HSC পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৪ pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Civics and Good Governance 1st Paper Srijonshil Question Answer pdf download

পৌরনীতি ও সুশাসন
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৪

HSC Civics and Good Governance 1st Paper pdf download
Srijonshil
Question and Answer

১. গ্রামের বাজারে সিয়ামের একটি ঔষধের দোকান আছে। সিয়াম তার ঔষধ ব্যবসার লাইসেন্স নবায়নের জন্য ঔষধ প্রশাসনের কার্যালয়ে গেলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করেন। আবেদন জমা দেওয়ার কিছুদিন পর সিয়ামের মুঠোফোনে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। তাতে বলা হয়, তার লাইসেন্স নবায়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়া লাইসেন্স নবায়ন হয়ে যাওয়ায় সিয়াম খুব খুশি।
ক. ই-গভর্নেন্স কী?
খ. গণভোট বলতে কী বোঝায়?
গ. সিয়ামের লাইসেন্স দ্রুত নবায়নের ক্ষেত্রে কোন প্রক্রিয়াটি কাজ করেছে? ব্যাখ্যা কর। 
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের প্রতিবন্ধকতা আলোচনা কর।

◈ ১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ◈
ক. সরকারি তথ্য ও সেবা ইন্টারনেট এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের (www) মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌছানোর ব্যবস্থাই হলো ই গভর্নেন্স।

খ. রাষ্ট্রীয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতানৈক্যের সৃষ্টি হলে বা জনগণের মতামত যাচাইয়ের জন্য যে ভোট গ্রহণ করা হয় তাকে গণভোট (Referendum) বলা হয়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনমত যাচাইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো গণভোট। সর্বসাধারণের অংশগ্রহণে গণভোটের মাধ্যমে সাধারণত প্রকৃত জনমত প্রতিফলিত হয়। যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের বিষয়ে ব্রিটেনে দ্বিধাবিভক্তি সৃষ্টি হলে ২০১৬ সালের ২৩ জুন গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশে শাসকদের প্রতি জনসমর্থন যাচাই ও সরকার পদ্ধতি পরিবর্তন নিয়ে এ পর্যন্ত তিনটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গ. উদ্দীপকের ঔষধ ব্যবসায়ী সিয়ামের লাইসেন্স দ্রুত ই-গভর্নেন্স প্রক্রিয়াটি কাজ করেছে। নবায়নের ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক গভর্নেন্সকে সংক্ষেপে ই-গভর্নেন্স (E-governance) বলা হয়। সরকারি তথ্য ও সেবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌছানোর ব্যবস্থাই হলো ই-গভর্নেন্জ। ই-গভর্নেন্স সরকারি তথ্যভা-ার ও কার্যক্রমের সাথে জনগণকে সংযুক্ত করে। এছাড়া এ প্রক্রিয়ায় সরকারের সাথে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য দেশের সরকারের তথ্য ও সেবা আদান-প্রদানের ব্যবস্থাও থাকে। ই গভর্নেন্সের মাধ্যমে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অনেকাংশে নিশ্চিত হয় এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, সিয়াম তার ঔষধ ব্যবসায়ের লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য ঔষধ প্রশাসনের কার্যালয়ে গেলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করেন। সিয়াম লাইসেন্স নবায়নের আবেদন জমা দেওয়ার কিছুদিন পর তার মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে জানানো হয়, লাইসেন্স নবায়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থার ফলে এ কাজটি সহজে সমাধান করা সম্ভব হয়েছে। ই গভর্নেন্সে সময় বাঁচে এবং কাজের খরচও কমে। ই-গভর্নেন্সের সুবাদেই জনগণ অনলাইনে খুব সহজে সরকারের কাছে বিভিন্ন আবেদন জমা দিতে পারে। ব্যবসায়ীরাও ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে টেন্ডারে অংশ নেওয়াসহ বিভিন্নভাবে উপকৃত হতে পারে। উদ্দীপকের সিয়াম এ ধরনের শাসনব্যবস্থারই সুফল ভোগ করছেন।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি অর্থাৎ ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠা করা একটি ব্যয়বহুল ও প্রযুক্তিগতভাবে কিছুটা জটিল প্রক্রিয়া। সরকারের প্রতিটি দপ্তরের ওয়েবসাইট যথাযথভাবে চালু রাখা ব্যয় ও শ্রমবহুল কাজ। ই-গভর্নেন্সবান্ধব অবকাঠামো ও প্রযুক্তিপণ্য এখনো বেশ ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ, যা বাংলাদেশের মতো অর্থনৈতিক অবস্থার দেশগুলোর জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। উন্নয়নশীল দেশে ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নের অন্তরায়গুলোর মধ্যে আরও রয়েছে ইন্টারনেট সেবার সীমিত পরিসর, ধীরগড়ি ও অধিক মূল্য। এ সব সমস্যার কারণে সবার জন্য ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য করা এখনো কঠিন। দক্ষ জনবল সংকটের কারণেও অনেক ক্ষেত্রে ই-গভর্নেন্স চালু বা সেবা বজায় রাখা সম্ভব হয় না। এ দেশে বিদ্যুতের তুলনামূলকভাবে চড়া মূল্য এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকা তথ্যপ্রযুক্তি ও ই গভর্নেন্সের প্রসারের পথে অন্যতম বাধা। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজেদের মধ্যে এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আলস্নযোগাযোগ ও সমন্বয়ের অভাব ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠাকে ব্যাহত করে। দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ই-গভর্নেন্সের সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বাধা। শিক্ষা ও প্রচারণার অভাবে জনগণের একটা বিশাল অংশ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স বিষয়ে অজ্ঞ পরিশেষে বলা যায়, ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে সরকার ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় হয় ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার কাজ সহজ হয়। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে উন্নয়নশীল দেশসমূহ ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠায় পিছিয়ে আছে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য সরকারের সদিচ্ছা ছাড়াও জনগণের আগ্রহ ও উদ্যোগ থাকা আবশ্যক।

২. 'ক' একটি উন্নয়নশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রে বহুবিধ সমস্যা থাকা সত্ত্বেও 'ক' রাষ্ট্রের সরকার জনকল্যাণ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছে। সরকারি ও বেসরকারি সব স্তরে তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার ও প্রয়োগের ওপর জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সরকার তথ্যপ্রযুক্তি প্রসারের লক্ষ্যে স্কুল-কলেজে কম্পিউটার, ল্যাপটপ বিতরণ করছে।
ক. ICT-এর পূর্ণরূপ কী?
খ. ই-গভর্নেন্স বলতে কী বোঝায়?
গ. 'ক' রাষ্ট্রের সরকার কী প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. 'ক' রাষ্ট্রে সরকারের গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়নে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে তুমি মনে কর? পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

◈ ২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ◈
ক. ICT-এর পূর্ণরূপ হলো Information and Communication Technology.

