SSC পয়লা বৈশাখ গল্পের (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

পয়লা বৈশাখ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | নবম-দশম শ্রেণির গাইড

নবম-দশম শ্রেণি
বাংলা ১ম পত্র গাইড
গল্প/গদ্য

পয়লা বৈশাখ
কবীর চৌধুরী

SSC Bangla 1st Paper Golpo
Pahela Baishakh
Poyla Boishakh
Srijonshil
Question and Answer pdf download
পয়লা বৈশাখ সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন-উত্তর নবম-দশম শ্রেণি

১নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমূলে ‘ছায়ানট’ নববর্ষের যে উৎসব শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের বাধাহীন পরিবেশে এখন তা জনগণের বিপুল আগ্রহ-উদ্দীপনাময় অংশগ্রহণে দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় অনুষ্ঠানের পরিণত হয়েছে। রাজধানী ঢাকার নববর্ষ উৎসবের দ্বিতীয় প্রধান আকর্ষণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ছাত্র-ছাত্রীদের বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রায় মুখোশ, কার্টুনসহ যে-সব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীকধর্মী চিত্র বহন করা হয় তাতে আবহমান বাঙালিত্বের পরিচয় এবং সমকালীন সমাজ-রাজনীতির সমালোচনাও থাকে।
ক. নববর্ষ এক অস্তিত্বকে বিদায় দিয়ে অন্য জীবনে প্রবেশ করায় কী প্রকাশ করে? ১
খ. ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা বলতে কী বোঝ? ২
গ. ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে প্রকাশিত নববর্ষ উদ্যাপনের কোন দিকটি উদ্দীপকে অনুপস্থিত? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘সামাজিক প্রকৌশলীদের আজ বাংলা নববর্ষের মধ্যে সচেতনভাবে নতুন মাত্রিকতা যোগ করতে হবে।’ লেখকের এই প্রত্যাশাই যেন উদ্দীপকটি ধারণ করছে’ - মূল্যায়ন করো। ৪

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: ক
✍ নববর্ষ এক অস্তিত্বকে বিদায় দিয়ে অন্য জীবনে প্রবেশ করার আনন্দানুভূতি প্রকাশ করে।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: খ
✍ ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা হচ্ছে সেই ধর্মচেতনা যেখানে মানুষ ধর্মে ধর্মে পার্থক্য না করে নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করে।

✍ বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন একটি ধর্মনিরপেক্ষ সর্বজনীন উৎসব। এই আনন্দ উৎসবে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই অংশগ্রহণ করে। বিগত বছরের দুঃখ-জরা, কষ্ট-বেদনা ভুলে গিয়ে নতুন বছরে সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। নববর্ষকে সবাই একসাথে বরণ করে নেয়। ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে সকলে একসাথে এই বর্ষবরণের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকার চেতনাই ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: গ
✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত নাগরিক বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশন প্রদর্শন উদ্দীপকে অনুপস্থিত।

✍ বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক উৎসব ‘পয়লা বৈশাখ’ কৃষিনির্ভর এই অঞ্চলে ফসল কাটার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রাচীনকাল থেকে পালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে এটি বাঙালির সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। পরস্পরের বাড়িতে যাওয়া-আসা, শুভেচ্ছা বিনিময়, খাওয়া-দাওয়া, নানা রকম খেলাধুলা ও আনন্দ উৎসব, মেলা ও প্রদর্শনী ইত্যাদি অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে পালিত হয়ে আসছে পয়লা বৈশাখ। ব্যবসায়ী মহলে পালিত হয় হালখাতা ও মিঠাই বিতরণ। অর্থনৈতিক কারণে বর্তমানে এটি শহরকেন্দ্রিক পালিত হলেও যথেষ্ট প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ করা যায়। তবে নববর্ষ উদ্যাপনের ধরন দেখে লেখক এটিকে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশনের সাথে তুলনা করেছেন।

✍ উদ্দীপকে ১৯৬৭ সাল থেকে বাধাহীন পরিবেশে এদেশে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পালনের কথা বলা হয়েছে। সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বর্ণাঢ্য আয়োজনের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। এসব আয়োজনে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীকধর্মী চিত্র তুলে ধরা হয়। যা আবহমান বাঙালিত্বের পরিচয় ও সমকালীন সমাজ রাজনীতির সমালোচনা বহন করে। নববর্ষ উদ্যাপনের এই দিকটি পয়লা বৈশাখ প্রবন্ধে উল্লিখিত। কিন্তু আজকাল যে এই উৎসব মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশনে রূপ নিচ্ছে তা উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়নি।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: ঘ
✍ বিজাতীয় সংস্কৃতি থেকে বাঁচিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান যাতে আমাদের বাঙালিত্বের পরিচয়কে ধারণ করতে পারে সে কারণে এতে সচেতনভাবে নতুন মাত্রিকতা যোগ করতে হবে।

✍ পয়লা বৈশাখ নিঃসন্দেহে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। এর উদ্যাপন রীতিতে নানা পালাবদল ও বিভিন্ন মাত্রিকতা যুক্ত হচ্ছে। পয়লা বৈশাখ পালনের সাথে কৃষি সমাজের যোগসূত্র ছিল। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পয়লা বৈশাখ উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। গ্রামীণ উপকরণ নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বৈশাখী মেলা। হালখাতা, মিঠাই বিতরণ, নানা রকম খেলাধুলা, সংগীতানুষ্ঠান, আবৃত্তি, আলোচনা সভা ইত্যাদি পয়লা বৈশাখের অন্যতম অনুষঙ্গ। তবে বর্তমান সময়ে এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে দেশীয় সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুকরণ করা হচ্ছে। লেখক একে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশনের সাথে তুলনা করেছেন। তাগিদ দিয়েছেন বাংলা নববর্ষের মধ্যে সচেতনভাবে নতুন মাত্রিকতা যোগ করার।

✍ উদ্দীপকে নববর্ষ উৎসব আয়োজনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বর্ণনা করা হয়েছে। ছায়ানটের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, ঢাকার নববর্ষ উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ছায়ানট বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে অবদান রেখে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদেরও রয়েছে অসামান্য অবদান। 

✍ সামাজিক প্রকৌশলী বা সংস্কৃতি নির্মাণের কারিগরদের প্রতি লেখক আহŸান জানিয়েছেন বাংলা নববর্ষের মধ্যে সচেতনভাবে নতুন মাত্রিকতা যোগ করার। কারণ পয়লা বৈশাখকে তার নিজস্ব ভাবমূর্তিতে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সাথে শ্রমজীবী মানুষের রাখিবন্ধনকে নতুন করে বাঁধতে হবে। পাশাপাশি বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের ক্ষেত্রে এর ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে। আর উদ্দীপকে এই দিকগুলোই লক্ষ করা যায়।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
২নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
চৈত্রের শেষে ব্যবসায়ী আতিক সাহেবের মন আনন্দে শিহরিত হয়ে ওঠে। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে তিনি উন্মুখ হয়ে থাকেন। যাতে পুরনো হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে নব উদ্যমে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে পারেন। তিনি মনে করেন, নববর্ষ বাঙালির ঐতিহ্য, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক।
ক. বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব কোনটি? ১ 
খ. হালখাতা অনুষ্ঠানটি পালন করা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনার যে দিকের আভাস দেওয়া হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘পয়লা বৈশাখ’ অবলম্বনে উদ্দীপকের সর্বশেষ লাইনটির সপক্ষে তোমার নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করো। ৪

২নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব হলো পয়লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন।

খ. ব্যবসায়ীরা তাদের পাওনা আদায় এবং নতুন বছরের খাতা খোলার ঐতিহ্য রক্ষায় হালখাতা অনুষ্ঠানটি পালন করে।

✍ হালখাতা অনুষ্ঠান পয়লা বৈশাখে ব্যবসায়ীদের কাছে একটি অন্যতম প্রধান উৎসব। তারা এদিন তাদের পাওনা আদায় করে নতুন বছরের নতুন খাতা খোলেন। এদিন ব্যবসায়ীরা বকেয়া পরিশোধকারীদের মিষ্টিমুখ করান। এজন্য নানা রকম মিঠাই বিতরণ করেন। এই হালখাতা অনুষ্ঠান ব্যবসায়ী মহলে প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। ফলে এটি একটি ঐতিহ্যও বটে। আর এই ঐতিহ্য রক্ষা এবং পাওনা আদায়ের জন্য ব্যবসায়ীরা হালখাতা অনুষ্ঠান পালন করেন। 

গ. উদ্দীপকে ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনার ঐতিহ্যের দিকটি বোঝাতে হালখাতা অনুষ্ঠানের আভাস দেওয়া হয়েছে।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনায় লেখক কবীর চৌধুরী বাংলা নববর্ষ তথা পয়লা বৈশাখের জয়গান গেয়েছেন। এই পয়লা বৈশাখে বাঙালিরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে উৎসব অনুষ্ঠান করে থাকে। অতি প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালিরা গ্রাম-নগর নির্বিশেষে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকলেই সোৎসাহে নববর্ষের উৎসবে যোগদান করত। এদিন ব্যবসায়ীরা বছরের নতুন খাতা খোলার জন্য হালখাতা ও মিঠাই বিতরণের অনুষ্ঠান করেন। এই ধারাবাহিকতা আজও বিদ্যমান।

✍ উদ্দীপকে হালখাতা অনুষ্ঠানের ইঙ্গিত করা হয়েছে। এই হালখাতা বাংলা নববর্ষ উৎসবে ব্যবসায়ী মহলে নতুন মাত্রা যোগ করে। তারা পয়লা বৈশাখে বছরের নতুন খাতা চালু করে। ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনাতে লেখক এই হালখাতা অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন, যা পয়লা বৈশাখের একটি অন্যতম অংশ। বাঙালিরা এই পয়লা বৈশাখের ঐতিহ্য আজও ধারণ করে আছে। উদ্দীপকের আতিক সাহেব তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনায় বর্ণিত বাঙালির ঐতিহ্যের দিকটির আভাস দেওয়া হয়েছে।

ঘ. প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালিরা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নববর্ষ উৎসব পালন করে আসছে, যা বাঙালির ঐতিহ্য, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক বলে আমি মনে করি।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনায় লেখক কবীর চৌধুরী বাঙালির নববর্ষ উৎসবের ঐতিহ্যের দিকটি তুলে ধরেছেন। নববর্ষ উৎসব সমগ্র বাঙালির জীবনে বয়ে আনে উৎসবের আমেজ। এদিন ধর্মীয় সংকীর্ণতা অতিক্রম করে সমগ্র বাঙালি উৎসবে যোগদান করে। কৃষিনির্ভর এই দেশে প্রাচীনকাল থেকে ফসল উৎপাদনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নববর্ষ উৎসব পালন করা হয়। ফলে এদিন বাঙালির ঘরে ঘরে থাকে শান্তি ও সমৃদ্ধি।

✍ উদ্দীপকে ব্যবসায়ী আতিক সাহেব নববর্ষ উৎসবে সোৎসাহে অংশগ্রহণ করেন। তিনি হালখাতা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বছরের নতুন খাতা খোলার আনন্দে শিহরিত হন। পয়লা বৈশাখে সকল মানুষের হাতেই টাকা-পয়সা থাকে। ফলে সকলে বাকি পরিশোধ করে নতুন খাতা খোলে। এতে সর্বত্র সুখ শান্তি বিরাজ করে। তাছাড়া এদিন সকলেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পরস্পরের বাড়িতে যাওয়া-আসা, শুভেচ্ছা বিনিময় করে। ফলে সর্বত্র একটি উৎসবমুখর আমেজ বিরাজ করে। এতে পয়লা বৈশাখ অন্য দিনগুলো থেকে স্বতন্ত্র হয়ে গৌরবমণ্ডিত হয়ে ওঠে।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে লেখক পয়লা বৈশাখের গৌরবমণ্ডিত ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন। নববর্ষ হলো বাঙালির জাতীয়তাবাদের ভিত্তি। এ দিকটি বোঝানোর প্রয়াসে লেখক পয়লা বৈশাখের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন। পয়লা বৈশাখ সকলের কাছেই উৎসবের বার্তা নিয়ে আসে। সকলে পাওনা পরিশোধ করে একে অন্যের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে। তাই উদ্দীপকের সর্বশেষ লাইনটির সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।
 
এসএসসি বোর্ড পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য পড়ুন সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন-উত্তরসহ:

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৩নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
শিশু ফাইয়াজ বাবার সাথে রমনা পার্কে বেড়াতে যায়। সেখানে নানা বয়সী নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ রং-বেরঙের পোশাক পরে ঘুরে বেড়ায়। সবার হাতে বেলুন, বাঁশি, মাথায় ফেস্টুন। এসব দেখে ফাইয়াজ আনন্দে অভিভূত হয়। সে অনেকগুলো খেলনা ও মজার মজার খাবার ক্রয় করে বাড়ি ফিরে আসে।
ক. “আইন-ই-আকবরী” গ্রন্থ কার লেখা? ১ 
খ. বাংলা নববর্ষের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন ও গৌরবমণ্ডিত কেন? ২
গ. উদ্দীপকে ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের কোন দিকটি নির্দেশ করা হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়ে আলোকপাত করাই লেখকের মূল উদ্দেশ্য নয়”- ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন করো। ৪

৩নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. “আইন-ই-আকবরী” গ্রন্থটি ঐতিহাসিক আবুল ফজলের লেখা।

খ. প্রাচীনকাল থেকেই নববর্ষে দিনে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকলে আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান করত বলে দিনটি অন্য দিনগুলো থেকে স্বতন্ত্র ও গৌরবমণ্ডিত।

✍ সুদূর অতীতে কৃষিসমাজের সাথে বাংলা নববর্ষের যোগসূত্র ছিল অবিচ্ছেদ্য। এদিন সকল ধর্মের লোকই একে অন্যের বাড়িতে যেত। তাদের এই যাওয়া-আসা, খাওয়া-দাওয়া, শুভেচ্ছা বিনিময় নানা রকম খেলাধুলা ও আনন্দ উৎসবে দিনটি মুখর হয়ে উঠত। তাছাড়া মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হতো এই দিনে। ফলে নববর্ষের দিনটি অন্যান্য দিন থেকে স্বতন্ত্র হয়ে গৌরবমণ্ডিত হয়ে উঠত।

গ. ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন করা নিয়ে যে উৎসাহ-উদ্দীপনার কথা বলা হয়েছে তারই চিত্র আমরা উদ্দীপকে দেখতে পাই।

✍ কবীর চৌধুরী রচিত ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে বাংলা নববর্ষকে ঘিরে বাঙালির আবেগ উচ্ছ¡াসের স্বরূপ প্রকাশিত হয়েছে। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে শহরে ও গ্রামে নানা রকমের আনন্দ উৎসবের আয়োজন করা হয়। সব শ্রেণির মানুষ প্রাণভরে সেগুলো উপভোগ করে। পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বাঙালির গভীর আবেগের বর্ণনাও রয়েছে আলোচ্য রচনায়।

✍ উদ্দীপকের বর্ণনা থেকে দেখা যায়, ছোট্ট ফাইয়াজ বাংলা নববর্ষের উৎসবে অংশ নিতে বাবার সাথে রমনা পার্কে যায়। সেখানে সে নানা বয়সী নারী-পুরুষ, শিশুদের আনন্দ করতে দেখে। সবার গায়ে ছিল রঙিন পোশাক। ফাইয়াজের মনও সব কিছু দেখে খুশিতে ভরে ওঠে। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে মানুষের স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণের যে স্বরূপ উদ্দীপকে প্রকাশ পেয়েছে তার বর্ণনা ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনায়ও রয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে বাঙালির পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের উচ্ছ¡াসের কথা। কিন্তু ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের রচয়িতার মূল উদ্দেশ্য বাঙালির জাতীয় চেতনায় পয়লা বৈশাখের প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরা।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে কবীর চৌধুরী পয়লা বৈশাখের নানা দিক তুলে ধরেছেন। তার বর্ণনায় যেমন ঠাঁই পেয়েছে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের ইতিহাস-ঐতিহ্য, তেমনিভাবে এসেছে পয়লা বৈশাখের মূল চেতনার কথাও। পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান যে আমাদের জাতীয় চেতনার ধারক ও বাহক সে কথাও আলোচ্য প্রবন্ধে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

✍ উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে পয়লা বৈশাখের আনন্দ আয়োজনের স্বরূপ। বাংলা নববর্ষে খুশিতে উদ্বেল হয়ে পড়ে বাঙালির মন। রঙিন পোশাক পরে নানা আনন্দ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা দিনটিকে রাঙিয়ে তোলে। তেমনই একটি আনন্দঘন চিত্র প্রকাশিত হয়েছে উদ্দীপকে। কিন্তু ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনার লেখকের রচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু এটি নয়।

