HSC সমাজকর্ম ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৮ pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Social Work 1st Paper Srijonshil question and answer. HSC SocialWork 1st Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download.

সমাজকর্ম
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৮

HSC Social Work 1st Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

সমাজকর্ম পেশার সমস্যা এবং সম্ভাবনা
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে উন্নত দেশে শিল্পবিপ্লব ও যান্ত্রিক যুগের সূচনার ফলে আধুনিক সমাজকর্মের উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে। পরবর্তীতে উনণয়নশীল ও অনুনণত দেশে সমাজকর্মের প্রয়োগ শুরু হয়। শিল্পায়ন ও শহরায়নজনিত সমস্যা মোকাবিলার জন্য উন্নত দেশের অনুসরণে পঞ্চাশের দশকে বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার সূচনা এবং ষাটের দশকে এর সম্প্রসারন ঘটে। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক দশক অতিক্রান্ত হলেও এখনো বাংলাদেশে সমাজকর্ম পূর্ণাঙ্গ পেশা হিসেবে রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক স্বীকৃতি অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু নারীকল্যাণ, শিশুকল্যাণ, যুবকল্যাণ, প্রবীণকল্যাণ, শ্রমকল্যাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমাজকর্ম পেশা অনুশীলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

পেশাগত সংগঠনের অভাব, দেশজ শিক্ষা উকরণের সীমাবদ্ধতা, জনসচেতনার অভাব, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির অভাবে সমাজকর্ম পেশা এদেশে যথাযথ বিকাশ লাভ করতে পারেনি। তবে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে সমাজকর্ম শিক্ষার সম্ভাবনা অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ। বেসরকারি পর্যায়ে সীমিত পরিসরে হলেও সমাজকর্ম পেশার অনুশীলন অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া সমাজকর্ম পেশার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি অর্জনের নিমিত্তে ইঈঝডঊ এর মতো সংগঠন তৎপর রয়েছে। অদূর ভবিষ্যত বাংলাদেশে সমাজকর্ম একটি পূর্ণাঙ্গ ও গুরুত্বপূর্ণ পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা করা যায়।

বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার সম্ভাব্য প্রয়োগক্ষেত্র
১. শহর ও গ্রামীণ সমষ্টি উন্নয়ন: বাংলাদেশে পেশাদার সমাজকর্মের প্রয়োগ শুরু হয় মূলত শহর সমষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প (UCDP) এর মাধ্যমে ১৯৫৫ সালে। এটি বর্তমানে শহর সমাজসেবা কার্যক্রম নামে ৮০টি ইউনিটের মাধ্যমে সারা দেশের পৌর এলাকায় বাস্তবায়িত হচ্ছে, যা শহর এলাকার বস্তিবাসীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্য কাজ করছে। অন্যদিকে গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ১৯৭৪ সাল থেকে গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচি (জঝঝ) চালু রয়েছে। এটি দেশের সকল উপজেলায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন রকম কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শহর ও গ্রামীণ সমষ্টি উন্নয়নে সমাজকর্মের জ্ঞান, কৌশল ও পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

২. বিদ্যালয় পর্যায়ে সমাজকর্ম: বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া, পড়ালেখার প্রতি বিমুখতা, বিদ্যালয়ের পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যবিধান করতে না পারাসহ বিবিধ সমস্যা লক্ষণীয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া প্রতিরোধ, পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী করা তথা শিক্ষার্থী বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশে ১৯৬৯ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকার আরমানিটোলা উচ্চ বিদ্যালয় এবং চট্টগ্রামের মুসলিম হাই স্কুলে চালু করা হলেও তা ১৯৮৪ সালে এনাম কমিটির সুপারিশ বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে ইউসেপ, ব্র্যাকের মতো কিছু এনজিও বিদ্যালয় সমাজকর্মের জ্ঞান প্রয়োগ করে। বাংলাদেশে বিদ্যালয়ে সমাজকর্ম প্রয়োগ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

৩. সংশোধনমূলক কার্যক্রম: অপরাধী ও কিশোর অপরাধীদের আচরণ সংশোধনে বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক আবাসিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সমষ্টিভিত্তিক সেবা কর্মসূচি চালু রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক আবাসিক সেবা কর্মসূচির মধ্যে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র, কারাগারের অভ্যন্তরে বন্দী কয়েদীদের প্রশিক্ষণ, কাউন্সিলিং ও মটিভেশন কর্মসূচি উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে অপ্রাতিষ্ঠানিকসেবা কর্মসূচির মধ্যে প্রবেশন, আফটার কেয়ার সার্ভিস ও প্যারোল রয়েছে। প্রতিকারমূলক এই সব সর্মসূচিতে সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগ যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। উল্লেখ্য যে, কিশোর-কিশোরী উনণয়ন কেনেদ্র ব্যক্তি সমাজকর্মী ও সাইকিয়াট্টিক সোশ্যাল ওয়ার্কার নামে পদ রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সমাজকর্মে ডিগ্রিধারীদের নিয়োগের সুযোগ বাধ্যতামূলক করতে হবে।

৪. চিকিৎসা ক্ষেত্রে: বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাক্ষেত্রে সমাজকর্মীর জ্ঞান প্রয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এদেশে ১৯৫৬ সালে সর্বপ্রথম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চালুর মধ্য দিয়ে চিকিৎসা সমাজকর্মের মাত্রা শুরু হয় যা বর্তমানে হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রম নামে সমগ্র বাংলাদেশের মোট ৯০টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে পরিচালিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে চিকিৎসা সমাজকর্মের জ্ঞান, কৌশল, দক্ষতা প্রয়োগের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন সম্ভবপর। চিকিৎসা ক্ষেত্রে টীম ওয়ার্ক অ্যাপ্রোচের (team work approach) মাধ্যমে কাজ করা হয়ে থাকে যা বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে কার্যকর ফল বয়ে আনতে সক্ষম।

৫. পরিবারকল্যাণ: পরিবার সমাজের আদিম প্রতিষ্ঠান। পরিবারেই শিশু জন্ম গ্রহণ করে। পরিবারে সঠিক দিকনির্দেশনা, সচেতনতা ও নেতৃত্বের অভাবে পরিবারের সদস্য ও সন্তান-সন্ততিরা অনেক সময় যথাযথ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়। ফলে পরিবারের সদস্যরা বহুমুখী সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। বাংলাদেশের মতো দেশে পরিবার কল্যাণে গৃহীত কর্মসূচি যেমন- পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ, পারিবারিক ও দাম্পত্যকলহ প্রতিরোধে সমাজকর্মের জ্ঞান বিশেষভাবে উপযোগী।

৬. শিশুকল্যাণ: শিশুকল্যাণের নিমিত্ত গৃহীত কর্মসূচির সফলতা আনয়নে সমাজকর্ম অনুশীলন করা যেতে পারে। পুষ্টি কার্যক্রম, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিশু যত্ন, মা ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, শিশু সুরক্ষা, শিশু নির্যাতন রোধ, শিশু বঞ্চনা ও নিপীড়ন প্রতিরোধে সমাজকর্মীরা যথার্থ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। বাংলাদেশে শিশু পরিবার, ছোটমনি নিবাস, দিবাকালীন শিশু যত্ন কেন্দ্র, দুঃস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র, সেফ হোম, প্রতিবন্ধী শিশুদের কল্যাণে পরিচালিত কার্যক্রমসহ অন্যান্য কার্যক্রমে সমাজকর্মের পদ্ধতি প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

৭. নারীকল্যাণ: বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক হচ্ছে নারী। নারীরা বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত। নারীর অনগ্রসরতা, অসচেতনতা ও কুসংস্কার দূর করে সচেতন, দায়িত্বশীল, উপার্জনক্ষম করে নারী ক্ষমতায়ন তথা নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে সমাজকর্ম জ্ঞান অধিক ফলপ্রসূ ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া সেফ হোম, পল্লী মাতৃ কেন্দ্র, দুঃস্থ মহিলা প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, এসিড দগ্ধ মহিলা ও শারীরিক প্রতিবন্ধীর পুনর্বাসন কর্মসূচিসহ নারী কল্যাণমূলক কর্মসূচিতে সমাজকর্ম প্রয়োগ করা যেতে পারে।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

