HSC সমাজকর্ম ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ২ pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Social Work 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC SocialWork 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download.

সমাজকর্ম
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-২

HSC Social Work 2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. রহিমা ভীষণ অসুস্থ। সমাজকর্মী কণা তাকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন। তার সহায়তায় রহিমার বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়। কণা হলো ঐ হাসপাতালের সমাজসেবা বিভাগের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার। এজন্য এ কাজ করা তার জন্য সহজ হয়েছে।
ক. ‘Kline’ শব্দের উৎপত্তি কোন ভাষা হতে?
খ. প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্ম বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত কণার কার্যক্রম সমাজকর্মের কোন শাখাকে ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে কণা সংশ্লিষ্ট শাখার একজন সমাজকর্মী হিসেবে আর কী কী ভূমিকা পালন করতে পারে? তোমার পাঠ্যবইয়ের আলোকে ব্যাখ্যা করো।

১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. গ্রিক ভাষা থেকে 'Kline' শব্দের উৎপত্তি হয়েছে।

খ. সমাজকর্মের যে বিশেষায়িত শাখার জ্ঞান, দক্ষতা ও কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে প্রবীণদের কল্যাণে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় তাকে প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্ম বলে।
বার্ধক্যে মানুষ নানা ধরনের সমস্যায় ভোগে। এ সময় অনেককেই দারিদ্র্য, অনাহার, অবহেলা, মানসিক নির্যাতন, প্রতারণা আর শারীরিক নানা বাধা-বিপত্তি বিপর্যস্ত করে তোলে। এ ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করা বা কাটিয়ে ওঠার জন্যই প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্ম কাজ করে। এক্ষেত্রে সমাজকর্মীরা বয়স্কদের কল্যাণে নিজস্ব জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সেবা প্রদান করে।

গ. উদ্দীপকের সমাজকর্মী কণার কার্যক্রম চিকিৎসা সমাজকর্মের ইঙ্গিত দেয়।
সমাজকর্মের একটি বিশেষ শাখা হলো চিকিৎসা সমাজকর্ম। রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির পর এর পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করা এ শাখার কাজ। সেইসাথে দরিদ্র ও দুস্থ রোগীদের ওষুধ ও বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার ব্যয় বহন এবং চিকিৎসার সময় তাদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য প্রদানে এ শাখা কাজ করে। এছাড়াও রোগ ও অসুস্থতার ধরন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা ডাক্তারের কাছে পাঠানোর ক্ষেত্রে চিকিৎসা সমাজকর্ম ভূমিকা রাখে। 
চিকিৎসা সমাজকর্ম শাখা রোগীদের খাদ্য, বস্ত্র, ওষুধ ও চিকিৎসা উপকরণ দিয়ে সাহায্য করার পাশাপাশি মানসিক ও আবেগীয় সমর্থন দেয়। প্রয়োজন অনুযায়ী দরিদ্র রোগীদের ক্ষুদ্রঋণ পেতে সাহায্য করাও চিকিৎসা সমাজকর্মের কার্যক্রমভুক্ত। উদ্দীপকের রহিমাকে সাহায্য করতে গিয়ে কণা উল্লেখিত কাজগুলোই করেন। তাই বলা যায়, কণার কার্যক্রম চিকিৎসা সমাজকর্মের ইঙ্গিত দেয়।

ঘ. কণা একজন সমাজকর্মী হিসেবে উদ্দীপকে উল্লিখিত কাজ ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের ভূমিকা রাখতে পারেন।
সাধারণত চিকিৎসা সমাজকর্মীরা সমাজকর্মের জ্ঞান, দক্ষতা, কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সুবিধা পেতে রোগীকে সাহায্য করেন। এছাড়া তারা রোগীদের সামাজিকভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন। তবে এক্ষেত্রে সমাজকর্মীরা আরও কিছু ভূমিকা রাখতে পারেন। উদ্দীপকের কণার মতো চিকিৎসা সমাজকর্মীরা রোগীর চাহিদা অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা দিতে ও চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহ করতে সচেষ্ট থাকেন। অনেক সময় তারা রোগীকল্যাণ সমিতির মাধ্যমে গরিব ও দুস্থ রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ, চশমা, হুইল চেয়ার, ক্র্যাচ ইতাদি সরবরাহ করার উদ্যোগও নেন। এছাড়া তিনি ডাক্তার, নার্স ও রোগীদের মধ্যে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করে থাকেন। এক্ষেত্রে সমাজকর্মী রোগী সম্পর্কে ডাক্তারকে সঠিক তথ্য দেন। সেইসাথে হাসপাতালে ভর্তি হবার পর রোগীর মধ্যে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, ভয়ভীতি বা চিকিৎসা সংক্রান্ত কুসংস্কার থাকে তা দূর করা ও যথাসময়ে চিকিৎসা গ্রহণে তাকে উদ্বুদ্ধ করতেও সমাজকর্মী ভূমিকা রাখেন।
সার্বিক আলোচনা থেকে তাই বলা যায়, একজন চিকিৎসা সমাজকর্মী হিসেবে কণা শুধুমাত্র উদ্দীপকে উল্লিখিত কাজ নয়, বরং আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারেন।

২. রবিন ও তার স্ত্রী দু'জনে ব্যাংক কর্মকর্তা। রবিনের বাবা সম্প্রতি অবসরে গেছেন। রবিন তার বাবার তেমন খোঁজ-খবর রাখতে পারে না। বাবার সাথে মাঝেমাঝেই তার ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। তাই রবিন বাবাকে বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়েছে যে। থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে।
ক. কত সালে সর্বপ্রথম ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম ধারণাটি ব্যবহার করে?
খ. ‘শ্রমকল্যাণের সম্প্রসারিত রূপই শিল্প সমাজকর্ম'— বুঝিয়ে
গ. উদ্দীপকে যে প্রতিষ্ঠানের ইঙ্গিত করা হয়েছে সেটি সমাজকর্মের কোন শাখার সাথে সংশ্লিষ্ট? ব্যাখ্যা করো। 
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত শাখাটির কার্যক্রম ফলপ্রসূকরণে একজন সমাজকর্মীর ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।

২ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. NASW ১৯৮৪ সালে সর্বপ্রথম ক্লিনিক্যাল সমাজকর্মের ধারণা দেয়।

খ. শিল্প সমাজকর্ম শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করে বলে একে শ্রমকল্যাণের সম্প্রসারিত রূপ হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়।
শিল্প সমাজকর্ম এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে সমাজকর্মী শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের প্রত্যক্ষভাবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নে পরোক্ষভাবে সাহায্য করেন। এ সহায়তা শ্রমিক শ্রেণির মানবিক ও সামাজিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে তাদের সামগ্রিক জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। শিল্প সমাজকর্মে শিল্পের উৎপাদন ও শ্রমিকের স্বার্থ দুটি দিকই রক্ষিত হয়। তবে সমাজকর্মের এ শাখার মূল কাজ হলো শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এজন্য বলা হয় শ্রমকল্যাণের সম্প্রসারিত রূপই শিল্প সমাজকর্ম।