✍ পয়লা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব। সর্বস্তরের বাংলা ভাষাভাষী মানুষ এদিনটিকে প্রাণের উচ্ছ্বাছে বরণ করে নেয়। এই উদ্যাপনে হিন্দু-মুসলিম, ধনী-গরিব, শিশু-বৃদ্ধ কোনো ভেদাভেদ থাকে না। ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের রচয়িতা কবীর চৌধুরীর প্রত্যাশা পয়লা বৈশাখের এই সর্বজনীনতার দিকটি আমাদের জাতীয় চেতনাকে আরও সমুন্নত করবে। পয়লা বৈশাখের উদ্যাপন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে বাঙালির প্রতিবাদের বহিঃপ্রকাশ। তাই আমাদের জাতীয় চেতনার সাথে এর সম্পর্ক সুদৃঢ়। ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনায় এ বিষয়গুলোর কথা এলেও উদ্দীপকে রয়েছে কেবলই পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের আনন্দ-উৎসবের চিত্র, যা ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনার খণ্ডিত একটি অংশের প্রতিনিধিত্ব করে মাত্র। উদ্দীপকের বিষয়বস্তু তাই ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনার লেখকের মূল আলোচ্য নয়।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৪নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
শিক্ষক ইকবাল ইউসুফ শ্রেণিকক্ষে নববর্ষ প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীদের বললেন, ‘তোমরা দেখে থাকবে পহেলা বৈশাখে আমাদের গ্রামগুলোতে মেলা বসে গ্রামীণ ও লোকজ সব উপাদান নিয়ে। সেসব আয়োজনে থাকে প্রাণের ছোঁয়া। কিন্তু ওই দিন ঘটা করে মাটির পাত্রে পান্তা খাওয়ার ঘটনাকে মেকি ও কৃত্রিমতাপূর্ণ বলেই মনে হয়। তাছাড়া ব্যস্ত সংগীতের সাথে উদ্দাম নৃত্যও আমাদের ঐতিহ্যের সাথে খাপ খায় না।
ক. কবীর চৌধুরী কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? ১
খ. গ্রাম-নগর, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষই নববর্ষ উৎসবে যোগ দেয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত গ্রামীণ মেলা ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের গৌরবমণ্ডিত দিনের সাথে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো। ৩ 
ঘ. ‘শহরে বৈশাখী উৎসব মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশন’ উদ্দীপক ও ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪

৪নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. কবীর চৌধুরী ১৯২৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

খ. নববর্ষ বাঙালির জাতীয় উৎসব হওয়ার কারণে গ্রাম-নগর, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষই এতে যোগ দেয়।

✍ বাংলা নববর্ষ বাঙালির জাতীয় জীবনে এক আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। এদিন হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকলেই পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে গ্রহণের আনন্দে মত্ত থাকে। সকলের কাছে দিবসটি সমান গুরুত্ব বহন করে। তাই সবাই নববর্ষ উৎসবে যোগদান করে।

গ. গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধারণ করার দিক থেকে উদ্দীপকের গ্রামীণ মেলা ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

✍ বাঙালি খুবই উৎসবপ্রিয় জাতি। সুদূর অতীতে কৃষিসমাজের সাথে অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্র ছিল নববর্ষ উৎসবের। এই দিনে বাঙালিরা একে অপরের বাড়িতে যাওয়া-আসা, শুভেচ্ছা বিনিময়, নানা রকম খেলাধুলা ও আনন্দ উৎসব, মেলা ও প্রদর্শনী ইত্যাদি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে মানুষ পুরোনো ও বিগত দিনের জরাজীর্ণতাকে মানুষ ভুলে থাকতে চায়। পয়লা বৈশাখের এই দিনটিকে তাই স্বতন্ত্র, বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ও গৌরবমণ্ডিত দিন বলা হয়েছে।

✍ আলোচ্য উদ্দীপকে গ্রামীণ ও লোকজ উপাদান নিয়ে আয়োজিত গ্রামের মেলার কথা বলা হয়েছে। এসব আয়োজন নতুন বছরে নতুন প্রেরণা এনে দেয়। গ্রামের মানুষের মাঝে আনন্দের আবহ বয়ে যায়। তারা বিভিন্ন লোকজ পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করে এই মেলায়। প্রাচীনকালে এই লোকজ বৈচিত্র্যকে ধারণ করাতেই পয়লা বৈশাখ গৌরবমণ্ডিত হয়ে উঠত। তাই উদ্দীপকের গ্রামীণ মেলা এদিক থেকেই প্রবন্ধের গৌরবমণ্ডিত দিনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

✍ পয়লা বৈশাখের আনুষ্ঠানিকতা ও দিনটির গুরুত্ব বিবেচনায় উদ্দীপকের গ্রামীণ মেলা ও প্রবন্ধের গৌরবমণ্ডিত দিন যথেষ্ট সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. পয়লা বৈশাখ তার চিরাচরিত রূপ হারিয়ে তা এখন বিলাসিতা ও ফ্যাশনে রূপ নিয়েছে, যার উল্লেখ উদ্দীপক ও পয়লা বৈশাখ প্রবন্ধে রয়েছে।

✍ আমাদের দেশে পয়লা বৈশাখকে ঘিরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বাঙালিয়ানা পোশাক পরে বিভিন্ন বয়সের মানুষ বৈশাখী মেলা, সংগীতানুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে। বর্তমানে এই আয়োজন শহরকেন্দ্রিক ও কৃত্রিমতাপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় তা মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত মানুষের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে বলে ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের লেখক মনে করেন।

✍ উদ্দীপক অনুযায়ী আমরা বুঝতে পারি পয়লা বৈশাখে গ্রামের মেলাগুলোতে যে প্রাণচাঞ্চল্য ঘটে, তা অকৃত্রিম। মেলাগুলো হয়ে ওঠে বাঙালি সংস্কৃতির প্রতীক। নববর্ষের এই আনন্দ আয়োজন মানুষের জীবনে এনে দেয় নতুন আমেজ, নতুন প্রেরণা। কিন্তু ঢাকাকেন্দ্রিক বা নগরকেন্দ্রিক আয়োজনে সে মেজাজ রক্ষিত হয় না। নববর্ষের সকালে মাটির পাত্রে পান্তা খাওয়া আবার ব্যান্ডের উদ্দাম নৃত্যে গা ভাসিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করা সম্ভব নয়। এটিই শুধুই লৌকিকতা, যার সাথে প্রাণের কোনো সংযোগ নেই।

✍ মূলত পয়লা বৈশাখের আনন্দানুষ্ঠানের প্রাণকেন্দ্র ছিল গ্রাম। অর্থনৈতিক কারণে এই আয়োজন এখন শহরকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। ফলে পয়লা বৈশাখ তার নিজস্ব রূপ হারিয়ে অনুকরণপ্রিয়তার দিকে পা বাড়িয়েছে। শহরের ছেলেমেয়েরা এদিন ফ্যাশন আর বিলাসিতা দেখানোর জন্যই যে উৎসব করে তা উদ্দীপকের শিক্ষক এবং প্রবন্ধের লেখক উভয়েই বলেছেন। তাই এটিকে এখন মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশন ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৫নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
পয়লা বৈশাখের সকালে প্রভা সেজেগুজে বাড়ি থেকে বের হচ্ছিল। এ সময় তাকে বাধা দিল তার মামা। তাঁর মতে, এগুলো বিধর্মীদের সংস্কৃতি। কিন্তু প্রভার বাবা বললেন, “পয়লা বৈশাখ নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের মানুষের উৎসব নয়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এটি বাঙালির প্রাণের উৎসব। তিনি নিজেই প্রভাকে নিয়ে পয়লা বৈশাখের উৎসব যোগ দিলেন।
ক. নওরোজ শব্দের অর্থ কী? ১
খ. বাংলা নববর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে ধারণ করে কীভাবে? ২
গ. উদ্দীপকের প্রভার মামার আচরণ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত কোন দিকটিকে মনে করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘পয়লা বৈশাখ’ আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার ধারক’- উদ্দীপক ও ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটি মূল্যায়ন করো। ৪

৫নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. ‘নওরোজ’ শব্দের অর্থ নতুন দিন।

খ. সকল ধর্মের মানুষের কাছেই বাংলা নববর্ষ সমান গুরুত্বের হওয়ায় এই উৎসব ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে ধারণ করে।

✍ বাংলা নববর্ষ বাঙালির একটি জাতীয় উৎসব। এই উৎসবে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই যোগদান করে। এদিন মুসলমান হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কোনো ভেদাভেদ থাকে না। সকলের কাছেই আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে এই নববর্ষ। সকলেই মহা আনন্দে এই উৎসবে যোগদান করে। এভাবে বাংলা নববর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে ধারণ করে।

গ. উদ্দীপকের প্রভার মামার আচরণ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত পাকিস্তানি শাসকবর্গের বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন নিয়ে ক্ষীণদৃষ্টি, ধর্মান্ধ ও বৈরী মনোভাবকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে কবীর চৌধুরী বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে পাকিস্তানিদের বিতর্কিত ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন। ১৯৪৭-এ পাকিস্তান সৃষ্টির পর সেদিনের পূর্ব পাকিস্তানে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন নিয়ে তৎকালীন নয়া উপনিবেশবাদী, ক্ষীণদৃষ্টি, ধর্মান্ধ, পাকিস্তানি শাসকবর্গ যে মনোভাব প্রদর্শন করে, তা খুবই ন্যক্কারজনক। একই সঙ্গে তা কৌত‚হলোদ্দীপকও বটে। তারা প্রচার করার চেষ্ট করে ‘পয়লা বৈশাখ’ উদ্যাপন বিজাতীয় সংস্কৃতির প্রকাশ এবং ইসলাম ধর্মবিরোধী।

✍ উদ্দীপকের প্রভা পয়লা বৈশাখে অন্য দশটি মেয়ের মতো সেজেগুজে বাড়ি থেকে বের হচ্ছিল। কিন্তু তার মামা তাকে বাধা দেন এবং বলেন এগুলো বিধর্মীদের সংস্কৃতি। প্রভার বাবা এতে বিরোধিতা করে নিজেই প্রভাকে নিয়ে উৎসবে যোগ দেন। ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে আমরা লক্ষ করি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনে বাধা দিয়েছিল এবং উদ্দীপকের মতোই বৈরী মনোভাব পোষণ ও অপপ্রচার চালিয়েছিল। এখানে প্রভার মামার মানসিকতা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অনুরূপ।

ঘ. পয়লা বৈশাখ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি সর্বজনীন উৎসব হওয়ায় ঐতিহ্যগতভাবেই এটি আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার ধারক।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, একসময় গ্রাম-নগর নির্বিশেষে বাংলার সব মানুষ বাংলা নববর্ষের উৎসবে যোগ দিত। পরস্পরের বাড়িতে বাড়িতে যাওয়া-আসা, শুভেচ্ছা বিনিময়, খাওয়া-দাওয়া, নানা রকম খেলাধুলা ও আনন্দ উৎসব, মেলা ও প্রদর্শনীতে সারাবছরের অন্য দিনগুলো থেকে এই দিনটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ও সর্বজনীন হয়ে উঠত। বাংলা মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কোনো ভেদাভেদ থাকত না বলে এদিনে সকলের মাঝে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা প্রকাশ পেত। 

✍ উদ্দীপকে প্রভার বাবার কথায় ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার কথা প্রকাশ পেয়েছে। তিনি বলেছেন, পয়লা বৈশাখ নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের মানুষের উৎসব নয়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এটি বাঙালির প্রাণের উৎসব। তার এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পয়লা বৈশাখের সর্বজনীনতা প্রকাশ পেয়েছে।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ বাঙালির একমাত্র উৎসব যেখানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে যোগদান করে থাকে। প্রবন্ধে লেখক সর্বজনীন উৎসব হিসেবে পয়লা বৈশাখের ইতিহাস তুলে ধরেছেন। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ চেতানাকে অপরাজেয় শক্তি ও মহিমায় পূর্ণ করুক লেখক এ কামনাও করেছেন। অন্যদিকে উদ্দীপকে প্রভার বাবা বৈশাখ নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা পয়লা বৈশাখের সর্বজনীনতা ও ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকেই তুলে ধরে। তাই বলা যায়, পয়লা বৈশাখ আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার ধারক।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
 
১. প্রায় সব দেশে কী উদ্যাপনের প্রথা প্রচলিত আছে?
 উত্তর: প্রায় সব দেশে নববর্ষ উদ্যাপনের প্রথা প্রচলিত আছে।

২. পয়লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ কী?
 উত্তর: পয়লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাঙালির একটি জাতীয় উৎসব।

৩. সুদূর অতীতে পয়লা বৈশাখের সঙ্গে কোন সমাজের যোগসূত্র ছিল?
 উত্তর: সুদূর অতীতে পয়লা বৈশাখের সঙ্গে কৃষিসামজের যোগসূত্র ছিল।

৪. ‘আইন-ই-আকবরী’ কার রচিত গ্রন্থ?
 উত্তর: ‘আইন-ই-আকবরী’ আবুল ফজলের রচিত গ্রন্থ।

৫. আবুল ফজল তার গ্রন্থে বাংলা নববর্ষকে কী বলে উল্লেখ করেছেন?
 উত্তর: আবুল ফজল তার গ্রন্থে বাংলা নববর্ষকে এ দেশের জনগণের নওরোজ বলে উল্লেখ করেছেন।

৬. কত সলে উপমহাদেশের বিভক্তি হয়?
 উত্তর: ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশের বিভক্তি হয়।

৭. কাদের মধ্যে হালখাতা ও মিঠাই বিতরণের অনুষ্ঠান হয়?
 উত্তর: ব্যবসায়ী মহলে হালখাতা ও মিঠাই বিতরণের অনুষ্ঠান হয়।

৮. আগে পয়লা বৈশাখের আনন্দানুষ্ঠানের প্রাণকেন্দ্র ছিল কী?
 উত্তর: আগে পয়লা বৈশাখের আনন্দানুষ্ঠানের প্রাণকেন্দ্র ছিল গ্রামবাংলা।

৯. আবুল ফজল নওরোজকে নববর্ষ বলে উল্লেখ করেছেন কত বছর আগে?
 উত্তর: আবুল ফজল নওরোজকে নববর্ষ বলে উল্লেখ করেছেন সাড়ে তিনশ বছর আগে

১০. বাংলা নববর্ষের সাথে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা যুক্ত হয় কবে?
 উত্তর: বাংলা নববর্ষের সাথে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা যুক্ত হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে।

১১. সিরাজউদ্দৌলা শেষবারের মতো লড়াই করার জন্য কাদের ডাক দিয়েছিলেন?
 উত্তর: সিরাজউদ্দৌলা শেষবারের মতো লড়াই করার জন্য হিন্দু-মুসলমান উভয়কেই ডাক দিয়েছিলেন।

১২. পাকিস্তানি আমলে ধর্মের নামে কী হতো?
 উত্তর: পাকিস্তানি আমলে ধর্মের নামে নৃশংসতা হতো।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. নববর্ষের মাধ্যমে বাঙালিরা তাদের জাতীয়তাবাদী চেতনাকে তুলে ধরেছে কীভাবে?
 উত্তর: ধর্ম ও সম্প্রদায়-নিরপেক্ষভাবে নববর্ষ উদ্যাপনের মাধ্যমে বাঙালিরা তাদের জাতীয়তাবাদী চেতনাকে তুলে ধরেছে।

✍ নববর্ষের বাঙালিরা তাদের ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে উৎসব অনুষ্ঠানে যোগদান করে থাকে। এদিন বাঙালি হিসেবে মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকলে একে অন্যের বাড়িতে যায়, শুভেচ্ছা বিনিময় করে। এতে সকলের মাঝে জাতীয়তাবোধ জাগ্রত হয়।

২. নববর্ষের উদ্যাপন রীতিতে নানা পালাবদল ঘটেছে কীভাবে?
 উত্তর: কালের যাত্রাপণে সমাজ সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আসায় নববর্ষ উদযাপন রীতিতেও নানা পালাবদল ঘটেছে।

✍ বাংলা নববর্ষ বাঙালির একটি অন্যতম জাতীয় উৎসব। এই উৎসব বিভিন্ন  সময় বিভিন্ন মাত্রিকতা অর্জন করেছে। সুদূর অতীতে কৃষিসমাজের সাথে এর যোগসূত্র ছিল অবিচ্ছেদ্য। ফলে গ্রাম বাংলা ছিল এই উৎসবের প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু কাল পরম্পরায় এই উৎসবের বিবর্তন ঘটে এখন শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের বুর্জোয়া বিলাসে পরিগ্রহ লাভ করেছে। এভাবে নববর্ষের উদযাপন রীতিতে পালাবদল ঘটেছে।

৩. পয়লা বৈশাখকে বর্তমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করা প্রয়োজন কেন?
 উত্তর: পয়লা বৈশাখ বর্তমানে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের ফ্যাশন ও বুর্জোয়া বিলাসের অংশ হয়ে যাওয়া তাকে বর্তমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করা প্রয়োজন।

✍ পয়লা বৈশাখ একসময় কৃষি সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। তখন এই উৎসবের প্রাণকেন্দ্র ছিল গ্রামবাংলা। গ্রামের মানুষের মাঝে আনন্দের বার্তা বয়ে আনত এই উৎসব। কিন্তু কাল পরিক্রমায় এই উৎসব শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত মানুষের বুর্জোয়া ও বিলাসে পরিণত হয়েছে। তাই এই উৎসবকে আবার বৃহত্তর জনজীবনের সঙ্গে সংযোগ করা প্রয়োজন।
Share:

SSC মমতাদি গল্পের (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

মমতাদি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | নবম-দশম শ্রেণির গাইড
নবম-দশম শ্রেণি
বাংলা ১ম পত্র গাইড
গল্প/গদ্য

মমতাদি
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

SSC Bangla 1st Paper Golpo
Momotadi
Srijonshil
Question and Answer pdf download
মমতাদি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: নবম-দশম শ্রেণি

১নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
রাসেল ড্রাইভার হিসেবে যেমন দক্ষ তেমনি সৎ। প্রকৌশলী এমারত সাহেব তাকে ব্যক্তিগত ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ দেন। ইফতি, সনাম ও শিলাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া-আসাই তার প্রধান কাজ। ঘরের সবাই ওকে ভীষণ ভালোবাসে। ইফতিরা ওকে ভাইয়া বলে ডাকে, একসাথে খায়, গল্প করে, বেড়াতে যায়। রাসেলের প্রতি সন্তানদের এই আচরণে এমারত সাহেব ভীষণ খুশি।
ক. মমতাদির বয়স কত ছিল? ১
খ. মমতাদির চোখ সজল হয়ে উঠেছিল কেন? ২
গ. উদ্দীপকে রাসেলের মাঝে বিদ্যমান মমতাদির বিশেষ গুণটি ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. রাসেল ও মমতাদির প্রতি দুই পরিবারের আচরণের ফুটে ওঠা দিকটি সামাজিক সংহতি সৃষ্টিতে কতটুকু প্রভাব ফেলে? যুক্তিসহ বিশে−ষণ করো। ৪

