HSC ইতিহাস ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৭ pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC History 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC History 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Itihas 2nd paper Srijonshil Proshno Uttor.

ইতিহাস
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৭

HSC History 2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

উচ্চ মাধ্যমিক ■ ইতিহাস (দ্বিতীয় পত্র) ■ অধ্যায়ভিত্তিক সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ও পরীক্ষা প্রস্তুতি
সপ্তম অধ্যায় : স্নায়ুযুদ্ধ : পুঁজিবাদ ও সমাজতান্তিক বিশ্বের দ্বন্দ্ব

১. তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে হানিফ সাহেব অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিতে চাইলেও রবিউল হাসান শিক্ষাগত যোগ্যতাকে প্রাধান্য দিতে চান। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ দুটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়েন এবং আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে একে অপরের বদলির জন্য জোর প্রচেষ্টা শুরু করেন। পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করে যখন তাদের অনুগত দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা একে অপরকে অফিসের বাইরে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করে।
ক. কোন দুটি শিবিরের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বিশ্বব্যাপী স্নায়ুযুদ্ধের পরিবেশ তৈরি করে?
খ. Coldwar বা স্নায়ুযুদ্ধ বলতে কী বোঝায়?
গ. হানিফ সাহেব ও রবিউল হাসানের মাঝে সৃষ্ট উত্তেজনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে কোন দুটি বৃহৎ রাষ্ট্রের যুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. হানিফ সাহেব ও রবিউল হাসানের মাঝে যুদ্ধ না হলেও যুদ্ধের কৌশল পরিলক্ষিত- তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ন্যাটো ও সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে ওয়ারশ প্যাক্ট এ দুটি শিবিরের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বিশ্বব্যাপী স্নায়ুযুদ্ধের পরিবেশ তৈরি করে।

খ. Coldwar বা স্নায়ুযুদ্ধ মূলত একটি মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ যা দুটি বিরোধী মতাদর্শগত দ্বন্দ্ব থেকে উদ্ভূত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর দুটি পরস্পর বিরোধী রাষ্ট্র জোট প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ না হয়ে পরস্পরের প্রতি যে যুদ্ধভাব বিরাজ করছিল বা সংগ্রামে লিপ্ত ছিল তাকেই ঠান্ডা স্নায়ুযুদ্ধ বা Cold War বলে অভিহিত করা হয়। মূলত 'যুদ্ধও নয়, শান্তিও নয়' সাধারণত এ ধরনের সম্পর্ককে স্নায়ুযুদ্ধ বলে। কাজেই ঠান্ডা লড়াই ছিল দু জোটের মধ্যে এমন একটি যুদ্ধংদেহী সম্পর্ক, যে সম্পর্ক যুদ্ধ সৃষ্টি করেনি, কিন্তু যুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছিল। অনেকে ঠান্ডা লড়াই বলতে পরাশক্তিগুলোর মাঝে পরস্পরবিরোধী রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাকে নির্দেশ করেছে। স্নায়ুযুদ্ধ হলো এমনই এক অবস্থা যা সরাসরি যুদ্ধে না জড়িয়ে কূটনৈতিক রাষ্ট্রজোট গঠনের দুটি শিবিরে প্রতিদ্বন্দ্বী পরিবেশ বিরাজ করে।

গ. উদ্দীপকের হানিফ সাহেব ও রবিউল হাসানের মাঝে সৃষ্ট উত্তেজনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সমাজতান্ত্রিক রুশ ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বিরোধ তথা স্নায়ুযুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া পরস্পর মিত্রতাসূত্রে আবদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধ পরবর্তীকালে এ সম্পর্ক পরস্পর অবিশ্বাস ও সন্দেহের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে এরূপ বিরোধের ফলে দুটি ব্লকের সৃষ্টি করে যা দ্বিমেরুভিত্তিক বিশ্বরাজনীতির জন্ম দেয়। বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্র এ দু ব্লকের কোনো না কোনোটিতে যোগ দিয়ে এই বিরোধকে প্রকাশ্য রূপ দেয় এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে নানাভাবে হুমকি প্রদর্শন করতে থাকে। এটি প্রকাশ্য সশস্ত্র যুদ্ধের রূপ না নিলেও কূটনৈতিক ও রাষ্ট্রজোট গঠনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তারের কৌশলে পরিণত হয়। রাজনৈতিক ক্ষেত্র ছাড়িয়ে অর্থনৈতিক, সংস্কৃতি, সামরিক প্রভৃতি ক্ষেত্রেও এর প্রভাব দেখা যায়। ইতিহাসে এ ঘটনা স্নায়ুযুদ্ধ নামে বিখ্যাত। উদ্দীপকের হানিফ ও রবিউলের মাঝে সৃষ্ট উত্তেজনাও অনুরূপ আকার ধারণ করেছে।

ঘ. উদ্দীপকের হানিফ ও রবিউল সাহেবের মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষার প্রার্থীর কোন যোগ্যতা প্রাধান্য পাবে এ প্রশ্নে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। এরূপ একটি সাধারণ বিতর্ক তাদেরকে দুটি গ্রুপে ভাগ করে দিয়েছে। এ দুগ্রুপের অনুসারীরা আবার পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সম্পূর্ণ ঘটনাটিতে কোনো সশস্ত্র সংঘাত হয়নি, কিন্তু বিবাদমান এ দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘাতের পরিবেশ বিরাজ করছে। স্নায়ুযুদ্ধকালীন সময়ে রুশপন্থি সমাজতান্ত্রিক ব্লক এবং মার্কিনপন্থি পুঁজিবাদী ব্লক দুটির মধ্যেও এরূপ অবস্থা বিরাজ করত। সেসময় কেউ কারও বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করেনি। কিন্তু অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, সামরিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রেই পরস্পর পরস্পকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করত এবং যুদ্ধের মত একটা পরিবেশ বিরাজ করত। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে ছিল অনেকটা ঠান্ডা মাথার যুদ্ধ। এরূপ যুদ্ধের ফলে কেউ কারও বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়নি কিন্তু যুদ্ধের কোনো কৌশলই প্রয়োগের বাকি রাখেনি। সবসময় এক ধরনের যুদ্ধাংদেহী মানসিকতা বিরাজ করত। অথচ এ দুপক্ষের মধ্যে সরাসরি কোনো যুদ্ধই হয়নি। একই অবস্থা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে উদ্দীপকের হানিফ সাহেব ও রবিউল হাসানের মাঝে। তাদের মধ্যে যে গ্রুপিং দেখা যাচ্ছে তা কোনোভাবেই হয়তবা যুদ্ধের বা সংঘাতের পর্যায়ে পৌছাবে না, কিন্তু যুদ্ধের ন্যায় এক ধরনের পরিবেশকে জড়িয়ে রাখবে দীর্ঘসময় ধরে। এ কারণে তাদের মধ্যে যুদ্ধের কৌশলও দেখা যাবে একটা দীর্ঘসময় ধরে।