গ. উদ্দীপকে বৃদ্ধনিবাসের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, যেটি সমাজকর্মের অন্যতম শাখা প্রবীণকল্যাণের সাথে সংশ্লিষ্ট।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে দারিদ্র্য, অনাহার, অনাদর, অবহেলা, বিদ্রুপ, মানসিক নির্যাতন, প্রতারণা আর শারীরিক নানা ধরনের বাধা-বিপত্তি ব্যক্তিকে বিপর্যস্ত করে তোলে। এসব সমস্যার সমাধান ও প্রবীণদের জন্য সুস্থ, সুন্দর এবং নিরাপদ পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্মের উৎপত্তি হয়েছে।
আর এর অন্যতম কার্যক্রম হলো বৃদ্ধ নিবাস স্থাপন করে সেখানে অসহায় দরিদ্র প্রবীণদের থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা, নিরাপত্তা, বিনোদনসহ যাবতীয় ব্যবস্থা করা।
উদ্দীপকের রবিন তেমনই একটি বৃদ্ধনিবাসে বাবাকে পাঠিয়েছে। কাজের ব্যস্ততার কারণে তার পক্ষে সবসময় অবসরপ্রাপ্ত বাবার খোঁজ নেওয়া সম্ভব হয় না। প্রায়ই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাবার সাথে ভুল বোঝাবুঝিও হয়। এক পর্যায়ে রবিন তাই বাবাকে বেসরকারি একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ বৃদ্ধনিবাসে পাঠিয়ে দেয়। প্রতিষ্ঠানটি রবিনের বাবার মতো প্রবীণদের থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ বৃদ্ধনিবাস প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্মের কার্যক্রমের আওতাভুক্ত।

ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্মের কার্যক্রম ফলপ্রসূ করে তুলতে একজন সমাজকর্মী অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন।
বার্ধক্যে ব্যক্তি যে ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন সে ব্যাপারে অনেক সময় পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকে না। এতে করে প্রবীণদের প্রতি আমাদের করণীয় কী হতে পারে সে সম্পর্কেও সবার সঠিক ধারণা নেই। এজন্য জনগণকে এ ব্যাপারে সচেতন করে তোলা জরুরি। এ ব্যাপারে সমাজকর্মীরা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন।
কৃষিনির্ভর ও গ্রামপ্রধান বাংলাদেশে একসময় যৌথ পরিবার প্রথা প্রচলিত ছিল। সে সময় বয়স্ক ব্যক্তিরা পরিবার থেকেই প্রয়োজনীয় আর্থিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তা পেতেন। শিল্প বিপ্লব পরবর্তী আধুনিক সমাজ এ ঐতিহ্য থেকে ধীরে ধীরে অনেকটাই সরে এসেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কয়েকযুগের নগরায়ণ ও শিল্পায়ন প্রবীণদের জন্য পরিস্থিতিকে আরও প্রতিকূল করে তুলেছে। এক্ষেত্রে সমাজকর্মীরা বয়স্ক মানুষদের সমস্যা সমাধানে সামাজিক কার্যক্রম (Social Action) পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন। আবার প্রবীণদের কল্যাণে কাজ করা বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথেও সংশ্লিষ্ট হতে পারেন। যেমন, বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরাবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান। অনেক সময় দেখা যায়, প্রবীণরা তাদের বয়সজনিত মূল্যবোধ বা পুরনো বদ্ধমূল ধারণার কারণে বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হন। এক্ষেত্রে সমাজকর্মী তাদেরকেও সচেতন করে তুলতে পারে। সেইসাথে তারা যাতে পরিবারের অন্য সদস্যদের আদর্শ ও চিন্তাধারার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন সে ধরনের পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে পারেন। এ সব ক্ষেত্রে একজন প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্মী নিজস্ব জ্ঞান, দক্ষতা ও কৌশলের প্রয়োগ ঘটাতে পারেন।
সামগ্রিক আলোচনা থেকে তাই বলা যায়, প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্মের কার্যক্রম ফলপ্রসূ করতে একজন সমাজকর্মীর ভূমিকা অপরিসীম।

৩. সাভারে একটি গার্মেন্টসে মালিক ও শ্রমিক দ্বনে্দ্বর কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নিম্ন শ্রেণির কর্মচারিদের ছাঁটাই করে মালিক নতুন করে কারখানা শুরু করতে চাইলে তারা প্রতিবাদ ও আন্দোলন শুরু করে। উচ্চবিত্ত কর্মকর্তাদের সমস্যা না হলেও নিম্ন শ্রেণির কর্মীদের পথে বসতে হয়। এদের সমস্যা সমাধান ও উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করার জন্য তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন উপলব্ধি করে। 
ক. কারা সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্মের কাজ করে?
খ. প্রবীণ সমাজকর্ম বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকের সমস্যা সমাধানের জন্য সমাজকর্মের কোন বিশেষায়িত শাখা তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করতে পারে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যার সমাধানে তৃতীয় পক্ষ কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে? মতামত দাও।

৩ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্মীরা সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্মের কাজ করে।

খ. প্রবীণ সমাজকর্ম বলতে সমাজকর্মের এমন শাখাকে বোঝায় যেটি প্রবীণদের সার্বিক কল্যাণের জন্য কাজ করে।
বর্তমানে প্রবীণদের বিশেষ জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা প্রতি বিশ্বের সবদেশে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতেই প্রবীণ সমাজকর্মের উদ্ভব হয়েছে। সমাজকর্ম অভিধানের (১৯৯৫) ব্যাখ্যানুযায়ী, প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্ম হলো সমাজকর্মের বিশেষ অনুশীলন ক্ষেত্র, যাতে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মনো-সামাজিক চিকিৎসা এবং প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য কর্মসূচি প্রণয়নের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।