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: ক
✍ মমতাদির বয়স ছিল ২৩ বছর।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: খ
✍ আশাতিরিক্ত মাইনে নির্ধারণ করায় মাইনের কথা জেনে মমতার দুচোখ কৃতজ্ঞতায় সজল হয়ে উঠল।

✍ মমতা অভাবের তাড়নায় পর্দা ঠেলে উপার্জনের জন্য বাইরে এসেছে। তার স্বামীর চার মাস ধরে চাকরি নেই। তাই সে গৃহকর্মীর কাজ নেয়। সে এই কাজ করতে গিয়ে সর্বোচ্চ বারো টাকার মতো বেতন আশা করেছিল। কিন্তু গৃহকর্ত্রী পনেরো টাকা বেতন নির্ধারণ করেন। এ কারণে কৃতজ্ঞাতায় মমতার দুচোখ সজল হয়ে উঠল।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: গ
✍ উদ্দীকের রাসেলের মধ্যে বিদ্যমান মমতাদির বিশেষ গুণটি হচ্ছে দক্ষতা ও সততা।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি দরিদ্র হলেও সে ছিল অত্যন্ত সৎ। গৃহকর্ত্রীর বাড়িকে নিজের বাড়ি মনে করে সুনিপুণভাবে সব কাজ সম্পন্ন করেছে। কখনও ফাঁকি দেওয়ার কথা ভাবেনি। সে ছিল অত্যন্ত সৎ এবং নিজ কাজে ছিল অত্যন্ত দক্ষ। নিখুঁতভাবে সকল কাজ সম্পন্ন করত সে।

✍ উদ্দীপকের রাসেল একজন দরিদ্র ড্রাইভার হলেও সে ছিল অত্যন্ত সৎ এবং দক্ষ। সে তার কর্তব্যনিষ্ঠা ও সততা দিয়ে মালিক এমারত সাহেব ও তার পরিবারের আস্থাভাজন হয়ে উঠেছে। এমারত সাহেবের সন্তানেরা তাকে পরিবারের একজন হিসেবে মনে করেছে। ফলে সকলের সাথে তার গড়ে উঠেছে গভীর সম্পর্ক। সুতরাং গল্পের মমতাদি চরিত্রের দক্ষতা এবং সততার গুণটিই উদ্দীপকে রাসেলের মধ্যে বিদ্যমান।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: ঘ
✍ রাসেল ও মমতাদির প্রতি দুই পরিবারের সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ সামাজিক সংহতি সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি চরিত্রটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক অসাধারণ সৃষ্টি। মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারীর হয়েও সে অভাবের তাড়নায় অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেয়। তার সততা, চরিত্র মাধুর্য ও কর্মদক্ষতায় সে সহজেই গৃহকর্ত্রীসহ সকলের মন জয় করে নেয়। গৃহকর্ত্রীও ছিলেন অত্যন্ত উদার মনের মানুষ। মমতাদিকে কখনও গৃহকর্মী ভেবে তুচ্ছ জ্ঞান করেননি। বরং যথাযথ মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ করেছেন।

✍ উদ্দীপকের ড্রাইভার রাসেল যেমন সৎ তেমনি দক্ষ। এমরাত সাহেবের সন্তানদের স্কুলে আনা-নেওয়াই তার কাজ। সে তার সব কাজ নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে করেছে। শিশুরা তাকে ভাইয়া বলে ডকে। একসাথে খেলে, ঘোরে, গল্প করে। সন্তানদের আচরণে এমারত সাহেবও খুশি। মোটকথা একজন ড্রাইভারের সাথে তার পরিবার অত্যন্ত মানবিক আচরণ করেছে। তার নিজের পরিবারের সদস্যের মতো ব্যবহার করেছে।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পে স্কুল-পড়ুয়া ছেলেটির পরিবার যেমন মমতাদির সাথে মানবিক ও মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করেছে উদ্দীপকের ড্রাইভার রাসেলের সাথেও এমারত সাহেবের পরিবার ও সন্তানেরা অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করেছে। দুটি পরিবারের এই আচরণ সামাজিক সংহতি সৃষ্টিতে যথেষ্ট ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। উঁচু-নীচু প্রভেদ ভুলে প্রতিটি মানুষের সাথে এমনি করে মানবিক আচরণ করলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। আভিজাত্য ও প্রতিপত্তির মিথ্যা অহংকারেই সমাজে সব অনাচার ও অশান্তি সৃষ্টি হয়। মমতাদি ও ড্রাইভার রাসেলের সাথে যে আচরণ করা হয়েছে তাতে মনুষ্যত্বেরই জয় ঘোষিত হয়েছে। তাই সবাইকে এ ধরনের আচরণেই অভ্যস্ত হওয়া প্রয়োজন।
 

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
মমতাদি
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Momotadi
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
২নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
দারিদ্র্যের কারণে নিলুফা বেশি পড়াশোনা করতে পারেনি। এসএসসি পাস করে সে একটি হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কাজ করছে। কাজের প্রতি তার দায়িত্বশীলতা দেখে প্রতিষ্ঠানের প্রায় সবাই তার প্রশংসা করে। তবে মাঝেমধ্যে কারও কটু কথা শুনলে তার মনে খুব দুঃখ লাগে। সে মর্মাহত হয়।
ক. মমতাদির বয়স কত? ১ 
খ. মমতাদি লেখকের বাড়িতে কাজ নিয়েছিল কেন বুঝিয়ে লেখো। ২
গ. উদ্দীপকের নিলুফা ও ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি চরিত্রের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ‘মমতাদি’ গল্পের সামগ্রিক ভাব ধারণ করে না।”- যুক্তিসহকারে উক্তিটি ব্যাখ্যা করো। ৪

২নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. মমতাদির বয়স তেইশ বছর।

খ. সংসারে দারিদ্র্যের কারণে মমতাদি লেখকের বাড়িতে কাজ নিয়েছিলো।

✍ মমতাদি একজন মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারী। কিন্তু সংসারে প্রচণ্ড অভাবের কারণে তাকে পর্দা ঠেলে বাইরে আসতে হয়েছে। তার স্বামীর চার মাস ধরে চাকরি নেই। ঘরে খাবার নেই। তীব্র অভাবে বাধ্য হয়ে মমতাদি বাইরে এসেছে এবং কাজ খুঁজতে বেরিয়েছে। আর এই প্রেক্ষাপটেই তিনি লেখকের বাড়িতে কাজ নিয়েছেন।

গ. কাজের প্রতি আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার দিক থেকে উদ্দীপকের নিলুফা ও ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি চরিত্রটি সাদৃশ্যপূর্ণ।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পে লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় মমতাদি নামক এক গৃহকর্মীর আত্মমর্যাদাবোধ ও দায়িত্বশীলতা সুনিপুণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন। মমতাদি একজন আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন ও পরিশ্রমী নারী। তিনি লেখকের বাড়িতে কাজ নিয়ে দক্ষতা ও আন্তরিকতার সাথে তার দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজের প্রতি অর্পিত দায়িত্বকে তিনি আপন করে নিয়েছেন। সুনিপুণ দক্ষতায় কাজ সম্পন্ন করার কারণে বাড়ির সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।

✍ উদ্দীপকের নিলুফা ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির মতোই একজন দায়িত্বপরায়ণ নারী। তিনি কর্মজীবনে তার প্রতি অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন করেছেন। নিজের কর্মদক্ষতায় সকলের প্রশংসার পাত্র হয়েছেন। কাজের প্রতি আন্তরিকতা, ভালোবাসা ও অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার মানসিকতা উদ্দীপকের নিলুফা এবং গল্পের মমতাদি কারোরই মধ্যে কমতি ছিল না। ফলে এদিক থেকে মমতাদি এবং উদ্দীপকের নিলুফা একই সুতোয় গাঁথা।

ঘ. ‘মমতাদি’ গল্পে গৃহকর্মীদের সাথে মানবিক আচরণের বিষয়টি প্রাধান্য লাভ করলেও উদ্দীপকে তা অনুপস্থিত থাকায় উদ্দীপকটি ‘মমতাদি’ গল্পের সামগ্রিক ভাবকে ধারণ করে না।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পে মমতাদির আত্মমর্যাদাবোধ সবসময়ই সমুন্নত ছিল। তিনি অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করলেও তাঁর মর্যাদার কোনো ঘাটতি হয়নি। বরং সকলের সাথে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে তিনি সকলের মন জয় করেছেন। লেখকের পরিবারের সকলের সাথে মমতাদির সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

✍ উদ্দীপকের প্রেক্ষাপট ‘মমতাদি’ গল্পের প্রেক্ষাপট থেকে আলাদা। দায়িত্বশীলতা ও আন্তরিতার দিক থেকে উদ্দীপকের নিলুফা এবং ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির কিছুটা মিল থাকলেও তাঁরা ভিন্ন প্রেক্ষাপটে কাজ করেছেন। তাছাড়া গল্পে মমতাদির কর্মদক্ষতায় সকলে মুগ্ধ হয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহার করলেও উদ্দীপকে কিছুটা ব্যতিক্রম ঘটে। সেখানে নিলুফা কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা দেখালেও তাকে কারও কারও কাছ থেকে কটু কথা শুনতে হয়। কর্মস্থলে মমতাদির মর্যাদাহানি না ঘটলেও নিলুফার ক্ষেত্রে ঘটেছে।

✍ মমতাদি একজন প্রখর আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন নারী। তিনি নিজের আত্মসম্মানে আঘাত লাগলে আর কখনোই লেখকের বাড়িতে কাজে আসতেন না। কিন্তু উদ্দীপকের নিলুফাকে কটু কথা শোনার পরও সেখানে কাজ করতে হয়। ফলে এক্ষেত্রে মমতাদি এবং নিলুফা ভিন্ন ভাবধারায় পরিচালিত। তাই নিশ্চিতভাবে বলা যায়, উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ‘মমতাদি’ গল্পের সামগ্রিক ভাব ধারণ করে না।
 
এসএসসি বোর্ড পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য পড়ুন সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন-উত্তরসহ:

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
মমতাদি
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Momotadi
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৩নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
বিয়ের ছয় মাস পর নাজমার স্বামী মারা যায়। সন্তানহীনা নাজমা সংসারে অভাব আছে বলেই মর্যাদাসম্পন্ন নারী হয়েও কবির সাহেবের বাড়িতে কাজ নেয়। কবির সাহেবের মাতৃহারা শিশুসন্তান রনি ও রানাকে নাজমা সন্তানের স্নেহে লালন-পালন করে। উচ্চ শিক্ষিত রনি ও রানা এখন নাজমাকে মায়ের মতো সম্মান করে। কবির সাহেবের সংসারে স্বর্গসুখ এনে দিয়েছে নাজমা।
ক. গৃহকর্মে মমতাদির মাইনে কত টাকা ঠিক হয়েছিল? ১
খ. “বেশী আস্কারা দিও না। জ্বালিয়ে মারবে”- ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকে নাজমা ‘মমতাদি’ গল্পের কোন চরিত্রের প্রতিচ্ছবি? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের কবির সাহেবের পরিবারে স্বর্গসুখ এনে দিতে নাজমার যে ভূমিকা ছিল, তা ‘মমতাদি’ গল্পের সমগ্র মূলভাবকে ধারণ করে - যৌক্তিক মতামত দাও। ৪

৩নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. গৃহকর্মে মমতাদির মাইনে পনেরো টাকা ঠিক করা হয়েছিল।

খ. স্কুলপড়ুয়া ছেলেটির চঞ্চলতা বোঝানোর জন্য গৃহকর্ত্রী প্রশ্নোক্ত মন্তব্য করেছেন।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পে স্কুল-পড়ুয়া ছেলেটি শিশুসুলভ আচরণ করে। সে মমতাদির কাছে ছোট ভাইয়ের মর্যাদা লাভ করে। মমতাদিও ছেলেটির কাছে বড় বোনের মর্যাদা পায়। ছেলেটিকে কাছে নিয়ে আদর করতে গেলে গৃহকর্ত্রী ছেলেটির শিশুসুলভ চঞ্চলতার কথা মমতাদিকে জানিয়েছেন।

গ. নিয়োগকারীর পরিবারের সদস্যদের আপন করে নেওয়া, মানবিক আচরণপ্রাপ্তি এবং আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন হওয়ার দিক থেকে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির সাথে উদ্দীপকের নাজমার সাদৃশ্য আছে।

✍ মমতাদি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘মমতাদি’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র। সংসারের অনটনের কারণে ভদ্র ঘরের নারী হলেও অন্যের বাড়িতে কাজ নিতে বাধ্য হয় সে। তবে তার আত্মমর্যাদাবোধ সবসময়ই ছিল সমুন্নত। নিয়োগকর্ত্রীর পরিবারের সাথে সে নিজেকে সহজেই মানিয়ে নেয়। তাঁর স্কুলপড়ুয়া ছেলেটিকে ছোট ভাইয়ের মতো ভালোবাসে। পরিবারটিও মমতাদির সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করে।

✍ উদ্দীপকের নাজমা অভাবের সাথে যুদ্ধ করার প্রত্যয়ে অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মে আত্মনিয়োগ করে। ওই বাড়ির সন্তানহীনা শিশুদের সে মাতৃস্নেহে লালন-পালন করে। তারা বড় হয়ে নাজমার সে ভালোবাসার মর্যাদা রাখে। গৃহকর্মীর কাজ করলেও নাজমার আত্মসম্মানবোধ অটুট ছিল। উদ্দীপকের নাজমা চরিত্রের এ দিকগুলো গল্পের মমতাদির সাথে মিলে যায়।

ঘ. উদ্দীপকের কবির সাহেবের পরিবারে স্বর্গসুখ এনে দিতে নাজমা যে মাতৃময়ী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় তা ‘মমতাদি’ গল্পের আংশিক ভাব ধারণ করে।

✍ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘মমতাদি’ গল্পে গৃহকর্মে নিয়োজিত মানুষের সাথে আমাদের সম্পর্কের নানা দিক উঠে এসেছে। এ গল্পে বর্ণিত মমতাদি সংসারে অভাব বিরাজ করায় মানুষের বাড়িতে কাজ নিতে বাধ্য হয় । নিয়োগর্ত্রীর বাড়ির সমস্ত কাজ সে সুচারুরূপে সম্পন্ন করে। বাড়ির সবাইকে ভালোবাসে। নিয়োগকর্ত্রীর পরিবারও তার প্রতি সন্তুষ্ট হয় এবং তাঁকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করে।

✍ উদ্দীপকের নাজমা বিয়ের ছয় মাসের মাথায় স্বামীকে হারায়। দারিদ্র্যের পীড়নে তাই কবির সাহেবের বাসায় কাজ নেয় সে। গৃহকর্মী হলেও ওই বাড়ির মাতৃহারা শিশুদের প্রতি তার আচরণ ছিল মাতৃসুলভ। পরিবারেরই একজন হয়ে সে বাড়িটিতে সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে ভরিয়ে তোলে। ‘মমতাদি’ গল্পে বর্ণিত গৃহকর্মীর আচরণ একই ধরনের হলেও গল্পের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ভিন্ন বিষয়।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির প্রতি তার নিয়োগকর্ত্রীর পরিবারের সবাই অত্যন্ত সহানুভূতিশীল ছিল। নিয়োগকর্ত্রী মমতাদিকে ভালোবেসে মাইনে বাড়িয়ে ঠিক করল। নিজের ছেলেকে দেখাশোনার দায়িত্ব হাসিমুখে মমতাদির ওপর দিল। মমতাদি তাঁর পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছিল। গৃহকর্মে নিয়োজিত মানুষের প্রতি এমন মানবিক আচরণের দিকটিই ‘মমতাদি’ গল্পে প্রাধান্য পেয়েছে। আলোচ্য প্রশ্নে যে দিকটির অবতারণা করা হয়েছে তা কেবল উদ্দীপকে বর্ণিত গৃহকর্মী নাজমার কর্মনৈপুণ্য ও ব্যক্তিত্বের সাথে সম্পর্কিত, যা ‘মমতাদি’ গল্পের আংশিক ভাবের প্রকাশক। নাজমার প্রতি তার নিয়োগকারী কবির সাহেবের পরিবারের আচরণের বিষয়টি উদ্দীপকে থাকলেও প্রশ্নটি উক্ত বিষয়সংশ্লিষ্ট নয়। তাই কবির সাহেবের পরিবারে স্বর্গসুখ এনে দিতে নাজমার ভূমিকার বিষয়টি মমতাদি গল্পের সমগ্র মূলভাবকে ধারণ করে না।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
মমতাদি
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Momotadi
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৪নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
দরিদ্র কিশোরী শিল্পী গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেয় নরসিংদী শহরের এক ব্যবসায়ীর বাসায়। গৃহকর্ত্রী ওইটুকুন মেয়ের ওপর বাসার সমস্ত কাজের বোঝা চাপিয়ে দেন। রুটি বানানো, কাপড় ধোয়া, থালা-বাসন মাজা, ঘর ঝাড়-মোছা আরো কত কী! মেয়েটি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লে গৃহকর্ত্রী তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে দিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন চালান।
ক. ‘মমতাদি’ গল্পের রচয়িতা কে? ১
খ. রাঁধুনী বলায় চমকে মমতাদির মুখ লাল হলো কেন? ২
গ. উদ্দীপকের কিশোরী শিল্পী ও ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির সাথে গৃহকর্ত্রীর আচরণের বৈসাদৃশ্য নিরূপণ করো। ৩ 
ঘ. শিল্পীর প্রতি তার গৃহকর্ত্রীর আচরণ কেমন হওয়া উচিত? ‘মমতাদি’ গল্পের আলোকে তোমার মতামত দাও। ৪

