ব্যাকরণ কাকে বলে? বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়সমূহ কি কি? - Exam Cares

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

ব্যাকরণ কাকে বলে? বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়সমূহ কি কি?

Bangla 2nd Paper pdf download
ব্যাকরণ
◉ ব্যাকরণ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বিশেষভাবে বিশ্লেষণ (বি + আ + কৃ/কর + অন)
◉ সর্বপ্রথম ব্যাকরণ রচনা করেন পাণিণী। তাঁর ব্যাকরণের নাম অষ্ট্যাধ্যায়ী। এটি আনুমানিক খ্রি. পূ. সপ্তম শতকে রচনা করা হয়। এই ব্যাকরণের ভাষ্যকার হচ্ছেন পতঞ্জলি।
◉ সর্বপ্রথম ১৭৩৪ সালে বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন ম্যানুয়াল দ্যা আস্সুম্পসাঁও। ১৭৩৪ সালে রোমান হরফে এটি মুদ্রিত হয়।
◉ এরপর ব্যাকরণ রচনা করেন ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড। ১৭৭৮ সালে এটি প্রকাশিত হয় 
◉ এরপর ব্যাকরণ রচনা করেন উইলিয়াম কেরি, ১৮০১ সালে এটি প্রকাশিত হয়। 
◉ বাঙালিদের মধ্যে সর্ব প্রথম ব্যাকরণ রচনা করেন রাজা রামমোহন রায় ১৮২৬ সালে। কলকাতার স্কুল বুক অব সোসাইটি কর্তৃক এটি প্রকাশিত হয়। তাঁর এ ব্যাকরণের নাম গৌড়ীয় ব্যাকরণ।

◉ বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়ঃ ৪টি
১. ধ্বনিতত্ত্ব
২. শব্দতত্ত্ব বা পদক্রম
৩. বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম
৪. অর্থতত্ত্ব

◉ ধ্বনিতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়সমূহঃ
ধ্বনিতত্ত্বঃ ধ্বনি, ধ্বনি প্রকরণ, ধ্বনির উচ্চারণ, ধ্বনির বিন্যাস, ধ্বনির পরিবর্তন, বর্ণ, সন্ধি, ষ-ত্ব বিধান, ণ-ত্ব বিধান প্রভৃতি ধ্বনি সম্বন্ধীয় ব্যাকরণের বিষয়গুলি ধ্বনিতত্ত্বে আলোচিত হয়।

◉ শব্দ বা রূপতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়সমূহঃ
শব্দ বা রূপতত্ত্ব শব্দ, শব্দের প্রকার, পদ প্রকরণ, শব্দ গঠন, উপসর্গ, প্রত্যয়, বিভক্তি, লিঙ্গ, বচন, ধাতু, শব্দরূপ, কারক, সমাস, ক্রিয়া-প্রকরণ, ক্রিয়ার কাল, ক্রিয়ার ভাব, শব্দের ব্যুৎপত্তি ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা শব্দ বা রূপতত্ত্বে থাকে।

◉ বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রমের আলোচ্য বিষয়সমূহঃ
বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রমঃ বাক্য, বাক্যের অংশ, বাক্যের প্রকার, বাক্য বিশ্লেষণ, বাক্য পরিবর্তন, পদক্রম, বাগ্ধারা, বাক্য সংকোচন, বাক্য সংযোজন, বাক্য বিয়োজন, যতিচ্ছেদ বা বিরামচিহ্ন প্রভৃতি বিষয় বাক্যতত্ত্বে আলোচিত হয়।

◉ অর্থতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়সমূহঃ
অর্থতত্ত্বঃ শব্দের অর্থবিচার, বাক্যের অর্থ বিচার, অর্থের বিভিন্ন প্রকারভেদ। যেমন-মুখ্যার্থ, গৌণার্থ, বিপরীতার্থক শব্দ ইত্যাদি অর্থতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়।
ক. ছন্দপ্রকরণ খ. অলংকার।
ধ্বনি ও বর্ণ প্রকরণ