খ. সরকারি তথ্য ও সেবা ইন্টারনেট এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের (www) মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌছানোর ব্যবস্থাই হলো ই-গভর্নেন্স। ই-গভর্নেন্স সরকারি তথ্যভা-ারের সাথে জনগণকে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করে। তবে এ ব্যবস্থায় তথ্য আদান-প্রদান কেবল সরকার ও নাগরিকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং সরকারের সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের সাথে অন্য সরকারের তথ্য ও সেবা আদান প্রদানের ব্যবস্থাও থাকে। এর ফলে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয় এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ ত্বরান্বিত হয়।

গ. উদ্দীপকের 'ক' রাষ্ট্রের সরকার ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। ই-গভর্নেন্স বলতে এমন একটি শাসন প্রক্রিয়াকে বোঝায় যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন সেবা ও তথ্য জনগণ তাৎক্ষণিকভাবে পেতে পারে। এ ধরনের শাসন প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হলো তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে কার্যকর সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। ই-গভর্নেন্স সরকারের স্বচ্ছতা বাড়ানোর মাধ্যমে সরকার ও জনগণের সম্পর্ককে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করায় এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে। বর্তমান যুগে জনগণ সহজে ও দ্রুত সরকারি সেবা পেতে চায়। সরকারও চায় অল্প সময়ে অধিক সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে। তাই বর্তমান বিশ্বের সরকারগুলো সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নের ওপর জোর দিচ্ছে। কেননা এখনকার যুগে ই-গভর্নেন্স ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। উদ্দীপকের উন্নয়নশীল রাষ্ট্র 'ক' এর সরকারও ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। উদ্দীপকে দেখা যায়, 'ক' রাষ্ট্রে বহুবিধ সমস্যা থাকা সত্ত্বেও এর সরকার তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের প্রসার ঘটাতে স্কুল-কলেজে কম্পিউটার ও ল্যাপটপ বিতরণ করছে। দেশটির সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য হলো দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। আর এটা করার একটি কার্যকর উপায় হলো ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়ন করা। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সরকার ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। 

ঘ. ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নের জন্য 'ক' রাষ্ট্রের সরকারের বহুবিধ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নে 'ক' রাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত ই-গভর্নেন্স সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তথ্যসেবা কেন্দ্রগুলো উন্নত করতে হবে। প্রয়োজন হবে যথেষ্ট প্রযুক্তি ও কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ। ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ সব জায়গায় সহজলভ্য করতে হবে। সারা দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনগণকে ই-গভর্নেন্সের সেবা গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। ই-গভর্নেন্স চালুই শেষ কথা নয়, এর সফল বাস্তবায়নের দিকে যত্নবান হতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যেমন এসডিজি. উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ই-গভর্নেন্স এখন সময়ের দাবি। কোনো দেশের সরকারি কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে ই-গভর্নেন্সের কোনো বিকল্প নেই। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে উদ্দীপকের ‘ক’ রাষ্ট্রের সরকারের উচিত হবে ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নের পথ থেকে প্রতিবন্ধকগুলো দূর করা। ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থাকে সফল করতে হলে ব্যাপক জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। নিজ দেশের ভাষায় প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ ও সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে যথাযথ আইন ও তার প্রয়োগ নিশ্চিত করাও প্রয়োজন। পরিশেষে বলা যায়, ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য 'ক' রাষ্ট্রের সরকারকে জনগণের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান ও শিক্ষার প্রসার ঘটানোর পাশাপাশি উল্লিখিত সহায়ক পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে

৩. তথ্য প্রযুক্তির কারণে 'ক' রাষ্ট্রে সরকারি সেবাসমূহ জনগণের কাছে দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছে। তথ্য সংগ্রহের জন্য জনগণকে আর কোথাও ছুটে যেতে হয় না। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে।
ক. জনসেবা কী?
খ. ইন্টারনেট বলতে কী বোঝায়?
গ. 'ক' রাষ্ট্রের জনগণ কী ধরনের ব্যবস্থার সুফল ভোগ করছে? ব্যাখ্যা কর। 
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ব্যবস্থা দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়কু তুমি কি একমত?

◈ ৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ◈
ক. অন্যের কল্যাণে আত্মনিবেদনের মহান ব্রতই জনসেবা।

খ. ইন্টারনেট হলো বিশ্বজুড়ে বিসত্মৃত অসংখ্য কম্পিউটারের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশাল নেটওয়ার্ক। এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ তথ্য ও যোগাযোগের অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।
১৯৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস এর UCLA University of California, Los Angeles ল্যাবরেটরিতে ইন্টারনেটের যাত্রা শুরু হয়। ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, নোটবুক, ট্যাব, স্মার্টফোন ইত্যাদির মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মানুষ দ্রুত, অপেক্ষাকৃত কম খরচে এবং সহজে একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করতে পারছে। তথ্যের প্রাপ্তি ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশ্বে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেছে ইন্টারনেট।

