HSC সমাজকর্ম ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৬ pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Social Work 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC SocialWork 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download.

সমাজকর্ম
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৬

HSC Social Work 2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. গ্রামের ছিন্নমূল অসহায় মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ১৯৭৪ সালে একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। যা বর্তমানে ৪৮৫টি উপজেলায় বিদ্যমান রয়েছে। এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে গ্রামে বসবাসরত জনগণের জীবনমান উন্নয়ন করা।
ক. মানবাধিকার কী?
খ. কিশোর আদালত বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কর্মসূচিটির কার্যক্রম বর্ণনা কর।
ঘ. বাংলাদেশের গ্রামীণ উন্নয়নে উদ্দীপকের ৪৮৫টি উপজেলায় বাস্তবায়িত কার্যক্রমটির কার্যকারিতা মূল্যায়ন কর।

১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের স্বাধীন ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের নিশ্চয়তার জন্য অত্যাবশ্যকীয় সুযোগ-সুবিধাগুলোই হলো মানবাধিকার।

খ. কিশোর আদালত বলতে কিশোর অপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত বিচারালয়কে বোঝায়।
কিশোর আদালত দেশের অন্যান্য আদালতের মতো নয়। এখানে কোনো শুনানি হয় না, বিচার প্রক্রিয়া হয় ঘরোয়া পরিবেশে। এ আদালতে বাদী- বিবাদী, আইনজীবী কেউ থাকে না। এমনকি অভিযুক্তকে কোনো শাস্তিও দেওয়া হয় না। অপরাধীর আত্মীয়-স্বজন, একজন প্রবেশন অফিসার বা সমাজকর্মী এবং আদালত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বিচারকাজ পরিচালনার সময় উপস্থিত থাকে।

গ. উদ্দীপকে গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচির উল্লেখ করা হয়েছে; এর মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র ও অসহায় জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
গ্রামীণ সমাজসেবা বলতে সমষ্টি-উন্নয়ন পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীল গ্রাম উন্নয়নমূলক কর্মসূচিকে বোঝায়। এর মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের জনগণের নিজস্ব সম্পদ ও সামর্থ্যের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের চাহিদা পূরণ, সমস্যা সমাধান এবং সার্বিক কল্যাণ সাধনের প্রচেষ্টা চালানো হয়। সর্বপ্রথম ১৯৭৪ সালে এ কর্মসূচি তার কার্যক্রম শুরু করে যার ইঙ্গিত উদ্দীপকে দেওয়া হয়েছে।
গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচি গ্রামাঞ্চলের নিম্ন আয়ের জনগণ বিশেষত বেকার ও অর্ধ-বেকারদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ঋণসহ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে। এছাড়া গ্রামীণ সমাজসেবা আর্থ-সামাজিক জরিপের মাধ্যমে কর্মদল গঠন করে। এর মাধ্যমে একই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যভিত্তিক এ দলগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা ও বাস্তবায়ন করা হয়। এছাড়া এ কর্মসূচির আওতায় জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা, 'পুষ্টিজ্ঞান প্রদান, বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার, খাবার স্যালাইন তৈরি ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা ও সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়। এছাড়া এর আওতায় স্বল্প বা বিনামূল্যে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য রক্ষার্থে প্রতিরোধমূলক টিকাদান কর্মসূচিসহ মায়েদের প্রজনন স্বাস্থ্য নিশ্চিতের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। গ্রামীণ জনগণের অজ্ঞতা ও নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচির আওতায় প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা চালু করা হয়। তাই বলা যায়, গ্রামাঞ্চলের অসহায় ও দুঃস্থ জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচি বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বাংলাদেশের ৪৮৫টি উপজেলায় বাস্তবায়িত কার্যক্রম হলো গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচি। গ্রামপ্রধান বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ কর্মসূচির কার্যকারিতা রয়েছে।
নিজস্ব সম্পদ এবং সরকারের সহায়তায় গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের উদ্দেশ্যে গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচি পরিচালিত হয়। এক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলের দারিদ্র্য হ্রাসের লক্ষ্যে সাধারণ মানুষকে শিক্ষাগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা, প্রশিক্ষণ ও মূলধন সরবরাহের মাধ্যমে এ সকল জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করার জন্য ১৯৭৪ সাল থেকে গ্রামীণ সমাজসেবা অধিদপ্তর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার কার্যকারিতা ধীরে ধীরে বিস্তৃত হচ্ছে।
উদ্দীপকে ৪৮৫ টি উপজেলায় গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচি পরিচালনার উল্লেখ আছে। কিন্তু বর্তমানে দেশের ৪৮৯ টি উপজেলা এই কর্মসূচির আওতাভুক্ত। মূলত এ কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামের নিম্ন আয়ভুক্ত জনগণ নারীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষিত এ মহিলারা আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি অনেক বেকার মহিলাদের কাজের ব্যবস্থাও করছেন; যার ফলে একদিকে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে কমছে দারিদ্রের হার। আবার গ্রামের দরিদ্র, ভূমিহীন, বেকার ও দুঃস্থ মহিলাদের পুঁজি সমস্যা সমাধানে সহায়তা করার লক্ষ্যে পল্লি এলাকায় সুদমুক্ত ঋণদান কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এছাড়া পরিবারের আকার ছোট রাখতে পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের জন্যও এ কর্মসূচি কাজ করে। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা, বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া, আত্মকর্মসংস্থানমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঋণ, মূলধন দিয়ে সহায়তা করাও এ কর্মসূচির লক্ষ্য। এছাড়া এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিজ্ঞান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে ধারণা প্রদান, সামাজিক বনায়নসহ মা ও শিশুসেবা, নিরাপদ পানির ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। সার্বিক আলোচনা থেকে বলা যায়, সাধারণ মানুষকে উন্নয়নের স্রোতধারায় সংযুক্ত করা এবং দারিদ্রের মাত্রা কমিয়ে আনতে এ কর্মসূচি কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে।

২. অর্কের বয়স ১৫ বছর। সে যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনায় অপরাধী। একটি বিশেষ আদালতে তাকে হাজির করা হলে আদালত শর্তসাপেক্ষে তাকে মুক্তি দিল।
ক. গ্রামীণ সমাজসেবা (RSS) এর কার্যক্রম কোন মন্ত্রণালয়ের অধীন?
খ. শহর সমাজসেবা (USS) বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত বিশেষ আদালত কেন অর্ককে মুক্তি দিল? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. 'শাস্তি নয়, সংশোধনই ইঙ্গিতকৃত বিশেষ আদালতের মূল দর্শন।' — পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

২ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. গ্রামীণ সমাজসেবা (RSS) এর কার্যক্রম বাংলাদেশ সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীন।

খ. শহর সমাজসেবা বলতে বাংলাদেশ সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত একটি সেবামূলক কার্যক্রমকে বোঝায়।
কার্যক্রম মূলত সমষ্টি উন্নয়নভিত্তিক। এতে শহরের দরিদ্র ও বস্তিতে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান তথা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করা হয়। জাতিসংঘের সহায়তায় ১৯৫৫ সালে সর্বপ্রথম ঢাকায় এ কার্যক্রম শুরু হয়। তবে বর্তমানে এ কর্মসূচি দেশের সকল জেলায় পরিচালিত হচ্ছে। শহর সমাজসেবার মাধ্যমে দরিদ্রদের স্বাবলম্বী করা এবং শহর এলাকায় একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালানো হয়।

গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত বিশেষ আদালত কিশোর আদালতকে নির্দেশ করেছে। শাস্তি নয়, সংশোধনই কিশোর আদালতের মূল দর্শন হওয়ায় অর্ককে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছে।
১৯৭৪ সালের শিশু আইন, জাতীয় শিশু নীতিমালা, UNCRC - United Nations Convention on the Rights of the Child আওতায় বাংলাদেশ সরকার জাতীয় কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করে। এ কেন্দ্রে কিশোর অপরাধীদের সেবা-যত্ন, খাদ্য সরবরাহ,আবাসন ও পোষাক-পরিচ্ছদ, চিকিৎসাসহ কারিগরি শিক্ষা, আচরণ সংশোধন, মানবিক উন্নয়ন এবং পরামর্শ প্রদানসহ নানাবিধ দায়িত্ব পালন করে। উদ্দীপকে এ কেন্দ্রের কার্যক্রম পরিচালনার একটি উপায়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
উদ্দীপকের ১৫ বছর বয়সী অর্ক যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনায় অপরাধী। তাকে একটি বিশেষ আদালতে হাজির করা হলো। আদালত শর্তসাপেক্ষে তাকে মুক্তি দেয়। মূলত এটিই কিশোর আদালত। বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রগুলো তিনটি উপায়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর মধ্যে কিশোর আদালত একটি। এ আদালত শিশু-কিশোরদের অপরাধ বিবেচনা করে তাদেরকে সংশোধনের প্রচেষ্টা চালায়। সংশোধনের জন্য তাদেরকে কল্যাণমূলক বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করে। আর কোনো অপরাধে না জড়ানোর শর্তে তাদেরকে দ্রুত মুক্তি দিয়ে থাকে। এ কারণেই অর্ক যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনায় অপরাধী হওয়া সত্ত্বেও তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

ঘ. 'শাস্তি নয়, সংশোধনই ইঙ্গিতকৃত বিশেষ আদালতের মূল দর্শন'। উক্তিটি বিশ্লেষণযোগ্য।
বাংলাদেশ সরকার অপরাধী শিশু-কিশোরদের আবাসন, সংশোধন এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে কিশোর-কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। মূলত কিশোর অপরাধীদের কল্যাণ সাধনই এ কেন্দ্রের মূল কাজ। এ কারণে শাস্তি নয় সংশোধনের জন্যই এখানে কিশোরদের গ্রহণ করা হয়।
কিশোর অপরাধীদের বিচার এবং তাদের সংশোধনের জন্য কিশোর আদালত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৭৪ সালের শিশু আইনের মাধ্যমে গঠিত এ আদালতে কিশোর-কিশোরী অপরাধীর অপরাধের কারণ বিশ্লেষণ করে তাদের পুনর্বাসন ও সংশোধনের চেষ্টা করা হয়। কিশোর আদালত দেশের অন্যান্য আদালতের মতো নয়। এখানে কোনো শুনানি হয় না, বিচার প্রক্রিয়া হয় ঘরোয়া পরিবেশে এবং কোনো শাস্তিও প্রদান করা হয় না। এ আদালতে অপরাধের কারণ, ধরন, উৎস এবং সংশোধনের উপায় খুঁজে বের করা হয়। এ আদালতের মূল কথা হলো শিশুরা নিষ্পাপ। পারিবারিক ও সামাজিক নানা কারণে তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। উদ্দীপকে উল্লিখিত কিশোর অপরাধী অর্ককে কিশোর আদালত সংশোধনের জন্য শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছে।
পরিশেষে বলা যায়, কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র কিশোর অপরাধীদের সুষ্ঠু- স্বাভাবিক জীবনদানে প্রয়াসী। এ কারণে শাস্তি প্রদান না করে অর্কর মত কিশোর অপরাধীদের সংশোধনের প্রচেষ্টাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।

৩. গ্রাম থেকে মানুষ ক্রমাগত শহরের দিকে ধাবিত হচ্ছে। শহরের চাকচিক্যময় জীবনযাপন প্রণালী, সুযোগ সুবিধা আকর্ষণ করে। কিন্তু এই শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা কমাতে না পারলে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বে এবং বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে। এমনিতে বস্তির নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মানবেতর জীবনযাপন ও জীবিকার জন্য নিরক্ষর জনগোষ্ঠী অপরাধ মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে।
ক. সাবেক কিশোর সংশোধনী প্রতিষ্ঠানের বর্তমান নাম কী?
খ. কিশোর হাজত বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত কোন কার্যক্রম বাস্তবায়ন সম্ভব? ব্যাখ্যা করো। 
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যা সমাধানে উক্ত কার্যক্রম কতটুকু কার্যকরী? যুক্তিসহ উপস্থাপন কর।

৩ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সাবেক কিশোর সংশোধনী প্রতিষ্ঠানের বর্তমান নাম কিশোর- কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্র।

