এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Civics and Good Governance 2nd Paper Srijonshil Question Answer pdf download
পৌরনীতি ও সুশাসন
দ্বিতীয় পত্র
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৭
HSC Civics and Good Governance 2nd Paper pdf download
Srijonshil
Question and Answer
১. বিধান সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত আছেন। উক্ত প্রতিষ্ঠান প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগদানের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন, মেধাবী ও দক্ষ লোক বাছাইয়ের কাজ করে।
ক. নির্বাচন কী?
খ. সর্বজনীন ভোটাধিকার বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের সাথে তোমার পঠিত কোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সাদৃশ্য আছে কি? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের ভূমিকার উপর রাষ্ট্রের উন্নয়ন নির্ভরশীল— বিশ্লেষণ করো।
১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. নির্বাচন হলো ভোটদানের মাধ্যমে প্রতিনিধি বাছাইয়ের প্রক্রিয়া।
খ. সর্বজনীন ভোটাধিকার বলতে ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ, ধনী-গরিব নির্বিশেষে প্রাপ্তবয়স্ক সকল নাগরিকের ভোটদানের অধিকারকে বোঝায়।
ভোটদানের অধিকার নাগরিকদের রাজনৈতিক অধিকার। রাষ্ট্রের সংবিধান এবং সরকারি বিধিবিধানের মাধ্যমে স্বীকৃত পন্থায় নাগরিকদের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষমতাকে ভোটাধিকার বলা হয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ভোটদানের অধিকার সর্বত্র স্বীকৃত এবং সংরক্ষিত।
গ. উদ্দীপকের উল্লিখিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির সাথে আমার পঠিত বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সাদৃশ্য আছে।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা প্রতিষ্ঠানটি প্রজাতন্ত্রের বেসামরিক কাজের জন্য মেধাবী ও যোগ্য নাগরিকদের বাছাইয়ের কাজ করে। এজন্য সংস্থাটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কর্মকমিশন বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন সার্ভিস বা পদে নিয়োগকৃতদের পদোন্নতি এবং বদলি সংক্রান্ত বিষয়েও নীতিমালা প্রণয়নের পরামর্শ প্রদান করে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, বিধান সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত আছেন। উক্ত প্রতিষ্ঠান প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগদানের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন, মেধাবী ও দক্ষ লোক বাছাইয়ের কাজ করে। বাংলাদেশে এরূপ কাজ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান হলো বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের ভূমিকার উপর রাষ্ট্রের উন্নয়ন অনেকাংশে নির্ভরশীল।
আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকার কাঠামোয় মেধাবী ও দক্ষ কর্মকতা- কর্মচারীর গুরুত্ব অপরিসীম। এজন্য বিশ্বের প্রায় সকল রাষ্ট্রে মেধার ভিত্তিতে কর্মকর্তা বাছাইয়ের প্রক্রিয়া লক্ষ করা যায়। মেধা যাচাইয়ের ভিত্তিতে যোগ্যতাসম্পন্ন লোক বাছাইয়ের জন্য একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশের এমন একটি প্রতিষ্ঠান হলো বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন।
বাংলাদেশ সংবিধানের ১৩৭ নং অনুচ্ছেদে সরকারি কর্মকমশিন গঠনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও সংবিধানে কর্মকমিশনের কার্যাবলি সম্পর্কে বিধানাবলি সন্নিবেশিত আছে। এ বিধানাবলি অনুসারে কমিশন প্রজাতন্ত্রের কাজে দক্ষ ও উপযুক্ত কর্মচারী নিয়োগের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা, ডাক্তারি পরীক্ষা, পুলিশি তদন্ত প্রভৃতি কার্যক্রম পরিচালনা করে। সততা ও নিরপেক্ষতার সাথে তারা প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাছাই করে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেন। কর্মকমিশন যেহেতু নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেয়, তাই প্রকৃত মেধাবীরাই নিয়োগ পেয়ে থাকেন। আর সৎ, যোগ্য ও মেধাবীদের নিয়ে গড়ে় ওঠা প্রশাসন সুষ্ঠু রাষ্ট্র পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এর ফলে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, সুষ্ঠুভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা এবং এর সার্বিক উন্নয়নে উদ্দীপকে বর্ণিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের ভূমিকা অনেক।
২. মি: 'Y' একজন সিনিয়র আইনজীবী। তিনি যে কোনো আদালতে বক্তব্য পেশ করতে পারেন। সরকারের পক্ষে আইনের জটিল প্রশ্নে মতামত দেন। তার কর্মকান্ডর ওপর সরকারের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। তবে অসদাচরণের কারণে তাকে অপসারণ করা যায়।
ক. বাংলাদেশের সংবিধানের অভিভাবক কে?
খ. সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বলতে কী বোঝ?