গ. 'ক' রাষ্ট্রের জনগণ ই-গভর্নেন্সের সুফল ভোগ করছে। 
ই-গভর্নেন্স হলো (Electronic Governance) প্রযুক্তিনির্ভর প্রশাসন। সংক্ষেপে বললে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (ICT) সাহায্যে সরকারি সেবাদান কার্যক্রমকে ই-গভর্নেন্স বলা যায়। ব্যাপক অর্থে ই-গভর্নেন্স হলো শাসনকার্যে স্বচ্ছতা ও দ্রুতগতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কার্যক্রমে ডিজিটাল যন্ত্র-সরঞ্জাম তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটানো। এর আওতায় সরকারের সাথে নাগরিকদের যোগাযোগ ও তথ্যের আদান-প্রদান, সহজে ও দ্রুত নাগরিকদের সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়া এবং সরকারের সাথে অন্য রাষ্ট্রের যোগাযোগ ইত্যাদি কাজ চালানো হয়। এখন আর যে কোনো সাধারণ তথ্য বা সেবা পেতে সশরীরে সরকারি প্রতিষ্ঠানে হাজির হতে হয় না। ফলে নাগরিকদের অর্থ ও সময় দুটোরই সাশ্রয় হচ্ছে। ই-গভর্নেন্স তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রশাসনিক কর্মকান্ডর গতি বাড়িয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি খাতে সরকার যে সেবা দিচ্ছে তা জনগণের কাছে পৌঁছানো সহজতর হচ্ছে। বর্তমানে পরীক্ষার ফল জানা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ভর্তির ফরম পূরণ করা, ট্রেনের টিকিট কাটা, পাসপোর্টের আবেদন জমা দেওয়া, সরকারি চাকরির আবেদন করা, কর ও পরিসেবার বিল দেওয়া, টেন্ডার জমা দেওয়া এসব কাজ মানুষ সহজেই অনলাইনে করতে পারছে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, 'ক' রাষ্ট্রের সরকারি সেবাসমূহ জনগণের কাছে দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছে। তথ্য সংগ্রহের জন্য জনগণকে আর কোথাও ছুটে যেতে হয় না। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। তাই বলা যায়, ক' রাষ্ট্রের জনগণ ই-গভর্নেন্স এর সুফল ভোগ করছে।

ঘ. হ্যাঁ, উদ্দীপকে বর্ণিত ব্যবস্থা অর্থাৎ ই-গভর্নেন্স দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক কথাটির সাথে আমি একমত। 
সরকারি কার্যক্রমের তথ্য ও বিভিন্ন সেবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থাই হলো ই-গভর্নেন্স। দুর্নীতি সুশাসনের পথে বড় বাধা। নীতি ও আইনবিরুদ্ধ আচরণই হলো দুর্নীতি। ই-গভর্নেন্সে দুর্নীতির সুযোগ অনেক কমে যায়।
ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থায় সরকারের শাসন সংক্রান্ত প্রায় সব বিষয় কিছু স্পর্শকাতর বিষয় ছাড়া. জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকে। ফলে রাষ্ট্রের কোথায় কী হচ্ছে, সরকার কী করছে সে সম্পর্কে জনগণ সহজেই একটা ধারণা পায়। এ কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন খুব কম বিষয়ই জনগণের কাছ থেকে গোপন করতে পারেন। এজন্য ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থা চালু থাকলে সাধারণত সরকার যা খুশি তাই করতে পারে না। এর ফলে প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায় এবং আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতা দূর হয়। এ কারণে অনিয়ম-দুর্নীতির পথ সংকীর্ণ হয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়। ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে প্রশাসনের কাজের ওপর সহজেই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যায়। ফলে স্বচ্ছ, উন্মুক্ত প্রশাসনে আমলাদের পক্ষে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য দুর্নীতির পথে যাওয়া দুঃসাধ্য হয়। উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, দুর্নীতি নির্মূল করতে ই-গভর্নেন্সের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই বলা যায়, ই-গভর্নেন্স দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক।

৪. 'ক' ইউনিয়নে ই-তথ্য সেবা কেন্দ্র চালু আছে। উক্ত কেন্দ্রে ইউনিয়নবাসী সব ধরনের তথ্য ও ইন্টারনেট সেবা পেয়ে থাকে। এখান থেকে বিদেশে যাবার জন্য নিবন্ধন করা হয়। ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে সব ধরনের প্রকল্প বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সুবিধাভোগীর নাম দেওয়া আছে। মানুষ ওয়েবসাইটে তাদের মতামত তুলে ধরতে পারে।
ক. অধিকারের সংজ্ঞা দাও।
খ. পরিবার কীভাবে জনমত গঠন করে?
গ. উদ্দীপকের 'ক' ইউনিয়নের কার্যক্রম তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন বিষয়টি নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা করো। 
ঘ. তথ্য সেবা কেন্দ্রটি ইউনিয়নে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কতটুকু ভূমিকা রাখছে বলে তুমি মনে করো? মতামত দাও।

◈ ৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ◈
ক. অধিকার হচ্ছে নাগরিক জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত ও সংরক্ষিত সুযোগ-সুবিধা।

খ. পরিবারের সদস্যদের মধ্যকার সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে। পরিবার জনমত গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহন। পরিবারে পিতামাতা ও অন্য বয়োজ্যেষ্ঠদের মতামত ও চিন্তাভাবনা শিশু-কিশোরদের মনকে প্রভাবিত করে। পরিবারের সদস্যরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দেশ ও বিদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে। শিশুরা সাধারণত পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের রাজনৈতিক আদর্শ ও আনুগত্যকে অনুসরণ করে। ঘরোয়া আলোচনা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের রাজনৈতিক মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে। এ বিষয়টি রাজনৈতিক মতামত গঠনের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে এভাবে পরিবার জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে।

গ. উদ্দীপকের 'ক' ইউনিয়নের কার্যক্রম আমার পাঠ্যবইয়ের ই-গভর্নেন্সকে নির্দেশ করে। 
ই-গভর্নেস হলো (Electronic Governance) প্রযুক্তিনির্ভর প্রশাসন। সংক্ষেপে বললে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (ICT) সাহায্যে সরকারি সেবাদান কার্যক্রমকে ই-গভর্নেন্স বলা যায়। এর আওতায় সরকারের সাথে নাগরিকদের যোগাযোগ ও তথ্যের আদান-প্রদান, সহজে ও দ্রুত নাগরিকদের সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়া এবং সরকারের সাথে অন্য রাষ্ট্রের যোগাযোগ চালানো হয়। এক কথায়, ইন্টারনেট তথা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সেবা কার্যক্রম উন্নয়নের পদ্ধতিই হলো ই-গভর্নেন্স।
উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে, 'ক' ইউনিয়নে ই-তথ্য সেবা কেন্দ্রে তথ্য ও ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হচ্ছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে এলাকাবাসী বিদেশে যাওয়ার নিবন্ধন ফরম পূরণ করতে পারছে। ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে সব ধরনের সরকারি প্রকল্প বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ও সরকারি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের নামের তালিকা থাকে। এ ওয়েবসাইটে ইউনিয়নবাসী তাদের মতামত তুলে ধরতেও পারছে। ফলে তারা দ্রুত সরকারি সেবা পাচ্ছে। এ সবই ই-গভর্নেন্সের ফলে সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ঘরে বসে পরীক্ষার ফল জানা, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ভর্তির ফরম পূরণ করা, ট্রেনের টিকিট কাটা, পাসপোর্টের আবেদন জমা দেওয়া, চাকরির আবেদন করা, কর দেওয়া, টেন্ডার জমা দেওয়া এসব কাজ মানুষ সহজে করতে পারছে। 'ক' ইউনিয়নের কার্যক্রমেও ই-গভর্নেন্সের বেশ কিছু সুবিধার চিত্র ফুটে উঠেছে। সুতরাং বলা যায়, 'ক' ইউনিয়নের কার্যক্রমে ই-গভর্নেন্সেরই প্রতিফলন ঘটেছে।

