষয়ের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. গ্রিক ভূগোলবিদ ইরাটসথেনিস সর্বপ্রথম Geography কথাটি ব্যবহার করেন।

খ. প্রাকৃতিক ভূগোলের প্রকৃতি হলো পৃথিবীতে প্রাকৃতিক বিষয়ের মধ্যে কী ধরনের কার্যকরণ সে সম্পর্কে পর্যালোচনা করা।
সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রাকৃতিক ভূগোলের প্রকৃতি পুনঃপুন পরিবর্তিত হচ্ছে। পৃথিবীর পরিবেশ যেসব জড় উপাদান ও সজীব উপাদান দ্বারা গঠিত তার অবস্থান, বৈশিষ্ট্য প্রভৃতি প্রাকৃতিক ভূগোলের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। অর্থাৎ প্রাকৃতিক পরিবেশের বিশেষ করে বৈচিত্র্যময় ভূমিরূপ ও এর পরিবর্তন প্রক্রিয়া, বায়ুমন্ডল, জলবায়ু ও জীবমন্ডলের গতি-প্রকৃতি পর্যালোচনা করাই হলো প্রাকৃতিক ভূগোল।

গ. উদ্দীপকে শিক্ষার্থীদের জানতে চাওয়া বিষয় হচ্ছে ভূগোলের পরিসর বা ক্ষেত্র।
স্থান ও কালভেদে মানুষ ও পরিবেশের সাথে আন্তঃসম্পকের্র বিষয় ভূগোলের প্রধান উপাদান। বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশ, নতুন নতুন যন্ত্র উদ্ভাবন, চিন্তা ধারণার বিকাশ, সমাজের মূল্যবোধ পরিবর্তন প্রভৃতি কারণে ভূগোলের ক্ষেত্র বা পরিসরের অনেক ব্যাপ্তি ঘটেছে।
যেমন- ভূমিরূপবিদ্যা, জলবায়ুবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, মৃত্তিকাবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, জনসংখ্যা ভূগোল, কৃষি ভূগোল, নগর ভূগোল, রাজনৈতিক ভূগোল, সাংস্কৃতিক ভূগোল প্রভৃতি হচ্ছে ভূগোলের ক্ষেত্র বা পরিসর। পৃথিবীপৃষ্ঠের গঠন প্রকৃতি যা ভূমিরূপবিদ্যায় আলোচনা করা হয়।
বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা, বায়ুপ্রবাহ, যা জলবায়ুবিদ্যায় আলোচিত হয়। মাটির গঠন, বুনট, যা মৃত্তিকাবিদ্যায় আলোচনা করা হয়। সমুদ্রের তলদেশের অবস্থা, সমুদ্রস্রোত, জোয়ারভাটা, যা সমুদ্রবিদ্যায় আলোচনা করা হয়। কোন অঞ্চলে কোন ধরনের উদ্ভিদ জন্মে এবং অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশভেদে কোন ধরনের ফসল জন্মে তা উদ্ভিদ ভূগোলের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। এছাড়া মানবীয় যেসব কর্মকান্ড; যেমন- জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অভিগমন, জন্মহার, মৃত্যুহার প্রভৃতি যা জনসংখ্যা ভূগোলের মাধ্যমে জানতে পারি।
এভাবে প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে তথ্যবহুল ধারণা পেতে হলে স্ব স্ব বিষয়সংক্রান্ত ভূগোল পাঠ অত্যন্ত জরুরি যা ভূগোলের পরিধির ব্যাপকতা আরও বাড়ি দেয়।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয় হচ্ছে ভূগোল, যার গুরুত্ব অপরিসীম।
মানুষ প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে এ পৃথিবীতে বাঁচতে পারে না। আর ভূগোল হলো সব প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের জননী। পৃথিবীর কোন স্থানে কোন পাহাড়া, পর্বত, নদী, মরুভূমি, সমভূমি, মালভূমি অবস্থান করছে, এদের গঠনের কারণ এবং গঠন বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করতে হলে ভূগোল পাঠ করা প্রয়োজন।
পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, বায়ুর আর্দ্রতা, মাটির গঠন, জলবায়ুর ধরন, সমুদ্রস্রোত তথা বিশাল বারিমন্ডল প্রভৃতি প্রাকৃতিক বিষয় সম্পর্কে বিজ্ঞানসম্মত তথ্যবহুল ধারণা পেতে ভূগোল পাঠ অত্যন্ত জরুরি। শুধু তাই নয়; ভূগোলশাস্ত্রটি এত ব্যাপক যে, শুধু প্রাকৃতিক বিষয় এর আওতায় পড়েনা। প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে মানুষের অর্থনৈতিক জীবন গড়ে উঠেছে সে সম্পর্কেও ভূগোল আলোচনা করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কৃষিকাজের পদ্ধতি ও শস্যের প্রকার, শিল্প ও বাণিজ্যের অবস্থা, যানবাহনের সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি সম্বন্ধে জানতে হলে ভূগোল পাঠ করা প্রয়োজন। অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণের জন্যও ভূগোলের জ্ঞান আবশ্যক। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যেমন ভৌগোলিক সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রীয় সীমানা প্রভৃতি ক্ষেত্রে ভূগোলের জ্ঞান অপরিহার্য। শিল্প ও নগর গড়ে ওঠার পেছনে যেসব ভৌগোলিক নিয়ামক দরকার তা আমরা ভূগোল পাঠের মাধ্যমে জানতে পারি। এছাড়া শিক্ষা, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, আচার-আচরণ। প্রভৃতি সম্পর্কেও ভূগোল পাঠের মাধ্যমে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়।
পরিশেষে বলা যায়, প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, আঞ্চলিক, সামাজিক প্রভৃতি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভূগোলের জ্ঞান অত্যাবশ্যক। তাই মানবজীবনে ভূগোলের গুরুত্ব অপরিসীম।