গ. উদ্দীপকের মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য সমাজকর্মের অন্যতম বিশেষায়িত শাখা শিল্প সমাজকর্ম তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করতে পারে।
শিল্প সমাজকর্ম শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যা নিয়ে কাজ করে। বিশেষ করে শিল্প প্রতিষ্ঠানে মালিক-শ্রমিক সম্পর্কের উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণে শিল্প সমাজকর্ম কাজ করে। উদ্দীপকের সমস্যাটিও শিল্প সমাজকর্মের পরিধির আওতাভুক্ত। উদ্দীপকের বর্ণনা অনুসারে, সাভারের একটি গার্মেন্টসে মালিক-শ্রমিক দ্বনে্দ্বর কারণে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে মালিক পক্ষের স্বার্থের কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানটির নিম্ন পর্যায়ের কর্মীরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটিতে সৃষ্ট সংকটাবস্থার অবসান ঘটাতে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে একজন শিল্প সমাজকর্মী নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারেন। প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের সংকটের কারণেই সময়ের প্রয়োজনে শিল্প সমাজকর্মের উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছে।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সমস্যা সমাধানে পেশাদার সমাজকর্মের বিশেষায়িত শাখা শিল্প সমাজকর্মের ভূমিকা অত্যন্ত কার্যকর ও ফলপ্রসূ হবে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব নিরসনে শিল্প সমাজকর্ম পরামর্শ প্রদান ও কার্যকর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ভূমিকা রাখতে পারে।
শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কিছু সুনির্দিষ্ট বিধি-বিধান রয়েছে। বিশেষ করে শ্রম আইনে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে মালিক-শ্রমিক দ্বনে্দ্বর সমাধানে শ্রম আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে শিল্প সমাজকর্ম ভূমিকা রাখে। উদ্দীপকেও শিল্প সমাজকর্মের এরূপ ভূমিকা ফলপ্রসূ হবে।
উদ্দীপকের সাভারের গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানটিতে মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। এখন শিল্প সমাজকর্মীরা এই দ্বন্দ্ব সৃষ্টির পেছনে বিদ্যমান কারণ নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন। দ্বনে্দ্বর কারণ চিহ্নিত করার পর তারা বিদ্যমান শ্রম আইনের আলোকে এর সমাধান নির্ধারণ করবেন। পরবর্তী ধাপে তারা মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে সেতুবন্ধন সৃষ্টির কাজ করবেন। তাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার প্রকৃতি ও কারণ তুলে ধরে সমাধানের পথ নির্দেশ করে দেবেন। এক্ষেত্রে মূলত শিল্প সমাজকর্মীরা দল সমাজকর্মের পদ্ধতির আলোকে সমস্যা সমাধানে কাজ করবেন। তারা সাভারের শিল্প প্রতিষ্ঠানটিতে বিদ্যমান দল বা সমষ্টিকে অর্থাৎ মালিক-শ্রমিক পক্ষকে পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে তাদের মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন। এভাবে তারা আলোচ্য সমস্যার একটি যৌক্তিক সমাধান দিতে সমর্থ হবেন।
পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকের সমস্যা সমাধানে শিল্প সমাজকর্ম উপরোল্লিখিতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

৪. দরিদ্র বাবার সন্তান শারমিনের অল্প বয়সে বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পরে তার একটি প্রতিবন্ধী সন্তান হয়। শারমিনের স্বামী তার ভরণপোষণ করতে না পেরে তাকে তালাক দেয়। দরিদ্র, অসহায় ও স্বামী পরিত্যক্তা শারমিন প্রতিবন্ধী সন্তানটিকে নিয়ে খুবই কষ্টে আছে।
ক. চিকিৎসা সমাজকর্মের সর্বপ্রথম প্রয়োগ শুরু হয় কত সালে? 
খ. শিল্প সমাজকর্ম বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকের শারমিন ও তার সন্তানের জন্য সমাজকর্মের কোন শাখা সাহায্য করতে পারে? আলোচনা করো।
ঘ. উদ্দীপকের উল্লিখিত শাখা বাংলাদেশের বহুমুখী সমস্যা সমাধানে কতটা কার্যকরী বলে তুমি মনে কর? ব্যাখ্যা করো।

৪ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ১৯০৫ সালে চিকিৎসা সমাজকর্মের সর্বপ্রথম প্রয়োগ শুরু হয়।

খ. শিল্প সমাজকর্ম বলতে কারখানার পরিবেশে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে সাহায্য করার লক্ষ্যে সমাজকর্মের জ্ঞান ও দক্ষতার অনুশীলনকে বোঝায়।
শিল্প সমাজকর্ম পেশাদার সমাজকর্ম অনুশীলনের একটি বিশেষায়িত শাখা। এক্ষেত্রে শিল্প-কারখানায় নিয়োজিত শ্রমিকদের সামগ্রিক জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে সমাজকর্মের জ্ঞান, নীতি ও দক্ষতা প্রয়োগ করা হয়। মূলত শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের সামাজিক ভূমিকা ও মানবিক সম্পর্ক সংশ্লিষ্ট সমস্যা মোকাবিলায় সাহায্য করাই শিল্প সমাজকর্মের লক্ষ্য।

গ. উদ্দীপকের শারমিন ও তার সন্তানের সমস্যা মোকাবিলায় সমাজকর্মের অন্যতম শাখা ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম সাহায্য করতে পারে। ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম হলো সমাজকর্মের সেই শাখা যেখানে সাহায্যার্থীর (Client) সমস্যা (রোগ) নির্ণয় বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সমাধানে সাহায্য করা হয়। চিকিৎসা চলাকালীন রোগীকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সমাজকর্মের এ শাখার বৈশিষ্ট্য। বিবাহবিচ্ছেদ, অটিজম প্রভৃতির মতো সমস্যা নিয়ে এ শাখা কাজ করে।
উদ্দীপকের শারমিন একজন স্বামী পরিত্যক্তা নারী। তার সন্তানটিও প্রতিবন্ধী। সে দারিদ্র্য ও নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়ে অসহায় জীবনযাপন করছে। এ অবস্থায় ক্লিনিক্যাল সমাজকর্মীরা তাকে সুস্থ জীবনযাপনে সাহায্য করতে পারেন। ক্লিনিক্যাল সমাজকর্মীরা দৈহিক ও মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তি এবং অবহেলা, বঞ্চনা এবং সহিংসতার শিকার মানুষদের নিয়ে কাজ করেন। এছাড়া প্রতিবন্ধী শিশুদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া, সামাজিক বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও ক্লিনিক্যাল সমাজকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্বামী পরিত্যক্তা শারমিনের মানসিক শক্তি ফিরিয়ে আনতে ক্লিনিক্যাল সমাজকর্মীরা সাহায্য করতে পারেন। সমাজকর্মীরা তার প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করতেও কার্যকর ভূমিকা নিতে পারেন। এভাবে ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম শারমিন ও তার প্রতিবন্ধী সন্তানকে নতুন করে আশার আলো দেখাতে পারে।

