HSC পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৫ pdf download

 এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Civics and Good Governance 2nd Paper Srijonshil Question Answer pdf download

পৌরনীতি ও সুশাসন
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৫

HSC Civics and Good Governance 2nd Paper pdf download
Srijonshil
Question and Answer

১. আবুল কালাম 'Y' রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী। তাঁকে কেন্দ্র করেই রাষ্ট্রের সকল কর্মকা- পরিচালিত হয়। তিনি এমন এক সূর্য যার চারদিকে রাজনৈতিক গ্রহগুলো আবর্তিত হয়।
ক. মন্ত্রণালয় কী?
খ. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের আবুল কালামের সাথে তোমার পঠিত কোনো পদের সাদৃশ্য আছে কি? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ পদ জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক- বিশ্লেষণ কর।

১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মন্ত্রণালয় হলো সচিবালয়ের একটি প্রশাসনিক শাখা।

খ. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বলতে শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থেকে বিচারকদের স্বাধীনভাবে বিচার কাজ পরিচালনা করার ক্ষমতাকে বোঝায়।
কোনো দেশের শাসনব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না তা বিচারের মাপকাঠি হলো সে দেশের বিচার বিভাগ কার্য সম্পাদনে কতটুকু স্বাধীন। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষ সমাজব্যবস্থার প্রধান স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত। জনগণের মৌলিক অধিকার, সংবিধান এবং আইন সংরক্ষণে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জরুরি।

গ. উদ্দীপকের আবুল কালামের সাথে আমার পঠিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদের সাদৃশ্য রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাহী। তিনি হলেন শাসন ব্যবস্থার মধ্যমণি। তাকে কেন্দ্র করেই মন্ত্রিসভা গঠিত ও পরিচালিত হয়। তার পরামর্শেই রাষ্ট্রপতি অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগ দেন। তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধান করেন। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থা হারালে কিংবা অন্য কোনো কারণে প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভেঙে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে পারেন। তিনি একাধারে দলের নেতা, সংসদের নেতা মন্ত্রিসভার মধ্যমণি, রাষ্ট্রপতির পরামর্শদাতা এবং জাতির নেতা ও পথপ্রদর্শক। তিনি জাতীয় নিরাপত্তা এবং সংহতির প্রতীক।
উদ্দীপকে দেখা যায়, আবুল কালাম ‘ু' রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী। তাকে কেন্দ্র করেই রাষ্ট্রের সকল কর্মকা- পরিচালিত হয়। তিনি এমন এক সূর্য যার চার দিকে রাজনৈতিক গ্রহগুলো আবর্তিত হয়। উদ্দীপকের 'ণ' এর মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তাঁর নেতৃত্বেই মন্ত্রিসভা পরিচালিত হয়। আর তাই বলা যায়, উদ্দীপকের পদের সাথে আমার পঠিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদটি সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ পদ অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতির আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।
একটি দেশের জনগণ তাদের সরকারের ওপরই সর্বোতভাবে নির্ভরশীল। সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকার প্রধান। এ ব্যবস্থায় জনগণ প্রধানমন্ত্রীকেই তাদের মূল আশ্রয় বলে মনে করে। তার ওপর দেশের উন্নতি, অবনতিত, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন প্রভৃতি অনেকাংশে নির্ভর করে।
বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। তাই প্রধানমন্ত্রী এ দেশের শাসন ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু। তিনি প্রভূত ক্ষমতার কারী। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি পর্যন্ত সব বিষয়ের সাথে তিনি সংশ্লিষ্ট। দেশের উনণয়নে সব ধরনের পদক্ষেপ তিনি গ্রহণ করেন। সরকারের যেকোনো ব্যর্থতা তার ওপর বর্তায়। এ কারণে তৃণমূল থেকে জাতীয় সব পর্যায়েই তাকে নিপুণ দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়। তিনি জরুরি পরিস্থিতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক সংকট প্রভৃতি ক্ষেত্রে জনগণের পাশে দাঁড়vন, সহমর্মিতা প্রকাশ করেন এবং বক্তব্য-বিবৃতির মাধ্যমে জনগণকে ভরসা দেন। জাতীয় নিরাপত্তা ও সংহতি রক্ষার ক্ষেত্রেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
বাংলাদেশের মতো সংসদীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রীর যথাযথ ও কল্যাণমূলক কর্মকান্ডর ফলে জনগণ সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে এবং তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ঘটে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের পদটি অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী হলেন জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।

২. রাজধানীর শ্যামপুর থানার একটি মামলায় বিনা বিচারে প্রায় দেড় দশক ধরে কারাগারে ছিলেন চান মিয়া। এ বিষয়ে বেসরকারি একটি চ্যানেলে সংবাদ প্রচারিত হলে সর্বোচ্চ আদালতের নজরে আনেন দুই আইনজীবী। সর্বোচ্চ আদালত চান মিয়াকে জামিন এবং ৯০ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতকে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। 
ক. বাংলাদেশের শাসন বিভাগের প্রধান কে?
খ. বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা কী?
গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের কোন আদালতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে? এর গঠন বর্ণনা কর।
ঘ. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় উদ্দীপকে উল্লিখিত আদালতের ভূমিকা মূল্যায়ন কর।

২ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের শাসন বিভাগের প্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী।

খ. আইনসভা কর্তৃক প্রণীত কোনো আইন কিংবা শাসন বিভাগের কাজ সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না তা বিচার বিভাগ কর্তৃক পর্যালোচনা করার ক্ষমতাই হলো বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা।
বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা ধারণাটির উদ্ভব হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের অভিভাবক ও ব্যাখ্যাকারক। সংবিধানের অভিভাবক ও রক্ষাকারী হিসেবে বিচার বিভাগ এর শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য সচেষ্ট থাকে। বিচার বিভাগের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, আইনসভা কর্তৃক প্রণীত কোনো আইন সংবিধানের সাথে অসংগতিপূর্ণ, তাহলে তা বাতিল করার ক্ষমতা বিচার বিভাগের রয়েছে। তেমনি শাসন বিভাগের কোনো কাজ সংবিধানসম্মত না হলে বিচার বিভাগ তা অবৈধ ঘোষণা করতে পারে। সংবিধানের শ্রেষ্ঠত্ব ও পবিত্রতা বজায় রাখতে বিচার বিভাগ এ ক্ষমতা প্রয়োগ করে।

গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের কথা বলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৯৪ নম্বর অনুচ্ছেদ হতে শুরু করে ১১৩ নং অনুচ্ছেদে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের গঠন সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট দুটি বিভাগ নিয়ে গঠিত। যথা: (ক) আপিল বিভাগ ও (খ) হাইকোর্ট বিভাগ।
রাষ্ট্রপতি প্রত্যেক বিভাগের জন্য যতজন বিচারক প্রয়োজনবোধ করবেন ততজন বিচারক নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হবে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারক নিয়োগ করবেন। প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগে নিযুক্ত বিচারকদের নিয়ে আপিল বিভাগ গঠিত হবে এবং অন্যান্য বিচারকদের নিয়ে হাইকোর্ট এবং স্থায়ী বেঞ্জ গঠিত হবে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ কোনো কারণে শূন্য হলে আপিল বিভাগের প্রবীণতম বিচারক অস্থায়ীভাবে প্রধান বিচারপতির কার্যভার গ্রহণ করবেন।
সুতরাং সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে। আর বিচারকদের সংখ্যা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত হয়।

ঘ. উল্লিখিত উদ্দীপকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আদালত বা বিচার বিভাগের ভূমিকা অনন্য।
বিচার বিভাগের দক্ষতার ওপর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা অনেকাংশে নির্ভরশীল। আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের হস্তক্ষেপ থেকে বিচার বিভাগ জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে। নাগরিকদের অধিকার ও সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার রক্ষা করার মাধ্যমে বিচার বিভাগ বা আদালত ব্যক্তি স্বাধীনতার রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। আদালত ন্যায়বিচার, বিচারক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা এবং প্রান্তিক ও দরিদ্রের জন্য যথাযথ বিচার নিশ্চিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করায় ভূমিকা রাখে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সকলের জন্য একই ধরনের বিচার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
আইনের শাসনের রক্ষক ও অভিভাবক হলো সংবিধান, আর সংবিধানের রক্ষক হলো আদালত। কোনো আইন সংবিধানের কোনো ধারা লঙ্ঘন করলে বিচার বিভাগ বা আদালত তার সুরাহা করে। সরকার স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠলে আইনের শাসন বাধাগ্রস্ত হয়। সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করতে আদালত নানা কৌশল প্রয়োগ করে। আইন অমান্যকারীকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা বিচার বিভাগ নিশ্চিত করে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্র বা সরকার, মানবাধিকার এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে গুরুতর অন্যায়, অধিকার লঙ্ঘন, ক্ষতি হলে বিচার বিভাগ স্বেচ্ছায় অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রুল জারি করে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সঠিক তথ্য এবং নিষ্পত্তি করার জন্য আদালত স্ব-প্রণোদিত হয়ে সুয়োমোটো রুল জারির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে প্রতিকার দিয়ে থাকে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
অতএব বলা যায়, আইনের শাসন নিশ্চিত করার জন্য বিচার বিভাগের বিশেষ ভূমিকা আছে। নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষা ও নিরাপত্তা বিধান করা আদালত বা বিচার বিভাগের কাজ।

৩. ব্রিটেনের সরকার প্রধান জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। কিন্তু রাষ্ট্রপ্রধান উত্তরাধিকারসূত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। সে দেশের সরকার প্রধান আইন প্রণয়নে নেতৃত্ব দেন। তবে তিনি আইনসভায় জবাবদিহি করতে বাধ্য। শাসন বিভাগের প্রধান হিসেবে ব্রিটেনের রাষ্ট্রপ্রধানের নামে সকল কার্য সম্পাদিত হয়।
ক. জাতীয় সংসদের অধিবেশন কে আহবান করেন?
খ. বাংলাদেশের আইনসভার গঠন লেখো।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্রিটেনের সরকার প্রধানের সাথে বাংলাদেশের সরকার প্রধানের সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে বাংলাদেশের প্রধানের পদমর্যাদাগত পার্থক্য নির্ণয় কর।

৩ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহবান করেন রাষ্ট্রপতি।

খ. বাংলাদেশের আইনসভার নাম হলো জাতীয় সংসদ।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে জাতীয় সংসদ ৩৫০ জন সদস্যের মধ্যে ৩০০ জন সদস্য একক আঞ্চলিক নির্বাচনি এলাকাসমূহ হতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন। এছাড়া ৫০ টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। এরা সংসদ সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন। সংসদের কার্য পরিচালনার জন্য সংসদ সদস্যদের ভোটে একজন স্পিকার ও একজন ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্রিটেনের সরকার প্রধানের সাথে বাংলাদেশের সরকার প্রধানের বেশকিছু সাদৃশ্য রয়েছে।
বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে। এই ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকার প্রধান এবং শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু। তাকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হয়। তার নিয়োগ এবং কাজের সাথে উদ্দীপকে উল্লিখিত সরকারের মিল লক্ষণীয়।
ব্রিটেনের সরকার প্রধান জনগণের ভোটে নির্বাচিত। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রেও এমনটি দেখা যায়। সংবিধান অনুযায়ী যে সদস্য সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন বলে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হবেন, রাষ্ট্রপতি তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করবেন। সংসদীয় রীতি অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের সংসদীয় নেতাকেই রাষ্ট্রপতি সংসদের আস্থাভাজন সদস্য বলে মনে করেন। আবার ব্রিটেনের সরকার প্রধান আইন প্রণয়নে নেতৃত্ব দেন। তবে তিনি আইনসভায় জবাবদিহি করতে বাধ্য। বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীই জাতীয় সংসদের নেতা বলে বিবেচিত হন। সংসদ নেতা হিসেবে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তার ভূমিকাই মূখ্য। সংসদের উত্থাপিত কোনো বিল পাস না হলে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন। তবে এতো ক্ষমতা সত্ত্বেও তার কাজের জন্য আইনসভায় তাকে জবাবদিহি করতে হয়। এই আলোচনা থেকেই উদ্দীপকের সরকার প্রধান এবং বাংলাদেশের সরকার প্রধানের সাদৃশ্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের বেশকিছু পদমর্যাদাগত পার্থক্য রয়েছে।
বর্তমান বাংলাদেশে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে। সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি চ্ছেন রাষ্ট্রের প্রধান, সরকার প্রধান নন। রাষ্ট্রপ্রধান রূপে তিনি রাষ্ট্রের অন্য সকল ব্যক্তির ঊর্ধ্বে স্থান লাভ করেন। তিনি শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মতো কর্ম করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হলেন নামমাত্র শাসক। উদ্দীপকের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের পদমর্যাদা ও ক্ষমতার ক্ষেত্রে কিছু বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।
উদ্দীপকের রাষ্ট্রপ্রধান উত্তরাধিকার সূত্রে দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। কিন্তু বাংলাদেশে এ রাষ্ট্রপ্রধান জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে।
আবার উদ্দীপকের ব্রিটেনের রাষ্ট্রপ্রধান তার কাজের জন্য আইনসভায় জবাবদিহি করতে বাধ্য। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। কেননা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কারো নিকট দায়বদ্ধ নন। তিনি আইনসভার নিকটও জবাবদিহি করেন না। রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি অন্য সকল ব্যক্তির ঊর্ধ্বে স্থান লাভ করবেন। তিনি সংবিধান অনুসারে তার ওপর অর্পিত সকল দায়িত্ব পালন করেন। কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগের ক্ষেত্র ছাড়া সব সময়ই তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোনো কিছু করা বা না করার জন্য তাঁকে আদালতে জবাবদিহি করতে হবে না এবং তার বিরুদ্ধে আদালতে কোনো ফৌজদারি মামলা দায়ের করা যাবে না।
উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে প্রতীয়মান হয় যে, রাষ্ট্রপতি নিয়োগ ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ও উদ্দীপকে উল্লিখিত রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।