ঘ. তথ্য সেবা কেন্দ্রটি ইউনিয়নে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখছে বলে আমি মনে করি।
সুশাসন হচ্ছে স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং কল্যাণধর্মী শাসনব্যবস্থা। আর এ যুগে ব্যবস্থাটি বাস্তবায়নের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ই-গভর্নেন্স। আইনের শাসন, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিকা নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান অধিকার, জনগণের মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি ও সুরক্ষা, স্বাধীন বিচার বিভাগ, দক্ষ প্রশাসনব্যবস্থা, জনগণের অংশগ্রহণ, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, জবাবদিহিতা প্রভৃতির সমন্বয়ে সুশাসন গড়ে ওঠে। অন্যদিকে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকারি সেবাকে দ্রুত ও কার্যকর পন্থায় নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার একটি প্রক্রিয়া হলো ই গভর্নেন্স। এ পদ্ধতিতে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে যেমন দ্রুত জনকল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়, তেমনি স্বচ্ছতার বিষয়টিও স্পষ্ট থাকে। উদ্দীপকের তথ্য সেবা কেন্দ্রটি এর বাস্তব প্রমাণ।
উদ্দীপকে বর্ণিত তথ্যসেবা কেন্দ্রটি ইন্টারনেট তথা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নাগরিক সেবা জনগণের কাছাকাছি পৌঁছে দিচ্ছে। এতে জনকল্যাণের পাশাপাশি সেবার মান এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে। এভাবে সেবাকার্যক্রম পরিচালনা করলে ইউনিয়নে অবশ্যই সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। কারণ সুশাসন নাগরিক কল্যাণকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়। আর ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে নাগরিক কল্যাণ সাধিত হয়। প্রশাসনের প্রতিটি পর্যায়ে ই-গভর্নেন্স চালু করা সম্ভব হলে দুর্নীতি হ্রাস পারে, কাজকর্মে গতিশীলতা বাড়বে, দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে এবং অর্থের সাশ্রয় হবে। আর এগুলো সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথকে সুগম করবে। পরিশেষে বলা যায়, 'ক' ইউনিয়নের তথ্য সেবা কেন্দ্রটি সচল থেকে সেবার মান ধরে রাখলে ঐ ইউনিয়নে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে।

৫. জনাব মারুফ কয়েকদিন আগে একটি রাষ্ট্রে ভ্রমন করেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, ঐ রাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় ও সেবা কার্যক্রমে অনলাইনের কোন ব্যবহার নেই। প্রশাসনের কর্মকর্তারা অদক্ষ ও দুর্নীতিপরায়ণ। জনগণকে সরকারি তথ্যও জানতে দেওয়া হয় না। রাষ্ট্রটিতে সরকার ও জনগণের মধ্যে সুসম্পর্ক নেই।
ক. ই-গভর্নেন্স কী?
খ. ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে আলোচিত রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় কীসের অভাব রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রাষ্ট্রটির শাসনব্যবস্থার উন্নয়নে তোমার সুপারিশ সমূহ লিখ।

◈ ৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ◈
ক. সরকারি তথ্য ও সেবা ইন্টারনেট এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের (WWW) মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থাই হলো ই-গভর্নেন্স।

খ. সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত না করে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের মধ্যে বন্টন করে দেওয়াই হলো ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ।
বিকেন্দ্রীকরণ প্রক্রিয়ায় সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয়। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কেন্দ্র থেকে জেলা বা থানা পর্যায়ে কিছু প্রশাসনিক কর্তৃত্ব হসত্মান্তর করা হয়। ফলে জেলা বা থানা কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে ক্ষমতা প্রয়োগ করে। দেশের নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের হাতে অধিক কর্তৃত্ব নাস্ত হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় বিকেন্দ্রীকরণ ঘটে।

গ. উদ্দীপকে আলোচিত রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় ই-গভর্নেঙ্গের অভাব রয়েছে।
ই-গভর্নেন্স হলো আধুনিক প্রযুক্তি-নির্ভর শাসনব্যবস্থা। এটি কার্যকর করার উপাদানগুলো হলো- মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট, রেডিও, টেলিভিশন প্রভৃতি। বর্তমানে উন্নত রাষ্ট্রগুলো ই-গভর্নেন্স-এর সুবিধাকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগিয়ে শাসনব্যবস্থার মান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করছে।
শাসনব্যবস্থায় জনগণের অংশগ্রহণ ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবাধ তথ্য প্রবাহের ফলে জনগণ, সরকার ও বিরোধী দল সর্বদাই পরস্পরকে জানতে ও বুঝতে পারছে। এতে প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্রের ভিতও মজবুত হচ্ছে।
উদ্দীপকের জনাব মারুষের ভ্রমণ করা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ও সেবা কার্যক্রমে অনলাইনের ব্যবহার নেই। ফলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা সহজেই দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে উঠছে। আবার জনগণের কাছে সরকারি তথ্য গোপন করার ফলে সরকারের সাথে জনগণের সুসম্পর্ক বজায় থাকছে না। অর্থাৎ, উদ্দীপকে আলোচিত রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় ই-গভর্নেন্সের পুরোপুরি অভাব রয়েছে।