৪নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. ‘মমতাদি’ গল্পের রচয়িতা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।

খ. মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারী হয়েও মমতাদি বাধ্য হয়ে রাঁধুনীর কাজ করতে এসে এই প্রথম রাঁধুনী নামে সম্বোধিত হওয়ায় চমকে তাঁর মুখ লাল হলো।

✍ মমতাদি অভাবের তাড়নায় বাধ্য হয়ে রাঁধুনীর কাজ করতে এসেছেন। স্বামীর বেকারত্ব এবং সংসারের অভাব তাঁকে উপার্জনের জন্য পর্দা ঠেলে বাইরে আসতে বাধ্য করেছে। তিনি কখনো রাঁধুনীর কাজ করেননি। তিনি কখনোই রাঁধুনী নামে সম্বোধিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। তাই জীবনে প্রথম তাঁকে কেউ রাঁধুনী বলে সম্বোধন করায় চমকে তার মুখ লাল হলো।

গ. ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি গৃহকর্ত্রীর কাছ থেকে মানবিক আচরণ পেলেও উদ্দীপকে কিশোরী শিল্পী গৃহকর্ত্রীর কাছ থেকে পেয়েছে অমানবিক আচরণ।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের মেয়ে। সংসারে অভাব অনটন বিরাজ করায় তাঁকে অন্যের বাড়িতে কাজ করতে হয়। কর্মস্থলে সকলেই তাঁকে পরিবারেরই একজন মনে করে তাঁর সাথে আন্তরিক ও মানবিক ব্যবহার করে। কেউ তাঁকে অবহেলা বা ছোট করে দেখেনি। কখনও তাঁর প্রতি কারো সামান্য কটূক্তি কিংবা বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায়নি।

✍ অন্যদিকে উদ্দীপকে বর্ণিত গৃহকর্মী শিল্পীর প্রতি মানবিক আচরণ করা হয়নি। বরং তার প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করা হয়েছে। তার ওপর চাপানো হয়েছে কাজের বোঝা। চালানো হয়েছে অকথ্য শারীরিক নির্যাতন। ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি ভালোবাসা ও সম্মান পেলেও উদ্দীপকের শিল্পী পেয়েছে নিষ্ঠুর অমানবিক আচরণ। সেদিক থেকে উদ্দীপকের কিশোরী শিল্পীর গৃহকর্ত্রীর সাথে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির গৃহকর্ত্রীর বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।

ঘ. শিল্পীর প্রতি তার গৃহকর্ত্রীর আচরণ হওয়া উচিত মমতাদির গৃহকর্ত্রীর মতোই মানবিক ও আন্তরিকতাপূর্ণ।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি সংসারের অভাব-অনটনের কারণে অন্যের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেন। মমতাদির গৃহকর্ত্রী তাঁর প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মাইনে ধার্য করেন। তাঁকে পরিবারের সবাই আপন করে নেয়। স্কুলপড়ুয়া ছেলেটিকেও ছোট ভাইয়ের মতো আদর করার অধিকার দেওয়া হয়।

✍ উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্পীর গৃহকর্ত্রী শিল্পীর ওপর যে অমানুষিক কাজ করেছে তা খুবই গর্হিত কাজ। গৃহকর্মী শিল্পী নিতান্ত পেটের দায়ে অন্যের বাড়িতে কাজ নেয়। গৃহকর্ত্রী একটি ছোট মেয়ের ওপর বাসার সকল কাজের বোঝা চাপিয়ে দেয়। কাজের বোঝা বইবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেললে তার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়। যা আজকের এই সভ্য সমাজে কল্পনা করা যায় না। এ ধরনের কাজ সামাজিক ও নৈতিকতার দিক থেকে যেমন ঘৃণ্য তেমনি আইনের দৃষ্টিতেও বড় ধরনের অপরাধ।

✍ উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্পীর গৃহকর্ত্রীর আচরণ হওয়া উচিত মমতাদির গৃহকর্ত্রীর মতোই সৌহার্দ্যপূর্ণ। স্কুল পড়ুয়া ছেলেটির পরিবারের সকলের ভালোবাসা ও আন্তরিক আচরণে মমতাদি তাদের পরিবারেরই একজন হয়ে উঠেছিল। শিল্পীর গৃহকর্ত্রী যদি শিল্পীকে নিজের মেয়ের মতো মনে করত তবে এমন নির্দয় আচরণ করা তার পক্ষে সম্ভব হতো না। মানুষকে হতে হবে মানুষেরই জন্য। কারো অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তার প্রতি অন্যায় আচরণের পরিবর্তে তার পাশে দাঁড়ানোই মনুষ্যত্বের ধর্ম।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
মমতাদি
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Momotadi
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৫নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
সুবল কয়েক মাস ধরে একটি বাড়িতে নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে। বাড়ির লোকজন কারণে-অকারণে প্রায়ই তাকে বকাবকি করে। বাড়ির কর্তা দু-একবার তার গায়ে হাতও তুলেছে। সুবল মনের দুঃখে গোপনে চোখের জল ফেলে।
ক. মমতাদি বাড়িতে আসার কতদিন পর তার সাথে লেখকের ভাব হলো? ১
খ. মমতাদি প্রথা ভঙ্গ করে উপার্জনের জন্য বাইরে এসেছেন কেন? ২
গ. উদ্দীপকের সুবলের গৃহকর্মের পরিবেশের সাথে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির প্রাপ্ত পরিবেশের অমিল ব্যাখ্যা করো। ৩ 
ঘ. প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উদ্দীপকে ‘মমতাদি’ গল্পের মূলসুরই প্রকাশিত হয়েছে- তোমার মতামতের সপক্ষে যুক্তি দেখাও। ৪


৫নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. মমতাদি বাড়িতে আসার সপ্তাহখানেক পর তার সাথে লেখকের ভাব হলো।

খ. মমতাদি অভাবের তাড়নায় প্রথা ভঙ্গ করে উপার্জনের জন্য বাইরে এসেছেন।

✍ মমতাদি একজন মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারী। তার স্বামী চার মাস যাবৎ বেকার। এ অবস্থায় সংসার চালানোর জন্য মমতাদিকে প্রথাভঙ্গ করতে হয়। সামাজিক প্রথামতো নারীদের অন্তঃপুরে থাকার কথা। কিন্তু অভাব মমতাদির জীবনে এর ব্যত্যয় ঘটায়। তিনি বাধ্য হন বাড়ি বাড়ি রান্নার কাজ খুঁজতে।

গ. উদ্দীপকের সুবলের গৃহকর্মের পরিবেশে অমানবিকতার দিকটি প্রকাশ পেলেও ‘মমতাদি’ গল্পে গৃহকর্মীর সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। 

✍ ‘মমতাদি’ গল্পে গৃহকর্মে নিয়োজিত মানুষের প্রতি মানবিক আচরণ করার দিকটি প্রাধান্য পেয়েছে। ‘মমতাদি’ গল্পে একটি সুন্দর ও বন্ধুত্বপূর্ণ গৃহপরিবেশের কথা বর্ণিত হয়েছে। সেখানে মমতাদি গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করলেও তার আত্মমর্যাদা সমুন্নত রয়েছে। তাকে বাড়ির সকলেই আপন করে নিয়েছে।

✍ উদ্দীপকে সুবলের গৃহপরিবেশে ‘মমতাদি’ গল্পের গৃহপরিবেশের বিপরীত চিত্র ফুটে উঠেছে। সুবল গৃহকর্মী হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেও গৃহকর্তার অমানবিক আচরণ লাভ করে। তাকে নীরবে চোখের জল ফেলতে হয়। মমতাদি কর্মস্থলে যথার্থ মর্যাদা ও সহানুভূতি লাভ করলেও উদ্দীপকের সুবল তার বিপরীত আচরণ প্রত্যক্ষ করে। 

ঘ. দুটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদ্দীপক এবং ‘মমতাদি’ গল্পে গৃহকর্মীদের সাথে মানবিক আচরণের দিকটি ফুটে উঠেছে।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় গৃহকর্মে নিয়োজিতদের প্রতি আচরণের দিকটিকে প্রধান করে তুলেছেন। আমাদের গৃহকর্মে যারা নিয়োজিত রয়েছে তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কে স্থাপনের প্রতি লেখক ইঙ্গিত করেছেন। মমতাদির প্রতি তাঁর নিয়োগকারী সুন্দর আচরণ করেছেন। ফলে মমতাদিও নিঃশঙ্কচিত্তে সবাইকে আপন ভাবতে পেরেছেন।

✍ উদ্দীপকে গৃহকর্মীর সাথে আচরণের দিকটিকে তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের গৃহকর্মে নিয়োজিতদেরও যে আত্মমর্যাদা আছে সেই দিকটিকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে সুবলের চরিত্রের মাঝে। সুবল যেমন গৃহকর্তার কাছে মানবিক আচরণ প্রত্যাশী তেমনি ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদিও মানবিক আচরণ প্রত্যাশী। সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করলে গৃহকর্মীরা গৃহের কাজের প্রতি দায়িত্বশীল এবং আন্তরিক হয়।

✍ যারা গৃহকর্মে কাজ করে তারাও মানুষ। ফলে তারা গৃহকর্তার কাছে নিজের আত্মসম্মান অটুট থাকবে বলে আশা করে। ‘মমতাদি’ গল্প এবং উদ্দীপক উভয়ই গৃহকর্মীর সাথে মানবিক আচরণ করার আবেদনকে মূর্ত করে তুলেছে। গল্পে গৃহকর্মীর সাথে ভালো আচরণের যে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে উদ্দীপকে তার প্রয়োজনীয়তাই ফুটে উঠেছে। তাই বলা যায়, প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উদ্দীপকে ‘মমতাদি’ গল্পের মূলসুরই প্রকাশিত হয়েছে।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
মমতাদি
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Momotadi
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৬নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
জয়গুণ কাশিয়াডাঙা গ্রামের তালুকদার বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ির সকল কাজই তাকে করতে হয়। সারাদিন একটু দম ফেলার ফুরসতও তার হয় না। এত কাজ করেও জয়গুণ তালুকদার বাড়ির কারো মন পায় না। বাড়ির গৃহকর্ত্রী সাহানা বেগম প্রায়ই তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। একটু পান থেকে চুন খসলেই জয়গুণের বিপদ। অমনি সাহানা বেগম তাকে পাঁচকথা শুনিয়ে দেন।
ক. মমতাদির জন্য মাইনে ঠিক হলো কত টাকা? ১
খ. মমতাদি ভাঁড়ার ঘরে ছোট ছেলেটিকে রসগোল্লা ও সন্দেশ খেতে বাধা দিলেন কেন? ২
গ. উদ্দীপকের জয়গুণের সাথে ‘মমতাদি’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রের কোন দিক থেকে সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ৩ 
ঘ. “কিছুটা সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকটি ‘মমতাদি’ গল্পের মূলভাবকে ধারণ করে না”- উক্তিটি বিশ্লেষণ করো। ৪

৬নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. মমতাদির জন্য মাইনে ঠিক হলো পনেরো টাকা?

খ. অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে অসুখ হবে ভেবে মমতাদি ভাঁড়ার ঘরে ছোট ছেলেটিকে রসগোল্লা ও সন্দেশ খেতে বাধা দিলেন।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পে বাড়িতে অনেক সন্দেশ ও রসগোল্লা নিয়ে বাড়িতে কুটুম আসে। ভাঁড়ার ঘরে গিয়ে বাড়ির ছোট ছেলেটি সেই রসগোল্লা ও সন্দেশ অনবরত মুখে পুরে চলে। মমতাদি এটি দরজার পাশ থেকে দেখে বাধা দেন। কেননা মাত্রাতিরিক্ত মিষ্টি খেলে ছেলেটির পেট খারাপ করতে পারে। এজন্য মমতাদি বাদ সাধেন।

গ. কর্মদক্ষতার দিক থেকে উদ্দীপকের জয়গুণের সাথে ‘মমতাদি’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র মমতার সাদৃশ্য ফুটে ওঠে।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পে মমতা নামের এক দরিদ্র নারীর কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। তিনি অভাবের তাড়নায় অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। সেখানে বিনা আড়ম্বরে নিখুঁতভাবে বাড়ির সব কাজ করেন। কোনো কাজ তিনি ফেলে রাখেন না। তাঁর কর্মদক্ষতা দেখে বাড়ির সকলেই মুগ্ধ হয়।

✍ উদ্দীপকের জয়গুণ ‘মমতাদি’ গল্পের মমতার মতোই কর্মদক্ষ। সে তালুকদার বাড়িতে গৃহকর্মনিপুণার মতো সারাদিন সকল কাজই করে। মমতা যেমন নীরবে নতমুখে বাড়ির কাজ করে তেমনি উদ্দীপকের জয়গুণও সকল কাজ করে তার কর্মদক্ষতার পরিচয় দেয়। আর এই কর্মদক্ষতার ক্ষেত্রেই জয়গুণ ও মমতার সাদৃশ্য ফুটে ওঠে।

ঘ. ‘মমতাদি’ গল্পে গৃহকর্মীদের সাথে সদ্ব্যবহারের দিকটি প্রধান হয়ে উঠলেও উদ্দীপকে তা অনুপস্থিত।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পে গৃহকর্মে নিয়োজিত মানুষের প্রতি মানবিক আচরণ করার দিকটি প্রাধান্য পেয়েছে। কাজের লোক হলেও মমতাদিকে সবাই নিজের বাড়ির একজন বলেই মনে করে। ফলে গৃহকর্মীর সাথে পরিবারের সদস্যদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপিত হয়।

✍ উদ্দীপকে গৃহকর্মীদের সাথে মানবিক আচরণ করার দিকটি ফুটে ওঠেনি। সেখানে পরিবারের কেউই গৃহকর্মী জয়গুণের সাথে ভালো ব্যবহার করে না। বিশেষ করে গৃহকর্ত্রী প্রায়ই জয়গুণের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এর মাধ্যমে তালুকদার বাড়ির লোকদের নীচু মানসিকতার প্রকাশ ঘটেছে।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পের মূল বক্তব্য হলো মানবিক আচরণ। মমতাদির সংসারে অভাব ছিল বলেই মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারী হয়েও তাকে অন্যের বাড়িতে কাজ করতে হয়। কর্মস্থলে তাঁর এই আত্মমর্যাদাবোধ তার সবসময়ই সমুন্নত ছিল। ফলে এই দিক থেকে গল্পের সাথে উদ্দীপকের অমিল রয়েছে। আমাদের গৃহকর্মে যারা কাজ করেন তাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা জরুরি। তাদের আত্মসম্মানবোধকে শ্রদ্ধা করলে তারাও গৃহস্থের পরিবারকে নিজ পরিবার হিসেবে গণ্য করে। আর এটিই গল্পের মূল বক্তব্য, যা উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
মমতাদি
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Momotadi
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৭নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
রানু এক ধনী পরিবারে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে। বাড়ির লোকজন রানুকে বাইরের একজন লোক হিসেবেই দেখে। একদিন বাড়ি থেকে কিছু টাকা চুরি হয়। কেউ কিছু না বললেও রানু বুঝতে পারে যে কেউ কেউ ওকে সন্দেহ করছে। রানুর সাথে তারা আগের মতো স্বাভাবিক আচরণ করছে না। তাই গৃহকর্ত্রীকে সে কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা জানায়। গৃহকর্ত্রী রানুকে ছাড়তে না চাইলেও সে তার সিদ্ধান্তে অটল থাকে। এমনকি গৃহকর্ত্রী তাকে ঈদের বোনাসসহ সেই মাসের বেতন বুঝিয়ে দিতে গেলে রানু তা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে চলে আসে।
ক. ‘বাছা’ শব্দের অর্থ কী? ১
খ. ‘দু ফোঁটা দুর্বোধ্য রহস্য’ বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. গৃহকর্মীর প্রতি আচরণের দিক থেকে উদ্দীপক ও ‘মমতাদি’ গল্পের মাঝে অমিল তুলে ধরো। ৩ 
ঘ. ‘রানু ও মমতাদি দুজনেই আত্মসম্মানবোধে সমুজ্জ্বল’ - উদ্দীপক ও গল্পের আলোকে মতামত দাও। ৪

৭নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. বাছা শব্দের অর্থ হলো বৎস বা অল্পবয়সী সন্তান।

খ. দু-ফোঁটা দুর্বোধ্য রহস্য বলতে লেখক বোঝাতে চেয়েছেন গৃহকর্ত্রীর কাছে ভালো ব্যবহার পাওয়ার কৃতজ্ঞতায় ফেলা মমতাদির চোখের জলকে।

✍ গৃহকর্ত্রী যখন মমতাদিকে খোকাকে আদর করার পূর্ণ অধিকার দিয়ে গেলেন তখন মমতাদির মনে গভীর ভাবাবেগের উদয় হলো। ভালো লাগা, মর্যাদা আর আত্মগৌরবে তার চোখের জল টপটপ করে ঝরে পড়ল। খোকাকে আদর করার কারণে সে অপমানিত হলে হয়তো তার চোখ শুকনোই থাকত। এজন্যই তার চোখের জলকে ‘দু’ফোটা দুর্বোধ্য রহস্য’ বলা হয়েছে।

গ. মমতাদি গল্পের মমতাদি গৃহকর্মে নিয়োজিত থাকাকালীন যথাযোগ্য সম্মান ও সহায়তা পেলেও উদ্দীপকের রানু পায় অবহেলা ও অমর্যাদা।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি গৃহকর্মী হলেও স্কুলপড়ুয়া ছেলে ও তার পরিবার তাঁকে পরিবারের সদস্যের মর্যদা দিয়েছে। মমতাদি তাদের কাছ থেকে পেয়েছে মানবিক আচরণ, ভালোবাসা ও সম্মান। যার ফলে আত্মমর্যাদাবোধ টিকিয়ে রেখে মমতাদি জীবিকা অর্জন করতে সক্ষম হন।