১. আফগানিস্তানের নাগরিক গুলফাম বারাকজাই নারীদের মর্যাদা ও শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতেন। কাজ করতে গিয়ে তিনি তালেবানদের কারণে নানা প্রতিকূলতার শিকার হন। তারপরও তিনি নারী জাগরণের কাজ করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তালেবান জঙ্গিরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিলে এক সময় বাধ্য হয়ে তিনি জাপানে চলে যান। বর্তমানে তিনি Tokyo University of Social Welfare এ সমাজকর্ম বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ক. কোন দেশকে সমাজকর্মের সুতিকাগার বলা হয়?
খ. সমাজকর্ম শিক্ষায় মাঠকর্ম অনুশীলন কেন করা হয়? 
গ. গুলফাম বারাকজাই এর প্রচেষ্টার মধ্যে উপমহাদেশের কোন সমাজ সংস্কারকের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। ব্যাখ্যা করো। 
ঘ. গুলফাম বারাকজাই এর গবেষণাতে সমাজকর্মের প্রয়োগক্ষেত্রের আংশিক প্রকাশিত হয় ব্যাখ্যা করো।

💘 ১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 💘
ক. ইংল্যান্ডকে সমাজকর্মের সূতিকাগার বলা হয়।

খ. সমাজকর্মের ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের জন্য সমাজকর্ম শিক্ষায় মাঠকর্ম অনুশীলন করা হয়।
মাঠকর্ম বলতে কোনো বিষয় বা ঘটনা সম্পর্কে সরজমিনে তথ্য সংগ্রহ করাকে বোঝায়। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো কাঙি্ক্ষত তথ্যাবলি সংগ্রহ ও সরবরাহ করা। এছাড়া সামাজিক উপাদান সম্পর্কিত তথ্যাবলি সংগ্রহ, সামাজিক সমস্যার কারণ উদ্ঘাটন, সামাজিক চলকের প্রকৃতি ব্যাখ্যাকরণ, বিস্তৃত তথ্যাবদি সরবরাহ করা, সংখ্যাবাচক বর্ণনা প্রদান, নমুনায়নের জন্য প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন, এলাকাভিত্তিক জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য প্রকাশ, চলকের কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার, সংগৃহীত তথ্যের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ ইত্যাদি উদ্দেশ্যে সমাজকর্মে মাঠকর্ম অনুশীলন করা হয়ে থাকে।

গ. গুলফাম বারাকজাই এর প্রচেষ্টায় উপমহাদেশের সমাজ সংস্কারক বেগম রোকেয়ার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। 
বেগম রোকেয়া ছিলেন নারী জাগরণের অগ্রদূত। তিনি মুসলিম নারীদের স্বাধীনতা, শিক্ষা এবং অধিকার আদায়ের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। নারী শিক্ষা বিস্তারের জন্য তিনি ভাগলপুরে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এক্ষেত্রে তিনি স্থানীয়দের বাধার সম্মুখীন হন। পারিবারিক কারণে তিনি স্কুলটি কলকাতায় স্থানান্তর করেন। সেখানেও তিনি রক্ষণশীল মুসলমানদের বিরোধিতা ও বর্ণনার শিকার হন। সব বাধা উপেক্ষা করে তিনি অসীম ধৈর্য ও দৃঢ় মনোবলের সাথে নারী শিক্ষা বিস্তারে এগিয়ে যান। বেগম রোকেয়ার এই প্রচেষ্টার সাথে গুলফাম বারাকজাইয়ের মিল পাওয়া যায়।
গুলফাম বারাকলাই আফগানিস্তানের নারীদের মর্যাদা ও শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতেন। এ কাজ করতে গিয়ে তিনি তালেবানদের বাধার সম্মুখীন হন। তিনি থেমে যাননি, বরং নারী জাগরণে তার সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। গুলফাম বারাকজাই এর এই প্রচেষ্টা বেগম রোকেয়ার প্রচেষ্টার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের গুলফাম বারাকজাই-এর প্রচেষ্টায় বেগম রোকেয়ার চিত্র ফুটে উঠেছে।

ঘ. উদ্দীপকের গুলফাম বারাকজাই নারী জাগরণের জন্য গবেষণা করছেন, যা সমাজকর্মের প্রয়োগক্ষেত্রের আংশিক ৰ~পমাত্র সমাজকর্ম পেশা সমগ্র বিশ্বজুড়েই একটি স্বীকৃত সামাজিক বিজ্ঞান। সমাজের নানা সমস্যার সমাধান ও উন্নয়নে সমাজকর্মের বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন, পল্লি উনণয়ন, সামাজিক আইন প্রণয়ন, পারিবারিক সেবা,আগে মানসিক স্বাস্থ্য, প্রতিবন্ধী কল্যাণ, অপরাধ সংশোধন, নারী জাগরণ, শিক্ষা, নারী ও শিশু উন্নয়ন প্রভৃতি নানা ক্ষেত্রে সমাজকর্ম কৌশল ও পদ্ধতির কার্যকর ব্যবহার রয়েছে।
উদ্দীপকে আফগানিস্তানের নাগরিক গুলফাম বারাকজাই নারীদের মর্যাদা ও শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় গবেষণাকর্ম চালিয়েছেন। নারী উন্নয়ন, নারী জাগরণ, নারী শিক্ষার প্রসার ও বিকাশে সমাজকর্ম কার্যক্রম পরিচালনা করে। নারীদেরকে শিক্ষামুখী করতে বিদ্যালয় সমাজকর্মের প্রয়োগ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু শুধু উদ্দীপকের বিষয়টির ক্ষেত্রে সমাজকর্মের জ্ঞান, কৌশল ও পদ্ধতি প্রয়োগ হয় না। সামাজিক বহুমুখী সমস্যার সমাধান ও সার্বিক উন্নয়নে সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নে সমাজকর্মের জ্ঞান ও কার্যক্রম ব্যবহৃত হয়। পরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নিরক্ষরতা অজ্ঞতা দূরীকরণ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সমাজকর্ম পেশা ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। গ্রামীণ ও শহর উন্নয়ন সার্বিক সমস্যা সমাধানে সমাজকর্ম কাজ করে। 
উপরের আলোচনা ক্ষেত্রে বলা যায়, সমাজকর্মের প্রয়োগ ক্ষেত্র ব্যাপক ও বিস্তৃত।

২. উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী জসিম সমাজকর্ম বিষয়ে পড়াশোনা করে জানতে পারে শিক্ষাহীনতা, স্বাস্থ্যহীনতা, শ্রেণিবৈষম্য, পারস্পরিক সম্পর্কহীনতা ও প্রবল বেকারত্ব থাকা সত্ত্বেও মানুষের ভ্রান্ত ধারণা, পেশাগত সংগঠনের অভাব, সচেতনতার অভাব ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে বাংলাদেশে সমাজকর্ম আজও পেশা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করতে পারেনি। 
ক. আমেরিকায় 'দানশীলতা, সংশোধন ও মানবহিতৈষণা'র আন্তর্জাতিক সম্মেলন কত সালে অনুষ্ঠিত হয়? 
খ. বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশা অনুশীলনের পটভূমি আলোচনা কর।
গ. উদ্দীপকের আলোকে সমাজকর্ম পেশার প্রয়োগক্ষেত্রগুলো আলোচনা কর। 
ঘ. বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশা বিকাশের প্রতিবন্ধকতাসমূহ উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর। 

💘 ২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 💘
ক. আমেরিকায় 'দানশীলতা, সংশোধন ও মানবহিতৈষণা'র আন্তর্জাতিক সম্মেলন ১৮৯৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়।

খ. বাংলাদেশে জাতিসংঘের সহায়তায় সমাজকর্ম পেশার অনুশীলন শুরু হয়। 
১৯৫২ সালে জাতিসংঘের কার্যকরি সাহায্য কর্মসূচির আওতায় ড. জেন্স ডাম্পসন এর নেতৃত্বে ছয় সদস্য বিশিষ্ট্য একটি সমাজকর্ম বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ওপর সমস্যা জরিপ ও বিশ্লেষণ করে এদেশে পেশাগত সমাজকর্মের অনুশীলনে সুপারিশ করা হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৫৫ সালে ঢাকা প্রজেক্ট' নামে শহর সমাজসেবা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে পেশাদার সমাজকর্মের ভিত্তি স্থপিত হয়।