ঘ. ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নের জন্য 'ক' রাষ্ট্রের সরকারের বহুবিধ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নে 'ক' রাষ্ট্রের প্রাযুক্তিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত ই-গভর্নেন্স সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তথ্যসেবা কেন্দ্রগুলো উন্নত করতে হবে। প্রয়োজন হবে যথেষ্ট প্রযুক্তি ও কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ। ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ সব জায়গায় সহজলভ্য করতে হবে। সারা দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনগণকে ই-গভর্নেন্সের সেবা গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। ই-গভর্নেন্স চালুই শেষ কথা নয়, এর সফল বাস্তবায়নের দিকে যত্নবান হতে হবে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যেমন এসডিজি. উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ই-গভর্নেন্স এখন সময়ের দাবি কোনো দেশের সরকারি কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে ই-গভর্নেন্সের কোনো বিকল্প নেই। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে উদ্দীপকের 'ক' রাষ্ট্রের সরকারের উচিত হবে ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নের পথ থেকে প্রতিবন্ধকগুলো দূর করা। ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থাকে সফল করতে হলে ব্যাপক জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। নিজ দেশের ভাষায় প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ ও সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে যথাযথ আইন ও তার প্রয়োগ নিশ্চিত করাও প্রয়োজন।
পরিশেষে বলা যায়, ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য 'ক' রাষ্ট্রের সরকারকে জনগণের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান ও শিক্ষার প্রসার ঘটানোর পাশাপাশি উল্লিখিত সহায়ক পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে।

HSC পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৪ pdf download

৬. ‘ক’ রাষ্ট্রের ছাত্ররা তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে এখন ঘরে বসে ভর্তির আবেদন, রেজিস্ট্রেশন, পরীক্ষার ফলাফল জানাসহ যাবতীয় কাজ করতে পারে। চাকরির জন্যও তারা একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।
ক. সুশাসন প্রত্যয়টি প্রথম কোন প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে?
খ. ই-গভর্নেন্স এর দুটি উদ্দেশ্য লিখ।
গ. ‘ক’ রাষ্ট্রের ছাত্ররা কী ধরনের সুফল পাচ্ছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ব্যবস্থা অধিকতর স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতা মূল বিশ্লেষণ কর।

◈ ৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ◈
ক. সুশাসন প্রত্যয়টি প্রথম ব্যবহার করে বিশ্বব্যাংক।

খ. ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন তথ্য ও সেবা জনগণের নিকট পৌছানোকেই ই-গভর্নেন্স বলে। ই-গভর্নেন্স এর দুটি উদ্দেশ্য হলো-
১. সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং
২. সরকার পরিচালনা ও প্রশাসনে স্বচ্ছতা সৃষ্টি করা।

গ. 'ক' রাষ্ট্রের ছাত্ররা ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থার সুফল পাচ্ছে।
ইলেকট্রনিক গভর্নেন্সকে সংক্ষেপে ই-গভর্নেন্স বলা হয়। ই-গভর্নেন্স হচ্ছে সরকারের যাবতীয় কর্মকান্ড ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি ও উপকরণের ব্যবহার। ব্যাপক অর্থে ই-গভর্নেন্স হচ্ছে শাসনকার্যে স্বচ্ছতা ও দ্রুতগতি সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের কর্মকান্ড ডিজিটাল ডিভাইসগুলোর প্রয়োগ ঘটানো। উদ্দীপকের জনাব আফসানুল ইসলাম এ ধরনের শাসনব্যবস্থার সুফল পাচ্ছেন।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, 'ক' রাষ্ট্রের ছাত্ররা তথ্য প্রযুক্তির কল্যানে ঘরে বসে ভর্তির আবেদন, রেজিস্ট্রেশন, পরীক্ষার ফলাফল জানাসহ যাবতীয় কাজ করতে পারে। চাকরির জন্যও তারা একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। অর্থাৎ 'ক' রাষ্ট্রের জনগণ ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ ব্যবহার করে ঘরে বসেই তাদের বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করতে পারছে। যা ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থার সুফলকেই নির্দেশ করে। সুতরাং বলা যায়, 'ক' রাষ্ট্রের জনগণ ই-গভর্নেঙ্গ ব্যবস্থার সুফল ভোগ করছে।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ব্যবস্থা তথা ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থা অধিকতর স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক উক্তিটি সঠিক। 
উদ্দীপকে ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। কেননা উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, 'ক' রাষ্ট্রের ছাত্ররা তথ্য প্রযুক্তির কল্যানে বর্তমানে ঘরে বসেই ভর্তির আবেদন, রেজিস্ট্রেশন, পরীক্ষার ফলাফল জানাসহ যাবতীয় কাজ করতে পারে। তাছাড়া চাকরির জন্যও তারা একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে। উদ্দীপকে বর্ণিত 'ক' রাষ্ট্রের এরূপ ব্যবস্থা ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থাকেই নির্দেশ করে। আর ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থা অধিকতর স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক।
সুশাসনের পূর্বশর্ত হলো স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা। আর এ সুশাসন তথা স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক শাসনব্যবস্থার অন্যতম হাতিয়ার হলো ই-গভর্নেন্স। সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ই-গভর্নেন্স যে সকল ভূমিকা পালন করতে পারে সেগুলো হলো জনগণকে প্রদত্ত সেবার মান উন্নয়ন, সরকারি দপ্তরগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি, আইনের প্রয়োগ শক্তিশালীকরণ, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রসমূহে নাগরিক অধিকার উন্নীত করা, বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধিতে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি। প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থা খুবই স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক। এর ফলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস পায়। সকল তথ্য এবং সেবাপদ্ধতি জনগণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে পারে, ফলে দুর্নীতির প্রকোপ হ্রাস পায়। আবার ই-গভর্নেন্স প্রক্রিয়ায় সকল তথ্য সময়মত আপলোড করতে হয়। তাই জনগণের নিকট জবাবদিহিতামূলক আচরণ প্রস্ফুটিত হয়। সর্বোপরি, নাগরিক যদি তার নাগরিক সেবাসমূহ অনলাইনের মাধ্যমে পায় তবে প্রশাসনিক দুর্নীতি হ্রাস পাবে। কাজকর্মের গতি বাড়বে, দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে পাশাপাশি অর্থেরও সাশ্রয় হবে। সুতরাং বলা যায়, ই-গভর্নেন্স অধিকতর স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক শাসন প্রতিষ্ঠা করে। 

৭. জনগণ এখন খুব সহজেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরকারি তথ্য ও সেবা পাচ্ছে। ঘরে বসে গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল প্রদান করতে পারছে। তবে একথাও সত্য যে, ব্যয়বহুল হওয়ায় বিশ্বের অধিকাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠী এখনও এই সেবার সুফলভোগী নয়।
ক. SMS-এর পূর্ণরূপ কী?
খ. ল্যাপটপ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে যে শাসনের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে তার উদ্দেশ্য বর্ণনা করো।
ঘ. এই ধরনের শাসন জনপ্রিয় ও সহজলভ্য করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়? আলোচনা করো। 

◈ ৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ◈
ক. SMS- এর পূর্ণরূপ Short Message Service.