৪. 'ক' রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ হতে পৃথক। কিন্তু নিম্ন আদালতের বিচারকরা সরকারের আজ্ঞাবহ। বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিসহ সবকিছুই মন্ত্রণালয়ের হাতে ন্যস্ত। বিচার বিভাগের জন্য আলাদা কোনো সচিবালয় নেই। বিচারকরাও তাদের দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি নিরপেক্ষ নয়।
ক. বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের নাম কী?
খ. সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত 'ক' রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ কি স্বাধীন? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও।
ঘ. উদ্দীপকের দেশের বিচার বিভাগের সাথে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।

৪ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের নাম হলো বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।

খ. সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বলতে বাংলাদেশের সংবিধানের বিভিন্ন বিধিবিধানের আলোকে সরাসরি যেসব প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো কে বোঝায়।
বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলি সাংবিধানিক আইন অনুযায়ী পরিচালিত হয়। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সরকার তথা নির্বাহী বিভাগ কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারে না এরা স্বাধীনভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে। এই সংস্থাগুলোর সভাপতি ও সদস্যগণ নির্দিষ্ট মেয়াদে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োজিত। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন, নির্বাচন কমিশন, এটর্নি জেনারেল, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত 'ক' রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অপরিহার্য শর্ত।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া রাষ্ট্রীয় জীবনে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। এই বিভাগের স্বাধীনতার জন্য যে বিষয়গুলো আবশ্যক উদ্দীপকের বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে সেগুলো অনুপস্থিত।
উদ্দীপকের 'ক' রাষ্ট্রের নিম্ন আদালতের বিচারকরা সরকারের আজ্ঞাবহ, এদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিসহ সবকিছুই মন্ত্রণালয়ের হাতে ন্যস্ত। এ খানের বিচারকরা তাদের দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি নিরপেক্ষ নয়। অথচ স্বাধীন বিচারবিভাগ সুষ্ঠুভাবে সংবিধান প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে নিরপেক্ষভাবে ন্যায় বিচার করতে পারে। আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ, ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও অন্যান্য শক্তির প্রভাব থেকে মুক্ত থেকে বিচারকার্য সম্পাদন করাই হলো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। স্বাধীন বিচার বিভাগের বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এছাড়া রাষ্ট্রপতির অনুমতি ব্যতীত কোনো বিচারককে অপসারণ করা যাবে না। তবে বিচারকগণ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে পারবেন। বিচারকগণের বদলি পদোন্নতির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির মতামতই কার্যকর করা হয়। স্বাধীন বিচার বিভাগের এই বিষয়গুলো 'ক' রাষ্ট্রের বিচার বিভাগে নেই। তাই 'ক' রাষ্ট্রের বিচার বিভাগকে স্বাধীন বলা যায় না।

ঘ. উদ্দীপকের দেশের বিচার বিভাগের সাথে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের কিছু মিল থাকলেও যথেষ্ট পার্থক্যও রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের একটি বিভাগ হিসেবে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণভাবে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত হয়ে নিরপেক্ষভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করছে। 'ক' রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক হলেও অন্যান্য বিষয়গুলো বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়।
বাংলাদেশে আইনের বিধান অনুযায়ী অধস্তন আদালত রয়েছে। রাষ্ট্রপতি এসব আদালতের বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনকারী ম্যাজিস্ট্রেট পদে কর্মকর্তাদের নিয়োগ করে। রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশ ক্রমে জেলা বিচারক নিয়োগ প্রদান করেন। বিচার বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটের নিয়ন্ত্রণ, কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি দান অন্যান্য বিষয়ে শৃঙ্খলা বিধান সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত। বাংলাদেশে 'ক' রাষ্ট্রের ন্যায় বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় না থাকলেও বিচারকগণ সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে ন্যায়-অন্যায় নির্ধারণপূর্বক যথাযথভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও করণীয় নির্ধারণ করে থাকে। তারা অন্যায়ের শাস্তিবিধান এবং নির্দোষ ব্যক্তিকে অন্যায় ও অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা করেন। বিচার বিভাগ আইনের ব্যাখ্যা, প্রকৃত অর্থ ও কার্যকারিতা নির্ধারণ এবং আইনকে ক্ষেত্রবিশেষে প্রয়োগ করে থাকে। আর এভাবে এটি নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতা সংরক্ষণে সদা তৎপর থাকে।
উপর্যুক্ত আলোচনায় দেখা যায় 'ক' রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ অপেক্ষা বাংলাদেশের বিচার বিভাগ অধিক স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে বিচারকার্য সম্পাদন করছে।