গ. উদ্দীপকে নির্দেশিত শিক্ষাহীনতা, স্বাস্থ্যহীনতা, বৈষম্য, পারস্পরিক সম্পর্কহীনতা, বেকারত্ব প্রভৃতি সমস্যা সমাধানে সমাজকর্ম পেশা প্রয়োগ করা যায়।
দ্রুত শিল্পায়ন, ডিজিটালাইজেশন ও নগরায়ণের প্রভাবে যে আমূল পরিবর্তন ও সমস্যা তৈরি হয়েছে, তাতে সমাজকর্ম পেশার সম্ভাবনা ও সম্ভাব্য প্রয়োগক্ষেত্রগুলো ক্রমেই বেড়ে চলেছে। শিক্ষার উন্নয়নে বিদ্যালয় সমাজকর্মের প্রয়োগ করা যায়। পারিবারিক সমস্যা ও সহিংসতা প্রতিরোধ ও উন্নয়নে দিক নির্দেশনা ও সচেতনতা সৃষ্টি করতে সমাজকর্মের পদ্ধতি প্রয়োগ করা সম্ভব। ভগ্ন স্বাস্থ্য মা ও শিশুর স্বাস্থ্য পুষ্টি, নারী-পুরুষের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠা, যুবকল্যাপ ও বেকারত্ব হ্রাসের ক্ষেত্রে সমাজকর্ম পেশা সফলতার সাথে কাজ করতে পারে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, শিক্ষার্থী জসিম সমাজকর্ম পড়তে গিয়ে শিক্ষাহীনতা, স্বাস্থ্যহীনতা, সম্পর্কের সংকট, কর্মসংস্থানের অভাব প্রভৃতি সমস্যার চিত্র দেখতে পায়। উক্ত সমস্যাগুলো সমাধানে সমাজকর্ম পেশার প্রয়োগ করা যেতে পারে। শিক্ষার উন্নয়নে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ইউসেপ, ব্র্যাকসহ কিছু এনজিও বিদ্যালয়কে শিশু বান্ধব করার লক্ষ্যে সমাজকর্মের পদ্ধতি প্রয়োগ করছে। বাংলাদেশে নারী-পুরুষ ও ধনী দরিদ্রের ব্যাপক বৈষম্য লক্ষণীয়। স্ত্রীর সাথে স্বামীর সহিংসতা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সচেতনতার প্রভাব, ব্যাপক বেকারত্বসহ সামাজিক বিভিন্ন সংকট প্রবল আকার ধারণ করছে। এসব ক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে় তুলে পেশাদার সমাজকর্মীর মাধ্যমে তাদের নিজস্ব পেশাগত জ্ঞান ও সক্ষতা কাজে লাগিয়ে সমস্যাগুলোর সমাধান করা যেতে পারে।

ঘ. উদ্দীপকে বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার বিকাশে মানুষের ভ্রান্ত ধারণা, পেশাগত সংগঠন ও সচেতনতার অভাব ও প্রশাসনিক জটিলতাকে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে নির্দেশ করা হয়েছে। 
বাংলাদেশে জাতিসংঘের সহযোগিতায় ষাটের দশকে পেশাদার সমাজকর্মের সূচনা হয়। কিন্তু পেশার সার্বিক বৈশিষ্ট্যগুলোর সবকয়টি বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে সমাজকর্ম স্বতন্ত্র পেশার মর্যাদা লাভ করেনি। যে সকল সমস্যা প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দাঁড়িয়েছে তাদের মধ্যে পেশার মান বজায় ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানের পেশাগত সম্মিলিত সংগঠনের অভাব, জনগণের অসচেতনতা, প্রয়োগিক প্রতিষ্ঠানের সীমাবদ্ধতা অন্যতম।
উদ্দীপকে বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশা বিকাশের ক্ষেত্রে মানুষের ভুল ধারণা ও সচেতনতার অভাব, পেশাগত সংগঠনের অভাব, প্রশাসনিক জটিলতা প্রভৃতি প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ রয়েছে। বাংলাদেশে অজ্ঞ, নিরক্ষর ও অসচেতন জনগণের পেশাদার সমাজকর্ম সম্পর্কে জ্ঞানের অভাবে সমাজকর্ম পেশা বিকশিত হচ্ছে না। সমাজকর্ম পেশার এখন পর্যন্ত পেশাদার সমাজকর্মীদের কার্যকর কোনো সংগঠন গড়ে ওঠেনি। বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার মান বজায় রাখার আক্রিভিটেশন ব্যবস্থা নেই। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষিতে সমাজকর্মের পেশাগত ব্যবহারিক মূল্যবোধ ও মানদন্ড কী হওয়া উচিত সে বিষয়েও কোনোরূপ সুনির্দিষ্ট ধারণা এখনো গড়ে ওঠেনি।
পরিশেষে বলা যায়, মৌল মানবিক চাহিদা পূরণের তীব্রতা ও ব্যাপকতাসহ আলোচিত সার্বিক কারণে বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশা স্বতন্ত্র পেশার মর্যাদা লাভ করেনি।

৩. আদিবের বয়স ১২ বছর। সমাজবিরোধী কিছু লোকের সংস্পর্শে এসে সে অপরাধপ্রবণ হয়ে পড়ে। সংশোধনের জন্য তাকে একটি সরকারি সমাজসেবা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়। ঐ প্রতিষ্ঠানের কিছু সমস্যার কারণে আদিব অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়। দুটি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতার কারণে আদিবের বর্তমান অবস্থা বেশ শোচনীয় হয়ে পড়েছে।
ক. ঢাকা মেডিকেল কলেজে কত সালে হাসপাতাল সমাজসেবা কর্মসূচি চালু করা হয়? 
খ. শব্দদৈত্য বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত সমাজকর্ম পেশার প্রয়োগক্ষেত্র চিহ্নিত করে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উক্ত প্রয়োগক্ষেত্রে সমাজকর্ম পেশার সফল প্রয়োগে সমস্যা বিশ্লেষণ করো।

💘 ৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 💘
ক. ১৯৫৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সমাজসেবা কর্মসূচি চালু করা হয়।

খ. স্যার উইলিয়াম বিভারিজ পঞ্চদৈত্য বলতে পাঁচটি সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে বুঝিয়েছেন। 
তার মতে, সমাজ থেকে এ পঞ্চদৈত্য অপসারণ করা গেলে সমাজে সুখ সমৃদ্ধি আনা সম্ভব। বিভারিজ রিপোর্ট হচ্ছে স্যার উইলিয়াম বিভারিজের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কর্তৃক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রণয়ন সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন। বিভারিজ রিপোর্টে মানব সমাজের অগ্রগতি ও প্রতিবন্ধকতা হিসেবে পাঁচটি বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এগুলো হলো- অভাব, রোগ, অজ্ঞতা, অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশ এবং অলসতা।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমাজকর্ম পেশার প্রয়োগক্ষেত্র হিসেবে সংশোধনমূলক কার্যক্রম এবং হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রমকে চিহ্নিত করা যায়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, ১২ বছর বয়সী কিশোর আদিবের অপরাধপ্রবণতা সংশোধনের জন্য তাকে সরকারি সমাজসেবা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়, যা কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে সংশোধনমূলক কার্যক্রমকে নির্দেশ করে। মূলত শিল্পায়ন ও শহরায়নের প্রভাব অপরাধ ও কিশোর অপরাধ প্রবণতাকে ক্রমাগত বৃদ্ধি করছে। এই প্রবণতা দমনের ক্ষেত্রে শাস্তির পরিবর্তে সংশোধনের প্রতি অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। কিশোর অপরাধী ও অপরাধীদের সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রবেশন, প্যারোল, আফটার কেয়ার সার্ভিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। 
উদ্দীপকে আরও দেখা যায়, সমাজসেবা প্রতিষ্ঠানের কিছু সমস্যার কারণে আদিব অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়। এ ক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠানটি সমাজকর্মের প্রয়োগ ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত হয় তা হলো হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রম। এ কার্যক্রমের ক্ষেত্রে রোগীর রোগ নিরাময়ের সাথে সাথে তার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। একজন সমাজকর্মী এ সমস্ত প্রাসঙ্গিক বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান করে চিকিৎসককে রোগ নির্ণয় ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণে সাহায্য করতে পারে।

ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত প্রয়োগক্ষেত্রে অর্থাৎ সংশোধনমূলক কাজ এবং হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রমে সমাজকর্ম পেশার সফল প্রয়োগে পেশাগত মূল্যবোধ ও মানদন্ড, রাষ্ট্রীয় নীতি এবং পেশাগত সংগঠনের অভাব রয়েছে।
উদ্দীপকের আদিবের সমস্যা মোকাবিলায় সংশোধনমূলক কার্যক্রম ও হাসপাতাল সমাজসেবার উল্লেখ আছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রগুলোতে এখনো সমাজকর্ম পেশার সফল প্রয়োগ হচ্ছে না। মূলত, সমাজকর্ম পেশার বিকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট বই, সাময়িকী, পত্রপত্রিকা আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। যার ফলে এখনো মানুষের মধ্যে এ পেশা সম্পর্কিত চিরাচরিত ধারণা বিদ্যমান, যা সমাজকর্মের সফল প্রয়োগের অন্তরায়। এছাড়া এদেশে পেশাদার সমাজকর্মের কোনো কার্যকর পেশাগত সংগঠন নেই। উপরন্তু সমাজসেবা বিভাগে সমাজসেবা কর্মকর্তা পদটি ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সমাজকর্মের স্নাতকদের জন্য সংরক্ষিত থাকলেও পরে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। যার কারণে হাসপাতালে সমাজসেবা ও সংশোধনমূলক কার্যক্রমগুলো অপেশাদার লোকদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা দেয়, যার ইঙ্গিত উদ্দীপকেও পাওয়া যায়।
উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রয়োগ ক্ষেত্রগুলোর আরেকটি বড় সমস্যা হলো প্রচারণা সংকট। আমাদের দেশে প্রচলিত কিশোর অপরাধ, পারিবারিক সমস্যাজনিত মানসিক বিপর্যস্ততা কিংবা হাসপাতাল সমাজসেবার মতো কার্যক্রমগুলোর তেমন কোনো প্রচারণা নেই। ফলে জনগণ তাদের সমস্যা মোকাবিলায় এ ক্ষেত্রগুলোর সাহায্য নেয় না, যা সমাজকর্মের বিকাশের পথে বড় বাধা।
উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রয়োগক্ষেত্রগুলোতে সমাজকর্ম পেশার সফল প্রয়োগে বেশকিছু সমস্যা বিদ্যমান। এ সমস্যাগুলোর সমাধান না করা হলে ভবিষ্যতেও সমাজকর্মের মূল দর্শন কাগজপত্রেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে।

৪. সুমন একটি প্রতিষ্ঠানে সমাজকর্মী হিসেবে চাকরি করে। সমাজকর্মে স্নাতক পাস তার বন্ধু হাসান তাকে সমাজকর্মী বলতে নারাজ। কিন্তু সমাজে সমাজকর্মী বলে তাদেরকে, যারা বেশি বেশি দান, সদকা ইত্যাদি করে। সমাজকর্ম যে পেশা, তা সমাজের অধিকাংশই জানে না। সুমন সমাজকর্মী হিসেবে চাকরি করলেও সে লেখাপড়া করেছে অর্থনীতি নিয়ে।
ক. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সমাজকল্যাপ কলেজ ও গবেষণা কেন্দ্র করে চালু করা হয়? 
খ. বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার বিকাশে 'সংগঠনের অভাব' বুঝিয়ে লেখ। 
গ. উদ্দীপকে সুমনের কর্মে সমাজকর্মের সীমাবদ্ধতার প্রতিফলন কতটুকু? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে চিহ্নিত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে এ বিষয়ে সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলো বিশ্লেষণ করে তোমার মতামত দাও। 

💘 ৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 💘
ক. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সমাজকল্যাণ কলেজ ও গবেষণা কেন্দ্র চালু করা হয় ১৯৬৪ সালে।

খ. বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার বিকাশে একটি অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে সংগঠনের অভাব। 
যেকোনো পেশার মানোন্নয়ন, স্বার্থ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে পেশাগত সংগঠন অপরিহার্য। এজন্য আমাদের দেশে ১৯৭৬ সালে জাতীয় সমাজকর্মী সমিতি এবং ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ সমাজকর্ম শিক্ষক সমিতি প্রভৃতি সংগঠন গড়ে ওঠে। কিন্তু বর্তমানে এদের কোনো কার্যকারিতা নেই। ফলে সমাজকর্মকে পেশার মর্যাদায় উন্নীত করার জন্য সঠিক মূল্যায়ন, বাস্তববাদী আন্দোলন প্রভৃতির অভাব লক্ষ করা যায়। তাই সমাজকর্ম পেশার বিকাশে সংগঠনের অভাব একটি বড় প্রতিবন্ধকতা।

গ. উদ্দীপকে সুমনের কর্মে সমাজকর্মের বেশকিছু সীমাবদ্ধতার প্রতিফলন ঘটেছে। 
সমাজকর্ম পেশার একটি মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে এ বিষয়টি সম্পর্কে মানুষের সনাতন দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্বাস। এদেশের মানুষ দান, ব্রাণ, সাহায্য প্রভৃতি কাজকে সমাজকর্ম হিসেবে ভেবে থাকে। বাংলাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক, পেশাগত মূল্যবোধ ও মানদন্ড সম্পর্কে সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট কোনো ধারণা এখনও গড়ে ওঠেনি। এদেশের শিক্ষার্থীরা বিদেশের সংস্কৃতিভিত্তিক বই-পত্রপত্রিকা প্রভৃতি নির্ভর শিক্ষাকোর্স সম্পন্ন করে যা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। ফলে সমাজকর্মীরা শিক্ষা শেষে তা প্রয়োগে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়। সমাজকর্মের অন্যতম একটি সীমাবদ্ধতা হচ্ছে অনেক সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানে সমাজকর্মের জ্ঞান ও দক্ষতাসম্পন্ন প্রার্থীকে বাদ দিয়ে অন্যান্য বিষয়ে ডিগ্রিধারীদের নিযুক্ত করা হয়। ফলে তারা দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে তারা উদাসীন থাকে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, সুমন অর্থনীতি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে সমাজকর্মী হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছে। অর্থাৎ সমাজকর্মে তার তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক কোনো জ্ঞান না থাকার পরেও সে তৎসংশ্লিষ্ট কর্মে নিয়োজিত, যা সমাজকর্মের সীমাবদ্ধতার দিককে প্রতিফলিত করছে।

ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত বাংলাদেশে সমাজকর্মের প্রতি মানুষের নেতিবাচক ধারণা এবং পেশাগত সংগঠনের অভাব থাকলেও এদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে এ পেশার প্রয়োগক্ষেত্র সম্ভাবনাময়। বাংলাদেশে শিশুকল্যাণ, নারীকল্যাণ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, জনসংখ্যা সমস্যা, শিক্ষা উন্নয়নে পেশাদার সমাজকর্মের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া ঠেকাতে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখা, ছাত্র ও অভিভাবকদের মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপনে সমাজকর্ম কাজ করতে পারে। শিশুদের কল্যাণে শিশু সনদ, বেবি হোম, শিশু পরিবার ও এতিমখানায় একজন সমাজকর্মী তার পেশাদারি জ্ঞান প্রয়োগ করে উক্ত ক্ষেত্রে উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে বিভিন্ন সংগঠন যেমন- কিশোর আদালত, প্যারোল, প্রবেশন প্রভৃতি পরিচালনা করা হচ্ছে, যা পেশাদার সমাজকর্মের সম্ভাবনার ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত। এছাড়া পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সমাজকর্মীরা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে আত্মসচেতনাবোধ জাগ্রতকরণ, আত্মকর্মসংস্থান ও ক্ষমতায়ন প্রভৃতি বিষয়ে পরামর্শ ও সহায়তা করতে সমাজকর্মীরা ভূমিকা রাখতে পারে। উদ্দীপকে সমাজকর্মের প্রতি মানুষের অজ্ঞতা, অসচেতনতা এবং সমাজকর্মী হিসেবে সমাজকর্ম ব্যতীত অন্য বিষয়ের ডিগ্রিধারী নিযুক্ত হওয়ায় প্রভৃতিসমস্যা লক্ষ করা যায়। কিন্তু সমাজকর্মের সম্ভাবনার ক্ষেত্রসমূহ বিবেচনা করে এসব সমস্যা সমাধানে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।
উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বহুমুখী সমস্যায় জড়িত। আর সমাজকর্ম শিক্ষা ছাড়া এসব সমস্যার সমাধান ও সমাজ উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, বাংলাদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার ক্ষেত্র যথেষ্ট সম্ভাবনাময়।

৫. শাহীন এমন একটি দেশে বসবাস করছে যেখানে সমাজকর্ম পেশা হিসেবে স্বীকৃত। উক্ত দেশটিতে সমাজকর্ম শিক্ষা চালু হয় ইংল্যান্ডের সমাজসেবা কাঠামোর উপর ভিত্তি করে। উক্ত দেশের সমাজকর্ম শিক্ষার ইতিহাস প্রায় শত বছরের।
ক. কোন দেশকে সমাজকর্মের সূতিকাগার বলা হয়?
খ. উন্নত দেশ বলতে কী বোঝায়? 
গ. উদ্দীপকে কোন দেশের সমাজকর্ম শিক্ষাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত দেশের সমাজকর্ম শিক্ষার বর্তমান অবস্থা-বিশ্লেষণ করো। 

💘 ৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 💘
ক. ইংল্যান্ডকে সমাজকর্মের সুতিকাগার বলা হয়।

খ. যেসব দেশ প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বাধিক ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকৃত মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে সেসব দেশই উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত। 
উন্নত দেশগুলোতে সাধারণত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অনেক বেশি হয় এবং এসব দেশের মানুষ উন্নত জীবন-যাপনে অভ্যস্ত। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশের মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, চীন প্রভৃতি।