২. লোপা ও নিপা দু বোন বাবা-মা মারা যাওয়ার পর জমিসংক্রান্ত বিষয়সহ বেশকিছু ব্যাপারে পরস্পর দ্বনে্দ্ব জড়িয়ে পড়ে। লোপা ধর্মীয় কর্মকান্ড বেশি করে পালন করত ও আশেপাশের মানুষের সাথে তেমন মেলামেশা করত না। অন্যদিকে নিপা ছিল মিশুক ও আধুনিক মনোভাবসম্পন্ন এক নারী। তাই আচরণগত দিক দিয়েও দুই বোন ছিল দুই মেরুবাসী।
ক. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যকার স্নায়ুযুদ্ধের যবনিকাপাত কখন ঘটে?
খ. স্নায়ুযুদ্ধের পটভূমি ব্যাখ্যা কর।
গ. লোপা ও নিপার প্রত্যাশা কীভাবে মনস্তাত্ত্বিক দ্বনে্দ্বর নিকটবর্তী হতে পারে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর লোপা ও নিপার মাঝে আদর্শগত ভিন্নতা রয়েছে? তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আশির দশকের শেষে দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যকার স্নায়ুযুদ্ধের যবনিকাপাত ঘটে।

খ. প্রকৃতপক্ষে রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লবের পর সণায়ুযুদ্ধের সূত্রপাত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে স্নায়ুযুদ্ধর বাস্তবে রূপ পরিগ্রহ করে। ১৯৪৫ সালে ইয়াল্টা সম্মেলনের পর কয়েকটি ঘটনা স্নায়ুযুদ্ধের পটভূমি রচনা করে। রুজভেল্টের মৃত্যুর পর রাশিয়া দক্ষিণ পশ্চিম ইউরোপে প্রাধান্য স্থাপনের চেষ্টা করে। রাশিয়া ইয়ান্টা চুক্তি উপেক্ষা করে পোল্যান্ডের অস্থায়ী সরকারকে সমর্থন না করে লাবলিন সরকারকে সমর্থন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আঘাতে বিধ্বস্ত দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপে রাশিয়া প্রাধান্য স্থাপনে বদ্ধ পরিকর হলে রুশ-মার্কিন স্নায়ুযুদ্ধ নগ্নরূপ ধারণ করে। আমেরিকা গ্রিক ও পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন রাষ্ট্রকে সাম্যবাদী প্রভাবের বিরুদ্ধে সাহায্য দানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। রাশিয়া মলোটডের নেতৃত্বে সাম্যবাদী দেশসমূহের প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিউনিফরম নামে একটি অন্তঃরাষ্ট্র সংস্থা স্থাপন করে। এ সংস্থার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাম্যবাদী দেশসমূহের মধ্যে তথ্যাদির আদান প্রদান ও পররাষ্ট্রনীতির সংহতি। বৃদ্ধি এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা। এভাবে সোভিয়েত রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ পুরোদমে চলতে থাকে।

গ. উদ্দীপকের লোপা ও নিপার জীবনযাপন প্রণালি এবং বিশ্বাস ও আদর্শের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়। এর সাথে আবার যুক্ত আছে। জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়। পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিরোধ থাকার প্রেক্ষিতে আদর্শিক বিরোধ বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। একটি বিরোধ অন্য বিরোধকে বাড়িয়ে দিতে পারে। যেমনটি দেখা গিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে বিশ্বের দু পরাশক্তি রাশিয়া ও মার্কিন দু যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এ দু দেশ মৈত্রী বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যখন এ দুটি দেশের মধ্যে বিরোধ জন্মে তখন তাদের আদর্শিক বিরোধ বড় হয়ে স্নায়ুযুদ্ধের রূপ নেয়। অথচ অভিন্ন স্বার্থের সময় এটি কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। তাই লোপা ও নিপার মধ্যকার জমিজমার বিরোধের ক্ষেত্রে তাদের জীবনের আদর্শ ও বিশ্বাস বাধা হিসেবে কাজ করতে পারে। এটি এক সময় মনস্তাত্ত্বিক দ্বনে্দ্বর কারণও হতে পারে।

ঘ. উদ্দীপকের লোপা ও নিপার মাঝে আদর্শগত দ্বনে্দ্বর চিহ্ন স্পষ্ট। কেননা তারা বোন হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে জীবনযাপন ও ধর্মীয় বিধিবিধান পালনের ক্ষেত্রে পার্থক্য দেখা যায়। লোপা ধর্মীয় বিধিনিষেধ পালনের ক্ষেত্রে অগ্রগামী এবং বাইরের মানুষের সাথে তার মেলামেশা কম। অন্যদিকে নিপা ধর্মীয় বিধিবিধান তেমনটা মানে না। বলেই মনে হয়। সে অনেকটা আধুনিক এবং সবার সাথে মেলামেশা বেশি করে থাকে। এ দুজনের এরূপ জীবনযাপনের প্রধান কারণ হলো তাদের আদর্শ। আদর্শিক বিশ্বাস ও এ থেকে উৎসারিত জীবনাচরণ তাদের কার্যাবলি এবং জীবনযাপন প্রণালিকে প্রভাবিত করেছে। ধর্মীয় আদর্শ এবং আধুনিকতার আদর্শ এ দু বোনের জীবনকে বেশি প্রভাবিত করেছে। আদর্শিক ভিন্নতা তাদেরকে পথনির্দেশ করেছে এবং সে অনুসারে তারা তাদের জীবন নির্বাহ করছে। যখন তারা দু বোন হিসেবে বসবাস করে তখন এ ভিন্নতা তাদের মধ্যে বিরোধের কারণ হতে পারবে না। এমন সম্ভাবনা কম। কিন্তু যখন জমিজমাসহ অন্যান্য বিরোধ আসবে, তখন এটি বড় হয়ে দেখা দিতে পারে।

৩. কবির সাহেবের কৃষি খামারটির নিজস্ব শ্রমিকদল এবং নিরাপত্তা বাহিনী আছে। তিনি তার বাহিনীর সাহায্যে পার্শ্ববর্তী অন্যান্য খামারের দখল নেওয়ার চেষ্টা করলে আনোয়ার ও সাইদুরের নেতৃত্বে ভিন্ন মতাবলম্বী দুইপক্ষ একত্রিত হয়ে কবিরের খামার আক্রমণ করে দখল করে। নেয়। সাইদুর ও আনোয়ার সাহেব কবিরের খামারের মাঝে একটি দীর্ঘ দেয়াল তুলে দিয়ে দুপাশে দুজন ভোগদখল করা শুরু করেন। দীর্ঘদিন পর এ দেয়াল অপসারিত হয় এবং কবিরের খামারটি একত্রিত হয়।
ক. ন্যাটো ও ওয়ারশ প্যাক্ট-এর মধ্যকার উত্তেজনাকর অবস্থাকে সোভিয়েত ইউনিয়ন কী নামে অভিহিত করেছে?
খ. স্নায়ুযুদ্ধের আদর্শগত কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ঘটনাটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী কোন ঘটনার সাথে মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর কবির সাহেবের আগ্রাসী ভূমিকাই তার খামারটি বিভক্তির মূল কারণ? তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ন্যাটো ও ওয়ারশ প্যাক্ট-এর মধ্যকার উত্তেজনাকর অবস্থাকে সোভিয়েত ইউনিয়ন 'শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান' বা 'Peaceful Coexistence' নামে অভিহিত করেছে।