ঘ. উদ্দীপকের উল্লিখিত শাখা অর্থাৎ কিলনিক্যাল সমাজকর্ম বাংলাদেশের সমাজে বিদ্যমান বহুমুখী সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত কার্যকর ও ফলপ্রসূ হতে পারে।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিশ্লেষণ করলে বহু ধরনের সমস্যা দেখা যায়। এসব সমস্যা সৃষ্টির জন্য দায়ী মূলত দারিদ্র্য, অশিক্ষা আর নানা ধরনের সামাজিক কুপ্রথা। বাংলাদেশের বাস্তবতায় এ সব সমস্যা সমাধানে সমাজকর্ম অনুশীলনের বিকল্প নেই। বিশেষ করে ক্লিনিক্যাল সমাজকর্মের যথার্থ প্রয়োগ ঘটাতে পারলে অনেক সামাজিক সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব।
ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং দলীয়ভাবে সেবা দিয়ে থাকে। সমাজকর্মের এ শাখার পরিধি ব্যাপক। প্রিয়জনের মৃত্যু, ব্যক্তিগত অসামর্থ্য, ব্যর্থতা, বিবাহবিচ্ছেদ চাকরি হারানো ইত্যাদি ঘটনায় জীবনযাত্রায় যে পরিবর্তন হয় তা অনেক সময় ব্যক্তিকে বিভিন্নমাত্রায় বিপর্যস্ত করে। এরকম পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম কাজ করে। তাছাড়া ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম উদ্বাস্তু, বেকার, দুর্বল ও অসহায় প্রবীণ জনগোষ্ঠী এবং গৃহহীনদের নিয়ে কাজ করে থাকে। দাম্পত্যকলহ, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, সামাজিক যোগাযোগহীনতা, মাদকাসক্তি, অপরাধপ্রবণতা, কিশোর অপরাধ ইত্যাদি সমস্যাও ক্লিনিক্যাল সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত। আর বর্তমান বাংলাদেশে এসব সমস্যা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। সমাজকর্মের কর্মপদ্ধতির আলোকে ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম এসব সমস্যা সমাধানে উপযুক্ত।
পরিশেষে বলা যায়, ক্লিনিক্যাল সমাজকর্মের অনুশীলন বাংলাদেশে বিদ্যমান নানারকম পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে। 

৫. ফারজানা হক পরিবারের একমাত্র সন্তান। মা-বাবা কাজের প্রয়োজনে বাইরে গেলে সে বাসায় একা থাকে। খেলার সাথি পায় না। এই একাকিত্ব তাকে অসুস্থ করে তোলে। তার মধ্যে একধরনের ভ্রাস্তি বা ব্যক্তিত্বের অস্বাভাবিকতা তৈরি হয়। সে বড় হলেও সবার সাথে মিলেমিশে চলতে পারে না। তাই তার মা-বাবা তার জন্য বড়ই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। 
ক. বাংলাদেশে কোন মেডিকেল কলেজে প্রথম চিকিৎসা সমাজকর্ম কার্যক্রম শুরু হয়?
খ. বিদ্যালয় সমাজকর্ম বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে ফারজানা হকের চিকিৎসার জন্য সমাজকর্মের কোন শাখা উপযোগী? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উক্ত শাখা সমাজকর্মের পেশাগত বিকাশে কতটা কার্যকরী বলে তুমি মনে করো।

৫ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম চিকিৎসা সমাজকর্ম কার্যক্রম শুরু হয়।

খ. বিদ্যালয় সমাজকর্ম বলতে সমাজকর্মের এমন শাখাকে বোঝায় যা স্কুলগামী ছেলেমেয়েদের শিক্ষাগ্রহণ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করে।
পেশাদার সমাজকর্মের একটি প্রায়োগিক শাখা হলো বিদ্যালয় সমাজকর্ম। এটি স্কুলের প্রধান কার্যাবলির সাথে সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঠিক পথে পরিচালনা করা, ভবিষ্যতে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা, নেতিবাচক আচরণ, বিশেষ দৈহিক আবেগীয় বা আর্থিক সমস্যা প্রভৃতি সমাধানে ৷ সমাজকর্ম কাজ করে।

গ. উদ্দীপকে ফারজানার সমস্যা মানসিক হওয়ায় তার চিকিৎসার জন্য সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্ম কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্ম হলো সমাজকর্মের এমন একটি শাখা যার মাধ্যমে মানসিকভাবে সমস্যাগ্রস্ত মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজ করা।
শাখার মাধ্যমে বিভিন্ন মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের তত্ত্বাবধান, তাদের রোগের কারণ অনুসন্ধান, পর্যাপ্ত সেবা ও ওষুধ প্রদান, কাউন্সেলিং ইত্যাদি মানসিক সেবা প্রদান করা হয়। আর এ ধরনের সহায়তাই উদ্দীপকের ফারজানার ক্ষেত্রে প্রয়োজন।
ফারজানা পরিবারের একমাত্র সন্তান। চাকরির কারণে বাবা-মা বেশিরভাগ সময় বাসায় না থাকায় এবং অন্য কোনো খেলার সাথি না থাকায় সে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিক আচরণ করতে পারছে না এবং সবার সাথে মিলেমিশে চলতে পারছে না। এ অবস্থায় একজন সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্মী ফারজানাকে সুস্থ করে তুলতে সহায়তা করতে পারেন। ফারজানার জন্য কী ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন তা তিনি ঠিক করে দিতে পারেন। তাছাড়া ফারজানার সাথে নিয়মিত কাউন্সেলিং, তার বাবা-মাকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান প্রভৃতি ক্ষেত্রেও সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্মীরা সহায়তা করেন। সুতরাং বলা যায়, ফারজানাকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে তার বাবা-মায়ের উচিত একজন সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্মীর সহায়তা নেওয়া।

ঘ. আমি মনে করি, সমাজকর্মের পেশাগত বিকাশে উক্ত শাখা অর্থাৎ সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্ম কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
সমাজকর্ম একটি প্রায়োগিক জ্ঞান। কেবল তাত্ত্বিক আলোচনার মধ্যেই এটি সীমাবদ্ধ নয়। বরং বহুমুখী মনো-সামাজিক সমস্যা সমাধানে এই জ্ঞানের প্রয়োগ ঘটানো যায়। এক্ষেত্রে সমাজকর্মের ভূমিকাকে কার্যকর করতে সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্মের মতো শতভাগ প্রায়োগিক শাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার কাজ করে থাকেন। তিনি শুধু রোগী নিয়েই গবেষণা ও আলোচনা করে থাকেন। কিন্তু একজন সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্মী সাহায্যার্থীকে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি তার পরিবার, বাবা-মা ও ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে পারিবারিক এবং দলীয় থেরাপি দিয়ে থাকেন। তিনি সাহায্যার্থীর মানসিক ও সামাজিক দিক বিবেচনা করে তার সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখেন। এ ধরনের পেশাগত দিক বিবেচনায় সমাজকর্মের এ শাখার প্রয়োগযোগ্যতা অসামান্য। তাছাড়া বর্তমান সমাজব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরনের আর্থ-মনো-সামাজিক জটিলতা বাড়তে থাকায় সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্মের আবেদন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এর পেশাগত ক্ষেত্রও প্রসারিত হচ্ছে। বর্তমানে সারাবিশ্বেই সমাজকর্মের এ শাখার প্রসার ঘটছে।
ওপরের আলোচনার আলোকে বলা যায়, সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্ম মানসিক রোগীদের চিকিৎসায় অত্যন্ত ফলপ্রসূ। আর এ কারণেই সমাজকর্মের পেশাগত বিকাশে এর ভূমিকা অত্যন্ত কার্যকর।