খ. কিশোর-কিশোরীর অপরাধের বিচার কার্যকাল সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত যেখানে তাদের আটক রাখা হয় তাকে কিশোর হাজত বা আটক নিবাস বলা হয়।
দেশের প্রতিটি কিশোর-কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে একটি করে আটক নিবাস রয়েছে। তাছাড়া ১৯৭৪ সালের শিশু আইনের ২০নং ধারা অনুযায়ী সরকার আটক নিবাস প্রতিষ্ঠা ও তত্ত্বাবধান করতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক অপরাধীর দ্বারা কিশোর অপরাধীরা যাতে প্রভাবিত ও হয়রানির শিকার না হয় এজন্য তাদেরকে আলাদা রাখা হয়। কিশোর হাজতে কিশোর-কিশোরীদের শিশুসুলভ এবং স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যাটি শহরকেন্দ্রিক হওয়ায় উদ্ভূত পরস্থিতি মোকাবেলায় সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত শহর সমাজসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন সম্ভব।
বাংলাদেশে শহরাঞ্চলে বসবাসরত দরিদ্র ও দুস্থদের সমস্যার কোনো শেষ নেই। যেমন- অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, বেকারত্ব, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যহীনতা, অপরাধ, মাদকাসক্তি, ভিক্ষাবৃত্তি ইত্যাদি। এ সকল সমস্যার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সরকার শহর সমাজসেবা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে।
উদ্দীপকের তথ্য অনুসারে, বর্তমানে শহরের চাকচিক্যময় জীবন ও সুযোগ-সুবিধার আকর্ষণে গ্রামের মানুষ ক্রমাগত শহরমুখী হচ্ছে। এর ফলে শহরে নানামুখী সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। শহর এলাকায় বস্তি গড়ে উঠছে, যেখানে গ্রাম থেকে সুখের সন্ধানে আসা মানুষগুলোকে নোংরা পরিবেশে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। নিরক্ষর এই মানুষগুলো দারিদ্র্য আর অভাবের তাড়নায় নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এ রকম পরিস্থিতির উন্নয়নেই সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে শহর সমাজসেবা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর মাধ্যমে শহরের দরিদ্র ও বস্তিতে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানের উন্নয়নে তথা তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে নানা ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শহরাঞ্চলের সমস্যা সমাধানে শহর সমাজসেবা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হলে তা অত্যন্ত কার্যকর হবে।
শহর এলাকায় বসবাসরত নিম্ন আয়ভুক্ত জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শহর সমাজসেবা নানা ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। এ সকল কার্যক্রমের মধ্যে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম, ঋণ কার্যক্রম, স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রম ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। আর এগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে আলোচ্য সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শহরের দরিদ্র ও দুস্থ লোকদেরকে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য যোগ্য করে গড়ে তোলা হয়। পরবর্তীতে ঋণদান কর্মসূচির মাধ্যমে তাদেরকে পুঁজি সরবরাহ করা হয়। ফলে তারা স্বাবলম্বী হয় এবং উদ্দীপকে উল্লিখিত অপরাধমূলক কর্মকান্ড থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখতে পারে। পাশাপাশি শিক্ষামূলক কার্যক্রমের ফলে তারা নিরক্ষরতা থেকে মুক্ত হয় এবং আরও উন্নত জীবনযাপনে সক্ষম হয়। অন্যদিকে স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদেরকে স্বাস্থ ম্পর্কে করে তোলা হয় পুষ্টি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশের গুরুত্ব শেখানো হয়। ফলে তারা সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের সুযোগ পায়। এভাবে শহর সমাজসেবা তাদের জীবনে বহুমুখী উন্নয়নে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখে।
পরিশেষে বলা যায়, শহরাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নানা সমস্যা সমাধানে শহর সমাজসেবা কার্যক্রমের বিকল্প নেই।

৪. নিরপরাধ রাশেদ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্মম অত্যাচারে আজ পঙ্গু। বিচারের জন্য ধারে ধারে ঘুরছে মা। ‘মিথ্যা মামলায় জেল খাটছে রাশেদ’- সংবাদপত্রে প্রকাশিত এমন একটি সংবাদ দেখে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান স্বপ্রণোদিত হয়ে কেসটি গ্রহণ করে। রাসেদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় সরেজমিনে তদন্ত শুরু করে। আটকের স্থান পরিদর্শনসহ তথ্য সংগ্রহ করে জেলখানায় রাসেদের সাথে সাক্ষাৎ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে কথা বলেছে এবং মামলা পরিচালনা করে। অবশেষে রাশেদ মুক্তি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে চেয়ারম্যানসহ ছয়জন সদস্য রয়েছেন। ২০১০ সালের ২২ শে জুন প্রতিষ্ঠানটি পুনর্গঠিত হয়। 
ক. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কী?
খ. বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দরিদ্রদের স্বাবলম্বী করতে কীভাবে সাহায্য করবে?
গ. উদ্দীপকে রাশেদকে সাহায্য করেছে কোন প্রতিষ্ঠান? ব্যাখ্যা করো। 
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে রাশেদকে ন্যায়বিচার প্রদানে সফল হল? মতামত দাও।

৪ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস এবং দুর্যোগ পরবর্তী জরুরি সাড়া প্রদানের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও কার্যক্রম গ্রহণ করাই হলো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা।

খ. বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তুলবে।
সমাজসেবা কার্যক্রমের মধ্যে শহর ও গ্রামীণ এলাকার দরিদ্রদের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ অন্যতম। এ ধরনের প্রশিক্ষণের মধ্যে রয়েছে বাঁশ ও বেতের কাজ, উল বুনন, পাটের কাজ, কার্পেট তৈরি, ইলেকট্রিক ও ওয়েল্ডিং, ড্রাইভিং, সাইকেল ও রিকশা মেরামত প্রভৃতি। এ সকল বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সহজেই জীবিকা নির্বাহের জন্য সংশ্লিষ্ট কাজ পাওয়া সম্ভব। এর ফলে দরিদ্ররা স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত তথ্য বিশ্লেষণ করে বলা যায়, রাশেদকে সাহায্য করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
মানবাধিকার মানুষের বিকাশ এবং স্বাধীন ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের নিশ্চয়তায় অত্যাবশ্যকীয় সুযোগ-সুবিধাগুলোই হলো মানবাধিকার। জাতীয় কমিশন এই সুযোগ-সুবিধাগুলো নিশ্চিতকরণে সাহায্যার্থীকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে থাকে। উদ্দীপকেও রাশেদকে সহায়তা করার ঘটনায় এর প্রমাণ পাওয়া যায়।
উদ্দীপকের রাশেদ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্মম অত্যাচারে পঙ্গু হয়েছে এবং জেলও খাটতে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাকে সাহায্য করার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এগিয়ে এসেছে। সরেজমিনে তদন্তের মাধ্যমে সত্যকে উদ্ঘাটিত করে প্রতিষ্ঠানটি রাশেদকে তার মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অন্যতম দায়িত্ব হলো দেশের যেকোনো স্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে তা তদন্ত করা। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানটি আইনি পদক্ষেপও গ্রহণ করে থাকে। উল্লেখ্য ২০০৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রথম জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ২২ জুন প্রতিষ্ঠানটি পুনর্গঠিত হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে একজন চেয়ারম্যানসহ ছয়জন সদস্য রয়েছেন। উদ্দীপকে উল্লিখিত তথ্য থেকেই বোঝা যায়, জাতীয় মানবাধিকার মিশন। মানবাধিকার রক্ষা এবং এ সংশ্লিষ্ট পরিস্থিতি করে। রাসেদের মুক্তির মধ্য দিয়ে প্রমানিত হয়।