খ. সাধারণভাবে আন্তর্জাতিক রাজনীতিবিদগণ পূর্ব ও পশ্চিম ব্লকের লড়াইকে আদর্শগত সংগ্রাম বলে অভিহিত করেন। স্নায়ুযুদ্ধের পূর্ব বুক সাম্যবাদ এবং পশ্চিম ব্লক ধনতন্ত্রকে সমর্থন করে। এ দুটি আদর্শ ছিল পরস্পরবিরোধী। রাশিয়ান সাম্রাজ্যবাদকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দ আপত্তিকর ও বিপজ্জনক বলে মনে করেন। কারণ এখানে জনগণের স্বাধীনতার কোন স্থান নেই। অপরদিকে আমেরিকার গণতন্ত্রকে রাশিয়া আদৌ গণতন্ত্র বলে স্বীকার করে না। কারণ তাদের মতে আমেরিকায় গণতন্ত্র হলো ধনীদের যন্ত্র এবং জনগণের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ। রাশিয়া মনে করে যে, আমেরিকার মূল লক্ষ্যই হলো ধনতান্ত্রিক আদর্শ প্রচার করা যা সাম্রাজ্যবাদেরই নামান্তর। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতে, রাশিয়া সাম্যবাদের এবং বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের কথা প্রচার করে। সুতরাং বলা যায় যে, আদর্শগত দ্বন্দ্বই স্নায়ুযুদ্ধের অন্যতম প্রধান কারণ।

গ. উদ্দীপকের ঘটনাটিতে কবির সাহেবের আগ্রাসী ভূমিকার জবাব দিতে গিয়ে সাইদুর ও আনোয়ার সাহেব যৌথভাবে কবিরের খামারটি দখল করে নেন। এ ঘটনাটির সাথে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ব জার্মানির আগ্রাসী ভূমিকা এবং যুদ্ধ পরবর্তীকালে জার্মানিকে বিভক্ত করার ঘটনার মিল রয়েছে।
জার্মানি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করে পোল্যান্ড আক্রমণ করার মাধ্যমে। এরপর শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন সম্মিলিতভাবে জার্মানিকে পরাজিত করে। এ দুটি দেশের মধ্যে বিরোধ থাকলেও যুদ্ধে একসাথে কাজ করে। যুদ্ধে জার্মানি আত্মসমর্পণ করলে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন সমর্থনপুষ্ট দুই দল জার্মানিকে দুটি ভাগে ভাগ করে। পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মধ্যে বার্লিন প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। স্নায়ুযুদ্ধকালীন সময়ে এ বার্লিন প্রাচীরের গুরুত্ব ছিল অনেক বেশি। অবশেষে বার্লিন প্রাচীরের পতন ঘটে এবং দু জার্মানি একত্রিত হয়। উদ্দীপকের কবির সাহেবের খামারটিরও একই চিত্র দেখা যায়।

ঘ. উদ্দীপকের কবির সাহেব তার খামারের কর্মচারী ও নিরাপত্তা রক্ষীর দ্বারা অন্যের খামার আক্রমণ করেন। তার এ আচরণের জবাব দিতে গিয়েই সাইদুর ও আনোয়ার এগিয়ে আসেন। যদি কবির সাহেব আগ্রাসী ভঙ্গিতে এগিয়ে না আসতেন তবে হয়তবা তাকে প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হতো না। তার নিজের কৃতকর্মের জবাব পেতেই তাকে বরণ করতে হয় শোচনীয় পরাজয়। এজন্য মূলত কবির সাহেবের আগ্রাসী ভূমিকাই দায়ী।
একইভাবে জার্মানির আগ্রাসী মনোভাব এবং কৃতকর্মের জন্য একে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শোচনীয় পরাজয়বরণ করতে হয়। ফল হিসেবে জার্মানিকে বিভক্ত করা হয়। বার্লিন প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। স্নায়ুযুদ্ধে একটি অন্যতম উপাদান হিসেবে কাজ করেছে এ বার্লিন প্রাচীর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি প্রসঙ্গে বিরোধ নিয়ে প্রথম রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এটি বিরোধ পরবর্তীকালে স্নায়ুযুদ্ধে রূপ নেয়। অক্ষশক্তির অংশ জার্মানিকে কেউ কেউ এজন্য দায়ী করে। থাকেন। জার্মানির চূড়ান্ত পতনও হয় এ একই কারণে। কেননা জার্মানির আগ্রাসনের প্রতিরোধ-ই জার্মানিকে ধ্বংস করে দেয়। এজন্য জার্মানিকে। চরম মূল্য দিতে হয়, বিভক্ত হতে হয়। উদ্দীপকের কবির সাহেবও একই। কারণে তার খামার হারান। এজন্য তার আগ্রাসী মনোভাবই প্রধানত দায়ী।

৪. হাকিমপুর ইউনিয়নের আব্দুর রশীদ ও নারদা ইউনিয়নের জহিরুল ইসলাম পরস্পরকে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতার পাশাপাশি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একই সাথে কাজ করবে এ শর্তে একটি চুক্তি সম্পাদন করে গতবছর। কিন্তু এ বছরের শুরুতেই হাকিমপুর ইউনিয়নের কিছু বখাটে ছেলে নারদা ইউনিয়নের কয়েকটি দোকানে হামলা চালায় ও কয়েক লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে কোনো মীমাংসা না হতেই ঐ ইউনিয়নের বেশকিছু লোক নারদা গ্রামে কুৎসা রটনা করে সামাজিক পরিবেশ বিঘ্নিত করার চেষ্টা করে। এতে উক্ত নেতাদ্বয়ের পরস্পরের প্রতি সন্দেহ এক পর্যায়ে ক্ষোভে পরিণত হয়।
ক. ন্যাটো ও ওয়ারশ প্যাক্ট-এর মধ্যকার উত্তেজনাকর অবস্থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি নামে অভিহিত করে?
খ. 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার প্রতি কঠোর নীতি গ্রহণ করে' কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. আব্দুর রশিদ ও জহিরুল ইসলামের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান কীভাবে বিঘ্নিত হলো? উদ্দীপকের বর্ণনার আলোকে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর হাকিমপুর ইউনিয়ন ও নারদা ইউনিয়নের লোকেরা আদর্শগত প্রতিদ্বনি্দ্বতায় সীমাবদ্ধ ছিল? তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ন্যাটো ও ওয়ারশ প্যাক্ট-এর মধ্যকার উত্তেজনাকর অবস্থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র 'দাঁতাত' বা 'Detente' নামে অভিহিত করে।

খ. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার সম্প্রসারণে যুক্তরাষ্ট্র অসন্তুষ্ট হয়ে রাশিয়ার প্রতি কঠোর নীতি গ্রহণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পর পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি দেশে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। এদের মধ্যে ছিল পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, রুমানিয়া, হাঙ্গেরি, যুগোশস্নাভিয়া, আলবেনিয়া, চেকোশেস্নাভাকিয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এসময় এদের ভয়ে ভীত ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভাবছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত এবং অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত ইউরোপ ধীরে ধীরে সাম্যবাদের প্রতি ধাবিত হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের বিস্তার ঘটাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার প্রতি কঠোর নীতি গ্রহণ করে।