৬. জনাব রায়হান একজন পেশাদার সমাজকর্মী তিনি সমাজকর্মের একটি বিশেষ শাখার জ্ঞান, দক্ষতা ও পদ্ধতি প্রয়োগ করে ব্যক্তি ও পরিবারের মনো-দৈহিক, সামাজিক নিষি্ক্রয়তা, অক্ষমতা, জড়তা ইত্যাদি সমস্যা সমাধান ও প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকেন।
ক. বাংলাদেশে চিকিৎসা সমাজকর্মের যাত্রা শুরু হয় কখন?
খ. নিরক্ষরতা বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে জনাব রায়হান সমাজকর্মের কোন শাখায় কাজ করেছেন? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনাব রায়হানের অনুশীলন শাখার গুরুত্ব বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ করো।

৬ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ১৯৫৫ সালে বাংলাদেশে চিকিৎসা সমাজকর্মের যাত্রা শুরু হয়।

খ. নিরক্ষরতা বলতে কোনো ব্যক্তির অক্ষর জ্ঞান জানা না থাকাকে বোঝায়।
মানুষ আনুষ্ঠানিকভাবে যে দুটি ভাষা-দক্ষতা অর্জন করে তা হলো লেখা ও পড়ার দক্ষতা। অন্যদিকে ভাষা বলা ও শোনার দক্ষতা প্রতিটি মানুষই সহজাতভাবে অর্জন করে। কিন্তু সবাই লিখতে ও পড়তে পারে না। আর আনুষ্ঠানিক শিক্ষার এই অভাবই নিরক্ষরতা নামে পরিচিত।

গ. উদ্দীপকে জনাব রায়হান চিকিৎসা সমাজকর্ম শাখায় কাজ করেছেন।
একজন রোগীর চিকিৎসা গ্রহণ ও সুস্থ হওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে চিকিৎসা সমাজকর্মের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এক্ষেত্রে একজন চিকিৎসা সমাজকর্মী সমাজকর্মের বিশেষ জ্ঞান, দক্ষতা ও কৌশল প্রয়োগ করে সমস্যার সমাধান করেন।
উদ্দীপকের রায়হান একজন পেশাদার সমাজকর্মী। তার কার্যাবলি পর্যালোচনা করে আমরা তাকে একজন চিকিৎসা সমাজকর্মী হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি। তিনি ব্যক্তি ও পরিবারের মনো-দৈহিক সমস্যা, সামাজিক নিষি্ক্রয়তা, অক্ষমতা, জড়তা ইত্যাদির সমাধান ও প্রতিরোধে সাহায্য করেন। এক্ষেত্রে তিনি সমাজকর্মের জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগান যা চিকিৎসা সমাজকর্মীর কাজের অনুরূপ। চিকিৎসা সমাজকর্মীরা রোগী ও তার পরিবারকে নানাভাবে সহায়তা প্রদান করেন। এক্ষেত্রে তিনি রোগীর আর্থ-সামাজিক, মানসিক ও পারিবারিক অবস্থা বিবেচনায় রাখেন। ফলে তিনি সহজেই রোগীর মনো-দৈহিক সমস্যা সমাধানে সহায়তা করতে পারেন। অর্থাৎ রোগীকে মানসিকভাবে সবল করে তোলা এবং তার সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে একজন চিকিৎসা সমাজকর্মী কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। উদ্দীপকের জনাব রায়হানও উপরোল্লিখিত কাজগুলো করছেন। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের রায়হান চিকিৎসা সমাজকর্ম শাখায় কাজ করছেন।

ঘ. বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে জনাব রায়হানের অনুশীলন শাখা অর্থাৎ চিকিৎসা সমাজকর্মের গুরুত্ব অপরিসীম।
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। আয়তনের তুলনায় এ দেশের জনসংখ্যা অনেক বেশি। যে কারণে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাখাতে সমস্যাও অনেক। আর এসব সমস্যা সমাধানে সমাজকর্মের বিশেষায়িত অনুশীলন শাখা চিকিৎসা সমাজকর্মের কোনো বিকল্প নেই। তাই বাংলাদেশে সমাজকর্মের এ শাখার বিস্তার ঘটানো প্রয়োজন।
বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পর্যাপ্ত নয়। ফলে রোগীর সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কিত সামাজিক, মানসিক ও অন্যান্য প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। আবার বাংলাদেশে দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, অজ্ঞতা ও কুসংস্কার প্রভৃতির নেতিবাচক প্রভাবের কারণে সাধারণ জনগণ রোগ-ব্যাধি ও তার চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতন নয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠী চিকিৎসার সুযোগ- সুবিধা গ্রহণে অনেক ক্ষেত্রেই উদাসীন থাকে। তা ছাড়া আমাদের দেশে রোগমুক্তির পর রোগীর আর্থ-সামাজিক পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থাও করা যায় না। রোগীর অতীত ইতিহাস সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের সুযোগও অনেক সীমিত। এসব সমস্যা বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ অবস্থায় চিকিৎসা সমাজকর্মের ব্যাপক প্রসার ও বাস্তবায়ন সমস্যার ফলপ্রসূ সমাধান করতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে জনাব রায়হানের অনুশীলিত চিকিৎসা সমাজকর্মের প্রসার ও তার বাস্তবায়ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়।

HSC সমাজকর্ম ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ২ pdf download

৭. মাহি নবম শ্রেণির ছাত্রী। অষ্টম শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষায় সে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছিল। কিন্তু নবম শ্রেণিতে তার পরীক্ষার ফলাফলে বিপর্যয় ঘটেছে। শিক্ষক বিষয়টি অনুধাবন করে মাহির বাবাকে বললে তিনি একটি সমাজসেবা এজেন্সির কর্মকর্তার শরণাপন্ন হন। কর্মকর্তা সমস্যাটি চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হন।
ক. চিকিৎসা সমাজকর্ম কী?
খ. প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্ম বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে সমাজকর্মের কোন শাখার মাধ্যমে মাহির সমস্যার সমাধান করা হয়েছে? নিরূপণ করো।
ঘ. উদ্দীপকে অনুশীলনকৃত সমাজকর্মের শাখাটির কার্যকারিতা বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে মূল্যায়ন করো।

৭ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে সমাজকর্মের পদ্ধতি ও দর্শনের যে বাস্তব প্রয়োগ করা হয় তাই চিকিৎসা সমাজকর্ম।

খ. প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্ম হলো এমন একটি বিশেষায়িত শাখা যেটি প্রবীণ জনগোষ্ঠীর কল্যাণে সমাজকর্মের জ্ঞান, দক্ষতা ও কৌশল প্রয়োগ করে। 
বার্ধক্যে মানুষ নানা ধরনের সমস্যায় ভোগে। এ সময় দারিদ্র্য, অনাহার, অবহেলা, মানসিক নির্যাতন, প্রতারণা আর শারীরিক নানা বাধা-বিপত্তি তাদেরকে বিপর্যস্ত করে। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্যই প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্ম কাজ করে। এক্ষেত্রে সমাজকর্মীরা বয়স্কদের কল্যাণে সমাজকর্মের জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সেবা প্রদান করে।