৫. মি. জেমস জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী দলের আস্থাভাজন ব্যক্তি। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের আস্থা অর্জন করায় রাষ্ট্রপতি তাকে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করেন। পদমর্যাদা অনুযায়ী তিনি দেশের প্রকৃত শাসক। তার ক্ষমতা ও কার্যাবলি ব্যাপক।
ক. বাংলাদেশ সরকারের প্রধান আইনজীবী কে?
খ. সচিবালয় বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের ব্যক্তির সাথে বাংলাদেশের কোন পদের নিয়োগ ও পদমর্যাদা সম্পর্কে ইঙ্গিত করা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্যক্তির পদের ক্ষমতা ও কার্যাবলি তোমার পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

৫ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশে সরকারের প্রধান আইনজীবী হলেন এটর্নি জেনারেল।

খ. সচিবালয় বলতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও তার বিভাগসমূহ নিয়ে গঠিত প্রশাসনিক সংস্থাকে বোঝায়।
সচিবালয় হলো একটি দেশের তথা প্রশাসন ব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্র। সরকারি যাবতীয় কর্মসূচি ও সিদ্ধান্ত সর্বপ্রথম সচিবালয়ে গৃহীত হয়। সচিবালয় বিভিন্ন প্রকল্পও বাস্তবায়ন করে। সর্বোপরি দেশের প্রশাসন যন্ত্রকে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় কার্য সম্পাদনকারী দপ্তরই হলো সচিবালয়।

গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদের নিয়োগ ও পদমর্যাদার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরাই এদেশ পরিচালনা করেন। এই সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকেই একজন প্রধানমন্ত্রী হন। আর তিনিই দেশের শাসনব্যবস্থার মূল স্তম্ভ। উদ্দীপকটিতে উল্লিখিত নিয়োগ পদ্ধতি ও পদমর্যাদা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
উদ্দীপকের মি জেমস সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের আস্থা অর্জন করেছেন। এ কারণে রাষ্ট্রপতি তাকে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পদে নিয়োগ দিয়েছেন। পদমর্যাদা অনুযায়ী তিনি দেশের প্রকৃত শাসক। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী দলের আস্থাভাজন ব্যক্তি। সাধারণ নির্বাচনের পর রাষ্ট্রপতি তাকে নিয়োগ দান করেন। যদি কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয় তবে রাষ্ট্রপতি এমন একজন ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেন যিনি সংসদের সমর্থন লাভ করেন। নিয়োগ লাভের পর প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির নিকট শপথ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ সরকার তথা সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রীকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। তিনিই বাংলাদেশ সরকারের প্রধান। তাঁর নির্দেশ ও পরামর্শেই মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী যদিও রাষ্ট্রপতি দ্বারা মনোনীত হন তবুও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কাজ করেন। মোটকথা প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান, সংসদের নেতা ও মন্ত্রিসভার প্রধান। অর্থাৎ দেশের শাসনব্যবস্থার মূল স্তম্ভ। সুতরাং, দেখা যায়, উদ্দীপকে বর্ণিত মি. জেমস এর নিয়োগ ও পদমর্যাদা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ ও পদমর্যাদার সাথেই সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্যক্তি অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী পদের ক্ষমতা ও কার্যাবলি নিচে পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ করা হলো-
সংবিধান অনুসারে প্রধানমন্ত্রী হলেন বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু। বাংলাদেশের সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বহুবিধ কার্যাবলি সম্পাদন করেন। প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রিসভার যে তালিকা রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করেন তারাই মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। প্রজাতন্ত্রের প্রকৃত নির্বাহী ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিপরিষদের হাতে ন্যস্ত থাকে। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রজাতন্ত্রের উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের নিয়োগ দান করেন। আইন, বিচার, শাসন ও পররাষ্ট্রবিষয়ক সকল কর্তৃত্ব প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকে। মন্ত্রিসভার নেতা হিসেবে মন্ত্রিসভায় কারা থাকবেন এবং কতজন থাকবেন তা প্রধানমন্ত্রীই নির্ধারণ করেন। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদের নেতা। প্রধানমন্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে
স্পিকার সংসদের কার্যসূচি নির্ধারণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি সরকারি উচ্চপদে কর্মচারী, বিচারক, রাষ্ট্রদূত ও সাংবিধানিক পদে নিয়োগ দান করেন। প্রধানমন্ত্রী কেবল সংসদের নেতা নন, তিনি তার নিজ দলেরও প্রধান। দলের স্বার্থ রক্ষা, ঐক্য ধরে রাখা, দলের সাফল্য প্রভৃতি বিষয়ে বিশেষ নজর রাখা তার কর্তব্য। প্রধানমন্ত্রী জাতির নেতা ও পথপ্রদর্শক। এ জন্য তিনি সরকারি কর্মসূচি জনসমক্ষে প্রকাশ করেন এবং সময়োপযোগী বিবৃতি ও বক্তৃতা প্রদান করেন।
পরিশেষে বলা যায়, সংসদীয় সরকারের সফলতা প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ও কার্যকলাপের ওপর নির্ভর করে। তাই বাংলাদেশের সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে প্রভূত ক্ষমতা ও মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

৬. কাজল অনেকদিন থেকে প্রবাস জীবনযাপন করছে। বাংলাদেশে বেড়াতে এসে তিনি প্রবাস রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার কথা বলছিলেন। তার বক্তব্য সেখানকার সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে প্রকৃত শাসকের ক্ষমতা প্রদান করেছে। রাষ্ট্রপতি যে কাউকে মন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দিতে পারেন, আবার যে কাউকে পদচ্যুত করতে পারেন। অর্থাৎ তার প্রবাস রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি সকল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিচালনা করেন।
ক. বাংলাদেশ সরকার প্রধানের পদ কী?
খ. বাংলাদেশের মন্ত্রী পরিষদের গঠন বর্ণনা কর।
গ. উদ্দীপকের রাষ্ট্রপতির সাথে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার পার্থক্য দেখাও।
ঘ. বাংলাদেশে কি কখনও উদ্দীপকে বর্ণিত সরকার ব্যবস্থা চালু ছিল? বিশ্লেষণ কর।