ক্ষ উদ্দীপকের গৃহকর্মী রানু উপযুক্ত মর্যাদা ও সম্মান পায়নি। টাকা চুরি হওয়ার ঘটনায় গৃহকর্ত্রীসহ সকলেই তাকে সন্দেহের চোখে দেখেছে। তার সাথে অমানবিক ও অস্বাভাবিক আচরণ করায় সে সীমাহীন অপমানবোধ করেছে। এক্ষেত্রে ‘মমতাদি’ গল্পে গৃহকর্মীর প্রতি সদ্ব্যবহার পরিলক্ষিত হলেও উদ্দীপকে তা অনুপস্থিত।

ঘ. উদ্দীপকের রানু ও মমতাদি গল্পের মমতাদি উভয়েই দারিদ্র্যের কাছে মাথানত না করে নিজেদের সততা ও আত্মসম্মানবোধের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছে।

✍ ‘মমতাদি’ গল্পে প্রাধান্য পেয়েছে গৃহকর্মে নিয়োজিতদের প্রতি মানবিক আচরণের দিকটি। এর পাশাপাশি এখানে মূর্ত  হয়ে উঠেছে দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হয়েও কীভাবে মমতাদি ধৈর্যের সাথে নিজের আত্মসম্মানকে টিকিয়ে রেখেছেন। এক্ষেত্রে তাঁর কর্মস্থলের মানুষদের সহানুভূতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

✍ অনুরূপভাবে উদ্দীপকের রানুর চরিত্রটিও আত্মসম্মানবোধে দেদীপ্যমান। উদ্দীপকের রানু দারিদ্র্যজয়ের সংগ্রামে অবতীর্ণ। চুরির মিথ্যা অপবাদের খোটা তাকে বেদনাহত করেছে। তার আত্মসম্মানের কাছে কোনো কিছুই বড় নয়। তাই সে বেতন বোনাস নিতেও অস্বীকৃতি জানায়।

✍ উদ্দীপকের রানু এবং মমতাদির চরিত্র বিশ্লেষণ করলে মনে হয় দারিদ্র্য যেন তাদের মহান করে তুলেছে। সমাজের অপরাপর দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের জন্য তারা উদাহরণ হয়ে উঠেছে। মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের মেয়ে হলেও মমতাদির জীবনে দারিদ্র্য কতটা প্রকট হয়ে উঠেছিল তা তার জীবনময়ের গলির শ্রীহীন ঘরটি দেখলেই বোঝা যায়। কিন্তু মমতাদি কারো করুণা বা দায় বহন না করে নিজেদের মতো করে দারিদ্র্যকে জয় করার চেষ্টা করেছে। উদ্দীপকের রানুও আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেয়নি টাকা বা চাকরি রক্ষার লোভে। শত দারিদ্র্যের মাঝে কীভাবে আত্মসম্মানবোধে রাজটীকা পরে থাকা যায় রানু ও মমতাদি আমাদের কাছে সেই দৃশ্যকল্পই তুলে ধরেছে। তাই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
মমতাদি
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Momotadi
Golpo
Srijonshil
Question-Answer

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে কোন গল্প রচনা করেন?
 উত্তর: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে ‘অতসীমামী’ নামক গল্প রচনা করেন।

২. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কতটি উপন্যাস রচনা করেন?
 উত্তর: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চাশটিরও অধিক উপন্যাস রচনা করেন।

৩. মমতাদি কোথায় থাকেন?
 উত্তর: মমতাদি জীবনময়ের গলিতে থাকেন।

৪. মমতাদির স্বামীর কয় মাস ধরে চাকরি নেই?
 উত্তর: মমতাদির স্বামীর চাকরি নেই চারমাস।

৫. মমতাদির কত টাকা মাইনে ঠিক হলো?
 উত্তর: মমতাদির পনেরো টাকা মাইনে ঠিক হলো।

৬. মমতাদির কী দেখে সকলে খুশি হলো?
 উত্তর: মমতাদির কাজের শৃঙ্খলা ও ক্ষিপ্রতা দেখে সকলে খুশি হলো।

৭. ‘মমতাদি’ গল্পে বাড়িতে কী নিয়ে কুটুম এসেছিল?
 উত্তর: ‘মমতাদি’ গল্পে বাড়িতে রসগোল্লা ও সন্দেশ নিয়ে কুটুম এসেছিল।

৮. ‘মমতাদি’ গল্পে কার গালে তিনটি আঙুলের দাগ দেখা যায়?
 উত্তর: ‘মমতাদি’ গল্পে মমতাদির গালে তিনটি আঙুলের দাগ দেখা যায়।

৯. ‘মমতাদি’ গল্পে ছোট ছেলেটি কার চুলে বেণী পাকাবার চেষ্টা করে?
 উত্তর: ‘মমতাদি’ গল্পে ছোট ছেলেটি মমতাদির চুলে বেণী পাকাবার চেষ্টা করে।

১০. কবে থেকে মমতাদির বরের চাকরি হয়েছে?
 উত্তর: ইংরেজি মাসের পয়লা থেকে মমতাদির বরের চাকরি হয়েছে।

১১. মিথ্যে বললে কী হয়?
 উত্তর: মিথ্যে বললে পাপ হয়।

১২. মমতাদি জীবনময়ের গলির কয় নম্বর বাড়িতে থাকেন?
 উত্তর: মমতাদি জীবনময়ের গলির সাতাশ নম্বর বাড়িতে থাকেন।

১৩. সাতাশ নম্বর বাড়িটি কয় তলা?
 উত্তর: সাতাশ নম্বর বাড়িটি দোতলা।

১৪. জীবনময়ের গলির মোড়ে ফেরিওয়ালার কাছ থেকে কে কমলালেবু কিনেছিলেন?
 উত্তর: জীবনময়ের গলির মোড়ে ফেরিওয়ালার কাছ থেকে মমতাদি কমলালেবু কিনেছিলেন।

১৫. মমতাদির বাড়িতে চটের বেড়া দিয়ে কী তৈরি করা হয়েছে?
 উত্তর: মমতাদির বাড়িতে চটের বেড়া দিয়ে অস্থায়ী রান্নাঘর তৈরি করা হয়েছে।

১৬. মমতাদি ছোট ছেলেটিকে কোন ঘরে নিয়ে গিয়ে টুলে বসাল?
 উত্তর: মমতাদি ছোট ছেলেটিকে শোবার ঘরে নিয়ে গিয়ে টুলে বসাল।

১৭. মমতাদির শোবার ঘরে কয়টি জানালা আছে?
 উত্তর: মমতাদির শোবার ঘরে দুটি জানালা আছে।

১৮. মমতাদির সংসারের প্রায় সমস্ত জিনিস কোন ঘরে ঠাঁই পেয়েছে?
 উত্তর: মমতাদির সংসারের প্রায় সমস্ত জিনিস শোবার ঘরে ঠাঁই পেয়েছে।

১৯. মমতাদির কয় বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে?
 উত্তর: মমতাদির পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।

২০. মমতাদির ঘরে টেবিলের ঊর্ধ্বে দেয়ালের গর্তের তাকে কী রয়েছে?
 উত্তর: মমতাদির ঘরে টেবিলের ঊর্ধ্বে দেয়ালের গর্তের তাকে কতকগুলো বই রয়েছে।

২১. মমতাদির বাড়িতে কে সারারাত পেটের ব্যথায় ঘুমায়নি?
 উত্তর: মমতাদির বাড়িতে মমতাদির ছেলে সারারাত পেটের ব্যথায় ঘুমায়নি।

২২. মমতাদির বাড়িতে ছোট ছেলেটি কয়টি কমলালেবু খেল?
 উত্তর: মমতাদির বাড়িতে ছোট ছেলেটি দুটি কমলালেবু খেল।

২৩. ‘মমতাদি’ গল্পে কার ঘরে মুড়ি ছাড়া খাওয়ার জিনিস কিছু নেই?
 উত্তর: ‘মমতাদি’ গল্পে মমতাদির ঘরে মুড়ি ছাড়া খাওয়ার জিনিস কিছু নেই।

২৪. মমতাদি ছোট ছেলেটিকে কোথায় মাদুর পেতে বসতে দিল?
 উত্তর: মমতাদি ছোট ছেলেটিকে বাইরে রোয়াকে মাদুর পেতে বসতে দিল।

২৫. ‘মমতাদি’ গল্পটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত?
 উত্তর: ‘মমতাদি’ গল্পটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সরীসৃপ’ নামক গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।

২৬. ‘মমতাদি’ গল্পে স্কুলপড়ুয়া ছেলেটি মমতাদির কাছে ছোট ভাইয়ের মর্যাদা লাভ করে।
 উত্তর: ‘মমতাদি’ গল্পে স্কুলপড়ুয়া ছেলেটি মমতাদির কাছে ছোট ভাইয়ের মর্যাদা লাভ করে।

২৭. মমতাদি কাকে নিজ বাসায় নিয়ে গিয়ে যথাসামর্থ্য আপ্যায়ন করেন?
 উত্তর: মমতাদি স্কুলপড়ুয়া ছেলেটিকে নিজ বাসায় নিয়ে গিয়ে যথাসামর্থ্য আপ্যায়ন করেন।

২৮. সম্মান ও সহমর্মিতা নিয়ে স্কুল পড়ুয়া ছেলে ও তার পরিবার কার পাশে দাঁড়ায়?
 উত্তর: সম্মান ও সহমর্মিতা নিয়ে স্কুলপড়ুয়া ছেলে ও তার পরিবার মমতাদির পাশে দাঁড়ায়।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
মমতাদি
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Momotadi
Golpo
Srijonshil
Question-Answer

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. কাজ চাইতে গিয়ে মমতাদির যেটুকু সংকোচ থাকা দরকার ছিল তাও একেবারে নেই- কেন?
 উত্তর: সংকোচ কাটানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টায় অতিরিক্ত জয় করে ফেলার কারণে মমতাদি কাজ চাইতে গিয়ে একেবারে সংকোচ হারিয়ে ফেলেছিলেন।

✍ মমতাদি একজন মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারী। তা সত্তে¡ও তাকে অভাবের তাড়নায় বাধ্য হয়ে রান্নার কাজ খুঁজতে হয়। এজন্য তাঁকে সকল লজ্জা-সংকোচ উপেক্ষা করে কাজ চাইতে হয়। আর এই সংকোচ কাটানোর জন্য অতিরিক্ত চেষ্টার ফলেই তিনি সংকোচের মাত্রা একেবারেই অতিক্রম করে গেছেন। ফলে কাজ চাইতে গিয়ে তাঁর যেটুকু সংকোচ থাকা দরকার ছিল তাও নেই।

২. মমতাদির ওপর বাড়ির সকলে খুশি হলেন কেন?
 উত্তর: মমতাদির কাজের শৃঙ্খলা ও ক্ষিপ্রতা দেখে বাড়ির সকলে তার ওপর খুশি হলেন।

✍ মমতাদি মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারী হয়েও অভাবের তাড়নায় রান্নার কাজ করতে এসেছেন। তিনি কাজ করতে এসে নীরবে নতমুখে সকল কাজ সম্পন্ন করেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপদেশ না পেলেও নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে সুন্দরভাবে কাজ সম্পাদন করেন। আর তাঁর কাজও হয় অত্যন্ত পরিপাটি ও নিখুঁত। এজন্য বাড়ির সকলে মমতাদির ওপর খুশি হলেন।

৩. মমতাদির ওপর ছোট ছেলেটি ক্ষুব্ধ হলো কেন?
 উত্তর: মমতাদির সাথে ভাব করতে গিয়ে উপেক্ষিত হওয়ায় ছোট ছেলেটি মমতাদির ওপর ক্ষুব্ধ হলো।

✍ মমতাদি রান্নার কাজ করতে এসে কাজগুলোকেই আপন করে নিয়েছিলেন। তিনি নীরবে নতমুখে সকল কাজ সম্পন্ন করেন। নতুন জায়গায় এলে প্রথম দিকে বাড়ির কারো সাথে তিনি মিশতে পারলেন না। গৃহকর্মী হলেও তাঁর আলাদা ব্যক্তিত্ব ছিল। তাই ছোট ছেলেটি ভাব জমাতে গিয়ে সফল হয় না। বেশ কয়েকবার রান্নাঘরে গিয়ে দাঁড়ালেও মমতাদি ছেলেটিকে উপেক্ষা করেন। তাই ছেলেটি মমতাদির ওপর ক্ষুব্ধ হলো।

৪. মমতাদি ছোট ছেলেটিকে বামুনদি বলতে নিষেধ করেন কেন?
 উত্তর: মমতাদি মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারী হওয়ায় ছোট ছেলেটি তাকে বামুনদি বললে তিনি তাকে বামুনদি বলতে নিষেধ করেন।

✍ একসময় রান্না বা গৃহকর্মে নিয়োজিত ব্রাহ্মণ নারীদের কথ্যরীতিতে বামুনদি বলা হতো। গল্পের ছোট ছেলেটিও তাই মমতাদিকে বামুনদি বলে। কিন্তু মমতাদি কখনোই গৃহকর্মী ছিলেন না। তিনি অভাবের তাড়নায় বাধ্য হয়ে এ কাজে এসেছেন। তাই তাঁকে বামুনদি বললে তাঁর আত্মমর্যাদায় বাধে। এ কারণেই মমতাদি ছোট ছেলেটিকে বামুনদি বলতে নিষেধ করেন।

৫. মমতাদি তাঁর চড় খাওয়ার বিষয়টি গোপন করেছিলেন কেন?
 উত্তর: মমতাদি আত্মসম্মানবোধের কারণে তার চড় খাওয়ার বিষয়টি গোপন করেছিলেন।

✍ মমতাদি একজন মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারী। আত্মমর্যাদাবোধও তাঁর প্রখর। তিনি কোনোভাবে চাননি যে তাঁর ঘরের খবর অন্য কেউ জানতে পারুক। নিজের আত্মমর্যাদা সমুন্নত রেখে মমতাদি কাজ করতে চেয়েছেন। এজন্য গালে চড়ের দাগ স্পষ্ট হওয়া সত্তে¡ও মমতাদি ছোট ছেলেটির কাছে  চড় খাওয়ার বিষয়টি গোপন রাখতে চেয়েছিলেন।

৬. মমতাদির বরের চাকরির জন্য ছোট ছেলেটি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল কেন?
 উত্তর: বরের চাকরি নেই বলে মমতাদি ভদ্র ঘরের মেয়ে হয়েও গৃহকর্মীর কাজ করছে ভেবে ছোট ছেলেটি তাঁর বরের চাকরির জন্য দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল।

✍ মমতাদি একান্ত বাধ্য হয়েই গৃহকর্মীর কাজ করেন। কেননা তাঁর স্বামী চার মাস ধরে বেকার। মমতাদির এই দুর্গতির কথা ছোট ছেলেটিও জানত। ছেলেটির সাথে মমতাদির একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এজন্য ছেলেটি মনেপ্রাণে চায় মমতাদির বরের বেকারত্ব যেন দ্রæতই ঘুচে যায়।

৭. ‘পরদিন থেকে সে আর আসত না’- কেন?
 উত্তর: মমতাদির আত্মসম্মানে আঘাত লাগলে মমতাদি পরদিন থেকে আর আসত না।

✍ মমতাদির আত্মসম্মানবোধ ছিল প্রবল। তিনি অভাবের তাড়নায় কাজ করতে এসেছেন সত্য কিন্তু তিনি অপমানিত হলে কাজ ছেড়ে দেয়ার ক্ষমতাও তার ছিল। ফলে গৃহকর্ত্রী কোনো কারণে তাকে সন্দেহের চোখে দেখলে বা অসম্মান করলে পরদিন থেকে মমতাদি আর আসত না।
Share:

SSC শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব গল্পের (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | নবম-দশম শ্রেণির গাইড
নবম-দশম শ্রেণি
বাংলা ১ম পত্র গাইড
গল্প/গদ্য

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
মোতাহের হোসেন চৌধুরী

SSC Bangla 1st Paper Golpo
Shikkha O Monusotto
Srijonshil
Question and Answer pdf download
শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: নবম-দশম শ্রেণি

১নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
 সুমন ও শ্যামল বাল্যবন্ধু। দুজনই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত। পেশাগত জীবনে সুমন বড় ব্যবসায়ী। গাড়ি, বাড়ি, টাকা-কড়ি কোনো কিছুরই অভাব নেই তার। সবাই তাকে এক নামে চেনে। আর শ্যামল শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়। গত সিডরে তাদের গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এ সময় শ্যামল তার ছাত্রদের নিয়ে ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করে অসহায় মানুষদের কাছে পৌঁছে দেয়। তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে। অথচ সুমন ছুটে এসে সাহায্যের বদলে অসহায় মানুষদের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে বিঘার পর বিঘা জমি কিনে নেয়।
ক. মানবজীবনে মুক্তির জন্য মোতাহের হোসেন চৌধুরী কয়টি উপায়ের কথা বলেছেন?
খ. আত্মার অমৃত উপলব্ধি করা যায় না কেন?
গ. উদ্দীপকের সুমনের মাঝে ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের যে দিকটি প্রকাশিত তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘শ্যামলের কাজে শিক্ষার অপ্রয়োজনীয় দিকটি উপস্থিত’ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: ক
ক্ষ মানবজীবনে মুক্তির জন্য মোতাহের হোসেন চৌধুরী তার ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে দুইটি উপায়ের কথা বলেছেন।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: খ
ক্ষ প্রকৃতিগতভাবেই মানুষ জীবসত্তা থেকে মুক্তি পায় না বলে আত্মার অমৃত উপলব্ধি করা যায় না।