গ. উদ্দীপকে আমেরিকার সমাজকর্ম শিক্ষাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। 
পেশাদার সমাজকর্মের বিকাশে আমেরিকার নাম উজ্জ্বল। ইংল্যান্ডের হাত ধরে আমিরিকাতে সমাজকর্ম পেশার উৎপত্তি হলেও সমাজকর্মের পেশাগত শিল্প বিকাশে আমেরিকার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। মূলত আধুনিক সমাজকর্মের জ্ঞান ও শিক্ষা আমেরিকারই অবদান। এদেশে স্বেচ্ছাসেবী পর্যায়ে ব্যাপকভাবে পরিচালিত সেবা কর্মসূচি এবং সমাজকর্ম শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি উদ্যোগে বিশেষভাবে লক্ষণীয়।
আমেরিকায় সমাজকর্ম শিক্ষার প্রবর্তনে এনা এল ভয়েস অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৮৯৩ সালে শিকাগো শহরে অনুষ্ঠিত International Congress of Charities. Correction and Philanthorphy' সম্মেলনে সমাজসেবা উন্নত করার জন্য পেশাগত প্রশিক্ষণ দানের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। আমেরিকার একটি বিখ্যাত সমাজকর্ম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ফিলাডেলফিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। আমেরিকার সমাজকর্ম শিক্ষার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, উক্ত দেশের সমাজকর্ম শিক্ষার ইতিহাস প্রায় শত বছরের পুরনো। আমেরিকার সমাজকর্ম শিক্ষা সম্পর্কিত উল্লিখিত বিষয়সমূহের সাথে শাহীনের বসবাসকৃত দেশের সমাজকর্ম শিক্ষার মিল রয়েছে। 
তাই বলা যায়, উদ্দীপকে আমেরিকার সমাজকর্ম শিক্ষার প্রতিফলন রয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে নির্দেশিত আমেরিকা পেশাদার সমাজকর্ম ও শিক্ষার বিকাশে এক উজ্জ্বল নাম। 
আমেরিকার সমাজকর্ম শিক্ষার ইতিহাস প্রায় ১০০ বছরের। মূলত ইংল্যান্ডের সমাজসেবা বা কাঠামোর উপর ভিত্তি করে এদেশে সমাজকর্ম শিক্ষা সূচিত হয়। সমাজকর্ম শিক্ষার জন্য এদেশে বহু প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সমাজকর্ম আমেরিকায় একটি জনপ্রিয় পেশা হিসেবে স্বীকৃতি।
উদ্দীপকে বিভিন্ন নির্দেশনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা আমেরিকার সমাজকর্মকে নির্দেশ করছে। আমেরিকায় পেশাগত সমাজকর্ম চালু হয় ১৯০৪ সালে। এই সময় থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ১৫টি সমাজকর্ম শিক্ষাদান ভিত্তিক স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৩০ থেকে ১৯৪০ সালের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে সমাজকর্মভিত্তিক উচ্চ শিক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দক্ষ সমাজকর্মী তৈরি করার জন্য এ প্রতিষ্ঠানগুলো ৪ বছর ব্যাপী স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রম এবং এর সাথে এক বছরের স্নাতক কোর্স চালু করে। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি পর্যায়ে এ বিষয় পাঠদান ও ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া সমাজকর্ম শিক্ষাকে অধিকতর কার্যপোযোগী ও মানসম্মত করার জন্য বিভিন্ন সংগঠনও কাজ করে। CSWE আমেরিকার সমাজকর্ম শিক্ষার প্রথম পর্যায়ের সংগঠন।
উপরের আলোচনা বিশ্লেষণপূর্বক বলা যায়, সমাজকর্ম শিক্ষার ক্ষেত্রে আমেরিকা এক উজ্জ্বল উদাহরণ, যা বিশ্বে সমাজকর্ম শিক্ষা ও পেশাকে বিশেষ অবস্থানে নিয়ে গিয়েছে।

৬. পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সমাজকর্ম একটি পেশা হলেও বাংলাদেশে এটি আজও পেশার স্বীকৃতি পায়নি। আব্দুল আলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্ম বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করে একটি বেসরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গিয়ে সমাজকর্ম বাংলাদেশে পেশার স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণগুলো খুঁজে পেলেন।
ক. সামাজিক প্রশাসন কী?
খ. দল সমাজকর্মের উপাদানগুলো কী কী?
গ. আব্দুল আলিম সাহেবের পেশা স্বীকৃতি না পাওয়ার কী কী কারণ থাকতে পারে?
ঘ. আব্দুল আলিম সাহেবের পেশার সমস্যা সমাধানের কী কী উপায় থাকতে পারে বলে তুমি মনে কর? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দেখাও।

💘 ৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 💘
ক. সামাজিক প্রশাসন সমাজকর্মের একটি কৌশল ও প্রক্রিয়া যা সামাজিক নীতিকে সামাজিক সেবায় পরিণত করে।

খ. দল সমাজকর্মের উপাদানগুলো হলো- সামাজিক দল, দল সমাজকর্ম প্রতিষ্ঠান, দল সমাজকর্মী এবং দল সমাজকর্ম প্রক্রিয়া। দল সমাজকর্ম প্রক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে সামাজিক দল ছাড়া দল সমাজকর্ম অনুশীলন করা যায় না। যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে দল সমাজকর্মে সেবা প্রদান করা হয় সেগুলোকে দল সমাজকর্ম প্রতিষ্ঠান বলা হয়। সমাজকর্মের জ্ঞান ও দক্ষতা অনুশীলনের মাধ্যমে দলকে সাহায্য করাই দল সমাজকর্মীর মূল কাজ। দল সমাজকর্ম অনুশীলনে গৃহীত সুশৃঙ্খল ধারাবাহিক কার্যক্রমই হলো দল সমাজকর্ম প্রক্রিয়া।

গ. আব্দুল আলিম সাহেবের সমাজকর্ম পেশাটি স্বীকৃতি না পাওয়ার পেছনে বেশকিছু কারণ রয়েছে।
কোনো পেশার বিকাশে পেশাগত সংগঠনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার জ্ঞানার্জনের জন্য পেশাগত প্রতিষ্ঠান আছে কিন্তু কার্যকর কোনো সংগঠন নেই। এতে সমাজে মানুষ সমাজকর্মীদের মূল্যায়ন করার সুযোগ পাচ্ছে না। সমাজকর্ম পেশার বিকাশে আরেকটি অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হলো এ পেশা সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় নীতিমালার অভাব। প্রশাসনে অব্যবস্থাপনা ও সমাজকর্ম প্রশাসন সম্পর্কে প্রশাসনিক ব্যক্তিদের অস্বচ্ছ ধারণা পেশাদর সমাজকর্মের স্বীকৃতি অর্জনে বিপত্তি সৃষ্টি করছে। সমাজকর্ম সম্পর্কে জনগণ ও সরকারের অজ্ঞতা এবং ভ্রান্ত ধারণা সমাজকর্ম পেশার সুষ্ঠু বিকাশ না হওয়ার আরেকটি কারণ।
সমাজকর্ম শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার ক্ষেত্রে বিরাজমান সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে নানা পরিকল্পনা গৃহীত হলেও সমাজকল্যাণমূলক খাতে বরাদ্দ কম থাকে। এছাড়া সরকারি প্রশাসনের পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও তেমন কোনো উদ্যোগী প্রতিষ্ঠান গড়ে় ওঠেনি। এছাড়া সরকারি প্রশাসনের সাথে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং এগুলোর কর্মসূচির সমন্বয়হীনতাও সমাজকর্ম পেশার বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই বলা যায়, উল্লিখিত কারণগুলোই আব্দুল আলিমের সমাজকর্ম পেশা স্বীকৃতি না পাওয়ার জন্য দায়ী।