ঘ. জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তদন্তের মাধ্যমে সত্য ঘটনা উদ্ঘাটন করে রাশেদকে ন্যায়বিচার প্রদানে সফল হয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যেকোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত অভিযোগের তদন্ত করতে পারে। এক্ষেত্রে তারা সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সাহায্যার্থীকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে।
প্রতিষ্ঠানটি প্রয়োজনে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে আইনি সহায়তাও প্রদান করে। রাসেদের ক্ষেত্রেও অনুরূপ সহায়তা প্রদানের ঘটনা ঘটেছে।
সামাজিক নিরাপত্তা লাভের অধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির অন্যতম মানবাধিকার। কিন্তু উদ্দীপকের 'রাশেদ এ অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সংবাদপত্রে এ বিষয়ে অভিযোগমূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বিষয়টি আমলে নেয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর ভেতরে থেকে প্রচলিত আইন অনুসারে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার কাজ শুরু করে। আটকের স্থান পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ, রাসেদের সাথে সাক্ষাৎ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে কথা বলে প্রতিষ্ঠানটি রাসেদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা বলে শনাক্ত করতে সমর্থ হয়। এরই প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি মামলা করে এবং আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে রাশেদকে মুক্ত করে। প্রকৃতপক্ষে সমাজে উল্লিখিত ঘটনার মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক ঘটনাই ঘটছে। আর এ সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে নিরপরাধ ব্যক্তিদেরকে সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা অনন্য।
পরিশেষে বলা যায়, প্রচলিত আইন অনুসারে তদন্তের মাধ্যমে রাশেদের মুক্তি নিশ্চিত করে তার ন্যায়বিচার প্রদানে সফল হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তার দায়িত্ব পালন করেছে।

৫. জহিরুল ইসলাম একজন সমাজসেবা অফিসার। তিনি বাংলাদেশ সরকারের কতগুলো লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করার জন্য নিযুক্ত হলেন। লক্ষ্যগুলি হলো- দরিদ্রদের স্বকর্মসংস্থানের জন্য সুদমুক্ত ঋণদান, বস্তিবাসীদের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান, বিপন্ন পরিবেশে বসবাসরত শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির মান উন্নয়ন, স্থানান্তরিতদের নিজ বাড়ীতে ফিরে যেতে উদ্বুদ্ধকরণ এবং স্থানীয় বিকাশ সাধন।
ক. বাংলাদেশে কত সালে V-AID কর্মসূচি শরু হয়েছিল?
খ. যে কোনো একটি গ্রামীণ সমাজসেবা কার্যক্রম ব্যাখ্যা কর। 
গ. উদ্দীপকে জহিরুল ইসলাম কোন ধরনের সমাজসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. এ ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্থানীয় জনগণের কী ভূমিকা রয়েছে বলে তুমি মনে কর।

৫ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশে ১৯৫২ সালে V-AID কর্মসূচি শুরু হয়েছিল।

খ. বাংলাদেশে বিদ্যমান গ্রামীণ সমাজসেবা কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হলো ঋণদান কার্যক্রম।
গ্রামের ভূমিহীন, দরিদ্র, বেকার, দুস্থ মহিলাদের পুঁজি সমস্যা সমাধানে সহায়তা করার লক্ষ্যে পল্লি এলাকায় সুদমুক্ত ঋণ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এসব ঋণগ্রহীতাকে ৩ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা সুদমুক্ত ঋণ দেয়া হয়। ১৯৭৪ সালের মার্চ মাসে ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা নিয়ে ১৯টি থানায় এ কার্যক্রম শুরু হয়। জুন ২০১১ পর্যন্ত এ খাতে ২২ লক্ষাধিক পরিবারকে ঋণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে বলা যায়, জহিরুল ইসলাম শহর সমাজসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সমাজসেবা অধিদপ্তরের দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রমগুলোর মধ্যে শহর সমাজসেবা কার্যক্রম অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার শহর এলাকার মানুষের সার্বিক উন্নয়নে এ বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। আর সরকারের একজন কর্মচারী হিসেবে জহিরুল ইসলাম শহর সমাজসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়নে কাজ করেছেন।
উদ্দীপকের জহিরুল ইসলাম পরিচালিত কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হলো বস্তিবাসীদের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান এবং স্থানান্তরিতদের নিজ বাড়িতে অর্থাৎ গ্রামে ফিরে যেতে উদ্বুদ্ধকরণ। এ দুটি কার্যক্রম থেকে সুস্পষ্ট যে, তিনি শহর সমাজসেবা কার্যক্রমের সাথে জড়িত। তিনি শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানে সুদমুক্ত ঋণদান কর্মসূচি পরিচালনা করেন। এর ফলে তারা সহজেই স্বাবলম্বী হতে পারবে। তাঁর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে বিপন্ন পরিবেশে বিশেষ করে বস্তিতে বসবাসরত শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির মানোন্নয়ন। তাছাড়া তিনি শহরবাসীদের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে স্থানীয় নেতৃত্বে বিকাশ সাধনের চেষ্টা করেন। আর এ সকল কার্যক্রম সরকার কর্তৃক গৃহীত শহর সমাজসেবা কার্যক্রমেরই প্রতিফলন।

ঘ. উদ্দীপকে নির্দেশিত শহর সমাজসেবার কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়নে স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজন।
শহর সমাজসেবা কার্যক্রম হলো সমষ্টিকেন্দ্রিক সমাজসেবা কার্যক্রম। স্থানীয় জনগণের সমন্বিত উদ্যোগে প্রয়োজনীয় আর্থ-সামাজিক সুযোগ-সুবিধা ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালানোই শহর সমাজসেবার মূল লক্ষ্য। সুতরাং শহর সমাজসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্থানীয় জনগণের ভূমিকা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
উদ্দীপকের সমাজসেবা অফিসার জহিরুল ইসলাম এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে সরকারের নির্ধারিত কিছু লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছেন। এ লক্ষ্যে তার গৃহীত কার্যক্রমগুলো কেবল তখনই শতভাগ সফল হবে যখন স্থানীয় জনগণ সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। প্রকৃতপক্ষে সরকারের একার পক্ষে কখনোই কোনো কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন জনগণের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা, তাদের অংশগ্রহণ এবং সহায়তা। অর্থাৎ এক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণের ভূমিকা হলো অংশগ্রহণমূলক এবং সহযোগিতাপূর্ণ। ঋণদান কার্যক্রম, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন প্রভৃতি কার্যক্রমে স্থানীয় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আবশ্যক। তাদেরকে কেন্দ্র করেই এ কার্যক্রমগুলো পরিচালিত হয় এবং তাদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ব্যতীত কোনোভাবেই এগুলোর সফল প্রয়োগ সম্ভব নয়। পরিশেষে বলা যায়, আলোচ্য শহর সমাজসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্থানীয় জনগণের ভূমিকা অনুঘটকের ন্যায় কাজ করে।