✍ লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী তাঁর ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে মানুষের মাঝে দুটি সত্তার কথা বলেছেন। একটি জীবসত্তা আরেকটি মানবসত্তা বা মনুষ্যত্ব। একমাত্র শিক্ষার মাধ্যমেই জীবসত্তা থেকে একজন মানুষ মানবসত্তায় উপনীত হয়। মনুষ্যত্ব অর্জনের জন্য অন্নবস্ত্রের চিন্তা থেকে মুক্তি প্রয়োজন। তাই জীবসত্তা থেকে মুক্তি ছাড়া আত্মার অমৃত উপলব্ধি করা যায় না।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: গ
ক্ষ উদ্দীপকের সুমনের মাঝে ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের জীবসত্তা অর্জনের দিকটি প্রতিফলিত।

✍ শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব প্রবন্ধ অনুযায়ী জীবসত্তা থেকে মানবসত্তায় উত্তরণের মাধ্যম হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষাই মানুষকে শেখায় কী করে জীবনকে উপভোগ করতে হয়। জীবনে অন্নচিন্তা বা অর্থচিন্তা থেকে মুক্তি পেতে হবে এ কথা সত্য। কিন্তু অর্থসাধনাই জীবনসাধনা নয়। জীবনের প্রকৃত মর্মার্থ বুঝতে না পারলে মানবজীবনে শিক্ষা কোনো বৃহত্তর কল্যাণ সাধন করতে পারে না। জীবনের প্রকৃত সাধনা হচ্ছে মনুষ্যত্ব অর্জন। জীবনে মুক্তি অর্জনের জন্য দুটি উপায় অবলম্বন করতে হয়। একটি অন্নবস্ত্রের চিন্তা থেকে মুক্তি আরেকটি হচ্ছে শিক্ষাদীক্ষার মাধ্যমে মনুষ্যত্বের স্বাদ পাওয়ার সাধনা।

✍ উদ্দীপকের সুমন উচ্চ শিক্ষিত। সে পেশায় ব্যবসায়ী ও প্রচুর বিত্ত-বৈভবের মালিক। কিন্তু সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত নিজ এলাকার মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে সুমন তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে নামমাত্র মূল্যে বিঘার পর বিঘা জমি ক্রয় করে। এখানে সুমনের চরিত্র বিশ্লেষণ করলে আমরা পাই শিক্ষা তার মাঝে মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করতে পারেনি। সে তার অর্থ সাধনাকেই জীবন সাধনা জ্ঞান করেছে। সে লোভী অর্থের মোহে অন্ধ। লোভের ফলে তার আত্মিক মৃত্যু ঘটেছে। তার দ্বারা কোনো মানবিক কাজ করা সম্ভব নয়। মানুষের দুঃখ কষ্ট আর আহাজারিতেও তার হৃদয় বিগলিত হয়নি। তাই আমরা লক্ষ করি সুমন শিক্ষিত হলেও তার মাঝে শুধু জীবসত্তার বিকাশ ঘটেছে। মনুষ্যত্ব সে অর্জন করতে পারেনি।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: ঘ
ক্ষ শ্যামলের কাজে শিক্ষার অপ্রয়োজনীয় দিকটি উপস্থিত। আর এই অপ্রয়োজনের দিকই তার শ্রেষ্ঠ দিক।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, অর্থচিন্তার নিগড়ে মানুষ বন্দি। ধনী-দরিদ্র সকলের মাঝে কাজ করে তার অর্থলিপ্সা। শুধু চাই, আর চাই। মানুষের মধ্যে বিদ্যমান জীবসত্তা মানুষকে অন্নচিন্তা ও অর্থচিন্তার মধ্যেই ব্যাপৃত রাখে। যাকে লেখক শিক্ষার প্রয়োজনীয় দিক বলে উল্লেখ করেছেন। আর শিক্ষা অর্জনের মধ্য দিয়ে মনুষ্যত্ব অর্জনের দিকটিকে বলা হয়েছে শিক্ষার অপ্রয়োজনীয় দিক। যাকে লেখক জীবনের শ্রেষ্ঠ দিক বিবেচনা করেছেন। শিক্ষার অপ্রয়োজনীয় দিকটি অর্জনই শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য। কারণ অন্ন-বস্ত্রের সমস্যাকে বড় করে দেখলে সুফল পাওয়া যাবে না।

✍ উদ্দীপকের শ্যামল উচ্চশিক্ষিত। শিক্ষাজীবন শেষে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে শিক্ষকতাকে। সিডরে তার গ্রামটি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেলে শ্যামল তার ছাত্রদের নিয়ে ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করে দুর্গত ও অসহায় মানুষের কাছে তা পৌঁছে দেয়। তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে। শ্যামলের শিক্ষা-দীক্ষা তার মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করেছিল। ফলে শ্যামল এই মানবিক উদ্যোগটি গ্রহণ করে। কিন্তু একই গ্রামের শিক্ষিত ও বাল্যবন্ধু সুমন সহায়তার হাত না বাড়িয়ে তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নেয়।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে শিক্ষার প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। শিক্ষার অপ্রয়োজনীয় দিকটি হচ্ছে শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করা। সত্যিকার মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা। আলোচ্য উদ্দীপকের শিক্ষক শ্যামল নিজেকে সেভাবেই গড়ে তুলেছে। সে শিক্ষার অপ্রয়োজনীয় দিকটি গুরুত্বসহকারে নিজের মধ্যে চর্চা করেছে। তাই তার দ্বারা মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা সম্ভব হয়েছে। পরের জন্য সে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার মনোভাব পোষণ করে। তাই বলা হয়েছে, ‘শ্যামলের কাজে শিক্ষার অপ্রয়োজনীয় দিকটি উপস্থিত’।
 

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Shikkha O Monusotto
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
২নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
মৃতপ্রায় দশ বছরের ফেলানীকে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। পরে ফেলানীর কাছ থেকে জানা যায় সে গুলশানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আমিনা বেগমের বাসায় কাজ করত। পান থেকে চুন খসলে তার উপর অত্যাচার চলত। সেদিন ইস্ত্রি করতে গিয়ে কাপড় পুড়িয়ে ফেলায় তাকে গরম ইস্ত্রি দিয়ে ছ্যাকা দেওয়া হয়। ঘটনার সত্যতা জেনে পুলিশ আমিনা বেগমকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।
ক. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত? ১
খ. ‘অর্থচিন্তার নিগড়ে সকলে বন্দি’ বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের কোন দিকটি উপস্থিত? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “আমিনা বেগমের ক্ষেত্রে শিক্ষা তার বাইরের ব্যাপার, অন্তরের ব্যাপার হয়ে ওঠেনি”- ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।  ৪

২নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধটি মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ‘সংস্কৃতি কথা’ গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।

খ. আমাদের জগৎ সংসারে সকলেই জীবনটাকে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে পার করার চিন্তায় ব্যস্ত, এটি বোঝাতেই লেখক প্রশ্নোক্ত মন্ত্যবটি করেছেন।

✍ পৃথিবীতে সকলেরই চাহিদা অসীম। তাই সহজেই কেউ তৃপ্ত হতে পারে না। এজন্য সকলেই অর্থের পেছনে ছোটে। জীবসত্তার প্রয়োজন মেটাতে অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু শুধু অর্থের পেছনে না ছুটে আমাদের মনুষ্যত্ব অর্জনের জন্য মানবসত্তার চর্চাও করা প্রয়োজন। এজন্য শিক্ষা অর্জনে আগ্রহী হতে হবে। কিন্তু জীবসত্তার প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে মানুষ অর্থচিন্তার শিকল থেকে মুক্ত হতে পারে না। এটি বোঝানোর জন্যই লেখক প্রশ্নোক্ত মন্তব্যের অবতারণা করেছেন।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের মানবসত্তা বা মনুষ্যত্বের দিকটি উপস্থিত।

✍ শিক্ষালাভের মাধ্যমে মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে। এর মাধ্যমে ব্যক্তির মাঝে মূল্যবোধ জাগ্রত হয়। প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের ফলে মানুষের মাঝে মানবতাবোধ জাগ্রত হয়। এতে ঐ ব্যক্তি ভালো-মন্দের সঠিক বিচার-বিশ্লেষণ করতে পারে। মনুষ্যত্ববোধ থাকলে ব্যক্তি ভালোকে ভালো এবং মন্দকে মন্দ বলার যোগ্যতা অর্জন করে।

✍ উদ্দীপকের শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ডে মনুষ্যত্ববোধের পরিচয় ফুটে উঠেছে। তারা হাসপাতালে ফেলানীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করে শিক্ষালাভের প্রকৃত উদ্দেশ্যের প্রতিফলন ঘটিয়েছে। ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে মানুষের মাঝে মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে যে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম তা তুলে ধরা হয়েছে। প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারলে মনুষ্যত্ববোধ সৃষ্টি হয়।

ঘ. ছোট জিনিসের মোহে বড় জিনিস হারাতে দুঃখবোধ না করায় উদ্দীপকের আমেনা বেগমের ক্ষেত্রে শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যর্থ।

✍ শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো মূল্যবোধ সৃষ্টি। তাই যেখানে মূল্যবোধের মূল্য পাওয়া হয় না সেখানে শিক্ষা নেই। একজন প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তি কখনো মনুষ্যত্ববোধ বিসর্জন দিতে পারে না। কেননা শিক্ষার আসল কাজই হলো মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করা। তার পরও যদি নামসর্বস্ব শিক্ষায় শিক্ষিত কোনো ব্যক্তি মনুষ্যত্ব-বিবর্জিত কোনো কাজ করে তাহলে বোঝা উচিত সে শিক্ষার প্রকৃত মর্মার্থ অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে।

✍ উদ্দীপকে আমেনা বেগম বিবেকবোধহীন কাজ করেছে। সে সামান্য একটি কাপড়ের জন্য ফেলানীকে ইস্ত্রির ছ্যাঁকা দিয়ে মনুষ্যত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। শিক্ষার মাধ্যমে মনুষ্যত্বের আহবান মানুষের মর্মে গিয়ে পৌঁছলে সে কখনোই এমন বিবেকহীন কাজ করতে পারে না। শিক্ষা যদি শুধুই বাইরের ব্যাপার হয় তাহলে তা বাইরের দিক থেকে ত্রæটিহীন মনে হলেও ভেতরে কেবল প্রতারণাই লুক্কায়িত থাকে। উদ্দীপকের আমেনা বেগমের শিক্ষাও তাই এই লেফাফাদুরস্তিই বটে।

✍ শিক্ষা যদি মানুষের অন্তরের ব্যাপার হয়ে ওঠে তাহলে মানুষ সেই শিক্ষা থেকে মূল্যবোধ অর্জন করে। আর মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের আত্মিক উন্নতি ঘটলে মানুষ বুঝতে পারে লোভে পাপ পাপে মৃত্যু। ছোট জিনিসের মোহে পড়ে যে বড় জিনিস হারাতে দুঃখবোধ করে না, সে আর যাই হোক শিক্ষিত নয়। উদ্দীপকের আমেনা বেগমের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি ঘটেছে। তাই আমিনা বেগমের ক্ষেত্রে শিক্ষা তার বাইরের ব্যাপার, অন্তরের ব্যাপার হয়ে ওঠেনি।
 
এসএসসি বোর্ড পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য পড়ুন সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন-উত্তরসহ:

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ১ম পত্র গাইড
শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নঃ ০৩
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
শেফালী ও মারুফা দুজনেই হাসপাতালের সেবিকা। শেফালী ছোটবেলার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য তার অর্জিত বেতনের টাকা দিয়ে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য একটি চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র স্থাপন করেন। আর মারুফা অনেক বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখে এবং হাসপাতালের রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত চিকিৎসার ওষুধ বাইরে বিক্রি করে অর্থ আয় করে।
ক. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থের অন্তর্গত? ১
খ. “কারারুদ্ধ আহারতৃপ্ত মানুষের মূল্য কতটুকু?” এখানে “কারারুদ্ধ” বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২
গ. উদ্দীপকের শেফালী চরিত্রে ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে মারুফার মানসিক পরিবর্তনে ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে লেখক কী পরামর্শ দিয়েছেন? আলোচনা করো। ৪

৩নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধটি মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ‘সংস্কৃতি কথা’ গ্রন্থের অন্তর্ভূক্ত।

খ. প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটিতে কারারুদ্ধ বলতে চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা, আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত থাকাকে বোঝানো হয়েছে।

✍ শিক্ষা মানুষকে মুক্তি দেয়। কারাগারে বসে প্রচুর অন্নবস্ত্র পেলেও মানুষ মুক্তির স্বাদ পেতে চায়। শিক্ষা তেমনি অন্নচিন্তার মধ্যে থেকেও মনের মুক্তি দেয়। শিক্ষার মাধ্যমে চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা ও আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা পাওয়া যায়। কিন্তু যারা ধন-সম্পদের মাঝে থেকেও এই শিক্ষা থেকে দূরে থাকে তাদের অবস্থা কারারুদ্ধ আহারতৃপ্ত মানুষের মতোই। প্রশ্নে কারারুদ্ধ বলতে এ দিকটিই বোঝানো হয়েছে।

গ. উদ্দীপকের শেফালীর চরিত্রে ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের বর্ণিত মনুষ্যত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে মোতাহের হোসেন চৌধুরী মানুষের মাঝে মানবিকতাবোধের উন্মেষের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ মনুষ্যত্বলোকের সন্ধান পায়। তখন সে ভালো-মন্দের মাঝে তফাৎ করতে শেখে। মনুষ্যত্ববোধসম্পন্ন মানুষ তার কাজের মাধ্যমে নিজের আত্মিক উন্নয়ন ঘটায়।

✍ উদ্দীপকের শেফালী একজন হাসপাতালের সেবিকা। প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য মহৎ কিছু করার ইচ্ছা তার ছোটবেলা থেকেই ছিল। নিজের বেতনের টাকা থেকে সে প্রতিবন্ধী শিশুদের সেবা দেওয়ার জন্য একটি চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র চালু করে। এর মাধ্যমে আমরা শেফালীর মানবিকবোধসম্পন্ন উদার মনের পরিচয় পাই। ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আলোকে বলা যায়, প্রকৃত শিক্ষার দ্বারা মনুষ্যত্ববোধে উদ্বুদ্ধ হওয়ার কারণেই শেফালী এমন মহৎ একটি উদ্যোগ নিতে অনুপ্রাণিত হয়েছে।

ঘ. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে প্রকাশিত লেখকের মতামত অনুসারে বলা যায়, উদ্দীপকের মারুফার মানসিকতা পরিবর্তনে প্রকৃত শিক্ষার প্রয়োগে মনুষ্যত্ববোধের জাগরণ প্রয়োজন ।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে মোতাহের হোসেন চৌধুরী জীবন গঠনে শিক্ষার ভ‚মিকা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। শিক্ষা লাভের মাধ্যমে মানুষ মনুষ্যত্ব অর্জন করে। বিভিন্ন অন্যায়ের পথ এড়িয়ে চলার মানসিক শক্তি অর্জন করে। কিন্তু শিক্ষা গ্রহণের পরও কেউ যদি অন্যায়ের পথে নিজের স্বার্থসিদ্ধিতে তৎপর থাকে তবে বুঝতে হবে যে তার মাঝে প্রকৃত শিক্ষার উপস্থিতি নেই।

✍ উদ্দীপকের মারুফা অসৎ উপায়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত। রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত ওষুধ গোপনে বিক্রি করে নিজে বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখে। তার এ কাজটি ঘোরতর অন্যায়। মনুষ্যত্ববোধের ঘাটতি থাকায় সে এমন গর্হিত কাজে জড়াতে দ্বিধা করে না।

✍ শিক্ষার আসল কাজ জ্ঞান পরিবেশন নয়, মূল্যবোধ সৃষ্টি। শিক্ষার মাধ্যমেই আমরা বুঝতে পারি ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।’ কিন্তু স্বার্থসিদ্ধির জন্য যে নিজের আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেয় তাকে কোনোভাবেই শিক্ষিত বলা যায় না। উদ্দীপকের মারুফার ক্ষেত্রেও এই কথাটি সত্য। তার মাঝে মূল্যবোধের অভাব রয়েছে। প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমে তার মাঝে বিবেকবোধ ও মানবিক চেতনার স্ফুরণ ঘটানো সম্ভব। তাহলেই সে উদ্দীপকে উল্লিখিত অন্যায়মূলক কাজের সাথে জড়িত হওয়া থেকে বিরত থাকবে।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Shikkha O Monusotto
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৪নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
শিহাব সাহেব সুরমা সিমেন্ট কোম্পানির হিসাবরক্ষণ অফিসার। ভালো বেতন পান বলে সংসারে অভাব নেই। কোম্পানির প্রয়োজনে মালিক প্রায়ই বিদেশে থাকেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শিহাবের স্ত্রী রেবা একটু এদিক-ওদিক করে রাতারাতি গাড়ি-বাড়ির মালিক হওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু শিহাব তার স্ত্রীর প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বলে- ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’।
ক. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধটি কোন প্রবন্ধের অংশবিশেষ? ১ 
খ. মানবজীবনে শিক্ষা সোনা ফলাতে পারে না কেন? ২
গ. উদ্দীপকের শিহাব কেন স্ত্রীর প্রস্তাবে রাজি হননি?- ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের কোন দিক রেবার মানসিকতা পরিবর্তনে সহায়ক?- বিশ্লেষণ করো। ৪

৪নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব, প্রবন্ধটি মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ‘সংস্কৃতি কথা’ গ্রন্থের ‘মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের অংশবিশেষ।