গ. মি: ‘Y' কোন ধরনের সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত আছেন? তার ক্ষমতা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মি: 'ণ'-এর ভূমিকা আলোচনা করো।
২ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের সংবিধানের অভিভাবক হলো জাতীয় সংসদ।
খ. সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বলতে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সংবিধান কর্তৃক সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বোঝায়।
প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তার কাজের গতিশীলতার জন্য কতগুলো প্রতিষ্ঠান তৈরি করে। যার ক্ষমতা ও কার্যাবলি সংবিধান অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট ও সুনিয়ন্ত্রিত। এগুলোই হলো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীনভাবে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারে। বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন, নির্বাচন কমিশন, অ্যাটর্নি জেনারেল, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক ইত্যাদি।
গ. মিঃ 'Y' অ্যাটর্নি জেনারেল নামক সাংবিধানিক পদটিতে অধিষ্ঠিত আছেন।
বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী একজন অ্যাটর্নি জেনারেল আছেন। তিনি সরকারের প্রধান আইন সংক্রান্ত উপদেষ্টা। তিনি পদাধিকার বলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশের সকল বারের নেতা। মিঃ ‘Y’-এর মধ্য দিয়ে মূলত এই পদটিকেই নির্দেশ করা হয়েছে।
মিঃ ‘Y’ একজন সিনিয়র আইনজীবী। তিনি যে কোনো আদালতে বক্তব্য পেশ করতে পারেন। সরকারের পক্ষে আইনের জটিল প্রশ্নে তিনিই মতামত প্রদান করেন। তার কর্মকান্ডর ওপর সরকারের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদটির ক্ষেত্রেও এ বিষয়গুলো দৃষ্টিগোচর হয়। কোনো ব্যক্তির অ্যাটর্নি জেনারেল হওয়ার জন্য কমপক্ষে ১০ বছর পর্যন্ত এডভোকেট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন। অ্যাটর্নি জেনারেল দায়িত্ব পালনের জন্য বাংলাদেশের সকল আদালতে তার বক্তব্য পেশ করতে পারেন। সরকার যেসব আইন সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ চাইবেন, তিনি সেসব বিষয়ে সরকারের পরামর্শক হিসেবে কাজ করবেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে সরকারের পক্ষে ওকালতি করবেন। যেসব মামলায় সরকার জড়িত সেগুলোতে তিনি সরকারের পক্ষে মামলা পরিচালনা করবেন। মামলা পরিচালনাকালে তিনি জনস্বার্থ এবং সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী যুক্তি উপস্থাপন করবেন। কারণ তার কথা ও কাজের ওপরই সরকারের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী আদেশ দেয়ার প্রয়োজন দেখা দিলে হাইকোর্ট অ্যাটর্নি জেনারেলকে নোটিশ প্রদান করবেন। হাইকোর্ট তার মতামতের ওপর ভিত্তি করে আদেশ প্রদান করবেন।
ঘ. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মি. ‘Y' অর্থাৎ অ্যাটর্নি জেনারেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
আমরা জানি, অ্যাটর্নি জেনারেল বাংলাদেশের একটি সাংবিধানিক পদ। তিনি রাষ্ট্রের প্রধান সরকারি আইন কর্মকর্তা। বাংলাদেশের সকল আদালতে মামলা পরিচালনার ক্ষমতা তার রয়েছে। এ কারণে রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
বস্তুত অ্যাটর্নি জেনারেলের পদের গুরুত্ব ও তাৎপর্য খুব বেশি। কেননা তিনি আদালতে সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগে সরকারের পক্ষে ওকালতি করেন। তাছাড়া সরকারের আইন উপদেষ্টা হিসেবে দেশের সকল আদালতে তাকে মামলা পরিচালনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংবিধান অনুসারে অ্যাটর্নি জেনারেল সরকারের প্রধান আইন পরামর্শক। তিনি তার এ ক্ষমতা বলে বিচার কাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। তাছাড়া তিনি প্রজাতন্ত্রের পক্ষে জটিল আইন সম্পর্কে মতামত ব্যক্ত করতে পারেন। এক্ষেত্রে আইনের জটিলতাগুলো নিরপেক্ষ ও সঠিকভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করে বিচার কাজে সহায়তা করতে পারেন। তিনি যে সকল মামলায় সরকার জড়িত সে সকল মামলায় সরকারের পক্ষে আদালতে মামলা পরিচালনা করেন। মামলা পরিচালনাকালে তিনি জনস্বার্থ এবং সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল তার এ সকল কর্মকা- সত্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে পরিচালনা করলে তা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তিনি দেশের সকল আদালতে আইনের ব্যাখ্যা দেওয়ার ক্ষমতা প্রাপ্ত। তিনি যদি তার এই ক্ষমতা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সহজতর হয়ে যায়। উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অ্যাটর্নি জেনারেলের ভূমিকা অপরিসীম।
৩. মি. আমিন বাংলাদেশের একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ পদে কর্মরত। প্রজাতন্ত্রের বেসামরিক কর্মে যোগ্য নাগরিকদের নিয়োগের সার্বিক কাজ তাঁর তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়। তাঁর বন্ধু মি. আতিক তার পুত্রের জন্য একটি চাকরির সুপারিশ করেন। মি. আমিন তাঁর বন্ধুকে জানিয়ে দেন তিনি যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। সততার সাথে উপযুক্ত ও দক্ষ লোকের নিয়োগ প্রদান করাই এ প্রতিষ্ঠানের কাজ।
ক. জাতীয় সংসদের সদস্য সংখ্যা কত?
খ. প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল কী?
গ. মি. আমিন কোন প্রতিষ্ঠানে ও কোন পদে কর্মরত? উত্ত প্রতিষ্ঠানের গঠন ও উক্ত পদের পদমর্যাদা বর্ণনা করো।
ঘ. উক্ত প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়নি- বিশ্লেষণ করো।
৩ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জাতীয় সংসদের সদস্য সংখ্যা ৩৫০।
খ. বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার একটি বৈশিষ্ট্য হলো প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল।
বাংলাদেশের সংবিধানে ১১৭ নং অনুচ্ছেদে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা বলা হয়েছে। এটি একটি স্বতন্ত্র বিচার ব্যবস্থা, যা সুপ্রিম কোর্টের অধীনে নয়। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা ও প্রকৃতি, ট্রাইব্যুনালের সদস্যসংখ্যা, সদস্যদের নিয়োগ পদ্ধতি ও কর্মের শর্তাবলি সংসদ আইন দ্বারা নির্ধারিত হয়।
গ. মি. আমিন বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সভাপতির পদে কর্মরত।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানটি দেশের প্রশাসন ব্যবস্থায় সুদক্ষ সরকারি কর্মকর্তা সংগ্রহ ও নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে। উদ্দীপকে এ প্রতিষ্ঠানটিরই ইঙ্গিত লক্ষণীয়।