৬ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশে সরকার প্রধানের পদ প্রধানমন্ত্রী।

খ. বাংলাদেশে সরকার পরিচালনার জন্য একটি মন্ত্রিপরিষদ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এর নেতা। তিনি যেরূপ সংখ্যক প্রয়োজন মনে করবেন, সেরূপ সংখ্যক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। মন্ত্রিপরিষদের মন্ত্রিগণ সাধারণত সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে নিযুক্ত হন। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য কিন্তু সংসদ সদস্য নন এমন ব্যক্তিত্ব মন্ত্রী নিযুক্ত হতে পারেন। তবে এর সংখ্যা মন্ত্রিপরিষদের মোট সদস্যসংখ্যার এক দশমাংশের বেশি হবে না। মন্ত্রিসভা যৌথভাবে জাতীয় সংসদের নিকট দায়ী থেকে দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে বা কোনো কারণে সংসদ ভেঙে গেলে মন্ত্রিসভাও ভেঙে যায়।

গ. উদ্দীপকের কাজলের বক্তব্য অনুসারে তার প্রবাস রাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থা রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
আমরা জানি, রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থায় শাসন বিভাগ তার কাজের জন্য আইন বিভাগের নিকট দায়ী থাকে না। রাষ্ট্রপতি তার পছন্দের লোকদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেন। রাষ্ট্রপতির সন্তুষ্টির ওপর মন্ত্রীদের কার্যকাল নির্ভর করে। উদ্দীপকের কাজলের প্রবাস রাষ্ট্রে আমরা অনুরূপ সরকার কাঠামোই লক্ষ করি।
নিচে উদ্দীপকের রাষ্ট্রপতির সাথে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার পার্থক্য দেখানো হলো-
উদ্দীপকের রাষ্ট্রপতিকে সেখানকার সংবিধানে প্রকৃত শাসকের ক্ষমতা প্রদান করা হলেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে সংবিধান অনুরূপ ক্ষমতা প্রদান করেনি। বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি হলেন নিয়মতান্ত্রিক প্রধান প্রজাতন্ত্রের সকল কাজ তার নামে পরিচালিত হলেও কোনো নির্বাহী ক্ষমতা নেই। অর্থাৎ প্রকৃত শাসন ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে। আবার উদ্দীপকের রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি যে কাউকে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ, আবার যে কাউকে পদচ্যুত করতে পারলেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ- মন্ত্রীদের নিয়োগ ও তাদের দপ্তর বণ্টন করেন। উদ্দীপকের প্রবাস রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি সকল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিচালনা করলেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রের সকল কাজ পরিচালনা করেন। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের রাষ্ট্রপতি তার রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হলেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান আসলে নামমাত্র প্রধান।

ঘ. হ্যাঁ, বাংলাদেশে উদ্দীপকে বর্ণিত সরকারব্যবস্থা অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থা চালু ছিল।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে প্রথমে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হলেও সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হলে আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মুশতাক আহমদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তার শাসনকাল ছিল সংক্ষিপ্ত। পরে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব লাভ করেন বিচারপতি আবু সাদাত মুহাম্মদ সায়েম। এরপর ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। ১৯৭৮ সালের ৩ জুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিয়াউর রহমান জয়লাভ করেন এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ নামের রাজনৈতিক মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮১ সালের ২৯ মে চট্টগ্রামে এক সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়া নিহত হলে সংবিধান অনুযায়ী উপ-রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তার রাষ্ট্রপতি হন। আবদুস সাত্তারের দুর্বল নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ শাসক জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রক্তপাতবিহীন এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। তিনি স্বৈরশাসক হিসেবে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত শাসন করেন। ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানে তার পতনের পর সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরায় চালু হলে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থার অবসান হয়।
এভাবে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মূলত সেনা শাসন আমলেই দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থা চালু ছিল। দেশে সেনা শাসন বহাল রেখে সুবিধামতো সময়ে জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং জেনারেল এরশাদ নির্বাচন সম্পন্ন করে বেসামরিক শাসন চালু করেন। বস্তুত তাদের অগণতান্ত্রিক শাসন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কার্যকলাপ দেশের জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। অবশেষে ১৯৯১ সালে পুনরায় রাষ্ট্রপতি শাসিত তথা সেনা শাসনের পরিবর্তে সংসদীয় সরকারব্যবস্থার যাত্রা শুরু হয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থার অন্তরালে সেনাশাসন চালু ছিল। তখন রাষ্ট্রপতি সকল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা একচ্ছত্রভাবে পরিচালনা করতো।

HSC পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৫ pdf download

৭. রাশেদ তার ভাই-এর সাথে বিবাদে লিপ্ত হলে ভাই রাশেদের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার নিম্ন আদালতের রায়ে রাশেদ সন্তুষ্ট নন। ফলে তিনি ঢাকার উচ্চ আদালতে আপিল করেন। মামলার শুরু থেকে আপিলের রায় পর্যন্ত মোট ১৪ বছর অতিবাহিত হয়। 
ক. বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য পদের ন্যূনতম বয়স কত বছর?
খ. মৌলিক অধিকার বলতে কী বোঝ?
গ. রাশেদ যে আদালতে আপিল করেন তার গঠন বর্ণনা কর।
ঘ. ‘‘উক্ত আদালত জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করে।" বিশ্লেষণ কর।

৭ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য পদের ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর।

খ. মৌলিক অধিকার বলতে আমরা রাষ্ট্রপ্রদত্ত সেসব সুযোগ-সুবিধাকে বুঝি যা ব্যতীত নাগরিকদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ সম্ভব নয়। অর্থাৎ মানুষের ব্যক্তিত্ব ও মেধা বিকাশের জন্য একান্তভাবে অপরিহার্য যে সকল অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক বলবৎকৃত হয় সেইগুলোই মৌলিক অধিকার বলে স্বীকৃত।
মৌলিক অধিকার ব্যতীত সভ্য জীবনযাপন করা সম্ভব নয়। সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই জনগণের মৌলিক অধিকারসমূহ তাদের শাসনতন্ত্রে সন্নিবেশিত থাকে। গণতান্ত্রিক সমাজের মূলভিত্তি হলো মৌলিক অধিকার।

