এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Business Organization and Management 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.
অধ্যায়-০৪
ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা
১ম পত্র
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
HSC Business Organization and Management 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download
পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, এ অধ্যায়ে বোর্ড পরীক্ষা, শীর্ষস্থানীয় কলেজসমূহের নির্বাচনি পরীক্ষা এবং বাছাইকৃত এক্সক্লুসিভ মডেল টেস্টের প্রশ্নগুলোর পূর্ণাঙ্গ উত্তর দেওয়া হয়েছে। এগুলো অনুশীলন করলে তোমরা এ অধ্যায় থেকে যেকোনো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০১
রনি, জনি ও তাদের আরও ৫ বন্ধু মিলে সমঝোতার ভিত্তিতে একটি কম্পিউটার ব্যবসায় শুরু করলেন। সুমি কম্পিউটার বিষয়ক জ্ঞানে পারদর্শী। সে কারণে এ ব্যবসায়ে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু সুমি কোনো মূলধন সরবরাহ করেনি। হঠাৎ রনি পাগল হয়ে গেলে তাদের ব্যবসায়টি জটিলতার সম্মুখীন হয়। [দি. বো. ১৭]
ক. ঘুমন্ত অংশীদার কাকে বলে? ১
খ. নাবালক কি অংশীদার হতে পারে? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকের সুমি কোন ধরনের অংশীদার? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. রনি পাগল হওয়ায় ব্যবসায়টির কীরূপ বিলোপসাধন ঘটবে? তোমার মতামত দাও। ৪
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
যে অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন সরবরাহ করে এবং লাভ-লোকসান ভোগ করে, কিন্তু অধিকার থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায় পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে না তাকে ঘুমন্ত বা নিষ্ক্রিয় অংশীদার বলে।
যে অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন সরবরাহ করে এবং লাভ-লোকসান ভোগ করে, কিন্তু অধিকার থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায় পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে না তাকে ঘুমন্ত বা নিষ্ক্রিয় অংশীদার বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
আইন অনুযায়ী নাবালক অংশীদার হিসেবে গণ্য হতে পারে না।
আইন অনুযায়ী নাবালক অংশীদার হিসেবে গণ্য হতে পারে না।
অংশীদারি আইনের ৩০(১) ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো নাবালক আইনানুযায়ী অংশীদার হওয়ার যোগ্য নয়। কিন্তু সব অংশীদার সম্মত হলে সাবালকত্ব প্রাপ্তি পর্যন্ত নাবালককে অংশীদারি ব্যবসায়ের সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নাবালক বিনিয়োগকৃত মূলধন পর্যন্ত দায় বহন করবে।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের সুমি একজন কর্মী অংশীদার।
উদ্দীপকের সুমি একজন কর্মী অংশীদার।
কর্মী অংশীদার ব্যবসায়ে কোনো মূলধন বিনিয়োগ করে না। শুধু নিজস্ব শ্রম ও দক্ষতা দিয়ে ব্যবসায়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। চুক্তি অনুযায়ী এরা অন্যান্য অংশীদারের ন্যায় ব্যবসায়ের লাভ-ক্ষতিতে অংশ নেয় এবং অসীম দায় বহনেও বাধ্য থাকে।
উদ্দীপকের রনি, জনি ও তাদের ৫ বন্ধু মিলে সমঝোতার ভিত্তিতে একটি কম্পিউটার ব্যবসায় শুরু করলেন, যা অংশীদারি ব্যবসায় হিসেবে গঠিত হয়েছে। সুমি কম্পিউটার বিষয়ক জ্ঞানে পারদর্শী। এ কারণে তাকে ব্যবসায়ের অংশীদার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে সে কোনো মূলধন বিনিয়োগ করেনি। শুধু নিজস্ব কর্মদক্ষতার জন্যই এ ব্যবসায়ে তাকে অংশীদার করা হয়েছে। যাতে ব্যবসায়টি দক্ষভাবে চলে এবং অধিক মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়। অন্যান্য অংশীদারের মতোই সে ব্যবসায়ের লাভে অংশগ্রহণ করে। এসব বৈশিষ্ট্য কর্মী অংশীদারের কার্যক্রমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের সুমি একজন কর্মী অংশীদার।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের রনি পাগল হওয়ায় ব্যবসায়টি আদালতের নির্দেশে বিলোপসাধন হবে।
উদ্দীপকের রনি পাগল হওয়ায় ব্যবসায়টি আদালতের নির্দেশে বিলোপসাধন হবে।
আদালতের নির্দেশে অংশীদারি ব্যবসায়ের বিলোপসাধন হতে পারে। সাধারণত কোনো অংশীদার পাগল হলে বা মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটলে কিংবা ব্যবসায় পরিচালনায় স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে আদালত ঐ ব্যবসায় বিলোপসাধনের নির্দেশ দেয়।
উদ্দীপকের রনি, জনি ও তাদের ৫ বন্ধু মিলে সমঝোতার ভিত্তিতে একটি অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছেন। হঠাৎ রনি পাগল হয়ে গেলে তাদের ব্যবসায়টি পরিচালনায় জটিলতার সম্মুখীন হয়।
উদ্দীপকের অংশীদারি ব্যবসায়ে রনি একজন অংশীদার। তার মস্তিষ্ক বিকৃতি হওয়ায় সে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় অক্ষম হয়ে পড়ে। অন্য অংশীদারগণও আইনানুযায়ী ব্যবসায় চালাতে পারবেন না।
অংশীদারি আইনের ৪৪ ধারা অনুযায়ী, কোনো অংশীদারের মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটলে আদালতের নির্দেশে ঐ ব্যবসায়ের বিলোপসাধন হয়। এ অবস্থায় আদালতের নির্দেশেই এ ব্যবসায়ের বিলোপসাধন করতে হবে। সুতরাং বলা যায়, রনি পাগল হওয়ায় ব্যবসায়টির আদালতের নির্দেশেই বিলোপ ঘটবে।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০২
রফিক, শফিক ও করিম একটি অংশীদারি ব্যবসায়ের সদস্য। রফিক ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগ করেন ও পরিচালনায়ও অংশগ্রহণ করেন। শফিক মূলধন বিনিয়োগ করেন কিন্তু পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন না। করিম মূলধন বিনিয়োগ করেন না আবার পরিচালনায়ও অংশ নেন না। তবে ব্যবসায়ে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। হঠাৎ রফিক মস্তিষ্ক বিকৃতির কারণে কর্তব্য পালনে স্থায়ীভাবে অসমর্থ হন। [কু. বো., চ. বো. ১৭]
ক. ক্রেডিট কার্ড কী? ১
খ. ই-ব্যাংকিং বলতে কী বোঝ? ২
গ. করিম কোন ধরনের অংশীদার? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উল্লিখিত অংশীদারি ব্যবসায় টিকে থাকার সম্ভাবনা কতটুকু? যুক্তিসহ লেখো। ৪
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
চুম্বকীয় শক্তিসম্পন্ন যে প্লাস্টিক কার্ড ব্যাংক তার গ্রাহকদের অর্থ উত্তোলন, ঋণ সুবিধা প্রদানসহ বাকিতে পণ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সরবরাহ করে তাকে ক্রেডিট কার্ড বলে।
চুম্বকীয় শক্তিসম্পন্ন যে প্লাস্টিক কার্ড ব্যাংক তার গ্রাহকদের অর্থ উত্তোলন, ঋণ সুবিধা প্রদানসহ বাকিতে পণ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সরবরাহ করে তাকে ক্রেডিট কার্ড বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
আধুনিক ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অতি দ্রুত, নির্ভুল ও বিস্তৃত ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করাকে ই-ব্যাংকিং বলে।
আধুনিক ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অতি দ্রুত, নির্ভুল ও বিস্তৃত ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করাকে ই-ব্যাংকিং বলে।
ইন্টারনেট নির্ভর কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে সার্বক্ষণিক ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করা যায়। এক্ষেত্রে স্বল্প সময়ে ও ব্যয়ে অর্থ জমা, উত্তোলন, স্থানান্তর এবং লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। আবার ই-ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে অঞগ (অঁঃড়সধঃবফ ঞবষষবৎ গধপযরহব) কার্ড ব্যবহার করে ২৪ ঘণ্টা ব্যাংকের বুথ থেকে লেনদেনের সুবিধা প্রদান পাওয়া যায়।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের করিম একজন নামমাত্র অংশীদার।
উদ্দীপকের করিম একজন নামমাত্র অংশীদার।
নামমাত্র অংশীদার মূলধন, শ্রম ও দক্ষতা কিছুই বিনিয়োগ করে না শুধু তার নামটি ব্যবসায়ের কাজে ব্যবহারের অনুমতি দেন। তবে অন্যান্য অংশীদারের মতো অসীম দায় বহনে তিনি বাধ্য থাকেন না।
উদ্দীপকের রফিক, শফিক ও করিম একটি অংশীদারি ব্যবসায়ের সদস্য। ব্যবসায়টিতে করিম মূলধন বিনিয়োগ করেননি। আবার ব্যবসায় পরিচালনায়ও অংশ নেন না। কিন্তু ব্যবসায়ে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। যা তিনি ব্যবসায়ে ব্যবহারের অনুমতি দেন। তার সুনাম বা খ্যাতি ব্যবহার করেই ব্যবসায়ে অধিক মুনাফা অর্জনে সমর্থ হয়। এজন্যই তাকে অংশীদার হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রম নামমাত্র অংশীদারের বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং বলা যায়, করিম একজন নামমাত্র অংশীদার।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উল্লিখিত অংশীদারি ব্যবসায় আদালতের নির্দেশে বিলোপসাধন করতে হবে বলে এর টিকে থাকার সম্ভাবনা নেই।
উল্লিখিত অংশীদারি ব্যবসায় আদালতের নির্দেশে বিলোপসাধন করতে হবে বলে এর টিকে থাকার সম্ভাবনা নেই।
আদালতের নির্দেশে অংশীদারি ব্যবসায় বিলোপসাধন হতে পারে। সাধারণত কোনো অংশীদার পাগল হলে বা মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটলে কিংবা ব্যবসায় পরিচালনায় স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে আদালত ঐ ব্যবসায় বিলোপসাধনের নির্দেশ দেয়।
উদ্দীপকের রফিক, শফিক ও করিম একটি অংশীদারি ব্যবসায়ের সদস্য। তারা প্রত্যেকেই সক্রিয় অংশীদার ছিলেন। হঠাৎ রফিক মস্তিষ্ক বিকৃতির কারণে কর্তব্য পালনে স্থায়ীভাবে অক্ষম হন।
অংশীদারি আইনের ৪৪ ধারা অনুযায়ী কোনো অংশীদারের মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটলে ঐ ব্যবসায় আদালতের নির্দেশে বিলোপসাধন করতে হয়। রফিকের মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটায় তিনি ব্যবসায় পরিচালনায় ও দায় পরিশোধে অসমর্থ। এ অবস্থায় ব্যবসায়টি পরিচালনা করা সম্ভব নয় বলে আদালতের নির্দেশে ব্যবসায়টির বিলোপ ঘটবে। তাই বলা যায়, উক্ত অংশীদারি ব্যবসায়টির টিকে থাকার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৩
শফিক, আজিম ও রনি পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে একটি গৃহনির্মাণ ফার্ম গঠন করার পরিকল্পনা করেন। তারা উক্ত ফার্মে প্রকৌশলী রফিকের সুনাম ব্যবহার করার জন্য তাকে অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করেন। চুক্তি অনুযায়ী তিনি উক্ত ব্যবসায়ে মূলধন, শ্রম বা দক্ষতা কিছুই বিনিয়োগ করেন না। কিন্তু মুনাফা ভোগ করেন এবং তিনি ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত দায় বহন করবেন। তিন বছর পর আজিম দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। তার ১৫ বছর বয়সী সন্তান তামীমকে তারা অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করে। পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির দশ লক্ষ টাকা দায় সৃষ্টি হয়। প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ও মূলধনসহ মোট দুই লক্ষ টাকা দায় মিটানো সম্ভব। অবশিষ্ট দায় মিটানোর জন্য শফিক ও রনি দুই লক্ষ টাকা করে চার লক্ষ টাকা প্রদান করে এবং রফিক ও তামীমকে দুই লক্ষ টাকা করে প্রদান করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়।
[সি. বো. ১৭]
ক. ঘুমন্ত অংশীদার কী? ১
খ. চুক্তিকে অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি বলা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অংশীদারি ব্যবসায়ের ধরন ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে দায় মেটানোর জন্য রফিক ও তামীমকে প্রদত্ত চিঠির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
যে অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন সরবরাহ করে এবং লাভ-লোকসান ভোগ করে, কিন্তু অধিকার থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায় পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে না তাকে ঘুমন্ত বা নিষ্ক্রিয় অংশীদার বলে।
যে অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন সরবরাহ করে এবং লাভ-লোকসান ভোগ করে, কিন্তু অধিকার থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায় পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে না তাকে ঘুমন্ত বা নিষ্ক্রিয় অংশীদার বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
অংশীদারি ব্যবসায়ের পারস্পরিক সমঝোতার বিষয়বস্তুর লিখিত রূপকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।
অংশীদারি ব্যবসায়ের পারস্পরিক সমঝোতার বিষয়বস্তুর লিখিত রূপকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।
অংশীদারি চুক্তি লিখিত, মৌখিক কিংবা লিখিত ও নিবন্ধিত হতে পারে। অংশীদারদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ, ব্যবসায় সম্পর্কিত যাবতীয় নিয়ম, বিলোপসাধন, বিবাদ, মীমাংসাসহ নানান বিষয় চুক্তিতে বিস্তারিত উলেখ থাকে। অংশীদারি ব্যবসায়ের সব কিছু চুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই চুক্তিকে অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি বলা হয়।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্যবসায়টি হলো নির্দিষ্ট অংশীদারি ব্যবসায়।
উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্যবসায়টি হলো নির্দিষ্ট অংশীদারি ব্যবসায়।
নির্দিষ্ট অংশীদারি ব্যবসায় নির্দিষ্ট মেয়াদের বা উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য গঠিত হয়। নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বা উদ্দেশ্য অর্জনের পর এরূপ ব্যবসায় বিলোপসাধিত হয়।
উদ্দীপকের শফিক, আজিম ও রনি তিন বন্ধু পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে একটি অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেন। উক্ত ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য হলো একটি গৃহনির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা। গৃহনির্মাণের কাজ সম্পন্ন হলে ব্যবসায়টি বন্ধ হয়ে যাবে, যা নির্দিষ্ট অংশীদারি ব্যবসায়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের ব্যবসায়টি নির্র্দিষ্ট অংশীদারি ব্যবসায়।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের রফিক নামমাত্র এবং তামীম নাবালক অংশীদার হওয়ায়, দায় মেটানোর জন্য তাদেরকে চিঠি পাঠানো যুক্তিসঙ্গত হয়নি।
উদ্দীপকের রফিক নামমাত্র এবং তামীম নাবালক অংশীদার হওয়ায়, দায় মেটানোর জন্য তাদেরকে চিঠি পাঠানো যুক্তিসঙ্গত হয়নি।
নামমাত্র অংশীদার নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে অংশীদারি ব্যবসায়ে তার সুনাম ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। এ ধরনের অংশীদারের দায় চুক্তি অনুযায়ী সীমিত হয়ে থাকে। অন্যদিকে যার বয়স এখনো ১৮ বছর হয়নি, সে নাবালক অংশীদার। নাবালক অংশীদারের দায়ও সীমিত।
উদ্দীপকের ফার্মে প্রকৌশলী রফিকের সুনাম ব্যবহারের জন্য তাকে অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তবে তিনি মুনাফা ভোগ করলেও ১০,০০০ টাকার অতিরিক্ত দায় বহন করবেন না। অপরদিকে তামীম ১৫ বছর বয়সে উক্ত ফার্মের অংশীদার হয়। ২ বছর পর তার বয়স বেড়ে ১৭ হয়েছে। তার বয়স যেহেতু ১৮ হয়নি, তাই সে একজন নাবালক অংশীদার। আর আইনত নাবালক অংশীদারের দায় বিনিয়োগকৃত মূলধন পর্যন্ত সীমিত।
উদ্দীপকের ব্যবসায়টির দশ লক্ষ টাকা দায় সৃষ্টি হয়। রফিক ও তামীমকে দুই লক্ষ টাকা করে প্রদান করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী রফিক ১০,০০০ টাকার অতিরিক্ত দায় বহনে বাধ্য নন। আর তামীম নাবালক হওয়ায় তার বিনিয়োগকৃত মূলধনের বেশি দায় সে বহন করবে না। এ পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, প্রতিষ্ঠানের দায় মেটানোর জন্য রফিক ও তামীমকে চিঠি পাঠানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৪
ফারজানা ও তার তিন বোন পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে জেকস নামক বুটিক হাউজ গড়ে তোলেন। ভালো ডিজাইন ও সুলভ মূল্যের কারণে প্রতিষ্ঠানটির পণ্য ক্রেতাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা পায়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি অল্পদিনে প্রচুর মুনাফা অর্জন করে। ৪ বছর পর ফারজানার বড় বোন মারা গেলে তার ১৬ বছর বয়সী ছেলে তৌকিরকে ব্যবসায় দেখাশোনার সুযোগ দেয়। ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ৫০ লক্ষ টাকা ওয়ান ব্যাংক হতে ঋণ নেয়। [য. বো. ১৭]
ক. নামমাত্র অংশীদার কে? ১
খ. অংশীদারি চুক্তিপত্র বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটি কোন প্রকৃতির? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে গৃহীত ব্যাংক ঋণের দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে তৌকিরের ভ‚মিকা মূল্যায়ন করো। ৪
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
যে অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন, শ্রম ও দক্ষতা কিছুই বিনিয়োগ করে না এবং পরিচালনায়ও অংশগ্রহণ করে না শুধু নাম ব্যবহারের অনুমতি দেয় তাকে নামমাত্র অংশীদার বলে।
যে অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন, শ্রম ও দক্ষতা কিছুই বিনিয়োগ করে না এবং পরিচালনায়ও অংশগ্রহণ করে না শুধু নাম ব্যবহারের অনুমতি দেয় তাকে নামমাত্র অংশীদার বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
অংশীদারি ব্যবসায়ের পারস্পরিক সমঝোতার বিষয়বস্তুর লিখিত রূপকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।
অংশীদারি ব্যবসায়ের পারস্পরিক সমঝোতার বিষয়বস্তুর লিখিত রূপকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।
অংশীদারি চুক্তি লিখিত, মৌখিক কিংবা লিখিত ও নিবন্ধিত হতে পারে। অংশীদারদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ, ব্যবসায় সম্পর্কিত যাবতীয় নিয়ম, বিলোপসাধন, বিবাদ, মীমাংসাসহ নানান বিষয় চুক্তিতে বিস্তারিত উলেখ করা হয়। অংশীদারি ব্যবসায়ের সব কিছু চুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই চুক্তিকে অংশীদারি ব্যবসায়ের ভিত্তি বলা হয়।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটি একটি অংশীদারি ব্যবসায় সংগঠন।
উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটি একটি অংশীদারি ব্যবসায় সংগঠন।
চুক্তি সম্পাদনের যোগ্যতাসম্পন্ন কমপক্ষে দু’জন ব্যক্তি মুনাফা অর্জন ও তা নিজেদের মধ্যে বণ্টনের উদ্দেশ্যে চুক্তিবদ্ধ হয়ে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেন। চুক্তিবদ্ধ সম্পর্কের আলোকেই এ ব্যবসায় গঠিত ও পরিচালিত হয়।
উদ্দীপকে ফারজানা ও তার তিন বোন পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে জেকস নামক বুটিক হাউজ গড়ে তোলেন। ভালো ডিজাইন ও সুলভমূল্যের কারণে প্রতিষ্ঠানটির পণ্য ক্রেতাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা পায়। তারা এক ধরনের চুক্তিবদ্ধ সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে এ ব্যবসায় গঠন করেন। চুক্তির আলোকেই তারা ব্যবসায় পরিচালনা করেন। যা অংশীদারি ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটি অংশীদারি ব্যবসায় সংগঠন।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
তৌকির নাবালক হওয়ার কারণে উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে গৃহীত ব্যাংক ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে তার দায় সীমিত থাকবে।
তৌকির নাবালক হওয়ার কারণে উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে গৃহীত ব্যাংক ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে তার দায় সীমিত থাকবে।
কোনো নাবালককে অংশীদারি ব্যবসায়ের অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করা হলে বিনিয়োগকৃত মূলধনের বেশি দায় তাকে বহন করতে হয় না। অর্থাৎ আইনত নাবালকের দায় সবসময় সীমিত।
উদ্দীপকের ফারজানা ও তার তিন বোন অংশীদারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ৪ বছর পর ফারজানার বড় বোন মারা গেলে তার ১৬ বছর বয়সী ছেলে তৌকিরকে ব্যবসায় দেখাশোনার সুযোগ দেওয়া হয়। এখানে তৌকির নাবালক বা সীমিত অংশীদার।
ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ৫০ লক্ষ টাকা ওয়ান ব্যাংক হতে ঋণ নেয়। উক্ত ব্যাংক ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে তৌকিরকে এর দায় বহনে বাধ্য করা যাবে না। কারণ, নাবালক অংশীদার ব্যবসায়ের ঋণকৃত অর্থ পরিশোধে বাধ্য নয়। তবে সাবালক হওয়ার পর এরূপ দায় বহনে সে অন্যান্য অংশীদারদের মতোই বাধ্য থাকবে। সুতরাং বলা যায়, ব্যাংক ঋণ পরিশোধে বর্তমানে তৌকিরকে দায়ী করা যাবে না।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৫
মুন এবং রবি ‘সাদ ট্রেডার্স’ নামে একটি অংশীদারি ব্যবসায় চালান। রাফি নামে তাদের বন্ধু প্রায়ই তাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আসে। তাকেও ব্যবসায়টির একজন অংশীদার বলে মনে হয়। মাঝে মাঝে সে নিজেকে একজন অংশীদার বলে পরিচয় দেয়। কিছুদিন পরে ‘আশিক ট্রেডার্স’ নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সাদ ট্রেডার্সের কাছে ৩০,০০০ টাকা দাবি করে। রাফি টাকাটা নিয়েছিল, এটা সত্যি ছিল কিন্তু ‘সাদ ট্রেডার্স’ সে অর্থ দিতে নারাজ। [ব. বো. ১৭]
ক. অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি কী? ১
খ. অংশীদারদের অসীম দায় বলতে কী বোঝ? ২
গ. সাদ ট্রেডার্সে রাফি কোন ধরনের অংশীদার? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. আশিক ট্রেডার্স কি আইনগতভাবে অর্থ ফেরত পাবে? কীভাবে পেতে পারে ব্যাখ্যা করো। ৪
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি।
চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
অংশীদারি ব্যবসায়ে বিনিয়োগকৃত মূলধনের বাইরেও অংশীদারদের দায় সৃষ্টি হওয়াকে অংশীদারদের অসীম দায় বলে।
অংশীদারি ব্যবসায়ে বিনিয়োগকৃত মূলধনের বাইরেও অংশীদারদের দায় সৃষ্টি হওয়াকে অংশীদারদের অসীম দায় বলে।
ব্যবসায়ের দেনার জন্য মালিকের বিনিয়োগকৃত মূলধন ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি দায়বদ্ধ থাকে । বিনিয়োগকৃত মূলধন দ্বারা দায় পরিশোধ করা সম্ভব না হলে মালিকের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিক্রি করে দেনা শোধ করতে হয়। কোনো অংশীদার দেউলিয়া হলে তার দায়ও অবশিষ্ট অংশীদারদের বহন করতে হয়। এজন্য এ ব্যবসায়ে অংশীদারের দায় অসীম।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের সাদ ট্রেডার্সে রাফি আচরণে অনুমিত অংশীদার।
উদ্দীপকের সাদ ট্রেডার্সে রাফি আচরণে অনুমিত অংশীদার।
আচরণে অনুমিত অংশীদার ব্যবসায়ের প্রকৃত অংশীদার না হয়েও আচার-আচরণ, কথাবার্তা দ্বারা নিজেকে অংশীদার হিসেবে পরিচয় দেয়। এরা অংশীদারদের না জানিয়ে কোনো ঋণ নিলে তাতে তার ব্যক্তিগত দায় সৃষ্টি হয়।
উদ্দীপকের মুন এবং রবি সাদ ট্রেডার্স নামে একটি অংশীদারি ব্যবসায় চালান। তাদের বন্ধু রাফি প্রায়ই তাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আসে। তাকেও ব্যবসায়টির একজন অংশীদার বলে মনে করা হয়। মাঝে মাঝে সে নিজেকে একজন অংশীদার বলে পরিচয় দেয়। কোনো ব্যক্তি এভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হিসেবে পরিচয় দিলে তাকেও একজন অংশীদার হিসেবে গণ্য করা হয়। বৈশিষ্ট্যানুযায়ী এরূপ অংশীদার আচরণে অনুমিত অংশীদার হিসেবে বিবেচিত হয়। সুতরাং সাদ ট্রেডার্সে রাফি একজন আচরণে অনুমিত অংশীদার।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের আশিক ট্রেডার্স আইনগতভাবে সাদ ট্রেডার্স-এর নিকট থেকে অর্থ ফেরত পাবে না। তবে রাফি আচরণে অনুমিত অংশীদার হওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে তাকে অর্থ ফেরত দিতে হবে।
উদ্দীপকের আশিক ট্রেডার্স আইনগতভাবে সাদ ট্রেডার্স-এর নিকট থেকে অর্থ ফেরত পাবে না। তবে রাফি আচরণে অনুমিত অংশীদার হওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে তাকে অর্থ ফেরত দিতে হবে।
আচরণে অনুমিত অংশীদার সাধারণ অংশীদারদের না জানিয়ে কোনো ঋণ নিলে তাতে অংশীদারি ব্যবসায়ের কোনো দায় সৃষ্টি হয় না। তবে তাকে অংশীদার ভেবে কেউ ব্যবসায়ে ঋণ দিলে সেজন্য সে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবে।
উদ্দীপকের মুন এবং রবি সাদ ট্রেডার্স নামে একটি অংশীদারি ব্যবসায় চালান। তাদের বন্ধু রাফি প্রায়ই এখানে যাতায়াত করায় তাকেও একজন অংশীদার মনে করা হয়। এছাড়া সে নিজেও মাঝে মাঝে নিজেকে অংশীদার বলে পরিচয় দেয়। কিছুদিন পরে আশিক ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান সাদ ট্রেডার্সের কাছে ৩০,০০০ টাকা দাবি করে। এ অর্থ ব্যক্তিগতভাবে রাফি নিয়েছিল। কিন্তু সাদ ট্রেডার্স এ অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
রাফি অংশীদারদের মতো আচরণ করলেও সে চুক্তিবদ্ধ কোনো অংশীদার নয় । তাই তাকে অংশীদার মনে করে আশিক ট্রেডার্স ঋণ দেওয়ায় এতে সাদ ট্রেডার্সের কোনো দায় সৃষ্টি হবে না। বরং এখানে রাফি ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ হবে। তাই আইনগতভাবে আশিক ট্রেডার্স তাদের পাওনা রাফির কাছ থেকে ফেরত পাবে ।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৬
মীম টুপিতে নকশার কাজে বিশেষভাবে পারদর্শী। মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক চাহিদা থাকায় সে নকশাকৃত টুপি তৈরির কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। দক্ষতার কারণে অল্প সময়ের ব্যবধানে তার ব্যবসায় দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করে। ফলে মীম তার ব্যবসায় সম্প্রসারণ করতে চায়। কিন্তু তার পর্যাপ্ত মূলধন নেই। তার দুই বন্ধু ব্যবসায়ে মূলধন সরবরাহ করতে চায়। পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে তারা তিন বন্ধু মিলে ব্যবসায় পরিচালনা করতে রাজি হয়। [ঢা. বো. ১৬]
ক. ব্যবসায় পরিবেশ কী? ১
খ. প্রত্যক্ষ সেবা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. মালিকানার ভিত্তিতে মীমের প্রথম পর্যায়ের ব্যবসায়ের ধরন ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের উল্লিখিত প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যবসায় সংগঠনের মধ্যে কোনটি শ্রেষ্ঠ? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
একটি দেশের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান যে পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্য দিয়ে গঠিত ও পরিচালিত হয় তাকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে।
একটি দেশের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান যে পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্য দিয়ে গঠিত ও পরিচালিত হয় তাকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে ভোক্তা বা গ্রাহকের প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণে সক্ষম কোনো কাজ, সুবিধা বা তৃপ্তি সরাসরি প্রদান বা সরবরাহ করাকে প্রত্যক্ষ সেবা বলে।
মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে ভোক্তা বা গ্রাহকের প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণে সক্ষম কোনো কাজ, সুবিধা বা তৃপ্তি সরাসরি প্রদান বা সরবরাহ করাকে প্রত্যক্ষ সেবা বলে।
মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে স্বাধীন পেশায় নিয়োজিত চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, নিরীক্ষক প্রভৃতি পেশাজীবীগণ প্রত্যক্ষ সেবাকর্ম বিক্রি করে থাকেন। তাছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠান বিক্রয় পরবর্তী সেবাও প্রদান করে থাকে, যা ব্যবসায়ের আওতাভুক্ত প্রত্যক্ষ সেবা হিসেবে গণ্য করা হয়।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
মালিকানার ভিত্তিতে মীমের প্রথম পর্যায়ের ব্যবসায়ের ধরন হলো একমালিকানা ব্যবসায়।
মালিকানার ভিত্তিতে মীমের প্রথম পর্যায়ের ব্যবসায়ের ধরন হলো একমালিকানা ব্যবসায়।
একমালিকানা ব্যবসায়ের মালিক একজন এবং তিনি একাই ব্যবসায় পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ব্যবসায়ের যাবতীয় সিদ্ধান্ত মালিক একাই নিয়ে থাকে। ব্যবসায়ের লাভ বা লোকসানও তিনি একাই বহন করে।
মীম টুপিতে নকশার কাজে বিশেষ পারদর্শী। মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক চাহিদা থাকায় সে নকশাকৃত টুপি তৈরির কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। দক্ষতার কারণে অল্প সময়ের মধ্যে তার ব্যবসায় দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করে। অর্থাৎ মীম তার ব্যবসায়টি একাই পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে। রপ্তানিকৃত টুপির আয়ও সে একাই ভোগ করে। তার ব্যবসায়টির মূলধন কম হওয়ায় আয়তনও সীমিত। তাই বলা যায়, মীমের প্রথম পর্যায়ের ব্যবসায়টি হলো একমালিকানা।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
আমি মনে করি প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যবসায়টি শ্রেষ্ঠ।
আমি মনে করি প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যবসায়টি শ্রেষ্ঠ।
এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে ও পরিচালনায় গঠিত ব্যবসায় হলো একমালিকানা ব্যবসায়। অন্যদিকে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি চুক্তির আলোকে যখন মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে ব্যবসায় পরিচালনা করে তখন তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে। বাড়তি সুবিধা প্রাপ্তির লক্ষ্যে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করা হয়।
মীম প্রথম পর্যায়ে একমালিকানা ব্যবসায় করে। ব্যবসায়টি দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করায় এটি সম্প্রসারণ করার প্রয়োজন পড়ে। পর্যাপ্ত মূলধনের অভাব হলে দুই বন্ধুকেও ব্যবসায়ে অন্তর্ভুক্ত করে। পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে তিন বন্ধু ব্যবসায় পরিচালনা করতে রাজি হয়।
মীমের দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যবসায়টি হলো অংশীদারি সংগঠন। প্রথম ব্যবসায়ে মূলধনের পরিমাণ সীমিত ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় পর্যায়ে একাধিক সদস্য হওয়ায় মূলধন বাড়বে। এতে ব্যবসায় সম্প্রসারণ সহজ হবে। এজন্যই আমার মতে দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যবসাটিই শ্রেষ্ঠ।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৭
মাহমুদ, তাহসিন ও জহির তিনজন মিলে একটি নিটিং গার্মেন্টস গড়ে তুলেছেন। পরবর্তীতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার মিজানকে তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কারণে বিনা মূলধনের প্রতিষ্ঠানের অংশীদার করে নেওয়া হয়। মাহমুদ, তাহসিন ও মিজান ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নেয় কিন্তু জহির অংশ নেয়নি। বছর শেষে জহির অন্যদের সমান মুনাফা দাবি করে। [রা. বো.; চ. বো. ১৬]
ক. অংশীদারি ব্যবসায় কী? ১
খ. নিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় উত্তম কেন? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. মিজান কোন ধরনের অংশীদার? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে জহিরের মুনাফার দাবি কি যুক্তিযুক্ত? মতামত দাও। ৪
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
২ থেকে ২০ জন ব্যক্তি (ব্যাংকিং ব্যবসায় ১০ জন) স্বেচ্ছায় মূলধন সরবরাহ করে চুক্তির ভিত্তিতে যে ব্যবসায় গড়ে তোলে তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে।
২ থেকে ২০ জন ব্যক্তি (ব্যাংকিং ব্যবসায় ১০ জন) স্বেচ্ছায় মূলধন সরবরাহ করে চুক্তির ভিত্তিতে যে ব্যবসায় গড়ে তোলে তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
নিবন্ধকের অফিসে অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের নাম তালিকাভুক্ত করাকে অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বলে।
নিবন্ধকের অফিসে অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের নাম তালিকাভুক্ত করাকে অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বলে।
অংশীদারি আইনের ৫৮ (১) ধারা অনুযায়ী এ ব্যবসায় নিবন্ধিত হয়। নিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় অপর অংশীদারের বিরুদ্ধে অধিকার আদায়ের জন্য মামলা করতে পারে। নিবন্ধিত এ ব্যবসায় তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধেও মামলা করতে পারে। এছাড়াও পাল্টা পাওনা আদায়ে নিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় সুবিধা পায়। এজন্যই নিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় উত্তম।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
মিজান হলো একজন কর্মী অংশীদার।
মিজান হলো একজন কর্মী অংশীদার।
কর্মী অংশীদার ব্যবসায়ে কোনো মূলধন বিনিয়োগ করে না শুধু নিজস্ব শ্রম ও দক্ষতাকে সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত রাখে। চুক্তি অনুযায়ী এরা অন্যান্য অংশীদারের মতো ব্যবসায়ের লাভ-ক্ষতিতে অংশ নেয়। এরা নিজেদের শ্রম, মেধা ও দক্ষতাকেই পুঁজি হিসেবে নিয়োগ করে।
মাহমুদ, তাহসিন ও জহির তিনজন মিলে একটি নিটিং গার্মেন্টস গড়ে তুলেছেন। পরবর্তী সময়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার মিজানকে তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কারণে বিনা মূলধনে প্রতিষ্ঠানের অংশীদার করে নেয়। মিজান ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নেয়। বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী মিজান শুধু শ্রম ও দক্ষতাকে প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত করবে তবে অন্যান্য অংশীদারের মতো সে ব্যবসায়ের লাভ-ক্ষতিতে অংশ নেবে। মিজানের দক্ষতার কারণে প্রতিষ্ঠানও লাভবান হবে। এতে অন্য অংশীদাররাও লাভবান হবে, যা কর্মী অংশীদারের বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ মিজান একজন কর্মী অংশীদার।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
জহিরের মুনাফার দাবি যুক্তিযুক্ত। কারণ সে ঘুমন্ত অংশীদার।
জহিরের মুনাফার দাবি যুক্তিযুক্ত। কারণ সে ঘুমন্ত অংশীদার।
ঘুমন্ত অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগ এবং লাভ-ক্ষতিতে অংশগ্রহণ করে কিন্তু ব্যবসায় পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় না। এরা অন্য অংশীদারদের ওপর আস্থা রেখে তাদের ওপর নির্ভর করে। এ অংশীদারের দায় অসীম হয়।
মাহমুদ, তাহসিন ও জহির তিনজন মিলে নিটিং গার্মেন্টস গড়ে তুলেছে। পরে মিজানও অংশীদার হয়। মাহমুদ তাহসিন ও মিজান ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নেয় কিন্তু জহির অংশ নেয়নি। বছর শেষে জহির অন্যদের সমান মুনাফা দাবি করে।
বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী জহির হলো একজন ঘুমন্ত অংশীদার। কারণ সে ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নেয় না কিন্তু মূলধন ঠিকই বিনিয়োগ করেছে। ঘুমন্ত অংশীদাররা শর্ত অনুযায়ী অংশীদারের মতো সমান মুনাফা পাবে। তাই বলা যায়, জহির ঘুমন্ত অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও তার মুনাফা দাবি করা যুক্তিযুক্ত।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৮
রাশেদ ও শাহেদ চুক্তিবদ্ধ হয়ে একটি অংশীদারি ব্যবসায় শুরু করেন। রাশেদ ব্যবসায়ে ৫,০০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করেন। কিন্তু খুলনায় একটি এনজিওতে চাকরিরত থাকার কারণে তিনি ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারেন না। শাহেদ একাই ব্যবসায় পরিচালনা করেন এবং তারা ব্যবসায়ের লাভ সমানভাবে ভাগ করে নেন। শাহেদ ঢাকার বাংলাবাজার থেকে নগদের পাশাপাশি বাকিতেও পণ্য ক্রয় করে থাকেন। শাহেদ কিছুদিনের জন্য বিদেশে গেলে রাশেদ দোকানে বসেন। এর মাঝে একজন পাওনাদার ৫০,০০০ টাকা পাওনা আদায়ের জন্য দোকানে আসেন। কিন্তু রাশেদ পাওনাদারের দাবি পরিশোধে অস্বীকৃতি জানায়। [দি. বো. ১৬]
ক. চুক্তিপত্র কী? ১
খ. ‘চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি’- ব্যাখ্যা করো। ২
গ. রাশেদ কোন ধরনের অংশীদার? উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে রাশেদ কি পাওনাদারের দাবিকে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও। ৪
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তির বিষয়বস্তুর লিখিত রূপকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।
অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তির বিষয়বস্তুর লিখিত রূপকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তির বিষয়বস্তুর লিখিত রূপকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।
অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তির বিষয়বস্তুর লিখিত রূপকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।
অংশীদারি চুক্তি লিখিত এবং মৌখিক কিংবা লিখিত ও নিবন্ধিত হতে পারে। অংশীদারদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ ব্যবসায় সম্পর্কিত যাবতীয় নিয়ম, বিলোপসাধন, বিবাদ মীমাংসাসহ নানান বিষয় চুক্তিতে বিস্তারিত উলেখ করা হয়। চুক্তি হতেই অংশীদারি ব্যবসায় জš§লাভ করে এবং অংশীদারি ব্যবসায়ের সবকিছু চুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই চুক্তিকে অংশীদারি ব্যবসায়ের ভিত্তি বলা হয়।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
রাশেদ একজন ঘুমন্ত অংশীদার।
রাশেদ একজন ঘুমন্ত অংশীদার।
ঘুমন্ত অংশীদার ব্যবসায়ের মূলধন বিনিয়োগ করে, লাভ-ক্ষতিতে অংশগ্রহণ করে কিন্তু ব্যবসায় পরিচালনায় সম্পৃক্ত থাকে না। এ ধরনের অংশীদার ব্যবসায়ের ঝুঁকি বহন করে এবং মুনাফা ভোগ করে, তবে পরিচালনায় অংশ নেয় না।
রাশেদ ও শাহেদ চুক্তিবদ্ধ হয়ে একটি অংশীদারি ব্যবসায় শুরু করেন। রাশেদ ব্যবসায়ে ৫,০০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করেন। তিনি চাকরি করায় ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতেন না। অন্য অংশীদার শাহেদ একাই ব্যবসায় পরিচালনা করেন। তবে ব্যবসায়ের লাভ তারা সমানভাবে ভাগ করে নেন। অতএব, ব্যবসায়টিতে রাশেদ একজন ঘুমন্ত অংশীদার হিসেবে কাজ করেন।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
রাশেদ পাওনাদারের দাবিকে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন না।
রাশেদ পাওনাদারের দাবিকে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন না।
অংশীদারি ব্যবসায়ে নিষ্ক্রিয় বা ঘুমন্ত অংশীদারদের দায়ও সক্রিয় অংশীদারদের মতো অসীম হয়। কোনো ঘুমন্ত বা নিষ্ক্রিয় অংশীদার ব্যবসায়ে তার দায় এড়াতে পারেন না।
রাশেদ ও শাহেদ চুক্তিবদ্ধ হয়ে একটি অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেন। রাশেদ ব্যবসায়ে ৫,০০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করেন। কিন্তু চাকরিরত থাকার কারণে তিনি ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন না। শাহেদ কিছু দিনের জন্য বিদেশে গেলে রাশেদ দোকানে বসেন। এর মাঝে একজন পাওনাদার ৫০,০০০ টাকা আদায়ের জন্য আসলে রাশেদ তা পরিশোধে অস্বীকৃতি জানান। এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অংশীদারি আইন পরিপন্থী।
অংশীদারি আইন অনুযায়ী রাশেদ অন্যান্য সক্রিয় অংশীদারের মতো ঝুঁকি বহন ও লাভ-ক্ষতিতে অংশগ্রহণ করবেন। তার দায়ও সক্রিয় অংশীদারদের মতো অসীম হয়। তাই কোনো দাবি বা দায় সৃষ্টি হলে জনাব রাশেদ তা বহন করত বাধ্য থাকবেন। সুতরাং উদ্দীপকে রাশেদের দায় অস্বীকার করা অযৌক্তিক।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৯
কণা ও তমা ১০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগে একটি অংশীদারি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে। অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজনে ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মুনাকে অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করে এ শর্তে যে, মুনা ৬ লক্ষ টাকা দেবে, তবে ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করবে না। ২০১৫ সালে আদালত মুনাকে দেউলিয়া ঘোষণা করে। দুর্ভাগ্যবশত অল্পদিন পর সড়ক দুর্ঘটনায় কণা মৃত্যুবরণ করে। [কু. বো. ১৬]
ক. অংশীদারি ব্যবসায়ের সংজ্ঞা দাও। ১
খ. আচরণে অনুমিত অংশীদার বলতে কী বোঝায়? ২
গ. মুনা কোন ধরনের অংশীদার? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. প্রতিষ্ঠানটির পরিণতি সম্বন্ধে তোমার মতামত দাও। ৪
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
২ থেকে ২০ জন ব্যক্তি (ব্যাংকিং ব্যবসায় ১০ জন) স্বেচ্ছায় মূলধন সরবরাহ করে চুক্তির ভিত্তিতে যে ব্যবসায় গড়ে তোলে তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে।
২ থেকে ২০ জন ব্যক্তি (ব্যাংকিং ব্যবসায় ১০ জন) স্বেচ্ছায় মূলধন সরবরাহ করে চুক্তির ভিত্তিতে যে ব্যবসায় গড়ে তোলে তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
আচরণের মাধ্যমে নিজেকে কোনো ব্যবসায়ের অংশীদার হিসেবে পরিচয় দিলে তাকে আচরণে অনুমিত অংশীদার বলে।
আচরণের মাধ্যমে নিজেকে কোনো ব্যবসায়ের অংশীদার হিসেবে পরিচয় দিলে তাকে আচরণে অনুমিত অংশীদার বলে।
অংশীদারি আইনের ২৮(ক) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ব্যবসায়ের অংশীদার না হয়েও যদি মৌখিক কথাবার্তা, লেখা বা অন্য কোনো আচরণের দ্বারা নিজেকে ব্যবসায়ের অংশীদার বলে পরিচয় দেয় তবে তাকে আচরণে অনুমিত অংশীদার বলে। এ ধরনের অংশীদারের আচরণের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তৃতীয় পক্ষ কোনো প্রকার ঋণ দিলে তার জন্য আচরণে অনুমিত অংশীদার দায়বদ্ধ হয়। এরূপ অংশীদার শুধু পরিচয়দানকারী অংশীদার।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
মুনা একজন নিষ্ক্রিয় অংশীদার।
মুনা একজন নিষ্ক্রিয় অংশীদার।
নিষ্ক্রিয় অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগ করে, লাভ-ক্ষতিতে অংশগ্রহণ করে কিন্তু অধিকার থাকা সত্ত্বেও পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে না। এরা অন্যদের ওপর আস্থা রেখে ব্যবসায় পরিচালনার ভার তাদের ওপর ছেড়ে দেয়।
কণা ও তমা তাদের অংশীদারি ব্যবসায়ে অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজনে বান্ধবী মুনাকে অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করে। শর্ত থাকে যে, মুনা ৬ লক্ষ টাকা দেবে, তবে ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করবে না। মুনা ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগ করবে এবং লাভ-ক্ষতিতে অংশগ্রহণ করবে। তবে তার দায় অন্যান্য অংশীদারের মতো অসীম হবে। এভাবে মুনার মধ্যে একজন ঘুমন্ত বা নিষ্ক্রিয় অংশীদারের সব বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। সুতরাং তিনি একজন ঘুমন্ত বা নিষ্ক্রিয় অংশীদার।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
কণা, তমা ও মুনার অংশীদারি ব্যবসায়টির বিশেষ ঘটনা সাপেক্ষে বিলোপসাধন ঘটবে।
কণা, তমা ও মুনার অংশীদারি ব্যবসায়টির বিশেষ ঘটনা সাপেক্ষে বিলোপসাধন ঘটবে।
অংশীদারদের মধ্যকার অংশীদারি সম্পর্কের বিলুপ্তিকে অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের বিলোপসাধন বলে। ৫টি উপায়ে অংশীদারি ব্যবসায়ে বিলোপ ঘটে। এর মধ্যে অন্যতম হলো বিশেষ ঘটনা সাপেক্ষে বিলোপসাধন।
কণা ও তমা ১০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগে একটি অংশীদারি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে। অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজনে তারা বান্ধবী মুনাকে ৬ লক্ষ টাকা বিনিয়োগের শর্তে নিষ্ক্রিয় অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করে। ২০১৫ সালে আদালত মুনাকে দেউলিয়া ঘোষণা করে। অল্পকিছু দিন পরে সড়ক দুর্ঘটনায় কণার মৃত্যু হয়।
যদি কোনো অংশীদারি ব্যবসায়ের কোনো অংশীদার দেউলিয়া ঘোষিত হয় বা মারা যায়, তাহলে ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী ব্যবসায়টির অবসান ঘটে। উদ্দীপকের ব্যবসায়টির একজন অংশীদার মুনা আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হয়েছে এবং আরেকজন অংশীদার কণার মৃত্যু হয়েছে। কাজেই উক্ত ব্যবসায়ের বিশেষ ঘটনা সাপেক্ষে বিলোপসাধন হবে।
২০১০ সালের ১ জানুয়ারি তারিখে বিরেন, বিজয় ও স্বাধীন সমঝোতার ভিত্তিতে একটি ব্যবসায় শুরু করলেন। তাদের প্রত্যেকের মূলধন এক লক্ষ টাকা। ২০১১ সালে বিরেনের মৃত্যুর পর তার ১০ বছরের কন্যা মুক্তিকে বিজয় ও স্বাধীনের সম্মতিতে ব্যবসায়ের অংশীদার করা হয়। ২০১২ সালে ৩১শে ডিসেম্বর তারিখে ব্যবসায়ের মুনাফা সামান্যই হলো। ২০১৫ সালের ১লা জুলাই তারিখে বিজয় দেউলিয়া ঘোষিত হলো। তখন ব্যবসায়ের দায়ের পরিমাণ তিন লক্ষ টাকা। [সি. বো. ১৬]
ক. অংশীদারি চুক্তিপত্র কী? ১
খ. অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বলতে কী বোঝায়? ২
গ. ২০১১ সালে মুক্তি কোন ধরনের অংশীদার ছিল? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. বিজয়ের দেউলিয়াত্বে উক্ত ব্যবসায়ের মুক্তির দায় নিরূপণ করো। ৪
১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তির বিষয়বস্তুর লিখিত রূপকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।
অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তির বিষয়বস্তুর লিখিত রূপকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
সরকার কর্তৃক নিয়োজিত অংশীদারি নিবন্ধনের অফিসে অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র সংরক্ষণ ও নাম তালিকাভুক্ত রাখাকে অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বলে।
সরকার কর্তৃক নিয়োজিত অংশীদারি নিবন্ধনের অফিসে অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র সংরক্ষণ ও নাম তালিকাভুক্ত রাখাকে অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বলে।
১৯৩২ সালের অংশীদারি আইনের ৫৮ ধারায় অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে। এ পদ্ধতি অনুযায়ী নিবন্ধনের অফিস থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে যথাযথভাবে পূরণের পর নির্ধারিত ফিসহ জমা দিয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হয়। অতঃপর নিবন্ধক পত্র দিয়ে নিবন্ধনের বিষয় জানিয়ে দেন। এটিই অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
২০১১ সালে মুক্তি নাবালক অংশীদার ছিল।
২০১১ সালে মুক্তি নাবালক অংশীদার ছিল।
চুক্তি সম্পাদনের যোগ্যতার অভাবে একজন নাবালক ব্যবসায়ের অংশীদার হতে পারে না। কিন্তু পিতার মৃত্যুতে বা উত্তরাধিকার সূত্রে ব্যবসায়ের অন্য সব অংশীদারের সম্মতিক্রমে সে ব্যবসায় হতে মুনাফা ভোগ করতে পারে।
২০১০ সালের ১ জানুয়ারি তারিখে বিরেন, বিজয় ও স্বাধীন একটি অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করে। তাদের প্রত্যেকের মূলধন ১ লক্ষ টাকা। কিন্তু ২০১১ সালে বিরেনের মৃত্যুর পর তার ১০ বছরের কন্যা মুক্তিকে তাদের সম্মতিক্রমে ব্যবসায়ের অংশীদার করেন। মুক্তির বয়স ১০ বছর হওয়ায় সে একজন নাবালক। সাধারণত একজন নাবালক অংশীদারি ব্যবসায়ের অংশীদার হতে পারে না। মুক্তি তার পিতার মৃত্যুতে সবার সম্মতিক্রমে ব্যবসায়ের মুনাফা ভোগ করতে পারে। এক্ষেত্রে তাকে নাবালক অংশীদার বলা যায়।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
বিজয়ের দেউলিয়াত্বে উক্ত ব্যবসায়ের মুক্তির দায় ১ লক্ষ টাকা।
বিজয়ের দেউলিয়াত্বে উক্ত ব্যবসায়ের মুক্তির দায় ১ লক্ষ টাকা।
অংশীদারি ব্যবসায়ে নাবালক অংশীদারদের দায় সীমিত। অংশীদারদের দায় যতই হউক, একজন নাবালক অংশীদারের দায় তার মূলধনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সে ব্যবসায়ের অসীম দায় বহন করে না।
বিরেন, বিজয় ও স্বাধীন সমঝোতার ভিত্তিতে যে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করে এতে প্রত্যেকের মূলধন ১ লক্ষ টাকা। এ অনুযায়ী মুক্তির মূলধন ১ লক্ষ টাকা। বিজয় দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ায় ব্যবসায়ের দায়ের পরিমাণ দাঁড়ায় তিন লক্ষ টাকায়। নাবালক অংশীদারের দায় সীমিত হওয়ার কারণে মূলধন অনুযায়ী মুক্তির দায়ের পরিমাণ হবে ১ লক্ষ টাকা।
মুক্তি যদি নাবালক অংশীদার না হতো তাহলে তার দায়ের পরিমাণ হতো ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। অংশীদারি ব্যবসায়ে নাবালককে অংশীদার করা হলে তার দায় সীমাবদ্ধ থাকে। তাই বলা যায়, মুক্তির দায়ের পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা।
0 Comments:
Post a Comment