মি. আমিন প্রজাতন্ত্রের বেসামরিক কর্মে যোগ্য নাগরিকদের নিয়োগের সার্বিক কাজ করে থাকেন। তার প্রতিষ্ঠানটি নিরপেক্ষভাবে সততার সাথে উপযুক্ত ও দক্ষ লোক নিয়োগ করে। আমরা জানি, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনই এ কাজ করে থাকে। একজন সভাপতি এবং কয়েকজন সদস্য নিয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম-কমিশন গঠিত। রাষ্ট্রপতির ৫৭ নং অধ্যাদেশ বলে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সদস্য সংখ্যা সভাপতিসহ অন্যূন ৬ জন এবং অনুর্ধ্ব ১৫ জন নির্ধারিত হয়। বর্তমানে কর্মকমিশনে একজন সভাপতি ও ১২ জন সদস্য রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীনভাবে নিজস্ব কাজ করে। এর ওপর দেশের জনগণের আস্থা বিদ্যমান। কমিশনের সদস্যগণ চাকরি প্রার্থীর যোগ্যতা নিরপেক্ষভাবে বিচার করে সে অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেন। এর সভাপতি ও সদস্যগণ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত। তারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সমান মর্যাদার অধিকারী। এ আলোচনার মাধ্যমে বোঝা যায় মি. আমিন বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সভাপতি হিসেবে কর্মরত।
ঘ. উদ্দীপক দ্বারা ইঙ্গিতকৃত প্রতিষ্ঠান তথা বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সকল কার্যক্রম উদ্দীপকে বর্ণিত হয় নি।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন একটি বিশেষ মর্যাদা ও ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানটি প্রজাতন্ত্রের বেসামরিক কর্মে যোগ্য নাগরিকদের নিয়োগের সার্বিক কাজ করে থাকে। এই কাজটির কথাই উদ্দীপকে বলা হয়েছে। অথচ এ কাজটি ছাড়াও বাংলাদেশ কর্মকমিশন বহুবিধ কাজ করে।
বিভন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ প্রদান, আইনের দ্বারা নির্ধারিত বিভিন্ন দায়িত্বপালন, সরকারি কর্ম কমিশনের ওপর ন্যস্ত। এ কমিশন প্রতিবছর মার্চ মাসের প্রথম দিবসে বা তার পূর্ববর্তী ৩১-এ ডিসেম্বরে সমাপ্ত ১ বছরের স্বীয় কার্যাবলি সংশ্লিষ্ট একটি রিপোর্ট প্রস্তুত করে রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করে, রিপোর্টের সাথে কমিশন একটি স্মারকলিপি পেশ করে। কোনো ক্ষেত্রে কমিশনের কোনো পরামর্শ গৃহীত না হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে তার কারণ স্মারকলিপিতে লিপিবদ্ধ থাকে। কর্মকমিশন বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন সার্ভিস বা পদে নিয়োগের জন্য যোগ্যতা ও পদ্ধতি, পদোন্নতি এবং বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের পরামর্শ প্রদান করে। ক্যাডার সার্ভিস বা কোনো পদে সরাসরি নিয়োগের জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোও কর্মকমিশন কর্তৃক পরিচালিত হয়।
পরিশেষে বলা যায়, একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন প্রভূত ক্ষমতা ও মর্যাদার অধিকারী। এই ক্ষমতাবলে এ প্রতিষ্ঠানটি প্রজাতন্ত্রের সরকারি কর্মে নিয়োগসংক্রান্ত সকল কাজ করে থাকে।
৪. জনাব মিলন ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ'-এর একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। তিনি পেশাগত জীবনে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে অনেক ধনসম্পদের মালিক হন। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্তের ভিত্তিতে মামলা দায়ের ও পরিচালনা করে। বিচার শেষে বিজ্ঞ আদালত তাকে ঐ অপরাধের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করেন।
ক. সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান কাকে বলে?
খ. কীভাবে সরকারি কর্মকমিশন যোগ্য প্রার্থী বাছাই করে?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনাব মিলনের বিরুদ্ধে যে প্রতিষ্ঠানটি মামলা দায়ের করেছে তার কার্যাবলি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটির গৃহীত পদক্ষেপ দুর্নীতি দমনে কতটুকু সহায়ক হবে বলে তুমি মনে কর? মতামত দাও।
৪ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যেসব প্রতিষ্ঠান সংবিধানের সুস্পষ্ট বিধি মোতাবেক নির্বিঘে্ন ও স্বাধীনভাবে তাদের কার্য পরিচালনা করতে পারে সেসব প্রতিষ্ঠানকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বলা হয়।
খ. সরকারি কর্মকমিশন পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করে।
কর্মকমিশন সরকারি কাজে জনবল নিয়োগের জন্য উপযুক্ত লোকদের মনোনয়নের উদ্দেশ্যে পরীক্ষা পরিচালনা করে। কর্মকমিশন যোগ্য প্রার্থীর কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে যোগ্য চাকরিপ্রার্থী বাছাই করে নিয়োগের সুপারিশ করে।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনাব মিলনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা দায়ের করেছে। এ প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতি দমনে বহুবিধ কার্যাবলি পরিচালনা করে থাকে।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায় যে, জনাব মিলন অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে অনেক ধনসম্পদের মালিক হন। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্তের ভিত্তিতে মামলা দায়ের ও পরিচালনা করে। এখানে প্রতিষ্ঠান বলতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে বোঝানো হয়েছে। কেননা দুর্নীতি দমনে উপযুক্ত কার্যাবলিসমূহ দুর্নীতি দমন কমিশনই পরিচালনা করে থাকে।
দুর্নীতি দমন কমিশন 'দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪' এর তফসিলে উল্লিখিত অপরাধসমূহের অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনা করে। অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনার ভিত্তিতে এই আইনের অধীনে মামলা দায়ের ও পরিচালনা করে। দুর্নীতি সম্পর্কিত কোনো অভিযোগ স্ব উদ্যোগে বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তার পক্ষে অন্য ব্যক্তির দাখিলকৃত আবেদনের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে। দুর্নীতি বিষয়ে আইনদ্বারা কমিশনকে অর্পিত যে কোনো দায়িত্ব পালন করে। দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য কোনো আইনের অধীন স্বীকৃত ব্যবস্থাদি পর্যালোচনা এবং কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশ করে। এ কমিশন দুর্নীতি প্রতিরোধের বিষয়ে গবেষণা পরিকল্পনা তৈরি করা এবং গবেষণালব্ধ সুপারিশ পেশ করে। এ কমিশনের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি হলো- দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য সততা ও নিষ্ঠাবোধ সৃষ্টি করা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা; কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এমন সকল বিষয়ের ওপর সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা ইত্যাদি অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা এবং দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে তদনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটির গৃহীত পদক্ষেপ দুর্নীতি দমনে অনেকাংশে সহায়ক বলে আমি মনে করি।