খ. অর্থচিন্তা থেকে মুক্তি না পেলে শিক্ষা মানবজীবনে সোনা ফলাতে পারে না।

✍ শিক্ষা মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধের জাগরণ ঘটায়। কিন্তু জীবনসত্তার প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে মানুষ শিক্ষার প্রকৃত মর্মার্থ অনুধাবনে ব্যর্থ হয়। জীবসত্তার প্রয়োজনে মানুষ সবসময় অর্থচিন্তার নিগড়ে বন্দি থাকে। এই অর্থ সাধনাই যে জীবন সাধনা নয়, এ কথাটি অনুধাবনে ব্যর্থ হলে শিক্ষা মানবজীবনে সোনা ফলাতে পারে না।

গ. উদ্দীপকের শিহাবের মাঝে মনুষ্যত্ববোধ ছিল বলেই তিনি তার স্ত্রীর অন্যায় প্রস্তাবে রাজি হননি।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের রচয়িতা মোতাহের হোসেন চৌধুরীর মতে, শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ মনুষ্যত্ববোধ লাভ করে। তখন অন্যায় কাজ করতে তার বিবেক তাকে বাধা দেয়। লোভের কুফল সে বুঝতে পারে। তাই সে লোভের ফাঁদে ধরা দেয় না।

✍ উদ্দীপকের শিহাব সাহেব একজন সৎ মানুষ। কোম্পানির মালিক বিদেশে অবস্থান করলেও তিনি মালিকের বিশ্বাস ভঙ্গ করেননি। স্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী অসৎ উপায়ে অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা নেননি। কেননা তিনি জানেন লোভের ফলে তাঁর আত্মার মৃত্যু ঘটবে। ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আলোকে বলা যায়, শিক্ষার আলোয় শিহাব সাহেবের মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত ছিল বলেই তিনি তাঁর স্ত্রীর প্রস্তাবে রাজি হননি।

ঘ. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধ অনুসারে বলা যায়, প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমে রেবার মাঝে মনুষ্যত্ববোধের জাগরণ ঘটাতে পারলে রেবার মানসিকতা পরিবর্তন করা সম্ভব।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে মোতাহের হোসেন চৌধুরী মানবজীবনের উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। তাঁর মতে, মানবজীবনের উন্নতির জন্য জীবসত্তা থেকে মানবসত্তার ঘরে পৌঁছবার মই হলো শিক্ষা। প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমেই মানুষ সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে। 

✍ উদ্দীপকের শিহাব সাহেব একটি সিমেন্ট কোম্পানির হিসাবরক্ষণ অফিসার হিসেবে কর্মরত। ভালো বেতনের বদৌলতে তাঁর সংসারে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিরাজমান। কিন্তু তাঁর স্ত্রী রেবার চাহিদা এতে পূরণ হয় না। তাই মালিক বিদেশে থাকাকালীন তিনি শিহাবকে পরামর্শ দেন অসৎ উপায়ে উপার্জন করে রাতারাতি বাড়ি গাড়ির মালিক বনে যাওয়ার জন্য। ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আলোকে বলা যায়, রেবার মাঝে প্রকৃত শিক্ষার ছোঁয়া নেই বলেই তিনি তাঁর স্বামীকে অন্যায়ের পথে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

✍ ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’-এ কথাটি মানুষ ভুলে যায় যখন তার মাঝে প্রকৃত শিক্ষার প্রভাব থাকে না। তখন সে অন্যায়ের পথে পা বাড়াতে দ্বিধা করে না। আলোচ্য প্রবন্ধের রচয়িতার মতে, শিক্ষা মানুষকে মনুষ্যত্বলোকের সাথে পরিচয় ঘটিয়ে দেয়। কিন্তু জীবসত্তার ঘর বিশৃঙ্খল থাকলে মনুষ্যত্বের সাধনা ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে। উদ্দীপকের রেবার জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান পাওয়ার ব্যাপারে সমস্যা নেই। তবুও তিনি লোভী মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন প্রকৃত শিক্ষার অভাবে। তিনি হয়তো বা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। অথবা শিক্ষিত হলেও শিক্ষা তার অন্তরের ব্যাপার হয়ে ওঠে নি। তাই লোভের বৃত্ত থেকে তাকে বের করে আনতে হলে তাকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তাহলে তার মাঝে মনুষ্যত্ববোধের জাগরণ ঘটবে। ফলে স্বামীর মতো তিনিও অন্যায় কাজ করা থেকে দূরে থাকবেন।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Shikkha O Monusotto
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৫নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
বাদশাহ আলমগীরের ছেলেকে দিল্লির এক মৌলভী পড়াতেন। বাদশাহ একদিন দেখলেন তার ছেলে ওস্তাদের পায়ে পানি ঢেলে দিচ্ছে আর ওস্তাদ নিজ হাতে পা পরিষ্কার করছেন। বাদশাহ মৌলভীকে তার দরবারে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন তার ছেলে কেন নিজ হাতে ওস্তাদের পা ধুইয়ে দিল না।
ক. মোতাহের হোসেন চৌধুরী কোন পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন? ১
খ. শিক্ষার আসল কাজ কী? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের কোন দিকটির মিল রয়েছে ব্যাখ্যা করো। ৩ 
ঘ. বাদশাহ আলমগীরের ছেলের মাঝে মানবসত্তার বিকাশে কোন জিনিসটি ভ‚মিকা রাখতে পারে? ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আলোকে তোমার মতামত দাও। ৪

৫নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. মোতাহের হোসেন চৌধুরী ‘শিখা’ পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন।

খ. শিক্ষার আসল কাজ হলো মূল্যবোধ সৃষ্টি।

✍ জ্ঞান পরিবেশন করা শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য নয়। শিক্ষার মূল কাজ হলো মানুষকে মনুষ্যত্বলোকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। অন্নবস্ত্রের সমস্যা সমাধান হলেই মানবজীবনের প্রকৃত উন্নয়ন হয় না। এ জন্য প্রয়োজন চিন্তা, বুদ্ধি ও আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা। শিক্ষার মাধ্যমেই আমরা এ স্বাধীনতা অর্জন করতে পারি। মূল্যবোধের জাগরণ ঘটিয়ে শিক্ষা আমাদের সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে। আর এটিই শিক্ষার আসল কাজ।

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের মানবসত্তা বা মনুষ্যত্ববোধের মিল রয়েছে।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে লেখক বলতে চেয়েছেন, মানুষের মাঝে দুটি সত্তা বিরাজমান থাকে। একটি জীবসত্তা, অপরটি মানবসত্তা বা মনুষ্যত্ব। জীবসত্তার প্রয়োজনেই মানুষ অন্ন-বস্ত্র লাভের জন্য প্রচেষ্টা চালায়। আর যদি মানুষ শুধু অন্নচিন্তা ও অর্থচিন্তার মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখে তাহলে মানবজীবনের মূল যে লক্ষ্য মনুষ্যত্ব অর্জন, তা থেকে সে বঞ্চিত হয়। তাই শুধু অর্থ উপার্জন নয় জীবনের প্রকৃত সাধনা হচ্ছে নিজের মধ্যে মনুষ্যত্বের জাগরণ ঘটানো।

✍ আলোচ্য উদ্দীপকে আমরা লক্ষ করি, ছাত্র তার শিক্ষকের পায়ে বিনয়ের সাথে পানি ঢেলে দিচ্ছে আর শিক্ষক নিজ হাতে পা ধুয়ে নিচ্ছেন। বাদশাহ তা দেখে ওই শিক্ষককে ডেকে পাঠান এবং তার ছেলে কেন নিজ হাতে শিক্ষকের পা ধুইয়ে দিল না তার কারণ জানতে চান। বাদশাহ শিক্ষকের সম্মানকে ক্ষুণ্ণ না করে তার মর্যাদাকে আরো উচ্চে তুলে ধরেছেন। উদ্দীপকে জীবসত্তার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি, কিন্তু মনুষ্যত্ববোধটি যথার্থভাবে ফুটে উঠেছে।

ঘ. শিক্ষা বা জ্ঞানার্জনই বাদশাহ আলমগীরের ছেলের মাঝে মানবসত্তার বিকাশ ঘটাতে পারে।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, মানবজীবন হচ্ছে একটি দোতলা ঘরের মতো। জীবসত্তা হচ্ছে নিচের তলা আর মানবসত্তা বা মনুষ্যত্ব হচ্ছে ওপরের তলা। শিক্ষাই কেবল মই হিসেবে জীবসত্তা থেকে মানবসত্তার ঘরে মানুষকে নিয়ে যেতে পারে। জীবসত্তার প্রয়োজনে মানুষকে অন্নবস্ত্রের চিন্তা থেকে মুক্তি লাভ করতে হয়। আবার শিক্ষালাভের মধ্য দিয়ে মানবসত্তার উন্নয়ন বা মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে।

✍ উদ্দীপকে আমরা দেখি, ছাত্র শ্রদ্ধাবশত শিক্ষকের পায়ে পানি ঢেলে দিচ্ছে। আর শিক্ষক নিজ হাতে পা পরিষ্কার করছেন। কিন্তু বাদশাহ শিক্ষকের প্রতি এইটুকু সম্মান প্রদর্শনে খুশি হতে পারেননি। তিনি চেয়েছিলেন তার ছেলে শিক্ষকের পদযুগল নিজ হাতে ধুয়ে দিক। বাদশাহ তাঁর দরবারে মৌলভীকে ডেকে নেওয়ার মূল কারণ ছিল তাঁর ছেলে যেন যথার্থ শিক্ষা লাভ করে। যাতে শিক্ষককে উপযুক্ত সম্মান করতে পারে। বাদশাহ তাঁর আচরণের মধ্য দিয়ে আভিজাত্যের অহংকার নয় বরং তাঁর ভেতরের মানবসত্তার উৎকর্ষই তুলে ধরেছেন।

✍ শিক্ষার উদ্দেশ্য কেবল সার্টিফিকেট কিংবা ডিগ্রি অর্জন নয়। শিক্ষার উদ্দেশ্য মানুষের ভেতরের মনুষ্যত্বকে জাগিয়ে তোলা। তার মূল্যবোধকে ধারণ করা। প্রকৃত শিক্ষা মানুষের মাঝে ভদ্রতা, নম্রতা ও বিনয়ের মতো গুণাবলি সৃষ্টি করে। বাদশাহ তার প্রিয়তম সন্তানের মাঝে সেই মহৎ গুণাবলির সমাবেশ দেখতে চেয়েছেন। তাই বাদশাহ আলমগীরের ছেলের মাঝে মানবসত্তা বা মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটাতে হলে তাকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। এই শিক্ষা অর্জনের মধ্য দিয়েই তার জীবনে মনুষ্যত্বের সোনা ফলবে। তার জীবন মহিমান্বিত হবে।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Shikkha O Monusotto
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৬নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
শহীদুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর চলে গেলেন নিজ গ্রামে। সেখানে তিনি একটি হাই স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তার অদম্য ইচ্ছা গ্রামটিকে তিনি শিক্ষার আলোয় আলোকিত করবেন। সকল শিশুর জন্য শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করবেন। তার প্রভাবে দরিদ্র পরিবারের সন্তানরাও স্কুলে যেতে শুরু করল। শিক্ষার ব্যাপারে মানুষের মনে একটা আগ্রহ তৈরি হলো।
ক. মোতাহের হোসেন চৌধুরী কোন পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন? ১
খ. ‘অপ্রয়োজনের দিকই তার শ্রেষ্ঠ দিক’- কথাটি বুঝিয়ে লেখো। ২
গ. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শহীদুল্লাহর মধ্যে কিসের জাগরণ ঘটিয়েছে? ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা  করো। ৩ 
ঘ. ‘উদ্দীপকটি ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আংশিক প্রতিফলন মাত্র’- মূল্যায়ন করো। ৪

৬নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. মোতাহের হোসেন চৌধুরী ‘শিখা’ পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন।

খ. শিক্ষার মাহাত্ম্যের কথা বোঝানো হয়েছে উক্তিটির মাধ্যমে।

✍ মোতাহের হোসেন চৌধুরী ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে মানবজীবনের উন্নয়নে শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। অন্নবস্ত্রের সমস্যা সমাধানে শিক্ষার যেমন ভ‚মিকা আছে, তেমনি মানবিক মূল্যবোধ গঠনেও শিক্ষার ভ‚মিকা আবশ্যকীয়। প্রাবন্ধিক শিক্ষার প্রথম ভ‚মিকাটিকে বলেছেন প্রয়োজনের আর দ্বিতীয়টিকে অপ্রয়োজনের। শিক্ষার অপ্রয়োজনের এই দিকটি মানুষকে জীবন উপভোগ করতে শেখায়, মনুষ্যত্বলোকের সাথে মানুষের মিলন ঘটিয়ে দেয়। এটি ছাড়া প্রকৃত মানুষ হওয়ার কোনো উপায় নেই। লেখক তাই শিক্ষার অপ্রয়োজনের দিকটিকেই শ্রেষ্ঠ দিক বলেছেন।

গ. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শহীদুল্লাহর মধ্যে মনুষ্যত্ববোধের জাগরণ ঘটিয়েছে।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী বলতে চেয়েছেন শিক্ষার আসল কাজ মূল্যবোধ সৃষ্টি, জ্ঞান দান নয়। জ্ঞান অর্জন মূল্যবোধ সৃষ্টির উপায় মাত্র। অর্থচিন্তায় ব্যস্ত মানুষ বস্তুবাদী চিন্তার মধ্যেই নিজেকে নিয়োজিত রাখে। এই অর্থচিন্তা মানুষকে লোভী করে তোলে। আর লোভের ফলে মানুষের আত্মিক মৃত্যু ঘটে। পক্ষান্তরে শিক্ষা মানুষকে প্রকৃত মানুষ হতে সাহায্য করে। শিক্ষা লাভের মধ্য দিয়েই প্রকৃত মূল্যবোধ বা মনুষ্যত্বের জাগরণ ঘটে।

✍ শিক্ষা অর্জনের ফলে উদ্দীপকে শহীদুল্লাহর মাঝে সৃষ্টি হয়েছে চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা ও আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা। তাই সে গতানুগতিক চিন্তার বাইরে গিয়ে নিজের অনগ্রসর গ্রামের কথা ভেবেছে। গ্রামের শিশু-কিশোরদের শিক্ষার কথা ভেবেছে। তারা যেন প্রকৃত মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে সে চেষ্টায় আত্মনিয়োগ করেছে। তার লেখাপড়া তাকে স্বার্থপরের মতো জীবন-যাপন করতে শেখায়নি। বরং পরার্থে জীবন উৎসর্গ করার শিক্ষা দিয়েছে। তাই উদ্দীপক ও ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধ বিচার করলে দেখা যায়, শহীদুল্লাহর মাঝে  মনুষ্যত্বের জাগরণ ঘটেছে ।

ঘ. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে জীবসত্তা ও মানবসত্তার বিষয় আলোচিত হলেও উদ্দীপকে কেবল মানবসত্তার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। সেদিক থেকে উদ্দীপকটি ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আংশিক প্রতিফলন মাত্র।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধ অনুযায়ী মানুষের মাঝে দুটি সত্তা কাজ করে। একটি জীবসত্তা অন্যটি মানবসত্তা বা মনুষ্যত্ব। মনুষ্যত্ব অর্জনে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করে শিক্ষা। আবার শিক্ষার মাধ্যমে জীবসত্তার প্রয়োজন পূরণ বা খাদ্যবস্ত্রের চাহিদা মেটানো সহজ হয়। মনুষ্যত্বের স্বাদ পেতে হলে অন্নবস্ত্রের চিন্তা থেকে মানুষকে মুক্তি পেতে হবে। কারারুদ্ধ আহারতৃপ্ত মানুষের কোনো মূল্য নেই। কারণ সেখানে চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা বা আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। মানবজীবনের জন্য অন্নবস্ত্রের সুব্যবস্থা ও শিক্ষা দুটোই প্রয়োজন।

✍ উদ্দীপকে শিক্ষিত ও প্রাণবন্ত যুবক শহীদুল্লাহ নিজের গ্রামকে আলোকিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করে গ্রামে ফিরে যান। অভিভাবকদের সংগঠিত করে শিশুদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তোলেন।  উদ্দীপকে শহীদুল্লাহর এই কর্মকাণ্ড মানবসত্তার দিকটি তুলে ধরে। জীবসত্তার বিষয়টি এখানে অনুপস্থিত।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে জীবসত্তা ও মানবসত্তা উভয় বিষয় বিস্তারিত ও উপমাসহকারে আলোচিত হয়েছে। এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ আলোচনা। মানবসত্তার বিষয় মানবজীবনে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হলেও জীবসত্তার বিষয়টি উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। তাই উদ্দীপক এবং ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধ বিচার করলে আমরা পাই, উদ্দীপকে শুধু মানবসত্তার বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। তাই এটি শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব প্রবন্ধের আংশিক প্রতিফলন মাত্র।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Shikkha O Monusotto
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৭নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান সুমন। অনেক ইচ্ছে ছিল লেখাপড়া করে বড় মানুষ হবে। কিন্তু প্রতিদিন দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করাই যেখানে কষ্টসাধ্য সেখানে পড়াশোনা আর কী করে করবে সে। বাধ্য হয়ে একটা দোকানে কাজ নেয় সে। তাতেও মেটে না পরিবারের চাহিদা। একসময় স্থানীয় ছিনতাইকারী চক্রের সাথে যুক্ত হয়ে অন্ধকার জীবনে পা বাড়ায় সুমন।
ক. জীবসত্তার ঘর হতে মানবসত্তার ঘরে উঠবার মই কী? ১
খ. শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব প্রবন্ধের রচয়িতার মতে অর্থচিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া জরুরি কেন? ২
গ. উদ্দীপকের সুমনের অন্ধকার জীবনে পা বাড়ানোর কারণটি ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা করো। ৩ 
ঘ. “সুমনের মতো মানুষদের প্রকৃত মানুষ হওয়ার জন্য শিক্ষা ও অন্ন-বস্ত্র উভয় বিষয়ের সুব্যবস্থা প্রয়োজন”- উক্তিটির যথার্থতা বিশ্লেষণ করো। ৪