গ. উদ্দীপকের আবদুর রশিদ ও জহিরুল ইসলামের গৃহীত শান্তিচুক্তি ছিল একটি মাইলফলক। দুটি ইউনিয়নের মধ্যে এরূপ একটি চুক্তি সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা ও সম্প্রীতিকে সংহত করে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে। কিন্তু হাকিমপুরের কিছু বখাটের নারদায় আক্রমণ এবং এ থেকে সৃষ্ট সংঘাত দুটি ইউনিয়নের সম্পর্ককে নষ্ট করে। এখানে চুক্তি অনুসারে বিরোধের মীমাংসা হলে আমরা খুশি হতাম। কিন্তু যোগাযোগের ঘাটতি এখানে প্রকট আকারে দেখা যায়। যে কারণে অপপ্রচারের সুযোগ থেকে যায়। এ সুযোগ নিয়েই সুযোগ সন্ধানীরা পরস্পরের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে বিরোধকে উস্কে দেয়। ফলে আবদুর রশিদ ও জহিরুল ইসলামের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ জন্ম নেয়। এ ক্ষোভ সৃষ্টি হওয়ার জন্য প্রধানত দায়ী বলে মনে করা যায়, যোগাযোগের অভাবকে। কেননা যোগাযোগের দুর্বলতার কারণেই নিন্দুকেরা কুৎসা রটানোর সুযোগ পায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এরূপ কারণ স্নায়ুযুদ্ধ দ্রুত বিস্তার লাভ করে।

ঘ. উদ্দীপকের হাকিমপুর ও নারদা ইউনিয়নের লোকদের মধ্যে লোকদের মধ্যে আদর্শিক দ্বনে্দ্বর মতো কোনো উপাদান এখানে লক্ষ করা যায় না। কেননা এ দুটি ইউনিয়নের আদর্শগত দ্বন্দ্ব লক্ষ করা যায় না।
বিশ্বের দ্বন্দ্ব ২৮৩ হাকিমপুর ও নারদা ইউনিয়নের রশিদ ও জহিরুলের মধ্যে যে চুক্তি, সম্পাদিত হয়, তা অভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। এরূপ অবস্থায় তাদের মধ্যে আদর্শিক কোনো দ্বন্দ্ব চোখে পড়ে না। আদর্শিক দ্বন্দ্ব বলতে প্রধানত বোঝানো হয় কোনো বিশ্বাস, মতবাদ কিংবা তত্ত্বের বিরোধের কারণে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব। যেমন সোভিয়েত-মার্কিন দ্বনে্দ্বর প্রধান কারণ ছিল আদর্শিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল ধনতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অনুসারী। আর রাশিয়া ছিল সমাজতন্ত্র তথা সাম্যবাদে বিশ্বাসী। রাশিয়া ধনতন্ত্রকে দেখত শ্রমিক শোষণ ও আগ্রাসনের উপায় হিসেবে। তারা একে গণতন্ত্র না বলে ধনীদের যন্ত্র হিসেবে বর্ণনা করত। একে সাম্রাজ্যবাদ হিসেবেও গণ্য করত। অন্যদিকে মার্কিনরা রাশিয়ান ব্যবস্থাকে আপত্তিকর ও বিপজ্জনক বলে বর্ণনা করত। কারণ এতে জনগণের স্বাধীনতা বা পার্লামেন্টারি কোনো ব্যবস্থা নেই। এখানে রাজনৈতিক দলের স্বাধীনতা নেই, একটিমাত্র রাজনৈতিক দল এবং সবাই এর সদস্য। এরূপ ব্যবস্থাকে যুক্তরাষ্ট্র মনে করত শৃঙ্খলিত ব্যবস্থা হিসেবে। এটি ছিল আদর্শিক বিরোধ। এরূপ বিরোধের কারণে জন্ম হয়েছিল স্নায়ুযুদ্ধের। কিন্তু উদ্দীপকের ইউনিয়ন দুটিতে এরূপ কোনো বিরোধ দেখা যায় না। তাই বলা যায়, তাদের মধ্যে আদর্শগত কোনো প্রতিদ্বনি্দ্বতা ছিল না।

৫. লতিফউদ্দিন এলাকার মানুষের সমস্যা সমবায় ভিত্তিতে সমাধান ও তাদেরকে একই আদর্শ নিয়মনীতির প্রতি ঐক্যবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ান বিত্তশালী লোকমান হাসান। তিনি প্রত্যেক পরিবারকে স্বাধীনভাবে জীবনযাপনের তাগিদ দেন ও তাদেরকে অর্থনৈতিক মুক্তির ব্যাপারে সাহায্যের আশ্বাস দেন এবং একটি সমিতি গঠন করেন। এসব পরিবারের স্বাধীন জীবনযাপন নিশ্চিত করতে লতিফ সাহেবের সমিতির পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে একটি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করেন লোকমান সাহেব।
ক. ইংরেজি ঐতিহাসিক টয়েনবি বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনীতিকে কী নামে অভিহিত করেন?
খ. স্নায়ুযুদ্ধের কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. লোকমান হাসান কীভাবে লতিফউদ্দিনের সমিতিকে অবরোধ করেছেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. লোকমান হাসানের উদ্যোগের মাঝে লতিফউদ্দিনের আদর্শকে প্রতিরোধ করার নীতি নিহিত ছিল- তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ইংরেজি ঐতিহাসিক টয়েনবি বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনীতিকে 'বাইপোলার রাজনীতি' (Bipolar Politics) নামে আখ্যায়িত করেছেন।

খ. স্নায়ুযুদ্ধের অন্যতম প্রধান কারণ হলো দু পরাশক্তি রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে প্রতিদ্বনি্দ্বতা। এ যুদ্ধের অন্যতম কারণ হলো-
প্রথমত : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউরোপের যেসব অঞ্চলে বিভিন্ন মিত্রশক্তি প্রবেশ করে তারা সেখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিজেদের আধিপত্য স্থাপন করার চেষ্টা করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন এর সম্বাবহার করে। অপরদিকে যুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো দুর্বল হয়ে পড়ায় তাদের মধ্যে সোভিয়েত ভীতি বিশেষভাবে সৃষ্টি হয়। এ পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম ইউরোপের সাথে চুক্তি স্থাপন করে সোভিয়েত বিরোধী এক জোট সৃষ্টি করে।
দ্বিতীয়ত : আদর্শগত সংঘাতও ঠান্ডা লড়াইয়ের জন্ম দেয়। আমেরিকা তথা পশ্চিম বিশ্বের ধনবাদী আদর্শ ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতান্ত্রিক আদর্শের দ্বন্দ্ব এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।
তৃতীয়ত : প্রযুক্তিগত উন্নতির সাথে সাথে লড়াইর প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

গ. উদ্দীপকের লতিফউদ্দিন সাহেব সাম্যবাদী ধারণার সমর্থক এবং তিনি এটি প্রতিষ্ঠা করার জন্য একটি সমিতি গঠন করেছেন। অপরদিকে লোকমান হাসান পুঁজিবাদী ধারণার সমর্থক এবং তিনিও তার পক্ষে একটি সমিতি গঠন করেছেন। এখানে লতিফ ও লোকমানের আদর্শগত ভিত্তির সমর্থনে দুটি সমিতি গঠিত হয়েছে এবং উভয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। লক্ষণীয়, প্রথমে লতিফ সমবায় ভিত্তিতে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগ নেন। আর লোকমান লতিফকে প্রতিরোধ করতে সমিতি গঠন করেন। এখানে লতিফ সাহেবের মূল লক্ষ্য যখন সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা, সেখানে লোকমান সাহেবের মূল লক্ষ্য হলো সাম্যবাদ প্রতিরোধ করা। প্রয়োজনে তিনি প্রত্যেক পরিবারকে অর্থনৈতিক সাহায্য দিবেন। লোকমান সাহেবের সকল কার্যাবলির মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো লতিফ সাহেবের কার্যাবলিকে বাধাগ্রস্ত করা। এজন্য তিনি যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন এবং অনেকটা সফল হয়েছেন। লোকমান সাহেব ও লতিফ সাহেব পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে যে সমিতি গঠন করেছেন তা অনেকটা রুশপন্থি সমাজতান্ত্রিক ব্লক এবং মার্কিনপন্থি ধনতান্ত্রিক ব্লকের ন্যায়। লোকমান সাহেব তার ব্লকের সদস্যদের সহায়তায় জন্য যে সমিতি করেছেন, এর সার্বিক কার্যাবলির মাধ্যমে লতিফ সাহেবের সমিতিকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।

ঘ. উদ্দীপকের লতিফ সাহেব সমবায় সমিতির মাধ্যমে গ্রাম্য মানুষের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করতে সমিতি গঠন করেন। কিন্তু লোকমান হাসানের তা পছন্দ হয়নি বলে তিনি এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে আর একটি সমিতি গঠন করেন। এরূপ দুটি সমিতি ছিল দুটি আদর্শের ভিত্তিতে গঠিত। একটি ধনতান্ত্রিক আদর্শ এবং অন্যটি সমাজতান্ত্রিক আদর্শ। এক্ষেত্রে সমাজতান্ত্রিক আদর্শের সমিতিটি গঠিত হয়েছে নিজেদের আদর্শকে বিস্তার করার জন্য এবং ধনতান্ত্রিক আদর্শের সমিতিটি গঠিত হয়েছে সমাজতান্ত্রিক আদর্শের সমিতিটিকে প্রতিহত করার জন্য। ফলে এক সময় দুটি সমিতি পরস্পর পরস্পরের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। ঠিক যেমন স্নায়ুযুদ্ধকালীন সময়ে রুশপন্থি ও মার্কিনপন্থি দুটি ব্লকের মধ্যে বিরোধ ছিল। এ দুটি ব্লক পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত না থাকলেও একে অন্যের ভয়ে ভীত থাকত। একপক্ষ অন্যপক্ষের আদর্শের বিস্তারকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখত এবং তা প্রতিহত করতে সর্বদা চেষ্টা করত। উদ্দীপকের লোকমান ও লতিফ সাহেবের সমিতির মধ্যেও অনুরূপ প্রবণতা লক্ষণীয়। লতিফ সাহেবের সমিতি যখন নিজেদের আদর্শের বিস্তারের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছিল তখন লোকমান সাহেবের পক্ষের সমিতি তা প্রতিরোধ করতে কাজ করছিল। এজন্য যা যা করা প্রয়োজন লোকমান সাহেবের সমিতি তার সবই করছিল। তিনি লোকজনকে আর্থিক সহায়তা করছিলেন এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষা করতে লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করছিলেন। এর মাধ্যমে মূলত তিনি লতিফউদ্দিন সাহেবের সাম্যবাদী আদর্শকে প্রতিরোধে কাজ করছিলেন।

৬. করিমগঞ্জ উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের প্রভাবশালী ৪টি ও ৬টি ইউনিয়ন মিলে আলাদাভাবে দুটি জোট গঠন করে। এ দুটি জোট পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়। এমতাবস্থায় বাদবাকি ১২টি ইউনিয়ন, যারা অপেক্ষাকৃত দুর্বল, তারা এ দুটি পক্ষের কোনটিতেই না যাওয়ার শর্তে একটি নতুন জোট গঠন করে। নতুন জোট স্বাধীনভাবে কাজ করার দৃঢ় সংকল্প করে।
ক. প্রকৃত অর্থে দাঁতাত-এর পর্যায় শুরু হয় কবে?
খ. স্নায়ুযুদ্ধের পর্যায়গুলো ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ১২টি ইউনিয়নের নতুন জোট স্নায়ুযুদ্ধকালীন কোন জোটটির কথা মনে করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর নতুন এ জোটটি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সচেষ্ট হবে? পাঠ্যপুস্তকের আলোকে তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কিউবা ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর থেকে প্রকৃত অর্থে দাঁতাত-এর পর্যায় শুরু হয়।

খ. স্নায়ুযুদ্ধকে চারটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। এ পর্যায়গুলো হলো-
প্রথম পর্যায় : ১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত।
দ্বিতীয় পর্যায় : ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত।
তৃতীয় পর্যায় : ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত।
চতুর্থ পর্যায় : ১৯৫৯ সাল থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত।

গ. উদ্দীপকের করিমগঞ্জ উপজেলার প্রভাবশালী ইউনিয়নের বিরোধের প্রেক্ষাপটে নিরপেক্ষ ও দুর্বল ইউনিয়নসমূহের নতুনজেট এক নব অধ্যায়। স্নায়ুযুদ্ধকালীন সময়ে যখন রুশ-মার্কিন বুকের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছিল এবং প্রত্যেকেই নিজ সমর্থক বাড়ানোর প্রচেষ্ট, লাচ্ছিল, সেই প্রেক্ষাপটে নব্য স্বাধীন ও নিরপেক্ষ দেশগুলো মিলে গড়ে তোলে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন। এ দেশগুলো কোনো পক্ষেই যোগ না দিয়ে নিরপেক্ষ থাকার নীতি গ্রহণ করে। "কারও সাথে শত্রুতা নয়" এটি হয় এ জোটের মূলনীতি। ১৯৬১ সালে যুগোশ্লাভিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে এটি গঠিত হয়। এ জোটটি সে সময় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায়। এটি ছিল সে সময়ে এক সাহসী পদক্ষেপ।

ঘ. করিমগঞ্জ উপজেলার বিবাদমান দুটি পক্ষের একদিকে ছিল ৪টি ইউনিয়ন এবং অপরপক্ষে ছিল ৬টি ইউনিয়ন। শক্তিশালী এ দুটি জোট সংগত কারণেই নিজেদের শক্তি বাড়াতে ও সমর্থক বাড়াতে সচেষ্ট। থাকার কথা। এসময় বাদবাকি ইউনিয়নের জোটের নিরপেক্ষ থাকার ঘোষণা দুপক্ষকেই আঘাত করেছে- এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। আবার অপেক্ষাকৃত দুর্বল ইউনিয়নগুলো নিজেদের এ অবস্থান দ্বারা কতটর লাভবান হবে তা বলা কঠিন। কেননা শূন্যের সাথে শূন্য যোগ করলে তা শূন্যই হয়।
জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন নামে যে জোটটি ১৯৬১ সালে গঠিত হয়েছিল তার কার্যকারিতা ও সফলতা বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। এ জোটের একটি বড় সফলতা হলো এ জোট গঠনের ফলে স্নায়ুযুদ্ধ দুর্বল হয়ে যায়। কেননা শক্তি ও প্রভাব বিস্তারের যে প্রতিযোগিতা চলছিল তার পথ অনেকটাই রুদ্ধ হয়ে যায় এ জোট গঠনের ফলে। ফলে একসময় স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটে। আবার অপরপক্ষের মতে, NAM কার্যকর কোনো ভূমিকা পালন করতে পারেনি। কেননা ন্যামভুক্ত অনেক দেশ রুশ কিংবা মার্কিন ব্লকের সাথে চুক্তিবদ্ধ ছিল। এর ক্ষমতা ও কার্যাবলিও ছিল সীমিত। ফলে এর সফলতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন তারা। কিন্তু তারপরও বলা যায়, জোট নিরপেক্ষা আন্দোলন (NAM) ছিল সময়ের প্রয়োজনে দুর্বলের এক শক্ত ভাষা। এটি না থাকলে অনেক দেশই বিরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতো। সে অর্থে ঘঅগ সফল একটি সংস্থা। তেমনিভাবে করিমগঞ্জ ইউনিয়নের নতুন নিরপেক্ষ জোটটিও NAM-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

HSC ইতিহাস ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৭ pdf download

৭. পূর্বে নোহালি গ্রাম ও চড়ুইভাতি গ্রামের লোকদের মাঝে সংঘর্ষ, হানাহানি লেগেই থাকত। তৌকিরের মতো নোহালি গ্রামের অনেকেই শিল্পের উন্নয়নে বেশি সময় দেওয়ায় এবং চড়ুইভাতি গ্রামের চেয়ারম্যান শিরিন আক্তার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বেশ কিছু চুক্তি মেনে চললে দু গ্রামের মাঝে উত্তেজনা প্রশমিত হয়। সংঘর্ষের পরিবর্তে অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত হয়ে ওঠে দু গ্রামবাসী।
ক. স্নায়ুযুদ্ধের ইংরেজি প্রতিশব্দ কী?
খ. ন্যাটো বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকের তৌকির ও শিরিন আক্তার কীভাবে দু গ্রামের মাঝে সাংঘর্ষিক মনোভাব প্রশমন করেছেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর নোহালি ও চড়ুইভাতি গ্রামের সাংঘর্ষিক পরিবেশ দূরীকরণ একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. স্নায়ুযুদ্ধের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Cold War.

খ. ন্যাটো তথা NATO-এর পূর্ণরূপ হলো 'North Atlantic Treaty Organization'.
১৯৪৯ সালের ৪ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১২টি দেশের প্রতিনিধিসহ ন্যাটো জোট গঠন করে। ১৯৫২ সালে গ্রিস ও তুরস্ক এবং ১৯৫৫ সালে পশ্চিম জার্মানি এ জোটের সদস্য নিযুক্ত হন। মূলত সামরিক দিক থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নকে অবরোধ করে রাখার নীতি কার্যকর করার জন্য ন্যাটো গঠিত হয়েছিল।

গ. উদ্দীপকের নোহালি ও চড়ুইভাতি গ্রামের লোকদের মাঝে সংঘর্ষ, হানাহানি লেগে থাকা ছিল এক স্বাভাবিক ব্যাপার। এ দুটি গ্রামের এ সংঘর্ষও হানাহানির কারণ জানা যায় না। হতে পারে পূর্বের কোনো বড় ঘটনা থেকে এরূপ চলে আসছে। কিন্তু যখন গ্রামবাসীর একপক্ষ শিল্পের উন্নয়নে বেশি সময় দিতে থাকে এবং অন্যপক্ষ শান্তিচুক্তি মেনে চলে, তখন এদের বিরোধ প্রশমিত হয়। ঘটনাটি অনেকটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জাপানের ঘটনার ন্যায়। এসময় জাপান শিল্পের উন্নয়নের দিকে নজর দেয়। অতিঅল্প সময়ের মধ্যেই জাপানের শিল্প বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করে। এ সময় জাপানের সবচেয়ে বড় শিল্প সহযোগী দেশ হিসেবে পরিণত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অথচ যুক্তরাষ্ট্র জাপানে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। উদ্দীপকের নোহালি। গ্রাম ও চড়ুইভাতি গ্রামের মাঝে সম্পর্ক উন্নয়নে তৌকির ও শিরিন অনেকটা এ পথই বেছে নিয়েছিলেন।

ঘ. উদ্দীপকের নোহালি ও চড়ুইভাতি গ্রামের সদস্যদের মধ্যে চলে আসা দ্বন্দ্ব, সংঘাত দুটি গ্রামের জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল। এরূপ দ্বন্দ্ব-সংঘাত মানুষের কাজের পরিবেশ নষ্ট করে, সৃজনশীলতা ধ্বংস করে এবং সামগ্রিক জীবনযাত্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এরূপ দ্বন্দ্ব, সংঘাত মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তোলে। নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে। ব্যবসায় বাণিজ্য শিক্ষা-সংস্কৃতি ইত্যাদি সবকিছুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই যদি এরূপ একটি অবস্থা থেকে বের হয়ে আসা যায়, তবে তা একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনাই হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে জাপান-মার্কিন বিরোধ নিরসন এরূপ চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছিল। ফল হিসেবে জাপান বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক পরাশক্তিতে পরিণত হয়েছে। শিল্পোন্নত জাপানের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়েছে সবচেয়ে বড় অংশীদার। অথচ এ বিরোধের নিষ্পত্তি না হলে জাপানের পক্ষে সম্ভব হতো না শিল্পে এত উন্নত হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব হতো না এত স্বল্পব্যয়ে উন্নত মানের পণ্য পাওয়া। মার্কিন বিনিয়োগকারীদেরও জাপানে বিনিয়োগ সম্ভব হতো না। সবদিক দিয়ে এ বিরোধ নিষ্পত্তি এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। নোহালি গ্রাম ও চড়ুইভাতি গ্রামের বিরোধ দূরীভূত হওয়ার ফলেও এরূপ একটি ফলাফল আসতে পারে। এটি স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, শিল্পে সমৃদ্ধি এবং শান্তিপূর্ণ এক সমাজ নির্মাণে সহায়ক হতে পারে। যে কারণে এর তাৎপর্যও অপরিসীম। তাই এটিকে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা বলা যেতে পারে।

৮. আব্দুল কুদ্দুস নিজ জমিতে হায়দার আলীর সাথে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী তুলা চাষ শুরু করেন। এতে সামসুল হক অত্যন্ত রাগান্বিত হন এবং কুদ্দস কৃষককে শাস্তি দিতে লোক পাঠান। কারণ হায়দার আলীর সাথে কারও মিত্রতা হোক এটা তিনি মেনে নিতে পারেন না। খবরটি শুনে হায়দার আলীও আব্দুল কুদ্দুসকে রক্ষা করতে লোক পাঠান। অবশেষে হায়দার আলী ও সামসুল হক উভয়ে বন্ধুত্ব স্থাপনের জন্য উদ্যোগী হলে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়।
ক. সোভিয়েত ইউনিয়ন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি কত সালে ঘোষণা করে?
খ. ট্রুম্যানের নীতি বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকের আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্কটময় অবস্থা কীভাবে দূর হলো? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. হায়দার আলী ও সামসুল হকের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান কেবল তাদের দুইজনকে নয় বরং সম্পূর্ণ গ্রামবাসীর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সম্ভব করেছে- তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৫৬ সালে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি ঘোষণা করে।

খ. মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ১৯৪৭ সালের ১২ মার্চ রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যান সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিরোধের যে নীতি ঘোষণা করেন তাই ট্রুম্যানের নীতি বলে বিবেচিত। ট্রুম্যান গ্রিস ও তুরস্কে কমিউনিস্ট প্রভাব ধ্বংস এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা নির্মূল করার জন্য ৪০০ মিলিয়ন ডলার সাহায্য দান এবং সামরিক মিশন প্রেরণের জন্যে কংগ্রেসের অনুমোদন দাবি করেন। ট্রুম্যান ঘোষণা করেন, যেসব স্বাধীন মানুষ দেশের অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংখ্যালঘু এবং বাইরের চাপ প্রতিরোধ করছে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সাহায্য করবে। ট্রুম্যানের এ ঘোষণা সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিপন্থী ছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানের এ ঘোষণা বিশ্ব ইতিহাসে ট্রুম্যানের নীতি হিসেবে খ্যাত।

গ. উদ্দীপকের আব্দুল কুদ্দুস হায়দার আলীর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তুলা উৎপাদন করতে চাইলে সংকটের সূচনা হয়। কেননা হায়দার আলীর প্রতিদ্বন্দ্বী সামসুল হক চাননি কুদ্দুস হায়দার আলীর সাথে কাজ করুক। এক্ষেত্রে হায়দার ও সামসুল সাহেবের দ্বনে্দ্বর ফলে ভুক্তভোগী হতে হয় কুদ্দুসকে। ঘটনাটি অনেকটা ষাটের দশকের কিউবা সংকটের মতো। কিউবা রাশিয়ার সাথে চুক্তি সম্পাদন করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্ষেপে যায়। এ নিয়ে রুশ-মার্কিন যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয়। অবশেষে কূটনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধান হয় এবং কিউবা সংকট দূর হয়। উদ্দীপকের সামসুল হক ও হায়দার আলীর ক্ষেত্রে আব্দুল কুদ্দুসকে নিয়ে যে সংকটের সূচনা হয় তার সমাধান হয় এ দু প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যকার বিরোধের মীমাংসার মাধ্যমে। তাদের বন্ধুত্ব স্থাপনের ফলে দু পক্ষের বিরোধ মিটে যায়, ফলে আব্দুল কুদ্দুস সংকটময় অবস্থা থেকে মুক্তি পায়।

ঘ. কোনো গ্রামের প্রভাবশালী দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ থাকলে তা বড় ধরনের অশান্তির কারণ হতে পারে। কেননা এক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষকে নিতান্ত বাধ্য হয়েই কোনো না কোনো পক্ষকে সমর্থন করতে হয়। ফলে দলাদলি সৃষ্টি হয়, যা সমাজের বিভক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। এরূপ গ্রুপিং সমাজের মানুষের শান্তিপূর্ণ বসবাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। একই কথা প্রযোজ্য গ্রাম থেকে বড় ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও। জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কিংবা গোষ্ঠীগত বিরোধ থাকলে তা জাতীয় সংহতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়। এরূপ অবস্থা দেশের বৃহত্তর ক্ষতিসাধন করতে পারে। আবার আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি স্নায়ুযুদ্ধকালীন সময়ের চিত্র। এসময় বৃহৎ শক্তিধর দুটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধ সম্পূর্ণ বিশ্বকে এক অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দিয়েছিল। বিশ্বের শক্তিশালী মানুষকে সবসময় আতঙ্ক উৎকণ্ঠার মাঝে দিন কাটাতে হতো। অথচ স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের ফলে বিশ্বে শান্তি ও স্বস্তি ফিরে এসেছে। একইভাবে উদ্দীপকের হায়দার আলী ও সামসুল হক সাহেবের বিরুদ্ধ মনোভাব আব্দুল কুদ্দুসের মতো মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তুলেছিল। এ বিরোধ যদি আরও বেশিদিন স্থায়ী হতো তবে তা গ্রামের আরও অন্যান্য বাসিন্দাদেরকে প্রভাবিত করত। এমনকি সংঘাতের সম্ভাবনাও তৈরি হতো। ফলে গ্রামবাসীও কোনো না কোনোভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতো। তাই প্রভাবশালী এ দু ব্যক্তির বিরোধ নিরসন গ্রামবাসীকেও স্বস্তি দিয়েছে।

৯. যমুনা নদীর তীরবর্তী সালেমপুর ও মকসুদপুর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুটি গ্রাম। সালেমপুর গ্রামের নেতৃবৃন্দ চরের জমিকে ব্যক্তিমালিকানায় রাখতে চান অথচ মকসুদপুরের নেতারা চান সমবায় খামারের মাধ্যমে চর শাসন করতে। এরূপ বিরোধের প্রেক্ষাপটে, সালেমপুরের অধিবাসীরা পার্শ্ববর্তী সমমনা কয়েকটি গ্রামকে নিয়ে একটি লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে মকসুদপুর গ্রামবাসীও অনুরূপ বাহিনী গঠনের চেষ্টা চালায়।
ক. সোভিয়েত নেতা ক্রুশ্চেভ কত সালে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেন?
খ. মার্শাল পরিকল্পনা ব্যাখ্যা কর।
গ. সালেমপুর গ্রামবাসীর গঠিত লাঠিয়াল বাহিনীর সাথে স্নায়ুযুদ্ধকালীন কোন সামরিক জোট গঠনের মিল দেখা যায়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর পাল্টাপাল্টি লাঠিয়াল বাহিনী গঠনের ফলে এলাকায় ক্ষমতার ভারসাম্য ফিরে আসবে? মতামত দাও।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সোভিয়েত নেতা ক্রুশ্চেড ১৯৫৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেন।

খ. ১৯৪৭ সালের ৫ জুন মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব জর্জ সি. মার্শাল হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউরোপের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন সম্পর্কে মার্কিন নীতি ব্যাখ্যা করেন। মার্শালের এ নীতি ক্ষুধা, দারিদ্র্য, হতাশা ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কোনো দেশ বা মতাদর্শের বিরুদ্ধে নয়। তিনি বলেন, ইউরোপকে অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করবে। মার্শালের এ পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা বিশ্ব ইতিহাসে 'মার্শাল পরিকল্পনা' নামে অভিহিত। মার্শালের বক্তব্যের মাধ্যমে সোভিয়েত বিরোধিতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ১৯৪৭ সালের ২৯ এপ্রিল চীফ অব স্টাফ-এর নিকট জয়েন্ট স্ট্রাটেজিক সার্ভে কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছিল, সাহায্যদানের ক্ষেত্রে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং তার নিয়ন্ত্রণাধীন সকল দেশকে যেন বাদ দেওয়া হয়।

গ. উদ্দীপকের সালেমপুর গ্রামবাসী নিজেদের পুঁজিবাদী চিন্তাচেতনাকে বিস্তার করতে এবং মকসুদপুরের সাম্যবাদী ধারণাকে রুখতে নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করেন। এক্ষেত্রে তাদের মতাদর্শের পক্ষের শক্তিসমূহ তাদের সহায়তা করে। ঘটনাটি আমাদেরকে ১৯৪৯ সালে গঠিত NATO জোটের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। স্নায়ুযুদ্ধকালীন সময়ে শক্তির মহরা দিতে এবং পুঁজিবাদী ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রসারের মাধ্যমে সমাজতন্ত্রকে প্রতিহত করতে ন্যাটো গঠিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সেসময় ১২টি দেশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল ন্যাটো নামক সামরিক জোটটি। এ জোটের সবদেশ ছিল পুঁজিবাদের সমর্থক এবং সমাজতন্ত্রের বিরোধী। সামরিক দিক থেকে প্রতিপক্ষ সোভিয়েত ইউনিয়নকে চাপের মধ্যে রাখা ছিল এর মুখ্য উদ্দেশ্য। উদ্দীপকের সালেমপুরের লাঠিয়াল বাহিনীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, এটিও ঠিক ন্যাটো জোটেরই প্রতিরূপ। ন্যাটো যেখানে শক্তিশালী দেশসমূহের শক্তিশালী সামরিক জোট, সেখানে সালেমপুরের সামর্থ্যের মধ্যে সামরিক বাহিনী হলো লাঠিয়াল দল।

ঘ. দুটি ভিন্ন মতাদর্শের দলের জন্য ক্ষমতার লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে প্রয়োজন ক্ষমতার ভারসাম্য। ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার একটি উপায় হলো সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করা। কিন্তু ভারসাম্যের নাম করে ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য, অন্ত্রের প্রতিযোগিতা কোনো সময়ই ভালো পরিণতি ডেকে আনে না।
সালেমপুর গ্রামের গঠিত লাঠিয়াল বাহিনীর খবরে মকসুদপুর গ্রামবাসী ও তার মিত্রদের মাঝে ভীতির সঞ্চার হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। এজন্য মকসুদপুর গ্রামবাসী নিরাপত্তার অভাব অনুভব করতে পারে। সালেমপুর গ্রামের মিত্রদের সম্মিলিত বাহিনী শক্তির আধিপত্যে হামলাও করে বসতে পারে। এজন্য মকসুদপুরবাসীদেরও পাল্টা বাহিনী গঠন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ায়। এতে হয়তবা ক্ষমতার ভারসাম্য আসতে পারে, কিন্তু হামলা-পাল্টা হামলার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে, স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে। একই ঘটনা দেখা গিয়েছিল ন্যাটো জোটের বিপরীতে সোভিয়েত ও তার মিত্রদের ওয়ার্শ প্যাক্ট গঠনের সময়। এ দুটি সামরিক জোট গঠনের ফলে বিশ্ব আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধেনি, অনেকের মতে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকার কারণে। তাই যমুনা তীরের দুটি গ্রামেও এরূপ দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী বাহিনীর গঠন ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে পারলেও ঝুঁকি বাড়াবে একথা বলা যায়।

১০. বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সোফিয়া ও তানজিনার মাঝে প্রায় মারামারি ভাব বিরাজ করত সর্বদা। এটি দেখে হোস্টেলের গাইড। ম্যাডাম লাইজু আক্তার দুজনকে দুটি পৃথক রুমে সিট পরিবর্তন করেন। এতে তাদের মাঝে বিরোধের অবসান হলেও সোফিয়া বান্ধবীদের মাধ্যমে তানজিনার গতিবিধি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করত। আর তানজিনা নতুন রুমের মেয়েদের কাছ থেকে ইন্টারনেটে আউট সোর্সিং-এর কাজ শিখে বেশ ভালোই আয় করতে শুরু করে। এতে প্রশান্তির ক্ষেত্রে দুজনেই বেশ ভালো থাকে।
ক. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে কোন ক্ষেত্রে সংগ্রাম পরিস্ফুট হয়?
খ. স্নায়ুযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের সোফিয়া ও তানজিনার রুম পরিবর্তনের পর তাদের মাঝে কী প্রভাব লক্ষণীয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর দ্বন্দ্ব-সংঘাত সোফিয়াকে একটু বেশি ভাবিয়েছে? তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে সংগ্রাম পরিস্ফুট হয়।

খ. স্নায়ুযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো কোরিয়া যুদ্ধ। ১৯৪৮ সালে কোরিয়াকে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া দুভাগে ভাগ করা হয়। দক্ষিণ অংশে মার্কিন প্রভাবিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কার্যকলাপের কারণে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের প্ররোচনায় ১৯৫০ সালে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। নিরাপত্তা পরিষদে সোভিয়েত ইউনিয়নের অনুপস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে আক্রমণকারী রূপে ঘোষণার চেষ্টায় সফল হন। ফলে জাতিসংঘের নেতৃত্বে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ আরম্ভ হয়। অন্যদিকে চীন ও রাশিয়া কোরিয়াকে সাহায্যের জন্য অগ্রসর হয়। অবশেষে অস্ত্রসংবরণ চুক্তির মাধ্যমে কোরিয়া যুদ্ধের অবসান হয়।

গ. উদ্দীপকের তানজিনা ও সোফিয়া একই রুমে থাকাকালীন সময়ে তাদের মধ্যে বিরোধ কাজ করত যা সংঘাতের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। তাদেরকে পৃথক রুমে স্থানান্তরের ফলে একজন অন্যজনের। গতিবিধি লক্ষ করতে থাকে আর অন্যজন আউটসোর্সিং-এ মনোযোগ দেয়। এ থেকে বোঝা যায়, তানজিনার জন্য রুম পরিবর্তন ইতিবাচক ফল নিয়ে আসে। কেননা সে নতুন রুমে এসে আউটসোর্সিং-এর কাজ শুরু করে অর্থ উপার্জন শুরু করে, যা তার আয় বৃদ্ধি করে। তার পূর্বের রুমের চেয়ে নতুন রুমটি বেশি কার্যকর এবং ফলপ্রসূ হয়। অন্যদিকে, সোফিয়া রুম পরিবর্তনের পরও তানজিনার গতিবিধি পর্যবেক্ষণে সময় ব্যয় করে, যা তার জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারেনি। তবে দুজনের ক্ষেত্রেই বিরোধ নিরসন একটি কার্যকরী ফলাফল। কেননা উভয়েই নতুন রুমে আগের চেয়ে ভালো থাকে, যা তাদের মানসিক প্রশান্তি আনয়নে সহায়ক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী স্নায়ুযুদ্ধের সময় বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে এরূপ পরিণতি দেখা গেছে।

ঘ. উদ্দীপকের ঘটনায় তানজিনা ও সোফিয়া আলাদা রুমে স্থানান্তরিত হলেও সোফিয়া নিয়মিত তানজিনার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করত। এক্ষেত্রে সে তার বন্ধবীদের সহায়তা নিত। কিন্তু তানজিনার ক্ষেত্রে এরূপ দেখা যায় না। সে বরং নতুন রুমে গিয়ে বান্ধবীদের থেকে ইন্টারনেটের আউটসোর্সিং এর কাজ শিখে আয় বাড়াতে থাকে। পূর্বের ঘটনার প্রভাব তার মাঝে দেখা যায় না। অথচ সোফিয়া তানজিনার গতিবিধি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আগের ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথাই মনে রাখে। এ থেকে বোঝা যায় যে, তানজিনা পূর্বের ঘটনাকে মনে না রাখলেও সোফিয়ার মধ্যে এখনও বিদ্যমান আছে। সোফিয়ার মধ্যে পূর্বের দ্বন্দ্ব সংঘাত বেশি প্রভাব বিস্তার করেছিল বলেই সে এরূপ করছে। তা না হলে সেও এ ঘটনা ভুলে গিয়ে নতুন কিছু শুরু করত। সোফিয়া নতুন কিছুর সাথে সম্পৃক্ত না হওয়ার ফলে পূর্বে ঘটনা তাকে বেশি প্রভাবিত করছে। কারণে সে আগের ঘটনাকে বেশি বেশি স্মরণ করছে নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও। তবে পূর্বের দ্বন্দ্ব-সংঘাত সোফিয়াকে বেশি ভাবিয়েছে, একথা সহজেই বলা যায় তার কার্যাবলি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post