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায় যে, জনাব মিলনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান অনুসন্ধান ও তদন্তের ভিত্তিতে মামলা দায়ের ও পরিচালনা করে। বিচার শেষে বিজ্ঞ আদালত তাকে ঐ অপরাধের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করে। এখানে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি হলো দুর্নীতি দমন কমিশন। এ প্রতিষ্ঠানের তৎপরতার কারণেই দুর্নীতির বিচার হয়েছে। এ কমিশনের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে রাষ্ট্রে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্দেশ্য হলো দুর্নীতির বেড়াজাল থেকে দেশকে রক্ষা করা। এ কমিশনের গৃহীত ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের দুর্নীতি অনেকটা হ্রাস করা সম্ভব। দুর্নীতি দমন কমিশনকে আইনানুযায়ী সাক্ষী তলব করা, অভিযোগ সম্পর্কে অভিযুক্তকে জেরা করা, বেসরকারি দলিলপত্র উপস্থাপন করা এবং গ্রেফাতারি পরোয়ানা জারি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪-এ বলা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন অথবা প্রধান দুর্নীতি দমন কমিশনার যেকোনো স্থানে তার ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন এবং দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারবেন। এর ফলে যে কোনো ব্যক্তিই দুর্নীতিতে জড়িত হওয়ার ক্ষেত্রে ভয় পায় এবং দুর্নীতি করা থেকে নিজেকে বিরত রাখে। ২০০৪-এর আইনে দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে যে, তার অধস্তন যেকোনো অফিসার দুর্নীতি বিষয়ে তদন্ত করতে পারবেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে বলা হয়েছে, অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা যাবে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুর্নীতি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কেননা এ আইনের বলে কমিশন দুর্নীতিগ্রস্তদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করলে অন্যরাও দুর্নীতি করার ক্ষেত্রে শাস্তির ভয় পাবে এবং নিজেকে দুর্নীতি মুক্ত রাখতে উদ্বুদ্ধ হবে।
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, দুর্নীতি দমন কমিশন তার ক্ষমতা ও কার্যাবলি যথাযথভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আর এ কারণেই দুর্নীতি দমন কমিশনের পদক্ষেপসমূহ দেশের দুর্নীতি হ্রাসে অনেকটা সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
৫. ফারজানা আক্তার গুরুত্বপূর্ণ একটি সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত আছেন। তিনি জাতীয় স্বার্থের অভিভাবক। মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ৬৫ বছর পর্যন্ত তিনি তার পদে বহাল থাকবেন।
ক. বিশেষ চাহিদার জনগোষ্ঠী কারা?
খ. দুর্নীতি দমন কমিশন বলতে কী বোঝায়?
গ. ফারজানা আক্তার কোন ধরনের সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ পদের সঠিক দায়িত্ব পালনের ফলে সরকারি অর্থের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত হবে বিশ্লেষণ করো।
৫ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সমাজের যে জনগোষ্ঠী স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে ব্যর্থ হয় এবং নিজেদের ও সমাজের চাহিদা পূরণ করতে পারে না, তারাই হলো বিশেষ চাহিদার জনগোষ্ঠী।
খ. প্রশাসন ও সমাজের দুর্নীতি দমন করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে সেটিই হলো দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুর্নীতি দমন কমিশন স্বশাসিত, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ একটি প্রতিষ্ঠান। এটি তিনজন কমিশনারের সমন্বয়ে গঠিত। এদের মধ্যে একজন হলেন চেয়ারম্যান। প্রত্যেকেই মনোনয়ন কমিটির সুপারিশক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে দুর্নীতি দমন কমিশন সব ধরনের আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারেন।
গ. ফারজানা আক্তার মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নামক সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত আছেন।
মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশের সংবিধান দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি পদ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের আয়-ব্যয়ের ওপর আইনসভার 'পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অতীব জরুরি। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৭নং অনুচ্ছেদ অনুসারে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। ফারজানা আক্তারের পদটি এই পদটিকেই নির্দেশ করে। তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক একটি সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি জাতীয় স্বার্থের অভিভাবক। ৬৫ বছর পর্যন্ত তিনি তার পদে বহাল থাকতে পারবেন। মহাহিসাব নিরীক্ষক পদটির ক্ষেত্রেও এ বিষয়গুলো লক্ষ করা যায়। এটি বাংলাদেশের সংবিধান দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি পদ। এটি বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। তাই এই পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিকে জাতীয় স্বার্থের অভিভাবক হয়েই কাজ করতে হয়। সংবিধানের ১২৭নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মহাহিসাব নিরীক্ষক রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ লাভ করবেন। দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হতে পাঁচ বছর অথবা তার বয়স ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি নিজ দায়িত্বে বহাল থাকবেন। সুতরাং বলা যায়, ফারজানা আক্তার মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক পদে বহাল আছেন।
ঘ. উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ পদ তথা মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে সরকারি অর্থের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত হতে পারে।
বর্তমান কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের প্রধান শর্ত হচ্ছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা করা। এ শর্ত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা যথার্থ হওয়া প্রয়োজন। আর এ কাজটি যথার্থভাবে সম্পন্ন করা মহাহিসাব নিরীক্ষকের দায়িত্ব। মহাহিসাব নিরীক্ষক প্রতিবছরের সরকারি আয়-ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। সরকারি খরচে কোনো গলদ আছে কিনা তা তার রিপোর্টেই উঠে আসে। সরকারের যেকোনো অপব্যয় বা অদক্ষতার ব্যাপারেও তিনি রিপোর্ট করতে পারেন। তিনিই বিভিন্ন অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশ অথবা অসামঞ্জস্যের মধ্যে সমন্বয় সাধন করেন। মহাহিসাব নিরীক্ষক অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণে বিতর্কিত বিষয়ে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতে পারেন। তিনি পার্লামেন্টের সরকারি অর্থ নিরীক্ষা কমিটির পথ-প্রদর্শকরূপে কার্যসম্পাদন করেন। অনেক সময় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে শাসনতন্ত্রের ধারণাগুলো কতটুকু প্রয়োগ করা হচ্ছে তাও নিরীক্ষণ করেন।
পরিশেষে বলা যায়, মহাহিসাব নিরীক্ষক উপর্যুক্ত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে অর্থ-ব্যবস্থায় দুর্নীতি ঠেকানো সম্ভব। আর অর্থ-ব্যবস্থায় দুর্নীতি বন্ধ হলে নিঃসন্দেহে সরকারি অর্থের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত হবে।
৬. জনাব মিলটন বাংলাদেশ সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তিনি তার পেশাগত জীবনে সব সময় স্বজনপ্রীতি, উৎকোচ গ্রহণসহ নানাবিধ অপকর্মের সাথে জড়িত। অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের ফলে তিনি আজ বিত্তশালীদের প্রথম স্তরে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্তের ভিত্তিতে মামলা দায়ের ও পরিচালনা করছে।
ক. আইনের জটিল প্রশ্নে কে প্রজাতন্ত্রের পক্ষে মত প্রকাশ করেন?