খ. ল্যাপটপ (Laptop) হলো ছোট আকারের এক ধরনের ব্যক্তিগত কম্পিউটার; যা সাধারণত ব্যাটারি চালিত এবং সহজে বহনযোগ্য।
একটি ল্যাপটপে কম্পিউটারের সকল উপাদান যেমন প্রসেসর, হার্ড ডিস্ক, মনিটর, কী-বোর্ড, স্পিকার প্রভৃতি একত্রিত থাকে। টাচপ্যাডের ব্যবহার ল্যাপটপের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। কর্মক্ষেত্র, শিক্ষা এবং বিনোদনসহ বিভিন্ন কাজে ল্যাপটপ ব্যবহার করা হয়।

গ. উদ্দীপকে ই-গভর্নেন্স বা ইলেকট্রনিক শাসন তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর শাসনব্যবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ই-গভর্নেন্স এর পূর্ণরূপ হলো ইলেকট্রনিক গভর্নেন্স (Electronic Governance)। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন তথ্য ও সেবা সহজে জনগণের নিকট পৌঁছানোকে ই-গভর্নেন্স বলে। যেমন: ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা, বিভিন্ন চাকরির আবেদন করা ইত্যাদি। উদ্দীপকে উল্লিখিত জনগণ এখন খুব সহজেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরকারি তথ্য ও সেবা পাচ্ছে। ঘরে বসে গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল প্রদান করতে পারছে; যা ই-গভর্নেন্স এর উপস্থিতিকে নির্দেশ করছে। এ শাসনব্যবস্থার উদ্দেশ্য হলো; 
প্রথমত, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। 
দ্বিতীয়ত, সরকারি প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
তৃতীয়ত, সরকারি বিভিন্ন তথ্য ও সেবা দ্রুত জনগণের নিকট পৌঁছে দেয়া।
চতুর্থত, দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা।
পঞ্চমত, প্রশাসনের দক্ষতা ও গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো। 
ষষ্ঠত, অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে গণতন্ত্রের ভিত্তিকে মজবুত করা।
সপ্তমত, সরকারের তিনটি অঙ্গ তথা আইন, শাসন ও বিচার বিভাগের মধ্যে সংযোগ ও সমন্বয় সাধন করা।
অষ্টমত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা এবং নাগরিকদের জীবনমান উন্নত করা। উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করাই ই-গভর্নেন্স এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যয়বহুল হওয়ায় বিশ্বের অধিকাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠী এখনো ই-গভর্নেন্স সেবার সুফলভোগী নয়। সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ যেন এ শাসনব্যবস্থার সুবিধাগুলো গ্রহণ করতে পারে সেজন্য এটিকে জনপ্রিয় ও সহজলভ্য করে তুলতে হবে। এজন্য নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যায়: 
প্রথমত, ইন্টারনেট এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য যন্ত্রপাতি সহজে ও কম মূল্যে পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে দক্ষ লোক নিয়োগ করতে হবে।
তৃতীয়ত, সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
চতুর্থত, ই-গভর্নেন্স এর সেবা ও সুবিধাসমূহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। 
পঞ্চমত, সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে জবাবদিহিমূলক মানসিকতা জাগ্রত করতে হবে। তাদেরকে এ মনোভাব পোষণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে যে, তারা জনগণের সেবক, প্রভু নয়।
ষষ্ঠত, জনগণকে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। 
সপ্তমত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে সরকারকে প্রয়োজনীয় ভর্তুকি প্রদান করতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, ই-গভর্নেন্সকে সহজলভ্য ও জনপ্রিয় করতে হলে দেশের সরকারকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করতে হবে। কম মূল্যে ইন্টারনেট ও অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য দেশের সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

৮. মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি রাষ্ট্রই আর্থিকভাবে বেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। মধ্যপ্রাচ্যের সরকার সরকারি দফতরগুলোতে ইন্টারনেটের ব্যবহার চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের নীতিমালা নির্ধারিত না হওয়ায় তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের নাগরিকদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ কম বিধায় সেখানে সরকারের প্রচেষ্টাও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে।
ক. ই-লার্নিং এর ১টি সুবিধা উল্লেখ করো।
খ. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণে কীরূপ ভূমিকা রাখে?
গ. উদ্দীপকে ই-গভর্নেন্সের যে সকল প্রতিবন্ধকতা পরিলক্ষিত হয় সেগুলো চিহ্নিত করো।
ঘ. এ সকল সমস্যা সমাধানে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে? তোমার মতামত দাও।

◈ ৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ◈
ক. ই-লার্নিং-এর ১টি সুবিধা হলো ই-লার্নিং বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে যে কেউ ঘরে বসেই দূর শিক্ষণের সাহায্যে পড়াশোনা করতে পারবে।

খ. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা মুক্ত দক্ষ প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে। কম্পিউটার এবং তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ প্রশিক্ষিত জনবলের কারণে প্রশাসন গতিশীল হয়ে উঠবে, চাওয়া মাত্রই যেকোনো তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে। ফলে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কমে যাবে।