৬. তানিয়া তার বাবা-মায়ের সাথে শহরে বস্তি এলাকায় বসবাস করে। সেখানে পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নানারকম রোগবালাই লেগেই থাকে। বস্তির অধিকাংশ দম্পতিরই অনেক সন্তান। 
ক. বাংলাদেশে কবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়? 
খ. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের তানিয়ার এলাকার উন্নয়নের জন্য সরকারের শহর সমাজসেবা কার্যক্রমের কোন কর্মসূচিটি প্রযোজ্য? নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকের কর্মসূচি ছাড়াও শহর সমাজসেবার আরও কার্যক্রম রয়েছেত কথাটি বিশ্লেষণ করো।

৬ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশে ২০০৮ সালের ১ ডিসেম্বর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।

খ. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বলতে দুর্যোগপূর্ব ঝুঁকি হ্রাস এবং দুর্যোগপরবর্তী জরুরি সাড়া প্রদানের পদ্ধতিগত কার্যক্রম গ্রহণ করাকে বোঝায়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে দুর্যোগ প্রতিরোধ, ঝুঁকি প্রশমন, পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা যায়। দুর্যোগপূর্ব, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগপরবর্তী যাবতীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মূল লক্ষ্য।

গ. উদ্দীপকের তানিয়ার এলাকার উন্নয়নের জন্য সরকারের শহর সমাজসেবা কার্যক্রমের পরিবেশ উন্নয়নমূলক ও জনসংখ্যা বিষয়ক কার্যক্রম প্রযোজ্য।
সুস্থ জীবনের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ অপরিহার্য। বসবাসের পরিবেশ নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর হলে স্বাভাবিকভারেই নানা রকম রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তাই পরিবেশকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। মানসম্মত জীবনযাত্রার জন্য সবাইকে জনসংখ্যা সমস্যার প্রতিও দৃষ্টি দিতে হবে। এ দুটি বিষয় উদ্দীপকের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রয়োগযোগ্য। উদ্দীপকে শহরের একটি বস্তি এলাকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও জনসংখ্যা সমস্যার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। নোংরা পরিবেশে বসবাস করার কারণে এবং সুপেয় পানির অভাবে বস্তিবাসী নানা রোগে আক্রান্ত হয়। এমতাবস্থায় শহর সমাজসেবা কর্মসূচির আওতায় বস্তিবাসীদেরকে পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সুপেয় পানির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তাদের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তাহলে বস্তির পরিবেশগত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে। আবার এখানে বসবাসরত পরিবারগুলোর সদস্যসংখ্যাও বেশি। ফলে তাদের জীবনযাত্রার মান ব্যাহত হচ্ছে। এ জন্য শহর সমাজসেবা কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদেরকে অধিক জনসংখ্যার কুফল সম্পর্কে বোঝাতে হবে। প্রয়োজন হলে তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। মূলত এ সমস্ত কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।

ঘ. উদ্দীপকের শহর সমাজসেবা কার্যক্রমের পরিবেশ উন্নয়নমূলক ও জনসংখ্যা বিষয়ক কার্যক্রমের পাশাপাশি নানা সমস্যার সমাধানে শহর সমাজসেবার আরও কার্যক্রম বিদ্যমান।
শহর এলাকায় বসবাসরত নিম্ন আয়ভুক্ত জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শহর সমাজসেবা নানা ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে শহরাঞ্চলের দরিদ্র ও দুগ্ধ জনগোষ্ঠীর সমস্যার শেষ নেই। যেমন- অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, বেকারত্ব, পুষ্টিহীনতা, নিরক্ষরতা ইত্যাদি। এ সকল সমস্যার সমাধানে শহর সমাজসেবা প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে।
শহর এলাকায় সমাজসেবা কার্যক্রমের আওতায় দুস্থ ও দরিদ্র লোকদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ (যেমন- বাঁশ ও বেতের কাজ, কার্পেট তৈরি, ইলেকট্রিক ও ওয়েল্ডিং, ড্রাইভিং, সাইকেল ও রিকশা মেরামত প্রভৃতি) দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন কর্মসূচি (যেমন: বয়স্ক শিক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক শিক্ষা, নৈশ বিদ্যালয় স্থাপন, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি শিক্ষা প্রভৃতি) গ্রহণ করা হয়। ফলে তারা সচেতন হয়ে ওঠে। আবার দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য শহর সমাজসেবা কর্মসূচির মাধ্যমে ঋণ প্রদান করার ফলে তাদের আয়ের পথও সৃষ্টি হয়। তাছাড়া দুস্থ ও দরিদ্রদের স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে নানা ধরনের কার্যক্রম রয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদের জন্য বিনোদনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করাও শহর সমাজসেবা কর্মসূচির আওতাভুক্ত। উদ্দীপকের কার্যক্রম এক্ষেত্রে শহর সমাজসেবা কার্যক্রমেরই একটি অংশমাত্র।
পরিশেষে বলা যায়, শহরের দুস্থ ও অসহায় জনগোষ্ঠীর সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতেই শহর সমাজসেবার আওতায় উপরে উল্লিখিত কার্যক্রমগুলো পরিচালিত হয়।

HSC সমাজকর্ম ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৬ pdf download

৭. ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলায় বিনা অপরাধে আটক ও একটি পা হারানো লিমনের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে একটি সংগঠন। সেটি স্বপ্রণোদিত হয়ে থানা হাজত পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে লিমনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, সরকারকে প্রতিবেদন দিয়েছে। নির্যাতনে পা হারানো এবং আইন ও মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত লিমনের অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য সংগঠনটি সহায়তা করেছে। প্রতিষ্ঠানটি লিমনের মতো অধিকার বঞ্চিতদের পাশে থেকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে ভূমিকা রাখছে।
ক. আটক নিবাস কী?
খ. 'আপদ' বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে লিমনের পাশে দাঁড়ানো সংগঠনটির কাজ কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. লিমনের মুক্ত হওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানটির গৃহীত ব্যবস্থাকে কী অভিযোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বলা যাবে? উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৭ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আটক নিবাস হলো গ্রেফতারের পর থেকে কিশোর আদালতে হাজির করা পর্যন্ত কিশোর অপরাধীদের আটক রাখার স্থান। [সূত্র-জাতীয় শিশু আইন-২০১৩]