খ. মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের দুটি ক্ষমতা উল্লেখ করো।
গ. জনাব মিলটনের বিরুদ্ধে কোন সাংবিধানিক সংস্থা মামলা করে? তার গঠন কাঠামো ব্যাখ্যা করো।
ঘ. জনাব মিলটনের মতো সামাজিক অবক্ষয় থেকে উত্তরণের জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় বলে তুমি মনে কর?
৬ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আইনের জটিল প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল প্রজাতন্ত্রের পক্ষে মত প্রকাশ করেন।
খ. মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক জাতীয় অর্থের অভিভাবক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তার দুটি ক্ষমতা নিম্নরূপ:
১. মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব এবং সকল আদালত, সরকারি কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারীর সরকারি হিসাব নিরীক্ষা করবেন এবং অনুরূপ হিসাব সম্পর্কে রিপোর্ট প্রদান করেন
২. এ উদ্দেশ্যে তিনি প্রজাতন্ত্রের কার্যে নিযুক্ত যে কোনো ব্যক্তির নথি, বই, রশিদ, দলিল, নগদ অর্থ, স্ট্যাম্প, জমিন বা সরকারি সম্পত্তি পরীক্ষা করবেন এবং এরূপ হিসাব সম্পর্কে রিপোর্ট দেন।
গ. জনাব মিলটনের বিরুদ্ধে যে সাংবিধানিক সংস্থা মামলা করে তার নাম দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক। কেননা আমরা জানি, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করা হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠান উদ্দীপকের মিলটন সাহেবের মতো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
২০০৪ সালে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হয়। দুদক একজন চেয়ারম্যান ও দু'জন কমিশনারের সমন্বয়ে গঠিত। চেয়ারম্যান কমিশনারের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি অন্য দুই কমিশনারদের দায়িত্ব বণ্টন করেন এবং সেসব কাজের জন্য তারা চেয়ারম্যানের নিকট জবাবদিহি করবেন। তারা দুদক আইন ২০০৪ এর ৭ ধারা অনুযায়ী গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ৫ (পাঁচ) বছর মেয়াদের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন। আইনে কমিশনরাদের মেয়াদকালের নিশ্চয়তা বিধান করে বলা হয়েছে, 'সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক যেরূপ কারণ ও পদ্ধতিতে অপসারিত হতে পারেন, সেরূপ কারণ ও পদ্ধতি ব্যতীত কোনো কমিশনারকে অপসারণ করা যাবে না।' এছাড়া মেয়াদ শেষে তা পুণর্নিযুক্ত হওয়ার যোগ্য হবেন না।
ঘ. জনাব মিলটনের মতো সামাজিক অবক্ষয় থেকে উত্তরণের জন্য দেশে একটি স্থায়ী ও কার্যকর দুর্নীতি প্রতিরোধক পরিবেশ সৃষ্টি করার দায়িত্ব সবার। বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক দল, সরকার, গণতান্ত্রিক মৌলিক প্রতিষ্ঠানসমূহ, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ তথা দেশের সর্বস্তরের জনগণের যৌথ ও সমন্বিত প্রয়াস চালাতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে দুর্নীতির মাত্রা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনতে পাঁচটি ক্ষেত্রে পরিবর্তন, পরিশোধন অত্যন্ত জরুরি। এগুলো হলো-
১. রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন।
২. আইনের শাসন।
৩. প্রশাসনিক সংস্কার ও জবাবদিহিতা।
৪. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা।
৫. বহুমুখী স্থায়ী উদ্যোগ।
পরিশেষে বলা যায়, এসব উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করলে বাংলাদেশের দুর্নীতি কমিয়ে আনা সম্ভব এবং এর ফলে সাধারণ মানুষের হয়রানি কমবে ও জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
৭. জনাব শাহরিয়ার হোসেন 'গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ' এর একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। তিনি পেশাগত জীবনে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে অনেক ধনসম্পদের মালিক হন। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্তের ভিত্তিতে মামলা দায়ের ও পরিচালনা করে। বিচার শেষে বিজ্ঞ আদালত তাকে ঐ অপরাধের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করেন।
ক. সংবিধানের কত নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কর্মকমিশন গঠন করা হয়েছে?