গ. উদ্দীপকে বিদ্যালয় সমাজকর্মের মাধ্যমে মাহির সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ে শিশুদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের নতুন পরিবেশে অনেক শিশু খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। আবার একজন শিক্ষার্থী সেখানে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। যার প্রভাবে তার জীবনে বিভিন্ন রকম নেতিবাচক পরিণতির উদ্ভব হয়। মূলত এরকম অনাকাঙি্ক্ষত পরিণতি এড়াতেই বিদ্যালয় সমাজকর্ম কাজ করে।
উদ্দীপকের মাহি অষ্টম শ্রেণিতে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হলেও নবম শ্রেণিতে তার পরীক্ষার ফলাফল আশানুরূপ ছিল না। পারিবারিক অথবা ব্যক্তিগত কোনো সমস্যার কারণে সে পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছিল। এরকম পরিস্থিতিতে একজন শিক্ষার্থীকে অনুপ্রেরণা দিতে বিদ্যালয় সমাজকর্মের প্রয়োগ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে। এক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মের দায়িত্ব হলো মূল সমস্যা নির্ণয় করে তার আশু সমাধান করা। উদ্দীপকের মাহির ক্ষেত্রেও সমাজসেবা এজেন্সির কর্মকর্তা সমস্যা চিহ্নিত করেছেন এবং তা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি একজন বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকাই পালন করেছেন।
সুতরাং বলা যায়, মাহির সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়াটি বিদ্যালয় সমাজকর্মের অন্তর্ভুক্ত।

ঘ. বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে উদ্দীপকে অনুশীলনকৃত বিদ্যালয় সমাজকর্মের কার্যকারিতা আগে ফলপ্রসূ না হলেও বর্তমান সময়ে এটি শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ও নানা সমস্যায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্যই বিদ্যালয় সমাজকর্মের উদ্ভব ঘটে। বাংলাদেশেও এ উদ্দেশ্যে ১৯৬৯ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুটি বিদ্যালয়ে এ শাখা চালু করা হয়। কিন্তু আশানুরূপ ফল না পাওয়ায় ১৯৮৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এ পদ্ধতিটি তখনকার সময়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি।
উদ্দীপকে বিদ্যালয় সমাজকর্মের একটি সফলতার চিত্র অঙ্কিত হয়েছে যদিও অতীতে বাংলাদেশে এ শাখার প্রয়োগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে; তারপরও বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে এটি উদ্দীপকে উল্লিখিত বিভিনণ ধরনের সমস্যা মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। অথচ সে অনুপাতে বিদ্যালয় ও শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। ফলে সঠিক সমন্বয়ের অভাবে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে নানা ধরনের মনো-সামাজিক সমস্যার (যেমন- পরীক্ষায় খারাপ ফলাফলজনিত হতাশা, সহপাঠীদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারা, আত্মবিশ্বাসের অভাব) সম্মুখীন হয়। এ ধরনের সমস্যা থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে আনতে বিদ্যালয় সমাজকর্ম সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। এ অবস্থায় আমি মনে করি, সঠিক পদ্ধতি প্রয়োগ ও পর্যবেক্ষণের আওতায় বিদ্যালয় সমাজকর্ম বাংলাদেশে আবার চালু করা যেতে পারে। আশা করা যায় এর ফলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।
পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় সমাজকর্মের প্রয়োগ প্রশ্নসাপেক্ষ হলেও বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে তা ফলপ্রসূ হতে পারে।

৮. আশুলিয়ায় একটি গার্মেন্টেসে মালিক ও শ্রমিক দ্বনে্দ্বর কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নিম্ন শ্রেণির কর্মচারিদের ছাঁটাই করে মালিক নতুন করে কারখানা শুরু করতে চাইলে তারা প্রতিবাদ ও আন্দোলন শুরু করে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমস্যা না হলেও নিম্ন শ্রেণির কর্মীদের পথে বসতে হয়। এদের সমস্যা সমাধান ও উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করার জন্য তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন উপলব্ধি করে। 
ক. ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম কী?
খ. প্রবীণ সমাজকর্ম বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকের সমস্যা সমাধানের জন্য সমাজকর্মের কোন বিশেষায়িত শাখা তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করতে পারে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যার সমাধানে তৃতীয় পক্ষ কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে? মতামত দাও।

৮ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম হলো সমাজকর্মের একটি বিশেষ শাখা যেখানে সাহায্যার্থীর সমস্যা (রোগ) নির্ণয় বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সাহায্য করা হয়।

খ. প্রবীণ সমাজকর্ম বলতে সমাজকর্মের এমন শাখাকে বোঝায় যেটি প্রবীণদের সার্বিক কল্যাণের জন্য কাজ করে।
বর্তমানে প্রবীণদের বিশেষ জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী হিসেবে প্রবীণকল্যাণের প্রতি বিশ্বের সবদেশে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতেই প্রবীণ সমাজকর্মের উদ্ভব হয়েছে। সমাজকর্ম অভিধানের (১৯৯৫) ব্যাখ্যানুযায়ী, প্রবীণকল্যাণ সমাজকর্ম হলো সমাজর্মের বিশেষ অনুশীলন ক্ষেত্র, যাতে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মনো-সামাজিক চিকিৎসা এবং প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য কর্মসূচি প্রণয়নের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।