গ. উদ্দীপকের রাশেদ যে আদালতে আপিল করেন তার নাম হলো সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্ট হলো বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। এটি ঢাকা শহরের রমনায় অবস্থিত। সুপ্রিম কোর্ট সচরাচর হাইকোর্ট নামে পরিচিত; কারণ স্বাধীনতার পূর্বে এই ভবনে পূর্ব পাকিস্তানের উচ্চ আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। উদ্দীপকের রাশেদ এ আদালতেই আপিল করেন। নিচে রাশেদের আপিলকৃত আদালত অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের গঠন বর্ণনা করা হলো-
বাংলাদেশ সংবিধানের ৯৪নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট দুটি বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত, যথা: হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এবং প্রত্যেক বিভাগে আসন গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতি যেরূপ সংখ্যক বিচারক নিয়োগের প্রয়োজন বোধ করবেন, সেরূপ সংখ্যক অন্যান্য বিচারক নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগে নিযুক্ত বিচারকগণ কেবল উক্ত বিভাগে এবং অন্যান্য বিচারক কেবল হাইকোর্ট বিভাগে আসন গ্রহণ করবেন। সংবিধানের বিধান সাপেক্ষে প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারকগণ বিচার কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন। রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকবে, তবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে অন্য যে স্থান বা স্থানসমূহ নির্ধারণ করবেন, সেই স্থান বা স্থানসমূহে হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে পারবে।

ঘ. উক্ত আদালত অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্ট জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করে। উক্তিটি নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকারসমূহ কার্যকরী করার সকল দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। এ মর্মে সংবিধানের ১০২নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে যে, (ক) কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আবেদনক্রমে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারসমূহের কোনো একটি বলবৎ করতে এবং প্রজাতন্ত্রের বিষয়াবলির সাথে সম্পর্কিত কোনো দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিসহ যেকোনো ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে হাইকোর্ট বিভাগ উপযুক্ত আদেশ প্রদান করতে পারবে। (খ) হাইকোর্টের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোনো অধস্তন আদালতে বিচারাধীন কোনো মামলায় সংবিধানের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত আইনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িত; তখন হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত আদালত হতে মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়ে স্বয়ং মীমাংসা করবেন।
সংবিধানের ১০৩নং অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায়, ডিক্রি বা দ-াদেশের বিরুদ্ধে আপিল গ্রহণ করার এখতিয়ার রয়েছে আপিল বিভাগের।
তাছাড়া হাইকোর্ট বিভাগ কোনো মামলায় মৃত্যুদ- প্রদান করলে, এর বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নিকট। আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের ঘোষিত রায় পুনর্বিবেচনা করতে পারবেন। অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আইনের ব্যাখ্যা ও ন্যায়বিচার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টকে আইনসভা প্রণীত কোনো আইন যদি সংবিধানের পরিপন্থি হয় তাহলে সে আইনকে বাতিল করে দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সামনে কেউ যদি বিচার প্রার্থী হয়ে বলেন যে, সংশ্লিষ্ট আইন সংবিধানবিরোধী এবং সেই অবৈধ আইন দ্বারা তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাহলে বিচারকরা সেই আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। সংবিধানের ১০২নং অনুচ্ছেদে সংবিধানের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ অংশ বাতিল করার ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। এভাবে সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে।

৮. জলি সরকারের এমন একটি বিভাগের প্রধান,যে বিভাগ দেশ পরিচালনার জন্য নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করে এবং সরকারের আয়-ব্যয় নির্ধারণ করে। উক্ত বিভাগের অনুমোদন ব্যতীত কর ধার্য বা মওকুফ করা যায় না। নির্বাহী বিভাগও উক্ত বিভাগের নিকট দায়ী। 
ক. অভিশংসন কী?
খ. বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে জলি সরকারের যে বিভাগের সদস্য সেটির কার্যক্রমের সাথে বাংলাদেশের কোন বিভাগের কাজের মিল আছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. 'জলির যথাযথ ভূমিকা পালনের ওপরই ঐ বিভাগের সফলতা নির্ভরশীল'ত তুমি কি একমত? যুক্তি দাও।

৮ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. অভিশংসন হলো সাংবিধানিক পদের অধিকারী কোনো ব্যক্তিকে পদচ্যুত করা হবে কি না সে উদ্দেশ্যে আয়োজিত সংসদীয় বিচার।

খ. আইনসভা প্রণীত আইন ও শাসন বিভাগ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না তা বিচার বিভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে। যদি আইনটি বা সিদ্ধান্তটি সংবিধানের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয় তবে বিচার বিভাগ তা বাতিল করে দিতে পারে। বিচার বিভাগের এ ক্ষমতাকে বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা বলে আখ্যায়িত করা হয়।

গ. উদ্দীপকে জলি সরকারের যে বিভাগের সদস্য সেটির কার্যক্রমের সাথে বাংলাদেশের আইন বিভাগের কাজের মিল আছে।
উদ্দীপকের জলি তার দেশের যে বিভাগের প্রধান সে বিভাগ নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করে। বাংলাদেশের আইন বিভাগও আইন সংক্রান্ত নানাবিধ কার্যাদি সম্পাদন করে থাকে। বাংলাদেশের সকল প্রকার আইন প্রণয়নের দায়িত্ব আইন বিভাগ তথা জাতীয় সংসদের ওপর ন্যস্ত।
সরকারের আয়-ব্যয় নির্ধারণ সংক্রান্ত কার্যাদি সম্পাদনে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব অনেক। জাতীয় সংসদ জাতীয় তহবিলের রক্ষক ও অভিভাবক। প্রত্যেক অর্থ বছরের শুরুতে ঐ বছরের জন্য অনুমিত আয়- ব্যয়ের বিবরণ বা বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করে আইন বিভাগ। তদ্রূপ জলি তার দেশের যে বিভাগের প্রধান সেই বিভাগের কাজও হলো সরকারের আয়-ব্যয় নির্ধারণ করা।
কর ধার্য বা মওকুফের দিক থেকেও জলির দেশের আইন বিভাগের সাথে বাংলাদেশের আইন বিভাগের কাজের মিল রয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের অনুমোদন ব্যতীত কোনো কর ধার্য করা যায় না এবং কোনো ব্যয়ও করা সম্ভব হয় না।
জলির দেশের নির্বাহী বিভাগ তার কাজের জন্য আইন বিভাগের নিকট দায়ী। বাংলাদেশের আইন বিভাগের কাজের সাথে এ বিষয়েও মিল রয়েছে। বাংলাদেশের শাসন বিভাগ বা নির্বাহী বিভাগের যাবতীয় কার্য জাতীয় সংসদ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। মন্ত্রিসভা সর্বপ্রকার কাজের জন্য জাতীয় সংসদের নিকট দায়ী।