গ. উদ্দীপকে ই-গভর্নেন্সের যে সকল প্রতিবন্ধকতা পরিলক্ষিত হয় সেগুলো হলো আইনগত কাঠামোর অভাব এবং অপর্যাপ্ত শিক্ষা। উদ্দীপকে দেখা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের সরকার সরকারি দফতরগুলোতে ইন্টারনেটের ব্যবহার চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের নীতিমালা নির্ধারিত না হওয়ায় তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না যা আইনগত কাঠামোর অভাবকে নির্দেশ করে। কেননা আইনগত কাঠামোর অভাবেই সঠিক সময়ে সরকারি নীতিমালা নির্ধারণ করা সম্ভব হয় না, যা ই-গভর্নেন্সের বিকাশে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। এছাড়া উদ্দীপকে দেখা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের নাগরিকদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ কম বিধায় সেখানে সরকারের প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে, যা ই-গভর্নেঙ্গের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা অপর্যাপ্ত শিক্ষাকে নির্দেশ করে। অপর্যাপ্ত শিক্ষা ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠার বড় বাধা।

ঘ. ই-গভর্নেন্স এর সমস্যা সমাধানে বহুবিধ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
উদ্দীপকে আলোচিত রাষ্ট্রে ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটাতে হবে। বড় শহরগুলো থেকে শুরু করে গ্রাম অঞ্চল পর্যন্ত তথ্য সেবা কেন্দ্রগুলো উন্নত ও আধুনিক করতে হবে। প্রযুক্তি ও কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন জনসংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশের জনশক্তিকে মানবসম্পদে পরিণত কতে হবে। ই-গভর্নেঙ্গ বাস্তবায়নে প্রয়োজন কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ ও এর যথাযথ ব্যবহার, গ্রাম ও শহরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে জনগণকে ই-গভর্নেন্স এর সেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ করতে হবে। ই গভর্নেন্স এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে উৎসাহ প্রদান করতে হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ ও সাইবার ক্লাইম প্রতিরোধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর হতে হবে। সরকারি তথ্য ও সেবা প্রাপ্তির সুবিধা সকলের জন্য উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে। সুষ্ঠু মনিটরিং ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব। ই গভর্নেন্স বাস্তবায়নে এর কার্যক্রম ইংরেজি ভাষার পরিবর্তে নিজ দেশের ভাষার প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৯. সজীব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে। সে একটি দৈনিক পত্রিকার সাক্ষাৎকালে বলে যে সে একজন সরকারি কর্মকর্তা হতে চায়। সে যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে গতিশীল সুশাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়। সে বলে সর্বত্র ই-গভর্নেন্স চালু করতে পারলে দ্রুত দক্ষ প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।
ক. ম্যাক করনির সুশাসনের সংজ্ঞাটি দাও।
খ. আইনের শাসন বলতে কী বোঝায়?
গ. সজীবকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কোন বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ই-গভর্নেন্স কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে? বিশ্লেষণ কর।

◈ ৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ◈
ক. ম্যাক করনি সুশাসন সম্পর্কে বলেন, সুশাসন বলতে রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজ, সরকারের সাথে শাসিত জনগণের, শাসকের সাথে শাসিতের সম্পর্ক বোঝায়।

খ. আইনের শাসন হলো রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিবিশেষ, যেখানে সরকারের সব কার্যক্রম আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এবং যেখানে আইনের স্থান সবকিছুর ঊর্ধ্বে।
ব্যবহারিক ভাষায় আইনের শাসনের অর্থ হলো, রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত সরকার সর্বদা আইন অনুযায়ী কাজ করবে এবং রাষ্ট্রের কোনো নাগরিকের অধিকার লঙ্ঘিত হলে আদালতের মাধ্যমে সে তার প্রতিকার পাবে। আইনের চোখে সবাই সমান এবং কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যে কেউ আইন ভঙ্গ করলে তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে- এটাই আইনের শাসনের বিধান। মোট কথায় আইনের শাসন তখনই বিদ্যমান থাকে, যখন সরকারি ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অনুশীলন আদালতের পর্যালোচনাধীন থাকে, যে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার অধিকার সব নাগরিকের সমান।

গ. সজীবকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যে বিষয়গুলোর উপর গুরুত্ব দিতে হবে তা হলো নিয়ন্ত্রিত, সাড়াদানকারী ও দক্ষ আমলাতন্ত্র এবং ই গভর্নেন্স।
সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন, জনগণের চাহিদার প্রতি দ্রুত সাড়াদানকারী ও দক্ষ আমলাতন্ত্র। এ ধরনের আমলাতন্ত্রই জনগণকে সর্বোত্তম সেবা প্রদান করে উত্তম শাসন নিশ্চিত করতে পারে। উদ্দীপকে বর্ণিত সজীৰ যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে গতিশীল সুশাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়, যা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিয়ন্ত্রণাধীন, জনগণের চাহিদার প্রতি দ্রুত সাড়াদানকারী ও দক্ষ আমলাতন্ত্রের গুরুত্বের বিষয়টিকেই প্রতিফলিত করে।
সুশাসন বাস্তবায়নের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হলো ই-গভর্নেন্স ই গভর্নেন্স সরকার ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগকে সহজতর করে। এর ফলে সরকারের কাজের গতি বাড়ে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস পায়, দক্ষ প্রশাসনব্যবস্থা গড়ে ওঠে। অবাধ তথ্যপ্রবাহ, স্বচ্ছতা এবং সরকার ও প্রশাসনের জবাবাদিহিতা নিশ্চিত করা সহজ হয়। সরকারি সেবার মান উন্নত হয় এবং সেবাদান ও সেবার খরচও সাশ্রয় হয়। ফলে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়। সজীব সর্বত্র ই-গভর্নেন্স চালুর মাধ্যমে দ্রুত দক্ষ প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার সম্ভাবনার কথা বলেছেন।