৮. আর্থার হোমস প্রাকৃতিক পরিবেশকে নিয়ে আলোচনা করে ভূগোলের বিশেষ একটি শাখাকে সংজ্ঞায়িত করেন। জার্মান ভূগোলবিদ কার্ল রিটার বহু বছর ভূগোলের এ শাখা নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি উক্ত শাখাটির গুরুত্ব বিশ্ববাসীর নিকট তুলে ধরেন। বর্তমানে এর গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ক. শিলামন্ডল কাকে বলে?
খ. উপকূলীয় ভূগোল বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকের আলোকে ভূগোলবিদদের আলোচিত বিষয়টির পরিসর ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ লাইনটির সাথে তুমি কী একমত? স্বপক্ষে যুক্তি দাও।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পৃথিবীর উপরের কঠিন ও পাতলা শিলাস্তরকে অশ্মামন্ডল বা শিলা মন্ডল বলে।

খ. বিভিন্ন দেশে সমুদ্র উপকূল ভাগ ও এর সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মানবিক বিষয় ভূগোলের যে অংশে আলোচনা করা হয় তাকেই উপকূলীয় ভূগোল বলে।
সমুদ্র উপকূলীয় মানুষের জীবন, জোয়ারভাটা প্রভাবিত ঘটনা, উপকূলীয় দুর্যোগ প্রভৃতি বিষয় এ অংশে আলোচিত হয়।

গ. উদ্দীপকে ভূগোলবিদদের আলোচিত বিষয়বস্তু হলো প্রাকৃতিক ভূগোল যার পরিসর ব্যাপক। নিচে প্রাকৃতিক ভূগোলের পরিসর ব্যাখ্যা করা হলো-
প্রাকৃতিক ভূগোল আবহাওয়া ও জলবায়ু, মৃত্তিকা, উদ্ভিদ, প্রাণী, পানি ও এর বিভিন্ন রূপ এবং ভূমিরূপের স্থানিক ধরন আলোচনা করে থাকে। প্রাকৃতিক ভূগোল মূলত মানুষ কীভাবে প্রকৃতির ওপর প্রভাববিস্তার করে সে বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান ও বিশ্লেষণ প্রদান করে। এর ক্ষেত্র বা পরিসরগুলো হলো -ভূমিরূপবিদ্যা, জলবায়ুবিদ্যা, সমুদ্র ভূগোল, মৃত্তিকা ভূগোল ও জীবভূগোল প্রভৃতি। প্রাকৃতিক ভূগোল উল্লিখিত বিষয়গুলো নিয়ে সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান করে থাকে।
যেহেত প্রাকৃতিক সকল বিষয় নিয়ে প্রাকৃতিক ভূগোল আলোচনা করে তাই বলা যায় প্রাকৃতিক ভূগোলের পরিসর ব্যাপক।