খ. মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বলতে কী বুঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনাব শাহরিয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে যে প্রতিষ্ঠানটি মামলা দায়ের করেছে তার কার্যাবলি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটির গৃহীত পদক্ষেপ দুর্নীতি দমনে কতটুকু সহায়ক হবে বলে তুমি মনে কর? মতামত দাও।
৭ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সংবিধানের ১৩৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কর্মকমিশন গঠন করা হয়েছে।
খ. গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের আয় ব্যয়ের ওপর আইনসভার পূর্ণনিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত। এ নিয়ন্ত্রণকে কার্যকর করার জন্য এমন এক কর্তৃপক্ষ থাকা প্রয়োজন যা স্বাধীনভাবে মজুতকৃত অর্থব্যয়ের হিসাব নিরীক্ষা করে এর রিপোর্ট আইনসভায় পেশ করবে। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রককে নিয়োগ দান করেন। এটি একটি সাংবিধানিক পদ।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনাব শাহরিয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা দায়ের করেছে। এ প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতি দমনে বহুবিধ কার্যাবলি পরিচালনা করে থাকে।
উদ্দীপকে লক্ষ্য করা যায়, জনাব শাহরিয়ার হোসেন অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে অনেক ধনসম্পদের মালিক হন। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্তের ভিত্তিতে মামলা দায়ের ও পরিচালনা করে। এখানে প্রতিষ্ঠান বলতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে বোঝানো হয়েছে। কেননা দুর্নীতি দমনে উপর্যুক্ত কার্যাবলিসমূহ দুর্নীতি দমন কমিশনই পরিচালনা করে থাকে। দুর্নীতি দমন কমিশন 'দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪' এর তফসিলে উল্লিখিত অপরাধসমূহের অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনা করে। অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনার ভিত্তিতে এই আইনের অধীনে মামলা দায়ের ও পরিচালনা করে। দুর্নীতি সম্পর্কিত কোনো অভিযোগ স্ব উদ্যোগে বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তার পক্ষে অন্য ব্যক্তির দাখিলকৃত আবেদনের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে। দুর্নীতি বিষয়ে আইনদ্বারা কমিশনকে অর্পিত যে কোনো দায়িত্ব পালন করে। দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য কোনো আইনের অধীন স্বীকৃত ব্যবস্থাদি পর্যালোচনা এবং কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশ করে। এ কমিশন দুর্নীতি প্রতিরোধের বিষয়ে গবেষণা পরিকল্পনা তৈরি এবং গবেষণালব্ধ সুপারিশ পেশ করে। এ কমিশনের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি হলো- ঙ দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য সততা ও নিষ্ঠাবোধ সৃষ্টি করা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা; কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এমন সকল বিষয়ের ওপর সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা ইত্যাদি অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা এবং দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে তদনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। উপরের আলোচনা শেষে তাই বলা যায়, জনাব শাহরিয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা দায়ের করেছে এবং এ প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতি দমনে বহুবিধ কার্যাবলি সম্পাদন করে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটির গৃহীত পদক্ষেপ দুর্নীতি দমনে অনেকাংশে সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি।
উদ্দীপকে লক্ষ্য করা যায়, জনাব শাহরিয়ার হোসেনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান অনুসন্ধান ও তদন্তের ভিত্তিতে মামলা দায়ের ও পরিচালনা করে। বিচার শেষে বিজ্ঞ আদালত তাকে ঐ অপরাধের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করে। এখানে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি হলো দুর্নীতি দমন কমিশন। এ প্রতিষ্ঠানের তৎপরতার কারণেই দুর্নীতির বিচার হয়েছে। এ কমিশনের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে রাষ্ট্রে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্দেশ্য হলো দুর্নীতির বেড়াজাল থেকে দেশকে রক্ষা করা। এ কমিশনের গৃহীত ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের দুর্নীতি অনেকটা হ্রাস করা সম্ভব। দুর্নীতি দমন কমিশনকে আইনানুযায়ী সাক্ষী তলব করা, অভিযোগ সম্পর্কে অভিযুক্তকে জেরা করা, বেসরকারি দলিলপত্র উপস্থাপন করা এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এ বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশন অথবা কমিশনের প্রধান তথা চেয়ারম্যান যেকোনো স্থানে তার ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন এবং দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারবেন। এর ফলে যে কোনো ব্যক্তিই দুর্নীতিতে জড়িত হওয়ার ক্ষেত্রে ভয় পায় এবং দুর্নীতি করা থেকে নিজেকে বিরত রাখে। ২০০৪-এর আইনে দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে যে, তার অধস্তন যেকোনো অফিসার দুর্নীতি বিষয়ে তদন্ত করতে পারবেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে বলা হয়েছে, অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা যাবে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুর্নীতি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কেননা এ আইনের বলে কমিশন দুর্নীতিগ্রস্তদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করলে অন্যরাও দুর্নীতি করার ক্ষেত্রে ভয় পাবে এবং নিজেকে দুর্নীতি মুক্ত রাখতে উদ্বুদ্ধ হবে।
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশন তার ক্ষমতা ও কার্যাবলি যথাযথভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আর এ কারণেই দুর্নীতি দমন কমিশনের পদক্ষেপসমূহ দেশের দুর্নীতি হ্রাসে অনেকটা সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
৮. অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশের সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে শ্রেণিকক্ষে আলোচনা করছিলেন। তিনি ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বললেন যে, বড় হয়ে তোমরা যারা সরকারি চাকরি করবে। তারা একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রচারিত বিজ্ঞপ্তি দেখেই চাকরির জন্য আবেদন করবে। প্রতিষ্ঠানটি একটি স্বাধীন বিধিবদ্ধ সংস্থা।
ক. বাংলাদেশে সরকারি কর্মে কর্মচারী নিয়োগ বা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে যে প্রতিষ্ঠান তার নাম কী?