ঘ. আব্দুল আলিম সাহেবের সমাজকর্ম পেশার সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে আমি মনে করি।
পেশাদার সমাজকর্মের বিকাশে পেশাগত সংগঠনের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু আমাদের দেশে পেশাদার সমাজকর্মের কোনো কার্যকরী পেশাগত সংগঠন গড়ে ওঠেনি। তাই সমাজকর্ম পেশার বিকাশে পেশাগত সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। সমাজকর্ম পেশার বিকাশে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হলো সমাজকর্মের প্রতি মানুষের সনাতন দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্বাস। মানুষের এই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে হবে। জনগণকে সমাজকর্ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে হবে। বাংলাদেশে পেশাদার সমাজকর্মের বিকাশের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রতিবন্ধকতা হলো সমাজকর্ম শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশীয় উপকরণের অভাব। এ সমস্যা মোকাবিলায় সমাজকর্ম বিষয়ে দেশীয় শিক্ষা উপকরণের ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশে সমাজকর্মের পেশাগত স্বীকৃতি এবং সমাজকর্ম শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হবে। বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে সমাজকর্মের কোনো পেশাগত মানদন্ড ও মূল্যবোধ নেই। এ কারণে পেশাগত সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে সমাজকর্মের মানদন্ড ও মূল্যবোধ নির্ধারণ করতে হবে।
সমাজকর্ম পেশার স্বীকৃতির জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সমাজকল্যাণ খাতে সরকারের বরাদ্দের পরিমাণ বাড়াতে হবে। সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনায় সরকারি প্রশাসনের সাথে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমসমূহে সমন্বয় আনতে হবে। প্রচলিত প্রশাসনিক কাঠামোর জটিলতা এবং নানা আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা আমাদের দেশে সমাজকর্ম পেশার বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এ কারণে সমাজকর্ম পেশার বিকাশের জন্য প্রশাসনিক কাঠামোর জটিলতা ও রাজনৈতিক সমস্যা দূর করতে হবে।
সার্বিক আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, উপরে উল্লিখিত পদক্ষেপসমূহের যথাযথ বাস্তবায়নই সমাজকর্ম পেশার স্বীকৃতি অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

HSC সমাজকর্ম ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৮ pdf download

৭. সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুবর্ণা তার একটি গবেষণা প্রকল্পে সমাজকর্ম সম্পর্কে মানুষের সাধারণ ধারণা সম্পর্কে জরিপ পরিচালনা করছে। জরিপ থেকে সে দেখতে পায়। বেশির ভাগ মানুষ সমাজকর্মকে সরকারি অনুদান, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ত্রাণ বিতরণ করা এবং সাময়িক সেবা হিসেবে মনে করে। এছাড়া সে আরও লক্ষ্য করেছে যে সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডে সরকারের তেমন বরাদ্দ নেই, সমাজকর্মের পেশাগত অনুশীলনও আমাদের দেশে হয় না।
ক. বাংলাদেশে কত সালে পেশাদার সমাজকর্ম শিক্ষার যাত্রা শুরু হয়?
খ. বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার সম্ভাব্য প্রয়োগক্ষেত্রগুলো উল্লেখ কর।
গ. বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার বিকাশে কোন কোন সমস্যাগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। আলোচনা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত সমস্যাগুলো বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার বিকাশে সমস্যা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা প্রদান করে? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

💘 ৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 💘
ক. বাংলাদেশে পেশাদার সমাজকর্ম শিক্ষার যাত্রা শুরু হয় ১৯৫৩ সালে।

খ. বাংলাদেশের মতো সমস্যাগ্রস্ত দেশে সমাজকর্ম পেশার বহুল প্রয়োগক্ষেত্র রয়েছে।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে সমাজকর্মের অনুশীলন অপরিহার্য। এদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আত্ম-কর্মসংস্থান ও ক্ষমতায়ন, অবহেলিত নারীর অধিকার, মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতায়ন, সামাজিক ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবাধিকার নিশ্চিত করা, শিক্ষা, অপরাধ, কিশোর অপরাধ ও মাদকাসক্তের প্রতিকার, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সমাজকর্মের জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োগ করা যায়।

গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার বিকাশে মানুষের ধারণা ও সচেতনতার অভাব, সরকারি বরাদ্দের সীমাবদ্ধতা ও পেশাগত অনুশীলনমূলক সমস্যাগুলোকে দায়ী করা হয়েছে।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের সহায়তায় ষাটের দশকে পেশাদার সমাজকর্মের সূচনা হলেও আজও স্বতন্ত্র পেশার মর্যাদা লাভ করতে পারেনি। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা বিদ্যমান। পেশার মান বজায়ের ক্ষেত্রে এ্যাক্রিডিটেশন ব্যবস্থার হীনতা, পেশাগত সংগঠনের অভাব, মূল্যবোধের স্পষ্ট ধারণার অভাব, মানুষের সচেতনতা ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সমাজকর্ম পেশা বিকাশের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
উদ্দীপকের শিক্ষার্থী সুবর্ণা তার গবেষণায় সম্বাকর্ম সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা সরকারি অনুদান ও বরাদ্দের অভাব, পেশাগত সংগঠনের অভাব লক্ষ করে। বাংলাদেশের অজ্ঞ, নিরক্ষর ও অসচেতন জনগণের পেশাদার সমাজকর্ম সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব রয়েছে। যা সমাজকর্ম যে এক ধরনের মহৎ ও নিয়মিত পেশা ও ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করতে দেয়নি। বাংলাদেশ সরকার সমাজকর্ম পেশা বিকাশের ক্ষেত্রে বড় রকম পরিকল্পনা ও অনুদান এখন পর্যন্ত বরাদ্দ দেয়নি। এ পেশার এখন পর্যন্ত পেশাদার সমাজকর্মীদের কার্যকরি কোনো পেশাগত সংগঠন গড়ে় উঠেনি। তাছাড়া, পেশাদার সমাজকর্ম প্রয়োগ করার মত প্রতিষ্ঠানের সীমাবদ্ধতা বিদ্যমান। বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার বিকাশে উপরের সমস্যাগুলো বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঘ. হ্যাঁ, উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দৃষ্টিভঙ্গিগত সমস্যা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, পেশাগত অনুশীলনের অভাব সমস্যাগুলো সমাধান করলে সমাজকর্ম পেশা অনেকাংশে বিকাশ লাভ করবে।
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। অবকাঠামোগত ও প্রতিষ্ঠানিক উন্নয়ন একযোগে শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় সমাজকর্ম বিষয়ের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের মানুষের অজ্ঞতা, নিরক্ষরতা ও অসচেতনতা শিক্ষার মাধ্যমে দূর করে সমাজকর্ম পেশার প্রতি ইতিবাচক ও বলিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠিত করা প্রয়োজন। এছাড়া পেশাদার সংগঠন সৃষ্টি, প্রতিষ্ঠানের সীমাবদ্ধতা দূরীকরণ, মূল্যবোধ ও মানদন্ড সম্পর্কে শিক্ষা ও জ্ঞান লাভ, সরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধি, শক্তিশালী জার্নাল প্রকাশ প্রভৃতি সমাজকর্ম পেশার বিকাশে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
উদ্দীপকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুবর্ণা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিগত সমস্যা, সরকারি বরাদ্দের অভাব, পেশাগত অনুশীলনের স্বল্পতা সমস্যাগুলোকে সমাজকর্ম পেশা বিকাশের পথে বাধা বলে আবিষ্কার করে। বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার পেশাগত সংগঠন এখন পর্যন্ত গড়ে উঠেনি। এ ধরনের সংগঠন সমাজকর্ম পেশার বিকাশকে বিশেষভাবে ত্বরান্বিত করবে। সরকারি অনুদান, বরাদ্দ তথা যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই ধারণাটি জনকল্যাণে আরও কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা যাবে। যা সমাজকর্মের পেশাকে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করতে পারে। উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, বাংলাদেশে সমাজকল্যাণ পেশার বিকাশে আলোচিত সমস্যাগুলোর যথাযথ সমাধান সমাজকর্ম পেশার বিকাশ ও উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

৮. ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকে 'ক' নামক দেশে অনেক আর্থ-সামাজিক সমস্যার উদ্ভব হয়। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত উত্ত দেশের সরকারের পক্ষে ঐ পরিস্থিতি সামাল দেয়া প্রায় অসম্ভব ছিলো। তাই বাধ্য হয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্য সাহায্যের হাত বাড়ায়। সংস্থাটির আবেদনে সাড়া দিয়ে প্রথমে পরীক্ষামূলক এবং পরবর্তীতে স্থায়ী সমাজসেবা কর্মসূচি চালু করে। একই সাথে সমস্যা সমাধানের জন্য দক্ষ পেশাদার সমাজকর্মীর প্রয়োজন অনুভূত হয়। কেননা শুধুমাত্র দক্ষ ও স্বেচ্ছাসেবী পেশাদার সমাজকর্মীদের থেকে এসব সমস্যার বিজ্ঞানসম্মত ও দীর্ঘমেয়াদী সমাধান আশা করা সম্ভব।
ক. কত সালে ঢাকা প্রজেক্ট শুরু হয়?
খ. সমষ্টি সংগঠন ও উন্নয়ন বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে কোন দেশের কথা বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "উক্ত দেশে পেশাদার সমাজকর্ম শিক্ষার সূচনা হয়" উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

💘 ৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 💘
ক. ১৯৫৫ সালে ঢাকা প্রজেক্ট শুরু হয়।