খ. আপদের সরল অর্থ হচ্ছে সংকট।
আপদ মূলত একটি অস্বাভাবিক ঘটনা যা প্রাকৃতিক, মানবসৃষ্ট বা কারিগরি ত্রুটির জন্য ঘটতে পারে। এর ফলে মানুষের জীবন-জীবিকা এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। উদাহরণস্বরূপ- ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ইত্যাদি প্রাকৃতিক আপদ। অন্যদিকে বন ধ্বংস, অগ্নিকান্ড, অবরোধ ইত্যাদি হলো মানবসৃষ্ট আপদ। আপদ কোনো দুর্যোগ নয় বরং এর সম্ভাব্য কারণ।

গ. উদ্দীপকে লিমনের পাশে দাঁড়ানো সংগঠনটির কাজের সাথে সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রমের সাদৃশ্য আছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি সংবিধিবদ্ধ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০০৮ সালে কার্যক্রম শুরু করে। একজন চেয়ারম্যান, একজন সার্বক্ষণিক সদস্য ও পাঁচজন অবৈতনিক সদস্যের সমন্বয়ে এই কমিশন গঠিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী মানবাধিকার সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও নিশ্চিতকরণে রাষ্ট্রকে সহায়তা করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ লক্ষ্যে কমিশন যেকোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত অভিযোগের তদন্ত করার সাথে স্বপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ গ্রহণও করতে পারবে। কমিশন অভিযোগ দায়েরের জন্য নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তিকে আইনি সহায়তা প্রদান করতে পারবে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, বিনা অপরাধে আটক এবং, পা হারানো লিমনের পক্ষে একটি সংগঠন কাজ শুরু করে। স্বপ্রণোদিত হয়ে সংগঠনটি থানা হাজত পরিদর্শন করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন পেশ করে। অধিকার বঞ্চিত লিমনের ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সহায়তা করে। সংগঠনের এই কার্যক্রমগুলো জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে লিমনের পক্ষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করেছে।

ঘ. হ্যাঁ, লিমনের মুক্ত হওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানটির গৃহীত ব্যবস্থাকে অভিযোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বলা যাবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অভিযোগকারী ব্যক্তির দাবি আদায়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যবস্থা নেয়। এক্ষেত্রে মানবাধিকার কমিশন অভিযোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি অনুসরণ করে। এতে নির্যাতিতের অভিযোগ গ্রহণের মাধ্যমে তদন্ত শুরু হয়। এ তদন্তের দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীকে চিহ্নিত করে দু'ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়। একটি হলো মধ্যস্থতা বা সমঝোতা। মধ্যস্থতা সফল হলে অপরাধীর জরিমানা ধার্য ও আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। অন্যদিকে, মধ্যস্থতা ব্যর্থ হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এছাড়া অপরাধের প্রতিকারের জন্য কমিশন সরকারের প্রতি সুপারিশও পেশ করে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, বিনা অপরাধে আটক ও এক পা হারানো লিমনের পক্ষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা স্বতপ্রণোদিত হয়ে থানা হাজত পরিদর্শন করেন, প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের পর সুপারিশসহ সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেন। লিমনের পা হারানো ঘটনার বিচার এবং আইন ও মানবাধিকার পুনরুদ্ধারেও কমিশন সহায়তা করে। সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, লিমনের মুক্ত হওয়ার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা অভিযোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত।

৮. জনাব বারী মজুমদার একজন সমাজদরদী ব্যক্তি। তিনি সমাজের মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেন। সামাজিক বিভিন্ন কাজকর্মের ধারাবাহিকতায় তিনি একটি নতুন কার্যক্রম শুরু করেন। এই কার্যক্রমে তিনি গ্রামের বেকার, অর্ধ-বেকার, শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, দরিদ্র, যুবক, যুব মহিলাদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে যেমন- সেলাই কাজ, সবজির বাগান তৈরি, ফিশারী, বাঁশ-বেতের কাজ ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে সমাজে পুর্নর্বাসিত করার চেষ্টা করছেন। তিনি তার এই কার্যক্রমে বেশ সাড়া পেয়েছেন এবং গ্রামের অনেক বেকার মানুষ লাভবানও হয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি গ্রামের লোকদের মধ্যে পরিকল্পিত পরিবার গঠনের লক্ষে পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কেও জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছেন।
ক. RSS এর পূর্ণরূপ কী?
খ. জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাজের ধরন ব্যাখ্যা করো। 
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনাব বারী মজুমদারের কার্যক্রম তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন কার্যক্রমকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা করো। 
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কার্যক্রমের সাথে তোমার পাঠ্যবইয়ের যে কার্যক্রমের মিল রয়েছে তার একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।

৮ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. RSS - এর পূর্ণরূপ হলো - Rural Social Service.

খ. জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যেকোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত অপরাধ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ করে থাকে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জেলখানা, থানা হেফাজত ইত্যাদি পরিদর্শন করে তার উন্নয়নের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করে। এছাড়া এ কমিশন মানবাধিকার বিষয়ে গবেষণা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ এবং অনুরূপ অন্যান্য ব্যবস্থার মাধ্যমে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রকাশ ও প্রচার করে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সাথে দেশীয় আইনের সামঞ্জস্য বিধানে ভূমিকা রাখে এ কমিশন।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনাব বারী মজুমদারের কার্যক্রম আমার পাঠ্যবইয়ের গ্রামীণ সমাজসেবা কার্যক্রমের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
গ্রামীণ সমাজসেবা কার্যক্রম হলো একটি গ্রাম উন্নয়নমূলক বহুমুখী প্রক্রিয়া। গ্রামীণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য এই প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। গ্রামীণ সমাজসেবার অন্যতম কার্যক্রম হলো বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি। উদ্দীপকেও এ কার্যক্রম দুটির উল্লেখ করা হয়েছে।
উদ্দীপকে জনাব বারী মজুমদারের গ্রামের বেকার ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে নানা ধরনের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। গ্রামীণ সমাজসেবা কার্যক্রমের মাধ্যমেও অভিন্ন লক্ষ্যে অনুরূপ কর্মসূচি পরিচালিত হয়। গ্রামীণ নিম্ন আয়ভুক্ত দরিদ্র যুবক-যুবতীদেরকে বাঁশ ও বেতের কাজ, পাটের কাজ, কাঠের কাজ, তাঁত ও বয়নের কাজ, সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি পালন, গরু মোটাতাজাকরণ, ওয়েলডিং, ওয়ারিং ইত্যাদি বৃত্তিমূলক কাজের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ফলে তারা নিজেরাই নিজেদের অবস্থার উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হয়। তাছাড়া জনাব বারী মজুমদার পরিকল্পিত পরিবার গঠনের লক্ষ্যে যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন সেটিও গ্রামীণ সমাজসেবার অন্তর্ভুক্ত। এক্ষেত্রে পরিবারের আকার ছোট রাখতে পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণে সবাইকে সচেতন করে তোলা হয়।