◉ ধ্বনিঃ কোন ভাষার উচ্চারিত শব্দকে বিশ্লেষণ করলে তার যে পরমাণু বা অবিভাজ্য ক্ষুদ্রতম অংশ পাওয়া যায় তাই ধ্বনি। যেমন- অ, আ, ক, খ।
◉ বর্ণঃ ধ্বনির চক্ষু গ্রাহ্য লিখিত রূপ বা ধ্বনি নির্দেশক প্রতীক বা চিহ্নকেই বর্ণ বলে। যেমন- অ, আ, ক, খ।
◉ অক্ষরঃ নিঃশ্বাসের স্বল্পতম প্রয়াসে একই বক্ষ স্পন্দনের ফলে যে ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছ একবার একত্রে উচ্চরিত হয় তাকে অক্ষর বলে। যেমন- ‘আমরা’ শব্দটিতে ‘আম’ ‘‘রা’’ এই দুইটি অক্ষর।
K) বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত বর্ণগুলির সমষ্টিকে বর্ণমালা বলে। 
L) বর্ণ দু’প্রকার । যথা-স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জন বর্ণ।
M) স্বরবর্ণঃ যে সকল বর্ণ অন্য ধ্বনির সাহায্য ছাড়া উচ্চরিত হয় তাকে স্বরবর্ণ বলে। স্বরবর্ণ ১১টি।
N) ব্যঞ্জন বর্ণঃ যে সকল বর্ণ স্বরের সাহায্যে ব্যক্ত বা উচ্চারিত হয় তাকে ব্যঞ্জন বর্ণ বলে। ব্যঞ্জন বর্ণ ৩৯ টি।
O) মাত্রাঃ বাংলা বর্ণমালার কোন কোন বর্ণের উপরে ‘রেখা’ বা ‘কষি’ দেওয়া হয়। একে বলা হয় মাত্রা।
P) পূর্ণ মাত্রার বর্ণ-অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, ক, ঘ, চ, ছ, জ, ঝ, ট, ঠ, ড, ঢ, ত, দ, ন, ফ, ব, ভ, ম, য, র, ল, ষ, স, হ, ড়, ঢ়, য়। মোট ৩২ টি।
Q) অর্ধ মাত্রাযুক্ত  বর্ণ-ঋ, খ, গ, ণ, থ, ধ, প, শ। মোট ০৮ টি।
R) মাত্রাহীন বর্ণ- এ,  ঐ, ও, ঔ, ঙ, ঞ, ৎ, ং,ঃ। ১০ টি।
S) পূর্ণ মাত্রার স্বর বর্ণ- অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, । মোট ০৬ টি।
T) অধমাত্রাযুক্ত স্বরবর্ণ- ঋ। ১ টি।
U) মাত্রাহীন স্বরবর্ণ- এ, ঐ, ও, ঔ। মোট ০৪ টি।
V) হসন্ত চিহ্নঃ স্বরবর্ণ যুক্ত না হলে ব্যঞ্জন বর্ণের নিমেণ একটি বিশেষ চিহ্ন দেওয়া হয়। ঐ চিহ্নের নাম হসন্ত চিহ্ন। যথাঃ- ক্, দ্, বাক্য।
W) বর্ণ সংযোগঃ বর্ণে বর্ণে যোগ করাকে বর্ণ সংযোগ বলে। বিভিন্ন বর্ণ সংযোগে শব্দ সৃষ্টি হয়। যেমন- ক্ + অ + ব্ + ই = কবি।
X) বর্ণ বিশ্লেষণঃ শব্দস্থিত বর্ণগুলি পৃথক করে দেখানো নাম বর্ণ বিশ্লেষণ। যথা- বিষ্ণু = ব্ + ই + ষ্ + ণ্ + উ

◉ উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী স্বরধ্বনির ৭টি অবস্থানঃ
সম্মুখ    মধ্যস্থ পশ্চাৎ
উচ্চ ই/ঈ  উ/ঊ
উচ্চ মধ্য এ  ও
নিমণ মধ্য এ্যা আ অ

◉ উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী ব্যঞ্জনধ্বনিগুলোকে পাঁচভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো নিমণরূপঃ
নাম বণ উচ্চারণ স্থান
কণ্ঠ্য ক, খ, গ, ঘ, ঙ জিহবামূল
তালব্য চ, ছ, জ, ঝ, ঞ, শ, য়, য অগ্রতালু
মুর্ধন্য ট, ঠ, ড, ঢ, ণ, র, ড়, ঢ়, ষ পশ্চাৎ দন্তমূল
দন্ত্য ত, থ, দ, ধ, ন, ল, স অগ্র দন্তমূল
ওষ্ঠ্য প, ফ, ব, ভ, ম ওষ্ঠ্য

◉ উচ্চারণরীতি অনুযায়ী ব্যঞ্জনধ্বনির শ্রেণিবিভাগঃ
স্পর্শধ্বনি বা বর্গীয় ধ্বনিগুলো উচ্চারণ স্থানের দিক থেকে পাঁচটি বর্গ বা গুচ্ছে মহাপ্রাণ। অল্পপ্রাণ ও মহাপ্রাণ ধ্বনি আবার দুভাগে বিভক্ত; যথা- অঘোষ ও ঘোষ। উচ্চারণ রীতি অনুযায়ী স্পর্শ ব্যঞ্জনধ্বনিগুলোর ধ্বনিতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ।