খ. সমষ্টি সংগঠন হলো সামাজিক উন্নতি ও ভারসাম্য রক্ষার জন্য পরিচালিত জনসমষ্টিকেন্দ্রিক সুশৃঙ্খল সেবাকর্ম প্রক্রিয়া। সমষ্টি সংগঠন পদ্ধতি মূলত উন্নত দেশসমূহে সমষ্টির কল্যাণে প্রয়োগ করা হয়। আর সমাজকর্মের নীতি ও কর্মকৌশল যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সমষ্টি জীবনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে যে পদ্ধতিটি বিশেষভাবে নিয়োজিত তা হলো সমষ্টি উন্নয়ন। উন্নয়নশীল দেশসমূহে এবং উন্নত দেশের অনুন্নত এলাকার উন্নয়নে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।

গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে।
১৯৪৭ সালের দেশভাগের ফলে বাংলাদেশ তৎকালীন পাকিস্তানের অংশ হিসেবে পূর্ব-পাকিস্তান নামে আত্মপ্রকাশ করে। দেশ বিভাগের ফলে স্থানান্তরজনিত কারণে অনেক শরণার্থী এদেশে প্রবেশ করে। এজন্য সদ্য স্বাধীন দেশের শহর এলাকায় এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসন করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাছাড়া পুরোনো সমস্যার সাথে আরও নতুন নতুন সামাজিক সমস্যা যুক্ত হতে থাকে এবং সমাজে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ফলশ্রুতিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। ১৯৫১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার এ সংকটজনিত অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের কার্যকরীসাহায্য কর্মসূচির আওতায় ড. জেমস ডাম্পসন এর নেতৃত্বে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি সমাজকর্ম বিশেষজ্ঞ দল এদেশে আসেন। তারা তৎকালীন বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও সমস্যা সম্পর্কে জরিপ ও পর্যালোচনার পর এদেশে পেশাদার সমাজকর্ম এবং এ সংক্রান্ত শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রবর্তনের সুপারিশ করেন। জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশ ও সহায়তায় ১৯৫৩ সালে ঢাকায় সর্বপ্রথম তিন মাসের একটি স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা হয়। এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মধ্যদিয়েই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সমাজকর্ম শিক্ষা বিকাশ লাভ করে। প্রশিক্ষণ শিক্ষার পাশাপাশি ধীরে ধীরে সমাজকর্ম। বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার প্রবর্তন করা হয়।
উদ্দীপকের 'ক' দেশের সমাজকর্ম শিক্ষার বিকাশের সাথে বাংলাদেশের সমাজকর্ম শিক্ষার বিকাশ সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে বাংলাদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার উদ্ভবের কথা বলা হয়েছে। যা পরবর্তীতে পেশাদার সমাজকর্ম শিক্ষার বিকাশ ঘটায়।
শিল্পবিপ্লব পরবর্তী সমাজের জটিল ও বহুমুখী সমস্যা মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলো সমাজকর্ম অনুশীলনের সূত্রপাত ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশেও পশাদার সমাজকর্ম শিক্ষার সূচনা হয়।
বাংলাদেশে সমাজকর্মের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ ড. জে মুর-এর ওপর ন্যস্ত হয়। তার রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ১৯৫৮-৫৯ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সমাজকল্যাণ কলেজ ও গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথম দু'বছর মেয়াদে স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম চালু করা হয়। ১৯৬৬-৬৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে সমাজকল্যাণ কোর্স সংযোজনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমের প্রসার ঘটে। ১৯৭৩ সালে পৃথক ইনস্টিটিউট হিসেবে এ সমাজকল্যাণ কলেজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আত্মীকরণ করা হয়। তখন এর নাম 'সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট' রাখা হয়। ১৯৬৪-৬৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সমাজকর্ম কলেজ প্রতিষ্ঠা এবং সমাজকর্মে স্নাতক (সম্মান) ও মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের একটি বিভাগ হিসেবে ১৯৭২ সালে এ কলেজটি সমাজকর্ম বিভাগ নামে আত্মপ্রকাশ করে।
১৯৬৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও বিএ (পাস কোর্স) এ ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে সমাজকল্যাণ বিষয় অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে এদেশের সমাজকর্ম শিক্ষা আরও সম্প্রসারিত হয়। ১৯৯২-৯৩ শিক্ষাবর্ষে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকর্ম বিভাগ চালু করে। এবং স্নাতক (সম্মান) ও মাস্টার্স কোর্স প্রবর্তন করে। ১৯৯৩ সালে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এর অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজে স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি বিষয় হিসেবে এটি চালু করা হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের একটি পছন্দনীয় বিষয় হিসেবে সমাজকর্ম তার শিক্ষা ও জ্ঞানের বিস্তৃতি ঘটিয়ে চলছে। এছাড়া উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্মে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে।
পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার বিকাশ পেশাদার সমাজকর্ম অনুশীলনের ক্ষেত্রকে বিকশিত করছে।

৯. ইংল্যান্ডকে সমাজকর্মের সূতিকাগার বলা হয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে ইংল্যান্ড-এ ৪৩তম এলিজাবেথীয় দরিদ্র আইন ১৬০১ প্রণীত হয়। এছাড়াও ইংল্যান্ডের সার্বিক সমাজকল্যাণ কার্যক্রমের উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিভারিজ রিপোর্ট প্রণয়ন করা হয়। এভাবে ক্রমান্বয়ে ইংল্যান্ডে সমাজকর্ম পেশার বিকাশ সাধিত হয়।
ক. ঢাকা প্রজেক্ট কত সালে চালু হয়?
খ. গ্রামীণ সমাজসেবা বলতে কী বুঝ?
গ. উদ্দীপকের সমাজকর্ম পেশার বিকাশের সাথে ভারতে সমাজকর্ম পেশার বিকাশের প্রক্রিয়ার বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দেশটি দরিদ্র সম্প্রদায়ের জন্য আইন প্রণয়ন করলেও ভারতে তাদের সমগোত্রীয়দের উদ্দেশ্যে নানামুখী সেবা কর্মসূচি বিদ্যমান বিশ্লেষণ কর।

💘 ৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 💘
ক. ঢাকা প্রজেক্ট চালু হয় ১৯৫৫ সালে।

খ. গ্রামীণ সমাজসেবা হচ্ছে সমষ্টি-উন্নয়ন পদ্ধতির ওপর ভিত্তিশীল একটি গ্রাম উন্নয়নমূলক কর্মসূচি।
গ্রামীণ সমাজসেবা একটি বহুমুখী উন্নয়ন প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণের নিজস্ব সম্পদ ও সামর্থ্যের সদ্ব্যবহার করে তাদের চাহিদা পূরণ, সমস্যা সমাধান এবং সার্বিক কল্যাণ সাধনের প্রচেষ্টা চালানো হয়।