ঘ. উদ্দীপকের শেষ লাইনটি হলো বর্তমানে এর (প্রাকৃতিক ভূগোলের) গুরুত্ব আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। নিচে উক্তিটির সপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হলো-
বর্তমান সময়ে প্রাকৃতিক ভূগোলের বিষয়বস্তুর সম্প্রসারণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহুগুণে বেড়েছে।
কীভাবে পৃথিবী বিভিন্ন বাস্পীয় ও তরল অবস্থার মধ্য দিয়ে বর্তমান রূপ ধারণ করেছে তা আমরা প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠে জানতে পারি। প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের মাধ্যমে ভূত্বকের স্থানিক গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়। ভূপৃষ্ঠ অনেকগুলো প্লেটের সমন্বয়ে গঠিত। বিভিন্ন জায়গায় এ প্লেটগুলোর চলন বিভিন্ন ধরনের হয়। প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের মাধ্যমে এ প্লেটগুলোর চলনের ধরন সম্পর্কে জানতে পারি। প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের অন্যতম গুরুত্ব হলো পৃথিবীর জলবায়ু এ সম্পর্কে বিশদভাবে জানা।এর মাধ্যমে বায়ুমন্ডলের গভীরতা, বায়ুর প্রকারভেদ, স্তরবিন্যাস, বায়ুর উপাদান, বায়ুর তাপ ও চাপ প্রভৃতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারি। এমনকি বায়ুমন্ডলের জলীয়বাষ্প, ঐ বায়ুর আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাতের কারণ, বৃষ্টি বলয়, বৃষ্টিপাতের প্রকারভেদ প্রভৃতি বিষয়ও জানা যায়। প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের মাধ্যমে সমুদ্র সম্পর্কে জানা যায়। এছাড়া পৃথিবীর মহাসাগরসমূহের অবস্থান, আকৃতি, জোয়ারভাটা, সমুদ্রস্রোত এবং এদের প্রভাব সম্পর্কে জানা যায়। এছাড়া প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের মাধ্যমে পৃথিবীর বাইরের সৌরজগৎ ও লক্ষ কোটি তারকারাজি সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়। তাই মানবকল্যাণে প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের গুরুত্ব ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৯. নিচের উদ্দীপকটি দেখ এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

অজৈব উপাদান

জৈব উপাদান

১. ভূপ্রকৃতি

২. নদনদী

৩. জলবায়ু

১. স্বাভাবিক উদ্ভিদ

২. জীবজন্তু

 

ক. ‘মানব ভূমির ধারা’ বলা হয় কোন ভূগোলকে?
খ. অজৈব উপাদানগুলো কোন ভূগোলের অন্তর্গত? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপক অনুসারে উল্লিখিত অজৈব উপাদান প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নে গুরুত্বপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর উদ্দীপকে উল্লিখিত অজৈব ও জৈব উপাদানগুলোর প্রভাব বিশ্লেষণ কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘মানব ভূমির ধারা’ বলা হয় প্রাকৃতিক ভূগোলকে।