ঘ. উদ্দীপকে গ্রামীণ সমাজসেবার ব্যাপক ও বিস্তৃত কার্যক্রমের সামান্য অংশই প্রতিফলিত হয়েছে।
গ্রামীণ অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সার্বিক জীবনমানের উন্নয়নই গ্রামীণ সমাজসেবা কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য। এই লক্ষ্য অর্জনে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক বিস্তৃত পরিসরে বহুমুখী কর্মসূচি পরিচালনা করা হয়। উদ্দীপকেও ব্যক্তি উদ্যোগে অভিন্ন লক্ষ্যে নানা কর্মসূচি গ্রহণের চিত্র উপস্থাপিত হয়েছে; তবে তা ব্যাপক ও বিস্তৃত নয়।
উদ্দীপকে নির্দেশিত বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি গ্রামীণ সমাজসেবার দুটি কার্যক্রমের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। তবে গ্রামীণ সমাজসেবা সরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। আর এ কারণেই এর পরিসর বিস্তৃত। পক্ষান্তরে ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত হওয়ায় উদ্দীপকে নির্দেশিত সমাজসেবা কার্যক্রম সংক্ষিপ্ত পরিসরে আবদ্ধ। গ্রামীণ সমাজসেবার অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেত ঋণ দান কার্যক্রম, পল্লি মাতৃকেন্দ্র, সামাজিক শিক্ষা কার্যক্রম, অবকাঠামো নির্মাণে স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততা নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি। এভাবে বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালিত হয় বলে তা গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নে অধিক ফলপ্রসূ। পক্ষান্তরে উদ্দীপকে আলোচিত সমাজ সেবা কার্যক্রমের উপযোগিতা কিছুটা হলেও সীমাবদ্ধ। তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে লক্ষ্য বিবেচনায় উভয় সমাজসেবা কর্মসূচির কার্যক্রম অভিন্ন।
পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকে নির্দেশিত সমাজসেবা কার্যক্রম অপেক্ষা গ্রামীণ সমাজসেবা কার্যক্রম অধিক তাৎপর্য বহন করে।

৯. মি. শিহাব শহর সমাজসেবা অফিসার হিসেবে কর্মরত। তিনি লালবাগ বস্তির মানুষের অবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রথমতঃ বেকার যুবক যুবতি গৃহিণীদের নিয়ে দল গঠন করেন। তারপর প্রতিটি দলে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। তিনি এ এলাকায় ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থারও সূচনা করেন। 
ক. কত সালে ঢাকায় তিন মাসের পেশাগত প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু হয়? 
খ. গ্রামীণ সমাজসেবার ধারণা দাও।
গ. উদ্দীপকের আলোকে শহর সমাজসেবা কর্মসূচিগুলো ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উক্ত কর্মসূচিগুলোতে সমাজকর্ম পদ্ধতির প্রয়োগ দেখাও।

৯ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ১৯৫৩ সালে ঢাকায় তিন মাসের পেশাগত প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু হয়।

খ. গ্রামীণ সমাজসেবা হলো সমষ্টি উন্নয়ন কেন্দ্রিক একটি সমন্বিত উন্নয়ন প্রক্রিয়া।
বহুমুখী সাধারণ জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব এবং তাদের সংগঠিত করে আর্থ- সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে ১৯৭৪ সালে USS কর্মসূচি চালু করা হয়, যা গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সামগ্রিক উন্নয়ন ও এ্যপ্রোচের অংশ হিসেবে গ্রামীণ ক্ষুদ্র, প্রাস্তিক ও অন্যান্য কৃষক এবং দরিদ্র পেশাজীবী শ্রেণিকে সংগঠিত করা এর প্রধান লক্ষ্য।

গ. উদ্দীপকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমকে নির্দেশ করা হয়েছে, যা শহর সমাজসেবা কার্যক্রমগুলোর মধ্যে অন্যতম।
শহর এলাকায় বসবাসরত নিম্ন আয়ের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শহর সমাজসেবা নানা ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও উৎপাদন কেন্দ্র এবং সেলাই ও কুটির শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে বেকার, অর্ধ-বেকার, অদক্ষ ও স্বল্প আয়ের মহিলা এবং পুরুষদের স্বাবলম্বী করে তোলার কাজ করা হয় এ কার্যক্রমের মাধ্যমে। এছাড়া তাদের আয়ের পথ সৃষ্টির লক্ষে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, শহর সমাজসেবা অফিসার শিহাব লালবাগ বস্তির বেকার যুবক-যুবতীদের স্বাবলম্বী ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার সূচনা করেন। আর্থ-সামাজিক জরিপের মাধ্যমে লক্ষ্যভুক্ত পরিবার ও দল চিহ্নিত করে দল গঠন, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান, ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ প্রভৃতি কর্মসূচি সম্পাদন করা হয় শহর সমাজসেবা কর্মসূচির মাধ্যমে। যার ফলে বেকার, অদক্ষ, অভাবগ্রস্থ জনগোষ্ঠী কাজ করে ভাগ্যোন্নয়নের সুযোগ পায়। উদ্দীপকের লালবাগ বস্তির বেকার যুবক-যুবতিদের প্রশিক্ষণ ও সেখানে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ শহর সমাজসেবা কর্মসূচিকে তুলে ধরে।