ঘ. জলি আইন বিভাগের প্রধান তথা স্পিকার। 'জলির যথাযথ ভূমিকা পালনের ওপরই আইন বিভাগের সফলতা নির্ভরশীল' আমি এ বক্তব্যের সাথে একমত।
সংসদ সদস্যরা সংসদের প্রাণ। প্রতিটি সংসদ সদস্যই আইন প্রণেতা। তাদের সঠিক ও যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের উপরই দেশের উন্নয়ন ও শৃঙ্খলা নির্ভর করে। আর এই সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ করান স্পিকার। স্পিকারের ভোটকে কাস্টিং ভোট বলা হয়। আইনসভায় যে আইন পাস হয় তার পক্ষে-বিপক্ষে সংসদ সদস্যরা অংশ নিয়ে থাকে। এতে অনেক সময় এমন পরিস্থিরি উদ্ভব হয় যে, পক্ষ-বিপক্ষ সমান ভোট দিয়েছে। তখন এক পক্ষে ভোট দিয়ে স্পিকার তার মীমাংসা করেন, যা কাস্টিং ভোট নামে পরিচিত। কাস্টিং ভোটের মাধ্যমে স্পিকার সংসদে বিবাদের মীমাংসা করে থাকেন। যে বিধি দ্বারা সংসদ পরিচালিত হয় তাই কার্যপ্রণালি বিধি। আর কার্যপ্রণালি বিধি নিয়ন্ত্রণ করেন স্পিকার। সুতরাং, স্পিকারের যথাযথ ভূমিকা পালনের উপরই আইন বিভাগের সফলতা নির্ভরশীল। রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতিতে বা তার অসামর্থ্যের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির কাজের দায়িত্ব পালন করেন স্পিকার।
সুতরাং, বিষয়টি সহজেই অনুমেয় যে, স্পিকার সম্পাদনের মাধ্যমে আইন বিভাগকে সফল করে তোলেন। আর এ কারণেই বলা যায়, স্পিকার 'জলির যথাযথ ভূমিকা পালনের ওপরই আইন বিভাগের সফলতা নির্ভরশীল'। উল্লিখিত কার্যাবলি

৯. শাহেদ ও জাহেদ দু'জন ভিন্ন রাষ্ট্রের নাগরিক। শাহেদের রাষ্ট্রে সরকার প্রধান আইনসভার নিকট দায়ী থাকেন। কিন্তু জাহেদের রাষ্ট্রে সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান একই ব্যক্তি। তিনি আইনসভার নিকট দায়বদ্ধ নন।
ক. অভিশংসন কী?
খ. বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কীভাবে নির্বাচিত হন?
গ. জাহেদের রাষ্ট্রে কোন ধরনের সরকার বিদ্যমান ব্যাখ্যা কর। 
ঘ. বাংলাদেশের সরকার পদ্ধতির সাথে শাহেদের রাষ্ট্রের কোনো সাদৃশ্য আছে কি? বিশ্লেষণ কর।

৯ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. অভিশংসন হলো সাংবিধানিক পদের অধিকারী কোনো ব্যক্তিকে পদচ্যুত করা হবে কি না সে উদ্দেশ্যে আয়োজিত সংসদীয় বিচার।

খ. বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাঁচ বছরের জন্য একজন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
অর্থ্যাৎ প্রত্যেক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংসদ সদস্যদের দ্বারা মূলত তিনি নির্বাচিত হয়ে থাকেন।

গ. জাহেদের রাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার বিদ্যমান। রাষ্ট্রপতি প্রকৃত শাসনকর্তা হিসেবে দেশ শাসনের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আইনসভার নিকট দায়বদ্ধ নন। এখানে মন্ত্রীরা রাষ্ট্রপতির সেবকমাত্র। রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ বা সাহায্য দান করতে কোনো মন্ত্রিপরিষদ বা উপদেষ্টা পরিষদ থাকতে পারে। এরূপ মন্ত্রিরা বা উপদেষ্টারা একমাত্র রাষ্ট্রপতির ইচ্ছা অনুসারেই নিযুক্ত বা অপসারিত হন। তারা সমস্ত কাজকর্মের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট দায়ী থাকেন। মূলত তারা রাষ্ট্রপতির কর্মচারি হিসেবে কাজ করে থাকেন। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতিই সরকার প্রধান এবং রাষ্ট্রপ্রধান।
জাহেদের রাষ্ট্রের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান একই ব্যক্তি। এছাড়া তিনি আইনসভার নিকট দায়বদ্ধও নন যা রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থার অনুরূপ। তাই বলা যায়, জাহেদের রাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার বিদ্যমান।

ঘ. হ্যাঁ, বাংলাদেশের সরকার পদ্ধতির সাথে শাহেদের রাষ্ট্রের সাদৃশ্য আছে।
শাহেদের রাষ্ট্রে সংসদীয় সরকার বা মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার ব্যবস্থা বিদ্যামান। এরূপ রাষ্ট্রে সরকার প্রধান আইনসভার নিকট দায়ী থাকেন। মন্ত্রিপরিষদ বা সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় নির্বাহী বিভাগ আইনসভার সাথে সম্পর্কযুক্ত। শাহেদের রাষ্ট্রের মত বাংলাদেশেও সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী। তার নেতৃত্বে একটি মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদের সদ্যসরা একই সময়ে আইনসভারও সদস্য থাকেন। মন্ত্রীরা আইনসভার আস্থাভাজন থাকেন। কারণ আইনসভার আস্থা হারালে তাদের পদত্যাগ করতে হয়। এই সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধান এক ব্যক্তি থাকেন না। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা তাদের সকল কাজকর্মের ব্যাপারে ব্যক্তিগতভাবে বা যৌথভাবে আইনসভার নিকট দায়ী থাকেন। মন্ত্রীগণ তাদের নিজস্ব কর্মের ব্যাপারে আইনসভায় বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকেন। উল্লিখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, বাংলাদেশের সংসদীয় সরকার পদ্ধতির সাথে শাহেদের রাষ্ট্রের পুরোপুরি সাদৃশ্য রয়েছে।

১০. রাজু তার বাবার সাথে টেলিভিশনে সংসদ অধিবেশন দেখছিল। অধিবেশনের সংসদ সদস্যগণ সরকারি দলের একজন মন্ত্রীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করছিলেন। তিনি সব প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন। রাজু তার বাবাকে জিজ্ঞেস করল, মন্ত্রী মহোদয় কী সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য। বাবা বললেন, মন্ত্রী মহোদয় উত্তর প্রদান করে সংসদীয় কর্তৃত্বকে স্বীকার করেছেন।
ক. কোরাম কী?
খ. বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে গঠিত হয়?
গ. উদ্দীপকে সংসদের কোন কার্যটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। 
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কার্যটি ছাড়া সংসদ আর কী কী কাজ করতে পারে? বর্ণনা কর।

১০ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে পরিমাণ সদস্যের উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদের কাজ পরিচালনা করা যায় তাকে কোরাম বলা হয়।

খ. সুপ্রিম কোর্ট হলো বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত।
১৯৭২ সালের সংবিধানের ৯৪ নম্বর অনুচ্ছেদ হতে শুরু করে ১১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের গঠন, কার্যাবলি ও মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত। প্রধান বিচারপতির আসন এবং প্রত্যেক বিভাগের আসন গ্রহণ করার জন্য রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক নির্ধারিত সংখ্যক বিচারক নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হবে।

গ. উদ্দীপকে জাতীয় সংসদের জবাবদিহিতা সংক্রান্ত কাজটি ফুটে ওঠেছে।
শাসনবিভাগের যাবতীয় কার্য জাতীয় সংসদ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। মন্ত্রিসভা সর্বপ্রকার কাজের জন্য জাতীয় সংসদের নিকট দায়ী থাকে। জাতীয় সংসদে মন্ত্রীসভাকে তার কাজে জন্য জবাবদিহি করতে হয়। সংসদে যদি মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয় তবে মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হয়। মুলতবি প্রস্তাব, নিন্দা প্রস্তাব, অনাস্থা প্রস্তাব, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা, সংসদীয় বিভিন্ন কমিটি ও সংসদে সাধারণ আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় সংসদ শাসন বিভাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, রাজু তার বাবার সাথে টেলিভিশনে সংসদ অধিবেশন দেখছিল। তারা দেখতে পায় সংসদ সদস্যগণ সরকারি দলের একজন মন্ত্রীকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করছিলেন এবং তিনি সব প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন। এ থেকে বুঝা যায় তারা টেলিভিশনে জাতীয় সংসদের শাসনসংক্রান্ত কাজটি প্রত্যক্ষ করছিল। কারণ মন্ত্রিসভাকে তার কাজের জবাবহিদিতা চাওয়া বা প্রশ্ন করা জাতীয় সংসদের শাসনসংক্রান্ত কাজের অন্তর্গত। সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় মন্ত্রীগণ তাদের নিজস্ব কর্মের ব্যাপারে আইনসভায় বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকেন।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কাজটি ছাড়াও জাতীয় সংসদের আরো কিছু কাজ রয়েছে।
বাংলাদেশের সকল প্রকার আইন প্রণয়নের দায়িত্ব আইন বিভাগ তথা জাতীয় সংসদের ওপর ন্যস্ত। সংসদ যে কোনো আইন প্রণয়ন, প্রচলিত আইনের পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারে। কোনো নতুন আইন পাস করতে হলে তা বিলের আকারে সংসদে পেশ করতে হয়। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের অনুমোদন ব্যতীত কোনো কর ধার্য করা যায় না এবং কোনো ব্যয়ও করা সম্ভব হয় না। বাংলাদেশের শাসন বিভাগ বা নির্বাহী বিভাগের যাবতীয় কার্য জাতীয় সংসদ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। এছাড়া, চাকরি, নির্বাচন, অধ্যাদেশ সংক্রান্ত প্রভৃতি বিষয়ে জাতীয় সংসদের ক্ষমতা রয়েছে। সুতরাং বলা যায় উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রশণ তথা জবাবদিহিতা সংক্রান্ত কার্যটি ছাড়া সংসদ আরো নানাবিধ কার্যাদি সম্পাদন করে।
জাতীয় সংসদ কয়েকটি ক্ষেত্রে নির্বাচকমন্ডলী হিসেবে কাজ করে। সংসদ একটি বিতর্কসভা হিসেবে কাজ করে এবং এর ব্যাপক আলোচনামূলক ক্ষমতা রয়েছে। সংসদ সদস্যগণ যেকোনো বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিতর্ক করতে পারেন। জাতীয় সংসদ জাতীয় অর্থভা-ারের রক্ষক, অভিভাবক ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকে। সংসদ কর্তৃক পাসকৃত আইনের মাধ্যমেই কর ধার্য করা হয় এবং সংসদই আবার ব্যয়ের অর্থ অনুমোদন করে। সরকারি কর্মকা- পরিচালনা করার জন্য যে ব্যয় হবে তা রাষ্ট্রপতির সুপারিশক্রমে সংসদে পেশ করতে হবে। বাজেট পেশ করার পর যদি কোনো বছর অতিরিক্ত ব্যয়ের জন্য অর্থের প্রয়োজন হয় তবে সংসদ তার জন্য অগ্রিম মঞ্জুরি দানের ব্যবস্থা করতে পারবে। সংসদ আইন বলে প্রজাতন্ত্রের কর্মে বা চাকরিতে কর্মচারীদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়, জাতীয় সংসদের জবাবদিহিতা সংক্রান্ত কাজ ছাড়াও আরো অনেক কাজ রয়েছে।

Share:

0 Comments:

Post a Comment