গ. উদ্দীপকের মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য সমাজকর্মের অন্যতম বিশেষায়িত শাখা শিল্প সমাজকর্ম তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করতে পারে।
শিল্প সমাজকর্ম শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যা নিয়ে কাজ করে। বিশেষ করে শিল্প প্রতিষ্ঠানে মালিক-শ্রমিক সম্পর্কের উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণে শিল্প সমাজকর্ম কাজ করে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সমস্যাটি শিল্প সমাজকর্মের পরিধির আওতাভুক্ত।
উদ্দীপকের বর্ণনা অনুসারে, আশুলিয়ায় একটি গার্মেন্টসে মালিক-শ্রমিক দ্বনে্দ্বর কারণে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে মালিক পক্ষের স্বার্থের কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানটির নিম্ন পর্যায়ের কর্মীরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটিতে সৃষ্ট সংকটাবস্থার অবসান ঘটাতে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে একজন শিল্প সমাজকর্মী নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারেন। প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের সংকটের কারণেই সময়ের প্রয়োজনে শিল্প সমাজকর্মের উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছে। সমাজকর্ম বিশেষজ্ঞদের নিয়োগের মাধ্যমে শিল্প- শ্রমিকদের চাহিদা, শ্রমিক উন্নয়ন এবং বৃহৎ সংগঠনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা প্রদান করাই শিল্প সমাজকর্মের মূল লক্ষ্য। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সমস্যা সমাধানে পেশাদার সমাজকর্মের বিশেষায়িত শাখা শিল্প সমাজকর্মের ভূমিকা অত্যন্ত কার্যকর ও ফলপ্রসূ হবে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব নিরসনে শিল্প সমাজকর্ম পরামর্শ প্রদান ও কার্যকর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ভূমিকা রাখতে পারে।
শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কিছু সুনির্দিষ্ট বিধি-বিধান রয়েছে। বিশেষ করে শ্রম আইনে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে মালিক-শ্রমিক দ্বনে্দ্বর সমাধানে শ্রম আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে শিল্প সমাজকর্ম ভূমিকা রাখে। উদ্দীপকেও শিল্প সমাজকর্মের এরূপ ভূমিকা ফলপ্রসূ হবে।
উদ্দীপকের আশুলিযার গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানটিতে মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। এখন শিল্প সমাজকর্মীরা এই দ্বন্দ্ব সৃষ্টির পেছনে বিদ্যমান কারণ নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন। দ্বনে্দ্বর কারণ চিহ্নিত করার পর তারা বিদ্যমান শ্রম আইনের আলোকে এর সমাধান নির্ধারণ করবেন। পরবর্তী ধাপে তারা মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে সেতুবন্ধন সৃষ্টির কাজ করবেন। তাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার প্রকৃতি ও কারণ তুলে ধরে সমাধানের পথ নির্দেশ করে দেবেন। এক্ষেত্রে মূলত শিল্প সমাজকর্মীরা দল সমাজকর্মের পদ্ধতির আলোকে সমস্যা সমাধানে কাজ করবেন। তারা সাভারের শিল্প প্রতিষ্ঠানটিতে বিদ্যমান দল বা সমষ্টিকে অর্থাৎ মালিক-শ্রমিক পক্ষকে পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে তাদের মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন। এভাবে তারা আলোচ্য সমস্যার একটি যৌক্তিক সমাধান দিতে সমর্থ হবেন।
পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকের সমস্যা সমাধানে শিল্প সমাজকর্মের কর্মপদ্ধতি প্রয়োগের কোনো বিকল্প নেই।

৯. সড়ক দুর্ঘটনায় আহত জামালকে তার আত্মীয়-স্বজনরা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে এলে মি. সুখেন চৌধুরী হাসপাতালের আউটডোর থেকে শুরু করে ভর্তি হওয়া পর্যন্ত সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সহায়তা দেন। এরপর তিনি জামালের আত্মীয়কে পরবর্তী করণীয় যেমন- রক্তসংগ্রহ, ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ, অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ক্লাচ ইত্যাদি সংগ্রহের জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।
ক. বাংলাদেশে কত সালে প্রথম স্কুল সমাজকর্ম চালু হয়?
খ. ক্লিনিক্যাল সমাজকর্মের ধারণা দাও।
গ. উদ্দীপকে মি. সুখেন চৌধুরীর কাজটি সমাজকর্মের কোন শাখার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে উক্ত শাখার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করো।

৯ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশে ১৯৬৬ সালে প্রথম স্কুল সমাজকর্ম চালু হয়।

খ. ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম বলতে ব্যক্তি, পরিবার এবং দলের সাথে অথবা তাদের পক্ষে প্রত্যক্ষভাবে সমাজকর্ম অনুশীলন করাকে বোঝায়।
সমাজকর্মের এ শাখায় মানুষের সমস্যাগুলোকে ক্ষুদ্র আঙ্গিকে বিশ্লেষণ করা হয়। সাধারণত শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন সমস্যা, যেমন- প্রিয়জনের মৃত্যু, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, দাম্পত্যকলহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, চাকরি হারানো ইত্যাদির ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল সমাজকর্মের জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োগ করে সাহায্যার্থীকে সাইকোথেরাপি এবং পরামর্শ সেবার মাধ্যমে সাহায্য দেওয়া হয়।

গ. উদ্দীপকে মি. সুখেন চৌধুরীর কাজটি সমাজকর্মের চিকিৎসা সমাজকর্মের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
বিশ্বব্যাপী সমাজকর্ম অনুশীলনের সুপরিসর ক্ষেত্র হলো চিকিৎসা কার্যক্রম। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসা রোগীর চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য চিকিৎসা সমাজকর্মের জন্ম হয়েছে। একজন রোগী হাসপাতালে আসার পর সামাজিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। এগুলো চিহ্নিতপূর্বক রোগীর মানসিক, শারীরিক তথা সর্বজনীন কল্যাণ সাধনে প্রচেষ্টা চালানো চিকিৎসা সমাজকর্মের অন্যতম লক্ষ্য। 
উদ্দীপকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত জামাল আত্মীয়-স্বজনদের সাথে হাসপাতালে আসলে মি. সুখেন চৌধুরী নামের সমাজকর্মী ভর্তি প্রক্রিয়ায় সহায়তাসহ চিকিৎসা বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন। যেসব সমস্যা রোগীর রোগ নিরাময় প্রক্রিয়াকে শারিরিক ও মানসিকভাবে বাধাগ্রস্ত করে এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত মানসিক, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সুযোগ- সুবিধা গ্রহণে অসমর্থ করে, সেসব সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানে চিকিৎসা সমাজকর্ম কাজ করেছে। মি. সুখেন চৌধুরী জামালের হাসপাতালে ভর্তিতে সহায়তা ও পরামর্শ দেন। এজন্য বলা যায় মি. সুখেন চৌধুরীর কাজটি সমাজকর্মের চিকিৎসা সমাজকর্মের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ঘ. উদ্দীপকে নির্দেশিত চিকিৎসা সমাজকর্মের অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে।
মানুষ শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য হাসপাতালের শরণাপন্ন হন। ডাক্তার রোগ নির্ণয়ের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে রোগীকে সুস্থ করে তোলেন। বর্তমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোপুরি হাসপাতাল ও ক্লিনিক কেন্দ্রিক হওয়ায় অনেকের ক্ষেত্রেই রোগী এবং ডাক্তারের মধ্যে সঠিক যোগাযোগ নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। রোগীকে পুরোপুরি সুস্থ করে তুলতে রোগী সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা দরকার। এতে রোগীর অসুস্থতার ধরন, রোগীর আর্থ-সামাজিক, পারিবারিক কাঠামো মানসিক অবস্থা, রোগীর ব্যক্তিত্ব সম্পদের পর্যাপ্ততা, হাসপাতালের পরিবেশ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে তথ্য জানা দরকার। কিন্তু যাবতীয় তথ্য চিকিৎসকের পক্ষে জানা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে চিকিৎসা সমাজকর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, আহত জামালকে মি. সুখেন চৌধুরী চিকিৎসার জন্য সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করেন। মি. সুখেন একজন চিকিৎসা সমাজকর্মী। হাসপাতালে আসা গ্রামের অশিক্ষিত, নিরক্ষর, আর্থিকভাবে অসচ্ছল, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বিভিন্ন ধরনের রোগীদের সহায়তা করেন চিকিৎসা সমাজকর্মী। রোগ নির্ণয়ে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পরীক্ষা- নিরীক্ষা যেমন- রক্ত গ্রহণ, রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে অস্ত্র পচার, সিটি স্ক্যান প্রভৃতি করাতে অনেক রোগী ভয় এবং এ সকল বিষয়ে থাকে। এছাড়া চিকিৎসা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা, কাউন্সেলিং প্রয়োজন হয়। এসব কাজ সম্পাদন করে থাকে চিকিৎসা সমাজকর্ম, যা মি. সুখেন চৌধুরীর কার্যক্রমের মধ্যে দেখা যায়।
তাই বলা যায়, চিকিৎসার শুরু থেকে রোগীর সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া পর্যন্ত সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি চিকিৎসা সমাজকর্মের গুরুত্ব অপরিসীম।