ঘ. উদ্দীপকে নির্দেশিত কর্মসূচিগুলোতে সমষ্টি সমাজকর্ম, ব্যক্তি সমাজকর্ম। দল সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।
শহর সমাজসেবা একটি সমষ্টি কেন্দ্রিক সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম। ফলে সমষ্টি সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। শহর সমাজসেবার বিভিন্ন কর্মসূচি, যেমন- বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, শিক্ষা বিষয়ক কার্যক্রম, যুব উন্নয়ন প্রভৃতি দলীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হওয়ায় সমষ্টি সংগঠন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়ে থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যক্তি সমাজকর্ম ও দল সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়।
উদ্দীপকে নির্দেশিত লালবাগ বস্তিতে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ কার্যক্রম নির্দেশ করা হয়েছে। লালবাগ বস্তিকে প্রথমে চিহ্নিতকরণ করে, সেখানে দল গঠনের মাধ্যমে মি. শিহাব কার্যক্রম শুরু করেন। একদল বেকার যুবক-যুবতীকে সংগঠিত করে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এতে কার্যকর যোগাযোগ, কর্মক্ষমতার উন্নয়ন এবং অর্থসংস্থান কৌশল প্রভৃতি প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে। প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ণয়ের জন্য মি. শিহাবকে প্রতিটি পর্যায় মূল্যায়ন করতে হবে। এভাবে সমষ্টি সমাজকর্ম প্রয়োগের মাধ্যমে একজন সমাজকর্মী কাজ করে। লালবাগ বস্তিতে ঋণ দানের ক্ষেত্রে ব্যক্তি সমাজকর্ম ও দল সমাজকর্ম পদ্ধতির প্রয়োগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
উপরের আলোচিত সমাজকর্ম পদ্ধতিগুলোর যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে উক্ত কর্মসূচিগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করা যায়।

১০. ১৪ বছরের রহিমা গৃহকর্মীর কাজ করা অবস্থায় মালিকের নির্যাতনের শিকার হয়। নির্যাতন সইতে না পেরে রহিমা মালিককে কুপিয়ে খুন করে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে ফাঁসি না দিয়ে তাকে সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। গাজিপুরের কোনাবাড়িতে অবস্থিত সংশোধানাগারে সে একজন প্রবেশন অফিসারের অধীনে চিকিৎসাধীন আছে।
ক. সংশোধন কী?
খ. প্রবেশন বলতে কী বুঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য লেখ।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত রহিমাকে মানসিক চিকিৎসা দিতে সমাজকর্মী সমাজকর্মের যে পদ্ধতি ব্যবহার করেন তার ২টি উপাদান বর্ণনা করো।

১০ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কিশোর অপরাধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায়ই হলো সংশোধন।

খ. প্রবেশন বলতে কোনো অপরাধীকে তার প্রাপ্য শাস্তি স্থগিত রেখে কারাবদ্ধ না করে সমাজে খাপ খাইয়ে চলার সুযোগ প্রদান করাকে বোঝায়।
প্রবেশন হলো একটি অপ্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক সংশোধনী কার্যক্রম। প্রবেশন ব্যবস্থায় প্রথম ও লঘু অপরাধের দায়ে আইনের সংস্পর্শে আসা কিশোর অপরাধীদের প্রাপ্তবয়স্ক অপরাধীদের সাথে কারাগারে না রেখে আদালতের নির্দেশে প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে সামাজিক পরিবেশে রেখে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়। এটি অপরাধীর বিশৃঙ্খলা ও বেআইনি আচরণ সংশোধনের জন্য একটি সুনিয়ন্ত্রিত কর্মপদ্ধতি।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটি হলো কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র। কিশোর অপরাধীদের বিচার এবং তাদের আচরণ সংশোধনের জন্য কিশোর আদালত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ আদালতে কিশোর- কিশোরীদের অপরাধের কারণ বিশ্লেষণ করে তাদের পুর্নবাসন ও সংশোধনের প্রচেষ্টা চালানো হয়।
মানবিকতার সাথে আদালতের রায় প্রতিপালন করা, সমাজের অন্যান্য সদস্যদের পাশাপাশি কিশোরদের সুযোগ-সুবিধা এবং অধিকার রক্ষা করা এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উদ্দেশ্য। কিশোরদের সংশোধনের প্রক্রিয়ায় তার পরিবার ও সমাজকে গুরুত্ব প্রদান করা, প্রাপ্তবয়স্ক অপরাধীদের সংস্পর্শ থেকে সরিয়ে ভিন্ন স্থানে রেখে কিশোরদের সংশোধন করা সংস্থাটির অন্যতম লক্ষ্য। কিশোর-কিশোরীদের সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি বৃত্তিমূলক নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্ম-উপযোগী করে গড়ে তোলা এবং ভবিষ্যতে তারা যাতে পুনরায় অপরাধে না জড়ায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম উদ্দেশ্য। ১৪ বছর বয়সের কিশোরী রহিমা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে সংশোধন ও উন্নয়নের জন্য গাজিপুর কোনাবাড়িতে অবস্থিত একটি প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করা হয় যা কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রকে নির্দেশ করে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত রহিমাকে মানসিক চিকিৎসা দিতে সমাজকর্মী ব্যক্তি সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগ করেন। আর এ পদ্ধতির অন্যতম দুইটি উপাদান হলো প্রতিষ্ঠান ও পেশাদার প্রতিনিধি।
যে প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সীর মাধ্যমে ব্যক্তি সমাজকর্ম পদ্ধতির আওতায় সাহায্যার্থীর সমস্যার সমাধানে সহায়তা করা হয় তাকে স্থান বা প্রতিষ্ঠান বলা হয়। ব্যক্তি সমাজকর্ম পদ্ধতির বাস্তব অনুশীলনের বাহন হলো প্রতিষ্ঠান। এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো গতিশীলতা। সময়, সম্পদ, চাহিদা এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিবর্তনের সাথে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কার্যাবলির পরিবর্তন ঘটে।
পেশাদার প্রতিনিধি ব্যক্তি সমাজকর্মের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পেশাদার প্রতিনিধি হলেন সমাজকর্মের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা সম্পন্ন এমন একজন ব্যক্তি যাকে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সেবাদানের জন্য নিয়োগ করা হয়। ব্যক্তি সমাজকর্মে সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ার সফলতা নির্ভর করে পেশাদার প্রতিনিধির দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ওপর। তাই ব্যক্তি সমাজকর্মে পেশাদার প্রতিনিধি বা সমাজকর্মীর জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
উদ্দীপকে ব্যক্তি সমাজকর্ম পদ্ধতির এই দুটি উপাদান লক্ষ করা যায়। উদ্দীপকে ১৪ বছর বয়সী কিশোর অপরাধী রহিমাকে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। আর সেখানে সে একজন প্রবেশন অফিসারের অধীনে অর্থাৎ পেশাদার প্রতিনিধির অধীনে চিকিৎসাধীন আছে। আর প্রতিষ্ঠান ও পেশাদার প্রতিনিধি ব্যক্তি সমাজকর্মের উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post