খ. অজৈব উপাদানগুলো হলো ভূপ্রকৃতি, নদনদী এবং জলবায়ু। এসব উপাদান প্রাকৃতিক ভূগোলের অন্তর্ভুক্ত। তবে ভূপ্রকৃতি এবং এ নদনদী উপাদানটি প্রাকৃতিক ভূগোলের ভূমিরূপবিদ্যা শাখার এবং জলবায়ু উপাদানটি জলবায়ুবিদ্যা শাখার অন্তর্ভুক্ত।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অজৈব উপাদানগুলো হলো ভূপ্রকৃতি, নদনদী এবং জলবায়ু।। সাধারণত ভূপৃষ্ঠের ধরনকে ভূপ্রকৃতি বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এসব ভূপ্রকৃতি মানুষের অর্থনেতিক কর্মকান্ডের ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাববিস্তার করে। আবার কোনো দেশের অর্থনৈতিক কার্যকলাপের ওপর নদনদীর প্রভাব অত্যন্ত নিবিড়। পূর্বে নদীমাতৃক দেশগুলোতে বড় বড় নদীর তীরে সভ্যতার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল। এছাড়া জলবায়ু মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ওপর যতটা প্রভাববিস্তার করে অন্য কোনো প্রাকৃতিক পরিবেশ ততটা প্রভাববিস্তার করে না। জলবায়ুর পার্থক্যের কারণে বিভিন্ন দেশের মানুষের খাদ্য, পরিধেয় এবং বাসগৃহ নির্মাণপ্রণালির মধ্যে তারতম্য ঘটে থাকে। সুতরাং উল্লিখিত অজৈব উপাদানগুলো মানবজীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা প্রাকৃতিক ভূগোলে আলোচিত হয়ে থাকে।

ঘ. উদ্দীপকে অজৈব উপাদানগুলো হলো ভূপ্রকৃতি, নদনদী ও জলবায়ু এবং জৈব উপাদানগুলো হলো স্বাভাবিক উদ্ভিদ ও জীবজন্তু।
সাধারণত ভূপৃষ্ঠের প্রকৃতি বা ধরনকে ভূপ্রকৃতি বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি বিভিন্ন ধরনের। ভূপ্রকৃতিকে ভূপৃষ্ঠের বন্ধুরতার তারতম্য ও বৈচিত্র্য অনুসারে পর্বত, মালভূমি এবং সমভূমি এ তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কোনো দেশের অর্থনৈতিক কার্যকলাপের ওপর নদনদীর প্রভাব অত্যন্ত নিবিড়।
ভারতীয় সভ্যতার সূতিকাগার গঙ্গা ও সিন্ধুনদের তীরে, চীনের সভ্যতা হোয়াংহো এবং ব্যাবিলনের সভ্যতা ইউফ্রেটিস নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল। মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ওপর জলবায়ু যতটা প্রভাববিস্তার করে, অন্য কোনো প্রাকৃতিক পরিবেশ ততটা প্রভাববিস্তার করে না। মানুষের বাঁচার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান। এসব দ্রব্য আবার জলবায়ু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। জলবায়ুর পার্থক্যের দরুন বিভিন্ন দেশের মানুষের খাদ্য, পরিধেয় এবং বাসগৃহ নির্মাণপ্রণালির মধ্যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। প্রাকৃতিক ভূগোলের জৈব শাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো উদ্ভিজ। দেশের কল্যাণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূলে উদ্ভিজ্জের ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য। উদ্ভিজ্জ সম্পদ জ্বালানি কাঠ ও চেরাই কাঠ কাগজ শিল্পের কাঁচামালের উৎস। জীবজন্তু অর্থাৎ প্রাণিজগৎও মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতিতে সহায়তা করে থাকে। এরা প্রয়োজনীয় খাদ্য, পানীয়, পরিধেয় প্রভৃতি যোগান দিয়ে মানুষের ওপর যথেষ্ট প্রভাববিস্তার করে। এছাড়া মাছ, মাংস, রেশম প্রভৃতি প্রাণিজগৎ হতে পাওয়া যায়।
পরিশেষে বলা যায়, অজৈব ও জৈব উপাদানগুলো মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