ঘ. সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ই-গভর্নেন্স বিভিন্নভাবে ভূমিকা রাখতে পারে। নাগরিকদের অধিকার আইনের শাসন, দক্ষ প্রশাসনব্যবস্থা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রভৃতির সমন্বয়ে সুশাসন গড়ে ওঠে। অপরদিকে ই গভর্নেন্স হচ্ছে মূলত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে সরকারি সেবাদান, যোগাযোগের ক্ষেত্রে তথ্যের আদান-প্রদান, সরকারের সাথে নাগরিকদের যোগাযোগ এমনকি এক রাষ্ট্রের সাথে অপর রাষ্ট্রের যোগাযোগের পন্থা, যা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অত্যন্ত জরুরি।
ই-গভর্নেন্স ইলেকট্রনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকারি সেবা এবং জনগণের দাবি ও মতামত গ্রহণ করার ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকারের সব কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। এর মাধ্যমে দক্ষতা বাড়ানো যায়, যা ব্যাপকভাবে। দারিদ্র্য নিরসনে ভূমিকা রাখে। ই-গভর্নেন্স সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে জনগণকে উন্নততর এবং অধিকতর ভালো তথ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিচ্ছে। এটি নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করছে। নাগরিকগণ বিদ্যুৎ পানি, গ্যাস ইত্যাদির বিল মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রদানের সুবিধা পাচ্ছে। সহজে বৈদেশিক মুদ্রা আদান প্রদানের জন্য মোবাইল রেমিটেন্স জবসরঃধহপব. চালু হয়েছে। বর্তমান সরকার ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত সেবার মান নিশ্চিত করছে। এটি সরকার ও প্রশাসনের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা বৃদ্ধি করছে। এ ব্যবস্থার ফলে সরকারের প্রশাসনিক কর্মকা- জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়। ই-গভর্নেঙ্গ সরকারি অর্থের অপচয় ও অপব্যয় হ্রাস করে। তাছাড়া সরকার দেশের সমস্ত তথ্য দ্রুত পায় বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়। আর এ সকল বিষয় সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রস্তুত করে। সুতরাং উপযুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, ই-গভর্নেন্স উল্লিখিত উপায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

০. বর্তমান সময়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ডিজিটাল পদ্ধতির কারণে ঘরে বসে তাদের সকল ধরনের কার্যাবলি সম্পাদন করতে পারে। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে ভর্তির আবেদন, রেজিস্ট্রেশন, পরীক্ষার ফলাফল জানাসহ চাকরির জন্য তারা একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।
ক. ই-সার্ভিস কী?
খ. ই-গভর্নেন্স বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে ছাত্র-ছাত্রীরা কী ধরনের ব্যবহার সুফল পাচ্ছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ব্যবস্থা অধিকতর স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক বিশ্লেষণ করো।

◈ ১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ◈
ক. ই-সার্ভিস হলো ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে সরকারি তথ্য ও সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া।

খ. ই-গভর্নেন্স এর মানে হলো ইলেকট্রনিক গভর্নেন্স। এর আক্ষরিক অর্থ দাঁড়ায় প্রযুক্তিচালিত গভর্নেন্স। ই-গভর্নেন্স হচ্ছে মূলত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে সরকারি সেবাদান, যোগাযোগের ক্ষেত্রে তথ্যের আদান প্রদান, বিভিন্ন পন্থা ও পদ্ধতির সমন্বয়সাধন করে একটি পন্থার সাহায্যে সকল নাগরিক সরকারের সেবাদান ও যোগাযোগ স্থাপন, দ্রুত ব্যবহারের সাথে সরকারের এমনকি এক রাষ্ট্রের সরকারের সাথে অপর রাষ্ট্রের সরকারের যোগাযোগের পন্থা।

গ. উদ্দীপকে ছাত্র-ছাত্রীরা ই-গভর্নেন্স ব্যবহারের সুফল পাচ্ছে। বাকি অংশ ইলেকট্রনিক গভর্নেন্সকে সংক্ষেপে ই-গভর্নেন্স বলা হয়। ই গভর্নেন্স হচ্ছে সরকারের যাবতীয় কর্মকান্ড ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি ও উপকরণের ব্যবহার। ব্যাপক অর্থে ই-গভর্নেন্স হচ্ছে শাসনকার্যে স্বচ্ছতা ও দ্রুতগতি সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের কর্মকান্ড ডিজিটাল ডিভাইসগুলোর প্রয়োগ ঘটানো। উদ্দীপকের জনাব আফসানুল ইসলাম এ ধরনের শাসনব্যবস্থার সুফল পাচ্ছেন।
উদ্দীপকে দেখা যায় ছাত্র-ছাত্রীরা অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তির আবেদন, রেজিষ্টেশন, পরীক্ষার ফলাফল যথাসময়ে জানতে পারে এবং চাকরির জন্যও তারা একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। যা ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থাকে নির্দেশ করে। ই-গভর্নেন্স সময়ের অপচয় কমে এবং কাজের খরচ কমে। এটি চালু হওয়ার ফলে জনগণ অনলাইনে কর, গ্যাসের বিল, পানির বিল এবং বিদ্যুৎ বিল প্রদান করতে পারে। ই-গর্ডনেন্সের সাহায্যে জনগণ ইন্টারনেটে খুব সহজেই আবেদন জমা দিতে পারে। ই-গর্ডনেন্সের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ জনগণও ঘরে বসেই সেবা ও সুযোগ লাভ করে।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ব্যবস্থা তথা ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থা অধিকতর স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক।
সুশাসনের পূর্বশর্ত হলো স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা। আর এ সুশাসন তথা স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক শাসনব্যবস্থার অন্যতম হাতিয়ার হলো ই-গভর্নেন্স। সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ই-গভর্নেন্স যে সকল ভূমিকা পালন করতে পারে সেগুলো হলো- জনগণকে প্রদত্ত সেবার মান উন্নয়ন, সরকারি দপ্তরগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি, আইনের প্রয়োগ শক্তিশালীকরণ, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রসমূহে নাগরিক অধিকার উন্নীত করা, বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধিতে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি। প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থা খুবই স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক। এর ফলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস পায়। সকল তথ্য এবং সেবাপদ্ধতি জনগণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে পারে, ফলে দুর্নীতির প্রকোপ হ্রাস পায়। আবার ই-গভর্নেন্স প্রক্রিয়ায় সকল তথ্য সময়মত আপলোড করতে হয় তাই জনগণের নিকট জবাবদিহিতামূলক আচরণ প্রস্ফুটিত হয়। সর্বোপরি, নাগরিক যদি তার নাগরিক সেবাসমূহ অনলাইনের মাধ্যমে পায় তবে প্রশাসনিক দুর্নীতি হ্রাস পাবে। কাজকর্মের গতি বাড়বে, দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে পাশাপাশি অর্থেরও সাশ্রয় হবে।
সুতরাং বলা যায়, ই-গভর্নেন্স অধিকতর স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক শাসন প্রতিষ্ঠা করে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Comments