গ. উদ্দীপকের দেশ অর্থাৎ ইংল্যান্ডে সমাজকর্ম পেশার বিকাশের সাথে ভারতের সমাজকর্ম পেশার বিকাশের ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
ইংল্যান্ডকে সমাজকর্মের সূতিকাগার বলা হয়। কেননা আধুনিক সমাজকর্মের বীজ রোপিত হয় ইংল্যান্ডে। বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে যেমন বিভিন্ন সময়ে প্রণীত দরিদ্র আইন, বিভারিজ রিপোর্ট প্রভৃতির মাধ্যমে ইংল্যান্ডে সমাজকর্মমূলক ব্যবস্থা সুদৃঢ় হয়। উদ্দীপকেও এদেশের সমাজকর্ম বিকাশের কথা বলা হয়েছে।
উদ্দীপকে সমাজকর্মের সূতিকাগার হিসেবে ইংল্যান্ডকে উল্লেখ করা হয়েছে। ইংল্যান্ডে মূলত প্রাচীনকাল থেকে খ্রিস্টধর্মের প্রভাবে সমাজসেবামূলক কার্যক্রম শুরু হয়। ইংল্যান্ড সরকার গরিবদের সাহায্য সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করে। যেমন Statue of Labourers Act-1349, ১৫৩১ সালের দরিদ্র আইন, ১৬০১ সালের দরিদ্র আইন, ১৬৬২ সালের বসতি আইন, ১৮৩৪ সালের দরিদ্র আইন, ১৮৬৩ সালের দানশীল বোর্ড, ১৯০৫ সালের দরিদ্র আইন, ১৯৪২ সালের বিভারিজ রিপোর্ট প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ইংল্যান্ডে সমাজকর্ম পেশার বিকাশে এ আইনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ১৮৬৯ সালের Charity Organization Society এবং পরবর্তীকালে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান ইংল্যান্ডে সমাজকর্ম পেশার বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। অন্যদিকে ধর্মীয় অনুপ্রেরণা মানবতাবোধ ও সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে ভারতে সমাজকর্ম কার্যক্রম শুরু হয়। ব্রিটিশ ভারতে বেসরকারি সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে খ্রিস্টান মিশনারির অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ভারতে হিন্দু, মুসলমান ও শিখ ধর্মের লোকদের বসবাস ছিল বেশি। এসব ধর্ম থেকে খ্রিস্টধর্মে আকৃষ্ট করতে খ্রিষ্টান মিশনারি বিভিন্ন কল্যাণমূলক কার্যক্রম গ্রহণ যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গির্জা, চিকিৎসালয় প্রভৃতি স্থাপন করে। আর এসব প্রতিষ্ঠান ভারতে সমাজকর্ম পেশার বিকাশে সহায়তা করে। ১৯৩৬ সালে ক্লিফোর্ডের সহায়তায় ভারতে আধুনিক সমাজকর্মের সূচনা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন- Tata School of Social Work, Tata School of Social Science, YWCA, Social Work Institute সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভারতে সমাজকর্ম পেশার বিকাশে ভূমিকা রাখে। সুতরাং বলা যায়, ইংল্যান্ড ও ভারতে সমাজকর্ম পেশার বিকাশের প্রক্রিয়া ছিল ভিন্ন।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দেশটি অর্থাৎ ইংল্যান্ড দরিদ্র সম্প্রদায়ের জন্য বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করে। কিন্তু ভারতে তাদের সমগোত্রীয়দের উদ্দেশ্যে নানামুখী সেবা কর্মসূচি বিদ্যমান রয়েছে-এ ধারণার সাথে আমি একমত।
ভারতে সমষ্টি উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের অধীনে নারী-পুরুষ ও শিশুদের জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের সুষ্ঠু বিকাশে সহায়তা করা হয়। শিশুদের শিক্ষার জন্য পরিচালিত হচ্ছে নার্সারি ক্লাস। দর্জি, কাটিং এবং বয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে নারী ও পুরুষদেরকে আত্মকর্মে নিয়োজিত হতে সাহায্য করা হয়। নামমাত্র মূল্যে শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য প্রস্তুতকরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। আইনগত সহায়তা কেন্দ্রের সহযোগিতায় দরিদ্র ও অসহায় জনগোষ্ঠীকে আইনি পরামর্শ, আর্থিক সাহায্য সংস্থার পক্ষ থেকে আইনজীবী নিয়োগ প্রভৃতি সহায়তা প্রদান করা হয়। জনগণকে তাদের দুর্দশা লাঘবে সহায়তা করার জন্য Assistant Public Relations Officer Cell কাজ করছে। দরিদ্র, শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী এবং বিধবা বয়স্কদের প্রতি মাসে নির্দিষ্ট হারে ভাতা প্রদান করা হয়। ভারত সরকার বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে আর্থিক অনুদান প্রদান করে। তাছাড়া বস্তিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন স্টীম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ভারত সরকার নাগরিকদের আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, শিক্ষিত হওয়া, সুখী ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনে নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধীকরণ আইন অনুসারে প্রত্যেকটি জন্ম, মৃত্যু নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
উদ্দীপকে বর্ণিত ইংল্যান্ডে দরিদ্র্য দূরীকরণে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করে। এক্ষেত্রে ইংল্যান্ডে পরিদ্রদের জন্য প্রণীত আইনগুলোর মধ্যে Statue of Labourers Act- 1349, ১৫৩১ সালের দরিদ্র আইন, ১৫৬২ সালের আর্টিফিসারস আইন, ১৬০১ সালের দরিদ্র আইন, ১৬৬২ সালের বসতি আইন, ১৮৩৪ সালের দরিদ্র আইন, ১৯০৫ সালের দরিদ্র আইন কমিশন ও ১৯৪২ সালের বিভারিজ রিপোর্ট উল্লেখযোগ্য। এসকল আইনের আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ভারত আইন প্রণয়ন না করেই বিভিন্ন সেবা কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে কাজ করছে। তাই বলা যায়, প্রশ্নোত্ত বক্তব্যটি যথার্থ।

১০. ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে উদ্বাস্তু সমস্যা মোকাবিলায় তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে একটি বিশেষ পেশার অনুশীলন শুরু করে। ১৯৫৩ সালে সর্বপ্রথম তিনমাস মেয়াদি কোর্সরে মাধ্যমে এর যাত্রা শুরু। বর্তমানে দেশের অনেকগুলো পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ের উপর এইচ.এস.সি স্নাতক (পাস ও সম্মান) এবং মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠদান দেয়া হয়।
ক. Rapport অর্থ?
খ. সামাজিক নিরাপত্তা বলতে কী বুঝ?
গ. উদ্দীপকে কোন পেশার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশে উত্ত পেশা অনুশীলনের ইতিহাস বর্ণনা কর।
ঘ. বাংলাদেশের বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে উদ্দীপকে উল্লেখিত পেশার সম্ভাবনাসমূহ আলোচনা কর।

💘 ১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 💘
ক. Rapport অর্থ পেশাগত সম্পর্ক।

খ. সামাজিক নিরাপত্তা বলতে সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির আর্থিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে রাষ্ট্র প্রদত্ত আয়ের ব্যবস্থাকে বোঝায়।
মূলত দ্রুত পরিবর্তনশীল ও শিল্পায়িত সমাজব্যবস্থায় অসুস্থতা, বেকারত্ব, দরিদ্রতা, উপার্জন অক্ষমতা, পেশাগত দুর্ঘটনা, মানসিক প্রতিবন্ধিতা ও অন্যান্য কারণে অসুবিধাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে গৃহীত আর্থিক বা অন্যভাবে সহায়তাভিত্তিক কার্যক্রমই হলো সামাজিক নিরাপত্তা। বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রভৃতি সামাজিক নিরাপত্তার উদাহরণ।

গ. উদ্দীপকে সমাজকর্ম পেশার কথা বলা হয়েছে।
শিল্প বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট জটিল ও বহুমুখী সমস্যার প্রভাব থেকে বাংলাদেশও রক্ষা পায়নি। আর এসব সমস্যার কার্যকর সমাধানে উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও সমাজকর্মের অনুশীলন শুরু কর। জাতিসংঘের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ১৯৫৩ সালে সমাজকর্মের উপর স্বল্পকালীন প্রশিক্ষণ কোর্স প্রবর্তন ও তার বাস্তব প্রয়োগের জন্য ঢাকার গোপীবাগ ও মোহাম্মদপুরে দুটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ১৯৫৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে 'ঢাকা প্রজেক্ট' নামে শহর সমাজ উন্নয়নমূলক এক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এ প্রজেক্টের সাফল্যের ভিত্তিতে ১৯৫৫-৫৬ অর্থবছরে ঢাকার কায়েতটুলিতে শহর সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প চালু করা হয়।
১৯৫৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সমাজকর্ম চালু করা হয়। ১৯৬২ সালে সংশোধনমূলক কার্যক্রম ও প্রতিবন্ধী কল্যাণ কর্মসূচি প্রবর্তন করা হয়। পল্লি এলাকার উনণয়নের লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচি চালু করা হয়। বর্তমানে এই কর্মসূচি উপজেলা সমাজসেবা নামে পরিচিত। ১৯৬১ সালে এদেশে সমাজকল্যাণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সমাজকল্যাণ পরিদপ্তর গঠন করা হয়। ১৯৭৪ সালে এটি সমাজকল্যাণ দপ্তর এ উন্নীত হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৪ সালে এর নামকরণ হয় সমাজসেবা অধিদপ্তর।

ঘ. বাংলাদেশের বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে সমাজকর্ম পেশা অনুশীলনের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশে বিভিন্ন সমস্যা বিদ্যমান। এ সমস্যাগুলো জটিল ও বহুমাত্রিক। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সমাজকর্ম শিক্ষার প্রয়োগ আবশ্যক। এ দেশের উন্নয়নে সরকার সমাজসেবা অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। এ সকল অধিদপ্তর ও প্রতিষ্ঠাসমূহে সমাজকর্ম অনুশীলনের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। সমাজকর্মের ডিগ্রিধারীগণ শিক্ষা, প্রশাসন ও সমাজসেবাসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে নিয়োগ লাভ করছে।
বাংলাদেশে সমাজকর্ম স্বতন্ত্র পেশা হিসেবে স্বীকৃত নয়। তারপরও এ বিষয়ের ডিগ্রিধারীগণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। সমাজকর্মের শিক্ষার্থীরা কর্মে দক্ষতার পরিচয় দিতে পারার কারণ হলো এ বিষয়ে তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি মাঠকর্ম অনুশীলন করতে হয়। বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় শিল্প হচ্ছে লোকশিল্প। 
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post