খ. সরকারি কর্ম-কমিশনের গঠন লেখ।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি কী কী কাজ করে থাকে? আলোচনা করো।
ঘ. 'এ প্রতিষ্ঠানটি একটি স্বাধীন বিধিবদ্ধ সংস্থা'—উদ্দীপকে উল্লিখিত এ উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
৮ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশে সরকারি কর্মে কর্মচারি নিয়োগ বা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে থাকে যে প্রতিষ্ঠান তার নাম 'বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন'।
খ. বাংলাদেশ সংবিধানের ১৩৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একজন সভাপতি ও আইনের দ্বারা নির্ধারিত হবে সেরূপ অন্যান্য সদস্য নিয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন গঠিত হবে। রাষ্ট্রপতির ৫৭নং অধ্যাদেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য সংখ্যা সভাপতিসহ অনুরূপ ৬ জন এবং অনূর্ধ্ব ১৫ জন নির্ধারিত করা হয়। সংবিধানের ১৩৮ (১) অনুচ্ছেদ মোতাবেক কর্ম কমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং ১৩৯ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যরা ৫ বছর অথবা ৬৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্ব স্ব পদে বহাল থাকবেন।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি হলো বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন। এ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি সংবিধানের '১৪০নং অনুচেছদ অনুযায়ী প্রধানত চার ধরনের দায়িত্ব পালন করে থাকেত
১. প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী মনোনয়নের উদ্দেশ্যে পরীক্ষা পরিচালনা। সরকারি কাজে জনবল নিয়োগের জন্য উপযুক্ত লোকদের মনোনয়নের উদ্দেশ্যে পরীক্ষা পরিচালনা করা এ কমিশনের প্রধান কাজ।
২. নিয়োগ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরামর্শমূলক কাজ। রাষ্ট্রপতি নিয়োগসংক্রান্ত কোনোরূপ পরামর্শ চাইলে তা প্রদান করে কমিশন। যেমন- কোনো নিয়োগের যোগ্যতা নির্ধারণ, পদোন্নতি, অবসরভাতার অধিকার, এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে প্রতিস্থাপন ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করে প্রশাসনকে সহায়তা করা এ কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
৩. বার্ষিক রিপোর্ট প্রদান। কমিশন প্রতিবছর ১লা মার্চ বা তার আগেই আগের বছরের, অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সমাপ্ত এক বছরের কর্মকান্ডর পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট রাষ্ট্রপতি বরাবর পেশ করে।
৪. আইনের দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য কাজ। কমিশন আইনের দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করে।
উপরের এ দায়িত্বগুলো পালনই বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের প্রধান কাজ।
ঘ. ‘এ প্রতিষ্ঠানটি একটি স্বাধীন বিধিবদ্ধ সংস্থা।' উদ্দীপকে উল্লিখিত এ উক্তিটি বিশ্লেষণ করা হলো-
সরকারি কর্ম কমিশন একটি স্বাধীন বিধিবদ্ধ সংস্থা। এ কমিশনের সদস্যর সভাপতি নিয়োগ পদ্ধতি, কর্মের মেয়াদ ও অন্যান্য শর্ত পর্যালোচনা করলে এ কমিশনের স্বাধীন ও স্বতন্ত্র মর্যাদা অনুমিত হয়। কর্ম কমিশনের স্বাধীন মর্যাদা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সংবিধান কমিশনের সভাপতিকে কর্মাবসানের পর প্রজাতন্ত্রে কোনো কর্ম লাভ থেকে বিরত রেখেছেন। কমিশনের সভাপতি ও সদস্যদের রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করেন, কিন্তু প্রমাণিত ক্ষেত্র ব্যতীত ইচ্ছামতো তিনি তাদের অপসারণ করতে পারেন না। কর্ম কমিশনের সদস্যবৃন্দ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সমমর্যাদার অধিকারী।
আইন ও শাসন বিভাগের প্রভাবমুক্ত থেকে তারা নিজস্ব দায়িত্ব পালন করবেন। নিয়োগের পর কমিশনের সভাপতি ও সদস্যবৃন্দের বেতনভাতা ও সুবিধাদির ব্যাপারে কোনো পরিবর্তন করা যাবে না। এ উদ্দেশ্যে গৃহীত ব্যয় বাংলাদেশ সরকারের নির্দিষ্ট তহবিল থেকে ব্যয়িত হবে এবং তা সংসদে ভোটযোগ্য হবে না।
পরিশেষে বলা যায়, কর্ম কমিশন একটি নিরপেক্ষ বিধিবদ্ধ সংস্থা। ন্যায়নিষ্ঠ, অভিজ্ঞ ও সততার বৈশিষ্ট্যমন্ডিত পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দের প্রতি জনগণের প্রগাঢ় আস্থা বিরাজমান।
৯. জনাব সোহরাব হোসেন 'ক' নামক সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জনাব আলাল সাহেব নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে জনাব সোহরাব হোসেন সংশ্লিষ্ট সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় উক্ত প্রতিষ্ঠান আলাল সাহেবের মনোনয়ন বাতিল করে দেন।
ক. মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রককে কে নিয়োগ দেন?
খ. দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জনাব সোহরাব হোসেন সাহেব কোন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দায়ের করেন? উক্ত প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলী ব্যাখ্যা করো।
ঘ. গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উক্ত প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা মূল্যায়ন করো।
৯ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রককে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
খ. দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান বলতে এমন সংবিধানকে বোঝায় যা সহজে পরিবর্তন করা যায় না। দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের পরিবর্তন পদ্ধতি জটিল হয়। সাধারণ আইন তৈরির পদ্ধতিতে এ সংবিধান পরিবর্তন করা যায় না।
উদাহরণস্বরূপ- বাংলাদেশের সংবিধানের কথা বলা যায়। এ সংবিধানের কোনো ধারার পরিবর্তন করতে হলে জাতীয় সংসদ সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশের সম্মতি প্রয়োজন। এটি কার্যকর করার জন্য রাষ্ট্রপতির সম্মতিও থাকতে হবে।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সোহরাব হোসেন সাহেব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সংবিধানে নির্বাচন ব্যবস্থার সংগঠন, নির্বাচনি বিধিবিধান এবং নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণের জন্য নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যবস্থা রয়েছে। গণতন্ত্রের একটি মৌলিক বিষয় হলো নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে নির্বাচন কমিশন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে ১১৯নং অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ও কার্যাবলি বর্ণিত আছে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি আচরণবিধি ঘোষণা করে এবং কেউ এ আচারণবিধি লঙ্ঘন করলে নির্বাচনে কমিশনে তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে অভিযোগ দায়ের করা যায়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, মেয়র পদপ্রার্থী সোহরাব হোসেন সাহেবের প্রতিদন্দ্বী নির্বাচনি আচরণবিধি ঘন করলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দায়ের করেন। যেহেতু নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করার বিধান রয়েছে, তাই বলা যায় জনাব সোহরাব হোসেন সাহেব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘ. গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন কমিশন অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রাণ হলো অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন। কেবলমাত্র অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায় প্রকাশ পায়।
নির্বাচন যদি গ্রহণযোগ্য না হয়, তবে জনগণের মতের কোনো গুরুত্ব থাকে না। অনেক সময় ভোট কারচুপি করে জাতীয় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়। আর এই কারচুপির মতো দুর্নীতি একমাত্র নির্বাচন কমিশনের পক্ষেই ঠেকানো সম্ভব।
এ প্রসঙ্গে ১৯৯০ সালের পূর্বে কয়েকটি নির্বাচনের কথা উল্লেখ করা যায়। যেখানে ভোট কারচুপির মাধ্যমে সরকার ক্ষমতায় এসেছিল বলে সেই সরকারকে আমরা স্বৈরাচারী সরকার বলে থাকি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের মতের মূল্যায়ন করার সুযোগ তৈরি হয়। আর অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নির্ভর করে নির্বাচন কমিশনের সততা, দক্ষতা ও আন্তরিকতার ওপর।
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে তাই বলা হয়, নির্বাচন কমিশন যত গণতান্ত্রিক হবে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা ততটাই সহজতর হবে।
১০. ড. শাহাদাৎ হোসাইন বাংলাদেশ সরকারের একটি সাংবিধানিক সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে সহযোগিতা করার জন্য অন্যান্য সদস্যরাও আছেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মে মেধাবী, দক্ষ ও যোগ্য লোক বাছাই এর জন্য তারা অত্যন্ত গোপনীয়তা ও নিরপেক্ষতার সাথে কাজ করছেন।
ক. BPSC-এর পূর্ণরূপ কী?