◉ ব্যঞ্জন ধ্বনির উচ্চারণঃ
 অঘোষ ঘোষ 
 অল্পপ্রাণ মহাপ্রাণ অল্পপ্রাণ মহাপ্রাণ নাসিক্য তাড়ন জাত পার্শ্বিক উস্ম অন্তস্থ ধ্বনি পরাশ্রয়ী
 ড় ঢ়    
কণ্ঠ্য ক খ গ ঘ ঙ  ল স ষ শ ব ল য ংঃঁ
তালব্য চ ছ জ ঝ ঞ কম্পন জাত ধ্বনি    
মূর্ধা ট ঠ ড ঢ ণ     
দন্ত্য ত থ দ ধ ন র    
ওষ্ঠ্য প ফ ব ভ ম     
K) ক-ম পর্যন্ত ২৫টি ধ্বনিকে স্পৃষ্ট/স্পর্শ/বর্গীয় ধ্বনি বলে।
L) য, র, ল, ব অমত্মঃস্থ ধ্বনি।
M) হ-ঘোষ মহাপ্রাণ ধ্বনি।
N) শ, ষ, উষ্ম ধ্বনি।
O) ং,ঃ,ঁ, পরাশ্রয়ী বর্ণ।
P) বাংলা ভাষার যৌগিক স্বরধ্বনির সংখ্যা পঁচিশ। বাংলা বর্ণমালায় যৌগিক স্বরজ্ঞাপক দুটো বর্ণ রয়েছে। ঐ এবং ঔ। 

◉ উচ্চারণ স্থান (ব্যঞ্জন ধ্বনি)ঃ
ব্যাঞ্জনবর্ণ প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত। যথা- 
K) স্পর্শ বর্ণঃ উচ্চারণ স্থানে অর্থাৎ কণ্ঠ, তালু প্রভৃতির সাথে জিহবার কোনো না কোনো অংশের সম্পূর্ণ স্পর্শ বা যোগ হয় বলে এগুলো স্পর্শ বর্ণ। যথা-ক থেকে ম পর্যন্ত।
L) অমত্মঃস্থ বর্ণঃ স্পর্শ বর্ণ ও উষ্ম বর্ণের মধ্যে অবস্থিত বলে এদেরকে অমত্মঃস্থ বর্ণ বলা হয়। যথাঃ য, র, ল, ব।
M) উষ্মবর্ণঃ উচ্চারণ উষ্মা অর্থাৎ বায়ু প্রধানভাবে থাকে বলে এগুলোকে উষ্মবর্ণ বলে। যেমন-শ, ষ, স, হ।
N) উচ্চারণ স্থান অনুসারে স্পর্শ পাঁচটি বর্ণের বিভাগ আছে। সেগুলোকে বর্গ বলে। যেমন- ক-বর্গ, চ-বর্গ, ট-বর্গ, ত-বর্গ ও প-বর্গ।
O) অঘোষ ধ্বনিঃ কোন কোন ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরিত হয় না। তখন ধ্বনিটির উচ্চারণ গাম্ভীর্যহীন মৃদু হয়। এ রূপ ধ্বনিকে বলা হয় অঘোষ ধ্বনি। যথা- ক খ চ ছ ট ঠ ত থ প ফ শ ষ স ।
P) ঘোষ ধ্বনিঃ ধ্বনির উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুপ্রাণিত হলে ঘোষ ধ্বনি হয়। যথাঃ প্রতি বর্গের শেষ তিনটি বর্ণ এবং হ।
Q) প্রতি বর্গের প্রথম, তৃতীয় ও পঞ্চম ধ্বনির উচ্চারণকালে শ্বাস বায়ূ অল্প নির্গত হয় বলে এগুলোকে অল্পপ্রাণ ধ্বনি বলে।
R) বর্গের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বর্ণ এবং উষ্ম বর্ণে উচ্চারণকালে শ্বাস বায়ু অধিক নির্গত হয় বলে এগুলোকে মহাপ্রাণ ধ্বনি বলে।
S) ‘য,’ ‘র’, ‘ল’, ‘ব’ এদের বিশুদ্ধ উচ্চারণ স্বর ও ব্যঞ্জন ধ্বনির মধ্যবর্তী। এরা খাঁটি ব্যঞ্জন বর্ণ নয় এবং খাঁটি স্বরবর্ণও নয়। এজন্য য ও ব কে অর্ধ স্বর এবং র ও ল-কে তরলস্বর বা অর্ধব্যঞ্জন  বলে।
T) ‘র’ জিহবারঅগ্রভাগ কম্পিত করে এ ধ্বনি উচ্চারণ হয় বলে এক কম্পনজাত ধ্বনি বলে। 
U) ‘ল’ এর উচ্চারণকালে জিহবার দু’পাশ দিয়ে বায়ু বের হয় বলে একে পার্শ্বিক ধ্বনি বলে। 
V) শ, ষ, স-তিনটি শুদ্ধ উষ্ম বর্ণ উচ্চারণকালে শিশ দেওয়ার মত শব্দ হয় বলে এগুলোকে শিশধ্বনি বলা হয়।
W) ‘ড়’ ‘ঢ়’- জিহবার নিমণভাগ দিয়ে দন্তমূলে তাড়ান করে এদের উচ্চারণ করতে হয় বলে এদেরকে তাড়নজাত ধ্বনি বলে।
X) অনুস্বার ও বিসর্গকে অযোগবাহ বর্ণ বলে। 
Y) চন্দ্রবিন্দু (ঁ) চিহ্ন বা প্রতীকটি পরবর্তী স্বরবর্ণের অনুনাসিকতার দ্যোতনা করে। এজন্য এটিকে অনুনাসিক বর্ণ বলে।
ব্যাকরণ কাকে বলে? ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় কয়টি ও কিকি?

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here