ধ্বনি পরিবর্তন কি? এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা - Exam Cares

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

ধ্বনি পরিবর্তন কি? এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

Bangla 2nd Paper pdf download
ধ্বনি পরিবর্তন
◉ স্বরাগমঃ উচ্চারণকে সহজতর করার জন্য শব্দের স্বরধ্বনির আগমনকে স্বরাগম বলে।

◉ আদি স্বরাগমঃ শব্দের আদিতে বা শুরুতে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরগম বলে। যেমন-
স্ত্রী>ই + স্ত্রী=ইস্ত্রী, স্কুল>ই + স্কুল= ইস্কুল, স্টিমার>ই + স্টিমার= ইস্টিমার। এরূপ-আস্তাবল, অস্পর্ধা ইস্টিশন ইত্যাদি।

◉ মধ্য স্বরাগমঃ উচ্চারণের সুবিধার জন্য সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির মাঝখানে বা শব্দের  মাঝখানে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে মধ্য স্বরাগম বলে। যেমন- 
অ-রত্ন>রতন, ধর্ম>ধরম, স্বপ্ন>স্বপন, হর্ষ>হরষ।
ই-প্রীতি>পিরীত, ফিল্ম>ফিলিম, ডাল>ডাইল।
উ-ভ্রু>ভুরু, চাল>চাউল।
এ-স্রেফ>সেরেফ।

◉ অন্ত্য স্বরাগমঃ উচ্চরণের সময় শব্দের শেষে স্বরধ্বনি আসলে তাকে অন্ত্য স্বরাগম বলে। যেমন-
দিশ>দিশা, পোখত>পোক্ত, সত্য>সত্যি
সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপঃ দ্রুত উচ্চরণের জন্য শব্দের কোন স্বরধ্বনি লোপকে সম্প্রকর্ষ বলে। যেমন-
বসতি>বসতি, জানালা>জানলা

◉ আদি স্বরলোপঃ অলাব>লাবু>লাউ, উদ্বার>উধার>ধার।

◉ মধ্য স্বরলোপঃ অগুরু>অগ্রু, সুবর্ণ>স্বর্ণ, গৃহিণী>গিন্নী।

◉ অন্ত্য স্বরলোপঃ অগ্নি>আগুন, চারি>চার্

◉ অপিনিহিতিঃ কোন শব্দের মধ্যকার স্বরধ্বনি যদি যথাস্থানে উচ্চারিত না হয়ে পুর্বে উচ্চারিত হয় তবে তাকে অপনিহিতি বলে।
যেমন-আজি>আইজ, সাধু>সাউধ

◉ অভিশ্রুতিঃ অপিনিহিতি শব্দের স্বরধ্বনিগুলো পরিবর্তিত হয়ে যদি শব্দটি নতুন রূপ ধারণ করে তবে তাকে অভিশ্রুতি বলে।
অন্য কথায়, অপিনিহিতি শব্দের মধ্যস্থিত ই বা্ উ উচ্চারণকালে পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির সাথে মিলিত হয়ে যে ধ্বনি পরিবর্তন ঘটে তাকে অভিশ্রুতি বলে।
মূল শব্দ অপিনিহিত শব্দ অভিশ্রুতি
করিয়া > কইর‌্যা > করে
আজি  > আইজ > আজ
আসিয়া > আইস্যা > এসে

◉ সকল সাধুভাষার ক্রিয়াপদ অভিশ্রুতির মাধ্যমে চলিতরূপ লাভ করে।

◉ স্বরসঙ্গতিঃ এক স্বরের প্রভাবে অন্য স্বরের পরিবর্তন ঘটলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলে। যেমন-
দেশি >দিশি, বিলাতি >বিলিতি, বুড়া >বুড়ো।

◉ প্রগত স্বরসঙ্গতিঃ আদি স্বরের প্রভাবে পরবর্তী স্বর পরিবর্তিত হলে তাকে প্রগত স্বরসঙ্গতি বলে। যেমন-
মুলা >মুলো, শিকা >শিকি।

◉ পরাগত স্বরসঙ্গতিঃ পরবর্তী স্বরের প্রভাবে আদিস্বরের পরিবর্তন হলে তাকে পরাগত স্বরসঙ্গতি বলে। যেমন-
দেশি >দিশি, আখো >এখো।

◉ মধ্যগত স্বরসঙ্গতিঃ আদিস্বর অথবা অন্ত্যস্বর অনুযায়ী মধ্যস্বর পরিবর্তিত হলে মধ্যগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন-
বিলাতি >বিলিতি।

◉ অন্যোন্য স্বরসঙ্গতিঃ আদ্য এবং অন্ত্য উভয় স্বর্ই পরস্পর প্রভাবিত হয়ে পরিবর্তিত হলে তাকে অন্যান্য স্বরসঙ্গতি বলে। যেমন-
মোজা >মুজো।

◉ ধ্বনি বিপর্যয়ঃ শব্দের মধ্যকার দুটো ব্যঞ্জন বর্ণের পরস্পরের মধ্যে যদি স্থান পরিবর্তন ঘটে তবে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে্। যেমন-
পিশাচ >পিচাশ, বাকস >বাসক, রিকসা >রিসকা, জানালা >জালানা।

◉ বিষমীভবনঃ পদ মধ্যস্থিত দুটি সমবর্ণের মধ্যে একটি পরিবর্তিত হলে তাকে বিষমীভবন বলে। যেমন-
শরীর>শরীল, লাল>নাল।

◉ সমীভবনঃ শব্দ মধ্যস্থিত দুটো ভিন্ন ধ্বনি একে অপরের প্রভাবে অল্পবিস্তর সমতা লাভ করে, ধ্বনি পরিবর্তনের এ রীতিকে বলা হয় সমীভবন। যেমন-
চক্র>চক্ক, পদ্ম>পদ্দ, লগ্ন>লগগ, কাঁদনা>কান্না।

◉ প্রগত সমীভবনঃ পরবর্তী ধ্বনির প্রভাবে পূর্ববর্তী ধ্বনির পরিবর্তন ঘটলে প্রগত সমীভবন বলে। যেমন- 
চক্র>চক্ক, পদ্ম>পদ্দ।

◉ পরাগত সমীভবনঃ পরবর্তী ধ্বনির প্রভাবে পূর্ববর্তী ধ্বনির পরিবর্তন হলে পরাগত সমীভবন বলে। যেমন- 
তৎ + জন্য>তজ্জন্য, তৎ + হিত>তদ্বিত, উৎ + মুখ>উন্মুখ।

◉ অন্যান্য সমীভবনঃ যখন পরস্পরের প্রভাবে দুটো ধ্বনিই পরিবর্তিত হয় তখন তাকে অন্যান্য সমীভবন বলে। যেমন-
সংস্কৃত সত্য>প্রাকৃত সচ্ছ, সংস্কৃত বিদ্যা>প্রাকৃত বিজ্জা ইত্যাদি। 

◉ অসমীকরণঃ একই স্বরের পুনরাবৃত্তি দূর করার জন্য মাঝখানে স্বরধ্বনি যুক্ত হলে তাকে অসমীকরণ বলে। যেমন- ধপ + ধপ>ধপাধপ, টপ + টপ>টপাটপ।
ধ্বনি পরিবর্তন কি? এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here