খ. গ্রিন হাউজ এফেক্ট কী?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব ও ক্ষমতা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগের জন্য উক্ত প্রতিষ্ঠানের গোপনীয়তা ও নিরপেক্ষতা কেন অপরিহার্য? ব্যাখ্যা কর।
১০ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. BPSC-এর পূর্ণরূপ হলো- Bangladesh Public Service Commission.
খ. বায়ুম-লে বিভিন্ন প্রকার গ্যাস সূর্যের তাপ আটকে রেখে পৃথিবীকে উষ্ণ করে তোলে। এসব গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাবকে গ্রিন হাউজ এফেক্ট বলে।
গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়ায় বিকীর্ণ তাপ ভূ-পৃষ্ঠে উপস্থিত বায়ুম-লের নিম্নস্তরে ফিরে এসে ভূ-পৃষ্ঠের তথা বায়ুম-লের গড় তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। প্রাকৃতিক গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া পৃথিবীতে প্রাণীজগতের বসবাস উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। কিন্তু মানুষের বিভিন্ন কর্মকা- বিশেষত জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত দহন এবং বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণে প্রাকৃতিক গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া তীব্রতর হয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি করছে, যার নেতিবাচক প্রভাব ব্যাপক।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশনের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো মেধাবী, দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তা বাছাই করা।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন প্রজাতন্ত্রের কাজে দক্ষ ও উপযুক্ত কর্মচারী নিয়োগের উদ্দেশ্যে যাচাই ও পরীক্ষা পরিচালনা করে। রাষ্ট্রপতি কোনো বিষয়ে পরামর্শ চাইলে বা কমিশনের দায়িত্ব সম্পর্কে কোনো বিষয় কমিশনের নিকট প্রেরণ করা হলে সে সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে উপদেশ প্রদান করে। কর্মকমিশন প্রতিবছর মার্চ মাসের প্রথম দিবসে বা তার পূর্বে পূর্ববর্তী ৩১ ডিসেম্বর সমস্ত এক বছরের স্বীয় কার্যাবলি সম্পর্কে রিপোর্ট প্রস্তুত করবে এবং তা রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করবে। কর্মকমিশন আইনের দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করবে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি কমিশনের সাথে পরামর্শ করবেন। সরকারি কর্মকমিশন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তাদের বাছাই, নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদির দায়িত্ব পালন ও এসব বিষয়ে ক্ষমতা প্রয়োগ করে। আর বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন উপরোল্লিখিত ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালন করে। যা উদ্দীপকে উল্লিখিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব ও ক্ষমতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ. প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করে বলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের অর্থাৎ সরকারি কর্মকমিশনের গোপনীয়তা এবং নিরপেক্ষতা অপরিহার্য।
কর্মকমিশনকে যোগ্য ও মেধাবীদেরকে কর্মকর্তা হিসেবে বাছাই ও নিয়োগ দেওয়ার জন্যই তাদের কাজ কর্মে গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে উঠে যোগ্য লোক বাছাইয়ের জন্য কর্মকমিশনের এ গোপনীয়তা অপরিহার্য। রাষ্ট্রে সাফল্য নির্ভর করে একটি দক্ষ ও সৎ প্রশাসনের ওপর। তাই কর্মকমিশনকে দক্ষ ও সৎ লোক বাছাই ও নিয়োগ দানে সচেষ্ট থাকা উচিত। এক্ষেত্রে কর্মকমিশন রাজনৈতিক চাপ, তদবির, হুমকি, প্রলোভন ইত্যাদিকে এড়াতে পারলেই একটি ভালো প্রশাসন গড়ে় তোলা সম্ভব। শুধু সততা নয়, দক্ষতাও এক্ষেত্রে কর্মকমিশনের আবশ্যকীয় গুণ হিসেবে বিবেচ্য হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশ কর্মকমিশন একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। তারা নিরপেক্ষতার সাথে প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাছাই ও নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে জাতি, বর্ণ, ধর্ম, নারী-পুরষ কোনো ভেদাভেদ না করে সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তা- কর্মচারী বাছাই করে। একটি দেশের শাসন ব্যবস্থা সে দেশের প্রশাসনের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। দেশের প্রশাসন ব্যবস্থা ভালো হলে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং আইনের শাসন কার্যকর হয়। এ জন্য প্রয়োজন দক্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা। আর দক্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ দানের ক্ষেত্রে কর্মকমিশনের গোপনীয়তা ও নিরপেক্ষতা প্রয়োজন।
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, যোগ্য ও দক্ষ প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কর্মকমিশনের গোপনীয়তা এবং নিরপেক্ষতা অপরিহার্য।
0 Comments:
Post a Comment