১০. প্রাকৃতিক ভূগোল সময়ের প্রেক্ষিতে কোনো স্থানের প্রাকৃতিক প্রপঞ্চ পরীক্ষা ও অনুসন্ধান করে থাকে। এজন্য এ ভূগোল অধ্যয়নের গুরুত্ব অপরিসীম।
ক. পৃথিবীর ভূমিরূপকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয়?
খ. প্রাকৃতিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয়সমূহ কী কী?
গ. প্রাকৃতিক ভূগোলের আওতা-পরিধি বর্ণনা কর।
ঘ. প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পৃথিবীর ভূমিরূপকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়।

খ. প্রাকৃতিক ভূগোলে যেসব উপাদান নিয়ে আলোচনা করা হয় তাই প্রাকৃতিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয়।
প্রাকৃতিক ভূগোলের পরিসর সাধারণভাবে প্রকৃতির স্থানিক বিশ্লেষণ অপেক্ষা অনেক বৃহত্তর। সাধারণত ভূমিরূপবিদ্যা, জলবায়ুবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, মৃত্তিকাবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিজ ভূগোল প্রভৃতি প্রাকৃতিক ভূগোলোর আলোচন্য বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়।

গ. প্রাকৃতিক ভূগোল আবহাওয়া ও জলবায়ু, মৃত্তিকা, উদ্ভিদ, প্রাণী, পানি ও এর বিভিন্ন রূপ এবং ভূমিরূপের স্থানিক ধরন আলোচনা করে থাকে। পৃথিবীতে প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা বা বস্তুই প্রাকৃতিক ভূগোলের আওতাভুক্ত।
প্রাকৃতিক ভূগোল মূলত মানুষ কীভাবে প্রকৃতির ওপর প্রভাববিস্তার করে সে বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান ও বিশ্লেষণ প্রদান করে। এর ক্ষেত্র বা পরিসরগুলো হলো- ভূমিরূপবিদ্যা, জলবায়ুবিদ্যা, সমুদ্র ভূগোল, মৃত্তিকা ভূগোল ও জীবভূগোল প্রভৃতি। প্রাকৃতিক ভূগোল উল্লিখিত বিষয়গুলো নিয়ে সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান করে থাকে।

ঘ. প্রাকৃতিক ভূগোল হলো ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। যেটির অধ্যায়ন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। মানুষ ও পরিবেশের যে সম্পর্ক তা নিয়ে প্রাকৃতিক ভূগোল বিস্তারিত ধারণা দেয়। তাই প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের গুরুত্ব অনেক। প্রাকৃতিক ভূগোলের মাধ্যমে পৃথিবীপৃষ্ঠের বাইরে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বায়ুমন্ডল সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। এর মাধ্যমে বায়ুমন্ডলের গভীরতা, বায়ুর স্তরবিন্যাস, বায়ুর উপাদান, বায়ুর ধর্ম, বায়ুর তাপ ও চাপ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এছাড়া বায়ুপ্রবাহের কারণ, বায়ুপ্রবাহের দিক, বায়ুর শ্রেণিবিভাগ, বিভিন্ন প্রকার ঘূর্ণিবাত, জলীয়বাষ্প, বাযয়র আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাতের কারণ, বৃষ্টিবলয়, বৃষ্টিপাতের শ্রেণিবিভাগ এবং বিভিন্ন প্রকার আবহাওয়া ও জলবায়ু সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যায়। পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ অবস্থা, তার উপাদানসমূহ, পৃথিবীর জন্ম, শিলার উৎপত্তি, ভূআন্দোলন, পৃথিবীর জন্ম সম্পর্কিত বিভিন্ন ভূগোলবিদের মতবাদ, কীভাবে পাহাড় থেকে নদীর উৎপত্তি, হিমবাহ ও বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কাযের ফলে কীভাবে ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় প্রভৃতি যাবতীয় বিষয়। প্রাকৃতিক ভূগোলের মাধ্যমে জানতে পারি। জীবমন্ডল তথা জীবের বৈশিষ্ট্য ও ধরন, মানুষ ও প্রাণীর আবাসস্থল প্রভৃতি সম্বন্ধে প্রাকৃতিক ভূগোলের মাধ্যমে জানা যায়।
তাই বলা যায় পৃথিবীর সার্বিক প্রাকৃতিক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যায়ন গুরুত্বপূর্ণ।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post