১০. শায়লা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে শ্যামলীর যক্ষ্মা হাসপাতালে এসেছে। কিন্তু হাসপাতালের পরিবেশ, ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্যদের সাথে খাপ খাওয়াতে ব্যর্থ হয়ে অসহায় বোধ করছিল। এমন অবস্থায় তার সাথে জসিম নামে একজন ব্যক্তি সাথে পরিচয় হয় যে তাকে হাসপাতালের পরিবেশ ও চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে খাপ খাওয়াতে সহায়তা করেন এবং তার সমস্যা সমাধানে নানা কৌশলের মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালান।
ক. সাইক্রিয়াট্রিক সমাজকর্ম কী?
খ. চিকিৎসা সমাজকর্ম বলতে কি বোঝ?
গ. উদ্দীপকের জসিম সাহেবের কার্যক্রম কোন ধরনের কার্যক্রম? 
ঘ. জসিম সাহেবের কার্যক্রম একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে সম্পাদনের বিবরণ দাও।

১০ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সাইক্রিয়াটিক সমাজকর্ম হলো মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সমাজকর্ম অনুশীলনের একটি বিশেষ প্রক্রিয়া।

খ. চিকিৎসা সমাজকর্ম হলো সমাজকর্মের এমন একটি বিশেষ শাখা যার মাধ্যমে হাসপাতালে আসা রোগীর চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
এটি সমাজকর্মের একটি বিশেষ শাখা। সাধারণত হাসপাতাল পরিবেশে চিকিৎসা সুযোগ-সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবহারে সহায়তা দান এ শাখার লক্ষ্য। এক্ষেত্রে চিকিৎসা সমাজকর্মী রোগী ও তার পরিবার এবং চিকিৎসকদের মাঝে সমন্বয় সাধন করেন।

গ. উদ্দীপকের জসিম সাহেবের কার্যক্রমের সাথে সমাজকর্মের অন্যতম শাখা চিকিৎসা সমাজকর্মের কার্যক্রমে সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
চিকিৎসা সমাজকর্ম সমাজকর্মের অন্যতম শাখা হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃত। একজন রোগীকে সুস্থ করে তুলতে সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক ও আবেগীয় সমর্থনের প্রয়োজন হয়, যা একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চিকিৎসা সমাজকর্মীর মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব। একজন চিকিৎসা সমাজকর্মী ডাক্তার, নার্স ও রোগীর মধ্যে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন। তিনি হাসপাতালে রোগী ভর্তি, তাকে সঠিক চিকিৎসা পেতে সাহায্য করা, রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কিত ভয়-ভীতি দূর করা, দরিদ্র রোগীদের আর্থিক ও বস্তুগত সাহায্য পেতে সাহায্য করা, প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানসহ আরও বিভিন্ন কাজ করে থাকে।
উদ্দীপকের জসিম সাহেব একটি যক্ষ্মা হাসপাতালে চাকরি করেন। সেখানে শায়লা যক্ষ্মা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসে। শায়লার হাসপাতালের পরিবেশ, ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্যদের সাথে খাপ খাওয়াতে ব্যর্থ হয়ে অসহায় বোধ করছিল। তখন জসিম তাকে হাসপাতালে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে এবং তার সমস্যা সমাধানে নানা কৌশল প্রয়োগ করে। জসিম সাহেবের এ সকল কার্যক্রমের মাধ্যমে বোঝা যায় তিনি একজন চিকিৎসা সমাজকর্মী। সুতরাং বলা যায়, জসিম সাহেবের কার্যক্রম চিকিৎসা সমাজকর্মকেই নির্দেশ করে।

ঘ. জসিম সাহেবের কার্যক্রমগুলো হলো চিকিৎসা সমাজকর্মীর। তবে একজন শিল্প সমাজকর্মী হিসেবে শিল্প প্রতিষ্ঠানে সমাজকর্মের কার্যক্রম সম্পাদনের ক্ষেত্রে জসিম সাহেব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
পেশাদার সমাজকর্মের একটি বিশেষায়িত শাখা হলো শিল্প সমাজকর্ম। মূলত শিল্প বিপ্লব এর পরবর্তী সময়ে মানবতাবাদী চিন্তাধারা এবং ফলপ্রসূ উৎপাদনের স্বার্থে সমাজকর্মের এ শাখার উদ্ভব হয়। সমাজকর্মের জ্ঞান, দক্ষতা, কৌশল ও পদ্ধতি প্রয়োগকে কেন্দ্র করে শিল্প সমাজকর্ম গড়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে একজন শিল্প সমাজকর্মী হিসেবে তার পেশাগত দক্ষতা ব্যবহার করে শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারেন। শ্রমিকদের মানবিক ও সামাজিক চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। শিল্প-কারখানার উৎপাদন বৃদ্ধিতে ও কর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একজন সমাজকর্মীর ভূমিকা অনন্য। এছাড়া কর্ম পরিবেশের সাথে শ্রমিকদের খাপ খাওয়াতে সাহায্য করা, কর্মীদের চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ, তাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা, শিল্প সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ প্রদান প্রভৃতি ক্ষেত্রে শিল্প সমাজকর্মী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেই সাথে অন্যান্য কল্যাণমূলক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন প্রভৃতি ক্ষেত্রে একজন শিল্প সমাজকর্মী কাজ করেন।
উদ্দীপকে জসিম সাহেব একজন চিকিৎসা সমাজকর্মী হিসেবে হাসপাতালে আসা রোগীদের হাসপাতালের পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে সহায়তা করেন। পাশাপাশি সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালয়। ঠিক একইভাবে শিল্প জসিম সাহেবের কার্যক্রম একজন শিল্প সমাজকর্মী হিসেবে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন।
সুতরাং বলা যায়, জসিম সাহেবের কার্যক্রম একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে সম্পাদনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post