৭নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. জীবসত্তার ঘর হতে মানবসত্তার ঘরে উঠবার মই হলো শিক্ষা।

খ. মানবজীবনে শিক্ষার সুফল লাভের জন্য অর্থচিন্তা থেকে মুক্তি লাভ করা জরুরি।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে মোতাহের হোসেন চৌধুরী মানবজীবনের উন্নয়নের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাঁর মতে, অধিকাংশ মানুষই অর্থচিন্তা অর্থাৎ অন্নচিন্তায় নিমগ্ন। এর ফলে তাদের জীবনের ওপরের তলা অর্থাৎ মনুষ্যত্বের ঘরটির দশা নিতান্তই শোচনীয়। কিন্তু অর্থ সাধনা জীবন সাধনা নয়, এটি মানুষকে বুঝতে হবে। তা না হলে শিক্ষা-দীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান কোনো কাজেই আসবে না। মানুষের মাঝে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানোর জন্য অর্থচিন্তা থেকে মানুষের মুক্তি অত্যন্ত জরুরি।

গ. উদ্দীপকের সুমনের অন্ধকার জীবনে পা বাড়ানোর কারণ হলো অন্ন-বস্ত্রের সুব্যবস্থা না হওয়া।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর মতে, মানুষ অর্থচিন্তার নিগড়ে বন্দি। অর্থচিন্তা মানুষকে সারাক্ষণ ব্যস্ত রাখে। এ কারণে প্রকৃত মনুষ্যত্ব অর্জনে তারা বাধাগ্রস্ত হয়। অর্থচিন্তার নিগড় থেকে বের হতে না পারলে মানুষের জীবনের উন্নয়নে অনেক বিলম্ব ঘটবে। জীবসত্তাকে টিকিয়ে রাখতে অনেকেই সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে। ফলে প্রকৃত মনুষ্যত্ব অর্জনে সে ব্যর্থ হয়।

✍ উদ্দীপকে সুমন অর্থচিন্তার নিগড়ে বন্দি। সে অন্ন-বস্ত্রের ব্যবস্থা করতেই সদা ব্যাকুল। ফলে শিক্ষা তার কাছে পৌঁছতে পারে না। এজন্য সে যেকোনো উপায়ে নিজের অন্নবস্ত্রের ব্যবস্থা করতে চায়। কিন্তু জীবসত্তাকে টিকিয়ে রাখতে উপায় না পেয়ে অন্ধকার জগতে পা বাড়ায়। তার অন্ন-বস্ত্রের সুব্যবস্থা হলে সে শিক্ষা অর্জন করতে পারত। এতে তার মনুষ্যত্ব অর্জন হতো। ফলে অন্ধকার জগতে পা বাড়াত না। তাই বলা যায়, অন্ন-বস্ত্রের সুব্যবস্থা না হওয়ায় সুমন অন্ধকার জীবনে পা বাড়ায়।

ঘ. শিক্ষা ও অন্নবস্ত্র উভয়ের সুব্যবস্থাই পারে উদ্দীপকের সুমনের মতো মানুষগুলোর জীবসত্তা ও মানবসত্তার উন্নয়ন ঘটাতে।

✍ মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হলে তাকে জীবসত্তার পাশাপাশি মানবসত্তারও উন্নয়ন ঘটাতে হবে। ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে এই জীবসত্তা ও মানবসত্তার উন্নযনের কথা বলা হয়েছে। মানুষের জীবসত্তার ঘর থেকে মানবসত্তার ঘরে অর্থাৎ মনুষ্যত্বের ঘরে যেতে প্রয়োজন শিক্ষা। এই শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের মানবসত্তা জাগ্রত হয়। ফলে ব্যক্তি মূল্যবোধের অধিকারী হয়। তাই প্রকৃত মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে জীবসত্তা ও মানবসত্তা দুটোই প্রয়োজন।

✍ উদ্দীপকের সুমনের মাঝে জীবসত্তা থাকলেও মানবসত্তা নেই। কেননা মানবসত্তার ঘরের যাওয়ার মই অর্থাৎ শিক্ষা তার মাঝে নেই। ফলে জীবসত্তার প্রয়োজন মেটাতেই সে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান এগুলো জীবসত্তার প্রয়োজন মেটায়। কিন্তু মানবসত্তার প্রয়োজন মেটাতে প্রয়োজন শিক্ষা। আর এ কারণে সুমনের মাঝে শুধু জীবসত্তার দিকটিই ফুটে উঠেছে।

✍ অন্নচিন্তার নিগড় থেকে মুক্তি পেলে মানুষ চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা, আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা অর্জন করে। এতে তারা প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে। কিন্তু উদ্দীপকের সুমন অন্নচিন্তার নিগড় থেকে মুক্ত হতে পারেনি। এ কারণে সে অন্ধকার জগতে পা বাড়িয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সুমনের মতো মানুষেরা প্রকৃত মানুষ হওয়ার জন্য শিক্ষা ও অন্ন-বস্ত্র উভয় বিষয়েরই সুব্যবস্থা প্রয়োজন।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Shikkha O Monusotto
Golpo
Srijonshil
Question-Answer

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে লেখক মানবজীবনকে কয়তলা বাড়ির সাথে তুলনা করেছেন?
 উত্তর: ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে লেখক মানবজীবনকে দোতলা বড়ির সাথে তুলনা করেছেন।

২. মানবজীবনকে দোতলা বাড়ির সাথে তুলনা করা হলে নিচের তলার নাম কী?
 উত্তর: মানবজীবনকে দোতলা বাড়ির সাথে তুলনা করা হলে নিচের তলার নাম জীবসত্তা।

৩. মানবজীবনকে দোতলা বাড়ির সাথে তুলনা করা হলে ওপরের তলার নাম কী?
 উত্তর: মানবজীবনকে দোতলা বাড়ির সাথে তুলনা করা হলে ওপরের তলার নাম মানবসত্তা।

৪. জীবসত্তার ঘর থেকে মানবসত্তার ঘরে পৌঁছানোর মই কী?
 উত্তর: জীবসত্তার ঘর থেকে মানবসত্তার ঘরে পৌঁছানোর মই হলো শিক্ষা।

৫. শিক্ষার কোন দিকটি এর শ্রেষ্ঠ দিক?
 উত্তর: শিক্ষার অপ্রয়োজনের দিকটি এর শ্রেষ্ঠ দিক।

৬. সকলে কিসের নিগড়ে বন্দি?
 উত্তর: সকলে অর্থচিন্তার নিগড়ে বন্দি।

৭. কী পেলে আলো-হাওয়ার স্বাদবঞ্চিত মানুষ কারাগারকেই স্বর্গতুল্য মনে করে?
 উত্তর: প্রচুর অন্নবস্ত্র পেলে আলো-হাওয়ার স্বাদবঞ্চিত মানুষ কারাগারকেই স্বর্গতুল্য মনে করে।

৮. অন্নবস্ত্রের প্রাচুর্যের চেয়েও মুক্তি বড়-এই বোধটি মানুষের কিসের পরিচায়ক?
 উত্তর: অন্নবস্ত্রের প্রাচুর্যের চেয়েও মুক্তি বড়-এই বোধটি মানুষের মনুষ্যত্বের পরিচায়ক।

৯. চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা, আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা যেখানে নেই সেখানে কী নেই?
 উত্তর: চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা, আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা যেখানে নেই সেখানে মুক্তি নেই।

১০. ক্ষুৎপিপাসায় কাতর মানুষটিকে তৃপ্ত রাখতে না পারলে কী উপলব্ধি করা যায় না?
 উত্তর: ক্ষুৎপিপাসায় কাতর মানুষটিকে তৃপ্ত রাখতে না পারলে আত্মার অমৃত উপলব্ধি করা যায় না।

১১. শিক্ষাদীক্ষার দ্বারা কিসের স্বাদ পাওয়া যায় না?
 উত্তর: শিক্ষাদীক্ষার দ্বারা মনুষ্যত্বের স্বাদ পাওয়া যায় না।

১২. শিক্ষাদীক্ষার মারফতে মনুষ্যত্বের স্বাদ পেলেও কিসের দুশ্চিন্তায় মনুষ্যত্বের সাধনা ব্যর্থ হতে পারে?
 উত্তর: শিক্ষাদীক্ষার দ্বারা মনুষ্যত্বের স্বাদ পেলেও অন্নবস্ত্রের দুশ্চিন্তায় মনুষ্যত্বের সাধনা ব্যর্থ হতে পারে।

১৩. মানব উন্নয়নের ব্যাপারে ওপর থেকে টানার কাজটি করে কে?
 উত্তর: মানব উন্নয়নের ব্যাপারে ওপর থেকে টানার কাজটি করে শিক্ষা।

১৪. মানব উন্নয়নের ব্যাপারে নিচ থেকে ঠেলার কাজটি করে কে?
 উত্তর: মানব উন্নয়নের ব্যাপারে নিচ থেকে ঠেলার কাজটি করে সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থা।

১৫. লোভের কারণে যার আত্মিক মৃত্যু হয় কিসের জগতে সে ফতুর হয়ে পড়ে?
 উত্তর: লোভের কারণে যার আত্মিক মৃত্যু হয় অনুভ‚তির জগতে সে ফতুর হয়ে পড়ে।

১৬. কী সৃষ্টি করা শিক্ষার আসল কাজ?
 উত্তর: মূল্যবোধ সৃষ্টি করা শিক্ষার আসল কাজ।

১৭. কিসের বাঁধন থেকে মুক্তি না পেলে মনুষ্যত্বের আহবান মানুষের মর্মে গিয়ে পৌঁছাতে দেরি হয়?
 উত্তর: প্রাণিত্বের বাঁধন থেকে মুক্তি না পেলে মনুষ্যত্বের আহবান মানুষের মর্মে গিয়ে পৌঁছাতে দেরি হয়।

১৮. ‘নিগড়’ শব্দের অর্থ কী?
 উত্তর: ‘নিগড়’ শব্দের অর্থ বেড়ি।

১৯. ‘ক্ষুৎপিপাসা’ শব্দের অর্থ কী?
 উত্তর: ক্ষুৎপিপাসা শব্দের অর্থ ক্ষুধা ও তৃষ্ণা।

২০. ‘লেফাফাদুরস্তি’ শব্দের অর্থ কী?
 উত্তর: ‘লেফাফাদুরস্তি’ শব্দের অর্থ বাইরের দিক থেকে ত্রæটিহীনতা কিন্তু ভেতরে প্রতারণা।

২১. জীবসত্তাকে টিকিয়ে রাখতে হলে কী চাই?
 উত্তর: জীবসত্তাকে টিকিয়ে রাখতে হলে অন্নবস্ত্র চাই।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Shikkha O Monusotto
Golpo
Srijonshil
Question-Answer

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. অন্নবস্ত্রের প্রাচুর্যের চেয়ে মুক্তি বড়।- কথাটি বুঝিয়ে লেখো।
 উত্তর: অন্নবস্ত্রের প্রাচুর্য মানুষকে সাময়িক আনন্দ দিলেও মানুষের মনকে মুক্তি দেয় না- এ বিষয়টিই বোঝানো হয়েছে কথাটি দ্বারা।

✍ মানুষের রয়েছে দুটি সত্তা। একটি হলো তার জীবসত্তা আর অপরটি মানবসত্তা। অন্নবস্ত্রের সহায়তায় মানুষ তার জীবসত্তাকে টিকিয়ে রাখে। কিন্তু অন্নবস্ত্রের প্রাচুর্য মানুষের মনকে পূর্ণাঙ্গভাবে সন্তুষ্ট করতে পারে না। মানবসত্তা অর্থাৎ মনুষ্যত্বলোকের মুক্তির মাধ্যমেই মানুষ আত্মার অমৃতকে উপলব্ধি করতে পারে। যাঁদের মাঝে মনুষ্যত্ববোধ রয়েছে তাঁরা অন্নবস্ত্রের সহজলভ্যতার চেয়ে মানসিক মুক্তিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।

২. শুধু শিক্ষার ওপর নির্ভর করে মানবজীবনে উন্নতি করার ভাবনা অযৌক্তিক কেন?
 উত্তর: শুধু শিক্ষার ওপর নির্ভর করলে জীবনে উন্নতি করতে অনেক বেশি সময় প্রয়োজন বলে এ ভাবনা ভাবা অযৌক্তিক।

✍ মানবজীবনে উন্নতির জন্য একই সাথে দুটি উপায় অবলম্বন করতে হবে। অন্নবস্ত্রের সমস্যার সমাধান করার পাশাপাশি শিক্ষাদীক্ষার মাধ্যমে মনুষ্যত্বের স্বাদ পাওয়ার সাধনা করতে হবে। কেবল শিক্ষাকে অবলম্বন করে প্রাণপণে চেষ্টা করলেও জীবনে সফল হওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে অনেক সময়ের প্রয়োজন। কেননা অন্নবস্ত্রের দুশ্চিন্তায় মনুষ্যত্বের সাধনা পদে পদে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এ কারণেই শুধু শিক্ষার ওপর নির্ভর করে মানবজীবনে উন্নতি করার ভাবনাটি খুব বেশি ফলপ্রসূ হয় না।

৩. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে শিক্ষাকে মইয়ের সাথে তুলনা করা হয়েছে কেন?
 উত্তর: শিক্ষা জীবসত্তা ও মানবসত্তার মাঝে সেতুবন্ধ রচনা করে বলে শিক্ষাকে মইয়ের সাথে তুলনা করা হয়েছে।

✍ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে মোতাহের হোসেন চৌধুরী মানবজীবনকে একটি দোতলা বাড়ির সাথে তুলনা করেছেন। সেই বাড়ির নিচতলা হলো জীবসত্তা আর ওপরের তলা হলো মানবসত্তা। মানবসত্তার ঘরে উঠে মানুষ সত্যিকার অর্থে উন্নত মানুষে পরিণত হয়। আর মানবসত্তা তথা মনুষ্যত্বলোকের সাথে মানুষকে পরিচয় করিয়ে দেয় শিক্ষা। শিক্ষার সিঁড়ি বেয়েই মানুষের মনুষ্যত্বের সাধনা চলমান থাকে। শিক্ষার এই সহায়ক ভ‚মিকার কারণেই প্রাবন্ধিক শিক্ষাকে মইয়ের সাথে তুলনা করেছেন।

৪. লেফাফাদুরস্তি আর শিক্ষা এক কথা নয়-কেন?
 উত্তর: লেফাফাদুরস্তি মানুষের বাইরের দিক হলেও শিক্ষা মানুষের ভেতরের দিক। অর্থাৎ উভয়ের অবস্থান পরস্পরের বিপরীতে।

✍ লেফাফাদুরস্তি বলতে বাইরের দিক থেকে ত্রæটিহীনতা কিন্তু ভেতরে প্রতারণা বোঝায়। লেফাফাদুরস্ত ব্যক্তিরা বাইরে থেকে আকর্ষণীয় হলেও তাদের ভেতরটা শূন্য। অন্যদিকে যথার্থ শিক্ষিত ব্যক্তি বাইরে থেকে দেখতে যেমনই হন না কেন, অন্তরের শক্তিতে তিনি বলীয়ান। শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্য মানুষের আত্মিক উন্নয়ন। এ কারণেই ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে লেখক লেফাফাদুরস্তি ও শিক্ষাকে ভিন্ন বলে উল্লেখ করেছেন।

৫. ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে লেখক মানবজীবনকে দোতলা ঘরের সাথে তুলনা করেছেন কেন?
 উত্তর: মানবজীবনের দুটি সত্তা সম্পর্কে সহজ ধারণা দেওয়ার লক্ষ্যে ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী মানবজীবনকে একটি দোতলা ঘরের সাথে তুলনা করেছেন।

✍ মানুষের দুটি সত্তা রয়েছে। একটি তার জীবসত্তা আর অন্যটি মানবসত্তা। জীবসত্তাকে টিকিয়ে রাখতে হয় জীবনধারণের জন্য। অন্যদিকে মানবসত্তার পরিচর্যা করা প্রয়োজন জীবনকে উন্নত করার জন্য। জীবসত্তার তুলনায় লেখকের বিবেচনায় তার মানবসত্তা তথা মনুষ্যত্ববোধের তাৎপর্য অনেক বেশি। জীবসত্তার চাহিদাকে তিনি মানবজীবনে প্রাথমিক প্রয়োজনীয়তা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আর এই অবস্থা থেকে ওপরে ওঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বলেছেন মনুষ্যত্বের সাধনাকে। মানবজীবনকে তাই তিনি দোতলা একটি ঘরের সাথে তুলনা করে জীবসত্তা ও মানবসত্তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তাঁর বিবেচনায় দোতলা ঘরের নিচতলা হলো জীবসত্তা এবং ওপরের তলা হলো মানবসত্তা।

৬. প্রাণিত্বের বাঁধন থেকে মুক্তি পাওয়া অত্যন্ত জরুরি কেন?
 উত্তর: মনুষ্যত্বের আহবান মানুষের মর্মে পৌঁছানোর জন্য প্রাণিত্বের বাঁধন থেকে মুক্তি পাওয়া জরুরি।

✍ শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ মনুষ্যত্বের অধিকারী হয়। কিন্তু অন্নবস্ত্রের সুব্যবস্থা না থাকলে জীবনের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। পায়ের কাঁটার দিকে বারবার নজর দিতে গেলে হাঁটার আনন্দ উপভোগ করা যায় না। তেমনি অন্নবস্ত্রের সমস্যায় সর্বদা জর্জরিত থাকতে হলে মুক্তির আনন্দ উপভোগ করা সম্ভব হয় না। তাই মনুষ্যত্বের আহবানে দ্বিধাহীনভাবে সাড়া দিতে প্রাণিত্বের বাঁধন থেকে মুক্তি অর্থাৎ অন্নবস্ত্রের সমস্যার সমাধান অত্যন্ত জরুরি।
Share: