এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Social Work 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC SocialWork 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download.
সমাজকর্ম
দ্বিতীয় পত্র
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৮
HSC Social Work 2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download
১. বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে আর্থিক ও কারিগরি সাহায্যদানকারী একটি সংস্থা, ১৯৬৬ সালের ১লা জানুয়ারিতে গঠন করা হয়। বর্তমানে বিশ্বের ১৭৭টি দেশে এর কার্যক্রম রয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে এই সংস্থাটি বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন- কৃষি, বনায়ন, বিদ্যুৎ, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রভৃতি বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষভাবে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছে।
ক. UCEP এর পূর্ণরূপ কী?
খ. ইউনিসেফের দুটি উদ্দেশ্য লিখ।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থাটির উদ্দেশ্য পাঠ্যবইয়ের আলোকে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিপন্ন মানুষের কল্যাণে গঠিত সংগঠনটির ভূমিকা বাংলাদেশের সাপেক্ষে মূল্যায়ন কর।
১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. UCEP-এর পূর্ণরূপ হলো Underprivileged Children's Educational Programme.
খ. ইউনিসেফের দুটি উদ্দেশ্য হলো- শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং মা ও শিশুর জন্য পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইউনিসেফ বিশ্বব্যাপী অসহায় শিশুদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে শিশুদের স্বাস্থ্যের উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংস্থাটি বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করে। তাছাড়া মা ও শিশুদেরকে পুষ্টিহীনতা থেকে বাঁচাতে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহের জন্যও ইউনিসেফ কাজ করে।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থাটি হলো (UNDP)।
বিশ্বব্যাপী আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের যে অঙ্গসংগঠনগুলো কাজ করছে ইউএনডিপি তার অন্যতম। এর পূর্ণ রূপ United Nations Development Programme।
ইউএনডিপি টেকসই মানব উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এজন্য ৬টি অগ্রাধিকার মূলক ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রতিটি দেশের সামর্থ্য গড়ে তোলা সংস্থাটির উদ্দেশ্য।
ইউএনডিপি বিশ্বের উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোর অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে টেকসই জাতি গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে। এছাড়া এর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য হ্রাস করা। সেইসাথে সংস্থাটি ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত SDG (Sustainable Development Goals) লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন করছে। যে সব দেশের শাসনকাঠামো তুলনামূলকভাবে দুর্বল সেসব দেশের গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংস্কার সাধন করা এর অন্যতম উদ্দেশ্য। এছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করা এবং দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে সহায়তা ও পরিবেশের উন্নয়নেও সংস্থাটি ভূমিকা রাখে। ইউএনডিপি বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংরক্ষণ; নারীর ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নে নারীর অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি; এবং বেকার যুবক-যুব মহিলাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। উদ্দীপকেও বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে ইউএনডিপির বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকের বর্ণিত বিপন্ন মানুষের কল্যাণে গঠিত সংগঠনটি হলো ইউএনডিপি এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এর ভূমিকা অপরিসীম।
১৯৭২ সালের ৩১ জুলাই থেকে UNDP বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এদেশের দারিদ্র্য হ্রাস, শাসনব্যবস্থার উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ জাতিসংঘের SDG-2030 অর্জনে টঘউচ এবং তার উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। উদ্দীপকেও বাংলাদেশের উন্নয়নে ইউএনডিপির বিভিন্ন প্রকল্পের উল্লেখ পাওয়া যায়।
ইউএনডিপি বাংলাদেশে বিদ্যমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান, শাসনব্যবস্থায় গতিশীলতা আনতে নির্বাচন কমিশনের উন্নয়ন, শাসনব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিনণ প্রতিষ্ঠান, যেমন- দুর্নীতি দমন কমিশন, সংসদ ও বিচারবিভাগের সংস্কার সাধনে বিভিনণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছে। এর মধ্যে আছে- পুলিশ সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা; উপজেলা শাসন পরিচালনা প্রকল্প; বিচারব্যবস্থা সুদৃঢ়করণ প্রকল্প; ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসন প্রকল্প প্রভৃতি। দারিদ্র্য সমস্যা সমাধানে সরকার গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচিতে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে চারটি বিষয়কে সামনে রেখে ইউএনডিপি কাজ করছে। এগুলো হলো- স্থানীয় মালিকানা, দক্ষতার উন্নয়ন, আয় ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামাজিক নিরাপত্তা। এছাড়া পরিবেশ ও জ্বালানি প্রকল্পের মাধ্যমে সংস্থাটি জ্বালানি ও পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। গ্রিনহাউস গ্যাস নিয়ন্ত্রণে ইউএনডিপি মন্ট্রিল প্রোটোকলের আওতায় বাংলাদেশকে সহায়তা দিচ্ছে। এর বাইরে ইউএনডিপি বাংলাদেশে উদ্ভূত বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে এক্ষেত্রে দুটি প্রকল্প চলছে, একটি CDMP-2 অন্যটি Humanitarian Response Team এছাড়া ১৯৯৭ সালে শাস্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলার আদিবাসী ও বাঙালিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সংস্থাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন ও আস্থা অর্জন কর্মসূচি গ্রহণ করে।
সার্বিক আলোচনা থেকে তাই বলা যায়, বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সাধনের প্রচেষ্টায় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ইউএনডিপি এবং তার উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যে কারণে দেশের বিপন্ন মানুষের কল্যাণে সংস্থাটির ভূমিকা অপরিসীম।
২. ১৯৭২ সাল থেকে একটি সংস্থা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক অন্যান্য কর্মকান্ডের সাথে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে। আসছে। এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের উন্নয়নকে সুসংহত ও ফলপ্রসূ করতে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা, বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। তাছাড়া এটি মানবসম্পদ উন্নয়নেও অন্যন্য ভূমিকা রাখছে।
ক. মানবতা, পক্ষপাতহীনতা নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা কোন সংস্থার মূলনীতি?
খ. ওয়ার্ল্ড ভিশনের কার্যক্রম ‘লিঙ্গ সমতা আনয়ন’ বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত প্রতিষ্ঠানটির বিবৃত কার্যক্রমের বিশেষত্ব কী? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে সুসংহত ও ফলপ্রসূ করতে উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত প্রতিষ্ঠানটি যে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছে সে সম্পর্কে তোমার মতামত দাও।
২ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানবতা, পক্ষপাতহীনতা, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা ইত্যাদি রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মূলনীতি।
খ. “লিঙ্গ সমতা আনয়ন" ওয়ার্ল্ড ভিশনের একটি নারী উন্নয়নমূলক কার্যক্রম।
লিঙ্গ সমতা আনয়ন কর্মসূচির লক্ষ্য হলো লিঙ্গ বৈষম্য বা নারী পুরুষের অসমতা কমিয়ে আনা। এজন্য প্রতিষ্ঠানটি সমতাভিত্তিক এলাকা উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। পুরুষের পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তা গড়ে তুলতেও 'ওয়ার্ল্ড ভিশন বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। প্রতিষ্ঠানটি এজন্য নারীদের বিভিন্ন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণসহ ঋণ প্রদান করছে।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত প্রতিষ্ঠান টঘউচ-এর বিবৃত কার্যক্রমের বিশেষত্ব হলো বাংলাদেশে এই কার্যক্রমগুলো শুধুমাত্র UNDP-ই পরিচালনা করে। যা এদেশের গণতন্ত্র, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশে যে সকল সংস্থা কাজ করছে তার মধ্যে UNDP-এর কার্যক্রম সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। সংস্থাটি এদেশে বিদ্যমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠানিক রূপদানে কাজ করে যাচেছ। সংস্থাটি এদেশের বিচারব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার জন্য ২০১২ সালে বিচারব্যবস্থা সুদৃঢ়করণ প্রকল্প চালু করে যা ২০১৪ সাল পর্যন্ত চলে। এ প্রকল্পটি UNDP-এর অর্থায়নেই বাস্তবায়িত হয়। আবার এদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সাথে টঘউচ যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি সংস্থাটি এদেশের মানবসম্পদ উন্নয়নেও কাজ করছে।
উদ্দীপকেও UNDP-এর এই কার্যক্রমগুলো বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আর এদেশে কাজ করছে এরকম বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে UNDP-ই এই কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করছে। ফলে এদেশের গণতন্ত্র, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা প্রভৃতির উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। এটিই উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত টঘউচ-এর বিবৃত কার্যক্রমের বিশেষ দিক।
ঘ. আমি মনে করি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে সুসংহত ফলপ্রসূ করতে উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত প্রতিষ্ঠানটি অর্থাৎ UNDP যে সব কার্যক্রম পরিচালনা করছে তা বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশে যেসব সংস্থা কাজ করছে সেগুলোর মধ্যে টঘউচ অন্যতম। এটি ১৯৭২ সালের ৩১ জুলাই থেকে এদেশে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করে আসছে। আর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে সুসংহত ও ফলপ্রসূ করতে সংস্থাটি গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে বিভিন্ন কার্যক্রম চালু করেছে। এর মাধ্যমে সংস্থাটি এদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানে নির্বাচন ও বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে। যেমন এ লক্ষ্যপূরণে সংস্থাটি পুলিশের সেবাকে জনকল্যাণমূখী করতে পুলিশ সংস্কার কার্যক্রম চালু করেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সাধারণ মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে এটি উপজেলা শাসন পরিচালনা প্রকল্প গ্রহণ করেছে। আবার, বিচার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে এ সংস্থার আওতায় বিচারব্যবস্থা সুদৃঢ়করণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমকে গতিশীল ও কার্যকর করতে ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে এছাড়া নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের সাথে UNDP যৌথভাবে কাজ করে। এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে এদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভিত্তি মজবুত হয়েছে। যার ফলে এদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ সহজে তাদের অধিকার আদায় ও চাহিদা পূরণ করতে পারছে।
উদ্দীপকে একটি সংস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে যে এটি ১৯৭২ সাল থেকে এদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক অন্যান্য কর্মকান্ডের সাথে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে যা UNDP কে নির্দেশ করে। আর UNDP গৃহীত কার্যক্রমগুলো এদেশের উন্নয়নকে সুসংহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে সুসংহত করতে উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ টঘউচ পরিচালিত কার্যক্রমগুলোর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
৩. জামাল সন্দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে বেশ কিছু সুউচ্চ চার-তলা বিশিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেখে অবাক হয়। অনুসন্ধানে সে জানতে পারে এসব ইমারত দুর্যোগকালীন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ সংস্থার স্বেচ্ছাসেবীরা দুর্যোগের আগাম পূর্বাভাসের পরিপ্রেক্ষিতে মাইকিং করলে দুর্গত এলাকার জনগণ ঐ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করে। সংস্থাটি প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে অন্ন, বস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে।
ক. UNDP এর পূর্ণরূপ কী?
খ. আন্তর্জাতিক সংগঠন বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে কোন সংস্থার কার্যক্রমের ইঙ্গিত করা হয়েছে? নিরূপণ করো।
ঘ. দুর্যোগ আক্রান্ত মানুষের কল্যাণে উক্ত সংস্থার আরও যেসব ভূমিকা রয়েছে তা বিশ্লেষণ করো।
৩ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. UNDP এর পূর্ণরূপ হলো- United Nations Development Programme.
খ. আন্তর্জাতিক সংগঠন বলতে একাধিক জাতির সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনকে বোঝায়, যা একাধিক দেশে তার কার্যক্রমের বিস্তৃতি ঘটায়।
আন্তর্জাতিক সংগঠনের সদস্য সংখ্যা কত হবে তা সুনির্দিষ্ট নয়। একেকটি আন্তর্জাতিক সংগঠন সদস্য সংখ্যা ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে স্বতন্ত্র এবং অন্যান্য সংগঠন থেকে আলাদা। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, মানবকল্যাণমূলক প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক সংগঠন রয়েছে। এ সকল সংগঠন স্ব স্ব নীতিমালা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক রেডক্রিসেন্ট সমিতির কার্যক্রমকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। ভৌগোলিক আবহাওয়ার কারণে বন্যা, খরা, নদীভাঙন, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো ইত্যাদি বহুবিধ দুর্যোগ এ দেশে আঘাত হানে। এ সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাব্য ক্ষয়-ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে রেডক্রিসেন্ট সমিতি নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
উদ্দীপকে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চল সন্দ্বীপে একটি বিশেষ সংস্থার স্বেচ্ছাসেবীদের কার্যক্রমের কথা উল্লিখিত হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীরা দুর্যোগের আগাম পূর্বাভাসের পরিপ্রেক্ষিতে মাইকিং করলে দুর্গত এলাকার জনগণ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়। সংস্থাটি আশ্রয়প্রার্থীদেরকে জরুরি ভিত্তিতে অন্ন, বস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে। এই কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে সহজেই বলা যায়, সংস্থাটি আন্তর্জাতিক রেডক্রিসেন্ট সমিতি। বাংলাদেশে দুর্যোগ মোকাবিলায় এই সংস্থাটি অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে। ঘূর্ণিঝড‡়র পূর্বাভাস প্রচার করা, ঝড়ের সময় জনগণকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া, ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা এবং তাদের মাঝে নানারকম ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা প্রতিষ্ঠানটির নিয়মিত কার্যক্রম। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলোতে সাফল্যের সাথে মানবকল্যাণমূলক কাজ করে চলেছে।
ঘ. বাংলাদেশে দুর্যোগ আক্রান্ত মানুষের কল্যাণে আন্তর্জাতিক রেডক্রিসেন্ট সমিতির কার্যক্রম অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
উদ্দীপকে রেডক্রিসেন্ট সমিতির দুর্যোগের পূর্বাভাস প্রদান এবং আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকারীদেরকে সহায়তা প্রদানের উল্লেখ রয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম আরও বিস্তৃত। তাদের কার্যক্রমকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়, যথা: (১) জরুরি ত্রাণ ও খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি এবং (২) দুর্যোগ প্রতিরোধ ও পুনর্বাসন কর্মসূচি।
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সমিতি যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ত্রাণ ও খাদ্য বিতরণ করে থাকে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রেডক্রিসেন্ট সমিতি ৩৩টি কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য বিতরণের ব্যবস্থা করেছিল। সংস্থাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ দেশের দুর্গত মানুষের কল্যাণে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। ১৯৮৮, ১৯৯৬ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় এ সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উপকূলীয় লোকজনের জন্য এ সংস্থা ১৯৮৬ সালে ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০০টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করে। এছাড়া ১৯৭৯ সালে কক্সবাজারে একটি রাডার কেন্দ্র স্থাপন করে। বাংলাদেশে এ প্রতিষ্ঠানটি বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত লোকজনের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে।
পরিশেষে বলা যায়, দুর্যোগআক্রান্ত মানুষের কল্যাণে রেডক্রিসেন্ট সমিতি বিস্তৃত পরিসরে কার্যক্রম পরিচালনা করে।
৪. শিবসেনা নামক একটি উগ্র মৌলবাদী সংগঠন বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী ও শিশুদের উঠিয়ে নিয়ে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করছে। আবার কাউকে কাউকে মুক্তিপণ হিসেবে ব্যবহার করছে। আর্তমানবতার জন্য সেবাদানকারী একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে নারী ও শিশুদের উদ্ধারের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানটির নীতি হলো মানবতা, নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতহীনতা। সারাবিশ্বেই জরুরি ত্রাণ সাহায্য, স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে তারা হাজির হয় নিঃস্বার্থভাবে।
ক. সেভ দ্যা চিলড্রেন কাদের নিয়ে কাজ করে?
খ. ইউনিসেফের দুটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য লেখো।
গ. উদ্দীপকে সাহায্যকারী কোন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত নীতি ছাড়াও আর কী নীতি আছে যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি সারাবিশ্বে কাজ করতে পারে? বিশ্লেষণ করো।
৪ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সেভ দ্যা চিলড্রেন শিশুদের নিয়ে কাজ করে।
খ. ইউনিসেফের দুটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো- শিশুদের স্বাস্থ্যের উন্নতি করা এবং মা ও শিশুর জন্য পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা।
প্রকৃতপক্ষে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইউনিসেফ বিশ্বের অসহায় শিশুদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে শিশুদের স্বাস্থ্যের উন্নতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংস্থাটি নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। তাছাড়া মা ও শিশুদেরকে পুষ্টিহীনতা থেকে বাঁচাতে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহের জন্যও ইউনিসেফ কাজ করে।
গ. উদ্দীপকে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কথা বলা হয়েছে।
বিশ্বে আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি অন্যতম। এ প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বব্যাপী মানুষের দুঃখ- দুর্দশা লাঘবে কাজ করে। এর মূলনীতি হলো মানবতা, পক্ষপাতহীনতা, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা, সার্বজনীনতা। একতা ও স্বেচ্ছামূলক প্রভৃতি। এই নীতি অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানটি সারাবিশ্বেই জরুরি ত্রাণ সাহায্য ও স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে হাজির মূলত বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত, অবহেলিত, অসহায় ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে কাজ করাই প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য। উদ্দীপকে নারী ও শিশুদের প্রতি জঙ্গিগোষ্ঠী শিবসেনা-এর অন্যায়-অত্যাচারের প্রেক্ষিতেও এই সংস্থাটি কাজ করে চলেছে।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে শিবসেনা নামক উগ্র মৌলবাদী সংগঠন সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে শিশু ও নারীদেরকে অপহরণ করে তাদেরকে অত্যাচার করছে। নারীদেরকে তারা যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করছে। আবার বন্দিদের জন্য মুক্তিপণও আদায় করছে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সাহায্যকারী একটি প্রতিষ্ঠান সোচ্চার হয়েছে যার মূলনীতিই হলো মানবতা, নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতহীনতা।
প্রতিষ্ঠানটির এই নীতিগুলো উপরে বর্ণিত রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কথা বলা হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত তিনটি নীতি ছাড়াও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির আরও কিছু নীতি রয়েছে যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি সারাবিশ্বে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি সারা বিশ্বের অসহায়, দুস্থ, পীড়িত ও বিপদাপন্ন মানুষের অবস্থার উন্নয়নে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আর এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি কিছু সুনির্দিষ্ট নীতি অনুসরণ করে থাকে। এ সকল নীতির মধ্যে মানবতা, নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতহীনতার নীতির উল্লেখ আমরা উদ্দীপকে লক্ষ করি।
রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি বিশ্বব্যাপী মানুষের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে মোট সাতটি নীতি অনুসরণ করে থাকে। উদ্দীপকে উল্লিখিত তিনটি নীতির সাথে যে সকল নীতি রয়েছে সেগুলো হলো স্বাধীনতা, সর্বজনীনতা, একতা ও স্বেচ্ছামূলক। এই সকল নীতি অনুসরণের মধ্য দিয়েই আন্তর্জাতিক রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে কাজ করে চলেছে। নীতিগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি সারাবিশ্বের অসহায়, নিপীড়িত ও দুস্থ মানুষদের কল্যাণ সাধনের ওপরই অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছে। এজন্যই মানবতা, পক্ষপাতহীনতা ও নিরপেক্ষতার নীতিতে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে। তাছাড়া সংস্থাটি স্বাধীনতা, সর্বজনীনতা ও ঐক্যের নীতিতে বিশ্বাসী। এই নীতিগুলোর আলোকে প্রতিষ্ঠানটি স্বেচ্ছামূলক কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বেই অসহায় ও ভাগ্যাহত মানুষের সেবা করছে।
পরিশেষে বলা যায়, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি উদ্দীপকে বর্ণিত নীতিগুলো ছাড়াও উপরে বর্ণিত নীতির মাধ্যমে সারাবিশ্বে কাজ করতে পারে।
৫. জালাল হোসেন একটি মানবকল্যাণধর্মী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। এই প্রতিষ্ঠানটি জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি শিশুর খাদ্য, পুষ্টি ও নিরাপত্তা বিধানের জন্য কাজ করে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ প্রতিষ্ঠানটি তাদের সেবাকর্ম পরিচালনা করে থাকে।
ক. ইউসেপ-এর প্রতিষ্ঠাতার নাম কী?
খ. রেডক্রিসেন্ট প্রতিষ্ঠানের মূল কাজ কী?
গ. উদ্দীপকে জালাল হোসেন কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. বাংলাদেশে শিশুকল্যাণে এ প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব আলোচনা করো।
৫ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ইউসেফের প্রতিষ্ঠাতার নাম লিন্ডসে অ্যালান চেইনি।
খ. রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মূল কাজ হলো সারাবিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত, অবহেলিত, অসহায় ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কল্যাণ সাধন করা।
রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী মানবিক সংস্থা। অসহায়, দুস্থ, পীড়িত ও বিপদাপন্ন মানুষের উন্নয়নে সংস্থাটি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সংস্থাটি জরুরি ত্রাণ ও খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ ও পুনর্বাসন কর্মসূচি, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা কর্মসূচি প্রভৃতির আয়োজন করে। সর্বজনীনতা, একতা, পক্ষপাতহীনতা, মানবতা প্রভৃতি মূলনীতির ভিত্তিতে সংস্থাটি এ সকল কর্মসূচি পালন করে।
গ. উদ্দীপকে জালাল হোসেন জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফ-এ কর্মরত।
আন্তর্জাতিক শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ বিশ্বের অসহায় শিশুদের রক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এ সংস্থাটি জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের অধীনে শিশুকল্যাণে নানা কর্মসূচি পরিচালনা করে। উদ্দীপকের বর্ণনায় এই প্রতিষ্ঠানটিরই ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
উদ্দীপকের জালাল সাহেব জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত একটি মানবকল্যাণধর্মী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি শিশুদের খাদ্য, পুষ্টি ও নিরাপত্তা বিধানের জন্য কাজ করে। এ থেকেই বোঝা যায়, প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ, যেটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিশুকল্যাণে তাদের সেবাকর্ম পরিচালনা করে থাকে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল বিশ্বে শিশুদের সার্বিক কল্যাণে ইউনিসেফের কার্যক্রম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ প্রতিষ্ঠানটি শিশু স্বাস্থ্যের উনণতি, শিশু ও মায়েদের জন্য পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ, তাদের জন্য হাসপাতাল নির্মাণ, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা কার্যক্রম, মা ও শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা প্রভৃতি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এছাড়া ইউনিসেফ বিশ্বব্যাপী শিশুদের পুনর্বাসন ও কল্যাণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। উদ্দীপকের জালাল হোসেনের প্রতিষ্ঠানও এ কাজগুলোই পরিচালনা করছে। তাই বলা যায়, জালাল হোসেন ইউনিসেফ এ কর্মরত।
ঘ. বাংলাদেশে শিশুকল্যাণে উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফের ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জনের পরবর্তী সময় থেকে ইউনিসেফ বাংলাদেশে কাজ করে আসছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের শিশুদের স্বাস্থ্যরক্ষা ও পুষ্টি কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের শিশুদের কল্যাণে খাদ্য, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, বিশুদ্ধ পানি, টিকা ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করে থাকে।
বাংলাদেশে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবায় ইউনিসেফের গৃহীত কর্মসূচিগুলো হচ্ছে- স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, পয়ঃপ্রণালি ব্যবস্থা, যক্ষা, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি থেকে প্রতিকার ও প্রতিরোধ। আমাদের দেশের শিশুদের পুষ্টিহীনতা দূর করতে ইউনিসেফ পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ, পুষ্টি সংক্রান্ত জ্ঞান দান এবং WHO-এর সাথে যৌথভাবে ওষুধ সরবরাহ করে থাকে। শিক্ষাক্ষেত্রেও ইউনিসেফের অবদান অপরিসীম। বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা কর্মসূচির পাশাপাশি ইউনিসেফ নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, পুরাতন প্রতিষ্ঠান সংস্কার, শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তাছাড়া ইউনিসেফের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম, এইচআইভি আক্রান্ত শিশুদের জন্য কার্যক্রম, জন্ম নিবন্ধন, নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার৷ উন্নয়ন প্রভৃতি। উদ্দীপকের জালাল হোসেনও একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যা শিশুদের খাদ্য, পুষ্টি ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে। এতে বোঝা যায় তার প্রতিষ্ঠানটি হলো ইউনিসেফ যা উপরে বর্ণিতভাবে এদেশে শিশু কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, ইউনিসেফ বাংলাদেশে শিশুদের কল্যাণে কার্যকর ও ফলপ্রসূ ভূমিকা রেখে চলেছে।
৬. সুষমা এবং সুরমা দুজন সমাজকর্মী। আর্তমানবতার সেবায় নিজ এলাকায় তারা প্রতিভা নামের একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এই প্রতিষ্ঠানটি এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে বিভিন্ন হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগীদের জন্য পৌঁছে দেয়। এছাড়া উপকূলীয় এলাকার জনগণ যাতে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় নিজেদের আত্মরক্ষা নিজেরাই করতে পারে সে সম্পর্কেও জনসচেতনতা সৃষ্টি করে থাকে। সংগঠনটি দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ কাজেও অংশগ্রহণ করে।
ক. রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতার নাম লিখ।
খ. সেভ দ্যা চিলড্রেনের জরুরি সাহায্য কার্যক্রম ব্যাখ্যা করো।
গ. 'প্রতিভা' সংগঠনটির কাজের সাথে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. বাংলাদেশের রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যক্রমে সুষমা ও সুরমা অনুসৃত পাঠটি প্রয়োগের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে— তুমি কি বক্তব্যটিকে সমর্থন করো? যুক্তিসহ মতামত দাও।
৬ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন হেনরি ডুনান্ট।
খ. দুর্যোগকালীন বা পরবর্তীতে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের সাহায্যের জন্য সেভ দ্যা চিলড্রেন প্রস্তুত থাকে।
যখন কোনো দুর্যোগ ঘটে তখন বা পরবর্তী সময়ে সেভ দ্যা চিলড্রেন এর দুর্যোগ ও ত্রাণ বিভাগ শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, জীবন রক্ষাকারী উপকরণ নিয়ে হাজির হয়। এছাড়া চলমান কোনো জরুরি অবস্থায় শিশুদের প্রয়োজনীয় সাহায্য দিয়ে থাকে।
গ. 'প্রতিভা' সংগঠনটির সাথে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির রক্তদান এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় তৎপরতা এ কর্মসূচি দুটির সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে 'প্রতিভা' নামক সংগঠনটি মুমূর্ষু রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে এলাকার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে হাসপাতালে সরবরাহ করছে। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে এ ধরনের কাজ লক্ষ করা যায়। এ কর্মসূচির আওতায় প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও রক্তদান কর্মসূচি পরিচালনা করে। 'রক্ত দিন জীবন বাঁচান' এ স্লোগানের মাধ্যমে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে রক্ত সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করছে বাংলাদেশ রেডক্রিসেনট সোসাইটি। এছাড়া প্রতিভা সংগঠনটির প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা
সংক্রান্ত কাজের সাথেও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মিল রয়েছে। এক্ষেত্রে সোসাইটি দুর্যোগপূর্ব, দুর্যোগকালীন এবং দুর্যোগ পরবর্তী নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের উপকূলবাসীকে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করতে পূর্বাভাস প্রদান, নিরাপদ স্থানান্তর, উদ্ধার তৎপরতা, চিকিৎসা প্রদান, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বন্যা বা অন্যান্য দুর্যোগেও এ সংগঠনটির রয়েছে নানামুখী মানবতাধর্মী কার্যক্রম। সুতরাং বলা যায়, কার্যক্রমগত দিক দিয়ে উভয় সংগঠনের সাথে বেশকিছু সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি যেসব আদর্শ, মূলনীতি অনুসরণ করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে তা সমাজকর্ম অনুসৃত নীতির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটিকে আমি সমর্থন করি।
প্রতিভা সংগঠনের সাথে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যক্রমগত মিল থাকায় সুষমা ও সুরমা অনুসৃত ব্যক্তি, দল, সমষ্টি সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগের এখানে যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এ সংগঠনটি দলকেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করে সবচেয়ে বেশি। তাই দল সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগ করে দলীয় কাজ করলে টার্গেট গ্রুপ বেশি উপকৃত হতে পারে। আবার সমষ্টি উন্নয়নেও সংগঠনটির কার্যক্রম লক্ষ করা যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে সমষ্টিকেন্দ্রিক সতর্কর্তা, উদ্ধার তৎপরতা বা ত্রাণ, পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করে সংগঠনটি। এক্ষেত্রে সমষ্টি সমাজকর্ম প্রয়োগ করে জনগণের নিজস্ব সম্পদ ও সংগঠনের সাহায্যে তাদের অবস্থার উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালানো যায়। আবার রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি অনেক জনসচেতনামূলক প্রচার প্রচারণা চালিয়ে থাকে যা সমাজকর্মের সামাজিক কার্যক্রমের আওতায় পড়ে। রক্তদান কর্মসূচির সফলতার জন্য সমাজকর্মের মাধ্যমে ব্যক্তি উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি পরিচালনা করা যায়। আবার যুব রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মানবকল্যাণমূলক কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার জন্য দল সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়।
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মানবতাধর্মী পক্ষপাতহীন স্বাধীন কর্মসূচিতে সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
৭. মিনা কার্টুন বর্তমান বাংলাদেশে সচেতনতা সৃষ্টিকারী সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি কর্মসূচি। তাই অজিত রায় নামের একজন সচেতন যুবক গ্রামের অশিক্ষিত নিরক্ষর মানুষদের সচেতন করার উদ্দেশ্যে মিনা কার্টুন প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করলেন। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে এলাকাবাসী শিশু শিক্ষা, স্বাস্থ্য রক্ষা, নারী-পুরুষ সমঅধিকার প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেল। অজিত রায় শুধু এই বিষয়টিই নয়, বাংলাদেশের অসহায় শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং নারী শিক্ষা প্রসারেও কাজ করছেন।
ক. কে 'সেভ দ্যা চিলড্রেন' প্রতিষ্ঠা করেন?
খ. শিশুর জন্ম নিবন্ধনের ওপর গুরুত্ব প্রদান করা হয় কেন?
গ. অজিত রায়ের কার্যক্রম্ বাংলাদেশে কর্মরত কোন আন্তর্জাতিক সংস্থার কার্যক্রমকে নির্দেশ করছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উক্ত সংস্থার কার্যক্রম কি শুধু উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ? যুক্তিসহ মতামত দাও।
৭ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. 'সেভ দ্যা চিলড্রেন' প্রতিষ্ঠা করেন ইংল্যান্ডের বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী Eglantyne Jebb।
খ. প্রতিটি সন্তান যেন তার পিতা-মাতার পরিচয়ে পরিচিত হতে পারে এ জন্য জন্ম নিবন্ধনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
পরিচয় একটি শিশুকে তার সকল অধিকার উপভোগের নিশ্চয়তা প্রদান করে। জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে শিশুর সেই পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। এজন্য জন্ম নিবন্ধনের গুরুত্ব অপরিসীম।
গ. অজিত রায়ের কার্যক্রম বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউনিসেফ-এর কার্যক্রমকে নির্দেশ করছে।
জাতিসংঘের অন্যতম সহযোগী সংস্থা ইউনিসেফ মা ও শিশু কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে। ইউনিসেফ পরিচালিত কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম হলো এই মিনা ইনিশিয়েটিভ। নারীর ক্ষমতায়ন ও তাদের প্রতি প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন সাধন করে পুরুষের পাশাপাশি তাদের সম-অধিকার নিশ্চিত করা মিনা ইনিশিয়েটিভের লক্ষ্য। এর মাধ্যমে নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রচলিত বঞ্চনাকে কার্টুন, ছবি প্রদর্শনের মাধ্যমে তুলে ধরে তা প্রতিরোধ, প্রতিকার বা উন্নয়নে দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
উদ্দীপকের অজিত রায় নারী-পুরুষের সমতা বিধানের মাধ্যমে লিঙ্গ বৈষম্য কমিয়ে আনতে এলাকায় যে সচেতনতামূলক কার্টুন চিত্র প্রদর্শন করেছেন তা ইউনিসেফ প্রবর্তিত কর্মসূচি মিনা ইনেশিয়েটিভ কর্মসূচিকে নির্দেশ করছে। এছাড়া অজিত রায় শিক্ষাক্ষেত্রে যে কর্মসূচি প্রবর্তন করেছেন তা ইউনিসেফের শিক্ষা কার্যক্রমকে নির্দেশ করে। শিক্ষার মান উন্নয়ন ও শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে ইউনিসেফ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করছে।
সুতরাং বলা যায়, অজিত রায়ের সচেতনতামূলক সেবাধর্মী কার্যক্রম জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনিসেফের কার্যক্রমকেই নির্দেশ করছে।
ঘ. ইউনিসেফের কার্যক্রম শুধু শিক্ষা ও সচেতনতা সৃষ্টির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং তা আরো অনেক ক্ষেত্রে বিস্তৃত।
ইউনিসেফ বিশ্বের ১৬১টি দেশে শিশুদের সার্বিক কল্যাণে নানা ধরনের কর্মসূচি পরিচালনা করছে। উন্নয়শীল ও অনুন্নত দেশের শিশুদের অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে মাতৃসদন ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। গ্রামাঞ্চলে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, পয়ঃপ্রণালি ব্যবস্থা, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া প্রতিকার ও প্রতিরোধে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এছাড়া পুষ্টিহীনতা মোকাবিলায় সংস্থাটি পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ, পুষ্টি সংক্রান্ত জ্ঞানদান, দুর্যোগ পরবর্তী খাদ্য সামগ্রী বিতরণসহ নানা ধরনের পুষ্টি বিষয়ক কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। সেই সাথে মহিলাদের কর্মোপযোগী করে গড়ে় তোলার জন্য ইউনিসেফ নানা ধরনের বৃত্তিমূলক ও কারিগরি প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং যুদ্ধপরবর্তী ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করছে ইউনিসেফ। এইচআইভি আক্রান্ত শিশুদের জন্য সহায়তামূলক কর্মসূচি গ্রহণ, শিশুর জন্ম পরিচয়কে নিশ্চিত করার জন্য জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম, মাতৃমৃত্যু হ্রাসকরণ প্রভৃতি কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে ইউনিসেফ। এ সমস্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দরিদ্র, অসহায়, এতিম ও দুঃস্থ শিশুদের সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা প্রদানে কাজ করছে। উপরের আলোচনার শেষে একথা বলা যায় যে, ইউনিসেফ শিশুদের শিক্ষা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি মা ও শিশুদের সার্বিক কল্যাণে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।
৮. আন্তর্জাতিক রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মী মি. লিটন কাজের উদ্দেশ্যে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছুটে বেড়ায়। সংস্থাটি যেখানেই বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প বা যুদ্ধের কারণে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয় সেখানেই ত্রাণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পুনর্বাসন কর্মসূচি নিয়ে হাজির হয়।
ক. ওয়ার্ল্ড ভিশন-এর প্রতিষ্ঠাতার নাম কী?
খ. ইউনিসেফ সংস্থার ধারণা দাও।
গ. উদ্দীপকের আলোকে আন্তর্জাতিক রেডক্রিসেন্ট সংস্থার কর্মসূচি আলোচনা করো।
ঘ. উক্ত কর্মসূচিগুলোতে সমাজকর্ম পদ্ধতির প্রয়োগ দেখাও।
৮ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ওয়ার্ল্ড ভিশন-এর প্রতিষ্ঠাতা মার্কিন নাগরিক Dr. Bob Pierce।
খ. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ (UNICEF) ১৯৪৬ সালে ১১ ডিসেম্বর আত্মপ্রকাশ করে।
ইউনিসেফ বিশ্বের অসহায় শিশুদের রক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এর সদর দপ্তর অবস্থিত। জাতিসংঘের মহাসচিবের মাধ্যমে নিযুক্ত একজন নির্বাহী পরিচালকের মাধ্যমে এটি পরিচালিত হয়। বর্তমানে বিশ্বের ১৯১টি দেশ ইউনিসেফের সদস্য।
গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক রেডক্রিসেন্ট সমিতির কার্যক্রমকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি আর্তমানবতার সেবায় সারাবিশ্বে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি সারা বিশ্বের অসহায়, দুস্থ, পীড়িত ও বিপদাপন্ন মানুষের অবস্থার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানটি বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত লোকজনের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় ত্রাণ ও খাদ্য বিতরণ করে থাকে। এ ছাড়া যুদ্ধ আক্রান্ত দেশগুলোতে আহত লোকজনদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকে। উক্ত দেশগুলোতে বিভিন্ন প্রকার ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ এবং শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
বিশ্বে আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি অন্যতম। এ প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বব্যাপী মানুষের দুঃখ- দুর্দশা লাঘবে কাজ করে। এ প্রতিষ্ঠানটির মূলনীতিই হলো মানবতা, নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতহীনতা। এই নীতি অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানটি সারাবিশ্বেই জরুরি ত্রাণ সাহায্য ও স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে হাজির হয়। মূলত বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত, অবহেলিত, অসহায় ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে কাজ করাই প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য। উদ্দীপকেও প্রতিষ্ঠানটির এ সকল কর্মকান্ড উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে ত্রাণ ও সাহায্য কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও পুনর্বাসন কর্মসূচিকে নির্দেশ করা হয়েছে। যেগুলোতে ব্যক্তি সমাজকর্ম, দল সমাজকর্ম, সমষ্টি সংগঠন ও সমষ্টি উন্নয়ন সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে।
রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, শিক্ষা, পুনর্বাসন প্রভৃতি কার্যক্রমের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। বিভিন্ন দুর্যোগের ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সমাজকর্ম পদ্ধতির প্রয়োগ দেখানো যায়। রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যক্রমে ব্যক্তির ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করে আত্মনির্ভরশীল ও কর্মসংস্থানে নিয়োজিত করতে ব্যক্তি সমাজকর্মের প্রয়োগ দেখানো যায়। অন্যদিকে দুর্যোগ, খাদ্য সরবরাহ, স্বাস্থ্য ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে দল সমাজকর্ম এবং সমষ্টি সংগঠন ও উন্নয়ন সমাজকর্মের প্রয়োগ করা হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পুনর্বাসন কর্মসূচি নিয়ে কাজ করে। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সমষ্টির ত্রাণ ও সাহায্য পৌঁছানোর জন্য সমষ্টি সংগঠন ও উন্নয়ন সমাজকর্ম প্রয়োগ করা যায়। আবার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে চিকিৎসা সমাজকর্মের প্রয়োগ য়োজন। শিক্ষা ও পুনর্বাসন কর্মসূচিতে দল সমাজকর্ম সমষ্টি সংগঠন ও সমষ্টি উন্নয়ন সমাজকর্ম প্রয়োগ করা যেতে পারে। এছাড়া দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি পর্যায়ের উন্নয়নের জন্য ব্যক্তি সমাজকর্মের প্রয়োগ করা যায়। উত্ত পদ্ধতিগুলো প্রয়োগের মাধ্যমে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে কাজ করতে পারে।
৯. নাঈমুদ্দীন সাহেব একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেন। সংস্থাটির সদর দপ্তর নিউইয়র্কে। সংস্থাটি শিশুদের নিয়ে কাজ করে। শিশুদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়নে সংস্থাটি লেখাপড়ার সরঞ্জাম সরবরাহ করে, রোগ প্রতিরোধক টিকা প্রদান করে, মেয়েদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেয়। ফলে শিশুরা রোগমুক্ত হয়ে জীবন ধারণ করতে পারে।
ক. MDG এর পূর্ণরূপ কী?
খ. ওয়ার্ল্ড ভিশন বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত সংস্থাটিকে বিশবব্যাপী শিশুকল্যাণের ভিত্তি বলা হয় ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বাংলাদেশে উক্ত সংস্থার কার্যক্রম আলোচনা কর।
৯ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. MDG এর পূর্ণরূপ হলো Millennium Development Goals।
খ. পৃথিবী জুড়ে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে নিবেদিত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার নাম ওয়ার্ল্ড ভিশন।
১৯৫০ সালে কোরীয় যুদ্ধের পরিত্যক্ত শিশুদের পরিচর্যার মধ্য দিয়ে মার্কিন নাগরিক Dr. Bob Pierce ওয়ার্ল্ড ভিশন প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে বিশ্বের শতাধিক দেশে ওয়ার্ল্ড ভিশন তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এটি শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়ন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টিসহ তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত সংস্থাটি হচ্ছে ইউনিসেফ।
তুলির বাবার চাকরিরত আন্তর্জাতিক সংস্থাটি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শিশুদের স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করে। এছাড়া সংস্থাটি শিশুদের পুষ্টিসাধন, স্বাস্থ্য উন্নয়ন, শিশু ও মায়েদের কল্যাণ, দুর্যোগের সময় জরুরি ত্রাণ বিতরণ প্রভৃতি কাজ করে। এ সকল কার্যক্রম ইউনিসেফের কার্যক্রমের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ইউনিসেফকে বিশ্বব্যাপী শিশু কল্যাণের স্থায়ী ভিত্তি বলা হয়। কারণ ১৯৪৬ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউনিসেফ বিশ্বের অসহায় শিশুদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি প্রভৃতি বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষকরে শিশুদের সার্বিক কল্যাণে এ সংস্থার কার্যক্রম উল্লেখ করার মতো। যেসব লক্ষ্য নিয়ে ইউনিসেফ কাজ করে তার মধ্যে শিশু স্বাস্থ্যের উন্নতি করা; শিশু ও মহিলাদের জন্য হাসপাতাল ও সদন নির্মাণ করা; স্কুলগামী শিশুদের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য বিদ্যালয়ে খাদ্য প্রকল্প চালু করা; মা ও শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা; প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের পুনর্বাসনে সহায়তা করা; বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা; ছেলে ও মেয়ে শিশুর মধ্যে বৈষম্য রোধকল্পে সহায়তা ও শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা; প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার পদক্ষেপ গ্রহণ করা; শিশুদের এইচআইভি বা এইডস-এর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও ইউনিসেফ যুদ্ধাহত শিশুদের পুনর্বাসন ও কল্যাণে কাজ করে থাকে। এসব কারণেই ইউনিসেফকে বিশ্বব্যাপী শিশুকল্যাণের স্থায়ী ভিত্তি বলা হয়।
ঘ. বাংলাদেশে শিশুকল্যাণে উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফের ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জনের পরবর্তী সময় থেকে ইউনিসেফ বাংলাদেশে কাজ করে আসছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের শিশুদের স্বাস্থ্যরক্ষা ও পুষ্টি কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের শিশুদের কল্যাণে খাদ্য, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, বিশুদ্ধ পানি, টিকা ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করে থাকে।
বাংলাদেশে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবায় ইউনিসেফের গৃহীত কর্মসূচিগুলো হচ্ছেতস্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, পয়ঃপ্রণালি ব্যবস্থা, যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি থেকে প্রতিকার ও প্রতিরোধ। আমাদের দেশের শিশুদের পুষ্টিহীনতা দূর করতে ইউনিসেফ পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ, পুষ্টি সংক্রান্ত জ্ঞান দান এবং WHO-এর সাথে যৌথভাবে ওষুধ সরবরাহ করে। শিক্ষাক্ষেত্রেও ইউনিসেফের অবদান অপরিসীম। বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা কর্মসূচির পাশাপাশি ইউনিসেফ নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, পুরাতন প্রতিষ্ঠান সংস্কার, শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করে। তাছাড়া ইউনিসেফের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম, এইচআইভি আক্রান্ত শিশুদের জন্য কার্যক্রম, জন্ম নিবন্ধন, নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রভৃতি।
উপর্যুক্ত কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে ইউনিসেফ বাংলাদেশে শিশুদের কল্যাণে কার্যকর ও ফলপ্রসূ ভূমিকা রেখে চলেছে।
১০. ইরাকে মার্কিন সন্ত্রাসী হামলায় হাজার হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়। এতিম হয় হাজার হাজার শিশু। যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশু ও আহতদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। অবশ্য যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকেই এক সময় জন্ম হয়েছিল আন্তর্জাতিক সংস্থাটির। জেনেভা সম্মেলনের মাধ্যমে সংস্থাটি আত্মপ্রকাশ করার পর এটি আর্তমানবতার সেবার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
ক. N.G.O-এর পূর্ণরূপ কী?
খ. আন্তর্জাতিক সংস্থা বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে কোন আন্তর্জাতিক সংস্থার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে? সংস্থাটির পরিচয় তুলে ধর
ঘ. বাংলাদেশে উক্ত সংস্থার কার্যক্রম লিখ।
১০ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. N.G.O-এর পূর্ণরূপ হলো Non Government Organization.
খ. আন্তর্জাতিক সংগঠন বলতে একাধিক জাতির সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনকে বোঝায়, যা একাধিক দেশে তার কার্যক্রমের বিস্তৃতি ঘটায়।
আন্তর্জাতিক সংগঠনের সদস্য সংখ্যা কত হবে তা সুনির্দিষ্ট নয়। একেকটি সংগঠন সদস্য সংখ্যা ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে স্বতন্ত্র এবং অন্যান্য সংগঠন থেকে আলাদা। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, মানবকল্যাণমূলক প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক সংগঠন রয়েছে। এ সকল সংগঠন স্ব স্ব নীতিমালা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে কার্যক্রম পরিচালনা করে।
গ. উল্লিখিত আন্তর্জাতিক স্বেচছাসেবী সংগঠনটি হলো রেডক্রিসেনট সোসাইটি।
আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচিতি বিশ্বব্যাপী। মানবতা, একতা, স্বাধীনতা, সাম্য, সর্বজনীনতা, নিরপেক্ষতা, স্বেচ্ছামূলক এই নীতি বা আদর্শের আলোকে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি কাজ করে।
১৮৬৩ সালে সুইজারল্যান্ডের অধিবাসী হেনরি ডুনান্ট নামক একজন মানবদরদি ব্যক্তির আন্তরিক প্রচেষ্টায় রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি জন্মলাভ করে। বিশ্বব্যাপী মানবকল্যাণ এবং দুর্গত মানুষের সেবায় প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি মুমূর্ষু রোগীদের জীবন রক্ষায় 'রক্ত দিন জীবন বাঁচান' এই স্লোগানের মাধ্যমে জনগণকে বিনামূল্যে রক্তদানে উৎসাহিত করে।
উদ্দীপকে উল্লিখিত স্বেচছাসেবী প্রতিষ্ঠানের তথ্যসমূহ রেডক্রিসেনট সোসাইটির কাজের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটি হলো রেডক্রিসেনট সোসাইটি।
ঘ. বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে আর্তমানবতার সেবায় রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যুদ্ধ, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি দুর্যোগময় মুহূর্তে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি কতগুলো নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি বাংলাদেশে দুর্যোগ মোকাবিলা ও আর্থ- সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য নানা ধরনের ত্রাণ সহায়তা করে। স্বাস্থ্যের মান উন্নয়ন ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য ও রক্তদান কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে। জরুরি সম্পূরক খাদ্য সংস্থান নামে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি তাদের খাদ্য কর্মসূচি পরিচালনা করে। উদ্বাস্তু, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের মধ্যে খাদ্য বিতরণ এ কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য। যুবক ও কিশোরদের মধ্যে মানবতাবোধ জাগিয়ে তোলার জন্য এবং তাদের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের যুব রেডক্রিসেন্ট কার্যক্রমে যোগদানের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। ১৯৭৫ সাল থেকে বাংলাদেশে এ কার্যক্রম চলে আসছে। এ প্রতিষ্ঠানটি ঢাকায় একটি এতিমখানা পরিচালনা করছে। এখানে ১০০ এতিমের রক্ষণাবেক্ষণ, লালন-পালন ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, বাংলাদেশের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনায় রেডক্রিসেন্ট সমিতির ভূমিকা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার গৃহীত বিভিন্ন ত্রাণ ও পুনর্বাসনমূলক কার্যক্রমে সহায়ক ও পরিপূরক ভূমিকা পালন করছে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি।
0 Comments:
Post a Comment